রোববার, ১৬ জুন ২০২৪

নদী দখল-দূষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশিত
কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ২৩ মে, ২০২৪ ২১:১৮

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মেয়াদোত্তীর্ণ নৌপরিবহন এবং অতি মুনাফালোভী মালিকদের অতিরিক্ত যাত্রী বহনই নৌ-দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। সেই সঙ্গে বালু-খেকো, নদী-খেকোসহ যারা শিল্প-কারখানার বর্জ্য ক্যামিকেল পদার্থ নদীতে ঢেলে দেয় তারা দেশ ও সমাজের শত্রু, তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে নদী ও পরিবেশ রক্ষায় ব্রতী সংগঠন ‘নোঙর ট্রাস্ট’ আয়োজিত দেশের নৌপথে নিহত সব শহীদ স্মরণে ২৩ মে জাতীয় নদী দিবস ঘোষণার দাবি ও ঢাকা নদী সম্মেলন প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নদ-নদী দেশের প্রাণবাহী শিরা-উপশিরার ন্যায়, দেশের পরিবেশ-প্রকৃতি রক্ষায় নদীরক্ষার বিকল্প নেই। তাই নদীকে ভালোবাসুন, নদীরক্ষায় ব্রতী হোন।’

নদী দখলের তীব্র সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের প্রথম পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে ২০০২ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত এক দশক দায়িত্ব পালনকারী হাছান মাহমুদ বলেন, বিত্তের ক্ষমতা অনেক সময় পদের ক্ষমতাকেও নিয়ন্ত্রণ করে। বিত্তবান আবার নিজেদের সুবিধার জন্য মিডিয়া লালন করে। ক্ষমতাবানরা নদী দখল করে। বুড়িগঙ্গা নদীর দুপাশে পাড় বাঁধাই করা হয়েছে, ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। তবুও বুড়িগঙ্গা দখল হচ্ছে।

আঞ্চলিক নদী সহযোগিতা বিষয়েও আলোকপাত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘নদী রক্ষা এবং সুষম পানি বণ্টনে আরও সমন্বয়, প্রচেষ্টা ও আঞ্চলিক উদ্যোগ দরকার ছিল। সুষমভাবে পানি বণ্টন নিশ্চিত করার জন্য আঞ্চলিক পদক্ষেপ প্রয়োজন। একটি আঞ্চলিক সহযোগিতা দাঁড় করানো গেলে সবার উপকার হবে। আমাদের গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা বেসিন বা অববাহিকা নিয়ে একটি আঞ্চলিক সহযোগিতার ফোরাম খুব প্রয়োজন।’

নোঙর ট্রাস্ট চেয়ারম্যান সুমন শামসের সভাপতিত্বে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মো. আওলাদ হোসেন, দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান, রিভারাইন পিপল সংগঠনের মহাসচিব শেখ রোকন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।

২০০৪ সালের ২৩ মে একই রাতে মেঘনা নদীতে এমভি লাইটিং সান, এমভি দিগন্ত ও এমভি মজলিশপুর তিন জাহাজডুবিতে ব্যাপক প্রাণহানি ও গত ৫৩ বছরে দেশে নৌ দুর্ঘটনায় সব নিহতের স্মরণে নদী ও নদী নিরাপত্তার শপথে ২৩ মে জাতীয় নদী দিবস ঘোষণার জন্য ‘নোঙর’ উত্থাপিত দীর্ঘদিনের দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানান। নোঙর ট্রাস্ট চেয়ারম্যান সুমন শামস জানান, ২০০৪ সালের ২৩ মে জাহাজডুবিতে তার মা আছিয়া খাতুন মেঘনার তলদেশে চিরনিদ্রিত। এ দিনটিকে ‘নোঙর’ জাতীয় নদী দিবস পালন অব্যাহত রাখবে।

এমপি আজিমের মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে বাংলাদেশ-ভারত

অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ভারতের কলকাতায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে দুই দেশ এক সঙ্গে কাজ করছে। মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মিশন পুরো বিষয়টি নিয়ে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। যেহেতু তদন্তাধীন বিষয়, তাই এ নিয়ে বেশি কিছু বলা সমীচীন নয়।’


দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। আজ রোববার ১৬ জুন এক বার্তায় তিনি এ শুভেচ্ছা জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, কোরবানি আমাদের মধ্যে আত্মত্যাগ ও আত্মদানের মানসিকতা সঞ্চারিত করে, আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর সঙ্গে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নেওয়ার মনোভাব জাগ্রত করে এবং সহিষ্ণুতার শিক্ষা দেয়। তা ছাড়া, কেউ যাতে ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয় সে লক্ষ্যে সমাজের দারিদ্রপীড়িত ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে এবং তাদের পাশে দাঁড়াতে রাষ্ট্রপতি সমাজের বিত্তবান ও সচ্ছল ব্যক্তিবর্গকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

এর আগে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এক বার্তায় তিনি বলেন, প্রিয় দেশবাসী আসসালামু আলাইকুম, এক বছর পর আবারও আমাদের জীবনে ফিরে এসেছে পবিত্র ঈদুল আজহা। আমি আপনাদের সবাইকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানাই। ঈদ মোবারক।

ত্যাগের মহিমা নিয়ে আগামীকাল সারা দেশে পালিত হবে মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের আশায় প্রতিবারের মতো পশু কোরবানি করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।


শোলাকিয়ায় হামলার মতো ঘটনা ঘটবে না সেই নিশ্চয়তা দিচ্ছি: র‍্যাব ডিজি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে সুনির্দিষ্ট কোনো হামলা বা নাশকতার তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) ব্যারিস্টার মো. হারুন অর রশিদ।

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে আজ রোববার সকালে র‍্যাব ডিজি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি ও সক্ষমতা রয়েছে আমাদের। নিশ্চয়তা দিচ্ছি শোলাকিয়ায় হামলার মতো ঘটনা ঘটবে না।’

মো. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘ঈদ ঘিরে আমরা যথেষ্ট সতর্ক রয়েছি। গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। ঈদকে কেন্দ্র করে সুনির্দিষ্ট কোনো হামলা-নাশকতার তথ্য নেই।

‘তবে কোনো আশঙ্কাকেই উড়িয়ে দিচ্ছি না। সব বিষয় মাথায় রেখেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে। আমরা সতর্ক রয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘র‌্যাবের ডগ স্কোয়াড, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটসহ দুটি হেলিকপ্টারকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেকোনো ধরনের নাশকতা-হামলা প্রতিরোধ করতে র‌্যাব প্রস্তুত রয়েছে। সাইবার ওয়ার্ল্ডে সাইবার পেট্রলিং জোরদার করা হয়েছে। যেকোনো গুজব প্রতিরোধ করতেও প্রস্তুতি রয়েছে।’

‘বর্তমানে ত্রিমাত্রিক এলিট ফোর্সে পরিণত হয়েছে র‍্যাব। জল-স্থল-আকাশে আমাদের সক্ষমতা রয়েছে।’

র‍্যাব ডিজি বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারাদেশে পশুর হাট জমে উঠেছে। হাটকেন্দ্রিক মলম পার্টি, অজ্ঞানপার্টি প্রতিরোধে র‌্যাব সার্বক্ষণিক নজরদারি রেখেছে। হাটগুলোতে পর্যাপ্ত ফোর্স মোতায়েন রাখা হয়েছে, জাল টাকা শনাক্তের জন্য ডিভাইস রয়েছে।

‘প্রতিটি বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, ট্রেন স্টেশনে র‌্যাব সদস্য মোতায়েন রয়েছে। টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে সংঘবদ্ধ ১০ জনের একটি দলকে র‌্যাব গ্রেপ্তার করেছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে পশুবাহী গাড়ি ঢাকায় আসছে। এসব গাড়ি যাতে কোথাও বাধাগ্রস্ত না হয় আমরা নজর রাখছি।’

হারুন অর রশিদ আরও বলেন, ‘ঈদের দিন ঢাকায় জাতীয় ঈদগাহে সবচেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া শোলাকিয়া, রংপুর, দিনাজপুরে বড় জামাত হবে। এসব ঈদ জামাতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

র‌্যাব সদর দপ্তর থেকে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা মনিটরিং করা হবে। চামড়া নিয়ে যাতে কোনো কারসাজি না হয়, সে বিষয়েও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’

বিষয়:

ঈদ উপলক্ষে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির শুভেচ্ছা বিনিময় কাল

রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। ছবি: বাসস
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সারা দেশে আগামীকাল সোমবার (১৭ জুন) আনুষ্ঠানিকভাবে পালিত হবে মুসলমানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন আগামীকাল বঙ্গভবনে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কূটনীতিক এবং অভিজাত সমাজের সদস্যদের জন্য ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে এক সংবর্ধনার আয়োজন করেছেন।

ঈদের দিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠেয় এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এবং তাঁর সহধর্মিনী ড. রেবেকা সুলতানা বঙ্গভবনের ক্রেডেনশিয়াল হলে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন বলে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মোঃ জয়নাল আবেদীন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপ্রধান এই অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমের মাধ্যমে দেশবাসীকেও ঈদের শুভেচ্ছা জানাবেন।

তিনি দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, প্রবীণ রাজনীতিবিদ, বিচারক, কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, কূটনীতিক এবং বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

বঙ্গভবনের এই অনুষ্ঠানে প্রায় ১২০০ বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ও ব্যক্তিবর্গকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

আমন্ত্রিতদের মধ্যে রয়েছেন - প্রধান বিচারপতি, সাবেক রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, বিদেশি কূটনীতিক, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, উপাচার্য, সম্পাদক, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, লেখক, শিল্পী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এবং উচ্চপদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাগণ।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ঐতিহ্যগতভাবে সুস্বাদু খাবার দিয়ে আমন্ত্রিত অতিথিদেরকে আপ্যায়ন করা হবে। অনুষ্ঠান শেষে রাষ্ট্রপতি নিজ বাসভবনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাবেন।


পবিত্র ঈদুল আজহায় ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

আগামীকাল সোমবার (১৭ জুন) সারা দেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। দিনটিকে ঘিরে ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ রোববার এক অডিও-ভিডিও বার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, 'ঈদুল আজহার শিক্ষা ধারণ করে আসুন আমরা ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করি।’

বছরঘুরে ফিরে আসা পবিত্র ঈদুল আজহার গুরুত্ব উল্লেখ করে এই উৎসব নিয়ে নিজের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘পবিত্র ঈদুল আজহা আমাদের সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল আনন্দ, সুখ, শান্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিরাপদে থাকুন। ঈদ মোবারক।’


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানালেন মোদি

ফাইল ছবিটি সংগৃহীত
আপডেটেড ১৬ জুন, ২০২৪ ১২:৫০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আগামীকাল সোমবার (১৭ জুন) সারা দেশে পালিত হবে মুসলমানদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পরম করুণাময় মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য তাঁর উদ্দেশ্যে পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে ঈদুল আজহা উদ্‌যাপন করবেন।

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উষ্ণ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

চিঠি পাঠিয়ে এই শুভেচ্ছা জানান মোদি। আজ রোববার ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়।

চিঠিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি জোর দিয়ে উল্লেখ করেন, উৎসবটি (ঈদুল আজহা) ত্যাগ, সহানুভূতি ও ভ্রাতৃত্বের মূল্যবোধের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, যা একটি শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্ব গড়তে অপরিহার্য।

ঈদুল আজহাকে বহু সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবেও বর্ণনা করেছেন মোদি।

শুভেচ্ছা বার্তায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল কামনা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।


গ্রামের পানে ছুটছে মানুষ

রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালে শনিবার দীর্ঘক্ষণ বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায় যাত্রীদের। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস
আপডেটেড ১৬ জুন, ২০২৪ ০০:০৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

এক দিন পরই ঈদ। রাজধানীসহ সারা দেশের কর্মজীবী মানুষের অফিস হয়েছে ছুটি। বন্ধ দেওয়া হয়েছে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ। তাই আপনজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের জন্য গ্রামের পানে ছুটছে মানুষ। গত শুক্রবারের পর গতকাল ঈদযাত্রার চতুর্থ দিনে ছিল বাস-লঞ্চ-ট্রেনে বাড়ি ফেরা মানুষের মিছিল। আগে থেকে টিকিট করে রেখেছেন যারা তারা গতকাল নিরাপদে পছন্দের যানবাহনে উঠেছেন। কিন্তু, যারা আগে টিকিট কাটেননি বা নিকটবর্তী জেলাগুলোতে থাকেন বলে আগে থেকে টিকিট কাটার প্রয়োজন বোধ করেন না, গতকাল মহাখালী, গাবতলী বাস টার্মিনাল, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এবং সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে তাদের ছিল উপচে পড়া ভিড়। রীতিমতো সারি বেঁধে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটে যানবাহনে উঠতে হয়েছে তাদের। লোকাল হিসেবে পরিচিত এই যানবাহনগুলোতে গতকাল ছিল যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ। রীতিমতো লোকে লোকারণ্য হয়েছিল বাসস্ট্যান্ড, ট্রেন স্টেশন ও সদরঘাট টার্মিনাল। এর মধ্যে ট্রেনেই গতকাল ঢাকা ছেড়ে গেছেন দেড় লাখ মানুষ। গতকাল সূচি মেনেই ট্রেনগুলো নির্ধারিত সময়ে কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে গেছে। ছিল না অবৈধ যাত্রীদের চাপও। তবে শেষ সময়ে বাসে ও লঞ্চে রয়েছে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ।

গতকাল শনিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দুটি স্পেশাল ট্রেনসহ মোট ৬৯ জোড়া ট্রেন চলাচল করেছে বলে জানিয়েছেন কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার। এসব ট্রেনে রাজধানী থেকে মোট দেড় লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘গত ১২ জুন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানের গন্তব্যে ঢাকা থেকে যেসব ট্রেন আমরা পরিচালনা করেছি, সেগুলোর যাত্রীরা নিজ নিজ গন্তব্যে নিরাপদে ও ভোগান্তিহীনভাবে গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরেছেন।’

কমলাপুর স্টেশনের ম্যানেজার আরও বলেন, ‘আজ (গতকাল) সকাল থেকে বেশ কয়েকটি ট্রেন ঢাকা ছেড়ে গেছে। সবগুলো ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ে স্টেশন ত্যাগ করেছে। যাত্রীরা আমাদের ব্যবস্থাপনায় অনেকটা আনন্দিত হয়েছেন। আমরা এবার বিনা টিকিটে ভ্রমণ করার প্রবণতাটা একটু কম দেখেছি। যাত্রীরা সচেতন হয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী, জিআরপি, ডিএমপি, র‍্যাব এবং বাংলাদেশের অন্যান্য বাহিনী সম্মিলিতভাবে আমাদের সহযোগিতা করেছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি সুন্দর ভোগান্তিহীন নিরাপদ ঈদযাত্রা উপহার দিতে পেরেছি। এখনো পর্যন্ত কোনো ধরনের শিডিউল বিপর্যয় বা বিলম্ব- সবকিছু এড়িয়ে অত্যন্ত নিরাপদে মানুষ নির্দিষ্ট সময়ে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরেছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয় ও রেলওয়ের সকল পর্যায়ের একটি মনিটরিং টিম কাজ করছে উল্লেখ করে মাসুদ সারওয়ার বলেন, ‘আপনারা জানেন, আগামীকাল আমাদের ঈদযাত্রার শেষ দিন। শেষ পর্যন্ত যাতে সবকিছু স্বাভাবিক থাকে এবং সুন্দরভাবে যাত্রীরা নিজ নিজ মন্তব্যে পৌঁছাতে পারে, সে জন্য সব কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। সবার সম্মিলিত চেষ্টায় ও সহযোগিতায় আমরা সুন্দর একটি ঈদযাত্রা উপহার দিতে পেরেছি।’

অন্যদিকে, গতকাল অগ্রিম টিকিট না কাটা যাত্রীরা গাবতলী ও মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে ভিড় করায় লোকাল ও আন্তঃনগর বাসগুলোতে বেশ চাপ পড়ে যায়। এসব বাসে ওঠার জন্য প্রায় সবাইকে গুনতে হয়েছে বাড়তি ভাড়া। যাত্রীদের অভিযোগ, যানবাহন কম থাকার সুযোগে দূরপাল্লার যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। যে কারণে বাধ্য হয়ে অনেকে খোলা ট্রাক বা পিকআপে করে বাড়ি ফিরছেন।

চলতি মাসের শুরুতে অনলাইনে ও কাউন্টারে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে বাস টার্মিনালগুলোতে ভিড় বাড়তে থাকে। গত শুক্রবার ও গতকাল শনিবার ভিড় আরও বেড়েছে। রাজধানীর সায়েদাবাদ ও মহাখালী বাস টার্মিনালে সকাল থেকেই ঢাকা ছাড়তে চাওয়া যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে। কাউন্টার-সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল সারাদিনই এ অবস্থা ছিল। এ পরিস্থিতি থাকবে ঈদের আগের দিনও।

সায়েদাবাদের জনপথ মোড়ে সকাল থেকেই গোল্ডেন লাইনের কাউন্টারে ছিল ভিড়। পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরগামী এই গাড়ির যাত্রী মারুফ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এদের গাড়ি ১৫ মিনিট পর পর হলেও কোনো গাড়িতে আসন ফাঁকা নেই। আমি অনেক কষ্টে সুপারভাইজারের সিটের একটি টিকিট পেয়েছি। এই টিকিটের ভাড়াও ৫০০ টাকা।’

সাধারণত বাসের একদম সামনে টুলসদৃশ জায়গা থাকে সুপারভাইজারের জন্য। ঈদের সময় সেটিও আসন হিসেবে বিক্রি হয়।

এদিকে সড়কে যানজটের কারণে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া গাড়িগুলো শিডিউল ঠিক রাখতে পারছে না। বরিশালগামী যাত্রী মো. কায়সার জানান, তার গাড়ি ১২টা ৩০ মিনিটে। তবে কাউন্টার থেকে জানিয়েছে, ৯টা ১৫-এর গাড়ি এখনো ঢাকায় আসেনি। তাই তাঁর গাড়িও আসতে দেরি হতে পারে।

মহাখালীতে ভিড় দেখা গেছে ঢাকা থেকে অল্প দূরত্বের জেলাগুলোতে। ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর জেলার যাত্রীদের লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতে দেখা যায়। শেষ সময়ে টিকিট না পাওয়ায় অনেককে বাসের সুপারভাইজারের জন্য নির্ধারিত সিটও বাধ্য হয়ে কিনতে দেখা যায়।

এদিকে টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হলেও ১০ ঘণ্টা পর তা স্বাভাবিক হয়ে যায়। বিশেষ করে গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে মহাসড়কে গাড়ি চলাচল যানজটহীন হতে থাকে। সকাল ১০টা পর্যন্ত সড়কের এলেঙ্গা থেকে সেতুর টোল প্লাজা পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার অংশে কোথাও যানজট, কোথাও গাড়ির ধীর গতি ছিল।

গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুতে দুর্ঘটনা, টোল আদায় বন্ধ, চালকদের বেপরোয়া চালনার কারণে মহাসড়কে যানজট ও গাড়ি চলাচলে ধীর গতির সৃষ্টি হয়।

মহাসড়কে যানজট ও ধীর গতির বিষয়ে মহাসড়কে দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলেন, শুক্রবার রাতে ও গতকাল ভোরে সেতুর ওপর দুর্ঘটনা ঘটেছিল। তাতে হতাহত না হলেও সেতুর ওপর চাপ কমাতে টোল আদায় বন্ধ রাখা হয়। চালকদের ওভারটেক প্রতিযোগিতার কারণেও যানজটের সৃষ্টি হয়।

গতকাল মহাখালী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা থেকে বগুড়াগামী বাসগুলোর ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৬৫০ টাকা, যা ১০০ টাকা বেশি। এ বিষয়ে কাউন্টার থেকে বলা হয়, এটাই ঈদের জন্য তাদের নির্ধারিত ভাড়া। ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের ভাড়া স্বাভাবিক সময়ে ৩০০ টাকা হলেও এখন দিতে হচ্ছে ৬০০ টাকা।

ভাড়া বেড়েছে পদ্মা সেতু হয়ে পার হওয়া খুলনা, গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, বরিশাল ও মাগুরাগামী বাসের। এই রুটের পরিচিত বাস গোল্ডেন লাইনের ভাড়া ২০০ টাকা করে বাড়িয়েছে ঈদ উপলক্ষে। সায়েদাবাদ গোল্ডেন লাইন কাউন্টার থেকে জানানো হয়, স্বাভাবিক সময়ে ঢাকা থেকে মাগুরার ভাড়া ৫৫০ টাকা হলেও ঈদের জন্য এই রুটের ভাড়া ৮০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।

রাজধানীর গাবতলী টার্মিনালেও একই চিত্র দেখা গেছে। পদ্মা সেতুর কারণে এই টার্মিনালে বাসের পরিমাণ কমেছে অনেক বেশি। তবে চুয়াডাঙ্গা, দর্শনা, যশোর অঞ্চলের যাত্রী বেশি এই টার্মিনালে। স্বাভাবিকের চেয়ে ১০০ টাকা বেশি ভাড়া এই অঞ্চলের বেশির ভাগ পরিবহনের। অনলাইন টিকিটে এসি গাড়ির ভাড়া বেড়েছে ৬০০ টাকা পর্যন্ত।

এদিকে, জবি প্রতিনিধি মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ জানিয়েছেন, ঈদুল আজহার সরকারি ছুটি শুরুর আগের দিন রাজধানীর প্রধান নদীবন্দর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে বেড়েছে যাত্রীর চাপ। এদিন সকাল থেকে বিকেল গড়িয়ে রাত পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলগামী ঘরমুখো মানুষেরা নৌপথে বাড়ি ফিরেছে। ঈদের আনন্দ সঙ্গে নিয়ে যাত্রী বোঝাই লঞ্চগুলো ঘাট ছেড়েছে।

গতকাল শনিবার সারা দিন সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামার সাথে সাথেই টার্মিনালে বেড়েছে যাত্রীদের উপস্থিতি। সকালে স্বল্প দূরত্বের যাত্রীচাপ থাকলেও দুপুরের দিকে যাত্রীর উপস্থিতি কমে যায়। তবে বিকেল হতেই যাত্রীর ঢল নামে টার্মিনাল এলাকায়। লঞ্চগুলোতেও দেখা যায় যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়।

লঞ্চ-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোববার থেকে সরকারি ছুটি শুরু হলেও এর আগে সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় অনেকেই আগেভাগে বাড়ি ফিরছেন। শুক্রবার অনেকে টিকিট কিংবা কেবিন বুকিং করতে না পারায় এদিন যাচ্ছেন। সেজন্য বিগত কয়েক দিনের তুলনায় আজ যাত্রীর চাপ আরও বেড়েছে। নিয়মিত চলাচলকারী লঞ্চগুলোর কেবিনের অগ্রীম টিকিট বিক্রি আগেই শেষ হলেও বিভিন্ন রুটে লঞ্চের সংখ্যা বাড়ানোয় এখনও কেবিনের টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন যাত্রীরা। তবে কেবিনের তুলনায় ডেকের যাত্রীর চাপই বেশি বলছেন লঞ্চ সংশ্লিরা।

ঢাকা-বরিশাল রুটে চলাচলকারী এমভি প্রিন্স আওলাদ এর সুপারভাইজার ইহাদ তালুকদার বলেন, আজকে যাত্রীর চাপ আগের দিনগুলোর তুলনায় অনেক বেড়েছে। কাল থেকে আরও বাড়বে। ঈদের আগের দিন অনেকেই বাড়ি যাবেন। লঞ্চের সংখ্যা বাড়ানোয় টিকিটেরও ঘাটতি নেই। যাত্রীরা কেবিনের তুলনায় ডেকের টিকিট বেশি নিচ্ছেন।

ঢাকা-ভাণ্ডারিয়া রুটে চলাচলকারী এমভি ফারহান-৪ এর টিকিট বিক্রেতা সুমন শেখ বলেন, আমাদের অগ্রিম টিকিট আগেই বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। আমরা ডেকের টিকিট দিচ্ছিলাম। ইতোমধ্যেই লঞ্চ ভরে গেছে। যাত্রীর চাপ আরও বাড়বে বলে মনে হচ্ছে। সেজন্য এই রুটে লঞ্চের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।

লঞ্চ মালিক সমিতির মহাসচিব শহিদুল হক ভুঁইয়া বলেন, আজকে যাত্রী চাপ বিগত কয়েকদিনের তুলনায় বেড়েছে। সন্ধ্যা থেকে তা আরও বেড়েছে। এখনও গার্মেন্টসশ্রমিকরা কাজ শেষ করে অনেকেই আসতে পারেননি। আমাদের পর্যাপ্ত লঞ্চ প্রস্তুত আছে। যাত্রী বাড়লে লঞ্চ আরও বাড়ানো হবে। টিকিটের কোনো ঘাটতি নেই। রোববার যাত্রী চাপ সামলাতে আমাদের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এদিকে টিকিটের ঘাটতি না থাকায় অনেকটা স্বস্তি নিয়েই ঘরে ফিরছেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। অনেকেই অগ্রিম টিকিট বুকিং দিয়ে রাখায় পরে আসলেও ঝামেলা পোহাতে হয়নি। লঞ্চের সংখ্যা বাড়ানোয় যাত্রীরা ঘাটে এসেও টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন। টার্মিনাল এলাকাতেও তেমন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছেনা যাত্রীদের।

এদিকে যাত্রীদের নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দিতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ)। আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে লঞ্চ চলাচল করবে বলা জানানো হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত বয়া-জ্যাকেটের ব্যবস্থাও রয়েছে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিওটিএ কর্তৃপক্ষ।


ঈদুল আজহার জামাত: কখন, কোথায়

ফাইল ছবিটি সংগৃহীত
আপডেটেড ১৬ জুন, ২০২৪ ১৩:৩৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

পবিত্র ঈদুল আজহা মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। দুই রাকাত ঈদের ওয়াজিব নামাজ ছয়টি অতিরিক্ত ওয়াজিব তাকবিরসহ আদায় করতে হয়।

মূলত ঈদুল আজহার নাজাম আদায়ের পরই পশু কোরবানি দেবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। ইসলামধর্মে কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব।

পবিত্র ঈদুল আজহায় জামাতে নামাজ আদায় করে থাকেন মুসলিমরা। সারা দেশে বিভিন্ন ঈদগাহ ময়দানে নামাজ আদায় হয়ে থাকে।

রাজধানী ঢাকার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহে সকাল সাড়ে ৭টায় ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জাতীয় ঈদগাহে প্রধান ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করবেন। তবে আবহাওয়া প্রতিকূল হলে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৭টার পরিবর্তে সকাল ৮টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, সংসদ সদস্য, সিনিয়র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং উচ্চপদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ঈদের নামাজ আদায় করবেন বলে জানা গেছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় জাতীয় ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় ঈদগাহে মহিলাদেরও ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে।

প্রতি বছরের মতো এবারও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে ঈদের ৫টি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৭টা, সকাল ৮টা, সকাল ৯টা, সকাল ১০টায় এবং ১০টা ৪৫ মিনিটে ঈদের জামাত হবে।

বায়তুল মোকাররম মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ হাফেজ মাওলানা এহসানুল হক প্রথম জামাতে এবং হাফেজ মাওলানা মুহীউদ্দিন কাসেম দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করবেন। তৃতীয় জামাতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির মাওলানা আবু সালেহ পাটোয়ারী, চতুর্থ জামাতে মিরপুরের জামেয়া আরাবিয়ার মুহতামিম মাওলানা সৈয়দ ওয়াহিদুজ্জামান এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ইমামতি করবেন।

তাদের কেউ অনুপস্থিত থাকলে বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন হাই কোর্ট মাজার মসজিদের ইমাম হাফেজ মো. আশরাফুল ইসলাম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদে দুটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল ৮টা, দ্বিতীয় জামাত সকাল ৯টায় জামাত হবে। সলিমুল্লাহ মুসলিম হল মসজিদে সকাল ৭টায়, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলে সকাল ৮টায় ও ফজলুল হক মুসলিম হলের পূর্ব পাশের খেলার মাঠে সকাল ৮টায় জামাত হবে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) খেলার মাঠে সকাল ৭টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। আজিমপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকার বায়তুন নূর জামে মসজিদে জামাত হবে সকাল ৮টায়।

পুরান ঢাকার লালবাগ শাহী মসজিদে ঈদ জামাত সকাল ৮টা ও ৯টায়। আজিমপুর ছাপরা মসজিদ সকাল সাড়ে ৭টায়, সাড়ে ৮টায় ও সাড়ে ৯টায় আর কবরস্থান মসজিদে সকাল ৭টায়, ৮টায়, ৯টায় ও ১০টায় পরপর হবে চারটি জামাত।

গুলশান সেন্ট্রাল মসজিদ অ্যান্ড ঈদগাহে তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল ৬টায়, দ্বিতীয় জামাত সকাল সাড়ে ৭টায় এবং তৃতীয় জামাত ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। ধানমন্ডির সোবহানবাগ মসজিদে সকাল ৮টায়, ধানমন্ডির ৩ নম্বর রোডের এনায়েত মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায়, ৭ নম্বর রোডের বাইতুল আমান মসজিদে সকাল ৮টায়, ১২ এ রোডের তাকওয়া মসজিদে সকাল ৮টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

মিরপুর-১২ এর হারুণ মোল্লাহ ঈদগাহ, পার্ক ও খেলার মাঠে সকাল ৭টায় ও রাজধানীর পল্লবী থানার ২ নম্বর ওয়ার্ডের হারুণ মোল্লাহ ঈদগাহ মাঠে সকাল ৭টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মারকাজুল ফিকরিল ইসলামিতে (বসুন্ধরা কমপ্লেক্স) সকাল ৭টায়, বসুন্ধরা সি ব্লকের উম্মে কুলসুম জামে মসজিদে ৭টা ১৫ মিনিটে, এফ ব্লক জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায়, জি ব্লকের বায়তুল জান্নাত জামে মসজিদে সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে, কে ব্লকের মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসায় ৭টা ৪৫ মিনিটে এবং এন ব্লকের ফকিহুল মিল্লাত জামে মসজিদে সকাল ৮টায় ঈদের জামাত হবে।

এ ছাড়া ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সারা দেশেই বিভিন্ন ঈদগাহ ও মসজিদে ঈদের জামাতের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে ঈদের দিন বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকলে স্থানীয় মসজিদে ঈদের জামাতের আলাদা প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে চট্টগ্রামের জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে সকাল সাড়ে ৭টায় প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেই সকাল ৮.১৫ মিনিটে আরেকটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে ৯টি মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।

শনিবার (১৫ জুন) জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের মাঠ পরিদর্শনকালে চট্টগ্রামের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় ঈদ জামাতের জন্য জমিয়তুল ফালাহ ঈদগাহ ময়দান সম্পূর্ণ প্রস্তুত।

এদিকে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া মাঠে দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাতের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ঈদুল আজহার জামাত নির্বিঘ্নে করতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জামাত শুরু হবে সকাল ৯টায়।

দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থাও করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। ট্রেন দুটি মুসল্লি নিয়ে ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে এসে নামাজের শেষে আবার ফিরে যাবে।

অন্যদিকে দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ-শহীদ ঈদগাহ ময়দানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঈদের নামাজ পড়তে আসেন লাখো মানুষ। পবিত্র ঈদুল আজহার নামজকে ঘিরে প্রস্তুত করা হয়েছে ঈদগাহ মাঠটি। মাঠ ও মিনার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাসহ যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। দূরের মুসল্লিদের যাতায়াত সুবিধার্থে এবারও থাকছে দুটি ঈদ স্পেশাল ট্রেন। ঈদের দিন সকাল ৮টায় গোর-এ-শহীদ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে ঈদের জামাত।

প্রতি বছরের মতো এবারও সিলেটে প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে নগরের শাহী ঈদগাহ ময়দানে। সকাল ৮টায় ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে। নামাজের আগে আলোচনা করবেন বন্দরবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোশতাক আহমদ খান এবং নামাজে ইমামতি ও নামাজ শেষে দোয়া পরিচালনা করবেন একই মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মুফতি আবু হোরায়রা নোমান।

বরিশাল নগরীর ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে হেমায়েত উদ্দিন কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে সকাল ৮টায়। সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ঈদগাহে নামাজ আদায় করবেন। এছাড়া বরিশালে বড় দুটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে চরমোনাই মাদ্রাসা মাঠে এবং পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার শর্ষিনা মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে।

নগরীর কয়েকটি মসজিদে দুটি করে ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এবাদুল্লাহ, কশাই এবং বায়তুল মোকাররম মসজিদে প্রথম জামাত সকাল ৮টা ও দ্বিতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। নগরীর আমতলার মোড় মডেল মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৮টায়।

এদিকে জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় জামাত হওয়া চরমোনাই মাদ্রাসা মাঠে সকাল ৮টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এখানে জামাতে ইমামতি করবেন চরমোনাইর পীর মুফতি সৈয়দ মো. রেজাউল করিম।

এছাড়া পিরোজপুরের শর্ষিনা মাদ্রাসা মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৮টায়। এখানে ইমামতি করবেন ছারছিনার পীর শাহ মো. মুহিব্বুল্লাহ।

ঝালকাঠির নেছারাবাদ জামে মসজিদে সকাল ৮টায়। এখানে ইমামতি করবেন মাওলানা খলিলুর রহমান। উজিরপুরের গুঠিয়া বায়তুল আমান জামে মসজিদে জামাত হবে সকাল ৮টায়।


জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করবেন রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহে প্রধান ঈদের জামাতে সর্বস্তরের মুসল্লিদের সঙ্গে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, রাষ্ট্রপতি তার পরিবারের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহার নামাজ জাতীয় ঈদগাহে সকাল সাড়ে ৭টায় আদায় করবেন।

রাষ্ট্রপতি ঈদগাহে পৌঁছালে প্রধান বিচারপতি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রসহ সংশ্লিষ্টরা তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন।

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, সংসদ সদস্য, সিনিয়র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং উচ্চপদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ঈদের নামাজ আদায় করবেন।

নামাজ শেষে রাষ্ট্রপ্রধান ঈদগাহে মুসল্লিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। তবে প্রতিকূল আবহাওয়া বা অন্য কোনো কারণে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করা সম্ভব না হলে রাষ্ট্রপতি সকাল ৮টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদের নামাজ আদায় করবেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় জাতীয় ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় ঈদগাহে নারীদের জন্য ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে।

নামাজ শেষে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ও তার সহধর্মিণী ড. রেবেকা সুলতানা সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বঙ্গভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

বঙ্গভবনের ক্রিডেনশিয়াল হলে গণমাধ্যমের মাধ্যমে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাবেন তিনি। পরে রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাবেন।


‘কৃষকের ভাগ্য নিয়েও ছিনিমিনি খেলেছিল খালেদা জিয়া’

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে শুধু জনগণের ভোট চুরি না, কৃষকের ভাগ্য নিয়েও ছিনিমিনি খেলেছিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গণভবনে কৃষক লীগের উদ্যোগে ‘বৃক্ষরোপণ ২০২৪’ কর্মসূচি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আজ শনিবার তিনি এসব কথা বলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত নির্ভর করে কৃষির ওপর। আমাদের অর্থনীতি কৃষি নির্ভর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন। স্বাধীনতার পর পরই তিনি সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। কৃষিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন তার ফলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছিল। যখন তিনি এই ঘুনেধরা সমাজ ভেঙে নতুন সমাজ গড়ার পদক্ষেপ নেন এবং বাংলাদেশকে সম্পূর্ণভাবে আত্মমর্যাদাশীল করে গড়ে তোলার বিপ্লবের কর্মসূচি ঘোষণা দেন। আমাদের দুর্ভাগ্য সেই সময় জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

সরকারপ্রধান বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা শুধু মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে তা নয়, এ দেশের গণতান্ত্রিক ধারাটাকেই নষ্ট করেছিল। আজ ভোটের অধিকারের কথা বলে... আমার খুব হাসি পায় যখন দেখি বিএনপি ভোটের কথা উচ্চারণ করে, নির্বাচনের কথা বলে।

তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে ভোটের সমস্ত অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তার সেই হ্যাঁ/ না ভোট দিয়ে যাত্রা শুরু। অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধ করার জন্য। ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে যে দল গঠন করে তাকে জিতিয়ে আনার জন্য ভোট চুরির একটা প্রক্রিয়া এ দেশে শুরু করেছিল। জিয়াউর রহমানের পরে তারই পদ অনুসরণ করেই ক্ষমতা আসে এরশাদ। এ দেশের কৃষক শ্রমিকরা সব সময় অবহেলিতই থেকে যায়।

ভোট চুরি করে কেউ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে একটা প্রহসনের নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করে। মাত্র ২২ পার্সেন্ট ভোট পড়েছিল সেখানে। অধিকাংশ সরাসরি নির্বাচনে, কোনো প্রতিপক্ষ ছিল না। জনগণের ভোট চুরি করলে কেউ কিন্তু ক্ষমতায় থাকতে পারে না। বাংলাদেশের জনগণ এই ব্যপারে খুব সচেতন।


সন্ধ্যার মধ্যে ছয় জেলায় ঝড়ের আশঙ্কা

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ছয় জেলার ওপর দিয়ে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস। আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেয়া এক পূর্বাভাসে এ কথা জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রংপুর, বগুড়া, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, কুমিল্লা এবং সিলেট জেলার ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ সময় বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে আবহাওয়া অফিসের অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। এ অবস্থায় দেশের সব বিভাগে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।

এর মধ্যে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। ঝড়বৃষ্টির এ প্রবণতা সপ্তাহজুড়েই অব্যাহত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


ঈদ যাত্রায় সড়কে ভোগান্তি, সময় মতো যাচ্ছে ট্রেন

প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ পালন করতে ঘরমুখো মানুষ। ছবি: সৈয়দ মাহামুদুর রহমান
আপডেটেড ১৫ জুন, ২০২৪ ০০:১৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

আর মাত্র এক দিন পরেই পালিত হবে মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। তাই পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে নাড়ির টানে রাজধানী ছেড়ে বাড়ি ফিরছে লাখ লাখ মানুষ।

শেষ মুহূর্তের ভিড় আর দুর্ভোগ এড়াতে বৃহস্পতিবার থেকেই অনেকে ঢাকা ছাড়তে শুরু করলেও গতকাল শুক্রবার থেকে ছুটি শুরু হওয়ায় এদিন সকাল থেকেই সড়ক ও রেলপথে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে। আর স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে যানবাহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় গতকাল ভোর থেকেই বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্তে, পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে ঘরমুখো মানুষের কর্ম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

তবে আগের দুই দিনের তুলনায় গতকাল কমলাপুর রেলস্টেশনেও যাত্রীদের ভিড় বেশি দেখা গেছে। তবে নেই ট্রেনের বিলম্ব যাত্রা, নির্দিষ্ট সময়ে ছেড়ে যাচ্ছে ট্রেন। গত কয়েক দিনের তুলনায় আবহাওয়া ঠাণ্ডা থাকায় সব মিলিয়ে ট্রেনে আজকের ঈদযাত্রা স্বস্তির বার্তা দিচ্ছে। তবে শুধু তিতাস কমিউটার ট্রেনটি দেড় ঘণ্টা বিলম্বে স্টেশন ছেড়েছে।

এর আগে ঈদযাত্রার প্রথম দিন বুধবার একাধিক ট্রেন বিলম্বে ছাড়ার ঘটনায় বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছিল যাত্রীদের৷ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন ছেড়ে গেলেও বিকেলে কয়েকটি ট্রেন বিলম্বে ছাড়ে।

গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে মোট ১১টি ট্রেন ছেড়ে গেছে। সবকটি ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ে স্টেশন ছেড়েছে। সময়মতো ট্রেন ছাড়ায় স্বস্তি ফিরেছে যাত্রীদের মধ্যে।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার জানান, আজকে সব ট্রেনই সময়মতো স্টেশন ছেড়ে গেছে। কোনো ট্রেনই বিলম্বে যাত্রা করেনি। নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে যাত্রীরা বাড়ি ফিরতে পারছে।

এদিকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপ্রান্ত থেকে টাঙ্গাইলের রাবনা বাইপাস পর্যন্ত ২০ কিলোমিটারজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ ও পরিবহন শ্রমিকরা জানান, অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ, কয়েকটি ছোটখাটো দুর্ঘটনা ও চালকরা বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাজেদুর রহমান বলেন, ‘ভোরে কালিহাতী উপজেলার পৌলীতে সিমেন্টবোঝাই একটি ট্রাক রাস্তার ওপর উল্টে গেলে পরিস্থিতির অবনতি হয়। এ ছাড়া গাড়িগুলো সার্ভিস লেন ব্যবহারের কারণে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। তবে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে কাজ করছে পুলিশ। দ্রুততম সময়ের মধ্যে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’

স্বাভাবিক সময়ে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে উত্তরের ১৬টিসহ মোট ২১টি জেলার প্রায় ১২ থেকে ১৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে; কিন্তু ঈদের সময় এই সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এতে বিপুল সংখ্যক গাড়ি এক সঙ্গে সেতু পার হতে গিয়ে বাধে বিপত্তি। সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের।

এদিকে এক দিনে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ৩ কোটি ২১ লাখ ৯৭ হাজার ৩০০ টাকা টোল আদায় করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ এবং এর বিপরীত ৪০ হাজার ৯০৬ টি যানবাহন পারাপার হয়। তার মধ্যে কোরবানি পশু ও পণ্যবাহী পরিবহন বেশি পারাপার হয়েছে।

গতকাল সকালে বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বুধবার রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ৩ কোটি ২১ লাখ ৯৭ হাজার ৩০০ টাকা টোল আদায় করেছে সেতু এবং এর বিপরীত ৪০ হাজার ৯০৬টি যানবাহন পারাপার হয়েছে।

দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত পদ্মা সেতুর মাওয়া দিয়েও ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে। ফলে মাওয়া টোল প্লাজা থেকে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়।

পদ্মা সেতুতে যানবাহনের লাইন মাওয়া টোল প্লাজা থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে শ্রীনগর ছাড়িয়ে গেছে। সেতুর টোল প্লাজার মোটরসাইকেল বুথ ছাড়াও ৭টি বুথে টোল নিয়েও কুলিয়ে উঠতে পারছেন না দায়িত্ববানরা।

ট্রাফিক ইন্সপেক্টর জিয়াউল ইসলাম জানান, সেতুর মাওয়া প্রান্তের ওজন স্টেশনের লোকজনের অবহেলার কারণে অনেক ট্রাক জমে মূল রাস্তা বন্ধ হয়ে যানজটে কারণ হয়।

সেতুর টোল প্লাজার মোটরসাইকেল বুথ ছাড়াও ৭টি বুথে টোল নিয়েও হিমশিম খেতে হচ্ছে। সকালে বেশি চাপের কারণে মোটরসাইকেল বুথ বাড়িয়ে দুটি করা হয়। তবে বেলা বাড়ার পর অন্য যান সামাল দিতে বাইকের বুথ আবার একটিতেই নামিয়ে আনা হয়।

তবে চলন্ত গাড়িতে টোল আদায়ে ১১ মাস আগে পরীক্ষামূলক শুরু হওয়া ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন সিস্টেম (ইটিসি) এখনো পুরোপুরি চালু করা যায়নি। তাই মিলছে না এর সুফল।

সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, ঈদে ঘরমুখো মানুষের নির্বিঘ্ন যাতায়াত নিশ্চিতের সব চেষ্টা চলছে। তবে ঈদের আগে ছুটির দিন হওয়ায় একযোগে বেশি যানবাহনের চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী (টোল) রাজন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ঈদের ৫ দিনের ছুটির প্রথম দিনে স্বাভাবিকভাবেই চাপ বেশি। চাপ সামাল দেওয়ার নিরলস চেষ্টা চলছে।

গত বছরের ২০ এপ্রিল থেকে পদ্মা সেতুতে দ্বিতীয় দফায় বাইক চলাচল শুরু হয়। এর আগে ২০২২ সালের ২৬ জুন খুলে দেওয়া হলে বাইক দুর্ঘটনায় দুই যুবক নিহত হয়। এতে কর্তৃপক্ষ সেতু দিয়ে বাইক চলাচল নিষিদ্ধ করে। পরে অবশ্য আবার বাইক চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

একই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কেও। গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় চলছে ধীরগতিতে। মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে থেমে থেমে চলছে গাড়িগুলো। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

গতকাল সকালের দিকে গাড়ির চাপ কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়ছে। জুমার নামাজের পর গাড়ির চাপ তীব্র আকার ধারণ করেছে। মহাসড়কের উভয় লেনে একই দৃশ্য দেখা গেছে।

কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে শুরু করে পদুয়ার বাজার পর্যন্ত বেশ থেমে থেমে চলছে গাড়িগুলো। বেলা ১১টার দিকে চান্দিনা অংশে বেতন-বোনাসের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেন গার্মেন্টশ্রমিকরা। ফলে ১০-১২ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে ঘণ্টা দুয়েক পর অবরোধ তুলে নিলে যানজট কমতে থাকে। তবে হঠাৎ গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় ধীরগতিতে চলতে হয়।

দাউদকান্দি হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুল আলম, ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম এবং ময়নামতি হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার দৈনিক বাংলাকে বলেন, জুমার নামাজের পর মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে। চান্দিনায় শ্রমিকদের অবরোধের ফলে সৃষ্ট জটলা না থাকলেও গাড়ি যাচ্ছে ধীরগতিতে।

হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার খাইরুল আলম দৈনিক বাংলাকে বলেন, যান চলাচল স্বাভাবিক করতে পুলিশের সমন্বিত ইউনিট কাজ করছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে যান চলাচল স্বাভাবিক হবে।

পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ঈদযাত্রায় নেই ভোগান্তি

ঈদযাত্রায় ভোগান্তি ছাড়া ফেরি-লঞ্চ পার হতে পাড়ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীরা। ঢাকাগামী পশুবাহী ট্রাক পারাপারও হচ্ছে নির্বিঘ্নে। ঘাটের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও যানজট এড়াতে মোতায়েন আছে বাড়তি পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। ঈদ উপলক্ষে ছোট-বড় ফেরির সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটের যাত্রীবাহী যানবাহন পারাপার বেশ কমে গেছে। কমেছে যাত্রী ভোগান্তিও। তবে ঈদ উপলক্ষে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রী, যানবাহন ও পশুবাহী ট্রাক নির্বিঘ্নে পারাপার করতে আগে থেকেই নানান প্রস্তুতি নিয়েছিল ঘাট কর্তৃপক্ষ।

এরই মধ্যে ঈদযাত্রায় পাটুরিয়া ঘাটে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। তবে চাপ বাড়লেও কোনো রকম ভোগান্তি ছাড়াই ফেরি-লঞ্চ পারাপার হচ্ছে। যাত্রীবাহী বাস, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসগুলো অনায়াসেই ফেরিতে উঠে যাচ্ছে। এতে স্বস্তিতে যাত্রী ও যানবাহন শ্রমিকরা।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) ডিজিএম খালেদ নেওয়াছ বলেন, ‘ঈদে ঘরমুখো যাত্রী ও যানবাহনগুলো নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে পারাপারের জন্য ফেরির সংখ্যা বাড়িয়ে ২০টি করা হয়েছে। এ জন্য দুর্ভোগ ছাড়াই যাত্রী ও যানবাহনগুলো পারাপার হচ্ছে।’

পুলিশ সুপার মো. গোলাম আজাদ খান বলেন, ঘাটের শৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স কাজ করছে। পাশাপাশি পশুবাহী ট্রাকগুলো যেন ঘাটে কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়া নির্বিঘ্নে ঢাকার কোরবানির হাটে যেতে পারে সে ব্যাপারে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।


‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল করেছ দান’

আপডেটেড ১৫ জুন, ২০২৪ ০০:০৩
সৈয়দ আফজাল হোসেন

ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। ঋতুচক্রের বৈচিত্র‍্য অনুযায়ী প্রতি দুই মাস পর পর ঋতুর পরিবর্তন হয়। এই নিয়মেই আষাঢ় ও শ্রাবণ দুই মাস বর্ষাকাল। সে হিসেবে আজ বর্ষাকালের প্রথম দিন- পহেলা আষাঢ়। আর বর্ষা ঋতুর প্রধান অনুষঙ্গ হচ্ছে বৃষ্টি। তাই তো কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার কবিতায় বর্ষাকে বরণ করেছেন এভাবে: ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশ ছেয়ে, আসে বৃষ্টির সুবাস বাতাস বেয়ে’।

গ্রীষ্মের তীব্র তাপপ্রবাহের পরে আষাঢ়-শ্রাবণের অঝোর বারিধারা প্রকৃতিতে অনেকটা স্বস্তি বয়ে আনে। বৃষ্টির জলে অবগাহন করে মানব মনে, বিশেষ করে তরুণ-তরুণী ও কিশোর-কিশোরীদের মাঝে প্রাণের সঞ্চার ঘটে এবং আবেগ, অনুভূতি ও অফুরন্ত আনন্দের শিহরণ জাগে। মেঘের তর্জন-গর্জন, গুড়ুম গুড়ুম বজ্রধ্বনি, টিনের চালে রিমঝিম রিমঝিম বৃষ্টি পতনের শব্দ মানুষের মনকে যেন ছন্দময় করে তোলে। মেঘ আর রোদের খেলায় বর্ষায় বাংলার প্রকৃতিতে এক চমৎকার নৈসর্গিক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়!

এ সময় বাংলাদেশের নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর-ডোবাসহ অন্যান্য জলাশয় পানিতে টইটুম্বর হয়ে যায়। অথৈ জলে পরিপূর্ণ নদীর উথাল-পাথাল ঢেউয়ের মাঝে পালতোলা নৌকা চালানোর সময় মাঝিরা গলাছেড়ে মায়াবী সুরে গাইতে থাকে আবহমান বাংলার ভাওয়াইয়া-ভাটিয়ালি গান। যে গানের মধ্য দিয়ে তাদের জীবনের যত সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, বিরহ-বেদনার কথা ধ্বনিত হয়।

বর্ষার জলে পানকৌড়ির ডুবসাঁতারের লুকোচুরি খেলা, পুকুরপাড়ের ঝোপঝাড়ে লেজ দুলিয়ে ডাহুক পাখির তিড়িং-বিড়িং করে হেঁটে চলা, কুয়ার জলে অবিরাম কোলা ব্যাঙ ডাকার ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর শব্দ, পেখম মেলে ময়ূরের মনোমুগ্ধকর নৃত্য যে কাউকেই বিমোহিত ও বিমুগ্ধ করে।

বর্ষা আর কদম ফুল যেন একে অপরের পরিপূরক। মনে হয় যেন কত শত ভালোবাসার অনুরাগে গাছে গাছে ফুটে উঠেছে কোমল-নরম তুলতুলে কদম ফুল। এ ছাড়াও এ সময় গ্রামবাংলার বিল-ঝিলে ফোটে কত না শাপলা-শালুক আর রঙিন পদ্ম ফুল।

বর্ষা আর বৃষ্টি কবিমনকে ভাবের আবেগে উদ্বেলিত ও রোমাঞ্চিত করে। কেননা, বর্ষা হচ্ছে সবচেয়ে আবেগময়, কাব্যময় ও প্রেমময় ঋতু। বিশ্বের প্রায় সকল কালের, সকল যুগের, সকল ভাষার কবির কবিতায় নানাভাবে বর্ষা বা বৃষ্টির বন্দনা করা হয়েছে। বাংলা সাহিত্যেও অন্য যেকোনো ঋতুর চেয়ে বর্ষার প্রভাব সবচেয়ে বেশি। বাংলা গল্প, উপন্যাস, নাটক, কবিতা, গান ও চিত্রশিল্পে বর্ষার রূপ-মাধুর্য ও সৌন্দর্য নানাভাবে বর্ণিত হয়েছে। এমনকি গ্রামবাংলার রমণীদের নকশিকাঁথার ফোঁড়ে ফোঁড়ে বর্ষার অনিন্দ্যসুন্দর ও অপরূপ রূপের চিত্র ফুটে ওঠে।

তবে বর্ষাকে নিয়ে যত সাহিত্য রচিত হয়েছে, তার অধিকাংশেরই মূল উপজীব্য হচ্ছে বিরহগাথা। বর্ষার বাদলধারার সঙ্গে আহত হৃদয়ের বোবাকান্না যেন ঝরে পড়ে বেদনাশ্রু হয়ে। আর তাই বর্ষাকে বিরহের কালও বলা হয়ে থাকে।

বাংলা সাহিত্যের প্রাণপুরুষ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে স্বভাব কবি গোবিন্দচন্দ্র দাস, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, পল্লীকবি জসীম উদ্‌দীন এবং রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশসহ প্রায় সব কবিই বর্ষা দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রিয় ঋতু ছিল বর্ষা। তাই তার কবিতা ও গানে বর্ষাকে উপস্থাপন করেছেন নানা আঙ্গিকে। অসংখ্য গান-কবিতায় মানবজীবনে বর্ষার চিরায়ত প্রভাবকে গভীর ব্যঞ্জনায় তুলে ধরেছেন। ‘এমন দিনে তারে বলা যায়/ এমন ঘনঘোর বরিষায়’ কিংবা ‘গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা, কূলে একা বসে আছি, নাহি ভরসা’ অথবা ‘নীল নবঘনে আষাঢ় গগনে তিল ঠাঁই আর নাহি রে/ ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে’- এসব কবিতায় তিনি বর্ষাকে চিত্রিত করেছেন আবেগ আর অনুভূতির মাধুর্য দিয়ে।

এ ছাড়াও ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল করেছ দান/আমি দিতে এসেছি শ্রাবণের গান’- কবিগুরু এমনিভাবে গানে গানে বর্ষাকে অভিবাদন জানিয়েছেন। তার ‘বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর’ ছড়াটি পড়ে মনের অজান্তেই সবাই ফেলা আসা মধুর দুরন্তপনার শৈশবে ফিরে যায়।

‘বর্ষা বিদায়’ কবিতায় কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন: ‘ওগো বাদলের পরী/ ব্যথা ক’রে বুক উঠিবে না কভু সেথা কাহারেও স্মরি?’ তিনি আরও গেয়েছেন: ‘বর্ষা ঋতু এলো এলো বিজয়ীর সাজে/ বাজে গুরু গুরু আনন্দ-ডমরু অম্বর মাঝে/(বাঁকা) বিদ্যুৎ তরবারি ঘন ঘন চমকায়।’

মাইকেল মধুসূদন দত্ত ‘বর্ষাকাল’ কবিতায় লিখেছেন: ‘গভীর গর্জন করে সদা জলধর/ উথলিল নদ-নদী ধরনীর উপর/ রমণী রমন লয়ে, সুখে কেলি করে/ দানবাদি দেব, যক্ষ সুখিত অন্দরে।’

বর্ষা বা বৃষ্টির সঙ্গে বিরহবিধুর মানবমনের আকুলতা ও অনুরাগের গভীরতার সম্মিলন ঘটিয়ে রচিত… ‘এই মেঘলা দিনে একলা ঘরে থাকে না তো মন/ কাছে যাবো কবে পাবো ওগো তোমার নিমন্ত্রণ’, ‘এমনি বর্ষা ছিল সেদিন/ শিয়রে প্রদীপ ছিল মলিন/ মনে কি পড়ে প্রিয়’, ‘ওগো বৃষ্টি আমার চোখের পাতা ছুঁইয়ো না/ আমার এত সাধের কান্নার দাগ ধুয়ো না’, ‘আষাঢ় শ্রাবণ মানে না তো মন/ ঝর ঝর ঝর ঝর ঝরেছে/ তোমাকে আমার মনে পড়েছে’ কিংবা ‘আজ এই বৃষ্টির কান্না দেখে মনে পড়লো তোমায় অশ্রুভরা দুটি চোখ’… গানগুলো সংগীতপিপাসু মানুষের মুখে মুখে প্রতিনিয়তই ধ্বনিত হয়।

কথাসাহিত্যিক হ‍ুমায়ূন আহমেদও বর্ষাকে নিয়ে কয়েকটি গান রচনা করেছেন। তার লেখা: ‘যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো এই বরষায়’ গানটিতে আবেগ, ভালোবাসা ও হৃদয়ের গভীর আকুলতা অনবদ্যভাবে তুলে ধরেছেন।

আষাঢ়ের প্রথম দিনটিকে প্রাচীন যুগের কবি কালিদাস অমর করে রেখেছেন তার অমর সৃষ্টি ‘মেঘদূতম’ কাব্যটির মাধ্যমে। সংস্কৃত ভাষায় রচিত মেঘদূত কাব্যের মূল সুর বিরহের। রামগিরি পাহাড়ে নির্বাসিত এক অভিশপ্ত যক্ষের প্রিয়াবিরহ এই কাব্যের মূল উপজীব্য।


৩৬ শতাংশ পুরুষ বয়স হলেও এখনো বিয়ে করেনি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বয়স হওয়ার পরও বিয়ে করেনি ৩৫.৮ শতাংশ পুরুষ। আর এ জন্যই দেশে নারীর তুলনায় অবিবাহিত পুরুষের সংখ্য ১৪ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ নারী প্রাপ্তবয়স্ক হয়েও এখনো বিয়ে করেনি।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস-২০২৩’-এর প্রকাশিত ফলাফলে এমন তথ্য উঠে এসেছে। সম্প্রতি বিবিএসের ওয়েবসাইটে জরিপ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

অবিবাহিত পুরুষের সংখ্যা যেমন নারীর চেয়ে বেশি, তেমনি নারীর চেয়ে পুরুষের একাধিক বিয়ে করার হারও বেশি। একবারের বেশি বিয়ে করেছেন এমন পুরুষের হার প্রায় ৪ শতাংশ, আর নারীর ক্ষেত্রে এটি ১ শতাংশের বেশি।

বিপত্নীক হিসেবে ১ শতাংশের কিছু বেশি পুরুষ একা জীবনযাপন করছেন। অন্যদিকে নারীদের বিধবা হিসেবে জীবনযাপনের হার প্রায় ৯ শতাংশ।

পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, দেশে পুরুষদের প্রথম বিয়ের গড় বয়স ২৪ দশমিক ২ বছর। আর নারীদের ১৮ দশমিক ৪ বছর। প্রতি হাজার জনসংখ্যায় অভ্যন্তরীণ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে পল্লীতে আগমনের হার ২০ দশমিক ৪ শতাংশ এবং শহরে আগমনের হার ৪৩ দশমিক ৪ শতাংশ। তবে মৃত্যু হারে এগিয়ে পুরুষ। ২০২৩ সালে প্রতি হাজারে পুরুষের মৃত্যুর হার ৬ দশমিক ১ শতাংশ। আর সেখানে নারীর মৃত্যুর হার ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।

প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, দেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ১ হাজার ১৭১ জন। এ ছাড়া প্রতি হাজার জনসংখ্যায় স্থূল জন্মহার ১৯ দশমিক ৪, যা ২০২২ সালে ছিল ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ।


banner close