ঢাকায় কোনো কাঁচা বস্তি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থাকবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘সুন্দর পরিবেশে সবাই বসবাস করবে। সেই ব্যবস্থা করে দেবো। এই পদক্ষেপও আমরা নিয়েছি। মানুষের কল্যাণে কাজ করা, এটাই আমাদের লক্ষ্য। এই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করি।’
পুড়ে যাওয়া বঙ্গবাজারের স্থানে ১০তলা বঙ্গবাজার পাইকারি মার্কেট, শাহবাগে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু উদ্যানের আধুনিকায়নসহ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের চারটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আজ শনিবার সকালে এসব কথা বলেন তিনি।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য ফ্ল্যাট করে দিচ্ছি। বস্তিবাসীদের জন্য ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করে দিচ্ছি। যে বস্তিতে যেরকম ভাড়া সেরকম ভাড়াই দেবে। কিন্তু তারা ফ্ল্যাটে থাকবে। শুধু বড়লোকেরাই ফ্ল্যাটে থাকবে সেটা হতে পারে না, আমাদের রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে দিন মজুররাও ফ্ল্যাটে থাকবে। স্বল্প ভাড়া, কেউ যদি প্রতিদিন ভাড়া দিতে চায়, সেই ব্যবস্থা আছে। কেউ যদি সাত দিনের ভাড়া দিতে চায়, সে ব্যবস্থা আছে। কেউ মাসের ভাড়া দিতে চাইলে সে ব্যবস্থাও হবে। আমরা ইতিমধ্যে ৩০০ পরিবার তুলেছি।’
পরিবেশ রক্ষার গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের এক টুকরো জমি আছে তারা একটা ফুলের গাছ, একটা ফলের গাছ হলেও লাগান। যাদের গ্রামের বাড়ি আছে সেখানে যেন অনাবাদি জমি না থাকে সেই দিকে দৃষ্টি দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। এতে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা-৮ আসনের এমপি আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। স্বাগত বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব মুহম্মদ ইব্রাহিম।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর ও আন্তরিকভাবে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে চীন। সোমবার বিকালে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘চীন আশা প্রকাশ করেছে যে, তারা বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে আরও বেশি আন্তরিকতা, নিষ্ঠা, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে কাজ করবে।’
ফখরুলের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের বিএনপির প্রতিনিধিদলের সাম্প্রতিক চীন সফরের পর বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সফর নিয়ে ফখরুল বলেন, বিএনপি দল চীনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেছে। বলেন, ‘আমরা এই প্রকল্প সম্পর্কে আমাদের চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেছি এবং তারা ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছে।’
তিনি বলেন, চীনা পক্ষ এখনো তিস্তা নদীর পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। ‘ভবিষ্যতে যদি আমাদের সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পাই এবং তারা(চীন) যদি এই প্রকল্পের প্রস্তাব দেয়—তাহলে আমরা মনে করি আমরা এটি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করব।’
ফখরুল বলেন, বিএনপি প্রতিনিধিদল মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ, স্বেচ্ছায় এবং মর্যাদাপূর্ণভাবে তাদের মাতৃভূমিতে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে চীনকে আরও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছে।
তিনি বলেন, চীনা কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার সরকারকে রাজি করানোর জন্য তাদের আন্তরিক প্রচেষ্টার আশ্বাস দিয়েছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, তাদের সফর দুই ‘ভ্রাতৃপ্রতিম’ দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উন্নত ও জোরদার করার জন্য একটি পথ খুলে দিয়েছে—ভবিষ্যতে এই বন্ধন আরও দৃঢ় হবে বলেও তিনি আশা করেন।
এর আগে ২২ জুন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) আমন্ত্রণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের বিএনপির প্রতিনিধিদল পাঁচ দিনের জন্য চীন সফর করে।
বিএনপির প্রতিনিধিদলের অন্য আট সদস্য ছিলেন—বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বেগম সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন, ইসমাইল জবিউল্লাহ, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, দলের মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ড. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার।
সফরকালে ফখরুল বলেন, বিএনপির প্রতিনিধিদল সিপিসির জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং দ্বিপক্ষীয় বিষয় এবং সিপিসি ও বিএনপির মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো আন্তোনিও রুবিও।
আজ সোমবার (৩০ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তারা এই ফোনালাপ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি জানান, অধ্যাপক ইউনূস ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ১৫ মিনিট ধরে ফোনালাপ করেন।
এসময় তারা অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ, আন্তরিক ও গঠনমূলক আলোচনা করেন, যা দুদেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে তুলে ধরে।
দেশের বায়ুদূষণ রোধে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
সোমবার (৩০ জুন) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে চীনের একদল বায়ুদূষণ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা জানান, শীত আসার আগেই রাজধানীর সব কাঁচা ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার সংস্কারকাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ধুলা দূষণ কমাতে রাস্তায় মাটি ঢেকে দেওয়া ও পানি ছিটানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া ‘জিরো সয়েল’ নীতি কার্যকর, মাটি শক্তকরণ ও পানি ছিটানোর গাড়ি ব্যবহারের পরিকল্পনাও রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘শহুরে বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ পুরনো ও উচ্চমাত্রার ধোঁয়া নির্গমনকারী যানবাহন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) পুরনো যানবাহন অপসারণ ও নতুন ২৫০টি পরিবেশবান্ধব যানবাহন যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ ছাড়া, নির্গমন মান বজায় রাখতে ১০টি স্বয়ংক্রিয় যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র স্থাপন করবে বিআরটিএ।’
দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের লক্ষ্যে চীনা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, ‘সঠিক তথ্য ও বিশ্লেষণ ছাড়া কার্যকর নীতিমালা তৈরি সম্ভব নয়। এজন্য একটি উন্নত বায়ু নির্গমন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা স্থাপন, বৈশ্বিক মান অনুসারে নির্গমন মান উন্নয়ন, স্যানিটারি ল্যান্ডফিল ও বর্জ্য ইনসিনারেশন প্ল্যান্ট চালু ও রান্নার জন্য এলপিজি ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনা গ্রহণে কর প্রণোদনাও বিবেচনায় রয়েছে।’
উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রকল্পের আওতায় উচ্চ দূষণ সৃষ্টিকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানে অব্যাহত নির্গমন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা চালু করবে পরিবেশ অধিদপ্তর এবং দেশজুড়ে প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
এদিকে, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) শহরে সড়কে বেড়া বসানো ও ৫০টি বৈদ্যুতিক যানবাহন চালুর মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব পরিবহনব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে।
জাইকা সহায়তাপ্রাপ্ত একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আটটি বাস্তবভিত্তিক বায়ু গুণমান পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে, যা প্রমাণভিত্তিক নীতিনির্ধারণে সহায়ক হবে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি বিইএসটি প্রকল্পও বাস্তবায়িত হবে।
এ সময় চীনা বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা বাংলাদেশের বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ সক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশা প্রকাশ করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘সরকারের উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট—পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করা।’
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব ড. ফাহমিদা খানম, অতিরিক্ত সচিব মো: খায়রুল ইসলাম, নানজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অনুষদের নির্বাহী ডিন অধ্যাপক ইউ ঝাও, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নানজিং-হেলসিঙ্কি ইনস্টিটিউটের উপ-ডিন অধ্যাপক হাইকুন ওয়াং এবং বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞান অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক টেংইউ লিউ, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (বায়ুদূষণ) মো. জিয়াউল হক প্রমুখ।
বৈঠকে জাতীয় নির্গমন ইনভেন্টরি ও রাসায়নিক বিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়, যা দেশের বায়ুদূষণের উৎস চিহ্নিত করে বিজ্ঞানভিত্তিক টার্গেটেড হস্তক্ষেপের ভিত্তি তৈরি করবে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সমর্থকরা একটি পুরোনো ভারতীয় ভিডিয়ো ভাইরাল করে ‘জুলাই গ্যাং কালচার’ নামে মিথ্যাচার করছে।
রোববার রাতে ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আওয়ামী লীগ সমর্থকরা দু’টি কিশোর দলের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষের একটি ভিডিয়ো সম্প্রতি ছড়িয়ে দিয়ে এটিকে ‘জুলাই গ্যাং কালচার’ বলে মিথ্যা দাবি করছে।’
ভিডিওটিতে দেখা যায়, স্কুলের পোশাক পরিহিত কিছু ছাত্র একে অপরকে চড়-থাপ্পড় দিচ্ছে ও লাথি মারছে।
বিবৃতিতে আরো জানানো হয়, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, এটি ভারতের কেরালায় ছাত্রদের দু’টি গ্রুপের মারামারির দৃশ্য, বাংলাদেশের নয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘ডিবিসি হিন্দি’ নামে একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সালে এই ভিডিওটি পোস্ট করা হয়, এর শিরোনামে লেখা ছিল, ‘কেরালার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক মারামারি ভাইরাল’।
ভিডিওর বর্ণনায়ও এটি কেরালার ছাত্রদের দু’টি গ্রুপের সংঘর্ষের দৃশ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রেস উইংয়ের মতে, ভিডিওটি নতুন নয়, এটি মূলত ২০২৩ সালের।
একই ভিডিও ভারতের ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস নাও’-এর ওয়েবসাইটেও প্রকাশিত হয়েছে। শিরোনাম ছিল-‘কেরালার রাস্তায় ছাত্রদের হতবাক করা মারামারির ভিডিও ভাইরাল। দেখুন।’
টাইমস নাওয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কেরালার রাস্তায় ছাত্রদের দু’টি পক্ষের সংঘর্ষের একটি হতবাক করা ভিডিও সামনে এসেছে। এতে অন্তত ২০ জন ছাত্র জড়িত ছিল বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে দুইজন গুরুতর আহত হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, সংঘর্ষ চলাকালে ছাত্ররা একে অপরকে চড়-থাপ্পড় ও লাথি মারছে।’
কেরালার ঠিক কোথায় ঘটনাটি ঘটেছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তবে, এটা স্পষ্ট যে এর সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই।
২০২৩ সালের একটি পুরোনো ভিডিও, যেখানে ভারতের কেরালায় ছাত্রদের সংঘর্ষ যাচ্ছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, একে ইন্টারনেটে এমন ভুয়াভাবে ছড়ানো হচ্ছে যেন এটি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ছাত্র সহিংসতার উদাহরণ। এর সঙ্গে ‘জুলাই গ্যাং কালচার’ নাম জুড়ে দেওয়া হয়েছে, যা পুরোপুরি মিথ্যা।
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ঝগড়ারচর বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিনটি দোকানের প্রায় দুই কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে।
৩০ জুন সোমবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে।
এতে মুরাদ স্টোর, শিহাব স্টোর ও অনু স্টোরের প্রায় দুই কোটি টাকার মালামাল পুড়ে আগুনে ভস্মীভূত হয়।
দোকান মালিকরা জানান, ভোরে ঘুমের ভেতর জানতে পারেন দোকানে আগুন লেগেছে। খবর পেয়ে দ্রুত দোকানে এসে দেখেন আগুন জ্বলছে। আগুনের তীব্রতা বেশি থাকায় কোন মালামাল বের করতে পারে নাই। পরে শ্রীবরদী ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে শ্রীবরদী ও পার্শ্ববর্তী জামালপুর জেলার বকশিগঞ্জ উপজেলা ফায়ারসার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। মালামাল ও দোকান ঘর সম্পূর্ণ আগুনে ভস্মীভূত হওয়ায় সবকিছু হারিয়ে পথে বসে গেছেন ব্যবসায়ীরা।
শ্রীবরদী ফায়ার সার্ভিস সাব স্টেশন অফিসার আশরাফ হোসেন জানান, সম্ভবত বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুনের সুত্রপাত হয়েছিল। খবর পেয়ে শ্রীবরদী ও বকশীগঞ্জের ফায়ার সার্ভিসে দুটি ইউনিট যৌথভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি একই এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
সোমবার (৩০ জুন) আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুকের সই করা আবহাওয়ার সামুদ্রিক সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বার্তায় বলা হয়েছে, লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এর ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
নদীবন্দরে ১ নম্বর সংকেত
এদিকে, আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব কিংবা পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়োহাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এসব এলাকার নৌবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
হাসিনা সরকারের দমনপীড়নের কারণেই শান্তিসূচকে বাংলাদেশের ব্যাপক অবনতি ঘটেছে বলে বিশ্ব শান্তিসূচক সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর ফ্যাক্টচেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম বাংলাফ্যাক্ট।
বাংলাফ্যাক্ট জানায়, বিশ্ব শান্তিসূচক সংক্রান্ত মূল রিপোর্টের দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় এক্সিকিউটিভ সামারি অংশে লেখা রয়েছে, হাসিনা সরকারের দমনপীড়নের কারণেই শান্তিসূচকে বাংলাদেশের ব্যাপক অবনতি ঘটেছে। বিশ্ব শান্তিসূচকে বাংলাদেশ ৩৩ ধাপ পিছিয়েছে, যার অন্যতম কারণ জুলাই-আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের চালানো হত্যাযজ্ঞ।
রিসার্চ টিম জানায়, অনেকে এই অবনতিকে বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলে ধরছেন এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের শিরোনাম ও ফটোকার্ড দেখে অনেক পাঠক বিভ্রান্ত হচ্ছেন। প্রকৃতপক্ষে বিশ্ব শান্তিসূচক রিপোর্টটি এ বছর প্রকাশিত হলেও এই সূচক তৈরি হয়েছে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়কাল বিবেচনা করে।
মূল রিপোর্টের দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় এক্সিকিউটিভ সামারি অংশে বাংলাদেশের সূচকের এই অবনতির কারণ হিসেবে লেখা রয়েছে, হাসিনা সরকারের দমনপীড়নের কারণেই শান্তিসূচকে বাংলাদেশের ব্যাপক অবনতি ঘটেছে।
বাংলাদেশে চলমান গুজব, ভুয়া খবর ও অপতথ্য প্রতিরোধ এবং জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ায় দায়িত্ব পালন করছে বাংলাফ্যাক্ট।
জয়পুরহাটে কালাইয়ে হিমাগারে আলু সংরক্ষণের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন শেষে ঘণ্টাব্যাপী জয়পুরহাট-বগুড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেন কৃষকরা। জেলার ২১টি হিমাগারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৩টি হিমাগার এ উপজেলায় অবস্থিত। এমনিতেই আলুর দাম না থাকায় বেকায়দায় পড়েছেন কৃষক ও আলু ব্যবসায়ীরা। গতকাল রোববার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কালাই পৌরশহরে অবস্থিত আর.বি কোল্ড স্টোরেজের সামনে আলু চাষি ও আলু ব্যবসায়ীদের ব্যানারে মানববন্ধন শেষে সড়ক অবরোধ করে সড়কে বসে পড়েন কৃষক ও আলু ব্যবসায়ীরা। এ সময় সড়কের দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। পরবর্তীতে থানার ওসি ও ইউএনও এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
একদিকে বাজারে আলুর দাম অস্থির, অন্যদিকে হিমাগারে সংরক্ষণ ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খাচ্ছেন তারা। কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হিমাগারগুলোতে আলু বিক্রির মৌসুম পুরোদমে শুরু না হতেই ভাড়া বাড়ানো এবং বাজার অস্থিরতায় জেলার অনেক কৃষক ও ব্যবসায়ী দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
কৃষক শাহাদুল ইসলাম ও আব্দুল রশিদ বলেন, এবার ৫০০ বস্তা আলু সংরক্ষণ করেছি আর.বি কোল্ড স্টোরে। ভাড়া নেওয়া হচ্ছে প্রতি বস্তা ৪৩০ টাকা। অথচ মৌসুমের শুরুতে প্রশাসনের চাপে ৩৫০ টাকা নির্ধারিত হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, পার্শ্ববর্তী বগুড়ার হিমাগারগুলোতে প্রতি বস্তা আলু সংরক্ষণের ভাড়া প্রতি বস্তা ৩৫০-৩৬০ টাকা।
কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুণ চন্দ্র রায় দৈনিক বাংলাকে বলেন, হিমাগারগুলো যে ভাড়া বাড়িয়েছেন তা অযৌক্তিক। মৌসুমের শুরুতে হিমাগার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিটিং করে গত বছরের ভাড়া পুনর্বহাল করার কথা বলা হয়েছিল এবং সবাই তা মেনেও নিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে হিমাগারগুলো অতিরিক্ত ভাড়া বেশি নেওয়া কাম্য নয়। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কালাই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামিমা আক্তার জাহান দৈনিক বাংলাকে বলেন, এখন হিমাগার থেকে আলু বাহির করার মৌসুম চলছে। আমরা ইতোমধ্যে জানতে পারি আর. বি কোল্ড স্টোরেজে আলু সংরক্ষণের যে ভাড়া তা থেকে বেশি নেওয়া হচ্ছে। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হিমাগার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দুই দফা বসা হয়েছে। গতক শনিবার দুপুরে বগুড়া-জয়পুরহাট কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের মিটিংয়ের পরে তারা সিদ্ধান্ত জানাতে চেয়েছিলেন কিন্তু তারা জানাননি।
দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের অনুরোধ এবং অর্থনীতি ও জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে কমপ্লিট শাটডাউন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো- দেশের আমদানি-রপ্তানি ও সাপ্লাই চেইন সচল রাখা। তবে একটি পূর্ণাঙ্গ ও টেকসই রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য তাদের প্রচেষ্টা ও কার্যক্রম যথারীতি অব্যাহত থাকবে বলে জানায় সংগঠনটি।
আজ রোববার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান সংগঠনের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার।
তিনি আরও জানান, এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকে গত কয়েকদিনের কর্মসূচি তথা ২৮ ও ২৯ জুন যে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি চলেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে আমদানি-রপ্তানি তথা দেশের অর্থনীতিতে যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। তা নিরসনে দেশের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের উদ্যোগ ও আলোচনাকে আমরা স্বাগত জানাই। অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু বিষয়ে ইতিবাচক প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। অন্যদিকে সরকার রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কারে যে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি গঠন করেছে সেটিকেও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ স্বাগত জানায়।
হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার বলেন, এই কমিটির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করে টেকসই রাজস্ব সংস্কারে অবদান রাখতে পারব বলে আমরা মনে করি। এমতাবস্থায় কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি। বিগত কয়েকদিনের কর্মসূচিতে আমাদের সাথে থাকার জন্য দেশবাসী, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, সিভিল সোসাইটি ও সর্বোপরি দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে অশেষ ধন্যবাদ জানাই।
সিদ্ধান্ত জানানোর আগে দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ নেতারা। আলোচনা শেষে শাটডাউন প্রত্যাহারের ঘোষণা আসে।
এদিকে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় পাঁচ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। আজ (রোববার) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা জানিয়েছেন। এর আগে আলোচনা হওয়ার কথা থাকলেও বিকেলে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে এনবিআর ঐক্য পরিষদের বৈঠক বাতিল করা হয়েছিল।
আজও এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ ও সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে রাজস্ব খাতের সংস্কারে দাবিতে কমপ্লিট শাট ডাউন ও মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি পালন করে আন্দোলনরত কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ের সবগুলো গেট বন্ধ রেখে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের সশস্ত্র অবস্থান দেখা গেছে। অবরুদ্ধ এনবিআরের প্রধান গেটের সামনেই এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে পালিত হয় শাটডাউন কর্মসূচি।
গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ আজকের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল। যেখানে আগের মতোই রাজস্ব ব্যবস্থার পূর্ণাঙ্গ, প্রকৃত, টেকসই ও বাস্তব সম্মত সংস্কারের স্বার্থে ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসর আখ্যা দিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খানকে অপসারণের দাবি উপস্থাপন করা হয়েছিল।
যদিও গত শুক্রবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআরের চলমান অচলাবস্থা নিরসনে অর্থ মন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে ঘোষিত কর্মসূচি প্রত্যাহারের নির্দেশনা, কর্মকর্তাদের বদলি আদেশ পুনর্বিবেচনা ও আগামী মঙ্গলবার তিন পক্ষের মধ্যে আলোচনা হবে। এই তিনটি সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সরকারের পক্ষ থেকে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও আমদানি-রপ্তানিসহ বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ঘোষিত কমপ্লিট শাটডাউন ও মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি প্রত্যাহার করে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিজ নিজ দপ্তরে অবস্থান করে কাজে মনোনিবেশ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে ওই আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন না এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ। ফলে অচলাবস্থা থেকেই যায়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামের দুটি বিভাগ করে গত ১২ মে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এর প্রতিবাদে নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করেন রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গত ২৬ মে পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতির আন্দোলন করেন এনবিআরের অধীন কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা।
২৫ মে রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অর্থমন্ত্রণালয় জানায়, এনবিআর বিলুপ্ত নয়, বরং এ প্রতিষ্ঠানকে ‘স্বাধীন ও বিশেষায়িত বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে। যার কারণে ২৬ মে কলম বিরতি কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়। তবে এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ ও চেয়ারম্যানকে অসহযোগিতা করার ঘোষণা দেয় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
মাঝের সময় কোনো ধরনের আলোচনা কিংবা সমঝোতা না হওয়ায় গত ২১ জুন সংবাদ সম্মেলনে করে দ্বিতীয় দফায় ২৩ জুন থেকে আন্দোলনে নামেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের (ডিএসইসি) বহুল প্রতীক্ষিত বার্ষিক ফ্যামিলি ডে ২০২৫ আগামী ৬ জুলাই শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই অনুষ্ঠানটিকে ঘিরে এরইমধ্যে ডিএসইসি সদস্যদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা বিভাগ বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ। অনুষ্ঠানটির স্পন্সর হিসেবে থাকছে দেশের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় ও কর্পোরেট ব্র্যান্ডগুলো। তাদের মধ্যে রয়েছে মমতাজ হারবাল, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, উত্তরা ইউনিভার্সিটি ও ডায়মন্ড সিটি।
এই আয়োজনে থাকছে চমকপ্রদ র্যাফেল ড্র, যার প্রথম পুরস্কার হিসেবে রয়েছে গ্লোবালইডির সৌজন্যে একটি মোটরসাইকেল। এছাড়া থাকছে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের সৌজন্যে ঢাকা-ব্যাংকক-ঢাকা এবং ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা যুগল প্লেন টিকিট, গ্রিস্টারের সৌজন্যে ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা যুগল প্লেন টিকিট এবং প্রবাসীর হেলিকাপ্টারের সৌজন্যে ঢাকা শহর ঘুরে দেখার যুগল হেলিকাপ্টার রাইড টিকিট। র্যাফেল ড্রতে থাকবে আরও অনেক অনেক চমকপ্রদ পুরস্কার, যা পরবর্তী ঘোষণায় জানানো হবে।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, এই অনুষ্ঠানটি কেবল বিনোদনের আয়োজন নয়; এটি সাব-এডিটরদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক, বন্ধন ও পরিবারভিত্তিক সহমর্মিতা বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক সব সদস্যকে আগামী ৩০ জুন ২০২৫ তারিখের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করার অনুরোধ করা হচ্ছে। নির্ধারিত তারিখের পরে রেজিস্ট্রেশনের কোনো সুযোগ থাকবে না। রেজিস্ট্রেশন শেষে কুপন সংগ্রহ করতে হবে ডিএসইসির নির্বাহী কমিটির সদস্যদের কাছ থেকে।
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ইমামরা সমাজের অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি। নৈতিকতা ও আদর্শিক মূল্যবোধের বিকাশে তাদের অবদান বিশাল। জনগণের সঙ্গে তাদের সংযোগ সরাসরি। তারা সামাজিক শক্তির প্রতিভূ তাই তাদের সংগঠিত করা গেলে সমাজ পরিবর্তনের ধারাকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।
রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জাতীয় হিফজুল কোরআন ও সিরাত প্রতিযোগিতা এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের জাতীয় সম্মেলন ২০২৫ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খালিদ হোসেন বলেন, ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠার (২০০১) পর থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ৬৩ হাজার ১৯৭ জন ইমাম ও মুয়াজ্জিনের মধ্যে সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ ও অনুদান হিসেবে ৩৭ কোটি ৯২ লাখ ৭৩ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ কোটি টাকা উদ্যোক্তাদের ঋণ এবং ২০ কোটি ৯১ লাখ টাকা অফেরতযোগ্য এককালীন অনুদান দেওয়া হয়েছে। ২০২৪-২৫ সালে বিতরণ করা হয়েছে ৪ কোটি ১১ লাখ টাকা।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ইসলামের অপব্যাখ্যাকে রুখে দেওয়া, সঠিক ব্যাখ্যা তুলে ধরা এবং সমাজে শান্তি, সম্প্রীতি ও সহনশীলতা প্রতিষ্ঠার এখন গুরুত্বপূর্ণ সময়। আমরা চাই এক শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ- যেখানে মসজিদ হবে জ্ঞানের কেন্দ্র, ইমাম হবেন নেতৃত্বের দিশারী। প্রতি বছর আমাদের প্রতিযোগিরা আন্তর্জাতিক হিফজ ও ক্বিরাত প্রতিযোগিতায় যে সাফল্য অর্জন করছে তা গোটা জাতির জন্য গর্বের বিষয়। এটি প্রমাণ করে-আমাদের সন্তানদের মধ্যে কোরআনের আলো জ্বলছে। এখন দরকার এই আলোর ব্যবস্থাপনা।
আর সেই কাজেই ইমামদের প্রশিক্ষণ, উৎসাহ ও অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ধর্ম সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিক। সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আ. ছালাম খান।
এছাড়া অনুষ্ঠানে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরসের গভর্নর মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি, মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক, ড.খলিলুর রহমান মাদানী, ওলামায়ে কেরাম, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা ও প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন বাইতুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল মালেক।
সম্মেলনে হিফজুল কোরআন ও সিরাত প্রতিযোগিতার জাতীয় পর্যায়ের বিজয়ী তিন গ্রুপের ৯ জন করে প্রতিযোগী এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে ৩ জন শ্রেষ্ঠ ইমাম, বিভাগীয় পর্যায়ে ২৪ জন, জেলা পর্যায়ে ১৯২ জন ইমাম এবং ৬৪ জন শ্রেষ্ঠ খামারি ইমামকে নগদ অর্থ, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার ২ লাখ টাকা, দ্বিতীয় দেড় লাখ, তৃতীয় ১ লাখ টাকা এবং সিরাত প্রতিযোগিতার প্রথম পুরস্কার ৫০ হাজার, দ্বিতীয় ৪৫ হাজার এবং তৃতীয় ৪০ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়। এছাড়া শ্রেষ্ঠ ইমাম ও খামারি ইমামদের ক্ষেত্রেও যথা নিয়মে নগদ অর্থ, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
১৬ জুলাই ‘শহীদ আবু সাঈদ দিবসের’ পরিবর্তে ‘জুলাই শহীদ দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এছাড়া ৮ আগস্ট ঘোষিত ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ পালন করা হবে না। ৫ আগস্ট ‘গণঅভ্যুত্থান’ দিবস উদযাপন করা হবে। রোববার উপদেষ্টা কমিটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার ভেরিফাইড অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এর তিন দিন পর ৮ আগস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়।
এর আগে ২৫ জুন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এক পরিপত্রে বলা হয়েছিল, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন ৫ আগস্টকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। আর আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দিন ৮ আগস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। এছাড়া গণআন্দোলন চলাকালে রংপুরে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদের নিহত হওয়ার দিন ১৬ জুলাইকে ‘শহীদ আবু সাঈদ দিবস’ ঘোষণা করা হয়েছে।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশে প্রচলিত কোটা প্রথার সংস্কারের দাবিতে গত বছরের জুলাইয়ে শুরু হওয়া ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ১৬ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রথম নিহত হন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ।
৮ আগস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ ঘোষণা নিয়ে আপত্তি জানান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষস্থানীয় তিন নেতা সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ ও আখতার হোসেন। এখন উপদেষ্টা কমিটির সিদ্ধান্ত নিল, ৮ আগস্ট কোনো বিশেষ দিবস পালন করা হবে না। আর ১৬ জুলাই ‘জুলাই শহীদ দিবস’ পালন করা হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সেবা আখ্যায়িত করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে ফিরে যেতে বলা হয়েছে। অন্যতায় সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। রবিবার (২৯ জুন) অন্তর্বর্তী সরকারের এক বিবৃতিতে এমন কথা বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশের বাজেট ব্যবস্থাপনায় উন্নয়নমুখী কার্যক্রম পরিচালনার সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হলো দুর্বল রাজস্ব সংগ্রহ ব্যবস্থা। রাষ্ট্রের প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের রাজস্ব সংগ্রহ অনেক কম। এর মূল কারণ হলো আমাদের রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থাপনার নানা দুর্বলতা, অনিয়ম ও দুর্নীতি।
এমন পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার সব অংশীজনের পরামর্শ অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে বিবৃতি জানানো হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, সরকার গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে, রাজস্ব সংস্কারের কাজকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী নজিরবিহীনভাবে গত ২ মাস ধরে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি এবং রাজস্ব আদায় কার্যক্রম অন্যায় ও অনৈতিকভাবে ব্যাহত করে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে আন্দোলনের নামে চরম দুর্ভোগ তৈরি করেছে, যা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য।
সরকার জানিয়েছে, সংস্কারের বিরোধিতা ছাড়াও অর্থ বছরের শেষ ২ মাসে তারা রাজস্ব আদায় কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করেছে। এই তথাকথিত আন্দোলন পরিকল্পিত ও দুরভিসন্ধিমূলক, যা জাতীয় স্বার্থ এবং নাগরিক অধিকারের চরম পরিপন্থি।
‘সরকারের পক্ষ থেকে রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি বিবেচনায় নেওয়ার সুস্পষ্ট ঘোষণা দেয়া হয় এবং আলোচনায় আসার আহ্বান জানালেও তারা তা অগ্রাহ্য করে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার গ্রহণযোগ্য সমাধান না করে তারা আন্দোলনের নামে অনমনীয় অবস্থান নিয়ে ক্রমাগত দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করে চলেছে।
‘এ পরিস্থিতিতে, অতি জরুরি আমদানি-রপ্তানি ও বৈদেশিক বাণিজ্যের কার্যক্রম চলমান রাখার জাতীয় স্বার্থে সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন সব কাস্টমস হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনের সর শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, আমরা আশা করি, অনতিবিলম্বে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থলে ফিরে যাবেন এবং আইনবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসবেন। অন্যথায় দেশের জনগণ ও অর্থনীতির সুরক্ষায় সরকার কঠোর হতে বাধ্য হবে।