রোববার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
১২ পৌষ ১৪৩২

ঢাকাবাসীকে সুন্দর জীবন উপহার দিতে কাজ করছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

ছবি: বাসস
বাসস
প্রকাশিত
বাসস
প্রকাশিত : ২৫ মে, ২০২৪ ১৭:১৯

ঢাকাবাসী যাতে সুন্দর জীবন যাপন করতে পারে সেজন্য তাঁর সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অধীনে চারটি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে তিনি এ কথা বলেন।

প্রকল্পগুলো হচ্ছে- বঙ্গবাজারে ‘বঙ্গবাজার নগর পাইকারি বিপনী বিতান’, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শেখ ফজলুল হক মণি সরণি,’ ধানমন্ডি লেকে ‘নজরুল সরোবর’ এবং শাহবাগে ‘হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু উদ্যান’ আধুনিকীকরণ শীর্ষক ৪টি উন্নয়ন প্রকল্প।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চারটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এই এলাকার বিশেষ করে পুরান ঢাকার মানুষ উপকৃত হবে এবং তারা সুন্দর জীবন যাপন করতে পারবে। এই প্রকল্পগুলো নতুনভাবে বাঁচার সুযোগ সৃষ্টি করে দেবে।’

তিনি বলেন, ‘বর্ধিত ঢাকার জনগণ যেন যথাযথ সেবা পেতে পারে সেজন্য নগরীকে তিনি উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এই দুটি অংশে ভাগ করেন। যেগুলো ইউনিয়ন ছিল সেগুলোকেও সিটি কর্পোরেশনের আওতায় নিয়ে এসে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে উন্নয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ঠিকানাবিহীন পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের আবাসন সমস্যা দূরীকরণে তাঁর সরকার আবাসিক ফ্ল্যাট ও সম্মানজনক পদবীর ব্যবস্থা করে দিয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঢাকা শহরের পূর্ব-পশ্চিমে রাস্তাই ছিল না। তাঁর সরকার সে সব রাস্তা, ওভারপাস, মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে, বাঁধের ওপর রাস্তা, বুড়িগঙ্গা বেড়িবাঁধ করে দিয়েছে এবং বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। যেগুলো বাস্তবায়ন হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে।’

তিনি বলেন, ‘আন্তঃজেলা যোগাযোগ সহজ করতে আমরা ঢাকায় একটি রিং রোড নির্মাণ করতে চাই।’

‘ঢাকা কেন্দ্রিয় কারাগার এখান থেকে সরিয়ে কেরানীগঞ্জ নেওয়া হয়েছে। পুরাতন কেন্দ্রিয় কারগারে যেখানে জাতির পিতা দীর্ঘদিন বিভিন্ন সময় বন্দি ছিছেন, যেখানে জাতীয় চারনেতাকে হত্যা করা হয়েছে এবং ফাঁসির মঞ্চ যেখানে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখলের পর হাজার হাজার সেনাবাহিনীর অফিসার সৈনিক, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ফাঁসি দিয়েছিল। আর ব্রিটিশ আমল থেকেই অনেক দেশপ্রেমিককে সেখানে ফাাঁসি দেওয়া হয়- সেই জায়াগাটিসহ সকল স্থানের স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর বাইরে স্কুল এবং পার্ক করে সৌন্দর্যবর্ধন এবং বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে’- যোগ করে বললেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘ঠিক একইভাবেই এই এলাকার মানুষ যাতে ভালভাবে থাকতে পারে সেই ব্যবস্থাও করেছি।’

শেখ হাসিনা বঙ্গবাজার পুনর্নিমাণের পর ব্যবসা চালু রাখার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘এরআগে তিনি মোবাইল লেনদেনের মাধ্যমে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বঙ্গবাজার বাজারের ব্যবসায়ীদের অনুদান দিয়েছিলেন।’

অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন উন্নয়ন প্রকল্পের পর একটি ভিডিও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুরান ঢাকার সঙ্গে তাঁর একটা আলাদা নাড়ির টান রয়েছে। কাজেই এই অঞ্চলের মানুষরা ভাল থাকুক সেটাই তাঁর লক্ষ্য।

অতীতের স্মৃতি রোমন্থন করে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হন। তাঁর পরিবারকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। ঢাকায় এসে প্রথমেই তাঁরা ৮/৩ রজনীবোস লেনের একটি বাড়িতে ওঠেন। এরপর বঙ্গবন্ধু মন্ত্রী হলে মিন্টু রোডে চলে আসেন। ৯২ এর ক ধারায় জরুরী আইন জারি করা হলে ১৪ দিনের নোটিশে তাঁদের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় এবং বঙ্গবন্ধু গ্রেপ্তার হন। ৭৯ নম্বর নাজিরা বাজারে অবিভক্ত ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ফুপুর বাড়িতে তারা দীর্ঘদিন ছিলেন। মাঝে বন্যা হলে আরমানিটোলার বাঘওয়ালা বাড়িতেও (স্থানীয়রা বলতো) ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানার জন্ম ঢাকার মিটফোর্ড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আর ছোট ভাই শেখ রাসেলের জন্ম ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনে।

সরকার প্রধান বলেন, ‘মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের শুরুটা যেন চানখারপুল থেকে হতে পারে সরকারে আসার পর তিনিই তার ব্যবস্থা করেছেন। তাছাড়া আজ যে প্রকল্পগুলোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলো সেগুলো বাস্তবায়ন হলেও এলাকার মানুষই লাভবান হবে। তারা সুন্দর ভাবে বাঁচতে পারবে, চলতে পারবে।’

তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বলেন, ‘এটি একটি প্রাইমারী স্কুল ছিল। পরে উচ্চমাধ্যমিক স্কুল এবং সেখান থেকে কলেজ হয়। আর এখন বিশ্ববিদ্যালয়। এতটুকু জায়গা, বিভিন্ন জায়গায় ছড়ানো ছিটানো হোস্টেল। এগুলো সব একত্রিত করে একটি ভালো ক্যাম্পাস এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত করে শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের আবাসস্থল নির্মাণ করে শিক্ষার জন্য আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে তাঁর সরকার। ইতোমধ্যে জায়গা ও নকশা করা হয়ে গেছে। সে কাজও শিগগির শুরু হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেভাবে নতুন ক্যাম্পাস আমরা করে দেব যাতে একটা সুস্থ পরিবেশে ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করতে পারে।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘ইতোমধ্যে তাঁর সরকার ঢাকার মানুষের যোগাযোগ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকেও বিশেষ নজর দিয়েছে। এক সময় বিদ্যুত থাকতো না, পানিও থাকতো না। আপনাদের মনে আছে সেই বিদ্যুত ও পানির দাবিতে মানুষের আন্দোলনে বিএনপি’র এক নেতা (স্থানীয় এমপি) জনগণের ধাওয়াও খেয়েছিল। কিন্তু তাঁর সরকার ঢাকাবাসীর জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন করেছে। সারাদেশে বিদ্যুত সরবরাহের উন্নয়ন ঘটিয়েছে এবং মানুষের বিদুতের ব্যবহারও বেড়েছে। তিনি এই সময় নিজ নিজ পানির ট্যাংক নিয়মিত পরিস্কার রাখাসহ বাড়ির চারপাশ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রেখে মশার উপদ্রব থেকে বাাঁচার জন্য পানি জমে থাকা জায়গা পরিচ্ছন্ন রাখা এবং পানির ও বিদ্যুত ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শ দেন।

তিনি এই সময় বর্জ্য ব্যবস্থাপনাতেও সকলের সহযোগিতা চান। যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা না ফেলে নিদিষ্টি জায়গায় ফেলার এবং সিটি কর্পোরেশনকেও তিনি দ্রুত এইগুলো সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দেন। এই সময় তিনি আসন্ন কোরবানীর ঈদে যেখানে সেখানে পশু কোরবানী না দেওয়ার জন্যও নগরবাসীকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘ভবিষ্যতে শুধু সিটি কর্পোরেশনে নয়, সমগ্র বাংলাদেশেই তাঁর নির্দেশ রয়েছে প্রত্যেক জায়গায় আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন ব্যবস্থা গড়ে তোলার।’

তাঁর সরকার ঢাকা শহরের জলাধারগুলো উদ্ধারের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে যত্র তত্র পুকুর-খাল, জলাশয় ভরাট করে স্থাপনা তৈরি না করার জন্য নগর পরিকল্পনাবিদদের সজাগ থাকার নির্দেশ দেন। অতীতের সরকারগুলো পুকুর, খাল-বিল ভরাট করে স্থাপনা বা বক্স কালভার্ট নির্মাণ করায় খাল-বিল-পুকুরে ভরা ঢাকা শহরের বাতাসও এখন ভারী হয়ে উঠেছে, পানি সরার কোন জায়গা থাকছে না।

তিনি সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ এবং মাদক থেকে সকলকে দূরে থাকার এবং সিটি কর্পোরেশনের পার্কগুলো যেন মাদক সেবনে ব্যবহার না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্যও সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

বিএনপি সরকারের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা ক্ষমতায় এসেছিল লুটপাট, দুর্নীতি ও অস্ত্র চোরাকারবারি করতে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দেশ দুর্নীতিতে পাঁচ বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সে কাজেই ব্যস্ত ছিল তারা, আর মানুষ খুন করতে।

তিনি বলেন, এই দেশকে তারা কোথায় নিয়ে গিয়েছিল। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছিল। অস্ত্র চোরাকারবারি; ওই তারেক রহমানতো অস্ত্র চোরাকারবাররি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। ওখানে বসে (লন্ডন) এখন নানাভাবে ওই অগ্নি সন্ত্রাস করে মানুষ মারা, মানুষ খুন করা, গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা-এসব কাজ করে বেড়ায়।

টানা গত তিন মেয়াদে তাঁর সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন এবং উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে এগিয়ে যেতে হবে, সেভাবেই আমরা এগিয়ে যাব।


নির্বাচন বানচালের চেষ্টা প্রতিহত করা হবে : আদিলুর রহমান খান

আপডেটেড ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০২:২৮
মাদারীপুর প্রতিনিধি

শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, দেশের প্রতিটি মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) মাদারীপুরে জুলাই আন্দোলনে শহীদদের কবর জিয়ারত ও স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী শক্তি আসন্ন নির্বাচনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। তবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকার একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করবে। যারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করবে, তাদের কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।

উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের কোনো দেশপ্রেমিক মানুষই নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করবে না। দেশের প্রতিটি নাগরিকই আগামী নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে এগিয়ে আসবে এবং সরকারকে সহযোগিতা করবে।

এর আগে তিনি মঠের বাজার এলাকায় জুলাই আন্দোলনে শহীদ নাইমুর রহমান ও শহীদ মামুনের কবর জিয়ারত করেন এবং স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে শিবচর উপজেলায় হাউজিং প্রকল্প ও সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্টের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন।

এ সময় মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আল নোমানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উপদেষ্টা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত বিভিন্ন জেলায় গিয়ে উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শনের পাশাপাশি জুলাই আন্দোলনের শহীদদের কবর জিয়ারত করা হচ্ছে এবং তাদের পরিবারের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।


চিংড়ি রপ্তানিতে আন্তর্জাতিক পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বাংলাদেশের চিংড়ির স্বাদ ও মান বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে শুধু আকার বা স্বাদ বিবেচ্য নয়; চিংড়ির স্বাস্থ্যমান, পরিবেশসম্মত উৎপাদন পদ্ধতি এবং অ্যান্টিবায়োটিকমুক্ত অবস্থা কঠোরভাবে পরীক্ষা করা হয়। তাই রপ্তানিকারক ও উৎপাদনকারীদের আন্তর্জাতিক মান ও পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ফলতিতা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পরিদর্শন ও আড়ত মালিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, ‘ভারতসহ বাইরের দেশ থেকে অথবা দেশের ভেতরে অবৈধভাবে পণ্য আসা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এতে সরকারের রাজস্ব ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ব্যবসায়ীরাও ন্যায্যভাবে লাভবান হতে পারেন না। অনেক ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত পণ্য ফেলে দিতে হয়, যা সরাসরি জাতীয় সম্পদের অপচয়।’

বিদ্যুৎ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘কৃষি খাতে যে ভর্তুকিযুক্ত বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়া হয়, মৎস্য খাত এখনো তা পায় না। তবে গত এক বছর ধরে এ বিষয়ে কাজ চলছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সমন্বয়ের মাধ্যমে শিগগিরই প্রায় ২০ শতাংশ বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করা যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এক প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় যে পক্ষই জড়িত থাকুক না কেন, সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবে। নিরাপত্তা ঝুঁকি কমাতে পুলিশের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরাপদভাবে আয়োজনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে।’

দেশের মৎস্য খাত সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, ‘পদ্ধতিগত ঘাটতির কারণে বাংলাদেশ এখনো এ খাত থেকে পূর্ণাঙ্গ সুফল অর্জন করতে পারেনি। প্রাকৃতিক উৎস থেকে মাছের পোনা আহরণে আইনগত সীমাবদ্ধতা থাকায় পোনা উৎপাদন বাড়াতে দেশে হ্যাচারির সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিগত সরকারের নীতিগত ত্রুটির কারণে চিংড়ি রপ্তানি খাত পিছিয়ে পড়েছে। রপ্তানিতে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক গোলাম মো. বাতেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাজ কুমার বিশ্বাসসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।


মাদক ভাগাভাগি নিয়ে খুলনায় এনসিপি নেতাকে গুলি: র‌্যাব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সহযোগী সংগঠন জাতীয় শ্রমিক শক্তির বিভাগীয় আহ্বায়ক মোতালেব শিকদারকে গুলি করার রহস্য উন্মোচন করেছে র‍্যাব। র‍্যাব-৬ জানিয়েছে, এই হামলার নেপথ্যে রাজনৈতিক কোনো কারণ নয়, বরং মাদক ব্যবসা ও লুণ্ঠিত মাদকের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দল কাজ করেছে। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে খুলনার র‍্যাব-৬ সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান উপ-অধিনায়ক মেজর মো. নাজমুল ইসলাম। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত প্রধান হামলাকারী শীর্ষ সন্ত্রাসী শামীম শিকদার ওরফে ঢাকাইয়া শামীমসহ মোট চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২২ ডিসেম্বর সোনাডাঙ্গা এলাকার ‘মুক্তা হাউস’ নামের একটি ফ্ল্যাটে মোতালেব শিকদারকে মাথায় লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। গ্রেফতারকৃত প্রধান আসামি শামীম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে যে, ওই ফ্ল্যাটটি জাতীয় যুবশক্তির নেত্রী তানিমা তন্বীর বাসা হিসেবে পরিচিত হলেও সেখান থেকেই মাদকের কারবার ও অসামাজিক কার্যক্রম পরিচালিত হতো। ঘটনার দিন সকালে মোতালেবের কাছে থাকা মাদক বা মাদকের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে ক্ষিপ্ত হয়ে শামীম তাঁর কাছে থাকা অস্ত্র দিয়ে মোতালেবের মাথায় গুলি করে। তবে গুলিটি সরাসরি মগজে বিদ্ধ না হওয়ায় অলৌকিকভাবে মোতালেব প্রাণে বেঁচে যান।

র‍্যাব আরও জানায়, গ্রেফতারকৃত শামীম শিকদার ওই এলাকার একজন চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে এর আগেও মাদক, দস্যুতা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। শামীমের পাশাপাশি এই ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মো. আরিফ, মাহাদিন এবং ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া তানিমা তন্বীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ এবং তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় র‍্যাব নিশ্চিত হয়েছে যে, ঘটনার সময় ওই ফ্ল্যাটে আরও কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন এবং তারা নিয়মিত সেখানে মাদক সেবন ও কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

এদিকে, মোতালেব শিকদারকে হত্যা প্রচেষ্টার এই মামলাটি বর্তমানে ডিবি পুলিশ তদন্ত করছে। ডিবির ওসি তৈয়মুর ইসলাম জানিয়েছেন, মামলায় ব্যবহৃত মূল অস্ত্রটি উদ্ধারের জন্য জোর তৎপরতা চালানো হচ্ছে এবং গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বাকি অভিযুক্তদেরও দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। উল্লেখ্য, প্রথমে এই ঘটনাকে রাজনৈতিক হামলা হিসেবে চালানোর চেষ্টা করা হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিবিড় তদন্তে মাদক সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠল। মোতালেবের স্ত্রী ফাহিমা আক্তার বাদী হয়ে গত ২৩ ডিসেম্বর সোনাডাঙ্গা থানায় এই মামলাটি দায়ের করেছিলেন। বর্তমানে পুরো এলাকায় অপরাধীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।


অতিরিক্ত সিম বন্ধের কঠোর সিদ্ধান্ত: বছরের শুরুতেই নতুন নিয়ম কার্যকর করছে বিটিআরসি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মোবাইল সিম ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরও কঠোর অবস্থান নিতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। মোবাইল সিমের অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়ম রোধে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। নতুন এই নিয়ম অনুযায়ী, আগামী ১ জানুয়ারি থেকে একজন গ্রাহক তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার করে সর্বোচ্চ ৫টি সিম সক্রিয় রাখতে পারবেন। বর্তমানে যাদের নামে ৫টির বেশি অর্থাৎ ৬ থেকে ১০টি সিম নিবন্ধিত রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রেও পর্যায়ক্রমে সংখ্যা কমিয়ে ৫-এ নামিয়ে আনা হবে বলে কমিশন নিশ্চিত করেছে।

বিটিআরসি জানিয়েছে, জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সিমের মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ কমিয়ে আনতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যদিও দেশের মোবাইল ফোন অপারেটররা এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে পূর্বের মতোই কিছুটা আপত্তি জানিয়ে আসছিল, তবে বিটিআরসি তাঁর অবস্থানে অনড় রয়েছে। বর্তমানে বিশ্বে সিম ব্যবহারের তালিকায় বাংলাদেশ নবম স্থানে অবস্থান করছে, যা অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান ও যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি।

কমিশনের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত অক্টোবর পর্যন্ত দেশে মোট মোবাইল সিম ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৮ কোটি ৭৯ লাখ ৭০ হাজারে। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৮ কোটি ৫৯ লাখ। এরপর ক্রমান্বয়ে রয়েছে রবি (৫ কোটি ৭৫ লাখ), বাংলালিংক (৩ কোটি ৭৯ লাখ) এবং সরকারি মালিকানাধীন টেলিটক (৬৬ লাখ ৭০ হাজার)। দেশে মোট নিবন্ধিত সিমের সংখ্যা ২৬ কোটি ৬৩ লাখ হলেও বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে প্রায় ১৯ কোটির মতো।

উল্লেখ্য যে, এর আগে গত আগস্ট মাসে এক ব্যক্তির নামে সর্বোচ্চ ১০টি সিম রাখার অনুমতি দিয়ে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অতিরিক্ত সিম বাতিলের নির্দেশনা দিয়েছিল বিটিআরসি। সে সময় প্রায় ৬৭ লাখ গ্রাহকের নামে ১০টির বেশি সিম নিবন্ধিত ছিল। গত তিন মাসে প্রায় ১৫ লাখ সিম গ্রাহকরা স্বেচ্ছায় বাতিল বা মালিকানা পরিবর্তন করলেও এখনো প্রায় ৫০ থেকে ৫৩ লাখ অতিরিক্ত সিম নিষ্ক্রিয় করার অপেক্ষায় রয়েছে। নির্ধারিত সময়সীমা পার হওয়ার পর এখন সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরদের মাধ্যমে এই অতিরিক্ত সিমগুলো ধাপে ধাপে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। মূলত একটি সুশৃঙ্খল টেলিকম সেবা নিশ্চিত করতেই নতুন বছরের শুরু থেকে এই কঠোর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু হচ্ছে।


যমুনা ও সংসদ ভবন ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি ইনকিলাব মঞ্চের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শরীফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে চলমান আন্দোলনে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় এবার আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সংগঠনটির সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল জাবের জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হলে যেকোনো মুহূর্তে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’ এবং ‘জাতীয় সংসদ ভবন’ ঘেরাও করা হবে। হাদির খুনিদের গ্রেপ্তার এবং এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য পরিকল্পনাকারীদের দ্রুত চিহ্নিত করার দাবিতে ইনকিলাব মঞ্চের নেতাকর্মীরা দ্বিতীয় দিনের মতো শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিয়ে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে আবদুল্লাহ আল জাবের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে চরম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা ভাবছেন ক্ষমতায় মাত্র এক মাস আছেন এবং এরপর বিদেশে পাড়ি জমাবেন, তাঁদের কাউকেই ‘সেফ এক্সিট’ বা নিরাপদ প্রস্থানের সুযোগ দেওয়া হবে না। তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, রক্তের সঙ্গে বেইমানি করে কেউ বিদেশে পালাতে পারবেন না; বরং এই বাংলার মাটিতেই জনতা তাঁদের বিচার করবে। সরকারের নীরবতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি জানান, গত দুদিন ধরে রাজপথে অবস্থান করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ বা আশ্বাস মেলেনি। ফলে আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে সংসদ ভবন ও যমুনার মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ঘেরাওয়ের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।

ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বেন না বলে ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি। উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হওয়ার পর গত ১৮ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি। এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। শাহবাগ এলাকায় আন্দোলনকারীদের অবস্থানের কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রাখা হয়েছে। তবে ইনকিলাব মঞ্চ স্পষ্ট জানিয়েছে, খুনিদের আড়াল করার কোনো চেষ্টা সফল হতে দেওয়া হবে না এবং রাজপথের এই লড়াই তারা শেষ পর্যন্ত চালিয়ে যাবে।


মানবিক দায়বদ্ধতায় বগুড়া থেকে আনসার–ভিডিপির ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের দীর্ঘদিনের নিষ্ঠা ও আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং তাঁদের ও তাঁদের পরিবারবর্গের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে বিশেষ ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদের নির্দেশনায় আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বগুড়া জেলার গাবতলী সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে এই মহতী কর্মসূচির প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধন করা হয়। বগুড়া জেলা কমান্ড্যান্ট মোঃ সাদ্দাম হোসেন এই ক্যাম্পেইনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এই বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের আওতায় আগামী ১৩ জানুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত বগুড়া ছাড়াও পর্যায়ক্রমে জামালপুর, ভোলা ও লালমনিরহাট জেলায় তিন দিনব্যাপী এই মানবিক কর্মসূচি পরিচালিত হবে।

এই মহতী উদ্যোগের আওতায় আনসার ও ভিডিপি সদস্য এবং তাঁদের পরিবারের জন্য আধুনিক চিকিৎসার এক বিশাল সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ করে চক্ষু ও দন্ত চিকিৎসার ওপর এই ক্যাম্পেইনে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। চক্ষু বিশেষজ্ঞরা উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে চোখের যাবতীয় পরীক্ষা সম্পন্ন করছেন এবং যাঁদের প্রয়োজন তাঁদের জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ছানি অপারেশনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি অভিজ্ঞ দন্ত চিকিৎসকরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও পরামর্শ প্রদান করছেন। এছাড়াও সাধারণ রোগে আক্রান্তদের জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পরামর্শের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ওষুধ বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। বাহিনীর এই দায়িত্বশীল ও মানবিক উদ্যোগ সরাসরি তৃণমূল পর্যায়ের সদস্যদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে বড় ভূমিকা রাখছে।

আনসার–ভিডিপি সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে যে, দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জাতীয় উন্নয়নে বাহিনীর সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁদের এবং তাঁদের পরিবারের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা বাহিনীর জন্য কেবল একটি কল্যাণমূলক কাজই নয়, বরং এটি একটি নৈতিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতা। এ ধরনের কার্যক্রমের ফলে বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি তাঁদের মনোবল ও কাজের উদ্যম আরও বাড়বে বলে কর্তৃপক্ষ আশাবাদী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পাশাপাশি বাহিনীর বিভিন্ন পদমর্যাদার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সরাসরি উন্নত স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করতে পেরে আনসার ও ভিডিপির সদস্য এবং তাঁদের স্বজনরা বাহিনীর এই সময়োপযোগী পদক্ষেপের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। মূলত বাহিনীর অভ্যন্তরীণ সংহতি এবং ইতিবাচক ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করাই এই মেডিকেল ক্যাম্পেইনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।


অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ এবং এটি কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলের পক্ষে কাজ করছে না। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ভোলার সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত ‘ভোটের গাড়ি’ বা ক্যারাভান কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাধারণ ভোটারদের সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যেই এই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে তৌহিদ হোসেন বলেন, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবং সরকার আশা করছে এই নির্বাচন অত্যন্ত উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হবে। তিনি নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে দেশে সত্যিকার অর্থে কোনো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। ২০০৮ সালের পর এই প্রথম দেশবাসী একটি প্রকৃত নির্বাচনের স্বাদ পেতে যাচ্ছে। বিশেষ করে ৩০ বছরের কম বয়সী তরুণরা, যারা আজ পর্যন্ত কোনো জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি, তাঁদের জন্য এবারের নির্বাচন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও উল্লেখ করেন যে, প্রতিটি নাগরিক যাতে নির্ভয়ে ও নির্বিঘ্নে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করাই বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে চলা রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে একটি সুন্দর গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভোলার জেলা প্রশাসক ডা. শামীম রহমান এবং পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছারসহ স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ‘ভোটের গাড়ি’ ক্যারাভানটি ভোলার বিভিন্ন উপজেলা প্রদক্ষিণ করে ভোটারদের সচেতন করার কাজ চালিয়ে যাবে বলে আয়োজক সূত্রে জানা গেছে।


হাদি হত্যার বিচার দাবিতে ফের উত্তপ্ত শাহবাগ: তারেক রহমানের জিয়ারত শেষে পুনরায় ইনকিলাব মঞ্চের অবরোধ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে পুনরায় অবস্থান নিয়েছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা ফের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এর আগে সকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কবর জিয়ারত কর্মসূচি ও নিরাপত্তার স্বার্থে আন্দোলনকারীরা সাময়িকভাবে শাহবাগ মোড় ছেড়ে দিয়ে পার্শ্ববর্তী আজিজ সুপার মার্কেটের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন। তবে তারেক রহমানের গাড়িবহর এলাকা ত্যাগ করার পরপরই নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে পুনরায় শাহবাগে জড়ো হন এবং যান চলাচল বন্ধ করে দেন।

ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হাদি হত্যার বিচার নিশ্চিতের দাবিতে তারা ‘অনির্দিষ্টকালের’ জন্য এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকেই তারা রাজপথে অবস্থান করছেন এবং কনকনে শীত উপেক্ষা করে গতরাতও তারা শাহবাগ মোড়েই কাটিয়েছেন। আন্দোলনের মুখে শাহবাগ ও এর আশপাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

সংগঠনটির সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল জাবের সংবাদমাধ্যমকে জানান, শরীফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য হোতাদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই লড়াই চলবে। বিচার নিশ্চিত না করে তারা কোনোভাবেই রাজপথ ছাড়বেন না এবং ঘরে ফিরবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পল্টনে সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছিলেন হাদি। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হলেও গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সেখানে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং ইনকিলাব মঞ্চ ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে শাহবাগ এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং বিকল্প পথে যানবাহন চলাচলের চেষ্টা করছে ট্রাফিক পুলিশ।


বীর শহীদদের স্মরণে জাতীয় স্মৃতিসৌধে তারেক রহমান

জাতির বীর সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে গেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতির বীর সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে যান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ১০টা ৪ মিনিটে তিনি জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেন।

এর আগে নিয়ম অনুযায়ী বিকেলে তারেক রহমানের পক্ষে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপির নেতারা। তারেক রহমানের আগমনকে কেন্দ্র করে সাভার-আশুলিয়াসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকায় জড়ো হন। সারাদিন তারা সেখানে উপস্থিত থেকে তারেক রহমানের জন্য অপেক্ষা করেন।

যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে এবং তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্মৃতিসৌধ এলাকায় পুলিশ, বিজিবি, আনসারসহ সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়।

জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-পরিবার কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবুসহ স্থায়ী কমিটির অন্যান্য সদস্য এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।

গত বৃহস্পতিবার দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে দেশে ফেরেন তারেক রহমান। ফেরার দিন রাজধানীর পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় বিএনপির পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। পরে অসুস্থ মা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান এবং সেখান থেকে গুলশানের বাসভবনে ফেরেন।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটের দিকে তারেক রহমান তার বাবা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর তিনি সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের উদ্দেশে রওনা হন।


বাবার কবরের পাশে কাঁদলেন তারেক রহমান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে স্বদেশে ফেরার পরদিন নিজের পিতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটের দিকে তিনি রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত সমাধি প্রাঙ্গণে পৌঁছালে সেখানে এক অভূতপূর্ব আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

এর আগে ২০০৬ সালের ১লা সেপ্টেম্বরের পর অর্থাৎ দীর্ঘ ১৯ বছরেরও বেশি সময় পর বাবার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানালেন তার জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমান। আনুষ্ঠানিক দোয়া ও মোনাজাত শেষ হওয়ার পর তিনি পাশে থাকা নেতাকর্মীদের কিছুটা সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন এবং কিছুক্ষণ একান্তে বাবার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন।

মাতৃভূমিতে ফিরে বাবার সমাধির সামনে দাঁড়ানোর এই বিশেষ মুহূর্তে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি তারেক রহমান। দীর্ঘক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকার সময় তাকে অঝোরে কাঁদতে এবং বারবার অশ্রুসিক্ত চোখ মুছতে দেখা যায়। তার এই ব্যক্তিগত শোক ও আবেগ দেখে উপস্থিত হাজারো নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। বছরের পর বছর দেশের বাইরে থাকার পর প্রিয় জন্মভূমিতে ফিরে পিতার স্মৃতির প্রতি এমন শ্রদ্ধা নিবেদন উপস্থিত সবার মাঝে এক শোকাতুর পরিবেশের সৃষ্টি করে।

এর আগে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে গুলশানের বাসভবন থেকে একটি বিশেষ বাসে চড়ে তিনি সমাধিস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হন। বিজয় সরণি মোড়ে নেতাকর্মীদের বিশাল ভিড়ে তার গাড়ি বহরটি সাময়িকভাবে আটকে পড়লে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে বহরটি এগিয়ে দেন। জিয়ারত শেষে বিকেল ৫টা ৪ মিনিটে তিনি পুনরায় বাসে চড়ে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের উদ্দেশ্যে রওনা হন, যেখানে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি জাতীয় শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। উল্লেখ্য, গত ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফেরার পর থেকেই তাকে ঘিরে রাজধানী ঢাকা এক অভূতপূর্ব জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।


তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ব্যাপক প্রস্তুতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি গণপূর্ত অধিদফতরের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন উদ্যোগ।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের আমিনবাজার থেকে নবীনগরের স্মৃতিসৌধ এলাকা পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যানার ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা।

তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষ্যে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার পাশাপাশি স্মৃতিসৌধের মূল ফটক বন্ধ করে জনসাধারণের প্রবেশে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আলোকুর রহমান বলেন, তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে ছাত্রদল প্রস্তুত। আমরা এখন নেতার আগমনের অপেক্ষায় রয়েছি।

সাভার পৌর বিএনপির সভাপতি খন্দকার শাহ মাইনুল হোসেন বিল্টু জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে স্বাগত জানাতে নেতা-কর্মীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ব্যাপক জনসমাগমের প্রস্তুতি নিয়েছেন।

জাতীয় স্মৃতিসৌধের ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে সকাল থেকেই পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকা ঝেড়ে-মুছে পরিষ্কার করা হচ্ছে।

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষ্যে ঢাকা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহস্রাধিক সদস্যের সমন্বয়ে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। পুরো এলাকা নিরাপত্তার আওতায় রাখা হয়েছে।

এদিকে সকাল থেকেই শীত উপেক্ষা করে সাভার, আশুলিয়া ও ঢাকার ধামরাই থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের স্মৃতিসৌধ এলাকায় জড়ো হতে দেখা গেছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন।


নিরাপত্তা চাদরে ঢাকা গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়িসহ আশেপাশের এলাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দীর্ঘ ১৭ বছরের প্রবাস জীবন শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরে রাজধানীর গুলশান-২ এর গুলশান নর্থ অ্যাভিনিউর ১৯৬ নম্বর বাড়িতে যান। ফলে বাড়িটির আশেপাশের সড়কসহ পুরো এলাকা নিরাপত্তা চাদরে ঢাকা। চারপাশে বাড়তি নিরাপত্তা, সিসিটিভি ক্যামেরা ও অস্থায়ী ছাউনি জানান দিচ্ছে বাড়িটির গুরুত্ব।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) গুলশান নর্থ অ্যাভিনিউ এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গত বুধবার রাত থেকেই বাড়িটির সামনের সড়কে সাধারণ মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে এবং একাধিক চেকপোস্ট বসানো হয়। নিরাপত্তায় রয়েছে পুলিশ, বিজিবি, সিএসএফ (চেয়ারপারসন সিকিউরিটিসহ) এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। পুরো এলাকা কর্ডন করে রাখা হয়েছে। নির্দিষ্ট পরিচয় ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয় না বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, সরকারি নিরাপত্তার পাশাপাশি বিএনপির নিজস্ব ব্যবস্থাপনাতেও আলাদা নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। শুধু বাসভবন নয়, গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়েও তারেক রহমানের জন্য আলাদা কক্ষ প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ছাড়া গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কের ১০/সি নম্বর বাড়িতে নতুন চারতলা রাজনৈতিক কার্যালয়ে কার্যক্রম শুরু করেছে বিএনপি।

এখান থেকেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

নতুন কার্যালয়ের দোতলায় রয়েছে আধুনিক ব্রিফিং কক্ষ। অন্যান্য তলায় গড়ে তোলা হয়েছে গবেষণা সেল ও বিভাগভিত্তিক দপ্তর, যেখানে নির্বাচন, নীতি ও রাষ্ট্রীয় সংস্কার বিষয়ে প্রস্তুতি চলছে। একইসঙ্গে আশেপাশের গলিতে টাঙানো হয়েছে তারেক রহমানের ছবি সংবলিত ব্যানার ও ফেস্টুন।

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দেশের মাটিতে পা রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দেশে এসে বিমানবন্দর থেকে তিনশ ফুট এলাকায় সংবর্ধনা মঞ্চে বক্তব্য দেন তিনি।

এরপর তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়ে তার মা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে যান। সেখান থেকে গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে যান। গুলশানের এই বাড়িটি জিয়া পরিবারের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শহীদ হওয়ার পর তৎকালীন সরকার বাড়িটি খালেদা জিয়াকে বরাদ্দ দেয়। বছরের পর বছর ধরে এখানে অনুষ্ঠিত হয় গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বৈঠক ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ।

কয়েক মাস আগে আনুষ্ঠানিকভাবে বাড়িটির মালিকানা দলিল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নামে হস্তান্তর করা হয়। পাশেই রয়েছে ‘ফিরোজা’, খালেদা জিয়ার দীর্ঘদিনের বাসভবন। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও পাশের বাড়িটি প্রস্তুত হয় আরেক ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনের জন্য।

এদিকে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন ঘিরে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা যায়। দলীয় নেতাদের মতে, এটি শুধু একজন রাজনৈতিক নেতার দেশে ফেরা নয়, বরং বাংলাদেশে বিএনপির আরেক রাজনৈতিক অধ্যায়ের শুরু।


মাকে দেখতে এভারকেয়ারে তারেক রহমান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মা’ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৫টা ৫৭ মিনিটের দিকে তিনি হাসপাতাল প্রাঙ্গণে পৌঁছান এবং ভেতরে প্রবেশ করেন।

এর আগে, এদিন বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর পূর্বাচলে আয়োজিত এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন তারেক রহমান। সেখানে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন। বক্তব্যে তিনি দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।

তারেক রহমান বলেন, "যেকোনো মূল্যে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে। আমরা শান্তি চাই। সবাইকে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে এবং কারও উস্কানিতে পা দেওয়া যাবে না।"

দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে নিজের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, "আমি আপনাদের সামনে বলতে চাই, আমার একটি পরিকল্পনা (আই হ্যাভ প্ল্যান) আমি সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চাই।"

পূর্বাচলের সমাবেশ শেষ করেই তিনি সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন এবং সেখানে চিকিৎসাধীন মা বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন।


banner close