বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫
৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

গ্রামের পানে ছুটছে মানুষ

রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালে শনিবার দীর্ঘক্ষণ বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায় যাত্রীদের। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস
আপডেটেড
১৬ জুন, ২০২৪ ০০:০৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১৬ জুন, ২০২৪ ০০:০৪

এক দিন পরই ঈদ। রাজধানীসহ সারা দেশের কর্মজীবী মানুষের অফিস হয়েছে ছুটি। বন্ধ দেওয়া হয়েছে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ। তাই আপনজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের জন্য গ্রামের পানে ছুটছে মানুষ। গত শুক্রবারের পর গতকাল ঈদযাত্রার চতুর্থ দিনে ছিল বাস-লঞ্চ-ট্রেনে বাড়ি ফেরা মানুষের মিছিল। আগে থেকে টিকিট করে রেখেছেন যারা তারা গতকাল নিরাপদে পছন্দের যানবাহনে উঠেছেন। কিন্তু, যারা আগে টিকিট কাটেননি বা নিকটবর্তী জেলাগুলোতে থাকেন বলে আগে থেকে টিকিট কাটার প্রয়োজন বোধ করেন না, গতকাল মহাখালী, গাবতলী বাস টার্মিনাল, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এবং সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে তাদের ছিল উপচে পড়া ভিড়। রীতিমতো সারি বেঁধে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটে যানবাহনে উঠতে হয়েছে তাদের। লোকাল হিসেবে পরিচিত এই যানবাহনগুলোতে গতকাল ছিল যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ। রীতিমতো লোকে লোকারণ্য হয়েছিল বাসস্ট্যান্ড, ট্রেন স্টেশন ও সদরঘাট টার্মিনাল। এর মধ্যে ট্রেনেই গতকাল ঢাকা ছেড়ে গেছেন দেড় লাখ মানুষ। গতকাল সূচি মেনেই ট্রেনগুলো নির্ধারিত সময়ে কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে গেছে। ছিল না অবৈধ যাত্রীদের চাপও। তবে শেষ সময়ে বাসে ও লঞ্চে রয়েছে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ।

গতকাল শনিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দুটি স্পেশাল ট্রেনসহ মোট ৬৯ জোড়া ট্রেন চলাচল করেছে বলে জানিয়েছেন কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার। এসব ট্রেনে রাজধানী থেকে মোট দেড় লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘গত ১২ জুন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানের গন্তব্যে ঢাকা থেকে যেসব ট্রেন আমরা পরিচালনা করেছি, সেগুলোর যাত্রীরা নিজ নিজ গন্তব্যে নিরাপদে ও ভোগান্তিহীনভাবে গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরেছেন।’

কমলাপুর স্টেশনের ম্যানেজার আরও বলেন, ‘আজ (গতকাল) সকাল থেকে বেশ কয়েকটি ট্রেন ঢাকা ছেড়ে গেছে। সবগুলো ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ে স্টেশন ত্যাগ করেছে। যাত্রীরা আমাদের ব্যবস্থাপনায় অনেকটা আনন্দিত হয়েছেন। আমরা এবার বিনা টিকিটে ভ্রমণ করার প্রবণতাটা একটু কম দেখেছি। যাত্রীরা সচেতন হয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী, জিআরপি, ডিএমপি, র‍্যাব এবং বাংলাদেশের অন্যান্য বাহিনী সম্মিলিতভাবে আমাদের সহযোগিতা করেছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি সুন্দর ভোগান্তিহীন নিরাপদ ঈদযাত্রা উপহার দিতে পেরেছি। এখনো পর্যন্ত কোনো ধরনের শিডিউল বিপর্যয় বা বিলম্ব- সবকিছু এড়িয়ে অত্যন্ত নিরাপদে মানুষ নির্দিষ্ট সময়ে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরেছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয় ও রেলওয়ের সকল পর্যায়ের একটি মনিটরিং টিম কাজ করছে উল্লেখ করে মাসুদ সারওয়ার বলেন, ‘আপনারা জানেন, আগামীকাল আমাদের ঈদযাত্রার শেষ দিন। শেষ পর্যন্ত যাতে সবকিছু স্বাভাবিক থাকে এবং সুন্দরভাবে যাত্রীরা নিজ নিজ মন্তব্যে পৌঁছাতে পারে, সে জন্য সব কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। সবার সম্মিলিত চেষ্টায় ও সহযোগিতায় আমরা সুন্দর একটি ঈদযাত্রা উপহার দিতে পেরেছি।’

অন্যদিকে, গতকাল অগ্রিম টিকিট না কাটা যাত্রীরা গাবতলী ও মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে ভিড় করায় লোকাল ও আন্তঃনগর বাসগুলোতে বেশ চাপ পড়ে যায়। এসব বাসে ওঠার জন্য প্রায় সবাইকে গুনতে হয়েছে বাড়তি ভাড়া। যাত্রীদের অভিযোগ, যানবাহন কম থাকার সুযোগে দূরপাল্লার যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। যে কারণে বাধ্য হয়ে অনেকে খোলা ট্রাক বা পিকআপে করে বাড়ি ফিরছেন।

চলতি মাসের শুরুতে অনলাইনে ও কাউন্টারে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে বাস টার্মিনালগুলোতে ভিড় বাড়তে থাকে। গত শুক্রবার ও গতকাল শনিবার ভিড় আরও বেড়েছে। রাজধানীর সায়েদাবাদ ও মহাখালী বাস টার্মিনালে সকাল থেকেই ঢাকা ছাড়তে চাওয়া যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে। কাউন্টার-সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল সারাদিনই এ অবস্থা ছিল। এ পরিস্থিতি থাকবে ঈদের আগের দিনও।

সায়েদাবাদের জনপথ মোড়ে সকাল থেকেই গোল্ডেন লাইনের কাউন্টারে ছিল ভিড়। পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরগামী এই গাড়ির যাত্রী মারুফ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এদের গাড়ি ১৫ মিনিট পর পর হলেও কোনো গাড়িতে আসন ফাঁকা নেই। আমি অনেক কষ্টে সুপারভাইজারের সিটের একটি টিকিট পেয়েছি। এই টিকিটের ভাড়াও ৫০০ টাকা।’

সাধারণত বাসের একদম সামনে টুলসদৃশ জায়গা থাকে সুপারভাইজারের জন্য। ঈদের সময় সেটিও আসন হিসেবে বিক্রি হয়।

এদিকে সড়কে যানজটের কারণে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া গাড়িগুলো শিডিউল ঠিক রাখতে পারছে না। বরিশালগামী যাত্রী মো. কায়সার জানান, তার গাড়ি ১২টা ৩০ মিনিটে। তবে কাউন্টার থেকে জানিয়েছে, ৯টা ১৫-এর গাড়ি এখনো ঢাকায় আসেনি। তাই তাঁর গাড়িও আসতে দেরি হতে পারে।

মহাখালীতে ভিড় দেখা গেছে ঢাকা থেকে অল্প দূরত্বের জেলাগুলোতে। ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর জেলার যাত্রীদের লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতে দেখা যায়। শেষ সময়ে টিকিট না পাওয়ায় অনেককে বাসের সুপারভাইজারের জন্য নির্ধারিত সিটও বাধ্য হয়ে কিনতে দেখা যায়।

এদিকে টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হলেও ১০ ঘণ্টা পর তা স্বাভাবিক হয়ে যায়। বিশেষ করে গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে মহাসড়কে গাড়ি চলাচল যানজটহীন হতে থাকে। সকাল ১০টা পর্যন্ত সড়কের এলেঙ্গা থেকে সেতুর টোল প্লাজা পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার অংশে কোথাও যানজট, কোথাও গাড়ির ধীর গতি ছিল।

গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুতে দুর্ঘটনা, টোল আদায় বন্ধ, চালকদের বেপরোয়া চালনার কারণে মহাসড়কে যানজট ও গাড়ি চলাচলে ধীর গতির সৃষ্টি হয়।

মহাসড়কে যানজট ও ধীর গতির বিষয়ে মহাসড়কে দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলেন, শুক্রবার রাতে ও গতকাল ভোরে সেতুর ওপর দুর্ঘটনা ঘটেছিল। তাতে হতাহত না হলেও সেতুর ওপর চাপ কমাতে টোল আদায় বন্ধ রাখা হয়। চালকদের ওভারটেক প্রতিযোগিতার কারণেও যানজটের সৃষ্টি হয়।

গতকাল মহাখালী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা থেকে বগুড়াগামী বাসগুলোর ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৬৫০ টাকা, যা ১০০ টাকা বেশি। এ বিষয়ে কাউন্টার থেকে বলা হয়, এটাই ঈদের জন্য তাদের নির্ধারিত ভাড়া। ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের ভাড়া স্বাভাবিক সময়ে ৩০০ টাকা হলেও এখন দিতে হচ্ছে ৬০০ টাকা।

ভাড়া বেড়েছে পদ্মা সেতু হয়ে পার হওয়া খুলনা, গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, বরিশাল ও মাগুরাগামী বাসের। এই রুটের পরিচিত বাস গোল্ডেন লাইনের ভাড়া ২০০ টাকা করে বাড়িয়েছে ঈদ উপলক্ষে। সায়েদাবাদ গোল্ডেন লাইন কাউন্টার থেকে জানানো হয়, স্বাভাবিক সময়ে ঢাকা থেকে মাগুরার ভাড়া ৫৫০ টাকা হলেও ঈদের জন্য এই রুটের ভাড়া ৮০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।

রাজধানীর গাবতলী টার্মিনালেও একই চিত্র দেখা গেছে। পদ্মা সেতুর কারণে এই টার্মিনালে বাসের পরিমাণ কমেছে অনেক বেশি। তবে চুয়াডাঙ্গা, দর্শনা, যশোর অঞ্চলের যাত্রী বেশি এই টার্মিনালে। স্বাভাবিকের চেয়ে ১০০ টাকা বেশি ভাড়া এই অঞ্চলের বেশির ভাগ পরিবহনের। অনলাইন টিকিটে এসি গাড়ির ভাড়া বেড়েছে ৬০০ টাকা পর্যন্ত।

এদিকে, জবি প্রতিনিধি মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ জানিয়েছেন, ঈদুল আজহার সরকারি ছুটি শুরুর আগের দিন রাজধানীর প্রধান নদীবন্দর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে বেড়েছে যাত্রীর চাপ। এদিন সকাল থেকে বিকেল গড়িয়ে রাত পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলগামী ঘরমুখো মানুষেরা নৌপথে বাড়ি ফিরেছে। ঈদের আনন্দ সঙ্গে নিয়ে যাত্রী বোঝাই লঞ্চগুলো ঘাট ছেড়েছে।

গতকাল শনিবার সারা দিন সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামার সাথে সাথেই টার্মিনালে বেড়েছে যাত্রীদের উপস্থিতি। সকালে স্বল্প দূরত্বের যাত্রীচাপ থাকলেও দুপুরের দিকে যাত্রীর উপস্থিতি কমে যায়। তবে বিকেল হতেই যাত্রীর ঢল নামে টার্মিনাল এলাকায়। লঞ্চগুলোতেও দেখা যায় যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়।

লঞ্চ-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোববার থেকে সরকারি ছুটি শুরু হলেও এর আগে সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় অনেকেই আগেভাগে বাড়ি ফিরছেন। শুক্রবার অনেকে টিকিট কিংবা কেবিন বুকিং করতে না পারায় এদিন যাচ্ছেন। সেজন্য বিগত কয়েক দিনের তুলনায় আজ যাত্রীর চাপ আরও বেড়েছে। নিয়মিত চলাচলকারী লঞ্চগুলোর কেবিনের অগ্রীম টিকিট বিক্রি আগেই শেষ হলেও বিভিন্ন রুটে লঞ্চের সংখ্যা বাড়ানোয় এখনও কেবিনের টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন যাত্রীরা। তবে কেবিনের তুলনায় ডেকের যাত্রীর চাপই বেশি বলছেন লঞ্চ সংশ্লিরা।

ঢাকা-বরিশাল রুটে চলাচলকারী এমভি প্রিন্স আওলাদ এর সুপারভাইজার ইহাদ তালুকদার বলেন, আজকে যাত্রীর চাপ আগের দিনগুলোর তুলনায় অনেক বেড়েছে। কাল থেকে আরও বাড়বে। ঈদের আগের দিন অনেকেই বাড়ি যাবেন। লঞ্চের সংখ্যা বাড়ানোয় টিকিটেরও ঘাটতি নেই। যাত্রীরা কেবিনের তুলনায় ডেকের টিকিট বেশি নিচ্ছেন।

ঢাকা-ভাণ্ডারিয়া রুটে চলাচলকারী এমভি ফারহান-৪ এর টিকিট বিক্রেতা সুমন শেখ বলেন, আমাদের অগ্রিম টিকিট আগেই বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। আমরা ডেকের টিকিট দিচ্ছিলাম। ইতোমধ্যেই লঞ্চ ভরে গেছে। যাত্রীর চাপ আরও বাড়বে বলে মনে হচ্ছে। সেজন্য এই রুটে লঞ্চের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।

লঞ্চ মালিক সমিতির মহাসচিব শহিদুল হক ভুঁইয়া বলেন, আজকে যাত্রী চাপ বিগত কয়েকদিনের তুলনায় বেড়েছে। সন্ধ্যা থেকে তা আরও বেড়েছে। এখনও গার্মেন্টসশ্রমিকরা কাজ শেষ করে অনেকেই আসতে পারেননি। আমাদের পর্যাপ্ত লঞ্চ প্রস্তুত আছে। যাত্রী বাড়লে লঞ্চ আরও বাড়ানো হবে। টিকিটের কোনো ঘাটতি নেই। রোববার যাত্রী চাপ সামলাতে আমাদের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এদিকে টিকিটের ঘাটতি না থাকায় অনেকটা স্বস্তি নিয়েই ঘরে ফিরছেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। অনেকেই অগ্রিম টিকিট বুকিং দিয়ে রাখায় পরে আসলেও ঝামেলা পোহাতে হয়নি। লঞ্চের সংখ্যা বাড়ানোয় যাত্রীরা ঘাটে এসেও টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন। টার্মিনাল এলাকাতেও তেমন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছেনা যাত্রীদের।

এদিকে যাত্রীদের নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দিতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ)। আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে লঞ্চ চলাচল করবে বলা জানানো হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত বয়া-জ্যাকেটের ব্যবস্থাও রয়েছে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিওটিএ কর্তৃপক্ষ।


নারীর হাতে মার খেয়ে অস্ত্র ফেলে পালালো ছিনতাইকারী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাস্তায় আটকে ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে এক নারীর হাতে মার খেয়ে অস্ত্র ফেলে পালিয়েছে তিন ছিনতাইকারী। মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার আমলসার ইউনিয়নের কোদলা ও আমলসারের মাঝামাঝি সড়কে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, বুধবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এক এনজিওকর্মী নারীর কাছ থেকে অস্ত্র ঠেকিয়ে ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে তিন ছিনতাইকারী। এ সময় ওই নারী ছিনতাইকারীদের প্রতিহত করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে ওই নারীকে নির্জন রাস্তায় আটকে টাকা-পয়সা ও ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে ছিনতাইকারীরা। এ সময় ওই নারী আত্মরক্ষায় এক ছিনতাইকারীকে ঘুসি মারে। এরপর ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ছিনতাইকারীরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। পালানোর সময় তারা একটি আগ্নেয়াস্ত্র ফেলে যায়।

ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, মরেই যাবো ভেবে শেষ চেষ্টা করেছি। লড়াই করার পর তারা পালিয়ে গেছে। পরে দেখি একটি অস্ত্র মাটিতে পড়ে আছে।

শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইদ্রিস আলী জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অস্ত্রটি উদ্ধার করেছে। অস্ত্রটি আসল নাকি নকল, পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।


সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে ফিরলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বহুল প্রত্যাশিত নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরলো। ১০ কার্যদিবস ধরে শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের অন্য ছয় সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি এস এম ইমদাদুল হক, বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ।

তবে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আপিল বিভাগের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল হলেও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এ ব্যবস্থায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাদের মতে, পরবর্তী অর্থাৎ চতুর্দশ জাতীয় নির্বাচনই হতে পারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে।

এর উদাহরণ হিসেবে তারা বলেন, আগে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে আপিল বিভাগ রায় দেওয়ার পর ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল’ যেমন স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হয়েছিল, তেমনি ১৯৮৮ সালে এরশাদ সরকারের আনা সংশোধনীতে বিভাগীয় শহরে স্থাপিত হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ হাইকোর্ট বাতিল করলে সেই রায়ের পর সার্কিট বেঞ্চ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায় ।

আপিল পক্ষের আইনজীবী ড. শরীফ ভুইয়া বলেন, ‘ওই সংশোধনীগুলো বাতিলের প্রেক্ষাপট ভিন্ন, বর্তমান প্রেক্ষাপটও তা-ই ভিন্ন।’ তার মতে, ত্রয়োদশ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় করতে গেলে সাংবিধানিক জটিলতা তৈরি হতে পারে।

গত ১১ নভেম্বর শেষ হওয়া এ আপিল শুনানিতে বদিউল আলমের পক্ষে শুনানি করেন ড. শরীফ ভুইয়া, বিএনপির পক্ষে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, মির্জা ফখরুলের পক্ষে ব্যারিস্টার জয়নুল আবেদীন এবং জামায়াতে ইসলামীর গোলাম পরওয়ারের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা বলেন, আমরা এখন যে অবস্থায় আছি তাতে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা সাংবিধানিকভাবে কার্যকর করা সম্ভব নয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে এলেও এবার অর্থাৎ ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন এ ব্যবস্থায় করার সুযোগ নেই।

শুনানিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে যে নির্বাচন, তা তত্ত্বাবধায়কের অধীনে হবে না। আদালতে আমরা বলেছি, পরবর্তী নির্বাচন থেকে এ বিধান কার্যকর হতে পারে।’

জামায়াতের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনিরও মনে করেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলেও ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই হবে। সংসদ ভাঙার ১৫ দিনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের বিধান ছিল। সংসদ না থাকলে ভাঙার প্রশ্নই আসে না। এখন তো সে রকম পরিস্থিতি নেই। আর সংসদ ভেঙেছে এক বছরেরও বেশি সময় আগে। ফলে এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রয়োগের সাংবিধানিক সুযোগ নেই। তার মতে, বর্তমানে দেশ একটি অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। তাদের তিনটি ম্যান্ডেট- বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন। সেই ধারাবাহিকতায়ই আসন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নতুন সংসদ গঠনের পর চাইলে আগের তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি পুনর্বহাল করা যেতে পারে অথবা জুলাই সনদের মেকানিজম অনুযায়ী নতুন কাঠামো গড়া যেতে পারে।

মধ্যস্থতাকারী হিসেবে এ আপিলে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ ও ব্যারিস্টার শাহরিয়ার কবির। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক। গত ২১ অক্টোবর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের শুনানি শুরু হয়।

উল্লেখ্য, বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি বের হবার আগেই ২০১১ সালের ৩০ জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিলুপ্তিসহ ৫৫টি সংশোধনীসহ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদে পাস করে এবং ৩ জুলাই তা অনুমোদন করিয়ে নেয়।

গত বছর গণঅভ্যুত্থানের পর গত ১৭ ডিসেম্বর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ পঞ্চদশ সংশোধনীর ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানবিরোধী ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। ফলে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরার পথ তৈরি হয়।


নারীদের পেছনে রেখে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব না: ধর্ম উপদেষ্টা

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে হিফযুল কোরআন অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, নারীদের পেছনে রেখে আমরা এগিয়ে যেতে পারব না। এগিয়ে যেতে হলে মা-বোনদের সঙ্গে নিয়েই যেতে হবে।

বুধবার রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে নিবরাস মাদ্রাসার আয়োজনে হিফযুল কোরআন অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, হযরত খাদিজা (রা.), হযরত আয়েশা (রা.) ও অন্যান্য নারী সাহাবিদের নিয়েই রাসুলুল্লাহ (স.) সমাজ পরিবর্তন করেছেন, রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন। এমনকি যুদ্ধের ময়দানেও মা-বোনদের দেখা গেছে। আমরা যদি আমাদের মা, বোন ও কন্যাদের অধিক হারে তাদের হাফেজা, আলিমা, মুহাদ্দিসা, চিকিৎসক, প্রযুক্তিবিদ ও বিজ্ঞানী বানাতে পারি তাহলে তারা সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বত্র উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারবে।

ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমরা একটি নতুন দিনের স্বপ্ন দেখি। ভেদাভেদ আর নয়। আমাদের একে-অন্যের হাত ধরে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’ আগামীতে ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে আমরা যে কল্যাণ রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখি তা পূরণেও নিবরাস মাদ্রাসা মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মানুষকে সম্মান করার আহ্বান জানিয়ে ড. খালিদ বলেন, ‘আমি যদি অন্য একজনকে সম্মান না করি তাহলে তার কাছ থেকে সম্মান আশা করা যায় না। আমি যদি ঢিল ছুঁড়ি তাহলে পাটকেল খাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’

তিনি গীবত, পরনিন্দা ও পরচর্চা ত্যাগ করার জন্য সকলকে অনুরোধ করেন। এছাড়া উপদেষ্টা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ভেদাভেদ ভুলে সকলকে কালেমা তাইয়্যেবার পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

নিবরাস মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ যাইনুল আবেদীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের খতিব আল্লামা সাইয়্যেদ আনোয়ার হোসাইন তাহের আহমাদ যাবেরী আল-মাদানী।

এতে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব মুহাম্মদ মুনীরুজ্জামান ভূঁঞা, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মিঞা মো. নূরুল হক, হুফফাজুল কোরআন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শায়খুল কুররা হাফেয কারি আব্দুল হক ও নিবরাস ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা শাহ মোহাম্মদ ওয়ালী উল্লাহ প্রমুখ বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।

পরে উপদেষ্টা নিবরাস মাদ্রাসার হাফেযুল কোরআন শিক্ষার্থীদের হাতে সংবর্ধনা ক্রেস্ট তুলে দেন।


মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে ১০ শর্ত, কয়েকটিতে সরকারের শক্ত আপত্তি: আসিফ নজরুল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

কয়েকটি বড় রিক্রটিং এজেন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে চায় মালয়েশিয়া। দেশটির এই শর্ত শিথিল করে যতটা সম্ভব রিক্রটিং এজেন্সির জন্য অবারিত সুযোগ রাখার কথা মালয়েশিয়াকে জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

তিনি বলেন, মালয়েশিয়া থেকে যে ১০টি শর্ত দিয়েছে তার মধ্যে কয়েকটি শর্তের বিষয়ে আমরা শক্ত আপত্তি জানিয়েছি এবং বলেছি যে সময়সীমা বাড়াতে হবে। আমরা রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে কথা বলে জানিয়েছি যে বেশিরভাগ শর্ত পূরণ করা সম্ভব না। এগুলো পূরণ করতে গেলে সিন্ডিকেট হবে আবার।

উপদেষ্টা বলেন, অল্প কয়েকটা বড় রিক্রটিং এজেন্সি সুযোগ পাবে। আমরা সেটা চাই না, আমরা চাই সুযোগ যত বেশি সম্ভব যেন অবারিত করা হয়। এজন্য আমরা এই শর্ত শিথিল করতে বলেছি। তারা আমাদের আশ্বাস দিয়েছে যে তারা এগুলো বিবেচনা করবে।

তিনি বলেন, শর্ত শিথিল ও শ্রমবাজার যথাসম্ভব সব এজেন্সির জন্য উন্মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা মালয়েশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ ও কূটনৈতিক আদান-প্রদান অব্যাহত রাখব।

ঢাকায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও’র সহযোগিতায় তৈরি ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।


জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার–প্রচারণায় ২৫ কোটি টাকা খরচ করবে সরকার: অর্থ উপদেষ্টা

*আনসাররা পাবে ১৭ হাজার শটগান *বডি ক্যামেরা কেনার বিষয়ে পর্যালোচনা চলছে *বাজার স্থিতিশীল রাখতে রোজার আগে চাল-গম আমদানি করা হবে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনকে ‘উৎসবমুখর’ করতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে আয়োজন উপলক্ষে জনগণের মধ্যে সচেতনতামূলক প্রচারের অংশ হিসেবে দেশের ৬৪টি জেলা এবং ৩০০টি উপজেলায় টিভিসি, ভিডিও ডকুমেন্টারি ইত্যাদি তৈরি ও প্রচারের জন্য ‘এলইডি অ্যাক্টিভেশন ক্যারাভান’-এর মাধ্যমে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হবে। এতে ব্যয় হবে আনুমানিক ২৫ কোটি টাকা। দরপত্র ছাড়াই সরাসরি ক্রয় পদ্ধিতিতে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান ব্র্যান্ড সলিউশন লিমিটেডকে এই কাজ দেওয়া হবে।

গতকাল মঙ্গলবার সরকারি ক্রয় ও অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান উপদেষ্টা।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, এ সংক্রান্ত কাজ নভেম্বর মাসের ৪র্থ সপ্তাহে শুরু করার নির্দেশনা থাকায় সময় স্বল্পতার জন্য উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা সম্ভব নয়। তাই রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে পিপিপিআর ২০২৫ এর বিধি-৯৯(১) (ঠ) এবং পিপিএ ২০০৬ এর ৬৮ ধারা অনুসারে ২০২৫-২৬ সালের উৎসবমুখর নির্বাচনী প্রচারণা বাস্তবায়নে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান ব্র্যান্ড সলিউশন লিমিটেডকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে নিয়োগের ক্রয় প্রস্তাব নিয়ে আসে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। উপদেষ্টা পরিষদ প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। এ বাবদ দাপ্তরিক প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫ কোটি টাকা।

এছাড়া নির্বাচনের আগে আনসার-ভিডিপির জন্য ১৭ হাজার শটগান কেনা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আনসার-ভিডিপির জন্য প্রায় ১৭ হাজার শটগান কেনা হবে। এটা অনেক পুরোনো হয়ে গিয়েছিল এবং যে দামে আমরা পেয়েছি, এটা বেশ সাশ্রয়ী দামে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বডি ওর্ন ক্যামেরা কেনার ব্যাপারে পর্যালোচনা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রথমে তো ছিল অনেকগুলো করবে, সে জন্য আমরা বলেছি যে, আপনারা পর্যালোচনাটা করে আসেন। মূল্যটা আনবেন এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রকিউরমেন্টটা কীভাবে করবেন—একটা স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যেন প্রকিউরমেন্টটা হয়। বডি ক্যামেরা আসবে, হয়তো এখন ওরা একটু র‌্যাশনাল হিসেবে আসবে। উচ্চাকাঙ্ক্ষীভাবে বডি ক্যামেরা...শুধু সেনসিটিভ যেসব জায়গা আছে, ওইখানে আমরা সাজেস্ট করেছি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাজেস্ট করেছেন, আমরা সব জায়গায় বডি ক্যামেরা ইস্যু করতে পারবো না। এগুলো মনিটরের ব্যাপার আছে, ছবি আসবে, সেটার অ্যাকশন নিতে হবে তো!’

তবে কত সংখ্যক ক্যামেরা কেনা হবে সে ব্যাপারে কিছু বলেননি অর্থ উপদেষ্টা।

বাজার স্থিতিশীল রাখতে রোজার আগেই চাল-গম আমদানি করা হবে বলে জানান সালেহউদ্দিন। তিনি আরও বলেন, ‘বাকিগুলো ক্রমান্বয়ে আনা হবে। ইতোমধ্যে এলসি (ঋণপত্র) খোলার ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকে লিবারেল হয়েছে। গতবার যেটা আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, এবার এটা কন্টিনিউ করবে, যাতে করে দামটা সহনীয় হয় রোজার সময়।


এবার রেকর্ড সংখ্যক তরুণ ভোট দেবে: প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক তরুণ তাদের প্রথম ভোট দেবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন,এটি আমাদের সবার জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। উত্থানের সময় যারা ঢাকা এবং অন্য শহরের দেয়াল গ্রাফিতি ও চিত্রকর্মে ভরে তুলেছিল, সেই তরুণরা এবার ভোট দিতে আসবে।

গতকাল মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক ভাইস-মিনিস্টার প্যাস্কেল গ্রোটেনহুইস সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে এ কথা জানান তিনি।

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর এবং আসন্ন নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিগত স্বৈরশাসনের অধীন তিনটি কারচুপির নির্বাচনে ভোট দিতে না পারা রেকর্ডসংখ্যক তরুণ এবার তাদের প্রথম ভোটটি দেবে।

ড. ইউনূস জানান, তার সরকার ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং উৎসবমুখর নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

বৈঠকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নিতে না পারার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং নির্বাচন কমিশন তাদের নিবন্ধন স্থগিত করেছে। এই কারণে আওয়ামী লীগ আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

সাক্ষাৎকালে দুই নেতা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেন। তারা কৃষি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি এবং যুব উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে একমত হন। বিশেষ করে, যুব ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য একটি সোশ্যাল বিজনেস ফান্ড তৈরির সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা হয়।

ডাচ ভাইস-মিনিস্টার প্যাস্কেল গ্রোটেনহুইস বাংলাদেশের নির্বাচন প্রস্তুতির প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এত অল্প সময়ে ভোটের জন্য প্রস্তুত হয়েছে, যা প্রশংসনীয়।

তিনি বাংলাদেশের নতুন শ্রম আইনের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, এই আইন ডাচ ও ইউরোপীয় বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সহায়ক হবে। ডাচ মন্ত্রী জানান, নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশের বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করার পরিকল্পনা করছে এবং শিগগিরই এটি সই হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

প্যাস্কেল গ্রোটেনহুইস মন্তব্য করেন, ‘৫০ বছর ধরে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস উন্নয়ন অংশীদার ছিল। এখন আমরা এই সম্পর্ককে রাজনীতি, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগে একটি সম-অংশীদারিত্বে রূপান্তরিত করতে চাই।’

যেসব ডাচ কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা থেকে পণ্য কিনছে, তারা এখন বাংলাদেশে সরাসরি বিনিয়োগ এবং কাজ করার জন্য আগ্রহী, যোগ করেন তিনি।


বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৪ মাসে  সাড়ে ১৩ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল প্রতিনিধি 

ভারতের পেট্রাপোল বন্দর হয়ে গত ৪ মাসে বেনাপোল বন্দরে এসেছে ১৩ হাজার ৫২৮ মেট্রিক টন চাল। গত ২১ আগস্ট ৯টি ট্রাকে ৩১৫ মেট্রিক টন চালের প্রথম চালান বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। ২১ আগষ্ট থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত ৪ মাসে প্রায় ১৪৫টি চালানের বিপরীতে ৩৯৫টি ট্রাকে করে ১৩ হাজার ৫২৮ মেট্রিক টন মোটা চাল বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি হয়েছে।

দেশে চালের অস্থিতিশীল বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে বাংলাদেশ সরকার দেশের সব বন্দর দিয়ে চাল আমদানির অনুমতি দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২১ আগস্ট বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়। অর্থ্যাৎ আগষ্ট মাসে ১২৬০ মেট্রিক টন, সেপ্টেম্বর মাসে ৫ হাজার ৪৩৫ মেট্রিক টন, অক্টোবর মাসে ৫ হাজার ১৮৮ মেট্রিক টন এবং নভেম্বরে ১ হাজার ৬৪৫ মেট্রিক টন চাল ভারত থেকে আমদানি হয়েছে। আমদানি করা চাল ছাড় করণের জন্য বেনাপোল কাস্টমস হাউজে চার থেকে পাঁচটি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কাজ করছে। বন্দরের ৩১ নম্বর শেডে আমদানি করা চালের খালাস প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে থাকে।

সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের প্রতিনিধি বাবলুর রহমান বলেন, ‘চাল আমদানির শুরু থেকে আমরা কাস্টমস হাউজে চাল ছাড়করণের জন্য কাজ করে আসছি। চার মাস পর গত ২১ আগস্ট থেকে পুনরায় ভারত থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়।

বেনাপোল আমদানি রফতানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, জানান, গত ২১ আগস্ট থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। কিছুদিন বাদে বাদে এ সমস্ত চালের চালান বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে।প্রতিদিন চালের চালান আসেনা। গত আগষ্ট মাসে চাল আমদানি শুরুর দিকে চাল আমদানির পরিমান বেশি থাকলেও বর্তমানে অনেকাংশে কমে গেছে। তবে দেশের বিভিন্ন বন্দর দিয়ে চাল আমদানি হওয়ায় চালের বাজার কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। আমদানি অব্যাহত থাকলে চালের দামে তেমন একটা প্রভাব পড়বেনা বলে তিনি মনে করেন।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, ‘চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল সর্বশেষ চাল আমদানি হয়েছিল। পুনরায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর অনেক প্রতিষ্ঠান এলসি খুলে গত ২১ আগস্ট থেকে আবার চাল আমদানি শুরু করে। অর্থ্যাৎ ২১ আগস্ট থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত বেনাপোল বন্দর দিয়ে ১৩ হাজার ৫২৮ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। বর্তমানে চাল আমদানি কমে গেলে ও তেমন সমস্যা হবে না। ইতোমধ্যে কৃষকরা আমন ধান কাটতে শুরু করেছে। এ ধান বাজারে আসলে চালের দাম কমে আসবে এবং দেশে চালের ঘাটতি পূরন হবে।

বেনাপোল উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী কর্মকর্তা শ্যামল কুমার নাথ জানান, ৪ মাসে ভারত থেকে ১৪৫টি চালানে ৩৯৫টি ট্রাকে করে ১৩ হাজার ৫২৮ মেট্রিক টন চাল বেনাপোল বন্দরে আমদানি হয়েছে। আমদানি করা চাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দ্রুত খালাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।


পাবনায় ক্যান্সারে আক্রান্ত মেয়েকে বাঁচাতে বাবার আকুতি 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পাবনা প্রতিনিধি

ঘাতক ব্যাধি ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত ছোট্ট শিশু নুসরাত জাহান। তার বয়স ৭ বছর। সে উপজেলার আদাবাড়িয়া গ্রামের দরিদ্র আশরাফ আলীর মেয়ে ও স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। অসুস্থ নুসরাত বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। জীবন বাঁচাতে এখন প্রতিদিন তাকে কেমোথেরাপি দিতে হচ্ছে।

এদিকে মেয়ের এমন অসুখে পরিবারের সবার কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ! সংসার চালাতে যেখানে হিমশিম খেয়ে হয়, সেখানে অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসার যোগান দেওয়া দরিদ্র পরিবারের পক্ষে কীভাবে সম্ভব তাই নিরূপায় হয়ে বাবা আশরাফ আলী মেয়ের চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবান ও দানশীল ব্যক্তিদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

জানা যায়, বেশ কিছু দিন আগে নুসরাত হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্থানীয় চিকিৎসকের নিকট নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক তাকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বিএমটি, হেমাটোলজী ইউনিটের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা মোঃ কামরুজ্জামানকে দেখানো হয়। সেখানে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে জানা যায় নুসরাত ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত।

মেয়েটির বাবা আশরাফ আলী জানান

মেয়ের চিকিৎসার জন্য প্রায় ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন। কিন্তু এতো টাকা যোগাড় করা তার পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব না। তাই তিনি মেয়ের জীবন বাঁচাতে সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চান।

চাচা রেজাউল করিম জানান ঠিক মতো চিকিৎসা পেলে নুসরাত সুস্থ হয়ে উঠবে বলে

চিকিৎসক তাদের জানিয়েছেন।

তবে দীর্ঘদিন চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে। বর্তমানে নুসরাতের চিকিৎসায় কেমোথেরাপি ও ওষুধ পত্রসহ প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার টাকা করে খরচ হচ্ছে। কিন্তু এতো টাকা যোগান দেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।

আদাবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আল আমিন হোসাইন বলেন-নুসরাতের বাবা খুব দরিদ্র মানুষ। তার পক্ষে এতো টাকা খরচ করে মেয়ের চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে মেয়েটিকে বাঁচানো যেতে পারে।


বিজয় দিবসে এবারও প্যারেড হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, বিজয় দিবসে এবার প্যারেড হবে না। উদযাপন নিয়ে কোন ধরনের নাশকতা বা অস্থিরতাও নেই। আগের চেয়ে অনেক বেশি হবে কর্মসূচি। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তবে গত বছরও বিজয় দিবসের প্যারেড হয়নি।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়া ডিবি পরিচয়ে সাংবাদিককে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া ঠিক হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, বিষয়টি তার জানা ছিলো না, তদন্তের পর জানাতে পারবেন।


জামায়াত-এনসিপিসহ ৬ দলের সঙ্গে সংলাপে বসেছে ইসি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সহ ৬টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বসেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে শুরু হয় এই সংলাপ। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলবে সংলাপটি। পরে ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিএনপি ও গণ অধিকার পরিষদসহ ছয় দলের সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি।

ইসি সূত্র জানায়, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি), ইনসানিয়াত বিপ্লব, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণসংহতি আন্দোলন ও জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) সঙ্গে সংলাপ করবে ইসি।

এ ছাড়া দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি), নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি-(বিআরপি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)-এর সঙ্গে ইসির সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।


ঘরে বসে মেট্রো রেলের কার্ড রিচার্জ চালু হচ্ছে ২৫ নভেম্বর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকার মেট্রো রেলের স্থায়ী কার্ড এখন থেকে যাত্রীরা ঘরে বসেই রিচার্জ করতে পারবেন। ২৫ নভেম্বর থেকে চালু হতে যাওয়া এই সেবা ব্যবহার করে ব্যাংকের ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড, বিকাশ, নগদ, রকেটসহ অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সহজেই টাকা ভরা যাবে।

প্রধান উপদেষ্টা (সড়ক, সেতু ও রেল মন্ত্রণালয়)-এর বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন এই সেবা উদ্বোধন করবেন। শুরুতে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) ওয়েবসাইটের লিঙ্কের মাধ্যমে রিচার্জ করা যাবে, পরবর্তী সময় একটি অ্যাপের মাধ্যমে একই সেবা পাওয়া যাবে।

ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার জানিয়েছেন, এই ব্যবস্থা চালু হলে যাত্রীদের স্টেশনে লাইন ধরে কার্ড রিচার্জ করতে হবে না। সময় বাঁচবে এবং ভোগান্তি কমবে।

অনলাইনে রিচার্জের পর কার্ডটি স্টেশনে থাকা ‘অ্যাড ভ্যালু মেশিন’ (এভিএম) এ স্পর্শ করিয়ে হালনাগাদ করতে হবে। একবার স্পর্শ করানোর পর, কার্ডের টাকা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আর স্পর্শের প্রয়োজন নেই।

বর্তমানে মেট্রো রেলে দুই ধরনের স্থায়ী কার্ড ব্যবহার হচ্ছে—ডিএমটিসিএলের এমআরটি পাস এবং ডিটিসিএর র‍্যাপিড পাস। নতুন ব্যবস্থায় উভয় কার্ডের জন্যই অনলাইন রিচার্জ করা সম্ভব।

ডিটিসিএর তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি স্টেশনের দুটি স্থানে এভিএম যন্ত্র বসানো হবে। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৬টি স্টেশনে মোট ৩২টি যন্ত্র বসানো হবে।

মেট্রো রেলের যাত্রী সুবিধা সম্প্রসারণে এই উদ্যোগ বড় ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বর্তমানে ৫৫ শতাংশ যাত্রী র‍্যাপিড বা এমআরটি কার্ড ব্যবহার করেন। অনলাইনে রিচার্জের সুবিধা চালু হলে দৈনিক যাত্রী চলাচলের গতি আরও বাড়বে।


দেশের বাজারে আবারও কমেছে স্বর্ণের দাম, ভরি ২ লাখ ৬ হাজার ৯০৮ টাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে টানা অস্থিরতার পর অবশেষে মূল্যবান ধাতুটির দামে দেখা গেল স্বস্তির ছোঁয়া। দেশের বাজারে আরেক দফা কমেছে স্বর্ণের দাম। দেশের বাজারে সবশেষ ৫ দফা দাম সমন্বয়ে ৩ বারই বেড়েছে স্বর্ণের দাম। তবে সবশেষ টানা ২ দফায় কমানো হয়েছে মোট ৬ হাজার ৮১১ টাকা। এ দফায় ভরিতে ১ হাজার ৩৬৪ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ ৬ হাজার ৯০৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ বুধবার (১৯ নভেম্বর) থেকে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে নতুন দামে। তবে আগের দামেই বিক্রি হবে রুপা।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম কমায় সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম ২ লাখ ৬ হাজার ৯০৮ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৯৭ হাজার ৪৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৬৯ হাজার ২৯১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৪০ হাজার ৭৬১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

সবশেষ গত ১৫ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সেদিন ভরিতে ৫ হাজার ৪৪৭ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ ৮ হাজার ২৭২ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৯৮ হাজার ৮০১ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭০ হাজার ৩৯৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৪১ হাজার ৭১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা ১৬ নভেম্বর থেকে কার্যকর হয়।

এ নিয়ে চলতি বছর মোট ৭৮ বার দেশের বাজারে সমন্বয় করা হলো স্বর্ণের দাম। যেখানে দাম বাড়ানো হয়েছে ৫৩ বার, আর কমেছে মাত্র ২৫ বার। আর ২০২৪ সালে দেশের বাজারে মোট ৬২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়। যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল, আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার।


শেখ হাসিনাকে ফেরাচ্ছে না ভারত: বিবিসি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ভারতের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা বিবিসিকে আভাস দিয়েছেন, এই রায়ের ফলে শেখ হাসিনাকে নিয়ে দিল্লির অবস্থান আদৌ বদলাচ্ছে না এবং তাকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়ারও প্রশ্ন উঠছে না।
বস্তুত শেখ হাসিনা এই পর্বে যখন থেকে ভারতে পা রেখেছেন, মানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে আজ পর্যন্ত তাকে আশ্রয় দেওয়া নিয়ে ভারতের অবস্থান একই রয়েছে। সেটি হলো – একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তার কথা ভেবে তাকে ভারতে ‘সাময়িক’ (ফর দ্য টাইম বিয়িং) আশ্রয় দেওয়া হয়েছে, এর বেশি কিছু নয়।
গতকাল বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণার পরেও ভারতের সেই অবস্থান অপরিবর্তিতই থাকছে। এর অর্থ, তাকে আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে, এমন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়: প্রতিক্রিয়ায় যা বলল ভারত
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত বছর ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে তার মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। এ নিয়ে এবার আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক ঘোষিত রায়টি ভারতের নজরে এসেছে (নোটেড)। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারতের নিকটতম প্রতিবেশী বাংলাদেশ এবং দেশটির জনগণের শান্তি, গণতন্ত্র, অংশগ্রহণমূলক রাজনীতি ও স্থিতিশীলতাকে ভারত সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখে।
এ অঞ্চলে দীর্ঘদিনের অভিন্ন ইতিহাস ও সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে ভারত জানিয়েছে, বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থ নিশ্চিত করতে তারা সবসময় গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে ইচ্ছুক।
ভারতের বিবৃতিতে আরও জোর দিয়ে বলা হয়, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি যাই হোক, ভারতের লক্ষ্য হবে বাংলাদেশের সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে ইতিবাচক ও কার্যকর যোগাযোগ বজায় রাখা—যাতে দেশটির স্থিতিশীলতা ও শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা যায়।


banner close