বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
৬ কার্তিক ১৪৩২

ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাব গাম্ভীর্যে দেশব্যাপী ঈদুল আজহা উদযাপিত

ছবি: বাসস
আপডেটেড
১৮ জুন, ২০২৪ ০০:১১
বাসস
প্রকাশিত
বাসস
প্রকাশিত : ১৮ জুন, ২০২৪ ০০:০৩

যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা, ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গতকাল সোমবার সারা দেশে মুসলমানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহ লাভের আশায় ঈদের জামাত শেষে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি করেছেন।

এদিন ঈদের নামাজ শেষে মুসল্লিদের অনেকেই কবরস্থানে ছুটে যান। স্বজনদের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে অশ্রুসজল চোখে এই আনন্দের দিনে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে আল্লাহর দরবারে আকুতি জানান।

ঈদুল-আজহা উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীসহ বিশ্বের সকল মুসলমানদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন।

এবার হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৭টায়। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন প্রধান ঈদ জামাতে অংশ নেন। এই জামাতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশ নেন। ভোর থেকেই প্রধান জামাতে নামাজ আদায় করার জন্য মুসল্লিদের ঢল নামে। সকাল সাড়ে ৭টার আগেই জাতীয় ঈদগাহ ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।

জাতীয় ঈদগাহে প্রধান জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন। দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাসহ দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনায় মোনাজাত করা হয়। বিশেষ করে ফিলিস্তিনের মুসলমানদের জন্য এই জামাতে মুসল্লীরা দোয়া করেন।

এদিকে দেশের সবচেয়ে বড় জামাত কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় হাজার হাজার মুসল্লি এতে নামাজ আদায় করেন। উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ও দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ঈদগাহ ময়দান কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার ১৯৭তম জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল নয়টায়। ঈদ জামাতে লক্ষাধিক মুসল্লি অংশ নেন। জামাতে ইমামতি করেন জেলা মারকাজ মসজিদের খতিব মাওলানা হিফজুর রহমান খান। নামাজ শেষে মুসলিম উম্মার শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

ঈদের নামাজ শেষে সারা দেশে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য পশু কোরবানি দেয়। পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে আত্মত্যাগের মহিমায় বলীয়ান হয়ে সম্প্রতির হাত বাড়িয়ে দেন দেশ ও দশের উদ্দেশে। কোরবানির গোস্ত গরীব দুঃখীদের মাঝে তারা বিতরণের মধ্য দিয়ে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করেন।

সকালে রাষ্ট্রপতি সকলের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। ঈদুল আজহা উপলক্ষে বঙ্গভবনের ক্রিডেনশিয়াল হলে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা। রাষ্ট্রপতির পরিবারের সদস্য এবং বঙ্গভবনের সংশ্লিষ্ট সচিবরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপতি মন্ত্রিসভার সদস্য, সিনিয়র রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিচারক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, কবি, লেখক, শিক্ষক এবং বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাসহ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ঈদুল আজহা উপলক্ষে দলীয় নেতাদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। সোমবার সকালে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগ ও দলটির সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন শেখ হাসিনা। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলের শীর্ষ নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

এরপর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ, আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ ও ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

প্রতিবছরের মতো এবারও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৭টা থেকে পর্যায়ক্রমে জামাতগুলো অনুষ্ঠিত হয়। শেষ জামাত হয় বেলা পৌনে ১১টায়।

ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো যথাযোগ্য গুরুত্ব সহকারে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করছে। ঈদ উদযাপন উপলক্ষে দেশের সকল হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, বৃদ্ধ নিবাস, মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনসমূহে যথাযথভাবে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করেছে।

কোরবানির পশুর রক্ত বা বর্জ্য দ্বারা যাতে পরিবেশ দুর্গন্ধময় না হয় সে- বিষয়ে সকল প্রকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। প্রতিশ্রুত ছয় ঘণ্টার ভেতর শতভাগ বর্জ্য অপসারণ করেছে ডিএনসিসি। পাশাপাশি মিরপুরের গোলারটেক মাঠকে ঢাকা উত্তরের ঈদগাহ ময়দান হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

বিষয়:

নির্বাচনের সময় এআইয়ের অপব্যবহার রোধে সমন্বিত সেল করা হবে: সিইসি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-এর অপব্যবহার এখন একটি বৈশ্বিক মাথা ব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একজন ডাক্তার যেমন এটি ব্যবহার করতে পারেন, তেমনি একজন ছিনতাইকারীও ব্যবহার করতে পারে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এআইয়ের অপব্যবহার রোধ করতে এটিকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে একীভূত করার চেষ্টা চলছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে নির্বাচন কমিশন আয়োজিত ‘নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এআই অপব্যবহার প্রতিরোধ’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে একত্রে চিন্তা করলে আরো অনেক ভালো কিছু বেরিয়ে আসবে। তাই এই কর্মশালাটি একত্রে চিন্তা করে একটি সুনির্দিষ্ট সমাধান নিয়ে আসার একটি সুযোগ। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এআইয়ের অপব্যবহার মোকাবিলায় একটি শক্তিশালী অবকাঠামো তৈরির জন্য কর্মশালায় উপস্থিত বিশেষজ্ঞ ও কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়ে মৌলিক সুপারিশ চাই। শুধুমাত্র নীতিগত নির্দেশিকা নয়, বরং বাস্তবায়নযোগ্য খুটিনাটি জানতে চাই। আমি এই কর্মশালা থেকে সুনির্দিষ্ট কিছু পরামর্শ চাই।’
২৪ ঘণ্টার নজরদারি ও ফ্যাক্ট চেকিংয়ের বিষয়ে তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচন চলাকালীন, বিশেষ করে গভীর রাতেও বহু কিছু ঘটে যেতে পারে। তাই ভুল তথ্য বা মিথ্যা তথ্যের দ্রুত মোকাবিলায় গঠিত সেলকে অবশ্যই ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে হবে। এই কাজের জন্য কী ধরনের লোকবল নিয়োগ দিতে হবে তা নিশ্চিত করতে হবে।’
ফ্যাক্ট চেকিংয়ের বিষয়ে এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘ফ্যাক্ট চেকিংয়ের পদ্ধতি কেমন হবে, কত দ্রুত তথ্য যাচাই করা যাবে এবং কোন কোন সংস্থাকে এর জন্য কাজে লাগানো হবে—এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সমাধান দরকার। ফ্যাক্ট চেকিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল সংখ্যা কত হবে, তারও ধারণা দিতে হবে।’
পাহাড়ি অঞ্চল বা প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ভুল তথ্য ছড়ানোর চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ধরুন পাহাড়ের দুর্গম অঞ্চল বা সমুদ্র উপকূলের অফশোর আইল্যান্ডগুলো থেকে অস্বাভাবিক বা মিথ্যা তথ্য আসতে পারে। সেই তথ্য বা মিথ্যা তথ্যের কাছে পৌঁছানো এবং সেগুলোকে মোকাবিলা করার উপায় কী? এ জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সেলের সংযোগ স্থাপন করা অত্যন্ত জরুরি। প্রয়োজনে প্রতি শিফটে কতজন কর্মী নিয়োগ করতে হবে এবং তাদের শিক্ষাগত পটভূমি বা অভিজ্ঞতা কেমন হতে হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত সুপারিশ দিতে হবে।’
স্থানীয় সংযোগের বিষয়ে সিইসি বলেন, ‘প্রত্যন্ত অঞ্চলে কারা আমাদের হয়ে কাজ করবে এবং এই মিথ্যা তথ্যগুলো সম্পর্কে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে—এই সব খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে পরামর্শ দিতে হবে। এই কর্মশালাটি অত্যন্ত কার্যকর হবে এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনকে তার যাত্রাপথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।’


এক যুগে সড়কে ঝরেছে লক্ষাধিক প্রাণ: যাত্রী কল্যাণ সমিতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিগত এক যুগে সড়কে ৬৭ হাজার ৮৯০টি দুর্ঘটনায় এক লাখ ১৬ হাজার ৭২৬ জন নিহত ও এক লাখ ৬৫ হাজার ২১ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০২৫ উপলক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই তথ্য তুলে ধরেন।
মোজাম্মেল হক বলেন, স্বাধীনতার আগে দেশে নিরাপদ ও সাশ্রয়ী যোগাযোগ পথ হিসেবে নৌ ও রেলপথে ৮০ শতাংশ এবং সড়কে ২০ শতাংশ মানুষের যাতায়াত ছিল। তাই সড়কে দুর্ঘটনা ২০ শতাংশে সীমিত ছিল। স্বাধীনতার পরে দাতা সংস্থার পরামর্শে একের পর এক সড়ক উন্নয়ন ও সংস্কারের নামে বেহিসেবি লুটপাট, সড়কে বেপরোয়া চাঁদাবাজি, বহুমাত্রিক পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিবর্তে একের পর এক নতুন নতুন সড়ক নির্মাণ করে ৮০ শতাংশ মানুষের যাতায়াত সড়কে নিয়ে আসার কারণে সড়ক দুর্ঘটনাও ৮০ শতাংশ বেড়েছে। ‘সড়কে এই গণহত্যার’ জন্য সরকারের দুর্নীতি ও ভুলনীতি দায়ী।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর দেশ নানা খাতে অগ্রসর হলেও দাতা সংস্থার পরামর্শে নৌ ও রেলপথ অবহেলিত থেকে গেছে। বরং একের পর এক সড়ক সম্প্রসারণে সমন্বিত গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। পথচারী অবকাঠামোর অভাব ও উন্নত গণপরিবহনের সংকটে মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনা ও যানজট নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা না গেলে এই সেক্টরে দৃশ্যমান অগ্রগতি সম্ভব নয় উল্লেখ করে মোজাম্মেল হক বলেন, জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে পরিবহন সেক্টর সংস্কারের উদ্যোগ না নিলে দেশের সাধারণ মানুষের যাতায়াতের ভোগান্তি আরও বাড়বে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার উন্নত গণপরিবহন নামানোর পরিবর্তে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিবন্ধন দিয়ে রাস্তায় নামানোর যে উদ্যোগ নিয়েছে এই প্রক্রিয়ায় অজ্ঞতা, অনভিজ্ঞতা ও নানাবিধ গলদ থাকায় এই কার্যক্রম শুরু করা হলে এক বছরের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহর অটোরিকশার কারণে অচল হয়ে যাবে। তাই এহেন সিদ্ধান্ত থেকে ফেরত এসে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ প্রতিটি বিভাগীয় শহরে সরকারি উদ্যোগে ম্যাস ট্রানজিট (পাতাল মেট্রোরেল) এর ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।
দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়, সড়ক পরিবহন খাতে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও কতিপয় দুর্নীতিবাজ পুলিশ কর্মকর্তাদের চাঁদাবাজি ও নৈরাজ্যের কারণে সড়কের বিশৃঙ্খলা, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের অবাধে চলাচল, লাইসেন্সবিহীন চালক, অপ্রাপ্তবয়স্ক চালক, সড়কে ত্রুটি, চালকের মাদক গ্রহণ, বেপরোয়া গতি, অযোগ্য চালকের হাতে লাইসেন্স প্রদান, লাইসেন্সবিহীন-প্রশিক্ষণহীন চালকের হাতে যানবাহন তুলে দেওয়াসহ নানা কারণে দুর্ঘটনা বেড়েছে।
এ পরিস্থিতিতে আজ বুধবার নিরাপদ সড়ক দিবস সামনে রেখে সড়ক দুর্ঘটনায় দেশের হাজার হাজার মানুষের জীবন-সম্পদ রক্ষায়, যাতায়াতের ভোগান্তি লাঘবে জরুরিভিত্তিতে ১২ দফা সুপারিশ পেশ করেন তিনি।
সুপারিশগুলো হলো: ১. হারিয়ে যাওয়া নৌ ও রেলপথ সড়কের সঙ্গে সমন্বয় করে সমন্বিত যাতায়াত নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে।

২. চাঁদাবাজি ও অনিয়ম-দুর্নীতি, মালিক-শ্রমিকদের দৌরাত্ম্য বন্ধে পরিবহনখাত আপাদমস্তক সংস্কার করতে হবে।

৩. ঢাকা-চট্টগ্রামসহ প্রতিটি বিভাগীয় শহরে সরকারি উদ্যোগে ম্যাস ট্রানজিট (পাতাল মেট্রোরেল) এর ব্যবস্থা করতে হবে।

৪. ঢাকা-চট্টগ্রামসহ প্রতিটি বিভাগীয় শহরে সরকারি উদ্যোগে ডিজিটাল লেনদেনের ভিত্তিতে কমপক্ষে দুটি বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (আলাদা উন্নতমানের বাস লেন) লেন চালু করতে হবে।

৫. সারাদেশে জেলা শহর থেকে উপজেলায় মানসম্পন্ন বাস নামিয়ে যাতায়াতে শক্তিশালী বাস নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে।

৬. মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা আমদানি ও বিপণন বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

৭. উন্নত কারিকুলাম তৈরি করে পরিবহন চালকদের রাষ্ট্রের খরচে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

৮. উন্নত দেশের আদলে ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রম ডিজিটাল করতে হবে। ট্রাফিক ট্রেনিং একাডেমি গড়ে তুলতে হবে।

৯. সড়ক দুর্ঘটনার মামলা সরকারি উদ্যোগে আমলে নিতে হবে। প্রতিটি হতাহত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণের আওতায় আনতে হবে।

১০. পরিবহন সেক্টরে যাত্রীস্বার্থে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রতিটি ফোরামে যাত্রী প্রতিনিধি তথা ভুক্তভোগীর মতামত ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

১১. সড়ক সেক্টরে আইনের সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

১২. সারাদেশে সাইক্লিস্ট ও পথচারীদের জন্য পৃথক লেন ও নিরাপদ ফুটপাতের ব্যবস্থা করতে হবে।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি শরীফ রফিকুজ্জামান, বারভিডার সভাপতি আবদুল হক, ড্রাইভার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান বাদল আহমেদ প্রমুখ।


শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া বাড়ছে ১৫ শতাংশ

* আন্দোলন প্রত্যাহার, ক্লাসে ফিরছেন শিক্ষকরা * বার্ষিক পরীক্ষা পর্যন্ত শনিবার স্কুল খোলা রাখবো: আজিজী
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন। বাড়ি ভাড়া ভাতা মূল বেতনের ১৫ শতাংশ বাড়ানোর বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের পর শিক্ষক-কর্মচারীরা গতকাল মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
এর আগে গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয় বাড়িভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়। এরপর বাড়ি ভাড়া বাড়ানোর আদেশের কপি আন্দোলনকারী শিক্ষক নেতাদের হাতে তুলে দেন শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার।
বর্ধিত অর্থ দুই ধাপে পাবেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। ১৫ শতাংশের মধ্য ৭ দশমিক ৫ শতাংশ (ন্যূনতম ২ হাজার টাকা) কার্যকর হবে এ বছরের ১ নভেম্বর থেকে। আরও ৭ শতাংশ ৫ কার্যকর হবে আগামী বছরের ১ জুলাই থেকে।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, আজকের এই মুহূর্তটা শিক্ষা বিভাগের জন্য সত্যিই ঐতিহাসিক। এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের জন্য চলতি বছরের ১ নভেম্বর থেকে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়িভাড়া (ন্যূনতম ২ হাজার টাকা) এবং ২০২৬ সালের জুলাই থেকে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ মোট ১৫ শতাংশ বাড়িভাড়া কার্যকর হবে।
শিক্ষকদের দাবি অনুযায়ী শতাংশ হারে এই ভাতা নিশ্চিত করতে পেরে একজন শিক্ষক হিসেবে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেন। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, শিক্ষকেরা আরও অধিক সম্মানের দাবিদার এবং তাদের জীবনমান উন্নয়নে রাষ্ট্রের সচেষ্ট থাকা দরকার।
উপদেষ্টা আরও বলেন, এই পথ সহজ ছিল না। নানা মতভেদ, বিতর্ক, অভিযোগ—সবকিছুই ছিল। কোনো বিতর্কের উত্তর না দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ক্রমাগত একটা ন্যায্য, টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করে গেছে। শিক্ষা উপদেষ্টা ও মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, উপদেষ্টা পরিষদ, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কাজ করে গেছে, যেন শিক্ষকদের দাবি শোনা হয়, বোঝা হয়।
মন্ত্রণালয় মনে করে, ‘এটি কারও একার জয় নয়; এটি যৌথ সাফল্য। শিক্ষকদের আন্দোলন তাদের বাস্তবতা বুঝিয়েছে, সরকার দায়িত্বশীলভাবে সাড়া দিয়েছে। আর সবাই মিলে আজ এমন এক অবস্থানে এসেছি, যেখানে সম্মান, সংলাপ আর সমঝোতাই জিতেছে। এখন সময় ক্লাসে ফিরে যাওয়ার, শিক্ষার্থীদের কাছে, আসল কাজের জায়গায়। এই সমঝোতা হোক নতুন সূচনা পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বোঝাপড়া ও শিক্ষাকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর প্রতিশ্রুতি নিয়ে। পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা আর গুণগত মানসম্মত শিক্ষার বিস্তার ঘটিয়ে বাংলাদেশকে আমরা একটি মর্যাদাসম্পন্ন জায়গায় নিয়ে যেতে পারব।’
সরকারের এই সিদ্ধান্তের পর বেলা দুইটার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ–প্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এখন থেকে আমাদের সব আন্দোলন ও কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হলো। আগামীকাল (বুধবার) থেকে আমরা শ্রেণিকক্ষে ফিরছি।’
দেলাওয়ার হোসেন বলেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ১৫ শতাংশ বাড়ানো হবে। এ সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার আদেশ জারি করেছে। বাড়িভাড়া আগামী নভেম্বর থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ (দুই হাজারের নিচে নয়), বাকি সাড়ে ৭ শতাংশ ২০২৬ সালের জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
আজিজী বলেন, আমাদের বড় দাবি পূরণ হয়েছে। এটা আমাদের বড় বিজয়। আন্দোলন করে প্রজ্ঞাপন নিয়ে বাড়ি ফিরছি। আমাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করছি। আগামীকাল থেকে শ্রেণিকক্ষে ফিরছি।
তিনি বলেন, গত ৮ দিন শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে যেতে পারেননি। এটা আমাদের ন্যায্য দাবি ছিল। বার্ষিক পরীক্ষার আগ পর্যন্ত শনিবার স্কুল খোলা রাখবো। যে আট দিন শ্রেণিকক্ষে যেতে পারিনি, সেই আট দিন পুষিয়ে দেব।
আন্দোলনে সংহতি জানানোয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ দেশের সব রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান দেলাওয়ার হোসেন আজিজী।
বাড়িভাড়া বাড়ানোসহ তিন দফা দাবিতে গত ১২ অক্টোবর থেকে টানা আন্দোলন করে আসছিলেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।


অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় যেতে হবে

প্রধান উপদেষ্টাকে বিএনপি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক
    দলীয়’ উপদেষ্টাদের বাদ দেওয়ার দাবি

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে অর্থবহ, নিরপেক্ষ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২১ অক্টোবর, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রেস ব্রিফিংয়ে এই মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'আমরা আজকে প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের কাছে এসেছিলাম, আমাদের কতগুলো রাজনৈতিক কনসার্ন নিয়ে কথা বলার জন্য। বিশেষ করে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেই জাতীয় সংসদ অনুষ্ঠানকে অর্থবহ নিরপেক্ষ সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য এই মুহূর্ত থেকে যেটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে— অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এখন কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টের আদলে নিতে হবে।'
'অর্থাৎ কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট বলতে আমরা যা বুঝি— তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে ভূমিকা, সেই ভূমিকায় তাদেরকে যেতে হবে। সেজন্য প্রথমেই যে বিষয়টির প্রয়োজন হবে তা হচ্ছে— প্রশাসনকে পুরোপুরিভাবে নিরপেক্ষভাবে তৈরি করতে হবে।'
তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে সেক্রেটারিয়েটে যারা এখনও আছেন, যাদেরকে চিহ্নিত ফ্যাসিস্টদের দোসর বলা হয়, তাদেরকে সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ কর্মকর্তা দেওয়ার জন্য আমরা বলেছি।'
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার কথাও আমরা বলেছি। সরকারের মধ্যে যদি কোনও দলীয় লোক থেকে থাকেন, তাকে অপসারণ করার জন্য আমরা দাবি জানিয়ে এসেছি—এটাই ছিল প্রধান মূল কথা।'
কোনও উপদেষ্টার বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে বলেছেন কিনা, প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব এই বিষয়ে ‘না’ সূচক জবাব দেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বলেছি যে, জেলা প্রশাসন বিশেষ করে সেখানেও একইভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং আমরা কিছু কিছু কথা বলে এসেছি— যেগুলো আমরা মনে করি, তারা এখনও সেই ফ্যাস্টিস সরকারের স্বার্থ পূরণ করছে। সেজন্য তাদেরকে অপসারণের কথা আমরা বলেছি।'
তিনি বলেন, ‘আমরা পুলিশের নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষ করে যেসব পদে নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হবে বা যাদেরকে পদোন্নতি দেওয়া হবে, সেই ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা আমরা বলে এসেছি।'
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘পাশাপাশি আমরা বলে এসেছি—বিচার বিভাগে বিশেষ করে হায়ার জুডিশিয়ারিতে এখনও ফ্যাসিস্টদের যেসব দোসর আছেন, তাদেরকে সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ বিচারকদের নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও এটা জুডিশিয়ারি ব্যাপার। তারপরেও প্রধান উপদেষ্টা যেহেতু সব সবকিছুর দায়িত্বে আছেন, তার কাছে আমরা আমাদের সেই কনসার্নগুলো জানিয়ে এসেছি।'
এর পাশাপাশি সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থাপনায় একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ। এসব ঘটনা অন্তর্ঘাতমূলক কি না, এ বিষয়ে অনুসন্ধানেরও আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
যমুনায় প্রবেশের আগে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছিলেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় চেয়েছিলাম। সেই অনুযায়ী উনি সময় দিয়েছেন। আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি। ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন, প্রশাসনের কিছু বিষয়সহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলব।’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ। পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানও বৈঠকে অংশ নেন।
চলমান রাজনৈতিক সংলাপের অংশ হিসেবে আজ বুধবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রতিনিধিদলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।


কার্গো ভিলেজের আগুনে ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি: ইএবি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে রপ্তানিকারকদের সংগঠন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি)। এই পরিস্থিতিতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের বিপরীতে বিমা দাবি দ্রুত নিষ্পত্তি ও বিমার বাইরে করা পণ্যের ক্ষেত্রে সরকারি বিশেষ তহবিল গঠন করে ক্ষতিপূরণ ও সহায়তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে হোটেল সোনারগাঁওয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান ইএবি সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। সংবাদ সম্মেলনে তৈরি পোশাক, বস্ত্রকল, ওষুধ, চামড়াসহ বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ব্যবসায়ীরা শঙ্কিত। এর মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যাপক দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকতে পারে।
তিনি বলেন, এই অগ্নিকাণ্ডে স্পষ্ট যে কার্গো ভিলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর নয়। নিরাপত্তা ঘাটতির কারণে কেবল ব্যবসায়িক ক্ষতি নয়, আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছেও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে রপ্তানিকারকরা কার্গো ভিলেজে নিরাপত্তাহীনতা, গুদাম ব্যবস্থাপনায় অব্যবস্থাপনা ও মালামাল চুরির অভিযোগ জানিয়ে আসলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে ইএবি বলেছে, ওষুধ, তৈরি পোশাক, কৃষিপণ্য, ফলমূল, হিমায়িত খাদ্য ও অন্যান্য রপ্তানিকারক খাত এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ঘটনায় বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হতে পারেন, যা ভবিষ্যতে রপ্তানি চুক্তি ও অর্ডারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইএবি সভাপতি বলেন, আগুনের ঘটনাটি যথাযথ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে এবং দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অঘটন আর না ঘটে।
এ সময় কার্গো ভিলেজের আধুনিকায়ন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন, ওষুধ শিল্পের জন্য আলাদা শীততাপনিয়ন্ত্রিত গুদাম স্থাপন, নিরাপদ দূরত্বে রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ ও সম্পূর্ণ অটোমেটেড ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর গুদাম ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
উল্লেখ, গত শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো এলাকায় আকস্মিকভাবে আগুন লাগে।


সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন বেতন নির্ধারণে খসড়া প্রস্তাব চূড়ান্ত

৯৭ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন বেতন নির্ধারণের খসড়া প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে গঠিত জাতীয় বেতন কমিশন। প্রস্তাবে গত ১০ বছরের ব্যবধানে বেতন বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে ৯০ থেকে ৯৭ শতাংশ। গতকাল সোমবার এই খসড়া প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে জাতীয় বেতন কমিশন।
প্রস্তাবে গ্রেড-১ এর কর্মকর্তাদের মূল বেতন ১ লাখ ৫০ হাজার ৫৯৪ টাকা করার সুপারিশ করা হয়েছে।
এ ছাড়া গ্রেড-২ এ ১ লাখ ২৭ হাজার ৪২৬ টাকা, গ্রেড-৩ এ ১ লাখ ৯ হাজার ৮৪ টাকা, গ্রেড-৪ এ ৯৬ হাজার ৫৩৪ টাকা, গ্রেড-৫ এ ৮৩ হাজার ২০ টাকা, গ্রেড-৬ এ ৬৮ হাজার ৫৩৯ টাকা, গ্রেড-৭ এ ৫৫ হাজার ৯৯০ টাকা, গ্রেড-৮ এ ৪৪ হাজার ৪০৬ টাকা, গ্রেড-৯ এ ৪২ হাজার ৪৭৫ টাকা, গ্রেড-১০ এ ৩০ হাজার ৮৯১ টাকা মূল বেতনের পস্তাব করা হয়েছে।
অন্যদিকে গ্রেড-১১ তে ২৪ হাজার ১৩৪ টাকা, গ্রেড-১২ তে ২১ হাজার ৮১৭ টাকা, গ্রেড-১৩ তে ২১ হাজার ২৩৮ টাকা, গ্রেড-১৪ তে ১৯ হাজার ৬৯৩ টাকা, গ্রেড-১৫ তে ১৮ হাজার ৭২৮ টাকা, গ্রেড-১৬ তে ১৭ হাজার ৯৫৫, গ্রেড-১৭ তে ১৭ হাজার ৩৭৬ টাকা, গ্রেড-১৮ তে ১৬ হাজার ৯৯০ টাকা, গ্রেড-১৯ তে ১৬ হাজার ৪৪১ টাকা এবং গ্রেড-২০ এর কর্মচারীদের জন্য ১৫ হাজার ৯২৮ টাকা মূল বেতন নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় বেতন কমিশন।
এর আগে মূল্যস্ফীতির চাপ সামলাতে সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এজন্য গত ২৭ জুলাই গঠন করা হয় জাতীয় বেতন কমিশন।
যারা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে চায় নির্ধারিত সময়ের আগে ভোটের আগেই, অর্থাৎ আগামী মাস ডিসেম্বরে।
এরই মাঝে চূড়ান্ত করা হয়েছে সরকারি কর্মচারীদের বেতন কাঠামোর খসড়া। গত ১০ বছরের মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় ২০৩০ সালে বেতন কত বাড়তে পারে, সেটারও একটা সুপারিশ দিচ্ছে এই কমিশন।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সম্প্রতি গণমাধ্যমকে জানান, পে-কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে যে অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হবে, তা সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ রাখা হবে। ডিসেম্বরে চলতি বাজেট সংশোধনের কাজ শুরু হবে। তিনি আরও বলেন, পে-কমিশনের গেজেট প্রকাশের ওপর এ বাস্তবায়ন নির্ভর করবে। তবে আগামী বছরের শুরুতে এটি কার্যকর হতে পারে।
এদিকে সরকারি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধীনস্থ দপ্তরগুলোর নিয়োগ ও পদোন্নতি সংক্রান্ত কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের সম্মানী উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল সোমবার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। নতুন কাঠামো অনুযায়ী, সম্মানীর ধরন ১১টি থেকে বাড়িয়ে ১৩টি করা হয়েছে। যা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পর সংশোধন করা হলো।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, প্রশ্নপত্র প্রণয়নের সম্মানী ১ হাজার টাকা বাড়িয়ে জনপ্রতি ৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিভাগীয় নির্বাচন ও পদোন্নতি কমিটির সদস্যরা প্রতি সভায় ৬ হাজার টাকা করে পাবেন। এক্ষেত্রেও এক হাজার টাকা করে বাড়ানো হয়েছে। মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষার বোর্ডের সদস্য এবং বিষয়বিশেষজ্ঞরাও প্রতিদিন ৬ হাজার টাকা করে সম্মানী পাবেন।
উত্তরপত্র মূল্যায়নের ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ উত্তরপত্রের জন্য ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৩০ টাকা এবং অবজেকটিভ উত্তরপত্রের জন্য ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৫ টাকা করা হয়েছে। দুপুরের খাবার বাবদ বরাদ্দ সাড়ে ৪৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়েছে।
পরীক্ষা কার্যক্রমে জড়িত সহায়ক কর্মীদের জন্য নতুন ভাতার হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে, যা তাদের পদমর্যাদা অনুযায়ী প্রদান করা হবে। পরীক্ষাকেন্দ্রের প্রধানের মনোনীত সমন্বয়কারী পাবেন ৩ হাজার ৫০০ টাকা এবং লিখিত পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শক পাবেন প্রতিদিন ১ হাজার ৮০০ টাকা।
এছাড়া, নিয়োগ ও পদোন্নতি কার্যক্রমে অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচের জন্য সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকার সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিক কার্যক্রম আরও গতিশীল করবে এবং সরকারি মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনায় জড়িত কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে উৎসাহ যোগাবে বলে আশা করা হচ্ছে।


কারা এই সেলিব্রেটি পর্ণ তারকা, কিভাবে কাজ করতেন?

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আন্তর্জাতিক পর্নোগ্রাফি নেটওয়ার্ক পরিচালনার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশি দম্পতি হলেন চট্টগ্রামের আজিম ও মানিকগঞ্জের বৃষ্টি (ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়েছে প্রাথমিকভাবে)। তারা দীর্ঘদিন ধরে বিদেশি ওয়েবসাইটে পর্নো কনটেন্ট তৈরি ও প্রচারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গত রোববার (১৯ অক্টোবর) রাতে বান্দরবানে যৌথ অভিযান চালিয়ে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) এবং এলআইসি শাখা তাদের গ্রেপ্তার করে। সোমবার (২০ অক্টোবর) সকালে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

কীভাবে তারা কাজ করতেন

২৮ বছর বয়সী বৃষ্টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেকে ‘বাংলাদেশের এক নম্বর মডেল’ হিসেবে পরিচয় দিলেও বাস্তবে তিনি আন্তর্জাতিক পর্ন সাইটে সক্রিয় পারফর্মার। ২০২৪ সালের ১৭ মে তার প্রথম ভিডিও প্রকাশিত হয় এবং এখন পর্যন্ত তার আপলোড করা ১১২টি কনটেন্টে ২৬৭ মিলিয়নের বেশি ভিউ রয়েছে বলে একাধিক আন্তর্জাতিক মনিটরিং সূত্রে জানা গেছে।

বৃষ্টি ও আজিম বিদেশি প্ল্যাটফর্মের পাশাপাশি টেলিগ্রাম, টুইটার (এক্স) ও বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ ব্যবহার করে তাদের ভিডিওর প্রচারণা চালাতেন। শুধু অক্টোবরের শুরুর দুই সপ্তাহেই ৫০টির বেশি ফেসবুক পেজ থেকে তাদের কনটেন্টের লিংক প্রচার করা হয়েছে।

আজিম ও বৃষ্টির পরিচয়

আজিম চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বাসিন্দা। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে একাধিক গণমাধ্যম জানায়, তিনি আগে থেকেই অপরাধচক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পুলিশের নথি অনুসারে, গত ২৫ আগস্ট তিনি মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হলেও দ্রুত জামিনে মুক্ত হন।

বৃষ্টি মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বাসিন্দা। পারিবারিক সূত্র জানায়, প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তিনি ঢাকায় চলে যান এবং পরবর্তীতে অনলাইনভিত্তিক এডাল্ট কনটেন্ট প্রোডাকশনে জড়ান। নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এলেও বর্তমানে তাদের জীবনযাত্রা সামাজিক মাধ্যমে বিলাসবহুল হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রভাব ও অর্থ আয়ের কৌশল

তদন্তে দেখা গেছে, বৃষ্টির নামে একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল খোলা হয়েছে, যা তারা দু’জনে যৌথভাবে পরিচালনা করেন। ওই চ্যানেলে নিয়মিত পেইড ভিডিও বিক্রি করা হতো। পাশাপাশি তারা আয়ের স্ক্রিনশট প্রকাশ করে তরুণ-তরুণীদের এই কাজে যুক্ত হওয়ার প্রলোভন দেখাতেন। বৃষ্টির ফেসবুকে প্রায় ৪৯ হাজার এবং ইনস্টাগ্রামে ১২ হাজার অনুসারী রয়েছে।

আইনের চোখে অপরাধ

বাংলাদেশের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১২ অনুযায়ী, পর্নোগ্রাফি তৈরি, প্রচার ও সংরক্ষণ ফৌজদারি অপরাধ। সিআইডি বলছে, এই দম্পতি শুধু অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না, বরং দেশে বসে একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন এবং অন্যদেরও এই চক্রে যুক্ত করছিলেন।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে সিআইডি দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করবে বলে জানা গেছে।


ওষুধ উৎপাদনে অনিশ্চয়তা, ক্ষতি ছাড়াতে পারে ৪ হাজার কোটি টাকা 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দেশের ওষুধ শিল্পে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। ইতোমধ্যে শীর্ষ ৪৫টি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির প্রায় ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ (বাপি)।

অ্যান্টিবায়োটিক, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস ও ভ্যাকসিনসহ জীবনরক্ষাকারী ওষুধ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে দাবি করে বাপি বলছে, সামগ্রিকভাবে এই ঘটনার অর্থনৈতিক প্রভাব প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাতে পারে।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাপির মহাসচিব ডা. মো. জাকির হোসেন।

তিনি বলেন, ১৮ অক্টোবর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দেশের ওষুধ শিল্পের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল ভস্মিভূত হয়েছে। এই আকস্মিক ক্ষতি পুরো খাতকে বহুবিধ ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলেছে।

ডা. জাকির বলেন, দেশে বর্তমানে ৩০৭টি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে, এর মধ্যে সক্রিয়ভাবে উৎপাদনে আছে প্রায় ২৫০টি কোম্পানি। বাপির প্রাথমিক জরিপ অনুযায়ী, শুধু শীর্ষ ৪৫টি কোম্পানিরই প্রায় ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল পুড়ে গেছে। অন্য কোম্পানিগুলোর ক্ষতির হিসাব যুক্ত হলে মোট ক্ষতির পরিমাণ আরও অনেক বেশি হবে।

তিনি আরও বলেন, অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া কাঁচামালের মধ্যে ছিল অ্যান্টিবায়োটিক, ভ্যাকসিন, হরমোন, ডায়াবেটিক ও ক্যান্সার জাতীয় ওষুধ তৈরির উপকরণ। শুধু তাই নয়, কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্পেয়ার পার্টস ও মেশিনারিজও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা পুনরায় আমদানি করা সময়সাপেক্ষ। ফলে উৎপাদন প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি রপ্তানি সময়সূচিও প্রভাবিত হবে।

বাপি মহাসচিব বলেন, আমাদের ওষুধ শিল্প দেশের অর্থনীতি ও জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বর্তমানে বাংলাদেশের তৈরি মানসম্পন্ন ওষুধ ১৬০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হয়, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো উন্নত দেশও রয়েছে। কিন্তু এই অগ্নিকাণ্ডের ফলে উৎপাদন চেইনে বড় ধরনের ধাক্কা লাগবে।

তিনি বলেন, দেশের ওষুধ শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের প্রায় ৯০ শতাংশই আসে চীন, ভারত ও ইউরোপ থেকে। এসব কাঁচামালের একটি বড় অংশ জীবনরক্ষাকারী ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়, যা সাধারণত আকাশপথে আমদানি করা হয়। কার্গো ভিলেজে আগুন লাগায় এসব দামি কাঁচামাল ধ্বংস হয়ে গেছে। অন্যদিকে, বিকল্প হিসেবে অন্য এয়ারপোর্টে নামানো পণ্যগুলোকেও নিয়ে উদ্বেগ আছে, কারণ সেগুলোকেও নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখতে হয়।

আরও জটিলতা দেখা দিয়েছে নারকোটিকস বিভাগের অনুমোদন নেওয়া পণ্যগুলো নিয়ে। ডা. জাকির হোসেন বলেন, এই পণ্যগুলো পুনরায় আনা অত্যন্ত জটিল ও সময়সাপেক্ষ, কারণ এতে ধাপে ধাপে একাধিক অনুমোদন নিতে হয়। ফলে এই দিক থেকেও বড় অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

বাপির ধারণা, এই ক্ষতির প্রভাব সরাসরি কাঁচামালের বাইরে গিয়েও বিস্তৃত হবে। ‘একটি র-ম্যাটেরিয়াল হারালে সেই উপকরণে নির্ভরশীল প্রতিটি ফিনিশড প্রোডাক্টের উৎপাদনই অনিশ্চয়তায় পড়ে। ফলে সামগ্রিকভাবে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার অর্থনৈতিক প্রভাব পড়বে বলে আমরা অনুমান করছি’— বলেন ডা. জাকির হোসেন।

তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতি দ্রুত তদন্ত, ক্ষতিপূরণের কার্যকর ব্যবস্থা এবং বিকল্প কার্গো ব্যবস্থাপনা জোরদার করার আহ্বান জানান।


ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে সরকারের প্রস্তুতি রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে সরকারের প্রস্তুতি রয়েছে বলে পুনরায় জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

তিনি বলেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। সরকারের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে।”

আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কোর কমিটির সভা শেষে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের সফল আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা, বিশেষ করে গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বডিওর্ন ক্যামেরা কেনা হবে এবং এ বিষয়ে সরকার ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।

তিনি আরও বলেন, বিগত তিনটি সাধারণ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের আগামী সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডসহ সাম্প্রতিক কিছু বড় অগ্নিকাণ্ডের পেছনে নাশকতা আছে কিনা- এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, এসব ঘটনা তদন্তের জন্য একাধিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি মিশনগুলোতে ই-পাসপোর্ট সেবা চালু করা হবে।

প্রবাসীদের জন্য পাসপোর্ট ফি কমানো এবং বিমান ও বিমানবন্দরে সর্বোত্তম সেবা প্রদানের বিষয়টি সরকার বিবেচনা করছে বলেও তিনি জানান।


তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করছেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান শুনানি করবেন।

এর আগে গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়।

এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়।

এই সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিমউল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেন।

এ রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারীপক্ষ। এই আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।

ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। অন্য চারজন হলেন- তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।

আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ১৬ অক্টোবর একটি আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এছাড়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছরের ২৩ অক্টোবর আরেকটি আবেদন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

পরে নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর একটি আবেদন করেন।


দেশে নির্বাচন করার নিরাপদ পরিবেশ বিদ্যমান: ইসি সচিব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, দেশে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য নিরাপদ পরিবেশ বিদ্যমান রয়েছে। এই পরিবেশকে আরও সুসংহত করতে কমিশন সচিবালয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছে। আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল নির্বাচনের নিরাপত্তা, স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা।

গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশের নির্বাচন আয়োজনের পরিবেশ ইতোমধ্যে সহনীয় ও সুষ্ঠু। নির্বাচন আয়োজনের মতো পরিবেশ দেশে অবশ্যই রয়েছে এবং এটিকে আরও সুসংহত করতে আলোচনা চলমান থাকবে।

নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোতায়েন প্রসঙ্গে সচিব জানান, শুরুতে নির্বাচনকালীন পাঁচ দিনের জন্য বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে আলোচনায় প্রস্তাব এসেছে নির্বাচনের আগে তিন দিন, ভোটের দিন এবং ভোটের পর চার দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে থাকবে। এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করা হবে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতির বিস্তারিত তুলে ধরে সচিব বলেন, নির্বাচনকালীন সময়ে প্রায় দেড় লাখ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে। সেনাবাহিনী মোতায়েন করবে ৯০ হাজার থেকে এক লাখ সদস্য এবং আনসার বাহিনী মোতায়েন করবে প্রায় সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় লাখ সদস্য। সংশ্লিষ্ট সব বাহিনী তাদের সর্বোচ্চ সক্ষমতা অনুযায়ী নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

অস্ত্র উদ্ধার সংক্রান্ত বিষয়ে সচিব বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতোমধ্যে অবৈধ অস্ত্রের ৮৫ শতাংশ উদ্ধার করেছে। বাকি অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারের কাজ চলমান রয়েছে এবং নির্বাচনের সময় তা সম্পূর্ণরূপে সমাধান করা হবে।

নির্বাচনের নিরাপত্তা পরিকল্পনা বিষয়ে সচিব জানান, আলোচনায় ভোটকেন্দ্র, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার নিরাপত্তা, নির্বাচনী এলাকা ও সারাদেশের নিরাপত্তা, অবৈধ অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তথ্য অপব্যবহার প্রতিরোধ, বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তা, পোস্টাল ভোটিং ব্যবস্থা, অবৈধ অনুপ্রবেশ, কালো টাকা নিয়ন্ত্রণ, নির্বাচনী অফিসের কার্যক্রম সমন্বয় এবং পার্বত্য ও দুর্গম এলাকায় নির্বাচনী পরিবহন ও হেলিকপ্টার ব্যবস্থার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

ড্রোন ব্যবহারের বিষয়ে সচিব বলেন, নির্বাচনী প্রচারণায় সাধারণভাবে ড্রোন ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনে ড্রোন ব্যবহার করতে পারবে। স্বরাষ্ট্র সচিব নিশ্চিত করেছেন, ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ, বডি-অন ক্যামেরা ও ড্রোনের মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। এছাড়া সব বাহিনী নিজস্ব প্রশিক্ষণ কার্যক্রম গ্রহণ করছে, যাতে ভোটের দিন কার্যক্রম নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়।

তিনি বলেন, ‘আজকের আলোচনা মূলত নির্বাচনকে আরও সুন্দর ও সুষ্ঠু করার প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ ছিল। ধাপে ধাপে অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে এককভাবে বা যৌথভাবে আরও বিস্তারিত পরিকল্পনা ফাইন-টিউন করব। আমাদের লক্ষ্য একটাই-একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা।’

সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে চারজন নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, মহাপুলিশ পরিদর্শক, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বর্ডার গার্ড, কোস্ট গার্ড, আনসার, র‌্যাব, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, সিআইডি, এনটিএমসি এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।

সচিব আখতার আহমেদ আরও বলেন, ‘আজকের (সোমবার) আলোচনার মাধ্যমে আমরা দেখতে পেয়েছি যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচনের নিরাপত্তা, তফসিল বাস্তবায়ন এবং ভোটগ্রহণের প্রতিটি ধাপের জন্য সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত। তারা নির্বাচনের পূর্বে, চলাকালীন এবং পরবর্তী সময়ে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’

তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট প্রতিরক্ষা বাহিনী নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে তথ্য বিনিময় ও সমন্বয় বজায় থাকবে। এছাড়া প্রশাসনিক পর্যায়ে প্রতিটি ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে।


তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের সঙ্গে জার্মান রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাত

সোমবার বিকেলে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের সঙ্গে সাক্ষাত করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত রুডিগার লোটজ। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলমের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত রুডিগার লোটজ।

আজ (সোমবার) বিকেলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে এই সাক্ষাত অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে কোন ধরনের অনিশ্চয়তা নেই।

বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমের ওপর কোন ধরনের চাপ নেই। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে ফোন করে কোন গণমাধ্যমের ওপর হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে না। গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে সরকারের সমালোচনা করছে।

সাক্ষাতে রাষ্ট্রদূত রুডিগার লোটজ দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

এ সময় জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সুযোগ সম্প্রসারণের বিষয়েও আলোচনা হয়।

সাক্ষাতে জার্মান দূতাবাসের রাজনৈতিক ও প্রেস অফিসার শারনিলা নুজহাত কবির উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: বাসস


ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে সরকারের প্রস্তুতি রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে সরকারের প্রস্তুতি রয়েছে বলে পুনরায় জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

তিনি বলেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। সরকারের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে।”

আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কোর কমিটির সভা শেষে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের সফল আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা, বিশেষ করে গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বডিওর্ন ক্যামেরা কেনা হবে এবং এ বিষয়ে সরকার ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।

তিনি আরও বলেন, বিগত তিনটি সাধারণ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের আগামী সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডসহ সাম্প্রতিক কিছু বড় অগ্নিকাণ্ডের পেছনে নাশকতা আছে কিনা- এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, এসব ঘটনা তদন্তের জন্য একাধিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি মিশনগুলোতে ই-পাসপোর্ট সেবা চালু করা হবে।

প্রবাসীদের জন্য পাসপোর্ট ফি কমানো এবং বিমান ও বিমানবন্দরে সর্বোত্তম সেবা প্রদানের বিষয়টি সরকার বিবেচনা করছে বলেও তিনি জানান। সূত্র: বাসস


banner close