কারিগরি ও অকারিগরি কারণে অনেক সময় ভুতুড়ে বিলের ঘটনা ঘটতে পারে বলে জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা বা কোম্পানির মোট গ্রাহক ৪ কোটি ৭১ লাখ। বিদ্যুৎ বিল যাতে যথাযথ হয়, সে বিষয়ে বহুবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
কারিগরি ও অকারিগরি কারণে অনেক সময় ভুতুড়ে বিলের ঘটনা ঘটতে পারে। ভুতুড়ে বা অস্বাভাবিক বিল রোধকল্পে অগ্রাধিকারভিত্তিতে প্রিপেইড বা স্মার্ট প্রিপেইড মিটার স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে নোয়াখালী-৩ আসনের সরকারদলীয় এমপি মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন করা হয়।
চাহিদার তুলনায় প্রাপ্তি কম হওয়ায় গ্রামাঞ্চলে সীমিত লোডশেডিং
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, দেশজুড়ে তীব্র তাপদাহের কারণে বিদ্যুৎ ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রামাঞ্চলে কিছু কিছু এলাকায় চাহিদার তুলনায় প্রাপ্তি কম হওয়ায় সীমিত আকারে লোডশেডিং হয়েছে।
তিনি বলেন, চাহিদার তুলনায় প্রাপ্তি কম হলে সাধারণত লোডশেডিং হয়। দেশজুড়ে তীব্র দাবদাহের কারণে বিদ্যুৎ ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রামাঞ্চলে কিছু কিছু এলাকায় চাহিদার তুলনায় প্রাপ্তি কম হওয়ায় সীমিত আকারে লোডশেডিং হয়েছে। এ ছাড়া রক্ষণাবেক্ষণ কাজে প্রয়োজনীয় সময়ের জন্য লোডশেডিং করা হয়। সরকার শহর ও গ্রাম নির্বিশেষে সমতার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সরবরাহে সচেষ্ট রয়েছে। সেচ মৌসুমে গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহে অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়েছে।
তিনি জানান, অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ এবং বকেয়া পাওনা থাকলে নিয়মানুযায়ী বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। ভুতুড়ে বিলের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে যাচাইপূর্বক প্রতিকার প্রদান করা হয় এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
চলতি অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা
বাহাউদ্দিন নাছিমের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আড়াই হাজার কোটি টাকা, ২০১৯-২০ অর্থবছরে সাড়ে তিন হাজার, ২০২০-২১ অর্থবছরে ২ হাজার ৪০০ কোটি, ২০২১-২২ অর্থবছরে ছয় হাজার, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬ হাজার ৩১৫ কোটি ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকির দরকার হবে বলে প্রতিমন্ত্রী জানান।
প্রতিমন্ত্রী জানান, ১৯৯৯-২০০০ থেকে ২০১৩-১৪ অর্থবছর পর্যন্ত বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ক্রমাগত লোকসানের সম্মুখীন হয়। ওই সময় সরকারকে উল্লেখযোগ্য অঙ্কের ভর্তুকি দিতে হয়। তবে জ্বালানি তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমে যাওয়ার ফলে নভেম্বর ২০১৪ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত সরকারকে জ্বালানি তেলে কোনো ভর্তুকি দিতে হয়নি। তবে, ২০২১-২২ অর্থবছরে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপিসি ২ হাজার ৭০৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা লোকসান দেয়।
সরকার বর্তমানে ডাইনামিক প্রাইসিং ফর্মুলায় জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করায় এ খাতে কোনো ভর্তুকি দিতে হচ্ছে না।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারের বাজেটে বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকির পরিমাণ ৩৫ হাজার কোটি টাকা উল্লেখ করে নসরুল হামিদ বলেন, ভর্তুকির অর্থের মধ্যে ৩১ হাজার ৮৩৩ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার ৭শ কোটি নগদ ও ২০ হাজার ১৩৩ কোটি বন্ডের মাধ্যমে সমন্বয় করা হয়েছে।
নোয়াখালী-২ আসনের মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, অনুমোদনপ্রাপ্ত এলপিজি প্ল্যানের সংখ্যা ৭৮টি। এর মধ্যে প্রাথমিক অনুমোদনপ্রাপ্ত ৫২টি, চূড়ান্ত অনুমোদনপ্রাপ্ত ২৪টি ও বিপিসির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ২টি।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো. সোহরাব উদ্দিনের অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০০৯ সালের জানুয়ারি হতে বর্তমান সময় পর্যন্ত ২৫ হাজার ৭৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। ফলে বিদ্যুতের স্থাপিত ক্ষমতা ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ ৩০ হাজার ৭৩৮ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। দেশে চাহিদার চেয়েও স্থাপিত বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বেশি। তবে কোভিড-১৯ মহামারি পরবর্তীকালে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটের কারণে পরিপূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কিছু কিছু স্থানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। এ ছাড়া অত্যধিক গরম ও দেশের কোথাও কোথাও দাবদাহের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।
বর্তমানে নবায়নযোগ্য উৎস হতে ১৩১২ দশমিক ৭৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে উল্লেখ করে আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, নবায়নযোগ্য উৎস হতে চলমান ও প্রক্রিয়াধীন প্রকল্পগুলোতে উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমাণ দাঁড়াবে ১২ হাজার ৫৪৭ দশমিক ২২ মেগাওয়াট। ২০৩০ সালের মধ্যে এগুলো জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০টি বিভিন্ন ধরনের কূপ খননের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এর সফল বাস্তবায়নে গড়ে দৈনিক ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা সম্ভব হবে। এর মধ্যে ১১ টির খনন ও ওয়ার্কওভার কার্যক্রম সমাপ্ত হয়েছে। যার মাধ্যমে দৈনিক ১২৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের উৎপাদন নিশ্চিত করা হয়েছে। দৈনিক ৩৩ মিলিয়ন ঘটফুট হারে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে।
এই সংসদ সদস্যের অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশে আবিষ্কৃত ২৯টি গ্যাস ক্ষেত্রের মধ্যে ২০টি উৎপাদনরত ৫টি পরিত্যক্ত এবং ৪টির উৎপাদন কার্যক্রম চলমান।
আওয়ামী লীগের সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, বর্তমানে গ্যাসের চাহিদা প্রায় দৈনিক ৩৮০০-৪০০০ মিলিয়ন ঘনফুট, যার বিপরীতে দেশীয় উৎপাদন ও এলএনজি আমদানি করে ৩০০০-৩১০০ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। চাহিদা ও সরবরাহে ঘাটতি থাকায় পরিকল্পিত শিল্পাঞ্চলে এবং বিদ্যুৎ ও সার খাতে অগ্রাধিকার বিবেচনায় গ্যাস সংযোগ চালু রয়েছে।
ভোলা-৩ আসনের নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন শিল্প মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন বন্ধ/রুগ্ণ শিল্পের সংখ্যা ৩৯৭টি। এর মধ্যে বিসিকের নিয়ন্ত্রণাধীন রুগ্ণ/বন্ধ শিল্প ৩৮২টি, বিসিআইসির নিয়ন্ত্রণাধীন বন্ধ কারখানা ৫টি, বিএসএসআইসির নিয়ন্ত্রণাধীন স্থগিত চিনিকল ৬টি, বিএসইসির নিয়ন্ত্রণাধীন বন্ধ কারখানা ৪টি।
এমপি আব্দুল কাদের আজাদের এক প্রশ্নের জবাবে নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন জানান, বর্তমান সরকার আন্তর্জাতিক ও বহুজাতিক কোম্পানিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করাসহ বিনিয়োগ সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সময়কাল পর্যন্ত সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং সাফল্যও এসেছে।
তিনি জানান, বিসিকের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পাঁচটি শিল্পনগরী, তিনটি শিল্পপার্ক ও দুটি অন্যসহ মোট ১০টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে ৩ হাজার ৮১১টি শিল্প প্লটে সম্ভাব্য ৩ হাজার ৫৬৫টি শিল্প ইউনিট স্থাপিত হবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আরএডিপিতে সবুজ পাতাভুক্ত ১১টি প্রকল্প রয়েছে। প্রকল্পগুলো অনুমোদিত ও বাস্তবায়িত হলে দেশে শিল্পায়ন ত্বরান্বিত হবে এবং বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
মন্ত্রী জানান, বিনিয়োগে উৎসাহিতকরণের লক্ষ্যে বিসিক কর্তৃক ১২২টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ১৬৭টি শিল্প প্লট বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। বিসিক উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে হোসিয়ারি শিল্পনগরী, পঞ্চবটী, নারায়ণগঞ্জ; জামদানি শিল্পনগরী, তারাবো, নারায়ণগঞ্জ; চামড়া শিল্পনগরী, সাভার, ঢাকা; এপিআই শিল্পপার্ক, গজারিয়া, মুন্সীগঞ্জ এবং বিসিক বৈদ্যুতিক পণ্য উৎপাদন ও হালকা প্রকৌশল শিল্পনগরী, মুন্সিগঞ্জ শীর্ষক বিশেষায়িত শিল্পনগরী বা শিল্পপার্ক বাস্তবায়িত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, চামড়া শিল্পনগরী প্রকল্পটি ১৯৯ দশমিক ৪০ একর জমিতে ঢাকার সাভারে বাস্তবায়িত হয়েছে। কমন ইনফ্লুয়েন্স প্ল্যান্ট (সিইটিপি) সুবিধাসহ পরিবেশবান্ধব চামড়া শিল্পনগরীতে হাজারীবাগ ও দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত ট্যানারি কারখানাসমূহকে স্থানান্তর করা হয়েছে। শিল্পনগরীর ২০৫টি শিল্পপ্লটে ১৬২টি ট্যানারি কারখানা স্থাপিত হয়েছে।
স্বতন্ত্র এমপি আব্দুল্লাহ নাহিদ নিগারের প্রশ্নের জবাবে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, বিসিকের দেশব্যাপী বাস্তবায়িত ৮২টি শিল্পনগরীর মোট ১২ হাজার ৩৬০টি শিল্প প্লটের মধ্যে ১১ হাজার ২৬২টি শিল্প প্লটে বেসরকারি উদ্যোক্তাগণ কর্তৃক ৬ হাজার ১৯৬টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়েছে। এসব শিল্পনগরীর কারখানাসমূহে গত জুন, ২০২৩ পর্যন্ত বিনিয়োগের হয়েছে ৪৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা প্রায়।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সমাজ ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী জড়িত নয়। যদি কেউ বিএনপির নাম ব্যবহার করে এসব অপকর্ম করে তাদের কোনো ছাড় নয়। পাশাপাশি গণমাধ্যমকে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে হবে।
গতকাল শনিবার নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, একটি অসত্য সংবাদে রাষ্ট্র ও সমাজের মাঝে অনেক বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে। তিনি বলেন, কোনকিছু ঘটলেই বিএনপির ওপর দায় চাপানো কারো কারো অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সমাজবিরোধী কাজে যেই জড়িত হবে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
রিজভী বলেন, রাউজানে কিছু সন্ত্রাসী অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছে। অথচ, কয়েকটি গণমাধ্যমে বলা হলো এই অস্ত্রধারীরা বিএনপির লোক! কোনো প্রমাণ ছাড়া এগুলো লেখা দুঃখজনক। এই রাউজানে নানান অভিযোগে অনেক সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি ১৫ বছরের অত্যাচার-অবিচার থেকে মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছে। জুলাই-আগস্টে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে। মানুষ হয়ত কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছে। কিন্তু এখনও আতংকমুক্ত নয়।
রিজভী বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি দেখা যাচ্ছে না। নিত্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট যারা সৃষ্টি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বিশ্ববাজারে যখন গমের দাম কমেছে তখন বাংলাদেশে এর দাম বেড়েছে। জনগণকে নিরাপদ রাখার দায়িত্ব সরকারের। রাষ্ট্র এতে ব্যর্থ হলে যেকোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সৃষ্টি হতে পারে সামাজিক অস্থিরতা।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার আজ বলেছেন, সরকার ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
গতকাল শনিবার কুয়াকাটায় অবস্থিত কোডেক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ‘নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে নিরূপণ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ইসি আনোয়ার বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচনী আইন (আরপিও)-তে সংশোধন আনা হয়েছে। এখন রিটার্নিং কর্মকর্তারা চাইলে তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত আসনে ভোটগ্রহণ স্থগিত করতে পারবেন।’
এ সময় তিনি নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নির্ভয়ে দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, কুয়াকাটা কোডেক ট্রেনিং সেন্টারের সভাকক্ষে এ কর্মশালার আয়োজন করে পটুয়াখালী জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিস। এ কর্মশালায় পটুয়াখালী জেলার আট উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রায় ৬০ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।
আজকের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বরিশাল অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ, পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ শহীদ হোসেন চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপু সরোয়ার ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপপ্রধান মুহাম্মদ মোস্তফা হাসান।
আগামী বছর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।
রোববার (২ নভেম্বর) সচিবালয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে তাবলিগের দুই পক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে উপদেষ্টা এ কথা জানান।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা জানান, দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ইজতেমার তারিখ ঠিক করা হবে।
বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয় করণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় নোয়াখালীতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ২ দিন ব্যাপী ২য় ব্যাচে গ্রাম আদালত বিষয়ে প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে।
শনিবার (০১ নভেম্বর) জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশিক্ষণে কোর্স ডিরেক্টর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ এবং কোর্স কোর্ডিনেটর হিসেবে ছিলেন, উপপরিচালক (অ.দা.) মোহাম্মদ ইসমাইল।
এ সময় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের গ্রাম আদালতের উপর হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। গ্রাম আদালত পরিচালনার উপর বড় পর্দায় নাটিকা প্রদর্শন করা হয়। প্রশিক্ষনে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ গ্রাম আদালতের উপর একটি মক ট্রায়াল প্রদর্শন করেন।
প্রশিক্ষণ শেষে সমাপনী বক্তব্যে জেলা প্রশাসক ও কোর্স ডিরেক্টর খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, গ্রামের বিরোধগুলো আপনারাই নিষ্পত্তি করে থাকেন। তবে সেই বিরোধগুলো যাতে গ্রাম আদালতের মাধ্যমেই নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী সমাধা করা হয় সে দিকে লক্ষ রাখবেন। আপনাদের আন্তরিকতায় গ্রামের হতদরিদ্র মানুষগুলো অল্প সময়ে গ্রাম আদালতের সেবা নিতে পারবে। ছোটখোটো কোনো বিরোধ নিয়ে পক্ষরা যাতে থানা বা জেলা আদালতে না চলে যায় তার জন্য প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদ থেকে গ্রাম আদালতের বিষয়ে প্রচার প্রচারণার ব্যবস্থাও করতে হবে।
গ্রাম আদালতে গত ৬ মাসে মামলা গ্রহণে ১ম, ২য় এবং ৩য় স্থান অর্জনকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের পুরস্কৃত করা হয়।
প্রশিক্ষণ পরিচালনায় সহযোগিতা করেন, ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার মো. আহসান উল্লাহ চৌধুরী মামুন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বেগমগঞ্জ উপজেলা সমন্বয়কারী মো. নুরে আলম সিদ্দিক এবং চাটখিল উপজেলা সমন্বয়কারী রবিউল হাসান, প্রোগ্রাম এন্ড ফাইন্যান্স এসিস্ট্যান্ট ফয়েজ আহমেদ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ববর্তী বিরোধকে কেন্দ্র করে আবারও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে মনেক মিয়ার ছেলে শিপন মিয়া (৩০) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অন্তত চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
শনিবার (১ নভেম্বর) রাতে উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের গণিশাহ মাজার বাজার ও আশপাশের এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাত আনুমানিক ৯টার দিকে বড়িকান্দি গণিশাহ মাজার বাজারের একটি হোটেলে স্থানীয় কুখ্যাত ডাকাত মোন্নাফ মিয়া ওরফে মনেক ডাকাতের ছেলে শিপন মিয়া (৩০) আড্ডা দিচ্ছিলেন। ওই সময় হঠাৎ একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী হোটেলে ঢুকে গুলি চালায়। এতে শিপন মিয়া ও হোটেলের দুই কর্মচারী ইয়াছিন (২০) এবং নূর আলম (১৮) গুলিবিদ্ধ হন।
গুলির শব্দে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলাকারীরা নির্বিঘ্নে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। গুলিবিদ্ধদের প্রথমে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিপন মিয়া মারা যান।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শিপনের পক্ষের লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে সশস্ত্র অবস্থায় প্রতিপক্ষের এলাকায় হামলা চালায়। তারা গণিশাহ মাজারের অদূরে তালতলায় গিয়ে স্থানীয় শিক্ষক এমরান হোসেন মাস্টারের অফিসে গুলি চালায়। এতে এমরান মাস্টার (৩৮) গুলিবিদ্ধ হন। তিনি ঢাকায় কর্মরত পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) বিল্লাল হোসেনের ছোট ভাই এবং শ্যামগ্রাম মোহিনী কিশোর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
পরে বিক্ষুব্ধরা থোল্লাকান্দি গ্রামে প্রতিপক্ষের একাধিক বাড়িঘরে ভাঙচুর চালায়। এতে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে রাতেই নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিয়াস বসাক এবং নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নবীনগর থানার ওসি মো. শাহিনুর ইসলাম বলেন, “গুলিবর্ষণের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ঘটেছে।”
এ ঘটনায় এলাকায় এখনো টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ব্যবসায়িক আধিপত্য নিয়ে বিরোধের জেরে মো. রাসেল (২৮) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিপ্লব নামে আরও একজন আহত হয়েছেন।
শনিবার (২ নভেম্বর) রাত পৌনে ১০টার দিকে মোহাম্মদপুরের নবীনগর হাউসিং এলাকার ৪ নম্বর রোডে ঘটনাটি ঘটে । পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ‘পেপার বাবু’ ও তার সহযোগী মোবারককে আটক করেছে।
পুলিশ জানায়, রাতে রাসেল ও বিপ্লব নবীনগর হাউসিং এলাকায় অবস্থান করছিলেন। ওই সময় মোটরসাইকেলে এসে একদল দুর্বৃত্ত ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। রাসেলের ঘাড়ে কোপ লাগলে তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রমনা জোনের সহকারী উপ-পুলিশ কমিশনার (এসি) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, স্থানীয় এলাকায় মুরগির ব্যবসা ঘিরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, নিহত রাসেল ও অভিযুক্ত পেপার বাবু একই ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন এবং দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল।
তিনি আরও বলেন, “পেপার বাবুর বিরুদ্ধে হত্যা ও চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। ঘটনার পেছনে কারা মদদ দিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
পুলিশ জানায়, হত্যার ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রস্তুতির কাজ চলছে এবং এলাকার অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
মাঝ কার্তিকে শনিবার দুপুরে নেমে আসে সন্ধ্যা, কালো মেঘ গর্জে নামলো বৃষ্টিও। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকায় ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।
এই সময়ে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে টাঙ্গাইলে ৫৭ মিলিমিটার। এছাড়া কুড়িগ্রাম, রংপুর, নীলফামারী, রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, গোপালগঞ্জ ও খুলনা জেলায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
'লঘুচাপের প্রভাবে এই বৃষ্টি,' বলেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবির।
এদিকে বিকেল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি যেন থামছিল না। অঝোর ধারায় ঝরেই চলেছিল৷ একদিকে মুষলধারে বৃষ্টি; অন্যদিকে যানজট আর জলাবদ্ধতায় নাকাল ছিল রাজধানীবাসি।
শনিবার বিকাল চারটা নাগাদ ঢাকার আকাশ ঢেকে যায় কালো মেঘে। এরপর সাড়ে চারটা নাগাদ শুরু হয় গুড়িগুড়ি বৃষ্টি। বিকাল ৫টা নাগাদ বাড়তে শুরু হয় এই বৃষ্টি। সন্ধ্যা সাতটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রায় আড়াই ঘণ্টার বৃষ্টিতে রাজধানীর বেশিরভাগ অলিগলি পানিতে তলিয়ে গেছে। কিছু কিছু বড় সড়কের একপাশেও পানি জমে গেছে। বৃষ্টির কারণে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। সব মিলিয়ে অফিস ফেরত সাধারণ মানুষ পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।
বিকাল ৫টার দিকে মতিঝিলের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বের হন আয়েশা সুলতানা। নেমেই দেখেন তুমুল বৃষ্টি। যানবাহন পাওয়া যাচ্ছে না। যাবেন রামপুরা। রিকশা-সিএনজির চালকরা চাইছেন দ্বিগুণ ভাড়া। অগত্যা দ্বিগুণ ভাড়ায় রিকশা নেন তিনি। কাকরাইল এসে পড়েন যানজটে। সন্ধ্যা সাতটায়ও বাসায় পৌঁছাতে পারেননি বলে তিনি জানান।
একই অবস্থার শিকার ঢাকার প্রায় সব অফিস ফেরত সাধারণ মানুষের।
জরুরি কাজে বের হবেন রাজাবাজারের বাসিন্দা জামাল হোসেন। অঝোর বৃষ্টি বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। পরে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই বের হন তিনি। তবে বাঁধ সাধে রাস্তার ওপর জমে থাকা পানি। তার ভাষ্য, ঢাকার সড়কে হাঁটু পানি পার হওয়া যেন নদী পার হওয়ার মতোই বিড়ম্বনা।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দক্ষিণ ছত্তিসগড় ও এর আশেপাশে যে সুস্পষ্ট লঘুচাপটি অবস্থান করছিল, সেটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে। বর্তমানে এটি লঘুচাপ আকারে পশ্চিমবঙ্গ ও আশেপাশের এলাকা থেকে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে এগোচ্ছে, জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিন রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল।
সকাল নয়টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
এদিকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং এর আশেপাশের এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। লঘুচাপ সৃষ্টি হলে আগামী বুধবার থেকে আবারও বৃষ্টির প্রবণতা বাড়ার সম্ভাবনা আছে।'
তবে আর রোববারও চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি এবং বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৃষ্টির প্রবণতা বাড়বে, নভেম্বরেও ভেজা আবহাওয়া
নভেম্বরের শুরুতেই দেশে বৃষ্টির প্রবণতা বাড়ছে। দুর্বল হয়ে পড়া লঘুচাপের পর আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে নতুন একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি এবং কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। একইসঙ্গে তাপমাত্রায় সামান্য ওঠানামা দেখা দিতে পারে—কোথাও কমবে, কোথাও আবার সামান্য বাড়বে।
শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, দক্ষিণ বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে লঘুচাপে পরিনত হয়ে গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে যেতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে
তিনি আরও জানান, পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আগামী সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
আগামী মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বরিশাল, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের দুয়েক জায়গায় বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে
আগামী বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
বর্ধিত পাঁচ দিনের প্রথম দিকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কোনো কর্মকর্তা বিদেশ সফরে যেতে পারবেন না।
বিদেশ ভ্রমণ সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের আগের পরিপত্র এবং অর্থ বিভাগের গত ৮ জুলাইয়ের চিঠির বিষয়টি তুলে ধরে সম্প্রতি সরকারের সব সচিবের কাছে নতুন পরিপত্র পাঠানো হয়েছে। পরিপত্রের অনুলিপি উপদেষ্টাদের একান্ত সচিবদেরও দেওয়া হয়েছে।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, লক্ষ্য করা যাচ্ছে, জারিকৃত পরিপত্রগুলোর নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ না করে বিদেশ ভ্রমণের ঘটনা ঘটছে। মন্ত্রণালয়গুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ও সচিব একই সময়ে বৈদেশিক সফরে যাচ্ছেন। একই মন্ত্রণালয়ের অনেক কর্মকর্তা একসঙ্গে বিদেশে যাচ্ছেন। এ ধরনের প্রস্তাব প্রায়ই প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হচ্ছে, যা আগের নির্দেশনাগুলোর পরিপন্থী।
সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ সংক্রান্ত আগের সব নির্দেশনা প্রতিপালনের নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘এখন থেকে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া পর্যন্ত একান্ত অপরিহার্য কারণ ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করার অনুরোধ করা হলো।’
সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আরাকান আর্মির পুতে রাখা মাইন বিষ্ফোরনে আহত হওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরনকারী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর সাহসী সদস্য নায়েক মো. আক্তার হোসেন এর মরদেহ ভোলায় আসার পর জানাযা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন ৩৪ বিজিবির এই সদস্য শুক্রবার দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে ঢাকার সিএমএইচ হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
শনিবার (০১ নভেম্বর) সকালে বাংলাদেশ বিজিবির একটি টিম হেলিকপ্টার যোগে ভোলার দৌলতখান উপজেলায় তার নিজ গ্রামে মরদেহ নিয়ে আসে। পরে জানাযা নামাজ শেষে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
নিহত নায়েক আক্তার হোসেন ভোলার দৌলতখান পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিজিবির অবসরপ্রাপ্ত হাবিলদার আব্দুল মান্নান মিয়ার পুত্র। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর। জীবদ্দশায় তিনি স্ত্রী, ২ ছেলে, ১ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
গত ১২ অক্টোবর নায়েক আক্তার পেয়ারাবুনিয়া সীমান্ত এলাকায় টহলরত অবস্থায় মাইন বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন।
এরপর তাকে দ্রুত রামু সিএমএইচে নেওয়া হয় এবং প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পরদিন হেলিকপ্টারে করে ঢাকা সিএমএইচে নেওয়া হয়। শুক্রবার সকালে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হলে তার মৃত্যু হয়।
বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নায়েক আক্তার হোসেনের মৃত্যুতে পুরো বাহিনীতে গভীর শোক নেমে এসেছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের (৩৪ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম খায়রুল আলম (পিএসসি) বলেন, দেশের সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমরা এক সাহসী সহযোদ্ধাকে হারালাম। নায়েক আক্তার হোসেনের আত্মত্যাগ আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। বিজিবির এ কর্মকর্তা শোক প্রকাশ করে আরও বলেন, শহীদ নায়েক আক্তার হোসেন দেশের জন্য আত্মোৎসর্গের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার আত্মার মাগফিরাত ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সীমান্ত এলাকা থেকে ১৩টি ভারতীয় গরু আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শনিবার (১ নভেম্বর) ভোর রাত ৪টার দিকে শ্রীমঙ্গল ব্যাটালিয়নের (৪৬ বিজিবি) দত্তগ্রাম বিওপির একটি টহল দল এ অভিযান পরিচালনা করে।
শ্রীমঙ্গল ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম জাকারিয়া বিষয়টি এই প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাত ৪টার দিকে দত্তগ্রাম বিওপির টহল দল সীমান্ত এলাকায় অবস্থান নেয়। এ সময় ভারত থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় মালিকবিহীন অবস্থায় ১৩টি গরু আটক করা হয়।
তিনি আরও বলেন, গরুগুলো আটক হওয়ার পর স্থানীয় একটি চোরাকারবারী চক্র এবং কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি গরুগুলো নিজেদের দাবি করে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে এ ধরনের অপতৎপরতা প্রতিহত করতে বিজিবি সতর্ক রয়েছে এবং কঠোর অবস্থানে আছে।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবের মেঘনা নদী থেকে বাল্কহেড ভর্তি ভারতীয় ৬০ বস্তা ফুসকা, ৩২০ পাতা জিলেট ব্লেডসহ ৪ জনকে আটক করেছে নৌপুলিশ।
গতকাল শুক্রবার রাতে ভৈরবের মেঘনা নদী এলাকা থেকে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ভারতীয় ফুসকা, ব্লেড ভর্তি ১টি বাল্কহেড জব্দ করা হয়েছে।
আটকৃতরা হলেন, ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের খলাপাড়া এলাকার মৃত রমজান মিয়ার ছেলে ইসমাইল মুন্সি (৩৭), একই এলাকার মৃত দানিছ মিয়ার ছেলে রাকিব মিয় ছেলে সোহাগ মিয়া (৩৫), মৃত নুর ইসলামের ছেলে নিজাম (৫৫)।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, ভৈরবের মেঘনা নদীর কিনারায় সিলেটের সুনামগঞ্জ জেলার বাদাঘাট সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে আগত এম.বি কদর নৌপরিবহন নামের একটি বাল্কহেড ভৈরব বাজারে আসার পথে মেঘনা নদীতে টহলরত নৌপুলিশের অভিযানে ভারতীয় পণ্যসহ বাল্কহেড আটক করে নৌপুলিশের একটি টিম । এসময় বাল্কহেডে ভিতরে থাকা ৬০টি বড় ছোট প্লাষ্টিকের বস্তা। ৬০টি বস্তার ভিতর ১ কেজি ওজনের ৩৪৮০ প্যাকেট। যার আনুমানিক মূল্য ৬ লাখ ৯৫ হাজার টাকা । এছাড়া ৩২০ পাতা ভারতীয় জিলেট ব্লেড আটক করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এসময় ভারতীয় পণ্য বহনকারী ১০ লাখ টাকার মূল্যের বাল্কহেডটি জব্দ করা হয়েছে। সর্বমোট ১৮ লাখ ১৬ হাজার টাকা উদ্ধারকৃত মালামাল ফাঁড়ি হেফাজতে রয়েছে ।
এবিষয়ে ভৈরব নৌপুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক এসআই মো.জোবায়ের হোসেন জানান, সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সীমান্তবর্তী এলাকা হতে আগত মেঘনা নদী থেকে একটি বাল্কহেড আটক করা হয়েছে। এসময় ভারতীয় ৬০ বস্তা ফুসকা, ৩২০ প্যাকেট জিলেট ব্লেড জব্দ করা হয়। প্রায় ৮ লাখ ১৬ হাজার টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া এই ঘটনায় জড়িত ৪ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
করপোরেট সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে দেশের পোল্ট্রি খাত চরম সংকটে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। সংগঠনটি জানিয়েছে, সরকারের নীরবতা ও করপোরেট প্রভাবের কারণে প্রান্তিক খামারিরা টিকে থাকতে পারছেন না।
এমন পরিস্থিতিতে ৭ দফা দাবি ঘোষণা করে এগুলো বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত শনিবার থেকে সারাদেশে পর্যায়ক্রমে সব জেলা ও উপজেলায় ডিম ও মুরগি উৎপাদন বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে বিপিএ। সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে বিপিএ।
সংগঠনটি জানায়, দেশে ৫০ থেকে ৬০ লাখ মানুষ এই খাতের সঙ্গে যুক্ত, যার মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ নারী ও ৬০ শতাংশ শিক্ষিত বেকার যুবক। কিন্তু করপোরেট সিন্ডিকেটের একচেটিয়া বাজার দখলের কারণে এই বৃহত্তম কৃষিভিত্তিক খাতটি ধ্বংসের পথে।
বিপিএ’র ৭ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- করপোরেট সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে ফিড, বাচ্চা, মেডিসিন ও ভ্যাকসিনের দাম সরকার কর্তৃক নির্ধারণ, কর্পোরেট প্রভাবমুক্ত, ন্যায্য ও স্বচ্ছ বাজারব্যবস্থা গড়ে তোলা, প্রান্তিক খামারিদের সংগঠনকে নীতিনির্ধারণ পর্যায়ে অন্তর্ভুক্তকরণ, ফিড, বাচ্চা ও ওষুধের বাজারে নিয়মিত অডিট ও প্রকাশযোগ্য প্রতিবেদন ব্যবস্থা চালু, উৎপাদন খরচ অনুযায়ী ১০ শতাংশ লাভ যুক্ত করে ডিম ও মুরগির ন্যায্য দাম নির্ধারণ, ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জন্য জামানতবিহীন ঋণ, প্রণোদনা ও ভর্তুকি প্রদান, নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে দুর্নীতিগ্রস্ত ও কর্পোরেটপন্থি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে হবে।
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও টেকসই সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে দেশব্যাপী জাটকা ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা। এই নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এবং মৎস্য অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় ২৫ সেন্টিমিটারের ছোট ইলিশ (জাটকা) আহরণ, পরিবহণ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও মজুত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।
এর আগে চলতি বছরের ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে প্রজননক্ষম ইলিশ রক্ষায় ‘ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৫’ বাস্তবায়ন করা হয়। সে সময়ে ডিমওয়ালা ইলিশ থেকে নিঃসৃত ডিমের পরিস্ফুটনের মাধ্যমে উৎপাদিত পোনা বর্তমানে উপকূলীয় নদ-নদী ও মোহনাসমূহে বিচরণ করছে। এসব পোনা নিরাপদে বেড়ে উঠতে পারলেই ভবিষ্যতে দেশের ইলিশ উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে।
মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ (সংশোধিত) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ বিধিমালা, ১৯৮৫ অনুযায়ী, উক্ত নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করলে অনধিক ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড, কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।
মৎস্য অধিদপ্তর সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ, র্যাব, ও স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতায় কঠোরভাবে এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করবে।