মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
১৫ পৌষ ১৪৩২

‘কারিগরি-অকারিগরি কারণে ঘটতে পারে ভুতুড়ে বিলের ঘটনা’

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। ফাইল ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ২০ জুন, ২০২৪ ২২:০৬

কারিগরি ও অকারিগরি কারণে অনেক সময় ভুতুড়ে বিলের ঘটনা ঘটতে পারে বলে জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা বা কোম্পানির মোট গ্রাহক ৪ কোটি ৭১ লাখ। বিদ্যুৎ বিল যাতে যথাযথ হয়, সে বিষয়ে বহুবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

কারিগরি ও অকারিগরি কারণে অনেক সময় ভুতুড়ে বিলের ঘটনা ঘটতে পারে। ভুতুড়ে বা অস্বাভাবিক বিল রোধকল্পে অগ্রাধিকারভিত্তিতে প্রিপেইড বা স্মার্ট প্রিপেইড মিটার স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে নোয়াখালী-৩ আসনের সরকারদলীয় এমপি মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন করা হয়।

চাহিদার তুলনায় প্রাপ্তি কম হওয়ায় গ্রামাঞ্চলে সীমিত লোডশেডিং

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, দেশজুড়ে তীব্র তাপদাহের কারণে বিদ্যুৎ ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রামাঞ্চলে কিছু কিছু এলাকায় চাহিদার তুলনায় প্রাপ্তি কম হওয়ায় সীমিত আকারে লোডশেডিং হয়েছে।

তিনি বলেন, চাহিদার তুলনায় প্রাপ্তি কম হলে সাধারণত লোডশেডিং হয়। দেশজুড়ে তীব্র দাবদাহের কারণে বিদ্যুৎ ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রামাঞ্চলে কিছু কিছু এলাকায় চাহিদার তুলনায় প্রাপ্তি কম হওয়ায় সীমিত আকারে লোডশেডিং হয়েছে। এ ছাড়া রক্ষণাবেক্ষণ কাজে প্রয়োজনীয় সময়ের জন্য লোডশেডিং করা হয়। সরকার শহর ও গ্রাম নির্বিশেষে সমতার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সরবরাহে সচেষ্ট রয়েছে। সেচ মৌসুমে গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহে অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়েছে।

তিনি জানান, অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ এবং বকেয়া পাওনা থাকলে নিয়মানুযায়ী বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। ভুতুড়ে বিলের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে যাচাইপূর্বক প্রতিকার প্রদান করা হয় এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

চলতি অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা

বাহাউদ্দিন নাছিমের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আড়াই হাজার কোটি টাকা, ২০১৯-২০ অর্থবছরে সাড়ে তিন হাজার, ২০২০-২১ অর্থবছরে ২ হাজার ৪০০ কোটি, ২০২১-২২ অর্থবছরে ছয় হাজার, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬ হাজার ৩১৫ কোটি ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকির দরকার হবে বলে প্রতিমন্ত্রী জানান।

প্রতিমন্ত্রী জানান, ১৯৯৯-২০০০ থেকে ২০১৩-১৪ অর্থবছর পর্যন্ত বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ক্রমাগত লোকসানের সম্মুখীন হয়। ওই সময় সরকারকে উল্লেখযোগ্য অঙ্কের ভর্তুকি দিতে হয়। তবে জ্বালানি তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমে যাওয়ার ফলে নভেম্বর ২০১৪ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত সরকারকে জ্বালানি তেলে কোনো ভর্তুকি দিতে হয়নি। তবে, ২০২১-২২ অর্থবছরে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপিসি ২ হাজার ৭০৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা লোকসান দেয়।

সরকার বর্তমানে ডাইনামিক প্রাইসিং ফর্মুলায় জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করায় এ খাতে কোনো ভর্তুকি দিতে হচ্ছে না।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারের বাজেটে বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকির পরিমাণ ৩৫ হাজার কোটি টাকা উল্লেখ করে নসরুল হামিদ বলেন, ভর্তুকির অর্থের মধ্যে ৩১ হাজার ৮৩৩ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার ৭শ কোটি নগদ ও ২০ হাজার ১৩৩ কোটি বন্ডের মাধ্যমে সমন্বয় করা হয়েছে।

নোয়াখালী-২ আসনের মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, অনুমোদনপ্রাপ্ত এলপিজি প্ল্যানের সংখ্যা ৭৮টি। এর মধ্যে প্রাথমিক অনুমোদনপ্রাপ্ত ৫২টি, চূড়ান্ত অনুমোদনপ্রাপ্ত ২৪টি ও বিপিসির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ২টি।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো. সোহরাব উদ্দিনের অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০০৯ সালের জানুয়ারি হতে বর্তমান সময় পর্যন্ত ২৫ হাজার ৭৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। ফলে বিদ্যুতের স্থাপিত ক্ষমতা ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ ৩০ হাজার ৭৩৮ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। দেশে চাহিদার চেয়েও স্থাপিত বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বেশি। তবে কোভিড-১৯ মহামারি পরবর্তীকালে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটের কারণে পরিপূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কিছু কিছু স্থানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। এ ছাড়া অত্যধিক গরম ও দেশের কোথাও কোথাও দাবদাহের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

বর্তমানে নবায়নযোগ্য উৎস হতে ১৩১২ দশমিক ৭৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে উল্লেখ করে আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, নবায়নযোগ্য উৎস হতে চলমান ও প্রক্রিয়াধীন প্রকল্পগুলোতে উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমাণ দাঁড়াবে ১২ হাজার ৫৪৭ দশমিক ২২ মেগাওয়াট। ২০৩০ সালের মধ্যে এগুলো জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০টি বিভিন্ন ধরনের কূপ খননের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এর সফল বাস্তবায়নে গড়ে দৈনিক ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা সম্ভব হবে। এর মধ্যে ১১ টির খনন ও ওয়ার্কওভার কার্যক্রম সমাপ্ত হয়েছে। যার মাধ্যমে দৈনিক ১২৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের উৎপাদন নিশ্চিত করা হয়েছে। দৈনিক ৩৩ মিলিয়ন ঘটফুট হারে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে।

এই সংসদ সদস্যের অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশে আবিষ্কৃত ২৯টি গ্যাস ক্ষেত্রের মধ্যে ২০টি উৎপাদনরত ৫টি পরিত্যক্ত এবং ৪টির উৎপাদন কার্যক্রম চলমান।

আওয়ামী লীগের সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, বর্তমানে গ্যাসের চাহিদা প্রায় দৈনিক ৩৮০০-৪০০০ মিলিয়ন ঘনফুট, যার বিপরীতে দেশীয় উৎপাদন ও এলএনজি আমদানি করে ৩০০০-৩১০০ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। চাহিদা ও সরবরাহে ঘাটতি থাকায় পরিকল্পিত শিল্পাঞ্চলে এবং বিদ্যুৎ ও সার খাতে অগ্রাধিকার বিবেচনায় গ্যাস সংযোগ চালু রয়েছে।

ভোলা-৩ আসনের নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন শিল্প মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন বন্ধ/রুগ্ণ শিল্পের সংখ্যা ৩৯৭টি। এর মধ্যে বিসিকের নিয়ন্ত্রণাধীন রুগ্ণ/বন্ধ শিল্প ৩৮২টি, বিসিআইসির নিয়ন্ত্রণাধীন বন্ধ কারখানা ৫টি, বিএসএসআইসির নিয়ন্ত্রণাধীন স্থগিত চিনিকল ৬টি, বিএসইসির নিয়ন্ত্রণাধীন বন্ধ কারখানা ৪টি।

এমপি আব্দুল কাদের আজাদের এক প্রশ্নের জবাবে নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন জানান, বর্তমান সরকার আন্তর্জাতিক ও বহুজাতিক কোম্পানিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করাসহ বিনিয়োগ সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সময়কাল পর্যন্ত সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং সাফল্যও এসেছে।

তিনি জানান, বিসিকের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পাঁচটি শিল্পনগরী, তিনটি শিল্পপার্ক ও দুটি অন্যসহ মোট ১০টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে ৩ হাজার ৮১১টি শিল্প প্লটে সম্ভাব্য ৩ হাজার ৫৬৫টি শিল্প ইউনিট স্থাপিত হবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আরএডিপিতে সবুজ পাতাভুক্ত ১১টি প্রকল্প রয়েছে। প্রকল্পগুলো অনুমোদিত ও বাস্তবায়িত হলে দেশে শিল্পায়ন ত্বরান্বিত হবে এবং বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

মন্ত্রী জানান, বিনিয়োগে উৎসাহিতকরণের লক্ষ্যে বিসিক কর্তৃক ১২২টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ১৬৭টি শিল্প প্লট বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। বিসিক উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে হোসিয়ারি শিল্পনগরী, পঞ্চবটী, নারায়ণগঞ্জ; জামদানি শিল্পনগরী, তারাবো, নারায়ণগঞ্জ; চামড়া শিল্পনগরী, সাভার, ঢাকা; এপিআই শিল্পপার্ক, গজারিয়া, মুন্সীগঞ্জ এবং বিসিক বৈদ্যুতিক পণ্য উৎপাদন ও হালকা প্রকৌশল শিল্পনগরী, মুন্সিগঞ্জ শীর্ষক বিশেষায়িত শিল্পনগরী বা শিল্পপার্ক বাস্তবায়িত হয়েছে।

তিনি আরও জানান, চামড়া শিল্পনগরী প্রকল্পটি ১৯৯ দশমিক ৪০ একর জমিতে ঢাকার সাভারে বাস্তবায়িত হয়েছে। কমন ইনফ্লুয়েন্স প্ল্যান্ট (সিইটিপি) সুবিধাসহ পরিবেশবান্ধব চামড়া শিল্পনগরীতে হাজারীবাগ ও দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত ট্যানারি কারখানাসমূহকে স্থানান্তর করা হয়েছে। শিল্পনগরীর ২০৫টি শিল্পপ্লটে ১৬২টি ট্যানারি কারখানা স্থাপিত হয়েছে।

স্বতন্ত্র এমপি আব্দুল্লাহ নাহিদ নিগারের প্রশ্নের জবাবে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, বিসিকের দেশব্যাপী বাস্তবায়িত ৮২টি শিল্পনগরীর মোট ১২ হাজার ৩৬০টি শিল্প প্লটের মধ্যে ১১ হাজার ২৬২টি শিল্প প্লটে বেসরকারি উদ্যোক্তাগণ কর্তৃক ৬ হাজার ১৯৬টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়েছে। এসব শিল্পনগরীর কারখানাসমূহে গত জুন, ২০২৩ পর্যন্ত বিনিয়োগের হয়েছে ৪৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা প্রায়।


খালেদা জিয়াকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। প্রয়াত এই নেত্রীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে আগামীকাল ঢাকায় আসছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।

ড. জয়শঙ্করের এই সফর বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের প্রতি ভারতের সম্মান ও স্বীকৃতির একটি বড় বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি সশরীরে উপস্থিত হয়ে বাংলাদেশের এই বর্ষীয়ান নেত্রীর কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন এবং ভারত সরকারের পক্ষ থেকে অন্তিম শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেই এক শোকবার্তায় ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক উন্নয়নে খালেদা জিয়ার অবদানের কথা স্মরণ করেন।

বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে কেবল ভারত নয়, পাকিস্তান থেকেও উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি আসছেন। পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার জানাজায় যোগ দেওয়ার বিষয়টি ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। বরেণ্য এই নেত্রীর বিদায়ে চীন, নেপালসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান, কূটনৈতিক মিশন এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো শোকবার্তা পাঠিয়ে তাঁদের শ্রদ্ধা ও সমবেদনা জানাচ্ছেন।

আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর এই মহাপ্রয়াণে জাতীয় রাজনীতির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক মিশনগুলো বাংলাদেশের প্রথম এই নারী প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণকে একটি ঐতিহাসিক যুগের অবসান হিসেবে অভিহিত করেছেন। আগামীকাল বুধবার পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে, যেখানে দেশি-বিদেশি অসংখ্য বিশিষ্ট ব্যক্তির সমাগম ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। মূলত এক আপসহীন নেত্রীর বিদায়ে আজ বিশ্বজুড়েই শ্রদ্ধাবনত পরিবেশ বিরাজ করছে।


বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ঢাকা আসছেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে ঢাকা আসছেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার। আগামীকাল বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিতব্য নামাজে জানাজায় তিনি শরিক হবেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকায় অবস্থিত পাকিস্তান হাইকমিশন সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

হাইকমিশন সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল সকালে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছাবেন। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশগ্রহণ করবেন এবং মরহুমার বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। সফর শেষে ঐদিনই তাঁর ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে।

এর আগে আজ সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক বার্তায় বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন ইসহাক দার। তিনি মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান।

একই সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফও এক শোকবার্তায় বেগম খালেদা জিয়ার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “বেগম জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের অন্যতম কারিগর এবং পাকিস্তানের একজন নিবেদিতপ্রাণ বন্ধু।” শেহবাজ শরীফ তাঁর বার্তায় উল্লেখ করেন যে, এই শোকের মুহূর্তে পাকিস্তানের সরকার ও জনগণ বাংলাদেশের শোকাতুর মানুষের পাশে রয়েছে।

উল্লেখ্য, লিভার সিরোসিসসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতায় দীর্ঘ লড়াই শেষে আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ৭৯ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর এই প্রয়াণে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা শোক প্রকাশ করছেন। আগামীকাল বুধবার জোহর নামাজের পর জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও সংলগ্ন মানিক মিয়া এভিনিউতে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর তাঁকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশেই দাফন করা হবে। পাকিস্তানের উচ্চপর্যায়ের এই প্রতিনিধির উপস্থিতি বেগম জিয়ার প্রতি আন্তর্জাতিক শ্রদ্ধাবোধের এক বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।


২০২৫ সালে যে নক্ষত্রদের হারিয়েছে বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিনোদন ডেস্ক

ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে ২০২৫ সাল বিদায় নিলেও বাংলাদেশের শিল্প ও সংস্কৃতি অঙ্গনের জন্য এই বছরটি ছিল গভীর শোক আর হারানোর। বছরজুড়েই দেশ হারিয়েছে বেশ কয়েকজন কিংবদন্তি এবং প্রতিভাবান তারকাকে, যাঁদের দীর্ঘদিনের সাধনা ও সৃষ্টি এ দেশের সাংস্কৃতিক ভিত্তি মজবুত করেছিল। বছরের শুরুতেই চলচ্চিত্র জগত বড় এক ধাক্কা খায় সোনালি যুগের জনপ্রিয় নায়িকা অঞ্জনা রহমানের প্রয়াণে। ৪ জানুয়ারি ভোরে ৩ শতাধিক সিনেমার এই অভিনেত্রী না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। তাঁর রেশ কাটতে না কাটতেই ৫ জানুয়ারি বিদায় নেন বরেণ্য অভিনেতা প্রবীর মিত্র, যাঁর চরিত্রাভিনেতা হিসেবে অসামান্য নৈপুণ্য বাংলা সিনেমার ইতিহাসে এক উজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে থাকবে। এরপর ২৫ মার্চ নিভে যায় সংস্কৃতিচর্চার অন্যতম বাতিঘর ও ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা সন্‌জীদা খাতুনের জীবনপ্রদীপ, যিনি আজীবন রবীন্দ্রসংগীত ও লোকজ সংস্কৃতিকে লালন করেছেন।

বছরের মাঝামাঝি সময়ে ২ জুলাই চিরবিদায় নেন ‘সাগরের তীর থেকে’ খ্যাত কালজয়ী কণ্ঠশিল্পী জীনাত রেহানা। তাঁর রেশ কাটতে না কাটতেই ২৭ জুলাই আকস্মিক মৃত্যু হয় তরুণ প্রজন্মের প্রিয় সংগীতশিল্পী ও ব্যান্ড ‘ওন্ড’-এর সদস্য এ কে রাতুলের, যিনি ছিলেন কিংবদন্তি চিত্রনায়ক জসীমের সন্তান। সংগীতাঙ্গনে শোকের ছায়া আরও ঘনীভূত হয় ১৩ সেপ্টেম্বর, যখন লোকসংগীতের প্রবাদপ্রতিম শিল্পী ও একুশে পদকপ্রাপ্ত লালনকন্যা ফরিদা পারভীন শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর প্রয়াণ বাংলাদেশের লোকজ সংগীতের ধারায় এক অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি করেছে।

বছরের শেষ ভাগেও হারানোর মিছিল থামেনি। ২৭ নভেম্বর মারা যান জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘ফিডব্যাক’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও কিংবদন্তি গিটারিস্ট সেলিম হায়দার। তাঁর সৃষ্টির ঠিক একদিন পরই ২৮ নভেম্বর আধুনিক গানের পরিচিত কণ্ঠস্বর জেনস সুমন আমাদের ছেড়ে চলে যান। ২০২৫ সালের এই বিদায়গুলো কেবল একেকটি জীবনের অবসান নয়, বরং বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্যের ইতিহাসের একেকটি সোনালি অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি। এই নক্ষত্ররা শারীরিকভাবে বিদায় নিলেও তাঁদের গান, অভিনয় আর অনন্য সব সৃষ্টি এ দেশের মানুষের হৃদয়ে এবং জাতীয় ইতিহাসে চিরকাল অম্লান হয়ে থাকবে। মূলত তাঁদের দেখানো পথ ধরেই আগামী দিনের সাংস্কৃতিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।


বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে শ্রদ্ধা: বিপিএলের আজকের সব ম্যাচ স্থগিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) আজকের নির্ধারিত ম্যাচগুলো স্থগিত করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পক্ষ থেকে এক আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়।

বিসিবি জানিয়েছে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বর্তমানে সারাদেশে শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করছে। তাঁর স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে আজ সিলেটের মাঠে অনুষ্ঠিতব্য ‘সিলেট টাইটান্স বনাম চট্টগ্রাম রয়্যালস’ এবং ‘ঢাকা ক্যাপিটালস বনাম রংপুর রাইডার্স’–এর মধ্যকার ম্যাচ দুটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্থগিত হওয়া এই ম্যাচগুলোর নতুন সূচি পরবর্তীতে সুবিধাজনক সময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতা ও লিভার সিরোসিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বেগম খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর থেকে তিনি হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি অত্যন্ত সংকটময় সময় পার করছিলেন।

দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীর এই প্রয়াণে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। রাজনৈতিক অঙ্গনের পাশাপাশি ক্রীড়া জগতেও এর প্রভাব পড়েছে। বিপিএলের মতো বড় আসরের খেলা স্থগিত রেখে তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করল ক্রিকেট বোর্ড। বর্তমানে জানাজা ও দাফনের প্রস্তুতির কারণে লিগের পরবর্তী সূচি নিয়েও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।


বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শেখ হাসিনার শোক: ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদান অপরিসীম’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন তাঁর দীর্ঘদিনের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা এক বিশেষ শোকবার্তায় বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের প্রশংসা করে বলেছেন, এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়ার অবদান অপরিসীম। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক পোস্টের মাধ্যমে এই শোকবার্তাটি প্রচার করা হয়।

শোকবার্তায় শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতিতে এবং বিশেষ করে বিএনপির নেতৃত্বের ক্ষেত্রে এক অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর এটিই শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে আসা প্রথম কোনো বড় ধরণের আনুষ্ঠানিক শোকবার্তা। রাজনৈতিক বৈরিতা থাকা সত্ত্বেও দেশের ইতিহাসের এক চরম শোকাবহ ও গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে শেখ হাসিনার এই ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া এবং খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনা রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক কৌতূহল ও আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

আবেগঘন এই বার্তায় শেখ হাসিনা আরও বলেন, “আমি তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমানসহ পরিবারের অন্যান্য শোকাহত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। আমি প্রার্থনা করি যেন মহান আল্লাহ তাঁর পরিবার এবং বিএনপির সকল স্তরের নেতাকর্মীকে এই কঠিন শোক সহ্য করার শক্তি দান করেন।” মূলত দেশের দুই শীর্ষ নেত্রীর দীর্ঘ কয়েক দশকের রেষারেষির অবসান ঘটিয়ে এই মৃত্যু যেন রাজনীতির অঙ্গনে এক ভিন্ন মাত্রার শোকের আবহ তৈরি করেছে।

উল্লেখ্য, লিভার সিরোসিস, কিডনি জটিলতা, হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসসহ নানা বার্ধক্যজনিত সমস্যার সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই শেষে আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ৭৯ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর থেকে তিনি হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে ছিলেন। সোমবার দিবাগত রাত ২টার পর তাঁর শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি হলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা দ্রুত হাসপাতালে ছুটে যান। চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টার পর সকালে তাঁর চিরবিদায়ের খবরটি নিশ্চিত করেন ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।

নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অগ্রসেনানী হিসেবে ‘আপসহীন নেত্রী’র খ্যাতি পাওয়া বেগম খালেদা জিয়া টানা ৪১ বছর বিএনপির হাল ধরেছিলেন। তাঁর বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের অন্যতম অনন্য রেকর্ড হলো, তিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবনে একাধিকবার সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও কখনো কোনো আসনে পরাজিত হননি। তিনি তিনবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং দুইবার জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শত জুলুম ও কারাবরণ সত্ত্বেও দেশ ছেড়ে না যাওয়ার যে অদম্য জেদ তিনি আমৃত্যু বজায় রেখেছিলেন, তা তাঁকে এ দেশের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় করে রাখবে। তাঁর এই মহাপ্রয়াণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক কাঠামোর এক শক্তিশালী স্তম্ভের পতন ঘটল।


বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাতিসংঘের গভীর শোক প্রকাশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ঢাকার জাতিসংঘ কার্যালয় থেকে পাঠানো এক আনুষ্ঠানিক বার্তার মাধ্যমে এই শোক ও সমবেদনা জানানো হয়। বার্তায় জাতিসংঘ উল্লেখ করেছে যে, বেগম খালেদা জিয়ার এই চিরবিদায় একটি অত্যন্ত দুঃখজনক মুহূর্ত। সংস্থাটি তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার ও নিকটজনদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সংহতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ দিন বার্ধক্যজনিত ও বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভোগার পর আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এ দেশের মানুষের কাছে ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে পরিচিত বেগম খালেদা জিয়া। দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর প্রয়াণে জাতীয় রাজনীতিতে এক বিশাল শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। সংসদীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে তাঁর অদম্য নেতৃত্ব ও বলিষ্ঠ ভূমিকা বাংলাদেশের ইতিহাসে অম্লান হয়ে থাকবে। জাতিসংঘের এই শোকবার্তা তাঁর বৈশ্বিক গুরুত্ব এবং বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের প্রতি এক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিরই বহিঃপ্রকাশ। বর্তমানে দেশজুড়ে এই কিংবদন্তি নেত্রীর বিদায়ে গভীর শোকের ছায়া বিরাজ করছে।


বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের গভীর শোক প্রকাশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে বাংলাদেশে অবস্থিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বার্তার মাধ্যমে এই শোক জানানো হয়। বার্তায় ইইউ উল্লেখ করেছে যে, বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে তারা বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও সমবেদনা জ্ঞাপন করছে।

উল্লেখ্য, আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বরেণ্য এই নেত্রী। গত ২৩ নভেম্বর ফুসফুসের সংক্রমণ ও তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরবর্তীতে তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটলে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। কিডনি ও লিভার জটিলতা ছাড়াও তিনি দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস ও ডায়াবেটিসের মতো নানা বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন।

বেগম খালেদা জিয়ার এই চিরবিদায়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য অধ্যায়ের অবসান ঘটল। তাঁর মৃত্যুতে ইতোমধ্যেই দেশি-বিদেশি বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান, রাজনৈতিক দল এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো শোকবার্তা পাঠাচ্ছে, যার ধারাবাহিকতায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকেও এই বিশেষ বার্তাটি দেওয়া হলো। মূলত বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও নারীর ক্ষমতায়নে তাঁর ভূমিকার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই এই আন্তর্জাতিক সংস্থাটি তাদের সমবেদনা প্রকাশ করেছে। বর্তমানে দেশজুড়ে শোকের ছায়া বিরাজ করছে এবং এই কিংবদন্তি নেত্রীকে শেষ বিদায় জানাতে প্রস্তুতি চলছে।


জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় বেগম জিয়ার জানাজা, দাফন হবে শহীদ জিয়ার পাশেই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রথম নামাজে জানাজা আগামীকাল বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) জোহর নামাজের পর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা এবং সংলগ্ন মানিক মিয়া এভিনিউতে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে তাঁকে শেরেবাংলা নগরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের এক বিশেষ সভা শেষে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আইন উপদেষ্টা জানান, বেগম খালেদা জিয়ার দাফন ও জানাজার যাবতীয় প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হবে। এ ছাড়া বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের প্রতিটি মিশনে এই বরেণ্য নেত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শোক বই খোলা হবে। সভার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ব্যক্তিগতভাবে বেগম জিয়ার বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করেন এবং তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই কিংবদন্তি নেত্রীকে শেষ বিদায় জানাতে সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে, লিভার সিরোসিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় দীর্ঘ লড়াই শেষে আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বেগম খালেদা জিয়া। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর প্রয়াণে জাতীয় রাজনীতিতে একটি দীর্ঘ ও গৌরবময় অধ্যায়ের অবসান ঘটল। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষার সংগ্রামে তাঁর আপসহীন নেতৃত্ব ও অদম্য মনোবল এ দেশের মানুষের হৃদয়ে তাঁকে এক অনন্য উচ্চতায় আসীন করেছে। তাঁর মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ পুরো দেশজুড়ে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বর্তমানে তাঁর মরদেহ এভারকেয়ার হাসপাতালে রাখা হয়েছে এবং আগামীকালকের জানাজা সফল করতে বিএনপি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে।


‘ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ছিলেন খালেদা জিয়া’, জিএম কাদেরের শোক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অনন্য অধ্যায়ের প্রতিনিধি ছিলেন। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এক শোকবার্তায় তিনি এই বর্ষীয়ান নেত্রীর প্রয়াণে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন। জিএম কাদের উল্লেখ করেন যে, খালেদা জিয়া তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে রাষ্ট্র পরিচালনা এবং দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারা সুসংহত করতে অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন। তাঁর প্রয়াণে দেশ একজন অভিজ্ঞ ও প্রভাবশালী রাজনীতিককে হারাল, যা জাতীয় রাজনীতিতে এক অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি করল।

শোকবার্তায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মরহুমার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও অগণিত রাজনৈতিক সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তিনি মনে করেন, বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘ রাজনৈতিক পথচলা এবং দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম এ দেশের ইতিহাসের পাতায় চিরকাল অম্লান হয়ে থাকবে।

উল্লেখ্য, বার্ধক্যজনিত ও শারীরিক নানা জটিলতার সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই শেষে আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে পরিচিত বেগম খালেদা জিয়া। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের এই চিরবিদায়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি যুগের অবসান ঘটল। জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে তাঁর আপসহীন নেতৃত্ব তাঁকে এ দেশের সাধারণ মানুষের কাছে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল। বরেণ্য এই রাজনীতিকের প্রয়াণে সারা দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।


খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ও বুধবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে সরকার। একই সাথে মরহুমার প্রতি সম্মান জানিয়ে আগামীকাল বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ সরকারের এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, আগামীকাল বুধবার থেকে শুরু করে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত (৩১ ডিসেম্বর এবং ১ ও ২ জানুয়ারি) তিন দিনব্যাপী রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হবে। এই সময়ে দেশের সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশের মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রাম এবং দেশের উন্নয়নে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার এই বিশেষ সম্মান প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

উল্লেখ্য, লিভার সিরোসিসসহ নানা বার্ধক্যজনিত জটিলতায় দীর্ঘ লড়াই শেষে আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বর্ষীয়ান এই নেত্রী। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। তাঁর এই প্রয়াণে দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ইতোমধ্যেই রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা এবং বিশ্বনেতারা তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। সরকারের এই ঘোষণার ফলে আগামীকাল দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত ও ব্যাংক-বীমায় সাধারণ ছুটি বলবৎ থাকবে। এক কিংবদন্তি নেত্রীর বিদায়বেলাকে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করতেই রাষ্ট্র এই শোকাতুর কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে।


বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর শোক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এক শোক বার্তায় তিনি এই বর্ষীয়ান নেত্রীর প্রয়াণে নিজের এবং পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে গভীর সমবেদনা জানান। শেহবাজ শরীফ বলেন, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে বেগম জিয়া যে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন এবং দেশ ও জাতির জন্য যে আজীবন অবদান রেখে গেছেন, তা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

শোকবার্তায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে পাকিস্তানের একজন ‘নিবেদিত বন্ধু’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, এই শোকাবহ মুহূর্তে পাকিস্তানের সরকার এবং সেদেশের সাধারণ মানুষ বাংলাদেশের জনগণের পাশে রয়েছে। শেহবাজ শরীফ আরও বলেন, এই কঠিন সময়ে তাঁদের আন্তরিক সমবেদনা ও প্রার্থনা মরহুমার শোকসন্তপ্ত পরিবার, বন্ধু-বান্ধব এবং পুরো বাংলাদেশের মানুষের সাথে রয়েছে। তিনি মহান আল্লাহর কাছে বেগম খালেদা জিয়ার বিদেহী আত্মার শান্তি ও মাগফিরাত কামনা করেন।

উল্লেখ্য, লিভার সিরোসিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় দীর্ঘ দিন লড়াই করার পর আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭৯ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর এই চিরবিদায়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা শোক জানাচ্ছেন, যার ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এই গভীর সহমর্মিতা প্রকাশ করা হলো। মূলত দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে বেগম জিয়ার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তাঁর অবদানের বিষয়টিই এই শোকবার্তায় স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।


ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীতে খালেদা জিয়ার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে: নরেন্দ্র মোদি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক বার্তার মাধ্যমে তিনি এই প্রবীণ নেত্রীর প্রয়াণে তাঁর পরিবার এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। নরেন্দ্র মোদি তাঁর বার্তায় খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করার পাশাপাশি এ দেশের উন্নয়ন এবং ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

শোকবার্তায় মোদি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার করার ক্ষেত্রে বেগম খালেদা জিয়ার অবদান সবসময় অম্লান হয়ে থাকবে। ২০১৫ সালে তাঁর ঢাকা সফরের সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে ব্যক্তিগত সাক্ষাতের স্মৃতিচারণ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেগম জিয়ার রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও আদর্শিক উত্তরাধিকার ভবিষ্যতেও দুই দেশের অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করতে বিশেষ অনুপ্রেরণা জোগাবে। তিনি বিনম্র শ্রদ্ধায় এই বরেণ্য নেত্রীর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।

উল্লেখ্য, লিভার সিরোসিসসহ নানা জটিলতা নিয়ে দীর্ঘ সময় চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর এই প্রয়াণে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান ও বিশ্বনেতারা শোকবার্তা পাঠাচ্ছেন, যার ধারাবাহিকতায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এই আন্তরিক প্রতিক্রিয়া জানানো হলো। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মোদির এই শোকবার্তা দুই দেশের দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক মৈত্রী এবং বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিরই বহিঃপ্রকাশ।


বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে রাষ্ট্রপতির গভীর শোক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এক বিশেষ শোক বার্তায় তিনি এই বর্ষীয়ান নেত্রীর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান। রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় বেগম খালেদা জিয়ার ‘আপসহীন ভূমিকা’ এ দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

রাষ্ট্রপতি তাঁর বার্তায় উল্লেখ করেন যে, বেগম জিয়ার চলে যাওয়া জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি মরহুমার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার, দলের অগণিত নেতাকর্মী ও অনুসারীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। শোকাতুর এই মুহূর্তে তিনি দেশবাসীকে মরহুমার স্মৃতির প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের পাশাপাশি তাঁর জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করার উদাত্ত আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস এবং লিভার সিরোসিসের মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে আজ মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮০ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বেগম খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্টসহ শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, যেখানে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁর এই চিরবিদায়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি বর্ণাঢ্য ও দীর্ঘ অধ্যায়ের অবসান ঘটল। বর্তমানে তাঁর মৃত্যুতে রাষ্ট্র ও প্রশাসনের উচ্চপর্যায় থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের মাঝে শোকের আবহ বিরাজ করছে।


banner close