বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক আরও জোরদারে ১০ চুক্তি সই

সন্ত্রাস দমন, নিরাপত্তা ও উন্নয়ন অংশীদারত্বে গুরুত্বারোপ  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদির সঙ্গে গতকাল নয়া দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। ছবি: ফোকাস বাংলা
আপডেটেড
২৩ জুন, ২০২৪ ০০:০২
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২৩ জুন, ২০২৪ ০০:০২

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে গতকাল দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে তারা প্রতিরক্ষা সম্পর্ক, প্রতিরক্ষা উৎপাদন, সন্ত্রাস দমনে সহযোগিতা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করেন।

বৈঠক শেষে বাংলাদেশিদের জন্য ই-মেডিকেল ভিসা চালুর ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তা ছাড়া রংপুরে নতুন একটি অ্যাসিসট্যান্ট হাইকমিশন খুলতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

বৈঠক-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য ভারতে আগমনকারী বাংলাদেশিদের জন্য দেশটি ই-মেডিকেল ভিসা সুবিধা চালু করবে।

‘আমরা বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলবাসীর সুবিধার জন্য রংপুরে একটি নতুন অ্যাসিসট্যান্ট হাইকমিশন খোলার ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। বাংলাদেশ ভারতের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী এবং বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিই।’

এদিকে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক আরও সুসংহত করতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে ঢাকা ও নয়াদিল্লি গতকাল শনিবার ১০টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে। এসব সমঝোতা স্মারকের মধ্যে সাতটি নতুন ও তিনটি নবায়ন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরকালে এখানকার হায়দরাবাদ হাউসে দুই দেশের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনার পর সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

আলোচনায় মূলত সংযোগ, জ্বালানি, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, সমুদ্র সম্পদ, বাণিজ্য, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা ও উন্নয়ন অংশীদারত্ব প্রাধান্য পায়।

প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদন থেকে শুরু করে সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকীকরণসহ প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও জোরদার করার বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে বিশদ আলোচনা হয়। সন্ত্রাস দমন, উগ্রবাদ হ্রাস ও সীমান্তের শান্তিপূর্ণ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।

প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকের পর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী সমুদ্র অর্থনীতি ও সামুদ্রিক সহযোগিতা, রেলওয়ে, সক্ষমতা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য, একাডেমিক সহযোগিতা, মৎস্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক বিনিময় প্রত্যক্ষ করেন।

বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের সাতটি নতুন সমঝোতা স্মারকের মধ্যে বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগর অঞ্চলে সমুদ্র অর্থনীতি ও সমুদ্র সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।

ভারত মহাসাগরে সমুদ্রবিজ্ঞান ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যৌথ গবেষণার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ওশেনোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট (বিওআরআই) এবং ভারতের কাউন্সিল অব সাইন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর)-এর মধ্যে আরেকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।

ডিজিটাল পার্টনারশিপের দুটি পৃথক দৃষ্টিভঙ্গি ও একটি টেকসই ভবিষ্যতের জন্য ভারত-বাংলাদেশ সবুজ অংশীদারত্বের অভিন্ন ভিশন নিয়ে দুই দেশের মধ্যে রেল সংযোগের একটি সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষরিত হয়েছে।

একটি যৌথ ক্ষুদ্র উপগ্রহ প্রকল্পে সহযোগিতার লক্ষ্যে ভারতের জাতীয় মহাকাশ প্রচার ও অনুমোদন কেন্দ্র (ইন-স্পেস) ও মহাকাশ বিভাগ, ভারত প্রজাতন্ত্রের সরকার, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে আরেকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।

ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ (ডিএসসিসি), ওয়েলিংটন ও ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ (ডিএসসিএসসি) মিরপুরের মধ্যে কৌশলগত ও অপারেশনাল স্টাডিজের ক্ষেত্রে সামরিক শিক্ষা-সংক্রান্ত সহযোগিতার জন্য একটি সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষরিত হয়।

তিনটি নবায়নকৃত সমঝোতা স্মারক হলো- মৎস্য সহযোগিতা স্মারক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা স্মারক এবং স্বাস্থ্য ও ওষুধের সহযোগিতার ক্ষেত্রবিষয়ক সমঝোতা স্মারক।

এর আগে গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উষ্ণ আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা প্রদান করেন।

রাষ্ট্রপতি ভবনে একটি লাল গালিচা বিছিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নরেন্দ্র মোদি আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা জানান। এই সময় দুই দেশের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ৯টার দিকে (স্থানীয় সময়) রাষ্ট্রপতি ভবনে পৌঁছালে নরেন্দ্র মোদি তাঁকে অভ্যর্থনা জানান।

রাষ্ট্রপতির গার্ড রেজিমেন্টের একটি অশ্বারোহী দল রাষ্ট্রপতি ভবনের গেট থেকে প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি বহরকে বেষ্টন করে সংবর্ধনাস্থল পর্যন্ত নিয়ে যায়।

ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকস দল শেখ হাসিনাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। এই সময় ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। প্রধানমন্ত্রী গার্ড পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন।

এরপর ভারতের প্রধানমন্ত্রী প্রেজেন্টেশন লাইনে শেখ হাসিনার সঙ্গে তার মন্ত্রিসভার সহকর্মীদের পরিচয় করিয়ে দেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও তার সফরসঙ্গীদের মোদির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মুস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, রেলওয়ে সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবির, ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী, প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান, স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহসহ তাঁর সফরসঙ্গীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির আমন্ত্রণে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে নয়াদিল্লি এসে পৌঁছান।


বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা সংলাপ শুরু

দ্বিপক্ষীয় সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির আশা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা জোরদারে ১২তম বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা সংলাপ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই সংলাপ রাজধানী ঢাকার বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে চলবে।

২০১২ সাল থেকে দুই দেশের মধ্যে এই প্রতিরক্ষা সংলাপ হয়ে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় চলমান বৈঠকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক প্রতিনিধিদল অংশ নিচ্ছে।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই তথ্য জানানো হয়।

আইএসপিআর জানিয়েছে, ওই প্রতিরক্ষা সংলাপ দুই দেশের পারস্পরিক সামরিক সহযোগিতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়াও এই সংলাপে উভয় দেশের সামরিক সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় আলোচিত হবে। উল্লিখিত সংলাপ বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, দুর্যোগ মোকাবিলা, শান্তি রক্ষা কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ, পরিদর্শন, যৌথ অনুশীলন ও মহড়া, কর্মশালা ইত্যাদি ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে।

এই প্রতিরক্ষা সংলাপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, অপারেশনস ও পরিকল্পনা পরিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আলী হায়দার সিদ্দিকী। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সারাহ রুস। এ ছাড়া সংলাপে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের পাশাপাশি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডসহ বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নিচ্ছেন।

দুই দিনের এই প্রতিরক্ষা সংলাপের মাধ্যমে দুই দেশের সামরিক সম্পর্ক আরও উন্নত হবে এবং পারস্পরিক আস্থা ও বন্ধুত্ব আরও গভীর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।


শ্রমিক পাঠিয়ে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা লুট

* অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ * ৬০ রিক্রুটিং এজেন্সির ১২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত দুদকের
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মালয়েশিয়ার শ্রম বাজারে জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত অর্থের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি অর্থ আদায়ের মাধ্যমে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ৬০ রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক ও কর্মকর্তাসহ ১২৪ জনের বিরুদ্ধে পৃথক ৬০ মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

মামলায় ৬০ রিক্রুটিং এজেন্সির ১২৪ মালিকদের বিরুদ্ধে ২ লাখ ৬৭ হাজার ২৭৬ জনের কাছ থেকে ৪ হাজার ৫৪৫ কোটি ২০ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

অনুসন্ধান প্রতিবেদন সূত্রে জানা, মালয়েশিয়া রিক্রুটমেন্ট প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম, অতিরিক্ত অর্থ আদায় এবং অর্থপাচারের অভিযোগে ৬০টি ওভারসিজ কোম্পানির সত্ত্বাধিকারী, চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অভিযোগে বায়রার বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালনকালে তারা সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট গড়ে চুক্তিভঙ্গ এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে শ্রমিকদের কাছ থেকে সরকারের নির্ধারিত ফি’র কয়েকগুণ অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেছেন। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী একজন কর্মীর মালয়েশিয়া যাওয়ার ব্যয় ছিল ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা। কিন্তু অভিযোগ অনুযায়ী অভিযুক্ত ব্যক্তিরা রাজনৈতিক প্রভাব ও বায়রার অভ্যন্তরীণ ক্ষমতাচক্র ব্যবহার করে এই খরচকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। শ্রমিক বাছাই, অর্থসংক্রান্ত প্রক্রিয়া ও চুক্তিভিত্তিক শর্তাবলি উপেক্ষা করা হয়েছে। মামলাগুলোতে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১২০(বি), ১৬১, ১৬২, ১৬৩, ১৬৪, ১৬৫(ক), ৪২০ ও ৪০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

এর আগে ৪০টি ওভারসিজ কোম্পানির সত্ত্বাধিকারী, চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরিচালকসহ ১০৮ জনের বিরুদ্ধে ৩ হাজার ৪৩৮ কোটি ৯৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৪০টি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। যা বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে। সব মিলিয়ে ওই ঘটনায় ১০০টি পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে যার মধ্যে আসামি ২৩২ জন। আর আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ ৭ হাজার ৯৮৪ কোটি ১৫ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা।


আর কোনো নাগরিককে রাষ্ট্রের ভয়ে বাঁচতে হবে না : তারেক রহমান  

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপি প্রতিশোধের রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করছে, আমরা সমাধানের পথে বিশ্বাসী। আমরা এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, কোনো বাংলাদেশিকে রাষ্ট্রের ভয়ে বাঁচতে হবে না, তা সে সরকারের সমর্থক হোক বা বিরোধী। মানবাধিকার দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়, মানবাধিকারই মানুষের দৈনন্দিন বেঁচে থাকার মৌলিক শর্ত। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে তারেক রহমান এ কথা বলেন।

তারেক রহমান উল্লেখ করেন, আজ বাংলাদেশের প্রয়োজন রাজনীতির চেয়েও বড় কিছু- একটি ঐক্যবদ্ধ দেশ, যেখানে সবার জন্য মানবাধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে, যেখানে কথা বলার স্বাধীনতা থাকবে, বিরোধী মত যেখানে হুমকি না হয়ে বরং গণতন্ত্রের অংশ হবে। যেখানে ভিন্ন মতের কারণে কাউকে নিপীড়িত হতে হবে না বা গুম হয়ে যেতে হবে না।

স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, আমরা আবরার ফাহাদ, মুশতাক আহমেদ, ইলিয়াস আলী, সাজেদুল ইসলাম সুমন, সাগর-রুনি আর অসংখ্য শহীদের গল্প মনে রাখি। যেন ভবিষ্যতে এমন নিপীড়ন আর দায়মুক্তি আর কখনও ফিরে না আসে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি মারাত্মক ক্ষতি সহ্য করেছে, কিন্তু ভেঙে যায়নি। বরং সত্য, ন্যায়, জবাবদিহি, পুনর্মিলন আর আইনের শাসনে বিশ্বাস রেখে আরও দৃঢ় হয়েছে। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে প্রতিটি মানুষের কণ্ঠ, অধিকার ও জীবন মূল্যবান; যেখানে মানবাধিকার আমাদের ভবিষ্যতের ভিত্তি।

তারেক রহমান শুরু করেন, ‘১৬টা বছর ধরে বাংলাদেশ যেন একটা কালো মেঘের নিচে চাপা পড়ে ছিল। কেউ সেই অন্ধকারকে খুব তীব্রভাবে টের পেয়েছে, কেউ চুপচাপ বয়ে বেড়িয়েছে। কিন্তু যাদের রাজনৈতিক অবস্থান তখনকার পতিত সরকারের বিপরীতে ছিল, তাদের জন্য এই অন্ধকার ছিল নিত্যদিনের বাস্তবতা। রাতের বেলা দরজায় কড়া নাড়া, মিথ্যা মামলা, নির্যাতন, ভয়কে সংস্কৃতি বানিয়ে ফেলা, আর অসংখ্য পরিবার অপেক্ষা করেছে সেই প্রিয়জনদের জন্য, যারা আর কোনোদিন ঘরে ফিরে আসেনি। এই বোঝা বিএনপির চেয়ে বেশি আর কেউ বহন করেনি। বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, হেফাজতে মৃত্যু, মিথ্যা মামলা সব জায়গায় বিএনপির নেতাকর্মীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানেও সবচেয়ে বেশি রক্ত ঝরেছে বিএনপির ঘরেই।

কিন্তু অত্যাচারের শিকার শুধু বিএনপি ছিল না; ছাত্র, সাংবাদিক, লেখক, পথচারী, সাধারণ মানুষ– সবাই সেই ভয়ঙ্কর পরিবেশের ক্ষত বয়ে বেড়িয়েছে, ন্যূনতম মানবাধিকার হিসেবে বিবেচিত মর্যাদা, নিরাপত্তা, মত প্রকাশের অধিকারের মতো মৌলিক সব বিষয়গুলো ছিল হুমকির মুখে।

তিনি উল্লেখ করেন, এই বছরগুলোতে আমাকেও কথা বলার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। ২০১৫ সাল থেকে আমার কথা বলার অধিকার সম্পূর্ণভাবে কেড়ে নেওয়া হয়। দেশের কোনও পত্রিকা, টিভি বা সোশ্যাল মিডিয়া যেন আমার কোনও বক্তব্য প্রকাশ না করা হয়, এমন নির্দেশনা জারি ছিল। তবুও এই চাপিয়ে দেওয়া নীরবতার মধ্যেও আমি অধিকার, গণতন্ত্র আর মানুষের ন্যায্য দাবির পক্ষে লড়াই চালিয়ে গেছি, কারণ সত্যের স্পিরিটকে আদেশ দিয়ে থামানো যায় না।

তারেক রহমান লিখেন, এই পুরো অন্ধকার সময়টায় খালেদা জিয়া ছিলেন আমাদের ধৈর্য ও প্রতিরোধের সবচেয়ে বড় প্রতীক। মিথ্যা মামলা, কারাবাস, তাকে রাজনৈতিকভাবে নিঃশেষ করে দেওয়ার চেষ্টা এসবই পুরো দেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়া এক কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রতিফলন। তবুও তিনি তার গণতান্ত্রিক আদর্শ থেকে কখনও সরে যাননি।

কিন্তু ইতিহাসের একটা সত্য আছে কষ্ট মানুষকে সবসময় তিক্ত করে না। কখনও কখনও কষ্ট মানুষকে আরও মহান করে তোলে। দেশনেত্রী, আমার মা এটাই প্রমাণ করেছেন। তিনি শিখিয়েছেন, যে অন্যায় আমরা সহ্য করেছি, তা যেন আর কারও জীবনে না আসে। দেশকে বদলাতে হলে, ঘৃণার পথ নয়– ন্যায়, নৈতিকতা আর ক্ষমাশীলতার পথই ভবিষ্যৎ গড়ে, যোগ করেন তারেক রহমান।


আদায় হওয়া ভ্যাট অনেক সময় সরকারের কোষাগারে পৌঁছায় না : অর্থ উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজেস্ব প্রতিবেদক

দেশের ভ্যাট ব্যবস্থাকে আরও সহজ ও স্বচ্ছ করার ওপর জোর দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আদায় হওয়া ভ্যাটের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ অনেক সময় সরকারের কোষাগারে পৌঁছায় না।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত ‘ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ-২০২৫’ উপলক্ষে সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ভ্যাট ব্যবস্থা এমন হওয়া উচিত, যা সবার কাছে সহজবোধ্য। প্রক্রিয়া জটিল হলে কারচুপির সুযোগ বেড়ে যায়। ব্যবসায়ী বা ক্রেতা ভ্যাট পরিশোধ করলে সেটি যেন নির্ভুলভাবে কোষাগারে জমা হয়— এটাই সবার প্রত্যাশা। কিন্তু বাস্তবে অনেক সময় তা হয় না।

তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। ঋণ বা অনুদান নির্ভরতায় উন্নয়ন কার্যক্রম দীর্ঘমেয়াদে টেকসই হয় না। ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত না বাড়ালে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক খাতে প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহে চাপ সৃষ্টি হবে।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন এনবিআর সদস্য (মূসক বাস্তবায়ন ও আইটি) মো. আজিজুর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সদস্য (মূসক নিরীক্ষা) সৈয়দ মুসফিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফআইসিসিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আজমান, অর্থ মন্ত্রণালয় ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সংশ্লিষ্ট সচিবরা।

সভাপতির বক্তৃতায় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান ব্যবসাবান্ধব ভ্যাট ব্যবস্থা গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ভ্যাট হবে সহজ। ব্যবসায়ীরা শুধু বিক্রয়মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট দেবেন। আর কোনও জটিল আইন বা বিশাল বইয়ের প্রয়োজন হবে না। আমরা এমন সফটওয়্যার তৈরি করছি, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে হিসাব করে ভ্যাট আদায় সম্পন্ন করবে। কনসালটেন্ট রাখারও দরকার হবে না।

সেমিনারে ভ্যাট ব্যবস্থার সংস্কার, স্বচ্ছতা বাড়ানো এবং ব্যবসায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার বিষয়ে নানা প্রস্তাব উঠে আসে।


কূটনৈতিক পাসপোর্ট জমা দিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, জানালেন নির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। আজ বুধবার এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন। নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তিনি ইতিমধ্যে নিজের কূটনৈতিক পাসপোর্ট এবং সম্পদের বিবরণী জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে তার পদত্যাগের সময়সীমা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার বলা মানা। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বিষয়টি জানানো হবে।’

আসন্ন নির্বাচনে তিনি কোন দলের হয়ে বা কোন আসন থেকে লড়বেন, সে বিষয়টি এখনও খোলাসা করেননি। তবে তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, এটা নিশ্চিত। আসিফ মাহমুদ জানান, কোন আসন ও দল থেকে ভোট করবেন, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আরও ২-৩ দিন সময় লাগবে। এরপরই সব ধোঁয়াশা কেটে যাবে।

বিএনপি নাকি এনসিপি থেকে ঢাকা-১০ আসনে নির্বাচন করবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওই আসনে বিএনপি ইতিমধ্যে প্রার্থী দিয়েছে বলে তিনি জানেন। বাজারে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন গুঞ্জনের বিষয়ে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আসলে অনেক ধরনের কথাই ছড়ানো হচ্ছে, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত শিগগিরই জানানো হবে।


নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে সন্তুষ্ট রাষ্ট্রপতি, নির্বাচনে সহায়তার আশ্বাস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক
    রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির সাক্ষাৎ

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ঠিক আগ মুহূর্তে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে বঙ্গভবনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করা হয়। কমিশনের প্রস্তুতি জেনে রাষ্ট্রপতি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।

সিইসির নেতৃত্বে এই প্রতিনিধি দলে চারজন নির্বাচন কমিশনার ও ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে ইসি সচিব ব্রিফিংয়ে জানান, আলোচনায় ভোটার তালিকার ক্রম সংযোজন, রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন এবং প্রথমবারের মতো সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোট আয়োজনের বিষয়গুলো রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া এবারের নির্বাচনে ভোটগ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানোর সিদ্ধান্তের বিষয়টিও আলোচনায় স্থান পায়।

বঙ্গভবনে সাক্ষাৎ শেষে নির্বাচন কমিশন প্রতিনিধি দলটি আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ফিরে গেছে। সেখানে সিইসির সভাপতিত্বে কমিশনারদের নিয়ে বর্তমানে একটি বৈঠক চলছে। এদিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার লক্ষ্যে সিইসির ভাষণ রেকর্ড করার জন্য আজ বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতার কর্তৃপক্ষকে ইসিতে ডাকা হয়েছে। দীর্ঘদিনের রেওয়াজ অনুযায়ী, যেদিন রাষ্ট্রপতি সঙ্গে কমিশন সাক্ষাৎ করে এবং সিইসির ভাষণ রেকর্ড করা হয়, সেদিনই সাধারণত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ফলে আজই জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের মাধ্যমে নির্বাচনের চূড়ান্ত দিনক্ষণ ঘোষণা করা হতে পারে বলে জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে


নির্বাচন পাঁচ বছরের হলেও গণভোট শত বছরের জন্য: প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৫:৪২
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আখ্যায়িত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, নির্বাচন আগামী পাঁচ বছরের জন্য হলেও গণভোট শত বছরের জন্য। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা থেকে সারা দেশের উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের (ইউএনও) সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. ইউনূস গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী এই নির্বাচনকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার এক অনন্য সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ইতিহাস আমাদের নতুন করে যে সুযোগ দিয়েছে, তা অন্য প্রজন্ম পাবে না। এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে নতুন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব, অন্যথায় জাতি মুখ থুবড়ে পড়বে। বিগত আমলের নির্বাচনগুলোকে ‘প্রতারণা’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন অন্যান্য সাধারণ দায়িত্বের মতো নয়, বরং এটি একটি ঐতিহাসিক দায়িত্ব। এই নির্বাচন সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের মাধ্যমে স্মরণীয় করে রাখার আহ্বান জানান তিনি।

মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ‘ধাত্রী’র সঙ্গে তুলনা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ধাত্রী ভালো হলে জন্ম নেওয়া শিশুও ভালো হয়। সদ্য যোগদান করা ইউএনওদের প্রধান দায়িত্ব হলো একটি শান্তিপূর্ণ ও আনন্দমুখর নির্বাচন আয়োজন করা। তিনি কর্মকর্তাদের সৃজনশীল হওয়ার পাশাপাশি অপতথ্য ও গুজব প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেন। একইসঙ্গে নিজ নিজ এলাকার পোলিং স্টেশন পরিদর্শন এবং সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রস্তুতি গ্রহণের পরামর্শ দেন।

গণভোটের গুরুত্ব তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ভিত্তি স্থায়ীভাবে পাল্টে দেওয়া সম্ভব। ভোটাররা যেন কেন্দ্রে এসে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোটের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, সে বিষয়ে সচেতনতা তৈরির তাগিদ দেন তিনি। এছাড়া নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে বিশেষ গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, নারীরা যাতে নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।

শিগগিরই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে জানিয়ে তিনি কর্মকর্তাদের এখন থেকেই পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেন। ভিডিও কনফারেন্সে সব জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা অনলাইনে যুক্ত ছিলেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ, প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম ও জনপ্রশাসন সচিব মো. এহছানুল হকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।


ভারত ছেড়ে শেখ হাসিনার অন্য দেশে যাওয়ার তথ্য নেই: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত ছেড়ে তৃতীয় কোনো দেশে যাচ্ছেন কি না, সে বিষয়ে কূটনৈতিক চ্যানেলে কোনো তথ্য সরকারের কাছে নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

শেখ হাসিনার অবস্থান ও তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সংবাদমাধ্যমে তার তৃতীয় কোনো দেশে যাওয়ার গুঞ্জন শোনা গেলেও কূটনৈতিকভাবে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে বাংলাদেশের সরাসরি কিছু করার নেই। তবে সরকার চায় তিনি দেশে ফিরে আসুন। তাকে ফেরত আনার প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এ ক্ষেত্রে ভারতকেও রাজি হতে হবে অথবা তাদেরই চাইতে হবে তাকে ফেরত পাঠাতে। আমরা কেবল তাকে ফেরত আনার জন্য ভারতকে রাজি করানোর চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারি, এর বেশি কিছু বলার সুযোগ নেই।

দেশের মানবাধিকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন জানান, বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধে অন্তর্বর্তী সরকার শতভাগ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মানবাধিকার ইস্যুতে বিদেশি কোনো নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, র‍্যাব গত কয়েক মাসে তাদের কার্যক্রমে যথেষ্ট উন্নতি করেছে এবং মানবাধিকার রক্ষায় সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে। এছাড়া ডিজিএফআই বন্ধ করা হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিশ্বের সব দেশেই এ ধরনের গোয়েন্দা সংস্থা থাকে, তাই এটি হুট করে বন্ধ করা সহজ বা বাস্তবসম্মত নয়।

ভিসা জটিলতা ও বিদেশে মিশন খোলা প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ভুয়া নথিপত্র বা ফেক ডকুমেন্ট তৈরি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসা সমস্যার পূর্ণাঙ্গ সমাধান হবে না। শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রদানের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর এখতিয়ারভুক্ত। এছাড়া বিদেশে নতুন মিশন খোলার বিষয়টি সময়সাপেক্ষ এবং এর সঙ্গে আর্থিক সক্ষমতার বিষয়টিও জড়িত। অন্যদিকে, ভারতকে বাদ দিয়ে পাকিস্তান ও চীনকে নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন কোনো জোট গঠনের সম্ভাবনা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এর অগ্রগতি হতে পারে, তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এ বিষয়ে মন্তব্য করার মতো অবস্থা নেই।


বাগেরহাটের ৪টি সংসদীয় আসন বহাল রাখলেন আপিল বিভাগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাগেরহাট জেলার সংসদীয় আসন কমিয়ে তিনটি করার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্ত বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এর ফলে জেলাটিতে পূর্বের মতোই চারটি সংসদীয় আসন থাকছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে নির্বাচন কমিশনের গেজেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ১০ নভেম্বর হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেছিলেন। সেই রায়ে বাগেরহাটের চারটি আসন পুনর্বহাল করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়। হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন এবং গাজীপুর-৬ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী মো. সালাহ উদ্দিন সরকার আপিল বিভাগে আবেদন করেন। আজ উভয়পক্ষের শুনানি শেষে সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখলেন।

আদালতে আজ আপিল আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান। গাজীপুর-৬ আসনের প্রার্থীদের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট বদরুদ্দোজা বাদল, মুস্তাফিজুর রহমান খান ও বেলায়েত হোসেন। অন্যদিকে বাগেরহাটের রিটকারীদের পক্ষে আইনি লড়াই চালান সিনিয়র অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন।

দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। সীমানা বিন্যাস অনুযায়ী, চিতলমারী, মোল্লাহাট ও ফকিরহাট উপজেলা নিয়ে বাগেরহাট-১; সদর ও কচুয়া উপজেলা নিয়ে বাগেরহাট-২; রামপাল ও মোংলা উপজেলা নিয়ে বাগেরহাট-৩ এবং মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলা নিয়ে বাগেরহাট-৪ আসন গঠিত ছিল।

তবে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত সীমানার গেজেট প্রকাশ করে। ওই গেজেটে বাগেরহাটের একটি আসন কমিয়ে তিনটিতে নামিয়ে আনা হয় এবং বাগেরহাট-৪ আসনটি কেটে নিয়ে গাজীপুর-৬ আসন সৃষ্টি করা হয়।

কমিশনের এই সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বাগেরহাট প্রেসক্লাব, জেলা বিএনপি, জেলা জামায়াতে ইসলামী, জেলা আইনজীবী সমিতি, সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশন, জেলা ট্রাক ট্যাংকলরি কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতি এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে বাগেরহাট-১ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মো. শেখ মাসুদ রানা হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ১৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করেন এবং ১০ নভেম্বর রুল যথাযথ ঘোষণা করে বাগেরহাটের চারটি আসন ফিরিয়ে দেওয়ার রায় দেন। আপিল বিভাগের আজকের আদেশের ফলে সেই রায়ই চূড়ান্ত হলো।


মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: ঝালকাঠি থেকে সেই গৃহকর্মী আয়েশা গ্রেফতার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে চাঞ্চল্যকর মা ও মেয়েকে হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের একটি দল ঝালকাঠি অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান আজ বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় নির্মমভাবে খুন হন লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিয়া (১৫)। পুলিশ জানায়, হত্যাকারী হাতে গ্লাভস পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মা ও মেয়েকে আঘাত করে। নাফিসার গলায় একাধিক গভীর ক্ষত এবং লায়লার শরীরেও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার নিহতদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের পর ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ ঘাতক গৃহকর্মীর পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য শনাক্ত করে। ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার দিন সকাল ৭টার দিকে নাফিসার বাবা আজিজুল ইসলাম স্কুলের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন। এরপর সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বোরকা পরিহিত অবস্থায় লিফটে করে ওই ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেন গৃহকর্মী আয়েশা। হত্যাকাণ্ড শেষে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে তিনি নিহত নাফিসার স্কুল ড্রেস পরে, মুখে মাস্ক এবং কাঁধে স্কুলব্যাগ ঝুলিয়ে স্বাভাবিকভঙ্গিতে ভবন ত্যাগ করেন।

নিহত নাফিসার বাবা আজিজুল ইসলাম জানান, মাত্র চার দিন আগে ভবনের নিরাপত্তাকর্মীদের মাধ্যমে আয়েশাকে কাজে নেওয়া হয়েছিল। নিয়োগের সময় পরিচয়পত্র বা ফোন নম্বর চাইলে আয়েশা জানিয়েছিল, আগুনে পুড়ে তার বাবা-মা মারা গেছেন এবং সে নিজেও দগ্ধ হয়েছিল—এমন আবেগী গল্প শুনিয়ে সে তথ্য দেওয়া এড়িয়ে যায়। এছাড়া ঘটনার আগের দিন রোববার বাসার মূল দরজার চাবি হারিয়ে যাওয়া নিয়েও সন্দেহের সৃষ্টি হয়। ঘটনার দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আজিজুল ইসলাম বাসায় ফিরে স্ত্রী ও সন্তানের মরদেহ দেখতে পান। গ্রেফতারকৃত আয়েশার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।


রাজধানীতে গৃহকর্মী নিয়োগে সর্বোচ্চ সতর্কতার আহ্বান ডিএমপি কমিশনারের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে গৃহকর্মী বা কাজের লোক সেজে অপরাধ সংঘটনের প্রবণতা রোধে নগরবাসীকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত সোমবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় গৃহকর্মীর হাতে নৃশংস জোড়াখুনের ঘটনার প্রেক্ষিতে এই বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ বলছে, সামান্য অসতর্কতা অনেক সময় বড় ধরনের বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অতীতেও গৃহকর্মী পরিচয়ে বাসায় ঢুকে মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনা প্রতিরোধেই ডিএমপি কমিশনার নগরবাসীকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের অনুরোধ জানিয়েছেন।

গৃহকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে নাগরিকদের করণীয় সম্পর্কে স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে ডিএমপি। কমিশনার জানান, কাউকে কাজে নিয়োগ দেওয়ার আগে অবশ্যই তার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং অন্তত দুজন শনাক্তকারীর নাম ও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা সংগ্রহে রাখতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন, সচেতনতা ও সঠিক তথ্য সংরক্ষণই অপরাধ প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

এছাড়া সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে ভাড়াটিয়া নিবন্ধন ফরম যথাযথভাবে পূরণ করাসহ নাগরিকদের তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের কাজে পুলিশকে সহযোগিতা করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন ডিএমপি কমিশনার।


খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি, চিকিৎসকদের স্বস্তি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে অপরিবর্তিত রয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, প্রায় ৮০ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর দ্রুত সেরে না ওঠার ক্ষেত্রে বয়স একটি বড় বাধা। এছাড়া অতীতে কারাগারে থাকাকালীন দীর্ঘসময় সঠিক চিকিৎসা না পাওয়া এবং নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে তাঁর স্বাস্থ্যের কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হচ্ছে না। তবে চিকিৎসকদের জন্য স্বস্তির বিষয় হলো, তাঁর শারীরিক অবস্থার নতুন করে কোনো অবনতি ঘটছে না।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড এখনই তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার পক্ষে নয়। গত বৃহস্পতিবার বোর্ডের এক বৈঠকে তাঁকে লন্ডনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও, শুক্রবার শারীরিক অবস্থা দীর্ঘ ভ্রমণের উপযুক্ত না হওয়ায় সেই পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এভারকেয়ার হাসপাতালেই তাঁকে বিশ্বের সর্বাধুনিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। দেশী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পাশাপাশি যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত বোর্ড সার্বক্ষণিক তাঁর স্বাস্থ্যের তদারকি করছে। চিকিৎসকদের মতে, বিদেশে অনেক সময় জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও রিপোর্ট পেতে বিলম্ব হয়, যা দেশে দ্রুত করা সম্ভব হচ্ছে। তাই ঝুঁকি নিয়ে এখনই তাঁকে স্থানান্তর না করে দেশেই স্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে।

এদিকে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সার্বিক তদারকিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন তাঁর পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান। তিনি নিয়মিত মেডিক্যাল বোর্ডের বৈঠকে সশরীরে উপস্থিত থাকছেন এবং শাশুড়ির চিকিৎসার যাবতীয় বিষয় সমন্বয় করছেন। অন্যদিকে, কাতারের আমিরের সৌজন্যে একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মেডিক্যাল বোর্ড যখনই অনুমতি দেবে, তখনই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি তাঁকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঢাকায় পৌঁছাবে।

উল্লেখ্য, ৭৯ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার, ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের জটিলতায় ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর তাঁর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়। এরই মধ্যে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার তাঁকে রাষ্ট্রের ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ (ভিভিআইপি) মর্যাদা দিয়েছে এবং তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ)। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড ও বিদেশি বিশেষজ্ঞদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে বর্তমানে তাঁর চিকিৎসা চলছে।


সমসাময়িক ইস্যুতে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সমসাময়িক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলতে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় সচিবালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এক কর্মসূচির মাধ্যমে এই জরুরি বৈঠকের তথ্য নিশ্চিত করা হয়। যদিও সংবাদ সম্মেলনের কর্মসূচিতে নির্দিষ্ট কোনো এজেন্ডার কথা উল্লেখ করা হয়নি, তবে জানানো হয়েছে যে উপদেষ্টা সমসাময়িক পরিস্থিতি ও প্রাসঙ্গিক বিষয়াবলি নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন।

সম্প্রতি রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে আসিফ মাহমুদকে নিয়ে বেশ কিছু আলোচনা চলছে। বিশেষ করে আগামী নির্বাচনে তিনি কোন দল থেকে অংশ নেবেন এবং প্রার্থিতা ঘোষণার আগে বর্তমান উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করবেন কি না—এসব বিষয় নিয়ে জোর গুঞ্জন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব ধোঁয়াশা কাটাতে পারেন এবং নিজের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অবস্থান সম্পর্কে স্পষ্ট বক্তব্য তুলে ধরবেন।


banner close