ঢাকার প্রায় ৯৫ শতাংশ বাড়িঘর অনুমাদনহীন বলে জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান।
‘টেকসই শহর তৈরি: বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ ও বাধা’ শীর্ষক সেমিনারটি আয়োজন করে বিআইআইএসএস। সেমিনারে স্থপতি ইকবাল হাবিবের বরাত দিয়ে গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা শহরের প্রায় ৯৫ শতাংশ বাড়িঘর অনুমোদনবিহীন। এ অনুমোদনবিহীন বাড়িঘরগুলোকে যাতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অনুমোদনের আওতায় আনা যায়, এ জন্য একটি কমিটি আছে। এমন একটি কমিটি আছে, তা গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী হওয়ার আগে আমি জানতামই না।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকাই বাংলাদেশ নয়, ঢাকার বাইরেও বাংলাদেশ আছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা যারা ঢাকায় থাকি, তারা ঢাকার বাইরে বাংলাদেশ আছে, সেটা বুঝতে চাই না। এমনকি যারা গ্রামে থাকে তারাও মনে করে ঢাকায় চলে যাওয়া ভালো, ওটাই বাংলাদেশ।’
মন্ত্রী বলেন, ‘নগরায়নকে শুধু বিল্ডিং তোলা এবং কিছু মানুষের বসবাসের সুবিধা ও জীবন-জীবিকার সঙ্গে যুক্ত করলে চলবে না। নগরায়নের সঙ্গে এখন প্রকৃতির বিস্তৃতির কথাও খেয়াল রাখতে হবে। ইকো-ফ্রেন্ডলি একটি অবস্থান তৈরি করতে হবে।’
প্রকৃতিকে ধ্বংস করে দিয়ে নগরায়ন করা হচ্ছে মন্তব্য করে র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ‘নগরায়ন করতে গিয়ে প্রকৃতির কথা খেয়াল রাখা হচ্ছে না। নগরায়নের ক্ষেত্রে শুধু বিল্ডিং তুললেই হবে না, আরও অনেক কিছু দেখতে হবে। আমরা নগরায়নের নামে বুড়িগঙ্গাকে শেষ করে দিয়েছি। শুধু বুড়িগঙ্গা নয়, পুরো পানি ব্যবস্থাটাকেই আমরা ধ্বংস করে দিয়েছি। এটাকে কীভাবে উদ্ধার করা যায়, সেটাকেও নগরায়নের পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কথা চিন্তা করতে হবে।’
প্রতিদিন কৃষিজমি নগরায়নের ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা নগরায়ন করতে গিয়ে যত কৃষি জমি আছে, যত জলাশয় আছে, সব তো ধ্বংস করে দিয়েছি। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা খুবই কঠিন। তাই বলে বসে থাকলে চলবে না। আমাদের এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এ জন্য মহাপরিকল্পনা দরকার।’
গৃহায়নমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতি ধ্বংস না করে নগরায়ন করা সম্ভব, শুধু যারা কাজটি করবেন, তাদের মধ্যে দেশপ্রেম থাকতে হবে। তাদের এটা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতে হবে, দেশটা তার এবং তার ভবিষ্যৎ বংশধরদের। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মনমানসিকতা থাকতে হবে।
রাজনীতিবিদ ও আমলাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। এক জায়গা থেকে সব পরিকল্পনা হওয়া উচিত। সেটা না হলেও অন্তত সমন্বয় থাকা উচিত। আমাদের সবাইকে দেশপ্রেমের জায়গা থেকে বিষয়গুলো দেখা উচিত।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রকৃতি ধ্বংসের দায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা জাতীয় পার্টির ওপর চাপিয়ে দিলে হবে না। এ কাজটি আমরা সবাই মিলে করেছি। আমরা সবাই মিলে যে দুষ্কর্মটা করেছি, সেই দুষ্কর্ম থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমাদের চেষ্টা করতে হবে। নিজেদের দায়িত্বটা সঠিকভাবে পালন করতে হবে।’
বিআইআইএসএসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আবু বকর সিদ্দিক খানের স্বাগত বক্তব্যে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইআইএসএস-এর গবেষণা পরিচালক শেগুফতা হোসেন। এ ছাড়া বিআইআইএসএসের চেয়ারম্যান ও রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গওসোল আযম সরকারের সঞ্চালনায় সেমিনারে আলোচক হিসেবে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজের (সিইউএস) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, বিশ্বব্যাংকের নগর উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ঈশিতা আলম অবনী, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. খন্দকার শাব্বির আহমেদ।
রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় একটি বাড়িতে অস্ত্র ও বিস্ফোরক তৈরি সরঞ্জাম উদ্ধারের পর একটি বাড়ি ঘিরে রেখেছে সেনাবাহিনী। ওই বাড়িতে থাকা ‘ডক্টর ইংলিশ’ নামের একটি কোচিং সেন্টারে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি বাড়িটি ঘিরে রেখেছে সেনাবাহিনীর ৪০ ইস্ট বেঙ্গলির একটি দল।
অভিযানে সংশ্লিষ্ট সেনাবাহিনীর একটি সূত্রে জানা গেছে, ডক্টরস ইংলিশ নামের ওই প্রতিষ্ঠান থেকে দুটি বিদেশী এয়ার গান, একটি রিভালবার, একটি কার্তুজ, তিন বক্স ইয়ারগান শিশা, দেশীয় অস্ত্র, জিপিএস, ওয়াকিটকি, বাইনোকুলার, বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম, মাদকদ্রব্যসহ আরো বহু সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
তবে এখন পর্যন্ত ৪০ ইস্ট বেঙ্গলির কোনো কর্মকর্তা আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য নিশ্চিত করেনি।
এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গাজিউর রহমান বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযান সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি কোন তথ্য জানেন না। তবে তারা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলে বিস্তারিত জানানো হবে।
সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের আরাধ্য ভগবান শ্রী কৃষ্ণের জন্মতিথি ও শুভ জন্মাষ্টমী আজ। দেশের হিন্দু সম্প্রদায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করছেন।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাণী দিয়েছেন।
হিন্দু পুরাণ মতে, ভগবান শ্রী কৃষ্ণ ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে জন্মগ্রহণ করেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই শক্তিকে দমন করে মানবজাতির কল্যাণ এবং ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটেছিল। তাদের আরো বিশ্বাস, দুষ্টের দমন করতে এভাবেই যুগে-যুগে ভগবান মানুষের মধ্যে নেমে আসেন এবং সত্য ও সুন্দরকে প্রতিষ্ঠা করেন।
এ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি ও ইসকনসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে আজ সরকারি ছুটি। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনসহ বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলে সম্প্রচারিত হচ্ছে বিশেষ অনুষ্ঠান।
দিনটি উপলক্ষ্যে মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, সকাল ৮টায় দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় গীতাযজ্ঞ ও বিকেল ৩টায় ঐতিহাসিক জন্মাষ্টমী মিছিল ও রাতে শ্রীকৃষ্ণ পূজা।
ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে আয়োজিত গীতাযজ্ঞ পরিচালনা করবেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের শংকর মঠ ও মিশন। বিকেল ৩টায় পলাশীর মোড়ে ঐতিহাসিক কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিলের উদ্বোধন হবে। এই ঐতিহাসিক মিছিল আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। এছাড়াও নৌবাহিনী প্রধান এ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান এবং নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. মঈন খান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর এই ঐতিহাসিক মিছিল প্রতি বছরের মতোই জগন্নাথ হল, শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর, হাইকোর্ট মোড়, বঙ্গবাজার, গোলাপশাহ মাজার হয়ে পুরোনো ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কে গিয়ে শেষ হবে।
এদিকে পবিত্র জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে ১৯ আগস্ট মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় আয়োজিত হবে আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এবং অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন মজুমদার। সভাপতিত্ব করবেন মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব।
আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) এ উপলক্ষে (১৪ থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত) চার দিনব্যাপী ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্য রয়েছে শ্রীমদ্ভাগবত পাঠ, ভজন কীর্তন, ভোগ আরতি, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ধর্মীয় নাটক কীর্তন মেলা ।
সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ কিংবা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কোনো আগ্রহ নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল শুক্রবার মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা বার্নামার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান প্রধান উপদেষ্টা। সম্প্রতি মালয়েশিয়া সফরে গিয়ে বার্নামাকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেছেন, ‘না, আমি এমন লোক নই। আমার এমন কোনো সুযোগ নেই।’
প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন, সংস্কারের যে লক্ষ্য নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে সেটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া তার কাজ।
তিনি বলেন, ‘গত এক বছরে আমরা অনেকটা পথ এসেছি। এই আগস্টে আমরা আমাদের প্রথম বছর সম্পন্ন করেছি এবং আমরা অনেক কিছু অর্জন করেছি।’
ড. ইউনূস বলেন, তার অন্যতম বড় অর্জন হলো ঐকমত্য কমিশন গঠন করা। যেটি ১১টি সংস্কার কমিশনের ওপর ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে। ঐকমত্য কমিশন নির্বাচন সংক্রান্ত সংস্কার প্রতিবেদন এ মাসের শেষের দিকে দিতে পারে। যার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ব্যবস্থা গঠন করা যাবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এটির শেষ দিকে আসছি। সম্ভবত এ মাসের শেষ দিকে, আমরা ঐকমত্য কমিশনের প্রতিবেদন পাব।’
এই ঐকমত্য কমিশনকে রাজনৈতিক স্পর্শকাতর ও অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর থেকে সম্মতি আদায়েরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘রাজনৈতিক বিষয়ে, আপনার একটি ঐকমত্য প্রয়োজন। সংসদ এককক্ষ বিশিষ্ট নাকি দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট হবে— এটি নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে।’
দেশ এখন সঠিক পথে যাওয়ায় আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত বলেও জানান তিনি। আর এবারের নির্বাচনটি আগের তিনটি ‘মিথ্যা’ নির্বাচনের চেয়ে ভালো হবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘অনেক বছর পর প্রথমবারের মতো, জনগণ একটি নির্বাচন পাবে। কারণ আগের নির্বাচন গুলো ছিল ‘মিথ্যা’ নির্বাচন। কেউ ভোটকেন্দ্রে যায়নি। মানুষ জানে না ভোটকেন্দ্রে কি হয়েছে।’
যেসব লাখ লাখ ভোটার হাসিনার আমলে ভোট দিতে পারেননি তাদের জন্য এবারের নির্বাচনটি অনেক বড় হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে সিঙ্গাপুরভিত্তিক চ্যানেলনিউজএশিয়া (সিএনএ) টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের বিচার ও সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে বাংলাদেশে আবার পুরোনো সমস্যাগুলো ফিরে আসবে।
সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য, পরিষ্কার ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের কথাও বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর যেসব লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন, সেগুলো অর্জনের কাছাকাছি পৌঁছেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচন যদি বৈধ না হয়, তাহলে এর কোনো অর্থ নেই। আমার কাজ হলো এমন একটি গ্রহণযোগ্য, পরিষ্কার ও আনন্দদায়ক নির্বাচন নিশ্চিত করা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা প্রায় আমাদের লক্ষ্যের কাছে পৌঁছে গেছি। বহু বিষয় সংস্কার প্রয়োজন, কারণ যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা ছিল তা দুর্নীতিগ্রস্ত, অপব্যবহার ও অপপ্রয়োগে ভরা।
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আগস্টে হাসিনা প্রতিবেশী দেশ ভারতে পালিয়ে যান এবং তার অনুপস্থিতিতে বিচার শুরু হয়েছে। হাসিনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমনে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগও আনা হয়েছে। বাংলাদেশ তাকে ফেরত দেওয়ার জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করলেও দিল্লি সাড়া দেয়নি।
ইউনূস জানান, হাসিনা যেন বাংলাদেশ অস্থিতিশীল করার সুযোগ না পান, সে বিষয়ে ভারতের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। আমরা বলেছি, আপনারা তাকে রাখুন, আমাদের বিচার চলবে। কিন্তু তিনি যেন দেশকে অস্থিতিশীল করার কোনো সুযোগ না পান।
শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ছিল ঘনিষ্ঠ। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে আঞ্চলিক কূটনীতিতে ঢাকার অবস্থান কিছুটা বদলেছে বলে পর্যবেক্ষকদের মত। মার্চে ইউনূস বেইজিং সফর করে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন।
তিনি বলেন, আমাদের পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক আছে, ভারতের সঙ্গেও আমরা ভালো সম্পর্ক চাই। এটা শুধু চীনের জন্য নয়—ভারত বা অন্য যে কেউ এর সুযোগ নিতে পারে।
বিপ্লবের পর নেতৃত্বে আসা ৮৫ বছর বয়সী ইউনূস জানান, প্রথমে তিনি দায়িত্ব নিতে চাননি। কিন্তু ছাত্রনেতাদের অনুরোধ এবং জনগণের ত্যাগ তাকে রাজি করায়। নির্বাচন শেষে তিনি রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াবেন বলেও জানান।
শেষে তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ আর পথভ্রষ্ট হবে না। যুবসমাজ যেন ভোট দিয়ে তাদের স্বপ্ন ও প্রত্যাশা ব্যালট বাক্সে তুলে ধরে। আমি চাই, একটি ভালো সরকার আসুক এবং তা গণতান্ত্রিক নীতিমালা মেনে চলুক।
সিলেটের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া আরও ৪৫ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করেছে প্রশাসন। গতকাল শুক্রবার দিনভর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এসব পাথর জব্দ করা হয়।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) রাতেই জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেল এ তথ্য নিশ্চিত করে। এতে জানানো হয়, গত দুই দিনে মোট প্রায় ১ লাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধারকৃত পাথরের অর্ধেক ইতিমধ্যে সাদাপাথরে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাকিগুলো প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (গোপনীয় শাখা, মিডিয়া সেল) মো. মাসুদ রানা বলেন, শুক্রবার দিনভর কোম্পানীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়েছে। গত বুধবার মধ্যরাত থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত মোট প্রায় ১ লাখ ঘনফুট পাথর জব্দ হয়েছে। উদ্ধারকৃত পাথর পর্যায়ক্রমে সাদাপাথরে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
পাথর ব্যবসায়ীরা অভিনব কৌশলে এসব লুট হওয়া পাথর লুকিয়ে রাখছেন বলে জানা গেছে। শুক্রবার খবর পেয়ে জেলা প্রশাসন কোম্পানীগঞ্জের কলাবাড়ি এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় মাটিচাপা অবস্থায় বিপুল পরিমাণ পাথর উদ্ধার হয়।
এর মধ্যে সাত ট্রাক পাথর ইতোমধ্যে সাদাপাথর এলাকায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আরও আনুমানিক পাঁচ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়েছে, যা আজ শনিবার ফেরত পাঠানোর হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (রাজস্ব শাখা, জেলা ব্র্যান্ডিং ও পর্যটন সেল) মাহমুদ আশিক কবির।
এদিকে, গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং পর্যটন স্পট জিরো পয়েন্ট থেকে চুরি হওয়া পাথর উদ্ধারে উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে অভিযান শুরু করেছে।
পিয়াইন নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন স্থান থেকে বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে সাড়ে ৮ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা পাথর পূনরায় নদীতে প্রতিস্থাপনের লক্ষে জাফলং জিরো পয়েন্টে নৌকা দিয়ে ফেলা হয়েছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী বলেন, ‘জাফলংয়ের জিরো পয়েন্ট থেকে কিছু দুষ্কৃতকারী রাতের আধারে বৃষ্টির মধ্যে কিছু পাথর সরিয়ে ফেলছিল। আমরা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত পদক্ষেপ নিই। এরপর থেকে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ ও বিজিবির টহল অব্যাহত আছে। এরই ধারাবাহিকতায় সেখান থেকে যে পাথরগুলো সরানো হয়েছে আমরা সেই পাথরগুলো খুঁজে বের করে সাড়ে ৮ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করেছি।’
তবে পাথর লুটপাটের সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের এই অভিযান আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে।’
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারিতেই হবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। এমন কোনো শক্তি নেই নির্বাচন প্রতিহত করবে।
গতকাল শুক্রবার মাগুরায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মেহেদী হাসান রাব্বি ও আল আমিনের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রেস সচিব বলেন, ইতোমধ্যে নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত সব দপ্তর বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। আমরা একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চাই। আশা করছি সেটি সবার সহযোগিতায় সম্ভব হবে।
জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণ করে প্রেস সচিব বলেন, যারা জীবন দিয়ে আমাদের জন্য একটি স্বাধীন দেশ দিয়ে গেছে, তাদের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে দেশটাকে সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়তে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্ষাটা শুরু হয় জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। বর্ষাটা শেষ হলে দেখবেন পাড়া-মহল্লায় নির্বাচনের আমেজ নেমে এসেছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা ভোটের জন্য দুয়ারে দুয়ারে যাবেন। পাড়ায় পাড়ায় ভোটের অফিস হবে। এই ভোটের আমেজটা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে।
‘আমরা নিশ্চিত যে পুরো জাতি, কারও মনে যদি কোনো সন্দেহ থাকে সেই সন্দেহটুকু চলে যাবে। নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে এবং রোজার আগেই হবে।’
চব্বিশের জুলাই-আগস্টে মাগুরায় মোট ১০ জন শহীদ হয়েছেন জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, আওয়ামী লীগ-যুবলীগের খুনি বাহিনীর হাতে শহীদ হয়েছেন মেহেদী হাসান রাব্বি। উনি ছাত্রদলের স্থানীয় একজন নেতা ছিলেন। আমি তার কবরে গিয়েছিলাম। একই এলাকার আল আমিন ছোট ব্যবসা করতেন ঢাকায়, ওনাকেও গুলি করে মারা হয়েছে, ওনার কবর মাগুরার উপকণ্ঠে রয়েছে। সেখানেও গিয়েছিলাম ফুল দিতে। মাগুরা জেলায় মোট ১০ জন শহীদ আছেন। বাকি আটজন প্রত্যেকের কবরস্থানে যাব।
এই শহীদদের নতুন বাংলাদেশের নির্মাতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের আত্মদানের ফলে আমরা নতুন একটা দেশ পেয়েছি। আমরা আজকের এই দিনে সবাই মুখ ফুটে কথা বলতে পারছি। আমরা এখন পলিটিক্যাল সেটেলমেন্ট করছি। সামনে সুন্দর একটি নির্বাচন হবে। শহীদদের কারণে আমরা নতুন বাংলাদেশটা পেয়েছি।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার পাবনা–কুষ্টিয়া হাইওয়ে সড়কের বারোমাইল এলাকায় বন্ধুদের সঙ্গে মোটরসাইকেল রেসিং চলাকালে পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষে দুই কিশোর নিহত হয়েছে।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন—নাহিদ হোসেন (১৭), দৌলতপুর উপজেলার তাগুনিয়া সরদারপাড়া গ্রামের নিপুল হোসেনের ছেলে এবং তার বন্ধু সিয়াম হোসেন (১৬), একই উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের কুরবান আলীর ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুর্ঘটনার সময় প্রায় ১০টি মোটরসাইকেল লালন শাহ সেতু থেকে উচ্চগতিতে রেসিং করছিল। এসময় নাহিদ ও সিয়াম যে মোটরসাইকেলে ছিলেন, সেটি বারোমাইল এলাকার যাত্রীছাউনি সংলগ্ন ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশে একটি পিকআপ ভ্যানের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই নাহিদ মারা যান। গুরুতর আহত সিয়ামকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
কুষ্টিয়া হাইওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জয়দেব কুমার সরকার জানান, নিহত দুই কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রব তালুকদার বলেন, বিষয়টি হাইওয়ে পুলিশ দেখভাল করছে।
দেশের জ্বালানি পরিবহন খাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসছে। এই প্রথম চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় সরাসরি পাইপলাইনে জ্বালানি তেল পাঠানোর প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে তেল সরবরাহকালে জিরো সিস্টেম লস অর্জিত হওয়ার রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।
সফল প্রাক-কমিশনিংয়ের পর আজ শনিবার চট্টগ্রামের পতেঙ্গার গুপ্তাখালে পদ্মা অয়েল কোম্পানির ডেসপাস টার্মিনালে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত তেল পরিবহণে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) বার্ষিক খরচ হয় প্রায় ৩২৬ কোটি টাকা। একই পরিমাণ তেল পাইপলাইনে সরবরাহ করতে খরচ হবে কেবল ৯০ কোটি টাকা। এই হিসাবে বছরে অন্তত ২২৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। এছাড়া সিস্টেম লস এবং চুরি ঠেকানোর মাধ্যমেও কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। তবে কর্মকর্তা বলছেন বছরে সাশ্রয়ের পরিমাণ বেড়ে আড়াই হাজার কোটি টাকায় দাঁড়াবে।
বিপিসির বাস্তবায়নে এবং সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের নির্মাণে ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ ভূগর্ভস্থ পাইপলাইন চট্টগ্রাম থেকে ফেনী, কুমিল্লা, চাঁদপুর ও মুন্সীগঞ্জ হয়ে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত। পাইপলাইনটি ২২টি নদী ও খাল অতিক্রম করেছে এবং এর সঙ্গে নয়টি স্টেশন ও আধুনিক ডিপো নির্মিত হয়েছে।
সূত্র জানায়, আজ শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর থেকে এই পাইপলাইন ব্যবহার করে তিনটি তেল বিপণন কোম্পানি জ্বালানি তেল সরবরাহ করবে। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লার বরুড়া হয়ে জ্বালানি তেল যাবে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল এবং ঢাকার ফতুল্লায়।
কুমিল্লার বরুড়ায় স্থাপন করা হয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ অটোমেটেড ডিপো। এই ডিপো থেকে চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ সন্নিহিত অঞ্চলের প্রয়োজনীয় জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হবে। যা এখন নৌপথে চাঁদপুরে পাঠানো হয়ে থাকে।
এই ডিপোতে জ্বালানি তেল গ্রহণ এবং সরবরাহ সবকিছু নিয়ন্ত্রিত হবে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে। তেলের ওজন, তাপমাত্রা, সরবরাহ সবই পরিচালিত হবে কম্পিউটারাইজড প্রযুক্তিতে।
২০১৮ সালে ২ হাজার ৮৬১ কোটি টাকায় অনুমোদিত এ প্রকল্প করোনা পরিস্থিতিতে বিলম্বিত হয়ে চলতি বছরের মার্চে শেষ হয়েছে, বাড়তি খরচ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সূত্র জানায়, দেশের চাহিদার ৭০ লাখ টন জ্বালানির অন্তত ৩০ লাখ টন ব্যবহৃত হয় ঢাকা ও কুমিল্লা অঞ্চলে। এসব জ্বালানির বেশির ভাগ বেসরকারি অয়েল ট্যাংকারের মাধ্যমে নৌপথে পরিবাহিত হয়। এতে কোটি কোটি টাকার তেল চুরিসহ নানা ধরনের অনিয়ম ঘটে। ট্যাংকারে জ্বালানি তেল পরিবহণের ক্ষেত্রে শূন্য দশমিক ১৭ শতাংশ সিস্টেম লস বিপিসি মেনে নেয়। বছর শেষে এটা বিশাল অঙ্ক হয়ে দাঁড়ায়। সিস্টেম লস কিংবা তেল চুরির এই লোকসান থেকে জ্বালানি তেল সেক্টরকে বাঁচাতেই মূলত চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়।
পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রতি ঘণ্টায় ৩৫০ মেট্রিকটন এবং বছরে সর্বোচ্চ ৫ মিলিয়ন মেট্রিকটন তেল পরিবহন সম্ভব হবে। আগে নৌপথে ট্যাংকারে নিতে লাগতো ৪৮ ঘণ্টা, এখন লাগবে মাত্র ১২ ঘণ্টা। ফলে বিপিসির বার্ষিক পরিবহণ খরচ ৩২৬ কোটি টাকা থেকে নেমে আসবে মাত্র ৯০ কোটি টাকায়—সাশ্রয় হবে অন্তত ২২৬ কোটি টাকা। পাশাপাশি সিস্টেম লস ও চুরি প্রায় শূন্যে নেমে আসবে।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, যেখান থেকে পুরো পরিবহণ প্রক্রিয়া ও নিরাপত্তা ২৪ ঘণ্টা মনিটরিং হবে।
প্রকল্প পরিচালক মো. আমিনুল হক ইউএনবিকে জানিয়েছেন, পরীক্ষামূলকভাবে ইতোমধ্যে পাঁচ কোটি লিটার ডিজেল কোনো ক্ষতি ছাড়াই পরিবহণ সফল হয়েছে। তিনি বলেন, এখন রিজার্ভার থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ডিপোতে দ্রুত ও নিরাপদে তেল পৌঁছে দেওয়া যাবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন জ্বালানি সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এবং সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশনের প্রধান মেজর জেনারেল মুহাম্মদ হাসান উজ-জামান।
সূত্র: ইউএনবি
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘শুভ জন্মাষ্টমী’ উপলক্ষ্যে দেয়া বাণীতে বলেছেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রীতির এই বন্ধনকে অটুট রাখতে বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, সমাজে বিদ্যমান শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে সেজন্য সকলকে সজাগ থাকতে হবে।
শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে আজ শুক্রবার এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা এ সব কথা বলেছেন। তিনি এ সময় ‘শুভ জন্মাষ্টমী’ উপলক্ষ্যে দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বী সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ধর্মাবতার শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি ‘শুভ জন্মাষ্টমী’ হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। সমাজে সাম্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে শ্রীকৃষ্ণ আজীবন ন্যায়, মানবপ্রেম ও শান্তির বাণী প্রচার করেছেন। শ্রীকৃষ্ণ যেখানেই অন্যায়-অবিচার দেখেছেন, সেখানেই অপশক্তির হাত থেকে শুভশক্তিকে রক্ষার জন্য আবির্ভূত হয়েছেন।
তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতির অনন্য বৈশিষ্ট্য। আবহমানকাল থেকে এ দেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করবে বলে উল্লেখ করে তিনি সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ভরপুর বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে ফুলের তোড়া পাঠিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শুক্রবার বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন, আজ গণতন্ত্রের মা, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন। তিনি এ দিনটি উদযাপন করেন না, তবে দল থেকে সারাদেশে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা আজ বিকেলে ম্যাডামের (বেগম জিয়া) জন্য ফুলের তোড়া পাঠিয়েছেন। তাঁর কর্মকর্তারা এটি বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসভবনে পৌঁছে দেন।
বিকেল প্রায় ৪টায় প্রধান উপদেষ্টার একান্ত সচিব সজীব এম খায়রুল ইসলাম ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় গিয়ে তাঁর একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তারের হাতে ফুলের তোড়াটি হস্তান্তর করেন।
এ সময় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য বেলায়েত হোসেন, বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এবং চেয়ারপার্সনের ব্যক্তিগত উইংয়ের কর্মকর্তা মাসুদ রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে চীনের রাষ্ট্রদূতের কার্যালয় থেকেও বিএনপি চেয়ারপার্সনের জন্য জন্মদিনের ফুলের তোড়া পাঠানো হয়।
বেগম খালেদা জিয়া ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করেন। এ বছর তিনি ৮১ বছরে পা রেখেছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হবে, যারা বয়কটের চেষ্টা করবে তারা রাজনীতি থেকে মাইনাস হয়ে যাবে। গতকাল বৃহস্পতিবার গুলশানে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, 'আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে। যারা বিভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছে যে, দাবি পূরণ না হলে, সংস্কার পূর্ণাঙ্গ না হলে, বিচার পূর্ণাঙ্গ না হলে নির্বাচন হবে না, এগুলো মাঠের বক্তব্য।’
তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্ট করে তার ভাষণে বলেছেন যেসব সংস্কার প্রস্তাবে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেগুলো পরবর্তী নির্বাচিত জাতীয় সংসদে বাস্তবায়নের সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই প্রতিশ্রুতি আমরাও দিয়েছি যে, আমরা জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করব।’
‘এখন প্রশ্ন কারা নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে চায়, অথবা বিলম্ব হোক বা অনিশ্চিত হোক সে পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়। অথবা নির্বাচন না হোক সেটা চায়। জাতির সামনে তাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে, এটা বলা যায়,’ বলেন সালাহউদ্দিন।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘তাদের মধ্যে যেন এই রিয়ালাইজেশন আসে যে একটা গণতান্ত্রিকভাবে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অবাধ এবং বিশ্বাসযোগ্য একটা নির্বাচন অনুষ্ঠান ছাড়া এই জাতির সামনে আর কোনো বিকল্প নেই।’
‘রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে অনেকেই হয়তো সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবে তারা এসব বক্তব্য দিচ্ছে কিনা, এ প্রশ্নও বাজারে আছে। কিন্তু আমি মনে করি সেটা চাপের কোনো বিষয় নয়,’ যোগ করেন তিনি।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘আমরা দলের পক্ষ থেকে আমাদের নির্বাচনী কৌশল ইতোমধ্যে প্রকাশ করেছি। আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের সঙ্গেই জোট করব যাদের সঙ্গে আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল, যারা আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে চাই, জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি যেটা হয়েছে সেটাকে ধরে রাখতে চাই। তবে এখানে আমরা বলেছি যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আমাদের নির্বাচনে জোট হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।'
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমি নির্বাচন নিয়ে কোনো সংশয় দেখি না। যারা আগামী নির্বাচনকে বয়কট করার চেষ্টা করবে ডাইরেক্টলি বা ইনডাইরেক্টলি, তারা জাতীয় রাজনীতি থেকে মাইনাস হয়ে যাবে।’
‘বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘ ১৬-১৭ বছর সংগ্রাম করেছে, রক্ত দিয়েছে অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, তার মধ্যে এক নম্বর অধিকার ছিল ভোটের অধিকার ফিরে পায়। এখন সেই পরিবেশ নিশ্চিত হয়েছে। সেই ভোটের অধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে যেসব রাজনৈতিক দল নিরুৎসাহিত করবে, জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে। এ বিষয়ে আমি নিশ্চিত,’ বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আরো বলেন, গুলশানে চাঁদাবাজির ঘটনায় উপদেষ্টাদের কেউ জড়িত কি না, তা জনগণের সামনে তুলে ধরা দরকার। তদন্ত না হলে তাদের বিষয়ে আরও প্রশ্ন উঠবে। তিনি এই ঘটনার বিস্তারিত ও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানান।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করেন খালেদা জিয়া। চার বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ। বাবা এস্কান্দর মজুমদার ও মা বেগম তৈয়বা মজুমদার। পৈতৃক নিবাস ফেনীর ফুলগাজী হলেও খালেদা জিয়ার শৈশব-কৈশোর কেটেছে দিনাজপুরে, বাবার কর্মস্থলে।
চেয়ারপারসনের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শুক্রবার দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয় ও মসজিদে দোয়া মাহফিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। তবে নেতাকর্মীদের কেক কাটতে নিষেধ করা হয়েছে।
ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিএনপি এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সবপর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মিলাদ ও দোওয়া মাহফিলগুলোতে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
১৯৮১ সালের ৩০ মে স্বামী সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর গৃহবধূ থেকে রাজনীতিতে নাম লেখান খালেদা জিয়া। প্রথমে দলের ভাইস চেয়ারম্যান, ১৯৮৪ সালে দলের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন তিনি।
১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ এবং ১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ মেয়াদে তিন দফা বিএনপি সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন খালেদা জিয়া।
আগামী সপ্তাহে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী রোডম্যাপ নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমরা আশা করছি, আগামী সপ্তাহে নির্বাচনী রোডম্যাপ দিতে পারব। এতে আমাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পাবেন।’
আগামী সপ্তাহে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গেও নির্বাচন কমিশন আলোচনা করবে উল্লেখ করে ইসি সচিব জানান, পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধনের জন্য ৩১৮টি আবেদন পাওয়া গেছে, যা বর্তমানে পর্যালোচনাধীন।
রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের বিষয়ে তিনি বলেন, ২২টি রাজনৈতিক দলের আবেদন প্রাথমিকভাবে মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হবে প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাইয়ের জন্য। পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় রয়েছে যা নিয়মিতভাবে পর্যালোচনা ও আলোচনা করা হচ্ছে এবং এসব বিষয়ে ধাপে ধাপে গণমাধ্যমকে অবহিত করা হবে। প্রবাসী ভোটারদের ভোট দেওয়ার পদ্ধতি নিয়েও গতকাল বৃহস্পতিবার আলোচনা হয়েছে বলে জানান ইসি সচিব। এ বিষয়ে কোথায়, কোন পদ্ধতিতে এবং কত দিনের মধ্যে কার্যক্রম শেষ করতে হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তবে বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আলোচনার পর ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।
প্রতি সপ্তাহে অন্তত এক দিন বা দুদিন গণমাধ্যমের সঙ্গে তিনি এবং নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ (অব.) কথা বলবেন বলে সচিব জানান।
নির্বাচনী রোডম্যাপে কী কী থাকবে-এমন প্রশ্নের জবাবে আখতার আহমেদ বলেন, রোডম্যাপ প্রকাশের সময়ই তা জানানো হবে এবং এতে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ, গণমাধ্যমের সঙ্গে সংলাপ, আইন-বিধি সংশোধনসহ যাবতীয় তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
উল্লেখ্য, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। এর অংশ হিসেবে গত ৬ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠিয়ে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির রমজানের আগেই পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে বলেছে। এ চিঠির মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সরকারের অনুরোধের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে।
ধূমপান ও তামাকমুক্ত রেল পরিষেবা গড়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা রাখায় ২২ কর্মকর্তা/কর্মচারীকে পুরস্কৃত করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
বৃহষ্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর রেল ভবনে “বাংলাদেশ রেলওয়েকে তামাকমুক্ত করার উদ্যোগ” শীর্ষক প্রকল্পের উদ্যোগে এক বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এতে ধূমপান ও তামাকমুক্ত রেল পরিষেবা গড়ে তুলতে রেল স্টেশনে তামাক সচেতনতা ও প্রতিরোধ কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য আরএনবি ও জিআরপি (পুলিশ) এবং রেলওয়ের ২২ কর্মকর্তা/কর্মচারীকে সম্মাননা পদক ২০২৫ প্রদান করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে রেলওয়ে কর্মীদের উৎসাহিত করে দেশের সকল স্টেশন ও ট্রেনকে ধূমপান ও তামাকমুক্ত করার প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হবে বলে আয়োজকরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রাপ্তরা হলেন-
মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম মজুমদার, উপসচিব (বাজেট অধিশাখা), রেলপথ মন্ত্রণালয়; মোঃ জাকির হোসেন, পরিচালক ট্রাফিক (পরিবহণ), বাংলাদেশ রেলওয়ে; মোঃ আনসার আলী, উপ-পরিচালক (টিসি), বাংলাদেশ রেলওয়ে; গৌতম কুমার কুণ্ডু, বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (পাকশী), বাংলাদেশ রেলওয়ে; মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (লালমনিরহাট), বাংলাদেশ রেলওয়ে; ফারহান মাহমুদ, এডিসিও (চট্টগ্রাম), বাংলাদেশ রেলওয়ে; মোহাম্মদ আমিনুল হক, এসিও-১ (ঢাকা), বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে “বাংলাদেশ রেলওয়েকে তামাকমুক্ত করার উদ্যোগ” শীর্ষক প্রকল্পের বেজলাইন ও এন্ডলাইন সার্ভের তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন ও এর বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান আর্ক এর নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ ফাহিমুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মোঃ আফজাল হোসেন। এছাড়া রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা/কর্মচারীরা এতে অংশগ্রহণ করেন।
ধূমপান ও তামাকের ব্যবহার যাত্রীসেবার মানের ওপর যেসব নেতিবাচক প্রভাব ফেলে অনুষ্ঠানে তার বিস্তারিত আলোচনা করেন তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের অপব্যবহার রোধে ভূমিকা পালনকারী সাবেক ও বর্তমান সরকারী ও বেসরকারী কর্মকর্তারা। তাঁরা রেলওয়ের প্রতিটি স্টেশন, প্ল্যাটফর্ম এবং ট্রেনে ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানান। এ লক্ষ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, কঠোর নজরদারি এবং আইন প্রয়োগের পাশাপাশি যাত্রী ও কর্মীদের মধ্যে ইতিবাচক আচরণ গড়ে তোলার ওপর তাঁরা গুরুত্বারোপ করেন।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ ফাহিমুল ইসলাম প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, “রেলপথ জনগণের জন্য একটি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চায়। তাই ধূমপানমুক্ত পরিবেশ তৈরিতে আমরা কোনো ধরনের শৈথিল্য দেখাবো না।”
অনুষ্ঠানে সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও উপস্থিত অতিথিবৃন্দ ধূমপান ও তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।