শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
২১ ভাদ্র ১৪৩২
২০-২২টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সম্ভাবনা

প্রধানমন্ত্রী আজ চীন যাচ্ছেন 

ফাইল ছবি
আপডেটেড
৮ জুলাই, ২০২৪ ০০:০২
কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশিত
কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ৮ জুলাই, ২০২৪ ০০:০১

চার দিনের সরকারি সফরে আজ সোমবার চীন সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সফরে প্রায় ২০ থেকে ২২টি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হবে।

প্রধানমন্ত্রীর এই সফর বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে সম্পর্ককে ‘কৌশলগত অংশীদারত্ব’ থেকে ‘বিস্তৃত কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারত্ব’-এ উন্নীত করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

চীনের প্রিমিয়ার অব দ্য স্টেট কাউন্সিল লি শিয়াংয়ের আমন্ত্রণে ৮ থেকে ১১ জুলাই এ সফরকালে প্রধানমন্ত্রী চীনের প্রেসিডেন্ট, প্রিমিয়ার অব দ্য স্টেট কাউন্সিল, সিপিপিসিসির জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

গতকাল রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের পর্দা উন্মোচন সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এ তথ্য জানান।

চীন থেকে বাজেট সহায়তা নেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বাজেট সহায়তা নয় বরং চীনের সঙ্গে ব্যবসা ও অর্থনৈতিক খাতে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ সহযোগিতার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে।

চীনকে বাংলাদেশ অফশোর ব্যাংকিংয়ের প্রস্তাব দেবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, অফশোর ব্যাংকিং ইজ ওপেন ফর অল। যেকোনো দেশ যদি চায়, আমাদের সেন্ট্রাল ব্যাংকে চাইলে টাকা রাখতে পারে। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ব্যাংকে অনেক দেশ টাকা রাখতে পারে। তবে অফশোর ব্যাংকিং কিছুটা ভিন্ন বিষয়।

মোংলা বন্দর উন্নয়নের বিষয়ে চীনের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছিল, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব চীনকে দেওয়া হবে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মোংলা বন্দর উন্নয়নের বিষয়ে চীনের সঙ্গে আমরা আলাপ-আলোচনার মধ্যে আছি। এই সফরে আশা করছি বিষয়টা নিয়ে আলোচনা হবে।

দুই দেশের বাণিজ্য ভারসাম্য নিয়ে প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীনের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে। দেশটি থেকে আমরা আমদানি করছি বেশি, রপ্তানি কম হয়। আমাদের পণ্য রপ্তানি বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

সফরের বিস্তারিত জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার সকাল ১১টায় বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটযোগে বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন এবং একই দিন চীনের স্থানীয় সময় বিকেল ৬টায় বেইজিং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনারসহ যথাযথ অভ্যর্থনা জানানো হবে।

অর্থমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্র সচিব, অন্যান্য সচিববৃন্দসহ উচ্চপর্যায়ের সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হচ্ছেন।

মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিন লিকুনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এরপর তিনি সাংগ্রিলা সার্কেলে অনুষ্ঠেয় ‘সামিট অন ট্রেড, বিজনেস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজ বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড চায়না’ শীর্ষক সম্মেলনে অংশ নেবেন। বাংলাদেশের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল সম্মেলনে যোগ দেবে।

সেদিন দুপুরে প্রধানমন্ত্রী চাইনিজ পিপল’স পলিটিক্যাল কনসাল্টেটিভ কনফারেন্সের (সিপিপিসিসি) ১৪তম জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াং হুনিং-এর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক এবং বিকেলে ঐতিহ্যবাহী তিয়েনআনমেন স্কয়ারে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করবেন। রাতে তিনি বেইজিংস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন।

১০ জুলাই সফরের তৃতীয় দিনে প্রধানমন্ত্রী গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ উপস্থিত হলে তার সম্মানে আয়োজিত অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান শেষে চীনের প্রিমিয়ার অব দ্য স্টেট কাউন্সিল লি শিয়াংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলসহ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন। এরপর দুই দেশের সরকারপ্রধানের উপস্থিতিতে প্রায় ২০ থেকে ২২টির মতো সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধনের ঘোষণার কথা রয়েছে।

সমঝোতা স্মারক নিয়ে ড. হাছান জানান, অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং খাত, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, ডিজিটাল ইকোনমি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি খাতে সহায়তা, ষষ্ঠ ও ৯ম বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ ব্রিজ নির্মাণ, বাংলাদেশ থেকে কৃষিপণ্য রপ্তানি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পিপল টু পিপল কানেকটিভিটি প্রভৃতি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে গ্রেট হলে আয়োজিত ব্যংকুয়েটে এসব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে।

বুধবার ১০ জুলাই বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর উপলক্ষে বাংলাদেশ ও চীন একটি যৌথ বিবৃতি দেবে।

১১ জুলাই বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী চীন ত্যাগ করে দুপুর ২টায় ঢাকা অবতরণের কথা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-চীন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সূচনা হয়েছিল স্বাধীনতারও পূর্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৫২ সালে ঐতিহাসিক চীন সফরের মাধ্যমে। সে সময় চীনের তৎকালীন নেতা মাও সেতুংয়ের সঙ্গে জাতির পিতার সাক্ষাৎ হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে বঙ্গবন্ধু ‘আমার দেখা নয়াচীন’ বইটি রচনা করেন। চীন ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে, যার ধারাবাহিকতায় দুই দেশ পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে উন্নয়নের পথে অগ্রসরমান।

২০১৬ সালে শি চিন পিংয়ের ঢাকা সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক কৌশলগত সহযোগিতার অংশীদারত্বে উন্নীত হয়। বিগত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর শেখ হাসিনাকে চীনের পক্ষ হতে সরকারি সফরের জন্য আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানানো হয়। চীন বাংলাদেশের অবকাঠামোগত এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী হিসেবে কাজ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য, আর্থিক সহায়তা এবং বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশ চীনের সহায়তা কামনা করবে। একই সঙ্গে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে চীনের বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ চীনের প্রতি সমর্থন প্রদান করে যাবে। চীনে প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন এ সফর সফল এবং ফলপ্রসূ হবে বলে আমরা আশাবাদী।


আগামী ১মাসের ভেতর আলুর দাম কিছুটা বাড়তে পারে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জয়পুরহাট প্রতিনিধি

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে সরকারি সফর করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। শুক্রবার তাকে বহনকারী হেলিকপ্টার উপজেলার গোপীনাথপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে। হেলিকপ্টার থেকে নামার পর জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। সেখানে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আগামী এক মাসের ভেতর আলুর দাম কিছুটা বাড়তে পারে। আমরা আলু রপ্তানীতে প্রণোদনা দিচ্ছি এবং রপ্তানিতে সহযোগিতা করছি। চাহিদা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।

গোপীনাথপুর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে বগুড়ার দুঁপচাচিয়া উপজেলার মর্তুজাপুর গ্রামে গিয়ে উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জুম্মার নামাজ আদায়ের পর তার শ্বশুর মরহুম আব্দুর রাজ্জাক আকন্দের কবর জিয়ারত করেন।

বাণিজ্য উপদেষ্টাককে ও হেলিকপ্টার দেখতে উৎসুক লোকজনের ভিড়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসছেন এমন খবর গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানাজানি হয়।

সরকারি সফরসূচি অনুযায়ী, বাণিজ্য উপদেষ্টার হেলিকপ্টার শুক্রবার সকাল ১১ টায় গোপীনাথপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে। সকাল থেকে প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত হন। সকাল ১০টার আগেই গণমাধ্যম কর্মীরাও গোপীনাথপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আসেন। তখন থেকেই উৎসুক জনতা গোপীনাথপুর উচ্চবিদ্যালয়ের দুটি ফটকে বাণিজ্য উপদেষ্টা ও হেলিকপ্টার দেখতে ভিড় করছিলেন। তবে দেড় ঘন্টা বিলম্বে দুপুর পৌঁনে একটার দিকে উপদেষ্টাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে।

গোপীনাথপুর এলাকার আবু রায়হান তার দুই বছরের নাতিকে কাঁধে নিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টাকে ও হেলিকপ্টার দেখতে আসেন। তিনি বলেন, আমার নাতি হেলিকপ্টার দেখার বয়না ধরেছে। নাতিকে কাঁধে নিয়ে হেলিকপ্টার দেখতে এসেছি। বাণিজ্য উপদেষ্টা গোপীনাথপুরে এসেছেন। গোপীনাথপুরের বাসিন্দা হিসেবে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। আগে কখনও সরকারের কোনা মন্ত্রী গোপীনাথপুরের এসেছিল কি না তা জানি না।


মৎস্য খাতে দেশের বিজ্ঞানীদের অবদান গর্ব করার মতো: মৎস্য উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মৎস্য খাতে এ দেশের বিজ্ঞানীদের অবদান গর্ব করার মতো। তাই মৎস্য সম্পদ রক্ষায় গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।

শুক্রবার সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী তৃতীয় ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ফর সাসটেইনেবল ফিশারিজ (আইসিএসএফ)-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন উপদেষ্টা। টেকসই মৎস্য ব্যবস্থাপনা ও গবেষণার উন্নয়ন, উদ্ভাবনী প্রযুক্তি বিনিময় এবং অংশীজনদের মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, অতিরিক্ত মাছ শিকার এবং অবৈধ জাল যেমন চায়না জাল ও ট্রল ডোর ব্যবহার করে মাছ শিকার অত্যন্ত দুঃখজনক। এতে মাছের ক্ষতি হচ্ছে এবং ভবিষ্যতের কথা কেউ ভাবছে না।

মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, শীতকালে কৃষিকাজে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে বর্ষা মৌসুমে সেই বিষ পানিতে মিশে মাছের ক্ষতি করছে। কীভাবে কৃষিতে বালাইনাশকের ব্যবহার কমিয়ে উৎপাদন বাড়ানো যায় এবং মৎস্যসম্পদ রক্ষা করা যায় সে লক্ষ্যে কৃষি খাতে বালাইনাশক ব্যবহার সীমিত করতে ইতোমধ্যে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ইলিশের প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, চলতি বছর ইলিশ আহরণের পরিমাণ কমে যাওয়ায় বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, বৃষ্টি সময়মতো না হওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন, দূষণ এবং নদীর নাব্যতা হ্রাসসহ নানা কারণে ইলিশ আহরণ কমে গেছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে মিঠা পানির মাছচাষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ ও মানসম্মত খাদ্য নিশ্চিত করতে মিঠা পানির মাছের চাষ বাড়াতে হবে। তাই মাছের বৈচিত্র রক্ষা এবং হাওড়, নদীসহ প্রজনন ক্ষেত্রগুলো সংরক্ষণে জোর দিতে হবে।

হাওড়ের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হাওড়ে অপরিকল্পিত সড়ক বা অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করা যাবে না। হাওড় গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটকে সমন্বয় করে কীভাবে হাওড় রক্ষা করা যায়, সে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

সম্মেলনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম। মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নির্মল চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র, পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এটিএম মাহবুব-ই-এলাহি, কোয়ালিটি ফিডস লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম কায়সার রহমান।

সম্মেলনের মূল প্রবন্ধ স্পিকার হিসেবে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল ওয়াহাব। তিন দিনব্যাপী ওই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ১১টি সেশনে প্রায় আড়াই শতাধিক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে।


দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে চিকিৎসকদের ‘মানবিক’ হতে হবে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে চিকিৎসকদের ‘মানবিক চিকিৎসক’ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, চিকিৎসকদের সবসময় রোগীদের প্রতি মানবিক ব্যবহার এবং তাদের সেবার মাধ্যমে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হবে।

শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদে মা ও শিশু হাসপাতাল পরিদর্শন করতে এসে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। মা ও শিশু হাসপাতালের কনফারেন্স কক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

নূরজাহান বেগম বলেন, ঢাকায় সবক্ষেত্রে বিশেষ বিশেষ হাসপাতাল থাকলেও চট্টগ্রামে জনসাধারণের তুলনায় তা খুবই অপ্রতুল। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল এবং চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতালের মাধ্যমে সরকারিভাবে চিকিৎসা সেবা দেয়া হলেও এখানকার জনসাধারণের তুলনায় তা খুব কম। তার ওপর সরকারি হাসপাতালগুলোতে যন্ত্রপাতির সংকট এবং বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার কারণে ঠিকমতো চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হতো না। বর্তমান সরকার দায়িত্বে নেওয়ার পর এসব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

জাপানে সামনে ১ হাজার দক্ষ নার্স পাঠানো হবে জানিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাপান সফরে গিয়ে যে ১লাখ দক্ষ জনবল নেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন জাপান সরকারকে, তারই ধারাবাহিকতায় জাপানে সামনে ১ হাজার দক্ষ নার্স পাঠানো হবে। আমাদের বাইরে নানা ক্ষেত্রে দক্ষ এবং প্রশিক্ষিত জনবল পাঠানোর সুযোগ থাকলেও নানা অব্যবস্থাপনা, দক্ষতা এবং প্রশিক্ষণের অভাবে আমরা তা পারছি না।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, সারাদেশে সরকারিভাবে আমাদের ১০হাজার চিকিৎসক এবং ১২হাজার নার্সের সংকট রয়েছে। সে সংকট কাটানোর লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে ৩হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছে, সামনে আরও ২হাজার নিয়োগ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। নার্সের সংকট নিরসনে সাড়ে ৩ হাজার নার্স নিয়োগ করা হবে।

উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম বলেন, সরকার সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে ক্যান্সার এবং হার্টের রিং এর দাম কমিয়েছে। সামনে তিনশ’ ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে। ডেঙ্গুর কিটের দাম সরকারিভাবে ৩৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সারাদেশে উপজেলা হাসপাতালগুলোতে বিষধর সাপের কামড়ের রোগীদের জন্য এনটিভেনম সরবরাহ করা হচ্ছে। চিকিৎসা খাতের সংকট দূর করার জন্য আরও ৩৫০কোটি টাকার বিভিন্ন সরঞ্জাম এবং ওষুধ আমদানি করা হবে।

মা ও শিশু হাসপাতালের সভাপতি সৈয়দ মো. মোরশেদ হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. শেখ ফজলে রাব্বী, চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গভর্নিং বডির সদস্য ড. মনজুরুল ইসলাম, মা ও শিশু হাসপাতালের সহসভাপতি আবদুল মান্নান রানা, ডা. কামরুন্নাহার দস্তগীর, যুগ্ম সম্পাদক জাহিদ হাসান, মো. সগীর, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. রেজাউল করিম প্রমুখ।


জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের জন্য দেড় লাখ পুলিশকে বিশেষ প্রশিক্ষণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরাপদ করতে দেড় লাখের বেশি পুলিশ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আজ (শুক্রবার) সরকারি কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।

পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) কাজী জিয়া উদ্দিন বাসস’কে বলেন, ‘একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করতে আমরা দেড় লাখ বা তারও বেশি পুলিশ সদস্যকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রশিক্ষণ দেব।’

পুলিশ সদর দফতরের মানবসম্পদ (এইচআর) উন্নয়ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন আশা করেছেন, আসন্ন নির্বাচন দেশের ইতিহাসে ‘মাইলফলক’ হয়ে থাকবে।

তিনি আরও জানান, তার বিভাগ গত তিন মাসে নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও আইনজীবীদের পরামর্শ নিয়ে নয়টি প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি করেছে।

জিয়া উদ্দিন বলেন, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও অতিরিক্ত আইজিপি (এইচআর)-এর নেতৃত্বে তৈরি প্রশিক্ষণ কোর্সটি ‘দারুণ’।

তিনি আশা করছেন, কোর্সটি নির্বাচনের সময় যেকোনো ধরনের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সফলভাবে মোকাবিলা করতে পুলিশ সদস্যদের প্রস্তুত করবে।

বাংলাদেশ পুলিশের দেশজুড়ে ১৩০টি ছোট ও চারটি বড় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। এসব কেন্দ্রেই নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

জিয়া উদ্দিন জানান, নির্বাচনী প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে তারা দুটি প্রামাণ্যচিত্র, একটি ১৫ মিনিটের অডিও-ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট এবং একটি ৯ মিনিটের ফিল্মের পাশাপাশি একটি বুকলেটও তৈরি করেছেন।

তিনি আরও বলেন, গত ৩১ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকার পুলিশ সদর দফতরে মডিউল অনুযায়ী ১৫০ জন মাস্টার ট্রেইনারকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আগামীতে দেশের ১৯টি পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ১,২৯২ জন মাস্টার ট্রেইনার বা ‘ট্রেইনার অব ট্রেইনার্স (টিওটি)’ তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে।

এরাই পরবর্তীতে নির্বাচনের দায়িত্ব পালনের জন্য দেড় লাখেরও বেশি পুলিশ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেবেন।

পুলিশ সদর দফতরের এই কর্মকর্তা বলেন, নির্বাচনের সময় সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য বাস্তবমুখী মহড়া প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে সব ট্রেইনারকে। নির্বাচনকালীন সর্বাত্মক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই কার্যক্রমগুলো পরিচালিত হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

ডিআইজি জিয়া জানান, প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষ্যে চলতি সপ্তাহের শেষে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে পুলিশ সদর দফতর।


ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী শান্তিপূর্ণ উদযাপনে ব্যাপক নিরাপত্তা পরিকল্পনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) শান্তিপূর্ণভাবে পালনের লক্ষ্যে সরকার সারাদেশে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

আগামীকাল (শনিবার) দিবসটি উপলক্ষে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা ও রাজশাহীর মত প্রধান শহরগুলিতে সুষ্ঠু ও নিরাপদে জামাত ও শোভাযাত্রা নিশ্চিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। বিশেষত বৃহৎ মসজিদ ও ধর্মীয় স্থানে, যেখানে বড় সমাবেশের সম্ভাবনা রয়েছে সেখানে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলেছেন। ইতোমধ্যে সংবেদনশীল স্থানগুলোতে নজরদারি ও টহল জোরদার করা হয়েছে।

অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে কার্যকর জনসমাগম ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে ভক্ত-অনুরাগীদের নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করতে যথাযথ ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে।

ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী মুসলিম বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী হিসেবে দিনটি পালন করা হয়।

আগামীকাল সারা দেশে যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদায় দিবসটি পালন করা হবে।

পবিত্র দিনটি উপলক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা) সহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

মানবজাতির জন্য শান্তির বার্তা ও আল্লাহর অসীম রহমত নিয়ে ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে হিজরি ক্যালেন্ডারের রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেন। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে একই দিনে তিনি ইন্তেকালও করেন।


প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কের সাক্ষাৎ, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি

বৃহস্পতিবার যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস। ছবি : প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক
আপডেটেড ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০০:৪৭
বাসস

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস বৃহস্পতিবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

সাক্ষাৎকালে লুইস জাতিসংঘ এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মধ্যে জোরালো সহযোগিতার প্রশংসা করেন। তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকার এবং চলমান সংস্কার কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

আলোচনার মূল বিষয় ছিল আসন্ন জাতীয় নির্বাচন। জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়ক ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে সংস্থাটির চলমান সহায়তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

লুইস বলেন, ‘জাতিসংঘ সম্পূর্ণভাবে ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পক্ষে। এটি দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

সাক্ষাৎকালে তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য জাতিসংঘ কীভাবে সহায়তা করতে পারে তা নিয়েও আলোচনা করেন।

দুই পক্ষই সরকারের উচ্চাকাঙ্ক্ষী সংস্কার উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে জাতিসংঘের সম্প্রসারিত সহায়তার উপায় খুঁজে দেখেন।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আসন্ন সভা এবং এই মাসের শেষ দিকে রোহিঙ্গা সম্মেলনের প্রস্তুতিও পর্যালোচনা করা হয়। উভয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা কমে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা তহবিলের ঘাটতি মোকাবিলা এবং রোহিঙ্গা জনগণের জন্য টেকসই আন্তর্জাতিক সংহতি ও বাড়তি সমর্থনের জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

লুইস বাংলাদেশের সংস্কার ও রূপান্তর প্রক্রিয়ার প্রতি জাতিসংঘের অটল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং দেশের টেকসই উন্নয়ন ও দীর্ঘমেয়াদি সমৃদ্ধি অর্জনে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।


মৎস্য অধিদপ্তরের প্রাঙ্গণ শতভাগ তামাকমুক্ত রাখতে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

অধূমপায়ীদের সুরক্ষা এবং তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় মৎস্য অধিদপ্তরের অফিস প্রাঙ্গণ শতভাগ তামাকমুক্ত রাখার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে তামাক বিরোধী সংগঠন তাবিনাজ (তামাক বিরোধী নারী জোট)। সভাটি আজ বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আব্দুর রউফ। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিচালক (প্রশাসন), পরিচালক (অভ্যন্তরীণ মৎস্য), প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, উপপরিচালক, সিনিয়র সহকারী পরিচালক, সহকারী পরিচালক ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাসহ প্রায় ৪০ জন কর্মকর্তা।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আতাউর রহমান মাসুদ। তিনি তামাকজাত দ্রব্যের ভয়াবহ ক্ষতিকর দিক এবং এর বহুমুখী প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তাবিনাজের পরিচালক সীমা দাস সীমু তার বক্তব্যে ধোঁয়ামুক্ত ও ধোঁয়াযুক্ত তামাকজাত দ্রব্য এবং গবেষণালব্ধ তথ্য তুলে ধরেন। তাবিনাজ কর্মী শারমিন কবীর বীণা গ্রামীণ তামাক চাষ ও এর ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোকপাত করেন।

উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা অফিস প্রাঙ্গণ শতভাগ তামাকমুক্ত রাখতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ ও কর্মপরিকল্পনা দেন।

সুপারিশসমূহ:
১. অফিস প্রাঙ্গণে ধূমপানের জন্য কোনো স্মোকিং জোন থাকবে না।
২. ক্যান্টিনে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হবে।
৩. দেশব্যাপী মৎস্য অধিদপ্তরের সকল অফিস প্রাঙ্গণকে শতভাগ তামাকমুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
৪. সকল অফিস প্রাঙ্গণে ‘তামাকমুক্ত এলাকা’ লেখা সম্বলিত সাইনেজ প্রতিস্থাপন করা হবে।
সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা তামাকমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার প্রয়াসে সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস প্রদান করেন।


উপদেষ্টা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।


ইউরোপে পাড়ি দিতে গিয়ে ভূমধ্যসাগরে বাংলাদেশির মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

উত্তর আফ্রিকার উপকূল থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি পৌঁছনোর চেষ্টারত এক বাংলাদেশি মারা গেছেন। সাগর পাড়ি দিতে যে নৌকায় তিনি চড়ে বসেছিলেন, সেটি লাম্পেদুসা পর্যন্ত পৌঁছলেও ওই বাংলাদেশি পৌঁছেছেন প্রাণহীন দেহে। যাত্রাপথেই তার মৃত্যু হয়েছে। তার নাম-পরিচয় এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

ইতালির লাম্পেদুসা উপকূলে পৌঁছনো ১০ মিটার দীর্ঘ একটি নৌকা থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করেন দেশটির কোস্ট গার্ড ও ফিন্যানশিয়াল পুলিশের সদস্যরা। ওই নৌকায় থাকা আরও ৫১ জন অভিবাসীকেও উদ্ধার করা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষের ধারণা, সম্ভবত অভিবাসীবাহী নৌকাটির হাইড্রোকার্বন বা জ্বালানির বিষাক্ত ধোঁয়ায় নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি কালা পিসানার মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন এলেই তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

যেসব অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়েছে তাদের মধ্যে আছে মিসরীয়, বাংলাদেশি, ইরিত্রীয়, ইথিওপীয়, সিরীয় ও সুদানের নাগরিকরা। এদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন অপ্রাপ্তবয়স্কও আছে।

উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় ইমব্রিয়াকোলা জেলার অভিবাসনকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ওই দিন রাতে লাম্পেদুসার ফাভারোলো জেটিতে নামার পরপরই অভিবাসীরা জানান, উদ্ধারকারীরা আসার আগে তাদের একজন সঙ্গী সমুদ্রে পড়ে যান এবং তাকে আর উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

ইতালি সরকারের নেওয়া কঠোর পদক্ষেপের কারণে দেশটিতে ২০২৪ সাল থেকে অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা কমেছে। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের তুলনায় ২০২৫ সালে অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে।

২০২৪ সালের শুরু থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইতালিতে সমুদ্রপথে যাওয়া অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৪২ হাজার ৯৯৯ জন। কিন্তু এ বছরের একই সময়ে তা কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৪৩ হাজার ৮৬০ জন।

তবে ২০২৩ সালে একই সময়ে রেকর্ড এক লাখ ১৪ হাজার ৮৬৭ জন অভিবাসী গিয়েছিল।

এদিকে চলতি বছর যাওয়া অভিবাসীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশিরা। ১৩ হাজার ২৭১ জন বাংলাদেশি ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে পৌঁছেছে। এর পরই আছে ইরিত্রিয়া। দেশটির পাঁচ হাজার ৮১১ জন নাগরিক পৌঁছেছে ইতালিতে। আর এরপর আছে মিসর, পাকিস্তান, সুদান, ইথিওপিয়া ও সোমালিয়ার নাম।


পিএসসির নন-ক্যাডার পরীক্ষার প্রশ্ন বিক্রির মূল হোতা গ্রেপ্তার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) অধীনে থানা শিক্ষা অফিসার পদে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষার ‘৯০ শতাংশ কমন সাজেশন’ দেওয়ার নামে চাকরি প্রত্যাশীদের সঙ্গে প্রতারণা ও অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে প্রতারক চক্রের মূলহোতাকে গ্রেপ্তারন করেছে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি)।

সিআইডি জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার জামালপুরের মেলান্দহ থেকে প্রশ্ন ফাঁসের নামে প্রতারণা করার অভিযোগে মতিউর রহমান (৩২) নামে প্রতারক চক্রের এই মূল হোতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার নাসির উদ্দিনের পুত্র।

গতকাল বুধবার সিআইডির সুপারনিউমারী অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাহিদুল ইসলাম সিআইডির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতারক চক্রটি আগামী ১২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য পিএসসির অধীন উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার (এটিইও) পদের পরীক্ষার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘সিক্রেট সাজেশন শিট’ শিরোনামে প্রলোভনমূলক পোস্ট দেয়।

ফেসবুকসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে পোস্ট দিয়ে বলা হয়, যারা আগ্রহী তাদেরকে ৫৫০টি এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তরসহ দেয়া হবে। যেখান থেকে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ কমন পড়বে।

আগ্রহীদের অগ্রিম অর্থ প্রদান করে, প্রশ্নসেট সংগ্রহের জন্য ইনবক্সে আলাপ করতে বলা হয়। এই লোভনীয় অফার পেয়ে অনেক চাকরি প্রত্যাশী এই চক্রের সঙ্গে আলাপ করে। তাদের কাছ থেকে সর্বনিম্ন ২৮০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা পর্যন্ত মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়ে প্রশ্ন সরবরাহ করেছে চক্রটি।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নজরে আসলে পিএসসির পক্ষ থেকে সিপিসিতে অভিযোগ করলে বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে কাজ শুরু করে। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে প্রতারক চক্রটির মূলহোতা মতিউরকে সনাক্ত করে সিআইডি জামালপুর ও জেলা পুলিশের সহায়তায় গ্রেপ্তার করা হয়।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, এ সময় প্রতারণায় ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ও ১টি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়। যাতে তার জড়িত থাকার প্রমাণ পায় সিআইডি।

সিআইডি কর্মকর্তা আরও জানান, চক্রের অন্যান্য আসামি শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে সিআইডির অভিযান অব্যাহত

রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতকে আদালতে উপস্থাপনসহ আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

চাকরি প্রার্থীদের জন্য বাজারে এমন অনেক গাইড পাওয়া যাচ্ছে- এমন এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, বাজারে গাইড হচ্ছে শিক্ষার্থীদের ধারণা লাভের উপায়। পক্ষান্তরে আসামির কার্যক্রম হচ্ছে প্রলোভন দেখিয়ে অর্থসাৎ ও প্রতারণা।

প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির যুক্ত থাকার ফলে আগামী ১২ তারিখ পরীক্ষা হবে কি-না— এমন এক প্রশ্নের উত্তরে পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (নন-ক্যাডার) দিলাওয়েজ দারদুনা বলেন, পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। এই ঘটনায় পরীক্ষায় কোনো প্রভাব পড়বে না।


সাবেক আইজিপির জবানবন্দি হাসিনার দুঃশাসনের অকাট্য দলিল: চিফ প্রসিকিউটর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাজসাক্ষী হয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের জবানবন্দি শেখ হাসিনার দুঃশাসনের এক অকাট্য দলিল। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম গতকাল সংবাদ সংস্থা বাসসকে বলেন, ‘চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন যে জবানবন্দি দিয়েছেন, তা অবশ্যই শেখ হাসিনার দুঃশাসনের অকাট্য দলিল।’

জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ গত মঙ্গলবার জবানবন্দি দেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

সেসময় তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল তাকে ফোন করে জানান যে আন্দোলন দমনে সরাসরি প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তখন তিনি পুলিশ সদর দপ্তরে ছিলেন এবং তার সামনে ছিলেন তৎকালীন অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় কুমার জোয়ারদার। পরে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের এই নির্দেশনা তৎকালীন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ সারাদেশে পৌঁছে দেন প্রলয় কুমার। সেদিন থেকেই মারণাস্ত্র ব্যবহার শুরু হয়।

চৌধুরী মামুন আরও জানান, এই মারণাস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে অতি উৎসাহী ছিলেন ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর ও ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। এক্ষেত্রে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের নির্দেশ ছিল, যেকোনো মূল্যে আন্দোলন দমন করতে হবে।

সাবেক আইজিপি তার জবানবন্দিতে বলেন, শেখ হাসিনাকে মারণাস্ত্র ব্যবহারে প্ররোচিত করতেন ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান, আনিসুল হক, সালমান এফ রহমান, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মির্জা আজম, ফজলে নূর তাপস ও মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দমাতে হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার বিষয়ে জবানবন্দিতে তিনি বলেন, হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছিল সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে। যার পরামর্শ দিয়েছিলেন র‌্যাবের তৎকালীন মহাপরিচালক হারুন অর রশীদ। আন্দোলনপ্রবণ এলাকাগুলো ভাগ করে ব্লক রেইড দিয়ে হেলিকপ্টার, ড্রোন ও মারণাস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনরত অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে হত্যা ও আহত করা হয়। আন্দোলন দমনে সরকারকে উৎসাহিত করেন আওয়ামীপন্থি বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী ও ব্যবসায়ীরা।

জবানবন্দিতে ‘কোর কমিটি’র মিটিং বিষয়ে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই থেকে প্রায় প্রতি রাতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের ধানমন্ডির বাসায় ‘কোর কমিটি’র বৈঠক হত। সব বৈঠকেই আন্দোলন দমনসহ সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হত। একটি বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের আটক করার সিদ্ধান্ত হয়।

ডিজিএফআই এই প্রস্তাব দেয় উল্লেখ করে মামুন বলেন, তিনি এর বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে পরে রাজি হন। আর সমন্বয়কদের আটকের দায়িত্ব তৎকালীন ডিবি প্রধান হারুনকে দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত মোতাবেক ডিজিএফআই ও ডিবি তাদের আটক করে ডিবি হেফাজতে নিয়ে আসে। সমন্বয়কদের ডিবি হেফাজতে এনে আন্দোলনের বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আপস করার জন্য চাপ দেওয়া হয় এবং তাদের আত্মীয়স্বজনদের ডিবিতে এনে চাপ দেওয়া হয়। একপর্যায়ে সমন্বয়কদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে টেলিভিশনে বিবৃতি দিতে বাধ্য করা হয়। এ ব্যাপারে তৎকালীন ডিবি প্রধান হারুন অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন সাবেক এই আইজিপি। তিনি জানান, ডিবির তৎকালীন প্রধান হারুনকে ‘জিন’ বলে ডাকতেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

২০২৪ সালের ৪ আগস্ট বেলা ১১টায় গণভবনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিরাপত্তা সমন্বয় কমিটির বৈঠক সম্পর্কেও তথ্য দিয়েছেন আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি জানান, ওই বৈঠকে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান, এসবির প্রধান, ডিজিএফআইয়ের প্রধান, এনএসআইয়ের প্রধানের সঙ্গে তিনিসহ মোট ২৭ জন উপস্থিত ছিলেন। জুলাই আন্দোলন দমন এবং নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। সেখানে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন তুলে ধরছিল। কিন্তু চারদিকে পরিবেশ-পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হওয়ায় বৈঠকটি মুলতবি করা হয়।

তবে ওইদিন রাতে গণভবনে আবারও বৈঠক ডাকা হয় বলেও জবানবন্দিতে জানান সাবেক আইজিপি মামুন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে শেখ রেহানা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান, র‌্যাবের মহাপরিচালক ও সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মজিবুর রহমানসহ তিনিও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তবে তৎকালীন ডিজিএফআই প্রধান ও এসবির প্রধান বাইরে অপেক্ষমাণ ছিলেন।

ওই বৈঠকে ৫ আগস্ট আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঠেকানোর পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয়, পুলিশ ও সেনাবাহিনী সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করবে। ওই বৈঠক থেকে সেনাবাহিনীর অপারেশন কন্ট্রোল রুমে যান বলে জবানবন্দিতে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, সেখানে (কন্ট্রোল রুম) তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান, র‌্যাবের মহাপরিচালক, ডিজিএফআইয়ের প্রধান, এসবির প্রধান ও মজিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ঢাকা শহরের প্রবেশমুখে কঠোর অবস্থান নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় এবং ৪ আগস্ট রাত সাড়ে ১২টায় সেনাবাহিনীর অপারেশন কন্ট্রোল রুম থেকে তারা সবাই চলে যান।

২০২৪ সালের ৫ আগস্টের বিষয়ে জবানবন্দিতে তিনি জানান, সেদিন সকালে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে আমার দপ্তরে যাই। এর মধ্যে উত্তরা-যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন পথ দিয়ে ছাত্র-জনতা স্রোতের মতো প্রবেশ করতে থাকে। দুপুর ১২টা থেকে ১টার মধ্যে জানতে পারি ক্ষমতা ছেড়ে দেবেন প্রধানমন্ত্রী। ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে তিনি কোথায় যাবেন তা জানতাম না। এরপর বিকেলে আর্মির হেলিকপ্টার এসে পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে আমাকে প্রথমে তেজগাঁও বিমানবন্দরের হেলিপ্যাডে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ক্যান্টনমেন্টের অফিসার্স মেসে নিয়ে যাওয়া হয়। হেলিকপ্টারে আমার সঙ্গে এসবি প্রধান মনিরুল, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিব ও ডিআইজি আমেনা ছিলেন।

পরে হেলিকপ্টারে এডিশনাল ডিআইজি প্রলয়, এডিশনাল আইজি লুৎফুল কবিরসহ অন্যদেরও সেখানে নেওয়া হয়। পরদিন ৬ অগাস্ট আইজিপি হিসেবে তার নিয়োগ চুক্তি বাতিল করা হয় এবং ক্যান্টনমেন্টে থাকাকালে ৩ সেপ্টেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলেও জানান মামুন।

আন্দোলনের দিনগুলোর বর্ণনা দিতে গিয়ে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ২৭ জুলাই আন্দোলন চলাকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আমরা নারায়ণগঞ্জে আন্দোলনের পরিস্থিতি দেখতে যাই। পথে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে আমরা কিছুক্ষণ অবস্থান করি।

ওই সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মোবাইলে একটি ভিডিও দেখান ওয়ারি জোনের ডিসি ইকবাল। ভিডিও দেখিয়ে ইকবাল বলেন যে, ‘গুলি করি, একজন মরে। সেই যায়। বাকিরা যায় না।’ পরবর্তীতে এই ভিডিও সারাদেশে ভাইরাল হয়।

২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজির দায়িত্বে ছিলেন উল্লেখ করে জবানবন্দিতে আল-মামুন বলেন, তখন পুলিশের আইজিপি ছিলেন জাবেদ পাটোয়ারী। নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্সে ৫০ শতাংশ ব্যালট ভর্তি করে রাখার পরামর্শ শেখ হাসিনাকে এই জাবেদ পাটোয়ারী দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন।

পরবর্তীতে সরকারের পক্ষ থেকে ডিসি, এসপি, ইউএনও, এসিল্যান্ড, ওসি ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সেই নির্দেশনা দেওয়া হয় এবং তারা সেটা বাস্তবায়ন করেন। যেসব পুলিশ কর্মকর্তা এই নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করেছেন, তাদের পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কৃত করা হয়।

২০২০ সালের ১৪ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত র‌্যাবের মহাপরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, র‌্যাব সদর দপ্তর পরিচালিত উত্তরাসহ র‌্যাব-১ এর কার্যালয়ের ভেতরে টিএফআই সেল (টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন সেল) নামে একটি বন্দিশালা ছিল। র‌্যাবের অন্যান্য ইউনিটের অধীনেও অনেক বন্দিশালা ছিল। এসব বন্দিশালায় রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী এবং সরকারের জন্য হুমকি হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের আটকে রাখা হত, যা একটা কালচারে (সংস্কৃতি) পরিণত হয়েছিল।

তার ভাষ্যমতে, অপহরণ, গোপন বন্দিশালায় আটক, নির্যাতন এবং ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হত্যার মত কাজগুলো র‌্যাবের এডিজি (অপারেশন) এবং র‌্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালকেরা সমন্বয় করতেন। আর র‌্যাবের মাধ্যমে কোন ব্যক্তিকে উঠিয়ে আনা, আটক রাখা কিংবা হত্যা করার নির্দেশনাগুলো সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে আসত এবং এই নির্দেশনাগুলো সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকের মাধ্যমে আসত বলে জানতে পারেন বলেও জবানবন্দি দেন সাবেক আইজিপি।

সেসব নির্দেশনা চেইন অব কমান্ড ভঙ্গ করে সরাসরি এডিজি (অপারেশন) ও র‌্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালকদের কাছে পাঠানো হতো বলে উল্লেখ করেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

ব্যারিস্টার আরমান আটক থাকার বিষয়টি তিনি আইজিপির দায়িত্ব গ্রহণের সময় জানানো হয় বলেও উল্লেখ করেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি বলেন, র‌্যাবের সাবেক ডিজি বেনজীর আহমেদ বিষয়টি আমাকে অবহিত করেন। তাকে তুলে আনা এবং গোপনে আটক রাখার সিদ্ধান্ত সরকারের ছিল।

বিষয়টি জানার পর আমি প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিকের সঙ্গে কথা বলি। তিনি আমাকে বলেন, ‘ঠিক আছে, রাখেন। পরে বলব।’ কিন্তু পরে আর কিছু তিনি জানাননি। এরপর আমি কয়েকবার বিষয়টি তুলেছিলাম, কিন্তু কোন প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমন করতে গিয়ে সরকারের আদেশে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করে নৃশংস হত্যাকাণ্ড হয়েছে উল্লেখ করে জবানবন্দিতে সাবেক আইজিপি বলেন, আমি পুলিশ প্রধান হিসেবে লজ্জিত, অনুতপ্ত ও ক্ষমাপ্রার্থী। জুলাই আন্দোলনে যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড হয়েছে, তার জন্য আমি অপরাধবোধ ও বিবেকের তাড়নায় রাজসাক্ষী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পরবর্তী সময়ে আমি ট্রাইব্যুনালে স্বজন হারানোদের কান্না, আকুতি ও আহাজারি দেখেছি। ভিডিওতে নৃশংসতা দেখে অ্যাপ্রুভার হওয়ার সিদ্ধান্ত আমি যৌক্তিক মনে করছি।

তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে হত্যাকাণ্ডের পর আগুন দিয়ে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মত বিভৎসতা আমাকে ভীষণভাবে মর্মাহত করেছে। আমি সাড়ে ৩৬ বছর পুলিশে চাকরি করেছি। পুলিশের চাকরি খুবই ট্রিকি। সব সময় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। চাকরি জীবনের শেষ পর্যায়ে আমার দায়িত্বশীল সময়ে এসব হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এর দায় আমি স্বীকার করছি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে এই গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। আমি প্রত্যেক নিহতদের পরিবার, আহত ব্যক্তি, দেশবাসী ও ট্রাইব্যুনালের কাছে ক্ষমা চাইছি। আমাকে দয়া করে ক্ষমা করে দিবেন। আমার এই সত্য ও পূর্ণ বর্ণনার মাধ্যমে সত্য উদঘাটন হলে আল্লাহ যদি আমাকে আরও হায়াত (বাঁচিয়ে রাখেন) দান করেন, বাকি জীবনে কিছুটা হলেও অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পাব।

এদিকে, সাবেক আইজিপির জবানবন্দি দেওয়ার পর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, রাজসাক্ষী হওয়া চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ক্ষমা পাবেন কি না, সেই সিদ্ধান্ত ট্রাইব্যুনাল নেবেন। তিনি নিজের বিবেকের তাড়নায় অপরাধ স্বীকার করেছেন। নিজের পক্ষ থেকে রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করেছিলেন।

তাজুল ইসলাম আরও বলেন, সাবেক আইজিপি ট্রাইব্যুনালে যে সাক্ষ্য দিয়েছেন, বিশ্বের কোন আদালতেই এ সাক্ষ্যকে দুর্বল প্রমাণ করার সুযোগ নেই। এটি একটি অকাট্য অপ্রতিরোধ্য সাক্ষ্য। এটি শুধু জুলাই-আগস্টের ঘটনা নয়, বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে যত গুম-খুন হয়েছে তার বিরুদ্ধে অকাট্য দলিল হিসেবেও কাজ করবে।

ট্রাইব্যুনালে এই মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। সঙ্গে ছিলেন বিএম সুলতান মাহমুদ, প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, মঈনুল করিম, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্য প্রসিকিউটররা।

এই মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। আর সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।


আজ থেকে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হবে স্বর্ণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দুই দিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে আবারও স্বর্ণের দাম বেড়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৮৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটিই দেশের ইতিহাসে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নতুন দাম সমন্বয়ের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। আজ বৃহস্পতিবার থেকেই কার্যকর হবে নতুন দাম।

স্থানীয় বাজারে বিশুদ্ধ স্বর্ণের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এ সমন্বয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাজুস।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৮৩২ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭০ হাজার ৭০৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩১৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ২১ হাজার ১৬৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

এর আগে, সবশেষ গত ১ সেপ্টেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় ভরিতে ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৭৫ হাজার ৭৮৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি। আর ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৬৭ হাজার ৭৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৪৩ হাজার ৮২৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা কার্যকর হয়েছিল গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছর মোট ৪৯ বার দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হলো, যেখানে দাম বাড়ানো হয়েছে ৩৩ বার, আর কমেছে মাত্র ১৬ বার। ২০২৪ সালে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছিল মোট ৬২ বার, যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল, আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার।

স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮১১ টাকায়। এ ছাড়াও ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৬৮৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ২৯৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭২৬ টাকায়।


ভোটারপ্রতি ১০ টাকা ব্যয় করতে পারবেন প্রার্থী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারপ্রতি একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ ১০ টাকা ব্যয় করতে পারবেন বিধানসহ একগুচ্ছ সংস্কার প্রস্তাব এনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন আইন মন্ত্রণালয় পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সরকারের কাছে পাঠানো সংস্কারের প্রস্তাবের সার্বিক বিষয় সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী আইন সংস্কার নিয়ে মাসখানেক ধরে দফায় দফায় পর্যালোচনা করে নির্বাচন কমিশন। এরপর আরপিও সংশোধনের প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়, সেখানে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন এসব প্রস্তাব পাঠালেও কোনটা থাকবে, কোনটা থাকবে না, তা নির্ভর করবে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদনের ওপর।

আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষে সরকারের সায় পেলে রাষ্ট্রপতি সংশোধন অধ্যাদেশ জারি করবেন।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রথমবারের মতো ফেরারি আসামিদের ভোটে অযোগ্য ঘোষণার বিধান আরপিওতে যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। কোনো আদালতে দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত হলে অযোগ্যতার বিধান রয়েছে বিদ্যমান আইনে।

আরপিওতে নতুন বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে জানিয়ে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, যে কোনো ফৌজদারি মামলায় ফেরারি আসামি হলে অযোগ্য হবেন। অপব্যবহারের আশঙ্কা থেকে এটা করতে চাইনি। কিন্তু বাস্তবতার নিরিখে এটা করা হয়েছে। সামনে যদি অপব্যবহার হয়, তবে আবার এটা পর্যালোচনা করতে হবে।

এই নির্বাচন কমিশনার জানান, এবার প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় জামানত ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করেছে ইসি।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ থাকলেও অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বিধান রাখা হয়নি।

ভোটারপ্রতি ১০ টাকা হারে আসনের ভোটার সংখ্যার সমান ব্যয় এর সুযোগ রাখা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে ২৫ লাখ টাকা নির্বাচনী ব্যয়ের সুযোগ ছিল প্রত্যেক প্রার্থীর। সে বিধান বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

আসনভিত্তিক ভোটার তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সব থেকে বেশি ভোটার রয়েছে গাজীপুর-২ আসনে। এই আসনের ভোটার ৭ লাখ ৭৯ হাজার ৭২৬ জন। অন্যদিকে, সবচেয়ে কম ভোটারের আসন হচ্ছে ঝালকাঠি-১ আসনে। এই আসনে ভোটার ২ লাখ ১২ হাজার ১২ জন।

এবার ভোটারপ্রতি ১০ টাকা হারে ব্যয়ের সুযোগ রেখে প্রস্তাব দেওয়ায় গাজীপুরের এই আসনটিতে ভোটারের জন্য সর্বোচ্চ প্রায় ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ের সুযোগ থাকছে। এ ছাড়া ঢাকা ১৯ আসনে সর্বোচ্চ সাড়ে ৭ লাখ ভোটারের জন্য ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবেন প্রার্থীরা।

এ নির্বাচন কমিশনার জানান, অনিয়ম হলে রিটার্নিং অফিসার একটি বা একাধিক কেন্দ্র বা পুরো আসনের নির্বাচন বাতিল করতে পারবেন।


banner close