সফর সংক্ষিপ্ত করে আজ রাতেই চীন থেকে দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার রাতে বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে দেশের উদ্দেশে রওনা হবেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার বেইজিংয়ের সেন্ট রেজিস হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
চারদিনের সফরে সোমবার চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে পৌঁছান শেখ হাসিনা। সেই হিসাবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে তার দেশের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সফর সংক্ষিপ্ত করে আজ রাতেই রওনা হবেন সরকারপ্রধান।
সফর সংক্ষিপ্ত করার ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের সব অনুষ্ঠান অপরিবর্তিত রয়েছে। শুধু ১১ জুলাই সকালের পরিবর্তে ১০ জুলাই রাতেই বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন।’
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, সফর সংক্ষিপ্ত করা হলেও নির্ধারিত সব কর্মসূচি শেষ করেই সরকারপ্রধান দেশে ফিরবেন।
প্রেস সচিব বলেন, ‘১০ জুলাই বেইজিংয়ের সময় রাত ১০টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিশেষ ফ্লাইটে উঠবেন প্রধানমন্ত্রী; দেশে পৌঁছাবেন বাংলাদেশ সময় রাত ১টায়।’
এদিকে গতকাল বিকালে বেইজিংয়ের গ্রেট হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন চাইনিজ পিপলস পলিটিক্যাল কনসালটেটিভ কনফারেন্সের (সিপিপিসিসি) জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াং হুনিং।
এ বৈঠকের ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সিপিপিসিসির জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যানের বৈঠক হয়েছে। এতে উভয় নেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও চীনের কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে গুরুত্বারোপ করেন। তারা দলীয় নেতাদের পারস্পরিক সফরের বিষয়েও ঐকমত্যে পৌঁছান।’ রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থেকে চীন সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেবে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) প্রেসিডেন্ট জিন লিকুন।
এ ব্যাপারে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এআইআইবিকে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, নদী খনন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। এআইআইবি প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিকে অভূতপূর্ব বলে বর্ণনা করেন।’
চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের ১৪০টির বেশি দেশে আমাদের ওষুধ রপ্তানি হয়। আমরা চীনেও এর প্রসার চাই। পাশাপাশি পাট ও চামড়াজাত পণ্য, সিরামিক, আম প্রভৃতি রফতানির মাধ্যমে আমরা চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছি।’
ঢাকাকে বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
রাজধানীর রাজউক মিলনায়তনে হওয়া এক আলোচনা সভায় আজ সোমবার এ কথা তিনি।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ঢাকার জন্য একটি সিটি ভিশন থাকা জরুরি। মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি সবুজ জায়গা বাড়াতে হবে। তরুণদের জন্য খোলামেলা স্থান, বসার জায়গা ও খেলাধুলার সুযোগ থাকতে হবে।
আজ ‘বিশ্ব বাসস্থান দিবস, ২০২৪’ উপলক্ষ্যে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ‘ঢাকাকে সবার বসবাসের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে এবং একটি উন্নত ও পরিবেশবান্ধব শহর গড়ে তুলতে তরুণদের সম্পৃক্ত করতে হবে।’
‘তাদের সৃজনশীলতা শহরকে বসবাসের উপযোগী করে তুলতে পারে আর সেজন্য তরুণদের রাজউকের কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, উন্নয়ন পরিকল্পনায় বস্তিবাসী ও নদীভাঙনের শিকারদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হামিদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গুয়েন লুইস, অতিরিক্ত সচিব শাকিলা জেরিন আহমেদ ও যুগ্ম সচিব নায়লা আহমেদ এ সময় বক্তব্য দেন।
সভায় অতিথিরা বিশ্ব বাসস্থান দিবস উপলক্ষ্যে দুটি প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন।
মিয়ানমার থেকে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা।
সাম্প্রতিক সময়ে সশস্ত্র সংঘাতের কারণে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যের নাগরিকদের বাংলাদেশে নতুন করে অনুপ্রবেশ ঘটছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ইউ ক্যাও সোয়ে মোয়ে মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল রোববার জানানো হয়, ‘বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় সশস্ত্র সংঘাত নিয়ন্ত্রণ এবং রাখাইন থেকে বাংলাদেশে বেসামরিক নাগরিক ও সশস্ত্র ব্যক্তিদের প্রবেশ ঠেকাতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানান।’
তিনি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের তাদের নিজ দেশে দ্রুত, স্বেচ্ছায় এবং টেকসই প্রত্যাবাসনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
জবাবে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত রাখাইন রাজ্যে দ্রুত শৃঙ্খলা ও শান্তি ফিরিয়ে আনার সাথে সাথে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের প্রত্যাবাসন শুরু করার আশ্বাস দেন।
উভয় পক্ষই দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য, শিপিং সংযোগ, জ্বালানি এবং কৃষি ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনার কথা স্বীকার করেন
বৈঠকে দুদেশের মধ্যে বিদ্যমান অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত নতুন দায়িত্ব গ্রহণের জন্য পররাষ্ট্র সচিবকে অভিনন্দন জানান এবং আশা প্রকাশ করেন যে তার মেয়াদে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।
চলতি অক্টোবরে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি এ মাসে বঙ্গোপসাগরে ১-৩টি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। যার একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে চলতি অক্টোবরে ৩-৫ দিন হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বজ্রঝড় হানা দিতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া সংস্থাটি।
গতকাল অক্টোবর মাসের দীর্ঘমেয়াদি আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ও বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান ড. মো. ছাদেকুল আলমের সই করা ওই পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, বিদায়ী সেপ্টেম্বর মাসে দেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। চলতি অক্টোবরেও সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে ১-৩টি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে একটি নিম্নচাপ অথবা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। পাশাপাশি দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে এ মাসে ২-৪ দিন মাঝারি থেকে তীব্র বজ্রঝড় এবং সারাদেশে ৩-৫ দিন হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বজ্রঝড় হতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, এ মাসের প্রথমার্ধে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু (বর্ষা) বাংলাদেশ থেকে পর্যায়ক্রমে বিদায় নিতে পারে। সেই সঙ্গে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেতে পারে। তবে দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা কিছুটা বেশি থাকতে পারে।
এ ছাড়াও নদ-নদীর আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি অক্টোবরে দেশের প্রধান নদ-নদীগুলোর স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান থাকতে পারে। তবে ভারী বৃষ্টিপাতজনিত কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্ব পার্বত্য অববাহিকার কিছু স্থানে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। এরপর আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-এমপিসহ দলটির অনেক নেতাকর্মী গা ঢাকা দেন এবং সুযোগ বুঝে অনেকেই পালিয়ে যান বিভিন্ন দেশে।
জানা গেছে, বেশিরভাগ নেতাকর্মী আগে পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে পালিয়েছেন। সেখান থেকেই সুযোগ বুঝে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছেন।
এবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার রাস্তায় দেখা মিলেছে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আলোচিত কাউন্সিলর আসিফ আহমেদের। তিনি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। তিনি সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ভাতিজা।
একাধিক ব্যক্তি গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, সম্প্রতি তাকে কলকাতার নিউ মার্কেট এলাকায় দেখা গেছে। ওই এলাকায় বিকেল হলেই হাঁটতে বের হন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলার ঘটনায় দেশে এই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে।
এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, অসীম কুমার উকিল, অপু উকিল ও হাজী সেলিমের এক ছেলেসহ আরও কয়েকজনকে কলকাতার ইকো পার্কে দেখা গেছে। স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ধরা পড়েন তারা।
ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কলকাতার ইকো পার্কে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। মুখে শ্বেতশুভ্র দাড়ি। দূর থেকে দেখে চেনার উপায় নেই, তিনি যে আসাদুজ্জামান খান কামাল।
ইকো পার্কে রাতে সাধারণত কলকাতার স্থানীয়রা আড্ডা দেওয়ার সুযোগ পান। সঙ্গে থাকে ডিনারেরও ব্যবস্থা। নিরাপদ ভেবে সেখানে বসেই আড্ডা দিচ্ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা অসীম কুমার উকিল, অপু উকিল, হাজী সেলিমের ছেলেসহ আরও কয়েকজন।
তবে তাদের এ আড্ডা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। কিছু বাংলাদেশি জড়ো হওয়ায় দ্রুতই সটকে পড়েন তারা। পার্কের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা বলেন, বাংলাদেশিরাও ইকো পার্কে বেড়াতে আসেন, তবে এখন সংখ্যায় কম।
এদিকে আসাদুজ্জামান খান কামালকে ধরতে দেশে চার দফা অভিযান চালালেও ব্যর্থ হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিন্তু তাকে ধরতে না পারলেও এরই মধ্যে তার ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এবারের শারদীয় দুর্গাপূজায় কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আাজ রোববার বিকেলে রমনা কালীমন্দির পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রত্যেকটি জেলায় ৮ দফা নির্দেশনা পাঠিয়েছি। এ ছাড়া সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এ বছর পূজা নির্বিঘ্নে পালিত হবে। কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই।
তিনি বলেন, এবার পূজা কমিটির পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক দেওয়া হচ্ছে। তারা ২৪ ঘণ্টা মন্দিরে থাকবে।
এ সময় বিভিন্ন মন্দিরে হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, অপকর্মের সঙ্গে যারা জড়িত তারা বিচারের সম্মুখীন হবে। আমরা সবার বিচার নিশ্চিত করার চেষ্টা করব।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দুর্গাপূজা উদ্যাপন পরিষদের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় এবং সদস্য সচিব বিশ্বজিৎ ভদ্র, যুগ্ম আহ্বায়ক অপূর্ব হালদার, রামপাল, জুয়েল বাড়ৈ ও উত্তম সরকার।
দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় যেসব পরামর্শ দিল পুলিশ:
এদিকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদ্যাপনে পুলিশ পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করার পাশাপাশি বেশ কিছু নিরাপত্তাবিষয়ক পরামর্শ দিয়ে সেগুলো সংশ্লিষ্ট সবাইকে মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছে।
আজ পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যেন অমূলক ঘটনা বা গুজব সৃষ্টি করে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সামাজিক শান্তি বিনষ্ট করতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে পুলিশকে জানাতে হবে।
পূজামণ্ডপে আসা নারী-পুরুষের জন্য পৃথক প্রবেশ ও ফেরার পথের ব্যবস্থা করা ছাড়াও মণ্ডপে ব্যাগ, থলে বা পোটলা নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না। মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা ও অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র স্থাপন করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপে আর্চওয়ে গেট স্থাপন করতে হবে।
পূজামণ্ডপ এবং প্রতিমা বিসর্জনস্থলে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখা এবং স্ট্যান্ডবাই জেনারেটর অথবা হ্যাজাক লাইটের ব্যবস্থা রাখতে হবে। পূজা চলাকালে আতশবাজি ও পটকা ফুটানো থেকে বিরত থাকতেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ এবং স্বেচ্ছাসেবকদের আলাদা পোশাক, দৃশ্যমান পরিচয়পত্র ও স্বেচ্ছাসেবক লিখিত আর্মড ব্যান্ড দিতে হবে। এ ছাড়া প্রতিমা বিসর্জনের সময় শোভাযাত্রার নির্ধারিত রুট ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
পুলিশের সহায়তা নিতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের কন্ট্রোল রুম: ০২২৩৩৮০৬৬১, ০২২৩৩৮১৯৬৭, ০১৩২০০০১২৯৯, ০১৩২০০০১৩০০; ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কন্ট্রোল রুম: ০২২২৩৩৫৫৫০০, ০১৮১৭৬০২০৫০; ঢাকেশ্বরী মন্দিরের কন্ট্রোল রুম: ৯৬১১৩৫৩, ০১৭০৫৫০৫৫২৯; র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) কন্ট্রোল রুম: ০১৭৭৭৭২০০২৯; ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুম: ০২২২৩৩৫৫৫৫৫, ০১৭১৩০৩৮১৮১, ০১৭১৩০৩৮১৮২, ০১৭৩০৩৩৬৬৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করার কথা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেও সেবা নেওয়া যাবে।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) ৫টি জাহাজে প্রচুর লাভ হচ্ছে। একটিও বাংলাদেশে নেই। জ্যামাইকাসহ বিভিন্ন দেশে এসব জাহাজ আছে।’
‘বিএসসিতে জাহাজের বহর আরও বড় হবে ইনশাআল্লাহ। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। কিছু জাহাজ দরকার। এ জাহাজ দিয়ে টাকা আয় করতে হবে। আমরা যতদিন আছি, একটা কাজ করতে পারি সেটা হচ্ছে দুর্নীতি কমানো।’
চট্টগ্রামে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের কার্যালয় পরিদর্শনের পর আজ রোববার সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ‘গত শুক্রবার সাড়ে ১২টার সময় বাংলার সৌরভে ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে এমডি জানিয়েছেন। প্রতিটি মুহূর্তে কী হচ্ছে জানতে পারছিলাম। বিএসসি থেকে তদন্ত করতে বলেছি। জাহাজের ইন্স্যুরেন্সের ব্যাপার আছে। তারপর একজন মারা গেছেন। তিনি আগুনে পুড়ে মারা যাননি। ট্রমার কারণে মারা গেছেন, ডাক্তাররা ভালো বলতে পারবেন।’
‘দুটি জাহাজে অগ্নিকাণ্ডে চার জন মারা গেছেন। যেকোনো প্রাণহানি দুঃখের ব্যাপার। পর পর দুইটি ঘটনার পর সন্দেহ যাতে দূর হয় বা প্রকৃত ঘটনা যাতে বের করে আনার জন্য অ্যাডিশনাল সেক্রেটারিকে প্রধান করে একটি পৃথক তদন্ত কমিটি করা হবে। ৯-১০ সদস্যের বেশ বড় তদন্ত কমিটি। যাতে বিশেষজ্ঞরা থাকবেন। তারা এখানে আসবেন, তদন্ত শুরু হবে, জাহাজগুলো দেখবেন। সন্দেহজনক কিছু আছে কি না। কী হয়েছে সে ব্যাপারে অনুমানভিত্তিক কোনো কথা বলতে চাই না। আপনারা অনুসন্ধান পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলার সৌরভ’ জাহাজে অগ্নিকাণ্ডের পর লাইটারিংয়ের জন্য বিএসসির এমডি তাৎক্ষণিক জাহাজ ভাড়া করেছেন। একটি কথা বলে রাখি, ঘটনা ঘটার আগেই এমডি বলেছিলেন, বাংলার সৌরভের শেষ ট্রিপ বা সেবা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ঘটনা ঘটে গেছে। আমার ভয় ছিল, যদি এ তেল ব্লাস্ট হলে চ্যানেল বন্ধ হয়ে যেত। আল্লাহর কাছে শোকর করছি। নেভি, কোস্টগার্ড, পোর্ট অথরিটি দ্রুত সময়ে গিয়ে এ রকম আগুন নিভিয়েছে। নেভাল চিফ ভোর ৫টায় রিং করে জানিয়েছেন সম্পূর্ণ সহযোগিতা দিয়েছেন। নেভাল কমান্ডার, বন্দর চেয়ারম্যানের সঙ্গে সারাক্ষণ কথা হয়েছে। সাড়ে চারটায় আমাকে বলেছে সবাইকে রেসকিউ করা হয়েছে।
‘একজনকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। আমি পুঙ্খানুপুঙ্খ জানি কারা সহযোগিতা করেছে। প্রফেশনালি অ্যাকশন হয়েছে। এত বড় দুর্ঘটনা, অনেক কিছু হতে পারতো। বিএসসির লোকজন বলেছে, এক হয়ে কাজ করবে। এ সংস্থার উন্নতি করবে। উনাদের প্ল্যান ও আমার ইচ্ছে, বিদেশি যারা আসবে তাদের বলবো জাহাজ শিল্পে বিনিয়োগ কর। কিছু দিন আগে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বলেছি, পাট ও জাহাজ শিল্পে বিনিয়োগ করতে।’
তিনি বলেন, জাহাজে আগুন লেগেছে তাই কিছু সেফটির বিষয় দেখতে হবে। এরপর বাংলার সৌরভ থেকে অপরিশোধিত তেল স্থানান্তর করা হবে। বিপিসিকেও বলেছি, টার্মিনালের ক্যাপাসিটি বাড়ান।
চীন থেকে চারটি নতুন জাহাজ সংগ্রহ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একটি টিম কাজ করছে দাম নির্ধারণের জন্য। আমরা দাম কমানোর চেষ্টা করছি। কে টাকা নিয়ে নিয়ে গেল তা বের করা মুশকিল। কাউকে টাকা দিয়ে থাকলে কীভাবে বের করবো! ডলার ছিল ৯০ টাকা। তদন্ত হবে। প্রকল্প বন্ধ থাকলে জাহাজ তো পাবো না।
এ মন্ত্রণালয়ে অনেক প্রকল্প হচ্ছে, এসব কেন হচ্ছে? প্রকল্প শেষ পর্যায়ে। এখন বন্ধ করে দিলে যে টাকা অপচয় হয়েছে তা আপনার, আমার। গলায় কাঁটা লেগেছে, গিলতে হবে। আমি তো বলেছি, চুরির মহাসমুদ্র না, প্রশান্ত মহাসাগর। আমাদের কাছে যে ডকুমেন্ট আছে তা দুদকের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছি। দুদক তদন্ত করবে।
একজন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি হাসতে হাসতে বললেন, উনার পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক। আপনি কখনো স্বপ্ন দেখেছেন ৪০০ কোটি টাকা। আমি তো দেখিনি।
সংস্কার ছাড়া মানুষ নির্বাচন নিতে পারবে কি না- এমন প্রশ্ন তুলেছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
আজ রোববার সচিবালয়ে অধীন দুই মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা জানান।
এ সময় নির্বাচনের রোড ম্যাপ কিংবা নির্বাচন নিয়ে আপনাদের পরিকল্পনা কী? এমন প্রশ্নে এ বিষয়ে উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, ‘এই আলোচনা এখনো আমাদের কেবিনেটে হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এটা নিয়ে চেইন অব মিটিং চলছে। এই ভাবনা এখনো আলোচনার মধ্যে আছে।’
আপনাদের লক্ষ্য কি এখন নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়া, কিন্তু নির্বাচন কমিশন তো এখনো পুনর্গঠনই হয়নি- এ বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘এখনো অনেক কিছুই গঠন হয়নি। কারণ মাত্র দুই মাস সময় গেল, একটু সময় দিন। এসব প্রশ্নের জবাব আপনারা পাবেন। নির্বাচনতো আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। সেটার জন্য একটা প্রেক্ষাপট তৈরি করতে হবে।’
আপনাদের এখন অগ্রাধিকার কি সংস্কার, নাকি নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়া- এ বিষয়ে শারমীন এস মুরশিদ বলেন, সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের দিকে যাবো কীভাবে! সংস্কার হবে না, নির্বাচন হবে? সেই নির্বাচন নিতে পারবেন তো, সংস্কার ছাড়া?’ সেটা কতদিনে হবে- জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, জানি না, কতদিন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে। এ সময় সংস্কারের পর নির্বাচন হবে বলেও জানান তিনি।
দেশে ডিমের দাম অব্যাহত হারে বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ভারত থেকে একসঙ্গে দুই লাখ ৩১ হাজার পিস ডিম আমদানি করা হয়েছে।
ডিমের ওই বড় চালানের ট্রাকটি গতকাল শনিবার রাতে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে প্রবেশ করে।
সাড়ে ৭ টন ওজনের ডিম বোঝাই ট্রাকে ২ লাখ ৩১ হাজার পিস মুরগির ডিম আমদানি করেছে ঢাকার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বিডিএফ করপোরেশন।
ভারতীয় রপ্তানিকারক কানুফ ত্রিপুরা ইন্ডিয়ার মাধ্যমে ডিমের চালানটি বেনাপোল বন্দরে এসে পৌঁছেছে। তবে আমদানিকারকের পক্ষে কোনো কাগজপত্র কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল না করায় গতকাল শনিবার রাতে চালানটি খালাস করতে দেয়নি বন্দর কর্তৃপক্ষ।
আমদানিকারকের পক্ষে আজ রোববার চালানটি খালাসের জন্য রাতুল এন্টারপ্রাইজ নামক একটি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট প্রতিষ্ঠান দুপুরের দিকে কাস্টমসে কাগজপত্র দাখিল করেছেন।
কাস্টমস সুত্রে জানা যায়, আমদানিকৃত ডিমের আমদানি মূল্য ৯ হাজার ৯ শত ৬৯ দশমিক ১২ মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১ লাখ ৮৬ হাজার ৩২৫ টাকা।
আমদানি মূল্যের ওপর ২৮ শতাংশ শুল্ক কর ধার্য থাকায় প্রতিটি ডিমের শুল্ক করাদি পরিশোধ করতে হয় প্রায় ২ টাকা। এরপরও প্রতি পিস ডিমের আমদানি মূল্য পড়ছে বাংলাদেশি টাকায় ৫ টাকা ৭৫ পয়সা।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের উপ কমিশনার অথেলো চৌধুরী জানান, ডিমের পণ্যচালানটি যেহেতু জরুরি এবং পচনশীল সে কারণে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পণ্যচালান পরীক্ষা করে খালাসের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত জুলাই ও আগস্ট মাসে নিহত ৭৩৫ জনের খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নিহতদের প্রাথমিক তালিকা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
তালিকায় কোনো তথ্য অসম্পূর্ণ বা ভুল থাকলে, সেটি সংশোধনের জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে নিহতদের স্বজনদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সরকার।
এ ছাড়া নিহতদের মধ্যে কারো নাম তালিকায় অর্ন্তভুক্ত হয়ে না থাকলে তার আইনগত ওয়ারিশ বা প্রতিনিধিকে নিজ জেলার সিভিল সার্জন বা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, গত জুলাই ও আগস্ট মাসে গণআন্দোলন চলাকালে নিহতের সংখ্যা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। ফলে নিহতদের প্রকৃত সংখ্যা বের করার জন্য তালিকা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ওই তালিকায় এখন পর্যন্ত ৭৩৫ জন নিহতের তথ্য দেখা যাচ্ছে।
তবে এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মের স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটি দাবি করেছে যে, আন্দোলনে প্রায় ১৫৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ৩১ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। তবে আহত-নিহতদের এই তথ্য আরও যাচাই-বাছাই করা হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মের স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটি।
এর আগে গত ২৪ সেপ্টেম্বর জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ৭০৮ জনের খসড়া তালিকা প্রকাশ করে সরকার।
অধিদফতরের ওয়েবসাইটে বলা হয়, তথ্য সংশোধন বা সংযোজন করার জন্য ৬ অক্টোবর পর্যন্ত এ তালিকা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তথ্য সংশোধনের জন্য নিহতের পরিবারের সদস্য বা প্রতিনিধির জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন ও মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
সাবেক পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছেন।
রাজধানীর গুলশান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান আজ রোববার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বিকেলে ডিবির একটি টিম গুলশানে সাবের হোসেন চৌধুরীর বাসায় অভিযান পরিচালনা করে। সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও জানান, তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এখন তিনি ডিবি কার্যালয়ে আছেন।
সাবের হোসেন চৌধুরী রাজধানীর খিলগাঁও, সবুজবাগ ও মুগদা থানা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।
তাকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
একসময় তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে চিহ্নিত করে আগামী সাত দিনের মধ্যে দলটিকে নিষিদ্ধ কারার দাবি জানিয়েছেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ও লেখক মাহমুদুর রহমান।
জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ দাবি জানান।
মাহমুদুর রহমান বলেন, আগামী সাত দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করতে হবে। এই সময়সীমার মধ্যে কোনো ব্যবস্থা না নিলে রাজপথে কঠোর আন্দোলন করা হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান তিনি।
এর জন্য স্বাস্থ্য, অর্থ, শিল্প ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার রাজনৈতিক সচিবের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করতে বলেন।
মাহমুদুর রহমানের অন্যান্য দাবির মধ্যে আছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক পদে সায়মা ওয়াজেদের মনোনয়ন বাতিলের পদক্ষেপ নেওয়া, যমুনা সেতুর নাম শহীদ আবু সাঈদের নামে রাখা।
২০০৯ সাল থেকে ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলো জাতির সামনে তুলে ধরা এবং বঙ্গবন্ধুর এভিনিউর নাম পরিবর্তন করে শহিদ আবরার এভিনিউর নামকরণ করা।
ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদী সরকারের দলগুলোকে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে কোনো আপস করা হবে না।
দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার বিষয়ে তিনি বলেন, পত্রিকার বিরুদ্ধে কেউ ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করলে পত্রিকা পুনরায় প্রকাশ করা হবে, আমার দেশ পরিবার তার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলবে।
এই জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক বলেন, ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা মৌলবাদ ও ইসলামী জঙ্গিবাদকে ইস্যু বানিয়ে ১৬ বছর ধরে দেশকে শোষণ করেছেন।
মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, ‘আওয়ামী সরকার বিচার বিভাগকে রাজনীতিকরণ করেছে। ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর দানব হাসিনার বিরুদ্ধে কথাবার্তা যে এত দ্রুত কমে যাবে, তা ভাবিনি।’
জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি কবি হাসান হাফিজসহ সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ এসময় উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক তাহেদ চৌধুরী।
সম্প্রতি দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সৃষ্ট বন্যায় ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য উঠে এসেছে।
আজ রোববার ধানমন্ডির সিপিডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিজেই জানিয়েছেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে যা জিডিপির ২৬ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষি ও বন খাত, যা ৫ হাজার ১৬৯ কোটি টাকার সমান।
ফাহমিদা বলেন, ‘নোয়াখালী জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ৪ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। কুমিল্লা জেলায় ক্ষতি হয়েছে ৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা।’ অবকাঠামো খাতে ৪ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকার এবং আবাসন খাতে ২ হাজার ৪০৭ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলেও এসময় জানান তিনি।
কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলাসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতি ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া নিয়েও এসময় তাকে কথা বলতে শোনা গেছে।
উল্লেখ্য, গতকালও দেশের উত্তরাঞ্চল শেরপুরে নতুন করে আরও ৭টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। টানা ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানির কারণে প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে বাংলাদেশে বন্যা সৃষ্টি হয়। এতে ফসল ও আবাদি জমিসহ ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয় জাতীয় সম্পদের।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘বাসস্থানসহ অন্যান্য সব মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর।’ আগামীকাল সোমবার ‘বিশ্ব বসতি দিবস’ উপলক্ষ্যে আজ রোববার দেওয়া এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয়, শিক্ষা ও চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকার। বর্তমান সরকার মানুষের বাসস্থানসহ এ মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরণে বদ্ধপরিকর।’
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘দেশের উন্নয়নকে বেগবান ও টেকসই করার লক্ষ্যে এ সকল প্রতিকূলতাকে নির্মূল করার জন্য সরকার সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশের অনেক শহরের মতোই বাংলাদেশের শহর বা নগরগুলো এখনো অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই নগর উন্নয়ন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারে নাই। দারিদ্র্য, বৈষম্য, দুর্নীতি, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা, নাগরিক নিরাপত্তাহীনতা, পরিবেশগত বিপর্যয় তথা জলবায়ু পরিবর্তনের নানা অভিঘাতে ভুগছে এ দেশের ছোটো-বড় বিভিন্ন শহর।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তারুণ্য শক্তি, সাহস ও পরিবর্তনের প্রতীক। বৈষম্যহীন, শোষণহীন ও কল্যাণকর গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ছাত্র-জনতার বিগত দিনের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণই প্রমাণ করে তারুণ্যকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারে না। এখনকার তরুণেরা অনেক বেশি আধুনিক এবং প্রযুক্তি ব্যবহারে অগ্রগামী।
তিনি তরুণদের অদম্য মেধা, পরিশ্রম, ঐকান্তিক নিষ্ঠা ও সততা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নে নতুন আলোয় উদ্ভাসিত করবে বলে দৃঢ় আস্থা প্রকাশ করেন।
মুহাম্মদ ইউনূস প্রযুক্তিগত জ্ঞান, উৎকর্ষ ও তরুণদের উদ্যোগ আর প্রবীণ অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান আমাদের দেশে উন্নত ও নিরাপদ নগর প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশে যথাযথ মর্যাদায় ‘বিশ্ব বসতি দিবস-২০২৪’ উদ্যাপিত হতে যাচ্ছে জেনে আনন্দ প্রকাশ এবং দিবসটির সকল কার্যক্রমের সাফল্য কামনা করেন।
উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার নিরাপদ বাসস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতিসংঘ ১৯৮৬ সাল থেকে প্রতি বছর অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার ‘বিশ্ব বসতি দিবস’ হিসেবে উদ্যাপন করে আসছে। ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবারকে বিশ্ব বসতি দিবস হিসেবে ঘোষণা করে, তার পরের বছর থেকেই বিশ্বব্যাপী পালন হয়ে আসছে দিবসটি।