কোটা আন্দোলনে জানমাল অনিশ্চয়তায় পড়লে পুলিশ বসে থাকবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। আজ বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আদালতের যে নির্দেশনাটা এসেছিল, শিক্ষার্থীরা মনে করেছেন তাদের যে চিন্তা-ভাবনা, সেটা থেকে তাদের দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেজন্য তারা রাস্তায় চলে এসেছিলেন। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী, বিশেষ করে পুলিশকে আমরা বলেছি, এদের ডিমান্ড যেটা আছে, সেটা আমরা শুনবো। কিন্তু শোনারও একটা লিমিট বোধহয় থাকে। তারা বোধ হয় এগুলো ক্রস করে যাচ্ছে। যারা আন্দোলন করছে তারা শিক্ষিত, মেধাবী। তারা কেন রাষ্ট্রের বিপক্ষে যাবে? তারা নিশ্চয়ই সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে ফিরে যাবে।
তিনি বলেন, বেশ কয়েকদিন হলো তারা (আন্দোলনরত শিক্ষার্থী) কিন্তু একই কাজ করছেন। এরই মধ্যে প্রধান বিচারপতি একটা নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট বলেছেন, যে নির্দেশনা হাইকোর্ট দিয়েছেন সেটি স্থগিত। যে মামলাটি চলছে সেটির রায় না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। তাই হাইকোর্ট যে নির্দেশনা (কোটা বহাল করে) দিয়েছিলেন সেটি অচল, সেটি এখন নেই।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ যখন অপারগ হয়ে যায়, তখনই অ্যাকশনটা আসে। যখন অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংস করতে যায়, যখন জান-মালের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়, অনৈতিক কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেগুলো করলে পুলিশ বসে থাকবে না বলেও জানান তিনি।
দেশের স্বাস্থ্য খাতে দীর্ঘ দিন থেকে যেসব সমস্যা রয়েছে তা নিরসনে স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে উল্লেখ করে যেসব সুপারিশ এখনই বাস্তবায়নযোগ্য তা দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ সোমবার স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্কার কমিশন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার নিকট তাদের প্রতিবেদন পেশ করার পর তিনি এই নির্দেশ প্রদান করেন।
স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্কার কমিশনের এই প্রতিবেদনকে যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতের সমস্যাগুলো বহুদিনের সমস্যা, এর মাধ্যমে আমরা যদি এসব সমস্যার সমাধান করতে পারি তা হবে যুগান্তকারী ঘটনা।’
তিনি বলেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যেসব সুপারিশ আশু বাস্তবায়নযোগ্য তা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের এখনি মনোযোগী হতে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘একটি বড় সমস্যা হচ্ছে ডাক্তারের সংকট, আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে ডাক্তার থাকলেও যেখানে দরকার সেখানে ডাক্তার নেই। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে।’
চিকিৎসা ব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণের উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা ছাড়া সমস্যা নিরসন সম্ভব নয়। চিকিৎসকদের যেখানে পোস্টিং সেখানে থাকাটা নিশ্চিত করতে হবে।’
কমিশন প্রধান জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খানের নেতৃত্বে এই কমিশনের সদস্যরা তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার নিকট হস্তান্তর করেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য ইনফরমেটিকস বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জাকির হোসেন, অধ্যাপক লিয়াকত আলী, ডা. সায়েবা আক্তার, সাবেক সচিব এম এম রেজা, ডা. আজহারুল ইসলাম, ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন, ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, ডা. আহমেদ এহসানুর রাহমান এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি উমায়ের আফিফ।
স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্কার কমিশনের অন্য দুই সদস্য হলেন ডা: নায়লা জামান খান, ডা: মোজাহেরুল হক।
বাংলাদেশে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে সংস্কারমূলক এজেন্ডা বাস্তবায়নে সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেছেন, ‘নির্বাচন কবে হবে—সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া বাংলাদেশের নিজস্ব বিষয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের চাপ নেই কোনো নির্দিষ্ট তারিখে নির্বাচন আয়োজনের।’
সোমবার (৫ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, ‘নির্বাচনের সময় নির্ধারণ বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত। আমরা এই রাজনৈতিক রূপান্তরকে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পথে অগ্রগতি হিসেবে দেখি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো নির্দিষ্ট তারিখ নিয়ে মতামত নেই।‘
ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে ডিক্যাব সভাপতি একেএম মঈনউদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুজ্জামান মামুনও বক্তব্য রাখেন।
মিলার বলেন, ‘আমরা অপেক্ষা করছি, রাজনৈতিক দলগুলো এবং অন্তর্বর্তী সরকার একটি সুস্পষ্ট ও অগ্রাধিকারভিত্তিক সংস্কার তালিকায় একমত হবে। আমাদের কাছে সেই অভিজ্ঞতা আছে, আর্থিক সহায়তা আছে, এবং আছে রাজনৈতিক সদিচ্ছা।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস সম্প্রতি বলেছেন, ‘মানুষ এখনো মনে করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই সঠিক উত্তর। তবে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে দেশের ইতিহাসে সর্বোত্তম নির্বাচন আয়োজন করতেই হবে।’
রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, ‘এই সরকারকে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া উচিত যেন তারা প্রতিশ্রুত সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করতে পারে।’
জুলাই-আগস্টের সহিংসতা প্রসঙ্গে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই সময়ে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রায় এক হাজার ৪০০ জন নিহত হয়েছেন এবং হাজার হাজার আহত হয়েছেন।
এসব বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবস্থান তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, ‘জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের কাজকে আমরা সমর্থন করি। এসব ভয়াবহ অপরাধের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার যেন যথাযথভাবে প্রক্রিয়ায় সুরক্ষিত হয় - সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
নারীর অধিকার বিষয়ে রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, ‘পুরুষ ও নারীর সমতা ইউরোপের মৌলিক মূল্যবোধ। নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে পর্যালোচনা করা উচিত। আমরা চাই, রাজনৈতিক দলগুলো এই সুপারিশগুলো বাস্তবে রূপ দিক।’
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে এক প্রশ্নে রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, ‘বাংলাদেশ অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু সীমান্তের ওপারে এখনো সহিংসতা চলছে। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি সংকট।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় বাংলাদেশের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছেছি—রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়া অবশ্যই নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও স্বেচ্ছামূলক হতে হবে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়ন রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ২০২৫ সালে ৩২ মিলিয়ন ইউরো বরাদ্দ দিয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ইইউ এবং এর সদস্য দেশগুলো মিলে প্রায় ১ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা দিয়েছে।
দেশের সব নাগরিকের জন্য বিনামূল্যে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে এবং এটি সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে যুক্ত করার সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন।
একইসঙ্গে, স্বাস্থ্যখাতে জাতীয় বাজেটের ১৫ শতাংশ বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব দিয়েছে এই কমিশন। সোমবার (৫ মে) ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের এই চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র স্থাপন, সেখানে চিকিৎসক নিয়োগ, প্রয়োজনীয় ওষুধ বিনামূল্যে সরবরাহ এবং অন্যান্য ওষুধ সুলভ মূল্যে সরবরাহের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, নিম্নমানের চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার সুপারিশও করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের চেয়ারম্যান ও জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান সূচনা বক্তব্য রাখেন। প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন।
কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন, ডা. আবু মোহাম্মদ জাকির হোসেন, অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী, অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, অধ্যাপক ডা. সায়েরা আখতার, এম এম রেজা, ডা. আজহারুল ইসলাম, ডা. আহমেদ আহসানুর রহমান ও ওমাইর আফিফ।
এর আগে সোমবার সকাল ১১টায় কমিশনের পক্ষ থেকে প্রতিবেদনটি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পেশ করা হয়।
২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বর স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে ১২ সদস্যবিশিষ্ট স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান।
স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্কার কমিশন আজ সোমবার সকাল ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বাসসকে এ তথ্য জানান।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তা না পেলেও একটি ম্যানেজেবল এবং বাস্তবসম্মত বাজেট দেওয়া হবে।
রোববার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট (দক্ষিণ, মধ্য ও পশ্চিম এশিয়া) মি. ইংমিং ইয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসে আমাদের ইকোনমির (অর্থনীতির) অবস্থা জানতে চেয়েছিলেন। আমরা বলেছি যে, ইকোনমির অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। আমাদের মাইক্রো ইকোনমিতে অনেক উন্নতি হয়েছে। ব্যাংকিং খাতে অনেক সংস্কার করেছি, সবচেয়ে বড় বিষয় যেটা সেটি হলো ‘ট্রেড’। এ বিষয়ে বেসরকারি খাতে একটি সামিট অনুষ্ঠিত হবে।
আইএমএফ ঋণ পেতে দেরি হওয়ায় এডিবির বাজেট সহযোগিতায় কোনো প্রভাব ফেলবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাজেট সাপোর্টের বিষয়টা (আইএমএফ) দেখে, সেখানে তারা মাইক্রো ইকোনমির বিষয় জানতে চেয়েছে। এ বিষয় আমরা আলোচনা করছি, আশা করছি সমাধান হয়ে যাবে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে এডিবি সন্তুষ্ট কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এডিবি বলেছে- অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের অর্থনীতি ভালো করছে, এ ক্ষেত্রে আমরা আশাবাদী আমাদের অর্জন নিয়ে তারা খুশি। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের জন্য আমরা চেষ্টা করছি, এটাও তারা জানে। আমরা তাদের বলেছি, গ্র্যাজুয়েশনের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। বাংলাদেশের উন্নয়নে এডিবি খেয়াল রাখছে, তারা আমাদের প্রকল্প সহায়তাসহ ব্যাংকিং খাত ও এনবিআরে যে সংস্কারগুলো আছে সেগুলোতে সহায়তা করবে।
প্রকল্প সহায়তার চেয়ে আমাদের বেশি প্রয়োজন বাজেট সাপোর্ট, সে ক্ষেত্রে এডিবিকে শর্ট টার্মে কোনো সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন কি না? এ প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজেট সাপোর্টের একটা বিষয় আমরা আশ্বস্ত হয়েছি, তাদের সফট ল্যান্ডিংয়ের উইন্ডো আস্তে আস্তে উন্মোচিত হচ্ছে। তবে আমরা এটাতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি, বাজেট সহায়তায় আমরা তাদের বলেছি ‘ওসিএফ’ ফান্ড থেকে সহায়তা করতে। কিন্তু তারা বলেছে এ ফান্ড তো লিমিটেড, তবে আমরা এটা দেখব।
উপদেষ্টা বলেন, আমাদের মতো অভ্যন্তরীণ বিষয় বাজেট সাপোর্টের জন্য আমরা কর বাড়াচ্ছি, করের পরিধি বাড়াচ্ছি। বাজেট সাপোর্ট নিয়ে যদি আইএমএফ অযৌক্তিক কিছু শর্ত দেয়, তাহলে আমরা সেটি দেখব। আমাদের মূল ফোকাস হলো বাজেটে খরচ কমানো; দক্ষতা বাড়ানো। আমরা যদি আইএমএফ ও এডিবির সাপোর্ট নাও পাই তাও বাজেট দেব।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আগামী মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় লন্ডন থেকে ঢাকা পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কাতারের আমিরের দেওয়া বিশেষ বিমানে (এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) করে দেশে ফিরবেন তিনি।
আজ রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ সময়ে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে দলের আয়োজনের কথা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন তিনি।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে খালেদা জিয়ার গুলশান অ্যাভিনিউ বাসভবন পর্যন্ত বিএনপির অভ্যর্থনা কর্মসূচি এবং এর সহযোগী সংগঠন ও নেতাদের অবস্থান নির্ধারণ নিয়েও কথা বলেন বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
দলীয় সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া এবং তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি সোমবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় (লন্ডন সময়) হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে রওনা হবে। বিমানে সঙ্গে থাকবেন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান এবং তার প্রয়াত ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান এবং তার মেডিকেল টিমের সদস্যরা।
এটি স্থানীয় সময় সোমবার রাত ১টা ৩০ মিনিটে দোহায় পৌঁছাবে এবং সেখানে যাত্রাবিরতির পর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০ টায় ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
বিএনপির পরিকল্পনা অনুসারে, উত্তর বিএনপি থাকবে বিমানবন্দর থেকে লা মেরিডিয়ান পর্যন্ত, ছাত্রদল লা মেরিডিয়ান থেকে খিলক্ষেত পর্যন্ত, যুবদল খিলক্ষেত হোটেল রেডিসন পর্যন্ত, দক্ষিণ বিএনপি রেডিসন হোটেল থেকে আর্মি স্টেডিয়াম, স্বেচ্ছাসেবক দল আর্মি স্টেডিয়াম থেকে বনানী কবরস্থান পর্যন্ত, কৃষক দল বনানী কবরস্থান থেকে কাকলী মোড় পর্যন্ত, শ্রমিক দল কাকলী মোড় থেকে বনানী শেরাটন হোটেল পর্যন্ত অবস্থান করবেন।
এছাড়া, ওলামা দল, তাঁতীদল, জাসাস, মৎস্যজীবী দল, মুক্তিযোদ্ধা দল, সব পেশাজীবী সংগঠন, মহিলা দল, জাতীয় নির্বাহী কমিটির নেতা এবং বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা নির্ধারিত রুটে অবস্থান নেবেন।
নেতাকর্মীদের দলীয় পতাকা এবং জাতীয় পতাকা হাতে রাস্তার একপাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান রিজভী। তিনি বলেন, চেয়ারপারসনের মোটরশোভাযাত্রার সাথে হেঁটে বা মোটরবাইকে করে মিছিল করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ থাকবে।
এরআগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, কাতারের আমিরের দেওয়া বিশেষ বিমানে (এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) করে দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘যে বিমানে তিনি (খালেদা জিয়া) গেছেন, কাতারের রয়েল অ্যাম্বুলেন্স, সেই অ্যাম্বুলেন্সের ফ্লাইটেই তিনি ফিরে আসবেন। সময়টা আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। সময়টা নির্ভর করবে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর। যখনই নিশ্চিত হব, আবার গণমাধ্যমের মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌঁছে দেব।’
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া লন্ডনে যান। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার কথা জেনে রাজকীয় বহরের বিশেষ বিমান দিয়েছেন। ওই বিশেষ বিমানে (বিশেষ ধরনের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) করে তিনি লন্ডনে যান।
সেখানকার লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি ২৫ জানুয়ারি থেকে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় রয়েছেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানিয়েছেন, এবার ২০ লাখ কোরবানির পশু উদ্বৃত্ত থাকবে, কোরবানির পশু আমদানি করা লাগবে না।
তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো এবার কোরবানির পশু সরবরাহের জন্য উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হবে। তবে ট্রেন ও নৌপথে পশু সরবরাহের ক্ষেত্রে প্রাণী কল্যাণ আইন, ২০১৯ মেনে চলতে হবে।
আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর চাহিদা নিরূপণ, সরবরাহ ও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোরবানির পশুর অবাধ চলাচল ও পরিবহন নিশ্চিতকল্পে সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আজ রোববার তিনি একথা বলেন।
ফরিদা আখতার বলেন, স্টেরয়েড ও হরমোন ব্যবহার রোধে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে খামারিদের প্রশিক্ষণ চলমান রয়েছে এবং জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের যৌথ সহযোগিতায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত থাকবে। ইতোমধ্যে ৫৩ হাজার ২৬৩টি খামার পরিদর্শন করে খামারিদের স্টেরয়েড/হরমোনের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
তিনি জানান, কোরবানির পশুবাহী ট্রাক ছিনতাইরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে পশু পরিবহন নির্বিঘ্ন করতে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (বিজিবি ও বাংলাদেশ পুলিশ), জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সহযোগিতা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (হট লাইন-১৬৩৫৮) চালু থাকবে। যেকোনো সমস্যা সমাধানে ফোন করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ বছরে কোরবানিযোগ্য হৃষ্ট-পুষ্টকৃত গবাদিপশুর মধ্যে ৫৬ লাখ ২ হাজার ৯০৫টি গরু-মহিষ, ৬৮ লাখ ৩৮ হাজার ৯২০টি ছাগল-ভেড়া ও ৫ হাজার ৫১২টি অন্যান্য প্রজাতিসহ সর্বমোট ১ কোটি ২৪ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৭টি গবাদিপশুর প্রাপ্যতা আশা করা যাচ্ছে।
এ বছর প্রায় ২০ লাখ ৬৮ হাজার ১৩৫টি গবাদিপশুর উদ্বৃত্ত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে শনিবার (৩ মে) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। এ সময়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৩ জন।
রবিবার (৪ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছে ৫৩ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৪ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে আরও ৩৯ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৬০ দশমিক ০ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ০ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৪ মে পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২ হাজার ৭০৭ জন। এর মধ্যে ৬০ দশমিক ৮ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৯ দশমিক ২ শতাংশ নারী।
হজে যেতে আগ্রহী ব্যক্তিদের সোমবার (৫ মে) দুপুর ১২টার মধ্যে ভিসার আবেদন করার আহ্বান জানানো হয়েছে। অন্যথায় হজে যেতে পারবেন না হজযাত্রীরা।
লিড বা সমন্বয়কারী এজেন্সিগুলোর কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এ কথা জানিয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এখন পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি হজযাত্রীর ভিসা হয়নি বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
শনিবার (৩ মে) দুপুর বারোটায় সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো ক্ষুদে বার্তার বরাত দিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যেসব হজযাত্রীর পাসপোর্ট, বায়োমেট্রিক, হোটেল বা বাড়ি ও ফ্লাইটের তথ্য দিয়ে এখনও ভিসার আবেদন দাখিল করা হয়নি, তাদেরকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অর্থাৎ ৫ মে দুপুর ১২টার মধ্যে ভিসার আবেদন নুসুক মাসার প্লাটফর্মে এ দাখিল করতে হবে।
এরপরে প্ল্যাটফর্মটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। বন্ধ করে দেওয়ার পর আর কোনোভাবেই ভিসার আবেদন দাখিল করা যাবে না। ফলে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে যেসব হজযাত্রীর ভিসার আবেদন দাখিল করা হবে না, তারা চলতি বছরে হজে যেতে পারবেন না।
এ কারণে সোমবার দুপুর ১২ টার মধ্যে পাসপোর্ট, বায়োমেট্রিক, হোটেল বা বাড়ি ও ফ্লাইটের তথ্যসহ ভিসার আবেদন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব লিড এজেন্সিকে অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে।
এতে আরও বলা হয়, হজ এজেন্সির অবহেলার কারণে কোনো হজযাত্রীর ভিসার আবেদন ৫ মে দুপুর ১২টার মধ্যে দাখিল করা না হলে তার দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট লিড এজেন্সিকেই বহন করতে হবে।
এছাড়া, তাদের অবহেলার কারণে কোন হজযাত্রীর হজে যাওয়া অনিশ্চিত হলে ওই সমন্বয়কারী এজেন্সি বা লিড এজেন্সির বিরুদ্ধে ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন-২০২১’ ও ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০২২’ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৫ জুন হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয় ২৯ এপ্রিল এবং শেষ হবে ৩১ মে।
এবার বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১০০ জন হজযাত্রী হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যাবেন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার ২০০ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮১ হাজার ৯০০ জন হজ পালন করবেন।
ইতোমধ্যে সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ২২,২০৩ হজযাত্রী। চলতি বছর হজ পালনের জন্য এখন পর্যন্ত সর্বমোট ২২ হাজার ২০৩ জন (ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ) হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। অন্যদিকে দু'জন হজযাত্রী মারা গেছেন।
রোববার (৪ মে) সকালে হজ পোর্টালে প্রকাশিত পবিত্র হজ-২০২৫ প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়, সৌদি আরবে যাওয়া সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী ৪ হাজার ৫৬৪ জন। বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী ১৭ হাজার ৬৩৯ জন। মোট হজ ফ্লাইট সংখ্যা ৫৪টি।
সর্বশেষ ২ মে হজযাত্রী ফরিদুজ্জামান (৫৭)। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হলো দুজন।
বাংলাদেশ পুলিশের কর্মকর্তাদের সাথে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের করমর্দনের ছবিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে ড. ইউনূসের করমর্দনের ছবি বলে ভারতীয় মিডিয়ার দাবী বিভ্রান্তিকর।
বাংলাদেশে চলমান গুজব এবং ভুয়া খবর, অপতথ্য প্রতিরোধ এবং জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ায় দায়িত্বে নিয়োজিত রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে এ তথ্য উঠে এসেছে।
রিউমার স্ক্যানার কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘গতকাল ৩ মে ভারতীয় গণমাধ্যম আজতক বাংলা এক ভিডিও প্রতিবেদনে একটি ছবি দেখিয়ে দাবি করেছে, ছবিতে ড. ইউনূসের সাথে করমর্দন করা ব্যক্তিরা সেনা আধিকারিক (সেনা কর্মকর্তা)। উপস্থাপক সে সময় দাবি করেন, ‘তবে পোশাক দেখে মনে হচ্ছে না তারা কেউ বাংলাদেশের সেনা। কেননা বাংলাদেশের সেনার পোশাক এইরকম নয়।.. এরা কি তাহলে অন্য কোনো দেশের সেনা আধিকারিক? তাহলে বাংলাদেশে কী করছেন? এরা কি পাকিস্তানি সেনা আধিকারিক?’
ভারতীয় মিডিয়ায় প্রচার হওয়া বিষয়টি রিউমার স্ক্যানারের নজরে আসলে তার ফ্যাক্টচেক করা হয়।
রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিতে ড. ইউনূসের সাথে করমর্দন করা ব্যক্তিদের কেউই পাকিস্তান বা বাংলাদেশের সেনা কর্মকর্তা নয় বরং এরা সকলেই বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তা। প্রকৃতপক্ষে, গত ২৯ এপ্রিল পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ এর উদ্বোধনের সময়ের ছবি এটি।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের ফেসবুক পেজ ও ওয়েবসাইটে গত ২৯ এপ্রিল প্রকাশিত একই ছবি পাওয়া যায়। জানা যায়, এটি ‘পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫’ এর উদ্বোধন ও পদক অনুষ্ঠানের ছবি। সে সময় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম-সেবা) গ্রহণ করেন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ এর অ্যাডিশনাল আইজিপি জনাব মো. ছিবগাত উল্লাহ, পিপিএম।
রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে বাংলাদেশ পুলিশের ফেসবুক পেজে একইদিনের একাধিক ছবিতেও একই পোশাকে পুলিশ কর্মকর্তাদের দেখা যায়। এমনকি পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমকেও একই পোশাকে ড. ইউনূসের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
বিষয়টি নিয়ে আরো জানতে পুলিশ সদর দপ্তরে যোগাযোগ করা হলে এআইজি (মিডিয়া) এনামুল হক সাগর রিউমার স্ক্যানারকে জানান, এখানে সকলেই বাংলাদেশ পুলিশের সদস্য। এটা আমাদের আনুষ্ঠানিক পোশাক যা ‘সামার টিউনিক’ নামে পরিচিত। পুলিশ সপ্তাহে আমরা আনুষ্ঠানিক পোশাক পরে থাকি। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যাদের সাথে এখানে করমর্দন করছেন, তারা সকলেই বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তা।
ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান টিম জানায়, বাংলাদেশ পুলিশের সাথে ড. ইউনূসের করমর্দনের ছবিকে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর
সদস্যদের সাথে করমর্দন বলে ভারতীয় মিডিয়া অপপ্রচার চালাচ্ছে, যা রিউমার স্ক্যানারের ফ্যাক্ট চেকের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে।
শুধুমাত্র বিগত এপ্রিল মাসেই ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ২৯৬টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে বাংলাদেশের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার।
রিউমার স্ক্যানার জানায়, ভারতীয় বিভিন্ন মিডিয়ায় বাংলাদেশকে নিয়ে ভূলতথ্য, অপতথ্য, বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার সম্প্রতি বেড়েছে। ফ্যাক্ট চেক করে এসব বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার শনাক্ত করছে রিউমার স্ক্যানার।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ হ্যাকড হয়েছে। এখন এটির রক্ষণাবেক্ষণ চলছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
আজ সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে আরও বলা হয়, মন্ত্রণালয় লক্ষ্য করেছে কিছু সময়ের জন্য মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজে অনুমোদনহীন অপ্রাসঙ্গিক কিছু কনটেন্ট শেয়ার করা হয়েছে। যা মন্ত্রণালয়ের নীতির পরিপন্থী। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রচারের ক্ষেত্রে এই ফেসবুক পেজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ফেসবুক পেজের কোনো পোস্ট, বার্তা বা কনটেন্টে কেউ যেন বিশ্বাস বা শেয়ার না করে সে বিষয়ে সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়।
এদিকে, মন্ত্রণালয়ের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ও প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সকল সরকারি হালনাগাদ তথ্য ও বার্তা প্রদান অব্যাহত থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।
রাজধানীর পূর্বাচলে দশ কাঠার প্লট জালিয়াতির ঘটনায় দুদকের দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জনের জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৮ মে দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আজ ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালতে আসামিদের গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিল না করায় বিচারক আজ নতুন এদিন ধার্য করে আদেশ দেন।
এর আগে ১০ এপ্রিল ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে শেখ হাসিনা-পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৪ মে দিন ধার্য করেন আদালত।
শেখ হাসিনা ও পুতুল ছাড়াও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া অপর ১৬ আসামি হলেন-জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউকের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), মো. নুরুল ইসলাম, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান ও হাবিবুর রহমান, তদন্ত প্রাপ্তে আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ও সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
রাজধানীর পূর্বাচলে দশ কাঠার প্লট জালিয়াতির ঘটনায় চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া বাদী হয়ে শেখ হাসিনা-পুতুলসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ তদন্ত প্রাপ্তে আরো দুই আসামিসহ শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া। চার্জশিটে সাক্ষী করা হয়েছে ১৬ জনকে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় নিজের ও পরিবারের অন্য সদস্যদের মালিকানায় ঢাকা শহরে রাজউকের এখতিয়ারাধীন এলাকায় বাড়ি বা ফ্ল্যাট বা আবাসন সুবিধা থাকার পরও সেটি গোপন করে পূর্বাচল নতুন শহর আবাসন প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত আইন, বিধি ও নীতিমালা ও আইনানুগ পদ্ধতি লঙ্ঘন করে মা শেখ হাসিনার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। সরকারের সর্বোচ্চ পদাধিকারী ও পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে বহাল থাকা অবস্থায় তার ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে প্রকল্পের বরাদ্দ বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত গণকর্মচারীদের প্রভাবিত করেছেন।
আইনমতে বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও পরস্পর যোগসাজশে নিজেরা লাভবান হয়ে ও অন্যকে লাভবান করার উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নং সেক্টরের ২০৩নং রাস্তার ১৭ নম্বর প্লট সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে বরাদ্দ দিয়েছেন। সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের প্লটের বাস্তব দখলসহ রেজিস্ট্রি মূলে প্লট গ্রহণ করেন। প্রতারণামূলক অবৈধ পারিতোষিক দেওয়া ও নেওয়া এবং অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ ও বেআইনি অনুগ্রহ প্রদর্শনের মাধ্যমে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে দণ্ডবিধি ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে দণ্ডযোগ্য অপরাধ করেছেন।
বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার গ্রিগোরিভিচ খোজিন।
আজ রোববার সকাল ১১টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
এই সাক্ষাতের সময়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।
ঘন্টাব্যাপী বৈঠকে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়ন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
সাক্ষাতের পরে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে যে সম্পর্ক, সেটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা কি কি করতে পারি- তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা কয়েকটি এরিয়াতে... তাদের তো যথেষ্ট ইন্টারেস্ট রয়েছে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য... বিশেষ করে ট্রেডের বিষয়ে যথেষ্ট ইন্টারেস্ট আছে।’
বিএনপি’র এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে তাদের বিস্তর আগ্রহ রয়েছে। কত তাড়াতাড়ি জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সে সম্পর্কে তারা জানতে চেয়েছেন।’
রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের উল্লেখ করে আমির খসরু বলেন, রাশিয়া একটি এনার্জি রিচ কান্ট্রি। এই ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে কি ধরনের সহযোগিতা হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘কালচারালি রাশিয়া অনেক সমৃদ্ধ ঐতিহাসিকভাবে। সেই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে কিভাবে সহযোগিতা হতে পারে- তা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’