চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রংপুর, বগুড়া ও রাজশাহীতে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রংপুর, বগুড়া ও রাজশাহীতে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষে মঙ্গলবার ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে পাঁচজনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। এ পরিস্থিতে দেশের কয়েকটি জেলায় বিজিবি মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিল সরকার।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে গত রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেন ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’
প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্যে ক্ষিপ্ত হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। তারা ধরে নিয়েছেন ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ তাদেরকেই বলা হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে এবং কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে রোববার মধ্যরাত থেকে আন্দোলনে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
গতকাল সোমবার দুপুর থেকে আবারও বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগ। বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত থেমে থেমে চলা সংঘর্ষে ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। রাত ১০টার পর আন্দোলনকারীরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন এবং সারা দেশের সব পর্যায়ের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে তাদের সমর্থনে রাস্তায় নামার আহ্বান জানান।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ২ হাজার ৫৫০টি মামলা করেছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, অভিযানকালে ৪৩৯ টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১১১টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে। সোমবার ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা দায়ের করে ।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।‘
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে (ডাকসু নির্বাচন) এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনকে জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলা যাবে না। ডাকসু, জাকসুসহ যেসব নির্বাচন হচ্ছে এগুলো জাতীয় নির্বাচনের মডেল হিসেবে বিবেচিত হবে।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সংবাদিকদের এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
এর আগে তার সভাপতিত্বে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ডাকসু নির্বাচন ভালোভাবে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা অবনতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি। গণমাধ্যমেও অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ প্রচার হয়নি। এটা আনন্দের খবর।
উপদেষ্টা বলেন, ডাকসু, জাকসুসহ যেসব নির্বাচন হচ্ছে এগুলো জাতীয় নির্বাচনের মডেল। ডাকসুর পর জাকসুসহ যে কয়েকটা নির্বাচন হবে সেগুলোও ভালো পরিবেশে হবে বলে আশা করছি।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করা সম্ভব হবে।
প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময় অনুযায়ী ফেব্রুয়ারিতে একটি উৎসবমুখর নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
“তোমার বাড়ির রঙের মেলায় দেখেছিলাম বাইস্কোপ, বাইস্কোপের নেশায় আমায় ছাড়ে না” প্রেমিকের বাড়িতে বাইস্কোপ দেখার এমন আকুতি কোন প্রিয়া এখন আর করে না। বাইস্কোপও নেই, সেই বাইস্কোপওয়ালাও নেই। বাইস্কোপ দেখার আর কোনো আকুতি মিনতিও নেই। বাইস্কোপওয়ালারা এখন অন্য পেশায় জীবিকা নির্বাহ করে।
“ওই দেখা যায়, কেমন মজা/তাকদি না দিন জাবেদের ঘোড়া চইল্যা গেলো/ইলিয়াছ কাঞ্চণ আইস্যা গেলো/ চম্পাকে নিয়ে চইল্যা গেলো। আরে আরে কেমন মজা/ দেখেন তবে তক্কা মদিনা/তারপরেতে মধুবালা/এক্কাগাড়ীতে উত্তম কুমার আর সুচিত্রা সেন।” এরকম সুরের ধারা বর্ণনা দিয়ে গ্রাম্য জনপদে বাইস্কোপ দেখাতেন বাইস্কোপওয়ালারা। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে- রূপগঞ্জে এখন আর এমন মজার বাইস্কোপ দেখা যায় না। ছোট্টবেলায় হাট-বাজারে, মেলায় দেখা যেতো বাইস্কোপ। আধুনিক বিজ্ঞানের মর্ডাণ সময়ে সেলুলয়েডের রঙিন যুগে এখন আর চোখেই পড়ে না এ মজার বাইস্কোপ। এখন শুধুই স্মৃতি। হাটবাজার মেলা ছাড়াও বাইস্কোপওয়ালারা মাথায় করে গ্রামে গ্রামে, বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বাইস্কোপের বাক্সটা নিয়ে মানুষকে ছবি দেখাত। তার হাতে থাকতো বাজনা বাজানোর জন্যে একটা বিষেশ ধরনের বাদ্যযন্ত্র। যে কারো বাড়িতে পৌছেই সেই বাজনা বাজিয়ে আওয়াজ দিত। বলতে শোনা যেত বাইস্কোপ দেখবেন গো বাইস্কোপ। তখন আশেপাশের ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা মা-দের কাছে কাকুতি মিনতি করতো ওই বাইস্কোপ দেখার জন্যে। মায়েরা তখন বিরক্ত হয়ে ধানের গোলা থেকে বা চালের মটকা থেকে এক সের ধান বা চাল দিতেন। আর পাবি না কিন্তু এও বলে দিত। ছেলে মেয়েরাও রাজী হয়ে বলতো হ মা আর নিমুনা, আর দেখুম না। এই বলেই ধান নিয়ে ছুটে যেতো বাইস্কোপওয়ালার কাছে। বাইস্কোপওয়ালা তার ব্যাগের মতো থলেতে ধান ঢেলে রেখে দিত। ধান নিতে দেরি, আর বাইস্কোপের কাছে হাঁটু গেড়ে বসতে দেরি হতো না।
পর্দা ওঠলো বাইস্কোপের, মুখের মাঝে দুই হাত দিয়ে চুপি দিয়ে দেখতে থাকতো বাইস্কোপ। বাইস্কোপওয়ালা এক হাতে বাইস্কোপের রিল ঘুরাতে থাকতো আর বলতে থাকতো কি যাচ্ছে আর সামনে কি আসছে। বলতে শোনা যেতো কি সুন্দর দেখা গেলো আলোমতি আইস্যা গেলো, কি সুন্দর দেখা গেলো প্রেমকুমার আইস্যা গেলো ইত্যাদি। বর্তমান সেলুলয়েডের রঙিন ফিতা, অনলাইন আর ইন্টানেটের যুগে এখন আর সেই মনোরম বাইস্কোপ দেখাই যায় না। ছোট্টবেলার সেই বাইস্কোপ এখন শুধুই স্মৃতি। মাত্র দশ পয়সা দিয়ে অথবা এক হেড় বা এক পট ধান বা চাল দিয়ে দেখা যেতো এই বাইস্কোপ।
খামারপাড়া গ্রামের বৃদ্ধজন আওয়াল আলী বলেন, কি হবে রে বাবা এসব ঘেঁটেগুঁটে। যা হারাবার তা হারিয়েই যাবে। যা চলে যাবার তা রুখবে সাধ্য কার? ধরে রাখবে কে? প্রযুক্তির যে জোয়ার। না হারিয়ে যাবে কোথায়? উপায় নাইরে বাজান, উপায় নাই। শিলপাটাটা ধারকাটাওয়ালা, ঘোলওয়ালা, কটকটিওয়ালা, কুলুরা, বেদেরা আজ কোথায় হারিয়ে গেলোগো বাবা? সবাই হয়তো আছে। শুধু পেশাটা বদলে ফেলেছে। আবার হয়তো অনেকেই মরে গেছে।
কিছুই করার নাই। মানুষের জীবনাচরন বদলে গেছে। তাই তার অনুষঙ্গ হারিয়ে যাবে এঁটাইতো স্বাভাবিক। ঈদের আনন্দ, হিন্দুদের পূজা পার্বন আর বিভিন্ন মেলায় দেখা যেত বাইস্কোপ। এগুলো এখন শুধুই স্মৃতি। ছোট্ট শিশু থেকে আরম্ভ করে বুড়োরাও দেখতো একটা বক্সের মধ্যে সুন্দর করে পোস্টার সাজানো বাইস্কোপ। গ্রামাঞ্চলে ভ্রাম্যমান সিনেমা হলের ছবি নামে পরিচিত । গাঁয়ের ছেলে-বুড়োরা ছুটত তার পেছন পেছন। আবার কেউ কেউ তাকে ছবিওয়ালাও বলত। হাতে থাকতো তার একটা ডুগডুড়ি।
বাজাতে বাজাতে গ্রাম্য মেঠো পথ ধরে হাঁটতো। দল বেঁধে সবাই একখানে জড়ো হতো গাঁয়ের শিশু-কিশোর ও কুলবধুরা। তারপর শুরু হতো সিনেমা। তার আগে অবশ্যই টিকিট কিনে নিতে হতো। বক্সের চারখানা ফুটোয় আট জোড়া চোখ লাগিয়ে সেই স্বপ্নের সিনেমা দেখতো গাঁও-গেরামের মানুষরা। সে সবই এখন সূদুর অতীত। কারো মনে পড়ে, কারো পড়ে না। এখন আর দেখা যায় না সেই ছবিওয়ালাকে। কালেরগর্ভে কোথায় যে হারিয়ে গেলো তারা তা বর্তমান প্রজন্মের কেউ জানেনা।
চাকরিজীবি ছালাম মুল্লা বলেন, আমি নিজে দেখেছি ওই বাইস্কোপ। দুপুরে বাড়ির উঠানে বক্সটা নিয়ে বসত। বাড়ির সবাই পর্যায়ক্রমে দেখতাম। মজাই লাগতো। সেই ছবিওয়ালা আজ আর নেই। আস্তে আস্তে সব বিলীন হয়ে যাবে আমাদের অতীতের সব ঐতিহ্য। আমরা এখন আকাশ সংস্কৃতির ঘেরাটোপে বন্দী।
রূপগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ভুইয়া পরিবারের সন্তান ও নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান দপিু ভুইয়া বলেন, ৩০ বছর আগেও বাইস্কোপওয়ালাকে আমার গ্রাম রূপসীতে ছবি দেখাতে আসতে দেখেছি। কতই না কান্ড করতাম এ বাইস্কোপ দেখার জন্যে। বাবা-মায়ের অনেক বকুনি খেয়েও বাইস্কোপ দেখতাম। আর কতই না মজা করতাম , আনন্দ পাইতাম এ বাইস্কোপ দেখে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। সভ্যতা আমাদের অনেক কিছু উপহার দিয়েছে। কেড়েও নিয়েছে বাইস্কোপের মতো আরো অনেক কিছু।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরিফুল এম খানকে যুক্তরাষ্ট্রের আয়রন ডোম প্রকল্পের নেতৃত্বে নিয়োগ দিয়েছে পেন্টাগন। সম্প্রতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে পদোন্নতি পাওয়ার পর তিনি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মার্কিন বিমানবাহিনীর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
রোববার পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও টিভির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘গোল্ডেন ডোম’ নামে পরিচিত এই কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা কর্মসূচির পরিচালক হিসেবে শরিফুল এম খান এর নীতি, কৌশল এবং প্রযুক্তি উন্নয়নের সবকিছু তত্ত্বাবধান করবেন। এই প্রকল্পটি যুক্তরাষ্ট্রের আকাশ প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত জুন মাসে মেজর জেনারেল এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে পদোন্নতির জন্য যেসব সামরিক কর্মকর্তাকে মনোনীত করেছিলেন, শরিফুল খান তাদের মধ্যে অন্যতম। গত ১৩ জুন ওই ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ১৫ জন সামরিক কর্মকর্তাকে মেজর জেনারেল পদে এবং ৫৫ জনকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে পদোন্নতির জন্য মনোনীত করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম. ওসমান সিদ্দিক গত ২০ আগস্ট একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে জানান যে, নতুন পদে শরিফুল এম. খানের অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
১৯৯৭ সালে ইউএস এয়ার ফোর্স একাডেমি থেকে স্নাতক সম্পন্ন করা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খান মহাকাশ প্রযুক্তি, স্যাটেলাইট অপারেশন এবং জাতীয় গোয়েন্দা অভিযানে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। এর আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্র এবং মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন এবং একাধিক সামরিক সম্মাননা পেয়েছেন।
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে এ বছর ভারতে ১ হাজার ২০০ টন ইলিশ মাছ রপ্তানি করবে বাংলাদেশ। গতকাল সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ–সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে। ভারতে শর্তসাপেক্ষে ইলিশ রপ্তানির নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রতি বছরই ইলিশ রপ্তানি করে বাংলাদেশ। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের ইলিশের চাহিদা বেশি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, ১১ সেপ্টেম্বর অফিস চলাকালে হার্ড কপিতে আবেদন করতে পারবেন আগ্রহী রপ্তানিকারকেরা। আবেদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, ইআরসি, আয়কর সার্টিফিকেট, ভ্যাট সার্টিফিকেট, বিক্রয় চুক্তিপত্র, মৎস্য অধিদপ্তরের লাইসেন্সসহ সংশ্লিষ্ট দলিলাদি দাখিল করতে হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশে আরও বলা হয়, প্রতি কেজি ইলিশের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য সাড়ে ১২ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করেছে সরকার। ইতোমধ্যে যারা আহ্বান ব্যতিরেকেই আবেদন করেছেন, তাদেরও নতুনভাবে আবেদন দাখিল করতে হবে।
গতবারের চেয়ে অর্ধেক ইলিশ রপ্তানির অনুমতি
গত বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রথমে ভারতে তিন হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে শেষ পর্যন্ত ২ হাজার ৪২০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল। এবার এর অর্ধেক ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হলো। গতবার সব মিলিয়ে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে।
অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে বেশি ইলিশ রপ্তানি না করা, অনুমতি কোনোভাবেই হস্তান্তর না করা এবং অনুমোদিত রপ্তানিকারক ছাড়া ঠিকায় (সাব-কন্ট্রাক্ট) রপ্তানি না করার শর্তও থাকছে। বলা হয়েছে, সরকার যেকোনো সময় রপ্তানি বন্ধ করতে পারবে।
দুদকের মামলার আসামি ও অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে চিকিৎসা খরচ গ্রহণের কারণে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক খান মো. মীজানুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ জারি করা হয়।
এর আগে গত রোববার তাকে বদলি করে দুদকের এনআইএস এবং উন্নয়ন সহযোগী ও সমন্বয় (দেশীয়) বিভাগের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে দেখা যায়, পরিচালক খান মো. মীজানুল ইসলাম কমিশনের অনুসন্ধান-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এভারকেয়ার হাসপাতালের পরিচালক মাহাবুবুল আনামের কাছ থেকে চিকিৎসা খরচ বাবদ অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন।
গোপন অনুসন্ধানে দুদক জানতে পারে, গত ১৭ আগস্ট মীজানুল ইসলাম এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ২০ আগস্ট ছাড়পত্র নেন। কিন্তু চিকিৎসা বাবদ বকেয়া দুই লাখ চার হাজার একশত বত্রিশ টাকা তিনি নিজে পরিশোধ না করে অনুসন্ধান-সংশ্লিষ্ট মাহাবুবুল আনামের প্রদত্ত গ্যারান্টির ভিত্তিতে ছাড়পত্র নেন।
অভিযোগের গুরুত্ব ও রাষ্ট্রীয় স্বার্থ বিবেচনায় বিষয়টি গত ৪ সেপ্টেম্বর দুদকের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি দমন কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হয়। সেখানে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দুদক জানায়, দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮ অনুসারে মীজানুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ আদেশ জারির তারিখ থেকেই কার্যকর হবে এবং বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি নিয়ম অনুযায়ী খোরাকি ভাতা পাবেন।
গত ২৭ জানুয়ারি তিন বিমানবন্দরের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ৮১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করে দুদক। এর দুটি মামলার আসামির তালিকায় ছিলেন এভারকেয়ার হাসপাতালের পরিচালক মাহাবুবুল আনাম।
রাজধানীর বাড্ডায় চালককে খুন করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায় দুই যুবককে আটক করেছে পুলিশ। ছিনতাই করা অটোরিকশাটি প্রকৃত মালিকের গ্যারেজেই বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়েন তারা।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টার দিকে বাড্ডা কাঠালদিয়া, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেটের বিপরীত পাশ থেকে রিকশাচালক মাসুদ ওরফে কাজলের (৪২) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
নিহতের শ্যালক মো. সেলিম জানান, কাজলের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলায়। তিনি ভাটারার ফাসেরটেক এলাকায় বসবাস করতেন; তার স্ত্রী ও তিন সন্তান গ্রামে থাকেন। ঢাকায় ভাড়ায় অটোরিকশা চালাতেন কাজল।
তিনি আরও জানান, রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নতুনবাজার এলাকার গ্যারেজ থেকে রিকশা নিয়ে বের হয়েছিলেন কাজল, এরপর আর বাসায় ফেরেননি। রাতে দুই যুবক তার রিকশা নিয়ে একই গ্যারেজে বিক্রি করতে গেলে গ্যারেজ মালিক সেটি চিনে ফেলেন। এ সময় মালিকের প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারেননি তারা, বরং রিকশাটিকে নিজেদের বলে দাবি করেন ছিনতাইকারীরা।
পরে গ্যারেজমালিক ও স্থানীয়রা তাদের আটক করে পুলিশে খবর দেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কাজলকে খুন করে বাড্ডার কাঠালদিয়ায় মরদেহ ফেলে রেখে এসেছেন ওই দুই যুবক। পরবর্তীতে সোমবার বেলা ১২টার দিকে সেখান থেকে কাজলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, চালককে হত্যার পর রিকশা বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন দুই ঘাতক। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় বাড্ডা থানায় একটি হত্যা মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।
বাতাসের মান মানুষের সার্বিক জীবনযাত্রার ওপরে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই ধরনেরই প্রভাব ফেলে। কোনো শহরের বাতাসের দূষণের মাত্রা বেশি থাকলে সেখানকার মানুষের বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। এ কারণে বাতাস এত গুরুত্বপূর্ণ।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার প্রতিদিন বিশ্বের বিভিন্ন শহরের বাতাসের মানসহ তালিকা প্রকাশ করে। আজ (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এই তালিকায় ১২৭টি দেশ থাকলেও কোনো শহরের বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ ছিল না। তবে ১০টি দেশের বাতাস ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে ছিল। এর মধ্যে এই সময়ে তালিকার শীর্ষে ছিল ফিলিপাইনের মানামা। শহরটির একিউআই স্কোর ছিল ১৪৫।
এদিকে, আজ ফের পাকিস্তানের লাহোরের বাতাসের মানে অবনতি দেখা গেছে। শহরটির একিউআই স্কোর ১৩২। এই স্কোর নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে লাহোর। ১৩১ স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে উগান্ডার কাম্পালা।
অন্যদিকে, ঢাকার বাতাস আজও ‘মাঝারি’ পর্যায়েই রয়েছে। টানা কয়েকদিন ধরেই এই পর্যায়ে রয়েছে শহরটির বাতাস। একিউআই স্কোর ছিল ৮২। স্বাস্থ্যকর না হলেও এই মানের বাতাসকে অস্বাস্থ্যকরও বলা চলেনা।
কণা দূষণের এই সূচক ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ বলে গণ্য করা হয়। আর স্কোর ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে এই স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভোটগ্রহণের সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন-২০২৫। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রত্যাশা করছে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ, প্রার্থী ও ভোটাররা।
এবারের নির্বাচনে মোট ৮টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৮১০টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। একজন ভোটার গড়পড়তা ১০ মিনিট সময় ব্যয় করে ভোটদান শেষ করতে পারবেন।
সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। তবে বিকেল ৪টার মধ্যে বুথে উপস্থিত সকল ভোটারদের ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে, এমনকি লাইনে দাঁড়ানো ভোটারদেরও ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকবে বলে প্রশাসন জানায়। নির্বাচনের দিন ক্যাম্পাসে সকল শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য অতিরিক্ত বাসের ব্যবস্থা থাকবে। ভোটারদের সময়মতো উপস্থিতি নিশ্চিতে সব বাস সার্ভিসের সময়সূচি অনুযায়ী চলবে।
এবারের ডাকসু নির্বাচনে ২৮টি পদের বিপরীতে মোট ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে নারী প্রার্থী আছেন ৬২ জন।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, বামজোট, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের মতো রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে নিজেদের প্যানেল দিয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংখ্যাও কয়েক শতাধিক।
প্রায় ৪০ হাজার ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন, তা ধরেই প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী, আজ ডাকসুর ২৮টি ও হল সংসদ নির্বাচনের ১৩টি মিলিয়ে মোট ৪১টি ভোট দেবেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা।
অন্যবারের তুলনায় এবার ডাকসুতে ব্যালটের আকার বেড়েছে। এবার ডাকসুতে থাকছে পাঁচ পৃষ্ঠার ব্যালট। আর হল সংসদের থাকছে এক পৃষ্ঠার ব্যালট। এ ভোট দিতে হবে অপটিক্যাল মার্ক রিকগনিশন (ওএমআর) শিটে।
এরই মধ্যে ভোট দেওয়ার নিয়মকানুন ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরেছে চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিস। এই ভিডিও চিত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়েছে।
পাশাপাশি ভোট প্রদানে ছাত্র–ছাত্রীকে উৎসাহিত করতে তিনটি অনুষদ ও একটি ইনস্টিটিউটে সভা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এসব সভায়ও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নতুন ভোটারদের ভোটদানের পদ্ধতি সম্পর্কে জানানো হয়েছে।
ভোটার তার সুবিধাজনক সময়ে নির্ধারিত ভোটকেন্দ্রে যাবেন। ভোটকেন্দ্রে থাকা পোলিং কর্মকর্তাকে ভোটার তার পরিচয় নিশ্চিত করবেন।
ভোটার প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হলে তার লাইব্রেরি কার্ড অথবা পে-ইন স্লিপ দেখিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করবেন। অন্য বর্ষের শিক্ষার্থীরা হল আইডি কার্ড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড অথবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি কার্ড দেখিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করবেন।
পরিচয় নিশ্চিতের পর ভোটারের আঙুলে অমোচনীয় কালির দাগ দেবেন ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা।
ভোটার তালিকায় নিজের নামের পাশে স্বাক্ষর করবেন ভোটার। এরপর পোলিং কর্মকর্তাকে ভোটার নম্বর জানাতে হবে।
নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ভোটারদের ব্যাগ, মোবাইল ফোন, স্মার্ট ওয়াচ, যেকোনো ধরনের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস, পানির বোতল ও তরল জাতীয় কোনো পদার্থ নিয়ে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে থাকছে নিষেধাজ্ঞা।
ডাকসু নির্বাচন ঘিরে গতকাল সোমবার রাত ৮টা থেকে টানা ৩৪ ঘণ্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রবেশপথ সর্বসাধারণের জন্য বন্ধ করা হয়েছে, যা কাল বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বলবত থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ থেকে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথ (শাহবাগ, পলাশী, দোয়েল চত্বর, শিববাড়ী ক্রসিং, ফুলার রোড, উদয়ন স্কুল ও নীলক্ষেত) সর্বসাধারণের জন্য বন্ধ থাকবে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ আইডি কার্ডধারী শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রবেশ করতে পারবেন। এছাড়া, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যরা নিজ নিজ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিচয়পত্রের ফটোকপি দেখিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত ও জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহন (অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক, রোগী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সাংবাদিক ও ফায়ার সার্ভিসের যানবাহন) ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না।
ডাকসু নির্বাচনে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরাও ভোট দেবেন। তারা ভোট দেবেন ব্রেইল পদ্ধতিতে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভোট ব্যবস্থা করা হয়েছে উল্লেখ করে রিটার্নিং কর্মকর্তা সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীর বলেন, ‘যেসব শিক্ষার্থীর দৃষ্টিপ্রতিবন্ধকতা রয়েছে এবং যারা ব্রেইল পড়তে পারেন, তাদের জন্য প্রথমবারের মতো আমরা ব্রেইল পদ্ধতিতে ব্যালট পেপার ছাপিয়েছি।’
আপত্তি নিষ্পত্তি ও সংশোধনের পর এবারের নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন। এর মধ্যে ২০ হাজার ৮৭৩ জন ছাত্র এবং ১৮ হাজার ৯০২ জন ছাত্রী ভোটার রয়েছেন।
ছাত্র ভোটারদের মধ্যে অমর একুশে হলে ১২৯৫ জন, কবি জসীমউদ্দিন হলে ১৩০৩ জন, জগন্নাথ হলে ২২২২ জন, শেখ মুজিবুর রহমান হলে ১৬০৬ জন, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হলে ১৯৯৮ জন, ফজলুল হক মুসলিম হলে ১৭৬২ জন, বিজয় একাত্তর হলে ২০২৭ জন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ১৭৫১ জন, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ১৯৫৭ জন, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ৬৬৪ জন, মাস্টারদা সূর্যসেন হলে ১৪৯৯ জন, স্যার এ এফ রহমান হলে ১৩৭৭ জন এবং হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে ১৪০২ জন রয়েছেন।
এছাড়া, ছাত্রী ভোটারদের মধ্যে রোকেয়া হলে ৫৬৪১ জন, শামসুন নাহার হলে ৪০৮৪ জন, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে ২১০৩ জন, কবি সুফিয়া কামাল হলে ৪৪৩৪ জন এবং ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ২৬৪০ জন আছেন।
ডাকসু নির্বাচন ঘিরে গতকাল সোমবার বিকেল থেকে বন্ধ রয়েছে ঢাবি মেট্রো স্টেশন। গতকাল বিকেল ৪টা থেকে ও আজ পুরো দিন স্টেশন বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে মেট্রোরেল পরিচালনাকারী কোম্পানি ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। ডিএমটিসিএলের এক বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনসংলগ্ন যাতায়াতের জন্য বিকল্প পন্থা অবলম্বন করার আহ্বান জানানো হয়।
সারাদেশ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে: উপাচার্য
বহুল প্রতীক্ষিত ডাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে আসতে বলেছেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, সারাদেশ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা শুভ কামনা জানাচ্ছেন। এখন একটি ভালো নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের উত্তরণের প্রক্রিয়াকে, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন ধরে যে কাজ করছে, তাতে তোমরা তোমাদের ভূমিকা পালন করবে, সেটাই প্রত্যাশা করছি।
গতকাল বিকাল পৌনে ৪টার দিকে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ে অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এ ভিডিও বার্তা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচন তোমরা চেয়েছো; গভীরভাবে প্রত্যাশা করেছো; গণঅভ্যুত্থানের মৌলিক মূল্যবোধগুলোর সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণও। গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্য সমন্বিত একটি প্রাতিষ্ঠানিক একটি ভয়েস তৈরি করা। এসব গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবোধকে আমরা তুলে ধরবার জন্য তোমাদের আগ্রহে এবং ব্যাপক চাহিদার ভিত্তিতে ডাকসু নির্বাচন আয়োজন করেছি। তোমাদের অনুষ্ঠান নির্ভয়ে তোমরা ভোট দিতে আসবা, আমরা তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছি।’
এবারের ডাকসু নির্বাচনকে ঐতিহাসিক উল্লেখ করে অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘এবারের নির্বাচনটি বিভিন্ন কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ নির্বাচন ঐতিহাসিক। এবার অনেক কিছু আমরা করেছি, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে আগে ঘটেনি। আমাদের ৮১০টি বুথ থাকবে। প্রায় ৪০ হাজার ভোটার। প্রথমবারের মতো আমরা হল থেকে বেরিয়ে এসে কেন্দ্রীয়ভাবে ৮টি কেন্দ্রে এ নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছি। সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিতের জন্য সব রকম পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরা, তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা; প্রশিক্ষিত ও নিবেদিতপ্রাণ পোলিং কর্মকর্তা।’
জয়-পরাজয় মেনে নেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে উল্লেখ করে প্রার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য বলেন, ‘সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে এ পর্যায়ে এসেছি পরস্পর পরস্পরের হাত ধরে। এখন বাকি পথটুকু আমরা খুব স্বচ্ছন্দে পার হতে পারব বলে বিশ্বাস করি। যেহেতু নির্বাচন প্রক্রিয়া; কিছু প্রার্থী জিতবেন, কিছু প্রার্থী জিতবেন না। জয়-পরাজয় থাকবে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, বিজয়ী এবং বিজিত; উভয়েরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। গণতান্ত্রিক একটি প্রতিষ্ঠানকে সক্রিয়করণ বা প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে আপনি আপনার ভূমিকা পালন করলেন। বহু বছর আমরা ঐতিহাসিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে যাচ্ছি। সেই প্রক্রিয়ায় বিজয়ী এবং বিজিতকে ভূমিকা রাখছেন এবং রাখতে হবে। এটিই বিরাট সার্থকতা।’
হস্তক্ষেপের প্রশ্নই আসে না: সেনাবাহিনী
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। গতকাল সোমবার বাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে এমনটা জানানো হয়েছে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরও (আইএসপিআর) তাদের পেজে পোস্টটি শেয়ার করেছে। এতে বলা হয়েছে, ‘বিশেষত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের প্রশ্নই আসে না। এর আগেও সেনাবাহিনী কর্তৃক আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে।’
একটি স্বার্থান্বেষী মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গুজব ছড়াচ্ছে উল্লেখ করে ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এ ধরনের বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার স্বাভাবিক স্থিতিশীলতা বিনষ্টের অপচেষ্টা মাত্র, যা সার্বিক নির্বাচনী পরিবেশকে ব্যাহত করতে পারে।’
সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আশা করে- দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিতব্য কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন যেন সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করে।’
নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট জোরদার থাকবে : ডিএমপি কমিশনার
ডাকসু নির্বাচনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট জোরদার থাকবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। সোমবার বিকেলে টিএসসিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে তিনি এ কথা জানান।
ডিএমপি কমিশনার জানান, গতকাল রাত ৮টা থেকে ১১ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে লাইসেন্সধারী অস্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। এখন ১৭৭১ জন পুলিশ নিরাপত্তায় কাজ করছে, মঙ্গলবার ২০৯৬ জন থাকবে, এর বাইরে র্যাব ও বিজিবিসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও থাকবে।
তিনি বলেন, কোনো কারণে আইন হাতে তুলে নেয়া যাবে না। অবাঞ্ছিত লোকদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করতে হবে। নিরাপত্তায় ৮টি চেকপোস্ট, মোবাইল পেট্রোল, বিশেষায়িত টিম, সোয়াদ টিম, ডিবি সাদা পোশাকে থাকবে এবং সিসি ক্যামেরায় মনিটরিং করা হবে।
যারা সাইবার অ্যাটাক করছে তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এখন পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচন হয়েছে ৩৭ বার। এবারের নির্বাচন হচ্ছে ৩৮তম বারের মতো। সর্বশেষ ২০১৯ সালে ডাকসু নির্বাচন হয়। তবে সে নির্বাচনও হয় উচ্চ আদালতের রায়ের পর। ওই নির্বাচনে ভিপি (সহসভাপতি) হন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নুরুল হক নুর এবং জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ) গোলাম রাব্বানী নির্বাচিত হন।
স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের ডাকসু নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ভিপি নির্বাচিত হন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এবং জিএস পদে নির্বাচিত হন মাহবুবুর জামান। স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ১৯ বার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও হয় মাত্র ৭ বার। এরপর ১৯৯১ সালের পর থেকে ডাকসু নির্বাচন যেন অতীত হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন, বিক্ষোভ, ধর্মঘট করে ডাকসু নির্বাচনের দাবি জানানো হয়। এরপর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ায় ২০১৯ সালে হাইকোর্টের একটি রায়ে ডাকসু নির্বাচনের পথ খোলে।
তরুণদের কর্মসংস্থান, আত্মমর্যাদা এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তি অর্জনে কারিগরি প্রশিক্ষণের কোন বিকল্প নাই। তিনি বলেন, ইউসেপ বাংলাদেশের এই উদ্যোগ সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নের জন্য একটি মাইলফলক। দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে তরুণদের শুধু কর্মসংস্থান নয় বরং মর্যাদা, অন্তর্ভুক্তি এবং জাতীয় অগ্রগতিতে সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তিনি আজ ঢাকায় মিরপুরে অবস্থিত ইউসেপ কমপ্লেক্সে ইউসেপ বাংলাদেশ জেন্ডার ডাইভার্স কমিউনিটি এবং জুলাই ২০২৪ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী যুবাদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে একটি বিস্তৃত দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে ইউসেপ বাংলাদেশের চেয়ারপার্সন ড. ওবায়দুর রবের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ আবু ইউছুফ, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ সাইদুর রহমান খান, ইউসেপ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড.মো. আবদুল করিম। অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তা, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, সিভিল সোসাইটি প্রতিনিধি, ইউসেপ কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রশিক্ষণার্থী এবং সাংবাদিকগণ অংশগ্রহণ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা বলেন, আমরা সাম্যের স্বপ্ন দেখি, গণতন্ত্রের স্বপ্ন দেখি। ৭১, ৯১, ২৪ এর আন্দোলনে বারবার যেখানে মানুষ স্বপ্নের কথা বলেছে কিন্তু স্বপ্ন আমরা পূরণ করতে পারিনি, আমরা গণতন্ত্র পাইনি। ২৪ এর আন্দোলন এই দেশের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। এখন সময় এসেছে নব-নির্মাণের। ৭১এর পরে আমরা যা পারিনি , ২৪ এর পরে তাই তাইই করতে হবে। ২৪ এর স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দিতে চাই। এজন্য আপনাদের সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি বলেন, একটি দেশকে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হলে সেই দেশের মানুষকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে আগে। সর্বোচ্চ উন্নত দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায় সে দেশের জনগোষ্ঠী এবং রাষ্ট্র মিলেই উন্নতির শিখরে পৌছাতে পেরেছে। আমাদের দেশের উন্নয়নে সকল জনগোষ্ঠী এবং রাষ্ট্র যদি একসাথে মিলেমিশে এগুতে পারি তাহলে আমরা শান্তিতে বসবাস করতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রান্তিক দুর্বল জনগোষ্ঠীর স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে। নারী নির্যাতন রোধেও আমার মন্ত্রণালয় কাজ করছে। বাস স্টপেজে, গণপরিবহণে নারী নির্যাতন রোধে তৃতীয় লিঙ্গের জেন্ডাররা যদি ড্রাইভিং শিখে বিশেষায়িত বাস ড্রাইভিং করতে পারে তাহলে গণপরিবহনে নারীদের উপর নির্যাতনের মাত্রা অনেকাংশে কমে আসবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
উপদেষ্টা বলেন, হিংসাত্মক মনোভাব নয়, ভালোবাসার দিক দিয়ে যদি এদেশ ও মানুষকে দেখি তাহলে দেশের উন্নয়ন অবশ্যম্ভাবী।
উপদেষ্টা ইউসেপ কমপ্লেক্সে পরিচালিত কেয়ারগিভিং, জাপানি ভাষা এবং গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্স পরিদর্শন করেন এবং ইউসেপ বাংলাদেশের উইমেন্স কর্নারের উদ্বোধন করেন। এসময় তিনি বলেন,এ কর্মসূচি শুধু প্রশিক্ষণেই সীমাবদ্ধ নয় বরং অংশগ্রহণকারীদের জন্য মর্যাদাপূর্ণ কর্মসংস্থানের পথ উন্মুক্ত করবে।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মোঃ মাহফুজ আলম বলেছেন, সাংবাদিকদের কল্যাণে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন। এ ধরনের উদ্যোগ সাংবাদিকদের পেশাগত ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। সোমবার (৮ই সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে গ্রুপ বিমা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স পিএলসির সঙ্গে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রায় দুই হাজার সদস্যের মধ্যে বিমা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, সাংবাদিকদের কল্যাণে শুধু সরকারি উদ্যোগই যথেষ্ট নয়, বেসরকারি খাতকেও এ বিষয়ে ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বিমা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অন্যান্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও সাংবাদিকদের কল্যাণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সাংবাদিকদের কল্যাণে সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে প্রতি তিন মাস পরপর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সাংবাদিককে কল্যাণ অনুদান প্রদান করা হচ্ছে। গত অর্থবছরে সাংবাদিকদের মেধাবী সন্তানদের বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। উপদেষ্টা জানান, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের কর্মপরিধি বাড়ানো হয়েছে।
মাহফুজ আলম বলেন, সাংবাদিকদের সুরক্ষা-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের খসড়া লেজিসলেটিভ বিভাগে প্রেরণ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নেও সরকার কাজ করছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, এই গণঅভ্যুত্থানে যাঁরা ত্যাগস্বীকার করেছেন, তাঁদের লড়াইয়ের গল্প জনগণের নিকট তুলে ধরতে হবে। তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের অবদান গণমাধ্যমে প্রচার করার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সাঈদ আহমেদ, ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজিম উদ্দিন প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।
ইলিশ মাছ রপ্তানি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
আজ সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তাণি ২ শাখার উপসচিব এস এইচ এম মাগফুরুল হাসান আব্বাসী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়,প্রতিবছরের ন্যায় চলতি ২০২৫ সালে দুর্গাপূজা উপলক্ষে ১,২০০ (এক হাজার দুইশত) মে.টন ইলিশ ভারতে শর্তসাপেক্ষে রপ্তানির জন্য সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সে আলোকে আগ্রহী রপ্তানিকারকগণের নিকট হতে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ অফিস চলাকালীন সময়ের মধ্যে (১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বিকাল ৫টা পর্যন্ত) হার্ড কপিতে আবেদন আহবান করা যাচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে আবেদনের সাথে সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, ইআরসি, আয়কর সার্টিফিকেট, ভ্যাট সার্টিফিকেট, বিক্রয় চুক্তিপত্র, মৎস্য অধিদপ্তরের লাইসেন্সসহ সংশ্লিষ্ট দলিলাদি দাখিল করতে হবে।
প্রতি কেজি ইলিশের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য ১২.৫ মার্কিন ডলার সরকার কর্তৃক নির্ধারণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে যারা আহবান ব্যতিরেকেই আবেদন করেছেন, তাদেরকেও নতুনভাবে আবেদন দাখিল করতে হবে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের গত এক বছরের কর্মকাণ্ডে এসেছে বহুমুখী সাফল্য। সংস্কার ও বিশেষ কার্যক্রম, অবকাঠামো উন্নয়ন, নৌ যোগাযোগ সম্প্রসারণ, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আকর্ষণ ও আধুনিকায়নের পাশাপাশি রাজস্ব আয়েও হয়েছে উল্লেখ্যযোগ্য অগ্রগতি। আজ সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে নৌপরিবহন খাতে গত এক বছরের উল্লেখযোগ্য অর্জন, কার্যক্রম ও উন্নয়ন সম্পর্কে এসব তথ্য তুলে ধরেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকারের দূরদর্শী পরিকল্পনা ও সময়োপযোগী উদ্যোগের ফলে নৌপরিবহন খাতে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন সংস্থার মোট রাজস্ব আয় ৬৫৭৫.৯৭ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৯.৪০৮% বেশি। একই সময়ে সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে ২২২৩.৩৩ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের তুলনায় ২১.৮১% বেশি। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ রাজস্ব আয় করেছে ৫২২৭.৫৫ কোটি টাকা, তন্মধ্যে সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে ১৭৬১.৯৭ কোটি টাকা । চট্টগ্রাম বন্দর গত অর্থ বছরে সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমাণ (৩২,৯৬,০৬৭টি) কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে। বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ৪% এবং কার্গো হ্যান্ডলিং ৬.০৭% বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্দরের ইয়ার্ড থেকে ২০ বছর যাবৎ পড়ে থাকা ৩৯৭টি গাড়ী অপসারণ করা হয়েছে এবং নিলামযোগ্য ১০ হাজার TEUs কন্টেইনার অপসারণের কার্যক্রম চলমান আছে। চট্টগ্রাম ড্রাইডক কর্তৃক নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল অপারেশনে যাওয়ার পর পূর্বের তুলনায় দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সময় এবং ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
তিনি আরো জানান, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন (বিএসসি) ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে আন্তর্জাতিক রুটে ৫টি জাহাজ পরিচালনা করে ৩০০ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করে যা বিএসসি’র ইতিহাসে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন কর্তৃক শেয়ারহোল্ডারদের ২৫% লভ্যাংশ প্রদান করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্থ দপ্তর/সংস্থার সংস্কারমূলক কার্যক্রমে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে নৌপরিবহন উপদেষ্টা জানান, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃক এই প্রথম বারের মতো জাইকার কারিগরি সহায়তায় ন্যাশনাল পোর্টস স্ট্র্যাটেজি প্রণয়ন করা হচ্ছে। ২৮ আগস্ট, ২০২৫ তারিখ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অকার্যকর ৩টি স্থলবন্দর বন্ধ এবং ১টি স্থলবন্দর এর অপারেশনাল কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক ৩৬৭টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ৯.৮০ একর জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে যার মূল্য প্রায় ২৮ কোটি টাকা। এছাড়াও, কক্সবাজার জেলার বাঁকখালী নদী হতে ৪৯৬টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ৬৩ একর জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ নৌরুটে স্পিডবোটে যাত্রী পরিবহনের জন্য কিলোমিটার প্রতি নৌরুটের ভাড়া সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। সন্দ্বীপ ও হাতিয়াকে নতুন নদীবন্দর হিসেবে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। ১৫টি স্থাপনা এবং নৌযানের নতুন নামকরণ করা হয়েছে। দেশের বিচ্ছিন্ন জনপদ যেমন কুতুবদিয়া, ভাসানচর ইত্যাদি এলাকার সাথে নৌ যোগাযোগ স্থাপন করা হয়েছে। চর কুকরিমুকরি, কচ্ছপিয়া, ঢালচর, কলাতলী রুটে নৌ চলাচল চালু করা হয়েছে।
সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যবসা সম্প্রসারণ ও অবকাঠামো উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের বহরে দুটি আধুনিক বাল্ক ক্যারিয়ার যুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে এবং আরও তিনটি জাহাজ ক্রয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে বে-টার্মিনাল, নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল ও লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। প্রায় ২৪৩৮১.৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে একনেক কর্তৃক মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের জন্য ৬৩৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
দেশীয় অর্থনীতিতে সম্ভাবনাময় মোংলা বন্দরের সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন প্রকল্পে ব্যয় সাশ্রয়ের পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষায় আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চালু করা হয়েছে। বেনাপোল স্থলবন্দরসহ অন্যান্য স্থলবন্দর আধুনিকায়নের ফলে বন্দরের সক্ষমতা, নিরাপত্তা ও কার্যক্রমে গুণগত উন্নয়ন হয়েছে। মোংলায় এবং চট্টগ্রামের মাঝের চরে ফ্রি ইকোনমিক জোন স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পায়রা বন্দরের অবকাঠামো ও টার্মিনাল নির্মাণ প্রায় শেষ পর্যায়ে; ২০২৬ সালের জুলাই মাসে পূর্ণাঙ্গ অপারেশন চালু হবে।
মোংলা বন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্প, বিআইডব্লিউটিএ’র মিঠামইন প্রকল্প, বিআইডব্লিউটিএ’র ৩৫ ড্রেজার প্রকল্প, মেরিন একাডেমির সিমুলেটর প্রকল্প, পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেল ড্রেজিং প্রকল্পসমূহ থেকে বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ যাচাই-বাছাইপূর্বক ২ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে।
গত ৫৪ বছরে প্রথমবারের মতো নৌযানের ডাটাবেইজ তৈরির লক্ষ্যে নৌশুমারির জন্য বিবিএস এর সাথে এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়। ২০২৪ সালের UNCTAD রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জাহাজ মালিকদের তালিকায় ৩৫তম স্থান অর্জন করে।
দেশের নৌকেন্দ্রীক পর্যটন সুবিধা বিকশিত করার লক্ষ্যে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের বর্ণনা দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, পর্যটনের উদ্দেশ্যে ১২৫ বছরের পুরাতন স্টিমার পিএস মাহসুদ চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৩৫ জলযান প্রকল্পের আওতায় সংগৃহীতব্য সী-ট্রাক/ক্রুজ শীপ চালু এবং শিমুলিয়াতে একটি গ্রীণ পোর্ট ও পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
সেবা সম্প্রসারণে, বাঁশবাড়িয়া (সীতাকুন্ড)-সন্দ্বীপ (গুপ্তছড়া) রুটে ফেরি সার্ভিস চালু করা হয়েছে, কক্সবাজার-মহেশখালী নৌরুটে সী-ট্রাক সার্ভিস চালু করা হয়েছে এবং বিভিন্ন নদীপথে নাব্যতা পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে গতি সঞ্চার হয়েছে। পাশাপাশি, পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনালে বিশ্বমানের শিপিং কোম্পানি মেডিটেরিনিয়ান শিপিং কোম্পানি (MSC) বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, যা শিগগিরই দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ (FDI) হিসেবে যুক্ত হবে।
বিশেষ চুক্তি ও সহযোগিতা ক্ষেত্রে গত এক বছরে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে মেরিটাইম শিক্ষা ও সার্টিফিকেটের পারস্পরিক স্বীকৃতি চুক্তি এবং ফিলিপাইনের মেরিটাইম একাডেমির সঙ্গে প্রশিক্ষণ ও নিরাপত্তা বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এছাড়া চীনের পরিবহন মন্ত্রণালয় মোংলা বন্দরের উন্নয়ন ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।
কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে, এ সময় চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দরসহ বিভিন্ন সংস্থায় হাজারেরও অধিক নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রায় ১০ হাজার নাবিকের সাইন অন সম্পন্ন হয়েছে।
মানবসম্পদ উন্নয়ন ও শিক্ষা ক্ষেত্রে মেরিন একাডেমি ও মেরিটাইম ইনস্টিটিউটে জনবল নিয়োগ, অত্যাধুনিক সিমুলেটর সংগ্রহ ও পাঠ্যক্রম আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিমুলিয়ায় একটি ড্রেজ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট চালু করা হয়েছে। ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউটি, মাদারীপুরের নিজস্ব ক্যাম্পাসে প্রথমবারের মতো নাবিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। আফ্রিকান শিক্ষার্থীদের জন্য মেরিন একাডেমিগুলোতে স্কলারশিপ চালু করায় বাংলাদেশের সামুদ্রিক শিক্ষায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আরও প্রসারিত হয়েছে।
বাংলাদেশ ২০২৪-২৫ মেয়াদে আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) কাউন্সিলের সি-ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হয়ে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে। এরই ধারাবাহিকতায় আসন্ন আইএমও কাউন্সিল নির্বাচনেও (২০২৬-২৭ মেয়াদ) সি-ক্যাটাগরিতে সদস্যপদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে এবং আইএমওভুক্ত অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থন চেয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
নৌপরিবহন খাতের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার ধারাবাহিকভাবে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। অবকাঠামো উন্নয়ন, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা এবং বন্দর ও শিপিং খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি—এসব কার্যক্রম আগামী দিনে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে আশাবাদ ব্যক্ত করেদন নৌপরিবহন উপদেষ্টা।
সংবাদ সম্মেলনে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।