মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
১১ আষাঢ় ১৪৩২

সারা দেশ রণক্ষেত্র: পুলিশসহ নিহত ৯৩

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় হামলা চালিয়ে ১৩ পুলিশকে হত্যা
গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে থাকা অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্যান্য গাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
৫ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৫ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০৩

‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ এক দফা দাবিতে ডাকা ‘অসহযোগ’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভকারী, পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষে গতকাল রোববার অন্তত ৯৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় হামলা চালিয়ে ১৩ পুলিশকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

দিনভর সংঘর্ষে রাজধানী ঢাকায় ৮ জন, নরসিংদীতে ৬ জন, ফেনীতে ৮ জন, লক্ষ্মীপুরে ৮ জন, সিরাজগঞ্জে ১৩ পুলিশসহ মোট ২২ জন, কিশোরগঞ্জে ৪ জন, বগুড়ায় ৫ জন, মুন্সীগঞ্জে ৩ জন, মাগুরায় ৪ জন, ভোলায় ৩ জন, রংপুরে ৪ জন, পাবনায় ৩ জন, সিলেটে ৫ জন, কুমিল্লায় পুলিশ সদস্যসহ ৩ জন, শেরপুরে ২ জন, জয়পুরহাটে ১ জন, হবিগঞ্জে ১জন, ঢাকার কেরানীগঞ্জে ১ জন, সাভারে ১ জন ও বরিশালে ১ জনসহ মোট ৯৩ জন নিহত হয়েছেন। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে আন্দোলনকারীরা। পাল্টা কর্মসূচিতে মাঠে নামে আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। ফলে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এদিকে গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ ঘোষণা করেছে সরকার। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে কারফিউ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। এ ছাড়া আজ থেকে তিন দিন (সোম, মঙ্গল ও বুধবার) সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার।

পুলিশ সূত্র জানায়, রোববার বিকালে দুর্বৃত্তরা এনায়েতপুর থানায় হামলা চালায়। এসময় থানায় ঢুকে তারা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। একই সঙ্গে থানায় দায়িত্বরত ১৩ জন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করে। পুলিশ সদর দপ্তরের জনসংযোগ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, সন্ত্রাসীরা ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যাত্রাবাড়ী ও খিলগাঁও থানা, টাঙ্গাইলের গোড়াই হাইওয়ে থানা, বগুড়ার সদর, দুপচাঁচিয়া ও শেরপুর থানা এবং নারুলী পুলিশ ফাঁড়ি, জয়পুরহাট সদর থানা, কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানা, রংপুরের গঙ্গাচড়া, মিঠাপুকুর, পীরগাছা, পীরগঞ্জ, বদরগঞ্জ ও গংগাচড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও আশুগঞ্জ থানা, সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর, উল্লাপাড়া ও শাহজাদপুর থানা, হবিগঞ্জের মাধবপুর ফাঁড়ি, ময়মনসিংহ রেঞ্জ অফিস, নারায়ণগঞ্জ, বগুড়া, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়, দিনাজপুর সদর থানা আক্রমণ করেছে।

এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এসব ঘটনায় রাজধানীতে ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে একজন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতা এবং আরেকজন শিক্ষার্থী রয়েছে। নিহত আওয়ামী লীগ নেতার নাম আনোয়ারুল ইসলাম। ষাটোর্ধ্ব এই প্রকৌশলী ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য। জিগাতলায় সংঘর্ষের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। তার নাম আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী (২৩)। তিনি রাজধানীর হাবিবুল্লাহ বাহার ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী।

শাহবাগে ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতা কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভেতরে থাকা অন্তত ৫০টি গাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে। রোববার বেলা ১২টার দিকে রাজধানীর শাহবাগে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে থাকা অ্যাম্বুলেন্স, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেলসহ অন্তত ৫০টি গাড়িতে ভাঙচুর করেছে এবং সেগুলোতে আগুন দিয়েছে।

অন্যদিকে বিকেলে ফার্মগেট এলাকায় সংঘর্ষের মধ্যে আহত হয়ে তৌহিদুল ইসলাম (২২) নামের এক যুবক নিহত হয়েছে। তিনি মহাখালীর ডিএইট কনসালটেন্ট লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী। এদিকে মিরপুরে সংঘর্ষ চলাকালে মিরাজ হোসেন (২৩) নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আজমল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. অন্দিরা সমকালকে জানান, বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ওই যুবক মারা যান।

বিকেলে গুলিস্তান থেকে জহির উদ্দীন নামে এক ব্যক্তিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরীক্ষার পর চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বাড়ি কুমিল্লায়। প্রাথমিকভাবে তার বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। এদিকে মিরপুরে সংঘর্ষ চলাকালে মিরাজ হোসেন (২৩) নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

অপরদিকে বিকেলে গুলিস্তান থেকে জহির উদ্দীন নামে এক ব্যক্তিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরীক্ষার পর চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে বিক্ষোভকারীরা। রোববার সকাল ১০টার দিকে যাত্রাবাড়ী থেকে রায়েরবাগ এলাকার সড়কে বিক্ষোভকারীদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। যাত্রাবাড়ী থানার সামনে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের অবস্থান করতেও দেখা গেছে। বেলা পৌনে একটার দিকে বিক্ষোভকারী ও সরকার সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এ সময় কয়েকটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালানো হয়। এছাড়া রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড়, বাংলা মোটর, ফার্মগেট, উত্তরাসহ বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতার ঘটনা ঘটে। দৈনিক বাংলার বিভিন্ন জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানোর তথ্যমতে সহিসংতা ও নিহতের খবর জানা যায়।

নরসিংদীতে আওয়ামী লীগের ৬ নেতা-কর্মী নিহত

নরসিংদীর মাধবদীতে আন্দোলনকারীদের দিকে গুলি ছোড়ার পর ধাওয়া দিয়ে আওয়ামী লীগের ছয় নেতা-কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় চারজন আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত হন আরও অনেকে। রোববার দুপুর একটার দিকে মাধবদী বাজার মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন- মাধবদী মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি ও নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের ছোট ভাই মো. দেলোয়ার হোসেন (৪০), মাধবদী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চরদিগলদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন (৩৮), নরসিংদী জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য শ্রমিক লীগ নেতা মনিরুজ্জামান ভূইয়া ওরফে নাতি মনির (৪২), মহিষাশুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল জলিল (৪০), কামাল হোসেন (৩৫), মো. সোহেল মিয়া (৩৮)। ছয়জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান।

রংপুর নিহত ৫: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ে রংপুরের রাজপথে মানুষের ঢল নামে। সর্বাত্মক অসহযোগের প্রথম দিনে সিটি বাজারে সামনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় গুলিবিদ্ধ হয়ে দুইজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন।

ফেনীতে ৬ আন্দোলনকারী নিহত: ফেনীতে সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত অর্ধশতাধিক। রোববার দুপুরে শহরের মহীপালে দফায় দফায় সংঘর্ষে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে। ফেনী হাসপাতালের আরএমও আসিফ ইকবাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেনে। নিহতরা হলেন, ফেনীর ফাজিলপুর উপজেলার সাইদুল ইসলাম (২৫), সদর উপজেলার শিহাব উদ্দিন (২২), দুই রিকশাচালকসহ আরও দুইজন। তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

বগুড়ায় সংঘর্ষে নিহত ৪: বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার এ ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে দুটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮০ জন। তিনজনের মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করেছেন বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদ। এছাড়া আরও একজন দুপচাঁচিয়ায় মারা যান। নিশ্চিত করেছেন বীরকেদার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। নিহতের মধ্যে দুজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। দুপচাঁচিয়ায় ঘটনাস্থলেই মারা যান মনিরুল ইসলাম (২২)। তিনি নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা সদরের বদলগাছীর বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজের সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তাঁর বাড়ি কাহালু উপজেলার বীরকেদার ইউনিয়নের বীরকেদার দক্ষিণপাড়া গ্রামে। অন্যজনের নাম জিল্লুর রহমান (৪৫)। তাঁর বাড়ি গাবতলী উপজেলায়। অন্য দুজনের বয়স আনুমানিক ৬০ ও ৩৫ বছর।

মুন্সীগঞ্জে সংঘর্ষে নিহত ৪: মুন্সীগঞ্জ শহরের থানারপুল চত্বরে আন্দোলনকারী ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের মধ্যে রোববার সকাল ১০টার দিকে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- রিয়াজুল ইসলাম (৩৫), মেহেদি হাসান (৩২), মো. সজল (২২)। এ সময় গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন।

মাগুরায় নিহত ৪: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ আন্দোলন ঘিরে সকাল থেকেই উত্তপ্ত মাগুরা। রোববার সকাল ১০টার পর থেকে দফায় দফায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মেহেদী হাসান রাব্বী নামে একজনসহ ৪ জন মারা গেছেন। রাব্বী জেলা ছাত্রদলের যুগ্ন সম্পাদক। অপর তিনজন শিক্ষার্থী হলেন ফরহাদ হোসেন ও সুমন শেখ, আহাদ মোল্লা। গুরুতর আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।

পাবনা ৩: পাবনায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের বিচার ও সরকারের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচিতে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকেই। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। রোববার বেলা ১টার দিকে পাবনা শহরের ট্রাফিক মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট পাবনা জেনারেল হাসপাতালে সহকারী পরিচালক ডা. রফিকুল ইসলাম রিমন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহতরা হলেন- পাবনা সদরের চর বলরামপুরের জাহিদুল ইসলাম (১৮) ও পাবনা শহরের আরিফপুর হাজীরহাট এলাকার মাহিবুল হোসন (১৬)।

সিলেট ৪:সিলেটের গোলাপগঞ্জে অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর বাহিনীর গুলিতে চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক লোক। রোববার দপুর আড়াইটার দিকে গোলাপগঞ্জ পৌর এলাকার ধারাবহরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে গুলিতে তারা নিহত হন। নিহতরা হলেন-ধারাবহর গ্রামের মো. মকবুল আলীর ছেলে ব্যবসায়ী তাজ উদ্দিন (৪৩) ও শিলঘাটের বাসিন্দা সানি আহমদ (১৮)। বাকিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর বাসাসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। সৈয়দ টিটুর বাসায় দেওয়া আগুনে পুড়ে মারা গেছেন দুজন। এ ছাড়া এক যুবলীগ নেতাকে হাত-পা বেঁধে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জে আন্দোলনকারী একজন স্ট্রোক করে এবং বাজিতপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন একজন।

মাগুরা: মাগুরা শহরের ঢাকা রোড়ে পুলিশ বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বী (২৫) নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে তিন পুলিশ সদস্যসহ ১০ জন। আজ রবিবার সকাল ১১ টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সকাল ১১ টার দিকে পারনান্দুয়ালী এলাকা থেকে বিএনপি একটি মিছিল নিয়ে শহরে ঢুকতে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় বিএনপি নেতা কর্মীরা পুলিশের উপর ইট পাটকেট নিক্ষেপ করে। পুলিশ তাদের ধাওয়া করে রাবার বুলেট ও গুলি নিক্ষেপ করে। এ সময় নিহত হন জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদেী হাসান রাব্বী। সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্যসহ ১০ জন আহত হয়।

জয়পুরহাট: কোটা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অসহযোগ আন্দোলনে জয়পুরহাটে গুলিতে বিশাল সরকার (১৯) নামে একজন নিহত ও দুই জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। জেলা আওয়ামী লীগ ও জেলা ছাত্রলীগেরর দলীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। পাঁচটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। এসময় দলীয় কার্যালয়ে থাকা স্থানীয় সংসদ সদস্য সামছুল আলম দুদুসহ আওয়ামী লীগের ১০-১২ জনকে গুরুতর জখম করা হয়েছে। এঘটনার পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাউন্ড গ্রেনেড, ছোররা গুলি, টিয়ারশেল ছুঁড়েছে। এতে সাংবাদিক, আন্দোলনকারীসহ শতাধিক আহত হয়েছেন।

ভোলা: ভোলায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষে রোববার তিনজন নিহত হয়েছেন। সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত সংঘর্ষে পুলিশসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। বিএনপির দাবি, তাদের দুই কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দাবি, তাদের এক যুবলীগ কর্মীকে বিক্ষোভকারীরা পিটিয়ে হত্যা করেছে। নিহদের পরিচয় জানা যায়নি।

শেরপুর: শেরপুর জেলা শহরে আজ একাধিক স্থানে আন্দোলনকারী, আওয়ামী লীগ এবং পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ২ জন। আহত হয়েছেন অন্তত পক্ষে ৩০ জন। এদিকে শহরের তিনআনী বাজার মোড়ে আন্দোলনকারীদের ওপর প্রশাসনের টহল গাড়ি উঠিয়ে দিলে বেশ কয়েকজন আহত হন। আহতদের শেরপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন। শেরপুর সদর হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট ডা. মো. সেলিম মিঞা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে রোববার রিপন শীল (২৭) নামের এক তরুণ নিহত হয়েছেন। তার চোখের ওপর গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। তিনি শহরের ইনাতাবাদ এলাকার বাসিন্দা।

কেরানীগঞ্জ: ঢাকার কেরানীগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিকে ঘিরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে রোববার দুপুরে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের প্রধান ফটকে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় অফিসের ভেতর আটকা পড়ে আওয়ামী লীগ কর্মী মো. ইফতি (৩২) নামের একজন নিহত ও প্রায় ১৫ জন আহত হন।

বরিশাল: বরিশালে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে টুটুল চৌধুরী (৬২) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতা নিহত হয়েছেন। রোববার দুপুরের দিকে নগরীর সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের পাশে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারান তিনি। নিহত টুটুল চৌধুরী বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর এ তথ্য নিশ্চিত করেন।


পিরোজপুরে উদ্ধার হওয়া মোবাইল ফোন মালিকদের কাছে হস্তান্তর পুলিশ সুপারের

আপডেটেড ২৩ জুন, ২০২৫ ২৩:০৯
এস এম আবু জাফর , পিরোজপুর 

পিরোজপুর উদ্ধারকৃত ২৬টি মোবাইল ফোন তিনটি ফেসবুক ফেইক আইডি ও একটি হ্যাক হওয়া ফেসবুক আইডি উদ্ধার করে

মালিকদের কাছে হস্তান্তর করেছে পিরোজপুরের পুলিশ সুপার। সোমবার বেলা ১১টায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের হল রুমে উদ্ধারকৃত মোবাইল ফোন মালিকদের মাঝে হস্তান্তর করেন পুলিশ সুপার খাঁন মুহাম্মদ আবু নাসের।

পুলিশ সুপার জানন, পিরোজপুর জেলার ৭টি উপজেলা থেকে ২৬ টি মোবাইল, তিনটি ফেসবুক ফেইক আইডি ও একটি হ্যাক হওয়া ফেসবুক আইডি উদ্ধার করে জেলা পুলিশের আইসিটি ও মিডিয়া সেল শাখা। উদ্ধার হওয়া মোবাইল ফোন ও হ্যাক হওয়া ফেইজবুক আইডি মালিকদের নিকট হস্তান্তর করা হয়।

পিরোজপুর পুলিশ সুপার খাঁন মুহাম্মদ আবু নাসের আরও জানান, পিরোজপুর জেলা পুলিশের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে। মাদক ও অন্যান্য বিষয় জেলা পুলিশ কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও অপরাধজনিত যে কোন বিষয় জেলা পুলিশ এর তৎপর অব্যাহত থাকবে।


মব জাস্টিস কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নুরুল হুদাকে আটকের সময় যেভাবে মব জাস্টিজ করা হয়েছে তা কাম্য নয় জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে এ ধরনের ঘটনায় বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলে তা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোমবার (২৩ জুন) সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের মৌচাকে হর্টিকালচার সেন্টার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘গতকাল (রবিবার) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তারের যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা সঠিক নয়; তাকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। গ্রেপ্তার হয়েছেন নুরুল হুদা।’

‘তবে তাকে গ্রেপ্তারের সময় যেভাবে মব জাস্টিজ করা হয়েছে তা কাম্য নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে এ ধরনের বিশৃঙ্খলা ঘটেছে। এ ঘটনার তদন্ত হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কৃষিজমি দখল রোধে কৃষিজমি সুরক্ষা আইন করা হচ্ছে জানিয়ে উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বিদেশি ফলের পাশাপাশি দেশীয় ফলের উৎপাদন বাড়াতে হবে, যেন এসব ফল হারিয়ে না যায়।’

পরিদর্শনের সময় গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন, পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী যাবের সাদেক, কালিয়াকৈর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার আহমেদ, হর্টিকালচার সেন্টারের এনামুল হকসহ পুলিশ ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় উপদেষ্টা হর্টিকালচার সেন্টারের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং নানা দিক নির্দেশনা দেন।


ভালুকায় পৃথক অভিযানে হেরোইন, ইয়াবা ও পেথিডিন ইনজেকশনসহ আটক ৩

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

ময়মনসিংহের ভালুকায় পৃথক তিনটি অভিযান চালিয়ে হেরোইন, ইয়াবা ও নিষিদ্ধ পেথিডিন ইনজেকশনসহ তিন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। রবিবার (২২ জুন) রাতভর এসব অভিযান পরিচালনা করে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রবিবার রাত আনুমানিক ২টার দিকে উপজেলার মেদুয়ারী এলাকার বাঘসাতরা মোড় বাজারের একটি চায়ের দোকানের সামনে থেকে ৫ গ্রাম হেরোইনসহ মো. আতিকুর রহমান (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তিনি মেদুয়ারী গ্রামের মৃত সিরু মিয়ার ছেলে। একই রাতে, সাড়ে ৩টার দিকে মাহমুদপুর ব্রিজ ঘাট এলাকার আনন্দ সাব্বির অটো ওয়ার্কশপের সামনে থেকে মো. মনিরুজ্জামান (৩০) নামের এক যুবককে ২০ পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়। অপদরিকে ভোর ৪টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের তেপান্তর হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের সামনে চেকপোস্টে জামালপুরগামী রাজীব পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা মেট্রো-১৪-১৫৭৪) তল্লাশি করে ৯১১ পিস পেথিডিন ইনজেকশনসহ মো. ফারুক মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তিনি নেত্রকোনা সদর উপজেলার পশ্চিম কাটলী গ্রামের বাসিন্দা। উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যের মূল্য প্রায় ৩ লক্ষ টাকা। আটককৃত তিনজনের বিরুদ্ধেই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা হয়েছে। আতিকুর ও ফারুকের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক পুরোনো মাদক মামলা রয়েছে।

ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।


দেশব্যাপী স্কাউটস কাব কার্নিভালের উদ্বোধন প্রধান উপদেষ্টার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশ স্কাউটস এর দেশব্যাপী আয়োজিত কাব কার্নিভালের উদ্বোধন করেছেন।

সারাদেশে ৫২৭টি জায়গায় একযোগে এই কার্নিভাল শুরু হয়েছে।

আজ সোমবার ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ইউনূস স্কাউটস কার্নিভালের উদ্বোধন করেন। একইসাথে তিনি বিজয়ী স্কাউট সদস্যদের হাতে শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন।


স্বাধীন ও দক্ষ বিচার বিভাগ গড়তে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, স্বাধীন ও দক্ষ বিচার বিভাগ গড়ে তুলতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লব নতুন সভ্যতা গড়ে তোলার সুযোগ করে দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা এই সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।

রোববার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও দক্ষতা’ বিষয়ক এক জাতীয় সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন বক্তব্য রাখেন।


নির্বাচনের প্রস্তুতি: ইসি ও সুশীল সমাজের সঙ্গে কাজ করছে ইইউ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও সুশীল সমাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।

রবিবার (২২ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকায় ইউরোপীয় দূতাবাস এমন তথ্য জানিয়েছে।

ইইউ দূতাবাস বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশের জন্য আরও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্মাণে সুশীল সমাজকে ক্ষমতায়নে কাজ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধি ও এর অংশীদাররা।

ইউরোপীয় পার্টনারশিপ ফর ডেমোক্রেসির (ইপিডি) সহায়তায় এর অংশীদার সংগঠন আনফারেল ১৮ থেকে ২০ জুন ঢাকায় তিনদিনব্যাপী একটি ওয়ার্কশপের আয়োজন করে। এর বিষয়বস্তু ছিল নাগরিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ।

ইইউ দূতাবাস জানায়, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সক্রিয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে সব অংশগ্রহণকারী একমত পোষণ করেছেন।

নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের জন্য সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা প্রণয়নে সহযোগিতা এবং এতে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালনের কথা স্বীকার করেছে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন।


জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

দুই দিন বিরতি দিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজ রবিবার রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু হয়েছে।

রবিবার (২২জুন) বেলা ১১টা ২০ মিনিটে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ আলোচনায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।

এতে সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। আগের আলোচনার সমাপ্তি টানতেই আজকের এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন-নিউজ সরাসরি সম্প্রচার করছে। বৈঠকে আলী রীয়াজ ছাড়াও আরও উপস্থিত রয়েছেন ঐকমত্য কমিশনের সদস্য জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান।

এর আগে, গত ১৭ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ের অসমাপ্ত আলোচনায় অংশ নেয়নি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগের পর তার পরের দিন অবশ্য অংশ নিয়েছিল দলটি।

এদিকে সংসদের উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলো এখনো কাছাকাছি আসতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতেই এনসিসি গঠনের কথা বলা হচ্ছে।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি এবং সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন নিয়েও দলগুলোর ঐকমত্য হয়নি গত সপ্তাহে হওয়া চার দিনের সংলাপে। এ পর্যায়ে ঐকমত্যের সংজ্ঞা নিয়েও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতানৈক্য প্রকাশ পেয়েছে। কমিশন এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার কথাও ভাবছে।

গত সপ্তাহের সংলাপের অগ্রগতি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এই বিষয়গুলোতে একদিকে রয়েছে বিএনপি এবং সমমনা পাঁচটি দল; তাদের কাছাকাছি অবস্থান বামপন্থি সিপিবি, বাসদের। বিএনপির বিপরীত অবস্থানে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, এবি পার্টিসহ বাকি দলগুলো। যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র গণঅধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি, জেএসডির অবস্থানও বিএনপির বিপরীতে।

নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে সংসদের প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা হ্রাসে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাবের বিপক্ষে অনড় অবস্থান ধরে রেখেছে বিএনপি এবং সমমনা এলডিপি, এনডিএম, লেবার পার্টি, ১২ দলীয় জোট এবং ১১ দলীয় জোট।

চার দিনের সংলাপে ৩০ রাজনৈতিক দল এবং জোট শুধু ৭০ অনুচ্ছেদ শিথিলে শর্ত সাপেক্ষে ঐকমত্য হয়েছে। যদিও জামায়াত বলেছে, শুধু অর্থবিল এবং আস্থা প্রস্তাব নয়, সংবিধান সংশোধনেও এমপিরা দলের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারবেন না। বিএনপি বলেছে, যুদ্ধাবস্থায়ও দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারবেন না এমপিরা।


বিশ্বজুড়ে বাড়ছে বাংলাদেশি শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
    ২০২৪ সালে বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন এক লাখ ৮ হাজার বাংলাদেশি

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের নাগরিকদের শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধনের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রতি বছরই এই সংখ্যা বেড়েছে। শুধু ২০২৪ সালেই জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার কাছে ২৮ হাজার ৪৭৩ বাংলাদেশি শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন।

তবে শুধু শরণার্থী নয়, রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনও করছেন অনেক বাংলাদেশি। ২০২৪ সালে এক লাখ ৮ হাজার ১৩১ বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। অধিকাংশ বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থী ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোতে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেন। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে ২৪ হাজার ১২৬ বাংলাদেশি জাতিসংঘের কাছে শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন। ২০২২ সালে ২৩ হাজার ৯৩৫ জন, ২০২১ সালে ২২ হাজার ৬৭২ জন এবং ২০২০ সালে ১৮ হাজার ৯৪৮ জন বাংলাদেশি নিজেদের শরণার্থী দাবি করে জাতিসংঘের কাছে আবেদন করেন। এছাড়া ২০১৯ সালে শরণার্থী হিসেবে জাতিসংঘের কাছে বাংলাদেশিদের আবেদনের সংখ্যা ছিল ২২ হাজার ৭৬৬, ২০১৮ সালে ২১ হাজার ২২ এবং ২০১৭ সালে ১৬ হাজার ৭৮০টি।

২০২৪ সালে এক লাখ ৮ হাজার ১৩১ বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। এছাড়া ২০২৩ সালে ৭৫ হাজার ৮৬৭ জন বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। ২০২২ সালে ৬১ হাজার ২৯৮ জন, ২০২১ সালে ৬৫ হাজার ৪৯৫ এবং ২০২০ সালে ৬৪ হাজার ৬৩৬ জন বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চান। ২০১৯ সালে এ সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৮৬০ এবং ২০১৮ সালে ৬২ হাজার ৮৬০।

তবে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার তথ্যে যে চিত্র উঠে এসেছে তাতে দেখা যায়, আশ্রয়প্রার্থীদের বেশিরভাগই সুযোগসন্ধানী বা পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়েছেন।

অভিবাসন ও শরণার্থীবিষয়ক বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর বলেন, অনেকে অবৈধ পথে লাখ লাখ টাকা দিয়ে ইউরোপ যাচ্ছেন। সেখানে গিয়ে অবৈধ হয়ে থাকেন বছরের পর বছর। এরপর এরা শরণার্থী হিসেবে স্থায়ী হওয়ার আবেদন করেন।

তিনি বলেন, কিছু দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত, যেমন মিয়ানমার, সিরিয়া, আফগানিস্তান- এসব দেশ থেকে কেউ গেলেই অটোমেটিক তারা শরণার্থী হিসেবে বিবেচিত হন। কিন্তু আমাদের দেশের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য না। আমাদের অনেকে অবৈধ হিসেবে গিয়ে শরণার্থী পরিচয় দেন, কিন্তু ইউরোপ জানে এরা অবৈধ অভিবাসী।

আসিফ মুনীর আরও বলেন, তবুও ইউরোপের দেশ ইতালি, ফ্রান্স আমাদের এই অবৈধ অভিবাসীদের গ্রহণ করছে। কিন্ত বাস্তবিক অর্থে যারা অবৈধ পথে এসব দেশে যাচ্ছেন এরা শরণার্থী নন। কিন্তু বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বহু মানুষ ইউরোপে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। বিশেষ করে স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশগুলোতে বহু বাংলাদেশি আছেন যারা শরণার্থী হিসেবে গিয়েছেন।


সমুদ্রসীমার পরিপূর্ণ হাইড্রোগ্রাফিক তথ্যভাণ্ডার গড়ে তুলতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ২০ জুন, ২০২৫ ২০:৪৪
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সমুদ্রসীমার একটি পরিপূর্ণ হাইড্রোগ্রাফিক তথ্যভাণ্ডার গড়ে তুলতে আরো পেশাদারিত্ব, দক্ষতা, নিষ্ঠার সাথে কাজ করার জন্য হাইড্রোগ্রাফিক পেশাজীবীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত আরো মজবুত ও সমৃদ্ধ করতে সমুদ্র তলদেশের নির্ভুল মানচিত্রায়নের মাধ্যমে একটি কার্যকর ও টেকসই সমুদ্রনীতি গড়ে তুলতে হবে।

‘বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস-২০২৫’ উপলক্ষ্যে আজ শুক্রবার এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও বাংলাদেশে ‘বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস-২০২৫’ উদ্যাপন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।’

তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীসহ দিবসটি আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। একই সাথে এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য-‘সিবেড ম্যাপিং: এনাবলিং ওশান এ্যাকশন’- যার মাধ্যমে গভীর সমুদ্রের তলদেশের মানচিত্রায়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে, অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত হয়েছে বলে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস মনে করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় বঙ্গোপসাগর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু বাংলাদেশই নয়, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোও তাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য বঙ্গোপসাগরের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেশকে একটি উৎপাদনমুখী ও আঞ্চলিক অর্থনৈতিক কেন্দ্রে রূপান্তরের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এ লক্ষ্য অর্জনে সমুদ্র সম্পদকে আরো কার্যকরভাবে ব্যবহারে বিশদ, হালনাগাদ ও নির্ভুল হাইড্রোগ্রাফিক তথ্যের কোনো বিকল্প নেই।

প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল ও সমুদ্রসীমার হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ, চার্ট প্রস্তুত, সকল দেশি ও বিদেশি জাহাজের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী তথ্য-উপাত্ত বিনিময়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর হাইড্রোগ্রাফিক বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে জাতিসংঘের সমুদ্র আইন অনুযায়ী, আমাদের মহীসোপান অঞ্চল নির্ধারণ এবং সুনীল অর্থনীতি বিকাশে হাইড্রোগ্রাফিক বিভাগের কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আমাদের সামরিক ও নৌ-নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি হাইড্রোগ্রাফি বিভাগ সমুদ্র বন্দরের উন্নয়ন, মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ, তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান এবং উপকূলীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।

তিনি ‘বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস-২০২৫’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।


বাংলাদেশ-এডিবি ১৩০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি, চার প্রকল্পে অর্থায়ন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

জলবায়ু সহনশীলতা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, পরিবহন অবকাঠামো ও ব্যাংক খাতে সংস্কারে চারটি প্রধান উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সঙ্গে ১৩০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ।

শুক্রবার (২০ জুন) রাজধানীর ইআরডি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও এডিবির মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদির সিদ্দিকী এবং এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং সংশ্লিষ্ট নথিতে সই করেন।

ইআরডি সচিব বলেন, ‘এই চুক্তিগুলো আমাদের জলবায়ু সহনশীলতা জোরদার, অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিচ্ছন্ন জ্বালানির প্রসার ও আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এডিবির সহায়তা আমাদের জাতীয় অগ্রাধিকার অনুযায়ী অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে।’

যে ৪ প্রকল্পে অর্থায়ন করা হবে—৪০ কোটি ডলারের ‘জলবায়ু-স্থিতিস্থাপক অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কর্মসূচি (সিআরআইডিপি)’ সই করেছে এডিবি ও বাংলাদেশ। এই কর্মসূচির লক্ষ্য জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধি, নির্গমন হ্রাস এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা। এই প্রকল্পের আওতায় এজেন্সি ফ্রান্সেস ডি ডেভেলপমেন্ট (এএফডি) থেকে প্রায় ১১ কোটি ৩০ লাখ ডলার এবং এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক থেকে ৪০ কোটি ডলার সহ-অর্থায়ন পাবে বাংলাদেশ।

এ ছাড়া, বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ গঠন, দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়ন জোরদার, জেন্ডার-সংবেদনশীল স্থানীয় অভিযোজন প্রচার এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও পরিবহন মাস্টার প্ল্যানকে সহায়তা করবে সিআরআইডিপি।

এরপর রয়েছে ২০ কোটি ডলারের ‘বিদ্যুৎ সঞ্চালন শক্তিশালীকরণ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি একীভূতকরণ প্রকল্প’। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বগুড়া, চাঁদপুর, গোপালগঞ্জ, হবিগঞ্জ, পিরোজপুর ও সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন গ্রামীণ জেলায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন অবকাঠামো উন্নীত করা হবে।

পাশাপাশি দক্ষিণ চট্টগ্রাম অঞ্চলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির একীভূতকরণে সহায়তা করবে এই প্রকল্প, যা নির্ভরযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।

তাছাড়া, ঢাকা উত্তর-পশ্চিম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করিডোর উন্নয়নে ২০ কোটি ৪০ লাখ ডলারের একটি ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করেছে এডিবি ও বাংলাদেশ সরকার। করিডোরটির উন্নয়নের মধ্য দিয়ে দেশের আঞ্চলিক বাণিজ্য আরও বিস্তৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এ প্রকল্পের আওতায় এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার সড়ক সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন করা হবে। প্রকল্পটি ভুটান, ভারত ও নেপালের সঙ্গে আঞ্চলিক সংযোগ উন্নয়নে সহায়তা করবে বলে বলা হয়েছে।

এতে জলবায়ু সহনশীল ডিজাইন ও জেন্ডার-সংবেদনশীল বৈশিষ্ট্য যেমন ফুটব্রিজ ও মটরবিহীন যানবাহনের জন্য আলাদা লেন অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতকে স্থিতিশীল ও সংস্কারের পথে এগিয়ে নিতে ৫০ কোটি ডলারের ‘ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ও সংস্কার কর্মসূচি’ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

এই সংস্কারকেন্দ্রিক কর্মসূচিটি নিয়ন্ত্রক তত্ত্বাবধান শক্তিশালী করবে, আর্থিক সম্পদের গুণমান উন্নত করবে এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের সক্ষমতা বাড়ানো ও খেলাপি ঋণ সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই প্রকল্প সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই সমন্বিত সহায়তা প্যাকেজ বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদী সহনশীলতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মন্তব্য করেন হো ইউন জিয়ং।


পাঁচ সচিবসহ ছয় কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত পাঁচজন সচিব বা সমপদমর্যাদার এবং একজন গ্রেড-১ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

অবসরে পাঠানো কর্মকর্তারা হলেন- বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক (সচিব) কাজী এনামুল হাসান, জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমির মহাপরিচালক (সচিব) সুকেশ কুমার সরকার, ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব) মুহম্মদ ইব্‌রাহিম, জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমির রেক্টর (সচিব) মো. সহিদ উল্যাহ এবং ওএসডি সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন।

এ ছাড়া বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) লিপিকা ভদ্রকেও বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনগুলোতে জানানো হয়, তাদের চাকরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে এবং সরকার জনস্বার্থে সরকারি চাকরি থেকে অবসর করা প্রয়োজন মর্মে বিবেচনা করে বিধায় তাদেরকে সরকারি চাকরি থেকে অবসর দেওয়া হয়েছে।

তারা বিধি অনুযায়ী অবসরজনিত সুবিধাদি পাবেন বলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালযয়ের প্রজ্ঞাপনগুলোতে জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, আইন অনুযায়ী সরকার ২৫ বছর হয়ে গেলে একজন কর্মকর্তাকে অবসরে পাঠাতে পারে কিন্তু সেজন্য সুনির্দিষ্ট কারণ কখনো প্রকাশ করা হয় না।


লিবিয়া থেকে আরও ১২৩ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

লিবিয়া থেকে স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করা আরও ১২৩ অনিবন্ধিত বাংলাদেশি নাগরিককে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব বাংলাদেশির সবাই বুরাক এয়ারের একটি বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটে (ইউজেড ০২২২) সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।

উল্লেখ্য, প্রত্যাগতদের অধিকাংশই মানবপাচারের শিকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে, ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সমন্বিত উদ্যোগে প্রত্যাবাসন কার্যক্রমটি বাস্তবায়িত হয়েছে।

দেশে ফেরার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইওএম-এর প্রতিনিধিরা তাদের স্বাগত জানান ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধিকাংশ বাংলাদেশি সমুদ্রপথে ইউরোপে পৌঁছানোর উদ্দেশে অনিবন্ধিতভাবে লিবিয়ায় প্রবেশ করেছিলেন। লিবিয়ায় অবস্থানকালে তাদের অনেকেই মানব পাচারকারীদের দ্বারা অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হন।

সরকারি কর্মকর্তারা এসব অভিবাসীকে পরামর্শ দেন, যেন তারা অন্যদের এই ধরনের বিপজ্জনক ও অবৈধ পথে বিদেশ গমনের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করেন এবং ভবিষ্যতে এমন যাত্রা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন।

পুনর্বাসন সহায়তার অংশ হিসেবে আইওএম প্রত্যেককে নগদ ৬ হাজার টাকা, জরুরি খাদ্য সহায়তা, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা এবং প্রয়োজনে অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করেছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বর্তমানে লিবিয়ার বিভিন্ন বন্দিশিবিরে আটক থাকা অন্যান্য বাংলাদেশির নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের কাজ চলছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইওএম যৌথভাবে এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে।


রাঙ্গামাটির দুর্গম পাহাড়ে বিরল প্রজাতির গোলাপি হাতির বাস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

রাঙ্গামাটি জেলার দুর্গম পাহাড়ে বিরল প্রজাতির গোলাপি রঙের নতুন হাতির বাচ্চা দেখা গেছে। দেশে প্রথমবারের মতো রাঙ্গামাটির পাহাড়ে দেখতে পাওয়া বিরল এই গোলাপি হাতির বাচ্চাটির বয়স দুই সপ্তাহের একটু বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জেলার বরকল উপজেলার সুভলংয়ের বরুনাছড়ি ইউনিয়নের ফরেস্টের এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম (ইআরটি) এর প্রধান সমন্বয়কারী মো. জাহাঙ্গীর আলম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এর আগে গোলাপি রঙের হাতির দেখা পাওয়া যায়নি। এটা বাংলাদেশের প্রাণিজগতে হাতির প্রথম বিস্ময়কর ঘটনা হতে পারে। রাঙ্গামাটি শহর থেকে এক থেকে দেড় ঘণ্টায় স্পিডবোটে করে ঘটনাস্থলে যাওয়া যায়। সাধারণ বোটে হলে সময় আরো একটু বেশি লাগতে পারে।

জেলার বরকল উপজেলার বরুনাছড়ি ইউনিয়নে দুর্গম পাহাড়ে হাতির অবস্থান সম্পর্কে মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, তিনিই প্রথম দেখতে পান একটি হাতির পাল গোলাপি রঙের হাতি শাবকসহ বরুনাছড়ি এলাকায় কাপ্তাই হ্রদ পার হতে । পরে জাহাঙ্গীর আলম সঙ্গে সঙ্গে সেই দৃশ্যটির ভিডিও ধারণ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিমকে পাঠান। তিনি সেই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করলে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।

তিনি জানান, বর্তমানে বরুনাছড়িতে হাতির নতুন গোলাপি বাচ্চাসহ দুটি হাতির শাবক এবং আরো ৬টি হাতিসহ সর্বমোট ৮টি হাতি রয়েছে। এর মধ্যে নতুন গোলাপি বাচ্চাসহ ৫টি একটি দলে, ২টি হাতি একসাথে এবং আরো একটি বড় হাতি সেখানে অবস্থান করছে। সরজমিনে দেখা যায়, সদ্য জন্ম নেয়া হাতির ছোট শাবকটি গোলাপি রঙের। সাধারণত বাচ্চা হাতির সারা গায়ের লোম কালো হলেও নতুন বাচ্চার গায়ের রং অনেকটাই গোলাপি এবং কিছুটা ব্যতিক্রম এই গোলাপি শাবক।

এ বিষয়ে রাঙ্গামাটি সার্কেলের বন সংরক্ষক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল সরকার বলেন, পাহাড়ে হাতি সংরক্ষণের জন্য বন বিভাগ ছাড়াও ফরেস্ট বিভাগের দায়িত্বরত ব্যক্তির পাশাপাশি আরো একটি ইআরটি রয়েছে। তারা সব সময় পাহাড়ে থাকা হাতির সমস্যাসহ নানা বিষয় তদারক করে। আমরা এই টিমের মাধ্যমেই গত ১৩ জুন গোলাপি রঙের হাতির নতুন শাবকের কথা জানতে পারি। খবর পেয়ে আমরা বন বিভাগের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।

তিনি বলেন, ‘নতুন এই বিস্ময়কর গোলাপি রঙের হাতির দিকে বন বিভাগ নজর রাখছে।’

হাতির বাচ্চাটির গায়ের রং গোলাপি হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বন সংরক্ষক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল সরকার বলেন, নিউট্রিশনজনিত কারণেও হাতির বাচ্চার রং এরকম পরিবর্তন হতে পারে। এটি একটি গবেষণার বিষয় এবং এটা নিশ্চিত করতে একটু সময় লাগবে।

বরুণাছড়ির ঘটনাস্থলেই দেখা হয় জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও অধ্যাপক এম মনিরুল এইচ খানের সঙ্গে। তিনি হাতির বাচ্চার গোলাপি রঙের বিষয়ে বলেন, সাধারণত হাতির গায়ের রং কালচে ধরনের হয়ে থাকে।

হাতির চামড়ায় যে রঞ্জক পদার্থ তৈরি হয় তা যদি কোন অস্বাভাবিকতার কারণে তৈরি হতে না পারে সেটি কিছুটা ফ্যাকাসে বা গোলাপি রং ধারণ করে। এই নতুন হাতি শাবকটির ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এটি অত্যন্ত বিরল ঘটনা এবং স্বাভাবিক অবস্থায় এটি হয় না।

তিনি বলেন, ‘হাতির জিনগত কোন অস্বাভাবিকতার কারণে অনেক সময় হাতির গায়ের রঙের ভিন্নতা আসে এবং এই ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।’

অধ্যাপক এম মনিরুল এইচ খান বলেন, ভারতীয় উপমহাদেশ, মায়ানমার, থাইল্যান্ডসহ পুরো অঞ্চলে এশীয় হাতির রং এরকম গোলাপি হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত বিরল। রাজাদের শাসনামলে এ ধরনের বিরল সাদাটে বা গোলাপি হাতিগুলো রাজাদের কাছে খুবই কদরের ছিল। রাজারা তাদের হাতিশালায় এসব হাতি শখ করে পুষতেন এবং হাতিগুলোকে তাদের বিভিন্ন ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহার করতেন। তিনি এরকম বিরল হাতি সংরক্ষণে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে যথাযথ ভূমিকা পালনের সুপারিশ করেন।

তিনি বলেন, পুরো পার্বত্য চট্টগ্রামের যে সব অঞ্চলে বন্য হাতি আছে সে সব অঞ্চলের প্রায় বনাঞ্চলই দখল হয়ে বসতি, বাজারসহ বিভিন্ন অবকাঠামো গড়ে উঠছে। ক্রমেই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে হাতির আবাসস্থলসহ পাহাড়ের বনাঞ্চল। এ কারণে এক সময় হাতির নিরাপদ আবাসভূমি এখন তাদের জন্য বিপদসংকুল হয়ে উঠেছে। বর্তমানে পাহাড়ে হাতি আর মানুষ অনেকটা একসঙ্গেই বসবাস করছে। যার কারণে হাতি আর মানুষের দ্বন্দ্ব অনেকটাই বেড়ে চলেছে এবং যার অনেক আলামত আমরা চারপাশেই দেখতে পাচ্ছি।

তিনি বিরল প্রাণীর অভয়ারণ্য তৈরির জন্য সরকারি বনভূমি সংরক্ষণ করে সেখানে প্রাকৃতিকভাবে স্থানীয় উদ্ভিদ বেড়ে ওঠার পরিবেশ তৈরি করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, প্রয়োজন হলে এনরিচমেন্ট প্ল্যান্টেশন বা স্থানীয় যে সব উদ্ভিদ প্রজাতি ও বৃক্ষ প্রজাতি আছে সেগুলো বন বিভাগের মাধ্যমে রোপণ ও সংরক্ষণে স্থানীয় জনগণকে সচেতন করতে হবে।

পাহাড়ের প্রত্যন্ত দুর্গম এলাকাতে গোলাপি হাতিটি দেখতে এখন প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছে গবেষকসহ উৎসুক জনগণ। হাতির বাচ্চাটি ছোট থাকায় মা হাতিসহ অন্য হাতিরা তাকে হাতির শুড়ের ওপর করেও কাপ্তাই লেক পাড় হতে দেখেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। বর্তমানে যে টিলাতে হাতিগুলো অবস্থান করছে হাতির গোলাপি শাবকটি বড় না হওয়া পর্যন্ত এই বুনো হাতির দল সেখানেই অবস্থান করতে পারে বলে ধারণা করছেন ইআরটির সদস্যরা।

তবে পাহাড়ে বিরল প্রজাতির এই গোলাপি হাতির বাচ্চাসহ পুরো হাতির দলকে নিরাপদে রাখতে সেখানে মানুষের অবাধ বিচরণকে নিয়ন্ত্রণে আনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তা না হলে যেকোনো সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাসহ হাতির আক্রমণের শিকার হতে পারে মানুষ। তাই পুরো এলাকাটি সরকারিভাবে সংরক্ষণ করাটা অনেক জরুরি।

সূত্র: বাসস


banner close