রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ৩৮৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

২০১৭ সালের ১৮ জুন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের গাড়িবহরে হামলা হয়। পুরোনো ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১৯ আগস্ট, ২০২৪ ১৭:১৪

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদসহ ৩৮৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সাত বছর আগে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া এলাকায় ঘটা এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মমিনুন নেসা খানমের আদালতে মামলাটি করেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের দপ্তর সম্পাদক নাজিম উদ্দিন।

বাদীর আইনজীবী এনামুল হক বলেন, আদালত মামলাটি গ্রহণ করে রাঙ্গুনিয়া থানার ওসিকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় ৮৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। বাকি ৩০০ জন অজ্ঞাতপরিচয়ের।

মামলার আসামিদের মধ্যে অন্যতম চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার মেয়র শাহজাহান সিকদার, রাঙ্গুনিয়া রাজানগর ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল আলম তালুকদার, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউনুছ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু তৈয়ব ও সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদের ভাই খালেদ মাহমুদ।

মামলার আরজিতে বলা হয়, ২০১৭ সালের ১৮ জুন রাঙামাটিতে পাহাড়ধসের ঘটনা সরেজমিন পরিদর্শন করতে মির্জা ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল রাঙ্গুনিয়ার কাপ্তাই হয়ে রাঙামাটি যাওয়ার জন্য রওনা হয়। পথিমধ্যে রাঙ্গুনিয়ার ইছাখালী এলাকায় লোহার রড ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে আহত হন মির্জা ফখরুল ইসলাম, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমানসহ অনেকে। পরে হামলার শিকার বিএনপির প্রতিনিধিদল রাঙামাটি না গিয়ে চট্টগ্রাম শহরে ফিরে আসে।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ওই নেতাকর্মীরা এ ঘটনার জন্য সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদকে দায়ী করেন। তিনি ওই এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য। তবে ঘটনার সময় হাছান মাহমুদ তা স্বীকার করেছিলেন।

মামলার বাদী চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের দপ্তর সম্পাদক নাজিম উদ্দিন বলেন, আসামিদের কাছে জিম্মি ছিল পুরো রাঙ্গুনিয়াবাসী। তাদের আইনের আওতায় এনে মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা হোক।

বিষয়:

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসের সবচেয়ে মর্মন্তুদ দিন। এ দিন ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বিজয়ের উষালগ্নে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হারানোর দুঃসহ বেদনার দিন।
নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের শেষলগ্নে পুরো দেশের মানুষ যখন চূড়ান্ত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই এ দেশীয় নরঘাতক রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা মেতে ওঠে বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞে। বিজয়ের চূড়ান্ত মুহূর্তে বাঙালিকে মেধাশূন্য করার এ নৃশংস নিধনযজ্ঞ সেদিন গোটা জাতিসহ পুরো বিশ্বকেই হতবিহ্বল করে দিয়েছিল।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাত্র দুদিন আগে, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে ঘাতক চক্র কেবল ঢাকা শহরেই প্রায় দেড়শ’ বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন পেশার কৃতী মানুষকে চোখ বেঁধে নিয়ে যায় অজ্ঞাত স্থানে। সান্ধ্য আইনের মধ্যে সেই রাতে তালিকা ধরে ধরে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিক, সংস্কৃতিসেবী ও পদস্থ’ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে হত্যা করে ফেলে রাখা হয় নিস্তব্ধ ভূতুড়ে অন্ধকারে।
পরদিন সকালে ঢাকার মিরপুরের ডোবা-নালা ও রায়েরবাজার ইটখোলাতে বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে থাকতে দেখা যায় অনেক নিথর দেহ। কারও শরীর বুলেটবিদ্ধ, কারও অমানুষিক নির্যাতনে ক্ষতবিক্ষত। হাত পেছনে বেঁধে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয় অনেককে। স্বাধীনতার উষালগ্নে উন্মুখ মানুষ স্বজন হারানোর সেই কালরাত্রির কথা জানতে পেরে শিউরে উঠেছিল। স্থবির হয়ে গিয়েছিল সবকিছু।
হত্যার পূর্বে যে তাদের নির্যাতন করা হয়েছিল, সে তথ্যও বের হয়ে আসে। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সংকলন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সাময়িকী নিউজ উইকের সাংবাদিক নিকোলাস টমালিনের রচিত নিবন্ধ থেকে জানা যায় যে, নিহত শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা মোট ১ হাজার ৭০ জন।
বাঙালি জাতির দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রামে এই বুদ্ধিজীবীরা মেধা, মনন ও লেখার মাধ্যমে স্বাধীনতার সংগঠকদের প্রেরণা জুগিয়েছেন। দেখিয়েছেন মুক্তির পথ। গোটা জাতিকে উদ্দীপ্ত করেছেন অধিকার আদায়ের সংগ্রামে। স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম যেন কিছুতেই সহ্য হচ্ছিল না স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের।
১৪ ডিসেম্বরকে বুদ্ধিজীবীদের নিধনযজ্ঞের দিন হিসেবে স্মরণ করা হলেও মূলত ১০ ডিসেম্বর ইতিহাসের এ ঘৃণ্যতম অপকর্মের সূচনা হয়। সপ্তাহজুড়ে এদের তালিকায় একে একে উঠে আসে বুদ্ধিদীপ্ত সাহসী মানুষের নাম। মূলত ১০ ডিসেম্বর থেকেই রাতের আঁধারে তালিকাভুক্ত বুদ্ধিজীবীদের বাসা থেকে চোখ বেঁধে রায়েরবাজার ও মিরপুর বধ্যভূমিতে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ঢাকার মিরপুরে প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়। ১৯৯১ সালে ঢাকার রায়েরবাজারে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নামে আরেকটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ শুরু হয়, যা ১৯৯৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হয়।
প্রতিবছর ১৪ ডিসেম্বর শোকের আবহে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে থাকে। দেশের সর্বত্র জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। ওড়ে শোকের প্রতীক কালো পতাকা।
দেশব্যাপী বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা, গান, আবৃত্তি, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, স্বেচ্ছায় রক্তদান, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আজ সকাল ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যরা এবং যুদ্ধাহত ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা সকালে মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এবং রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর সর্বস্তরের মানুষের উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এ দিন বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। সংবাদপত্রগুলো প্রকাশ করবে বিশেষ ক্রোড়পত্র। জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এছাড়াও সব মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হবে।


শহীদ বুদ্ধিজীবীরা গণতান্ত্রিক ও উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন: প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীরা একটি গণতান্ত্রিক, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। আগামীকাল রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে শনিবার দেওয়া ওই বাণীতে তিনি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন পাকিস্তানি শোষকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইয়ের সম্মুখসারির যোদ্ধা। তারা নিজেদের মেধা, মনন, সাংস্কৃতিক চর্চা ও ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরিতে অসামান্য অবদান রেখেছিলেন। এমনকি যুদ্ধকালীন সরকারকে বুদ্ধিবৃত্তিক ও কৌশলগত পরামর্শ দিয়ে জাতিকে বিজয়ের পথে এগিয়ে নিতেও তাদের ভূমিকা ছিল অপরিসীম।

বাণীতে ড. ইউনূস ১৪ ডিসেম্বরকে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক দুঃখজনক ও কলঙ্কময় দিন হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের ঠিক প্রাক্কালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। তারা পরিকল্পিতভাবে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাহিত্যিক ও শিল্পীসহ দেশের মেধাবী সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা করে। এই নৃশংসতার মূল উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীন হতে যাওয়া বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ জাতিতে পরিণত করা।

বর্তমান প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আমৃত্যু লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। সরকার সমগ্র জাতিকে সঙ্গে নিয়ে একটি বৈষম্যহীন ও ন্যায়ভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে কাজ শুরু করেছে, তার মাধ্যমেই শহীদদের স্বপ্ন সফল হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। দিবসটি উপলক্ষে তিনি দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নতুনভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।


তারেক রহমানের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরলে তার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। শনিবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। তিনি স্পষ্ট করেন যে, সরকার তারেক রহমানের নিরাপত্তার বিষয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই গ্রহণ করেছে।

নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে কঠোর অবস্থানের কথা জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি ঘোষণা করেন, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার এবং ‘ফ্যাসিস্ট টেরোরিস্ট’দের দমনে অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রেও নীতিগত পরিবর্তনের কথা জানান তিনি। এতদিন কেবল সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের লাইসেন্স দেওয়া হলেও, এখন থেকে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা আবেদন করলে তাদেরও নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হবে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতেও সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। উপদেষ্টা জানান, তাদের সুরক্ষায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং এ সংক্রান্ত সার্বিক বিষয় পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় সরকার গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম। তিনি হামলাকারীদের ধরিয়ে দিতে পারলে সরকারের পক্ষ থেকে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন এবং এ বিষয়ে জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন। ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র সচিব এবং আইজিপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


রবিবার প্রধান বিচারপতির বিদায়ী অভিভাষণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ আগামীকাল রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) উচ্চ পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তার বিদায়ী অভিভাষণ প্রদান করবেন। সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে বিকেল ৩টায় আয়োজিত এই গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশনে তিনি দেশের সব জেলা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের সামনে বক্তব্য রাখবেন।

আগামী ২৭ ডিসেম্বর অবসরে যাওয়ার আগে এই ভাষণে প্রধান বিচারপতি মূলত তার ঘোষিত বিচার বিভাগীয় সংস্কার ও উন্নয়নের রোডম্যাপের অগ্রগতি নিয়ে আলোকপাত করবেন। ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে তিনি বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, বিচারক নিয়োগে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন এবং দুর্নীতি প্রতিরোধসহ একটি ঐতিহাসিক রূপরেখা ঘোষণা করেছিলেন। গত দেড় বছরে সেই রোডম্যাপের আওতায় গৃহীত কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার বিষয়গুলো তার বক্তব্যে উঠে আসবে।

এছাড়াও চলমান বিচার বিভাগীয় সংস্কার কার্যক্রম, বিশেষ করে প্রযুক্তিনির্ভর সেবা সম্প্রসারণ, আদালতের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ, বিচারকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি, বিচারপ্রার্থীদের সেবা সহজীকরণ এবং দীর্ঘদিনের মামলাজট নিরসনে তিনি বিচারকদের গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেবেন বলে সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গেছে।


ওসমান হাদির ওপর হামলাকারী শনাক্ত, শিগগিরই গ্রেপ্তার: ডিএমপি কমিশনার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও আসন্ন নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় জড়িত একজনকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। শনিবার রাজধানীর রাজারবাগে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। তিনি জানান, শনাক্তকৃত ব্যক্তিকে শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঘটনার তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে, তাই তদন্তের স্বার্থে এখনই এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এদিকে, ডিএমপির পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তের সন্ধানদাতার পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন রাখা হবে এবং তাকে উপযুক্ত পুরস্কার প্রদান করা হবে।

মাথায় গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন। বর্তমানে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট সড়কে একটি ব্যাটারিচালিত রিকশায় যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পরপরই তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

হামলার প্রকৃত কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া না গেলেও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্টরা চাঞ্চল্যকর তথ্য পাচ্ছেন। ফুটেজে যাকে গুলি ছুড়তে দেখা গেছে, তিনি ঘটনার দিন সকাল থেকেই হাদির সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।


জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সকল রাজনৈতিক দল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনাকে জুলাই অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে অভিহিত করেছেন দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা। এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা ও নির্বাচন বানচালের যেকোনো প্রচেষ্টা রুখে দিতে দলগুলো ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে রয়েছে বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ নেতাদের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এ ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ওসমান হাদির ওপর হামলাটি পূর্ব-পরিকল্পিত এবং এর পেছনে বড় কোনো শক্তি কাজ করছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে এবং প্রশিক্ষিত শুটার নিয়ে মাঠে নেমেছে। প্রধান উপদেষ্টা এই হামলাকে ‘সিম্বলিক’ উল্লেখ করে বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের মূল উদ্দেশ্য নির্বাচন বানচাল করা এবং নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করা। তাই এসব অপতৎপরতা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক দোষারোপের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্যে দ্বিমত থাকলেও জাতি ও জুলাই অভ্যুত্থানের স্বার্থে সবাইকে এক থাকতে হবে। তিনি যেকোনো অপশক্তিকে বরদাস্ত না করার হুঁশিয়ারি দেন এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার পরামর্শ দেন।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, সম্প্রতি দলগুলোর মধ্যে একে অপরকে দোষারোপ করার প্রবণতা বাড়ায় বিরোধীরা সুযোগ পেয়েছে। ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে জাতিকে বিভক্ত না করে সবাইকে পূর্বের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ থাকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি ঠিক করার ওপর জোর দেন তিনি।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, সুসংগঠিতভাবে জুলাই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। মিডিয়া ও প্রশাসনের একাংশ ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে ‘নরমালাইজ’ করার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, নিজেদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই, বরং জুলাইয়ের চেতনাকে সবাই মিলে ধারণ করতে হবে। দলটির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ সতর্ক করে বলেন, নিজেদের মধ্যে ঐক্য না থাকলে কোনো নিরাপত্তাই কাজে আসবে না; রাজনৈতিক স্বার্থে দলগুলো যেন আওয়ামী লীগকে সুযোগ করে না দেয়।

বৈঠকে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল মন্তব্য করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ হানাহানির সুযোগে আওয়ামী লীগ পুনরায় শক্তি সঞ্চয় করছে। তাই শুধু দলীয় স্বার্থ নয়, জাতীয় স্বার্থে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি। প্রধান উপদেষ্টাও নির্বাচনকালীন উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং কাউকে শত্রু না ভাবার রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল জাবের উপস্থিত ছিলেন।


গণ-অভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যারা সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। শনিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। এরই অংশ হিসেবে তাদের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অস্ত্র উদ্ধার অভিযান নিয়েও আলোচনা হয়। উপদেষ্টা জানান, লুট হওয়া ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে। সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদী অপশক্তি দমনে এবং অস্ত্র উদ্ধার কার্যক্রমকে আরও গতিশীল ও জোরদার করতে অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ চালু করার ঘোষণা দেন তিনি।


হাদির হত্যাচেষ্টায় জড়িতদের ধরিয়ে দিলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িতদের ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে সরকার। শনিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে উপদেষ্টা জানান, হামলাকারী আসামিদের গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া জোরেশোরে চলছে এবং জনগণের সহযোগিতায় খুব দ্রুতই তাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ সময় তিনি শরিফ ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করে বলেন, সবার দোয়ায় তিনি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে আবার সবার মাঝে ফিরে আসতে পারেন।

আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এতদিন সাধারণত শুধু সরকারি কর্মচারীদেরই অস্ত্র বহন বা লাইসেন্স দেওয়া হতো। তবে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা যদি নিরাপত্তার স্বার্থে অস্ত্রের লাইসেন্স চান, তবে তাদের তা দেওয়া হবে। এছাড়া তাদের কোনো বৈধ অস্ত্র সরকারের কাছে জমা থাকলে তাও ফেরত দেওয়া হবে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে তিনি জানান, তাদের সুরক্ষায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি ‘ফ্যাসিস্ট’দের গ্রেপ্তারের সংখ্যা আরও বাড়ানোর ওপর জোর দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।


এমপি প্রার্থীদের নিরাপত্তায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে: ডিএমপি কমিশনার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য (এমপি) প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলী। শনিবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে আয়োজিত এক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ আশ্বাস দেন।

ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলার বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার জানান, এই হত্যাচেষ্টার ঘটনায় জড়িত প্রধান সন্দেহভাজনকে ইতিমধ্যে শনাক্ত করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই তার নাম-পরিচয় প্রকাশ করা না হলেও তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশ সর্বাত্মক অভিযান চালাচ্ছে। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই তদন্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণের সহযোগিতা পেলে খুব দ্রুতই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন ওসমান হাদি। তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।


ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীকে ধরিয়ে দিতে ডিএমপির সহায়তা কামনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ওই হামলাকারীর সন্ধান বা তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য জনসাধারণের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ। শনিবার ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত শুক্রবার রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হন ওসমান হাদি। এই ঘটনার পর থেকেই জড়িতদের গ্রেফতারে রাজধানীজুড়ে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশ। এরই অংশ হিসেবে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে প্রাথমিকভাবে একজনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনতে সর্বসাধারণের সহযোগিতা চেয়েছে ডিএমপি। তার সম্পর্কে কোনো তথ্য বা সন্ধান জানা থাকলে দ্রুত ডিসি মতিঝিল (০১৩২০০৪০০৮০), ওসি পল্টন (০১৩২০০৪০১৩২) অথবা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হয়েছে। ডিএমপির পক্ষ থেকে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে যে, যিনি সঠিক তথ্য দিয়ে সহায়তা করবেন তার নাম ও পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন রাখা হবে এবং তাকে উপযুক্ত পুরস্কার প্রদান করা হবে।


হাদির পরিবারের সঙ্গে যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ

আপডেটেড ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৪:১৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

আহত ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির সুচিকিৎসা নিশ্চিতে সরকার পূর্ণাঙ্গ সহায়তা দেবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় হাদির পরিবার ও তার সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন।

সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা জানান, হাদির দ্রুত আরোগ্যের জন্য সারাদেশের মানুষ দোয়া করছে এবং তার চিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় যদি দেশের বাইরে পাঠানোর প্রয়োজন হয়, তবে সরকার তাৎক্ষণিকভাবে সেই ব্যবস্থাই গ্রহণ করবে। এ সময় তিনি হাদির ওপর নৃশংস হামলার সঙ্গে জড়িত পুরো চক্রকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার আশ্বাস দেন। তিনি উল্লেখ করেন, অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয়ভাবে কাজ করছে এবং ঘটনার আদ্যপান্ত বিশ্লেষণ করে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে হাদির বোন মাসুমা আবেগঘন বক্তব্যে বলেন, হাদি ছোটবেলা থেকেই দেশপ্রেমিক এবং বিপ্লবী চেতনার অধিকারী। দশ মাসের এক সন্তানের জনক হাদি তাদের পরিবারের মেরুদণ্ড। তিনি বর্তমান সরকারকে ‘বিপ্লবী সরকার’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জুলাই বিপ্লবীদের বাঁচিয়ে রাখা জরুরি।

ইনকিলাব মঞ্চের নেতা আব্দুল্লাহ আল জাবের জানান, ৫ আগস্টের পর অনেকে বাসায় ফিরে গেলেও হাদি বাসায় না ফিরে জুলাই বিপ্লবের চেতনায় দিনরাত কাজ করে যাচ্ছিলেন। তিনি হামলাকারী সন্ত্রাসীর জামিন পাওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে তদন্ত এবং দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান। এছাড়া সংগঠনের আরেক নেতা ফাতিমা তাসনিম জুমা জুলাই যোদ্ধাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।

ছিলেন। এছাড়া সরকারি নীতিনির্ধারকদের মধ্যে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।


দেশে নতুন মাদক এমডিএমবি, কেনাবেচা সোশ্যাল মিডিয়ায়

* এমডিএমবি মার্কেট গড়ার চেষ্টা * কারবারি চক্রের চার সদস্য গ্রেপ্তার
আপডেটেড ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০০:০১
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে প্রথম নতুন ধরনের মাদক এমডিএমবির চালান জব্দ করা হয়েছে। ঢাকার মিরপুরের আশরাফুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে সমাজের উচ্চবিত্ত শ্রেণির মধ্যে এই মাদক সরবরাহ করতেন। তিনি মূলত ভেপ ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে সহযোগী সাহসের সঙ্গে এমডিএমবি মার্কেট গড়ার চেষ্টা করছিলেন। তিনিসহ মালয়েশিয়া থেকে দেশে এই মাদক আনার সঙ্গে জড়িত চক্রের চার সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশকে জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ায় যাতায়াত করে সেখান থেকে মাদক সংগ্রহ করে দেশে নিয়ে আসতেন।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ।

তিনি জানান, তরুণদের মধ্যে ই-সিগারেট ও ভেপের ব্যবহার উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। এসব ডিভাইসে সাধারণত নিকোটিন বা তামাকজাতীয় পদার্থ ব্যবহৃত হয়। সম্প্রতি তাতে নতুন ধরনের সাইকোঅ্যাকটিভ পদার্থ (এনপিএস) এবং ওপিয়য়েডসসহ বিপজ্জনক মাদক, যেমন এমডিএমবি মিশিয়ে ব্যবহার করার ঘটনা বেড়েছে।

এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (আইএনসিবি) ‘অপারেশন ই-ভেপর৮’ নামে বিশ্বব্যাপী গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করে। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশেও ডিএনসির গোয়েন্দা টিম ঢাকায় এমডিএমবির ছড়িয়ে পড়ার বাস্তব চিত্র উন্মোচন করে।

গ্রেপ্তাররা হলেন— বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী খন্দকার তৌকিরুল কবির তামিম (২৬), মেহেদী হাসান রাকিব (২৬), বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেলস এবং মার্কেটিং কর্মকর্তা মাসুম মাসফিকুর রহমান ওরফে সাহস (২৭) এবং ভারতে পড়াশোনা করে সম্প্রতি বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করা আশরাফুল ইসলাম (২৫)।

তাদের কাছ থেকে ৩৪০ মিলি এমডিএমবি, সিবিডি মিশ্রিত গাঁজার চকলেট, এমডিএমবি গ্রহণে ব্যবহৃত ভেপ ডিভাইস, এমডিএমবি ব্যবহারের ই-লিকুইড এবং বিক্রয়ের জন্য প্রস্তুত খালি ক্যানিস্টার।

আইএনসিবির নির্দেশনায় ডিএনসি ঢাকার গোয়েন্দা টিম অনলাইন ও অফলাইনে, সোশ্যাল মিডিয়া ও ডার্ক ওয়েবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে নজরদারি শুরু করে। ভেপের মাধ্যমে গোপনে ছড়িয়ে পড়া এমডিএমবি শনাক্ত করে তামিমকে প্রধান কারবারি হিসেবে চিহ্নিত করে তার কাছ থেকে স্যাম্পল অর্ডার দেয়।

১০ ডিসেম্বর মিরপুর পল্লবীতে ২০ মিলি এমডিএমবিসহ তামিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও ডিজিটাল তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে মেহেদী হাসান রাকিবের অবস্থান শনাক্ত করে মিরপুর থেকে ১০ মিলি এমডিএমবিসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তাদের স্বীকারোক্তি ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণে দেশজুড়ে এমডিএমবি সরবরাহকারী নেটওয়ার্কের হদিস পাওয়া যায়। হোতাদের মধ্যে আশরাফ ও সাহসকে শনাক্ত করা হয়েছে। পরে তাদের বাড়ি থেকে ৩১০ মিলিলিটার এমডিএমবি-পিনাকা, সিবিডি মিশ্রিত গাঁজার চকলেট, পাঁচটি ভেপ ডিভাইস, ই-লিকুইড এবং বিক্রয়ের জন্য প্রস্তুত খালি ক্যানিস্টার উদ্ধার করা হয়।

এমডিএমবি হলো একটি ভয়ংকর তরল সিনথেটিক মাদক যা মাত্র কয়েক ফোঁটা স্নায়ুতন্ত্রকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় ভেপ ডিভাইসকে আড়ালে ব্যবহার করে এই মাদক দ্রুত নেশার আসক্তি সৃষ্টি করে, যা হ্যালুসিনেশন, আক্রমণাত্মক আচরণ এবং হৃৎস্পন্দনের অস্বাভাবিকতা ঘটায়।

সাধারণ ফ্লেভারড লিকুইডের মতো দেখতে হওয়ায় এটি শনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব, ফলে ব্যবহারকারীরা বুঝতেই পারে না তারা প্রাণঘাতী ‘নেক্সট জেনারেশন সিনথেটিক ড্রাগ’ সেবন করছেন। প্রচলিত নিকোটিনযুক্ত লিকুইডের সঙ্গে মাত্র অল্প পরিমাণ এমডিএমবি মিশিয়ে এটি ব্যবহার করা হয়।

চক্রটি অত্যন্ত চতুরতার সঙ্গে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপকে ‘অদৃশ্য বাজার’ হিসেবে ব্যবহার করত। ফেসবুকের ক্লোজড গ্রুপ, রিভিউ পেজ ও ভুয়া অ্যাকাউন্টে সংকেতপূর্ণ পোস্ট দিয়ে মাদকের কারবার চালাত।

আগ্রহী ক্রেতারা ইনবক্সে মেসেজ করলে অ্যান্ড-টু- অ্যান্ড এনক্রিপ্টেড হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে দাম নির্ধারণ ও সরবরাহ নিশ্চিত হতো। লোকেশন শেয়ার, লাইভ ট্র্যাকিং ও বিশেষ ইমোজি ব্যবহার করে লেনদেন সম্পন্ন হতো, যা দেখে সাধারণ ব্যবহারকারী বুঝতেনই না এটি মাদক।

গ্রেপ্তার আসামির জিজ্ঞাসাবাদে আরও অনেক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম পাওয়া গেছে, যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ অনুসারে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ডিএনসি জানায়, এই ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবে এবং ভেপের মাধ্যমে মাদক ছড়ানোর প্রবণতা রোধে রাজধানীর বিভিন্ন ভেপ শপে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াবে।


২৫ ডিসেম্বর দেশে আসছেন তারেক রহমান

ব্রিফিংয়ে মির্জা ফখরুল  
আপডেটেড ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২৩:৩৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ ১৮ বছরের নির্বাসন শেষে ২৫ ডিসেম্বর দেশে আসছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার ফিরে আসার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র উত্তরণের পথে যেসব বাধা সৃষ্টি হয়েছিল, সেসব দূর হয়ে যাবে বলে মনে করছেন দলটি। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

দেশে ফেরা নিয়ে ফেসবুকে তারেক রহমানের পোস্ট ঘিরে নানা আলোচনার মধ্যেই এ তথ্য দিলেন মির্জা ফখরুল।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিএনপি আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে যেহেতু বাংলাদেশের সব এখানে উপস্থিত আছেন, আমাদের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত আছেন; আমি আপনাদের জানাতে চাই, আমাদের নেতা খুব শিগগিরই আমাদের মাঝে আসবেন। আমাদের নেতা যেদিন আমাদের কাছে আসবেন, যেদিন বাংলাদেশে পা দেবেন; সেদিন যেন সমগ্র বাংলাদেশ কেঁপে ওঠে।

মহাসচিব বলেন, একটা স্বস্তির বার্তা নিয়ে আমি এসেছি। আপনাদের জানাচ্ছি আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কোটি মানুষের প্রিয় মানুষ, দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর ধরে নির্বাসিত অবস্থায় রয়েছেন, তিনি আগামী ২৫ ডিসেম্বর ঢাকার মাটিতে পা রাখবেন।

তিনি বলেন, বিগত প্রায় এক যুগ ধরে তিনি গণতান্ত্রিক আদর্শে আমাদের দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আমাদের গণতন্ত্র উত্তরণের নেতৃত্ব দিয়ে সাফল্যের পরিচয় দিয়েছেন। আমি আবার বলছি আগামী ২৫ ডিসেম্বর আমাদের সংগ্রামী নেতা তারেক রহমান আমাদের মাঝে আসছেন। শুধু আমাদের পক্ষ থেকে নয়, সকলের পক্ষ থেকে আমরা তার এ আগমনকে স্বাগত জানাই। গণতন্ত্র উত্তরণের পথে যেসব বাধা সৃষ্টি হয়েছিল, আমরা মনে করি তারেক রহমান দেশে এলেই সেসব বাধা দূর হয়ে যাবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সালাহউদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী গতকাল চট্টগ্রামে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বলেন, তারেক রহমান খুব দ্রুত দেশে ফিরবেন এবং নিজ হাতে মনোনয়ন জমা দেবেন।

বিএনপির নেতারা মনে করছেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরা কেবল তার ব্যক্তিগত বা পারিবারিক বিষয় নয়, দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক বাস্তবতাও বিবেচ্য এখানে।

৫৯ বছর বয়সি তারেক রহমান ২০০৮ সালে ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্যাতনে বাধ্য হয়ে লন্ডনে যান। ২০০৯ সালে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন এবং ধীরে ধীরে দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বে ভূমিকা রাখেন।

২০১৮ সালে তার মা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পর তারেক রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হয়। তখন থেকেই তিনি বিদেশ থেকে দল পরিচালনা করছেন, ভার্চুয়ালি সভা ও সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি পাঁচটি ভিন্ন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় দণ্ডিত হন এবং তার বিরুদ্ধে প্রায় ১০০টি মামলা করা হয়। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তিনি সব অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পান। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে কোনো পেন্ডিং মামলা নেই।

এর পর থেকে তার দেশে ফেরার আলোচনা শুরু হয়। তারেক রহমান শিগগিরই ফিরবেন—এমন কথা বিএনপি নেতারা কয়েক মাস ধরেই বলে আসছেন। তবে কেউ সুনির্দিষ্ট দিন তারিখ বলেননি।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জীবন সংকটাপন্ন হয়ে উঠলে ধারণা করা হচ্ছিল তারেক রহমান দ্রুতই দেশে ফিরছেন। এই প্রেক্ষাপটে লন্ডন থেকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন তারেক রহমান। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, ‘এমন সংকটকালে মায়ের স্নেহ-স্পর্শ পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা যেকোনো সন্তানের মতো আমারও রয়েছে। কিন্তু অন্য আর সবার মতো এটা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমার একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়।’

ওই পোস্টে তিনি আরও লিখেছিলেন, ‘স্পর্শকাতর বিষয়টির বিস্তারিত বর্ণনার অবকাশও সীমিত। রাজনৈতিক বাস্তবতার এ পরিস্থিতি প্রত্যাশিত পর্যায়ে উপনীত হওয়া মাত্রই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আমার সুদীর্ঘ উদ্বিগ্ন প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে বলেই আমাদের পরিবার আশাবাদী।’

এরপর সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বারবার বলা হয়েছে, তারেক রহমানের দেশে ফিরতে কোনো বাধা নেই।


banner close