শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

নামছে বন্যার পানি, ভেসে উঠছে ক্ষয়-ক্ষতির চিহ্ন

ছবি: সংগৃহীত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২৬ আগস্ট, ২০২৪ ২১:৪৪

আক্রান্ত ১১ জেলা থেকে ধীরে ধীরে নামছে বন্যার পানি। তবে পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুটে উঠছে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন। দুর্গম যেসব এলাকায় এত দিন যাওয়া সম্ভব হয়নি সরকারি-বেসরকারি ত্রাণকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীদের, এখন সেসব এলাকায় পৌঁছাচ্ছেন তারা। তবে ত্রাণের জন্য হাহাকার সবখানে। আশার কথা, নতুন বাংলাদেশে বন্যা মোকাবিলায় সব মানুষ দাঁড়িয়েছেন একসঙ্গে। তাই গত ৫ দিনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের আহ্বানে রাজধানীসহ সারা দেশের মানুষ সাড়া দিচ্ছেন, প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে তার ত্রাণ তহবিলেও মিলছে বিপুল সাড়া। তবে উপদ্রুত এলাকার মানুষ চাইছেন নগদ সহায়তা-ত্রাণের খাবার, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধের পাশাপাশি ঘরবাড়ি মেরামত এবং ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড ও কৃষিতে সহায়তা। তবে সব মহলের একটা লক্ষ্য, যত দ্রুত সম্ভব পানিবন্দি মানুষের কাছে ত্রাণ হিসেবে খাবার ও পানি পৌঁছে দেওয়া। এদিকে, জলমগ্ন এলাকাগুলোতে বারবার পানিতে নামতে বাধ্য হওয়ায় অনেক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন পানিবাহিত রোগে। উপদ্রুত জেলাগুলোতে ডায়রিয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এসব এলাকার হাসপাতালগুলোসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে একযোগে কাজ করছেন চিকিৎসক-নার্সদের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবীরা।

এদিকে, বন্যার পানি নামতে শুরু করায় বোঝা যাচ্ছে ক্ষয়-ক্ষতির মাত্রা। ফেনী শহরের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব মো. সাখাওয়াত হোসেন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘গত শুক্রবার আসরের নামাজের পরেও তার এলাকাতে বন্যার লেশমাত্র ছিল না। তবে কোথা থেকে হঠাৎ এত দ্রুত গতিতে ঢলের পানি আসা শুরু করে যে মাগরিবের নামাজের আগেই কোমরসমান পানিতে ভরে যায় চারপাশ। প্রাণে বাঁচতে তার চার তলা বাসায় মুহূর্তে প্রতিবেশীদের অনেকে ভিড় করেন। এ কয় দিন বাসার দোতলা থেকে চতুর্থ তলায় বাসিন্দারাসহ ৪০ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। এমন প্রতিবেশীও প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয়ে ছিলেন যাদের তিনি আগে চিনতেনও না। পানি ছিল ভীষণ ঠাণ্ডা। এখন পানি মোটামুটি নেমে গেছে। তবে নিচতলার ভাড়াটিয়া কোনো কিছুই সরাতে পারেননি। তার সব সম্পদ পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। এমন অবস্থা শহরের একতলা বা টিনশেডসহ সাধারণ ঘরে যারা ছিলেন তাদের সবার। এসব মানুষ সব হারিয়েছেন। তারা এখন কীভাবে বাঁচবেন তা আল্লাহ জানেন। এমন ঢল আমার জীবনে কখনো দেখিনি।’

বন্যায় ক্ষতির এমন চেহারা প্রায় সবখানে। পুকুরসহ মাছের ঘেরগুলো ভেসে গেছে, নষ্ট হয়েছে কৃষকের মাঠের ফসল, ব্যবসায়ীদের দোকানে পানি ঢুকে নষ্ট হয়েছে সব মালপত্র, ঘরের কোনো আসবাবপত্র আর ব্যবহারযোগ্য নেই। এই পরিস্থিতি এখন ফেনী, নোয়াখালীসহ আশপাশের সবগুলো জেলায়।

এদিকে, চলমান বন্যায় ১১ জেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩ জনে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে বন্যায় মোট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫৭ লাখ ১ হাজার ২০৪ জন। এছাড়া, ফেনী ও কুমিল্লা জেলার নিম্নাঞ্চলে বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত রয়েছে। সব নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে।

আজ সোমবার বন্যা পরিস্থিতির সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরে এই তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান।

মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব জানান, বন্যা আক্রান্ত জেলার সংখ্যা ১১টি। এগুলো হচ্ছে ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার। আক্রান্ত এসব জেলায় ৭৪টি উপজেলার মোট ১২ লাখ ৩৮ হাজার ৪৮টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৫৭ লাখ ১ হাজার ২০৪ জন।

তিনি জানান, পানিবন্দি-ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় প্রদানের জন্য মোট ৩ হাজার ৮৩৪ টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মোট ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৫২৩ জন মানুষ এবং ২৮ হাজার ৯০৭ টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ১১ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা সেবায় মোট ৬৪৫টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে।

কামরুল হাসান বলেন, এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৩ জন। এর মধ্যে কুমিল্লায় ৬ জন, ফেনীতে একজন, চট্টগ্রামে ৫ জন, খাগড়াছড়িতে একজন, নোয়াখালীতে ৫ জন, ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন ও কক্সবাজারে ৩ জন বন্যার কারণে মারা গেছেন ৷ এছাড়াও মৌলভীবাজারে ২ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

এদিকে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সোমবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় পূর্বাঞ্চলীয় কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলার ভারতীয় ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এবং ত্রিপুরা প্রদেশের অভ্যন্তরীণ অববাহিকায় উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত হয়নি। উজানে নদ-নদীর পানি কমার ধারা অব্যাহত আছে। ফলে বর্তমানে ফেনী ও কুমিল্লা জেলার নিম্নাঞ্চলের বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত রয়েছে।

একই সঙ্গে মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার নদীগুলোর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে। তবে এখনও কুশিয়ারা, গোমতি ও মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ সময়ে এ অঞ্চলের কুমিল্লা জেলার গোমতী নদীর পানি কমতে পারে এবং এ অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। একই সঙ্গে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ফেনী জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হতে পারে। তবে কোনও কোনও স্থানে স্থিতিশীল থাকতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, আজ দেশের তিনটি নদীর তিন স্টেশনের পানি বিপৎসীমার ওপরে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রোববার ৪ নদীর ৬টি স্টেশনের পানি বিপদসীমার ওপরে ছিল। এরমধ্যে গোমতির নদীর কুমিল্লা স্টেশনের পানি ৭৮ থেকে নেমে আজ ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে।

এছাড়া মুহুরী নদীর পরশুরাম স্টেশনের পানি আজ বিপৎসীমার ওপরে আছে। তবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় পানির উচ্চতা সম্পর্কে জানা যায়নি। এদিকে রোববার কুশিয়ারা নদীর পানি তিন স্টেশনে বিপৎসীমার ওপরে থাকলেও আজ তা নেমে শুধু অমলশীদ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। রবিবার বিপৎসীমার ওপরে থাকা মনু নদীর মৌলভীবাজার স্টেশনের পানি আজ বিপৎসীমার নিচে নেমে গেছে।

আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই নদীর পানি আরও কমতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ফেনী জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে, তবে কোনও কোনও স্থানে স্থিতিশীল থাকতে পারে।

আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও উজানে মাঝারি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা আছে। এ সময় এ অঞ্চলের বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলার সাঙ্গু, মাতামুহুরি, কর্ণফুলী, হালদা ও অন্যান্য প্রধান নদীগুলোর পানি সময় বিশেষে বাড়তে পারে।

এছাড়াও ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি কমছে, গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে, উত্তরাঞ্চলের তিস্তা-ধরলা-দুধকুমার নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান আছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

দেশে সোমবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে যশোরে ২২২ মিলিমিটার। এছাড়া বরগুনায় ১২০, বরিশালে ১০৪, টেকনাফে ১০১, পটুয়াখালী ৮৮, নোয়াখালী ৮৭, গোপালগঞ্জের হরিদাশপুরে ৮৫, কক্সবাজারে ৮২ এবং বান্দরবানের লামায় ৭০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে উজানে আসামের তেজপুরে ১৯, ত্রিপুরায় ১২ এবং চেরাপুঞ্জিতে ২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে, আজ রাতে একসঙ্গে ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি জলকপাট খুলে দেওয়ায় দেশের উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী, চাঁপাই নবাবগঞ্জসহ আশেপাশের জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চলে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যদিও এ বিষয়ে নতুন কোনও তথ্য বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে পাওয়া যায়নি।

বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সরকারি-বেসরকারিসহ সব পর্যায় থেকে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে জানিয়ে মন্ত্রণালয় বলছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ১১ জেলায় মোট ৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা, ২০ হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন চাল, ১৫ হাজার প্যাকেট শুকনা ও অন্যান্য খাবার, ৩৫ লাখ টাকার শিশুখাদ্য এবং ৩৫ লাখ টাকার গো-খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দেশের সব জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুত রয়েছে।

কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের জিওসির তথ্যের বরাত দিয়ে ত্রাণ সচিব জানান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে কুমিল্লা জেলার সব উপজেলায় সড়ক পথে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া সেনাবাহিনীর ৪টি মেডিকেল টিম প্রয়োজনীয় ওষুধসহ কুমিল্লা জেলার ৪ উপজেলায় নিয়োজিত করা হয়েছে।

ফেনীতে স্বাস্থ্য সেবা দিতে ফিল্ড হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব বলেন, সেনাবাহিনী ও জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসকরা সেবা দিচ্ছন। পাশাপাশি স্থানীয় ক্লিনিক, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বন্যার্তদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকগণ নির্দেশনা দিয়েছেন।

কামরুল হাসান বলেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে সহায়তা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে সচিব কামরুল হাসান বলেন, যারা ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে সহায়তা (চেক/পে-অর্ডার/ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে) দিতে চান তারা প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছেও তা দিতে পারেন। সরকারি ছুটি ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সহায়তা নেওয়া হবে।

যারা ত্রাণ তহবিলে সহায়তা (চেক/পে-অর্ডার/ব্যাংক ড্রাফট এর মাধ্যমে) দিতে ইচ্ছুক তাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব অঞ্জন চন্দ্র পাল (মোবাইল ০১৭১৮-০৬৬৭২৫) এবং সিনিয়র সহকারী সচিব শরিফুল ইসলামের (মোবাইল-০১৮১৯২৮১২০৮) সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছেন ত্রাণ সচিব।

নোয়াখালীতে আবারও বেড়েছে পানি

নোয়াখালী প্রতিনিধি জানান, বন্যা ও জলাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত নোয়াখালীতে থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের কারণে আবারও বাড়ছে পানি। আবহাওয়া কিছুটা ভালো থাকায় বৃহস্পতিবার থেকে গত শনিবার বিকেল পর্যন্ত পানি কিছুটা কমলেও সেদিন রাত ১০টার পর থেকে থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে আবারও কোথাও কোথাও এক ফুট থেকে দুই ফুট পানি বেড়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা। জেলা প্রশাসনের হিসাবে জেলায় ২০ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি আছেন।

বন্যার কারণে জেলায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন, সেনবাগ উপজেলার ইয়ারপুর গ্রামের জিলহাজুল ইসলাম (১০), কেশারপাড় ইউনিয়নের বীরকোট পশ্চিম পাড়ার দুই বছর বয়সী শিশু আবদুর রহমান এবং সদর উপজেলার কালাদরপ ইউনিয়নের পূর্ব শুল্লকিয়া গ্রামের আড়াই বছরের রিয়ান। এরমধ্যে শিশু রিয়ান বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে। এছাড়াও বন্যার পানির কারণে ঘরের ভেতর বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা যান সেনবাগ উপজেলার দক্ষিণ মোহাম্মদপুর গ্রামের কাকন কর্মকার (৩০) ও বেগমগঞ্জের চৌমুহনী পৌরসভার আলীপুর গ্রামের আবুল কালাম আজাদ (৫০)।

এদিকে ফেনী থেকে বন্যার পানি ডাকাতিয়া নদী দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে সেনবাগ, সোনাইমুড়ি, চাটখিল ও বেগমগঞ্জ উপজেলায় পানির চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে নোয়াখালী বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি ও জনদুর্ভোগ বাড়ার আশংকা রয়েছে।

বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জেলার ৮টি উপজেলার প্রায় ৯০ ভাগ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন। প্রতিটি বাড়িতে ৩ থেকে ৫ ফুট জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। নিচু এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতা দেখা গেছে ৬ থেকে ৭ ফুট। বসতঘরে পানি প্রবেশ করায় বুধবার রাত পর্যন্ত অনেকে খাটের ওপর অবস্থান করলেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তারা নিকটস্থ আশ্রয় কেন্দ্র, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে অবস্থান নিয়েছেন। বসত ও রান্নাঘরে পানি ঢুকে পড়ায় খাবার সংকটে রয়েছে বেশির ভাগ মানুষ। জেলার প্রধান সড়কসহ প্রায় ৮০ ভাগ সড়ক কয়েক ফুট পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। সড়কগুলোতে যান চলাচল অনেকটাই কম।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জেলার আট উপজেলার ৮৭ ইউনিয়ন ও সাতটি পৌরসভার ২০ লাখ ৩৬ হাজার সাতশ মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন। এরমধ্যে আটশ ২৬টি কেন্দ্রে একলক্ষ ৫৩ হাজার চারশ ৫৬ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। পানিবন্দী মানুষের জন্য নগদ ৪৫ লক্ষ টাকা ও ১৮শ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবায় ৮৮টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।

ফেনীর তিন উপজেলায় বেড়েছে বন্যার পানি

ফেনী প্রতিনিধি জানান, ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলায়। বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে মুহুরি কহুয়া ও ছিলোনিয়া নদীর পানি ৷ তবে পানিবন্দি রয়েছেন এসব এলাকার লক্ষ লক্ষ মানুষ ৷ ফেনী পৌর শহরের দু-তিনটি সড়ক ও বাসা বাড়িতে পানি কমলেও এখনো অনেক সড়ক ও বিভিন্ন ভবনের নিচতলা পানিতে সয়লাব।

ইতোমধ্যে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে ফেনী সদর, সোনাগাজী এবং দাগনভূঞা উপজেলায়। বন্যা এখানে প্রকট আকার ধারণ করেছে । এখানে এখনও পানিবন্দি কয়েক লাখ মানুষ৷ বন্যার পানি দ্রুত নেমে যাওয়ার জন্য ফেনীর মুহুরী রেগুলেটরের ৪০টি স্লুইসগেট ও নোয়াখালীর মুছাপুরের ১৭ টি স্লুইসগেট খুলে দেয়া হয়েছে।

গত রবিবার থেকে ফেনী শহরের বিদ্যুতের ৯টি লাইন সচল হয়েছে, তবে দুই-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ সংযোগ এখনও বিচ্ছিন্ন রয়েছে। গত ৪দিন ধরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকার পর রবিবার বিকেল থেকে যান চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। জেলার অধিকাংশ এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক অচল রয়েছে।

ফেনীতে বন্যা শুরু হওয়ার পর থেকে সেনাবাহিনী, নৌ-বাহিনী, বিমান বাহিনী, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, ফায়ার সার্ভিস, বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ডুবুরি দলসহ বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী টিম পরশুরাম ছাগলনাইয়া, সোনাগাজী এবং দাগনভূঞা এলাকায় নৌকা, স্পিডবোট নিয়ে উদ্ধার কাজ ও ত্রাণ তৎপরতা চলমান রেখেছে ৷ এসব প্রতিষ্ঠান ছাড়াও স্থানীয়ভাবে এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা হতে আগত সরকারি সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়, সামাজিক সংগঠন, মানবিক সংগঠন তথা বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন জনগণের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছে।

জরুরি স্বাস্থ্যসেবায় জেলার ১টি এবং ছয়টি উপজেলায় ছয়টি মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও বেসরকারি ৬টি হাসপাতালে মেডিকেল ক্যাম্প চালু রয়েছে। জেলা শহরে এসব বেসরকারি হাসপাতালসমূহ হল: কনসেপ্ট হাসপাতাল, মেডিনোভা হাসপাতাল মেডিল্যাব, আল আকসা হাসপাতাল, জেড ইউ মডেল হাসপাতাল, মিশন হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, প্রতিটি উপজেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্যাকবলিত মানুষজনদের আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে খিচুড়ি ও শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখা সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত জেলায় ৮ লাখ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত। এপর্যন্ত ১ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষকে উদ্ধার করে বিভিন্ন আস্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। অবশিষ্ট লোকজন উঁচু ভবনে বা ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন।

একই সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে ৬০ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। সেনাবাহিনী কর্তৃক হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ৩৮ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মুছাম্মত শাহীনা আক্তার বলেন, প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, নৌ বাহিনী, বিজিবি, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে কন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণের সহযোগিতা ও উদ্ধার কাজ চলমান রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সুশীল সমাজ ও আপামর জনগণের সহযোগিতা পেলে সুন্দরভাবে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হবে।

এই দুর্যোগময় মুহূর্তে ব্যবসায়ীদের প্রতি মানবিক হতে আহ্বান জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, বন্যাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে আপনার দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়াবেন না।

বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুটে উঠছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন পানিবাহিত রোগে। এই মুহূর্তে ফেনীতে বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য ও ওষুধ সংকট দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। তবে তা চাহিদার তুলনায় এখনও অপ্রতুল। স্থানীয়রা জানান, এসব বিষয় জরুরিভাবে ব্যবস্থা না হলে এখানে গুরুতর মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

উল্লেখ্য, চলতি মাসের ২০ আগস্ট থেকে অতি ভারী বৃষ্টি ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানির তোড়ে ফেনী জেলায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। এ অঞ্চলের মুহুরী কহুয়া সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে অন্তত ৩০ স্থান ভেঙে পানি ঢুকে বন্যার সৃষ্টি হয়। গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহের প্রথম দফা এবং চলতি আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহের দ্বিতীয় দফা এবং ২০ আগস্ট থেকে তৃতীয় দফা বন্যাকবলিত হয় এসব উপজেলার মানুষজন।

বিষয়:

দেশে নতুন মাদক এমডিএমবি, কেনাবেচা সোশ্যাল মিডিয়ায়

* এমডিএমবি মার্কেট গড়ার চেষ্টা * কারবারি চক্রের চার সদস্য গ্রেপ্তার
আপডেটেড ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০০:০১
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে প্রথম নতুন ধরনের মাদক এমডিএমবির চালান জব্দ করা হয়েছে। ঢাকার মিরপুরের আশরাফুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে সমাজের উচ্চবিত্ত শ্রেণির মধ্যে এই মাদক সরবরাহ করতেন। তিনি মূলত ভেপ ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে সহযোগী সাহসের সঙ্গে এমডিএমবি মার্কেট গড়ার চেষ্টা করছিলেন। তিনিসহ মালয়েশিয়া থেকে দেশে এই মাদক আনার সঙ্গে জড়িত চক্রের চার সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশকে জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ায় যাতায়াত করে সেখান থেকে মাদক সংগ্রহ করে দেশে নিয়ে আসতেন।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ।

তিনি জানান, তরুণদের মধ্যে ই-সিগারেট ও ভেপের ব্যবহার উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। এসব ডিভাইসে সাধারণত নিকোটিন বা তামাকজাতীয় পদার্থ ব্যবহৃত হয়। সম্প্রতি তাতে নতুন ধরনের সাইকোঅ্যাকটিভ পদার্থ (এনপিএস) এবং ওপিয়য়েডসসহ বিপজ্জনক মাদক, যেমন এমডিএমবি মিশিয়ে ব্যবহার করার ঘটনা বেড়েছে।

এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (আইএনসিবি) ‘অপারেশন ই-ভেপর৮’ নামে বিশ্বব্যাপী গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করে। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশেও ডিএনসির গোয়েন্দা টিম ঢাকায় এমডিএমবির ছড়িয়ে পড়ার বাস্তব চিত্র উন্মোচন করে।

গ্রেপ্তাররা হলেন— বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী খন্দকার তৌকিরুল কবির তামিম (২৬), মেহেদী হাসান রাকিব (২৬), বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেলস এবং মার্কেটিং কর্মকর্তা মাসুম মাসফিকুর রহমান ওরফে সাহস (২৭) এবং ভারতে পড়াশোনা করে সম্প্রতি বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করা আশরাফুল ইসলাম (২৫)।

তাদের কাছ থেকে ৩৪০ মিলি এমডিএমবি, সিবিডি মিশ্রিত গাঁজার চকলেট, এমডিএমবি গ্রহণে ব্যবহৃত ভেপ ডিভাইস, এমডিএমবি ব্যবহারের ই-লিকুইড এবং বিক্রয়ের জন্য প্রস্তুত খালি ক্যানিস্টার।

আইএনসিবির নির্দেশনায় ডিএনসি ঢাকার গোয়েন্দা টিম অনলাইন ও অফলাইনে, সোশ্যাল মিডিয়া ও ডার্ক ওয়েবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে নজরদারি শুরু করে। ভেপের মাধ্যমে গোপনে ছড়িয়ে পড়া এমডিএমবি শনাক্ত করে তামিমকে প্রধান কারবারি হিসেবে চিহ্নিত করে তার কাছ থেকে স্যাম্পল অর্ডার দেয়।

১০ ডিসেম্বর মিরপুর পল্লবীতে ২০ মিলি এমডিএমবিসহ তামিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও ডিজিটাল তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে মেহেদী হাসান রাকিবের অবস্থান শনাক্ত করে মিরপুর থেকে ১০ মিলি এমডিএমবিসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তাদের স্বীকারোক্তি ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণে দেশজুড়ে এমডিএমবি সরবরাহকারী নেটওয়ার্কের হদিস পাওয়া যায়। হোতাদের মধ্যে আশরাফ ও সাহসকে শনাক্ত করা হয়েছে। পরে তাদের বাড়ি থেকে ৩১০ মিলিলিটার এমডিএমবি-পিনাকা, সিবিডি মিশ্রিত গাঁজার চকলেট, পাঁচটি ভেপ ডিভাইস, ই-লিকুইড এবং বিক্রয়ের জন্য প্রস্তুত খালি ক্যানিস্টার উদ্ধার করা হয়।

এমডিএমবি হলো একটি ভয়ংকর তরল সিনথেটিক মাদক যা মাত্র কয়েক ফোঁটা স্নায়ুতন্ত্রকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় ভেপ ডিভাইসকে আড়ালে ব্যবহার করে এই মাদক দ্রুত নেশার আসক্তি সৃষ্টি করে, যা হ্যালুসিনেশন, আক্রমণাত্মক আচরণ এবং হৃৎস্পন্দনের অস্বাভাবিকতা ঘটায়।

সাধারণ ফ্লেভারড লিকুইডের মতো দেখতে হওয়ায় এটি শনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব, ফলে ব্যবহারকারীরা বুঝতেই পারে না তারা প্রাণঘাতী ‘নেক্সট জেনারেশন সিনথেটিক ড্রাগ’ সেবন করছেন। প্রচলিত নিকোটিনযুক্ত লিকুইডের সঙ্গে মাত্র অল্প পরিমাণ এমডিএমবি মিশিয়ে এটি ব্যবহার করা হয়।

চক্রটি অত্যন্ত চতুরতার সঙ্গে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপকে ‘অদৃশ্য বাজার’ হিসেবে ব্যবহার করত। ফেসবুকের ক্লোজড গ্রুপ, রিভিউ পেজ ও ভুয়া অ্যাকাউন্টে সংকেতপূর্ণ পোস্ট দিয়ে মাদকের কারবার চালাত।

আগ্রহী ক্রেতারা ইনবক্সে মেসেজ করলে অ্যান্ড-টু- অ্যান্ড এনক্রিপ্টেড হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে দাম নির্ধারণ ও সরবরাহ নিশ্চিত হতো। লোকেশন শেয়ার, লাইভ ট্র্যাকিং ও বিশেষ ইমোজি ব্যবহার করে লেনদেন সম্পন্ন হতো, যা দেখে সাধারণ ব্যবহারকারী বুঝতেনই না এটি মাদক।

গ্রেপ্তার আসামির জিজ্ঞাসাবাদে আরও অনেক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম পাওয়া গেছে, যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ অনুসারে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ডিএনসি জানায়, এই ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবে এবং ভেপের মাধ্যমে মাদক ছড়ানোর প্রবণতা রোধে রাজধানীর বিভিন্ন ভেপ শপে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াবে।


২৫ ডিসেম্বর দেশে আসছেন তারেক রহমান

ব্রিফিংয়ে মির্জা ফখরুল  
আপডেটেড ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২৩:৩৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ ১৮ বছরের নির্বাসন শেষে ২৫ ডিসেম্বর দেশে আসছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার ফিরে আসার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র উত্তরণের পথে যেসব বাধা সৃষ্টি হয়েছিল, সেসব দূর হয়ে যাবে বলে মনে করছেন দলটি। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

দেশে ফেরা নিয়ে ফেসবুকে তারেক রহমানের পোস্ট ঘিরে নানা আলোচনার মধ্যেই এ তথ্য দিলেন মির্জা ফখরুল।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিএনপি আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে যেহেতু বাংলাদেশের সব এখানে উপস্থিত আছেন, আমাদের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত আছেন; আমি আপনাদের জানাতে চাই, আমাদের নেতা খুব শিগগিরই আমাদের মাঝে আসবেন। আমাদের নেতা যেদিন আমাদের কাছে আসবেন, যেদিন বাংলাদেশে পা দেবেন; সেদিন যেন সমগ্র বাংলাদেশ কেঁপে ওঠে।

মহাসচিব বলেন, একটা স্বস্তির বার্তা নিয়ে আমি এসেছি। আপনাদের জানাচ্ছি আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কোটি মানুষের প্রিয় মানুষ, দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর ধরে নির্বাসিত অবস্থায় রয়েছেন, তিনি আগামী ২৫ ডিসেম্বর ঢাকার মাটিতে পা রাখবেন।

তিনি বলেন, বিগত প্রায় এক যুগ ধরে তিনি গণতান্ত্রিক আদর্শে আমাদের দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আমাদের গণতন্ত্র উত্তরণের নেতৃত্ব দিয়ে সাফল্যের পরিচয় দিয়েছেন। আমি আবার বলছি আগামী ২৫ ডিসেম্বর আমাদের সংগ্রামী নেতা তারেক রহমান আমাদের মাঝে আসছেন। শুধু আমাদের পক্ষ থেকে নয়, সকলের পক্ষ থেকে আমরা তার এ আগমনকে স্বাগত জানাই। গণতন্ত্র উত্তরণের পথে যেসব বাধা সৃষ্টি হয়েছিল, আমরা মনে করি তারেক রহমান দেশে এলেই সেসব বাধা দূর হয়ে যাবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সালাহউদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী গতকাল চট্টগ্রামে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বলেন, তারেক রহমান খুব দ্রুত দেশে ফিরবেন এবং নিজ হাতে মনোনয়ন জমা দেবেন।

বিএনপির নেতারা মনে করছেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরা কেবল তার ব্যক্তিগত বা পারিবারিক বিষয় নয়, দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক বাস্তবতাও বিবেচ্য এখানে।

৫৯ বছর বয়সি তারেক রহমান ২০০৮ সালে ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্যাতনে বাধ্য হয়ে লন্ডনে যান। ২০০৯ সালে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন এবং ধীরে ধীরে দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বে ভূমিকা রাখেন।

২০১৮ সালে তার মা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পর তারেক রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হয়। তখন থেকেই তিনি বিদেশ থেকে দল পরিচালনা করছেন, ভার্চুয়ালি সভা ও সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি পাঁচটি ভিন্ন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় দণ্ডিত হন এবং তার বিরুদ্ধে প্রায় ১০০টি মামলা করা হয়। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তিনি সব অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পান। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে কোনো পেন্ডিং মামলা নেই।

এর পর থেকে তার দেশে ফেরার আলোচনা শুরু হয়। তারেক রহমান শিগগিরই ফিরবেন—এমন কথা বিএনপি নেতারা কয়েক মাস ধরেই বলে আসছেন। তবে কেউ সুনির্দিষ্ট দিন তারিখ বলেননি।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জীবন সংকটাপন্ন হয়ে উঠলে ধারণা করা হচ্ছিল তারেক রহমান দ্রুতই দেশে ফিরছেন। এই প্রেক্ষাপটে লন্ডন থেকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন তারেক রহমান। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, ‘এমন সংকটকালে মায়ের স্নেহ-স্পর্শ পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা যেকোনো সন্তানের মতো আমারও রয়েছে। কিন্তু অন্য আর সবার মতো এটা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমার একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়।’

ওই পোস্টে তিনি আরও লিখেছিলেন, ‘স্পর্শকাতর বিষয়টির বিস্তারিত বর্ণনার অবকাশও সীমিত। রাজনৈতিক বাস্তবতার এ পরিস্থিতি প্রত্যাশিত পর্যায়ে উপনীত হওয়া মাত্রই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আমার সুদীর্ঘ উদ্বিগ্ন প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে বলেই আমাদের পরিবার আশাবাদী।’

এরপর সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বারবার বলা হয়েছে, তারেক রহমানের দেশে ফিরতে কোনো বাধা নেই।


হাদির ওপর হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
আপডেটেড ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৬:৩৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ড. ইউনূস বলেন, নির্বাচনী পরিবেশে এমন সহিংস হামলা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য এবং দেশের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক অঙ্গনের জন্য এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।

আহত ওসমান হাদির সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এ ছাড়া চিকিৎসা কার্যক্রম নিবিড়ভাবে তদারকি করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা দেশের সব রাজনৈতিক পক্ষ, কর্মী-সমর্থক ও নাগরিকদের প্রতি শান্তি এবং সংযম বজায় রাখার আহ্বান জানান, যাতে আসন্ন নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও নিরাপদ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে কোনো ধরনের সহিংসতা বরদাশত করা হবে না। জনগণের নিরাপত্তা এবং প্রার্থীদের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। দোষীরা যে-ই হোক, আইনের আওতায় আনা হবে।’

একই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ও ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে হামলায় জড়িত সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ, প্রত্যক্ষদর্শীর তথ্য গ্রহণ, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও হামলার পেছনে কোনো সংগঠিত পরিকল্পনা থাকলে তা উন্মোচনের জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।

উল্লেখ্য, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও আসন্ন নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।

তিনি এখন কোমায় আছেন বলে জানিয়েছেন ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক (আরএস) ডা. মোশকাত আহমেদ।

তিনি জানান, শরিফ ওসমান হাদীর অবস্থা খুবই গুরুতর। তার মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তিনি এখন কোমায় আছেন।

জানা যায়, শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানী বিজয়নগরের কালভার্ট এলাকায় অস্ত্রধারীরা তাকে গুলি করে। তাকে উদ্ধার করে ২টা ৩৫ মিনিটে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।


ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোট ১২ ফেব্রুয়ারি

* মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ২৯ ডিসেম্বর * বাছাই ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি * আপিল ১১ জানুয়ারি, নিষ্পত্তি ১২-১৮ জানুয়ারি * প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি * চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ও প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি * নির্বাচনের প্রচার শুরু হবে ২২ জানুয়ারি * শেষ হবে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে সাতটায়   
আপডেটেড ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২৩:৪৩
নিজস্ব প্রতিবেদক 

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোটও হবে একই দিন। ওই দিন সকাল সাড়ে সাতটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ চলবে।

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। সন্ধ্যা ছয়টায় বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন সিইসির ভাষণ সম্প্রচার করে।

ভাষণের শুরুতে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং একইসঙ্গে জুলাই আগস্ট ২০২৪ এর ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা এবং তাদের আত্মার শান্তি কামনা করেন সিইসি। তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ২০২৪ এর ছাত্র গণঅভ্যুত্থানা পর্যন্ত সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও রক্ষার সব আন্দোলনে যারা আহত, নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের প্রতি জানাই আমার আন্তরিক সমবেদনা। আহতদের দ্রুত আরোগ্য এবং স্বাভাবিক জীবনের জন্য প্রার্থনা করছি।
তিনি আরও বলেন, জাতি হিসেবে আমাদের অমূল্য শক্তি হচ্ছে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্রের জন্য আমাদের ভালোবাসা ও আত্মত্যাগ। জাতির প্রত্যাশাকে ধারণ করে আমাদের সংবিধান রাষ্ট্রের ওপর জনগণের একচ্ছত্র মালিকানা নিশ্চিত করেছে। জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল মালিকানা প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ হচ্ছে নির্বাচন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, মানসম্মত নির্বাচনের অনুপস্থিতি প্রায়শই আমাদের ঐতিহ্য এবং সামষ্টির প্রত্যাশাকে নিরাশ করেছে। এমনিই এক প্রেক্ষাপটে ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। আমাদের ভাইবোন সন্তানদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আমাদের অঙ্গীকার হচ্ছে একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠান যা জাতি হিসেবে আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করবে এবং বিশ্বদরবারে আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস আপনারা একই প্রত্যাশা ধারণ করেন এবং একই অঙ্গীকারে অঙ্গীকারাবদ্ধ।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ২৯ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের ১১ জানুয়ারি এবং আপিল নিষ্পত্তি হবে ১২ থেকে ১৮ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ২১ জানুয়ারি। নির্বাচনী প্রচার শুরু হবে ২২ জানুয়ারি, প্রচার শেষ হবে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে সাতটায়। ১২ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে ৩০০ সংসদীয় আসনে ভোট গ্রহণ করা হবে।

এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১২ কোটি ৭৬ লাখের বেশি। প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটাররাও পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত তিন লাখের বেশি প্রবাসী ভোটার ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেয়। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার ১৬ মাসের মাথায় জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করল ইসি।

শুরুতে গত বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল বিএনপিসহ কিছু দল। গত ৬ জুন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন হবে। এরপর ১৩ জুন যুক্তরাজ্যের লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ওই বৈঠকে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে দুজন একমত হন।

এর পর থেকে সরকার বারবার বলে আসছে, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই জাতীয় নির্বাচন হবে। ইসিও সে লক্ষ্যে প্রস্তুতি এগিয়ে নেয়। এর মধ্যে গত ১৩ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা দেন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোট ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। আজ জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ দুটি ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করলেন সিইসি।

ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোই কেবল দলীয় প্রতীকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। এখন ইসিতে নিবন্ধিত দল আছে ৫৬টি। এর মধ্যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ থাকায় আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত আছে। নিবন্ধন স্থগিত থাকা দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না। নিবন্ধিত অন্য দলগুলো এই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে। এর বাইরে প্রার্থী হওয়ার যোগ্য যেকোনো ব্যক্তি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ২১ নভেম্বর এ এম এম নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। আগামী নির্বাচনই হবে এই কমিশনের অধীনে প্রথম কোনো নির্বাচন। এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হচ্ছে। দুটি ভোটের সময় ব্যবস্থাপনাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে ইসি।

সময় ব্যবস্থাপনার জন্য এবার ভোট গ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। সকাল সাড়ে সাতটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ চলবে। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রে গোপন কক্ষের সংখ্যাও বাড়ানো হবে।

অন্যদিকে নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখাকেও চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সরকার জানিয়েছে, তফসিল ঘোষণার পর সশস্ত্র বাহিনীসহ দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সব বাহিনী নির্বাচনী পরিবেশ যাতে নিশ্চিত হয়, সে লক্ষ্যে কাজ করবে। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীর প্রায় ৯ লাখ সদস্য নিয়োজিত থাকবেন, যা এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যে রেকর্ডসংখ্যক দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।


বাংলাদেশ আজ নতুন ভবিষ্যতের দ্বারপ্রান্তে

আপডেটেড ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২৩:৪৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়ন আদেশের ওপর গণভোটের তফসিল ঘোষণা করায় নির্বাচন কমিশনকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অতিক্রম করল। ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের পর দেশ এখন যে নতুন পথে অগ্রসর হচ্ছে—এই নির্বাচন ও গণভোট সেই পথরেখাকে দৃঢ় করবে, গণমানুষের মতকে প্রাধান্য দেবে এবং নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি আরও সুসংহত করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ আজ নতুন ভবিষ্যতের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। আপনাদের সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ ও দায়িত্বশীল আচরণের মধ্য দিয়ে আমরা একটি আধুনিক, ন্যায়ভিত্তিক ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র নির্মাণে সফল হব—এই আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন তফসিল ঘোষণার পর প্রধান উপদেষ্টা এই শুভেচ্ছা জানান বলে প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে।

এক শুভেচ্ছা বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অতিক্রম করল। ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের পর দেশ এখন যে নতুন পথে অগ্রসর হচ্ছে—এই নির্বাচন ও গণভোট সেই পথরেখাকে দৃঢ় করবে, গণমানুষের মতকে প্রাধান্য দেবে এবং নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি আরও সুসংহত করবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, নির্বাচন কমিশন তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করবে স্বাধীনভাবে, নিরপেক্ষভাবে এবং সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে। নির্বাচন ও গণভোটকে উৎসবমুখর, অংশগ্রহণমূলক ও সম্পূর্ণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে।’

দেশের রাজনৈতিক সব দল, প্রার্থী, গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ এবং সর্বোপরি দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই নির্বাচন ও গণভোটকে একটি জাতীয় ঐক্যের উদ্যোগ হিসেবে গ্রহণ করুন। ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ এবং গণতান্ত্রিক আচরণ আমাদের সামনের দিনগুলোকে আরও স্থিতিশীল করবে।


ইবিআর সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধির আহ্বান সেনাপ্রধানের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

নিষ্ঠা, একাগ্রতা এবং পেশাদারিত্বের সঙ্গে আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সক্ষমতা অর্জন করে একবিংশ শতাব্দীর কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার জন্য ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সব সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম সেনানিবাসে দি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারে (ইবিআরসি) ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের (ইবিআর) ৩৮তম বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলন-২০২৫ এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান জানান।

এ ছাড়াও, ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সেনাবাহিনী প্রধান এ রেজিমেন্টের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, গবেষণা, পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন।

বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলনের শুরুতেই সেনাবাহিনী প্রধান ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের কথা স্মরণ করে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সব বীর শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

সেনাবাহিনী প্রধান ইবিআরসিতে পৌঁছালে আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের জিওসি, ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও চট্টগ্রাম এরিয়ার এরিয়া কমান্ডার এবং দি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারের কমান্ড্যান্ট তাকে অভ্যর্থনা জানান।

অনুষ্ঠানে আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের জিওসি, জিওসি, ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও চট্টগ্রাম এরিয়ার এরিয়া কমান্ডার, কমান্ড্যান্ট ও পাপা টাইগার, ইবিআরসি; মিলিটারি সেক্রেটারি; অ্যাডজুটেন্ট জেনারেল; কমান্ড্যান্ট, বিআইআরসি; চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ চা বোর্ড; সেনাসদর ও চট্টগ্রাম এরিয়ার ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা, সব পদাতিক ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার ও ইউনিটসমূহের অধিনায়ক এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।


বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস নৌ-প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় নতুন এমওইউ স্বাক্ষর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের (এএফডি) সার্বিক তত্ত্বাবধানে ঢাকা সেনানিবাসে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বাংলাদেশ সরকার এবং কিংডম অব নেদারল্যান্ডস-এর মধ্যে নৌ-প্রতিরক্ষা সামগ্রির সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে।

বাংলাদেশের পক্ষে স্মারকটি স্বাক্ষর করেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান এবং নেদারল্যান্ডসের পক্ষে স্বাক্ষর করেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত জোরিস ভ্যান বোমেল।

স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নেদারল্যান্ডস প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নন-রেসিডেন্ট ডিফেন্স অ্যাটাচে ক্যাপ্টেন (আরএনএলএন) জি. (জর্ডি) ক্লেইন, নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের অর্থ-বাণিজ্য ও বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক সিনিয়র উপদেষ্টা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের মহাপরিচালকগণ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ-এর পশ্চিম ইউরোপ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন শাখার মহাপরিচালক এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ-এর নৌ-উপদেষ্টা।

ভ্রাতৃত্ব ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার চেতনায় প্রতিরক্ষা সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য স্বাক্ষরিত এ সমঝোতা স্মারকটি নৌ-প্রতিরক্ষা সামগ্রি সম্পর্কিত সহযোগিতার একটি যুগান্তকারী কাঠামো স্থাপন করেছে, যা নৌ-প্রতিরক্ষা শিল্পে পারস্পরিক সহযোগিতা, তথ্য ও অভিজ্ঞতা বিনিময়, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিনিময়, প্রযুক্তি হস্তান্তর, শিল্প সুরক্ষা নীতি অনুযায়ী তথ্য বিনিময় এবং প্রয়োজন অনুযায়ী লজিস্টিক সহায়তা প্রদানের সুযোগ আরও বিস্তৃত করবে।

এই ঐতিহাসিক স্মারকটি স্বাক্ষরের ফলে দুই দেশের মধ্যে সামরিক বিশেষজ্ঞ বিনিময় বাড়বে, যা নৌ-প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এ ছাড়াও বাংলাদেশের নৌ-প্রতিরক্ষা আধুনিকায়ন এবং নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত সহযোগিতা আরো জোরদার করবে, এজন্য দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সম্পর্কের ধারাবাহিক অগ্রগতিতে এ স্মারকটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।


জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট ১২ ফেব্রুয়ারি

আপডেটেড ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৮:২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি একইদিন দেশে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে।

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন জাতির উদ্দেশে ভাষণে এই তফসিল ঘোষণা করেন।


থামছেই না রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ: এক মাসেই নতুন করে এলো আরও ২,৭৩৮ জন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সংকট যেন কোনোভাবেই কাটছে না; বরং দিন দিন তা আরও প্রকট হচ্ছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসেই দেশে নতুন করে আরও ২ হাজার ৭৩৮ জন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) প্রকাশিত সংস্থাটির মাসিক প্রতিবেদনে এই উদ্বেগজনক চিত্র উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সহিংসতার জেরে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আসার স্রোত অব্যাহত রয়েছে। গত এক বছরে (ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত) নতুন করে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩৭৮ জনে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত কয়েক মাসে এই সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৫১ এবং ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬৪০ জন। বর্তমানে কক্সবাজার ও ভাসানচরের বিভিন্ন ক্যাম্পে সব মিলিয়ে ১১ লাখ ৭৩ হাজার ১৭১ জন রোহিঙ্গাকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে।

ইউএনএইচসিআর জানায়, ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে শুরু হওয়া মানবিক বিপর্যয়ের পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৯ লাখ ৯৪ হাজার ৯৩৭ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ২০২৪ সাল থেকে রাখাইনে সহিংসতা তীব্র আকার ধারণ করায় নতুন করে এই ঢল নামে। ক্যাম্পগুলোতে সদ্য আগতদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে।

সংস্থাটির তথ্যানুযায়ী, নতুন করে আশ্রয় নেওয়া এই জনগোষ্ঠীর বড় অংশই নারী ও শিশু, যা মোট সংখ্যার ৭৮ শতাংশ। এদের মধ্যে ১২ শতাংশ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছেন—যাদের মধ্যে প্রতিবন্ধী, গুরুতর অসুস্থ রোগী, একক অভিভাবক, সঙ্গীহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং বয়স্ক ব্যক্তিরা অন্তর্ভুক্ত। বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থানরত সামগ্রিক রোহিঙ্গা জনসংখ্যার ৫২ শতাংশ নারী এবং ৪৮ শতাংশ পুরুষ।


পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির আহ্বান সেনাপ্রধানের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সেনাবাহিনীর পুষ্টি ও খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রিমাউন্ট ভেটেরিনারি অ্যান্ড ফার্ম (আরভিঅ্যান্ডএফ) কোরের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি প্রযুক্তির উন্নয়ন, গবেষণা ও পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কোরের সদস্যদের সর্বদা প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।

সাভারের আরভিঅ্যান্ডএফ ডিপোতে অনুষ্ঠিত কোরের ‘বার্ষিক অধিনায়ক সম্মেলন-২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, সেনাপ্রধান তার বক্তব্যের শুরুতে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মত্যাগকারী বীর শহীদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি আরভিঅ্যান্ডএফ কোরের গৌরবময় ঐতিহ্য ও দেশসেবায় তাদের অবদানের প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় আরও অগ্রসর হওয়ার নির্দেশনা দেন।

এর আগে সেনাপ্রধান সাভারের ডিপোতে পৌঁছালে তাকে অভ্যর্থনা জানান আরভিঅ্যান্ডএফ কোরের নবনিযুক্ত কর্নেল কমান্ড্যান্ট এবং ৯ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও সাভারের এরিয়া কমান্ডার। সম্মেলনে আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের জিওসি, সেনাবাহিনীর অ্যাডজুটেন্ট জেনারেলসহ সেনাসদর ও সাভার এরিয়ার ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা, জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার ও অন্য পদবির সেনাসদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ৯ ডিসেম্বর আরভিঅ্যান্ডএফ কোরের তৃতীয় কর্নেল কমান্ড্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মেজর জেনারেল এস এম আসাদুল হক। সাভার আরভিঅ্যান্ডএফ ডিপোর প্যারেড গ্রাউন্ডে সামরিক রীতি ও ঐতিহ্য মেনে তাকে এই মর্যাদাপূর্ণ পদের ব্যাজ পরিয়ে দেওয়া হয়।


আজ সন্ধ্যায় তফসিল ঘোষণা, থামছে নতুন প্রকল্প অনুমোদন ও বদলি কার্যক্রম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় ঘোষণা করা হচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল। তফসিল ঘোষণার পরপরই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের ওপর বেশ কিছু বিধিনিষেধ কার্যকর হবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো—উপদেষ্টা পরিষদ এখন থেকে আর নতুন কোনো প্রকল্প অনুমোদন দিতে পারবে না।

তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচনী আচরণবিধি ও প্রশাসনিক কার্যক্রমেও ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এর ৪৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, আজ তফসিল জারি হওয়ার পর থেকে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরবর্তী ১৫ দিন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ছাড়া প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের বদলি করা যাবে না। এই কর্মকর্তাদের তালিকায় রয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি) এবং তাদের অধীনস্থ কর্মকর্তারা। এছাড়া সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ ও আরপিওর ৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে, তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করা নির্বাহী বিভাগের বাধ্যতামূলক কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।

সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে আচরণবিধি প্রতিপালনের ওপর জোর দিয়েছে কমিশন। তফসিল ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজনৈতিক দল ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের সব ধরনের প্রচারসামগ্রী, যেমন—পোস্টার ও ব্যানার সরিয়ে ফেলতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা না সরানো হলে আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আচরণবিধি তদারকির জন্য আগামীকাল থেকেই প্রতিটি উপজেলা ও থানায় দুজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনের আগের তিন দিন, নির্বাচনের দিন এবং পরের দিন—অর্থাৎ শেষ পাঁচ দিন ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।

পাশাপাশি নির্বাচনী এলাকায় প্রভাব বিস্তার রোধে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী (সোশ্যাল সেফটি নেটওয়ার্ক) কার্যক্রম ছাড়া সব ধরনের অনুদান ও ত্রাণ বিতরণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। গত ৭ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের এক সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এসব সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন।


‘খালেদা জিয়া চিকিৎসায় সম্পূর্ন সাড়া দিচ্ছেন’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। সংকটাপন্ন অবস্থায় তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হলেও তিনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন। বুধবার রাতে হাসপাতাল গেটে এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। তিনি খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে কোনো প্রকার গুজবে কান না দেওয়ার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানান।

ডা. জাহিদ হোসেন জানান, গত শুক্রবার খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সে সময় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের কারিগরি ত্রুটি এবং তাঁর শারীরিক অবস্থা ভ্রমণের অনুকূলে না থাকায় তা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে তাঁকে দেশেই সর্বোত্তম সেবা দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকরা আশা প্রকাশ করেছেন যে, তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে পরবর্তীতে তাঁকে বিদেশে নেওয়া হতে পারে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিশেষ করে ডা. জোবাইদা রহমান লন্ডন থেকে গত ৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরে সার্বক্ষণিকভাবে চিকিৎসার তদারকি করছেন। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বাধীন এই বোর্ডে যুক্ত রয়েছেন দেশের বাইরের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও।

উল্লেখ্য, ৮০ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও কিডনি জটিলতায় ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ২৭ নভেম্বর ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দিলে তাঁর অবস্থার অবনতি ঘটে। এরপর থেকেই তাঁকে বিশেষ ব্যবস্থায় নিবিড় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, বুধবার বিকেলে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে হাসপাতালে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম। তিনি সেখানে এক ঘণ্টারও বেশি সময় অবস্থান করেন এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসার খুঁটিনাটি ও পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।


বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা সংলাপ শুরু

দ্বিপক্ষীয় সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির আশা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা জোরদারে ১২তম বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা সংলাপ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই সংলাপ রাজধানী ঢাকার বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে চলবে।

২০১২ সাল থেকে দুই দেশের মধ্যে এই প্রতিরক্ষা সংলাপ হয়ে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় চলমান বৈঠকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক প্রতিনিধিদল অংশ নিচ্ছে।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই তথ্য জানানো হয়।

আইএসপিআর জানিয়েছে, ওই প্রতিরক্ষা সংলাপ দুই দেশের পারস্পরিক সামরিক সহযোগিতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়াও এই সংলাপে উভয় দেশের সামরিক সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় আলোচিত হবে। উল্লিখিত সংলাপ বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, দুর্যোগ মোকাবিলা, শান্তি রক্ষা কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ, পরিদর্শন, যৌথ অনুশীলন ও মহড়া, কর্মশালা ইত্যাদি ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে।

এই প্রতিরক্ষা সংলাপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, অপারেশনস ও পরিকল্পনা পরিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আলী হায়দার সিদ্দিকী। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সারাহ রুস। এ ছাড়া সংলাপে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের পাশাপাশি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডসহ বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নিচ্ছেন।

দুই দিনের এই প্রতিরক্ষা সংলাপের মাধ্যমে দুই দেশের সামরিক সম্পর্ক আরও উন্নত হবে এবং পারস্পরিক আস্থা ও বন্ধুত্ব আরও গভীর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।


banner close