ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাময়িক বরখাস্ত ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বী আজ বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কিছু মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য তুলে ধরেছেন বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
বুধবার সংস্থাটির মিডিয়া সেল থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে একথা জানানো হয়।
সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিষয়ে জনসাধারণের মধ্যে যেন কোনো বিভ্রান্তি তৈরি না হয় সে কারণে ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বীর বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স থেকে বক্তব্য তুলে ধরা হয়।
এতে বলা হয়, ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বী ২০১৭ সালের ৮ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ৩০ আগস্ট পর্যন্ত ৪ বছর ৫ মাস ফায়ার সার্ভিসের ঢাকার সহকারী পরিচালকের অধীন বিভিন্ন লাইসেন্স এলাকায় বা কর্ম অঞ্চলে (ঢাকা-৪৭, ৬১ ও ৭১) কর্মরত ছিলেন। তাকে ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালকের অধীনে লাইসেন্স এলাকায় বা কর্ম অঞ্চলে (চট্টগ্রাম-৪৭) বদলি করা হয়। মাত্র ৮ মাসের মাথায় তৎকালীন আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে নিজেকে সাবেক ছাত্রলীগ পরিচয় দেয়া রেজায়ে রাব্বী পুনরায় ঢাকার সহকারী পরিচালকের অধীন লাইসেন্স এলাকায় বা কর্ম অঞ্চলে (ঢাকা-৭২) বদলি হন। এর পর থেকে পুনরায় তিনি ২ বছর ১ মাস ফায়ার সার্ভিস ঢাকার সহকারী পরিচালকের অধীনে বিভিন্ন লাইসেন্স এলাকায় বা কর্ম অঞ্চলে (যথাক্রমে ঢাকা-৭২ ও ৫৭) কর্মরত ছিলেন। গত ১৯ আগস্টে তাকে লালমনিরহাট-১ কর্ম অঞ্চলে সংযুক্ত আদেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু তিনি কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে অদ্যাবধি কর্মস্থলে যোগদান করা থেকে বিরত আছেন।
গত ১৭ জুলাই দেশে চলমান পরিস্থিতিতে সকল ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টরগণকে নিজ নিজ কর্ম অঞ্চলের ফায়ার স্টেশনে অবস্থান করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়। কিন্তু ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বী তৎকালীন কর্ম অঞ্চলের অধীন ফায়ার স্টেশনে গত ১৯ জুলাই থেকে ২২ জুলাই বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকেন। তিনি কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে নতুন সংযুক্ত আদেশকৃত কর্মস্থলে যোগদান থেকেও বিরত থাকেন। এ সময় কিছু গণমাধ্যমে তার বিষয়ে ‘ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যায় জড়িত ফায়ার সার্ভিস কর্মী রাব্বী লাপাত্তা শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অধিদপ্তরের ‘সাময়িক বরখাস্ত আদেশ-৩০(২৪)’ দ্বারা তাকে ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগে গত ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার ১২ নং বিধিমতে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। মূলত নিজের অপরাধ আড়াল করার লক্ষ্যে তিনি মিডিয়ায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে বিষোদগারমূলক বক্তব্য প্রদান করেছেন, যা চাকরি শৃঙ্খলার পরিপন্থী।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ‘সাময়িক বরখাস্ত আদেশ ০৭(২৩)’ দ্বারা গত ২৬ এপ্রিল ২০২৩ ফায়ারফাইটার মো. আব্দুল হান্নানকে সাময়িক বরখাস্ত এবং ‘বিভাগীয় মামলা নিষ্পত্তি আদেশ-১০(৩৪)’ দ্বারা গত ৫ সেপ্টেম্বর তাকে চাকরি হতে বরখাস্ত করা হয়। তার স্ত্রী পরিচয়দানকারী জনৈক মহিলা তাকে গুম করার যে অভিযোগ তুলেছেন তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এ বিষয়ে আজ ১১ সেপ্টেম্বর গণমাধ্যমে প্রকাশিত ‘ডিজির বিরুদ্ধে আন্দোলনের চেষ্টা, ফায়ারফাইটার গ্রেপ্তার’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে ডিবির বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, সুনির্দিষ্ট মামলায় আব্দুল হান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে’।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত ছয়টি কমিশনের কাজ নিয়ে আজ শনিবার থেকে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করবে। এটি হবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের তৃতীয় দফা সংলাপ। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিএনপিকে দিয়ে শুরু হবে এ সংলাপ। এর আগে দুই দফা সংলাপে সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হলেও এবার আলোচনায় প্রাধান্য পাবে রাষ্ট্র সংস্কার প্রসঙ্গ।
জানা গেছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় পার্টিসহ বেশ কটি রাজনৈতিক দলকে সংলাপের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে আগের দুবারের মতো এবারও সংলাপে ডাকা হচ্ছে না ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে।
সংলাপে মূলত কী কী সংস্কার এবং কীভাবে তা করা যায়- এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নেওয়া হবে। বিএনপি ও জামায়াতসহ বেশ কটি দল লিখিতভাবে সংস্কার প্রস্তাব জমা দেবে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া বিএনপির পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ চাওয়া হতে পারে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
বেলা আড়াইটায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের তৃতীয় দফা সংলাপ শুরু হবে। বিএনপির পক্ষ থেকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ৮ থেকে ১০ সিনিয়র নেতা এ সংলাপে অংশ নেবেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিকেল ৩টায় আলোচনায় বসবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিদল।
এর আগে গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংকালে বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ রাজনৈতিক দলগুলোকে কমিশনের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করবে। উপদেষ্টারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তাদের (রাজনৈতিক নেতাদের) সঙ্গে মতবিনিময় করবেন এবং তাদের পরামর্শ নেবেন।’
নির্দিষ্ট কিছু নির্মাণ খাতে স্বল্পমেয়াদি চ্যালেঞ্জ থাকলেও বাংলাদেশের নির্মাণশিল্প উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট প্রস্তুত। শিল্পটি পরবর্তী চার প্রান্তিকে ধারাবাহিকভাবে প্রবৃদ্ধির মুখ দেখবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২৪-২৮ সালের মধ্যে বার্ষিক চক্রবৃদ্ধি প্রবৃদ্ধির হার ৯ দশমিক ২ শতাংশ হতে পারে। যেখানে এই খাতের আয় ২০২৮ সালের মধ্যে ৬ দশমিক ৫০ ট্রিলিয়ন (৬ লাখ ৫০ হাজার কোটি) টাকায় পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড মার্কেটসের সাম্প্রতিক সময়ের গবেষণায় এমন চিত্র উঠে এসেছে। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে নির্মাণশিল্পের আয় ১০ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে চলতি বছরই ৪ দশমিক ৫৮ ট্রিলিয়ন (৪ লাখ ৫৮ হাজার কোটি) টাকায় পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ভবন ও অবকাঠামো নির্মাণে প্রবৃদ্ধির গতিপ্রকৃতি, নির্মাণ ব্যয় কাঠামো বিশ্লেষণ এবং বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলোতে নগরায়ণ সম্পর্কিত ১০০-এর বেশি পারফরম্যান্স ডেটা (কেপিআই) বিশ্লেষণের মাধ্যমে এমন চিত্র দেওয়া হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত এবং প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা দেশের আবাসিক, বাণিজ্যিক, প্রাতিষ্ঠানিক, শিল্প এবং অবকাঠামোতে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাকেই চিহ্নিত করছে বলে গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সরকারি সহায়তা, নগরায়ণ এবং বিদেশি বিনিয়োগ চাহিদা এই শিল্পের প্রধান চালিকাশক্তি। ফলে শিল্পটি সামনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং সুযোগ গ্রহণের ব্যাপারে ভালো অবস্থানে রয়েছে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
সরকারের উদ্যোগ, নগরায়ণ এবং ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি এই শিল্পের উন্নয়নে অবদান রাখছে। মূলত এসব কারণেই বাংলাদেশের নির্মাণশিল্প প্রবৃদ্ধির গতিপথে রয়েছে।
অনুঘটক হিসেবে দেখা গেছে, সরকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে অবকাঠামো নির্মাণে জোর, বিশেষ করে পরিবহন ও বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি অন্যতম। ২০৩০ সাল নাগাদ ৪০ গিগাওয়াটের প্রত্যাশিত বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে ২০৩৫ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে ৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। এই বিপুল বিনিয়োগ নির্মাণ শিল্পের প্রবৃদ্ধিতে বড় অবদান রাখবে।
এ ছাড়া দ্রুত নগরায়ণের ফলে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের চাহিদা বৃদ্ধিও এখানে ভূমিকা রাখছে। এখন বেশি মানুষ শহর এলাকায় চলে যাচ্ছে। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। এতে উন্নত নির্মাণ সুবিধা এবং অবকাঠামোর প্রয়োজন দিন দিন বাড়বে।
পাশাপাশি ২০২২ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) জন্য উল্লেখযোগ্য সরকারি বরাদ্দ, যেমন—২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা বা ২৬ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার রাখাটা পদ্মা সেতু এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো বৃহৎ প্রকল্পগুলোয় বিনিয়োগের প্রবণতা অবকাঠামো খাতে সরকারের আগ্রহকেই প্রতিফলিত করেছে।
আবাসন নির্মাণ খাত ২০২৩ সালে নির্মাণ খাতের সবচেয়ে বড় অংশীদার ছিল। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি এবং আবাসনের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এ খাতে দ্রুত প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া শহরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে সরকারকে আবাসন চাহিদা পূরণে সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন প্রকল্পগুলোয় মনোনিবেশ করতে দেখা যায়। যা আগামী বছরগুলোতে এ খাতের প্রবৃদ্ধিকে সমর্থন করবে।
সাশ্রয়ী আবাসনের পাশাপাশি বিলাসবহুল অবকাঠামোতে বিনিয়োগের প্রবণতাও বাড়ছে। বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের চাহিদা বাড়ছে, বিশেষ করে শহরের প্রাণকেন্দ্রে এ ধরনের অবকাঠামো নির্মাণের প্রবণতা নির্মাণ শিল্পে বৈচিত্র্য আনছে।
পর্যটনে গুরুত্ব এবং অফিস ও ছোট বাণিজ্যিক অবকাঠামোতে বিনিয়োগের কারণেও বাণিজ্যিক নির্মাণ খাত বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। অবকাশ এবং আতিথেয়তার (হসপিটালিটি) প্রকল্পগুলোতেও সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে, যেখানে সরকার ভ্রমণ বিধিনিষেধ ক্রমান্বয়ে সহজ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বও (পিপিপি) বাণিজ্যিক নির্মাণ, অফিস ভবন এবং লজিস্টিক সুবিধার উন্নয়নে সহায়তা করছে।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা সুবিধাগুলোতে সরকারি ও বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বৃদ্ধির সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক নির্মাণ গতি পাচ্ছে। বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে, উদ্ভাবন এবং উন্নয়নের প্রতি বৃহত্তর প্রতিশ্রুতি নির্মাণ শিল্পকে সামনে এগিয়ে নিতে অবদান রাখবে।
২০৩০ সালের মধ্যে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরিতে বিগত সরকারের পরিকল্পনা এগিয়ে নিলে বিশেষত উৎপাদন এবং প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রগুলো নির্মাণ শিল্পের জন্য উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকশিল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধি নির্মাণ শিল্পকে আরও জোরদার করবে।
যোগাযোগ অবকাঠামোতে এখনো প্রচুর বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। পদ্মা সেতু এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাদেও পরিবহন ও বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ খাতে বিনিয়োগের অবারিত সুযোগ রয়েছে। রেল ও সড়ক অবকাঠামোতে বিনিয়োগ বাড়লে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেও গতি আসবে।
এই খাতে পরিবেশগত বিষয়টিও এখন গুরুত্ব পাচ্ছে। বিশেষ করে পরিবেশবান্ধব ভবন নির্মাণে আগ্রহ বাড়ছে। এটিকেই এখন বলা হচ্ছে টেকসই নির্মাণ। এই চর্চা বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নের ভবিষ্যৎ গড়ে দিতে পারে বলে গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত চক্ষুরোগীদের জন্য বিশেষজ্ঞ পরামর্শের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে আগামীকাল ৫ অক্টোবর (শনিবার) থেকে ৭ অক্টোবর (সোমবার) দেশি-বিদেশি চক্ষু বিশেষজ্ঞরা চক্ষুরোগীদের পরামর্শ দেবেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
আন্দোলনে আহত সেসব চক্ষুরোগীর বিশেষায়িত চিকিৎসা প্রয়োজন, তাদের জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে যোগাযোগের জন্য সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
যোগাযোগের জন্য সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনটি মুঠোফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে। যোগাযোগ নম্বর: ০১৭১৭৫৪৫৮৩৯,০১৯৯৮৫৪৬৮৮৮, ০১৭১৭৪৮৭৮০৭
বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় যাতে আরও জনশক্তি যেতে পারে, সে বিষয়ে মালয়েশিয়ার সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বাংলাদেশে সফররত মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম আজ শুক্রবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এই সহযোগিতা চান।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ‘অর্থনীতি সংস্কার’ কর্মসূচিতেও মালয়েশিয়া সরকারের সহযোগিতার অনুরোধ জানান। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের জানান, সাক্ষাৎকালে তারা দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়, বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক, কারিগরি সহযোগিতা, রোহিঙ্গা ইস্যু ও শ্রমবাজারসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে মতবিনিময় করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, মালয়েশিয়া বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির দ্বিতীয় বৃহত্তম গন্তব্যস্থল। বাংলাদেশের জনশক্তি মালয়েশিয়ার ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। গত ৫৩ বছরে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কৃষি, মানব সম্পদ, যোগাযোগ, সংস্কৃতি, পর্যটন ও শিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে সহযোগিতা ও অংশীদারত্ব বেড়েছে।
আসন্ন ২০২৫ সালে আসিয়ানের সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ায় মালয়েশিয়াকে অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন যে, মালয়েশিয়ার দক্ষ নেতৃত্বে আসিয়ান আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা, আঞ্চলিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। আসিয়ানের ‘সেক্টরাল ডায়লগ পার্টনার’হিসেবে বাংলাদেশের প্রার্থিতাকে সমর্থনের আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর এই সফর দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এই সফর দুটি দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে বলে মালয়েশিয়ার জনগণ বাংলাদেশিদের খুবই ভালোবাসে। রাষ্ট্রপতি এই শ্রমশক্তির মালয়েশিয়া গমনের ক্ষেত্রগুলো স্বচ্ছ ও সহজ করার ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করেন।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে কারিগরি সহযোগিতার আশ্বাস দেন। বৈঠকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের চারজন মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংশ্লিষ্ট সচিবগণ ও বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার প্রমুখ তার সঙ্গে ছিলেন।
বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল ও সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে পৌঁছলে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন তাকে ফুলের তোড়া উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। পরে বঙ্গভবনের ক্রেডেনশিয়াল হলে বৈঠক শেষে একটি পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন প্রধানমন্ত্রী।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনে জোরালো ভূমিকা পালন করা উত্তরা পশ্চিম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মনোয়ার ইসলাম চৌধুরী রবিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে অ্যাডভোকেট মনোয়ার ইসলাম চৌধুরী রবিন উত্তরা এলাকায় আন্দোলন দমন-পীড়নে জোরালো ভূমিকা পালন করেন। তিনি উত্তরা পশ্চিম থানায় সাতটি ও উত্তরা পূর্ব থানায় পাঁচটি মামলার আসামি। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হতে বাংলাদেশের জন্য মালয়েশিয়ার সমর্থন চেয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ শুক্রবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা ২০২৫ সালে আসিয়ানের আসন্ন সভাপতি পদে মালয়েশিয়াকে অভিনন্দন জানাই। আমরা আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হিসেবে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা আঞ্চলিক ফোরামে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির জন্য মালয়েশিয়ার সক্রিয় ভূমিকার অপেক্ষায় রয়েছি।’
দুই দেশের বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা স্মরণ করে মালয়েশিয়াকে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, আনোয়ার ইব্রাহিমের সফর বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দুই মাস আগে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রীর এটি হচ্ছে প্রথম বাংলাদেশ সফর। এই সফর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি মালয়েশিয়ার সমর্থনের স্বীকৃতি।
দুই নেতার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা উভয়েই দীর্ঘদিনের দ্বিপক্ষীয় ইস্যুগুলোকে জারদার করতে তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। আলোচনায় বাংলাদেশের দ্বিতীয় বিপ্লব নজিরবিহীন গণআন্দোলন বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।
শিক্ষার্থীরা তাদের স্বাধীনতা ও বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য তাদের জীবন বিসর্জন দিয়েছে উল্লেখ করে নোবেল বিজয়ী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়বিচারপূর্ণ বাংলাদেশ গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে আমরা আমাদের ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ মালয়েশিয়ার অবিচল সমর্থন ও সহযোগিতার প্রশংসা করি।
অভিন্ন মূল্যবোধ, আস্থা ও জনগণের কল্যাণের স্বীকৃতির মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তারা সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং সংস্কৃতির ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করেছেন। মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে নিরাপদ প্রত্যাবাসন করার বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত রোহিঙ্গা ইস্যুটি সমাধানের জন্য তিনি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে ইস্যুটি আসিয়ান ফোরামে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে নিয়মিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করার বিষয়ে সম্মত হয়েছি। তারা কৃষি, জ্বালানি, যোগাযোগ, সুনীল অর্থনীতি, বিজ্ঞান, উদ্ভাবন ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতার সম্ভাবনা অন্বেষণ এবং মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা করেছেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে একটি নতুন উচ্চতায় উন্নীত করতে নিবিড়ভাবে কাজ করতে আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার ও সংকল্প ব্যক্ত করেছি।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আজ দুপুর ২টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলে প্রধান উপদেষ্টা তাকে স্বাগত জানান এবং সেখানে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
সংক্ষিপ্ত সফর শেষ করে ঢাকা ছেড়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। আজ শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে বহনকারী বিমান মালয়েশিয়ার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে।
এর আগে দুপুরে সংক্ষিপ্ত সফরে ৫৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে ঢাকায় পৌঁছান মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের প্রেক্ষাপটে শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম কোনো শীর্ষ নেতা হিসেবে ঢাকা সফরে এলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী।
আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে ছিল মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত ৫৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল।
রাজধানীর ওয়ারী ও ডেমরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২০ হাজার পিস ইয়াবাসহ দুজন মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। তাদের মধ্যে একজন নারী মাদক কারবারি রয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, কলিমা আক্তার ওরফে রোজি (৩০) ও মো. তানজিল (৩২)। ডিএনসি কর্মকর্তারা বলছেন, ধরন পাল্টেছে মাদক ব্যবসায়ীরা। নতুনরূপে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে ইয়াবা আসছে রাজধানী ঢাকায়।
আজ শুক্রবার (৪ অক্টোবর) ডিএনসির ঢাকা মেট্রো (দক্ষিণ) কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ মামুন এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত রাজধানীর ওয়ারী ও ডেমরা এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ইয়াবা বিক্রির সময় ৫০ পিস ইয়াবাসহ বংশাল ও ওয়ারী এলাকার চিহ্নিত মাদককারবারি মো. তানজিলকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্য ও জব্দ ইয়াবার উৎস সন্ধানকালে কক্সবাজারের টেকনাফ কেন্দ্রিক মাদক ব্যবসায়ীদের একটি নতুন চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়। পরে ক্রেতা সেজে ডেমরার বামৈল এলাকা থেকে চক্রের এক নারী সদস্য কলিমা আক্তার ওরফে রোজিকে আটক করা হয়। পরে তার ভাড়া করা বাসায় তল্লাশি করে ওয়ারড্রবের ড্রয়ার থেকে ২০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রোজি জানিয়েছেন, আগে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের সীমান্ত থেকে ইয়াবা ও আইস ঢাকার মাদক কারবারিদের কাছে বাহক দিয়ে পৌঁছে দেওয়া হতো। সাম্প্রতিককালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান ও চেকপোস্টে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও আইস জব্দ করা হয়। এসব কারণে কক্সবাজারের মাদক কারবারিরা কৌশল বদলেছে। তারা ইয়াবা এনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, ডেমরাসহ বিভিন্ন এলাকায় ভাড়াটিয়া সেজে অবস্থান নেয়। ঢাকায় চিকিৎসা ও হকারি ব্যবসাসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে তারা ঢাকায় অবস্থান করে এবং নিয়মিত অবস্থান পরিবর্তন করে। রাজধানীর মাদক কারবারিরা কক্সবাজারের মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে টাকা পৌঁছে দিলে, তারা এসব কারবারিদের মাধ্যমে রাজধানীর ব্যবসায়ীদের কাছে ইয়াবা পৌঁছে দেয়। চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান আছে।
গ্রেপ্তারকৃত অপর আসামি মো. তানজিলের বিরুদ্ধে ওয়ারী ও সুত্রাপুর থানায় আরও ৩টি মাদক মামলা রয়েছে।
সুন্দরবন বাঘ গণনার কাজ শেষ হয়েছে। এক হাজার ২০০টিরও বেশি ক্যামেরা ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে এই গণনা করা হয়। আগামী ৮ অক্টোবর বাঘের সংখ্যা প্রকাশ করা হবে।
পরিবেশ রক্ষাবিষয়ক সংগঠন বেলার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়ক মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, খুলনা ফরেস্ট অফিস ২০১৫ ও ২০১৮ সালের পর তৃতীয়বারের মতো সুন্দরবনের বাঘ গণনা শুরু করেছিল ২০২২ সালে। ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন বছরে বাঘ গণনা ও সংরক্ষণবিষয়ক দুইটি মেগা প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে। আমরা জেনেছি বাঘের সংখ্যা সুন্দরবনে বেড়েছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ উন্নয়ন বেস্টের প্রধান নির্বাহী পরিচালক মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, আমরা এখন অপেক্ষায় আছি কবে ফলাফলটা পাব। আশা করি এবার বাঘ বাড়বে। বাঘ সুন্দরবনসহ প্রকৃতিকে রক্ষা করছে।
তিনি আরও বলেন, সচেতনতার কারণেই বাড়ছে বাঘের সংখ্যা। তবে প্রতি তিন বছর অন্তর কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বাঘ গণনা না করে এই টাকা দিয়ে উপকূলীয় মানুষের উন্নয়নে কাজ করলে আরও উপকৃত হবে। প্রতি তিন বছর অন্তর বাঘ গণনা করার কোনো প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন না তিনি।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) জাতীয় পরিষদ সদস্য ও বিভাগীয় সমন্বয়কারী আইনজীবী মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, প্রতি তিন বছর অন্তর বাঘ গণনার জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দের প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। এখানে বড় ধরনের অর্থ অপচয় হচ্ছে। বাঘ গণনার নামে লুটপাট হচ্ছে দেশের কোটি টাকা। এগুলো বন্ধ করতে হবে। সুন্দরবন বাঁচাতে ১০ বছর পর পর একবার গণনা করলে সুন্দরবনের উপর চাপ কমবে।
সুন্দরবন পশ্চিম বনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, এর আগে বিশ্ব ব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে বাঘ জরিপ হলেও, এ বছর দেশীয় প্রযুক্তি ও দেশের অর্থায়নে খুলনার চারটি রেঞ্জেই ক্যামেরার ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়। এছাড়া ঝড়, বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস থেকে বাঘকে রক্ষার জন্য বাঘের কেল্লা নির্মাণ করা হচ্ছে সুন্দরবনে। ২০১৫ সালের বাঘশুমারি অনুযায়ী, সুন্দরবনে বাঘ ছিল ১০৬টি। আর ২০১৮ সালের শুমারিতে ছিল ১১৪টি।
অন্তর্বর্তী সরকারকে অবৈধভাবে পাহাড় দখলকারীদের তালিকা প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) আয়োজিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক শাসন কায়েম এবং জনগণের অধিকার, মর্যাদা ও ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।
আনু মুহাম্মদ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা সমাধানে সরকার পূর্ণ ক্ষমতা না রাখলেও অনেক কিছুই করতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম হলো পাহাড়গুলো কাদের দখলে রয়েছে সেগুলো প্রকাশ করা।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামরিক ও ব্যবসায়িক গোষ্ঠী পাহাড় দখল করে রেখেছে এবং এ বিষয়ে কোনো জবাবদিহিতা নেই। পাহাড়ের উন্নয়নে স্বচ্ছ জবাবদিহির প্রয়োজন এবং এ জন্য একটি শ্বেতপত্র কমিটি গঠন করতে হবে।
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হলে সরকারের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা থাকতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, পাহাড়ের সমস্যা রাজনৈতিক সংকট, যা সামরিকীকরণের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব নয়।
জাতীয়তাবাদী মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফয়জুল হাকিম লালা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে হবে, তা ছাড়া পার্বত্য অঞ্চলের সমস্যার সমাধান হবে না।
গোলটেবিল বৈঠকে ইউপিডিএফ তাদের সাত দফা প্রস্তাবনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনান প্রত্যাহার, ভূমি সমস্যা সমাধান ও পাহাড়িদের জন্য কোটা পুনর্বহালের দাবি তুলে ধরেছে।
নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের মিডিয়া সমন্বয়ক ইমতিয়াজ সেলিমকে (৪২) গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
আজ শুক্রবার ভোরে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ৬টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি মামলা বিচারাধীন। ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের মিডিয়া সমন্বায়ক ইমতিয়াজ সেলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ ভোরে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট তাকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা রয়েছে। এ ছাড়া পল্লবী ও খিলগাঁও থানার আরও দুটি মামলার এজাহারনামীয় আসামি তিনি।
উল্লেখ্য, তার বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তাকে আদালতে হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন।
অসুস্থ বোধ করায় কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহারকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
আজ শুক্রবার দুপুরে বেসরকারি সংস্থা উন্নয়ন বিকল্পের নীতিনির্ধারণী গবেষণার (উবিনিগ) পরিচালক সীমা দাস সিমু গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
ফরহাদ মজহার বর্তমানে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ডা. শফিকুর রহমানের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন।
সিমু জানান, গত চার-পাঁচ দিন ধরে ফরহাদ মজহার জ্বরে ভুগছিলেন। আজ সকাল থেকেই বেশি অসুস্থ বোধ করায় দুপুর ১২টার দিকে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার চিকিৎসা শুরু হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায় তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পোশাককর্মী রুবেল হত্যার অভিযোগে রাজধানীর আদাবর থানায় দায়ের হওয়া মামলায় খুলনা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। সাবেক এ সংসদ সদস্য বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি।
আজ শুক্রবার তাকে দুই দিনের রিমান্ড শেষে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। অপর দিকে তার আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুদ্দীন হোসাইন তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন বুধবার (২ অক্টোবর) তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুজ্জামান তার দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২২ আগস্ট পোশাককর্মী রুবেলের বাবা রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে আদাবর থানায় মামলা করেন। এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ক্রিকেটার ও সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানসহ ১৫৬ জন আসামি। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, গত ৫ আগস্ট রুবেল আদাবরের রিংরোডে প্রতিবাদী মিছিলে অংশ নেন। এ সময় আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্দেশ, প্ররোচনা, সাহায্য, সহযোগিতা ও প্রত্যক্ষ মদতে কেউ মিছিলে গুলি ছোড়ে। বুকে ও পেটে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রুবেলকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসারত অবস্থায় ৭ আগস্ট মারা যান।