রোববার, ১৩ জুলাই ২০২৫
২৯ আষাঢ় ১৪৩২

কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না: প্রধান উপদেষ্টা

বুধবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
বাসস
প্রকাশিত
বাসস
প্রকাশিত : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ২১:২৭

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে কেউ সমাজে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করলে আমরা তাকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবো। আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা আর যেন কোনো স্বৈরাচারের হাতে পড়তে না হয় উল্লেখ করে বলেন, আমাদের সন্তানদের জন্য একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রূপরেখা তৈরি করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আমরা যাতে বলতে পারি আমরা একটি গণতান্ত্রিক দেশে বসবাস করি, আমরা যাতে সকলেই দাবি করতে পারি যে এই দেশটি আমাদের- আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি।

গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে ড. ইউনূস তার ভাষণে বলেন, আমরা সংস্কার চাই। আমাদের একান্ত অনুরোধ, আমাদের ওপর যে সংস্কারের গুরু দায়িত্ব দিয়েছেন, সেই দায়িত্ব দিয়ে আপনারা দর্শকের গ্যালারিতে চলে যাবেন না। আপনারা আমাদের সঙ্গে থাকুন। আমরা একসঙ্গে সংস্কার করবো। এটা আমাদের সবার দায়িত্ব।

দেশবাসীকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে সংস্কার আনার আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, আপনারা নিজ নিজ জগতে সংস্কার আনুন। একটা জাতির সংস্কার শুধুমাত্র সরকারের সংস্কার হলে হয় না। আপনি ব্যবসায়ী হলে আপনার ব্যবসায় সংস্কার আনুন। ব্যবসায়ী গোষ্ঠিরা তাদের নিজ নিজ সমিতির মাধ্যমে সংস্কার আনুন। সমিতিতে সংস্কার আনুন। নতুন করে সমিতির গঠনতন্ত্র সংশোধন করুন।

তিনি আরও বলেন, আপনি শ্রমিক হলে আপনার ক্ষেত্রে আপনি সংস্কার করুন। আপনি রাজনৈতিক নেতা-কর্মী হলে আপনার ক্ষেত্রে সংস্কার করুন। আপনি প্রতিষ্ঠান প্রধান হলে আপনার প্রতিষ্ঠানে সংস্কার আনুন। আমি এটাকে সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করার জন্য সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এই সংস্কারের মাধ্যমে আমরা জাতি হিসেবে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করতে চাই। আমাদের এই যাত্রা আমাদের পৃথিবীর একটি সম্মানিত জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করুক এটাই আমাদের সবার কাম্য।

রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিগত মাসে আমি বেশ কিছু রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথকভাবে বসেছি। তাদের সঙ্গে মতামত বিনিময় করেছি। তারা আমাদের উৎসাহিত করেছেন। ছাত্র, শ্রমিক জনতার বিপ্লবের লক্ষ্যের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। সংস্কারের কাজে পূর্ণ সহযোগতিা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পৃথক বৈঠকের কথা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ব্যবসায়ীদের কাছে আমাদের সরকারের লক্ষ্যগুলি ব্যাখ্যা করেছি। তারাও আমাদের লক্ষের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র শ্রমিক জনতার ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মুখে এবং হাজারো মানুষের আত্মদানের বিনিময়ে বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছে। এই গণঅভ্যুত্থানের বার্তা ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য একটি অভূতপূর্ব সময় ও সুযোগ আমরা এর মধ্যে দিয়ে অর্জন করেছি। এখন বাংলাদেশে স্বৈরতান্ত্রিক শাসন পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা রোধ এবং জনমালিকানা ভিত্তিক, কল্যাণমুখী ও জনস্বার্থে নিবেদিত একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে কিছু জাতীয়ভিত্তিক সংস্কার সম্পন্ন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এসব সংস্কার ভাবনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা।

তিনি বলেন, আমরা যেহেতু জনগণের ভোটাধিকার ও জনগণের মালিকানায় বিশ্বাস করি, সেহেতু নির্বাচন ব্যবস্থার উন্নয়নে আমাদের সংস্কার ভাবনায় গুরুত্ব পেয়েছে। আমরা মনে করি নির্বাচনের নামে সংখ্যাগরিষ্ঠতার একাধিপত্য ও দুঃশাসন মানুষের ওপর চাপিয়ে দেয়া বা এর মাধ্যমে এক ব্যক্তি বা পরিবার বা কোনো গোষ্ঠীর কাছে সকল ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। এসব আশঙ্কা রোধ করার জন্য নির্বাচনের সাথে সম্পর্কিত নির্বাচন কমিশনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারের কথা আমরা ভাবছি।

ড. ইউনূস বলেন, নির্বাচনব্যবস্থার সাথে সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রশাসন, বিচার প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন এই চারটি প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য। এসব প্রতিষ্ঠানের সংস্কার জনমালিকানা ভিত্তিক, জবাবদিহিমূলক ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায়ও অবদান রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এর পাশাপাশি করে সমাজের সকল স্তরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব ও স্বার্থ নিশ্চিত করার জন্য এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বার্তাকে প্রতিফলিত করার জন্য সাংবিধানিক সংস্কারের প্রয়োজন আমরা অনুভব করছি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে উল্লেখ করেন, এসব বিষয়ে সংস্কার করার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে সরকার প্রাথমিকভাবে ছয়টি কমিশন গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব কমিশনের কাজ পরিচালনার জন্য বিষয়ভিত্তিক অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে ছয়জন বিশিষ্ট নাগরিককেএই কমিশনগুলো পরিচালিনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর পর আরও বিভিন্ন বিষয়ে কমিশন গঠন প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।

এসব কমিশনের অন্য সদস্যদের নাম কমিশন প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে। কমিশনগুলোর আলোচনা ও পরামর্শসভায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ছাত্র, শ্রমিক, জনতা আন্দোলনের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।

পূর্ণাঙ্গভাবে গঠিত হওয়ার পর কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে তার কাজ আগামী পহেলা অক্টোবর থেকে শুরু করতে পারবে বলে প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন এবং এটি পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকার পরবর্তী পর্যায়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে পরামর্শসভার আয়োজন করবে।

চূড়ান্ত পর্যায়ে ছাত্র সমাজ, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সরকারের প্রতিনিধি নিয়ে ব্যাপকভিত্তিক তিন থেকে সাত দিনব্যাপী একটি পরামর্শসভার ভিত্তিতে সংস্কার ভাবনার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। এতে এই রূপরেখা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তার একটি ধারণাও দেওয়া হবে।

ড. ইউনূস বলেন, এই আয়োজন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বার্তা বাস্তবায়ন এবং রাষ্ট্র পুনঃনির্মাণ তাগিদের ঐক্যবন্ধনে গোটা জাতিকে শক্তিশালী ও আশাবাদী করে তুলবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর দ্বিতীয় বারের মতো জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন ড. ইউনূস। এর আগে ২৫ আগস্ট তিনি জাতির উদ্দেশে প্রথমবারের মত ভাষণ দেন।


বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে পুলিশ ভেরিফিকেশনের নতুন পরিপত্র

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন পদ্ধতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।

প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত কোনো প্রার্থী যদি পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রতিবেদন ফরম জমা না দেন, তবে তাকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হবে না। অর্থাৎ ভেরিফিকেশন ছাড়া নিয়োগের সুযোগ থাকছে না।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েরের সই করা পরিপত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের নিকট থেকে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য প্রয়োজনীয় পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রতিবেদন ফরম প্রাপ্তির পর তা সরাসরি স্পেশাল ব্রাঞ্চ, পুলিশ অধিদপ্তরে পাঠাবে। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের মধ্যে কেউ পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রতিবেদন ফরম দাখিল না করলে তাকে নিয়োগ সুপারিশের জন্য বিবেচনা করা হবে না।’ এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

এর আগে বিদ্যমান নিয়মে, এই ভেরিফিকেশন ফরম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে পাঠানো হতো। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সে পদ্ধতি আর অনুসরণ করা হবে না।

পরিপত্রের অনুলিপি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, আইন মন্ত্রণালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া দ্রুত ও কার্যকর করার লক্ষ্যেই এ পরিবর্তন আনা হয়েছে। কারণ, আগের প্রক্রিয়ায় ধাপে ধাপে পাঠানোর কারণে দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি হচ্ছিল। তাই এনটিআরসিএকে সরাসরি পুলিশের সঙ্গে যুক্ত করে সময় কমানো এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, এনটিআরসিএ-এর অধীন এমপিওভুক্ত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির আলোকে এক লাখ ৮২২ জন শিক্ষক নিয়োগের আবেদন চলছে।

এ আবেদন চলার মধ্যেই গত বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ পুলিশ ভেরিফিকেশন সংক্রান্ত পরিপত্রটি জারি করেছে।


শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে মোদিকে আম পাঠাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে এক হাজার কেজি হাড়িভাঙ্গা আম পাঠাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। দুই প্রতিবেশী দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সোমবার (১৫ জুলাই) এই আমের চালানটি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে পৌঁছাবে।

নয়াদিল্লি পৌঁছানোর পর আমগুলো ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, কূটনীতিক এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যেও বিতরণ করা হবে— মৈত্রীর অংশ হিসেবে।

এছাড়া, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আম পাঠাচ্ছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীসহ সেখানকার বিশিষ্টজনদের জন্য ৩০০ কেজি হাড়িভাঙ্গা আম উপহার পাঠানো হয়। আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে ৬০টি কার্টনে এসব আম পাঠানো হয়।

প্রতিবছর বাংলাদেশ সরকার মৌসুমি উপহার হিসেবে ত্রিপুরা রাজ্য সরকার ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য আমসহ বিভিন্ন ফল পাঠিয়ে থাকে। এর জবাবে ত্রিপুরা রাজ্য সরকারও উপহার হিসেবে বাংলাদেশের জন্য পাঠায় বিখ্যাত রসালো ‘কুইন’ জাতের আনারস।

চলতি বছরের আম উপহার পাঠানোর কার্যক্রমটি পরিচালনা করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং এটি রপ্তানিকারকের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন, আগরতলার কর্মকর্তাদের কাছে উপহারের চালানটি হস্তান্তর করা হয়।

এই উদ্যোগকে ‘আম কূটনীতি’ হিসেবে অভিহিত করা হয়, যা আগের প্রশাসনের সময়েও চলমান ছিল। এখনো এটি সৌহার্দ্য ও পারস্পরিক শুভেচ্ছার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।


প্রধান বিচারপতির নিয়োগসহ ৩টি বিষয়ে আলোচনায় ঐকমত্য কমিশন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ বিষয়ে ঐক্য গড়ে এবং রাষ্ট্র সংস্কারের বিভিন্ন বিষয়ে একমত হয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ তৈরির লক্ষ্যে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আজ আলোচনায় বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে আজ সকাল সাড়ে ১১টায় দ্বিতীয় দফার দ্বাদশ দিনের মত আনুষ্ঠানিকভাবে এ আলোচনা শুরু হয়েছে।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আজকের আলোচনার সূচিতে প্রাধান্য পাচ্ছে- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা, প্রধান বিচারপতি নিয়োগবিধি ও জরুরি অবস্থা ঘোষণা।

এর আগে, উল্লেখ্য তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। পূর্বের অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে আজ অধিকতর আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

বরাবরের মতো আজকেও আলোচনায় সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।

এছাড়া, কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন- বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মো. আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

সংলাপ শুরু হওয়ার আগে সূচনা বক্তব্যে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে বলেন, যেহেতু আপনারা রাজনৈতিক দল করেন, সেহেতু সব বিষয়ে আপনাদের একটি নির্দিষ্ট অবস্থান থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে আপনাদের প্রতি অনুরোধ, একটি মাঝামাঝি স্থানে এসে আমাদের দাঁড়াতে হবে।

পরবর্তীতে যদি জনগণের কাছ থেকে আপনারা প্রতিনিধিত্ব লাভ করতে পারেন, তাহলে সেটি পরিবর্তন করতে পারেন এবং সেটি জনগণের রায়ের ওপর নির্ভরশীল থাকবে।

কিন্তু কমিশন মনে করছে, একটি পর্যায়ে আসা ভালো।

তিনি আরো বলেন, আমরা আপনাদের বক্তব্যকে গুরুত্বহীন মনে করছি না, বরং আমরা চাচ্ছি সকলে একটি ঐক্যমতে পৌঁছাক। চাইলেই এ আলোচনা বাদ দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু তাতে বিদ্যমান পরিস্থিতিই থেকে যাবে। আমাদের একটি জায়গায় আসতে হবে- এই বিবেচনাটা যদি আপনারা করেন, তাহলে আমাদের পক্ষে ঐকমত্য গঠন করা সম্ভব।

তিনি সকলের প্রতি কিছুটা ছাড় দিয়ে ও কিছুটা অবস্থান পরিবর্তন করে একটি জায়গায় আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা অবস্থার পরিবর্তন করে হলেও এগিয়ে আসুন। না হলে আমরা যেখানে আছি, সেখানেই থেকে যাব। গ্রহণযোগ্যতার দিক থেকে এইটুকু বিবেচনা করুন যে, এটা সম্ভব কি-না।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় অংশগ্রহণ করছে- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।

এর আগে, দফায় দফায় বৈঠকে কমিশন প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি ও সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণকল্পে স্বতন্ত্র কমিটি গঠন করাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছে।

কমিশন সূত্রে জানা যায়, আলোচনা শেষে ব্রিফ করবেন রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা।


নবীনগরে ভাঙা ড্রেনে দুর্ভোগে জনজীবন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
 নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে নবীনগর-কোম্পানিগঞ্জ রোড়ের পৌর এলাকার আলীয়াবাদ বাজারে সড়কের পাশে মাটির চাপে ড্রেইন ভেঙে গিয়ে মরণ ফাঁদ তৈরি হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। যে কোন সময় ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।

জানা যায়- জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে টানা বৃষ্টিতে নবীনগর- কোম্পানিগঞ্জ সড়কের আলীয়াবাদ বাজারে সড়কের পাশের ড্রেইটি ভেঙে যাওয়ার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে সড়কটি। ঝুঁকি নিয়েই এ সড়কে প্রতিনিয়ত চলাচল করে নবীগর, কুমিল্লা, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের যানবহন। তাই চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এ সড়ক যাতায়াতকারী যাত্রীদের। আলীয়াবাদ বাজারে আসা ক্রেতা ও বিক্রেতাদের জনদুর্ভোগ পৌঁছেছে চরমে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ- পৌরসভার এ ড্রেইনটি দিয়ে আলীয়াবাদ গ্রামের পানি নিষ্কাশন হয়ে থাকে। ফলে ওই এলাকায় তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। অবিলম্বে ড্রেইনটি নির্মাণ করে ড্রেনেজ ব্যবস্থা সচল ও ফাটল ধরে যাওয়া সড়কের কাজ দ্রুত করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান- প্রতিদিন পৌর এলাকারসহ আশপাশের গ্রামের হাজারো মানুষ আসে এ বাজারে। এ ড্রেইনটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। পরিবহণ শ্রমিকরা জানান- ঝুঁকি নিয়ে আমাদেরকে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। এ স্থানে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এ ড্রেনটি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে প্রতি দিনই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়ে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নবীনগর পৌরসভার প্রশাসক রাজীব চৌধুরী বলেন-"সড়কের মালিক সওজ, তাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে, তারা জানিয়েছেন দ্রুত সময়ে কাজ শুরু হবে"।


আড়াই মাস পর ওবাইদুরের মরদেহ ফেরত দিল ভারত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি

ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে ভারতীয় পুলিশের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের কাছে মোঃ ওবাইদুল হোসেন (৪০) নামের এক বাংলাদেশি নাগরিকের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ এপ্রিল ২০২৫ তারিখ সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে ভারতের অভ্যন্তরে মেইন পিলার ৪৮ এর নিকট মধুপুর নামক স্থানে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ পড়ে থাকার বিষয়টি বিএসএফ মহেশপুর ব্যাটালিয়ন (৫৮ বিজিবি)-কে অবহিত করে। পরে জানা যায়, মৃতদেহটি ২০০ গজ ভেতরে ভারতের এলাকায় পড়ে ছিল এবং একইদিন ভারতীয় পুলিশ সেটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

পরদিন ২৮ এপ্রিল মোঃ হানেফ আলী নামে এক ব্যক্তি যাদবপুর বিওপিতে এসে দাবি করেন যে, মৃতদেহটি তার ছেলে মোঃ ওবাইদুল হোসেনের, যিনি ২৬ এপ্রিল রাত ১২টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। মৃত সন্তানের মরদেহ ফেরতের জন্য তিনি বিজিবির কাছে লিখিত আবেদন করেন।

বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে বিজিবি বিএসএফের সঙ্গে নিয়মিত পত্রালাপ ও চাপ সৃষ্টি করে। এর ফলস্বরূপ ৯ জুলাই বিএসএফ জানায়, ভারতীয় পুলিশ মরদেহ হস্তান্তরের বিষয়ে সম্মত হয়েছে। পরে ১২ জুলাই দুপুর ৩টা ৫৫ মিনিটে সীমান্ত পিলার ৪৭/৪-এস এর নিকটে শূন্যরেখায় মরদেহটি আনা হয়।

এ সময় বিজিবি ও বিএসএফ সদস্যদের উপস্থিতিতে মোঃ ওবাইদুল হোসেনের পিতা হানেফ আলী এবং পমাতা নাছিমা খাতুন মরদেহ এবং তার পরিধেয় বস্ত্র দেখে সনাক্ত করেন। এরপর বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে ভারতীয় পুলিশ মরদেহটি মহেশপুর থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে।

পরে মহেশপুর থানা পুলিশ স্থানীয় যাদবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সালাউদ্দিন মিয়া ও গ্রাম মেম্বার মোঃ হাসানুজ্জামানের উপস্থিতিতে মৃতদেহটি ওবাইদুল হোসেনের পরিবারের কাছে হস্তান্তর কর বিজিবি জানায়, সীমান্তে মানবিকতা ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় সমন্বয়ের ভিত্তিতে এই মরদেহ হস্তান্তর কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।


আনোয়ারায় ২ মাসের মাথায় ভেঙে যাচ্ছে ২ কোটি টাকার সড়ক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

আনোয়ারা উপজেলা পরৈকোড়া ইউনিয়নের প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কটি দীর্ঘদিন পাকা ছিল না,বহু প্রতীক্ষার পর সেখানে এলজিইডির ২ কোটি ৬ লাখ টাকা ব্যয় পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ায় দু'মাস যেতে না যেতেই বিভিন্ন অংশ ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের মাঝে।

এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। তারা বলছেন,১.৩৬৫ কিলোমিটার সড়কটি বিভিন্ন অংশের সাইড ভেঙে পড়েছে, যার ফলে সড়কটিতে যানবাহন চললে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সড়কটি। ঠিকাদার ও কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই এত দ্রুত সড়ক নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। এদিকে বিষয়টি সরেজমিনে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল আলম চৌধুরী।

জানা যায়,উপজেলার পরৈকোড়া ইউনিয়নের আনোয়ারা প্রকৌশলী অফিসের হাজী খায়ের আহমদ সড়কটি গত ২ মাস আগে মেসার্স শাহে জব্বরিয়া,নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ সম্পন্ন করে। কাজ শেষ হওয়ার দু’মাস না পেরোতেই কয়েকটি স্থানে রাস্তার পাড়,ইউনি ব্লক ও স্লাইডিং ভেঙ্গে পড়েছে।

স্থানীয়রা জানান, সড়কটির পাউবোর আরসিসি স্লুইস গেটসংলগ্ন স্থানে ১২ ফুট প্রশস্ত সড়কের ৯ ফুট ভেঙে সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। এতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ইজিবাইক,অটোরিকশা ও ভ্যানগাড়ি। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার ও অবাধে মালামাল ভর্তি মাহেন্দ্রাসহ ভারী যানবাহন চলাচল করায় এমন হাল হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয়দের।

এবিষয়ে উপজেলা উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল আলম চৌধুরী বলেন,এবিষয়ে স্থানীয়দের একটি অভিযোগ পেয়েছি,বিষয়টি সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


পাবনায় অভিযানেও থামছে না নিষিদ্ধ চায়না জালের ব্যবসা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাউজ আলী, পাবনা

দেশের জলজ জীববৈচিত্র্য ও মৎস্যসম্পদের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠেছে নিষিদ্ধ ‘চায়না দুয়ারী’ জাল। একবার এই জালে মাছ বা জলজ প্রাণী প্রবেশ করলে তা আর বের হতে পারে না। তাই মৎস্য অধিদপ্তর এ জাল নিষিদ্ধ করলেও পাবনার ফরিদপুর উপজেলার ডেমরা, বি-নগর ও পুঙ্গলী ইউনিয়নে বেড়েই চলেছে চায়না জালের অবৈধ উৎপাদন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, লোকচক্ষুর আড়ালে নয় প্রশাসনের সামনেই ঘরের গেট বন্ধ করে দিব্যি চলছে চায়না দুয়ারী জালের উৎপাদন। এ জালের ব্যাপক চাহিদা থাকায় স্থানীয়ভাবে তৈরি ফ্রেম ও জাল কুরিয়ার সার্ভিসে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হচ্ছে।

ডেমরা ইউনিয়নে একাধিক কারখানা মালিক মিলে গঠন করেছেন ‘কারখানা মালিক সমিতি। স্থানীয়দের কাছে অভিযোগ উঠেছে, এই সমিতিকে ছায়া দিয়ে কারখানা বাড়াতে সহযোগিতা করছেন ডেমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুয়েল রানা।

স্থানীয়দের অভিযোগ চেয়ারম্যানের প্রত্যক্ষ মদদে কারখানাগুলো নির্ভয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। মালিকদের মধ্যে রয়েছেন নিত্য হাওলাদার, দীপ্ত হাওলাদার, শ্যামল, বিপ্লব, সুশান্ত হাওলাদার, পশু চিকিৎসক পরিতোষ হাওলাদার এবং মাজাট সুইচগেট এলাকার আল-আমিন।

পুঙ্গলীর নারানপুর পশ্চিমপাড়া কিবরুল, রতনপুর উত্তরপাড়া অঞ্চলের, কালাম, রুহুল আমিন, মালেক, খোয়ালিদ, শাহিন ও মোমিনসহ বহু লোক এই অবৈধ জাল তৈরির সঙ্গে জড়িত।

স্থানীয়দের দাবি, চেয়ারম্যান জুয়েল রানা নিজেও ‘জুয়েল ফাউন্ডেশন’ নামে একটি অবৈধ সংগঠনের আড়ালে এই ব্যবসা পরিচালনা করছেন। এর কোনো অফিস বা রেজিস্ট্রেশন নেই। মাঝে মাঝে চাল বিতরণ করলেও তা সরকারি না নিজের টাকায় সে বিষয়েও রয়েছে সন্দেহ। সমাজসেবা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ‘জুয়েল ফাউন্ডেশন’-এর কোনো বৈধ লাইসেন্স নেই।

এসব কারখানায় কাজ করছে অনেক অপ্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষার্থী। স্কুল ফাঁকি দিয়ে জড়িয়ে পড়ছে জাল তৈরির কাজে। ফলে স্কুল ছুটির হার বাড়ছে, পাশাপাশি গড়ে উঠছে অনৈতিক সম্পর্ক ও নানাবিধ সামাজিক সমস্যা।

জাল তৈরির কাজ মূলত রাতের বেলায় হয়, যার সুযোগ নিচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীরা। রতনপুরসহ কয়েকটি এলাকায় ইয়াবা, গাঁজা ও ফেন্সিডিলের ব্যবহার ভয়াবহ আকার নিয়েছে।

মৎস্য বিশেষজ্ঞদের মতে, চায়না দুয়ারী জালের মাধ্যমে মাছের ডিম ও ছোট মাছ ধরা পড়ায় দেশিয় অনেক মাছের প্রজাতি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রায় ৫০ থেকে ১০০ ফুট দীর্ঘ এবং দেড় ফুট প্রস্থের এই জালের ফাঁস এতটাই ছোট যে কোনও মাছ রক্ষা পায় না।

স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘জাল ধ্বংস করা হলেও কারখানাগুলো বন্ধ হচ্ছে না কেন গত ঈদের আগেও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সানাউল মোর্শেদ একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করলেও কার্যকর কোনো পরিবর্তন হয়নি।

ডেমরা ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল রানা বলেন, ‘আমার কোনো কারখানা নেই। ছোট ভাই একসময় ব্যবসা করতেন, পরে বন্ধ করে দিয়েছির। তিনি স্বীকার করে বলেন, একবার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে কিছু জাল নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সানাউল মোর্শেদের লোকজনের কাছ থেকে টাকায় জাল কিনে এনেছিলাম।

তিনি আরও দাবি করেন, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে সব জাল পুড়িয়ে ফেলা হয় না। কিছু পুড়িয়ে বাকি জাল বিক্রি করে দেওয়া হয়। আমি নিজেও এমন জাল কিনেছি, প্রমাণও রয়েছে।

আমরাও চাই অবৈধ ব্যবসা বন্ধ হোক। কিন্তু অভিযান চালিয়ে টাকা খেয়ে আবার কারখানা চালানোর সুযোগ করে দিলে তো কিছুই হবে না। আমাকে ঈদের আগে টাকার অফার দেওয়া হয়েছিল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) এর অফিস থেকে- মাসিক ভিত্তিতে টাকা দিলে ব্যবসা চালাতে দেবে, এতে আমি পাত্তা দিইনি।’

সহকারী কমিশনার (ভূমি) সানাউল মোর্শেদ বলেন, ‘সম্প্রতি ডেমরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জুয়েল রানার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ জাল পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। সেদিন তিনি বাড়িতে ছিলেন না, থাকলে তাকে আইনের আওতায় আনা যেত। কারখানায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি জব্দ করলে সমস্যার সমাধান হতো- এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন তিনি, সেগুলো পরিবহনের জন্য সরকারি বরাদ্দ না থাকায় তা সম্ভব হয় না।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আরো বলেন, ‘আমার অফিস থেকে যদি কেউ টাকা চেয়ে থাকে, তাহলে সরাসরি আমাকে জানাতে হবে- আমি কি টাকা চেয়েছি, নাকি আমার অফিসের কেউ চেয়েছে? আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সম্মান রক্ষা করতে।

আমি যখন অভিযানে যাই, তখন একজন পেশকার আমার সঙ্গে ছিলেন। অভিযানের সময় ইউপি চেয়ারম্যান আমাকে ফোন দেওয়ার সাহস না করে পেশকারকে ফোন দিয়ে বলেন, যেন আমি অভিযানটা না করি তার সম্মান যাতে রক্ষা পায়।

আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি, কিন্তু কাউকে ছবি তুলতে দিইনি। চাইলে তার বিরুদ্ধে মামলাও করা যেত। কিন্তু শুধুমাত্র তার মান-সম্মানের কথা বিবেচনায় আমরা অভিযান শেষ করে নিরবে ফিরে এসেছি।

পাবনায় নিষিদ্ধ জালের উৎপাদন এখন শুধু একটি অবৈধ ব্যবসা নয়, বরং তা হয়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এর সঙ্গে প্রশাসনের কিছু অসাধু সদস্যের যোগসাজশের অভিযোগ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এখন প্রশ্ন- সরকারি কর্তৃপক্ষ কি সত্যিকারের পদক্ষেপ নেবে, নাকি এভাবেই লোক দেখানো অভিযানের আড়ালে ব্যবসা চলতে থাকবে।


১৩ জুলাই ‘২৪ : মামলা প্রত্যাহারে আল্টিমেটাম, রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি প্রদানের ঘোষণা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের এক দফা দাবিতে ২০২৪ সালের ১৩ জুলাই গণপদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের নামে করা মামলা তুলে নিতে পুলিশকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন তারা।

১৩ জুলাই শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। একই দাবিতে ১৪ জুলাই রোববার রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপিও প্রদানের ঘোষণা দেন তারা। পাশাপাশি জেলা শহরগুলোতে শিক্ষার্থীদের পদযাত্রা সহকারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আগামীকাল রোববার সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে শিক্ষার্থীরা গণপদযাত্রায় অংশ নেবেন। এরপর শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করবেন । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সাত কলেজ ও ঢাকার অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এতে অংশগ্রহণ করবে। এ ছাড়াও বিভিন্ন জেলায় অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা পদযাত্রা নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপি দেবেন ।

পুলিশকে মামলা তুলে নিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, শাহবাগ থানায় আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে অজ্ঞাতনামা মামলা করা হয়েছে। সেখানে পুলিশ বলছে যে শিক্ষার্থীরা তাদের ক্ষতি সাধন করেছে। ক্ষতি যদি হয় তাহলে অজ্ঞাতনামা মামলা দেওয়ার প্রয়োজন নেই, আমাদের নামেই মামলা দিতে পারেন।

এইদিন আন্দোলনকারীদের দাবি ও বক্তব্যকে সংবিধান এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির বিরোধী বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। রাস্তা বন্ধ না করে আন্দোলন থেকে সরে আসতে বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

এদিকে পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশীদ বলেন, আন্দোলনের নামে জানমালের ক্ষতি করলে কিংবা সড়ক অবরোধ করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌক্তিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং তাদের দাবি ন্যায্য হলেও সরকার ভিন্ন খাতে নিতে অপকৌশল করছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

কোটা সংস্কারের বিষয়টি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন থাকায় নির্বাহী বিভাগ এই মুহূর্তে আনুষ্ঠানিক কোনও ঘোষণা দিলে তা অসাংবিধানিক হবে বলে মন্তব্য করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

১৩ জুলাই কোটা সংস্কারের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দিনব্যাপী গণসংযোগ করে আন্দোলনকারীরা। শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হল ও সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে এ গণসংযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

এছাড়াও এইদিন রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে চলমান আন্দোলন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সমন্বয়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ৩৮ সদস্যের এ কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ব্যাচের ২৪ জন শিক্ষার্থীকে সমন্বয়ক এবং ১৪ জনকে সহসমন্বয়ক হিসেবে রাখা হয়।

এদিকে কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজবাড়ী রেলস্টেশনের সামনে শনিবার রেললাইনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ঢাকাগামী মধুমতী এক্সপ্রেস আটকে দেন তারা।


গৌরবময় অবদানের জন্য কোস্টগার্ডকে আইএমও’র স্বীকৃতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

অভিযানে গৌরবময় অবদান রাখায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের টাগবোট ‘বিসিজিটি প্রমত্ত’ এবং এর ক্রুদের ‘প্রশংসাপত্র’ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও)।

শনিবার সকালে কোস্টগার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ বাসস’কে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থানকালে গত বছর ৫ অক্টোবর রাতে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) মালিকানাধীন তেলবাহী জাহাজ ‘এমটি বাংলার সৌরভ’-এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। দ্রুত ও কার্যকর অগ্নিনির্বাপণ এবং সামুদ্রিক পরিবেশগত বিপর্যয় রোধে ‘বিসিজিটি প্রমত্ত’ অসাধারণ ভূমিকা রাখে।

ঘটনার সময় ট্যাংকারটিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, যা সামুদ্রিক জীববৈচিত্র ও পরিবেশের জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। তৎক্ষণাৎ জরুরি উদ্ধার অভিযান শুরু করে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড।

‘বিসিজিটি প্রমত্ত’ এবং এর সাহসী নাবিকরা ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সফল অভিযান পরিচালনা করেন। সেই অভিযানে ৪৮ জন নাবিককে উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি তেল ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কার্যকর ব্যারিয়ার স্থাপন ও বর্জ্য সংগ্রহের মাধ্যমে গভীর সমুদ্রে দূষণরোধ করা হয়।

এই দৃষ্টান্তমূলক ও সাহসিকতাপূর্ণ অভিযানের জন্য আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) ‘বিসিজিটি প্রমত্ত’ এবং এর ক্রুদের ‘লেটার অব কমান্ডেশন' দিয়েছে।

আইএমও এই অভিযানে প্রদর্শিত পেশাদারিত্ব, দক্ষতা, পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা এবং আন্তর্জাতিক নৌ নিরাপত্তা নীতিমালা অনুসরণের বিষয়গুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে মূল্যায়ন করেছে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আইএমও’র এই স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও দেশের জন্য বড় অর্জন। এটি শুধু কোস্টগার্ড নয়, পুরো দেশের জন্যই গর্বের। এই স্বীকৃতি প্রমাণ করে, কোস্টগার্ড একটি আধুনিক ও দক্ষ বাহিনী হিসেবে যেকোন দুর্যোগে সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম।

লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সর্বদা সমুদ্রসীমায় নিরাপত্তা বিধান, বিপদগ্রস্তদের উদ্ধার, সমুদ্র দূষণ প্রতিরোধ ও পরিবেশ সুরক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ভবিষ্যতেও বাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী দায়িত্ব পালনে বদ্ধপরিকর থাকবে।


 সীমান্তে আবার বিএসএফের গুলি, বাংলাদেশি যুবক নিহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আসকর আলী (২৪) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন।

শনিবার (১২ জুলাই) ভোরে উপজেলার মিনাপুর সীমান্তের ৩৫৩ নম্বর প্রধান পিলারের কাছে ভারতের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আসকর আলী হরিপুর উপজেলার জীবনপুর গ্রামের কানুরার ছেলে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

স্থানীয় সূত্র ও বিজিবি জানায়, শনিবার ভোর আনুমানিক চারটার দিকে আসকর আলীসহ কয়েকজন মিনাপুর সীমান্তের ৩৫৩ নম্বর প্রধান পিলার সংলগ্ন এলাকা দিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে কাঁটাতারের বেড়ার কাছে যান। এ সময় ভারতের কিষাণগঞ্জ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে আসকর আলী ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। তার মরদেহ ভারতের প্রায় ২০০ গজ অভ্যন্তরে পড়ে আছে বলে জানা গেছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সীমান্তে অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। অপরদিকে, ভারতের সীমান্তেও অতিরিক্ত বিএসএফ সদস্য মোতায়েন রয়েছে বলে জানা গেছে।

দিনাজপুর ৪২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা শুরু করেছে। নিহত যুবকের লাশ ফেরত আনার জন্য বিএসএফকে পতাকা বৈঠকে বসার আহ্বান জানানো হয়েছে।

৪২ বিজিবি জানিয়েছে, "আমরা বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে লাশটি ফেরত আনার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।


অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে সায়মা ওয়াজেদ, ডব্লিউএইচও’র পদক্ষেপকে স্বাগত জানাল বাংলাদেশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-এর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক কার্যালয়ের আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে পুতুলের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের গুরুতর অভিযোগের তদন্ত চলাকালীন শুক্রবার এ সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থাটি।

ডব্লিউএইচও’র এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ সরকার বলেছে, আমরা এটিকে জবাবদিহিতার পথে গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে দেখি।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম শনিবার তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে সরকারের এই বক্তব্য তুলে ধরেন।

সায়মা ওয়াজেদকে পদ থেকে অপসারণ প্রসঙ্গে তিনি লেখেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এর একটি স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন, যেখানে সায়মা ওয়াজেদকে তার পদ থেকে অপসারণ করা হবে, তার সকল সুযোগ-সুবিধা বাতিল করা হবে এবং এই মর্যাদাপূর্ণ দায়িত্বের সততা ও জাতিসংঘ ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা পুনরুদ্ধার করা হবে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ও বিশ্ববাসী স্বচ্ছতা, সততা ও ন্যায়বিচারের আবির্ভাবে আনন্দিত।


হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আবারও কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু

আপডেটেড ১২ জুলাই, ২০২৫ ১২:০৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আট মাস পর আবারো ভারত থেকে কাঁচামরিচ আমদানি শুরু হয়েছে।

দিনাজপুরের হিলি স্থল বন্দরের রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তা মো. নিজামুল ইসলাম আজ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ শনিবার মরিচ বোঝাই দুটি ট্রাক হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করেছে। এর আগে গতকাল সাপ্তাহিক ছুটির দিনে দুটি ট্রাকে ১৬ মেট্রিক টন ২৪ কেজি কাঁচা মরিচ আমদানি করা হয়। এ নিয়ে দুই দিনে চারটি ট্রাকে ৩২ মেট্রিক টন ৪৮ কেজি কাঁচা মরিচ দেশে আমদানি করা হলো।

হিলি স্থল বন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী জানান, হিলি স্থলবন্দর আমদানিকারক ব্যবসায়ী মেসার্স এনপি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল ও সততা বাণিজ্যালয় নামের দুটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারতের শিলিগুড়ি থেকে ৩২ টন ৪৮ কেজি কাঁচামরিচ আমদানি করেছে।

হিলি বাজার ঘুরে জানা যায়, প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এর দুইদিন আগে ১০০ থেকে ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।

হিলি বাজারের কাঁচামরিচ বিক্রেতা আব্দুর রহিম বাসসকে বলেন, ‘কয়েকদিন দেশের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির কারণে মরিচ ক্ষেতে কাঁচামরিচের ফুল নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে মরিচ উৎপাদন অনেক কমে গেছে। তাই মোকামগুলোতে মরিচ সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে দেশীয় কাঁচামরিচ না পাওয়ায় আমরা ভারত থেকে আমদানি করা কাঁচামরিচ বিক্রি করছি।

আমদানিকারক সততা বাণিজ্যালয়ের স্বত্বাধিকারী বাবলু রহমান জানান, দেশের বাজারে কাঁচা মরিচের চাহিদা ও হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধির কারণে ভারতের শিলিগুড়ি থেকে মরিচ আমদানি করা হচ্ছে। গতকাল আমদানি করা দুই ট্রাক মরিচ দেশে প্রবেশের পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে রাজধানীসহ কয়েকটি জেলায় পাঠানো হয়েছে। আজ শনিবার আমদানি করা মরিচ একইভাবে খালাস করে বিক্রি প্রক্রিয়া আজ শনিবার দিনের মধ্যেই শেষ করা হবে। চাহিদা না থাকলে আর মরিচ আমদানি করা হবে না বলেও তিনি জানান।

হিলি আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী বলেন, ‘দেশের বাজার স্বাভাবিক রাখতে বন্দর দিয়ে অন্যান্য পণ্যসহ কাঁচা-মরিচ আমদানি করা হচ্ছে। আমদানিকৃত কাঁচামরিচ আশপাশের উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হবে। কয়েক দিনের মধ্য কাঁচামরিচের দাম আরও কমে আসবে বলেও তিনি আশ্বস্ত করেন।’

গত বছরের ১৪ নভেম্বর সর্বশেষ এ বন্দর দিয়ে তিনটি ট্রাকে ৩১ মেট্রিক টন কাঁচামরিচ আমদানি করা হয়। সে সময় দেশে মরিচের চাহিদা না থাকায় এর একদিন পর ১৫ নভেম্বর থেকে কাঁচামরিচ আমদানি বন্ধ করে দেওয়া হয়। দেশীয় কাঁচামরিচের সরবরাহ কম থাকায় দীর্ঘ আট মাস পর ভারত থেকে পুনরায় কাঁচামরিচ আমদানি করা হলো।


বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনা অব্যাহত থাকবে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিতীয় দফার বাণিজ্য আলোচনার তৃতীয় ও শেষ দিনে উভয় দেশ বেশ কয়েকটি বিষয়ে একমত হয়েছে। তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে। দু’পক্ষই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় আলোচনা অব্যাহত রাখার।

দু’দেশের প্রতিনিধিরা আবারো আলোচনায় বসবেন, সেটি ভার্চুয়ালি এবং সামনাসামনি উভয়ভাবেই হতে পারে। খুব শিগগিরই এ সংক্রান্ত সময় ও তারিখ নির্ধারণ করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়, বাণিজ্য উপদেষ্টা, বাণিজ্য সচিব এবং অতিরিক্ত সচিব আজ ১২ জুলাই দেশে ফিরবেন। প্রয়োজনে তারা আবারো যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন। তিন দিনের আলোচনার ভিত্তিতে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ইতিবাচক সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে গত ৯ জুলাই এই বাণিজ্য আলোচনা শুরু হয়। গতকাল দ্বিতীয় দফার আলোচনার মাধ্যমে এটি শেষ হয়েছে। আলোচনায় বাংলাদেশ পক্ষের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। এ ছাড়া ভার্চুয়ালি আরো উপস্থিত ছিলেন সরকারের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা।

তিন দিনের এই আলোচনার পুরো বিষয়টি সমন্বয় করেছে ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাস।


banner close