বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থীদের তালিকা চেয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ২৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই তালিকা পাঠাতে হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (কলেজ মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন দপ্তর) মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন আহাম্মদ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
অফিস আদেশে বলা হয়, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সব কলেজ/শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্নাতক পাস, স্নাতক সম্মান, স্নাতকোত্তর ও প্রফেশনাল কোর্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় ২০২৪-এর জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের বিষয়ে সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত হয়। স্ব-স্ব কলেজ থেকে ছক অনুযায়ী শহীদ ছাত্র-ছাত্রীদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।’
এতে আরও বলা হয়, সংযুক্ত ছক অনুযায়ী তথ্য পাঠানোর আগে কলেজ কর্তৃপক্ষ শহীদ শিক্ষার্থীর পরিচয় সম্পর্কিত সব তথ্য ও ঘটনা যাচাই করে হার্ড কপি সংরক্ষণ করবে। পূরণকৃত ছকের তথ্যাদি অনলাইনে ২৬ সেপ্টেম্বর মধ্যে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হলো।
বাংলাদেশে প্রতি ১০ শিশুর মধ্যে ৪ জনের রক্তে উদ্বেগজনক মাত্রার সীসা পাওয়া গেছে। ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের মধ্যে ৩৮ শতাংশ এবং অন্তঃসত্ত্বা নারীদের প্রায় ৮ শতাংশের দেহে সীসার মাত্রা নিরাপদ সীমার চেয়ে বেশি। ঢাকায় এই মাত্রা সর্বোচ্চ, রাজধানীর ৬৫ শতাংশের বেশি এলাকায় উদ্বেগজনক সীসা ধরা পড়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও ইউনিসেফের যৌথ জরিপ ‘মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে-২০২৫’-এর ফলাফলে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। রোববার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কক্ষে সেমিনারে এই জরিপের ফলাফল তুলে ধরা হয়।
জরিপে বলা হয়েছে, সীসা দূষণ শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশে সরাসরি হুমকি সৃষ্টি করছে। এ ছাড়া এর প্রভাব সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্তরের ওপরও পড়ছে। আক্রান্ত শিশুদের অর্ধেকের বেশি ধনী পরিবারের এবং ৩০ শতাংশ দরিদ্র পরিবারের শিশু।
শিক্ষা ও শেখার ক্ষেত্রে উপস্থিতি ভালো হলেও মৌলিক দক্ষতা দুর্বল দেখা গেছে। প্রাথমিক স্তরে উপস্থিতি ৮৪ শতাংশ, নিম্ন মাধ্যমিকে ৬০ শতাংশ, আর উচ্চ মাধ্যমিকে মাত্র ৫০ শতাংশ। ৭-১৬ বছরের শিশুর শেখার ফলাফল তুলনামূলকভাবে আরও দুর্বল।
পানির নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতায় উচ্চ কাভারেজ থাকা সত্ত্বেও পানি ঝুঁকিপূর্ণ। উন্নত পানির উৎস ব্যবহারের হার ৯৯ শতাংশ, উন্নত স্যানিটেশন কাভারেজ ৯২ শতাংশ, তবে পরিবারের ৮০ শতাংশের বেশি পানিতে কোলাই জীবাণু পাওয়া গেছে। উৎস পর্যায়ে পানিদূষণ প্রায় ৪৭ শতাংশ। নিরাপদ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বিশেষত পল্লী এলাকায় এখনও দুর্বল।
শিশু সুরক্ষার ক্ষেত্রেও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি রয়েছে। সহিংসতা এখনও ব্যাপক; ২০-২৪ বছর বয়সি নারীদের প্রায় ৪৭ শতাংশ ১৮ বছরের আগে বিবাহিত হয়েছেন। ১৫-১৯ বছরের কিশোরী বিবাহের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘরে শিশুদের প্রতি সহিংস শাসন এখনও ৮৬ শতাংশ শিশুকে প্রভাবিত করছে।
পরিবেশগত স্বাস্থ্য বিষয়ে জানানো হয়, ভারী ধাতুর ঝুঁকি রয়েছে। প্রথমবারের মতো ভারী ধাতুর উপস্থিতি নির্ণয়ে দেখা গেছে, ১২-৫৯ মাস বয়সি এক-তৃতীয়াংশের বেশি শিশুর রক্তে সীসার উচ্চমাত্রা রয়েছে। শিল্পকারখানা, অনিয়ন্ত্রিত রিসাইক্লিং এবং বিপজ্জনক পণ্য ব্যবহারের কারণে এই ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সেমিনারে প্রতিবেদনের ফলাফল উপস্থাপনার পর বিবিএস-এর উপপরিচালক মো. আলমগীর হোসেনের সঞ্চালনায় উন্মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সরকারি মন্ত্রণালয়, একাডেমিয়া, উন্নয়ন সংস্থা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। তারা শিশুদের পুষ্টি, প্রারম্ভিক বিকাশ, পানির নিরাপত্তা ও ভারী ধাতুর ঝুঁকি মোকাবেলায় আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
উচ্চপর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ ও ভুটানের ডিভিশন ডাইরেক্টর জাঁ পেসমে, ওয়াটারএইড দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক ড. মো. খায়রুল ইসলাম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সাবেক সচিব ডা. মো. সরওয়ার বারী, আইসিডিডিআর’বির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো মাহীন সুলতান।
সেমিনারের দ্বিতীয় ভাগে চারটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়: স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, লিঙ্গ ও নিরাপদ পরিবেশ, ওয়াশ, এবং ভারী ধাতু ও অ্যানিমিয়া। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে ১২ লাখ শিশু শিশু শ্রমে যুক্ত এবং ৫-১৭ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে শিশু শ্রমের হার ২০১৯ সালের ৬.৮ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৯.২ শতাংশে পৌঁছেছে।
বিশ্লেষকরা শিশু সুরক্ষায় প্রতি ১ ডলার বিনিয়োগ করলে নয় গুন সামাজিক ও অর্থনৈতিক লাভ অর্জন সম্ভব উল্লেখ করেছেন। তারা সতর্ক করে বলেছেন, সীসা দূষণ, শিশু অপুষ্টি ও পানির নিরাপত্তাহীনতা জাতীয় উন্নয়নের জন্য ‘রেড ফ্ল্যাগ’ হিসেবে দেখা উচিত এবং তাৎক্ষণিক ও সমন্বিত নীতি হস্তক্ষেপ জরুরি।
স্বর্ণ বিশ্বের অন্যতম লোভনীয় সম্পদ। যেকোনো দেশে ঝুঁকি এড়াতে সোনা মজুত করে সরকার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোতে সেই পরিমাণ বেড়ে গেলে স্বর্ণের মূল্য বৃদ্ধি পায়। অনেক সময় কোনো দেশের মুদ্রার ব্যাপক অবমূল্যায়ন ঘটে। সেক্ষেত্রে নিজেদের সম্পদ রক্ষার্থে স্বর্ণ বিনিয়োগ করেন ব্যবসায়ীরা। ফলে তাদের কাছে ধাতুটির আকর্ষণ বাড়ে। সেই সঙ্গে দামও ঊর্ধ্বমুখী হয়। আবার ডলারের দাম বাড়লে স্বর্ণের দর হ্রাস পায়। আবার ডলারের মূল্য নিম্নমুখী হলে স্বর্ণের দাম বেড়ে যায়। এসব কারণে স্বর্ণের দাম কখনও বাড়ছে আবার কখনও কমছে। এবার দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম আরও কিছুটা কমানো হয়েছে।
স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে দুই দিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে মূল্যবান এই ধাতুটির দাম কমানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম কমানো হয়েছে ৫ হাজার ৪৪৭ টাকা। ফলে এখন এক ভরি স্বর্ণের দাম কমে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮ হাজার ২৭২ টাকা। আজ রবিবার (১৬ নভেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৫ হাজার ৪৪৭ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৮ হাজার ২৭২ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৫ হাজার ২০২ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৮০১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ৪৫৫ টাকা কমিয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৭০ হাজার ৩৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ৮০৩ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪১ হাজার ৭১৭ টাকা।
এর আগে গত ১৪ নভেম্বর সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৫ হাজার ২৪৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ২ লাখ ১৩ হাজার ৭১৯ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৫ হাজার ৪ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৪ হাজার ৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ২৯২ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৭৪ হাজার ৮৫৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ৬৬৩ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫২০ টাকা।
এদিকে স্বর্ণের দাম কমানো হলেও রূপার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো মানের ২২ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ৪ হাজার ২৪৬ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ৪ হাজার ৪৭ টাকা। ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ৩ হাজার ৪৭৬ টাকা এবং সনাতনী এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ৬০১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ১২টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ সংলাপ শুরু হয়।
সংলাপে যোগ দিয়েছে গণফোরাম, গণফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির নেতারা।
একই দিন দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ), বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাপ, তৃণমূল বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সংলাপে অংশ নেবে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) জামায়াতে ইসলামীসহ ১২টি দলের সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি।
বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, কোনো সন্ত্রাসী বা অপশক্তি আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না। এ বিষয়ে পুলিশের সকল ইউনিট তৎপর রয়েছে।
গতকাল শনিবার খুলনার বয়রা পুলিশ লাইনে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। আইজিপি খুলনার পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার (পিটিসি), আর্ম পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), র্যাপিড রিজার্ভ ফোর্স (আরআরএফ) ও খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশে (কেএমপি) চলমান পুলিশ সদস্যদের নির্বাচনি প্রশিক্ষণ পরিদর্শন করেন।
এসময় আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, বিগত তিনটি নির্বাচনে পুলিশকে বিতর্কিত করা হয়েছে। পক্ষপাতিত্ব ও অন্যায় করতে বাধ্য করা হয়েছে। যে কারণে বিগত দিনের সকল ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ। এ কারণেই পুলিশের সকল ইউনিটের সদস্যদের প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার চায় একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। ফলে এবারের নির্বাচনে পুলিশের দায়িত্ব ও কর্তব্য অনেক। এ কারণে আমরা ট্রেনিং নিয়ে প্রশিক্ষিত হচ্ছি।’
এবারই প্রথম পুলিশের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন নিয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত তিনটি নির্বাচনে পুলিশকে দিয়ে অন্যায় করিয়ে বিতর্কিত করা হয়েছে। ফলে এবার স্ব-উদ্যোগে প্রশিক্ষণ নিয়ে বিগত দিনের সবকিছু ঝেড়ে ফেলে একটি সুশৃঙ্খল নির্বাচন করা হবে। তবে, এর মধ্যে যে-সব পুলিশ সদস্য এখনো সংশোধন হতে পারেনি বা পারবে না তাদের নির্বাচনে মূল নেতৃত্বে দায়িত্ব দেওয়া হবে না। বিতর্কিতদের চিহ্নিত করতে রেঞ্জ ডিআইজি এবং পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আগামী জানুয়ারিতে দায়িত্ব বণ্টনের সময় বিষয়টি দেখা হবে।
নির্বাচনে পুলিশ সঠিক দায়িত্ব পালন করতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে আইজিপি বলেন, মানুষ নির্বাচনের জন্য উদগ্র্রীব হয়ে আছে। তবে পুলিশের একার পক্ষে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। এজন্য সকলের সহযোগিতা নিয়ে একটি শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব হবে।
আর্টিফিসিয়্যাল ইন্টেলিজেন্স (এআই) দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিস এবং ডিজ ইনফরমেশন দিয়ে ফেইক নিউজ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে- এ কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, এসব বিষয় দেখা হচ্ছে। তবে স্বাধীনতার নামে কতটুকু করতে বা লিখতে পারা যাবে সে বিষয়েও আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তদন্ত খুব বেশী অগ্রগতি হয়নি। তবে পুলিশের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ১৯টি হত্যা ও ৩৭টি অন্যান্য মামলায় ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখনও ৩০-৩১ জনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, ৫ আগস্টের পরে কাউকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হলে তাদের ১৭৩ অধ্যাদেশের মাধ্যমে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট থানা থেকে আদালতে সুপারিশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ডিএমপিকে ২ সহস্রাধিক ব্যক্তিকে মামলায় হয়রানি না করার জন্য বলা হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি রেজাউল হক ও কেএমপি কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দারসহ পুলিশের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার রায় এবং ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকার কোনো চাপ বা চ্যালেঞ্জ নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ১৭ নভেম্বরের রায়ের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যা যা প্রস্তুতি নেওয়ার নিয়েছে। ওই দিনই রায় ঘোষণা হবে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হবে না। এখানে কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। আর নির্বাচন উপলক্ষে যা যা প্রস্তুতি নেওয়ার তা আমরা নিয়ে নিয়েছি এবং চলছে। নির্বাচন কমিশনসহ আমরা প্রস্তুত।
গতকাল শনিবার পটুয়াখালী সার্কিট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ভোট নিয়ে আমরা চাপ অনুভব করছি না। নির্বাচনের সবকিছু নির্ভর করে জনগণের ওপর। তারা যখন নির্বাচনমুখী হয়ে যায়, তখন তাদের কোনো কিছু দিয়ে বাধা দেওয়া যায় না। আর রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনমুখী হয়ে গেলে তখন আর কোনো মতভেদ থাকেনা। আমার মনে হয় তারা অলরেডি নির্বাচনমুখী।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ৯ দিন মাঠে থাকবে। এর মধ্যে নির্বাচনের আগে পাঁচ দিন এবং পরে তিন দিন।
এসময় স্বারাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মরজুর মোর্শেদ, জেলা প্রশাসক ড. শহীদ হোসেন চৌধুরী ও পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দুই দিনের সফরে সড়ক পথে শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে পটুয়াখালী সার্কিট হাউসে পৌঁছান। সেখানে দুপুরের খাবারের পর পটুয়াখালী পুলিশ লাইন ও কোস্টগার্ড ঘাঁটি পরিদর্শন করেন। তবে এসব জায়গায় সাংবাদিকদের যেতে দেওয়া হয়নি। পরে তিনি কুয়াকাটার উদ্দেশে পটুয়াখালী ত্যাগ করেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, জাতীয় সম্পদ হিসেবে খাস পুকুর ও জলাশয় রক্ষা সবার দায়িত্ব।
তিনি জানান, সরকারি খতিয়ান অনুযায়ী ঢাকা জেলা ও মহানগরে মোট ১১৩টি খাস পুকুর রয়েছে, যার মধ্যে ৪৪টি প্রথম পর্যায়ে সংস্কারের জন্য চিহ্নিত হয়েছে। এসব জলাশয়ে সীমানা নির্ধারণ, অবৈধ দখল উচ্ছেদ, সীমানা পিলার স্থাপন, পুনঃখনন, পাড় বাঁধাই, দূষণমুক্তকরণ, পানি প্রতিস্থাপন, বাঁধানো ঘাট, ওয়াকওয়ে, বেঞ্চ স্থাপন এবং বৃক্ষরোপণের কাজ করা হবে। এর মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসন, বৃষ্টির পানি ধারণ, মৎস্যচাষ, কৃষি কার্যক্রম, বাফার জোন উন্নয়ন এবং নগরবাসীর জন্য পরিবেশবান্ধব বিনোদনকেন্দ্র গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি হবে।
আজ শনিবার ঢাকার কেরানীগঞ্জের দড়িপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে ‘ঢাকা মহানগরী ও উপজেলা এলাকার ৪৪টি খাস পুকুর ও জলাশয় সংস্কার, উন্নয়ন ও পরিবেশ সংরক্ষণ প্রকল্প’-এর উদ্বোধনকালে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
ঢাকা জেলা প্রশাসন বাস্তবায়িত এই উদ্যোগের মাধ্যমে রাজধানী ও উপকণ্ঠের গুরুত্বপূর্ণ জলাধারসমূহ পুনর্গঠন, সংরক্ষণ এবং পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ অপরিহার্য উল্লেখ করে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “ঢাকার পুকুরগুলো দখল, ভরাট ও দূষণের চাপের মুখে রয়েছে। বাকি জলাশয়ের তালিকা প্রণয়ন করে ধাপে ধাপে পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। আগামী প্রজন্মের টেকসই পরিবেশ নিশ্চিত করতে এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।”
তিনি বলেন, মৎস্যজীবী সম্প্রদায়, স্থানীয় জনগণ এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সম্পৃক্ত করেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে, যা পরিবেশ সংরক্ষণের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও সহায়ক হবে।
নিষিদ্ধ পলিথিন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পলিথিন দূষণ পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর হুমকি। সরকারের কঠোর নজরদারি ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির ফলে সুপারশপগুলো পলিথিনের শপিং ব্যাগ ব্যবহারে বিরত হচ্ছে। তিনি পরিবেশ রক্ষায় নাগরিক দায়িত্ববোধের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, ঢাকার জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ, পুলিশ সুপার মো. আনিসুজ্জামান, কেরানীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিনাত ফৌজিয়া।
সংশ্লিষ্টদের দ্রুত কাজ শুরুর নির্দেশনা দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকার জলাধারসমূহ স্বাভাবিক ধারণক্ষমতা ফিরে পাবে এবং জলবায়ু সহনশীল নগর ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ঢাকার ৪৪টি পুকুর ও জলাশয় সংস্কার কাজের উদ্বোধন করেছেন।
আজ শনিবার ঢাকার কেরানীগঞ্জের দড়িপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে ‘ঢাকা মহানগরী ও উপজেলা এলাকার ৪৪টি খাস পুকুর ও জলাশয় সংস্কার, উন্নয়ন ও পরিবেশ সংরক্ষণ প্রকল্প’-এর উদ্বোধন করেন তিনি। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা জেলা প্রশাসন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় সম্পদ হিসেবে খাস পুকুর ও জলাশয় রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। সরকারি খতিয়ান অনুযায়ী, ঢাকা জেলা ও মহানগরে মোট ১১৩টি খাস পুকুর রয়েছে, যার মধ্যে ৪৪টি প্রথম পর্যায়ে সংস্কারের জন্য চিহ্নিত হয়েছে।
তিনি জানান, এসব জলাশয়ে সীমানা নির্ধারণ, অবৈধ দখল উচ্ছেদ, সীমানা পিলার স্থাপন, পুনঃখনন, পাড় বাঁধাই, দূষণমুক্তকরণ, পানি প্রতিস্থাপন, বাঁধানো ঘাট, ওয়াকওয়ে, বেঞ্চ স্থাপন এবং বৃক্ষরোপণের কাজ করা হবে। এর ফলে জলাবদ্ধতা নিরসন, বৃষ্টির পানি ধারণ, মৎস্যচাষ, কৃষি কার্যক্রম, বাফার জোন উন্নয়ন এবং নগরবাসীর জন্য পরিবেশবান্ধব বিনোদনকেন্দ্র গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি হবে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ অপরিহার্য। ঢাকার পুকুরগুলো দখল, ভরাট ও দূষণের চাপে রয়েছে। তিনি জেলা প্রশাসনকে আহ্বান জানান, বাকি জলাশয়ের তালিকা তৈরি করে ধাপে ধাপে পুনর্গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। “আগামী প্রজন্মের টেকসই পরিবেশ নিশ্চিত করতে এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে,” বলেন তিনি।
উপদেষ্টা আরও জানান, মৎস্যজীবী সম্প্রদায়, স্থানীয় জনগণ এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সম্পৃক্ত করেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে, যা পরিবেশ সংরক্ষণের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও ভূমিকা রাখবে।
নিষিদ্ধ পলিথিন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পলিথিন দূষণ পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর হুমকি। সরকারের কঠোর নজরদারি ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির ফলে সুপারশপগুলো এখন পলিথিনের শপিং ব্যাগ ব্যবহার কমিয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় নাগরিক দায়িত্ববোধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, ঢাকার জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ, পুলিশ সুপার মো. আনিসুজ্জামান এবং কেরানীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিনাত ফৌজিয়া।
সংশ্লিষ্টদের দ্রুত কাজ শুরুর নির্দেশ দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকার জলাধারসমূহ স্বাভাবিক ধারণক্ষমতা ফিরে পাবে এবং জলবায়ু সহনশীল নগর ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপের দ্বিতীয় দিন আগামীকাল রোববার আরও ১২টি দলের বসবে। গত বৃহস্পতিবার সংলাপের প্রথম দিনে ১২টি দলের সঙ্গে দুই পর্বে মতবিনিময় শেষ করে পরবর্তী দিনের সময়সূচি ও দলের তালিকা জানানো হয়েছে।
ইসির জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মো. আশাদুল হক বলেন, আগামীকাল রোববার সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত গণফোরাম, গণফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সংলাপ রয়েছে।
এদিন বিকেলে ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ইসি বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ), বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ), তৃণমূল বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে মতবিনিময় করবে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে অংশীজনের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত দল রয়েছে বিএনপি ও জামায়াতসহ ৫৩টি। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত রয়েছে; প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি), ফ্রিডম পার্টি ও ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলনের নিবন্ধন বাতিল রয়েছে।
নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টি ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল, মার্কসবাদীর নিবন্ধন চূড়ান্ত করতে বিজ্ঞপ্তি হয়েছে, আপত্তি না থাকলে ১২ নভেম্বরের পর সনদ পাওয়ার কথা তাদের।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ ইতোমধ্যে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, সংলাপে কাদের ডাকা হবে আপনাদের ধাপে ধাপে জানানো হবে।
নদীমাতৃক বাংলাদেশের শত বছরের ঐতিহ্য এবং শতবর্ষী জাহাজের ইতিহাস আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার লক্ষ্যে ঐতিহ্যবাহী প্যাডেল স্টিমার ‘পি এস মাহসুদ’কে অভ্যন্তরীণ নৌরুটে পর্যটন সার্ভিসে যুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করে বর্তমান সরকার।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে পুনরায় চালু হতে যাওয়া শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী প্যাডেল স্টিমার পি এস মাহসুদ–এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লুৎফে সিদ্দিকীসহ সরকারের একাধিক সিনিয়র সচিব, সচিব ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
দ্বোধনকালে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, প্যাডেল স্টিমার পি এস মাহসুদ হবে বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও নদীভিত্তিক পর্যটনের এক অনন্য মেলবন্ধন। আগামী ২১ নভেম্বর শুক্রবার থেকে ঢাকা–বরিশাল নৌরুটে এটি পর্যটন সার্ভিস হিসেবে নিয়মিত চলাচল শুরু করবে।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ–পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) অধীনে থাকা শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার পি এস মাহসুদ প্রয়োজনীয় মেরামত করে প্রমোদতরী হিসেবে পুনরায় চালুর সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা আরও বলেন, পি এস মাহসুদ কেবল একটি নৌযান নয়, এটি বাংলাদেশের নদীজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জীবন্ত প্রতীক। আমরা চাই নতুন প্রজন্ম কাছ থেকে দেখুক, কীভাবে একসময় নদীপথই ছিল যোগাযোগ ও সংস্কৃতির প্রাণ।
উপদেষ্টা জানান, পি এস মাহসুদ–এর পাশাপাশি পি এস অস্ট্রিচ, পি এস লেপচা ও পি এস টার্নসহ আরও কয়েকটি পুরোনো স্টিমার সংস্কারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য— নদীপথের ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও নদীভিত্তিক পর্যটনের সম্ভাবনাকে বিস্তৃত করা।
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নূরুন্নাহার চৌধুরী এনডিসি বলেন, প্যাডেল স্টিমারটি চালু হলে তা দেশ–বিদেশের বহু পর্যটককে আকর্ষণ করবে। বিদেশি পর্যটকদের জন্য এতে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার, বাংলা গানের পরিবেশনাসহ নানা ব্যবস্থা রাখা হবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) জানায়, স্টিমারটির সংস্কার ও আধুনিকায়ন প্রক্রিয়ায় মূল কাঠামো ও ঐতিহাসিক নকশা অক্ষুণ্ণ রেখে ইঞ্জিন, নিরাপত্তা এবং ফায়ার সেফটি সিস্টেম সম্পূর্ণ নবায়ন করা হয়েছে। এতে রয়েছে আধুনিক কেবিন, পর্যটক–বান্ধব ডেক এবং ডিজিটাল নেভিগেশন ব্যবস্থা।
স্টিমারটি প্রতি শুক্রবার ঢাকা থেকে বরিশাল এবং শনিবার বরিশাল থেকে ঢাকা রুটে চলবে। যাত্রীরা উপভোগ করতে পারবেন নদীর সৌন্দর্য, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এক অনন্য ভ্রমণ অভিজ্ঞতা। নিরাপত্তা নিশ্চিতে এতে সংযোজন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা সরঞ্জাম, লাইফবোট, ফায়ার সেফটি ও জিপিএস ব্যবস্থা। ইঞ্জিনে ব্যবহৃত হয়েছে কম ধোঁয়া–নির্গমনকারী প্রযুক্তি, যা নদীপথে দূষণ হ্রাসে সহায়ক হবে।
প্রাথমিকভাবে সপ্তাহে এক দিন ঢাকা থেকে বরিশাল যাবে স্টিমারটি। প্রতি শুক্রবার সকাল ৮টায় ঢাকার সদরঘাট থেকে ছাড়বে, বরিশাল পৌঁছবে রাতে। আগে স্টিমার চলাচল করত রাতে; তবে এবার দিনে স্টিমার চালু করায় নদী ও তীরের দৃশ্য উপভোগে মানুষ আরও আগ্রহী হবে বলে আশা করছেন বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা।
রংপুরের ব্যবসায়ী আশরাফুল হককে হানি ট্র্যাপের ফাঁদে ফেলে হত্যা করে লাশ ২৬ টুকরা করে দুটি নীল ড্রামে ভরে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ফেলে রাখার সাথে জড়িত মূল পরিকল্পনাকারী জরেজের প্রেমিকা শামীমা আক্তার ওরফে কোহিনুরকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৩।
শুক্রবার সকালে কুমিল্লার লাকসামের বড় বিজরা এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা, ব্ল্যাকমেইলিং এবং লাশ গুমের পুরো সহযোগিতায় জড়িত ছিলেন।
শনিবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল ফায়েজুল আরেফীন।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, গত ১১ নভেম্বর রাত ৮টায় ব্যবসায়িক পাওনা আদায়ের জন্য বন্ধু জরেজুল ইসলামকে সাথে নিয়ে রংপুর থেকে ঢাকায় রওনা হন আশরাফুল। পরদিন সকাল থেকে তার ফোন বন্ধ পেয়ে উদ্বিগ্ন পরিবার খোঁজ করতে থাকে। ১৩ নভেম্বর হাইকোর্ট এলাকার পানির পাম্পের পাশে দুটি নীল ড্রাম থেকে উদ্ধার হয় অজ্ঞাত এক ব্যক্তির ২৬ টুকরা লাশ। আঙুলের ছাপ বিশ্লেষণে লাশটি আশরাফুলের বলে শনাক্ত করে পুলিশ।
ঘটনার পর ভিকটিমের বোন বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করলে র্যাব তদন্ত শুরু করে এবং প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করে শামীমাকে।
প্রেম, প্রতারণা ও ব্ল্যাকমেইলের নকশা:
জিজ্ঞাসাবাদে শামীমা জানায়—জরেজের সঙ্গে তার এক বছরের বেশি সময় ধরে প্রেমের সম্পর্ক। জরেজ তাকে জানায়, তার বন্ধুকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অন্তরঙ্গ ভিডিও ধারণ করে ১০ লাখ টাকা আদায় করা যাবে। এর মধ্যে ৭ লাখ নেবে জরেজ, আর ৩ লাখ পাবে শামীমা।
পরিকল্পনা অনুযায়ী শামীমা এক মাস আগে থেকেই মোবাইল ফোনে আশরাফুলকে ফাঁদে ফেলতে যোগাযোগ শুরু করে। অডিও-ভিডিও কলে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। ১১ নভেম্বর জরেজ আশরাফুলকে নিয়ে ঢাকায় আসে, পরদিন শামীমার সাথে শনির আখড়ার নূরপুরে ৫,৫০০ টাকা দিয়ে ভাড়া নেয়া বাসায় ওঠে তিনজন।
সেখানে শামীমা আশরাফুলকে মালটার জুসে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করে। বাইরে থেকে জরেজ অন্তরঙ্গ ভিডিও ধারণ করে, যা শামীমার মোবাইল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
অচেতন অবস্থায় নির্মম পিটুনি, মৃত্যু
১২ নভেম্বর দুপুরে আশরাফুল পুরোপুরি অচেতন হয়ে পড়লে তার হাত দড়ি দিয়ে বেঁধে মুখ কসটেপ দিয়ে আটকায় জরেজ। এরপর ইয়াবা সেবনের উত্তেজনায় হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আশরাফুলের। লাশ পাশেই রেখে রাত কাটায় জরেজ–শামীমা এবং শারীরিক সম্পর্কেও লিপ্ত হয়।
২৬ টুকরা করে ড্রামে ভরে ফেলা
১৩ নভেম্বর সকালে জরেজ বাজার থেকে চাপাতি ও দুটি ড্রাম কিনে আনে। চাপাতি দিয়ে লাশ ২৬ খণ্ডে করে দুই ড্রামে ভরে। বিকেলে সিএনজি ভাড়া করে ড্রাম দুটি বহন করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা দেখে হাইকোর্ট মাজার গেটের পাশে বড় গাছের নিচে ড্রাম দুটি ফেলে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে তারা।
এরপর শামীমা কুমিল্লায় এবং জরেজ রংপুরে পালিয়ে যায়।
র্যাব জানায়, শামীমার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ভিকটিমের রক্তমাখা পাঞ্জাবি–পায়জামা, হত্যায় ব্যবহৃত দড়ি, কসটেপ, গেঞ্জি, হাফ প্যান্টসহ একটি বস্তাভর্তি আলামত শনির আখড়ার নূরপুর এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে র্যাব-৩।
গ্রেপ্তারকৃত শামীমাকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থার জন্য শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের উদ্যোগে শুরু হয়েছে ‘আন্তর্জাতিক খতমে নবুয়ত মহাসম্মেলন’। শনিবার সকাল ৯টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ সম্মেলন শুরু হয়। এতে বাংলাদেশসহ পাঁচটি দেশের শীর্ষ আলেমদের যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
মহাসম্মেলনকে কেন্দ্র করে এদিন দেশের বিভিন্ন স্থানের আলেম-ওলামা ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ভোর থেকেই সম্মেলনস্থলে আসতে দেখা যায়।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে অংশ নিতে এসেছেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পাকিস্তানের সভাপতি মাওলানা ফজলুর রহমান, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের (ভারত) সভাপতি মাওলানা সাইয়্যিদ মাহমুদ মাদানি, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া পাকিস্তানের মহাসচিব মাওলানা হানিফ জালন্দরি, ইন্টারন্যাশনাল খতমে নবুওয়ত মুভমেন্টের ওয়ার্ল্ড নায়েবে আমির শায়খ আব্দুর রউফ মক্কি,পাকিস্তানের ইউসুফ বিন্নুরী টাউন মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম ড. আহমাদ ইউসুফ বিন্নুরী, পাকিস্তানের মাওলানা ইলিয়াছ গুম্মান, মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শায়খ মুসআব নাবীল ইবরাহিম।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের (ভারত) সভাপতি মাওলানা সাইয়্যিদ মাহমুদ মাদানি।
আয়োজক কমিটি জানিয়েছে, খতমে নবুওয়তের পবিত্র আকিদা রক্ষায় বৈশ্বিক ঐক্যের এ সম্মেলনে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এক ঐতিহাসিক দৃশ্যে পরিণত হবে। দেশের অন্যতম বড় দুই রাজনৈতিক দল—বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর পাশাপাশি ইসলামপন্থী দলগুলোর নেতাদেরও সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে অংশ নেবেন হেফাজতে ইসলামের আমির মাওলানা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, আল হাইয়াতুল উলিয়া ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাওলানা মাহমুদুল হাসান, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মুহাম্মদ আব্দুল মালেক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হকসহ দেশের খ্যাতিমান শতাধিক আলেম।
মহাসম্মেলনে সভাপতিত্ব করছেন সম্মিলিত খতমে নবুয়ত পরিষদের আহ্বায়ক ও খতমে নবুয়ত সংরক্ষণ কমিটি বাংলাদেশের আমির মধুপুরের পীর মাওলানা আবদুল হামিদ।
সবশেষ সমন্বয়ে আবারও বেড়েছে স্বর্ণের দাম। বাজুস নির্ধারিত নতুন তালিকা অনুযায়ী আজ শনিবার (১৫ নভেম্বর) থেকে বাড়তি দামেই দেশে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে।
সবশেষ গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাতে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে স্বর্ণের দাম বাড়িয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। সেদিন ভরিতে পাঁচ হাজার ২৪৮ টাকা বাড়িয়েছে সংগঠনটি।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে দুই লাখ ১৩ হাজার ৭১৯ টাকায়। এছাড়া, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি দুই লাখ ৪ হাজার ৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ৭৪ হাজার ৮৫৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ এক লাখ ৪৫ হাজার ৫২০ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে।
এদিকে, বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত পাঁচ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ছয় শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে, গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।
চলতি বছর মোট ৭৬ বার দেশের বাজারে সমন্বয় করা হয়েছে স্বর্ণের দাম। যেখানে দাম বাড়ানো হয়েছে ৫৩ বার, আর কমেছে মাত্র ২৩ বার। আর ২০২৪ সালে দেশের বাজারে মোট ৬২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল, আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার।
স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ২৪৬ টাকায়।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৪ হাজার ৪৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৩ হাজার ৪৭৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬০১ টাকায়।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৯ বার সমন্বয় করা হয়েছে রুপার দাম। এর মধ্যে বেড়েছে ছয়বার, আর কমেছে মাত্র তিনবার। আর গত বছর সমন্বয় করা হয়েছিল তিনবার।
সব মিলিয়ে চলতি বছর জুড়ে ঘনঘন সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে স্বর্ণ-রুপার বাজারে অস্থিরতা অব্যাহতই রয়েছে। স্বর্ণের দাম বাড়লেও রুপার দাম স্থিতিশীল থাকায় ক্রেতাদের কাছে দুই ধাতুর বাজারে বৈষম্য আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি ফেসবুকভিত্তিক প্রতিবাদী দলে পরিণত হয়েছে; যার মাঠে প্রকৃত সাংগঠনিক শক্তি খুব কম।
‘আমার দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণও তা-ই নির্দেশ করে, দলের তৃণমূল হয় ভেঙে গেছে, নয়তো প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বারা নিমজ্জিত হয়েছে। এই বাস্তবতা বিবেচনা করে, আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে কোনো অস্থিরতা বা বিঘ্ন সৃষ্টি করার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ বলে মনে করি।
আজ (শনিবার) সকালে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এসব কথা লিখেছেন।
পোস্টে তিনি লেখেন, তিনটি সাম্প্রতিক ঘটনা আমার বিশ্বাসকে আরও শক্তিশালী করেছে যে, ফেব্রুয়ারির নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে। বরং আমাদের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
১. বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে
বিএনপি তাদের সংসদীয় প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করলে বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে—এমন একটি ব্যাপক আশঙ্কা ছিল। অনেকের ধারণা ছিল, শত শত বিদ্রোহী প্রার্থী দলের সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন না। বিক্ষোভে নামবেন। এমনকি আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনীত প্রার্থীদের সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়াতে পারেন। কিন্তু এক-দুটি সামান্য ঘটনা ছাড়া ঘোষণাটি আশ্চর্যজনকভাবে শান্ত ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এ থেকে প্রমাণিত হয়, বিএনপি নেতৃত্ব যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে পরিকল্পিতভাবে কাজ করেছে। মনোনয়নের ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা ইঙ্গিত দেয়—প্রচারণা ও নির্বাচনের সময় দলের ভেতরে সংঘর্ষের সম্ভাবনা খুবই কম।
২. আওয়ামী লীগের সক্ষমতার সীমা স্পষ্টভাবে দেখছি এবং তা বেশ ছোট।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে যে তাদের একটি বিস্তৃত তৃণমূল নেটওয়ার্ক রয়েছে, যা যেকোনো নির্বাচন ব্যাহত করার মতো শক্তিশালী। কিন্তু গত কয়েক দিনের ঘটনাপ্রবাহ প্রমাণ করে দিয়েছে—দলটির বাস্তব সংগঠিত শক্তি আসলে কতটা সীমিত। এখন তারা ক্রমেই ভাড়াটে টোকাই-ধরনের ক্ষুদ্র দুষ্কৃতকারী গোষ্ঠীর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে, যারা ফাঁকা বাসে আগুন দিতে পারে, ৩০ সেকেন্ডের ‘ঝটিকা মিছিল’ করতে পারে, কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এআই শাটডাউনের মতো প্রচারণা চালাতে পারে।
প্রকৃত অর্থে, যার মাঠে প্রকৃত সাংগঠনিক শক্তি খুব কম। আমার দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণও তা-ই নির্দেশ করে, দলের তৃণমূল হয় ভেঙে গেছে, নয়তো প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলির দ্বারা নিমজ্জিত হয়েছে। এই বাস্তবতা বিবেচনা করে,আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে কোনো অস্থিরতা বা বিঘ্ন সৃষ্টি করার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ বলে মনে করি।
৩. পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন এখন আরও সংগঠিত
সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা দেখেই বোঝা যায়—পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন (ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসি) এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী ও সংগঠিত। সবচেয়ে দক্ষ ও সক্ষম কর্মকর্তাদের নির্বাচন প্রক্রিয়া তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস, তারা জাতির প্রত্যাশিত শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল নির্বাচন সম্পন্ন করতে সক্ষম হবে।