হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদেশফেরত এক যাত্রীর সঙ্গে যাত্রীসেবা প্রদানকালে অসদাচারণের অভিযোগে তিন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাকে (এআরও) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
ঢাকা কাস্টমস হাউসের কমিশনার মোবারা খানম ওই তিন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন। তিন কর্মকর্তা হলেন- মো. আজিজুল হক, শিমুল চৌধুরী ও আল আমিন। এ ছাড়া একই ঘটনায় এক সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও এক এসআইকে হাউসের সদর দপ্তরে ক্লোজ করা হয়েছে। কাস্টমস হাউস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ঢাকা কাস্টমস হাউস সূত্রমতে, ১৫ সেপ্টেম্বর বিদেশফেরত এক যাত্রীর ব্যাগ চেকিং করেন বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা। তারা ওই যাত্রীর ব্যাগ খুলে তাকে অযথা হয়রানি করেন। ব্যাগ খুলে চকোলেট পাওয়ায় কয়েকজন সেসব চকোলেট নিয়ে খাওয়া শুরু করেন। বিষয়টি দেখে এক যাত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দেন। এরপর যাত্রীর সঙ্গে অসদাচরণের বিষয়টি এনবিআর কাস্টমস কমিশনারের নজরে আসে। কমিশনার বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে তিন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। একইসঙ্গে অপর এক সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও এক এসআইকে ক্লোজ করে হাউসের সদর দপ্তরে সংযুক্ত করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কাস্টমস হাউসের কমিশনার মোবারা খানম বলেন, সর্বোচ্চ যাত্রীসেবা নিশ্চিতে কাজ করছে ঢাকা কাস্টমস হাউস। যাত্রীসেবায় ন্যূনতম গাফিলতি বরদাশত করা হচ্ছে না। এরই অংশ হিসেবে যাত্রী হয়রানির কারণে তিন কর্মকর্তাকে সদর দপ্তরে সংযুক্ত করে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রবাসীরা যাতে সর্বোচ্চ সেবা পান, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।
শাপলা প্রতীকের দাবিতে অনড় অবস্থান জানিয়ে আসছিল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে ইসির প্রতীক তালিকায় না থাকায় এই প্রতীক দেওয়া যাবে না বলে এত দিন বলে আসছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল বৃহস্পতিবার ইসির নতুন যে প্রতীক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে ‘শাপলা কলি’ যুক্ত করা হয়েছে।
গতকাল নির্বাচন কমিশনের সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য প্রতীকের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে শাপলা কলিসহ বেশ কিছু প্রতীক সংযোজন ও বিয়োজন করা হয়েছে।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর ১১৫টি প্রতীক সংরক্ষণ করে সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল নির্বাচন কমিশন। সেখানে শাপলা কলি ছিল না।
গত বছর আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা ছাত্র–তরুণদের উদ্যোগে গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কয়েক মাস আগে ইসির পর্যালোচনায় নিবন্ধনযোগ্য দল বিবেচিত হয়। এর পর থেকে এনসিপিকে শাপলা প্রতীক বরাদ্দের দাবি জানিয়ে আসছিলেন দলটির নেতারা।
এ বিষয়ে অপরাগতা জানিয়ে আসছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীনসহ নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। সর্বশেষ ২৩ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘এনসিপি শাপলা প্রতীক পাচ্ছে না, কারণ হচ্ছে যে আমাদের ১১৫টার যে শিডিউলটা করা হয়েছে, সেখানে শাপলা প্রতীক নেই।’
তবে গত সোমবার এনসিপিকে শাপলা প্রতীক না দেওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই মন্তব্য করে দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছিলেন, ‘যেহেতু আইনগত বাধা নেই, আমরা আমাদের জায়গা থেকে শাপলা আদায় করে নেব।’
গতকাল প্রকাশিত ইসির নতুন প্রতীকের তালিকায় ‘শাপলা কলি’ প্রতীক যুক্ত করা হলো।
ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের দুর্যোগপ্রবণ জেলাগুলোর ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ বড় ধরনের খাদ্যসংকটে পড়তে যাচ্ছে। আর চরম অপুষ্টির সম্মুখীন হতে যাচ্ছে ১৬ লাখ শিশু। রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ দেশের ৩৬ জেলার ৯ কোটি ৬৬ লাখের বেশি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি অবস্থা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য প্রকাশ করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিট (এফপিএমইউ) ও জাতিসংঘের তিন সংস্থা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছরের প্রথম চার মাসের তুলনায় বছরের শেষ আট মাসে খাদ্যসংকটে থাকা মানুষের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে সার্বিকভাবে গত বছরের তুলনায় এ বছর খাদ্যসংকটে থাকা মানুষের সংখ্যা কমেছে।
গত বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে চীন–মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) যৌথভাবে ‘ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন’ (আইপিসি) (সমন্বিত খাদ্যনিরাপত্তা ধাপের শ্রেণিবিন্যাস) প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
খাদ্যঘাটতি, অপুষ্টি ও ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে মূল্যায়ন করা হয়েছে পাঁচটি ফেজ বা ধাপে। ধাপ ১: সর্বনিম্ন বা স্বাভাবিক, ধাপ ২: চাপে থাকা, ধাপ ৩: সংকটে থাকা, ধাপ ৪: জরুরি অবস্থা এবং ধাপ ৫: দুর্ভিক্ষ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাসুদুল হাসান বলেন, ‘আইপিসি প্রতিবেদনের সঙ্গে আমরা দ্বিমত পোষণ করছি না। সমস্যা রয়েছে। বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা কমানো হচ্ছে।’ তিনি বলেন, মে থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে বিশ্লেষণ করা জেলার ১৭ শতাংশ মানুষ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকিতে থাকতে পারে। যে প্রাথমিক কারণগুলো এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক মন্দা, জলবায়ু বিপর্যয়, তহবিলের অভাব, অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা এবং খাদ্যবৈচিত্র্যের অভাব।
প্রতিবেদনে পরিস্থিতি মোকাবিলায় জীবন রক্ষাকারী মানবিক সহায়তা ও খাদ্যনিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়া, পুষ্টিসেবা ও নজরদারি বাড়ানো, কৃষি ও মৎস্য খাতে সহায়তা বাড়ানো এবং পরিস্থিতি সব সময় পর্যবেক্ষণে রাখার সুপারিশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে আইপিসি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন এফএও এবং ডব্লিউএফপির ফুড সিকিউরিটি ক্লাস্টার বাংলাদেশের সমন্বয়কারী মো. মঈনুল হোসেন রনি এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশের নিউট্রিশন ক্লাস্টার সমন্বয়কারী মোহাম্মদ রুহুল আমিন। আইপিসির গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের পরিচালক (মানবকল্যাণ) মোস্তাক হোসেন।
‘আইপিসি অ্যানালাইসিস রিপোর্ট অন দ্য অ্যাকিউট ফুড ইনসিকিউরিটি সিচুয়েশন, বাংলাদেশ’ (বাংলাদেশে তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতাবিষয়ক বিশ্লেষণ প্রতিবেদন) শিরোনামে গতকাল প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩৬ জেলায় বসবাসরত ৯ কোটি ৬৬ লাখের বেশি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এ বছর কোনো জেলায় ধাপ–৫ অর্থাৎ দুর্ভিক্ষ দেখা যায়নি, দেখা যাওয়ার আশঙ্কাও নেই।
জানুয়ারি থেকে এপ্রিলে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ধাপ–৪ বা জরুরি অবস্থাতেও ছিল না কোনো জেলার জনগোষ্ঠী। তবে ডিসেম্বরের মধ্যে কক্সবাজার ও ভাসানচরে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় জরুরি অবস্থা দেখা দিতে পারে। এ সংখ্যা ৩ লাখ ৬০ হাজারের বেশি হতে পারে।
প্রতিবেদনে এ বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত এবং মে থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির তথ্য আলাদাভাবে তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারি থেকে এপ্রিলে ৩৬টি জেলার মধ্যে ১৬টি জেলার (রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীসহ) ১ কোটি ৫৫ লাখ মানুষ খাদ্যসংকট বা ধাপ ৩–এ ছিল। আর মে থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ১৩টি জেলার ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ খাদ্যসংকট বা ধাপ–৩ এর সম্মুখীন হচ্ছে। জেলাগুলো হচ্ছে বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বান্দরবান, রাঙামাটি, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, সুনামগঞ্জ ও কক্সবাজার।
কক্সবাজারের যে অংশে রোহিঙ্গা শিবির রয়েছে ও যে অংশে শিবির নেই—দুই এলাকার স্থানীয় লোকজনও খাদ্যসংকটে পড়তে যাচ্ছে। জেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি খাদ্যসংকটে পড়তে যাচ্ছে কক্সবাজারের মানুষ, বিশেষ করে উখিয়া ও টেকনাফের জনসাধারণ। এই জেলার ৩০ শতাংশ মানুষ খাদ্যসংকটের সম্মুখীন। কক্সবাজার ও ভাসানচর মিলিয়ে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৪০ শতাংশ ডিসেম্বরের মধ্যে খাদ্যসংকট ও জরুরি অবস্থায় পড়তে যাচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত খাদ্যসংকটে থাকা নোয়াখালী, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেটের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা কিছুটা কমেছে। এ চার জেলা ধাপ–২ এ উন্নীত হয়েছে। অপর দিকে ধাপ ২–এ থাকা বাগেরহাট এবার খাদ্যসংকটের তালিকা অর্থাৎ ধাপ ৩–এ ঢুকেছে।
২০২৪ সালের আইপিসি প্রতিবেদনের সঙ্গে তুলনা করে বলা হয়, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। গত বছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ২৪ শতাংশ খাদ্যসংকট ও ২ শতাংশ জরুরি অবস্থা ছিল।
বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, নদীভাঙনসহ দুর্যোগের কারণে ওই সব জেলায় খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা দেখা দেয় বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
আইপিসি প্রতিবেদনে অপুষ্টির বিষয়ে বলা হয়, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ১৮টি দুর্যোগপ্রবণ জেলার ৬ থেকে ৫৯ মাস বয়সি ১৬ লাখ শিশু তীব্র অপুষ্টির সম্মুখীন হচ্ছে। একই সময়ে ১ লাখ ১৭ হাজার অন্তঃসত্তা ও শিশুকে বুকের দুধ পান করানো মা তীব্র অপুষ্টিতে ভুগতে যাচ্ছে। কক্সবাজার ও ভাসানচরের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৮১ হাজারের বেশি শিশু ও ৫ হাজার মা তীব্র অপুষ্টিতে ভুগতে পারে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন, মন্ত্রণালয় জলবায়ু-সহনশীল ও পরিবেশবান্ধব প্রাণিসম্পদ ও জলজ চাষব্যবস্থা গড়ে তুলতে কাজ করছে, যাতে জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টিনিরাপত্তায় তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখা যায়। তিনি বলেন, ‘আমাদের সম্মিলিতভাবে খাদ্যব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে। স্থল ও জল—দুই উৎস থেকে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্যে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার সক্ষমতা গড়ে তুলতে হবে, যাতে কেউ পিছিয়ে না থাকে।’
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, খাদ্যসংকটের যে তথ্য উঠে এসেছে, তা কারও জন্যই স্বস্তিকর নয়। অপুষ্টিতে আক্রান্ত একটি শিশু স্কুলে যেতে পারবে না, পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারবে না। শিশুদের পুষ্টিতে নজর না দিলে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে শক্ত অবস্থানে দাঁড়াতে পারবে না। এখন শুধু কর্মপরিকল্পনা নিলে হবে না, প্রত্যেককে যার যার জায়গা থেকে দায়িত্ব নিতে হবে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা ও অপুষ্টি কমাতে।
এফএও বাংলাদেশের উপপ্রতিনিধি ডিয়া সানৌ বলেন, যে সংখ্যক মানুষ খাদ্যসংকটে পড়তে যাচ্ছে, সেটা সঠিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মোকাবিলা করা কঠিন নয়। ওই সব জেলার খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার মূল কারণ বের করে সমস্যা সমাধান করতে হবে।
ডব্লিউএফপি বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর সিমোন পার্চমেন্ট বলেন, ৩৬টি দুর্যোগপ্রবণ এলাকার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা দূর করতে দুর্যোগ মোকাবিলায় যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়া, সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ সমন্বিত পরিকল্পনা নেওয়া দরকার।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর (এদেশীয় পরিচালক) তালহা জামাল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিটের (এফপিএমইউ) মহাপরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান।
গণভোট কবে হবে, সে বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা দ্রুতই সিদ্ধান্ত দেবেন বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। গণভোট নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর পাল্টাপাল্টি অবস্থানের মধ্যে একথা বললেন তিনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
গণভোট কবে হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধ তীব্রতম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বলে মন্তব্য করেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, ‘সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে আমরা থাকব। আমরা সহায়তা করার জন্য থাকব। সিদ্ধান্ত এটা কোনো পার্টিকুলার কেউ নেবেন না, এটা আপনারা নিশ্চিত থাকেন। এই সিদ্ধান্ত প্রধান উপদেষ্টা নেবেন।…দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায়–সংক্রান্ত সুপারিশ জমা দিয়েছে। তাতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য গণভোট আয়োজনের সুপারিশ করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে বা নির্বাচনের দিন গণভোট করার কথা বলা হয়েছে সেখানে।
তবে জামায়াতে ইসলামী দাবি করেছে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট করে জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে হবে এবং তার আলোকে জাতীয় নির্বাচন করতে হবে। অপরদিকে বিএনপি বলছে, নির্বাচনের দিনই গণভোট করতে হবে। এর বাইরে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিএনপি। দলটি বলছে, যে জুলাই সনদে রাজনৈতিক দলগুলো স্বাক্ষর করেছিল, তার বাইরে অনেক বিষয় এখানে যুক্ত করা হয়েছে।
জুলাই সনদের বাস্তবায়নের সুপারিশ নিয়ে দলগুলোর এই পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয় কথা বলেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক। দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি এ রকম ভূমিকা নেন, সরকার কী করবে, আমরা ঠিক বুঝতে পারছি না। এত দিন আলোচনার পর যদি ঐকমত্য না আসে, তো আমরা আসলে কীভাবে কী করব, সত্যি আমাদের চিন্তা করতে হচ্ছে।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘২৭০ দিন আলাপ–আলোচনা করার পর রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্যের মধ্যে যে অনৈক্যের সুর দেখা যাচ্ছে, তা হতাশাব্যঞ্জক। এই তীব্র বিরোধের মধ্যে সমঝোতা দলিল পাস করা সরকারের সামনে একটা চ্যালেঞ্জ এনে দিয়েছে।’
আসিফ নজরুল বলেন, দলগুলোকে এতো আলোচনার সময় দেওয়া হয়েছে। এরপরও তারা যেই অনৈক্য দেখাচ্ছে তাতে জুলাইয়ের স্পিরিটকে (চেতনা) তারা কোথায় নিয়ে গেছে, এটা তাদের বিবেচনা করা উচিত। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি এককভাবে তাদের অবস্থান নেওয়ার জন্য সরকারকে জোর করে, তার মানে হচ্ছে তাদের মধ্যে ঐকমত্য নাই। তারা চাচ্ছে, সরকার যেন তাদের দলীয় অবস্থান নেয়।
জুলাই সনদ নিয়ে অনৈক্যের প্রভাব জাতীয় নির্বাচনে পড়বে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘যে যেটা বলুক, আমরা ফেব্রুয়ারি প্রথমার্থে জাতীয় নির্বাচন করব।…ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’
এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক আসিফ নজরুল আরও বলেন, নির্বাচিত সংসদের সংস্কার করার কোনো দায়–দায়িত্ব থাকবে না, সব অন্তর্বর্তী সরকারকে করে যেতে হবে এতো কোনো বেদবাক্য নয়। সরকার যতটুকু পারে করবে। সম্ভব হলে সবই করবে। তবে তাতে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য লাগবে।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারির এখতিয়ার সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট অনুষ্ঠান অপ্রয়োজনীয়, অযৌক্তিক ও অবিবেচনাপ্রসূত।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত দলটির স্থায়ী কমিটির এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এ কথাগুলো বলেন।
গত বুধবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে গতকাল এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এ সন্নিবেশিত সংবিধান সংশোধন-সংক্রান্ত বিষয়গুলো কার্যকর করার উদ্দেশে সরকার ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ ২০২৫’ শিরোনামে একটি আদেশ জারি করবে। এরূপ প্রস্তাবিত আদেশের একটি খসড়া সংযুক্তি-২ ও সংযুক্তি-৩-এ সংযোজিত করা হয়েছে। সরকারের এ রকম আদেশ জারি করার এখতিয়ার নেই। সংবিধানের ১৫২ নম্বর অনুচ্ছেদের সংজ্ঞা অনুসারে ‘আদেশ’ আইনের মর্যাদাপ্রাপ্ত। অতএব তা জারি করা রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার।
জুলাই সনদের সুপারিশে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত, ভিন্নমত, নোট অব ডিসেন্ট উল্লেখ করা হয়নি বলে উল্লেখ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, অর্থাৎ ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব ও সুপারিশ একপেশে। জবরদস্তিমূলকভাবে তা জাতির ওপরে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তাহলে এটাই প্রতীয়মান হয় যে দীর্ঘ প্রায় এক বছরব্যাপী সংস্কার কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর ধারাবাহিক আলোচনা ছিল অর্থহীন। অর্থ ও সময়ের অপচয়, প্রহসনমূলক ও জাতির সঙ্গে প্রতারণা।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমত থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। সে কারণে সংলাপের প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল। কিন্তু ঐকমত্য কমিশন ভিন্নমত পোষণে রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক অধিকারকে আমলেই নেয়নি। এই বাস্তবায়ন আদেশে (সুপারিশ) বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিগণের সমন্বয়ে জাতীয় সংসদ গঠিত হওয়ার পাশাপাশি একই সঙ্গে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে। তারা আলাদাভাবে সংসদ সদস্য ও সংবিধান সংস্কার পরিষদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন। অর্থাৎ নির্বাচিত জাতীয় সংসদ একই সঙ্গে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে অভিহিত হবে। প্রশ্ন হলো, নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিকভাবে জাতীয় সংসদ ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত। সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনের লক্ষ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত নয়। ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনায় সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনের বিষয়টি এজেন্ডাভুক্ত ছিল না। আলোচনার জন্য উপস্থাপিত হয়নি। সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনের বিষয়ে কোনো ঐকমত্য হওয়ার অবকাশও ছিল না। এ–জাতীয় কোনো সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন করতে হলে তা–ও পরবর্তী জাতীয় সংসদে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বলা হয়েছে, ওই বাস্তবায়ন আদেশ অনুসারে অনুষ্ঠিত গণভোটে যদি ইতিবাচক সম্মতি পাওয়া যায়, তাহলে সংবিধান সংস্কার বিলটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ তার দায়িত্ব পালনে সহায়ক হিসেবে বিবেচনা করবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠান হওয়ার আগে এ ধরনের আগাম পদক্ষেপ আদৌ গ্রহণযোগ্য নয়।
গণভোট প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে প্রস্তাবিত গণভোট অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। সময় স্বল্পতা ও নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিপুল অঙ্কের ব্যয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ ব্যাপক লোকবল নিয়োগসহ একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মতো বিশাল আয়োজন বিবেচনায় নির্বাচনের আগে গণভোট অনুষ্ঠান অপ্রয়োজনীয়, অযৌক্তিক ও অবিবেচনাপ্রসূত। একই আয়োজনে ও একই ব্যয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠান করা বাঞ্ছনীয়।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এ উল্লেখিত যেসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য আইন, বিধিবিধান পরিবর্তন বা সংশোধন দরকার, সরকার তা অধ্যাদেশ জারি ও বিধিবিধান/সংশোধন করে বাস্তবায়ন করতে পারে। যেসব সিদ্ধান্ত নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়নযোগ্য, সেগুলো অবিলম্বে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করতে পারে। এই প্রস্তাবের সঙ্গে বিএনপিসহ প্রায় সব রাজনৈতিক দল ঐকমত্য পোষণ করেছে। এ ছাড়া জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আইনি ভিত্তি দেওয়ার জন্য তারা গণভোটে সম্মত হয়েছেন। যেসব বিষয়ে ভিন্নমত/নোট অব ডিসেন্টসহ ঐকমত্য হয়েছে, তার উল্লেখ না রেখে এবং দীর্ঘ আলোচনায় যেসব প্রসঙ্গ আলোচনায় আসেনি, তা অন্তর্ভুক্ত করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের অন্য সব সুপারিশ অগ্রহণযোগ্য বিধায় তারা একমত হতে পারছেন না।
লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দীর্ঘ ধারাবাহিক আলোচনায় কিছু কিছু বিষয়ে কিছু কিছু রাজনৈতিক দলের ভিন্নমত/নোট অব ডিসেন্ট সহকারে ঐকমত্য হয়েছে। জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ যেভাবে প্রণীত হয়েছে, তাতে নোট অব ডিসেন্টের অংশে এই বক্তব্য স্পষ্ট উল্লেখ আছে যে ভিন্নমত/নোট অব ডিসেন্ট প্রদানকারী কোনো রাজনৈতিক দল বা জোট তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে তা উল্লেখ করে যদি জনগণের ম্যান্ডেট লাভ করে, তাহলে তারা সে মতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। ১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এক ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তারা কেবল আলোচনার মাধ্যমে প্রণীত সনদের অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করেছেন। কিন্তু সেদিন জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত কপি তাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়নি। পরবর্তী সময় মুদ্রিত পুস্তক হিসেবে জুলাই জাতীয় সনদের কপি তারা হাতে পাওয়ার পর দৃষ্টিগোচর হয়েছে যে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সম্মত কয়েকটি দফা তাদের অগোচরে আবার সংশোধন করা হয়েছে। যেমন শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিসে টাঙানো-সংক্রান্ত বিধান বিলুপ্ত করার বিষয়টি সনদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। যদিও প্রায় সব রাজনৈতিক দল এ ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে। সংবিধানের ১৫০ (২) অনুচ্ছেদ (পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম তফসিল) পুরোপুরি বিলুপ্ত করার বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবের বিষয়ে প্রায় সব রাজনৈতিক দল সম্মতি প্রকাশ করেছে। কিন্তু অগোচরে সেটা চূড়ান্ত সনদে সংশোধনী আনা হয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এর বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ ২৮ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে পেশ করা হয়েছে। পেশ করা চিঠিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টাও একজন দস্তখতকারী। এতে ঐকমত্য কমিশন ও সরকার একই অঙ্গ হিসেবে প্রতীয়মান হয়। এই পত্রে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এ সংবিধান সংস্কারসংক্রান্ত বিষয়গুলো দুটি বিকল্প পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের ও আইনগত ভিত্তি প্রদানের জন্য সরকারের কাছে পেশ করা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করছি যে এই সব সুপারিশ কেবল জাতিকে বিভক্ত করবে, ঐক্যের বদলে অনৈক্য সৃষ্টি করবে। মনগড়া যেকোনো সংস্কার প্রস্তাব গ্রহণ করলে জাতীয় জীবনে দীর্ঘ মেয়াদে অকল্যাণ ডেকে নিয়ে আসতে পারে।’
দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনসহ ২০২৪ সালের ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের পটভূমিতে জাতির প্রত্যাশা পূরণে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখা সবার কাম্য বলে উল্লেখ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানতম লক্ষ্য হবে, একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা। এর মাধ্যমে একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা। আর নির্বাচিত জাতীয় সংসদকে প্রকৃত অর্থে জাতীয় জীবনের সব কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে পরিণত করা।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে নজরুল ইসলাম খান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সেলিম রহমান ও সালাউদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন এখন সরগরম হয়ে উঠেছে। অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছে।
রাজধানী থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যন্ত নির্বাচনযন্ত্র সচল রাখতে যে বিশাল প্রশাসনিক কাঠামো প্রয়োজন, তা এখন শেষ পর্যায়ে। কমিশনের ভাষায়-‘ভোটের সব আয়োজন সম্পন্ন, এখন শুধু জনগণের অংশগ্রহণের অপেক্ষা।’
ইসির সূত্রে জানা গেছে, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের প্রাথমিক সময়সূচি নির্ধারিত রয়েছে। ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ, আসন সীমানা পুনর্বিন্যাস, নির্র্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, নির্বাচনী বিধান সংশোধনসহ প্রায় সব প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার আজ জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে বলেন, ‘আমরা একটি উৎসবমুখর, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। এজন্য যেকোনো প্রশাসনিক, প্রযুক্তিগত বা আইনগত প্রস্তুতির ঘাটতি যেন না থাকে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করছি।’
তিনি জানান, ভোটার তালিকা ও কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডার হালনাগাদের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এ বছর প্রায় ২৫ লাখ নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে নারী ভোটার ৫২ শতাংশ।
কমিশনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৬৩ লাখ ৭ হাজার ৫০৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪১ লাখ ৪৫৫ জন, নারী ভোটার ৬ কোটি ২২ লাখ ৫ হাজার ৮১৯ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ১ হাজার ২৩০ জন। সারাদেশে ভোট গ্রহণের জন্য ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্র এবং ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯টি ভোটকক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে। পুরুষদের জন্য ১ লাখ ১৫ হাজার ১৩৭টি এবং নারীদের জন্য ১ লাখ ২৯ হাজার ৬০২টি ভোটকক্ষ রাখা হয়েছে।
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ শেষ। রাজনৈতিক দল ও পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন চূড়ান্ত হলেই শতভাগ প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে।’
তিনি জানান, কমিশনের কাজ সময়মতো শেষ করতে ১৮টি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি টাস্কফোর্স নির্দিষ্ট দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে। যেমন- কোনোটি লজিস্টিক, কোনোটি আইটি বা নিরাপত্তা বিষয়ক।
প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আচরণবিধি সংশোধন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) হালনাগাদ, নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনাও প্রায় সম্পন্ন। সংশোধিত আরপিও-২০২৫ অনুযায়ী, এবার ‘না ভোট’ পুনর্বহাল করা হয়েছে, ইভিএম ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা বাতিল হয়েছে এবং প্রার্থীর সম্পদ, আয় ও কর সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া অনুদানে ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার বাধ্যতামূলক, পলাতক আসামিদের প্রার্থিতা নিষিদ্ধ এবং নির্বাচনী জামানত ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন বলছে, এই সংস্কারগুলো নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াবে।
ইসি সচিব বলেন, ‘ভোট শুধু সংখ্যার হিসাব নয়, এটি আস্থার বিষয়। সেই আস্থা ফিরিয়ে আনাই এখন আমাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।’
নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায়ও জোর দিয়েছে কমিশন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে একাধিক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ভোটের আগে তিন দিন, ভোটের দিন এবং ভোটের পর চার দিনসহ মোট আট দিন মাঠে থাকবে বাহিনী। এতে প্রায় দেড় লাখ পুলিশ, এক লাখ সেনাসদস্য এবং আনসার-ভিডিপির সাড়ে পাঁচ লাখেরও বেশি সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
ইসি জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ ও আচরণবিধি তৈরি করা হয়েছে যাতে তারা ভোটের সময় নিরপেক্ষ ও পেশাদার ভূমিকা রাখতে পারেন।
এছাড়া নির্বাচনকালীন ডিজিটাল নিরাপত্তা রক্ষায় প্রথমবারের মতো ‘মিসইনফরমেশন মনিটরিং সেল’ গঠনের ঘোষণা দিয়েছে কমিশন। এই সেল ভুয়া তথ্য, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নির্ভর বিভ্রান্তিকর প্রচারণা এবং অনলাইন গুজব পর্যবেক্ষণ করবে। এ বিষয়ে এনটিএমসি, বিটিআরসি, বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আইসিটি বিভাগের সহযোগিতায় একটি সমন্বিত ড্যাশবোর্ড তৈরি হচ্ছে।
প্রবাসী ভোটারদের জন্যও এবার বড় উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বিদেশে অবস্থানরত ভোটাররা ডাকে ভোট দিতে পারবেন।
কমিশন জানিয়েছে, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ ১১টি দেশে ইতোমধ্যে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন শুরু হয়েছে। আগামী বছর আরও আটটি দেশে এই সুযোগ সম্প্রসারিত হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা টিকিয়ে রাখতে এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহিতুল হক বলেন, ‘নির্বাচনের আগে কমিশনের স্বচ্ছতা ও দৃঢ় মনোভাবই জনগণের আস্থা ফেরানোর প্রথম ধাপ। যদি নির্বাচন কমিশন প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে, তাহলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব।’
ভোটের প্রযুক্তিগত দিকেও নতুনত্ব আনছে ইসি। ভোটার ডেটাবেইস ও কেন্দ্রীয় সার্ভারে নিরাপত্তা বাড়াতে সাইবার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আপগ্রেড করা হয়েছে। এবার প্রথমবারের মতো ভোটের দিন জেলা পর্যায়ের কন্ট্রোল রুম থেকে প্রতিটি কেন্দ্রে রিয়েল-টাইম আপডেট মনিটর করা হবে ।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘এবার আমরা একেবারে প্রক্রিয়াগত ব্যর্থতা শূন্যে নামিয়ে আনতে চাই। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের ডিজিটালি হিসাব থাকবে, যা সরাসরি কমিশনে রিপোর্ট হবে।’
নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যেই মাঠে নেমেছে রাজনৈতিক দলগুলো। শীর্ষ তিনটি দল প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ইসি বলছে, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, প্রতীক বরাদ্দের কাজ নভেম্বরেই শেষ হবে। প্রার্থীদের হলফনামা যাচাইয়ের জন্য একটি বিশেষ সেল গঠন করা হয়েছে, যা এনবিআর ও দুর্নীতি দমন কমিশনের তথ্য যাচাই করবে।
ইসি বলছে, নির্বাচন শুধু প্রশাসনিক আয়োজন নয়, এটি দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের উৎসব।
নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘জনগণ যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে পারেন, তবেই নির্বাচনের সাফল্য সেখানেই। আমরা চাই, প্রতিটি ভোটার যেন নিরাপদে ও আনন্দের সঙ্গে ভোট দিতে পারেন।’
জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে গ্রামীণ পর্যায়ে গণসচেতনতামূলক প্রচারণা শুরু হয়েছে। রেডিও, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ইউনিয়ন পরিষদ পর্যায়ে পোস্টার, ব্যানার ও শর্ট ভিডিওর মাধ্যমে ভোটারদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য ও প্রচার বিভাগ জানায়, এবার ভোটার সচেতনতা কর্মসূচিতে বিশেষভাবে নারী ও তরুণ ভোটারদের টার্গেট করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা চাই, ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী তরুণদের সক্রিয় ভোটার হিসেবে দেখতে। তাদের অংশগ্রহণ বাড়লেই নির্বাচনে প্রাণ ফিরে আসবে।’
সব মিলিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন, প্রশাসন ও সাধারণ জনগণের চোখ এখন এক জায়গায়- কেমন হয় আসন্ন জাতীয় নির্বাচন। ইসি বলছে, তাদের প্রস্তুতি শতভাগ, আর বাকিটা দেশের জনগণের হাতে।
নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকারের ভাষায়, ‘এই নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের আরেকটি মাইলফলক হবে। আমরা বিশ্বাস করি, জনগণই এবার প্রকৃত বিজয়ী হবে।’ সূত্র: বাসস
‘মথ’ নামের এক ধরনের ডালে ক্ষতিকর রঙ মিশিয়ে তা ‘মুগ’ ডাল হিসেবে বাজারজাত করা হচ্ছে— এমন তথ্যের ভিত্তিতে সতর্ক করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ)।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বিএফএসএ জানায়, ’মথ’ ডাল নামক ডালের সঙ্গে হলুদ রঙ মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বাজারে বিক্রির প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। এই রঙ খাদ্যে ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত নয় এবং এটি মানবদেহের জন্য বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।”
সংস্থাটি জানায়, গত অর্থবছরে দেশে মুগ ডালের তুলনায় দ্বিগুণ পরিমাণ মথ ডাল আমদানি করা হয়েছে। কিন্তু বাজারে ‘মথ ডাল’ নামে কোনো পণ্য দেখা যায়নি। বরং স্থানীয় বাজার থেকে সংগৃহীত ‘মুগ ডাল’-এর নমুনার অর্ধেকের বেশি রঙ মিশ্রিত পাওয়া গেছে।
বিএফএসএ আরও জানায়, অননুমোদিতভাবে কোনো রঙ খাদ্যে ব্যবহার, সংযোজন, আমদানি, প্রক্রিয়াকরণ, মজুদ, সরবরাহ বা বিক্রয় করা নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩-এর ২৭ ধারার অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের রঙযুক্ত ডাল আমদানি, প্রক্রিয়াকরণ, মজুদ, সরবরাহ ও বিক্রি থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে সাধারণ ক্রেতাদেরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে মুগ ডাল কেনার সময় এর বিশুদ্ধতা যাচাই করতে এবং সন্দেহজনকভাবে উজ্জ্বল রঙ বা অস্বাভাবিক আভাযুক্ত ডাল না কেনার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। দীর্ঘদিনের অবরোধে বিপর্যস্ত এখানকার জীবনযাপন। ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন হামলা ও গুলি এড়িয়ে বেঁচে থাকাই যেখানে বড় চ্যালেঞ্জ, সেখানে পুষ্টিকর খাবারের দেখা পাওয়া যেন এক স্বপ্নের মতো।
ইসরায়েল যুদ্ধ চলাকালীন মানবিক সহায়তা গাজায় প্রবেশে বাধা দেয়। এমনকি ফিলিস্তিনি জেলেদের সাগরে মাছ ধরাও নিষিদ্ধ ছিল। ফলে সাধারণ মানুষ চরম খাদ্যসংকটে পড়েছিল।
গত ১০ অক্টোবর মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর কিছুটা স্বস্তি ফেরে গাজায়। খুলতে শুরু করে হাটবাজার, শিশুরা দীর্ঘদিন পর মুখ দেখে পুষ্টিকর খাবারের।
এমন এক সময়ে এক ফিলিস্তিনি বাবা দীর্ঘ এক বছর পর সন্তানদের জন্য মুরগির মাংস কিনে আনেন। মুরগি দেখে ঘরে থাকা একটি শিশু আনন্দে সিজদায় লুটিয়ে পড়ে। ধ্বংসস্তূপের মাঝে বসে থাকা তিন শিশুর উচ্ছ্বাসে ভরে ওঠে ছোট্ট ঘরটি।
ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। আলজাজিরা জানায়, শিশুরা মুরগি দেখে “আল্লাহু আকবর” বলে চিৎকার করে এবং বলে, “আল্লাহ মহান, সত্যিই মুরগি!”
অন্য এক ভিডিওতে দেখা যায়, একটি শিশুকে আপেলের নাম জিজ্ঞেস করলে সে ভুল করে “তরমুজ” বলে—যুদ্ধের ভয়াবহতায় যেখানে ফলের নামও ভুলে গেছে শিশুরা।
গাজায় চলমান দুই বছরের যুদ্ধের কারণে লাখ লাখ মানুষ ভয়াবহ খাদ্যসংকটে ভুগছে। অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়ে শত শত শিশু মারা গেছে। কেউ কেউ বেঁচে থাকার জন্য ঘাস ও লতা-পাতা খেয়ে দিন কাটাচ্ছে।
বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা বলছে, ইসরায়েলি হামলার কারণে গাজা এখন এক নিঃস্ব ভূমি—স্কুল, মসজিদ, হাসপাতাল, বাজার, এমনকি শরণার্থী শিবিরও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। পুষ্টিকর খাবার আজ ফিলিস্তিনিদের কাছে বিলাসিতা।
আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে দেশের মোবাইল নেটওয়ার্কে আর কাজ করবে না অবৈধ বা আনঅফিসিয়াল পথে আসা কোনো মোবাইল হ্যান্ডসেট। সেদিন থেকেই চালু হতে যাচ্ছে জাতীয় পর্যায়ের ‘ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর)’ সিস্টেম, যার মাধ্যমে দেশের সব বৈধ মোবাইল ফোনের আইএমইআই নম্বর যুক্ত হবে একটি কেন্দ্রীয় ডেটাবেইজে।
এই সিস্টেম চালু হলে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া আমদানি করা কিংবা বিদেশ থেকে আনা ও উপহার পাওয়া মোবাইল সেট বাংলাদেশে নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে না। বৈধভাবে ব্যবহার করতে হলে সেসব ফোনের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) জানিয়েছে, ১৬ ডিসেম্বরের পর নতুন যেসব হ্যান্ডসেট নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে, সেগুলো প্রথমে অস্থায়ীভাবে সক্রিয় থাকবে। এরপর এনইআইআর সিস্টেমের মাধ্যমে বৈধতা যাচাই করা হবে। ফোন বৈধ হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত থাকবে, আর অবৈধ ফোন এক মাস পর নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
তবে বর্তমানে নেটওয়ার্কে সচল সব বৈধ বা অবৈধ হ্যান্ডসেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হবে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে।
বিটিআরসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে চোরাই ও আনঅফিসিয়াল পথে আমদানিকৃত মোবাইল সেট ব্যবহারের প্রবণতা বেড়ে গেছে। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে, পাশাপাশি অপরাধীরাও এসব ফোন ব্যবহার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে যাচ্ছে।
এই সমস্যা মোকাবিলায় এবং নেটওয়ার্ককে নিরাপদ রাখতে এনইআইআর সিস্টেম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আমিনুল হক বলেন, “এই সিস্টেমের মাধ্যমে অবৈধ ও চোরাই হ্যান্ডসেটের ব্যবহার বন্ধ হবে। পাশাপাশি স্থানীয় মোবাইল শিল্প সুরক্ষা পাবে এবং সরকারের রাজস্ব ক্ষতি বন্ধ হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এনইআইআর কার্যকর হলে ফোন ক্লোনিং ও সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে বড় অগ্রগতি হবে। এতে টেলিযোগাযোগ সেবার মানও উন্নত হবে।”
গ্রাহকের ফোন বৈধ কিনা— জানবেন তিন ধাপে
১. *১৬১৬১# নম্বরে ডায়াল করুন।
২. ফোনের ১৫ ডিজিটের IMEI নম্বর লিখে পাঠান।
৩. ফিরতি এসএমএসে জানানো হবে সেটটির নিবন্ধন অবস্থা।
এছাড়া neir.btrc.gov.bd ওয়েবসাইটেও হ্যান্ডসেটের বৈধতা যাচাই করা যাবে।
বিদেশ থেকে আনা ফোন নিবন্ধনের নিয়ম
বিদেশ থেকে কেনা বা উপহার পাওয়া হ্যান্ডসেট নেটওয়ার্কে সচল রাখতে ৩০ দিনের মধ্যে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। এজন্য গ্রাহককে neir.btrc.gov.bd পোর্টালে গিয়ে ‘Special Registration’ সেকশনে IMEI নম্বর, পাসপোর্ট, ভিসা, ক্রয় রশিদ বা কাস্টমস কাগজপত্র আপলোড করতে হবে।
নতুন ফোন কেনার আগে করণীয়
১৬ ডিসেম্বরের পর নতুন ফোন কেনার আগে গ্রাহকরা ফোনের বৈধতা যাচাই করতে পারবেন। এজন্য মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে লিখতে হবে—
KYD <space> 15 digit IMEI,
এবং পাঠাতে হবে ১৬০০২ নম্বরে। ফিরতি মেসেজে জানানো হবে ফোনটি বৈধ কিনা।
বৈধ ফোন হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে এনইআইআর সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়ে যাবে।
চুরি বা হারানো ফোন সহজে ব্লক ও আনলক
নতুন সিস্টেমে গ্রাহকের ফোন চুরি হলে বা হারালে সহজে সেটটি ব্লক করা যাবে। এজন্য neir.btrc.gov.bd ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপ, অপারেটরের কাস্টমার কেয়ার বা *USSD চ্যানেল (১৬১৬১#) ব্যবহার করা যাবে।
ইন্টারনেট না থাকলেও অপারেটরের ১২১ নম্বরে কল করে সেবা নেওয়া সম্ভব হবে।
৫০০ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি রোধ হবে
বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর বিটিআরসি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “অবৈধ হ্যান্ডসেটের কারণে প্রতি বছর প্রায় ৫০০ কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এনইআইআর চালুর মাধ্যমে এই ক্ষতি রোধ করা যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “২০২৪ সালে দেশের ৭৩ শতাংশ ডিজিটাল জালিয়াতি সংঘটিত হয়েছে অবৈধ ডিভাইস ও সিম ব্যবহার করে। নতুন সিস্টেম চালু হলে প্রতারণা ও সাইবার অপরাধ অনেকাংশে কমে আসবে।”
স্থানীয় শিল্পে গতি ও প্রতিযোগিতা বাড়বে
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী বলেন, “এনইআইআর চালু হলে দেশীয় ১৮টি হ্যান্ডসেট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে পণ্য সরবরাহ করতে পারবে।”
তিনি জানান, দেশে এখনও ৩৮ শতাংশ ফিচার ফোন ব্যবহার হচ্ছে, তাই স্মার্টফোন ব্যবহারের হার বাড়াতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে।
সরকার ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এনইআইআর চালু হলে টেলিযোগাযোগ খাতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। এর মাধ্যমে অবৈধ ফোনের ব্যবহার বন্ধ হয়ে রাজস্ব বাড়বে, নিরাপত্তা জোরদার হবে এবং দেশীয় মোবাইল শিল্প পাবে নতুন গতি।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের চূড়ান্ত সুপারিশে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বাদ দিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রতারণা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অবিলম্বে ওই সুপারিশ সংশোধনেরও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক এহসান মাহমুদের ‘বিচার সংস্কার নির্বাচন: অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বাংলাদেশ’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, এত বড় একটা অভ্যুত্থান, এত ত্যাগের বিনিময়ে, এত প্রাণের বিনিময়ে সেটাকে ঠিকভাবে জাতির কল্যাণে কাজে লাগানো যাচ্ছে না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেখা যাচ্ছে, যতই দিন যাচ্ছে, ততই বিভক্ত বাড়ছে। বিভক্ত হয়ে পড়াটা, এটা কারা করছেন, কেন করছেন, এটাও উপলব্ধি করতে হবে। মিডিয়াতে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে কতগুলো পক্ষ নিয়ে একেবারে নেমে যাওয়া হয়। প্রতিপক্ষকে একেবারে পুরোপুরি ঘায়েল করে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালানো হয়।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে গত মঙ্গলবার সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, যে বিষয়গুলোতে তারা একমত ছিলেন না, সেখানে তারা নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছিলেন। সেই নোট অব ডিসেন্ট সুপারিশে লিপিবদ্ধ করার একটা প্রতিশ্রুতি ছিল কমিশনের। কিন্তু অবাক হয়ে তারা লক্ষ্য করলেন, সুপারিশে সেই বিষয়গুলো নেই। নোট অব ডিসেন্টগুলো পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে। ইগনোর করা হয়েছে। এটা তো ঐক্য হতে পারে না। তাহলে ঐকমত্য কমিশনটা করা হয়েছিল কেন?
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এটা আমি বলব, জনগণের সঙ্গে এটা একটা প্রতারণা। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এটা প্রতারণা।’
এ মুহূর্তে, এই অন্তর্বর্তীকালের সময়টা ঐক্যের সময় বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, এখানে ন্যূনতম বিষয়গুলোয় একমত হয়ে একটা রাস্তা ধরা, একটা ট্র্যাক ধরা- সেই জায়গাটাকে বিভক্ত করে ফেলা হচ্ছে। কারা করছেন, কেন করছেন, এটা নিশ্চয়ই সবাই উপলব্ধি করতে পারছেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, একটি কথা তারা খুব পরিষ্কারভাবে বলতে চান, যা তারা এর আগেও বলেছেন। তারা মনে করেন, সব সংকটের মূলে যে বিষয়টা আছে, তা হলো, সত্যিকার একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। সে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের যে পার্লামেন্ট তৈরি হবে, সেই পার্লামেন্টে এই সব সমস্যাকে সংবিধানের মধ্যে নিয়ে আসবেন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। সেভাবে দেশ চলবে। তারা সে কারণেই ৫ আগস্টের বিপ্লবের পরেই নির্বাচনের কথা বলেছিলেন। তখন অনেকে বলেছিল, তারা ক্ষমতা চান, সে জন্য অতি দ্রুত নির্বাচন চাচ্ছেন। আজ প্রমাণিত হচ্ছে, এই নির্বাচনটা যত দেরি হচ্ছে, তত বেশি সেই শক্তিগুলো শক্তিশালী হচ্ছে, ফ্যাসিস্ট শক্তিশালী হচ্ছে। যারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল দেখতে চায়, এখানে একটা অরাজকতা তৈরি করতে চায়।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা দৃষ্টি আকর্ষণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনি কিন্তু এইবার জনগণের সামনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, ওয়াদাবদ্ধ। আপনি এখানে সত্যিকার অর্থেই যেটুকু সংস্কার দরকার, সেই সংস্কারগুলো করে আপনি জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন দেবেন। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে পার্লামেন্ট আসবে, সেই পার্লামেন্ট এই দেশের সংকটগুলো সমাধান করবে। সুতরাং আজকে যদি এর থেকে কোনো ব্যত্যয় ঘটে, এর থেকে বাইরে যদি যান, তার দায়দায়িত্ব সম্পূর্ণ আপনাকেই বহন করতে হবে। এ কথাটা আমি খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই।’
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘হঠাৎ করে তারা সুপারিশে দেখলেন, নোট অব ডিসেন্টের উল্লেখ নেই। এটা তো কোনো ঐকমত্য হয়নি। এ প্রশ্নের ব্যাখ্যা নিশ্চয়ই কমিশন দেবে। তারা জুলাই সনদ সই করেছেন। সনদে নোট অব ডিসেন্ট (আপত্তি) লেখা আছে। এটা দলগুলো নিজ নিজ ইশতেহারে দেবে। যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে, ম্যান্ডেট পাবে, সেই দল নিজস্ব প্রস্তাব অনুযায়ী আপত্তির অংশগুলোর মীমাংসা করবে।’
জুলাই সনদের আদেশ জারি প্রসঙ্গে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘অনেকে দাবি তুলছেন যে আদেশ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা আদেশ দেবেন কোনো ক্ষমতাবলে? সরকার আদেশ দেয়, সেটা রাষ্ট্রপতির নামে যায়, এটা যেকোনো রাষ্ট্রের নিয়ম। রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন রাষ্ট্রের প্রতীক। যদি প্রধান উপদেষ্টা নিজে এটা জারি করেন, তার মানে তিনি নিজেকে রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে ঘোষণা করছেন এবং কার্যত সংবিধানকে স্থগিত করছেন।’
জোনায়েদ সাকি সতর্ক করে বলেন, ‘ঐকমত্য ছাড়া কেউ কারও সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিলে তা কার্যকর হবে না। এটা সবার উপলব্ধি করা দরকার।’
প্রকাশনা উৎসবে আরও বক্তব্য দেন চর্চা ডটকমের সম্পাদক সোহরাব হাসান, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, লেখক ও সাংবাদিক শাহ্নাজ মুন্নী।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে বিএনপি হতাশ বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। গতকাল বুধবার রাজধানীর একটি হোটেল এক সেমিনারে এ কথা জানান তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, গত ১৭ তারিখ যে দলিল স্বাক্ষর হয়েছে সেই বিষয়গুলো জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় সম্পর্কিত সুপারিশে পুরোপুরি নাই। বলা হলো ৪৮টা দফার ওপর গণভোট করা হবে। সেই আলাপ তো হয়নি আমাদের সাথে।
এতদিন তাহলে কেন এত আলোচনা, এত কসরত করা হলো প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, যেগুলো ঐকমত্য হবে সেগুলো বাস্তবায়ন হবে এমন প্রস্তাব ছিল। জুলাই সনদ যেটা স্বাক্ষর হয়েছে সেটা নাই, আছে কমিশন ও দুই-একটি দল যে প্রস্তাব দিয়েছে সেগুলো।
কমিশনের উদ্দেশ্য ছিল ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা জানিয়ে বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে এতে জাতিতে বিভক্তি হবে, অনৈক্য হবে, কোনো ঐকমত্য হবে না। তাদের উদ্দেশ্য কী আমরা জানি না। এর মাধ্যমে তারা কী অর্জন করতে চায় আমরা জানি না।
এছাড়া আরপিও ও জোটের প্রতীক ইস্যুতে সরকারের আচরণকে পক্ষপাতমূলক বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জোটবদ্ধ যেকোনো রাজনৈতিক দল তাদের স্বাধীনতা অনুযায়ী নিজস্ব প্রতীকে বা জোটের প্রতীকে নির্বাচন করার সুযোগ পেত। কিন্তু হঠাৎ করে একটি অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বলা হলো-জোটবদ্ধ হলেও তাদের নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে। আরও আশ্চর্যের বিষয়, আরেকটি রাজনৈতিক দল সেটিকে সমর্থন করছে। এটা আমরা আশা করি না।
বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য আরও বলেন, বর্তমান সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা রাখবে, নিরপেক্ষ আচরণ করবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে গভীর হতাশ বলেও জানান তিনি।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া সেন্টমার্টিন দ্বীপে কোনো নৌযান চলাচলের অনুমতি দিতে পারবে না। পর্যটকদের অবশ্যই বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। সেখানে প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস এবং কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে।
দ্বীপে ভ্রমণের সময়সূচি এবং পর্যটক উপস্থিতিও এবার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। নভেম্বর মাসে পর্যটকেরা শুধু দিনের বেলায় ভ্রমণ করতে পারবেন, রাত্রিযাপন করা যাবে না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাত্রিযাপনের অনুমতি থাকবে। ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণ করতে পারবেন না।
সেন্ট মার্টিনের প্রাকৃতিক পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখতে দ্বীপে রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি বা বারবিকিউ পার্টি করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা ক্রয়-বিক্রয়, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুক ও অন্যান্য জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এছাড়া সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ যেকোনো মোটরচালিত যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।
নিষিদ্ধ পলিথিন বহন করা যাবে না এবং একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক, যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, ৫০০ ও ১০০০ মিলি লিটারের প্লাস্টিক বোতল ইত্যাদি বহন নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এই নতুন নির্দেশনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপের নাজুক পরিবেশ ও অনন্য জীববৈচিত্র্য সংরক্ষিত থাকবে এবং দ্বীপটি দায়িত্বশীল ও পরিবেশবান্ধব পর্যটনের উৎকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে উঠবে বলে আশা করছে সরকার।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঘোষণা করা হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরাপদভাবে আয়োজনের জন্য আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্নের নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সংক্রান্ত এক উচ্চ পর্যায়ের সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি। বৈঠকে নির্বাচন কমিশন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। প্রায় ২ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে মূলত চারটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়- নির্বাচনকালীন পদায়ন, ট্রেনিং, নিরাপত্তা ইস্যু এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ডিসইনফরমেশন মনিটরিং।
প্রধান উপদেষ্টা আগামী জাতীয় নির্বাচন বানচালে ভেতরের বা বাইরের যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বলেও জানান প্রেস সচিব।
ছোটখাটো নয়, বড় শক্তি নিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন বানচালের জন্য ভেতর থেকে, বাইরে থেকে অনেক শক্তি কাজ করবে। ছোটখাটো নয়, বড় শক্তি নিয়ে বানচালের চেষ্টা করবে। হঠাৎ করে আক্রমণ চলে আসতে পারে। এই নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে। যত ঝড়ঝঞ্চাই আসুক না কেন, আমাদের সেটা অতিক্রম করতে হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, এই আক্রমণ বলতে শুধু শারীরিক আক্রমণ নয়, বরং সাইবার অ্যাটাক বা সোশ্যাল মিডিয়ায় ডিজ-ইনফরমেশন (অপতথ্য) ছড়ানোকেও বোঝানো হচ্ছে। যারা পতিত স্বৈরাচার এবং তার দোসর, তারা দেশে একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক, তা চাইবে না। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচন সুন্দর ও উৎসবমুখর করতে হলে মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে, নির্বাচনী নীতিমালা, ভোটকেন্দ্রের নিয়ম, কীভাবে ভোট প্রদান করতে হবে, কোথাও বিশৃঙ্খলা হলে কী করতে হবে এসব বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে।’
প্রেস সচিব জানান, নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের বদলি ও পদায়নের বিষয়ে এলাকার গুরুত্ব বিবেচনায় কর্মকর্তাদের দক্ষতা বিবেচনা করে বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় বদলি ও পদায়নের বিষয়ে ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে। এর পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবে এমন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদানও শুরু করেছে।
কর্মকর্তাদের নিজ জেলা ও নিকটবর্তী জেলা এবং আত্মীয় পরিজনের কেউ প্রার্থী হলে সেসব নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখা হবে। আগের তিনটি নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেছেন এমন কর্মকর্তাদের বিরত রাখা হবে। যত দ্রুত সম্ভব পোস্টিং দিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে যাতে করে তারা পর্যাপ্ত সময় পায় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য এবং প্রয়োজনীয় ট্রেনিং শুরু করা যায়।
শফিকুল আলম জানান, ‘আজকের (বুধবার) বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। মিটিংয়ে এআই, ডিসইনফরমেশন, মিসইনফরমেশন নিয়ে দীর্ঘসময় ধরে আলোচনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বৈঠকের একটা বড় কনসার্ন ছিল, সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো অপপ্রচার ছড়িয়ে পড়লে সেটা কীভাবে দ্রুত ডিবাঙ্ক করা যাবে তা নিয়ে। অনেক সময় দেখা যায়, কোনো অপতথ্যকে আইডেন্টিফাই করে সেটা যে ‘অপতথ্য’ এটা প্রচার করতে গিয়ে অনেক সময় লেগে যায়। সেই সময়ের মধ্যে অনেক ক্ষতিও হয়ে যায়। এ জন্য একটি সেন্ট্রাল ডিসইনফরমেশন মনিটরিং সেল ও একটি সেন্ট্রাল কমিউকেশন সেল তৈরির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
শুধু শহর অঞ্চল বা জেলা পর্যায়ে না, গ্রাম পর্যায়েও মানুষের কাছে যেন ফ্যাক্টচেকিং তথ্যগুলো পৌঁছাতে পারে সে বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা গুরুত্ব দিয়েছেন।’
অধ্যাপক ইউনূসের বরাত দিয়ে প্রেস সচিব জানান, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার আসবে। নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য দেশের ভেতর থেকে বাইরে থেকে খুবই পরিকল্পিতভাবে নানা অপপ্রচার চালানো হবে। এআই দিয়ে ছবি-ভিডিও তৈরি করে ছেড়ে দেওয়া হবে। এটাকে সামাল দিতেই হবে। একটা অপপ্রচারের সূচনা হওয়া মাত্রই সেটা ঠেকাতে হবে যেন ছড়াতে না পারে।’
নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রচার-প্রচারণার জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে বলে জানান তিনি।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতিবিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ, আইসিটিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া, নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গণি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ, পিএসও লে. জে. কামরুল হাসান, পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম, ডিজি র্যাব এ কে এম শহিদুর রহমান, ডিজি কোস্ট গার্ড রিয়ার এডমিরাল জিয়াউল হক, ডিজি আনসার মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ এবং গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই, ডিজিএফআই ও এসবির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘আমাদের উন্নয়নের দর্শন বদলাতে হবে। বড় বড় মেগা প্রকল্পে বিপুল অর্থ ব্যয়ের পাশাপাশি নদীভাঙন ও দুর্যোগপ্রবণ এলাকার মানুষের সুরক্ষায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।’
বুধবার রাজধানীর আলোকি-তে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলে।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন হলে প্রতিটি দুর্বল ও প্রান্তিক মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে সুরক্ষিত থাকবে।’
আ্যনুয়াল কমিউনিটি অব প্র্যাকটিসেস (সিওপি) নেটওয়ার্ক কনভেনশন ২০২৫-এমপাওয়ার উইমেন ফর ক্লাইমেট রিসাইলেন্ট সোসাইটিজ (ফেজ-২) শীর্ষক অনুষ্ঠানে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস, সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের সহযোগিতা প্রধান ডিপাক এলমার, জাতিসংঘ নারী সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি গীতাঞ্জলি সিং ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহিন আনাম বক্তব্য রাখেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের নিয়ন্ত্রণে না থাকলেও টিকে থাকার লড়াই আমাদের হাতেই রয়েছে আর এই টিকে থাকার অনুপ্রেরণা পরিবারে সবচেয়ে বেশি দেন নারীরা।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, নারীর অদম্য সাহসেই গড়ে উঠবে জলবায়ু সহনশীল বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের নারীরা ঘরে ও সমাজে প্রতিদিন জলবায়ু সহনশীলতার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। দুর্যোগে, দারিদ্র্যে কিংবা অনিশ্চয়তায় তারা কখনো হার মানেননি।
উপদেষ্টা বলেন, এই নারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় টেকসই পরিবর্তন আনা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অভিযোজন প্রকল্পগুলোকে বড় আকারে সম্প্রসারণ করতে হবে। স্থানীয় নারী উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী প্রচেষ্টাগুলোকেই জাতীয় উন্নয়নের পরিধিতে অন্তর্ভুক্ত করা সময়ের দাবি।
অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ জেলার নারীদের জন্য কাজ করা ১০ জন অদম্য নারীকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। পরে, পরিবেশ উপদেষ্টা জলবায়ু অভিযোজনের বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন। এই জাতীয় কনভেনশনে দেশের ১০০টি নারী-নেতৃত্বাধীন নাগরিক সংগঠন অংশ নেয়।