বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
৯ পৌষ ১৪৩২

ট্রাইব্যুনালে হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার ২৮ অভিযোগ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ২০:৩৭

পদত্যাগের পর দেশত্যাগ করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৮টি অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটিতে তার দল আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ সংগঠনকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, শেখ হাসিনা সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী, পুলিশের তৎকালীন আইজিসহ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কয়েকজন ওসি, পরিদর্শক, এসআই, এএসএসআই, কনস্টেবল, র‌্যাবের তৎকালীন ডিজি, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কয়েকজন নেতার নাম। এমনকি কয়েকজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধেও গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগগুলো তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে।

এর মধ্যে বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কসহ ১০ জনকে নতুন করে তদন্ত সংস্থায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে কোনো বিচারিক প্যানেল না থাকায় এসব অভিযোগের বিচার প্রক্রিয়া তথা আসামি গ্রেপ্তারের কোনো আদেশ নিতে পারছে না প্রসিকিউশন।

আজ বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, আজকের তিনটিসহ ট্রাইব্যুনালে (প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থায়) এ পর্যন্ত ২৮টি অভিযোগ এসেছে। সবগুলোতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নাম রয়েছে। আইনের বিধান অনুযায়ী তদন্ত সংস্থা এবং প্রসিকিউশন পর্যালোচনা করে যাদের মূল আসামি মনে হবে, তাদের নাম ট্রাইব্যুনালে পেশ করা হবে। বাদী পক্ষ যেটা নিয়ে এসেছেন পর্যালোচনা করে তার সাথে সংযোজন বিয়োজন হতেই পারে। ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর যেটা দাখিল করব, সেটাই হবে প্রোপার মামলা। কোর্ট বসামাত্র আমরা এ বিষয়ে যথাযথ আবেদন করব।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যনালে প্রথম অভিযোগটি দায়ের করা হয়েছিল ১৪ আগস্টে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের শহীদ আরিফ আহমেদ সিয়ামের বাবা মো. বুলবুল কবির এ অভিযোগ তদন্ত সংস্থায় দায়ের করেন। আবেদনে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঘটনার তারিখ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া এ সময়ে আহত হয়ে পরবর্তীতে বিভিন্ন তারিখে নিহতরা এর আওতায় থাকবেন। ঘটনার স্থান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সমগ্র বাংলাদেশকে।

অপরাধের ধরনে বলা হয়েছে, আসামিদের নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অন্যান্য আসামিরা দেশীয় এবং আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে তাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দেশে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অপরাধ।

অভিযোগে ব্যক্তি ছাড়াও সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ সংগঠনগুলোর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

সবশেষ বৃহস্পতিবার অভিযোগটি প্রসিকিউশনের কাছে দাখিল করে ৩ আগস্ট উত্তরায় গুলিবিদ্ধ হওয়া ভ্যানচালক জসিম উদ্দিনের পরিবার।


ওসমান হাদির বিষয়ে সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে তদন্ত করছে: প্রেস সচিব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সক্রিয় যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেন। শফিকুল আলম বলেন, দেশের সকল নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থা এই মামলার রহস্য উন্মোচনে সমন্বিতভাবে কাজ করছে। তদন্তে ইতিমধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্র বা ‘ক্লু’ পাওয়া গেছে এবং প্রধান সন্দেহভাজন সরাসরি ধরা না পড়লেও সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকার এই বিচার প্রক্রিয়ায় কোনো শিথিলতা দেখাবে না এবং আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন করা হবে।

ব্রিফিংয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফেরার বিষয়টিকে সরকার স্বাগত জানিয়েছে। প্রেস সচিব বলেন, তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিএনপি এবং সরকারের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। মূলত তাঁর দলই প্রাথমিক নিরাপত্তার বিষয়টি তদারকি করছে, তবে সরকারের কাছে তারা যে ধরনের সহযোগিতা বা সুরক্ষা চেয়েছে, প্রশাসন তা প্রদানে সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নেতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে নির্বিঘ্ন করতে সব ধরনের রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা বজায় থাকবে বলেও তিনি আশ্বস্ত করেন।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ এবং মার্কিন ফরেন কমিটির কথিত চিঠি প্রসঙ্গে শফিকুল আলম সরকারের কঠোর ও স্পষ্ট অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি জানান, মার্কিন কমিটির চিঠিটি তিনি এখনও দেখেননি, তবে আওয়ামী লীগ বিষয়ে সরকারের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। উচ্চ আদালতের আদেশে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বর্তমানে স্থগিত রয়েছে এবং নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে দলটির রাজনৈতিক নিবন্ধন বাতিল করেছে। এই আইনি ও প্রশাসনিক বাস্তবতায় আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। মূলত একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে বলে তিনি ইঙ্গিত দেন।

প্রেস সচিবের এই বক্তব্যের মাধ্যমে এটি স্পষ্ট হয়েছে যে, সরকার একদিকে যেমন সংবেদনশীল হত্যাকাণ্ডগুলোর দ্রুত বিচার নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর, অন্যদিকে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি’র শীর্ষ নেতার প্রত্যাবর্তন এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অংশগ্রহণের বিষয়েও সুনির্দিষ্ট ও আপসহীন পথে হাঁটছে। নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশের সামগ্রিক স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং সংস্কার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়াই বর্তমান প্রশাসনের মূল লক্ষ্য।


নতুন টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশের চূড়ান্ত অনুমোদন: ইন্টারনেট শাটডাউনে আসছে আইনি বাধা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ এক নতুন আধুনিক টেলিযোগাযোগ যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ–২০২৫’-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই অধ্যাদেশটি কার্যকর হলে দেশের বিদ্যমান টেলিযোগাযোগ আইন ও নীতিমালায় আমূল পরিবর্তন আসবে এবং খাতটিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে বলে আশা করছে সরকার।

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই নতুন অধ্যাদেশের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো টেলিযোগাযোগ খাতকে আন্তর্জাতিক মানের সাথে সংগতি রেখে আধুনিকায়ন করা। এতে লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া অনেক বেশি সহজ করা হয়েছে, যা নতুন বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করবে। এ ছাড়াও দেশজুড়ে ৫জি প্রযুক্তি এবং ক্লাউড সেবার প্রসারে এই অধ্যাদেশ বিশেষ ভূমিকা রাখবে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এতে ইন্টারনেট শাটডাউন বা সেবা বন্ধ করার ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে যত্রতত্র ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে নাগরিকদের ভোগান্তিতে ফেলা না হয়। ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি একটি আধুনিক নিয়ন্ত্রক কাঠামো গড়ে তোলাও এই উদ্যোগের একটি বড় অংশ।

উল্লেখ্য যে, এই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশটি চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে তিনবার উপদেষ্টা পরিষদ থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। এর আগে আড়িপাতার ধারা ও অনুমোদন প্রক্রিয়া নিয়ে বিটিআরসি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কিছু আপত্তির কারণে এটি সংশোধনের জন্য পাঠানো হয়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবারের বৈঠকেও কিছু কারিগরি মতামতের প্রয়োজনে এটি পুনরায় পর্যালোচনার জন্য রাখা হয়েছিল। সকল পক্ষ ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মতামতের সমন্বয় ঘটিয়ে অবশেষে আজ সেটিকে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হলো।

বর্তমানে অধ্যাদেশটির খসড়া জনসাধারণের মতামতের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। খাত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও সাধারণ নাগরিকরা মনে করছেন, নতুন এই আইনি কাঠামো বাস্তবায়িত হলে তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার রোধের পাশাপাশি ডিজিটাল সেবার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সক্ষমতা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে। মূলত প্রযুক্তির দ্রুত পরিবর্তনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে একটি যুগোপযোগী ও বৈষম্যহীন টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতেই সরকার এই যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।


আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

আপডেটেড ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৪:২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) নরসিংদী এলাকা থেকে আতাউর রহমান বিক্রমপুরীকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) বিশেষ অনুরোধে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আতাউর রহমান বিক্রমপুরীর বিরুদ্ধে তিন মাসের একটি বিশেষ ডিটেনশন বা আটকাদেশ রয়েছে এবং সেই আদেশ কার্যকর করতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

গ্রেপ্তারের পর আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী আতাউর রহমানকে গাজীপুর মহানগর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর আজ বুধবার সকালে তাঁকে টঙ্গী পূর্ব থানা থেকে কড়া পাহারায় কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় ডিবি পুলিশ তাঁকে আটক করার পর থানায় হস্তান্তর করেছিল। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় আইনি আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লা আল মামুন নিশ্চিত করেছেন যে, আতাউর রহমান বিক্রমপুরীকে বর্তমানে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১-এ রাখা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, একটি সুনির্দিষ্ট আটকাদেশ কার্যকর করার লক্ষ্যেই এই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি কারা কর্তৃপক্ষের নিবিড় তত্ত্বাবধানে রয়েছেন এবং তাঁর বিষয়ে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।


বায়ুদূষণে আবারও বিশ্ব তালিকায় শীর্ষে ঢাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ মহানগরী ঢাকা আজ আবারও বায়ুদূষণের শীর্ষে অবস্থান করছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় রাজধানীর বায়ুমান সূচক বা একিউআই স্কোর রেকর্ড করা হয়েছে ২৩৯। এই মানদণ্ড অনুযায়ী ঢাকার বাতাস বর্তমানে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে, যা নগরবাসীর জনস্বাস্থ্যের জন্য চরম হুমকি স্বরূপ। দূষণের এই আন্তর্জাতিক তালিকায় ঢাকার পরেই অবস্থান করছে কায়রো, তেহরান, দিল্লি ও সারায়েভোর মতো শহরগুলো, তবে সেগুলোর স্কোর ঢাকার চেয়ে বেশ নিচে।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, প্রতি বছর শীতের আগমনের সাথে সাথে অর্থাৎ নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকার বাতাসের গুণমান দ্রুত কমতে থাকে। এর প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে যত্রতত্র নির্মাণাধীন স্থাপনা, সংস্কারহীন ভাঙাচোরা রাস্তা থেকে ওড়া ধুলোবালি, ইটভাটার ধোঁয়া এবং যানবাহনের নির্গত কালো ধোঁয়া। বৃষ্টিহীন শীতের দিনে এসব দূষিত কণা বাতাসের নিম্নস্তরে আটকে থাকে, ফলে দূষণের মাত্রা বহুগুণ বেড়ে যায়। আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, সূচক ১০১ থেকে ১৫০ হলে তা সংবেদনশীল মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়, আর ২০১ পার করলে তা মারাত্মক অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়।

এই ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষজ্ঞরা জরুরি ভিত্তিতে বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন। তাঁরা পরামর্শ দিয়েছেন যে, ধুলোবালি নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত শহরের প্রধান সড়কগুলোতে পানি ছিটানো এবং নির্মাণাধীন এলাকাগুলো যথাযথভাবে ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে। একইসাথে শহরের বায়ুমান উন্নত করতে অযোগ্য ও পুরোনো মোটরযান চলাচল বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি। এমন বিষাক্ত বাতাস শিশু ও বৃদ্ধদের শ্বাসকষ্টসহ দীর্ঘমেয়াদী ফুসফুসের রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে বিধায় নগরবাসীকে সচেতন থাকারও পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্যবিদরা। মূলত সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া ঢাকার বাতাসের এই বিপজ্জনক অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন বলে মনে করছেন পরিবেশবাদীরা।


দুদক সংস্কারে নতুন অধ্যাদেশ জারি: বাড়ছে ক্ষমতা ও সদস্য সংখ্যা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইন-২০০৪-এর সংশোধিত অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে সংস্থাটির কাঠামো এবং ক্ষমতায় আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অনুমোদনক্রমে এই অধ্যাদেশটি কার্যকর করা হয়েছে। নতুন এই বিধানে কমিশনের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি, তদন্তের পরিধি বাড়ানো এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

অধ্যাদেশ অনুযায়ী, এখন থেকে দুর্নীতি দমন কমিশন অনধিক পাঁচজন কমিশনারের সমন্বয়ে গঠিত হবে, যা আগে ছিল তিনজন। এই পাঁচজনের মধ্যে অন্তত একজন নারী এবং একজন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ে অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি এই কমিশনারদের মধ্য থেকে একজনকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ প্রদান করবেন। আইটি বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করার মূল উদ্দেশ্য হলো আধুনিক ও ডিজিটাল দুর্নীতির রহস্য উন্মোচন এবং প্রযুক্তিগত তদন্ত কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করা।

কমিশনার নিয়োগের জন্য গঠিত কমিটি প্রক্রিয়ায় বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগের ‘সার্চ কমিটি’র নাম পরিবর্তন করে এখন রাখা হয়েছে ‘যাচাই-বাছাই কমিটি’। এই কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ বিচারক, যা আগে ছিল প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব। কমিটির অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে থাকবেন প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারক, মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি), সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান এবং জাতীয় সংসদের স্পিকার কর্তৃক মনোনীত সরকারি ও বিরোধী দলের দুইজন সংসদ সদস্য। তবে সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় সংসদ সদস্যদের ছাড়াই এই কমিটি গঠন করা যাবে।

দুদকের তদন্ত ও অভিযানের ক্ষমতাও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো এনফোর্সমেন্ট ও গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টি সরাসরি আইনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা আগে কেবল বিধির ওপর নির্ভরশীল ছিল। এ ছাড়া মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধের অনুসন্ধানে দুদককে ব্যাপক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে কেবল ঘুষ ও দুর্নীতি নয়, বরং দলিল জালকরণ, প্রতারণা, মুদ্রা পাচার, চোরাচালান, শুল্ক ও কর সংক্রান্ত অপরাধ এমনকি পুঁজিবাজারে ইনসাইডার ট্রেডিং বা মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ব্যবহার করে জালিয়াতির মতো অপরাধগুলোও দুদকের তদন্তের আওতায় আসবে।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৩ অক্টোবর টিআইবি-র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানকে প্রধান করে গঠিত দুদক সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে এই পরিবর্তনগুলো আনা হয়েছে। যদিও টিআইবি কিছু কৌশলগত সুপারিশ বাদ পড়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল, তবে সরকার মনে করছে এই নতুন অধ্যাদেশের মাধ্যমে দুদক আরও বেশি কার্যকর ও স্বাধীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। বিশেষ করে আর্থিক অপরাধ ও অর্থ পাচার রোধে দুদকের এই বর্ধিত ক্ষমতা দুর্নীতি দমনে এক নতুন মাত্রা যোগ করবে।


টিএফআই সেলে গুম ও নির্যাতন: শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

র‍্যাবের টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে চলা গুম ও ভয়াবহ নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই ঐতিহাসিক আদেশ প্রদান করেন। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের বহুল আলোচিত গুম ও টিএফআই সেলে নির্যাতনের বিচারিক কার্যক্রম দাপ্তরিকভাবে শুরু হলো।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল আজ শুনানির শুরুতে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের করা অব্যাহতির আবেদনগুলো খারিজ করে দেন। এরপর কারাগারে থাকা ১০ সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো পড়ে শোনানো হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম টিএফআই সেলের অভ্যন্তরে সংঘটিত বীভৎসতার বিবরণ তুলে ধরে জানান, সেখানে গুম হওয়া ব্যক্তিদের ভাগ্য ছিল অনিশ্চিত; কাউকে বছরের পর বছর আটকে রেখে পরে কারাগারে পাঠানো হতো, আবার কাউকে দীর্ঘ সময় পর অজ্ঞাত কোনো স্থানে ফেলে আসা হতো।

এই মামলায় বর্তমানে কারাগারে থাকা ১০ আসামি হলেন— র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম। তাঁদের আজ কড়া নিরাপত্তায় সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

অন্যদিকে, মামলার প্রধান আসামি শেখ হাসিনাসহ সাতজন বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। পলাতক অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন তাঁর সাবেক প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক দুই মহাপরিচালক এম খুরশিদ হোসেন ও ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ এবং সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মো. খায়রুল ইসলাম। পলাতক এসব আসামিদের অনুপস্থিতিতেই বিচার কাজ চালানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং তাঁদের জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী (স্টেট ডিফেন্স) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৮ অক্টোবর এই মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছিল এবং ২২ অক্টোবর ১০ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। আজ অভিযোগ গঠনের আদেশের পর ট্রাইব্যুনাল খুব শিগগিরই সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করবেন। এই বিচার কাজকে কেন্দ্র করে ট্রাইব্যুনাল এলাকায় আজ নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই বিচার প্রক্রিয়া বাংলাদেশের মানবাধিকার রক্ষা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এক নতুন মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।


একনেকে ৪৬ হাজার কোটি টাকার ২২ প্রকল্প অনুমোদন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ২২টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এই সভায় সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের ১৪টি নতুন প্রকল্প ছাড়াও ৫টি সংশোধিত এবং ৩টি মেয়াদ বৃদ্ধিকৃত প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে যোগান দেওয়া হবে ৩০ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা এবং অবশিষ্ট অর্থ প্রকল্প ঋণ ও সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে তিনটি বড় প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে কর্ণফুলী টানেলের সংযোগ সড়ক উন্নয়ন এবং ঢাকা-সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণে ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্প। এছাড়াও দিনাজপুর সড়ক বিভাগাধীন হিলি-ঘোড়াঘাট জাতীয় মহাসড়ককে যথাযথ মানে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে নারায়ণগঞ্জের আলীগঞ্জে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৮টি ১৫ তলা ভবন নির্মাণের সংশোধিত প্রকল্পটিও সভায় অনুমোদন পেয়েছে।

স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের পাঁচটি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ঢাকা ওয়াসা প্রশিক্ষণ একাডেমি স্থাপন, সিলেটের জলাবদ্ধতা নিরসন ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এবং পটুয়াখালী জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন। জ্বালানি খাতের উন্নয়নে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের (ইআরএল) আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে রাঙ্গামাটি জেলার কর্ণফুলী ও সংশ্লিষ্ট নদীসমূহের পানি ব্যবস্থাপনা এবং সুরমা-কুশিয়ারা নদী অববাহিকার উন্নয়ন সংক্রান্ত চারটি বড় প্রকল্পের সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে মোংলা ও সাভারে দুটি বড় উন্নয়ন প্রকল্প এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নার্সিং শিক্ষা ও গবেষণার সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। শিক্ষা খাতে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিইউপি-এর উন্নয়নে পৃথক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে গাজীপুরের কোনাবাড়িতে দুস্থ শিশুদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পুনর্নির্মাণ এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে দারুল আরকাম ইসলামী শিক্ষা পরিচালনার দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পটিও চূড়ান্ত করা হয়েছে।

বৈঠকে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাবৃন্দ এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও পরিকল্পনা উপদেষ্টার নিজস্ব ক্ষমতাবলে অনুমোদিত ৫০ কোটি টাকার কম ব্যয় সম্বলিত ১০টি ছোট প্রকল্প সম্পর্কে সভায় অবহিত করা হয়, যার মধ্যে অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৩ এবং র‍্যাবের আভিযানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির মতো প্রকল্পগুলো রয়েছে। সামগ্রিকভাবে এই প্রকল্পগুলো দেশের অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।


তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন: শাহজালাল বিমানবন্দরে ২৪ ঘণ্টা ভিজিটর প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রী ছাড়া সর্বসাধারণ ও সহযাত্রীদের প্রবেশের ওপর ২৪ ঘণ্টার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে। বেবিচকের মুখপাত্র কাওছার মাহমুদ জানিয়েছেন, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা, যাত্রীসেবা ও অপারেশনাল শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে বিশেষ নিরাপত্তাজনিত কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, মূলত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের লন্ডন থেকে দেশে ফেরার মাহেন্দ্রক্ষণকে কেন্দ্র করেই এই কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে তাঁর বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-২০২ ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণ করার কথা রয়েছে। তারেক রহমানের এই আগমনকে সম্পূর্ণ নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল রাখতে বিমানবন্দর এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। ওই সময়ে বৈধ টিকিট ও পাসপোর্ট ছাড়া কাউকে বিমানবন্দর এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। তবে তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানাতে নির্ধারিত একটি বিশেষ প্রতিনিধি দল বিমানবন্দরের ভেতরে থাকার অনুমতি পাবে।

এদিকে, তারেক রহমান লন্ডন থেকেই সংশ্লিষ্টদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন যেন তাঁর দেশে ফেরা উপলক্ষে সাধারণ বিমানযাত্রীরা কোনো ধরনের হয়রানি বা সমস্যার শিকার না হন। তাঁর নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট ফ্লাইটের দায়িত্ব থেকে বিতর্কিত দুই কেবিন ক্রুকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরের ভিআইপি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা দফায় দফায় বৈঠক করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, তারেক রহমান বিমানবন্দর ত্যাগ না করা পর্যন্ত পুরো এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি নিশ্ছিদ্র ও কঠোর নিরাপত্তা বলয় সক্রিয় থাকবে। মূলত যাত্রী সাধারণের স্বাচ্ছন্দ্য এবং ভিআইপি প্রটোকল বজায় রাখাই এই নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য।


উৎসবমুখর নির্বাচনের পূর্ণ সক্ষমতা পুলিশের রয়েছে: আইজিপি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম দৃঢ়তার সঙ্গে জানিয়েছেন যে, একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও উৎসবমুখর নির্বাচন উপহার দেওয়ার মতো পূর্ণ সক্ষমতা বাংলাদেশ পুলিশের রয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে রিটার্নিং অফিসার ও মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আয়োজিত এক গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। আইজিপি স্পষ্ট করে জানান, জুলাই-পরবর্তী অস্থিরতা ও প্রতিকূল পরিস্থিতি কাটিয়ে পুলিশ এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং যেকোনো বিশৃঙ্খলা দমনে বাহিনী কঠোর প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

পুলিশ প্রধান বলেন, সম্প্রতি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাস্তা বা মহাসড়ক অবরোধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টির একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যা কঠোরভাবে বন্ধ করার সময় এসেছে। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, যদি সর্বত্র শৃঙ্খলা বা ‘অর্ডার’ প্রতিষ্ঠিত করা না যায়, তবে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। তাই মহাসড়ক বা জনপদে অস্থিরতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ইঙ্গিত দেন তিনি। এছাড়া, তিনি নির্বাচন কমিশনের নেওয়া সময়োপযোগী পদক্ষেপগুলোর প্রশংসা করেন, বিশেষ করে ইলেক্টরাল ইনকোয়ারি কমিটিকে সংক্ষিপ্ত বিচারের (সামারি ট্রায়াল) মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সাজার ক্ষমতা দেওয়া এবং ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রয়োজনে যেকোনো বাহিনীর সহায়তা নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টিকে তিনি অত্যন্ত কার্যকর বলে অভিহিত করেন।

মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনিক পরিবর্তনের বিষয়ে আইজিপি নির্বাচন কমিশনের কাছে একটি সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা চান। তিনি উল্লেখ করেন, এসপি বা তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের বদলির ক্ষেত্রে কমিশনের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকলেও কনস্টেবল বা সাব-ইন্সপেক্টরের মতো সর্বনিম্ন পদের রদবদলের ক্ষেত্রেও কমিশনের পূর্বানুমতি প্রয়োজন কি না, সে বিষয়ে একটি স্পষ্ট নির্দেশিকা থাকা প্রয়োজন। পরিশেষে তিনি দেশবাসী ও নির্বাচন কমিশনকে আশ্বস্ত করে বলেন যে, পুলিশ তার সর্বশক্তি দিয়ে এবারের নির্বাচনকে সফল ও শান্তিপূর্ণ করতে বদ্ধপরিকর। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


ভারতে বাংলাদেশের মিশনগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান ঢাকার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে সৃষ্ট চরম উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে তাঁকে মন্ত্রণালয়ে ডেকে নিয়ে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাই কমিশন চত্বরের অপ্রীতিকর ঘটনা এবং সোমবার শিলিগুড়িতে বাংলাদেশ ভিসা সেন্টারে চরমপন্থি গোষ্ঠীগুলোর ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। একটি আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারত সরকারকে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাগুলোর বিষয়ে বাংলাদেশের কড়া অবস্থানের কথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশের কূটনৈতিক স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে এ ধরনের পূর্বপরিকল্পিত সহিংসতা ও ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক শিষ্টাচারের চরম লঙ্ঘন। এ ধরনের কর্মকাণ্ড কেবল কর্মকর্তাদের নিরাপত্তাকেই হুমকির মুখে ফেলে না, বরং দুই দেশের পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহনশীলতার মূল্যবোধকেও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। বাংলাদেশ সরকার এই সহিংসতা ও ভাঙচুরের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এটিকে অত্যন্ত দুঃখজনক হিসেবে অভিহিত করেছে।

তদন্ত ও নিরাপত্তার দাবিতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ বলেছে, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ভারতে থাকা বাংলাদেশের প্রতিটি মিশন ও সংশ্লিষ্ট স্থাপনাগুলোর কঠোর সুরক্ষা নিশ্চিত করা দিল্লির দায়িত্ব। একই সঙ্গে শিলিগুড়ি ও নয়াদিল্লির ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ আশা করে, ভিয়েনা কনভেনশনসহ আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী ভারত সরকার অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে বিদেশি মিশনের মর্যাদা রক্ষা করবে।


ভারতীয় হাইকমিশনারকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তলব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের মিশনগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার কিছু আগে পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আল সিয়ামের কার্যালয়ে এই তলব করা হয়। এ সময় ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনারও তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ভারতের বিভিন্ন স্থানে থাকা বাংলাদেশের মিশন ও দূতাবাসগুলোতে বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে হাইকমিশনারের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের মিশনগুলোর সুরক্ষা ব্যবস্থা অবিলম্বে জোরদার করার জন্য প্রয়োজনীয় ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জোরালো অনুরোধ জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১০ দিনের ব্যবধানে এটি দ্বিতীয়বারের মতো ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করার ঘটনা। এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর তাঁকে তলব করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অব্যাহত উসকানিমূলক বক্তব্য নিয়ে বাংলাদেশের গভীর উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছিল। পাশাপাশি ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের ভারতে পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতে অথবা তারা ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করে থাকলে তাদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফেরত পাঠানোর বিষয়ে দিল্লির সক্রিয় সহযোগিতা চেয়েছিল ঢাকা। মূলত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সাম্প্রতিক টানাপোড়েন এবং কূটনৈতিক মিশনগুলোর নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই আজকের এই তলব ও বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।


নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন: মার্কিন বিশেষ দূতকে প্রধান উপদেষ্টার দৃঢ় অঙ্গীকার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত সময়েই দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে নিজের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, দীর্ঘ স্বৈরাচারী শাসনামলে দেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, তাই এখন সাধারণ মানুষ তাদের সেই অধিকার প্রয়োগের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত সার্জিও গোরের সঙ্গে এক টেলিফোন আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী এই গুরুত্বপূর্ণ ফোনালাপে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, শুল্ক সংক্রান্ত আলোচনা, গণতান্ত্রিক রূপান্তর এবং সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত ইস্যু তরুণ রাজনৈতিক কর্মী শহীদ শরীফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সার্জিও গোর সাম্প্রতিক শুল্ক আলোচনায় সফল নেতৃত্বের জন্য প্রফেসর ইউনূসকে অভিনন্দন জানান। এই আলোচনার ফলে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পারস্পরিক শুল্ক ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে, যা দেশের বাণিজ্যের জন্য এক বড় মাইলফলক। আলাপকালে মার্কিন বিশেষ দূত শহীদ ওসমান হাদির জানাজায় মানুষের বিশাল উপস্থিতির বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা মার্কিন দূতকে অবহিত করেন যে, ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী শাসনের সমর্থকেরা নির্বাচন প্রক্রিয়া নসাৎ করতে বিপুল অর্থ ব্যয় করছে এবং তাদের পলাতক নেতা বিদেশ থেকে সহিংসতা উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে তিনি সাফ জানিয়ে দেন যে, অন্তর্বর্তী সরকার যেকোনো ধরনের নাশকতামূলক পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং একটি সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত। নির্বাচনের আর মাত্র প্রায় ৫০ দিন বাকি আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার একটি অবাধ ও স্মরণীয় নির্বাচন উপহার দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

এই ফোনালাপের সময় প্রধান উপদেষ্টার পাশে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর। মার্কিন বিশেষ দূতের এই যোগাযোগ ও সহযোগিতা বাংলাদেশের বর্তমান সংস্কার প্রক্রিয়ায় একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।


আমরা এমন নির্বাচন চাই, যেখানে ভয় ও বাধা থাকবে না: প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভয়হীন ও মুক্ত পরিবেশে ভোট দেওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করার বিষয়ে সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা এমন একটি নির্বাচন চাই, যেখানে ভয় থাকবে না, বাধা থাকবে না—থাকবে শুধু জনগণের মুক্ত ও নির্ভীক মতপ্রকাশ। সরকার সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ‘ভোটের গাড়ি’ শীর্ষক প্রচারণার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ২০২৬ সালের গণভোট সামনে রেখে ভোটারদের সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনি দেশের মালিক। এ দেশ আগামী পাঁচ বছর আপনার পক্ষে কে চালাবে সেটা আপনি ঠিক করুন। আপনার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিন। সৎ ও যোগ্য প্রার্থী বেছে নিন। চিন্তা-ভাবনা করে ভোট দিন।’

নতুন বাংলাদেশ গড়তে তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বিশেষভাবে তরুণ সমাজ, নারী ভোটার ও প্রথমবারের মতো হওয়া ভোটারদের এগিয়ে আসতে বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমি বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি তরুণ সমাজ, নারী ভোটার এবং প্রথমবারের ভোটারদের প্রতি- আপনারা এগিয়ে আসুন। প্রশ্ন করুন, জানুন, বুঝুন এবং ভোট দিন। আপনার সিদ্ধান্তে গড়ে উঠবে আগামী দিনের বাংলাদেশ, নতুন বাংলাদেশ।’

একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে দেশের প্রতিটি নাগরিকেরও দায়িত্ব রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ভোটাধিকার কারও দয়া নয়- এটি আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। এই অধিকার প্রয়োগের মাধ্যমেই আমরা ঠিক করি, আমাদের ভবিষ্যৎ কোন পথে যাবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়; এটি রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব।’

তিনি আরও বলেন, ‘চলুন, ভোট দিই- নিজের জন্য, দেশের জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য, নতুন পৃথিবীর জন্য।’

‘ভোটের গাড়ি’ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এই সুপার ক্যারাভান কেবল একটি গাড়ি নয়, এটি গণতন্ত্রের আনন্দ বাণী বহনকারী বহর। এটি জানিয়ে দেবে, আপনার একটি ভোট কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এটা মনে করিয়ে দেবে নিষ্ক্রিয়তা নয়, অংশগ্রহণই গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে।’

তিনি জানান, এবারের নির্বাচনে ভোটারদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি জুলাই জাতীয় সনদের ওপর গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। দীর্ঘ নয় মাস ধরে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে এই সনদ প্রস্তুত করা হয়েছে। জনগণ এই সনদে সমর্থন দিলে দেশের ভবিষ্যৎ দীর্ঘমেয়াদে নিরাপদ ও স্থিতিশীল হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। সনদের পক্ষে থাকলে গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় অতিক্রম করছে। সামনে আমাদের জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ওপর গণভোট।’

এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে যাত্রা শুরু করেছে ১০টি ভোটের গাড়ি- সুপার ক্যারাভান। এসব গাড়ি দেশের ৬৪টি জেলা ও ৩০০টি উপজেলায় ঘুরে বেড়াবে। তারা মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে নির্বাচন ও গণভোট সম্পর্কে তথ্য পৌঁছে দেবে, ভোটাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করবে এবং গণতন্ত্রের বার্তা ছড়িয়ে দেবে।

গণতান্ত্রিক এই যাত্রাকে সফল করতে তিনি সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।


banner close