সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। রোববার রাজধানীর অভিজাত এলাকা বারিধারা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে সন্ধ্যায় র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস সাংবাদিকদের জানান, সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
তাকে ডিবিতে হস্তান্তর করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর রাজধানীর বারিধারা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বরিশাল-৫ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন জাহিদ ফারুক শামীম। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হন। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে পর পর দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে প্রথমে মন্ত্রিত্ব ও এরপর রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দিলে অন্যদের মতো সংসদ সদস্য পদও হারান তিনি।
রংপুরের ব্যবসায়ী আশরাফুল হককে হানি ট্র্যাপের ফাঁদে ফেলে হত্যা করে লাশ ২৬ টুকরা করে দুটি নীল ড্রামে ভরে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ফেলে রাখার সাথে জড়িত মূল পরিকল্পনাকারী জরেজের প্রেমিকা শামীমা আক্তার ওরফে কোহিনুরকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৩।
শুক্রবার সকালে কুমিল্লার লাকসামের বড় বিজরা এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা, ব্ল্যাকমেইলিং এবং লাশ গুমের পুরো সহযোগিতায় জড়িত ছিলেন।
শনিবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল ফায়েজুল আরেফীন।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, গত ১১ নভেম্বর রাত ৮টায় ব্যবসায়িক পাওনা আদায়ের জন্য বন্ধু জরেজুল ইসলামকে সাথে নিয়ে রংপুর থেকে ঢাকায় রওনা হন আশরাফুল। পরদিন সকাল থেকে তার ফোন বন্ধ পেয়ে উদ্বিগ্ন পরিবার খোঁজ করতে থাকে। ১৩ নভেম্বর হাইকোর্ট এলাকার পানির পাম্পের পাশে দুটি নীল ড্রাম থেকে উদ্ধার হয় অজ্ঞাত এক ব্যক্তির ২৬ টুকরা লাশ। আঙুলের ছাপ বিশ্লেষণে লাশটি আশরাফুলের বলে শনাক্ত করে পুলিশ।
ঘটনার পর ভিকটিমের বোন বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করলে র্যাব তদন্ত শুরু করে এবং প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করে শামীমাকে।
প্রেম, প্রতারণা ও ব্ল্যাকমেইলের নকশা:
জিজ্ঞাসাবাদে শামীমা জানায়—জরেজের সঙ্গে তার এক বছরের বেশি সময় ধরে প্রেমের সম্পর্ক। জরেজ তাকে জানায়, তার বন্ধুকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অন্তরঙ্গ ভিডিও ধারণ করে ১০ লাখ টাকা আদায় করা যাবে। এর মধ্যে ৭ লাখ নেবে জরেজ, আর ৩ লাখ পাবে শামীমা।
পরিকল্পনা অনুযায়ী শামীমা এক মাস আগে থেকেই মোবাইল ফোনে আশরাফুলকে ফাঁদে ফেলতে যোগাযোগ শুরু করে। অডিও-ভিডিও কলে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। ১১ নভেম্বর জরেজ আশরাফুলকে নিয়ে ঢাকায় আসে, পরদিন শামীমার সাথে শনির আখড়ার নূরপুরে ৫,৫০০ টাকা দিয়ে ভাড়া নেয়া বাসায় ওঠে তিনজন।
সেখানে শামীমা আশরাফুলকে মালটার জুসে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করে। বাইরে থেকে জরেজ অন্তরঙ্গ ভিডিও ধারণ করে, যা শামীমার মোবাইল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
অচেতন অবস্থায় নির্মম পিটুনি, মৃত্যু
১২ নভেম্বর দুপুরে আশরাফুল পুরোপুরি অচেতন হয়ে পড়লে তার হাত দড়ি দিয়ে বেঁধে মুখ কসটেপ দিয়ে আটকায় জরেজ। এরপর ইয়াবা সেবনের উত্তেজনায় হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আশরাফুলের। লাশ পাশেই রেখে রাত কাটায় জরেজ–শামীমা এবং শারীরিক সম্পর্কেও লিপ্ত হয়।
২৬ টুকরা করে ড্রামে ভরে ফেলা
১৩ নভেম্বর সকালে জরেজ বাজার থেকে চাপাতি ও দুটি ড্রাম কিনে আনে। চাপাতি দিয়ে লাশ ২৬ খণ্ডে করে দুই ড্রামে ভরে। বিকেলে সিএনজি ভাড়া করে ড্রাম দুটি বহন করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা দেখে হাইকোর্ট মাজার গেটের পাশে বড় গাছের নিচে ড্রাম দুটি ফেলে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে তারা।
এরপর শামীমা কুমিল্লায় এবং জরেজ রংপুরে পালিয়ে যায়।
র্যাব জানায়, শামীমার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ভিকটিমের রক্তমাখা পাঞ্জাবি–পায়জামা, হত্যায় ব্যবহৃত দড়ি, কসটেপ, গেঞ্জি, হাফ প্যান্টসহ একটি বস্তাভর্তি আলামত শনির আখড়ার নূরপুর এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে র্যাব-৩।
গ্রেপ্তারকৃত শামীমাকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থার জন্য শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের উদ্যোগে শুরু হয়েছে ‘আন্তর্জাতিক খতমে নবুয়ত মহাসম্মেলন’। শনিবার সকাল ৯টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ সম্মেলন শুরু হয়। এতে বাংলাদেশসহ পাঁচটি দেশের শীর্ষ আলেমদের যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
মহাসম্মেলনকে কেন্দ্র করে এদিন দেশের বিভিন্ন স্থানের আলেম-ওলামা ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ভোর থেকেই সম্মেলনস্থলে আসতে দেখা যায়।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে অংশ নিতে এসেছেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পাকিস্তানের সভাপতি মাওলানা ফজলুর রহমান, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের (ভারত) সভাপতি মাওলানা সাইয়্যিদ মাহমুদ মাদানি, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া পাকিস্তানের মহাসচিব মাওলানা হানিফ জালন্দরি, ইন্টারন্যাশনাল খতমে নবুওয়ত মুভমেন্টের ওয়ার্ল্ড নায়েবে আমির শায়খ আব্দুর রউফ মক্কি,পাকিস্তানের ইউসুফ বিন্নুরী টাউন মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম ড. আহমাদ ইউসুফ বিন্নুরী, পাকিস্তানের মাওলানা ইলিয়াছ গুম্মান, মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শায়খ মুসআব নাবীল ইবরাহিম।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের (ভারত) সভাপতি মাওলানা সাইয়্যিদ মাহমুদ মাদানি।
আয়োজক কমিটি জানিয়েছে, খতমে নবুওয়তের পবিত্র আকিদা রক্ষায় বৈশ্বিক ঐক্যের এ সম্মেলনে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এক ঐতিহাসিক দৃশ্যে পরিণত হবে। দেশের অন্যতম বড় দুই রাজনৈতিক দল—বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর পাশাপাশি ইসলামপন্থী দলগুলোর নেতাদেরও সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে অংশ নেবেন হেফাজতে ইসলামের আমির মাওলানা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, আল হাইয়াতুল উলিয়া ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাওলানা মাহমুদুল হাসান, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মুহাম্মদ আব্দুল মালেক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হকসহ দেশের খ্যাতিমান শতাধিক আলেম।
মহাসম্মেলনে সভাপতিত্ব করছেন সম্মিলিত খতমে নবুয়ত পরিষদের আহ্বায়ক ও খতমে নবুয়ত সংরক্ষণ কমিটি বাংলাদেশের আমির মধুপুরের পীর মাওলানা আবদুল হামিদ।
সবশেষ সমন্বয়ে আবারও বেড়েছে স্বর্ণের দাম। বাজুস নির্ধারিত নতুন তালিকা অনুযায়ী আজ শনিবার (১৫ নভেম্বর) থেকে বাড়তি দামেই দেশে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে।
সবশেষ গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাতে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে স্বর্ণের দাম বাড়িয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। সেদিন ভরিতে পাঁচ হাজার ২৪৮ টাকা বাড়িয়েছে সংগঠনটি।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে দুই লাখ ১৩ হাজার ৭১৯ টাকায়। এছাড়া, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি দুই লাখ ৪ হাজার ৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ৭৪ হাজার ৮৫৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ এক লাখ ৪৫ হাজার ৫২০ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে।
এদিকে, বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত পাঁচ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ছয় শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে, গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।
চলতি বছর মোট ৭৬ বার দেশের বাজারে সমন্বয় করা হয়েছে স্বর্ণের দাম। যেখানে দাম বাড়ানো হয়েছে ৫৩ বার, আর কমেছে মাত্র ২৩ বার। আর ২০২৪ সালে দেশের বাজারে মোট ৬২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল, আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার।
স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ২৪৬ টাকায়।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৪ হাজার ৪৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৩ হাজার ৪৭৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬০১ টাকায়।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৯ বার সমন্বয় করা হয়েছে রুপার দাম। এর মধ্যে বেড়েছে ছয়বার, আর কমেছে মাত্র তিনবার। আর গত বছর সমন্বয় করা হয়েছিল তিনবার।
সব মিলিয়ে চলতি বছর জুড়ে ঘনঘন সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে স্বর্ণ-রুপার বাজারে অস্থিরতা অব্যাহতই রয়েছে। স্বর্ণের দাম বাড়লেও রুপার দাম স্থিতিশীল থাকায় ক্রেতাদের কাছে দুই ধাতুর বাজারে বৈষম্য আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি ফেসবুকভিত্তিক প্রতিবাদী দলে পরিণত হয়েছে; যার মাঠে প্রকৃত সাংগঠনিক শক্তি খুব কম।
‘আমার দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণও তা-ই নির্দেশ করে, দলের তৃণমূল হয় ভেঙে গেছে, নয়তো প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বারা নিমজ্জিত হয়েছে। এই বাস্তবতা বিবেচনা করে, আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে কোনো অস্থিরতা বা বিঘ্ন সৃষ্টি করার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ বলে মনে করি।
আজ (শনিবার) সকালে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এসব কথা লিখেছেন।
পোস্টে তিনি লেখেন, তিনটি সাম্প্রতিক ঘটনা আমার বিশ্বাসকে আরও শক্তিশালী করেছে যে, ফেব্রুয়ারির নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে। বরং আমাদের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
১. বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে
বিএনপি তাদের সংসদীয় প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করলে বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে—এমন একটি ব্যাপক আশঙ্কা ছিল। অনেকের ধারণা ছিল, শত শত বিদ্রোহী প্রার্থী দলের সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন না। বিক্ষোভে নামবেন। এমনকি আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনীত প্রার্থীদের সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়াতে পারেন। কিন্তু এক-দুটি সামান্য ঘটনা ছাড়া ঘোষণাটি আশ্চর্যজনকভাবে শান্ত ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এ থেকে প্রমাণিত হয়, বিএনপি নেতৃত্ব যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে পরিকল্পিতভাবে কাজ করেছে। মনোনয়নের ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা ইঙ্গিত দেয়—প্রচারণা ও নির্বাচনের সময় দলের ভেতরে সংঘর্ষের সম্ভাবনা খুবই কম।
২. আওয়ামী লীগের সক্ষমতার সীমা স্পষ্টভাবে দেখছি এবং তা বেশ ছোট।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে যে তাদের একটি বিস্তৃত তৃণমূল নেটওয়ার্ক রয়েছে, যা যেকোনো নির্বাচন ব্যাহত করার মতো শক্তিশালী। কিন্তু গত কয়েক দিনের ঘটনাপ্রবাহ প্রমাণ করে দিয়েছে—দলটির বাস্তব সংগঠিত শক্তি আসলে কতটা সীমিত। এখন তারা ক্রমেই ভাড়াটে টোকাই-ধরনের ক্ষুদ্র দুষ্কৃতকারী গোষ্ঠীর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে, যারা ফাঁকা বাসে আগুন দিতে পারে, ৩০ সেকেন্ডের ‘ঝটিকা মিছিল’ করতে পারে, কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এআই শাটডাউনের মতো প্রচারণা চালাতে পারে।
প্রকৃত অর্থে, যার মাঠে প্রকৃত সাংগঠনিক শক্তি খুব কম। আমার দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণও তা-ই নির্দেশ করে, দলের তৃণমূল হয় ভেঙে গেছে, নয়তো প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলির দ্বারা নিমজ্জিত হয়েছে। এই বাস্তবতা বিবেচনা করে,আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে কোনো অস্থিরতা বা বিঘ্ন সৃষ্টি করার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ বলে মনে করি।
৩. পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন এখন আরও সংগঠিত
সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা দেখেই বোঝা যায়—পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন (ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসি) এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী ও সংগঠিত। সবচেয়ে দক্ষ ও সক্ষম কর্মকর্তাদের নির্বাচন প্রক্রিয়া তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস, তারা জাতির প্রত্যাশিত শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল নির্বাচন সম্পন্ন করতে সক্ষম হবে।
বাসে আগুন দিয়ে পালানোর সময় জনতার ধাওয়া খেয়ে তুরাগ নদে ঝাঁপ দিয়ে মারা যাওয়া তরুণকে পাঁচ হাজার টাকার প্রলোভন দেখানো হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে চিড়িয়াখানা এলাকায় বেড়িবাঁধ সড়কে থেমে থাকা একটি বাসে আগুন দিয়ে পালানোর সময় এই ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া তরুণের নাম আব্দুল্লাহ আল সায়াদ (১৮)। তিনি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এই ঘটনায় তার সঙ্গে থাকা বন্ধু ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী রুদ্র মোহাম্মদ আমির সানিকে (১৮) আটক করে পুলিশে দেয় স্থানীয় লোকজন। এই ঘটনায় তৃতীয় আরেকজন তরুণ যুক্ত ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) দারুসসালাম জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার এমদাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, টাকার প্রলোভন দেখিয়ে তাদেরকে বাসে আগুন দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়।
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার রুদ্র মোহাম্মদ আমির সানিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, স্থানীয় একজন আওয়ামী লীগ নেতা তাদেরকে পাঁচ হাজার টাকার প্রলোভন দেখান। তাদেরকে ঢাকা ১৪ নির্বাচনী এলাকায় যেকোনো একটি গাড়িতে আগুন দেওয়ার জন্য ভাড়া করা হয়।’
এই ঘটনায় আমির সানির নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে মিরপুর বেড়িবাঁধে থেমে থাকা কিরণমালা পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। এ সময় স্থানীয় জনতা তাদের ধাওয়া দিয়ে রুদ্রকে আটক করে। তবে আবদুল্লাহ আল সায়াদ ধাওয়া খেয়ে বেড়িবাঁধ থেকে তুরাগ নদে ঝাঁপ দেন। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত আবদুল্লাহ আল সায়াদের মরদেহের ময়নাতদন্ত শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে সম্পন্ন হয়েছে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, পরিবারের সদস্যরা গতকাল শুক্রবার মরদেহ নিয়ে গেছেন। তাদের বাড়ি ঢাকার উত্তরা এলাকায় বলে জানা গেছে।
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে কার্যক্রম স্থগিত থাকায়, পরে নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন বাতিল (স্থগিত) করায় আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
সফররত যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী ব্যারোনেস জেনি চ্যাপম্যানের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
বৈঠকে আসন্ন নির্বাচন, অবৈধ অভিবাসন, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, রোহিঙ্গা সংকটসহ বিমান ও নৌ খাতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা সম্প্রসারণের ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সময়মতোই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং তা হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক।
প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, এই নির্বাচনে বিপুলসংখ্যক নতুন ভোটার প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। গত ১৬ বছরের স্বৈরতন্ত্রের সময়ে টানা তিনটি ‘কাটাছেঁড়া’ নির্বাচনের কারণে তাঁরা ভোট দিতে পারেননি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মুহাম্মদ ইউনূস জানান, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় কার্যক্রম স্থগিত থাকায় এবং পরে নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন বাতিল (স্থগিত) করায় আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে লাখো মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে ‘জুলাই সনদ’ বাংলাদেশে একটি ‘নতুন সূচনা’ করেছে।
মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করেন যুক্তরাজ্যের সফররত মন্ত্রী ব্যারোনেস জেনি চ্যাপম্যান। তিনি জুলাই সনদ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর চলমান সংলাপকে ইতিবাচক হিসেবে তুলে ধরেন।
ব্যারোনেস জেনি চ্যাপম্যান বলেন, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের অপব্যবহার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। তিনি নিরাপদ ও বৈধ অভিবাসন নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তার সরকার নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আরও বেশি বাংলাদেশিকে বৈধ পথে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ নিতে উৎসাহিত করছে তার সরকার।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে দুই নেতা মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের তরুণেরা আশা-আকাঙ্ক্ষা হারিয়ে ক্রমে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন। তাদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও সহযোগিতা বাড়ানোর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বঙ্গোপসাগরে গবেষণার জন্য যুক্তরাজ্যের একটি গবেষণা জাহাজ কিনছে বাংলাদেশ।
ব্যারোনেস জেনি চ্যাপম্যান দুই দেশের উড়োজাহাজ যোগাযোগ আরও জোরদারের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এয়ারবাস ইন্টারন্যাশনালের প্রধান শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবেন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ ও বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারা কুক।সূত্র: বাসস
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী ব্যারোনেস জেনি চ্যাপম্যানের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠকে আসন্ন নির্বাচন, অবৈধ অভিবাসন, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, রোহিঙ্গা সংকটসহ বিমান ও নৌ খাতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা সম্প্রসারণের ইস্যু বিষয়ে আলোচনা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সময়মতোই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং তা হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই নির্বাচনে বিপুলসংখ্যক নতুন ভোটার প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। গত ১৬ বছরের স্বৈরতন্ত্রের সময়ে টানা তিনটি ‘কাটাছেঁড়া’ নির্বাচনের কারণে তারা ভোট দিতে পারেননি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস জানান, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় কার্যক্রম স্থগিত থাকায় এবং পরে নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করায় আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
বৈঠকে তিনি আরও বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে লাখো মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে ‘জুলাই সনদ’ বাংলাদেশে একটি ‘নতুন সূচনা’ করেছে।
ব্রিটিশ মন্ত্রী চ্যাপম্যান অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি জুলাই সনদ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর চলমান সংলাপকেও ইতিবাচক হিসেবে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের অপব্যবহার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। তিনি নিরাপদ ও বৈধ অভিবাসন নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেন।
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তাঁর সরকার নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আরও বেশি বাংলাদেশিকে বৈধ পথে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ নিতে উৎসাহিত করছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে দুই নেতা মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ক্যাম্পের তরুণেরা আশা-আকাঙ্ক্ষা হারিয়ে ক্রমশ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। তিনি বলেন, তাদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
এ ছাড়া দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য ও সহযোগিতা বাড়ানোর সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা জানান, বঙ্গোপসাগরে গবেষণার জন্য বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের একটি গবেষণা জাহাজ কিনছে।
মন্ত্রী চ্যাপম্যান দুদেশের বিমান যোগাযোগ আরও জোরদারের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এয়ারবাস ইন্টারন্যাশনালের প্রধান শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবেন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারা কুক। সূত্র: বাসস
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, তার বোন শাহানা হানিফ ও তাদের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে ৫৪ কোটি টাকার মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
দুদকের অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, শাহানা হানিফ ও সাঈদ খোকন ‘সাইদ খোকন প্রোপার্টিজ লিমিটেড’-এর বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করে লেনদেনের মাধ্যমে লেয়ারিং প্রক্রিয়ায় অবৈধ অর্থ ছদ্মবৃত্ত করেন। সিটি ব্যাংক পিএলসি, এক্সিম ব্যাংক পিএলসি এবং প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি—এই তিন ব্যাংকের মোট সাতটি অপারেটিভ ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৫৪ কোটি ৭৮ লাখ ৮৪ হাজার ৩০৪ টাকা স্থানান্তর ও লেনদেন করা হয়।
দুদকের ভাষ্য, শাহানা হানিফ ব্যাংক হিসাব খোলার সময় নিজের পেশা, আয় এবং পরিচয় সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। তার ভাই সাঈদ খোকন, যিনি সরকারি কর্মচারী হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন, তার ম্যানেজার মো. রাজু আহমেদের সঙ্গে যোগসাজশে এই অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
তদন্তে জানা যায়, সিটি ব্যাংক পিএলসির বনানী লেকভিউ শাখা, এক্সিম ব্যাংক লিমিটেড ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের বনানী শাখায় শাহানা হানিফ ও সাইদ খোকন প্রোপার্টিজ লিমিটেডের নামে একাধিক সঞ্চয়ী, এসএনডি ও এফডিআর হিসাব খোলা হয়। এসব হিসাবের মাধ্যমে বারবার অর্থ স্থানান্তর করে মানি লন্ডারিং সংঘটিত হয়।
দুদক জানিয়েছে, এই কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সাঈদ খোকন, শাহানা হানিফ ও সাঈদ খোকন প্রোপার্টিজের ম্যানেজার মো. রাজু আহমেদের নামে দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০ ও ১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অপরাধ করেছেন।
জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ বাস্তবায়ন বিষয়ে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, জাতীয় নির্বাচনের দিন আয়োজিত গণভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট ‘হ্যাঁ’ সূচক হলে আগামী সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে। এই প্রতিনিধিগণ একইসঙ্গে জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পরিষদ তার প্রথম অধিবেশন শুরুর তারিখ হতে ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে। সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন হবার পর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে। এর মেয়াদ হবে নিম্নকক্ষের শেষ কার্যদিবস পর্যন্ত।
গণভোটে যে প্রশ্ন থাকবে: প্রশ্নটি হবে এরকম: ‘আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলোর প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করছেন?’
ক. নির্বাচনকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।
খ. আগামী সংসদ হবে দুই কক্ষ বিশিষ্ট। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ জন সদস্য বিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধন করতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন দরকার হবে।
গ. সংসদে নারীর প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে যে ৩০টি প্রস্তাবে জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলো বাধ্য থাকবে।
ঘ. জুলাই সনদে বর্ণিত অন্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে। গণভোটের দিন এই চারটি বিষয়ের ওপর একটিমাত্র প্রশ্নে আপনি ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিয়ে আপনার মতামত জানাবেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা অনুসারে সংবিধানে জুলাই জাতীয় সনদ অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এটিও অনুমোদিত আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর নামে চুক্তি বহির্ভূত কর্মকাণ্ড করে মোট ৩১৪ কোটি ৩৪ লাখ ৭২ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া যাওয়ায় পাঁচ রিক্রুটিং এজেন্সির ২৬ মালিক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পৃথক পাঁচটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে বলে জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
প্রথম মামলার আসামিরা হলেন, জিএমজি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোছা. মনিহার, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম মাওলা, পরিচালক মোজাম্মেল হোসেন, মোজ্জাম্মেল হোসেন, তাসফিয়া মাউন ও ইসলাইল হোসাইন। মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বায়রার বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালনকালে সিন্ডিকেট করে বিএমইটি ও বায়রার রেজিস্ট্রেশনের শর্ত ভঙ্গ করে মালয়েশিয়া পাঠাতে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার চেয়ে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করেছে। চুক্তি বহির্ভূত কর্মকাণ্ড করে সরকারের এজেন্ট হিসেবে অবৈধ পারিতোষিক গ্রহণ করে ২ হাজার ৮৩০ জনকে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর নামে পাসপোর্ট, স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং প্রতি কর্মীর কাছ থেকে নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত অর্থসহ মোট ৪৭ কোটি ৪০ লাখ ২৫ হাজার টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।
একই প্রক্রিয়ায় দ্বিতীয় মামলায ৩ হাজার ২৩৯ জন মালয়েশিয়ায় পাঠানো কর্মীর নিকট থেকে পাসপোর্ট, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত অর্থসহ ৫৪ কোটি ২৫ লাখ ৩২ হাজার ৫০০ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায় দি জিএমজি এসোশিয়েট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন, পরিচালক আব্দুর রহিম, ওয়ালিদ হোসাইন হারুন, নরুল আমিন, মো. গোলাম মাওলা, ইসলাইল হোসাইন ও তাসফিয়া মাউদকে আসামি করা হয়েছে। যেখানে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার চেয়ে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করে দণ্ডবিধির ১২০(বি)/১৬১/১৬২/১৬৩/১৬৪/১৬৫(ক)/৪২০/৪০৯ ধারা ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ করার অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়।
তৃতীয় মামলার আসামি হলেন, কিউকে কুইক এক্সপ্রেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবিন, এমডি মোহাম্মদ মুনছুর, পরিচালক রাশেদা আকতার, নিলূফা কুদ্দুস, আওরঙ্গজেব ও শাহিনা খান। তাদের বিরুদ্ধেও সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার চেয়ে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর নামে ৫ হাজার ২৭৫ জন শ্রমিকের কাছ থেকে চুক্তি বহির্ভূত কর্মকাণ্ড করে বিভিন্ন ফি বাবদ ৭১ কোটি ৬০ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
অন্যদিকে চতুর্থ মামলায় এম ই এফ গ্লোবাল বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আলতাফ হোসেন, এমডি মকবুল হোসেন ও পরিচালক হাইদার আলীকে আসামি করা হয়েছে। একই প্রক্রিয়ায় আসামি চুক্তি বহির্ভূত কর্মকাণ্ড করে সরকারের এজেন্ট হিসেবে অবৈধ পারিতোষিক গ্রহণ করে ৪ হাজার ৫৬৬ জন মালয়েশিয়ায় প্রেরিত কর্মীর নিকট থেকে পাসপোর্ট, স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত অর্থসহ ৭৬ কোটি ৪৮ লাখ ৫ হাজার টাকা গ্রহণপূর্বক আত্মসাৎ করেছেন। ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে আসামিরা এমন অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন বলে মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
আর পঞ্চম মামলায় ধামাসি করপোরেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান ওসমান গনি, এমডি নোমান চৌধুরী ও পরিচালক আহমেদ চৌধুরীকে আসামি করা হয়েছে। একই প্রক্রিয়ায় আসামি চুক্তি বহির্ভূত কর্মকাণ্ড করে সরকারের এজেন্ট হিসেবে অবৈধ পারিতোষিক গ্রহণ করে ৩ হাজার ৮৫৭ জনকে মালয়েশিয়ায় পাঠিয়ে নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত ৬৪ কোটি ৬০ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা গ্রহণপূর্বক আত্মসাৎ করেছেন। এর আগে এই ঘটনা ১২টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে দুদক।
স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘গণহত্যার রায় নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। সবার সহযোগিতা থাকলে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা সহজ হবে।’
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা সহজ হবে কিনা— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনাদের সবার সহযোগিতা থাকলে অবশ্যই সহজ হবে।’
গণহত্যার রায় নিয়ে কোনো শঙ্কা আছে কিনা— সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘না, কোনো শঙ্কা নেই, আল্লাহ দিলে কোনো শঙ্কা নেই।’
লকডাউন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘রাস্তা তো ওরকম ফাঁকা না। ফাঁকা থাকলে আপনারা আসলেন কীভাবে? আপনারা তো সবাই চলে আসছেন। রাস্তা ফাঁকা দেখে কি তাড়াতাড়ি চলে আসছেন?’
তিনি বলেন, ‘বড় ধরনের কোনো সমস্যা নেই। ছোটখাটো দুয়েকটা ঘটনা ঘটছে। এটা আপনারা মিডিয়ায় দেখছেন, আমিও দেখছি। এটার ক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে কিন্তু আমরা অ্যাকশনও নিচ্ছি।’
এসময় পেঁয়াজের দাম নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এবার পেঁয়াজের দাম হঠাৎ বাজারে একটুখানি বেড়ে গেছে। বাট আপনারা জানেন যে আমরা পেঁয়াজের জন্য কিন্তু অনেকগুলো হাই-ফ্লো মেশিন দিছি। এজন্য এবার পেঁয়াজ আমদানি ও রকম করতে হয়নি। আমাদের মনে হয় আমদানি করতেও হবে না। তবে আমদানি করার জন্য দুই হাজারের ওপরে অ্যাপ্লিকেশন করছে লোকজন। আমদানিটা করলে কৃষকরা একটা বড় ধরনের সাফার করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি হবে না। কিন্তু কিছু কিছু দুষ্কৃতিকারী দামটা বাড়ানোর চেষ্টা করতেছে। বাট তারা সফল হবে না। আমাদের আমদানি করার ওরকম ইচ্ছা নেই। আমাদের হয়তো আমদানির অনুমতি দিতে হবে না। কিন্তু আমাদের যে প্রোডাকশন হয়েছে, আমাদের কৃষকরা যে উৎপাদন করছে, সেটা দিয়ে ভোক্তাদের চাহিদা মিটে যাবে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তফসিল ঘোষণার পর কোথাও অনিয়ম দেখা গেলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবে।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে দেওয়া শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রথমবারের মতো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসে নির্বাচন কমিশন। সংলাপের প্রথম ধাপে উপস্থিত ছিলেন ছয়টি দলের প্রতিনিধিরা। দলগুলোর সঙ্গে ১১টি আলোচ্য নিয়ে আলোচনা করে কমিশন।
সিইসি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে খেলবে। ইসি নিরপেক্ষ রেফারির ভূমিকা পালন করতে চায়। কিন্তু খেলোয়াড়েরা সহযোগিতা না করলে কমিশন নিরপেক্ষতা হারাবে। পুরো নির্বাচনপ্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হবে।’
নির্বাচন কমিশন পোস্টার নিষিদ্ধ করলেও ঢাকা শহর এখনো পোস্টারে ছেয়ে আছে- এমন প্রশ্নের জবাবে এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, ‘ইসি পোস্টার নিষিদ্ধ করার পরও শহরের যে চিত্র, তা অনভিপ্রেত। পোস্টারগুলো যদি দলগুলো নিজেরা সরিয়ে ফেলে, এটা হবে সবচেয়ে ভদ্র আচরণ। আচরণবিধি ভঙ্গের ক্ষেত্রে কমিশন কোনোভাবেই ছাড় দেবে না।’
বিশেষ পরিস্থিতিতে কমিশন চাপে রয়েছে বলেও জানান সিইসি। তিনি বলেন, একটি বিশেষ পরিস্থিতি ও বিশেষ সরকারের অধীন নির্বাচন করতে গিয়ে কমিশনের ওপর নানা ধরনের চাপ আসছে। এসব চাপের কারণে নির্বাচনে অংশীজনদের কাছে আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি সহযোগিতা চেয়েছেন সিইসি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সিইসি এই অপব্যবহারকে একটি ‘মুসিবত’ (বড় বিপদ) হিসেবে উল্লেখ করেন।
আলোচনার জন্য সকাল ১০ থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে সংলাপে ডাকা হয় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশকে।
এদিন বেলা ২টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে ডাকা হয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে (বিএনএম)।
ইসির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর যে ১১টি বিষয়ে আলোচনা হয় তা হলো- তফসিল ঘোষণার আগে প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলোর করণীয়। তফসিল ঘোষণার পর আচরণবিধি প্রতিপালন। আচরণবিধি অনুসারে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকারনামা সম্পাদন। প্রার্থীদের সঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের অঙ্গীকারনামা সম্পাদন এবং পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে প্রবাসী ভোট বাস্তবায়ন করা। একইসঙ্গে তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী এজেন্ট নিয়োগ ও ব্যবস্থাপনা। ভুল তথ্য ও অপতথ্য প্রতিরোধ করা, নির্বাচনে এআইয়ের অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ভঙ্গ না করা। লিঙ্গ, বর্ণ ও ধর্ম নিয়ে কোনো বৈষম্য ও ধর্মীয় উপসনালয়কে রাজনৈতিক প্রচারণায় ব্যবহার না করা এবং এআই সম্পাদিত ভিডিও দিয়ে প্রতিপক্ষ, লিঙ্গ ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না করা।
১৬ নভেম্বর আরও ১২ দলের সঙ্গে ইসির সংলাপ
আগামী রোববার (১৬ নভেম্বর) আরও ১২টি দলের সঙ্গে সংলাপে বসবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৃহস্পতিবার ইসির জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মো. আশাদুল হক এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, রোববার (১৬ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত গণফোরাম, গণফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি- বিএসপি ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংলাপ করবে ইসি।
এছাড়া, দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- বাংলাদেশ জাসদ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি- বাংলাদেশ ন্যাপ, তৃণমূল বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে সংলাপ হবে।
এদিকে বৃহস্পতিবার ১২ দলের সঙ্গে সংলাপে বসে ইসি।
ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এবং তার স্ত্রী সিতারা আলমগীরের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল বুধবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান। দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ বাদী হয়ে সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১-এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর (৮৩) ও তার স্ত্রী সিতারা আলমগীর (৮০) ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ অর্থের প্রকৃতি, উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপন করার উদ্দেশে একাধিক ব্যাংক হিসাবে অর্থ স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছেন।
দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আসামিদের নামে ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন হিসাবে মোট বাংলাদেশি ২১৬ কোটি ১ লাখ ৬৩ হাজার ৪৯ টাকা এবং ৬ হাজার ১৮৮ মার্কিন ডলার জমা হয়। পরবর্তীতে ওই সময়ের মধ্যে তা উত্তোলন করা হয়।
এজাহারে আরও বলা হয়, এসব অর্থ মাহবুবুল হক চিশতি, রাশেদুল হক চিশতি, মোহাম্মদ গোলাম রসুল ও মীর আল আমিনের নামীয় বা মালিকানাধীন বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে জমা ও স্থানান্তরিত হয়।
কিন্তু আসামিরা এবং উল্লিখিত ব্যক্তিদের মধ্যে কোনো ব্যবসায়িক সম্পর্ক বা বৈধ আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
দুদক মনে করে, ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থকে বৈধতার ছদ্মাবরণ দিতে এক হিসাব থেকে অন্য হিসাবে স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং সংঘটিত হয়েছে, যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ঘটনার সময়কাল ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এবং ঘটনার স্থান হিসেবে পদ্মা ব্যাংক পিএলসি, যমুনা ব্যাংক পিএলসি, আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসিসহ একাধিক ব্যাংকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।