শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
১৪ আষাঢ় ১৪৩২

নৌকা থাকায় নাম পরিবর্তন হতে পারে মন্ত্রণালয়ের: নৌপরিবহন উপদেষ্টা

নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ২১:১৯

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নামের মধ্যে ‘নৌকা’ শব্দটি থাকায় এ মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘জাহাজ বন্দর মন্ত্রণালয়’ করার প্রস্তাব করা হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।

আজ শনিবার রাজধানীর রমনায় বিআইআইএসএস মিলনায়তনে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের সংলাপে তিনি এ কথা জানান।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, ‘নৌকা থাকায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে জাহাজ বন্দর মন্ত্রণালয় করার প্রস্তাব করা হবে। আমি নৌকা চালাই না, জাহাজ চালাই।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার প্রসঙ্গে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমি মনে করি অভিযুক্তদের ফিরিয়ে আনার দরকার নেই। তাদের অনুপস্থিতেই বিচার করা উচিত। ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালের মতো। হত্যার সব প্রমাণ আছে। নির্দেশদাতা হিসেবে বিচার হবে।’

তিনি বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের কর্মকাণ্ড দেখে মনে হয়নি যে, ওরা আমাদের দেশের পুলিশ। পুলিশের বন্দুক কীভাবে সিভিল পোশাকের মানুষের হাতে গেল? ৭.৬২ রাইফেল তারা কোথায় পেল?’

পুলিশে সংস্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই সংস্কার প্রয়োজন। তারা নিজেরাও সেটা চাচ্ছে। এ জন্য পুলিশ কমিশন করতে হবে। পুলিশকে যদি মানুষের বন্ধু বানাতে হয়, তবে সংস্কার করতেই হবে।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নাৎসিদের মতো জঘন্য কাজ করেছে। এত কম সময়ে এত মানুষ কোথাও মরেনি। এ জন্য শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতেই হবে। প্রয়োজনে আলাদা ট্রায়াল গঠন করতে হবে।’

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের নামের তালিকা প্রকাশ বিষয়ে ক্যাবিনেটে বিস্তারিত কথা হবে বলেও জানান নৌপরিবহন উপদেষ্টা।


জামালপুর ও কিশোরগঞ্জ ২ জেলায় পরীক্ষা দিতে পারেনি ১৮ শিক্ষার্থী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জামালপুর প্রতিনিধি 

জামালপুর ও কিশোরগঞ্জে গতকাল শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি ১৭ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে জামালপুরে প্রবেশপত্র না পাওয়ায় এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি ১৭ জন শিক্ষার্থী। আর কিশোরগঞ্জের ভৈরবে কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি পরীক্ষার্থী মারজিয়া বেগম। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত; রাজু আহমেদ জামালপুর থেকে জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সারাদেশে একযোগে শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি ১৭ জন শিক্ষার্থী। এ নিয়ে সকাল থেকে কলেজ প্রাঙ্গণে আন্দোলন করে পরীক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় প্রশান্তি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে তালা লাগিয়ে গা ঢাকা দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। জানা যায়, জামালপুর শহরের দড়ি পাড়ায় বেসরকারিভাবে কয়েক বছর থেকে পরিচালিত হয়ে আসছে প্রশান্তি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। মাধ্যমিক স্কুলের রেজিস্ট্রেশন থাকলেও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি না থাকায় জেলার বিভিন্ন কলেজ থেকে ছাত্রদের পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন অধ্যক্ষ রেজাউল ইসলাম সেলিম। পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র বাবদ অর্থ নিলেও পরীক্ষার আগে প্রবেশপত্র সরবরাহ করতে পারেনি কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় সকাল থেকে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করেছে ওই কলেজে পরীক্ষা দিতে না পারা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। এ বিষয়ে জানতে প্রশান্তি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল ইসলাম সেলিমের সঙ্গে যোগযোগ করার জন্য কলেজে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইলে একাধিকার কল দিলেও তিনি ধরেননি।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) আফসানা তাসলিম জানান, কোনো শিক্ষার্থী বা অভিভাবক আমাদের কিছু জানায়নি। তবে প্রশান্তি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরীক্ষা বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা লিখিতভাবে আবেদন বা অভিযোগ দিলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। চলতি বছরে এইচএসসি পরীক্ষায় জেলায় ৫২টি কেন্দ্রে ২৬ হাজার ৫৭৫ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে।

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি পরীক্ষার্থী মারজিয়া বেগম। ফরম পূরণ করেও পরীক্ষার প্রবেশপত্র না পাওয়ায় চরম হতাশায় পড়েছে সে ও তার পরিবার। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। মারজিয়া গজারিয়া ইউনিয়নের বাঁশগাড়ি গ্রামের জেড. রহমান প্রিমিয়ার ব্যাংক স্কুল অ্যান্ড কলেজের মানবিক বিভাগের ছাত্রী। সময়মতো ২ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে ফরম পূরণ করলেও পরীক্ষার আগে প্রবেশপত্র তুলতে গিয়ে জানতে পারে, তার অ্যাডমিট কার্ড আসেনি। কলেজ অফিস সহকারী মো. শফিক একাধিকবার আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত জানানো হয়, ‘ডাবল ক্লিকের’ কারণে ফরম বাতিল হয়েছে। মারজিয়া বলেন, ‘আমি টেস্ট পরীক্ষায় ৪.০৭ পেয়েছিলাম, আর ফাইনাল পরীক্ষার জন্য আরও ভালো প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু প্রবেশপত্র না পাওয়ায় বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষায় অংশ নিতে পারিনি। পুরো এক বছর হারিয়ে গেল আমার জীবনের।’ তার বাবা স্বপন মিয়া বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের ভুলে আমার মেয়ে পরীক্ষায় বসতে পারেনি। কলেজের শিক্ষকরা ভুল স্বীকার করে আমাদের বাড়িতে এসে পরের বছর বিনা ফিতে পরীক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে আইনি ব্যবস্থা নিইনি।’ কলেজ অফিস সহকারী মো. শফিক বলেন, ‘ফরম পূরণের সময় ভুল করে ‘ডাবল ক্লিক’ করায় তা বাতিল হয়ে যায়। এটি আমাদের ভুল।’ অধ্যক্ষ শরীফ আহমেদ জানান, ‘ঘটনার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ দায়ী। শিক্ষা বোর্ডে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনো সমাধান হয়নি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শবনম শারমিন বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস.এম কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন, ‘অ্যাডমিট কার্ড বোর্ড থেকে আসার পর দ্রুত বিতরণ করলে ভুল সংশোধনের সুযোগ থাকে। কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠান তা পরীক্ষার আগের দিন দেয়, ফলে এমন সমস্যা হয়। তবে এ ঘটনায় অফিস সহকারীর পক্ষ থেকে বোর্ডে কোনো যোগাযোগ হয়নি।’


ই-কমার্স ‘ধামাকা’ শপিংয়ের ৬২ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গ্রাহকের প্রায় ১১৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ধামাকা শপিং’-এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা প্রায় ৬২ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ক্রোককৃত সম্পদের মধ্যে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এস. এম. ডি. জসীম উদ্দিন চিন্তীর নামে রাজধানীর বনানী মডেল টাউনের ৩ ও ২/এ নম্বর রোডে অবস্থিত ১৪ নম্বর প্লটে নির্মিত একটি বহুতল ভবন (৫ কাঠা জমি), যার বাজারমূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা।

এ ছাড়া, মাইক্রো ট্রেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের নামে গাজীপুরের কাশিমপুর পূর্ব বাগাবাড়ী এলাকায় ৪১ শতাংশ জমি (সি.এস ও এস.এ ১৪৫ নং দাগ; আর.এস ৩৬৫ নং দাগ), যার আনুমানিক মূল্য ১২ কোটি টাকা। সেটিও ক্রোক করা হয়েছে।

সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার আল মামুনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ জুন ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ, মহানগর দায়রা জজ আদালত এই সম্পত্তিগুলোর ওপর ক্রোকাদেশ প্রদান করেন।

তবে আসামিরা বর্তমানে সবাই দেশের বাইরে অবস্থান করছে। তারা আত্মসাৎকৃত অর্থের একটি বড় অংশ বিদেশে পাচার করেছে বলে তদন্তে জানতে পেরেছে সিআইডি।

প্রতিষ্ঠানটি স্বল্পমূল্যে পণ্য সরবরাহের প্রলোভন দেখিয়ে হাজার হাজার গ্রাহক ও সেলারদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। ধামাকা শপিংয়ের নিজস্ব কোনো ব্যাংক হিসাব না থাকলেও তারা ইনভ্যারিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের সাউথইস্ট ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের হিসাব ব্যবহার করে লেনদেন পরিচালনা করত।

সাউথইস্ট ব্যাংকের একটি হিসাব বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেখানে ধামাকা শপিংয়ের ব্যবসা সংক্রান্ত প্রায় ৫৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, অথচ ২০২১ সালের ২৭ জুন হিসাবটিতে মাত্র ৯৩ হাজার ৭৩১ টাকা স্থিতি ছিল— যা অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং আর্থিক জালিয়াতির প্রমাণ বহন করে।

সিআইডির তদন্তে আরও উঠে এসেছে, ধামাকা শপিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে আত্মসাৎকৃত অর্থ প্রতিষ্ঠানের এমডি জসিম উদ্দিন চিশতীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়। এমনকি মাইকো ট্রেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজের অ্যাকাউন্টেও এসব অর্থ অবৈধভাবে হস্তান্তর করা হয়, যা মানি লন্ডারিংয়ের শামিল।


সরকারি ক্রয় পদ্ধতি ডিজিটাল করতে নতুন প্রকল্প নিচ্ছে সরকার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

অন্তর্বর্তী সরকার দেশের সরকারি ক্রয় পদ্ধতি পুরোপুরি ডিজিটাল করা ও সংস্কারের লক্ষ্যে ‘সরকারি সেবার উন্নয়নে ক্রয় আধুনিকীকরণ’(পিএমআইপিএসডি) শীর্ষক পাঁচ বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে। ইউএনবির হাতে আসা একটি নথিতে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।

এতে দেখা যায়, প্রকল্পটিতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি সক্ষমতা বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার।

সরকারি নথি থেকে জানা যায়, এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সরকারি ই-ক্রয় (ই-জিপি) ব্যবস্থাকে দেশের সব সরকারি কেনাকাটার একমাত্র মাধ্যম হিসেবে গড়ে তোলা—যাতে স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা যায়।

এদিকে, প্রকল্পটির প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৫ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা। চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০৩০ সালের জুন পর্যন্ত এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকবে বাংলাদেশ সরকারি ক্রয় কর্তৃপক্ষ ( বিপিপিএ) ও বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)।

মোট ব্যয়ের মধ্যে ৪৩ হাজার ২৯০ কোটি টাকা ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। বাকি ১১ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হবে।

এই প্রকল্পের আওতায় সব সরকারি কেনাকাটা ই- জিপি (সরকারি ক্রয়) ব্যবস্থার আওতায় আনা বাধ্যতামূলক করতে চাইছে সরকার। এ ছাড়া, বিপিপিএয়ের ডেটা সেন্টারের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার উন্নত করে এর কার্যকারিতা বাড়ানোর পাশাপাশি ভবিষ্যৎ রক্ষণাবেক্ষণ ও টেকসই পরিচালনার পরিকল্পনাও করছে সরকার।

তাছাড়া, সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে— নিরাপদ, সময়োপযোগী ও আধুনিক তথ্য বিশ্লেষণ সক্ষমতা গড়ে তোলা; যেখানে ব্যবহার করা হবে খোলামেলা সরকারি চুক্তির তথ্য প্রকাশের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড (ওপেন কন্ট্রাক্টিং ডেটা স্ট্যান্ডার্ডস-ওসিডি’স), কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি।

পাশাপাশি, সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাপনার মানোন্নয়নে সব স্তরের সরকারি ক্রয়-সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের জন্য চুক্তি ব্যবস্থাপনা-ভিত্তিক মধ্য-মেয়াদি সক্ষমতা উন্নয়ন কৌশল তৈরি করারও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

প্রকল্পের আওতায় বহুল ব্যবহৃত পণ্যের জন্য নতুন মানদণ্ড নির্ধারণ করা হবে, যাতে ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি হালনাগাদ করা সহজ হয়। এ ছাড়া, বর্তমান স্ট্যান্ডার্ড টেন্ডার ডকুমেন্টের (এসটিডি) প্রয়োজনভিত্তিক ব্যবহারযোগ্যতা বৃদ্ধি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা স্বাস্থ্য সঙ্কটের সময় জরুরি সরকারি ক্রয়ের জন্যও পদ্ধতি তৈরি করা হবে। একই সঙ্গে, বিপিপিএকে একটি পূর্ণাঙ্গ কর্তৃপক্ষ হিসেবে রূপান্তরের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা তৈরি ও বাস্তবায়ন করা হবে।

এই উদ্যোগটি ২০১৭ সাল থেকে বাস্তবায়িত ‘বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সরকারি ক্রয় আধুনিকীকরণ’ প্রকল্পের সফলতার ধারাবাহিকতায় নেওয়া হচ্ছে।

পিএমআইপিএসডি প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে—বিপিপিএর তথ্যকেন্দ্রকে উন্নত যন্ত্রাংশ ও সফটওয়্যারের মাধ্যমে আধুনিকায়ন করা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং, ওসিডি সংযুক্ত করে নিরাপদ ও তাৎক্ষণিক তথ্য বিশ্লেষণ সক্ষমতা গড়ে তোলা, এবং দুর্যোগের সময় জরুরি সরকারি ক্রয় পদ্ধতি তৈরি করা।

এছাড়াও, প্রকল্পের আওতায় সরকারি ক্রয়চুক্তি ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব দিয়ে মধ্য-মেয়াদি দক্ষতা বৃদ্ধির কৌশল প্রণয়ন, বহুল ব্যবহৃত পণ্যের জন্য নতুন মান নির্ধারণ এবং বিদ্যমান এসটিডির ব্যবহারযোগ্যতা বাড়ানোও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

প্রকল্পের কাজের মধ্যে থাকবে—আধুনিক সরকারি ইলেকট্রনিক ক্রয় তথ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, চুক্তি ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা, ইলেকট্রনিক পেমেন্ট ও সরকারি ই-ক্রয় ব্যবস্থায় ইলেকট্রনিক সই যুক্ত করা, ক্রয় সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের জন্য নতুন অনলাইন প্রশিক্ষণ প্ল্যাটফর্ম চালু করা এবং টেকসই সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়া তৈরি করা।

সরকারি কর্মকর্তারা জানান, বিপিপিএ বর্তমানে দুটি তথ্যকেন্দ্র পরিচালনা করছে—একটি ঢাকার শেরেবাংলা নগরে সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে এবং অন্যটি তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের জাতীয় তথ্যকেন্দ্রে। ২০১৮ সালে স্থাপিত বিপিপিএর নিজস্ব কেন্দ্রটি আরও বেশি কার্যকর, বিস্তৃত সেবা প্রদান ও উন্নত সাইবার নিরাপত্তার জন্য আধুনিকায়নের প্রয়োজন রয়েছে।

২০১১ সালে চালু হওয়া সরকারি ই-ক্রয় ব্যবস্থা সরকারি ক্রয় কার্যক্রমের ডিজিটাল রূপান্তরের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে। এটি দরপত্র প্রস্তুতি ও প্রকাশ থেকে শুরু করে মূল্যায়ন, বরাদ্দ ও চুক্তি ব্যবস্থাপনা পর্যন্ত ক্রয়ের পুরো প্রক্রিয়া পরিচালনা করে। এই ব্যবস্থা সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা বাড়িয়েছে এবং প্রশাসনিক জটিলতা হ্রাস করেছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এই ই-ক্রয় ব্যবস্থা টেকসই সরকারি ক্রয়ের অন্যতম ভিত্তি হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে সরকার। তাছাড়া, এটি জনসেবার মানোন্নয়ন ও সরকারি সম্পদের দক্ষ ব্যবহারের মাধ্যমে নাগরিকদের আরও উন্নত সেবা নিশ্চিত করবে বলেও আশা করা হচ্ছে।


সারাদেশে প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষার মান যাচাইয়ে শুরু হচ্ছে অ্যাসেসমেন্ট টুলস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ঢাকা মহানগরীসহ সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও যাচাইয়ের লক্ষ্যে ‘এসেসমেন্ট টুলস’ ব্যবহারের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। দীর্ঘ ছয় মাস ব্যাপী এই পরিকল্পনা শুরু হচ্ছে ১ জুলাই থেকে।

এই টুলস প্রয়োগের মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার মান, মেধাবিকাশ, স্কুলে উপস্থিতি, স্কুলের চারপাশের পরিবেশ, স্কুলে পাঠদানের পদ্ধতিসহ প্রাথমিক শিক্ষার সার্বিক মান উন্নয়নে ভবিষ্যতে কি পদক্ষেপ নেয়া যায় তা সরে জমিনে যাচাই করে প্রকৃত তথ্য তুলে আনা হবে।

পরবর্তীতে এই টুলস এর মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনা করে ভবিষ্যতে প্রাইমারি শিক্ষার মান ও ভিত্তি আরো শক্তিশালী করার বিষয়ে বাস্তবধর্মী উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ১ জুলাই থেকে আগামী ৬ মাসে এই অ্যাসেসমেন্ট টুলস এর মাধ্যমে সারা দেশের প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার প্রকৃত চিত্র তুলে আনা হবে। জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক, উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বিভাগীয় পর্যায়ে বিভাগীয় কমিশনারগণ স্ব স্ব অধিভুক্ত এলাকার প্রাইমারি স্কুলের এই পদ্ধতির কার্যক্রম তদারকি করবেন।

কর্মকর্তারা জানান, অ্যাসেসমেন্ট টুলস এর মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে পিছিয়ে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার মান উন্নয়নে মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের নিয়োজিত করা হবে। এ বিষয়ে বিষদ পরিকল্পনা সরকারের নেয়া আছে।

এদিকে বুধবার (২৫ জুন) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি এন্ড অপারেশন) মোহাম্মদ কামরুল হাসান, এনডিসি স্বাক্ষরিত এক পত্রে অ্যাসেসমেন্ট টুলস এর মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

পত্রে বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক প্রণীত এসেসমেন্ট টুলস এর মাধ্যমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বাংলা, গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে শিখন অবস্থান নির্ধারণ এবং বিষয়ভিত্তিক কর্মপদ্ধতি ও কর্মপরিকল্পনা অনুসরণ করে শিখন অবস্থার উন্নয়নে স্তরভিত্তিক পাঠদানের ব্যবস্থা করা আবশ্যক। অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের অবস্থার উন্নয়নে প্রস্তুতকৃত এসেসমেন্ট টুলস এর মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর জানায়, বিদ্যালয় পর্যায়ে এসেসমেন্ট টুলেসের ভিত্তিতে শতভাগ শিক্ষার্থীর তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির প্রতিটি শিক্ষার্থীর বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ের বর্তমান অবস্থান আগামী ১ জুলাই থেকে আগস্ট যাচাই করা হবে। সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক যাচাইয়ের কাজ সম্পন্ন করবেন।

পাশাপাশি শিখন অবস্থানের ভিত্তিতে শিখন ঘাটতি দূরীকরণে যথাযথ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী ১৬ থেকে ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকগণ তা বাস্তবায়ন করবেন। একই সঙ্গে শিখন ঘাটতি দূরীকরণে যথাযথ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। আগামী ২৪ জুলাই থেকে ৩১ আগস্টের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকগণ তা বাস্তবায়ন করবেন।

টুলস ব্যবহার করে যেকোনো একটি বিদ্যালয়ের ২৫ ভাগ শিক্ষার্থীর মান পুনঃযাচাই করা হবে। এদের মধ্যে ১০ ভাগ শিক্ষার্থীর শিখন অগ্রগতি যাচাই করা হবে। আগামী ১ জুলাই থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত প্রতি কার্যদিবসে একটি শ্রেণীর একটি বিষয়ের এসেসমেন্ট কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। অধিক শিক্ষার্থী বিশিষ্ট বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত এক দিন কার্যক্রম পরিচালনা করা যেতে পারে। এসেসমেন্ট চলাকালীন অন্যান্য শ্রেণীকার্যক্রম যথারীতি চলবে।

জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের যুগ্ম সচিব মো. কামরুল হাসান বাসসকে বলেন, সরকার প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। এসেসমেন্ট টুলসের মাধ্যমে মেধাবী ছাড়াও পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদেরও শিক্ষার মানোন্নয় হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেক ভালো ভালো স্কুল আছে আবার পিছিয়ে পড়া স্কুলও আছে আমরা সকল স্কুলেই শিক্ষার মানোন্নয়ন দেখতে চাই এজন্যই এই পরিকল্পনা সরকারের।’


ডেঙ্গুতে আরো ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৯৫

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সময়ে নতুন করে ১৯৫ জন রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মৃতদের মধ্যে একজন ১৪ বছর বয়সী কিশোর ও অন্যজন ৪৮ বছর বয়সী নারী রয়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যায় বরিশাল বিভাগ শীর্ষে , যেখানে ৭৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। ঢাকা মহানগরীতে এ সংখ্যা ৬০ জন, অন্যদিকে ঢাকা বিভাগের (সিটি করপোরেশন বাদে) হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৩০ জন। রাজশাহী বিভাগে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ১৮ জন, চট্টগ্রামে ৮ জন, সিলেটে ৩ জন এবং ময়মনসিংহে ২ জন।

চলতি বছর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হযে এ পর্যন্ত মোট ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ২০ জন পুরুষ ও ১৮ জন নারী । এছাড়া দেশে এবছর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯,০৬৫ জনে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব হাসপাতালে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে বরিশালে আক্রান্তের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বাড়ায় সেখানে বিশেষ নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জনগণকে বাড়ির আশেপাশে পানি জমতে না দেওয়া, মশারি ব্যবহার এবং জ্বর দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।


দেশের সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল বসানোর নির্দেশ

বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ‘জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি’ শীর্ষক বৈঠকে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

দেশের সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল বসিয়ে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ‘জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি’ শীর্ষক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এ নির্দেশ দেন।

বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তারা জানান, ইন্টারন্যাশনাল রিনিউবেল এনার্জি এজেন্সির ২০২৪ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সৌরবিদ্যুৎ প্রসার ও ধার্যকৃত লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় অনেক পিছিয়ে রয়েছে। ভারতে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ২৪ শতাংশ, পাকিস্তানে ১৭.১৬ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ৩৯.৭ শতাংশ সৌরবিদ্যুৎ থেকে পূরণ হলেও বাংলাদেশে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার মাত্র ৫.৬ শতাংশ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে থাকে।

নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা ২০২৫ অনুযায়ী, নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ২০ শতাংশ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ইতোমধ্যেই ৫ হাজার ২৩৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার স্থলভিত্তিক ৫৫টি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রের টেন্ডার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে এটি বাস্তবায়নে ২০২৮ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য ‘জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি’ গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেন। এর অংশ হিসেবে তিনি সকল সরকারি ভবন, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও সকল সরকারি হাসপাতালের ছাদে রুফটপ সোলার সিস্টেম স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি ভবনে সোলার প্যানেল বসানোর কাজটি বেসরকারি উদ্যোগে করা যায় কি না, সে ব্যাপারে বিবেচনা করুন। যারা বসাবে, তারা নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থেই এটার রক্ষণাবেক্ষণ করবে ও কার্যকরভাবে এটা পরিচালনা করবে। সরকারের পক্ষ থেকে শুধু ছাদটা দেওয়া হবে, বাকি কাজ তারাই করবে।’

তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যে সকল প্রতিষ্ঠান রুফটপ সোলার প্যানেল করেছে, তাদের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। তারা কী ধরনের সমস্যায় পড়েছে, সেগুলো জানতে হবে। সেই সমস্যাগুলো সমাধানের দিকে যেতে হবে।’

এ প্রক্রিয়ায় সরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য কোনো বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হবে না এবং সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত ছাদের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো ভাড়া পাবে।

বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনসহ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ এবং মাধ্যমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


আবু সাঈদ হত্যা মামলা: তদন্তে অভিযুক্ত ৩০ জন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউসনের কাছে জমা দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র‍্যাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এতে ৩০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম প্রতিবেদন পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেন।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদনে ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এই প্রতিবেদনটি যাচাই-বাছাই করে আগামী রবিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র‍্যাইব্যুনাল-২-এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ হিসেবে উপস্থাপন করা হবে বলে আশা করছি।’

এর আগে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র‍্যাইব্যুনালে এই মামলার চার আসামিকে ট্র‍্যাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এরপর আসামিদের মধ্যে পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন ও সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে ১৮ জুন এবং বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী আকাশকে ১৯ জুন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন ট্র‍্যাইব্যুনাল-১।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে সারা দেশে যখন আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে, তার মধ্যে ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ।

২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বাদশ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরস্ত্র আবু সাঈদের পুলিশ কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদেই সোচ্চার হন বহু মানুষ, যাতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।


মাদকাসক্তদের জন্য পৃথক কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা করছে সরকার

‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস ২০২৫’ উদযাপন উপলক্ষ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী । ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৬ জুন, ২০২৫ ১৫:৫৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

মাদকাসক্তদের জন্য সরকার বিভাগীয় পর্যায়ে পৃথক কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এ ছাড়া দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে ‘মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র’ নির্মাণ প্রকল্পে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস ২০২৫’ উদযাপন উপলক্ষ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা জানান।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘সম্প্রতি সাতটি বিভাগীয় শহরে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাতটি বিভাগীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। এ ছাড়া মাদকাসক্তদের জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে পৃথক কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনাও সরকারের রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার ইতোমধ্যে ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (কর্মকর্তা-কর্মচারী) অস্ত্র সংগ্রহ ও ব্যবহার নীতিমালা-২০২৪’ প্রণয়ন করেছে। এই নীতিমালার আওতায় অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রথম ব্যাচের অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ প্রদান সম্পন্ন হয়েছে।’

এর ফলে আভিযানিক ঝুঁকি কমানোর পাশাপাশি অধিদপ্তরের মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনায় আরও সাফল্য আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতে হলে তরুণ সমাজকে অবশ্যই মাদকমুক্ত রাখার কথা জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘যেকোনো দেশের উন্নতির প্রধান নিয়ামক হলো কর্মক্ষম বিপুল যুবশক্তি। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যখনই বৈষম্য, বঞ্চনা, অবিচার ও মূল্যবোধের সংকট তৈরি হয়েছে, তখনই যুব সমাজ সংকল্প ও ঐক্যের মাধ্যমে তা প্রতিহত করেছে। জুলাই ছাত্র-যুব-জনতার গণঅভ্যুখান যুব সমাজ এবং তারুণ্যেরই বিজয়। উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতে হলে তরুণ সমাজকে অবশ্যই মাদকমুক্ত রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে মাদক চোরাচালানের একটি ভয়াবহ বিষয় হলো নারী, শিশু ও কিশোরদের এ গর্হিত কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে তাদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি তাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে।’

এ সমস্যা সমাধানের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার একটি বহুমাত্রিক সমস্যা। শুধু আইনের প্রয়োগে এর সমাধান করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি মাদকবিরোধী সামাজিক আন্দোলনে সর্বস্তরের জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করতে হবে’- যোগ করে বললেন উপদেষ্টা।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন সিনথেটিক ও সেমি-সিনথেটিক ড্রাগস বা নতুন ধরনের মানসিক প্রভাবসৃষ্টিকারী মাদকদ্রব্যের (এনপিএস) আবির্ভাবের ফলে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারজনিত সমস্যা আরও ঘনীভূত হয়েছে।’

‘এসব মাদক নিয়ে নতুনভাবে কর্মকৌশল তৈরি করতে হচ্ছে। এসব নতুন মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এগুলোকে আইনের তফসিলভুক্ত করার পাশাপাশি কৌশলগত নজরদারি বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব নাসিমুল গনি।

খোদা বখস চৌধুরী বলেন, ‘যে পরিবারের সদস্য মাদকাসক্ত হন, কেবল তারাই এর গভীরতা, ভয়াবহতা ও ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বুঝতে পারে। মাদকের বিষয়ে সামাজিক প্রতিরোধের দিকটি ইদানীং কমে গেছে। এটিকে বাড়িয়ে মাদকের পারিবারিক, ব্যক্তিক ও রাষ্ট্রীয় কুফল থেকে মানবজাতিকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্টদের আরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’

নাসিমুল গনি বলেন, ‘মাদকের উৎপাদন বাংলাদেশে হয় না। পাশ্ববর্তী দেশ থেকে পাচারের মাধ্যমে আমাদের দেশে এসে এটি যুব সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তাই মাদকের সরবরাহ বন্ধ করতে হবে। আর এটিকে সফল করতে হলে আমাদের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও তৎপর হতে হবে এবং জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।’

অনুষ্ঠানে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী কার্যক্রমের ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থী, সেরা তিনটি বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের প্রতিনিধি এবং মাদকবিরোধী প্রচারণা, উদ্বুদ্ধকরণ ও গবেষণায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ সেরা দুইটি প্রতিষ্ঠানের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। তাছাড়া দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রকাশিত স্যুভেনির ও বার্ষিক মাদক প্রতিবেদনের মোড়ক উন্মোচন করেন তিনি।

এর আগে, বেলুন উড়িয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।


প্রতিটি আটক কেন্দ্রে ‘নির্যাতনের সরঞ্জাম’ ছিল: গুম তদন্ত কমিশন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন জানিয়েছে, ৫ আগস্ট ২০২৪ পরবর্তী সময়ের প্রমাণ ধ্বংসের চেষ্টার পরও তারা দেশের প্রায় প্রতিটি আটক কেন্দ্রে বিশেষ জেরা কক্ষ ও নির্যাতনের যন্ত্রপাতির অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছে।

কমিশনের দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনের সপ্তম অধ্যায়ে বলা হয়েছে, ‘আমরা যে সব আটক কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি, তার প্রায় প্রতিটিতেই নির্যাতনের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত জেরা কক্ষ ছিল।’

প্রতিবেদনটি বলছে, প্রমাণ ধ্বংসের নানা চেষ্টা সত্ত্বেও কিছু আলামত উদ্ধার করা গেছে, যা নির্যাতনে ভুক্তভোগীদের বিবরণীর সঙ্গে মিলে গেছে। উদাহরণ স্বরূপ, র‌্যাব-২ ও সিপিসি-৩-এ ঘূর্ণায়মান চেয়ার, র‌্যাব-৪ ও ডিবিতে ব্যবহার করা ‘যম টুপি’ ও টাস্কফোর্স ইন্টাররোগেশন (টিএফআই) সেলে মানুষকে ঝুলিয়ে নির্যাতন করার যন্ত্রের (পুলি সিস্টেম) অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ধ্বংস করা প্রায় প্রতিটি স্থানে সাউন্ড প্রুফিংয়ের চিহ্ন পাওয়া গেছে। কক্ষগুলো এমনভাবে তৈরি ছিল, যেন নির্যাতনের শিকারদের চিৎকার বাইরের কেউ শুনতে না পায়। কিছু কেন্দ্রে নির্যাতনের শব্দ ঢাকতে উচ্চস্বরে গান বাজানো হতো, যা আবার নির্যাতকদের মনোরঞ্জনের মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহৃত হতো।


ভুক্তভোগীরা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে দীর্ঘসময় ধরে অসহনীয় কষ্টভোগ করেছেন। তাদের প্রায়ই নিয়মিত প্রহরীদের অর্ধেক খাবার দেওয়া হতো, হাতকড়া পরিয়ে ও চোখ বেঁধে রাখা হতো ও সম্পূর্ণ নির্জন কক্ষে আটকে রাখা হতো।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘নিজেদের ভাগ্য সম্পর্কে অনিশ্চয়তা আর এসব নিষ্ঠুর বাস্তবতার কারণে, তারা অবিরত মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করেছে।’

কমিশন আরও জানিয়েছে, নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের বেশিরভাগ সময়েই গুম করে রাখা হতো, যাতে আইনি জবাবদিহির ভয় ছাড়াই তাদের ওপর নির্যাতন চালানো যায়।

ভুক্তভোগীরা কখনও আদালতে হাজির হবেন কি-না, নাকি রাষ্ট্রীয় রেকর্ড থেকে একেবারে মুছে যাবেন, এই অনিশ্চয়তা এমন এক পরিবেশ তৈরি করেছিল, যা অপরাধীদের সাহস অনেক বাড়িয়ে দিয়েছিল। ফলে নির্যাতন সহজেই চলতো এবং তা থামানো বা তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার মতো কেউ থাকত না।

প্রতিবেদনের দ্বিতীয় অংশে বলা হয়েছে, যারা নির্যাতন চালাতো, তারা অনেক সময় বাড়তি নজরদারির আশঙ্কায় প্রমাণ গায়েব করত। আবার কিছু ক্ষেত্রে নির্যাতনের দাগ মুছে যেতে বা ক্ষত সেরে উঠতে কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করত। এরপরই কাউকে জনসমক্ষে হাজির করত, যাতে তাদের অপরাধের কোনো স্পষ্ট চিহ্ন না থাকে।

প্রতিবেদন বলছে, নিয়মিত যন্ত্রণা ছাড়াও নির্যাতনের সবচেয়ে সাধারণ প্রচলিত ধরণ ছিল মারধর। এছাড়া, মূত্রত্যাগের সময় যৌনাঙ্গে বিদ্যুৎ শক দেওয়া, ঘূর্ণায়মান চেয়ার ব্যবহার করে কষ্ট দেয়া ও পুরো শরীর ঢেকে অত্যাচার করার মতো যন্ত্রপাতি দিয়ে নির্যাতন চালানো হতো।

কমিশন লক্ষ্য করেছে, নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা দীর্ঘ সময় ধরে নিয়মিতভাবে এতে অংশ নিয়েছেন, যা প্রমাণ করে এটি ছিল একটি সুসংগঠিত ও ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। কারণ, এ ব্যবস্থাকে সচল রাখতে যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, জনবল প্রশিক্ষণ ও নির্যাতনের পদ্ধতি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গড়ে তোলা হয়েছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্যাতনের ব্যাপকতা ও এর ধারাবাহিকতা স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে, এটি শুধু মাঠ পর্যায়ে অনুমোদিত ছিল না, বরং ক্ষমতার শীর্ষ পর্যায় থেকেও এর পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনটি বলেছে, ক্ষমতার উচ্চ পর্যায়ের স্পষ্ট অনুমোদন ছাড়া এ ধরনের নির্যাতন ব্যবস্থা গড়ে তোলা ও দীর্ঘসময় ধরে চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। কারণ, এর জন্য অবকাঠামো, যন্ত্রপাতি কেনা ও রক্ষণাবেক্ষণে বাজেট বরাদ্দ লাগত।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ‘এই মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় শুধু মাঠপর্যায়ের অপরাধীদের ওপরই পড়ে না, এর দায় বর্তায় সেই সব শীর্ষ কর্মকর্তা ও কমান্ডিং অফিসারদের ওপরও- যারা এ সব কর্মকাণ্ডে অনুমোদন দিয়েছেন বা উৎসাহিত করেছেন।’


সুষ্ঠু পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এইচএসসি: শিক্ষা উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার জানিয়েছেন, সারাদেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সম্পূর্ণ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ভাসানটেক সরকারি কলেজ ও সরকারি বাঙলা কলেজ পরিদর্শন শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।

উপদেষ্টা বলেন, "পরীক্ষার প্রথম দিন থেকেই সব কেন্দ্রে সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রয়েছে। পরীক্ষার্থীরা সময়মতো উপস্থিত হয়েছে এবং নির্ধারিত নিয়মে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, শিক্ষা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় আমরা এই সাফল্য অর্জন করেছি।"

তিনি আরও বলেন, "প্রশ্নফাঁসের গুজব রোধ এবং নকলমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছে। তবে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো সমস্যার কথা শোনা যায়নি।”

এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। লিখিত পরীক্ষা ১০ আগস্ট পর্যন্ত চলবে বলে জানানো হয়েছে।

পরিদর্শনকালে কেন্দ্রের অধ্যক্ষ, কেন্দ্র সচিব, কক্ষ পরিদর্শক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


ঢাকার বাতাস আজ কুয়েত সিটির চেয়েও ভালো

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

বিশ্বের অন্যতম জনবহুল রাজধানী ঢাকায় আজ সকালের বাতাসের মান কুয়েত সিটির চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকাল সোয়া ৯টার দিকে ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ছিল ৬৬, যা ‘মাঝারি’ শ্রেণিভুক্ত। বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ৩৮তম, যেখানে কুয়েত সিটি ৩৭তম স্থানে রয়েছে।

আজকের তালিকায় সবচেয়ে দূষিত শহর ছিল বাহরাইনের মানামা (১৯৮), কাতারের দোহা (১৭৭) এবং আফগানিস্তানের কাবুল (১৭৪)।

বায়ুমানের একিউআই সূচক প্রতিদিনের বায়ু দূষণ পরিস্থিতি তুলে ধরে এবং একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা পরিষ্কার বা দূষিত এবং তার স্বাস্থ্যগত প্রভাব কী হতে পারে, সে বিষয়ে ধারণা দেয়।

একিউআই সূচক ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’ বলে গণ্য করা হয়। আর ৫০ বা তার কম হলে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়।

কণা দূষণের এই সূচক ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর ঝুঁকি সৃষ্টি করে।

বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।

ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।


রথযাত্রা উপলক্ষে রাজধানীতে নিরাপত্তা জোরদার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

আগামীকাল (২৭ জুন) হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ‘রথযাত্রা’ উপলক্ষে রাজধানীজুড়ে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

উৎসবের শান্তিপূর্ণ আয়োজন নিশ্চিত করতে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল, সোয়াট, গোয়েন্দা সংস্থা ও বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার এস এম সাজ্জাত আলী জানিয়েছেন, ‘রথযাত্রা যেন সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও নির্বিঘ্নভাবে উদ্‌যাপন করা যায়, সে লক্ষ্যে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

২৭ জুনের রথযাত্রা ও ৫ জুলাই পালিতব্য ‘উল্টো রথযাত্রা’ উপলক্ষে আয়োজিত এক সমন্বয় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

সভায় জানানো হয়, নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে নগরজুড়ে বসানো হবে বিপুল সংখ্যক সিসিটিভি ক্যামেরা। মোতায়েন থাকবে ডিবি, সোয়াট, বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ও ট্র্যাফিক পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ডিবির একটি অংশ থাকবে সাদা পোশাকে, যারা গোটা আয়োজন পর্যবেক্ষণে রাখবে।

বাংলাদেশে রথযাত্রা মূলত জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি নিয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা হিসেবে পালিত হয়।

রাজধানীর স্বামীবাগ আশ্রম থেকে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন) মূল রথযাত্রা অনুষ্ঠান আয়োজন করছে। এর পাশাপাশি শহরের রামসীতা মন্দির, শাঁখারীবাজার ও জগন্নাথ জিউ মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থানে এই উৎসবের আয়োজন করা হবে।

ডিএমপি কমিশনার আরো বলেন, ‘ঢাকায় রথযাত্রা একটি বড় শোভাযাত্রা। তাই সবার সতর্ক থাকা জরুরি।’

তিনি রথযাত্রা আয়োজকদের নির্ধারিত সময়ে শোভাযাত্রা শুরু ও শেষ করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘সব ধর্মীয় উৎসবে আমরা নিরবচ্ছিন্ন নিরাপত্তা দিয়ে থাকি। সম্মিলিতভাবে কাজ করলে এই আয়োজনও সফল হবে।’

রথযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে যে, আজান ও নামাজের সময় লাউড স্পিকার ব্যবহার না করা, নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা, ব্যাগ বা প্যাকেট বহন না করা ও সন্দেহজনক কিছু লক্ষ্য করলে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানানো।

ডিএমপি’র যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ সমন্বয় সভায় পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন- ডিএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ডিজিএফআই, এনএসআই, এসবি, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি ও রথযাত্রা উদ্‌যাপন কমিটির নেতারা।


ময়মনসিংহে দোকান থেকে মালামাল লুটের অভিযোগে মামলা মোবাইল ব্যবসায়ীর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি  

ময়মনসিংহ শহরের একটি মোবাইলের দোকান থেকে সম্প্রতি মালামাল লুটের ঘটনায় মামলা করেছেন একজন ব্যবসায়ী।

কোতোয়ালি মডেল থানা মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাতে মামলাটি গ্রহণ করে।

গত ২০ জুন মালামাল লুটের ঘটনার পর মামলা করতে গেলেও শুরুতে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ করেন আতিকুর রহমান খান।

এ ব্যবসায়ীর ভাষ্য, হারুন টাওয়ার নামের যে মার্কেটে তার দোকান, সেখানকার মালিক গোলাম আম্বিয়া হারুনের প্রভাবে এতদিন মামলা নেয়নি কোতোয়ালি মডেল থানা।

কী আছে মামলার এজাহারে

আতিকুর রহমান খান কোতোয়ালি মডেল থানায় মার্কেট মালিক হারুনসহ ১০ থেকে ১২ জনের নামে মামলা করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আতিকুর ২০০৬ সালের এপ্রিল থেকে ময়মনসিংহ শহরের ৭ নম্বর সি কে ঘোষ রোডে হারুন টাওয়ারের নিচ তলায় ‘সাঈম টেলিকম’ নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন। তিনি আট লাখ টাকায় ৫ নম্বর দোকানটির পজেশন কেনেন। এ ছাড়া চুক্তির শর্ত অনুযায়ী নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করেন।

এতে বলা হয়, ১৮ জুন মার্কেট মালিক হারুন জানান, ১৯ জুন হারুন টাওয়ারের নিচতলার সব দোকানপাট বন্ধ থাকবে। সে কথা অনুযায়ী তিনি দোকানটি বন্ধ রাখেন। পরবর্তী সময়ে ১৯ জুন তিনি জানতে পারেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ দিয়ে মার্কেটে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা হচ্ছে। এ খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি মার্কেটে গিয়ে হারুনের দেখানো মতে ১৩টি দোকানের উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু দেখেন।

ব্যবসায়ীর এজাহারে উল্লেখ করা হয়, উচ্ছেদের বিষয়ে হারুনের সঙ্গে কথা বললে তাকে জানানো হয়, যারা নিয়মিত ভাড়া দিচ্ছেন, তাদের দোকান উচ্ছেদ করা হবে না এবং তিনি যেন বাড়িতে চলে যান। সে কথা অনুযায়ী তিনি বাড়িতে চলে যান, কিন্তু পরের দিন ২০ জুন মাগরিবের নামাজের পর তিনি খবর পান, হারুনসহ অভিযুক্তরা তার দোকানের সব মালামাল নিয়ে যাচ্ছেন। এ খবরের ভিত্তিতে তিনি মার্কেটের সামনে গিয়ে মালামাল নিয়ে যেতে দেখেন।

তার অভিযোগ, মার্কেটের সামনের কলাপসিবল গেটের তালা বন্ধ করে মালামাল নিয়ে যাওয়ার সময় বাইরে থেকে ডাকাডাকি করলেও কর্ণপাত করেননি অভিযুক্তরা। তারা গেটও খোলেননি। এ ছাড়া অভিযুক্তরা দোকান মালিককে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চলে যেতে বলেন।

আতিকুর রহমান খান উল্লেখ করেন, ২০ জুন বিকাল ৩টা থেকে তার দোকানের শাটার, সাইনবোর্ড ও আসবাবপত্র ভাঙচুর শুরু করে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রকাশ্যে মালামাল নিয়ে যান অভিযুক্তরা। এসব পরিস্থিতি দেখে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও অসুস্থ হয়ে পড়েন।

দোকান থেকে মোবাইল, এক্সেসরিজ, আসবাবপত্রসহ মোট ৮৬ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫৩ টাকার মালামাল চুরির অভিযোগ করেন স্বত্বাধিকারী আতিকুর রহমান খান।

এ ছাড়া হারুনসহ অন্যরা দোকান ভাড়া পরিশোধের রসিদ, তিনটি ব্যাংকের চেকবই, বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তিপত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ নথি নিয়ে যান বলে অভিযোগ করেন এ ব্যবাসয়ী।

জানতে চাইলে হারুন টাওয়ারের মালিক গোলাম আম্বিয়া হারুন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে কি না, তা আমার জানা নেই। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ তোলা হয়েছে।’

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, ‘ওই ঘটনার কথা শুনেছি। একটি মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’


banner close