নির্দিষ্ট কিছু নির্মাণ খাতে স্বল্পমেয়াদি চ্যালেঞ্জ থাকলেও বাংলাদেশের নির্মাণশিল্প উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট প্রস্তুত। শিল্পটি পরবর্তী চার প্রান্তিকে ধারাবাহিকভাবে প্রবৃদ্ধির মুখ দেখবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২৪-২৮ সালের মধ্যে বার্ষিক চক্রবৃদ্ধি প্রবৃদ্ধির হার ৯ দশমিক ২ শতাংশ হতে পারে। যেখানে এই খাতের আয় ২০২৮ সালের মধ্যে ৬ দশমিক ৫০ ট্রিলিয়ন (৬ লাখ ৫০ হাজার কোটি) টাকায় পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড মার্কেটসের সাম্প্রতিক সময়ের গবেষণায় এমন চিত্র উঠে এসেছে। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে নির্মাণশিল্পের আয় ১০ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে চলতি বছরই ৪ দশমিক ৫৮ ট্রিলিয়ন (৪ লাখ ৫৮ হাজার কোটি) টাকায় পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ভবন ও অবকাঠামো নির্মাণে প্রবৃদ্ধির গতিপ্রকৃতি, নির্মাণ ব্যয় কাঠামো বিশ্লেষণ এবং বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলোতে নগরায়ণ সম্পর্কিত ১০০-এর বেশি পারফরম্যান্স ডেটা (কেপিআই) বিশ্লেষণের মাধ্যমে এমন চিত্র দেওয়া হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত এবং প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা দেশের আবাসিক, বাণিজ্যিক, প্রাতিষ্ঠানিক, শিল্প এবং অবকাঠামোতে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাকেই চিহ্নিত করছে বলে গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সরকারি সহায়তা, নগরায়ণ এবং বিদেশি বিনিয়োগ চাহিদা এই শিল্পের প্রধান চালিকাশক্তি। ফলে শিল্পটি সামনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং সুযোগ গ্রহণের ব্যাপারে ভালো অবস্থানে রয়েছে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
সরকারের উদ্যোগ, নগরায়ণ এবং ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি এই শিল্পের উন্নয়নে অবদান রাখছে। মূলত এসব কারণেই বাংলাদেশের নির্মাণশিল্প প্রবৃদ্ধির গতিপথে রয়েছে।
অনুঘটক হিসেবে দেখা গেছে, সরকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে অবকাঠামো নির্মাণে জোর, বিশেষ করে পরিবহন ও বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি অন্যতম। ২০৩০ সাল নাগাদ ৪০ গিগাওয়াটের প্রত্যাশিত বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে ২০৩৫ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে ৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। এই বিপুল বিনিয়োগ নির্মাণ শিল্পের প্রবৃদ্ধিতে বড় অবদান রাখবে।
এ ছাড়া দ্রুত নগরায়ণের ফলে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের চাহিদা বৃদ্ধিও এখানে ভূমিকা রাখছে। এখন বেশি মানুষ শহর এলাকায় চলে যাচ্ছে। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। এতে উন্নত নির্মাণ সুবিধা এবং অবকাঠামোর প্রয়োজন দিন দিন বাড়বে।
পাশাপাশি ২০২২ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) জন্য উল্লেখযোগ্য সরকারি বরাদ্দ, যেমন—২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা বা ২৬ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার রাখাটা পদ্মা সেতু এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো বৃহৎ প্রকল্পগুলোয় বিনিয়োগের প্রবণতা অবকাঠামো খাতে সরকারের আগ্রহকেই প্রতিফলিত করেছে।
আবাসন নির্মাণ খাত ২০২৩ সালে নির্মাণ খাতের সবচেয়ে বড় অংশীদার ছিল। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি এবং আবাসনের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এ খাতে দ্রুত প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া শহরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে সরকারকে আবাসন চাহিদা পূরণে সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন প্রকল্পগুলোয় মনোনিবেশ করতে দেখা যায়। যা আগামী বছরগুলোতে এ খাতের প্রবৃদ্ধিকে সমর্থন করবে।
সাশ্রয়ী আবাসনের পাশাপাশি বিলাসবহুল অবকাঠামোতে বিনিয়োগের প্রবণতাও বাড়ছে। বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের চাহিদা বাড়ছে, বিশেষ করে শহরের প্রাণকেন্দ্রে এ ধরনের অবকাঠামো নির্মাণের প্রবণতা নির্মাণ শিল্পে বৈচিত্র্য আনছে।
পর্যটনে গুরুত্ব এবং অফিস ও ছোট বাণিজ্যিক অবকাঠামোতে বিনিয়োগের কারণেও বাণিজ্যিক নির্মাণ খাত বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। অবকাশ এবং আতিথেয়তার (হসপিটালিটি) প্রকল্পগুলোতেও সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে, যেখানে সরকার ভ্রমণ বিধিনিষেধ ক্রমান্বয়ে সহজ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বও (পিপিপি) বাণিজ্যিক নির্মাণ, অফিস ভবন এবং লজিস্টিক সুবিধার উন্নয়নে সহায়তা করছে।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা সুবিধাগুলোতে সরকারি ও বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বৃদ্ধির সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক নির্মাণ গতি পাচ্ছে। বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে, উদ্ভাবন এবং উন্নয়নের প্রতি বৃহত্তর প্রতিশ্রুতি নির্মাণ শিল্পকে সামনে এগিয়ে নিতে অবদান রাখবে।
২০৩০ সালের মধ্যে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরিতে বিগত সরকারের পরিকল্পনা এগিয়ে নিলে বিশেষত উৎপাদন এবং প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রগুলো নির্মাণ শিল্পের জন্য উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকশিল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধি নির্মাণ শিল্পকে আরও জোরদার করবে।
যোগাযোগ অবকাঠামোতে এখনো প্রচুর বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। পদ্মা সেতু এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাদেও পরিবহন ও বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ খাতে বিনিয়োগের অবারিত সুযোগ রয়েছে। রেল ও সড়ক অবকাঠামোতে বিনিয়োগ বাড়লে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেও গতি আসবে।
এই খাতে পরিবেশগত বিষয়টিও এখন গুরুত্ব পাচ্ছে। বিশেষ করে পরিবেশবান্ধব ভবন নির্মাণে আগ্রহ বাড়ছে। এটিকেই এখন বলা হচ্ছে টেকসই নির্মাণ। এই চর্চা বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নের ভবিষ্যৎ গড়ে দিতে পারে বলে গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সাক্ষাতের তথ্য জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে তাদের সাক্ষাতের আলোচনার বিষয়ে কোনো তথ্য জানানো হয়নি।
দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আজ শনিবার সকালে ঢাকায় পৌঁছেছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী তোবগে। বিমানবন্দরে তাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান।
বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে দুই নেতার মধ্যে সংক্ষিপ্ত বৈঠক হয়। এরপর ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান।
আজ বেলা ৩টায় তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে তোবগের একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
সন্ধ্যায় তিনি তার সম্মানে আয়োজিত আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে অংশ নেবেন।
নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর বিলুপ্ত করার অপচেষ্টা বন্ধ এবং জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠনের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়ক অবরোধ করেছে বাংলাদেশ নার্সিং অ্যাসোসিয়েশন।
শনিবার (২২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সড়ক অবরোধ করা হয়। এর ফলে পল্টন মোড় থেকে কদম ফোয়ারামুখী সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। এরপর যানবাহনগুলোকে ডাইভারশন করে বিজয় নগর কাকরাইল সড়কের দিকে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে শাহবাগ থানায় পরিদর্শক (পেট্রোল) বুলবুল আহমেদ বলেন, নার্সদের সমাবেশকে কেন্দ্র করে পল্টন মোড় থেকে যানবাহনগুলোকে ডাইভার্সন করে কাকরাইল রুটের দিকে দেওয়া হয়েছে। তবে তারা শিগগিরই সড়ক ছেড়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন।
আন্দোলনকারীরা জানান, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরে নার্সদের জন্য সৃজনকৃত সব পদে জ্যেষ্ঠ, অভিজ্ঞ ও যোগ্য নার্স কর্মকর্তা পদায়ন করা হোক। ১৯৭৭ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত নার্স কর্মকর্তারাই নার্সিং শিক্ষা, প্রশাসন ও নার্সিং সেবা কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালিত হচ্ছিল। কিন্তু ২০১৬ সাল থেকে প্রশাসন ক্যাডার থেকে মহাপরিচালক ও পরিচালক নিয়োগ হওয়ার পর থেকে নার্সরা বদলি, পদোন্নতি, নার্স নিয়োগ ও উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে অবর্ণনীয় হয়রানির শিকার হয়ে আসছেন।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপতৎপরতা ও এআইয়ের অপব্যবহার ঠেকাতে নির্বাচন কমিশনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে প্রস্তুত ইসি।
শনিবার সকালে এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস এর কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঐতিহাসিক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি রেকর্ডসংখ্যক আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফরে থাকা ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে শনিবার সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি বেদিতে ফুল অর্পণ করেন, দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন এবং পরে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে একটি গাছ রোপণ করেন।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শনিবার সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ড্রুকএয়ারের একটি ফ্লাইটে অবতরণ করেন। বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাকে স্বাগত জানান। এরপর ভিআইপি লাউঞ্জে দুই নেতা সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন, যেখানে প্রধানমন্ত্রী তোবগে শুক্রবারের ভূমিকম্পে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে খোঁজখবর নেন এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
বৈঠকের পর তাকে তোপধ্বনি এবং গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। বিমানবন্দর আনুষ্ঠানিকতা শেষে তিনি স্মৃতিসৌধের উদ্দেশে রওনা হন।
আজ দুপরে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য উপদেষ্টাদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বিকেল ৩টার দিকে তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে অংশ নেবেন। সন্ধ্যায় তার সম্মানে একটি নৈশভোজের আয়োজনও করা হবে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটি ঐতিহাসিক নির্বাচন হতে চলেছে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
তিনি বলেন এবারের নির্বাচনে অংশীদার হতে রেকর্ড সংখ্যক আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক অংশ নেবেন। এ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের পুণ:সূচনা হবে।
শনিবার সকালে রাজধানীর হোটেল লেকশোর হাইটসে এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনের আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একটি কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
এদিকে রোজার আগে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তারিখ ধরে প্রায় ৬০ দিন সময় রেখে তফসিল ঘোষণা করার কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এ ব্যাপারে দিনক্ষণ সুনির্দিষ্ট না হলেও ইসির হিসাবে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে হতে পারে তফসিল ঘোষণা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের (ডাকসু) স্বতন্ত্র সদস্য উম্মা উসওয়াতুন রাফিয়ার ময়মনসিংহের বাসার গেইটে হাতবোমা নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতে নগরের বিভিন্ন স্থানে পৃথক অভিযানে ময়মনসিংহ জেলা ডিবি ও কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন– কেওয়াটখালী এলাকার মো. মাসুদ রানা (৪৫), আকুয়া বোর্ডঘর এলাকার মো. আরিফ (৩০), মো. বিপুল (২১) এবং আকুয়া ওয়্যারলেস গেইট এলাকার মো. রাজন (১৯)।
গত বুধবার রাত ৩টার দিকে ময়মনসিংহ নগরের ঢোলাদিয়া এলাকায় রাফিয়ার পরিবারের বাড়ির গেইটে ককটেল নিক্ষেপ করা হয় এবং অগ্নিসংযোগের চেষ্টা চালানো হয়।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে রাফিয়ার ভাই খন্দকার জুলকারনাইন কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পরে তা মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘চারজনকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্য অজ্ঞাত দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান আছে।’
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৭ এবং এটি কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী ছিল। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার নিকটবর্তী নরসিংদী জেলার মাধবদী উপজেলা।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নরসিংদী ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল হওয়ার পিছনে যৌক্তিক কারণ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির ল্যামন্ট-ডোহার্টি আর্থ অবজারভেটরির অধ্যাপক মাইকেল স্টেকলার ও লিওনার্দো সিবারের গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলের মধ্যে একটি। দেশটি তিনটি টেকটোনিক প্লেটের—ভারতীয়, ইউরেশিয়ান ও বার্মিজ—মিলনস্থলে অবস্থিত।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, শুক্রবারের ভূমিকম্পটি ভারতের প্লেটের গভীরে রিভার্স ফল্টিংয়ের কারণে হয়েছে। ভূতত্ত্বে রিভার্স ফল্ট হলো এক ধরনের ডিপ-স্লিপ ফল্ট, যেখানে ভূপৃষ্ঠের চাপের কারণে দুটি শিলা ব্লক স্থানচ্যুত হয়ে একটির উপর আরেকটি উঠে আসে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পূরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদি আহমেদ আনসারী বলেন, দেশে অন্তত ৫টি গুরুত্বপূর্ণ ফল্ট লাইন রয়েছে। এর মধ্যে নোয়াখালী থেকে সিলেট পর্যন্ত ফল্ট লাইনটি শুক্রবারের ভূমিকম্পের কারণ হিসেবে অনুমান করা হচ্ছে। এর আগে, গত মার্চে মিয়ানমারে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্প ভারতের এবং ইউরেশিয়ান প্লেটের স্ট্রাইক-স্লিপ ফল্টিংয়ের কারণে হয়েছিল।
ভূমিকম্পে ভেঙে ও হেলে পড়েছে বিভিন্ন স্থাপনা ও ভবন। এতে সারাদেশে অন্তত ১০ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আহত হয়েছেন ৫৫০-এর বেশি ব্যক্তি, যারা বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার রাত ৮টা পর্যন্ত দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ৫৫০-এর বেশি আহত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৬৭ জনকে ভর্তি করা হয়েছে এবং গুরুতর আহত ১৬ জনকে অন্য হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগে। ভুটানের নেতাকে বহনকারী ড্রুক এয়ারের একটি বিমান সকাল ৮টা ১৫ মিনিটের দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (এইচএসআইএ) অবতরণ করে। পরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তাকে স্বাগত জানান।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং তা নিশ্চিত করেছেন।
দুই নেতা বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে একটি সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন। যেখানে প্রধানমন্ত্রী টোবগে শুক্রবারের ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির বিষয়ে খোঁজখবর নেন এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
সাক্ষাতের পর, টোবগেকে একটি অস্থায়ী অভিবাদন মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে তাকে ১৯ বার তোপধ্বনির সালাম এবং গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
বিমানবন্দরে অনুষ্ঠানের পর, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাভারে জাতীয় শহীদ স্মৃতিসৌধে যাবেন। তিনি স্মৃতিস্তম্ভের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন এবং দর্শনার্থীদের বইতে স্বাক্ষর করবেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা বিকেলে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে। এরপর বিকেল ৩টার দিকে তেজগাঁও এলাকায় তার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
প্রধানমন্ত্রী টোবগে সন্ধ্যায় তার সম্মানে আয়োজিত একটি সরকারি ভোজসভায়ও যোগ দেবেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, দেশের খাদ্য-সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও প্রথাগত উৎপাদন ব্যবস্থাকে রক্ষা করা জরুরি। বৈচিত্র্যকে জাতীয় শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘যত বৈচিত্র্য থাকে, দেশ তত সুন্দর হয়।’ এসময় তিনি পলিথিন শপিং ব্যাগ বিষয়ে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘এটি অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।’
শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর পার্বত্য বৌদ্ধসংঘ কমপ্লেক্সে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, জনবল সীমিত থাকলেও পরিবেশ মন্ত্রণালয় অবৈধ ইটভাটা নিয়ন্ত্রণে ধারাবাহিকভাবে সমন্বিত অভিযান পরিচালনা করছে, বিশেষ করে বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলাগুলোতে। এসব অভিযানে বাধা, সড়ক অবরোধ ও হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
‘রাষ্ট্র এখন পরিবেশ ধ্বংসের বিরুদ্ধে বাধা দিচ্ছে- এটাই আশার দিক’ বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
পাহাড় কাটা, ঝাউবাগান ধ্বংস ও প্রাকৃতিক বন উজাড়কে ঝুঁকি বৃদ্ধির প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করে তিনি বলেন, এগুলো কোনোভাবেই ঐতিহ্য রক্ষার উপায় হতে পারে না।
কৃষকদের স্বার্থে বিভাগীয় পর্যায়ে বিপণন কেন্দ্র স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি জোর দিয়ে উল্লেখ করেন।
পরিবেশ, সংস্কৃতিবিষয়ক ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা প্রয়োজন হলে তিনি যথাযথ সুপারিশ করবেন বলেও জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস ও পার্বত্য বৌদ্ধ সংঘের আহ্বায়ক মেজর (অব.) তপন বিকাশ চাকমা। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন- নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন।
পরে পরিবেশ উপদেষ্টা মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন এবং অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এদিন অনুভূত ভূমিকম্প বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে হবে। পাহাড় ও জলাশয় রক্ষা করতে হবে।
‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস–২০২৫’ উপলক্ষে শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন তিন বাহিনীর প্রধানগণ।
প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, শুক্রবার সকালে ঢাকা সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন।
সাক্ষাতের আগে অধ্যাপক ইউনূস ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করা বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বিচারপ্রার্থীর অধিকার নিশ্চিতে স্বচ্ছতা ও দ্রুততার সাথে মামলা নিষ্পত্তিতে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় বিচার প্রশাসন, নির্বাহী প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ একে অপরের পরিপূরক। মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্তরিকতা ও সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে একযোগে ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে বিচারপ্রার্থী মানুষের কল্যাণে নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে। গত বৃহস্পতিবার বিকালে আদালতের সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের উদ্যোগে আয়োজিত পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্সে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, পারস্পরিক মতবিনিময়ের মাধ্যমে ও বিদ্যমান সমস্যাসমূহ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করলে কাজের মূল্যায়ন হয় এবং পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পায়।
কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল, মো. আবু বকর সিদ্দিক, মোহাম্মদ মোস্তফা ও নুসরাত জাহান জিনিয়া।
তা ছাড়া বিশেষ পুলিশ সুপার, সিআইডি, চট্টগ্রাম মো. সালাউদ্দিন, পুলিশ সুপার, পিবিআিই (চট্টগ্রম মেট্রো) মো. রহুল কবির খান, সহকারী পুলিশ সুপার (ডিবি উত্তর) সিএমপি চট্টগ্রাম মো. মোস্তফা কামাল, সহকারী পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) কেশব চক্রবর্তী, জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের প্রতিনিধি সাকিব শাহরিয়ার, চমেক পরিচালকের প্রতিনিধি জুনায়েদ আহমেদ, ফরেনসিক মেডিসিনের ডাক্তার খালেদ হাসান, লেফটেন্যান্ট আবরার তাজওয়ার, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পূর্ব জোন, সিনিয়র জেল সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক, র্যাবের প্রতিনিধি, শিল্প পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ প্রতিনিধি, নৌপুলিশ প্রতিনিধি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য অংশীজনসহ উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. মফিজুল হক ভূইয়া, অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট নেজাম উদ্দিন। অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার সভায় জানান যে গত ১০ মাসে ৫৩২ জন আসামিকে প্রবেশন প্রদান করা হয়েছে। মামলার আলামত নিলামের মাধ্যমে ০১ কোটি ১৫ লাখ টাকা রাস্ট্রীয় কোষাগারে জমা প্রদান করা হয়েছে।
দেশের সব সরকারি হাসপাতালে ভূমিকম্পে আহতদের যথাযথ চিকিৎসার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
আজ শুক্রবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পৌঁছে ভূমিকম্পে আহত চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের খোঁজখবর নেন। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা জানান, “সব হাসপাতালে বলেছি, ভূমিকম্পে আহতদের চিকিৎসায় যেন কোনো ত্রুটি না হয়। সব সরকারি হাসপাতালে নির্দেশনা দেওয়া আছে।”
তিনি আরও বলেন, “যে মাত্রায় ভূমিকম্প হয়েছে, হয়তো কাছাকাছি থাকার কারণে এই মাত্রা বেশি মনে হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় মাত্রা ছিল ৫.৭ রিখটার স্কেলে। তবে আহতের সংখ্যা সেই তুলনায় বেশি হয়েছে। ঢাকার যেসব ছাত্র আহত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই আতঙ্কে দুই-তিন তলা থেকে লাফ দিয়েছেন। আমরা সবাই মিলে সুষ্ঠু চিকিৎসার চেষ্টা করছি।”
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এছাড়া, আরও একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে; তার বাবাও আহত এবং তাঁর অবস্থা গুরুতর। রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালে তিনজন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে একজন ঢাকা মেডিকেলের শিক্ষার্থী।
তিনি আরও জানান, বিভিন্ন জায়গা থেকে আহতদের খবর পাওয়া যাচ্ছে। গাজীপুরের কয়েকজন আহত এবং অনেকে প্যানিকের কারণে হাসপাতালে এসেছেন। “ডাক্তাররা তাদের চিকিৎসা দিয়েছেন। শারীরিকভাবে আহতদেরও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে,” বলেন তিনি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, দুপুর পৌনে তিনটা পর্যন্ত ঢামেকে ৪১ জন চিকিৎসা নিতে আসেন। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীসহ ছয়জনকে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার রাজধানীর সেনানিবাসে আয়োজিত অনুষ্ঠানের সাইডলাইনে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া পারস্পরিক সৌজন্য বিনিময় করেছেন।
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং তাঁর সুস্থতা কামনা করেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান। একই সঙ্গে তিনি প্রধান উপদেষ্টার সহধর্মিণী আফরোজী ইউনূসের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন ও তাঁর দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
সৌজন্য বিনিময়ের সময় খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠ পুত্রবধূ সৈয়দা শর্মিলা রহমান উপস্থিত ছিলেন।