শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
১৩ আষাঢ় ১৪৩২
একনেক বৈঠকে সিদ্ধান্ত

মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের কাজ পাচ্ছে জাপান

মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর। ফাইল ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ৭ অক্টোবর, ২০২৪ ২১:২৪

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের কাজ পাচ্ছে জাপান। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। আজ সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছেন, মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সবচেয়ে বড় প্রকল্প। কোন দেশ এটি নির্মাণ করবে তা নিয়ে বহু বিতর্ক হয়েছে। সব যাচাই-বাছাই শেষে জাপানকে কাজ দেওয়া হচ্ছে। এতে ব্যয় হবে ২৪ হাজার কোটি টাকা। প্রকল্পে আংশিক ঋণ দেবে জাপান। তাদের ঋণের শর্ত ভালো। প্রকল্পে অনিয়ম হলে তা বিচারের জন্য দেশটিতে আইনি কাঠামোও বেশ শক্ত বলে জানান এ উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আজ একনেক সভায় ২৪ হাজার ৪১২ কোটি টাকার চারটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা জানান, আগে থেকে চলমান প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির আগেও ব্যয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণ কিংবা গাড়ি কেনার চেয়ে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি, পার্ক ও লাইব্রেরি নির্মাণ, জলাধার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে। সরকারি প্রকল্পের আওতায় সারা দেশে কতগুলো গাড়ি কেনা হয়েছে, সেগুলো কোথায় আছে, কীভাবে ব্যবহার হচ্ছে সব খতিয়ে দেখবে সরকার।

৫০০ শিক্ষক ভিসি হতে চান, কেউ পড়াতে চান না

ব্রিফিংয়ে শিক্ষা বিষয়েও কথা বলেন পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপাচার্য হওয়ার জন্য শিক্ষকদের তদবিরের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ৫০০ শিক্ষক ভিসি হতে চান। কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতে চান না। সবাই ভিসি হওয়ার জন্য তদবির করেন। শত শত শিক্ষক ভিসি হতে চান। কেউ ভিসি, কেউ প্রো-ভিসি হতে চান।

উন্নয়ন প্রকল্পের সব গাড়ির হিসাব নেবে সরকার

একনেক বৈঠকে সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ি ব্যবহারের হিসাব নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ। বৈঠক শেষে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ বিষয়ে বলেছেন, উন্নয়ন প্রকল্পের গাড়ি কোথায় যায় এবং একজন কর্মকর্তা কয়টা জিপ গাড়ি ব্যবহার করেন এসব খুঁজে বের করা হবে।

তিনি বলেন, এত দিন সরকারি প্রকল্পের আওতায় সারা দেশে কতগুলো গাড়ি কেনা হয়েছে, সেগুলো কোথায় আছে, কিভাবে ব্যবহার হচ্ছে, সব খতিয়ে দেখবে সরকার। প্রকল্প শেষ হলে গাড়িগুলো কেন আর খুঁজে পাওয়া যায় না সব যাচাই করা হবে। এ জন্য জেলা উপজেলাসহ সারা দেশে সরকারি গাড়ি আছে তার একটি তালিকা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে একনেক সভায়। কোন গাড়ি কোথায় আছে, কত দিন কার্যকর থাকে সব তথ্য দিতে বলা হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা।

দুর্নীতি কিছুটা কমলেও চাঁদাবাজি তেমন কমেনি

ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা মন্তব্য করেন তাদের দুই মাসের শাসনামলে ‘দুর্নীতি কিছুটা কমেছে তবে চাঁদাবাজি তেমন কমেনি।’ উপদেষ্টা বলেন, চলতি প্রকল্পগুলো সংশোধন করা হচ্ছে। তাই সময় লাগছে। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ কম হওয়ায় প্রকল্পগুলোর গতি ধীর, এগুলোর অর্থ প্রবাহ বাড়বে না। অর্থ প্রবাহ বাড়াতে আগের প্রকল্পের কাজ এগোতে হবে। নতুন কিছু প্রকল্প হাতে নিতে হবে। তবে আগে থেকে চলমান প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির আগে সেগুলোর ব্যয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রকল্পের আওতায় বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণ কিংবা গাড়ি কেনার চেয়ে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি, পার্ক ও লাইব্রেরি নির্মাণ, জলাধার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে। উপদেষ্টা বলেন, ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের কাজ টাঙ্গাইল পর্যন্ত হয়ে স্থবির হয়ে আছে। সেখানে যথেষ্ট বিদেশি অর্থায়ন আছে। সুদের হারও কম। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। বর্তমান সরকার বিদেশি অর্থায়নের প্রকল্পগুলোকে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

এ ছাড়া ঢাকার বাইরে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে রাজধানীকে বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে বলেও জানান তিনি। আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবেরা উপস্থিত ছিলেন।


১৫তম সোশ্যাল বিজনেস ডে-তে যোগ দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

১৫তম সোশ্যাল বিজনেস ডে উপলক্ষে বিশ্বজুড়ে সামাজিক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত নেতা ও উদ্যোক্তাদের নিয়ে আয়োজিত কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন তিনি। পাশাপাশি মূল প্রবন্ধও উপস্থাপন করবেন নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ।

শুক্রবার (২৭ জুন) সকালে সাভারের জিরাবোতে সামাজিক কনভেনশন সেন্টারে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। একটি সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে আজ প্রথম দিনের অনুষ্ঠান শুরু হয়।

ইউনূস সেন্টার ও গ্রামীণ গ্রুপ আয়োজিত এবারের সোশ্যাল বিজনেস ডে-র মূল প্রতিপাদ্য: ‘সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সোশ্যাল বিজনেসই সর্বোত্তম পথ।’

প্রথম দিনের উদ্বোধনী পর্বে আরও বক্তব্য দেন বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট (১৯৯২–২০০০) ড. ইসমাইল সেরাগেলদিন, গ্রামীণ গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল হাসান ও ইউনূস সেন্টারের রিলেশনস ম্যানেজার জিনাত ইসলাম।

দুদিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের লক্ষ্য হলো, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে বৈষম্য ও সীমাবদ্ধতা মোকাবিলা করে একটি টেকসই, ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক বিশ্ব গড়ে তোলা।

এই আয়োজনে রয়েছে পাঁচটি প্লেনারি ও আটটি ব্রেকআউট সেশন, যেখানে বৈচিত্র্যময় মত ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ পাবেন অংশগ্রহণকারীরা। ৩৪টি দেশের ১৮০ জনের বেশি বিদেশি প্রতিনিধিসহ সহস্রাধিক অংশগ্রহণকারী এতে যোগ দিয়েছেন।

আলোচকদের মধ্যে রয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ সহকারী অধ্যাপক মো. সাইদুর রহমান, মেডট্রনিকের সাবেক সিইও ও চেয়ারম্যান এবং ইন্টেল করপোরেশনের সাবেক বোর্ড চেয়ারম্যান ওমর ইশরাক, জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও নরওয়ের সাবেক পরিবেশ ও জলবায়ুমন্ত্রী এরিক সোলহেইম। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টারাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের সম্প্রসারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ২৯ জুন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যৌথভাবে অনুষ্ঠিত হবে বিশেষ অ্যাকাডেমিয়া ডায়লগ, যেখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকেরা অংশ নিয়ে সমাজে অগ্রগতির চালিকাশক্তি হিসেবে সামাজিক ব্যবসায়ের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করবেন।

এ ছাড়া, সেদিন ৩-জিরো ক্লাব কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে। এই কনভেনশনের উদ্দেশ্য হলো ‘তিন শূন্য’ বা ‘থ্রি জিরো’ অর্জন: শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ, শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণ ও শূন্য বেকারত্ব।


দেশের জন্য সামগ্রিক অবকাঠামো পরিকল্পনা প্রয়োজন : ড. মইনউদ্দিন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. শেখ মইনউদ্দিন আজ বলেছেন, দেশের জন্য একটি সামগ্রিক অবকাঠামো পরিকল্পনা প্রয়োজন যা আমাদের বিদ্যমান সম্পদ ও ভবিষ্যৎ চাহিদা পূরণ করবে।

তিনি বলেন, ‘চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন। একটি সুসংহত পরিকল্পনা সকল স্টেকহোল্ডারদেরকে একই কাঠামোর অধীনে একসাথে কাজ করতে সহায়তা করবে।’

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআরআই) এর সেন্টার ফর ম্যাক্রোইকোনমিক অ্যানালাইসিস (সিএমইএ) অস্ট্রেলিয়ার ডিপার্টমেন্ট অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ট্রেড (ডিএফএটি) এর সহযোগিতায় ‘মাসিক ম্যাক্রোইকোনমিক ইনসাইটস (এমএমআই) বাজেট পরবর্তী পর্যালোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

ড. মইনউদ্দিন সরকারের অবকাঠামো নির্ভর উন্নয়ন ও সামষ্টিক স্থিতিশীলতার কৌশলগত লক্ষ্যের ওপর জোর দেন। অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ, নীতিনির্ধারক, কূটনীতিক এবং বেসরকারি পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ অংশ নিয়ে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট পরবর্তী আর্থিক সম্ভাবনা আলোচনা করেন।

অনুষ্ঠানে পিআরআই’র নির্বাহী পরিচালক ড. খুরশিদ আলম কার্যকর অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়নে তথ্যভিত্তিক সংলাপের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পিআরআই চেয়ারম্যান ড. জাইদী সাত্তার।

ড. জাইদী সাত্তার বলেন, ‘বাজেটে কোনো বাণিজ্য নীতি সংস্কার করা হয়নি, যা বাংলাদেশের আগামী ২০২৬ সালের নভেম্বরে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন এবং ইউএসটিআর-এর পারস্পরিক শুল্কের দাবির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হারানোর সমতুল্য।’

তিনি উল্লেখ করেন, ক্রমবর্ধমান বাহ্যিক চাপের কারণে কৌশলগত ও জরুরি বাণিজ্য সংস্কার অপরিহার্য। ইউএসটিআর-এর প্রয়োজনীয়তার সাথে সামঞ্জস্য করা বাণিজ্য নীতির আধুনিকীকরণে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। একই সময়ে, বাংলাদেশকে বাণিজ্য ভিত্তিক করের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে রাজস্বের ভিত্তি প্রসারিত করতে হবে।

পিআরআই’র প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান বলেন, ‘রাজস্ব চাপ বাংলাদেশের সামষ্টিক ব্যবস্থাপনার সবচেয়ে দুর্বল দিক। চলতি ব্যয় মেটাতেও এখন সরকারকে ঋণ নিতে হচ্ছে। এই রাজস্ব সংকট ব্যাংকিং খাতের পুনঃপূরণসহ জরুরি সংস্কারেও বাধা সৃষ্টি করছে, যা অর্থনীতির সামগ্রিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ান ডেপুটি হেড অব মিশন ক্লিনটন পবকে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত বক্তব্য রাখেন এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অস্ট্রেলিয়ার চলমান সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, ‘সুশীল নীতি সংলাপের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা অংশীদারিত্ব অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্থিতিস্থাপক উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু। পিআরআই’র এমএমআই-এর মতো উদ্যোগ তথ্যভিত্তিক আলোচনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফেরদৌস আরা বেগম এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রহমান উপস্থিত ছিলেন। উভয় প্যানেলিস্ট বাজেটকে বেসরকারি খাতের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য করার এবং ব্যবসায়িক আস্থা বাড়াতে নিয়ন্ত্রণমূলক সংস্কারের ভূমিকার ওপর জোর দেন।


চলমান আন্দোলনে রাজস্ব আদায় কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে: এনবিআর চেয়ারম্যান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চলমান আন্দোলনে রাজস্ব আদায় কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।

এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আপনারা আমরা সবাই দেশের জন্য কাজ করব। আমাদের সবার আগে দেশের স্বার্থ নিয়ে চিন্তা করা উচিত। যেকোনো ধরনের সংস্কার করি, আইন করি বা আন্দোলন ও সংগ্রাম করি, সবই যেন আমাদের নিজেদের জন্য না হয়ে দেশের জন্য হয়।’

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) কার্যালয়ে ইয়ুথ পলিসি নেটওয়ার্ক আয়োজিত ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা ও ভ্যাট’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

সেমিনারে ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা। এ সময় ইয়ুথ পলিসি নেটওয়ার্কের গবেষণাপ্রধান ইমরুল হাসান তার উপস্থাপনায় বলেন, ‘আমরা দেশের ১৫টি স্থানে ১ হাজার ২২ জন নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর গবেষণা পরিচালনা করেছি। গবেষণায় আমরা দেখতে পেয়েছি, তাদের মধ্য ৮৮ শতাংশ নিম্ন আয়ের মানুষ এক বেলা বিস্কুট ও পাউরুটি খান। তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশেরই প্রত্যাশ্য ছিল, এই বাজেটে এসব পণ্যর ওপর ট্যাক্স নিয়ে দৃশ্যমান পদক্ষেপ আসবে। তবে এ নিয়ে তেমন কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।’

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনবিআরের চেয়ারম্যান আরও বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম বাজেটের আকার কমেছে। লক্ষ্য ছিল, মানুষের ওপর যেন চাপ না পড়ে। বাজেটের আকার যতটা ছোট হয়েছে—ধরে নিতে হবে, রাষ্ট্র ততটা সঞ্চয় করেছে, ততটা ঋণের চাপ কমেছে।

চেয়ারম্যান আরও জানান, চলতি অর্থবছরে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমার সংখ্যা ১৭ লাখ ছাড়িয়েছে। যেখানে গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৫ লাখ। গতবার অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া সেপ্টেম্বরে শুরু হলেও এবার জুলাই থেকেই অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে। এছাড়া ব্যবসায়ীদের লাইসেন্সসহ অন্যান্য সুবিধার জন্য চালু হচ্ছে ‘ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো’। এর ফলে ১৯টি সংস্থার ১১০ ধরনের লাইসেন্স, অনুমোদন ও সনদ অনলাইনে জমা ও গ্রহণ করা যাবে।

করনীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে অনেকগুলো বিষয় একসঙ্গে বিবেচনা করতে হয়। একদিকে যেমন রাজস্ব আয়ের নির্ধারিত লক্ষ্যে থাকে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার শর্ত পূরণের চাহিদাও মাথায় রাখতে হয়। আগামী বছর উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় যুক্ত হওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে দেশের বেশ কিছু কাঠামোগত সংস্কার করতে হবে। এর মধ্যে শুল্ক হার কমিয়ে আনা অন্যতম। বর্তমানে দেশের কিছু পণ্যে সর্বোচ্চ ৮০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক দিতে হয়। এই শুল্ক কমাতে হবে ধাপে ধাপে। তা না হলে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের ধাক্কা সামলানো কঠিন হবে।

আবদুর রহমান খান আরও বলেন, পাউরুটি ও বিস্কুটে ভ্যাট বাড়ানো হলেও এই বাড়তি ভ্যাট ব্যবসায়ীরা নিজেরা বহন না করে পুরো বোঝা ভোক্তার ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন কি না, সে বিষয়েও আমাদেরে খেয়াল রাখতে হবে। সরকারের কর যেখান থেকে নেওয়ার কথা, সেখান থেকে নিতে পারলে সহজেই করছাড় দেওয়া যেত। অনেক সময় আবার কর বাড়ানোর যে সুবিধার কথা বলা হয়, তা ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছায় না। এর ফলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ায় সরকারের ঋণ নেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।


জামালপুর ও কিশোরগঞ্জ ২ জেলায় পরীক্ষা দিতে পারেনি ১৮ শিক্ষার্থী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জামালপুর প্রতিনিধি 

জামালপুর ও কিশোরগঞ্জে গতকাল শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি ১৭ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে জামালপুরে প্রবেশপত্র না পাওয়ায় এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি ১৭ জন শিক্ষার্থী। আর কিশোরগঞ্জের ভৈরবে কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি পরীক্ষার্থী মারজিয়া বেগম। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত; রাজু আহমেদ জামালপুর থেকে জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সারাদেশে একযোগে শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি ১৭ জন শিক্ষার্থী। এ নিয়ে সকাল থেকে কলেজ প্রাঙ্গণে আন্দোলন করে পরীক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় প্রশান্তি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে তালা লাগিয়ে গা ঢাকা দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। জানা যায়, জামালপুর শহরের দড়ি পাড়ায় বেসরকারিভাবে কয়েক বছর থেকে পরিচালিত হয়ে আসছে প্রশান্তি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। মাধ্যমিক স্কুলের রেজিস্ট্রেশন থাকলেও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি না থাকায় জেলার বিভিন্ন কলেজ থেকে ছাত্রদের পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন অধ্যক্ষ রেজাউল ইসলাম সেলিম। পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র বাবদ অর্থ নিলেও পরীক্ষার আগে প্রবেশপত্র সরবরাহ করতে পারেনি কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় সকাল থেকে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করেছে ওই কলেজে পরীক্ষা দিতে না পারা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। এ বিষয়ে জানতে প্রশান্তি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল ইসলাম সেলিমের সঙ্গে যোগযোগ করার জন্য কলেজে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইলে একাধিকার কল দিলেও তিনি ধরেননি।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) আফসানা তাসলিম জানান, কোনো শিক্ষার্থী বা অভিভাবক আমাদের কিছু জানায়নি। তবে প্রশান্তি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরীক্ষা বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা লিখিতভাবে আবেদন বা অভিযোগ দিলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। চলতি বছরে এইচএসসি পরীক্ষায় জেলায় ৫২টি কেন্দ্রে ২৬ হাজার ৫৭৫ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে।

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি পরীক্ষার্থী মারজিয়া বেগম। ফরম পূরণ করেও পরীক্ষার প্রবেশপত্র না পাওয়ায় চরম হতাশায় পড়েছে সে ও তার পরিবার। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। মারজিয়া গজারিয়া ইউনিয়নের বাঁশগাড়ি গ্রামের জেড. রহমান প্রিমিয়ার ব্যাংক স্কুল অ্যান্ড কলেজের মানবিক বিভাগের ছাত্রী। সময়মতো ২ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে ফরম পূরণ করলেও পরীক্ষার আগে প্রবেশপত্র তুলতে গিয়ে জানতে পারে, তার অ্যাডমিট কার্ড আসেনি। কলেজ অফিস সহকারী মো. শফিক একাধিকবার আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত জানানো হয়, ‘ডাবল ক্লিকের’ কারণে ফরম বাতিল হয়েছে। মারজিয়া বলেন, ‘আমি টেস্ট পরীক্ষায় ৪.০৭ পেয়েছিলাম, আর ফাইনাল পরীক্ষার জন্য আরও ভালো প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু প্রবেশপত্র না পাওয়ায় বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষায় অংশ নিতে পারিনি। পুরো এক বছর হারিয়ে গেল আমার জীবনের।’ তার বাবা স্বপন মিয়া বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের ভুলে আমার মেয়ে পরীক্ষায় বসতে পারেনি। কলেজের শিক্ষকরা ভুল স্বীকার করে আমাদের বাড়িতে এসে পরের বছর বিনা ফিতে পরীক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে আইনি ব্যবস্থা নিইনি।’ কলেজ অফিস সহকারী মো. শফিক বলেন, ‘ফরম পূরণের সময় ভুল করে ‘ডাবল ক্লিক’ করায় তা বাতিল হয়ে যায়। এটি আমাদের ভুল।’ অধ্যক্ষ শরীফ আহমেদ জানান, ‘ঘটনার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ দায়ী। শিক্ষা বোর্ডে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনো সমাধান হয়নি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শবনম শারমিন বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস.এম কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন, ‘অ্যাডমিট কার্ড বোর্ড থেকে আসার পর দ্রুত বিতরণ করলে ভুল সংশোধনের সুযোগ থাকে। কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠান তা পরীক্ষার আগের দিন দেয়, ফলে এমন সমস্যা হয়। তবে এ ঘটনায় অফিস সহকারীর পক্ষ থেকে বোর্ডে কোনো যোগাযোগ হয়নি।’


ই-কমার্স ‘ধামাকা’ শপিংয়ের ৬২ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গ্রাহকের প্রায় ১১৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ধামাকা শপিং’-এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা প্রায় ৬২ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ক্রোককৃত সম্পদের মধ্যে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এস. এম. ডি. জসীম উদ্দিন চিন্তীর নামে রাজধানীর বনানী মডেল টাউনের ৩ ও ২/এ নম্বর রোডে অবস্থিত ১৪ নম্বর প্লটে নির্মিত একটি বহুতল ভবন (৫ কাঠা জমি), যার বাজারমূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা।

এ ছাড়া, মাইক্রো ট্রেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের নামে গাজীপুরের কাশিমপুর পূর্ব বাগাবাড়ী এলাকায় ৪১ শতাংশ জমি (সি.এস ও এস.এ ১৪৫ নং দাগ; আর.এস ৩৬৫ নং দাগ), যার আনুমানিক মূল্য ১২ কোটি টাকা। সেটিও ক্রোক করা হয়েছে।

সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার আল মামুনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ জুন ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ, মহানগর দায়রা জজ আদালত এই সম্পত্তিগুলোর ওপর ক্রোকাদেশ প্রদান করেন।

তবে আসামিরা বর্তমানে সবাই দেশের বাইরে অবস্থান করছে। তারা আত্মসাৎকৃত অর্থের একটি বড় অংশ বিদেশে পাচার করেছে বলে তদন্তে জানতে পেরেছে সিআইডি।

প্রতিষ্ঠানটি স্বল্পমূল্যে পণ্য সরবরাহের প্রলোভন দেখিয়ে হাজার হাজার গ্রাহক ও সেলারদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। ধামাকা শপিংয়ের নিজস্ব কোনো ব্যাংক হিসাব না থাকলেও তারা ইনভ্যারিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের সাউথইস্ট ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের হিসাব ব্যবহার করে লেনদেন পরিচালনা করত।

সাউথইস্ট ব্যাংকের একটি হিসাব বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেখানে ধামাকা শপিংয়ের ব্যবসা সংক্রান্ত প্রায় ৫৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, অথচ ২০২১ সালের ২৭ জুন হিসাবটিতে মাত্র ৯৩ হাজার ৭৩১ টাকা স্থিতি ছিল— যা অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং আর্থিক জালিয়াতির প্রমাণ বহন করে।

সিআইডির তদন্তে আরও উঠে এসেছে, ধামাকা শপিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে আত্মসাৎকৃত অর্থ প্রতিষ্ঠানের এমডি জসিম উদ্দিন চিশতীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়। এমনকি মাইকো ট্রেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজের অ্যাকাউন্টেও এসব অর্থ অবৈধভাবে হস্তান্তর করা হয়, যা মানি লন্ডারিংয়ের শামিল।


সরকারি ক্রয় পদ্ধতি ডিজিটাল করতে নতুন প্রকল্প নিচ্ছে সরকার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

অন্তর্বর্তী সরকার দেশের সরকারি ক্রয় পদ্ধতি পুরোপুরি ডিজিটাল করা ও সংস্কারের লক্ষ্যে ‘সরকারি সেবার উন্নয়নে ক্রয় আধুনিকীকরণ’(পিএমআইপিএসডি) শীর্ষক পাঁচ বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে। ইউএনবির হাতে আসা একটি নথিতে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।

এতে দেখা যায়, প্রকল্পটিতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি সক্ষমতা বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার।

সরকারি নথি থেকে জানা যায়, এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সরকারি ই-ক্রয় (ই-জিপি) ব্যবস্থাকে দেশের সব সরকারি কেনাকাটার একমাত্র মাধ্যম হিসেবে গড়ে তোলা—যাতে স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা যায়।

এদিকে, প্রকল্পটির প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৫ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা। চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০৩০ সালের জুন পর্যন্ত এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকবে বাংলাদেশ সরকারি ক্রয় কর্তৃপক্ষ ( বিপিপিএ) ও বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)।

মোট ব্যয়ের মধ্যে ৪৩ হাজার ২৯০ কোটি টাকা ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। বাকি ১১ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হবে।

এই প্রকল্পের আওতায় সব সরকারি কেনাকাটা ই- জিপি (সরকারি ক্রয়) ব্যবস্থার আওতায় আনা বাধ্যতামূলক করতে চাইছে সরকার। এ ছাড়া, বিপিপিএয়ের ডেটা সেন্টারের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার উন্নত করে এর কার্যকারিতা বাড়ানোর পাশাপাশি ভবিষ্যৎ রক্ষণাবেক্ষণ ও টেকসই পরিচালনার পরিকল্পনাও করছে সরকার।

তাছাড়া, সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে— নিরাপদ, সময়োপযোগী ও আধুনিক তথ্য বিশ্লেষণ সক্ষমতা গড়ে তোলা; যেখানে ব্যবহার করা হবে খোলামেলা সরকারি চুক্তির তথ্য প্রকাশের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড (ওপেন কন্ট্রাক্টিং ডেটা স্ট্যান্ডার্ডস-ওসিডি’স), কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি।

পাশাপাশি, সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাপনার মানোন্নয়নে সব স্তরের সরকারি ক্রয়-সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের জন্য চুক্তি ব্যবস্থাপনা-ভিত্তিক মধ্য-মেয়াদি সক্ষমতা উন্নয়ন কৌশল তৈরি করারও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

প্রকল্পের আওতায় বহুল ব্যবহৃত পণ্যের জন্য নতুন মানদণ্ড নির্ধারণ করা হবে, যাতে ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি হালনাগাদ করা সহজ হয়। এ ছাড়া, বর্তমান স্ট্যান্ডার্ড টেন্ডার ডকুমেন্টের (এসটিডি) প্রয়োজনভিত্তিক ব্যবহারযোগ্যতা বৃদ্ধি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা স্বাস্থ্য সঙ্কটের সময় জরুরি সরকারি ক্রয়ের জন্যও পদ্ধতি তৈরি করা হবে। একই সঙ্গে, বিপিপিএকে একটি পূর্ণাঙ্গ কর্তৃপক্ষ হিসেবে রূপান্তরের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা তৈরি ও বাস্তবায়ন করা হবে।

এই উদ্যোগটি ২০১৭ সাল থেকে বাস্তবায়িত ‘বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সরকারি ক্রয় আধুনিকীকরণ’ প্রকল্পের সফলতার ধারাবাহিকতায় নেওয়া হচ্ছে।

পিএমআইপিএসডি প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে—বিপিপিএর তথ্যকেন্দ্রকে উন্নত যন্ত্রাংশ ও সফটওয়্যারের মাধ্যমে আধুনিকায়ন করা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং, ওসিডি সংযুক্ত করে নিরাপদ ও তাৎক্ষণিক তথ্য বিশ্লেষণ সক্ষমতা গড়ে তোলা, এবং দুর্যোগের সময় জরুরি সরকারি ক্রয় পদ্ধতি তৈরি করা।

এছাড়াও, প্রকল্পের আওতায় সরকারি ক্রয়চুক্তি ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব দিয়ে মধ্য-মেয়াদি দক্ষতা বৃদ্ধির কৌশল প্রণয়ন, বহুল ব্যবহৃত পণ্যের জন্য নতুন মান নির্ধারণ এবং বিদ্যমান এসটিডির ব্যবহারযোগ্যতা বাড়ানোও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

প্রকল্পের কাজের মধ্যে থাকবে—আধুনিক সরকারি ইলেকট্রনিক ক্রয় তথ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, চুক্তি ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা, ইলেকট্রনিক পেমেন্ট ও সরকারি ই-ক্রয় ব্যবস্থায় ইলেকট্রনিক সই যুক্ত করা, ক্রয় সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের জন্য নতুন অনলাইন প্রশিক্ষণ প্ল্যাটফর্ম চালু করা এবং টেকসই সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়া তৈরি করা।

সরকারি কর্মকর্তারা জানান, বিপিপিএ বর্তমানে দুটি তথ্যকেন্দ্র পরিচালনা করছে—একটি ঢাকার শেরেবাংলা নগরে সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে এবং অন্যটি তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের জাতীয় তথ্যকেন্দ্রে। ২০১৮ সালে স্থাপিত বিপিপিএর নিজস্ব কেন্দ্রটি আরও বেশি কার্যকর, বিস্তৃত সেবা প্রদান ও উন্নত সাইবার নিরাপত্তার জন্য আধুনিকায়নের প্রয়োজন রয়েছে।

২০১১ সালে চালু হওয়া সরকারি ই-ক্রয় ব্যবস্থা সরকারি ক্রয় কার্যক্রমের ডিজিটাল রূপান্তরের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে। এটি দরপত্র প্রস্তুতি ও প্রকাশ থেকে শুরু করে মূল্যায়ন, বরাদ্দ ও চুক্তি ব্যবস্থাপনা পর্যন্ত ক্রয়ের পুরো প্রক্রিয়া পরিচালনা করে। এই ব্যবস্থা সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা বাড়িয়েছে এবং প্রশাসনিক জটিলতা হ্রাস করেছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এই ই-ক্রয় ব্যবস্থা টেকসই সরকারি ক্রয়ের অন্যতম ভিত্তি হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে সরকার। তাছাড়া, এটি জনসেবার মানোন্নয়ন ও সরকারি সম্পদের দক্ষ ব্যবহারের মাধ্যমে নাগরিকদের আরও উন্নত সেবা নিশ্চিত করবে বলেও আশা করা হচ্ছে।


সারাদেশে প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষার মান যাচাইয়ে শুরু হচ্ছে অ্যাসেসমেন্ট টুলস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ঢাকা মহানগরীসহ সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও যাচাইয়ের লক্ষ্যে ‘এসেসমেন্ট টুলস’ ব্যবহারের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। দীর্ঘ ছয় মাস ব্যাপী এই পরিকল্পনা শুরু হচ্ছে ১ জুলাই থেকে।

এই টুলস প্রয়োগের মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার মান, মেধাবিকাশ, স্কুলে উপস্থিতি, স্কুলের চারপাশের পরিবেশ, স্কুলে পাঠদানের পদ্ধতিসহ প্রাথমিক শিক্ষার সার্বিক মান উন্নয়নে ভবিষ্যতে কি পদক্ষেপ নেয়া যায় তা সরে জমিনে যাচাই করে প্রকৃত তথ্য তুলে আনা হবে।

পরবর্তীতে এই টুলস এর মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনা করে ভবিষ্যতে প্রাইমারি শিক্ষার মান ও ভিত্তি আরো শক্তিশালী করার বিষয়ে বাস্তবধর্মী উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ১ জুলাই থেকে আগামী ৬ মাসে এই অ্যাসেসমেন্ট টুলস এর মাধ্যমে সারা দেশের প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার প্রকৃত চিত্র তুলে আনা হবে। জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক, উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বিভাগীয় পর্যায়ে বিভাগীয় কমিশনারগণ স্ব স্ব অধিভুক্ত এলাকার প্রাইমারি স্কুলের এই পদ্ধতির কার্যক্রম তদারকি করবেন।

কর্মকর্তারা জানান, অ্যাসেসমেন্ট টুলস এর মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে পিছিয়ে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার মান উন্নয়নে মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের নিয়োজিত করা হবে। এ বিষয়ে বিষদ পরিকল্পনা সরকারের নেয়া আছে।

এদিকে বুধবার (২৫ জুন) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি এন্ড অপারেশন) মোহাম্মদ কামরুল হাসান, এনডিসি স্বাক্ষরিত এক পত্রে অ্যাসেসমেন্ট টুলস এর মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

পত্রে বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক প্রণীত এসেসমেন্ট টুলস এর মাধ্যমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বাংলা, গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে শিখন অবস্থান নির্ধারণ এবং বিষয়ভিত্তিক কর্মপদ্ধতি ও কর্মপরিকল্পনা অনুসরণ করে শিখন অবস্থার উন্নয়নে স্তরভিত্তিক পাঠদানের ব্যবস্থা করা আবশ্যক। অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের অবস্থার উন্নয়নে প্রস্তুতকৃত এসেসমেন্ট টুলস এর মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর জানায়, বিদ্যালয় পর্যায়ে এসেসমেন্ট টুলেসের ভিত্তিতে শতভাগ শিক্ষার্থীর তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির প্রতিটি শিক্ষার্থীর বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ের বর্তমান অবস্থান আগামী ১ জুলাই থেকে আগস্ট যাচাই করা হবে। সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক যাচাইয়ের কাজ সম্পন্ন করবেন।

পাশাপাশি শিখন অবস্থানের ভিত্তিতে শিখন ঘাটতি দূরীকরণে যথাযথ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী ১৬ থেকে ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকগণ তা বাস্তবায়ন করবেন। একই সঙ্গে শিখন ঘাটতি দূরীকরণে যথাযথ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। আগামী ২৪ জুলাই থেকে ৩১ আগস্টের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকগণ তা বাস্তবায়ন করবেন।

টুলস ব্যবহার করে যেকোনো একটি বিদ্যালয়ের ২৫ ভাগ শিক্ষার্থীর মান পুনঃযাচাই করা হবে। এদের মধ্যে ১০ ভাগ শিক্ষার্থীর শিখন অগ্রগতি যাচাই করা হবে। আগামী ১ জুলাই থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত প্রতি কার্যদিবসে একটি শ্রেণীর একটি বিষয়ের এসেসমেন্ট কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। অধিক শিক্ষার্থী বিশিষ্ট বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত এক দিন কার্যক্রম পরিচালনা করা যেতে পারে। এসেসমেন্ট চলাকালীন অন্যান্য শ্রেণীকার্যক্রম যথারীতি চলবে।

জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের যুগ্ম সচিব মো. কামরুল হাসান বাসসকে বলেন, সরকার প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। এসেসমেন্ট টুলসের মাধ্যমে মেধাবী ছাড়াও পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদেরও শিক্ষার মানোন্নয় হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেক ভালো ভালো স্কুল আছে আবার পিছিয়ে পড়া স্কুলও আছে আমরা সকল স্কুলেই শিক্ষার মানোন্নয়ন দেখতে চাই এজন্যই এই পরিকল্পনা সরকারের।’


ডেঙ্গুতে আরো ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৯৫

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সময়ে নতুন করে ১৯৫ জন রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মৃতদের মধ্যে একজন ১৪ বছর বয়সী কিশোর ও অন্যজন ৪৮ বছর বয়সী নারী রয়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যায় বরিশাল বিভাগ শীর্ষে , যেখানে ৭৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। ঢাকা মহানগরীতে এ সংখ্যা ৬০ জন, অন্যদিকে ঢাকা বিভাগের (সিটি করপোরেশন বাদে) হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৩০ জন। রাজশাহী বিভাগে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ১৮ জন, চট্টগ্রামে ৮ জন, সিলেটে ৩ জন এবং ময়মনসিংহে ২ জন।

চলতি বছর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হযে এ পর্যন্ত মোট ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ২০ জন পুরুষ ও ১৮ জন নারী । এছাড়া দেশে এবছর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯,০৬৫ জনে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব হাসপাতালে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে বরিশালে আক্রান্তের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বাড়ায় সেখানে বিশেষ নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জনগণকে বাড়ির আশেপাশে পানি জমতে না দেওয়া, মশারি ব্যবহার এবং জ্বর দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।


দেশের সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল বসানোর নির্দেশ

বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ‘জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি’ শীর্ষক বৈঠকে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

দেশের সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল বসিয়ে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ‘জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি’ শীর্ষক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এ নির্দেশ দেন।

বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তারা জানান, ইন্টারন্যাশনাল রিনিউবেল এনার্জি এজেন্সির ২০২৪ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সৌরবিদ্যুৎ প্রসার ও ধার্যকৃত লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় অনেক পিছিয়ে রয়েছে। ভারতে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ২৪ শতাংশ, পাকিস্তানে ১৭.১৬ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ৩৯.৭ শতাংশ সৌরবিদ্যুৎ থেকে পূরণ হলেও বাংলাদেশে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার মাত্র ৫.৬ শতাংশ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে থাকে।

নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা ২০২৫ অনুযায়ী, নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ২০ শতাংশ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ইতোমধ্যেই ৫ হাজার ২৩৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার স্থলভিত্তিক ৫৫টি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রের টেন্ডার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে এটি বাস্তবায়নে ২০২৮ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য ‘জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি’ গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেন। এর অংশ হিসেবে তিনি সকল সরকারি ভবন, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও সকল সরকারি হাসপাতালের ছাদে রুফটপ সোলার সিস্টেম স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি ভবনে সোলার প্যানেল বসানোর কাজটি বেসরকারি উদ্যোগে করা যায় কি না, সে ব্যাপারে বিবেচনা করুন। যারা বসাবে, তারা নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থেই এটার রক্ষণাবেক্ষণ করবে ও কার্যকরভাবে এটা পরিচালনা করবে। সরকারের পক্ষ থেকে শুধু ছাদটা দেওয়া হবে, বাকি কাজ তারাই করবে।’

তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যে সকল প্রতিষ্ঠান রুফটপ সোলার প্যানেল করেছে, তাদের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। তারা কী ধরনের সমস্যায় পড়েছে, সেগুলো জানতে হবে। সেই সমস্যাগুলো সমাধানের দিকে যেতে হবে।’

এ প্রক্রিয়ায় সরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য কোনো বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হবে না এবং সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত ছাদের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো ভাড়া পাবে।

বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনসহ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ এবং মাধ্যমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


আবু সাঈদ হত্যা মামলা: তদন্তে অভিযুক্ত ৩০ জন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউসনের কাছে জমা দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র‍্যাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এতে ৩০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম প্রতিবেদন পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেন।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদনে ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এই প্রতিবেদনটি যাচাই-বাছাই করে আগামী রবিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র‍্যাইব্যুনাল-২-এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ হিসেবে উপস্থাপন করা হবে বলে আশা করছি।’

এর আগে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র‍্যাইব্যুনালে এই মামলার চার আসামিকে ট্র‍্যাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এরপর আসামিদের মধ্যে পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন ও সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে ১৮ জুন এবং বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী আকাশকে ১৯ জুন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন ট্র‍্যাইব্যুনাল-১।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে সারা দেশে যখন আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে, তার মধ্যে ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ।

২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বাদশ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরস্ত্র আবু সাঈদের পুলিশ কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদেই সোচ্চার হন বহু মানুষ, যাতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।


মাদকাসক্তদের জন্য পৃথক কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা করছে সরকার

‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস ২০২৫’ উদযাপন উপলক্ষ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী । ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৬ জুন, ২০২৫ ১৫:৫৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

মাদকাসক্তদের জন্য সরকার বিভাগীয় পর্যায়ে পৃথক কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এ ছাড়া দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে ‘মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র’ নির্মাণ প্রকল্পে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস ২০২৫’ উদযাপন উপলক্ষ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা জানান।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘সম্প্রতি সাতটি বিভাগীয় শহরে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাতটি বিভাগীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। এ ছাড়া মাদকাসক্তদের জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে পৃথক কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনাও সরকারের রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার ইতোমধ্যে ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (কর্মকর্তা-কর্মচারী) অস্ত্র সংগ্রহ ও ব্যবহার নীতিমালা-২০২৪’ প্রণয়ন করেছে। এই নীতিমালার আওতায় অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রথম ব্যাচের অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ প্রদান সম্পন্ন হয়েছে।’

এর ফলে আভিযানিক ঝুঁকি কমানোর পাশাপাশি অধিদপ্তরের মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনায় আরও সাফল্য আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতে হলে তরুণ সমাজকে অবশ্যই মাদকমুক্ত রাখার কথা জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘যেকোনো দেশের উন্নতির প্রধান নিয়ামক হলো কর্মক্ষম বিপুল যুবশক্তি। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যখনই বৈষম্য, বঞ্চনা, অবিচার ও মূল্যবোধের সংকট তৈরি হয়েছে, তখনই যুব সমাজ সংকল্প ও ঐক্যের মাধ্যমে তা প্রতিহত করেছে। জুলাই ছাত্র-যুব-জনতার গণঅভ্যুখান যুব সমাজ এবং তারুণ্যেরই বিজয়। উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতে হলে তরুণ সমাজকে অবশ্যই মাদকমুক্ত রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে মাদক চোরাচালানের একটি ভয়াবহ বিষয় হলো নারী, শিশু ও কিশোরদের এ গর্হিত কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে তাদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি তাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে।’

এ সমস্যা সমাধানের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার একটি বহুমাত্রিক সমস্যা। শুধু আইনের প্রয়োগে এর সমাধান করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি মাদকবিরোধী সামাজিক আন্দোলনে সর্বস্তরের জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করতে হবে’- যোগ করে বললেন উপদেষ্টা।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন সিনথেটিক ও সেমি-সিনথেটিক ড্রাগস বা নতুন ধরনের মানসিক প্রভাবসৃষ্টিকারী মাদকদ্রব্যের (এনপিএস) আবির্ভাবের ফলে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারজনিত সমস্যা আরও ঘনীভূত হয়েছে।’

‘এসব মাদক নিয়ে নতুনভাবে কর্মকৌশল তৈরি করতে হচ্ছে। এসব নতুন মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এগুলোকে আইনের তফসিলভুক্ত করার পাশাপাশি কৌশলগত নজরদারি বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব নাসিমুল গনি।

খোদা বখস চৌধুরী বলেন, ‘যে পরিবারের সদস্য মাদকাসক্ত হন, কেবল তারাই এর গভীরতা, ভয়াবহতা ও ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বুঝতে পারে। মাদকের বিষয়ে সামাজিক প্রতিরোধের দিকটি ইদানীং কমে গেছে। এটিকে বাড়িয়ে মাদকের পারিবারিক, ব্যক্তিক ও রাষ্ট্রীয় কুফল থেকে মানবজাতিকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্টদের আরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’

নাসিমুল গনি বলেন, ‘মাদকের উৎপাদন বাংলাদেশে হয় না। পাশ্ববর্তী দেশ থেকে পাচারের মাধ্যমে আমাদের দেশে এসে এটি যুব সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তাই মাদকের সরবরাহ বন্ধ করতে হবে। আর এটিকে সফল করতে হলে আমাদের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও তৎপর হতে হবে এবং জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।’

অনুষ্ঠানে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী কার্যক্রমের ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থী, সেরা তিনটি বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের প্রতিনিধি এবং মাদকবিরোধী প্রচারণা, উদ্বুদ্ধকরণ ও গবেষণায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ সেরা দুইটি প্রতিষ্ঠানের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। তাছাড়া দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রকাশিত স্যুভেনির ও বার্ষিক মাদক প্রতিবেদনের মোড়ক উন্মোচন করেন তিনি।

এর আগে, বেলুন উড়িয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।


প্রতিটি আটক কেন্দ্রে ‘নির্যাতনের সরঞ্জাম’ ছিল: গুম তদন্ত কমিশন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন জানিয়েছে, ৫ আগস্ট ২০২৪ পরবর্তী সময়ের প্রমাণ ধ্বংসের চেষ্টার পরও তারা দেশের প্রায় প্রতিটি আটক কেন্দ্রে বিশেষ জেরা কক্ষ ও নির্যাতনের যন্ত্রপাতির অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছে।

কমিশনের দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনের সপ্তম অধ্যায়ে বলা হয়েছে, ‘আমরা যে সব আটক কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি, তার প্রায় প্রতিটিতেই নির্যাতনের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত জেরা কক্ষ ছিল।’

প্রতিবেদনটি বলছে, প্রমাণ ধ্বংসের নানা চেষ্টা সত্ত্বেও কিছু আলামত উদ্ধার করা গেছে, যা নির্যাতনে ভুক্তভোগীদের বিবরণীর সঙ্গে মিলে গেছে। উদাহরণ স্বরূপ, র‌্যাব-২ ও সিপিসি-৩-এ ঘূর্ণায়মান চেয়ার, র‌্যাব-৪ ও ডিবিতে ব্যবহার করা ‘যম টুপি’ ও টাস্কফোর্স ইন্টাররোগেশন (টিএফআই) সেলে মানুষকে ঝুলিয়ে নির্যাতন করার যন্ত্রের (পুলি সিস্টেম) অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ধ্বংস করা প্রায় প্রতিটি স্থানে সাউন্ড প্রুফিংয়ের চিহ্ন পাওয়া গেছে। কক্ষগুলো এমনভাবে তৈরি ছিল, যেন নির্যাতনের শিকারদের চিৎকার বাইরের কেউ শুনতে না পায়। কিছু কেন্দ্রে নির্যাতনের শব্দ ঢাকতে উচ্চস্বরে গান বাজানো হতো, যা আবার নির্যাতকদের মনোরঞ্জনের মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহৃত হতো।


ভুক্তভোগীরা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে দীর্ঘসময় ধরে অসহনীয় কষ্টভোগ করেছেন। তাদের প্রায়ই নিয়মিত প্রহরীদের অর্ধেক খাবার দেওয়া হতো, হাতকড়া পরিয়ে ও চোখ বেঁধে রাখা হতো ও সম্পূর্ণ নির্জন কক্ষে আটকে রাখা হতো।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘নিজেদের ভাগ্য সম্পর্কে অনিশ্চয়তা আর এসব নিষ্ঠুর বাস্তবতার কারণে, তারা অবিরত মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করেছে।’

কমিশন আরও জানিয়েছে, নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের বেশিরভাগ সময়েই গুম করে রাখা হতো, যাতে আইনি জবাবদিহির ভয় ছাড়াই তাদের ওপর নির্যাতন চালানো যায়।

ভুক্তভোগীরা কখনও আদালতে হাজির হবেন কি-না, নাকি রাষ্ট্রীয় রেকর্ড থেকে একেবারে মুছে যাবেন, এই অনিশ্চয়তা এমন এক পরিবেশ তৈরি করেছিল, যা অপরাধীদের সাহস অনেক বাড়িয়ে দিয়েছিল। ফলে নির্যাতন সহজেই চলতো এবং তা থামানো বা তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার মতো কেউ থাকত না।

প্রতিবেদনের দ্বিতীয় অংশে বলা হয়েছে, যারা নির্যাতন চালাতো, তারা অনেক সময় বাড়তি নজরদারির আশঙ্কায় প্রমাণ গায়েব করত। আবার কিছু ক্ষেত্রে নির্যাতনের দাগ মুছে যেতে বা ক্ষত সেরে উঠতে কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করত। এরপরই কাউকে জনসমক্ষে হাজির করত, যাতে তাদের অপরাধের কোনো স্পষ্ট চিহ্ন না থাকে।

প্রতিবেদন বলছে, নিয়মিত যন্ত্রণা ছাড়াও নির্যাতনের সবচেয়ে সাধারণ প্রচলিত ধরণ ছিল মারধর। এছাড়া, মূত্রত্যাগের সময় যৌনাঙ্গে বিদ্যুৎ শক দেওয়া, ঘূর্ণায়মান চেয়ার ব্যবহার করে কষ্ট দেয়া ও পুরো শরীর ঢেকে অত্যাচার করার মতো যন্ত্রপাতি দিয়ে নির্যাতন চালানো হতো।

কমিশন লক্ষ্য করেছে, নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা দীর্ঘ সময় ধরে নিয়মিতভাবে এতে অংশ নিয়েছেন, যা প্রমাণ করে এটি ছিল একটি সুসংগঠিত ও ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। কারণ, এ ব্যবস্থাকে সচল রাখতে যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, জনবল প্রশিক্ষণ ও নির্যাতনের পদ্ধতি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গড়ে তোলা হয়েছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্যাতনের ব্যাপকতা ও এর ধারাবাহিকতা স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে, এটি শুধু মাঠ পর্যায়ে অনুমোদিত ছিল না, বরং ক্ষমতার শীর্ষ পর্যায় থেকেও এর পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনটি বলেছে, ক্ষমতার উচ্চ পর্যায়ের স্পষ্ট অনুমোদন ছাড়া এ ধরনের নির্যাতন ব্যবস্থা গড়ে তোলা ও দীর্ঘসময় ধরে চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। কারণ, এর জন্য অবকাঠামো, যন্ত্রপাতি কেনা ও রক্ষণাবেক্ষণে বাজেট বরাদ্দ লাগত।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ‘এই মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় শুধু মাঠপর্যায়ের অপরাধীদের ওপরই পড়ে না, এর দায় বর্তায় সেই সব শীর্ষ কর্মকর্তা ও কমান্ডিং অফিসারদের ওপরও- যারা এ সব কর্মকাণ্ডে অনুমোদন দিয়েছেন বা উৎসাহিত করেছেন।’


সুষ্ঠু পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এইচএসসি: শিক্ষা উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার জানিয়েছেন, সারাদেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সম্পূর্ণ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ভাসানটেক সরকারি কলেজ ও সরকারি বাঙলা কলেজ পরিদর্শন শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।

উপদেষ্টা বলেন, "পরীক্ষার প্রথম দিন থেকেই সব কেন্দ্রে সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রয়েছে। পরীক্ষার্থীরা সময়মতো উপস্থিত হয়েছে এবং নির্ধারিত নিয়মে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, শিক্ষা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় আমরা এই সাফল্য অর্জন করেছি।"

তিনি আরও বলেন, "প্রশ্নফাঁসের গুজব রোধ এবং নকলমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছে। তবে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো সমস্যার কথা শোনা যায়নি।”

এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। লিখিত পরীক্ষা ১০ আগস্ট পর্যন্ত চলবে বলে জানানো হয়েছে।

পরিদর্শনকালে কেন্দ্রের অধ্যক্ষ, কেন্দ্র সচিব, কক্ষ পরিদর্শক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


banner close