বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

কেমন গেল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৩ মাস

৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
৯ নভেম্বর, ২০২৪ ০০:০২
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ৯ নভেম্বর, ২০২৪ ০০:০২

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বয়স ৩ মাস পূর্ণ হয়েছে গতকাল শুক্রবার। দায়িত্ব নেওয়ার বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে তিন মাস পার করেছে এ সরকার। এর মধ্যে কোনোটি দৃশ্যমান, আবার কোনোটি অদৃশ্য চ্যালেঞ্জ। প্রথমত দেশের মানুষের নজিরবিহীন সমর্থন এবং দ্বিতীয়ত উন্নয়ন সহযোগীসহ বহির্বিশ্বের সমর্থন ও স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতার আশ্বাস।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। পরে ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। কেমন গেল সরকারের এ তিন মাস। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বগ্রহণের পর থেকে দেশের অর্থনীতি সচল ও বিভিন্ন সেক্টরের সংস্কারে মনোযোগ দিয়েছে এ সরকার। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার বিচারকাজ শুরু, সহিংসতায় অচল মেট্রোরেলের মিরপুর ১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন চালু, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও আটটি জাতীয় দিবস বাদ দেওয়াসহ নানা কাজে ব্যস্ত ছিল অন্তর্বর্তী সরকার।

তবে প্রথম দিকে নানা চাপে ছিল ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নতুন সরকারের কাছে একের পর এক দাবি-দাওয়া নিয়ে হাজির হতে থাকেন বিভিন্ন মহলের মানুষ। কেউ আসেন চাকরি জাতীয়করণের জন্য, কেউ গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে। এ ছাড়া ঘটেছিল শিক্ষকদের পদত্যাগ, সচিবালয়ে আনসারের অবরোধ কর্মসূচি। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ নিয়েও বেশকয়েক দিন আন্দোলন চলছিল। শেষমেশ সেটা রুখতেও সফল হয় সরকার। সবই সামাল দিতে হয়েছে এ সরকারকে।

এদিকে নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে টানাপড়েন এরই মধ্য শুরু হয়ে গেছে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলের সর্বশেষ সংলাপে নির্বাচনই প্রাধান্য পেয়েছে। তারা এ সরকারের কাছে নির্বাচন ও সংস্কারের একটি রোডম্যাপ চেয়েছে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার এখনো কোনো রোডম্যাপ দেয়নি। বিশ্লেষক ও রাজনৈতিক দলের নেতারা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য দুটি কমন চ্যালেঞ্জের কথা বলেছেন তা হলো- দ্রব্যমূল্য এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা। এর বাইরে সংস্কার, নির্বাচন ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের কথাও বলেছেন তারা।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে চলে যেতে বাধ্য হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে আত্মগোপনে চলে যান আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা। অনেকে আবার গ্রেপ্তারও হয়েছেন। দলীয় নেতা ও আওয়ামী সরকারের ঘনিষ্ঠ ও উচ্চপর্যায়ের আমলারাও গা-ঢাকা দেন।

হাসিনা সরকারের নৃশংস দমন-পীড়নে প্রাণ হারান শিশু-কিশোর-শিক্ষার্থী-নারীসহ হাজারো মুক্তিকামী মানুষ। রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশে জনতার এ বিজয়কে দ্বিতীয় স্বাধীনতা হিসেবে উল্লেখ করেন আন্দোলনকারীরা। আওয়ামী সরকারের অবসানের পর মানুষের মধ্যে জেগে ওঠে রাষ্ট্র সংস্কার ও অর্থনীতি পুনর্গঠন করে একটি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনের ব্যাপারে বিপুল আশা ও উদ্দীপনা। দীর্ঘ স্বৈরশাসনে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রায়, আইনশৃঙ্খলা ও বিচারব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় লুণ্ঠনে অর্থনীতিও বিপর্যস্ত। সেই জায়গাগুলো সংস্কারের জোরদার করা হয়েছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে পুনর্গঠন করতে নেওয়া হচ্ছে উদ্যোগ। এরই মধ্যে রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের লক্ষ্যে ১০টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। তা হলো- সংবিধান সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন, শ্রমিক অধিকারবিষয়ক সংস্কার কমিশন ও নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন। এছাড়া গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির কমিশন গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি সংস্কার কমিশন এরই মধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে।

জাতীয় ৮ দিবস বাদ

অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের দলীয় দিবস বলে পরিচিত আটটি জাতীয় দিবস বাদ দিয়েছে। দিবসগুলো হলো- ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, ৫ আগস্ট শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, ৮ আগস্ট বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস, ১৮ অক্টোবর শেখ রাসেল দিবস, ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস ও ১২ ডিসেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস।

দিবসগুলো বাতিলের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগের দলীয় দিবসগুলো জাতীয় দিবস হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এগুলো জাতীয় দিবস হওয়ার মতো নয়।

ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল

এদিকে জুলাই-আগস্ট গণহত্যা নিয়ে বিচারকাজ শুরু করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গণহত্যার মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া পৃথক অভিযোগে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, সাবেক মন্ত্রী-ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, ডা. দীপু মনি, আ ক ম মোজাম্মেল হকসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধেও একই আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অর্ধশতাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। সেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলের নেতা, পুলিশের তৎকালীন আইজিসহ বেশ কয়েকজন সদস্য, র‍্যাবের তৎকালীন ডিজি, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাদের আসামি করা হয়।

যেসব বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে বেশ কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে- জুলাই ও আগস্টের হত্যাকাণ্ডের বিচারে জাতিসংঘের নেতৃত্বে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা করার জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরকে আমন্ত্রণ, শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি, সে সঙ্গে আহত ব্যক্তিদের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা এবং শহীদদের পরিবারের দেখাশোনার জন্য ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ গঠন। এ ছাড়া ব্যাংকগুলোকে বড় বড় ঋণখেলাপি ও লুটেরা ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর দখল থেকে মুক্ত করে পরিচালনা পরিষদ পুনর্গঠন; দুর্নীতি ও অর্থ পাচারে অভিযুক্ত প্রভাবশালী দেড়শ ব্যক্তির তালিকা তৈরি ও ৭৯ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু; ১৫ শতাংশ হারে আয়কর পরিশোধ করে অপ্রদর্শিত পরিসম্পদ অর্থাৎ কালো টাকা সাদা করার বিধান বাতিল; দায়মুক্তি আইন নামে পরিচিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ (সংশোধিত ২০২১)-এর অধীন চলমান সব কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা; গণশুনানি ছাড়া নির্বাহী আদেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি না করার সিদ্ধান্ত; রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নেওয়া প্রকল্প কিংবা জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) যাওয়ার প্রক্রিয়াধীন আছে- এমন প্রকল্প পুনরায় যাচাই-বাছাই করার সিদ্ধান্ত।

এ ছাড়া বলপূর্বক গুম হওয়া থেকে সব ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষর ও বিগত সরকারের আমলে সংগঠিত গুমের ঘটনা তদন্ত করার জন্য একটি কমিশন গঠন করা হয়েছে। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরতে একটি শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন; আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ (সংশোধিত ২০২১)-এর অধীন সম্পাদিত চুক্তিগুলো পর্যালোচনা জন্য একটি জাতীয় কমিটি গঠন; মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বাংলাদেশি কিশোরী স্বর্ণা দাশ নিহত হওয়ার ঘটনায় ভারতের কাছে তীব্র প্রতিবাদ জানানো ও দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তিসহ আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আন্তঃসীমান্ত নদীর পানিবণ্টন বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় জোট ছাড়া অন্যান্য সব রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা প্রতিনিয়ত বৈঠক করছেন। সেখানে বিএনপি, জামায়াত ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা সাক্ষাৎ করেন। দলগুলোর প্রতিনিধিরা বৈঠকে রাজনীতিতে সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে তাদের বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি, সংস্কার এবং আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়েও আলোচনা চলছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে। সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে গত ৪ সেপ্টেম্বর সচিব সভা হয়। ওই সভায় তিনি সিনিয়র সচিবদের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন।


খালেদা জিয়াকে ভিভিআইপি ঘোষণার সিদ্ধান্ত

আজ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
আপডেটেড ২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৫:৩৬
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় তাঁর নির্বিঘ্ন চিকিৎসা, নিরাপত্তা ও যাতায়াত-সুবিধা নিশ্চিত করতে এবং তাঁর উচ্চ মর্যাদা বিবেচনায় তাঁকে রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ যমুনার সামনে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে বিবৃতিটি পড়ে শোনান।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বৈঠকে তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা করে দোয়া ও প্রার্থনা করা হয়। জাতির কাছে তাঁর আরোগ্য কামনায় দোয়া ও প্রার্থনারও আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, সভায় বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক পরিস্থিতি বিবেচনায় হাসপাতালে তাঁর নির্বিঘ্ন চিকিৎসা, প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা, তাঁর নিরাপত্তা ও যাতায়াতের সুবিধা এবং উচ্চ মর্যাদা বিবেচনায় তাঁকে রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, এ বিষয়ে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার এবং দল অবগত রয়েছে।সূত্র - বাসস


খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করেছে সরকার। একই সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জন্য বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকার, বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) আইন, ২০২১-এর ধারা ২(ক)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ হিসেবে ঘোষণা করা হলো। ইহা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এদিকে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতা ও রোগের কারণে কয়েকদিন ধরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে।


জোটের ভোট; নিজ প্রতীকে নির্বাচনের বিধান চ্যালেঞ্জ রিটে হাইকোর্টের রুল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটবদ্ধ হলেও নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করার বিধান চ্যালেঞ্জ করে আনা রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
গতকাল সোমবার বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ জোটবদ্ধ নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান প্রশ্নে রুল জারি করে এ আদেশ দেন।
আগামী ১০ দিনের মধ্যে রিটের বিবাদীদের (রেসপনডেন্ট) রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী আহসানুল করিম।
ববি হাজ্জাজের নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)-এর মহাসচিব মোমিনুল আমিন হাইকোর্টে রিটটি করেন। জোটবদ্ধ হলেও নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করার বিধান এই রিটে স্থগিত চাওয়া হয়।
সংসদ নির্বাচনে জোট করলে নিজ দলের প্রতীকেই সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে, এমন বিধান এনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। গত ৩ নভেম্বর এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়। সংশোধনীতে বলা হয়, একাধিক দল জোটবদ্ধ হয়ে প্রার্থী দিলে তাকে নিজ দলের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। অর্থাৎ বড় দলের সঙ্গে কোনো ছোট দল জোট করলে এবং ছোট দলের প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে তিনি আর আগের মতো বড় দলের প্রতীকটি পাবেন না।


জুলাই শহীদ পরিবারের জন্য ১৫৬০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পসহ ১৮ প্রকল্প অনুমোদন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকার মিরপুরে জুলাই শহীদ পরিবারের জন্য ১৫৬০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প ও মেট্রোরেল লাইন-৬ প্রকল্পে তৃতীয় সংশোধনীসহ ১৫ হাজার ৩৮৩ কোটি ৫১ লাখ টাকার ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৯ হাজার ৪৫১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ থেকে ৫ হাজার ৬০৯ কোটি ৭০ লাখ এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৩৭৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সন্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো- চট্টগ্রাম অঞ্চলের টেকসই কৃষি উন্নয়ন, মানসম্পন্ন আলু বীজ উৎপাদন-সংরক্ষণ এবং কৃষক পর্যায়ে বিতরণ জোরদারকরণ, গ্যাসের ৩টি অনুসন্ধান কূপ খনন এবং ঢাকার মিরপুরে জুলাই শহীদ পরিবারের জন্য ১৫৬০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প। এছাড়া জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের নিজস্ব জমিতে ৩৬ জুলাই আবাসিক ফ্ল্যাট তৈরি, সচিবালয়-পরিবহণ পুল-মিনিস্টার্স অ্যাপার্টমেন্ট ও সচিব নিবাসের অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং সিরাজগঞ্জ-রায়গঞ্জ জেলা মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ প্রকল্প।
আরও আছে, নারায়ণগঞ্জ গ্রিন অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স আরবান ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট, অটিজম ও এনডিডি সেবা প্রদান, জাপান হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট স্কলারশিপ প্রজেক্ট, ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবনী ইকো সিস্টেম উন্নয়ন, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় একাডেমিক ও গবেষণাগার উন্নয়ন, ক্লাইমেট রেনপনসিভ রিপ্রডাকটিভ হেলথ অ্যান্ড পপুলেশন সার্ভিস প্রজেক্ট, এস্টাবলিস্টমেন্ট অব এসেনসিয়াল অ্যান্ড বায়োটেক রিসার্স সেন্টার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও কমিউনিটি ক্লিনিকের উন্নয়ন এবং সোনাগাজী ২২০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল হলেও একনেক ও মন্ত্রিপরিষদ বৈঠক চলবে। এছাড়া একনেকে উপস্থাপন হলেও সচিবালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ এবং স্বাস্থ্য খাতের একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এ দুটি প্রকল্প পর্যালোচনা করতে বলা হয়েছে। শোনা যায়- এখনো দুর্নীতি কমেনি। কিন্তু প্রকল্পে ঠিকাদার সংক্রান্ত দুর্নীতি তেমন করার সুযোগ পায়নি।


বেগম খালেদা জিয়া: গৃহিণী থেকে দেশনেত্রী, জাতির আত্মগৌরবের এক অনিবার্য প্রতীক

নূরুল ইসলাম মনি- ভাইস চেয়ারম্যান, বিএনপি
বেগম খালেদা জিয়া
আপডেটেড ২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০০:০৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী, সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাষ্ট্রচিন্তা, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি এবং মানুষের অন্তর্নিহিত অধিকার রক্ষার সংগ্রামে এক অবিচল ও ঐতিহাসিক নাম। দুঃশাসন, প্রতিহিংসা ও মিথ্যা মামলার নিপীড়নের মধ্যেও তিনি যে দৃঢ়তা ও নৈতিক সাহস দেখিয়েছেন, তা এ দেশের জনগণের ভোটাধিকার ও স্বাধীনতার প্রতি গভীর দায়বোধ থেকেই উৎসারিত।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রিয়জনদের হারিয়েও তিনি কখনো দমে যাননি, বরং দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবার সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর ভাবনা, তাঁর লড়াই এবং তাঁর ত্যাগ আজও জাতির বিবেককে নাড়িয়ে দেয়। তিনি সেই নেত্রী, যিনি ক্ষমতাকে কখনো বিশেষাধিকার হিসেবে নয় বরং জনগণের আমানত হিসেবে দেখেছেন।
তাঁর জীবনগাথা শুধুই রাজনৈতিক উত্থানের ইতিহাস নয়, এটি এক নারীর অনলস যাত্রা। গৃহিণীর সীমাবদ্ধ পরিসর থেকে রাষ্ট্রনেতৃত্বের বিশাল প্রান্তরে পদচিহ্ন রাখার ইতিহাস। তিনি দেখিয়েছেন, একজন নারীর ক্ষমতার শক্তি কোনো প্রাতিষ্ঠানিক আদেশে আসে না; তা আসে চরিত্র, দৃঢ়তা, নৈতিকতা এবং মানুষের প্রতি অনুরাগ থেকে।
বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সেই মেরুদণ্ড, যার ওপর দাঁড়িয়ে আজও আমাদের ন্যায়, অধিকার ও মুক্ত ভবিষ্যতের আশা দৃঢ় থাকে। তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় আমাদের মনে করিয়ে দেয়- একজন সত্যিকারের নেত্রী শুধু দেশ পরিচালনা করেন না; তিনি জাতিকে ধৈর্য, সাহস ও নৈতিকতার পথে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি দেন। দেশবাসীর পক্ষ থেকে এই মহান নেত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

বাংলাদেশের রাজনীতির এক মহীয়সী প্রতিমা

স্বাধীনতার মহান ঘোষক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অকাল শাহাদত তাঁর জীবনের মোহময় শান্তিকে ভেঙে দিয়ে দেশের রাজনৈতিক নিয়তির মুখোমুখি দাঁড় করায়। একদিকে ব্যক্তিগত শোক, অন্যদিকে জাতির ভবিষ্যৎ- এই দুই চরম বাস্তবতার সংঘর্ষ থেকে উঠে আসেন তিনি।
একটি নারীসত্তা- যে পরম মমতায় সংসার সামলাতেন হঠাৎ হয়ে ওঠেন গণতন্ত্রের রক্ষক, দলীয় নেতৃত্বের প্রতীক এবং কোটি কোটি মানুষের আশ্রয়স্থল।
এই রূপান্তর ছিল সময়, দায়িত্ব ও ইতিহাসের ডাকে সাড়া দেওয়ার সৎ সাহস। সেই সাহসই তাঁকে পরিণত করেছে বাংলাদেশের প্রথম নারী জাতীয় নেতায়। যিনি শুধু নেতৃত্ব দেননি, একটি জাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথ দেখিয়েছেন।

মহান নেত্রী: শক্তি, সহনশীলতা ও মানবিকতার মিশ্রণ

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীদের পথচলা ছিল দীর্ঘকাল অনগ্রসর। সেই সামাজিক বাস্তবতার মাঝেও খালেদা জিয়া নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন এমন এক উচ্চতায়, যা জাতির ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায় হয়ে থাকবে।
তিনি রাজনীতিতে শক্তির প্রতীক হলেও নিপীড়নের মুহূর্তে ছিলেন ধৈর্যের অদম্য উদাহরণ। তিনি প্রতিহিংসার মুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন নীরব মর্যাদায়, আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ছিলেন দৃঢ় লৌহকঠিন মনোবলে।
একজন নারী, যিনি একই সাথে মা, স্ত্রী, নেত্রী এবং রাষ্ট্রনায়ক—তিনি দেখিয়েছেন, রাজনীতি কখনো শুধুই কৌশল নয়; এটি হৃদয়ের ভিতরকার মানবিকতার উৎসমূল দিয়ে পরিচালিত হয়।

মমতাময়ী মা থেকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রধান প্রতীক

প্রিয় তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর প্রতি তাঁর মমতা ছিল পৃথিবীর প্রতিটি মায়ের মতোই গভীর, নির্মল ও কোমল। কিন্তু যখন বাংলাদেশ ও দেশের মানুষের প্রশ্ন সামনে এসেছে, তখন তিনি ব্যক্তিজীবনের মমতা অতিক্রম করে জাতির মায়ের ভূমিকায় নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
তাঁর সন্তানদের ওপর অমানবিক অত্যাচার, তারেক রহমানের নির্বাসন, আরাফাত রহমান কোকোর অকাল মৃত্যু, তাঁর পরিবারের ওপর গভীর ষড়যন্ত্র এবং তাঁর নিজের ওপর অব্যাহত দমন—এসবকিছুর মাঝেও তিনি মানুষের অধিকার রক্ষার লড়াই থামাননি।
একজন মা তাঁর সন্তানের জন্য যেমন সহ্য করেন অন্ধকার, ঠিক তেমনি তিনি দেশমাতৃকার জন্য সহ্য করেছেন অমানবিকতার নিষ্ঠুরতম রূপ। সেই সহনশীলতা তাঁকে পরিণত করেছে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের এক অবিনাশী প্রতীকে।

নেতৃত্বে তাঁর ভূমিকা ছিল দায়বদ্ধতার এক স্বচ্ছ নির্মাণশৈলী

আমাদের দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় নেতৃত্বের প্রশ্নটি খুব সহজ নয়। ক্ষমতা, প্রভাব, স্বার্থ—এই তিনটি উপাদান একজন নেতাকে কখনো কখনো নিজের স্বরূপ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া এই ত্রিমাত্রিক প্রলোভনের বিপরীতে দাঁড়িয়েছেন এবং প্রতিষ্ঠা করেছেন দুটি মৌলিক দর্শন: গণতন্ত্রের প্রতি তাঁর অটল বিশ্বাস এবং জনগণের প্রতি তাঁর অঙ্গীকার।
বেগম খালেদা জিয়া তাঁর শাসনামলে বাংলাদেশকে দিয়েছেন রাজনৈতিক স্থিতি, অর্থনৈতিক গতি এবং আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার পরিচ্ছন্ন কাঠামো। তিনি বুঝতেন- রাষ্ট্র পরিচালনা মানে বাহ্যিক আধুনিকতার প্রদর্শনী নয়, বরং প্রাতিষ্ঠানিক স্থিতি ও মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি এবং জীবনমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতা।
তিনি সিদ্ধান্তে দৃঢ় ছিলেন, কিন্তু মানুষের প্রতি ছিলেন অত্যন্ত সহানুভূতিশীল। তিনি প্রশাসনে স্বচ্ছতা, অর্থনীতিতে উদ্যোক্তাবান্ধব পরিবেশ এবং সমাজে ন্যায়বোধ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন গভীর মমতা ও রাষ্ট্রদর্শনের সমন্বয়ে।
জননেতা তারেক রহমানের মুখে প্রায়ই শোনা যায়,
“দেশনেত্রীর সিদ্ধান্তগুলো ছিল সংকটময় সময়ের সঠিক দিকনির্দেশনা, আর তাঁর ধৈর্য ছিল আমাদের রাজনৈতিক নৈতিকতার ভিত্তি।”
এই মূল্যায়ন শুধু রাজনৈতিক নয়, এটি ইতিহাসসম্মত সত্য।

প্রতিহিংসার প্রতিকূলতা এবং দেশবাসীর পক্ষে তাঁর অটল অবস্থান

বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিহিংসা প্রায়ই নীতিকে ছাপিয়ে চলে। কিন্তু খালেদা জিয়ার ওপর যেভাবে রাষ্ট্রীয় নির্যাতন নেমে এসেছে তা শুধুমাত্র ব্যক্তি নয়, বরং গণতন্ত্রকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়েছিল।
তিনি মিথ্যা মামলা, বন্দিত্ব, চিকিৎসা বঞ্চনা সবই সহ্য করেছেন নীরব মর্যাদায়। তাঁর চোখে কখনো কোনো প্রতিশোধের ভাষা নেই। তাঁর ছিল শুধু মানুষের প্রতি ভালোবাসার অঙ্গীকার ও গণতন্ত্র রক্ষার দৃঢ় সংকল্প। এই সংকল্পই তাঁকে ইতিহাসের পাতায় স্থায়ী করে রেখেছে।

দেশনেত্রীর অসুস্থতা এবং জাতির অন্তর্গত যন্ত্রণা

বাংলাদেশের মানুষের প্রাণপ্রিয় এই নেত্রী আজ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ফ্যাসিস্ট হাসিনার ক্ষমতার প্রতিহিংসার ফলে চিকিৎসার জন্য তিনি যে স্বাভাবিক অধিকারটুকুও পাননি তা দেশের সাধারণ মানুষকে গভীরভাবে ব্যথিত করেছিলো। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী, যিনি দেশের গণতন্ত্র, উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন ও রাষ্ট্রগঠন প্রক্রিয়ায় অসামান্য অবদান রেখেছেন তাঁর প্রতি এই নিষ্ঠুর অবহেলা ও নির্যাতন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে নিঃসন্দেহে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকবে।
তাঁর রোগশয্যা তাই কেবল একজন নেত্রীর অসুস্থতার প্রতীক নয়, এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের প্রতিবিম্ব।

জনগণের হৃদয়ে তাঁর দৃঢ় অবস্থান এবং প্রবহমান সম্মান

বাংলাদেশের জনগণের কাছে বেগম খালেদা জিয়া কেবল একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নাম নয়, বরং তিনি এক সংগ্রামের নাম, এক মূল্যবোধের নাম, এক ইতিহাসের নাম।
তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি আজ যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে, তার ভিত্তিমূলেই রয়েছে দেশনেত্রীর অটল নৈতিক অবস্থান। তাঁর ত্যাগ, তাঁর ধৈর্য, তাঁর স্থিতধী রাজনৈতিক প্রজ্ঞা বিএনপিকে শুধু সংগঠন নয় একটি নৈতিক শক্তিতে রূপান্তর করেছে।
একজন নেত্রীর জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা কখনো শুধুমাত্র তাঁর অর্জন দিয়ে মূল্যায়িত হয় না, মূল্যায়িত হয় তাঁর সংকটে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষমতা দিয়ে। আর এই জায়গাটিতেই বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের মানুষের কাছে এক অমোচনীয় আবেগের প্রতীক।

সর্বোপরি-
বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সেই বিরল নেত্রী, যাঁর জীবনী পাঠ করলে ক্ষমতার দম্ভ নয়, বরং মানুষের প্রতি গভীর অঙ্গীকারের দৃষ্টি চোখে পড়ে। তাঁর শারীরিক অবস্থা আজ নাজুক হলেও তাঁর আদর্শ, রাজনৈতিক বোধ, রাষ্ট্রদর্শন এবং গণতন্ত্রের প্রতি অটল অবস্থান বাংলাদেশের সংগ্রামী মানুষের মনে চিরজাগ্রত।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক যাত্রা যতদিন অব্যাহত থাকবে ততদিন বেগম খালেদা জিয়ার নাম দেশের মানুষের হৃদয়ে শ্রদ্ধা ও মর্যাদার আসনে অটল থাকবে। তিনি একদিকে ইতিহাস, অন্যদিকে অনুপ্রেরণা আর সর্বোপরি গণতন্ত্রমনা একটি জাতির অপরিহার্য মানসিক ভরসা।
প্রিয় নেত্রীর এই সংকটময় সময়ে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে আমি তাঁর শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা কামনা করছি এবং দেশবাসীর কাছে তাঁর সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা করছি।


মেয়াদ বাড়ল মেট্রোরেল প্রকল্পের, ব্যয় কমল ৭৫৪ কোটি টাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

‎দেশের প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্প ঢাকা ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (এমআরটি লাইন-৬) ব্যয় ৭৫৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা কমল। তবে প্রকল্পের মেয়াদ বেড়েছে আরও তিন বছর।

সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ‘এমআরটি লাইন-৬’ প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) অনুমোদিত হয়েছে।

এই প্রস্তাবে প্রকল্প ব্যয় দ্বিতীয় সংশোধিত ডিপিপি থেকে ৭৫৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা কমিয়ে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২ হাজার ৭১৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা।

২০১২ সালে প্রকল্পের প্রস্তাবে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকার ব্যয় অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। ১২ বছর মেয়াদি প্রকল্পটির মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত লাইন বাড়ানোর কারণে ২০২২ সালে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩৩ হাজার ৪৭১ কোটি ৯৯ লাখ টাকায়। তবে সর্বশেষ সংশোধনে প্রকল্পের ব্যয়ে সরকারের অংশ কমে ১২ হাজার ৫২১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা এবং জাইকার ঋণ বেড়ে ২০ হাজার ১৯৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকায় নির্ধারিত হয়েছে।

প্রস্তাবিত সংশোধন অনুযায়ী প্রকল্পের মেয়াদ আরও তিন বছর বাড়িয়ে ২০২৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল সিস্টেম ইনস্টলেশন, টেস্টিং, ডিফেক্ট নোটিফিকেশন পিরিয়ড ও নতুন ২৪টি ট্রেন সেটের মেজর ওভারহলিং সম্পন্ন করতে মেয়াদ বাড়ানো অপরিহার্য—ডিএমটিসিএল এমন ব্যাখ্যা দিয়েছে।

ব্যাখ্যা অনুসারে, মেট্রোরেলের বিকল্প আয়ের উৎস হিসেবে প্লাজার কথা ভাবা হয়েছিল। পরে পর্যালোচনায় লাভজনক নয় বলে বাদ দেওয়া হয়েছে। এতে ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ বড় অঙ্কের টাকা সাশ্রয় হচ্ছে।

এ বিষয়ে মেট্রোরেল-৬ (দক্ষিণ)-এর প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল ওহাব বলেন, প্রকল্প পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বাদ দেওয়া স্টেশন প্লাজাগুলোর খুব বেশি প্রয়োজন নেই।

গত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাব (আরডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়েছে। এর ভিত্তিতে সংশোধন অনুমোদনের সুপারিশ করেছে পরিকল্পনা কমিশন।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদ বলেন, ঢাকা মহানগর এলাকায় পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ গণপরিবহনব্যবস্থা উন্নয়নের মাধ্যমে যানজট সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে বিধায় প্রকল্পটি মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, ডিপিপিতে রোলিং স্টকস ও ইকুইপমেন্টে ৫৬১ কোটি ১৭ লাখ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। একইভাবে জেনারেল কনসালটেন্সি সার্ভিসে ২২০ কোটি ২৮ লাখ টাকা, ইঅ্যান্ডএম সিস্টেমে ২৮৮ কোটি ৬৭ লাখ, ডিপো ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বাবদ ৪৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

অন্যদিকে বিজয় সরণি, ফার্মগেট, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মতিঝিল স্টেশন প্লাজা বাদ দেওয়ায় ভূমি অধিগ্রহণ খাতে ব্যয় কমেছে ১ হাজার ২১১ কোটি ৭১ লাখ টাকা, চারটি স্টেশন প্লাজার কাজ বাদ দেওয়ায় আরও ১৬৪ কোটি ৭২ লাখ, মেইন লাইনের সিভিল ও স্টেশন ওয়ার্কে (সিপি-০৬) ব্যয় কমেছে ১১৬ কোটি এবং ইআরএমসি (সিপি-০৯) ব্যয় কমেছে ৯০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।

সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত উত্তরা-মতিঝিল অংশের কাজের অগ্রগতি ৯৯ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং মতিঝিল-কমলাপুর অংশের অগ্রগতি ৬৩ দশমিক ১৫ শতাংশ।


দূষণমুক্ত শহর গড়তে সিটি কর্মকর্তাদের সক্রিয় হওয়ার আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।

সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউট (এনআইএলজি)-তে সিটি কর্পোরেশনের ৯ম গ্রেড কর্মকর্তাদের জন্য বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, প্লাস্টিক ও পলিথিন দূষণ নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশনকে নিয়মিত অভিযান চালাতে হবে। বাজার, মার্কেট ও ফুটপাত এলাকায় পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং কঠোর নজরদারি জরুরি। একই সঙ্গে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক কমাতে জনগণকে অভ্যাস পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, শব্দদূষণ শহরের মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাই হাইড্রোলিক হর্ন, লাউডস্পিকার ও নির্মাণকাজে শব্দনিয়ন্ত্রণ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি বায়ুদূষণ কমাতে নির্মাণসামগ্রী ভেজা পদ্ধতিতে সংরক্ষণ ও ঢেকে পরিবহন করতে হবে। এছাড়া অবৈধ ইটভাটা বন্ধে সিটি কর্পোরেশনের সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।

তিনি আশা করেন, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, প্লাস্টিক দূষণ, শব্দদূষণ ও বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন।

তিনি বলেন, দক্ষ নগর ব্যবস্থাপনা গড়তে নিয়মিত প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। এই প্রশিক্ষণ কর্মকর্তাদের কাজের দক্ষতা বাড়াবে এবং নগরসেবা আরও উন্নত হবে।

অনুষ্ঠানে এনআইএলজির মহাপরিচালক মো. আব্দুল কাইয়ূম; স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব (নগর উন্নয়ন অধিশাখা) আবুল খায়ের মোহাম্মদ হাফিজুল্লাহ্ খান এবং এনআইএলজির পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ) মো. কায়েসুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।


থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে বন্যায় প্রাণহানি : প্রধান উপদেষ্টার গভীর শোক

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় বহু মানুষের প্রাণহানি ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
গতকাল রোববার থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুলকে পাঠানো এক বার্তায় তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান এবং আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত সুস্থতা ও পুনরুদ্ধার কামনা করেন।
আজ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাওয়া এক বার্তায় এ কথা জানানো হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বার্তায় বলেন, এই বিপর্যয়ে যারা প্রিয়জন হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন কিংবা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, তাদের প্রতি বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের গভীর সহমর্মিতা রয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, থাই সরকার ও বন্ধুসুলভ জনগণ এ কঠিন সময়ে বাংলাদেশের চিন্তা ও প্রার্থনায় রয়েছে।
তিনি দৃঢ়তার সাথে আশা প্রকাশ করেন যে প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুলের নেতৃত্বে থাইল্যান্ড এই বিপর্যয় থেকে দ্রুত উত্তরণ ঘটাবে এবং ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠবে।
প্রধান উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেন, পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা ও সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। সূত্র: বাসস


সমুদ্রে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে দক্ষতা দেখাল নৌবাহিনী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বঙ্গোপসাগরে সফল ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বাৎসরিক সমুদ্র মহড়া সমাপ্ত হয়েছে।
গতকাল রোববার সমাপনী দিনে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসানের আমন্ত্রণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, আইন–বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা সমাপনী মহড়া প্রত্যক্ষ করেন।
পাঁচ দিনব্যাপী আয়োজিত এ মহড়ায় নৌবাহিনীর ফ্রিগেট, করভেট, ওপিভি, মাইন সুইপার, পেট্রোলক্রাফট, মিসাইল বোটসহ বিভিন্ন জাহাজ এবং মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট, হেলিকপ্টার ও বিশেষায়িত ফোর্স সোয়াড অংশ নিয়েছে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ডসহ সংশ্লিষ্ট মেরিটাইম সংস্থাগুলোও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মহড়ায় অংশগ্রহণ করে।
মহড়ার বিভিন্ন ধাপে নৌবহরের রণকৌশল অনুশীলন, সমুদ্র এলাকায় পর্যবেক্ষণ, লজিস্টিক অপারেশন এবং উপকূলীয় নৌ স্থাপনাগুলোর প্রতিরক্ষা মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। চূড়ান্ত দিনে বিশেষ আকর্ষণ ছিল নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ, শোল্ডার লঞ্চড সারফেস টু এয়ার মিসাইল ফায়ারিং, অ্যান্টি-এয়ার র‍্যাপিড ওপেন ফায়ারিং, রকেট ডেপথ চার্জ ফায়ারিং, অপারেশন এবং নৌ-কমান্ডোদের হেলিকপ্টার ভিত্তিক ভিজিট বোর্ড সার্চ অ্যান্ড সিজার মহড়া।
নৌবাহিনীর এই মহড়ার মূল লক্ষ্য ছিল সমুদ্র এলাকায় দেশের সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণ, সমুদ্র সম্পদ রক্ষা, সমুদ্রপথের নিরাপত্তা, চোরাচালান রোধ, জলদস্যুতা দমন, উপকূলীয় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং সমুদ্র এলাকায় টহল জোরদার করা। সমাপনী দিনে উপস্থিত অতিথিরা নাবিক ও কর্মকর্তাদের প্রশংসা করেন এবং দেশের সমুদ্রসীমা রক্ষার পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে নৌবাহিনীর অবদানকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেন।


দলগতভাবে জড়িত আ.লীগ, মূল সমন্বয়ে তাপস

বিডিআর হত্যাকান্ডের স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন
বিডিআর বিদ্রোহ হত্যাযজ্ঞের ঘটনা তদন্তের জন্য গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
আপডেটেড ১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০১:৩৭
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

বিডিআর বিদ্রোহের নামে সংঘটিত বর্বরতম হত্যাযজ্ঞের বিষয় তদন্তের জন্য গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
গতকাল রোববার কমিশনের প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান ও অন্যান্য সদস্যরা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেন। কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন- মেজর জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার (অব.), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমান বীর প্রতীক (অব.), মুন্সী আলাউদ্দিন আল আজাদ যুগ্মসচিব (অব.), ড. এম. আকবর আলী ডিআইজি (অব.), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. শরীফুল ইসলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহনেওয়াজ খান চন্দন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাতি দীর্ঘদিন ধরে অন্ধকারে ছিল। আপনারা সত্য উদঘাটনে যে ভূমিকা রেখেছেন, জাতি তা স্মরণে রাখবে। জাতির পক্ষ থেকে আপনাদের প্রতি ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, ইতিহাসের এই ভয়াবহতম ঘটনা নিয়ে জাতির অনেক প্রশ্ন ছিল, এই কাজের মধ্য দিয়ে সেসব প্রশ্নের অবসান ঘটবে। এই প্রতিবেদনে শিক্ষণীয় বহু বিষয় এসেছে। জাতির জন্য মূল্যবান সম্পদ হয়ে থাকবে এটি।
কমিশন প্রধান ফজলুর রহমান বলেন, তদন্তকাজ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও ত্রুটিমুক্ত করার স্বার্থে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা যখন কাজ শুরু করি তখন ১৬ বছর আগের এই ঘটনার বহু আলামত ধ্বংস হয়ে গেছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেকে বিদেশে চলে গেছেন।
‘আমরা দুটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেছি। সাক্ষীদের ডাকলাম, কারো কারো ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত বক্তব্য শুনেছি আমরা। যতক্ষণ তিনি বলতে চেয়েছেন। যারা তদন্তে জড়িত ছিল তাদের সঙ্গে কথা করেছি। তাদের তদন্তের রিপোর্ট কালেক্ট করেছি, অন্যান্য এলিমেন্ট কালেক্ট করেছি।’
তিনি বলেন, এই তদন্তের মাধ্যমে বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে জনমনে থাকা প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হয়েছে, উদঘাটনের চেষ্টা করা হয়েছে কার কী ভূমিকা ছিল। কেন সেনাবাহিনী দাঁড়িয়ে থাকল অ্যাকশন নিল না।
তিনি বলেন, তদন্তে বিডিআর হত্যাকাণ্ডে বহিঃশক্তির সরাসরি সম্পৃক্ততা ও তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সরাসরি জড়িত থাকার শক্তিশালী প্রমাণ মিলেছে।
এসময় কমিশনের ফাইন্ডিংস সম্পর্কে জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার বলেন, এই ঘটনা কিছু বাহ্যিক ও প্রকৃত কারণ বের করেছে কমিশন। এই হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত এবং এর পেছনে প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেছিল তৎকালীন সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস।
তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের রক্ষা করতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সরাসরি ভূমিকা রেখেছে। তারা ২০-২৫ জনের একটি মিছিল নিয়ে পিলখানায় ঢুকেছে এবং বের হওয়ার সময় সেই মিছিলে দুই শতাধিক মানুষ ছিলো। পুরো ঘটনাটি সংঘটিত করার ক্ষেত্রে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘গ্রিন সিগন্যাল’ ছিল।
তিনি এই ঘটনার দায় নিরূপণের ক্ষেত্রে বলেন, দায় তৎকালীন সরকার প্রধান থেকে শুরু করে সেনাপ্রধানেরও। এই ঘটনাকে রাজনৈতিকভাবে সমাধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুলিশ ও র‍্যাব এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোরও রয়েছে চরম ব্যর্থতা।
তিনি বলেন, ওই ঘটনার সময় কিছু প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং কয়েকজন সাংবাদিকের ভূমিকা ছিল অপেশাদার। ওই হত্যাকাণ্ডের সময় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় (তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন) যেসব বিডিআর সদস্যদের সঙ্গে শেখ হাসিনা বৈঠক করেছে, তাদের সঠিক নাম পরিচয় ও তথ্য সংরক্ষণ করা হয়নি।
কমিশন তাদের প্রতিবেদনে বেশকিছু সুপারিশ করে, যাতে করে ভবিষ্যতে বাহিনীগুলোতে এই ধরনের ঘটনা এড়ানো যায় এবং এই ঘটনার ভিকটিমরা ন্যায়বিচার পায়।
বৈঠকে অন্যান্যের উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ সহকারী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আব্দুল হাফিজ ও স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি।


আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খালেদা জিয়ার অসুস্থতার খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ

বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যাপক গুরুত্ব পেয়েছে।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ৮০ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া ২৩ নভেম্বর ফুসফুস সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে নিবিড় পরিচর্যায় রয়েছেন।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খানকে উদ্ধৃত করে এএফপি জানিয়েছে, তিনি ‘অত্যন্ত সংকটাপন্ন’ অবস্থায় রয়েছেন এবং চিকিৎসকরা তাঁর শারীরিক অবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।

এএফপি আরও জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। সেজন্য একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সংস্থাটি তাঁর একাধিক স্বাস্থ্য জটিলতার কথা উল্লেখ করেছে, যার মধ্যে রয়েছ—হৃদরোগ, লিভার ও কিডনির সমস্যা, ডায়াবেটিস, ফুসফুসের জটিলতা, বাত এবং চোখের অসুস্থতা।

লন্ডন থেকে বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান জাতির কাছে মায়ের সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এমন সঙ্কটকালে মায়ের স্নেহ স্পর্শ পাবার তীব্র আকাঙ্ক্ষা যেকোনো সন্তানের মতো আমারও আছে। কিন্তু অন্য আর সকলের মতো সেটা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমার একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ অবারিত নয়। স্পর্শকাতর বিষয়টিতে বিস্তারিত বর্ণনার অবকাশও সীমিত।’

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ. জেড. এম. জাহিদ হোসেনকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, খালেদা জিয়া ‘অত্যন্ত সংকটাপন্ন’ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

এএফপি’কে উদ্ধৃত করে গালফ নিউজ একই ধরনের তথ্য প্রকাশ করেছে। দ্য ডন নিউজ এবং আরব নিউজ তার অবনতিশীল স্বাস্থ্য নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

আরব নিউজ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, বেগম জিয়ার অবস্থা ‘অত্যন্ত সংকটাপন্ন’।

ভারতের এনডিটিভি তাদের প্রতিবেদনের শিরোনামে লিখেছে—‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি’।

এ ছাড়া, টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দু এবং হিন্দুস্তান টাইমসও এ খবরটি গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করেছে।

এদিকে, শনিবার রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে এক ব্রিফিংয়ে ডা. এ. জেড. এম. জাহিদ হোসেন বলেন, বেগম জিয়ার অবস্থা গত তিন দিন ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে।

তিনি বলেন, বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে এবং অনুমোদন পাওয়া মাত্র তাকে বিদেশে নেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে। তার পরিবারের সদস্যরা ও বিএনপি নেতারা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সুস্থতার জন্য জাতির কাছে দোয়া চেয়েছেন। সূত্র: বাসস


তারেক রহমানের দেশে ফেরায় নিষেধাজ্ঞা নেই: তৌহিদ হোসেন

রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি: পরিবর্তনশীল বিশ্বে প্রাসঙ্গিক ভূমিকা সংজ্ঞায়ন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: বাসস
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে সরকারের কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তিনি দেশে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করলে একদিনের মধ্যেই এককালীন ভ্রমণ অনুমতি ইস্যু করা সম্ভব।

তিনি বলেন, ‘তিনি (তারেক রহমান) যদি আজ বলেন যে তিনি দেশে ফিরতে চান, আমরা আগামীকাল এককালীন ভ্রমণ অনুমতি ইস্যু করতে পারি। পরদিন তিনি বিমানযোগে দেশে আসতে পারবেন। কোনো সমস্যা নেই। এটি সম্পূর্ণভাবে তার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করছে।’

আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি: পরিবর্তনশীল বিশ্বে প্রাসঙ্গিক ভূমিকা সংজ্ঞায়ণ’ শীর্ষক আলোচনায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই মন্তব্য করেন। কূটনৈতিক সংবাদদাতা সমিতি, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

তৌহিদ বলেন, সরকার জানে না তারেক রহমান বর্তমানে লন্ডনে কোন অবস্থানে আছেন। তিনি আরও বলেন, যদি তিনি দেশে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেন, অন্য কোনো দেশের পক্ষ থেকে তাকে বাধা দেওয়া অস্বাভাবিক হবে।

উল্লেখ্য, কেউ যদি দেশে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করে কিন্তু বৈধ পাসপোর্ট না থাকে, সাধারণত সরকার এককালীন ভ্রমণ অনুমতি প্রদান করে, যা এক দিনেরও কম সময়ে সম্পন্ন হয়।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বিষয়ে তৌহিদ বলেন, জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রতিবেশী ভারত নতুন বাস্তবতার সাথে মানিয়ে নিতে কিছু সময়ের প্রয়োজন, এবং তিনি আশা প্রকাশ করেন যে দুই দেশের কর্মসম্পর্ক শীঘ্রই স্বাভাবিক হবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা ভারতের সঙ্গে স্বার্থভিত্তিক আরও উন্নত কর্মসম্পর্ক চাই।’

তারেক রহমান দেশে না ফিরলে নির্বাচনী কার্যক্রমে কোনো বাধা দেখা দেবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ বলেন, কোনো ব্যক্তির অনুপস্থিতি নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করবে বলে তিনি মনে করেন না।

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিষয়ে তৌহিদ বলেন, যদিও তিনি ভারতে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে নয়াদিল্লি কোনো আনুষ্ঠানিক নিশ্চয়তা দেয়নি এবং তার প্রত্যাবর্তন নিয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি।

তিনি বলেন, ‘আমার কাছে আসাদুজ্জামান খান কামাল সম্পর্কিত কোনো অফিসিয়াল তথ্য নেই। আমরা সবাই জানি তিনি ভারতে আছেন, কিন্তু আমাদের কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে লিখিত আকারে জানানো হয়নি। আমার কাছে কোনো তথ্য নেই যে তার ফেরত প্রক্রিয়া সম্পর্কিত কোনো আলোচনা শুরু হতে যাচ্ছে।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, যেহেতু সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দণ্ডিত করা হয়েছে, বাংলাদেশ আশা করে যত দ্রুত সম্ভব ভারত থেকে তাকে ফেরত পাঠানো হবে।

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি বিশ্বের একমাত্র সীমান্ত যেখানে যুদ্ধ পরিস্থিতি ছাড়াই মানুষ নিহত হয়।

তিনি বলেন, ‘কেউ যদি অপরাধ করে, তাহলে (গুলি না চালিয়ে) বিচার ও শাস্তি দেওয়ার জন্য আদালত আছে।’

তৌহিদ বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের দ্বারা তার নাগরিকদের হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখবে এবং নিন্দা জানাবে।

অনুষ্ঠানে ডিক্যাব সভাপতি এ কে এম মঈনুদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুজ্জামান মামুনও বক্তব্য রাখেন। সূত্র: বাসস


লেজুরবৃত্তির বাইরে শিক্ষকদের পেশাদারি আচরণ করতে হবে: শিক্ষা উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর

শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর সি আর আবরার বলেছেন, শিক্ষা ব্যবস্থার গুণগত মান উন্নয়নে শিক্ষকদেরকে লেজুরবৃত্তি ও রাজনৈতিক আশ্রয় প্রশ্রয়ের বাইরে এসে পেশাদারি আচরণ করতে হবে। সংস্কারের অংশ হিসেবে এই সরকার একটি গ্রহনযোগ্য টেকসই ব্যবস্থা প্রণয়ন করেছে। শনিবার দুপুরে ফরিদপুরে শিক্ষা ব্যবস্থাপনা এ গুণগত মানোন্নয়নে শিক্ষকদের ভূমিকা শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথিত ভাষনে এসব কথা বলেন।

ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদ এর আয়োজনে জেলা প্রশাসন ও বৃহত্তর ফরিদপুর প্রাইভেট স্কুল সমন্বয় পরিষদ এর সহায়তায় এ সেমিনারে বৃহত্তর ফরিদপুর এর ৫ জেলার শিক্ষকরা অংশ নেন।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্লার সভাপতিত্বে সেমিনারে সম্মানিত অতিথি ছিলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন এর চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক প্রফেসর বি.এম আব্দুল হান্নান,ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর ফকীর মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বক্তব্য রাখেন। এ সময় যশোর শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও দৈনিক ফতেহাবাদ সম্পাদক প্রফেসর এবিএম সাত্তার, ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সম্পাদক মফিজ ইমাম মিলন,বৃহত্তর ফরিদপুর প্রাইভেট স্কুল সমন্বয় পরিষদের সভাপতি সাইফুল ইসলাম অহিদ,সাধারন সম্পাদক মো:মিজানুর রহমানসহ স্কুল ও কলেজের শিক্ষকগন উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় শিক্ষা উপদেষ্টা আরো বলেন, স্বাধীনতার কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের নাগরিকরা তাদের নাগরিক মর্যাদা হারিয়ে প্রজা হয়েছিল। ২৪ এ তরুণরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করে হারানো সেই মর্যাদা নাগরিকদের ফিরিয়ে দিয়েছে। আগামী নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় সে জন্য সকলকে আন্তরিক থাকার আহ্বান জানান তিনি।


banner close