মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
১৩ কার্তিক ১৪৩২

আ.লীগকে মিছিল-সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না: প্রেস সচিব

বাসস
প্রকাশিত
বাসস
প্রকাশিত : ৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১৬:৪৪

ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামীলগকে ফ্যাসিবাদী দল উল্লেখ করে দলটিকে ‘এর বর্তমান রূপে’ দেশে কোনো ধরনের মিছিল-সমাবেশ বা প্রতিবাদ করার অনুমতি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

শনিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শফিকুল আলম এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামীলীগ একটি ফ্যাসিবাদী দল। এই ফ্যাসিবাদী দলকে বাংলাদেশে কোনো ধরনের রাজনৈতক তৎপরতা চালানোর অনুমতি দেওয়া হবে না। গণহত্যাকারী ও স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নির্দেশে যারা সমাবেশ, জমায়েত বা মিছিল করার চেষ্টা করবে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাদের কঠোরভাবে মোকাবিলা করবে।

অন্তর্বর্তী সরকার দেশে কোনো ধরনের সহিংসতা বা আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা বরদাশত করবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন শফিকুল আলম।

ফেসবুক পোস্টে তার বক্তব্যের বিষয়ে প্রেস সচিব বাসসকে বলেন, এত বড় গণহত্যা চালানোর পরও দলটির মধ্যে কোনো ধরনের অনুশোচনা নেই। এই গণহত্যাকারী দলটি রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পূর্ণ শক্তি দিয়ে তাদের মোকাবিলা করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।


হালদা নদী রক্ষায় গেজেট পরিবর্তন করা হবে: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

আপডেটেড ২৮ অক্টোবর, ২০২৫ ২০:২৭
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, গেজেট পরিবর্তন না হওয়ায় হালদা নদীর উন্নয়নমূলক অনেক কার্যক্রম বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে তাই হালদা নদী রক্ষায় গেজেট পরিবর্তন করা হবে। তিনি বলেন, হালদা নদী রক্ষায় গেজেট সংশোধনের মাধ্যমে তামাক চাষ ও নদী দূষণ বন্ধ করা হবে।

উপদেষ্টা মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে মৎস্য হেরিটেজ বাস্তবায়ন তদারকি কমিটি'র ১৫তম সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, হালদা নদী উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহকে একযোগে ও সমন্বিতভাবে কাজ করার জন্য আজকের সভা থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রয়োজনে হালদা নদী রক্ষায় ডিপিপি ও চলমান প্রকল্পের বাইরে থেকেও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার উপায় নিয়ে গবেষণা করতে হবে।

হালদা নদী রক্ষায় সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করে উপদেষ্টা বলেন, প্রকল্প মানে শুধু অর্থ ব্যয় নয়; বরং প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে সঠিক পরিকল্পনা, কার্যকর বাস্তবায়ন ও তদারকি অত্যন্ত জরুরি।

তামাক চাষ বন্ধের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, তামাক চাষের কারণে হালদা নদীর তীরবর্তী ভূমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, যা নদীর পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। তিনি তামাক চাষ বন্ধে কৃষকদের বিকল্প জীবিকার সুযোগ সৃষ্টি করতে কৃষি মন্ত্রণালয়কে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, হালদা নদীকে তামাক চাষমুক্ত করতে হবে; এ লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, হালদা নদী রক্ষায় গভীরভাবে পর্যালোচনা করে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তা চিহ্নিত করা হবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ের মধ্যেই হালদা নদী সংরক্ষণ ও উন্নয়নে প্রয়োজনীয় যেসব কাজ করার প্রয়োজন তা করা হবে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দিন এতে সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দর কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান। সভায় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার নুসরাত সুলতানা, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম, খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এবি এম ইফতেখারুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিভাগের পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক জমির উদ্দিন, মৎস্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সালমা বেগমসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

সভার শুরুতে ‘হালদা নদীর প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প (দ্বিতীয় পর্যায়)’-এর লক্ষ্যমাত্রা ও অগ্রগতি বিষয়ে উপস্থাপনা করেন প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। পরবর্তী পর্যায়ে হালদা নদীর সমস্যা, সম্ভাবনা ও সমাধানের উপায় বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া।


যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখছে ঢাকা: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ তার জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে ভারসাম্যপূর্ণ ও বাস্তবসম্মত পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করছে।

আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকরা চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই।’

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের গভীর সম্পর্ক রয়েছে এবং চীনের সঙ্গেও ব্যাপক অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। আমি মনে করি, এতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। কারণ আমরা একটি ভারসাম্য বজায় রেখেছি।’

উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি পারস্পরিক সম্মান ও গঠনমূলক সহযোগিতার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। সরকার কোনো নির্দিষ্ট দেশের সঙ্গে সম্পৃক্ততা এড়িয়ে চলার প্রয়োজন মনে করে না।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতের সরকারও এই ভারসাম্যপূর্ণ নীতি বজায় রাখবে।

উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি মনে করি, বাংলাদেশ তার আকার ও শক্তির তুলনায় আন্তর্জাতিকভাবে যথেষ্ট মনোযোগ পাচ্ছে। যারা আমাদের চেয়ে বড় ও শক্তিশালী, তারা স্বাভাবিকভাবেই বেশি দৃশ্যমান। তবে আমাদের অবস্থান বিবেচনায় আমাদের উপস্থিতি ছোট নয়— আমরা সর্বত্র দৃশ্যমানতা বজায় রাখছি।’

তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন, বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতি বাস্তবসম্মত, অর্থনৈতিক কূটনীতি এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ভিত্তিতে পরিচালিত হবে।

সম্প্রতি মার্কিন সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির শুনানিতে বাংলাদেশের জন্য মনোনীত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত হলে তিনি ঢাকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন এবং এই অঞ্চলে ‘চীনের কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকি’ তুলে ধরবেন।

ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে একটি উজ্জ্বল ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের পথে সমর্থন করে।’ তিনি ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের টিমকে নেতৃত্ব দিতে আগ্রহী, যাতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এবং ভবিষ্যতের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলা যায়।

বাংলাদেশের বৈশ্বিক অবস্থান প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অগ্রগতির অনুপাতে বৈশ্বিক অঙ্গনে দেশের মর্যাদা উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে। সূত্র: বাসস


নির্বাচন নিরাপদ করতে দ্রুত বডি-ওর্ন ক্যামেরা কেনার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এক সভায় কথা বলেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
আপডেটেড ২৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১৮:১৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে স্বচ্ছ, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক বডি-ওর্ন ক্যামেরা দ্রুত ক্রয়ের নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের জন্য সম্ভাব্য সব প্রস্তুতি দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করতে হবে। ভোটারদের মধ্যে এমন আস্থা তৈরি করতে হবে, যাতে তারা অনুভব করেন যে নির্বাচনের জন্য একটি অনুকূল ও নিরাপদ পরিবেশ বিদ্যমান।”

তিনি আরও নির্দেশ দেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই বডি-ওর্ন ক্যামেরা ক্রয় প্রক্রিয়া ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে, যাতে নির্বাচনকালীন সহিংসতা বা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করা যায়।

প্রফেসর ইউনূস বলেন, “নির্বাচনকেন্দ্রিক যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে আইন প্রয়োগের সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এমন একটি কাঠামো গড়ে তুলতে হবে, যেখানে পরিস্থিতি অবনতির কোনো সুযোগ কেউ না পায়।”

বৈঠকে বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, দেশে বর্তমানে যে পরিমাণ বডি-ওর্ন ক্যামেরা মজুত রয়েছে, সেগুলো ব্যবহার করে পুলিশ সদস্যদের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, নতুন ক্যামেরাগুলো এসে পৌঁছালে প্রতিটি জেলায় পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।

তিনি আরও জানান, বডি-ওর্ন ক্যামেরার মাধ্যমে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্রের পরিস্থিতি কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিংয়ের পাশাপাশি প্রতিটি থানা ও জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকেও পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে। সূত্র: বাসস


সব ধরনের দুর্নীতির উৎসের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক আছে: দুদক চেয়ারম্যান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সব ধরনের দুর্নীতির উৎসের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক আছে উল্লেখ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, দুর্নীতিবাজদের অনেকেই রাজনীতিবিদদের হাতে লালিত হন। বিগত সরকারের পতনের অন্যতম কারণ ছিল দুর্নীতি। সচেতন থাকতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে আগামী নির্বাচনে যাতে সঠিক ও সৎ লোকটিকে নির্বাচিত করা যায়।
গতকাল সোমবার চুয়াডাঙ্গায় অনুষ্ঠিত দুদকের গণশুনানিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান এ মন্তব্য করেন। সকাল ৯টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরের ডিসি সাহিত্য মঞ্চে গণশুনানি হয়। জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহযোগিতায় দুদক এই গণশুনানির আয়োজন করে।
এই গণশুনানিকে সফল করতে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে জেলাজুড়ে মাইকিং ও পোস্টারিং করা হয়। এ ছাড়া শহরের তিনটি স্থানে অস্থায়ী বুথ স্থাপন করে অভিযোগ সংগ্রহ করা হয়। জমাকৃত অভিযোগ যাচাই–বাছাই করে দুদকের আমলযোগ্য ৭৫টি গ্রহণ করা হয়। সংশ্লিষ্ট ২৬টি সরকারি দপ্তরের কমর্কর্তারা সশরীর উপস্থিত থেকে এসব অভিযোগের জবাব দেন।
গণশুনানিতে আমলযোগ্য ৭৫টি অভিযোগের মধ্যে ৩৩টি তাৎক্ষণিক সমাধান, ৭টি খারিজ এবং বাকিগুলো সমাধানে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। গণশুনানির আয়োজন প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের মূল উদ্দেশ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা। সেবাগ্রহীতা ও সেবাদাতার মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করা।’
সুন্দর নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতি উদ্বৃত করে মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমরা দেখেছি নির্বাচনসংক্রান্ত কিছু অপরাধ, যা সম্পর্কে আপনারা জানেন। নোমিনেশন বাণিজ্য থেকে শুরু করে অন্যান্য অনেক ধরনের বাণিজ্য হয়। নির্বাচনকালীন সময় অবৈধ টাকার লেনদেন অনেকভাবে বেড়ে যায়। সেদিকে যদি সতর্ক থাকেন, আমি বিশ্বাস করি আগামী দিনে আমরা ভালো জনপ্রতিনিধি পাব এবং তারা কল্যাণকর সরকার গঠন করতে পারবেন। এটা আমাদের প্রত্যাশা। শেষ পর্যন্ত যদি সৎ শাসক প্রতিষ্ঠিত হয়, দুর্নীতি দমন কমিশনের মতো এমন অফিসের দরকারই হবে না।
সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় চুয়াডাঙ্গায় মাদকের বিস্তার ও ব্যবসার প্রকোপ আছে উল্লেখ করে মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘যদি দুর্নীতির উৎস অনুসন্ধান করতে থাকি, তাহলে দেখব মাদক অন্যতম একটি বিষয়। আপনারা যদি একটু সচেতন থাকেন, তাহলে মাদক ব্যবসায়ীদেরও আমরা প্রতিহত করতে পারব।’
স্বর্ণ চোরাচালান প্রসঙ্গে মোহাম্মদ আবদুল মোমেন দাবি করেন, ‘স্বর্ণ চোরাচালানের বড় বড় ব্যবসায়ীদের কয়েকজন আপনার জেলারই। অনেকেই আবার বিখ্যাত। তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে পারেন।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, বিগত সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগগুলোর কিছু অনুসন্ধান পর্যায়ে, কিছু তদন্ত পর্যায়ে এবং কিছু বিষয়ে মামলা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা সাধ্যমতো কাজ করে যাচ্ছি, যাতে একটা সফল পরিণতির দিকে যেতে পারি। অনেক আসামি দেশের বাইরে চলে গেছেন। কেমন করে চলে গেছেন, সেটা আমার চেয়ে আপনারা ভালোভাবে জানেন। এমনও হতে পারে চুয়াডাঙ্গা সীমান্ত দিয়েও পার হতে পারেন।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে গণশুনানিতে অতিথি ছিলেন দুদকের কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মোহাম্মদ আলি আকবার আজিজী, মহাপরিচালক আকতার হোসেন, খুলনা বিভাগীয় পরিচালক জামালউদ্দিন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও অপস) জামাল আল নাসের।


নির্বাচনের প্রস্তুতির অগ্রগতি ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ: ইসি সচিব

চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ৭৬১, ভোটকক্ষ ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অগ্রগতি এখন ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ বলে জানিয়েছেন ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে ব্রিফিংকালে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচন প্রস্তুতি কতটা এগিয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘যদি শতকরা হিসেবে বলেন, তাহলে বলতে পারি আমরা এখন ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ প্রস্তুত। রাজনৈতিক দল ও পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন এই সপ্তাহে সম্পন্ন হলে, প্রস্তুতি শতভাগে পৌঁছাবে।’
ইসি সচিব আরও জানান, কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী দুটি বিষয়ে কিছুটা পিছিয়ে আছে কমিশন। দুটি জায়গায় অগ্রগতি কিছুটা ধীর। একটি হলো রাজনৈতিক দল নিবন্ধন, অন্যটি পর্যবেক্ষক সংস্থা নিবন্ধন। ২২টি রাজনৈতিক দলকে আমরা প্রাথমিকভাবে বিবেচনাযোগ্য মনে করেছি। এদের বিষয়ে মাঠপর্যায়ে অতিরিক্ত কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। ইনশাআল্লাহ, এই সপ্তাহের মধ্যেই আমরা তা সম্পন্ন করতে পারব।’
এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা সামান্য পিছিয়ে আছি, তবে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
ইনশাআল্লাহ যতটুকু সময় আছে, আমরা সেটুকুতে কভার করে নিতে পারব।’
পর্যবেক্ষক সংস্থার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর পর্যালোচনা চলছে। কিছু জায়গায় সাংবাদিকদের তথ্য-সীমাবদ্ধতা পূরণ করেছেন। আশা করছি, এই সপ্তাহের মধ্যেই পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধনও শেষ হবে।’
আরপিও সংশোধনে বিএনপির অপত্তির বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘বর্তমানে বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে, কমিশন পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেবে।’
আরপিও সংশোধনের পরে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয় নিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘আরপিও সংশোধনের আগে ঐকমত্য কমিশন দীর্ঘসময় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছে। এখন পর্যন্ত কোনো সাংঘর্ষিক বিষয় দেখা যায়নি।’
তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন আরপিও প্রস্তাবনাগুলো পাঁচটি দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করেছে- যেগুলো স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে, যেগুলো ভাষাগত বা সংখ্যাগতভাবে সামান্য সংশোধনযোগ্য, যেগুলো রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়া সম্ভব নয়, যেগুলো বিদ্যমান আইনে পর্যাপ্তভাবে নির্ধারিত এবং যেগুলো কমিশনের নিজস্ব বিবেচনায় সংশোধনযোগ্য মনে হয়েছে। এই পাঁচটি দিক বিবেচনা করেই সংশোধন প্রস্তাবনাটি উপদেষ্টা পরিষদে পাঠানো হয়েছে এবং তারা নীতিগত সম্মতি দিয়েছেন।’
এনসিপির প্রতীকের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবারে ইসি সচিব বলেন, ‘কমিশন ইতোমধ্যেই তাদের অবস্থান জানিয়েছে। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো বিকল্প প্রস্তাব কমিশনের কাছে আসেনি। এখনো কমিশনের আগের অবস্থানেই আছে। কমিশন যেটা বলেছে, যে তারা সহবিবেচনায় একটা প্রতীক বরাদ্দ করে দেবে। সেটাই হচ্ছে এখন পর্যন্ত অবস্থান।

চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ৭৬১, ভোটকক্ষ ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯
এদিকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারাদেশে মোট ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্র স্থাপনের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে ব্রিফিংকালে ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘দেশের ৬৪ জেলায় ৩০০ আসনে মোট ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্র চূড়ান্ত করা হয়েছে। আমরা আজ (সোমবার) চূড়ান্তভাবে ভোটকেন্দ্রের তালিকা ঠিক করেছি।’
আখতার আহমেদ আরও জানান, পুরুষদের জন্য ১ লাখ ১৫ হাজার ১৩৭ এবং মহিলাদের জন্য ১ লাখ ২৯ হাজার ৬০২ কক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ মোট কক্ষের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯। এটাই চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্র ও ভোট কক্ষের সংখ্যা।
ইসি সচিব বলেন, অস্থায়ী ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা প্রাথমিকভাবে ১৪টি, যেখানে ভোটকক্ষ থাকবে প্রায় ১২ হাজারের মতো। অর্থাৎ একটি ভোটকেন্দ্রে গড়ে ৩ হাজার ভোটার থাকবে। এটি ক্যাচমেন্ট এরিয়া হিসেবে ধরা হয়েছে। পরবর্তীতে প্রয়োজনে এই সংখ্যা সামঞ্জস্য করা হবে।
এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর ভোটকেন্দ্র স্থাপনের খসড়া তালিকা প্রকাশ করেন ইসি সচিব। সেখানে বলা হয়, ভোটকেন্দ্রে পুরুষ ও মহিলা ভোটকক্ষের পৃথক হিসাব করা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে গড়ে ৬০০ পুরুষ ভোটারের জন্য একটি এবং ৫০০ মহিলা ভোটারের জন্য একটি করে ভোটকক্ষ নির্ধারণ করা হয়।
খসড়া তালিকায় মোট ৪২ হাজার ৬১৮টি ভোটকেন্দ্র প্রস্তাব করা হয়। সেখানে বলা হয়, পুরুষ ভোটকক্ষ হবে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৩৯টি এবং মহিলা ভোটকক্ষ হবে ১ লাখ ২৯ হাজার ১০৭টি। সব মিলিয়ে মোট ভোটকক্ষ দাঁড়াবে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৪৬টিতে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্র ছিল ৪২ হাজার ১৫০টি এবং ভোটকক্ষের সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৬১ হাজার ৪৭২টি। এবারের নির্বাচনে কেন্দ্রের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে, তবে ভোটকক্ষের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কমেছে।


জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে করা সুপারিশ আজ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার হাতে এই সুপারিশ তুলে দেন কমিশনের প্রতিনিধিরা।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানিয়েছে।

সুপারিশ হস্তান্তরের পর জুলাই সনদ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিস্তারিত জানাতে আজ বিকেল ২টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন কমিশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর আলী রিয়াজ।


এবার তত্ত্বাবধায়কের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়: শিশির মনির

আপডেটেড ২৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১৪:২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলেও আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

শিশির মনির বলেন, সংসদ ভেঙে যাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের কথা বলা আছে। এখন তো কোনো সংসদ নেই। সংসদ ভেঙে গেছে এক বছরের বেশি সময় আগে। অন্তর্বর্তী সরকার দেশ চালাচ্ছে। এ ছাড়া আরো কিছু বিষয় রয়েছে। এ কারণে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলেও আসন্ন নির্বাচনে এটি সম্ভব নয়।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে আপিল বিভাগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে শুনানি শেষ করেন আইনজীবী শিশির মনির।

সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়।

গত ২৩ অক্টোবর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের তৃতীয় দিনের শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালতে ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী।

গত ২২ অক্টোবর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষ হয়। ওই দিন রিটকারী বদিউল আলম মজুমদারের পক্ষে শুনানি শেষ করেন আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া।

তার আগের দিন ২১ অক্টোবর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের শুনানি শুরু হয়।

এরও আগে গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেয়া হয়।

এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।


জাতীয় নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি নিয়োজিত থাকবে আনসার সদস্যরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সবচেয়ে বেশি নিয়োজিত থাকবে বলে জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দপ্তরে আনসার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনে আনসারদের অবদান সবচেয়ে বেশি। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে মোট ১৩ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে। এ ১৩ জনের মধ্যে তিন জন থাকবে অস্ত্রসহ আর বাকি ১০ জন থাকবে অস্ত্র ছাড়া। অস্ত্রবিহীন ১০ জনের মধ্যে ৬ জন থাকবে পুরুষ আর ৪ জন থাকবে নারী। তা ছাড়া এবারই প্রথম প্রিজাইডিং অফিসারের সঙ্গে অস্ত্রসহ একজন আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। তিনি বলেন, নির্বাচনে মোট ৯দিন আনসার সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে।

মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি বাহিনী দেশের নিরাপত্তা, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জাতীয় উন্নয়নের প্রতিটি পর্বে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। নিজেদের জীবন ও স্বার্থের পরোয়া না করে তারা নিষ্ঠা, দায়িত্ববোধ ও দেশপ্রেমের সাথে জাতির সেবায় নিয়োজিত থাকেন। তাই বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের কর্মজীবনের মানোন্নয়ন ও কল্যাণ নিশ্চিত করা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব এবং রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকারের অংশ। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ আনসার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের নিজস্ব অর্থায়নে মোট ৩১টি যানবাহন কেনা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ৯টি ট্রুপস ক্যারিয়ার, ১৪টি কাভার্ড ভ্যান, ৪২ আসন বিশিষ্ট ৪টি বড় বাস, ২৪ আসন বিশিষ্ট ২টি মিনি বাস এবং ২টি অ্যাম্বুলেন্স।

তিনি বলেন, দেশের সর্ববৃহৎ এ বাহিনীর সদস্যদের ছুটি, বিনোদন, ভ্রমণ এবং অন্যান্য বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রায়ই নানা ধরনের যাতায়াতজনিত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাদের এই ভোগান্তি লাঘব ও সুবিধা বৃদ্ধি করার জন্য এ ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস চালু করা হয়েছে।

উপদেষ্টা এসময় ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসটি সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার সাথে পরিচালিত হবে এবং বাহিনীর বৈধ পরিচয়পত্রধারী সব সদস্যের জন্য নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ পরিবহন সুবিধা নিশ্চিত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বাইরে থাকা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, প্রতিদিনই অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। গত পরশুদিনও ৮টি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। তিনি বলেন, এরকম উদ্ধার হতেই থাকবে এবং নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে অস্ত্র উদ্ধার আরো বাড়তে থাকবে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ ও বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


দৌলতপুরে খড়ের মাঠ দখল নিয়ে দুই চরমপন্থী  বাহিনীর গোলাগুলিতে নিহত ২, আহত ২

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের পদ্মা নদীর চরাঞ্চলে খড়ের মাঠ দখল নিয়ে কাকন বাহিনী ও মন্ডল বাহিনীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে দৌলতপুর উপজেলার পদ্মা নদীর বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের ১৪ হাজার মৌজা এলাকায় এ গুলাগুলির ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দৌলতপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী কাকন বাহিনী ও বাঘার মন্ডল বাহিনীর মধ্যে পদ্মা চড়ে জেগে উঠা খড়ের মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ ধরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

গোলাগুলিতে মন্ডল বাহিনীর প্রধান মুনতাজ মন্ডলসহ চারজন গুলিবিদ্ধ হন। এসময় মিনহাজ মন্ডলের ছেলে আমান মন্ডল (৩৬) ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে শুকুর আলী মন্ডলের ছেলে নাজমুল মন্ডল (২৬) মৃত্যুবরণ করেন।

নিহত ও আহত সবাই রাজশাহীর বাঘা উপজেলার নিচ খানপুর গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে রয়েছেন চাঁন মন্ডলের ছেলে মুনতাজ মন্ডল (৩২) ও আরশাদ মন্ডলের ছেলে রাকিব মন্ডল (১৮)। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলায়মান শেখ জানান, ঘটনাস্থলটি দৌলতপুর ও বাঘা থানার সীমান্ত এলাকায় হওয়ায় তদন্তে বাঘা থানা নেতৃত্ব দিচ্ছে।

বাঘা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুপ্রভাত মন্ডল বলেন, দৌলতপুরে খড়ের মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে কাকন বাহিনী ও মন্ডল বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে দুইজন নিহত ও দুইজন আহত হয়েছেন। নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং দোষীদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।


ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মন্থা, রাতেই যেসব স্থানে আঘাত হানতে পারে

আপডেটেড ২৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১১:৩৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ঘূর্ণিঝড় মোন্থা উপকূলের খুব কাছে চলে এসেছে। এর প্রভাবে আজ মঙ্গলবার দুপুর থেকেই বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি)।

মঙ্গলবার বিডব্লিউওটির ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আজ দুপুর থেকেই বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি শুরু হতে পারে এবং কাল বুধবার থেকে সারা দেশে বৃষ্টি বাড়তে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত না হানলেও এর প্রভাবে বুধবার থেকে বৃষ্টি বাড়তে পারে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সবশেষ পূর্বাভাসে বলা হয়, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’ আরো উত্তর উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি সোমবার মধ্যরাতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার উপকূল থেকে ১ হাজার ২৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড়টি সোমবার মধ্যরাতে থেকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো পশ্চিম উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে। এটি আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা বা রাত নাগাদ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

এতে আরো বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

এ সময় চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং কক্সবাজার উপকূলকে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এ ছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।


চট্টগ্রামে মালবাহী ট্রেনে ট্রাকের ধাক্কা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামের সাগরিকা এলাকায় মালবাহী একটি ট্রেনে ধাক্কা দিয়েছে চালবোঝাই একটি ট্রাক। এতে দুমড়ে-মুচড়ে গেছে ট্রাক, লাইনচ্যুত হয়েছে ট্রেন। দুর্ঘটনার ফলে মালবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) ভোরে নগরীর সাগরিকা স্টেডিয়াম রেলগেইট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

রেলওয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ভোরে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মালবাহী ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। সাগরিকা এলাকায় পৌঁছালে একটি ট্রাক সিগন্যাল না মেনে ট্রেনের ইঞ্জিনে সজোরে আঘাত করে। এতে ট্রেনের ইঞ্জিন উল্টে যায়।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ট্রাক ও মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে মালবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। লাইনটি শুধু মালবাহী ট্রেন ও কনটেইনার পরিবহনের জন্য ব্যবহার হয়। এতে যাত্রীবাহী কোনো ট্রেন চট্টগ্রামে সমস্যা হচ্ছে না। ট্রেনটি উদ্ধারের কাজ চলছে।’


জুলাই সনদ বাস্তবায়ন কমিশনের সুপারিশ জমা আজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারের কাছে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় সম্পর্কিত সুপারিশ দিতে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই সুপারিশ হস্তান্তর করা হবে।

এর আগে সোমবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত হয় কমিশনের সমাপনী বৈঠক। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ও কমিশন সভাপতি ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

এতে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ সহ ৬ সদস্য ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। অন্য সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়নেও সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কমিশন সদস্যরা।

এসময়, কমিশন গঠনের পর থেকে চূড়ান্ত সুপারিশ প্রদান পর্যন্ত সমস্ত ডকুমেন্ট, আলোচনার ভিডিও, অডিও, ছবি সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।

গত ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় জুলাই সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠান। এতে বিএনপি-জামায়াতসহ প্রথম ধাপে ২৪টি রাজনৈতিকদল ও জোট এতে স্বাক্ষর করেন। এর ২ দিন পরে জাতীয় জুলাই সনদে স্বাক্ষর করে গণফোরাম।

তবে এখনও সই করেনি এনসিপিসহ কয়েকটি বাম দল। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠক বসে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বাংলাদেশে একটি স্থায়ী জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপনের জন্য কাজ করেছে- উল্লেখ করে কমিশন সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি আইন বিশেষজ্ঞ, বিচারপতি, শিক্ষাবিদসহ নাগরিক সমাজের বিশিষ্টজনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ চূড়ান্ত করা হয়েছে।’


জাপানে এক লাখ দক্ষ কর্মী নিয়োগের অগ্রগতি

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এনবিসিসি প্রতিনিধিদলের বৈঠক
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশ থেকে এক লাখ দক্ষ কর্মী নিয়োগের অগ্রগতি জানাতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে জাপানের ব্যবসায়িক ফেডারেশন ‘ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কো-অপারেটিভস’ (এনবিসিসি)।

সোমবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রোববার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথিশালা যমুনায় এনবিসিসির ২৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এ সময় প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

সমঝোতা স্মারক ও নিয়োগ পরিকল্পনা

‘ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কো-অপারেটিভস’ হলো ৬৫টিরও বেশি কোম্পানির সমন্বয়ে গঠিত একটি জাপানি ব্যবসায়িক ফেডারেশন। সম্প্রতি সংস্থাটি বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (MoI) স্বাক্ষর করেছে, যার লক্ষ্য জাপানে বাংলাদেশি দক্ষ কর্মীদের প্রশিক্ষণ, সার্টিফিকেশন ও কর্মসংস্থানের জন্য একটি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা।

এই চুক্তির আওতায় আগামী পাঁচ বছরে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ট্রেনিং প্রোগ্রাম (TITP) এবং স্পেসিফাইড স্কিলড ওয়ার্কার্স (SSW) কর্মসূচির অধীনে এক লাখের বেশি কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানান, সমঝোতা স্মারকের আওতায় প্রথম ধাপে আগামী বছর দুই হাজার দক্ষ কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। পরবর্তী ধাপে ২০২৭ সালে ছয় হাজার এবং ২০২৮ সালে ১৮ হাজার কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে।

এর মধ্যে নির্মাণ, সেবা, এভিয়েশন, গার্মেন্টস ও কৃষি খাতে সবচেয়ে বেশি কর্মীর প্রয়োজন হবে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে গাড়িচালক, অটোমোবাইল ও রিসাইক্লিং খাতেও দক্ষ কর্মীর চাহিদা বাড়বে বলে প্রতিনিধি দল জানায়।

প্রশিক্ষণ কার্যক্রম

বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের লক্ষ্যে খুলনা ও গাজীপুরের কাপাসিয়ায় দুটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সম্ভাব্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এনবিসিসির প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ইতোমধ্যেই কেন্দ্র দুটি পরিদর্শন করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে কর্মীদের প্রশিক্ষণে কোনো ঘাটতি আছে কি না জানতে চান। জবাবে এনবিসিসি চেয়ারম্যান মিকিও কেসাগায়ামা বলেন, “আমি গত মার্চ মাসে ট্রেনিং সেন্টার দুটি পরিদর্শন করেছিলাম। এবার এসে অবাক হয়েছি—সাত মাসের মধ্যে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। প্রশিক্ষণ নিয়ে আমরা খুবই সন্তুষ্ট। আমরা আশাবাদী, আগামী বছরই দুই হাজার দক্ষ কর্মী নিয়োগ দিতে পারব।” তবে তিনি প্রশিক্ষকদের ভাষাগত দক্ষতা আরও বাড়ানোর পরামর্শ দেন।

ভাষা প্রশিক্ষণ ও নারীদের অংশগ্রহণ

ভাষাগত দক্ষতা অর্জনকেই বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এর জন্য ভার্চুয়াল ক্লাস নেওয়া যেতে পারে। জাপান থেকে শিক্ষকরা অনলাইনে ক্লাস নেবেন। পাশাপাশি, জাপান থেকে প্রশিক্ষকদের এনে এখানে প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনা করা যেতে পারে।”

তিনি বাংলাদেশের নারীদের পরিশ্রম ও পারদর্শিতার প্রশংসা করে বলেন, “কেয়ারগিভিং সেক্টরে বাংলাদেশের নারীরা অনন্য। ভাষাগত দক্ষতা ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ পেলে তারা জাপানের কেয়ারগিভিং সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।”

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “প্রথমে কিছুটা কঠিন মনে হলেও একবার প্রশিক্ষণ পেলে বাংলাদেশের মেয়েরা নিজেরাই অন্যদের শেখাতে পারবে। একবার যাওয়া শুরু হলে অন্যরাও উৎসাহ পাবে।”

এনবিসিসি প্রতিনিধিরা জানান, আগামী কয়েক বছরে জাপানে ৪ লাখের বেশি দক্ষ নার্সের প্রয়োজন হবে। তাই বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি নার্স নিয়োগের বিষয়টি তারা বিবেচনা করছেন।

সরকারের উদ্যোগ

বৈঠকে উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, সরকার জাপানে কর্মী নিয়োগের অগ্রগতি নিয়মিতভাবে পর্যালোচনা করছে। এ বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করা হবে। তিনি জানান, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে জাপানে কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্যা নিরসনে একটি বিশেষ সেল গঠন করা হয়েছে।


banner close