চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের শুরু থেকে ধারাবাহিক বাড়ছে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স। সে ধারা অব্যাহত রয়েছে অর্থবছরের পঞ্চম মাস নভেম্বরেও। নভেম্বরের পুরো সময়ে এসেছে প্রায় ২২০ কোটি ডলার। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২০ টাকা হিসাবে) যা প্রায় ২৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
রোববার (১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্য বলছে, নভেম্বর মাসে বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা পাঠিয়েছেন ২১৯ কোটি ৯৫ লাখ ১০ হাজার ডলার। এ মাসে প্রতিদিন গড়ে এসেছে ৭ কোটি ৩৩ লাখ ডলারের বেশি। গত চার মাস রেমিট্যান্স আসছে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
আলোচ্য সময়ে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৮২ কোটি ৪২ লাখ ১০ হাজার ডলার। বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৪ কোট ৫৮ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এ সময়ে বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১২২ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার। এছাড়া ৬২ লাখ ৮০ হাজার ডলার এসেছে বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে।
এ সময়ে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি এমন ব্যাংকের সংখ্যা ৯টি। এর মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে কমিউনিটি ব্যাংক, সিটিজেনস ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক। বিদেশি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।
এর আগে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে ১৯১ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স আসে। পরের মাস আগস্টে আসে ২২২ কোটি ৪১ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪৮ লাখ ডলার, অক্টোবরের ২৪০ কোটি ডলার এবং সবশেষ নভেম্বর মাসে এলো প্রায় ২২০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স।
এছাড়া গত জুন মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ মার্কিন ডলার। তার আগের মাস মে মাসে আসে ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। এছাড়া এপ্রিলে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ, মার্চে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ এবং জানুয়ারিতে ২১১ কোটি ৩১ লাখ মার্কিন ডলার পাঠিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
এর আগে দেশের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ ২৬০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২০ সালের জুলাই মাসে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছিল গত জুনে ২৫৩ কোটি ৮৬ লাখ (২.৫৪ বিলিয়ন) ডলার। তৃতীয় সর্বোচ্চ ২২৫ কোটি ৪৯ লাখ ডলার এসেছিল গত মে মাসে। গত বছরের নভেম্বরে ১৯৩ কোটি (১.৯৩ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
চলতি অর্থবছরের চতুর্থ মাস অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫১ লাখ (২.৩৯ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স এসেছে দেশে। যা ছিল গত বছরের অক্টোবরের চেয়ে ২১ দশমিক ৫০ শতাংশ বেশি।
অর্থবছরের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে এসেছিল ২৪০ কোটি ৪৮ লাখ (২.৪০ বিলিয়ন) ডলার। দ্বিতীয় মাস আগস্টে এসেছিল ২২২ কোটি ৪১ লাখ (২.২২ বিলিয়ন) ডলার। প্রথম মাস জুলাইয়ে এসেছিল ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ (১.৯১ বিলিয়ন)। অর্থবছরের পাচ মাসের (জুলাই-অক্টোবর) হিসাবে দেশে রেমিটেন্স এসেছে ১ হাজার ১১৩ কোটি ৬৬ লাখ (১১.১৪ বিলিয়ন) ডলার। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে দেশজুড়ে সহিংসতা, মৃত্যু, ইন্টারনেট বন্ধ, কারফিউ, মামলা, গ্রেপ্তার ও প্রবাসীদের উৎকণ্ঠার প্রেক্ষাপটে জুলাই মাসে রেমিটেন্স কমেছিল বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা।
ওই সময় আন্দোলনকে ঘিরে সংঘাত-সহিংসতার জন্য সরকারকে দায়ী করে দেশে রেমিট্যান্স না পাঠাতে সোশাল মিডিয়ায় কেউ কেউ প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
১৯ থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত ব্যাংকিং কার্যক্রম চলে মাত্র এক দিন। শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলনের মধ্যে দেশজুড়ে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, তা নিয়ন্ত্রণে ১৯ জুলাই রাত থেকে কারফিউ জারি করে বিদায়ী সরকার। এরপর ২৩ জুলাই পর্যন্ত ব্যাংক বন্ধ ছিল।
ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় ব্যাংকের অনলাইন লেনদেনও বন্ধ ছিল। কয়েক দিন লেনদেন বন্ধের পর ২৪ জুলাই ব্যাংক চালু হয়। ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ১৯ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই বৈধ পথে তথা ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে কোনো প্রবাসী আয় আসেনি।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর রেমিটেন্স প্রবাহে আরও ধীরগতি লক্ষ্য করা যায়। ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূনের নেতৃত্বে যাত্রা শুরু হয় অন্তর্বর্তী সরকারের; রেমিটেন্স প্রবাহেও গতি ফেরে।
দেশে দীর্ঘদিন ধরে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট চলছে। কোভিড মহামারির সময়ে একপর্যায়ে দেশে রিজার্ভের পরিমাণ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্ববাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে আমদানি খরচ অনেক বেড়ে যায়। একই সঙ্গে প্রবাসী আয় ও রপ্তানিতে যথেষ্ট প্রবৃদ্ধি না হওয়ায় রিজার্ভ দ্রুত কমতে থাকে।
সংকট কাটাতে ও রিজার্ভ বাড়াতে প্রবাসী আয়সহ বিদেশ থেকে অর্থ আনতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত কয়েক মাসে এসব পদক্ষেপের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছিল প্রবাসী আয় বা রেমিটেন্স দেশে আসার ক্ষেত্রে।
তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে সেই ধারায় কিছুটা ছন্দপতন হয়। ওই মাসে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ (১. ৯১ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্সে আসে দেশে।
গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে, যা ছিল আগের অর্থবছরের (২০২২-২৩) চেয়ে ১০ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি। বছরওয়ারি হিসাবে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে ২০২০-২১ অর্থবছরে। ওই অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স আসে ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের (ডাকসু) স্বতন্ত্র সদস্য উম্মা উসওয়াতুন রাফিয়ার ময়মনসিংহের বাসার গেইটে হাতবোমা নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতে নগরের বিভিন্ন স্থানে পৃথক অভিযানে ময়মনসিংহ জেলা ডিবি ও কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন– কেওয়াটখালী এলাকার মো. মাসুদ রানা (৪৫), আকুয়া বোর্ডঘর এলাকার মো. আরিফ (৩০), মো. বিপুল (২১) এবং আকুয়া ওয়্যারলেস গেইট এলাকার মো. রাজন (১৯)।
গত বুধবার রাত ৩টার দিকে ময়মনসিংহ নগরের ঢোলাদিয়া এলাকায় রাফিয়ার পরিবারের বাড়ির গেইটে ককটেল নিক্ষেপ করা হয় এবং অগ্নিসংযোগের চেষ্টা চালানো হয়।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে রাফিয়ার ভাই খন্দকার জুলকারনাইন কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পরে তা মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘চারজনকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্য অজ্ঞাত দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান আছে।’
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৭ এবং এটি কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী ছিল। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার নিকটবর্তী নরসিংদী জেলার মাধবদী উপজেলা।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নরসিংদী ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল হওয়ার পিছনে যৌক্তিক কারণ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির ল্যামন্ট-ডোহার্টি আর্থ অবজারভেটরির অধ্যাপক মাইকেল স্টেকলার ও লিওনার্দো সিবারের গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলের মধ্যে একটি। দেশটি তিনটি টেকটোনিক প্লেটের—ভারতীয়, ইউরেশিয়ান ও বার্মিজ—মিলনস্থলে অবস্থিত।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, শুক্রবারের ভূমিকম্পটি ভারতের প্লেটের গভীরে রিভার্স ফল্টিংয়ের কারণে হয়েছে। ভূতত্ত্বে রিভার্স ফল্ট হলো এক ধরনের ডিপ-স্লিপ ফল্ট, যেখানে ভূপৃষ্ঠের চাপের কারণে দুটি শিলা ব্লক স্থানচ্যুত হয়ে একটির উপর আরেকটি উঠে আসে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পূরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদি আহমেদ আনসারী বলেন, দেশে অন্তত ৫টি গুরুত্বপূর্ণ ফল্ট লাইন রয়েছে। এর মধ্যে নোয়াখালী থেকে সিলেট পর্যন্ত ফল্ট লাইনটি শুক্রবারের ভূমিকম্পের কারণ হিসেবে অনুমান করা হচ্ছে। এর আগে, গত মার্চে মিয়ানমারে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্প ভারতের এবং ইউরেশিয়ান প্লেটের স্ট্রাইক-স্লিপ ফল্টিংয়ের কারণে হয়েছিল।
ভূমিকম্পে ভেঙে ও হেলে পড়েছে বিভিন্ন স্থাপনা ও ভবন। এতে সারাদেশে অন্তত ১০ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আহত হয়েছেন ৫৫০-এর বেশি ব্যক্তি, যারা বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার রাত ৮টা পর্যন্ত দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ৫৫০-এর বেশি আহত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৬৭ জনকে ভর্তি করা হয়েছে এবং গুরুতর আহত ১৬ জনকে অন্য হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগে। ভুটানের নেতাকে বহনকারী ড্রুক এয়ারের একটি বিমান সকাল ৮টা ১৫ মিনিটের দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (এইচএসআইএ) অবতরণ করে। পরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তাকে স্বাগত জানান।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং তা নিশ্চিত করেছেন।
দুই নেতা বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে একটি সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন। যেখানে প্রধানমন্ত্রী টোবগে শুক্রবারের ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির বিষয়ে খোঁজখবর নেন এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
সাক্ষাতের পর, টোবগেকে একটি অস্থায়ী অভিবাদন মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে তাকে ১৯ বার তোপধ্বনির সালাম এবং গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
বিমানবন্দরে অনুষ্ঠানের পর, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাভারে জাতীয় শহীদ স্মৃতিসৌধে যাবেন। তিনি স্মৃতিস্তম্ভের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন এবং দর্শনার্থীদের বইতে স্বাক্ষর করবেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা বিকেলে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে। এরপর বিকেল ৩টার দিকে তেজগাঁও এলাকায় তার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
প্রধানমন্ত্রী টোবগে সন্ধ্যায় তার সম্মানে আয়োজিত একটি সরকারি ভোজসভায়ও যোগ দেবেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, দেশের খাদ্য-সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও প্রথাগত উৎপাদন ব্যবস্থাকে রক্ষা করা জরুরি। বৈচিত্র্যকে জাতীয় শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘যত বৈচিত্র্য থাকে, দেশ তত সুন্দর হয়।’ এসময় তিনি পলিথিন শপিং ব্যাগ বিষয়ে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘এটি অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।’
শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর পার্বত্য বৌদ্ধসংঘ কমপ্লেক্সে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, জনবল সীমিত থাকলেও পরিবেশ মন্ত্রণালয় অবৈধ ইটভাটা নিয়ন্ত্রণে ধারাবাহিকভাবে সমন্বিত অভিযান পরিচালনা করছে, বিশেষ করে বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলাগুলোতে। এসব অভিযানে বাধা, সড়ক অবরোধ ও হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
‘রাষ্ট্র এখন পরিবেশ ধ্বংসের বিরুদ্ধে বাধা দিচ্ছে- এটাই আশার দিক’ বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
পাহাড় কাটা, ঝাউবাগান ধ্বংস ও প্রাকৃতিক বন উজাড়কে ঝুঁকি বৃদ্ধির প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করে তিনি বলেন, এগুলো কোনোভাবেই ঐতিহ্য রক্ষার উপায় হতে পারে না।
কৃষকদের স্বার্থে বিভাগীয় পর্যায়ে বিপণন কেন্দ্র স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি জোর দিয়ে উল্লেখ করেন।
পরিবেশ, সংস্কৃতিবিষয়ক ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা প্রয়োজন হলে তিনি যথাযথ সুপারিশ করবেন বলেও জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস ও পার্বত্য বৌদ্ধ সংঘের আহ্বায়ক মেজর (অব.) তপন বিকাশ চাকমা। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন- নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন।
পরে পরিবেশ উপদেষ্টা মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন এবং অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এদিন অনুভূত ভূমিকম্প বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে হবে। পাহাড় ও জলাশয় রক্ষা করতে হবে।
‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস–২০২৫’ উপলক্ষে শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন তিন বাহিনীর প্রধানগণ।
প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, শুক্রবার সকালে ঢাকা সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন।
সাক্ষাতের আগে অধ্যাপক ইউনূস ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করা বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বিচারপ্রার্থীর অধিকার নিশ্চিতে স্বচ্ছতা ও দ্রুততার সাথে মামলা নিষ্পত্তিতে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় বিচার প্রশাসন, নির্বাহী প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ একে অপরের পরিপূরক। মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্তরিকতা ও সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে একযোগে ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে বিচারপ্রার্থী মানুষের কল্যাণে নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে। গত বৃহস্পতিবার বিকালে আদালতের সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের উদ্যোগে আয়োজিত পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্সে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, পারস্পরিক মতবিনিময়ের মাধ্যমে ও বিদ্যমান সমস্যাসমূহ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করলে কাজের মূল্যায়ন হয় এবং পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পায়।
কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল, মো. আবু বকর সিদ্দিক, মোহাম্মদ মোস্তফা ও নুসরাত জাহান জিনিয়া।
তা ছাড়া বিশেষ পুলিশ সুপার, সিআইডি, চট্টগ্রাম মো. সালাউদ্দিন, পুলিশ সুপার, পিবিআিই (চট্টগ্রম মেট্রো) মো. রহুল কবির খান, সহকারী পুলিশ সুপার (ডিবি উত্তর) সিএমপি চট্টগ্রাম মো. মোস্তফা কামাল, সহকারী পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) কেশব চক্রবর্তী, জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের প্রতিনিধি সাকিব শাহরিয়ার, চমেক পরিচালকের প্রতিনিধি জুনায়েদ আহমেদ, ফরেনসিক মেডিসিনের ডাক্তার খালেদ হাসান, লেফটেন্যান্ট আবরার তাজওয়ার, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পূর্ব জোন, সিনিয়র জেল সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক, র্যাবের প্রতিনিধি, শিল্প পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ প্রতিনিধি, নৌপুলিশ প্রতিনিধি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য অংশীজনসহ উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. মফিজুল হক ভূইয়া, অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট নেজাম উদ্দিন। অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার সভায় জানান যে গত ১০ মাসে ৫৩২ জন আসামিকে প্রবেশন প্রদান করা হয়েছে। মামলার আলামত নিলামের মাধ্যমে ০১ কোটি ১৫ লাখ টাকা রাস্ট্রীয় কোষাগারে জমা প্রদান করা হয়েছে।
দেশের সব সরকারি হাসপাতালে ভূমিকম্পে আহতদের যথাযথ চিকিৎসার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
আজ শুক্রবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পৌঁছে ভূমিকম্পে আহত চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের খোঁজখবর নেন। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা জানান, “সব হাসপাতালে বলেছি, ভূমিকম্পে আহতদের চিকিৎসায় যেন কোনো ত্রুটি না হয়। সব সরকারি হাসপাতালে নির্দেশনা দেওয়া আছে।”
তিনি আরও বলেন, “যে মাত্রায় ভূমিকম্প হয়েছে, হয়তো কাছাকাছি থাকার কারণে এই মাত্রা বেশি মনে হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় মাত্রা ছিল ৫.৭ রিখটার স্কেলে। তবে আহতের সংখ্যা সেই তুলনায় বেশি হয়েছে। ঢাকার যেসব ছাত্র আহত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই আতঙ্কে দুই-তিন তলা থেকে লাফ দিয়েছেন। আমরা সবাই মিলে সুষ্ঠু চিকিৎসার চেষ্টা করছি।”
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এছাড়া, আরও একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে; তার বাবাও আহত এবং তাঁর অবস্থা গুরুতর। রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালে তিনজন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে একজন ঢাকা মেডিকেলের শিক্ষার্থী।
তিনি আরও জানান, বিভিন্ন জায়গা থেকে আহতদের খবর পাওয়া যাচ্ছে। গাজীপুরের কয়েকজন আহত এবং অনেকে প্যানিকের কারণে হাসপাতালে এসেছেন। “ডাক্তাররা তাদের চিকিৎসা দিয়েছেন। শারীরিকভাবে আহতদেরও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে,” বলেন তিনি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, দুপুর পৌনে তিনটা পর্যন্ত ঢামেকে ৪১ জন চিকিৎসা নিতে আসেন। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীসহ ছয়জনকে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার রাজধানীর সেনানিবাসে আয়োজিত অনুষ্ঠানের সাইডলাইনে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া পারস্পরিক সৌজন্য বিনিময় করেছেন।
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং তাঁর সুস্থতা কামনা করেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান। একই সঙ্গে তিনি প্রধান উপদেষ্টার সহধর্মিণী আফরোজী ইউনূসের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন ও তাঁর দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
সৌজন্য বিনিময়ের সময় খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠ পুত্রবধূ সৈয়দা শর্মিলা রহমান উপস্থিত ছিলেন।
নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখর জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ শুক্রবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে। একটি নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনে আমি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।”
অধ্যাপক ইউনূস তাঁর বক্তব্যে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ, যুদ্ধাহত এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করেন। একইসঙ্গে ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টের ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের শহীদ, আহত এবং অংশগ্রহণকারী জনগণের প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জানান।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের রণক্ষেত্রে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর জন্ম। তখন ২১ নভেম্বর সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী সম্মিলিতভাবে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করায় এই দিনটি মুক্তিযুদ্ধের একটি গৌরবময় মাইলফলক হিসেবে পালন করা হয়। তবে মুক্তিযুদ্ধের সশস্ত্র সংগ্রামের সূচনা ঘটে ২৫ মার্চের কালরাত থেকেই।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মুক্তিকামী সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর বীর সদস্যরা জীবনবাজি রেখে, পরিবারের ভবিষ্যতের কথা না ভেবে স্বাধীনতার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের সাহসেই জনসাধারণ প্রতিরোধ গড়ে তুলে দেশকে মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছিল। যুদ্ধ সুসংগঠিত করার জন্য গঠিত বাংলাদেশ ফোর্সেস ১১টি সেক্টরে মুক্তিযোদ্ধাদের সামরিক ও গেরিলা প্রশিক্ষণ দিয়েছিল।
তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর তিন বাহিনীর সম্মিলিত অভিযানের ধারাবাহিকতাই ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় নিশ্চিত করে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান বাংলাদেশের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলায় সশস্ত্র বাহিনী বরাবরই জনগণের পাশে থেকেছে। ২০২৪ সালের অভ্যুত্থান–পরবর্তী পুনর্গঠন কাজেও বাহিনী মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক নেতৃত্বের প্রতি অনুগত থেকে বাহিনীর পেশাগত দক্ষতা ও দেশপ্রেম ভবিষ্যতেও অটুট থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ শান্তিপ্রিয় জাতি হলেও যেকোনো আগ্রাসী বহিঃশত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করতে সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। সে লক্ষ্যে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর আধুনিকায়ন, উন্নত প্রশিক্ষণ ও যুগোপযোগী প্রযুক্তি সংযোজনের কাজ অব্যাহত রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, গত ৩৭ বছরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণকারীরা ৪৩টি দেশে ৬৩টি মিশন সম্পন্ন করেছে। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ১০টি মিশনে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি তাঁদের পেশাদারিত্ব ও সাহসিকতার প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জিং এলাকায় দায়িত্ব পালনের জন্য শান্তিরক্ষীদের সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
ভূমিকম্পে দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘরবাড়ি ধসে এবং অন্যান্য দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
ইতোমধ্যে এক শিশুসহ কমপক্ষে পাঁচজনের মৃত্যু এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, গাজীপুরের কারখানা শ্রমিক ও ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদীসহ বিভিন্ন এলাকায় একশর কাছাকাছি মানুষ আহত হওয়ার খবর নিশ্চিত হয়েছে।
এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
তিনি আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে উদ্ধার কার্যক্রম জোরদার করতে সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরকে নির্দেশ দেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণ বিবরণ সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জনগণ ধৈর্য ও সাহস নিয়ে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করবেন।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর ভাষণে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ, আহত মুক্তিযোদ্ধা এবং অংশগ্রহণকারী সকল বীর যোদ্ধার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। একই সঙ্গে তিনি ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত, আহত ও অংশগ্রহণকারী সকল মানুষের আত্মত্যাগ স্মরণ করেন।
অনুষ্ঠানে তিন বাহিনীর প্রধানগণ, সশস্ত্র বাহিনীর কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সদস্য, তাদের পরিবারবর্গ, সম্মানিত অতিথিবৃন্দ এবং বিভিন্ন বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ১৯৭১ সালের রণক্ষেত্রে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর জন্ম হয়। ২১ নভেম্বর সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সম্মিলিত অভিযান মুক্তিযুদ্ধের একটি মাইলফলক হিসেবে ইতিহাসে স্থান পেয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, ২৫ মার্চ কালরাত থেকেই সশস্ত্র প্রতিরোধের সূচনা হয়েছিল এবং জীবনবাজি রেখে মুক্তিকামী সেনা সদস্যরা জনগণের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, “একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলায় সশস্ত্র বাহিনী বরাবরই মানুষের পাশে রয়েছে। ২০২৪ সালের অভ্যুত্থান–পরবর্তী পুনর্গঠন এবং সংস্কার প্রক্রিয়ায়ও বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তিনি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে গণতান্ত্রিক উত্তরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় উল্লেখ করে দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সদা প্রস্তুত থাকার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীকে আধুনিকায়ন, উন্নত প্রশিক্ষণ এবং আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজনের কাজ অব্যাহত রয়েছে।
তিনি জানান, গত ৩৭ বছরে বাংলাদেশ ৪৩টি দেশে ৬৩টি শান্তিরক্ষা মিশন সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। বর্তমানে ১০টি মিশনে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা দায়িত্ব পালন করছেন।
বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বড় নারী শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, “বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ আজ একটি নির্ভরযোগ্য নাম।”
বন্ধু রাষ্ট্রের অতিথিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন,
“মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আপনাদের জনগণের অবদান আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আপনাদের সহায়তাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সেনাদের সঙ্গে কাজ করা আমাদের সদস্যদের জন্য অনন্য অভিজ্ঞতা।”
তিনি জাতিসংঘের বৈশ্বিক শান্তি প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের পূর্ণ সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য অতিথিদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা সশস্ত্র বাহিনীর সকল সদস্য ও তাদের পরিবারের সুখ–শান্তি–কল্যাণ কামনা করেন।
শেষে তিনি বলেন,
“আমরা সবাই যেন দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে পারি। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। আল্লাহ হাফেজ।”
রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান এবং তাদের নিরাপদে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে নতুন করে বৈশ্বিক প্রচেষ্টা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে সর্বসম্মতিক্রমে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব গ্রহীত হয়েছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশ মিশন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বুধবার ১০৫টি দেশ এই প্রস্তাবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।
২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছরই প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হচ্ছে। এতে রাখাইন রাজ্যে মানবাধিকারের লাগাতার লঙ্ঘন, রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নিপীড়ন, মানবিক সহায়তা প্রবেশাধিকারের ওপর বিধিনিষেধ এবং বাংলাদেশে ও প্রতিবেশী দেশগুলোতে রোহিঙ্গাদের অব্যাহত অনুপ্রবেশ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
এই প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার জন্য টেকসই আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততারও আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পর, বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল সদস্য দেশগুলোকে তাদের অব্যাহত সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানায়।
তবে প্রতিনিধি দলটি এ ব্যাপারে হতাশা প্রকাশ করে যে গত আট বছরে বাস্তুচ্যুত এই জনগোষ্ঠীর প্রত্যাবাসনের জন্য কোনও কার্যকর অগ্রগতি হয়নি।
প্রতিনিধিদল জোর দিয়ে বলেছে যে বাংলাদেশ আর ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার বোঝা বহন করতে পারছে না। তাই তারা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরাতে জরুরি আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায়।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বলেছেন, নিজেদের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে কোনো দেশের হস্তক্ষেপ চায় না বাংলাদেশ। কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভকে (সিএসসি) ‘উন্মুক্ত আঞ্চলিকতাবাদের’ ভিত্তিতে একটি উন্মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আঞ্চলিক বহুপক্ষীয় সংস্থা হিসেবে বিকশিত দেখতে চায় বাংলাদেশ। এই নিরাপত্তা ফোরাম পারস্পরিক আস্থা, সুবিধা ভাগাভাগি এবং কারও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি অনুসরণ করে এগিয়ে যাবে। বৃহস্পতিবার ভারতের দিল্লিতে সিএসসি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সপ্তম সম্মেলনে বক্তব্যে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এই প্রত্যাশা তুলে ধরেন। দিল্লিতে ভারতের ফরেন সার্ভিস একাডেমি সুষমা স্বরাজ ইনস্টিটিউটের সম্মেলনকক্ষে সম্মেলনটি হয়।
স্বাগতিক দেশ হিসেবে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল সম্মেলনের শুরুতে বক্তব্য দেন। বলেন, মহাসাগর আমাদের সবচেয়ে বড় ঐতিহ্য। এটি আমাদের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। সদস্যরাষ্ট্রগুলো অভিন্ন সামুদ্রিক মানচিত্র ভাগাভাগি করে বলেই আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। আমাদের একটি উন্মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সামুদ্রিক এলাকা বিকাশের স্বার্থে আমাদের একটি সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখতে হবে।
অজিত দোভাল বলেন, ভারত সিএসসির সদস্যদেশগুলো নিয়ে পরিবর্তনশীল এবং ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জের অভিন্ন ঝুঁকি মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেন, বঙ্গোপসাগরের একটি উপকূলীয় রাষ্ট্র হিসেবে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি আমাদের পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়। বৈশ্বিক জিডিপি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং কৌশলগত প্রভাব—এসব ক্ষেত্রেই ভারত মহাসাগরীয় এলাকার সম্মিলিত অংশীদারত্ব আমাদের আকাঙ্ক্ষা ও সামষ্টিক দৃষ্টিভঙ্গিকে গড়ে তোলে।
খলিলুর রহমান আরও বলেন, বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে এমন মূল্যবোধ ও নীতিমালা অনুসরণ করে, যা সবার যৌথ সমৃদ্ধির জন্য একটি স্বাধীন, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভারত মহাসাগর নিশ্চিত করার দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে। যেখানে জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও সমতা, রাজনৈতিক স্বাধীনতা, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা, আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি, আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘ সনদের নীতিমালা—এসবকে অবশ্যই প্রধান ভিত্তি হিসেবে থাকতে হবে। টেকসই উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা, মানবিক সহায়তা এবং মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষায় আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ সিএসসির পাঁচটি স্তম্ভের গুরুত্বকে স্বীকৃতি দেয় এবং এসব অগ্রাধিকারের মাধ্যমে সম্মিলিত নিরাপত্তা, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও যৌথ সমৃদ্ধি বাড়ানোর লক্ষ্যে তাৎপর্য অনুধাবন করে বলে মন্তব্য করেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা।
খলিলুর রহমান আরও বলেন, আমাদের অঞ্চলের সামুদ্রিক ক্ষেত্র আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ তার দায়িত্ব পালনে অটল। জলদস্যুতা, অবৈধ মাছ ধরা, সামুদ্রিক সন্ত্রাসবাদ ও অপরাধ মোকাবিলায় আমরা মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। অতীতে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদের কিছু চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশও মোকাবিলা করেছে। আমরা যেকোনো পরিস্থিতিতে সব রকম সন্ত্রাসবাদের প্রতি ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করি।’
সম্প্রতি বাংলাদেশ ভুয়া তথ্য ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্যের (মিসইনফরমেশন ও ডিসইনফরমেশন) হুমকির মুখোমুখি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। বাংলাদেশের অঙ্গীকার হলো নিজস্ব সাইবার স্পেস, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ও প্রযুক্তিকে সুরক্ষিত রাখা; শুধু নাগরিকদের নিরাপত্তা, গোপনীয়তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্যই নয়, বরং নিশ্চিত করার জন্য যে বাংলাদেশ থেকে কোনো কর্মকাণ্ড যেন আঞ্চলিক বা বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের জন্য হুমকিস্বরূপ না হয়।
খলিলুর রহমান আরও বলেন, আঞ্চলিক নিরাপত্তার জটিলতা মোকাবিলায় আমরা পারস্পরিক বিশ্বাস ও সম্মান, অভিন্ন স্বার্থ এবং সুবিধা ভাগাভাগির নীতিতে আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করি। একটি স্থিতিশীল, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ অঞ্চল নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ হাতে হাত মিলিয়ে একসঙ্গে পথ চলতে ও কাজ করতে প্রস্তুত।
খলিলুর রহমান বলেন, আমরা কোনো বাইরের কিংবা অভ্যন্তরীণ কারণকে অন্য কোনো রাষ্ট্র বা জনগোষ্ঠীর জন্য হুমকিতে পরিণত হতে দিতে পারি না। পারস্পরিক বিশ্বাস ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে যেকোনো বিষয়ে অভিন্ন সমাধান খুঁজে পেতে আমরা প্রস্তুত। বাংলাদেশ এই কনক্লেভকে একটি উন্মুক্ত আঞ্চলিকতাবাদচালিত, উন্মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আঞ্চলিক বহুপক্ষীয় সংস্থা হিসেবে গড়ে ওঠার প্রত্যাশা করে।