রোববার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

বাদ পড়ছে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ প্রকল্প

বড় ধরনের সংকোচনের সম্ভাবনা
আপডেটেড
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০০:৩০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০০:৩০

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাদ দেওয়ায় সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের উন্নয়ন বাজেটে বড় ধরনের সংকোচনের সম্ভাবনা রয়েছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গত ৮ আগস্ট ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অনেক উন্নয়ন প্রকল্পকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দিয়ে তা ছেঁটে ছোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, একনেকের সভায় এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে নেওয়া অনেক উন্নয়ন প্রকল্প ব্যয় অনুযায়ী ভালো ফল বয়ে আনবে বলে মনে হয় না।

একনেক সভা শেষে সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘বিগত বছরগুলোর তুলনায় উন্নয়ন বাজেট ছোট হবে।’

চলতি অর্থবছরের চার মাসে রেকর্ড সর্বনিম্ন ৮ শতাংশ উন্নয়ন বাজেট বাস্তবায়ন হয়েছে। এই নিম্ন বাস্তবায়ন বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রেও হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, তাদের ক্ষেত্রে এ হার ১২-১৩ শতাংশ।

সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের গতি ধীর রয়েছে। যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) সর্বনিম্ন বাস্তবায়নের হার।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই থেকে অক্টোবর) এডিপি বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে মাত্র ৮ শতাংশ, যা বিগত বছরগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন।

সংস্থাটির তথ্য বলছে, গত বছরের একই সময়ে বাস্তবায়নের হার ছিল ১১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। বিশেষ করে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ২১ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছে সরকার।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম একনেক সভায় উন্নয়ন বাজেট কমানোর সিদ্ধান্ত হয়।

ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, গৃহীত অনেক প্রকল্প রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ব্যয়ের তুলনায় ভালো ফল বয়ে আনবে না।

তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে মনে হয়নি এগুলো কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে। তাই আমরা সেগুলো বাদ দিয়েছি। সাধারণত সংশোধিত উন্নয়ন বাজেট কিছুটা সংকুচিত হয়, এবার অনুপাতটা বেশি হবে।’

তিনি আরও বলেন, বিগত সময়ে একনেকে কোনো প্রকল্প অনুমোদনের পর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় তাদের দায়িত্ব থেকে মুক্ত হয়ে যেত।

‘তবে এবার বাস্তবায়ন পর্যায়ে দুর্নীতিমুক্ত ও অনিয়মমুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় দায়ী থাকবে’ বলে জানান তিনি।

এ কারণে চলমান প্রকল্পগুলোতে সংশোধন আনা হয়েছে। এমনকি বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলোতেও তাদের সঙ্গে আলোচনা করে করা হয়েছে।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, ‘ঋণদাতাদের ঋণ দেওয়ার সময় কিছু শর্ত থাকে, তাদের বোঝানোর পর সংশোধন করা হয়।’

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতিতে অনেক চলমান প্রকল্প পরিচালক পালিয়ে যাওয়ায় ধীরগতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। ফলে প্রকল্পগুলো সচল রাখতে চরম সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে সরকার।

একনেক ব্রিফিংয়ে ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, মন্ত্রণালয়গুলো স্থিতিশীল অবস্থায় নেই, তাই নতুন প্রকল্প প্রণয়ন করে সেই প্রস্তুতিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পুরোনো ধাঁচের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রকল্প বাদ দিয়ে উদ্ভাবনী ও নতুন ধরনের প্রকল্পের ওপর জোর দিচ্ছে।

সূত্র জানায়, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের গভীর চিন্তা-ভাবনা করে প্রকল্প প্রণয়ন করতে বলেছেন। একই সঙ্গে নির্দিষ্ট প্রকল্পটি ব্যয়ের বিপরীতে একাধিক ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনবে তাও নিশ্চিত করতে বলেছেন।

তারা বলেছেন, নতুন ধরনের এবং উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রস্তুত করা সময়সাপেক্ষ বিষয়।

সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন করেছে।

এডিপিতে সর্বোচ্চ ৭০ হাজার ৬৮৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা (বরাদ্দের ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ) বরাদ্দ পেয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাত।

এ ছাড়া স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা করপোরেশনের প্রায় ১৩ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার এডিপি অনুমোদন দিয়েছে এনইসি।

২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এবং বাকি ১ লাখ কোটি টাকা বৈদেশিক উৎস থেকে পাওয়া যাবে।

নতুন এডিপিতে ১ হাজার ১৩৩টি বিনিয়োগ প্রকল্প, ২১টি সমীক্ষা প্রকল্প, কারিগরি সহায়তা প্রকল্প ৮৭টি এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও করপোরেশনের ৮০টি প্রকল্পসহ মোট প্রকল্পের সংখ্যা ১ হাজার ৩২১টি।

স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা করপোরেশনের ১৩ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার এডিপির মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১১ হাজার ৬৯৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে ১ হাজার ৫৮৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।

সে হিসেবে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা করপোরেশনের ১৩ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার এডিপি নিয়ে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে মোট এডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

বরাদ্দের দিক থেকে শীর্ষ ১০ খাতের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪০ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা (১৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ) পেয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত, শিক্ষা খাতে ৩১ হাজার ৫২৯ কোটি টাকা (১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ), আবাসন খাতে ২৪ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা (৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ), স্বাস্থ্যসেবা ২০ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা (৭ দশমিক ৮০ শতাংশ), স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন খাত ১৭ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা (৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ), কৃষি খাত ১৩ হাজার ২২০ কোটি টাকা (৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ), পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ খাতে ১১ হাজার ৮৯ কোটি টাকা, শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা খাতে ৬ হাজার ৪৯২ কোটি টাকা (২ দশমিক ৪৫ শতাংশ) এবং বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৪ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা (১ দশমিক ২৫ শতাংশ)।

শীর্ষ ১০ খাতের বিপরীতে মোট বরাদ্দ ২ লাখ ৪২ হাজার ৯৩ কোটি টাকা (মোট এডিপির ৯০ দশমিক ২৫ শতাংশ)।

২০২৫-২২ অর্থবছরের নতুন এডিপি অনুযায়ী, বরাদ্দ গ্রহণকারী মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো হলো স্থানীয় সরকার বিভাগ ৩৮ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা (বরাদ্দের ১৫ শতাংশ), সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ৩২ হাজার ৪২ কোটি টাকা (বরাদ্দের ১২ দশমিক ৩৯ শতাংশ), বিদ্যুৎ বিভাগ ২৯ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা (১১ দশমিক ২৮ শতাংশ), প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ১৬ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা (৬ দশমিক ২৪ শতাংশ) এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ১৩ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা(৫ দশমিক ৩১ শতাংশ), রেলপথ মন্ত্রণালয় ১৩ হাজার ৭২৬ কোটি টাকা (৫ দশমিক ৩১ শতাংশ), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ১২ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকা (৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ), মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ১১ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা (৪ দশমিক ৪০ শতাংশ), নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ১০ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা (৪ দশমিক ০১ শতাংশ) এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ৮ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা (৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ)।

১০টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের বিপরীতে মোট বরাদ্দ প্রায় ১ লাখ ৮৬ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা, যা সামগ্রিক এডিপি ব্যয়ের প্রায় ৭২ শতাংশ।

সূত্র: ইউএনবি


শিগগিরই ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করবেন প্রধান উপদেষ্টা

দ্য কমিশন অব এনকোয়ারি অন এনফোর্সড ডিসাপিয়ারেন্সের সদস্যদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গঠিত জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল যা ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত, শিগগিরই সেসব সেল পরিদর্শনের কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন দ্য কমিশন অব এনকোয়ারি অন এনফোর্সড ডিসাপিয়ারেন্সের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি এ কথা জানান।

বিকেল সাড়ে ৫টায় অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে গুমের ঘটনায় তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানিয়ে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলগুলো পরিদর্শনের অনুরোধ জানান কমিশনের সদস্যরা।

তারা জানান, প্রধান উপদেষ্টা ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করলে গুমের শিকার ব্যক্তিরা আশ্বস্ত বোধ করবেন এবং অভয় পাবেন।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে কয়েকটি গুমের ঘটনার নৃশংস বর্ণনা শোনান তদন্ত কমিশনের সদস্যরা। ছয় বছরের শিশুকেও গুম করা হয়েছে বলে কমিশনের তদন্তে উঠে এসেছে বলে জানান তারা।

কমিশনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘আপনাদের তদন্তে যে ঘটনাগুলো উঠে এসেছে তা গা শিউরে ওঠার মতো। আমি শিগগিরই আয়নাঘর পরিদর্শনে যাব।’


কবি নজরুলের নাতি বাবুল কাজী আর নেই

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নাতি বাবুল কাজী। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নাতি বাবুল কাজী (৫৯) ইন্তেকাল করেছেন।

আজ রোববার বিকাল সাড়ে ৫টায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন (ইমার্জেন্সি) ডা. শাওন বিন রহমান ইউএনবিকে এমন তথ্য নিশ্চিত করছেন। তার অধীনেই চিকিৎসাধীন ছিলেন জাতীয় কবির এই নাতি।

গতকাল শনিবার অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। তার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে তখন চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন। তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছিল।

বাসার বাথরুমে গ্যাসলাইটার বিস্ফোরণে তিনি অগ্নিদগ্ধ হয়েছিলেন।

বাবুল কাজী জাতীয় কবির পুত্র সব্যসাচী কাজীর ছোট ছেলে। তার বোন দুই বোন খিলখিল কাজী ও মিষ্টি কাজীর বরাত দিয়ে শাওন বিন বলেন, তিনি স্বভাবতই সকালে ওয়াশরুমে ধূমপান করেন। শনিবার একইভাবে ধূমপানের সময় লাইটার জ্বালাতে গেলে সেটা বিস্ফোরণ হয়ে পুরোটা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়।


সীমান্ত সম্পূর্ণরুপে সুরক্ষিত আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আজ তেজগাঁও ভূমি ভবনের কেন্দ্রীয় সেমিনার কক্ষে সনদপত্র বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সীমান্তের নিরাপত্তা ইস্যুতে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। জনগণ আমাদের সব সময় সাহায্য করে যাচ্ছে। জনগণের সাহায্য ও সহযোগিতা সব সময় অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, বিজিবি সব সময় সীমান্তে সতর্ক অবস্থায় আছে। সীমান্ত এখন সম্পূর্ণরুপে সুরক্ষিত রয়েছে।

আজ রোববার দুপুরে তেজগাঁও ভূমি ভবনের কেন্দ্রীয় সেমিনার কক্ষে আয়োজিত বিসিএস ক্যাডারভুক্ত (প্রশাসন, পুলিশ, বন ও রেলওয়ে) এবং বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের কর্মকর্তাদের ১৩৭তম সার্ভে ও সেটেলমেন্ট প্রশিক্ষণ কোর্স,(২০২৪-২৫)-এর সনদপত্র বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন ।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সীমান্তের এই সাইডে কেউ কোন দিন আসতে পারবে না। আমরা যতদিন বেঁচে থাকি, ততদিন আমাদের রক্ত ঝরবে। কিন্তু সীমান্ত সুরক্ষিত থাকবে।

এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগেতো সীমান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কোন পদক্ষেপ ছিল না। এখন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলেই সীমান্তে সমস্যা দেখা দিচ্ছে, বর্ডারে ঝামেলা হচ্ছে। দেশের জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। বিজিবি সব সময় সতর্ক রয়েছে। সীমান্ত সম্পূর্ণরূপে সুরক্ষিত আছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঘটনা ঘটেছে জমির ধান ও গাছ কাটা নিয়ে। দু’পক্ষের মধ্যেই ঝামেলা হয়েছে। দু’পক্ষের লোকজনই আহত হয়েছে। আমাদের কোন সীমান্তরক্ষী আহত হয় নাই, জনগণ আহত হয়েছে। আমাদের মিডিয়ায় দেখিনি যে, তাদের দুজন বিএসএফ আহত হয়েছে। মেজর কিছু ঘটেনি। এটা নিয়ে বিজিবি-বিএসএফ আলোচনায় সমাধান হয়ে গেছে।

ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মো. মাহমুদ হাসানের সভাপতিত্বে রাজধানীর তেজগাঁও ভূমি ভবনের কেন্দ্রীয় সেমিনার কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এস এম সালেহ আহমেদ, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব) এ জে এম সালাহউদ্দিন নাগরী ও ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব) মুহম্মদ ইবরাহিম।


তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে রিভিউ শুনানি আজ

আপডেটেড ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ০০:০৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করে আনা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদন আজ রোববার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের শুনানির কার্যতালিকায় রয়েছে। গতকাল শনিবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রোববারের শুনানির কার্যতালিকার ১৩ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে।

গত ১ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই রিভিউটি ১৯ জানুয়ারি শুনানির জন্য ধার্য করেন। আদালতে সেদিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, শরীফ ভূঁইয়া ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে ১৬ অক্টোবর রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার আগে এ বিষয়ে রিভিউ করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। এছাড়া বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার রিভিউ আবেদন করেন। এসব রিভিউ আবেদনের একসঙ্গে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনে করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।

এছাড়াও গত ১৭ ডিসেম্বর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।


দেশে প্রতিবছর ১ লাখেরও বেশি মৃত্যুর কারণ বায়ুদূষণ: গবেষণা

ঢাকার বায়ুদূষণ দিনকে দিন মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। নগরীর রাস্তা ভাঙাসহ সমন্বয়হীনভাবে খোঁড়াখুঁড়ির কারনে প্রতিনিয়ত রাস্তায় ধুলার পরিমাণ বাড়ছে। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে বায়ুদূষণের প্রভাবে প্রতিবছর ৫ হাজার ২৫৮ শিশুসহ ১ লাখ ২ হাজার ৪৫৬ জন মানুষের অকাল মৃত্যু হচ্ছে। একই কারণে প্রতিবছর ৯ লাখ মায়ের অকাল প্রসব হচ্ছে এবং প্রায় ৭ লাখ কম ওজনের শিশু জন্মগ্রহণ করছে। আর এ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে প্রতিবছর ৬ লাখ ৭০ হাজার রোগী জরুরি বিভাগে ভর্তি হচ্ছেন, যার ফলে সম্মিলিতভাবে বছরে ২৬৩ মিলিয়ন কর্মদিবস হারাচ্ছেন। সেন্টার ফর রিসার্চ অন অ্যানার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ারের (সিআরইএ) এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সিআরইএ ও বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যায়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে `বাংলাদেশে সূক্ষ্মকণা বায়ু দূষণে জনস্বাস্থ্য প্রভাব‘ শীর্ষক আলোচনায় এই গবেষণা প্রকাশ করে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে বিশ্বের শীর্ষ দূষিত দেশের তালিকায় স্থান হয়েছে বাংলাদেশের। যেখানে প্রতি ঘনমিটার বাতাসে অতি ক্ষুদ্র বালু কণার বার্ষিক মান ৭৯ দশমিক ৯ মাইক্রোগ্রাম; যা বার্ষিক জাতীয় মানদণ্ড ৩৫ মাইক্রোগ্রামের দ্বিগুণের বেশি। উচ্চতর স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় এবং উৎপাদনশীলতা হ্রাস হচ্ছে। ২০১৯ সালে সার্বিকভাবে এই ব্যয়গুলো ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল। যা বাংলাদেশের জিডিপির প্রায় ৫ শতাংশ।

এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ড ৫ মাইক্রোগ্রামের তুলনায় ১৫ গুণ বেশি। বাতাসের এমন চরম দূষণ জনস্বাস্থ্যের ওপর অনিবার্য পরিণতি ডেকে আনছে। বিভিন্ন বয়সীরা নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হবার পাশাপাশি ৫ বছর কম বয়সী শিশুদের ওপর সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে বলেও গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।

বায়ুদূষণের প্রভাবে উদ্বেগজনক স্বাস্থ্য সংকটের মধ্যেই ২০২২ সালে সরকার প্রতি ঘনমিটার বাতাসে ধূলি কণার জাতীয় মান ১৫ মাইক্রোগ্রাম থেকে বাড়িয়ে ৩৫ মাইক্রোগ্রাম নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল; যা গুরুতর উদ্বেগ সৃষ্টির পাশাপাশি বায়ুর মান অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করেছে বলেও মনে করছেন গবেষকরা।

সিআরইসিএ-এর বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশের জাতীয় বায়ুমানের মানদণ্ড (৩৫ মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটার) পূরণ করা সম্ভব হলেও তা বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এতে মৃত্যুহার ১৯ শতাংশ, আয়ুষ্কাল জনিত সমস্যা ২১ শতাংশ এবং অক্ষমতার সাথে বসবাস করা বছর ১২ শতাংশ কমতে পারে।

এছাড়া ডব্লিউএইচও-এর ২০২১ সালের কঠোর নির্দেশিকা বায়ুর মান প্রতি ঘনমিটারে ৫ মাইক্রোগ্রাম অর্জন করা সম্ভব হলে মৃত্যুহার ৭৯ শতাংশ হ্রাস পাবে। যা প্রতি বছর ৮১ হাজার ২৮২ মানুষের জীবন রক্ষা করবে। সেইসঙ্গে হাঁপানি-শ্বাসকষ্ট প্রায় সমস্ত জরুরি চিকিৎসক ভিজিট, অকাল প্রসব এবং বার্ষিক ২৬৩ মিলিয়ন কর্মদিবস অসুস্থতাজনিত ছুটি এড়ানো যাবে।

সুপারিশ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশকে নিজস্ব জাতীয় নির্দেশিকা মেনে চলার পাশাপাশি তা প্রয়োগ করতে হবে। মাঝারি মেয়াদে ২০০৫ সালে ডব্লিউএইচও এর নির্দেশিকা প্রতি ঘনমিটার বাতাসে ১০ মাইক্রোগ্রামের দিকে অগ্রসর হওয়া উচিত। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য হিসাবে ২০২১ সালের ডব্লিউএইচও নির্দেশিকা প্রতি ঘনমিটারে ৫ মাইক্রোগ্রাম অর্জন করা উচিত।

কয়লা ও ডিজেলের মত কার্বণ নিঃসরণকারী জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দীর্ঘমেয়াদে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎসাহিত করা উচিত। এছাড়া ক্লিন পরিবহন ব্যবস্থা ও শিল্প সম্প্রসারণ দীর্ঘমেয়াদে নিয়ন্ত্রণে রাখতে অপরিহার্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম। কঠোর শিল্প নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য যানবাহন এবং কলকারখানার নির্গমন মান বাড়াতে হবে। ভূমিভিত্তিক এবং স্যাটেলাইট ডেটা একত্রিত করে জাতীয় পর্যবেক্ষণ কাঠামো তৈরি করতে হবে, স্বাস্থ্যঝুঁকি নির্ধারণে সহায়ক হবে।

সিআরইএ এর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিশ্লেষক এবং প্রধান লেখক ড্যানিয়েল নেসান বলেছেন, বিভিন্ন বায়ু মানের মানদণ্ড, বাংলাদেশের বর্তমান মান এবং ২০০৫ ও ২০২১ সালের ডব্লিউএইচও এর নির্দেশিকা তুলনা করে দেখা গেছে যে, পিএম ২.৫ স্তরে সামান্য উন্নতিও জাতীয় পর্যায়ে উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্য সুবিধা এনে দিতে পারে। কঠোর নিয়ন্ত্রণ বাস্তবায়ন এবং পরিচ্ছন্ন জ্বালানি গ্রহণের মাধ্যমে বায়ু দূষণের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।

সিআরইএ এর বায়ু মান বিশ্লেষক ড. জেমি কেলি বলেন, বাংলাদেশের বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর হাজার হাজার অপরিণত শিশু, কম ওজনের শিশুর জন্ম এবং শিশু মৃত্যু ঘটছে। এই পরিস্থিতি এমন হস্তক্ষেপের জরুরি প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে, যা সবচেয়ে অরক্ষিতদের সুরক্ষা দিতে সক্ষম। দূষণ প্রতি বছর প্রায় ২৬৬ মিলিয়ন কর্মদিবসের ক্ষতি সৃষ্টি করে, যা উৎপাদনশীলতার বড় ধরনের ক্ষতি করে ব্যবসা ও পরিবারের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে দুর্বল করে দেয়। বাংলাদেশের বায়ু দূষণ সমস্যার সমাধান জনস্বাস্থ্য এবং অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগের সমতুল্য।

ক্যাপস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, বর্তমানে ঢাকা শহরের বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়ে গিয়ে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তা শুধু মানুষের শরীরেই প্রভাব ফেলছে না, বরং বিপর্যস্ত করে তুলছে মানসিক স্বাস্থ্যকেও। এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স-২০২৪ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বায়ু দূষণের কারণে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশগুলোর মানুষের গড় আয়ু ২ দশমিক ৭ বছর হ্রাস পেয়েছে। তবে উক্ত প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশে নাগরিকদের গড় আয়ু হ্রাস পেয়েছে ৪ দশমিক ৮ বছর।


৪ আগস্টের পর সারা দেশে ৪৪ মাজারে হামলা-লুটপাট

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি * চট্টগ্রামে ১০, ময়মনসিংহে ৭ * বিভিন্ন থানায় ১৫ মামলাসহ ২৯ জিডি
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গত বছরের ৪ আগস্টের পর সারা দেশের ৪০টি মাজার (মাজার/সুফি কবরস্থান, দরগা) ও তার সঙ্গে সম্পর্কিত ৪৪টি স্থাপনা ভাঙচুর ও হামলার তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

এসব হামলায় মাজার ভাঙচুর ও ভক্তদের ওপর হামলা, মাজারের সম্পত্তি লুটপাটসহ অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। এসব ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের অভিযোগ গ্রহণ ও পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিভিন্ন থানায় ১৫টি নিয়মিত মামলাসহ ২৯টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

শনিবার পুলিশের একটি প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

প্রেস উইং জানায়, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট থেকে মাজারে (মাজার/সুফি কবরস্থান, দরগা) হামলার বিষয়ে পুলিশের রিপোর্টে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের মাজার-দরগায় যেকোনো আক্রমণের প্রতি জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে। মামলাগুলো কঠোরভাবে তদন্ত করে হামলার ঘটনায় জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশের সব ইউনিটকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকার দেশের ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর (মাজার ও দরগাহ) নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। সংক্ষুব্ধ কোনো ব্যক্তি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করলে তা তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, সবচেয়ে বেশি হামলার ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এখানে ১৭টি মাজারে ভাঙচুর, লুটপাট হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ১০টি ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৭টি মাজারে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ময়মনসিংহ বিভাগের শুধু শেরপুর জেলায় একটি মাজারে চারবার হামলা হয়েছে।

এই ৪৪টি হামলার ঘটনার সবকটিতেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে ১৫টি নিয়মিত মামলা এবং ২৯টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি)। এসব মামলা ও ডায়রি সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা পুলিশ স্বপ্রণোদিত হয়ে করেছে। এসব ঘটনায় ফৌজদারি মামলায় এখন পর্যন্ত ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুটি নিয়মিত মামলায় এরই মধ্যে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। আরও ১৩টি নিয়মিত মামলা ও ২৯টি সাধারণ ডায়েরির তদন্ত চলছে।

বিজ্ঞঘপ্তিতে আরও জানানো হয়, এসব হামলায় মাজার/দরগাহ এবং ভক্তদের ওপর হামলা, ভাঙচুর, মাজারের সম্পত্তি লুটপাট ও মাজারে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। একইসঙ্গে স্থানীয়ভাবে বিবাদমান পক্ষগুলোর সঙ্গে শান্তি বৈঠকের আয়োজন করে সমস্যা সমাধানের পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। কমিউনিটি পুলিশিং প্রচেষ্টার মাধ্যমে জনসাধারণ এবং ইসলামিক নেতাদের অংশগ্রহণ বজায় রেখে সংবেদনশীলকরণ কর্মসূচিতেও জোর দেওয়া হয়েছে।


গত বছর ৩১০ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা ৬১ শতাংশই নারী: জরিপ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে ২০২৪ সালে ৩১০ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। তাদের মাঝে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও রয়েছেন। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশের বেশি কৈশোর বয়সের রয়েছে। শনিবার আঁচল ফাউন্ডেশন আয়োজিত অনলাইনে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি। তারা বলছে, আত্মহত্যাকারীদের মধ্যে ৪৬ দশমিক ১ শতাংশ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থী।

বয়সভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ১৩-১৯ বছরে বয়ঃসন্ধিকালীন শুরু থেকে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি। ২০২৪ সালের মোট আত্মহত্যাকারী মানুষের প্রায় ৬৫ দশমিক ৭ শতাংশ এই বয়সসীমার মধ্যে। আত্মহত্যার তালিকায় এরপরই রয়েছে ২০-২৫ বয়সসীমা যুবক-যুবতীরা। অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সায়্যেদুল ইসলাম সায়েদ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষক ড. মো. জামাল উদ্দীন, আইনজীবী ও লেখক ব্যারিস্টার নওফল জামির, আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তানসেন রোজ প্রমুখ।


লেবানন থেকে আরো ৪৭ বাংলাদেশি ফেরত এসেছে

লেবানন থেকে সম্পূর্ণ সরকারি খরচে দেশে ফিরেছেন ৪৭ জন প্রবাসী। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০

যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে সম্পূর্ণ সরকারি খরচে কাতারের একটি ফ্লাইটে আজ আরো ৪৭ জন আটকে পড়া বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান, বৈরুতে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সহায়তায় ফ্লাইটটি (কিউআর-৬৪০) সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, এই পর্যন্ত ১৯টি ফ্লাইটে মোট ১,২৪৬ বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

বিমানবন্দরে ফেরত আসাদের স্বাগত জানান পররাষ্ট্র ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইওএম-এর কর্মকর্তারা।

আইওএম প্রত্যেককে পকেট খরচ, খাদ্য সরবরাহ এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা হিসেবে ৫ হাজার টাকা করে দিয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ফেরত আসা ব্যক্তিদের সাথে চলমান সংঘর্ষের ভয়াবহতা নিয়ে আলোচনা করেন এবং তাদের সুস্থতা সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন।

সংঘর্ষের সময় বোমা হামলায় এই পর্যন্ত একজন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

সরকার চলমান সহিংসতার কারণে লেবানন থেকে দেশে ফিরতে ইচ্ছুক সকল বাংলাদেশিদের প্রত্যাবাসন ব্যয় বহন করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বৈরুতে বাংলাদেশ দূতাবাস যারা দেশে ফিরতে ইচ্ছুক তাদের নিরাপদে প্রত্যাবর্তন এবং যারা থাকতে পছন্দ করছেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে।


পণ্যে ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়বে: বিএনপি

বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

শতাধিক পণ্যের ওপর যে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার, সেটিকে ‘হঠকারী সিদ্ধান্ত’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে বিএনপি। এতে সাধারণ মানুষকে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়তে হবে বলে মনে করছে দলটি। যদিও অন্তবর্তী সরকারের দাবি, এতে ‘ন্যূনতম’ প্রভাব পড়বে।

আজ শনিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার যে ভ্যাট ও পরোক্ষ কর বাড়িয়েছে, তাতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়বে।’

দেশের চলমান অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও মুদ্রাস্ফীতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শতাধিক পণ্যের ওপর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার। কিছু কিছু পণ্যের ওপর থেকে কর অব্যাহতিও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে খাদ্য, পোশাক, ওষুধ ও মোবাইল ইন্টারনেট সেবাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যও রয়েছে।’

এতে সাধারণ মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন তিনি। তার ভাষ্যে, ‘বিশেষ করে গরিব ও মধ্যবিত্তদের ব্যাপক দুর্ভোগে পড়তে হবে।’

এসব ভোগান্তি থেকে সাধারণ মানুষকে রেহাই দিতে বিকল্প পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ফখরুল। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ওপর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর পরিবর্তে সরকার যাতে অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন খরচ কমিয়ে দেয়, অন্তবর্তী সরকারকে সেই পরামর্শও দিয়েছে বিএনপি।

এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘জবাবদিহিতামূলক একটি প্রশাসনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত একটি জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করা।’

এর আগে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাঝপথে এসে শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ায় সরকার।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ আরেক দফা বেড়ে যেতে পারে সাধারণ মানুষের। যেমন মুঠোফোন সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির ফলে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ বাড়বে। আবার পোশাক–পরিচ্ছেদের দামও বাড়তে পারে ভ্যাট বৃদ্ধির কারণে।

এছাড়া মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে মিষ্টি, ওষুধ, এলপি গ্যাস, ফলের রস, ড্রিংক, বিস্কুট, চশমার ফ্রেম, সিগারেটসহ নানা পণ্যের।

গত ৯ জানুয়ারি রাতে এ–সংক্রান্ত দুটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। অধ্যাদেশ দুটি হলো— মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ এবং দি এক্সাইজ অ্যান্ড সল্ট (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫।

তবে এই ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষের ওপর তেমন কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছে সরকার।

এ বিষয়ে ১২ জানুয়ারি রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়লেও সাধারণ মানুষের ওপর খুব বড় প্রভাব পড়বে না। এ প্রভাব হবে খুবই ন্যূনতম। এ বছর (অর্থবছর) পাঁচ মাসে রাজস্ব আয়ে ঘাটতি হয়েছে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৬৯ হাজার কোটি টাকা। সংগ্রহ হয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি।

তিনি বলেন, ‘আমরা বলছি না যে কিছু প্রভাব পড়বে না। কিন্তু আমরা মনে করছি, এটি খুবই ন্যূনতম (মিনিমাম) হবে। আমরা মনে করি না যে এটা খুব বড় প্রভাব (ম্যাসিভ ইমপ্যাক্ট) হবে।’

প্রেস সচিব বলেন, সরকার চাচ্ছে অর্থনীতির স্বাস্থ্যটা স্থিতিশীল করতে, ঠিক করতে; এটি দেশের জন্যই ভালো হবে।


তোফাজ্জল হত্যা: ঢাবির ২১ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে চার্জশিট

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ। শাহবাগ থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার উপপরিদর্শক মো. জিন্নাহ এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, গত ১ জানুয়ারি এই প্রতিবেদন জমা পড়ে। প্রতিবেদন জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শাহবাগ থানার পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান।

জানা গেছে, অভিযুক্ত ২১ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬ জন কারাগারে এবং ১৫ জন বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। তবে চার্জশিটে কোনো অভিযুক্তের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করা হয়নি।

কারাগারে থাকা ৬ জন হলেন জালাল মিয়া, আহসান উল্লাহ ওরফে বিপুল শেখ, আল হোসেন সাজ্জাদ, মোত্তাকিন সাকিন সাহ, মো. সুমন মিয়া ও ওয়াজিবুল আলম। তারা ইতোমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।

পলাতক ১৫ জন হলেন ফিরোজ কবির, আবদুস সামাদ, সাকিব রায়হান, ইয়াসিন আলী গাইন, ইয়ামুজ্জামান ইয়াম, ফজলে রাব্বি, শাহরিয়ার কবির শোভন, মেহেদী হাসান ইমরান, রাতুল হাসান, সুলতান মিয়া, নাসির উদ্দিন, মোবাশ্বের বিল্লাহ, শিশির আহমেদ, মহসিন উদ্দিন ও আব্দুল্লাহিল কাফি।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, তোফাজ্জল হোসেন গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে বঙ্গবাজার এলাকার পার্শ্ববর্তী ফজলুল হক হলের ফটক দিয়ে মাঠের ভেতরে প্রবেশ করেন। তখন কয়েকজন শিক্ষার্থী চোর সন্দেহে তাকে আটক করে হলের অতিথি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তাকে মারধর করা হয়। পরে তাকে হলের ক্যান্টিনে নিয়ে রাতের খাবার খাওয়ানো হয়।

এরপর আবার তাকে হলের অতিথি কক্ষে এনে ব্যাপকভাবে মারধর করেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরে রাত ১২টার দিকে হলের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষক তোফাজ্জলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জল হোসেনকে পিটিয়ে হত্যার সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ জন ছাত্রের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। ওই ২১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। আদালত চার্জশিটের শুনানির জন্য আগামী ২ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর তোফাজ্জল হোসেনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে ১৯ সেপ্টেম্বর শাহবাগ থানায় অজ্ঞাত দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়।


আজ ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি দিয়েছে ছাত্রদল

আপডেটেড ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:২৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

শেখ হাসিনার শাসনামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের ‘সন্ত্রাসী’ কর্মকাণ্ডের যথাযথ বিচার ও সন্ত্রাসীদের সাজা নিশ্চিত করার দাবিতে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। আজ শনিবার দুপুর ২টায় এ কর্মসূচি পালন করবে সংগঠনটি।

গতকাল শুক্রবার ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক (সহসভাপতি পদমর্যাদা) মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের যথাযথ বিচার ও সন্ত্রাসীদের সাজা নিশ্চিত করা, একইসঙ্গে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে ভূমিকা পালনকারীদের তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালন করবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

আরও বলা হয়, শনিবার দুপুর ২টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার অভিমুখে এ কর্মসূচি শুরু হবে।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির ছাত্রদলের সব নেতাকর্মীসহ ছাত্রসমাজকে মিছিলে অংশগ্রহণ করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

এর আগে গত ৩১ জুলাই দেশের সব আদালত, ক্যাম্পাস ও রাজপথে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালন করে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। সারা দেশে ‘ছাত্র-জনতা হত্যা, গণগ্রেপ্তার, হামলা, মামলার’ প্রতিবাদে ও জাতিসংঘের অধীনে ঘটনার তদন্ত করে বিচার এবং ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন তারা। ওই কর্মসূচিতে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য পুলিশ লাঠিপেটা, সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। আটক করা হয় অনেককে।


৬৮% মানুষ রাষ্ট্রপতি পদে নির্দলীয় ব্যক্তিকে দেখতে চান

৬৩% দলের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্রসংগঠন সমর্থন নয়
আপডেটেড ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের ৬৮ শতাংশ মানুষ রাষ্ট্রপতি পদে নির্দলীয় ব্যক্তিকে দেখতে চান। সম্প্রতি নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার বিষয়ে জাতীয় জনমত জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

জরিপটি পরিচালনা করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার প্রস্তাব তৈরির লক্ষ্যে গত ২০ থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন এই জরিপ চালায়। ইতোমধ্যে জরিপের খসড়া প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

খসড়া প্রতিবেদনে দেখা গেছে, নির্দলীয় ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি দেখতে চান দেশের ৬৮ শতাংশ মানুষ। আর প্রায় ২৯ শতাংশ মানুষ চান দেশের রাষ্ট্রপতি হবেন একজন দলীয় ব্যক্তি। জনগণের সরাসরি ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করার পক্ষে মত দিয়েছেন প্রায় ৮৩ শতাংশ মানুষ। এ ছাড়া ১৩ শতাংশ মানুষ চান সংসদ সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হোক।

জরিপে আরও দেখা যায়, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন করার বিষয়ে সমর্থন জানিয়েছেন ৬৫ শতাংশ মানুষ। ৬৩ শতাংশ মানুষ রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্রসংগঠন থাকার বিষয়টি সমর্থন করেন না। তবে প্রায় ৩১ শতাংশ মানুষ এটিকে সমর্থন করেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, জরিপে নমুনায়নের মাধ্যমে ৪৬ হাজার ৮০টি সাধারণ খানা (পরিবার বা যারা এক চুলায় রান্না করেন) থেকে উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। প্রতিটি খানা থেকে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সি নাগরিকদের মধ্যে ‘কিশ গ্রিড সিলেকশন’ পদ্ধতিতে একজন নির্বাচিত উত্তরদাতার কাছ থেকে নির্ধারিত প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। অর্থাৎ ৪৬ হাজার ৮০ জন মানুষ এই জরিপে অংশ নিয়েছেন।

জরিপে রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রত্যাশিত ব্যক্তির ধরন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। এখানে চারটি উত্তর থেকে যেকোনো একটি বেছে নেওয়ার সুযোগ ছিল। সেগুলো হলো দলীয়, নির্দলীয়, জানি না ও উত্তর দিতে ইচ্ছুক নই। উত্তরদাতাদের ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ দলীয় ব্যক্তির পক্ষে, ৬৮ দশমিক ২৮ শতাংশ নির্দলীয় ব্যক্তির পক্ষে মতামত দিয়েছেন। ২ দশমিক ৩৯ শতাংশ বলেছেন, তারা এ বিষয়ে জানেন না। আর ১ শতাংশের কিছু কম ব্যক্তি উত্তর দিতে ইচ্ছুক নন বলে জানান।

নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পক্ষে মত দেন প্রায় ৪৭ শতাংশ উত্তরদাতা। আর ৪৪ শতাংশ জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা করার পক্ষে মত দেন।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো আসনে প্রদত্ত ভোট ৫০ শতাংশের কম হলে ওই আসনে পুনর্নির্বাচনের পক্ষে মত দেন ৭৮ শতাংশ মানুষ। বিপক্ষে মত দেন ১৭ শতাংশ। সংস্কার কমিশন তাদের সুপারিশে ৪০ শতাংশের কম ভোট পড়লে পুনর্নির্বাচন আয়োজনের সুপারিশ করেছে।

নির্বাচনে ‘না’ ভোট জয়ী হলে পরাজিত প্রার্থীদের বাদ দিয়ে নতুন নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দেন ৭৮ শতাংশ মানুষ। এর বিপক্ষে ছিলেন প্রায় ১৭ শতাংশ। সংস্কার কমিশন তাদের সুপারিশে এটি রেখেছে।

জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন ১০০টিতে উন্নীত করে নির্দিষ্ট নির্বাচনী এলাকা থেকে সরাসরি ভোটে নির্বাচনের পক্ষে মত দেন প্রায় ৭৪ শতাংশ। আর প্রায় ২০ শতাংশ ছিলেন বিপক্ষে।

বিদেশে রাজনৈতিক দলের শাখা রাখার বিষয়টিকে সমর্থন করেন না ৫০ শতাংশ উত্তরদাতা। আর ৪২ শতাংশ উত্তরদাতা বিদেশে দলের শাখা থাকার বিষয়টিকে সমর্থন করেন। ৮৭ শতাংশ মানুষ প্রবাসীদের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ইলেকট্রনিক ভোট আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছেন।

জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয় করার পক্ষে মত দিয়েছেন প্রায় ৭০ শতাংশ। আর দলীয় প্রতীকে এই নির্বাচন করার কথা বলেছেন প্রায় ২৮ শতাংশ। অন্যদের এ বিষয়ে জবাব ছিল ‘না’ বা তারা ‘জানেন না’ বলে উত্তর দেন।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদের সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের সব স্তরের নির্বাচন করার পক্ষে মত দেন ৬৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং বিপক্ষে মত দেন প্রায় ২৯ শতাংশ মানুষ।


সড়ক দুর্ঘটনায় সারা দেশে নিহত ৯

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সারা দেশে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সারাদিনে সড়ক দুর্ঘটনায় ৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় দুজন, গোপালগঞ্জ ও চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ছয় জন এবং বরিশালের বাকেরগঞ্জে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে মারা গেছেন আরও এক ট্রাক চালক।

জানা গেছে, রাজধানীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহীসহ দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে মিরপুরের কালশী ও আসাদগেট এলাকায় এসব দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, সিয়াম (১৫) নামে এক কিশোর ও সিএনজি আরোহী আদম আলী (৫৫)। এ ঘটনায় আরও তিনজন আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মিরপুর কালশী কালশী ফ্লাইওভারের নিচে একটি ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে আহত হন সিয়াম (১৫) নামে এক কিশোর। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সিয়ামের বন্ধু সিরাজুল জানান, সিয়াম রূপনগর ইস্টার্ন হাউজিং এলাকায় থাকতো। সে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতো। রাতে আরেক বন্ধুর মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হয়। মিরপুর কালশী ফ্লাইওভারের নিচে আসলে একটি ট্রাকের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয় সিয়াম। খবর পেয়ে দ্রুত সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নিযে আসলে মারা যায়।

একই রাত আড়াইটার দিকে আসাদগেট এলাকায় ট্রাক ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা সংঘর্ষে আরোহী আদম আলী (৫৫) আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর সাড়ে ৪টার দিকে মারা যান। এ ঘটনায় নিহত আদম আলী ছেলে সাকের আলী (১৬), ভাতিজা নবী হোসেন (৪৫) ও মেয়ের জামাই সাখাওয়াত হোসেন (৩৫)। তাদের সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত আদম আলীর ভাতিজা মাসুম জানান, তাদের বাড়ি ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার মুক্তা রামপুর গ্রামে। তার চাচা আদম আলী এলাকায় কাপড়ের ব্যবসা করতেন। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বাড়িতে আমার চাচাতো ভাই শাকের আলী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে চাচা প্রথমে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে যান। পরে সেখান থেকে ইবনে সিনা হাসপাতালে নেওয়ার পথে আসাদ গেট এলাকায় একটি ট্রাক সিএনজিটিকে ধাক্কা দেয়। এতে সিএনজিতে থাকা ৪জন আহত হয়। পরে পথচারীরা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তার চাচা আদম আলীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোরে মারা যান।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রাতে মিরপুর ও আসাদগেট এলাকা থেকে দুজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।

এদিকে, গোপালগঞ্জে নিহত হয়েছেন দিপু দাস, বিশাল নাগ ও হৃদয় মৃধা। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে কুয়াশার মধ্যে কাশিয়ানী উপজেলার ‘পোনা’ গ্রাম থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে নিহত এই তিন যুবক খেজুরের রস খাওয়ার জন্য যাচ্ছিলেন পাশের জেলা ফরিদপুরের বোয়ালমারীর কালিনগরে। পথে মোটরসাইকেলটি ঢাকা খুলনা মহাসড়কের হিরণ্যকান্দি এলাকায় পৌঁছলে খুলনাগামী একটি বাসের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দিপু এবং বিশাল নিহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় হৃদয়কে কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেয়া হলে চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন।

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের মায়ানী ইউনিয়নের বড়ুয়া পাড়ার রুবেল বড়ুয়া, নিপ্পু বড়ুয়া ও সনি বড়ুয়া সকালে মোটরসাইকেল নিয়ে সুফিয়া রোডের একটি হোটেলে নাস্তা শেষে বাড়ি ফেরার পথে দ্রুতগামী একটি বাস তাদের ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তারা মারা যান।

এছাড়া নারায়ণগঞ্জ ট্রাভেলসের একটি বাস ঢাকা থেকে কুয়াকাটা যাওয়ার পথে রাত সাড়ে তিনটার দিকে বরিশাল কুয়াকাটা মহাসড়কের বাকেরগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের কাছে পৌঁছলে একটি ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে নিহত হন ট্রাক চালক মাহাবুব হোসেন। আহত হন বাস ও ট্রাকের ১০ যাত্রী।

বাকেরগঞ্জ থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ ফোরকান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তাছাড়া নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল-পাঁচদোনা আঞ্চলিক সড়কে দুই ট্রাক ও বাসের ত্রিমুখী সংঘর্ষে ৮ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। সকালে ভাগদী কদম তলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।


banner close