মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের ২০২৫ সালের পরীক্ষা ১০ এপ্রিল শুরু হয়ে শেষ হবে ৮ মে পর্যন্ত। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা পূর্ণমান এবং পূর্ণ সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। ১০ এপ্রিল থেকে বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষার মাধ্যমে এই পরীক্ষা শুরু হবে। তত্ত্বীয় পরীক্ষা হবে নির্ধারিত তারিখে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও আন্ত:শিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহবায়ক প্রফেসর মো. আবুল বাশার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সব বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষা ১০ মে থেকে ১৮ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখিত তারিখের মধ্যে সব ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষ করতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরীক্ষার্থীদের তাদের নিজ-নিজ প্রবেশপত্র প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছ থেকে কমপক্ষে তিনদিন আগে সংগ্রহ করতে হবে। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষা কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে। প্রশ্নপত্রে উল্লেখিত সময় অনুসারে অনুষ্ঠিত হবে।
প্রথমে বহুনির্বাচনি ও পরে সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং উভয় পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না। শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধূলা এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়সমূহ এনসিটিবি’র নির্দেশনা অনুসারে ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রকে সরবরাহ করবে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র ব্যাবহারিক পরীক্ষার নম্বরের সঙ্গে ধারাবাহিক মূল্যায়নে প্রাপ্ত নম্বর বোর্ডের ওয়েবসাইটে অনলাইনে পাঠানো হবে। পরীক্ষা পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রে সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া কেন্দ্রসচিব ছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্য কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ (ভিভিআইপি) ঘোষণা করেছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় তাকে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) নিরাপত্তা দেওয়া শুরু করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছেছেন এসএসএফ সদস্যরা। এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে থাকা প্রতিবেদক এ তথ্য জানিয়েছেন।
১ ডিসেম্বর রাতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ (ভিভিআইপি) ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকার ‘বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) আইন, ২০২১’-এর ধারা ২(ক)-এর ক্ষমতাবলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ হিসেবে ঘোষণা করছে। প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে।
বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় গত কয়েকদিন ধরে খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খালেদা জিয়া ‘খুব ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে’ চলে গেছেন।
গত ২৩ নভেম্বর হঠাৎ শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে খালেদা জিয়াকে দ্রুত রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। তিনি বর্তমানে ওই হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রয়েছেন। মেডিকেল বোর্ডের দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা চলছে।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতির সর্বশেষ তথ্য জানিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে ব্রিফ করেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। খালেদা জিয়া চিকিৎসা নিতে পারছেন বলে তিনি জানান।
ডা. জাহিদ বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী গত ২৭ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন। সেখানে চিকিৎসকরা যে চিকিৎসা দিচ্ছেন তা তিনি গ্রহণ করতে পারছেন।
৮০ বছর বয়সি খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনির সমস্যাসহ নানান শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন।
গুমের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রেখে ‘গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
গত সোমবার এই অধ্যাদেশটির গেজেট প্রকাশ করা হয়। এর আগে গত ৬ নভেম্বর এ অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে। এই অধ্যাদেশের অধীনে অপরাধ হবে জামিন ও আপস অযোগ্য।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারী বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্য যদি কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার, আটক, অপহরণ বা স্বাধীনতা হরণ করার পর বিষয়টি অস্বীকার করে অথবা ওই ব্যক্তির অবস্থান, অবস্থা বা পরিণতি গোপন রাখেন এবং এ কাজের ফলে ওই ব্যক্তি আইনগত সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হন তাহলে কাজটি গুম বা শাস্তিযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ বলে গণ্য হবে। দায়ী ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
গুমের সাজার ধারায় বলা হয়, গুমের ফলে কোনো ব্যক্তির মৃত্যু ঘটলে বা গুমের পাঁচ বছর পরও তাকে জীবিত বা মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব না হলে দায়ী ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। যদি কোনো ব্যক্তি গুমের সাক্ষ্য-প্রমাণ নষ্ট করেন বা গুমের উদ্দেশে গোপন আটককেন্দ্র নির্মাণ, স্থাপন বা ব্যবহার করেন, তাহলে সাত বছরের কারাদণ্ড হতে পারে বলে অধ্যাদেশে জানানো হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা কমান্ডার বা দলনেতা এ ধরনের অপরাধ সংঘটনে অধস্তনদের আদেশ, অনুমতি, সম্মতি, অনুমোদন বা প্ররোচনা দেন, কিংবা নিজেই অংশ নেন, তাহলেও তিনি মূল অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা কমান্ডারের অবহেলা বা অদক্ষতার কারণে অধস্তনরা এমন কোনো কর্মকাণ্ডে জড়ালেও সাজা পাবেন সেই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
শৃঙ্খলা বজায় রাখা বা অধস্তনদের নিয়ন্ত্রণ বা তত্ত্বাবধান করার ব্যর্থতার ফলে অধস্তনরা যদি এ ধরনের অপরাধ করেন তাহলেও তিনি মূল অপরাধের দায়ে দণ্ডিত হবেন বলে অধ্যাদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মেরিন ফিশারিজ একাডেমি হতে প্রশিক্ষিত হয়ে ক্যাডেটরা হতে চলছে গভীর সমুদ্রের অকুতোভয় কাণ্ডারি। মঙ্গলবার সকালে মেরিন ফিশারিজ একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ৪৪তম পাসিং আউট প্যারেড অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন মেরিন ফিশারিজ একাডেমির অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ হাসান।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, কঠোর অধ্যবসায় এবং প্রগাঢ় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্জিত এই জ্ঞান ক্যাডেটদের ভবিষ্যৎ কর্মক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। ক্যাডেটরা একাডেমির সীমিত বলয় ছেড়ে পেশাগত জীবনের বৃহত্তর অঙ্গণে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। তাদের কর্মজীবনে উন্নতির প্রধান ভিত্তি কঠোর পরিশ্রম, সময়ানুবর্তিতা, সততা, কর্মদক্ষতা, মূল্যবোধ এবং দেশ ও জাতির প্রতি কর্তব্য নিষ্ঠা। এই বোধগুলো আত্মস্থ করে ভবিষ্যৎ কর্মক্ষেত্রে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে ক্যাডেটরা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ক্যাডেটদের মধ্যে পদক বিতরণ করেন। বিশেষভাবে, খন্দকার তানভীর ইসলাম (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং) ‘বেস্ট অল রাউন্ডার গোল্ড মেডেল’অর্জন করেন। অন্যান্য বিভাগে ‘বেস্ট ইন প্রফেশনাল ট্রেনিং সিলভার মেডেল’পায় জাবের শাহরিয়ার (নটিক্যাল সায়েন্স), মাইনুল ইসলাম (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং) ও সাকিবুর রহমান (মেরিন ফিশারিজ) এবং মহিলা ক্যাডেটদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হিসেবে নুসরাত হোসাইন আনিকা (মেরিন ফিশারিজ) পদক অর্জন করেন। মেরিন ফিশারিজ একাডেমি থেকে ৪৪তম ব্যাচের পাসিং আউট প্যারেড-২০২৫-এ ১১০ জন ক্যাডেট পাসিং আউট হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৭ জন নারী অন্তর্ভুক্ত ছিল।
পরে উপদেষ্টা পাসিং আউট প্যারেডের ৪৪তম ব্যাচের সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নেন এবং সফলভাবে কোর্স সম্পন্নকারী ক্যাডেটদের হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেন।
পাসিং আউট প্যারেডে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর, মৎস্য অধিদপ্তর, তথ্য অধিদপ্তর, মেরিন ডিপার্টমেন্ট, শিপিং অফিস এবং অন্যান্য মেরিটাইম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশে কারও কোনও নিরাপত্তা ঝুঁকি বা শঙ্কা নেই।
তিনি বলেন, ‘সরকার সকলকে সুরক্ষিত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
বাংলাদেশে ফিরে আসার পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নিরাপত্তা ঝুঁকি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে তিনি এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন,‘বাংলাদেশে কারও জন্য কোনও নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। সরকার সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত।’ সূত্র: বাসস
বিএনপি চেয়ারপার্সন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় তাঁর নির্বিঘ্ন চিকিৎসা, নিরাপত্তা ও যাতায়াত-সুবিধা নিশ্চিত করতে এবং তাঁর উচ্চ মর্যাদা বিবেচনায় তাঁকে রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ যমুনার সামনে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে বিবৃতিটি পড়ে শোনান।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বৈঠকে তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা করে দোয়া ও প্রার্থনা করা হয়। জাতির কাছে তাঁর আরোগ্য কামনায় দোয়া ও প্রার্থনারও আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, সভায় বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক পরিস্থিতি বিবেচনায় হাসপাতালে তাঁর নির্বিঘ্ন চিকিৎসা, প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা, তাঁর নিরাপত্তা ও যাতায়াতের সুবিধা এবং উচ্চ মর্যাদা বিবেচনায় তাঁকে রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, এ বিষয়ে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার এবং দল অবগত রয়েছে।সূত্র - বাসস
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করেছে সরকার। একই সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জন্য বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকার, বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) আইন, ২০২১-এর ধারা ২(ক)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ হিসেবে ঘোষণা করা হলো। ইহা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এদিকে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতা ও রোগের কারণে কয়েকদিন ধরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটবদ্ধ হলেও নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করার বিধান চ্যালেঞ্জ করে আনা রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
গতকাল সোমবার বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ জোটবদ্ধ নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান প্রশ্নে রুল জারি করে এ আদেশ দেন।
আগামী ১০ দিনের মধ্যে রিটের বিবাদীদের (রেসপনডেন্ট) রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী আহসানুল করিম।
ববি হাজ্জাজের নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)-এর মহাসচিব মোমিনুল আমিন হাইকোর্টে রিটটি করেন। জোটবদ্ধ হলেও নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করার বিধান এই রিটে স্থগিত চাওয়া হয়।
সংসদ নির্বাচনে জোট করলে নিজ দলের প্রতীকেই সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে, এমন বিধান এনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। গত ৩ নভেম্বর এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়। সংশোধনীতে বলা হয়, একাধিক দল জোটবদ্ধ হয়ে প্রার্থী দিলে তাকে নিজ দলের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। অর্থাৎ বড় দলের সঙ্গে কোনো ছোট দল জোট করলে এবং ছোট দলের প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে তিনি আর আগের মতো বড় দলের প্রতীকটি পাবেন না।
ঢাকার মিরপুরে জুলাই শহীদ পরিবারের জন্য ১৫৬০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প ও মেট্রোরেল লাইন-৬ প্রকল্পে তৃতীয় সংশোধনীসহ ১৫ হাজার ৩৮৩ কোটি ৫১ লাখ টাকার ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৯ হাজার ৪৫১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ থেকে ৫ হাজার ৬০৯ কোটি ৭০ লাখ এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৩৭৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সন্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো- চট্টগ্রাম অঞ্চলের টেকসই কৃষি উন্নয়ন, মানসম্পন্ন আলু বীজ উৎপাদন-সংরক্ষণ এবং কৃষক পর্যায়ে বিতরণ জোরদারকরণ, গ্যাসের ৩টি অনুসন্ধান কূপ খনন এবং ঢাকার মিরপুরে জুলাই শহীদ পরিবারের জন্য ১৫৬০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প। এছাড়া জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের নিজস্ব জমিতে ৩৬ জুলাই আবাসিক ফ্ল্যাট তৈরি, সচিবালয়-পরিবহণ পুল-মিনিস্টার্স অ্যাপার্টমেন্ট ও সচিব নিবাসের অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং সিরাজগঞ্জ-রায়গঞ্জ জেলা মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ প্রকল্প।
আরও আছে, নারায়ণগঞ্জ গ্রিন অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স আরবান ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট, অটিজম ও এনডিডি সেবা প্রদান, জাপান হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট স্কলারশিপ প্রজেক্ট, ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবনী ইকো সিস্টেম উন্নয়ন, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় একাডেমিক ও গবেষণাগার উন্নয়ন, ক্লাইমেট রেনপনসিভ রিপ্রডাকটিভ হেলথ অ্যান্ড পপুলেশন সার্ভিস প্রজেক্ট, এস্টাবলিস্টমেন্ট অব এসেনসিয়াল অ্যান্ড বায়োটেক রিসার্স সেন্টার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও কমিউনিটি ক্লিনিকের উন্নয়ন এবং সোনাগাজী ২২০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল হলেও একনেক ও মন্ত্রিপরিষদ বৈঠক চলবে। এছাড়া একনেকে উপস্থাপন হলেও সচিবালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ এবং স্বাস্থ্য খাতের একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এ দুটি প্রকল্প পর্যালোচনা করতে বলা হয়েছে। শোনা যায়- এখনো দুর্নীতি কমেনি। কিন্তু প্রকল্পে ঠিকাদার সংক্রান্ত দুর্নীতি তেমন করার সুযোগ পায়নি।
গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী, সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাষ্ট্রচিন্তা, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি এবং মানুষের অন্তর্নিহিত অধিকার রক্ষার সংগ্রামে এক অবিচল ও ঐতিহাসিক নাম। দুঃশাসন, প্রতিহিংসা ও মিথ্যা মামলার নিপীড়নের মধ্যেও তিনি যে দৃঢ়তা ও নৈতিক সাহস দেখিয়েছেন, তা এ দেশের জনগণের ভোটাধিকার ও স্বাধীনতার প্রতি গভীর দায়বোধ থেকেই উৎসারিত।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রিয়জনদের হারিয়েও তিনি কখনো দমে যাননি, বরং দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবার সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর ভাবনা, তাঁর লড়াই এবং তাঁর ত্যাগ আজও জাতির বিবেককে নাড়িয়ে দেয়। তিনি সেই নেত্রী, যিনি ক্ষমতাকে কখনো বিশেষাধিকার হিসেবে নয় বরং জনগণের আমানত হিসেবে দেখেছেন।
তাঁর জীবনগাথা শুধুই রাজনৈতিক উত্থানের ইতিহাস নয়, এটি এক নারীর অনলস যাত্রা। গৃহিণীর সীমাবদ্ধ পরিসর থেকে রাষ্ট্রনেতৃত্বের বিশাল প্রান্তরে পদচিহ্ন রাখার ইতিহাস। তিনি দেখিয়েছেন, একজন নারীর ক্ষমতার শক্তি কোনো প্রাতিষ্ঠানিক আদেশে আসে না; তা আসে চরিত্র, দৃঢ়তা, নৈতিকতা এবং মানুষের প্রতি অনুরাগ থেকে।
বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সেই মেরুদণ্ড, যার ওপর দাঁড়িয়ে আজও আমাদের ন্যায়, অধিকার ও মুক্ত ভবিষ্যতের আশা দৃঢ় থাকে। তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় আমাদের মনে করিয়ে দেয়- একজন সত্যিকারের নেত্রী শুধু দেশ পরিচালনা করেন না; তিনি জাতিকে ধৈর্য, সাহস ও নৈতিকতার পথে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি দেন। দেশবাসীর পক্ষ থেকে এই মহান নেত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
বাংলাদেশের রাজনীতির এক মহীয়সী প্রতিমা
স্বাধীনতার মহান ঘোষক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অকাল শাহাদত তাঁর জীবনের মোহময় শান্তিকে ভেঙে দিয়ে দেশের রাজনৈতিক নিয়তির মুখোমুখি দাঁড় করায়। একদিকে ব্যক্তিগত শোক, অন্যদিকে জাতির ভবিষ্যৎ- এই দুই চরম বাস্তবতার সংঘর্ষ থেকে উঠে আসেন তিনি।
একটি নারীসত্তা- যে পরম মমতায় সংসার সামলাতেন হঠাৎ হয়ে ওঠেন গণতন্ত্রের রক্ষক, দলীয় নেতৃত্বের প্রতীক এবং কোটি কোটি মানুষের আশ্রয়স্থল।
এই রূপান্তর ছিল সময়, দায়িত্ব ও ইতিহাসের ডাকে সাড়া দেওয়ার সৎ সাহস। সেই সাহসই তাঁকে পরিণত করেছে বাংলাদেশের প্রথম নারী জাতীয় নেতায়। যিনি শুধু নেতৃত্ব দেননি, একটি জাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথ দেখিয়েছেন।
মহান নেত্রী: শক্তি, সহনশীলতা ও মানবিকতার মিশ্রণ
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীদের পথচলা ছিল দীর্ঘকাল অনগ্রসর। সেই সামাজিক বাস্তবতার মাঝেও খালেদা জিয়া নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন এমন এক উচ্চতায়, যা জাতির ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায় হয়ে থাকবে।
তিনি রাজনীতিতে শক্তির প্রতীক হলেও নিপীড়নের মুহূর্তে ছিলেন ধৈর্যের অদম্য উদাহরণ। তিনি প্রতিহিংসার মুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন নীরব মর্যাদায়, আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ছিলেন দৃঢ় লৌহকঠিন মনোবলে।
একজন নারী, যিনি একই সাথে মা, স্ত্রী, নেত্রী এবং রাষ্ট্রনায়ক—তিনি দেখিয়েছেন, রাজনীতি কখনো শুধুই কৌশল নয়; এটি হৃদয়ের ভিতরকার মানবিকতার উৎসমূল দিয়ে পরিচালিত হয়।
মমতাময়ী মা থেকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রধান প্রতীক
প্রিয় তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর প্রতি তাঁর মমতা ছিল পৃথিবীর প্রতিটি মায়ের মতোই গভীর, নির্মল ও কোমল। কিন্তু যখন বাংলাদেশ ও দেশের মানুষের প্রশ্ন সামনে এসেছে, তখন তিনি ব্যক্তিজীবনের মমতা অতিক্রম করে জাতির মায়ের ভূমিকায় নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
তাঁর সন্তানদের ওপর অমানবিক অত্যাচার, তারেক রহমানের নির্বাসন, আরাফাত রহমান কোকোর অকাল মৃত্যু, তাঁর পরিবারের ওপর গভীর ষড়যন্ত্র এবং তাঁর নিজের ওপর অব্যাহত দমন—এসবকিছুর মাঝেও তিনি মানুষের অধিকার রক্ষার লড়াই থামাননি।
একজন মা তাঁর সন্তানের জন্য যেমন সহ্য করেন অন্ধকার, ঠিক তেমনি তিনি দেশমাতৃকার জন্য সহ্য করেছেন অমানবিকতার নিষ্ঠুরতম রূপ। সেই সহনশীলতা তাঁকে পরিণত করেছে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের এক অবিনাশী প্রতীকে।
নেতৃত্বে তাঁর ভূমিকা ছিল দায়বদ্ধতার এক স্বচ্ছ নির্মাণশৈলী
আমাদের দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় নেতৃত্বের প্রশ্নটি খুব সহজ নয়। ক্ষমতা, প্রভাব, স্বার্থ—এই তিনটি উপাদান একজন নেতাকে কখনো কখনো নিজের স্বরূপ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া এই ত্রিমাত্রিক প্রলোভনের বিপরীতে দাঁড়িয়েছেন এবং প্রতিষ্ঠা করেছেন দুটি মৌলিক দর্শন: গণতন্ত্রের প্রতি তাঁর অটল বিশ্বাস এবং জনগণের প্রতি তাঁর অঙ্গীকার।
বেগম খালেদা জিয়া তাঁর শাসনামলে বাংলাদেশকে দিয়েছেন রাজনৈতিক স্থিতি, অর্থনৈতিক গতি এবং আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার পরিচ্ছন্ন কাঠামো। তিনি বুঝতেন- রাষ্ট্র পরিচালনা মানে বাহ্যিক আধুনিকতার প্রদর্শনী নয়, বরং প্রাতিষ্ঠানিক স্থিতি ও মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি এবং জীবনমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতা।
তিনি সিদ্ধান্তে দৃঢ় ছিলেন, কিন্তু মানুষের প্রতি ছিলেন অত্যন্ত সহানুভূতিশীল। তিনি প্রশাসনে স্বচ্ছতা, অর্থনীতিতে উদ্যোক্তাবান্ধব পরিবেশ এবং সমাজে ন্যায়বোধ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন গভীর মমতা ও রাষ্ট্রদর্শনের সমন্বয়ে।
জননেতা তারেক রহমানের মুখে প্রায়ই শোনা যায়,
“দেশনেত্রীর সিদ্ধান্তগুলো ছিল সংকটময় সময়ের সঠিক দিকনির্দেশনা, আর তাঁর ধৈর্য ছিল আমাদের রাজনৈতিক নৈতিকতার ভিত্তি।”
এই মূল্যায়ন শুধু রাজনৈতিক নয়, এটি ইতিহাসসম্মত সত্য।
প্রতিহিংসার প্রতিকূলতা এবং দেশবাসীর পক্ষে তাঁর অটল অবস্থান
বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিহিংসা প্রায়ই নীতিকে ছাপিয়ে চলে। কিন্তু খালেদা জিয়ার ওপর যেভাবে রাষ্ট্রীয় নির্যাতন নেমে এসেছে তা শুধুমাত্র ব্যক্তি নয়, বরং গণতন্ত্রকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়েছিল।
তিনি মিথ্যা মামলা, বন্দিত্ব, চিকিৎসা বঞ্চনা সবই সহ্য করেছেন নীরব মর্যাদায়। তাঁর চোখে কখনো কোনো প্রতিশোধের ভাষা নেই। তাঁর ছিল শুধু মানুষের প্রতি ভালোবাসার অঙ্গীকার ও গণতন্ত্র রক্ষার দৃঢ় সংকল্প। এই সংকল্পই তাঁকে ইতিহাসের পাতায় স্থায়ী করে রেখেছে।
দেশনেত্রীর অসুস্থতা এবং জাতির অন্তর্গত যন্ত্রণা
বাংলাদেশের মানুষের প্রাণপ্রিয় এই নেত্রী আজ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ফ্যাসিস্ট হাসিনার ক্ষমতার প্রতিহিংসার ফলে চিকিৎসার জন্য তিনি যে স্বাভাবিক অধিকারটুকুও পাননি তা দেশের সাধারণ মানুষকে গভীরভাবে ব্যথিত করেছিলো। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী, যিনি দেশের গণতন্ত্র, উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন ও রাষ্ট্রগঠন প্রক্রিয়ায় অসামান্য অবদান রেখেছেন তাঁর প্রতি এই নিষ্ঠুর অবহেলা ও নির্যাতন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে নিঃসন্দেহে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকবে।
তাঁর রোগশয্যা তাই কেবল একজন নেত্রীর অসুস্থতার প্রতীক নয়, এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের প্রতিবিম্ব।
জনগণের হৃদয়ে তাঁর দৃঢ় অবস্থান এবং প্রবহমান সম্মান
বাংলাদেশের জনগণের কাছে বেগম খালেদা জিয়া কেবল একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নাম নয়, বরং তিনি এক সংগ্রামের নাম, এক মূল্যবোধের নাম, এক ইতিহাসের নাম।
তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি আজ যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে, তার ভিত্তিমূলেই রয়েছে দেশনেত্রীর অটল নৈতিক অবস্থান। তাঁর ত্যাগ, তাঁর ধৈর্য, তাঁর স্থিতধী রাজনৈতিক প্রজ্ঞা বিএনপিকে শুধু সংগঠন নয় একটি নৈতিক শক্তিতে রূপান্তর করেছে।
একজন নেত্রীর জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা কখনো শুধুমাত্র তাঁর অর্জন দিয়ে মূল্যায়িত হয় না, মূল্যায়িত হয় তাঁর সংকটে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষমতা দিয়ে। আর এই জায়গাটিতেই বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের মানুষের কাছে এক অমোচনীয় আবেগের প্রতীক।
সর্বোপরি-
বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সেই বিরল নেত্রী, যাঁর জীবনী পাঠ করলে ক্ষমতার দম্ভ নয়, বরং মানুষের প্রতি গভীর অঙ্গীকারের দৃষ্টি চোখে পড়ে। তাঁর শারীরিক অবস্থা আজ নাজুক হলেও তাঁর আদর্শ, রাজনৈতিক বোধ, রাষ্ট্রদর্শন এবং গণতন্ত্রের প্রতি অটল অবস্থান বাংলাদেশের সংগ্রামী মানুষের মনে চিরজাগ্রত।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক যাত্রা যতদিন অব্যাহত থাকবে ততদিন বেগম খালেদা জিয়ার নাম দেশের মানুষের হৃদয়ে শ্রদ্ধা ও মর্যাদার আসনে অটল থাকবে। তিনি একদিকে ইতিহাস, অন্যদিকে অনুপ্রেরণা আর সর্বোপরি গণতন্ত্রমনা একটি জাতির অপরিহার্য মানসিক ভরসা।
প্রিয় নেত্রীর এই সংকটময় সময়ে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে আমি তাঁর শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা কামনা করছি এবং দেশবাসীর কাছে তাঁর সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা করছি।
দেশের প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্প ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (এমআরটি লাইন-৬) ব্যয় ৭৫৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা কমল। তবে প্রকল্পের মেয়াদ বেড়েছে আরও তিন বছর।
সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ‘এমআরটি লাইন-৬’ প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) অনুমোদিত হয়েছে।
এই প্রস্তাবে প্রকল্প ব্যয় দ্বিতীয় সংশোধিত ডিপিপি থেকে ৭৫৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা কমিয়ে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২ হাজার ৭১৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
২০১২ সালে প্রকল্পের প্রস্তাবে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকার ব্যয় অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। ১২ বছর মেয়াদি প্রকল্পটির মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত লাইন বাড়ানোর কারণে ২০২২ সালে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩৩ হাজার ৪৭১ কোটি ৯৯ লাখ টাকায়। তবে সর্বশেষ সংশোধনে প্রকল্পের ব্যয়ে সরকারের অংশ কমে ১২ হাজার ৫২১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা এবং জাইকার ঋণ বেড়ে ২০ হাজার ১৯৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকায় নির্ধারিত হয়েছে।
প্রস্তাবিত সংশোধন অনুযায়ী প্রকল্পের মেয়াদ আরও তিন বছর বাড়িয়ে ২০২৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল সিস্টেম ইনস্টলেশন, টেস্টিং, ডিফেক্ট নোটিফিকেশন পিরিয়ড ও নতুন ২৪টি ট্রেন সেটের মেজর ওভারহলিং সম্পন্ন করতে মেয়াদ বাড়ানো অপরিহার্য—ডিএমটিসিএল এমন ব্যাখ্যা দিয়েছে।
ব্যাখ্যা অনুসারে, মেট্রোরেলের বিকল্প আয়ের উৎস হিসেবে প্লাজার কথা ভাবা হয়েছিল। পরে পর্যালোচনায় লাভজনক নয় বলে বাদ দেওয়া হয়েছে। এতে ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ বড় অঙ্কের টাকা সাশ্রয় হচ্ছে।
এ বিষয়ে মেট্রোরেল-৬ (দক্ষিণ)-এর প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল ওহাব বলেন, প্রকল্প পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বাদ দেওয়া স্টেশন প্লাজাগুলোর খুব বেশি প্রয়োজন নেই।
গত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাব (আরডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়েছে। এর ভিত্তিতে সংশোধন অনুমোদনের সুপারিশ করেছে পরিকল্পনা কমিশন।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদ বলেন, ঢাকা মহানগর এলাকায় পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ গণপরিবহনব্যবস্থা উন্নয়নের মাধ্যমে যানজট সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে বিধায় প্রকল্পটি মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, ডিপিপিতে রোলিং স্টকস ও ইকুইপমেন্টে ৫৬১ কোটি ১৭ লাখ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। একইভাবে জেনারেল কনসালটেন্সি সার্ভিসে ২২০ কোটি ২৮ লাখ টাকা, ইঅ্যান্ডএম সিস্টেমে ২৮৮ কোটি ৬৭ লাখ, ডিপো ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বাবদ ৪৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
অন্যদিকে বিজয় সরণি, ফার্মগেট, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মতিঝিল স্টেশন প্লাজা বাদ দেওয়ায় ভূমি অধিগ্রহণ খাতে ব্যয় কমেছে ১ হাজার ২১১ কোটি ৭১ লাখ টাকা, চারটি স্টেশন প্লাজার কাজ বাদ দেওয়ায় আরও ১৬৪ কোটি ৭২ লাখ, মেইন লাইনের সিভিল ও স্টেশন ওয়ার্কে (সিপি-০৬) ব্যয় কমেছে ১১৬ কোটি এবং ইআরএমসি (সিপি-০৯) ব্যয় কমেছে ৯০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত উত্তরা-মতিঝিল অংশের কাজের অগ্রগতি ৯৯ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং মতিঝিল-কমলাপুর অংশের অগ্রগতি ৬৩ দশমিক ১৫ শতাংশ।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউট (এনআইএলজি)-তে সিটি কর্পোরেশনের ৯ম গ্রেড কর্মকর্তাদের জন্য বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, প্লাস্টিক ও পলিথিন দূষণ নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশনকে নিয়মিত অভিযান চালাতে হবে। বাজার, মার্কেট ও ফুটপাত এলাকায় পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং কঠোর নজরদারি জরুরি। একই সঙ্গে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক কমাতে জনগণকে অভ্যাস পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, শব্দদূষণ শহরের মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাই হাইড্রোলিক হর্ন, লাউডস্পিকার ও নির্মাণকাজে শব্দনিয়ন্ত্রণ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি বায়ুদূষণ কমাতে নির্মাণসামগ্রী ভেজা পদ্ধতিতে সংরক্ষণ ও ঢেকে পরিবহন করতে হবে। এছাড়া অবৈধ ইটভাটা বন্ধে সিটি কর্পোরেশনের সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি আশা করেন, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, প্লাস্টিক দূষণ, শব্দদূষণ ও বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন।
তিনি বলেন, দক্ষ নগর ব্যবস্থাপনা গড়তে নিয়মিত প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। এই প্রশিক্ষণ কর্মকর্তাদের কাজের দক্ষতা বাড়াবে এবং নগরসেবা আরও উন্নত হবে।
অনুষ্ঠানে এনআইএলজির মহাপরিচালক মো. আব্দুল কাইয়ূম; স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব (নগর উন্নয়ন অধিশাখা) আবুল খায়ের মোহাম্মদ হাফিজুল্লাহ্ খান এবং এনআইএলজির পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ) মো. কায়েসুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় বহু মানুষের প্রাণহানি ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
গতকাল রোববার থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুলকে পাঠানো এক বার্তায় তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান এবং আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত সুস্থতা ও পুনরুদ্ধার কামনা করেন।
আজ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাওয়া এক বার্তায় এ কথা জানানো হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বার্তায় বলেন, এই বিপর্যয়ে যারা প্রিয়জন হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন কিংবা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, তাদের প্রতি বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের গভীর সহমর্মিতা রয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, থাই সরকার ও বন্ধুসুলভ জনগণ এ কঠিন সময়ে বাংলাদেশের চিন্তা ও প্রার্থনায় রয়েছে।
তিনি দৃঢ়তার সাথে আশা প্রকাশ করেন যে প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুলের নেতৃত্বে থাইল্যান্ড এই বিপর্যয় থেকে দ্রুত উত্তরণ ঘটাবে এবং ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠবে।
প্রধান উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেন, পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা ও সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। সূত্র: বাসস
বঙ্গোপসাগরে সফল ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বাৎসরিক সমুদ্র মহড়া সমাপ্ত হয়েছে।
গতকাল রোববার সমাপনী দিনে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসানের আমন্ত্রণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, আইন–বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা সমাপনী মহড়া প্রত্যক্ষ করেন।
পাঁচ দিনব্যাপী আয়োজিত এ মহড়ায় নৌবাহিনীর ফ্রিগেট, করভেট, ওপিভি, মাইন সুইপার, পেট্রোলক্রাফট, মিসাইল বোটসহ বিভিন্ন জাহাজ এবং মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট, হেলিকপ্টার ও বিশেষায়িত ফোর্স সোয়াড অংশ নিয়েছে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ডসহ সংশ্লিষ্ট মেরিটাইম সংস্থাগুলোও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মহড়ায় অংশগ্রহণ করে।
মহড়ার বিভিন্ন ধাপে নৌবহরের রণকৌশল অনুশীলন, সমুদ্র এলাকায় পর্যবেক্ষণ, লজিস্টিক অপারেশন এবং উপকূলীয় নৌ স্থাপনাগুলোর প্রতিরক্ষা মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। চূড়ান্ত দিনে বিশেষ আকর্ষণ ছিল নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ, শোল্ডার লঞ্চড সারফেস টু এয়ার মিসাইল ফায়ারিং, অ্যান্টি-এয়ার র্যাপিড ওপেন ফায়ারিং, রকেট ডেপথ চার্জ ফায়ারিং, অপারেশন এবং নৌ-কমান্ডোদের হেলিকপ্টার ভিত্তিক ভিজিট বোর্ড সার্চ অ্যান্ড সিজার মহড়া।
নৌবাহিনীর এই মহড়ার মূল লক্ষ্য ছিল সমুদ্র এলাকায় দেশের সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণ, সমুদ্র সম্পদ রক্ষা, সমুদ্রপথের নিরাপত্তা, চোরাচালান রোধ, জলদস্যুতা দমন, উপকূলীয় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং সমুদ্র এলাকায় টহল জোরদার করা। সমাপনী দিনে উপস্থিত অতিথিরা নাবিক ও কর্মকর্তাদের প্রশংসা করেন এবং দেশের সমুদ্রসীমা রক্ষার পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে নৌবাহিনীর অবদানকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেন।