১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সঠিক-প্রকৃত ইতিহাস লেখা হয়নি। যেটা লেখা হয়েছে সেটা হলো সরকারি ভাষ্য, যা লেখা হয়েছে সেটা ৮০ থেকে ৯০ ভাগ মিথ্যা। বরেণ্য বুদ্ধিজীবী, লেখক, গবেষক ও ইতিহাসবিদ বদরুদ্দীন উমর গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন।
দেশের স্বাধীনতার ৫৩তম বিজয় দিবসের প্রাক্কালে দেওয়া এ সাক্ষাৎকারে স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস এবং পূর্বাপর ঘটনাবলি সম্পর্কে বদরুদ্দীন উমর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। ৯৩ বছর বয়সেও তিনি নিরলস চিন্তা, গবেষণা ও লেখায় সক্রিয় রয়েছেন। তার বলিষ্ঠ কণ্ঠ, ইতিহাস পর্যবেক্ষণ ও চিন্তার দৃঢ়তা জাতীয় যে কোনো সংকটে সাহস ও শক্তি যোগায়।
স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি এবং এ নিয়ে বিতর্ক ও প্রকৃত সত্য আড়াল করার প্রচেষ্টা সম্পর্কে বদরুদ্দীন উমর বলেন, এই স্বাধীনতা আন্দোলনকে প্রথম থেকে এমনভাবে বলা হয়েছে যে, শেখ মুজিবই এ যুদ্ধের মহানায়ক। পরে তো শেখ হাসিনা এই স্বাধীনতা যুদ্ধের কথা এমনভাবে বলত যেন, এটা তাদের পারিবারিক ব্যাপার, তাদের পরিবারই নাকি এই যুদ্ধ পরিচালনা করেছে, ইতিহাসের এই যে আবর্জনা এখন পরিষ্কারের সময় হয়েছে।
স্বাধীনতা যুদ্ধ কিভাবে শুরু হলো- এ প্রশ্নের জবাবে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ১৯৭১ এর মার্চের শুরু থেকে ক্ষমতা হস্তান্তরের চলমান আলোচনা ভেঙে যাওয়ায় এবং ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংস হামলার কারণে স্বাধীনতা যুদ্ধ অপরিহার্য হয়ে পড়ে। এ কারণে যুদ্ধের কোনো প্রস্তুতি ছাড়া দেশের মানুষ একটি অসম যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। শেখ মুজিব সম্পর্কে এটা বলা যায় যে, তিনি আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা চেয়েছিলেন এটা একটা ভুয়া কথা। আসলে তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ১৯৭১ সালে শেখ মুজিব এই বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি, তিনি চেয়েছিলেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যে সর্বোচ্চ আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং নিজে চেয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে।
তিনি আসলে দুটো বিষয়কে মেনে নিতে পারেননি, একটা হচ্ছে তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি, যেটা তিনি চেয়েছিলেন। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, তার অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে যাওয়া। এ জন্য স্বাধীনতার পর দেশে ফিরে শেখ মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ সম্পর্কে কিছুই জানতে চাইতেন না, তাজউদ্দিনসহ অন্য নেতারা দেশে কি হয়েছিল ৭১ সালে, সেটা জানানোর এবং বলার চেষ্টা করেছেন কিন্তু তিনি কিছুতেই শুনতে চাইতেন না।
শেখ মুজিবের ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতা ঘোষণার দাবি সম্পর্কে উমর বলেন, ৭ মার্চের যে বক্তৃতা, সাধারণত বলা হলো এটা ছিল স্বাধীনতার ঘোষণা, কারণ শেখ মুজিব বলেছিলেন এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম ইত্যাদি, কিন্তু দেখা যায় এইসব কথা একেবারেই ভুয়া ছিল। এইসব কথা তিনি বলেছিলেন, তৎকালীন পরিস্থিতির চাপে। কেননা জনগণের অভ্যুত্থান তো ১ মার্চ থেকেই শুরু হয়েছিল। ইয়াহিয়া যখন বললো এখানে জাতীয় পরিষদের বৈঠক ৩ তারিখে হবে না, তখনই কারো অপেক্ষা না করে অভ্যুত্থান আরও তীব্র হলো। সেই পরিস্থিতির চাপে এবং স্বাধীনতার ঘোষণার জন্য তখন ছাত্রদেরও চাপ ছিল; এ চাপের মুখে উত্তেজনার বশে শেখ মুজিব এই বক্তৃতা দিয়েছিলেন। এতে তিনি এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, লাঠিসোঁটা নিয়ে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো- এ জাতীয় কথাবার্তা বলেছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য কেউ ঘরে ঘরে দুর্গ তৈরি করে না, ঘর থেকে বেরিয়েই যুদ্ধ করতে হয়। এটা লাঠিসোঁটারও কাজ নয়, যেখানে শত্রুরা কামান-বন্দুক-যুদ্ধবিমান নিয়ে সজ্জিত আছে; সেখানে লাঠিসোঁটায় কাজ হয় না- শেখ মুজিবের এসব ছিল কেবল কথার কথা।
উমর বলেন, যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন তাদের বলছেন, তোমরা আমার ভাই। তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে বলছেন, তোমরা আমার ভাই। এই ধরনের স্ববিরোধী কথাবার্তা ৭ মার্চের বক্তৃতায় ছিল। বলা হচ্ছে, এ ভাষণে স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়া হয়েছে, সবচেয়ে বড় কথা হলো এই বক্তৃতা দেয়া হলো ৭ তারিখে, এরপরে ১৫ তারিখে ইয়াহিয়া খান ঢাকায় এলো এবং এরপর থেকে ২৩ তারিখ পর্যন্ত শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার দলবল ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করল। তখন এই আলোচনার সময় কি হয়েছিল, তারা কী বাংলাদেশের স্বাধীনতার দাবি নিয়ে আলোচনা করেছিল, নাকি পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যে ক্ষমতার ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা করছিল। ক্ষমতার ভাগাভাগি ছিল পূর্ব-পাকিস্তান কতটা পাবে, পশ্চিম-পাকিস্তান কতটা পাবে। শেখ মুজিব যেহেতু সংখ্যাগরিষ্ঠের নেতা ছিলেন, এই ভাগাভাগির মধ্যে তার একটা লক্ষ্য ছিল প্রধানমন্ত্রী হওয়া। এটাই হচ্ছে সত্য, যারা বলে ৭ তারিখে স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়েছে, তারা এ ব্যাপারে কী বলবে। ইয়াহিয়া এবং মুজিবের মধ্যে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছিল, স্বাধীনতার আলোচনা? এ থেকে বোঝা যায়, আওয়ামী লীগ যতই হম্বিতম্বি করুক, যতোই স্বাধীনতার কথা বলুক- ওই সময় তাদের মাথায় স্বাধীনতার কোনো চিন্তা ছিলো না। শেখ মুজিব সব সময় আপস চাইছিলেন এবং এই আপস করে পৃথিবীর কোনো দেশের স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব নয়। এই আপোস করে তিনি পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে কোনো রকম একটা ক্ষমতা ভাগাভাগি চাইছিলেন। এর ফলে দেখা গেল ২৫ মার্চ রাতে যখন পাকিস্তানি বাহিনী জনগণের ওপর আক্রমণ করল, তখন শেখ মুজিবসহ সব আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিল, একদিকে আওয়ামী লীগের অহিংস অসহযোগ আন্দোলন, অন্যদিকে একটা শক্তিশালী সামরিক বাহিনী। আওয়ামী লীগের এই গান্ধীবাদী আন্দোলন ছিল একটা হাস্যকর ব্যাপার।
যুদ্ধের কোনো প্রস্তুতিই ছিল না? এমন প্রশ্নের জবাবে বদরুদ্দীন উমর বলেন, না আওয়ামী লীগের দিক থেকে যুদ্ধের কোনো প্রস্তুতি ছিল না। তারা পুরোপুরি একটি সাংবিধানিক লাইনে এ সমস্যার সমাধান চাইছিল। তবে অন্যদিকে এ আশঙ্কাও ছিল যে একটা হামলা হতে পারে, ৭ মার্চের পর থেকে আওয়ামী লীগের লোকরা বেসামরিক প্রশাসন, রেডিও, টিভিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল। কিন্তু আসল ক্ষমতা হলো সামরিক শক্তি, সেটা মোকাবিলা করার কোন প্রস্তুতি ছিল না। আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি ছিল একটা বায়বীয় ব্যাপার।
এ অবস্থায় একদিকে পাকিস্তানি বাহিনী হামলার প্রস্তুতি নিতে থাকল। অন্যদিকে বাঙালি সামরিক কর্মকর্তা ও সৈনিকরা চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় বিদ্রোহ করল, তারা আওয়ামী লীগকে বিষয়টি জানাল, কিন্তু আওয়ামী লীগ এসব পাত্তা দিল না। কারণ আওয়ামী লীগের লড়াই করার প্রস্তুতি এবং চিন্তাও ছিল না। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনীর হামলার সঙ্গে সঙ্গে পুরো আওয়ামী লীগের কাঠামো ভেঙে পড়ল। শেখ মুজিব সকলকেই বলতে থাকলো পালাও-পালাও, সবাই পালানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ল। সামরিক বাহিনীর আক্রমণের মুখে শেখ মুজিবের যে নেতৃত্ব তা ভেঙে পড়ল। আন্দোলন যেভাবে করছিলেন সেটা সম্পূর্ণভাবে ধসে পড়ল। কারণ সেটা মোকাবেলা করার কোনো প্রস্তুতি আওয়ামী লীগের ছিল না। তাদের গেরিলা যুদ্ধেরও কোনো প্রস্তুতি ছিল না। এ সময় আওয়ামী লীগ অসহায় অবস্থায় পড়ল। আওয়ামী লীগের নেতারা প্রাণ ভয়ে পালিয়ে বেশিরভাগ ইন্ডিয়ায় চলে গেল।
সবাইকে পালিয়ে যেতে বলে শেখ মুজিবুর রহমান নিজে কেনো বাসায় থাকলেন, তার তো পালিয়ে গিয়ে প্রতিরোধ যুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা। পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত আক্রমণ শুরুর পরও তার বাসায় অবস্থানে পেছনে কী কারণ থাকতে পারে বলে মনে করেন- এ প্রশ্নের জবাবে বদরুদ্দীন উমর বলেন, শেখ মুজিব আত্মসমর্পণের জন্য বাড়িতে বসে রইলেন। আওয়ামী লীগের লোকেরা এবং তাদের বুদ্ধিজীবীরা বলে শেখ মুজিবকে পাকিস্তানি বাহিনী গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে, তিনি আত্মসমর্পণ করেননি। আমি বলেছি, তিনি আত্মসমর্পণ করেছেন। আমি বারবার বিভিন্ন লেখায় এ কথা লেখায় আমার বিরুদ্ধে তারা ক্ষুব্ধ। সবাইকে শেখ মুজিব পালিয়ে যেতে বলছেন, আর তিনি বাড়িতে বসে থাকেন, তার মানেই হলো তিনি আত্মসমর্পণের জন্য অপেক্ষা করছেন এবং পাকিস্তানি বাহিনী এসে তাকে তুলে নিয়ে গেল। এটা গ্রেপ্তার নয়, এটা আত্মসমর্পণ। তাকে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হলো।
পাকিস্তানের জেলে থেকে শেখ মুজিব কি জানতেন দেশে কি হচ্ছে? এর জবাবে উমর বলেন, সেখানে পুরো যুদ্ধের সময় নয় মাস জেলে ছিলেন, সেখানে তাকে কোনো খবরের কাগজ দেয়া হয়নি, রেডিও টেলিভিশনের কোনো খবর তিনি দেখতে পারেননি। তিনি যুদ্ধের কোনো খবরই জানতে পারেননি। কারও সাথে তার সাক্ষাৎ হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনা বা নেতৃত্ব দেয়া তো দূরের কথা, তিনি জানতেনই না যে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। তিনি পাকিস্তানের জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর লন্ডনে গিয়ে জানলেন মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, দেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু তার বেটি (শেখ হাসিনা) ঢাকডোল পিটিয়ে অনবরত বলছে, তিনি (শেখ মুজিব) ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক। শেখ মুজিবের যে একটা ভাবমূর্তি এটাকে তারা ব্যবহার করছিল সেটাই তাদের সম্বল ছিল। এ পর্যন্তই, কিন্তু শেখ মুজিব মুক্তিযুদ্ধে অবদান রেখেছিলেন এটা একটা সম্পূর্ণ ভুয়া কথা, মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক ছিল না। মুক্তিযুদ্ধ করবে আর তাদের নেতা-কর্মীরা সব দেশের মাটি ছেড়ে পালালো, পৃথিবীর ইতিহাসে এমনটা কোথাও নেই। তারা গিয়ে ভারত সরকারের হাতে দেশ স্বাধীন করার ভার ছেড়ে দিলো। এ জন্য ভারতীয়রা বলে থাকে এটা নাকি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ, এক হিসেবে কথা ঠিক। ভারতের দেরাদুনে প্রশিক্ষণ দিয়ে যে মুজিব বাহিনী তৈরি করেছিল তারা কেউ লড়াই করেনি। আওয়ামী লীগের কোন নেতা সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয়নি। তারা কলকাতায় ভালোই ছিল, আরাম-আয়েশে ছিল।
এখানে লড়াই করেছে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। তারা যে লড়াই আরম্ভ করল আওয়ামী সেটা চায়নি। বাইরের কোন আক্রমণে নয়, দেশের ভেতরে থেকে সাধারণ মানুষ লড়াই করেছে, এ জন্যই পাকিস্তানি বাহিনী দুর্বল হয়ে পড়ে। মুক্তিযুদ্ধে সর্বোচ্চ অবদান এ দেশের জনগণের, তারাই লড়াই করেছে, জীবন দিয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী নেতা-কর্মীরা ভারতে পালিয়ে যাওয়ায় এই লড়াইটা সম্পূর্ণ ভারত নিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়েছিল। এ জন্য দেখা গেলো ১৬ ডিসেম্বর যখন আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর হলো, সেখানে ছিলেন ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক কমান্ডার জগজিৎ সিং অরোরা। এই অরোরার কাছেই নিয়াজী আত্মসমর্পণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি ও সর্বাধিনায়ক এম এজি ওসমানি সেখানে ছিলেন না। যৌথ কমান্ডে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে বলা হলেও এখানে বাংলাদেশের কোন প্রতিনিধি রাখা হয়নি। গ্রুপ ক্যাপ্টেন একে খন্দকার দর্শক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তাকে কোনো চেয়ারও দেয়া হয়নি। এটা ছিল ভারতীর সামরিক বাহিনীর কাছে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ।
স্বাধীনতার পর ১০ জানুয়ারি শেখ মুজিব দেশে ফিরে আসলেন। জনগণ তাকে ব্যাপকভাবে সমর্থন দিলেন। স্বাধীনতার আগের মুজিব আর স্বাধীনতার পরের মুজিরের শাসন, কী ঘটেছিল তখন? জবাবে বদরুদ্দীন উমর বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের পর ভারত সরকার এবং সেনাবাহিনী শেখ মুজিবকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিয়েছে। নিজের শক্তির জন্য এখানে বসেননি। কিন্তু দেশের মানুষ তাকে ভালোবেসেছিল। এই জনগণকে নিয়ে তিনি একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারতেন। সেটা না করে শুরু হলো লুটপাটের রাজত্ব। আওয়ামী লীগের লোকরা লুটপাট শুরু করলো। অবাঙালি লোকদের সব সম্পদ লুট হয়ে গেল। যারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিল না তাদের ঘরবাড়ি লুট হলো, লুণ্ঠনজীবী শ্রেণি তৈরি হলো। শেখ মুজিব হলেন তাদের নেতা। কলকারখানা জাতীয়করণ করে আওয়ামী লীগের লোকদের হাতে তুলে দিলেন। ক্ষমতায় এসে তিনি জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়ালেন। দেশব্যাপী ভয়াবহ নির্যাতন শুরু হলো। জাসদ নেতা-কর্মীদের ওপর হত্যা-নির্যাতন শুরু হলো।
রক্ষীবাহিনী গঠন প্রসঙ্গে বদরুদ্দীন উমর বলেন, সেনাবাহিনী থাকা সত্ত্বেও শেখ মুজিব রক্ষী বাহিনী গঠন করলেন। সেনাবাহিনীকে তিনি বিশ্বাস করতেন না, এই সেনাবাহিনীই যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। এতে এমন হলো আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব ঝুঁকির মধ্যে পড়ল। যে জনগণ শেখ মুজিবকে সমর্থন দিয়েছে তারা এ অবস্থা চায়নি, এ জন্য তারা দেশ স্বাধীন করেনি। এতে শেখ মুজিব ও তার দল জনসমর্থন হারিয়ে ফেলল। এমন জনবিচ্ছিন্ন অবস্থা থেকে বাঁচার জন্য নিজেদের লেখা সংবিধান সংশোধন করে তিনি সব দল নিষিদ্ধ করে একদলীয় বাকশাল চালু করলেন। দেশের সংবাদপত্র বন্ধ করে দিলেন। এমনকি সাপ্তাহিক, মাসিক, ত্রৈমাসিক পত্রিকাও বন্ধ করা হলো। আমাদের মাসিক সংস্কৃতি পত্রিকাও বন্ধ করে দিলাম। দেশে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হলো। ১৯৭৫ সালের ১ জানুয়ারি সিরাজ সিকদারকে গ্রেপ্তার করা হলো, ২ জানুয়ারি গভীর রাতে নিরাপত্তা হেফাজতে তাকে হত্যা করা হলো। এরপর শেখ মুজিব জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে বললেন, কোথায় সিরাজ সিকদার! প্রকৃতির প্রতিশোধ এমনই যে এর মাত্র কয়েকমাস পরে তিনি নিজেই নাই হয়ে গেলেন।
শেখ মুজিবের শাসনের পতন এবং ২০২৪ এর জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ২০২৪ এর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে প্রাণভয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন। বাংলাদেশে সাড়ে পনেরো বছরের ফ্যাসিস্ট আওয়ামী শাসনের অবসান হয়েছে। ১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধের পর এই গণঅভ্যুত্থান একটি যুগান্তকারী ঘটনা। ১৯৫২ সাল থেকে এখানে পরপর যে গণঅভ্যুত্থানগুলো ঘটেছে তার মধ্যে জুলাই মাসের এই গণঅভ্যুত্থান হলো সব থেকে ব্যাপক, গভীর এবং শাসকদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক।
উমর বলেন, ৫ আগস্ট, ২০২৪ বাংলাদেশ রাহুমুক্ত হয়েছে। শেখ হাসিনা ও তার দলের সর্বস্তরের নেতা-মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন সাংগঠনিক কমিটির নেতা থেকে একেবারে নিচের স্তরের নেতারাও ঘরবাড়ি ছেড়ে পলায়ন করেছে। ২০০৯ সাল থেকে পনের বছরের বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগ সরকার যেভাবে বাংলাদেশকে অক্টোপাসের মতো কামড়ে ধরে রেখেছিল, সে কামড় থেকে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুক্ত হয়ে জনগণ এখন যে স্বাধীনতা উপভোগ করছেন এতটা স্বাধীনতা- ১৯৭২ সালের পর আর কখনো ঘটেনি।
অন্তর্বর্তী সরকার প্রসঙ্গে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ক্ষমতার ক্ষেত্রে একটা শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল এবং সেই শূন্যতা ঐতিহাসিকভাবেই পূরণ করেছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার।
‘নতুন কুঁড়ি’ প্রতিযোগিতা জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে শাপলা হলে আয়োজিত ‘নতুন কুঁড়ি-২০২৫’ এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এ আশা প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে আনন্দঘন পরিবেশে শিশুদের সৃজনশীল বিকাশে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘শিশুরা শুধু নাচ-গানে সীমাবদ্ধ থাকবে কেন?’—এই প্রশ্ন রেখে ড. ইউনূস শিশুদের রচনা, প্রযুক্তি, খেলাধুলা ও উদ্যোক্তা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে উৎসাহিত করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে এসব উদ্যোগে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
দীর্ঘদিন পর আবারও ‘নতুন কুঁড়ি’ আয়োজন করায় মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নতুন কুঁড়ির মতো অন্যান্য ক্ষেত্রেও মন্ত্রণালয়কে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানের আগে প্রতিযোগিতার দুটি বিভাগের দুই বিজয়ীর হাতে ৩ লাখ টাকার চেক ও ট্রফি তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা এবং সব অংশগ্রহণকারীকে অভিনন্দন জানান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও সচিবরা।
এর আগে নতুন কুঁড়ি-২০২৫ আসরের সবগুলো পর্ব সফলভাবে সম্পন্ন হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো প্রতিযোগীর অংশগ্রহণে শুরু হওয়া এ প্রতিযোগিতায় নাচ, গান, আবৃত্তি, কৌতুক, গল্প বলা, অভিনয়সহ ১২টি বিষয়ে প্রতিভাবান শিশু-কিশোররা অংশ নেয়।
আঞ্চলিক বাছাই, বিভাগীয় বাছাই, চূড়ান্ত বাছাই, সেরা দশ এবং ফাইনাল রাউন্ড শেষে বিজয়ীদের সম্মাননা জানাতেই অনুষ্ঠিত হলো পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায় ঘোষণা শেখ হাসিনার রায় ঘোষণা ১৭ নভেম্বর।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলাটি বর্তমানে রায়ের অপেক্ষার তালিকায় ১ নম্বরে ছিল । রায়ের দিন নির্ধারণ ঘিরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, পোস্টার নিষিদ্ধ- নিজ উদ্যোগে দলগুলোকে এখনই তা সরাতে হবে৷ অন্যথায় আমরা সহ্য করবো না। অন্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়বো এসবের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনে দলগুলোর সঙ্গে আয়োজিত বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন এএমএম নাসির উদ্দিন।
সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার জন্য আমাদের দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ একটু দেরি হলো। নির্বাচনে খেলবেন আপনারা। আমরা রেফারির ভূমিকায় নিরপেক্ষ থাকতে চাই। সহযোগিতা ছাড়া খেলাটা পরিচালনা করা মুশকিল। রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা নিয়েই আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, সুষ্ঠু, সুন্দর, ক্রেডিবল নির্বাচন দিতে চাই। সহযোগিতা না পেলে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাবে। তাই আপনাদের সঙ্গে পেতে চাই।
সিইসি আরো বলেন, আপনারা কিছু মনে করবেন না। নিবন্ধিত ৫৪টি দলই আমাদের কাছে সমান। যারা আমাদের নিবন্ধন পেয়েছেন, তারাই সবাই সমান। আপনারা মতামত দেবেন। ভোটের আগে, সময় ও ভোটের পরে সহায়তা করবেন।
আচরণবিধির বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, এখনই পোস্টারে ছেয়ে গেছ ঢাকা শহর। অথচ আমরা এটা নিষিদ্ধ করেছি। এগুলো সরাতে হবে। যারা লাগিয়েছেন, নিজে থেকে সরিয়ে ফেলবেন। এটাই হবে ভদ্র আচরণ। আর যেন কেউ না লাগান। যে দল এটা করবেন না, আমরা মনে করবো যে সে দলের নিয়ত সাফ না। আমরা এটা সহ্য করবো না। বিধি ভাঙলে আমরা অন্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়বো।
সংলাপে অন্য নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, ছয়টি দলের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন। দলগুলো হলো-বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, এলডিপি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ কংগ্রেস, এনপিপি।
দুইশো বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ঐতিহ্যের অবসান ঘটছে যুক্তরাষ্ট্রে। ব্যয় কমানো ও ডিজিটাল লেনদেনের যুগে তাল মেলাতে দেশটি এক সেন্টের মুদ্রা ‘পেনি’ উৎপাদন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অবশ্য উৎপাদন বন্ধ হলেও মুদ্রাগুলো কার্যকর থাকবে। বুধবার (১২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, দুই শতাব্দীরও বেশি সময়ের ঐতিহ্য ভেঙে এক সেন্টের মুদ্রা (পেনি) তৈরি বন্ধ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় বুধবার ফিলাডেলফিয়া মিন্টে এই মুদ্রার শেষ ব্যাচের কয়েন তৈরি করা হবে। এর মাধ্যমে ১৭৯৩ সাল থেকে টানা ২৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা পেনি উৎপাদনের ইতি টানবে।
তবে মুদ্রাগুলো প্রচলনে থাকবে। কিন্তু নতুন করে উৎপাদন বন্ধের ঘোষণার পর থেকেই অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দাম সমন্বয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে, কারণ বাজারে এখন পেনি পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরকারের দাবি, এই পদক্ষেপে ব্যয় সাশ্রয় হবে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে পরিকল্পনাটি ঘোষণা করে বলেছিলেন, “আমাদের মহান দেশের বাজেট থেকে অপচয় বাদ দিতে হবে— এটা যদি এক পেনিও হয়।”
বিবিসি বলছে, তামা-প্লেটেড জিঙ্ক দিয়ে তৈরি ও গৃহযুদ্ধকালীন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের প্রতিকৃতি সংবলিত পেনি এখন তৈরি করতে খরচ হচ্ছে প্রায় ৪ সেন্ট, যা এক দশক আগের তুলনায় দ্বিগুণ। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ বলছে, উৎপাদন বন্ধ করলে প্রতিবছর প্রায় ৫৬ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে।
দপ্তরটির মতে, ডিজিটাল লেনদেন বৃদ্ধির ফলে এক সেন্ট মুদ্রার ব্যবহার ধীরে ধীরে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। ১৭৯৩ সালে প্রথম চালু হওয়া এই কয়েন এখন বাজারে এত বেশি পরিমাণে আছে — প্রায় ৩০০ বিলিয়ন — যা বাণিজ্যিক কারণে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি।
সরকারি এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে চলমান কয়েনের প্রায় ৬০ শতাংশই ব্যবহারহীন অবস্থায় ঘরে জমা পড়ে থাকে— প্রতি পরিবারে গড়ে ৬০ থেকে ৯০ ডলারের মতো।
তবে এই সিদ্ধান্ত ভোক্তাদের জন্য বাড়তি চাপ তৈরি করতে পারে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো যখন পণ্যের দাম কিছুটা বাড়িয়ে রাউন্ড ফিগারে বা পূর্ণ সংখ্যায় সমন্বয় করবে, তখন ক্রেতাদের বার্ষিক অতিরিক্ত খরচ পড়বে প্রায় ৬ মিলিয়ন ডলার। রিচমন্ড ফেডারেল রিজার্ভের এক গবেষণায় একথা বলা হয়েছে।
অবশ্য বিশ্বের অনেক দেশই আগেই তাদের স্বল্পমূল্যের মুদ্রা ব্যবহার বন্ধ করেছে। কানাডা শেষবার এক সেন্টের কয়েন তৈরি করে ২০১২ সালে। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড ১৯৯০-এর দশকে এক ও দুই সেন্টের কয়েন বাতিল করে, আর নিউজিল্যান্ড ২০০৬ সালে পাঁচ সেন্টের কয়েন তৈরিও বন্ধ করে দেয়।
যুক্তরাজ্য ২০১৮ সালে ১ পেনি মুদ্রা বাতিলের পরিকল্পনা করলেও পরে তা প্রত্যাহার করে নেয়। তবে ডিজিটাল লেনদেন বৃদ্ধির কারণে ২০২৪ সালে দেশটি নতুন করে ১ ও ২ পেনি কয়েন তৈরি বন্ধ করে দেয়।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে এখন নজর পড়েছে পাঁচ সেন্ট মূল্যের নিকেল মুদ্রার দিকে। এর উৎপাদন খরচ প্রায় ১৪ সেন্ট— অর্থাৎ মূল্যমানের প্রায় তিন গুণ বেশি খরচ হচ্ছে। রিচমন্ড ফেডের হিসাব অনুযায়ী, এটিও বন্ধ করা হলে ভোক্তাদের বার্ষিক বাড়তি ব্যয় দাঁড়াবে প্রায় ৫৫ মিলিয়ন ডলার।
জাতির উদ্দেশে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ভাষণ দেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (১২ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বিটিভি নিউজ ও বিটিভি ওয়ার্ল্ড ভাষণটি সরাসরি সম্প্রচার করবে।
যুদ্ধবিরতির মধ্যেও থামছে না ইসরায়েলি গণহত্যা। গণহত্যা শুরুর দুই বছর পরও গাজার সর্বত্র ছড়িয়ে আছে ধ্বংসস্তূপ। ধারণা করা হচ্ছে, এখনও হাজারো মানুষ ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়ে আছে।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের হিসাব অনুযায়ী, ১০ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বরের মধ্যে ইসরায়েল ২৮২ বার যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে—বিমান হামলা, কামানের গোলা ও স্থল অভিযানের মাধ্যমে।
গাজার সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৬৯ হাজার ১৮২ জন নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় চলতি বছরের ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েলি বাহিনী ২৪৫ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে গাজার প্রশাসন।
অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে পরিচালিত হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত ও প্রায় ২০০ জন বন্দী হয়েছিল।
গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনী ও বসতিস্থাপনকারীদের হামলায় অন্তত তিনজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মঙ্গলবার গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থা জানায়, আল-শিফা হাসপাতালে অন্তত ৩৫ জন অজ্ঞাতনামা ফিলিস্তিনির মরদেহ পাঠানো হয়েছে। তাদের পরিচয় শনাক্তে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ।
আল জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আযুম জানিয়েছেন, “গাজার পরিবারগুলোর জন্য প্রিয়জনদের সন্ধান পাওয়া এখন এক দূরবর্তী স্বপ্ন। অনেকে হাসপাতাল, মর্গ ও শনাক্তকরণ কেন্দ্রে গিয়ে পোশাক, ক্ষতচিহ্ন বা ব্যক্তিগত সামগ্রী দেখে দেহাবশেষ শনাক্তের চেষ্টা করছেন।”
তিনি আরও জানান, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা মৃতদেহের পচন ও ডিএনএ পরীক্ষার সরঞ্জামের ঘাটতির কারণে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে আছেন, ফলে বহু পরিবার গভীর অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছে।
জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, অন্তত ১৬ লাখ সিরিঞ্জ ও ১০ লাখ শিশুখাদ্যের বোতল এখনো ইসরায়েলের অনুমতির অপেক্ষায় আছে। এসব সামগ্রী নিয়মিত টিকা না পাওয়া প্রায় ৪০ হাজার শিশুর জন্য অত্যন্ত জরুরি।
ইউনিসেফের মুখপাত্র রিকার্দো পাইরেস বলেন, “সিরিঞ্জ ও রেফ্রিজারেটরকে ইসরায়েল ‘দ্বৈত ব্যবহারযোগ্য’ হিসেবে বিবেচনা করছে, তাই এগুলোর ছাড়পত্র পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।”
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে গাজায় প্রবেশ করেছে মাত্র ৩,৪৫১টি ত্রাণবাহী ট্রাক, যা প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগণ্য।
গাজার বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা মোহাম্মদ থাবেত জানিয়েছেন, “বর্তমানে গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ শূন্য। দুই বছর ধরে মানুষ সম্পূর্ণ অন্ধকারে রাত কাটাচ্ছে।”
একই দিনে অধিকৃত পশ্চিম তীরে সহিংসতা ছড়িয়েছে বসতিস্থাপনকারীদের হামলায়। মঙ্গলবার ডজনখানেক মুখোশধারী ইসরায়েলি বসতিস্থাপনকারী বেইত লিদ ও দেইর শরাফ গ্রামে হামলা চালায়। তারা চারটি দুধবাহী ট্রাক, কৃষিজমি ও বেদুইনদের টিনের ঘরপোড়া টেন্টে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে অন্তত চারজন ফিলিস্তিনি আহত হন।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা মুয়াইয়্যাদ শাবান অভিযোগ করেন, “ইসরায়েলি সরকার বসতিস্থাপনকারীদের এসব হামলার সুরক্ষা ও দায়মুক্তি দিচ্ছে।”
অন্যদিকে, ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে চারজন ইসরায়েলিকে আটক করা হয়েছে। ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ হামলাগুলোকে “অত্যন্ত নিন্দনীয় ও সীমালঙ্ঘনকারী” বলে মন্তব্য করেছেন।
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ২২ জন বিচারপতির শপথ অনুষ্ঠিত হবে আজ।
বুধবার দুপুর দেড়টায় প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে তাদের শপথ পড়াবেন।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তবে বিএনপি নেতা নিতাই রায় চৌধুরীর ছেলে বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীকে এবার স্থায়ী তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তিনি ৪৫ বছর বয়স পূর্ণ করলে তাকে স্থায়ী বিচারপতি করা হবে।
বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে হাইকোর্ট বিভাগের ২২ জন অতিরিক্ত বিচারককে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।
স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত ২২জন হলেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার, বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেন, বিচারপতি মো. মনসুর আলম, বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুর, বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজা, বিচারপতি মো. যাবিদ হোসেন, বিচারপতি মুবিনা আসাফ, বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলাম, বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকা, বিচারপতি মো. আবদুল মান্নান, বিচারপতি তামান্না রহমান, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ, বিচারপতি মো. হামিদুর রহমান, বিচারপতি নাসরিন আক্তার, বিচারপতি সাথিকা হোসেন, বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তাজরুল হোসেন, বিচারপতি মো. তৌফিক ইনাম, বিচারপতি ইউসুফ আব্দুল্লাহ সুমন, বিচারপতি শেখ তাহসিন আলী, বিচারপতি ফয়েজ আহমেদ, বিচারপতি মো. সগীর হোসেন ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজী।
গতবছর ৯ অক্টোবর এ ২২ জনসহ মোট ২৩ জন বিচারপতি হাইকোর্ট বিভাগর অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন। পরবর্তীতে গত ২১ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারী হয় এবং এউ অধ্যাদেশের বিধান অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগের লক্ষ্যে সুপ্রিম জুডিসিয়াল অ্যাপোয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল গঠন করা হয়।
জুলাই গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার রায়ের দিন ঘিরে সন্ত্রাস-নাশকতা তৈরি করে জনমনে আতঙ্ক ছড়াতে চাইছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। এ লক্ষ্যে রাজধানীতে দুদিনে ১৭ ককটেল বিস্ফোরণ, ১০ যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ দলটি। এতে জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। যদিও নাগরিকদের জানমালের সুরক্ষায় কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এমনকি এসব ঘটনায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগসহ কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। এছাড়া মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার রায়ের দিন ঘোষণা করা হবে। ওই দিন ঢাকা লকডাউনের হুমকি দিয়েছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ।
এদিকে, ধানমন্ডির ১১/এ সড়কে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ের সামনে একটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। দুইজন ব্যক্তি মোটরসাইকেলে এসে এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এসময় নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল প্রস্তুতিকালে তন্ময় সাহা (২৯), শেখ ফরহাদ ওরফে ভোলা ফরহাদ (৩৮) নামে যুবলীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ধানমন্ডি থানার ওসি ক্যশৈন্যু মারমা বলেন, ককটেল বিস্ফোরণের বিষয়টি আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। তবে ২৭ নম্বর সড়কে ঝটিকা মিছিল প্রস্তুতিকালে দুজনকে আটক করা হয়েছে। এরমধ্যে তন্ময় সাহা ফরিদপুর থানা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভোলা ফরহাদ গাজীরটেক ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।
এছাড়া রাজধানীর সূত্রাপুর ফায়ার সার্ভিসের গেটের সামনে পার্কিং করা একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রধান সড়কে পার্কিং করা ‘মালঞ্চ পরিবহনের’ একটি বাসে এ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, আগুন লাগার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার স্টেশনের একটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় ১০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
বঙ্গবাজার ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক বলেন, সূত্রাপুর ফায়ার স্টেশনের প্রধান সড়কের পাশে পার্কিং করা মালঞ্চ পরিবহণ নামে একটি বাসে দুর্বৃত্তরা আগুন দেয়। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
তিনি জানান, তাৎক্ষণিকভাবে কারা ও কেন এ অগ্নিসংযোগ ঘটিয়েছে তা জানা যায়নি। এ ঘটনায় এলাকায় কিছু সময়ের জন্য আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও ফায়ার সার্ভিসের দ্রুত পদক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
সূত্রাপুর থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম জানান, এ ঘটনার সময় এলাকাবাসী ও মুসল্লিরা নামাজে ছিলেন। সুযোগ বুঝে দুর্বৃত্তরা বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। আশপাশের কেউ ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেননি এবং ওই দিকটিতে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরাও স্থাপন ছিল না।
ওসি জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কে বা কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তা শনাক্তে এলাকাগুলোতে পুলিশের অভিযান চলছে।
কী বলছে পুলিশ: পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, চোরাগোপ্তা হামলা হলে স্বাভাবিকভাবে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে থাকে। এই পরিস্থিতিতে পুলিশের সব ইউনিটকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও যানবাহনের ওপর নজরদারি, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার এবং সাইবার গোয়েন্দা কার্যক্রম তীব্র জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নৈরাজ্য মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। ডিএমপিকে পুলিশের অন্য ইউনিট সহযোগিতা করবে। সেনাবিাহিনী ও বিজিবি মাঠে থাকবে। আইনশৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটালে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) শেখ মো. সাজ্জাত আলীও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ১৩ নভেম্বরের কর্মসূচি রাজধানীতে শঙ্কার কিছু নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগরীর চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংক্রান্ত বিষয়ে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ আশ্বাস দেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যাবহার করে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে। গত তিন দিনে রাজধানীতে ১৭টি ককটেল বিস্ফোরণ, ১০টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, আর ঝটিকা মিছিল হয়েছে ১৪টি। এসব কর্মসূচিতে জড়িত ৫৫২ জন গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপি। তিনি কার্যক্রম নিষিদ্ধ দলের কর্মসূচি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল ও মিথ্যা প্রচারণা বিষয়েও সচেতন থাকার পরামর্শ দেন।
এদিকে, দেশজুড়ে চলমান সহিংসতা ও নাশকতার আশঙ্কায় দেশের সব বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। গতকাল মঙ্গলবার বেবিচকের সদর দপ্তর থেকে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে এক চিঠিতে এ বিষয়ে নির্দেশনা পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, সব বিমানবন্দরে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি বিমানবন্দর এলাকায় ভেহিকল প্যাট্রোল ও ফুট প্যাট্রোল বাড়ানো এবং মনিটরিং ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সম্ভাব্য ঝুঁকি বা হুমকির ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার রায়ের দিন ঘোষণা করা হবে। ওই দিন আবার ঢাকা লকডাউনের হুমকি দিয়েছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। ওই রায় কেন্দ্র করে পতিত সরকারের দল ঢাকাসহ দেশে যাতে কোনো ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে সতর্ক রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
পুলিশের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও দেশ-বিদেশে ছদ্মবেশে তৎপর রয়েছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। দেশে হঠাৎ হঠাৎ ঝটিকা মিছিল করে তারা অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে। তারা ঝটিকা মিছিল করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইনেও সক্রিয় হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ১৩ নভেম্বরকে কেন্দ্র করে তারা গোপনে একত্র হয়ে সহিংসতা বা হামলার পরিকল্পনা করতে পারে-এমন আশঙ্কা রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।
পুলিশের টহল পার্টি, মোবাইল পার্টি ও পিকেট পার্টিকে সক্রিয় করা হয়েছে। তবে এসব টিকটকারদের তালিকা তৈরি করেছে পুলিশ। পাশাপাশি বিদেশে পলাতক থাকা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলসহ যারা ফেসবুকে প্রচার চালাচ্ছে তাদেরও তালিকা করেছে পুলিশ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৩ নভেম্বর ঘিরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যাতে ঢাকায় প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য প্রবেশপথগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গাড়ি তল্লাশি এবং সন্দেহভাজনদের দেহ তল্লাশি করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এছাড়াও ধর্মীয় উপাসনালয় ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। র্যাবকে ঢাকার সড়কে টহল দিতে দেখা গেছে।
ভারতের রাজধানী দিল্লির লালকেল্লায় গাড়ি বিস্ফোরণকে ‘জঙ্গি হামলা’ দাবি করে ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমে বাংলাদেশকে জড়িয়ে প্রচারিত সংবাদকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সুযোগ পেলেই ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশের ওপর দোষ চাপায়। লালকেল্লায় হামলার সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই বলে স্পষ্ট করেন তিনি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতের গণমাধ্যমের এমন মনগড়া ও দায়সারা প্রতিবেদন দুদেশের সম্পর্কের জন্য ইতিবাচক নয়। বাংলাদেশ বরাবরই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে আসছে।
সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লির লালকেল্লা এলাকায় মেট্রো স্টেশনের কাছে একটি চলন্ত গাড়ি বিস্ফোরণে শেখ খবর পাওয়া পর্যন্ত অন্তত ১৩ জন ভারতীয় নাগরিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন বহু মানুষ। এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে ভারতের বাংলাদেশ হাইকমিশন।
গত সোমবার সন্ধ্যায় এক বার্তায় হাইকমিশন জানিয়েছে, এই দুঃসময়ে বাংলাদেশ ভারতের পাশে রয়েছে।
হাইকমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের আন্তরিক সমবেদনা ও প্রার্থনা রইলো সব নিহত ও আহত ব্যক্তির এবং তাদের পরিবারের প্রতি।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে লালবাতিতে দাঁড়ানো একটি গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিহতদের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন এবং পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে, ভয়াবহ এ বিস্ফোরণের পর লালকেল্লা মেট্রো স্টেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ১১ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনের জন্য লালকেল্লাও বন্ধ করা হয়েছে। এই তিন দিন লালকেল্লা পরিদর্শন করতে পারবেন না দর্শনার্থীরা। এছাড়া দিল্লিতে উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে পুলিশ।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে ৩-৪ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাবে সরকার। রাজনৈতিক দলগুলো তা মেনে নেবে, এমনটাই আশা করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
মঙ্গলবার বিকালে বিচার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আইনগত সহায়তা প্রদান অধ্যাদেশ ২০২৫ খসড়ার সংশোধন প্রস্তাব বিষয়ে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
দেশের সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে চলমান বিতর্কের জবাবে তিনি বলেন, রাতারাতি সব সংস্কার শেষ করা সম্ভব নয়। বাস্তবে এত বড় ধরনের সংস্কার করা সহজসাধ্য নয়। ক্রমান্বয়ে সংস্কার করলে ভালো জায়গায় পৌঁছাতে পারব।
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, সবাই মনে করেন সব সংস্কার এখনই করে ফেলতে হবে। বিষয়টা এত সহজ নয়। আমরা যখন অ্যাকটিভিজম করেছি তখন ভেবেছি কত সহজ, কিন্তু এখন বুঝতে পারছি কত কঠিন।
তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, সব সংস্কার যেন সংবিধানে আটকে গেছে। অন্য কোনো সংস্কার কারও চোখেই পড়ে না। সংবিধান কোনো ম্যাজিক নয়, যে লিখে দিলেই সমাধান হয়ে গেল। রাজনৈতিক সংস্কৃতি, জনগণের অভ্যাস বাদ না দিলে কোনো কিছু পরিবর্তন হবে না।
সাংবিধানিক ব্যর্থতার একটি উদাহরণ দিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, সংবিধানে তো লেখা আছে রাষ্ট্রপতি স্বাধীনভাবে প্রধান বিচারতি নিয়োগ দেবেন। কখনও কি হয়েছে?
বিচার বিভাগের সংস্কার প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা জানান, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের দেওয়া বেশিরভাগ প্রস্তাবই ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে।
তিনি দাবি করেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের দেওয়া ৭০-৮০ ভাগ সংস্কার প্রস্তাব ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়ে গেছে। অথচ অপপ্রচার করে বলা হয় কোথায় সংস্কার, কোথায় সংস্কার?
ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকারের কাছে সংস্কারগুলো ধরে রাখার অনুরোধ জানান আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমাদের একটা ভীতি কাজ করে যে নির্বাচিত সরকার আসবে তারা এটা ধরে রাখবেন কিনা।
তিনি নতুন সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, যারা আসবেন তাদের কাছে অনুরোধ, সংস্কারগুলো ধরে রাখবেন। আরও শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ।
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দেশে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও উৎসবমুখর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, “খুব সুন্দর একটা ইলেকশন দেখতে পাবেন—যেটা ফ্রি, ফেয়ার ও এক্সক্লুসিভ হবে। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেবে, পরিবেশ হবে উৎসবমুখর।”
মঙ্গলবার সকালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কুলিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রেস সচিব বলেন, “বিদেশের মতো শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন হবে। তত্ত্বাবধায়ক আমলের ভালো নির্বাচনের মতো এবারও মানুষ আনন্দের সঙ্গে ভোট দেবে।”
রাজনৈতিক মতভেদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দল থাকলে মতভেদ থাকবেই। তবে গত নয় মাস ধরে কমিশনের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে, আশা করি ঐক্য হবে।”
তিনি আরও জানান, বিএনপি ইতোমধ্যে ২৩৭টি আসনে এবং জামায়াতও বিভিন্ন আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। “বড় দলগুলো নির্বাচনমুখী, দেশজুড়ে নির্বাচনের জোয়ার বইছে,” বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “১৩ নভেম্বরকে সামনে রেখে তারা বিশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের চেষ্টা করছে। পুলিশ সতর্ক অবস্থানে আছে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন মজুমদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার জামাল হোসেন ও ওসি মো. হিলাল উদ্দিন।
ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, দেশের ভূমি প্রশাসনের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ খাতের কার্যক্রম উপজেলা পর্যায়ে মূলত উপজেলা ভূমি অফিসের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
গতকাল সোমবার রাজধানীর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর অডিটোরিয়ামে ‘উপজেলা ভূমি অফিসের সেবা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
সাধারণ মানুষের ভূমি সংক্রান্ত প্রায় সব সেবা এই অফিসের মাধ্যমেই দেয়া হয় উল্লেখ করে ভূমি উপদেষ্টা বলেন, উপজেলা ভূমি অফিস হলো নাগরিক সেবার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। কিন্তু এই সেবার মান ও সুশাসন নিশ্চিত করতে এখনও নানা চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান।
আলী ইমাম মজুমদার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভূমিখাতে সুশাসনের অভাব ও স্বচ্ছতার ঘাটতির কারণে জনগণ ভোগান্তির শিকার হয়ে আসছে। তাই ভূমিখাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা আজ সময়ের দাবি।
তিনি বলেন, এই দাবির প্রেক্ষিতে সরকার ভূমি প্রশাসনের ডিজিটাল রূপান্তর করেছে,এখন ভূমির সকল সেবাই অনলাইনে ঘরে বসে পাওয়া যাচ্ছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) গণপ্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, তারা কেবল ভূমি প্রশাসনের দায়িত্বে নিয়োজিত নন বরং নির্বাচনের সময় তারা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
ভুয়া তথ্য, বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট ও গুজব প্রতিরোধে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত একটি বিশেষ সেল গঠন করেছে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি (এনসিএসএ)।
এই সেল সার্বক্ষণিকভাবে অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যবেক্ষণ, তথ্য যাচাই-বাছাই ও সত্যতা নিশ্চিতের কাজ করবে।
এনসিএসএ এ লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং, প্রেস ইনফরমেশন বাংলাদেশ (পিআইবি), বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস), বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে।
কোন তথ্য বা কনটেন্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করার আগে অবশ্যই তার উৎস যাচাই করতে সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এনসিএসএ। পাশাপাশি সন্দেহজনক, উসকানিমূলক বা দেশবিরোধী কনটেন্ট দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে সংস্থাটিকে জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
দেশবিরোধী চক্রের ফাঁদে পড়ে ভুল বা ভুয়া তথ্য, ফটোকার্ড ও ভিডিও প্রচার থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি অন্যদের সচেতন করতেও সকলকে অনুরোধ করেছে এনসিএসএ।
সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে জনগণের দ্রুত সহায়তায় এনসিএসএ ২৪/৭ হেলপলাইন সেবা চালু রয়েছে। নাগরিকদের অভিযোগ গ্রহণের জন্য চারটি আলাদা ই-মেইল খোলা হয়েছে।
এগুলো হল: অনলাইন জুয়া সংক্রান্ত অভিযোগের জন্য [email protected]; ভুয়া তথ্য, গুজব বা misinformation/disinformation সংক্রান্ত অভিযোগের জন্য [email protected]; ফেইক প্রোফাইল, অশ্লীল বা ক্ষতিকর কনটেন্ট ও অনলাইন হয়রানি সংক্রান্ত অভিযোগের জন্য [email protected] এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো (সিআইআই) প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলা সংক্রান্ত অভিযোগের জন্য [email protected]
সবাই মিলে দেশের ডিজিটাল পরিসর নিরাপদ ও দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহারে ভূমিকা পালনে এনসিএসএ নাগরিকদের সহযোগিতা চেয়েছে।