মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫
১৭ আষাঢ় ১৪৩২

দেশে ১৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা করছে সামিট

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ২০:৩০

বর্তমানে সামিট করপোরেশন লিমিটেড নিজস্ব মালিকানাধীন ২,২৫৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন মোট ১৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা করছে। এ ছাড়া সামিট ৫০০ এমএমসিএফ/ডি ক্ষমতাসম্পন্ন বাংলাদেশের দ্বিতীয় ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ) পরিচালনা করে।

আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সামিট।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামিট কর্পোরেশন লিমিটেডের অধীনে এই ১৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভূক্ত প্রতিষ্ঠান সামিট পাওয়ার লিমিটেড (এসপিএল) মোট ৯৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ১৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিক।

এতে বলা হয়, বর্তমানে, আশুলিয়া, মাধবদী ও চান্দিনায় অবস্থিত তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্র (মোট ৩৩ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন) জাতীয় গ্যাস গ্রিড থেকে সরবরাহে ঘাটতির জন্য শাটডাউন মোডে আছে। যদিও "নো ইলেকট্রিসিটি, নো পেমেন্ট" ভিত্তিতে ২১শে নভেম্বর ২০২৮ পর্যন্ত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সঙ্গে সরকারের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) রয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, চলতি বছরের আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে বিপিডিবির কাছ থেকে বিদ্যুতের চাহিদা না থাকায় নারায়গঞ্জে অবস্থিত মদনগঞ্জ পাওয়ার প্ল্যান্টটি (১০২ মেগাওয়াট, হেভি ফার্নেস ওয়েল-চালিত) শাটডাউন মোডে আছে।

এছাড়া চলতি বছরের ২৪ জুনে বিপিডিবির সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) প্রাথমিক মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে জাঙ্গালিয়া পাওয়ার প্ল্যান্ট (৩৩ মেগাওয়াট গ্যাস-চালিত) বন্ধ রয়েছে। উল্লেখ্য, বিপিডিবি এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে চুক্তি (পিপিএ) নবায়ন কিংবা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার জন্য কোনো নির্দেশনা দেয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে সামিট পাওয়ার লিমিটেডের মালিকানাধীন ৮০৮ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন অন্য মোট ১০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র সচল আছে।

পৃথকভাবে, মোট ১,২৭৯ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সামিটের তিনটি টারবাইন বিদ্যুৎকেন্দ্র যথাক্রমে, সামিট মেঘনাঘাট পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, সামিট মেঘনাঘাট ২ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড এবং সামিট বিবিয়ানা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের পাশাপাশি ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ) চালু রয়েছে।

সামিট পাওয়ার লিমিটেড অর্থ বছরের শেষে (৩০শে জুন ২০২৪ তারিখে) নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন এবং প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী প্রদানের পাশাপাশি লভ্যাংশ ঘোষণা করার জন্য ৩১শে মার্চ ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত সময় বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেছে।

সামিট পাওয়ার লিমিটেড আশা করছে এপ্রিল-মে ২০২৫ এর মধ্যে কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে।


পুলিশের কনস্টেবল পদে ৮ হাজার নিয়োগ, আবেদন শুরু আজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে ৮ হাজার জন নিয়োগের লক্ষ্যে আজ থেকে অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

প্রার্থীদের অবশ্যই এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ ২.৫০ পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। আগ্রহীরা আগামী ২৪ জুলাই রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

গত ২৭ জুন বাংলাদেশ পুলিশ নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। আবেদন করতে হবে পুলিশের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে https://pcc.police.gov.bd

আবেদনের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। অবিবাহিত হতে হবে এবং প্রার্থীর বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে।

শারীরিক যোগ্যতা: মেধা কোটার ক্ষেত্রে পুরুষ প্রার্থীর উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি হতে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তান এবং ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটার ক্ষেত্রে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি।

শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের কোটার ক্ষেত্রে বিধি অনুসৃত হবে। নারী প্রার্থীর উচ্চতা মেধা কোটার ক্ষেত্রে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি হতে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তান এবং ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৫ ফুট ২ ইঞ্চি। শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের কোটার ক্ষেত্রে বিধি অনুসৃত হবে।

মেধা ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটার ক্ষেত্রে বুকের মাপ স্বাভাবিক অবস্থায় ৩১ ইঞ্চি ও সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩৩ ইঞ্চি। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের কোটার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি ও সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩১ ইঞ্চি। দৃষ্টিশক্তি ৬/৬।

আবেদন ফি: ফরম পূরণ করার পর যোগ্য প্রার্থী একটি ইউজার আইডি পাবেন। সেই আইডিতে আবেদন ফরম পূরণের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যেকোনো টেলিটক প্রিপেইড মোবাইল নম্বর থেকে ৪০ টাকা জমা করতে হবে।

আবেদন করার সময়কাল ১ জুলাই সকাল ১০টা থেকে ২৪ জুলাই রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত।

নিম্নোক্ত সময়সূচি অনুযায়ী জেলাগুলো হতে কনস্টেবল পদে প্রার্থী বাছাই চূড়ান্ত করা হবে।

মাগুরা, কিশোরগঞ্জ, রাজশাহী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঝিনাইদহ, নাটোর, নীলফামারী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, গাইবান্ধা, নরসিংদী, মেহেরপুর, ফরিদপুর, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও খুলনা জেলায় শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও ফিজিক্যাল এন্ডিউরেন্স টেস্ট যথাক্রমে ১০, ১১ ও ১২ আগস্ট সকাল ৮টায়; লিখিত পরীক্ষা ২৩ আগস্ট সকাল ১০টায় এবং মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা ৩১ আগস্ট সকাল ১০টায় নেওয়া হবে ।

সাচিপুর, নওগাঁ, পঞ্চগড়, পটুয়াখালী, নরসিংদী, নেত্রকোণা, ঢাকা, লক্ষ্মীপুর, গোপালগঞ্জ, কক্সবাজার, দিনাজপুর, সিরাজগঞ্জ ও সিলেট শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও ফিজিক্যাল এন্ডিউরেন্স টেস্ট যথাক্রমে ১৩, ১৪ ও ১৭ আগস্ট সকাল ৮টায়; লিখিত পরীক্ষা ২৫ আগস্ট সকাল ১০টায় এবং মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা ৩১ আগস্ট সকাল ১০টায় হবে।

রাজবাড়ী, কুড়িগ্রাম, মাদারীপুর, মেহেরপুর, মাটিরাঙ্গা, মানিকগঞ্জ, গাইবান্ধা, শেরপুর, ভোলা, বগুড়া, ময়মনসিংহ, ঝালকাঠি, বান্দরবান, নড়াইল, পাবনা ও বরগুনা শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও ফিজিক্যাল এন্ডিউরেন্স টেস্ট যথাক্রমে ১৭, ১৮ ও ১৯ আগস্ট সকাল ৮টায়; লিখিত পরীক্ষা ৩০ আগস্ট সকাল ১০টায় এবং মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা হবে ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায়।

শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, চাঁদপুর, ঠাকুরগাঁও, পাবনা, সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, নওগাঁ, পিরোজপুর ও চুয়াডাঙ্গা শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও ফিজিক্যাল এন্ডিউরেন্স টেস্ট যথাক্রমে ২০, ২১ ও ২২ আগস্ট, সকাল ৮টায়; লিখিত পরীক্ষা ৩১ আগস্ট সকাল ১০টায়; এবং মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা ৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত হবে।


জলবায়ু অভিযোজনে তরুণদের সম্পৃক্ত করতে একসঙ্গে কাজ করবে পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও ইউনিসেফ বাংলাদেশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, জলবায়ু অভিযোজন কার্যক্রমে জবাবদিহিতা, সমন্বয় ও তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন অবকাঠামো ও পানি সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পরিবীক্ষণ ব্যবস্থায় তরুণ প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। একই সঙ্গে পয়:নিষ্কাশন ও চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ইনসিনারেশনের বিকল্প হিসেবে উন্নত প্রযুক্তির মতো নিরাপদ ও ব্যবহারিক সমাধান গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

১ জুলাই বাংলাদেশ সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে ইউনিসেফ বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রানা ফ্লাওয়ার্স-এর নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে শিক্ষা, সামাজিক খাত ও তরুণদের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় যৌথ উদ্যোগ জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

বৈঠকে রানা ফ্লাওয়ার্স শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব—যেমন বন্যা, অপুষ্টি ও শিক্ষাব্যবস্থার ব্যাহত হওয়া—উল্লেখ করে বলেন, ইউনিসেফ তরুণদের জলবায়ু সমাধানের কেন্দ্রবিন্দুতে রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বিভিন্ন জেলায় তরুণদের নিয়ে পরামর্শ সভার পরিসর বাড়ানোর প্রস্তাব দেন এবং নিয়মিতভাবে তরুণদের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগের জন্য একটি কাঠামোগত ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

পরিবেশ সচেতনতা তৈরির অংশ হিসেবে ইউনিসেফ একটি যৌথ ডকুমেন্টারি সিরিজ নির্মাণের প্রস্তাব দেয়, যেখানে শিশুদের পরিবেশবান্ধব বার্তা স্থান পাবে। উপদেষ্টা এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটি বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

বৈঠকে ইউনিসেফ ও মন্ত্রণালয় যৌথভাবে পরিবেশ শিক্ষাভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা ও স্থানীয় পর্যায়ে জলবায়ু উদ্যোগ পরিচালনার ব্যাপারে একমত পোষণ করে। পরিকল্পনায় পুনর্ব্যবহার, বর্জ্য পৃথকীকরণ এবং শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে জরুরি প্রস্তুতির কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ, ইউনিসেফ বাংলাদেশের চিফ অব ওয়াশ পিটার জর্জ এল. ম্যাস, চিফ অব ফিল্ড সার্ভিসেস ফ্রাঙ্কো গার্সিয়া এবং প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট (জলবায়ু) ভ্যালেন্টিনা স্পিনেডি।

পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও ইউনিসেফ উভয় পক্ষই জলবায়ুবান্ধব নেতৃত্ব গড়ে তুলতে ও দেশের টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও জোরদারের আশাবাদ ব্যক্ত করে।


হোলি আর্টিজান হামলার ৯ বছর: স্মৃতিতে রক্তাক্ত গুলশান 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

রাজধানীর গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারিতে সংঘটিত ভয়াবহ জঙ্গি হামলার নয় বছর পূর্ণ হল আজ।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে রাজধানীর গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস হামলা চালায় একদল সশস্ত্র জঙ্গি। সেখানে তারা দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে। পরে কুপিয়ে ও গুলি করে ২২ জনকে হত্যা করে। নিহতদের মধ্যে ইতালির নয়, জাপানের সাত, ভারতের এক এবং তিনজন বাংলাদেশি নাগরিক।

অন্যদিকে জিম্মিদের মুক্ত করতে অভিযান পরিচালনার সময় বোমা হামলায় নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা। তারা হলেন বনানী থানার তৎকালীন ওসি সালাহউদ্দিন খান এবং ডিবির সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম।

ওই ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় মামলা করেন ওই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার দাস। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।

মামলার বিচার শেষে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ‘নব্য জেএমবির’ সাত সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। এরপর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শুরু হয় হাইকোর্টে। শুনানি শেষে ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন।

হাইকোর্টের রায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র‌্যাশ, হাদিসুর রহমান, আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন ও শরিফুল ইসলাম খালেদ।

নয় বছর আগে রাজধানীর গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামিকে কেন আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তা হাইকোর্ট গত ১৭ জুন প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে উল্লেখ করেছেন।

সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ২২৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকলেও এই সাত আপিলকারী ষড়যন্ত্র ও ঘটনায় সহায়তা করেছেন, যা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। ষড়যন্ত্র ও ঘটনায় (জঙ্গি হামলা) সহায়তার কারণে সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯-এর ধারা ৬ এর ১ উপধারা (ক) (আ) দফায় বর্ণিত অপরাধে তারা দোষী। কিন্তু সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট ধারা-উপধারার সঠিক উপলব্ধি না করে আপিলকারীদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন, যা সঠিক ও গ্রহণযোগ্য নয়। যে কারণে উক্ত রায়টি হস্তক্ষেপযোগ্য।’

এই মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণ, আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, উভয় পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্যের পর্যালোচনা তুলে ধরে রায়ে বলা হয়েছে, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে গণ্য করে, বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে দণ্ডিতদের শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হল। তবে হত্যাকাণ্ডের নির্মমতা, নৃশংসতা, ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে সন্ত্রাসীদের সামগ্রিক নিষ্ঠুর আচরণ এবং এ ঘটনায় বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়া বিবেচনায় নিয়ে আসামিদের প্রত্যেককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে বলে মনে করি।

এছাড়া হাইকোর্টেন রায়ে বলা হয়, ‘বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ রদ ও রহিত করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬(২)(আ) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাঁদের প্রত্যেককে (সাত আসামি) আমৃত্যু কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো পাঁচ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হল।’

কি ঘটেছিল সেদিন?

২০১৬ সালের ১ জুলাই, দিনটি ছিল শুক্রবার। রাত পৌনে ৯টার দিকে খবর পাওয়া যায়, রাজধানীর গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের হোলি আর্টিজান বেকারিতে ‘সন্ত্রাসীদের সঙ্গে’ পুলিশের গোলাগুলি হচ্ছে। ‘নব্য জেএমবি’র পাঁচ জঙ্গি বেকারিতে ঢুকে নির্বিচারে ১৮ জন বিদেশি নাগরিকসহ ২২ জনকে হত্যা করে।

পরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হন পাঁচ জঙ্গি। এ ঘটনা দেশ-বিদেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। দেশের ইতিহাসে এটি অন্যতম নৃশংস হামলার ঘটনা।

সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত জঙ্গিরা হলেন, মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ওরফে মামুন, নিবরাস ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল।

এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন ‘নব্য জেএমবি’র আরো আট সদস্য। তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল হাসনাত রেজা করিমও অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পান।


জুলাই অভ্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন প্রধান উপদেষ্টার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

জুলাই অভ্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচি উদ্বোধন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।


সাত দিনের রিমান্ডে সাবেক এমপি ফয়সাল বিপ্লব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

মুন্সীগঞ্জে সজল হত্যা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ফয়সাল বিপ্লবের জামিন নামঞ্জুর করে তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকালে পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে শুনানি শেষে মুন্সীগঞ্জের ১ নম্বর আমলী আদালতের বিচারক আশিকুর রহমান এই আদেশ দেন।

এদিন মব এড়াতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে সকাল সাড়ে ৮টায় আদালতে আনা হয় তাকে। আদালতে তোলা হয় ৯টা ৫ মিনিটে।

আসামির পক্ষে জামিন ও রিমান্ড নামঞ্জুরের আবদেন নিয়ে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট শাহিন মো. আমানুল্লাহ ও অ্যাডভোকেট হাসান মৃধা। আর রাষ্ট্রপক্ষে আদালত পরিদর্শক ছাড়াও সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম ও সহকারী কৌঁসুলি (এপিপি) নূর হোসেন রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। প্রায় ২০ মিনিট ধরে শুনানি হয়। এরপর তাকে ৭ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন আদালত।

আদাশের পর তাকে সরাসরি জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। তার কিছুক্ষণ পরেই আদালত এলাকায় তার ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভে অংশ নেয় অর্ধ সহ্রাধিক মানুষ। ছাত্র-জনতা ব্যানারে এই বিক্ষোভ থেকে মুন্সীগঞ্জে ৪ আগস্টের সহিংসতার জন্য তাকে দায়ী করা হয়। বিক্ষোভ থেকে ফয়সাল বিপ্লবের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেওয়া হয়।

বিক্ষোভকারীরা বলেন, সাধারণত সকাল ১০টার আগে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয় না। কিন্তু আজ এত আগে তাকে আদালতে আনা হবে, তা তারা জানতেন না।

গত ২২ জুন রাতে রাজধানীর মনিপুরী পাড়া থেকে গ্রেপ্তার হন মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্য। পরে ২৩ জুন তাকে ঢাকার আদালতে তোলা হয়। এরপর ৩০ জুন (সোমবার) ফয়সাল বিপ্লবকে মুন্সীগঞ্জ কারাগারে নেওয়া হয়।

মুন্সীগঞ্জে গত বছরের ৪ আগস্টের সহিংসতায় তিনজন নিহত হন। এই তিনটি হত্যা মামলা ও আরও দুইটি হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল বিপ্লব।


ঢাকায় হালকা বৃষ্টি ও ৬ জেলায় ঝড়ের পূর্বাভাস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

গত দুদিন ধরে ঢাকায় বৃষ্টি তেমন না হলেও বাতাসের চাপের আধিক্য ছিল বেশ। আজও সেই চাপ অব্যাহত রয়েছে। সেই সঙ্গে সকাল থেকেই চলছে মেঘ-রোদের খেলা। তবে দুপুরের মধ্যে হালকা বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুর ১টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলের আকাশ এই সময়ে আংশিক থেকে সাময়িকভাবে মেঘলা থাকতে পারে।

সেই সঙ্গে দক্ষিণ অথবা পূর্ব-দক্ষিণ দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। সেই সঙ্গে ঝরতে পারে হালকা বৃষ্টি।

গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৩.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় দিনের তাপমাত্রা আজ অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

নদীবন্দরে ১ নম্বর সংকেত

এদিকে, আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে পূর্ব অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।


কুকি-চিনের উত্থান বনাম বান্দরবানের পর্যটন: ক্ষতির পাহাড়

আপডেটেড ১ জুলাই, ২০২৫ ১০:৩৭
ইউএনবি

মেঘ, পাহাড়, নদী ও ঝর্ণার মিলনে অপরূপ জেলা বান্দরবান। এসব নান্দনিক দৃশ্যে চোখ জুড়াতে সারা দেশ থেকে পর্যটক আসেন এখানে। কিন্তু পাহাড়ে নতুন সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) উত্থানের কারণে নিরাপত্তা শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে দীর্ঘদিন কয়েক দফায় পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ রাখতে হয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পর্যটন শিল্প-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে।

দেশের তিনটি পার্বত্য জেলার মধ্যে একটি বান্দরবান। জেলাটির দক্ষিণ-পশ্চিমে কক্সবাজার, উত্তর-পশ্চিমে চট্টগ্রাম জেলা, উত্তরে রাঙামাটি ও পূর্বে মিয়ানমার।

নিষেধাজ্ঞার টাইমলাইন

২০২০ থেকে ২১ সাল পর্যন্ত কোভিড-১৯ মহামারির ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আগেই কেএনএফের তৎপরতার কারণে ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর থেকে রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে স্থানীয় প্রশাসন।

এরপর ধারাবাহিকভাবে থানচি ও আলীকদম উপজেলাও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে দফায় দফায় উপজেলাভিত্তিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রশাসন। নিষেধাজ্ঞা বাড়ানোও হয়েছে কয়েক দফায়।

এরপর ২০২৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল। তবে, সে বছরের ১৬ মার্চ সে নিষেধাজ্ঞা আবারও জারি করা হয়। পরে, আবারও ২০২৪ সালের ৮ অক্টোবর বান্দরবান ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এরপর ৬ নভেম্বর জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে চার উপজেলায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও তিন উপজেলা—রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচিতে নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা হয়।

চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি রোয়াংছড়ির দেবতাখুম থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় পর্যটকেরা বর্তমানে সেখানে ভ্রমণ করতে পারছেন। ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ থেকে দুই বছরেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর চলতি ৬ জুন থেকে রুমায় বগা লেক পর্যন্ত এবং থানচিতে তুমাতুঙ্গি ও তিন্দু পর্যন্ত ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে, নির্দেশিত স্থানের বাইরে কোথাও যেতে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে।

কেএনএফের উত্থান যেভাবে

বান্দরবানের রুমা উপজেলায় কেএনএফ সংগঠনটি গড়ে উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী নাথান বম সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো এমন তথ্যই দিয়েছে।

প্রথমে ২০১২ সালে কুকি-চিন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন্স (কেএনডিও) নামে সংগঠন করেন তিনি। পরে ২০১৮ সালে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামে সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ করে, যদিও সংগঠনটির লোগোতে প্রতিষ্ঠাকাল উল্লেখ করা আছে ২০০৮ সাল।

শুরুতে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমার জেএসএস ও ইউপিডিএফ-এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রতিবাদ করত তারা। এ ছাড়া বম, লুসাই, পাংখো, খিয়াংসহ পিছিয়ে পড়া নৃগোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে পার্বত্য অঞ্চলের চাকমা ও মারমাদের ব্যাপক বৈষম্যের প্রতিবাদ করছিল সংগঠনটি। তবে, কিছুদিন পর কেএনএফ আন্ডার গ্রাউন্ডে চলে যায়।

একপর্যায়ে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেই সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করে তারা। রাঙামাটি ও বান্দরবান অঞ্চলের ছয়টি জাতিগোষ্ঠী—বম, পাংখোয়া, লুসাই, খিয়াং, ম্রো ও খুমিদের প্রতিনিধিত্ব করছে বলে নিজেদের ফেসবুক পেজে দাবি করে তারা।

গোষ্ঠীটি বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা ও আলীকদম এবং রাঙামাটির বাঘাইছড়ি, বরকল, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি—মোট ৯টি উপজেলা নিয়ে আলাদা রাজ্যের দাবি করে। এমনকি, কল্পিত রাজ্যটির মানচিত্রও তাদের পেজে আপলোড দেয় তারা।

কেএনএফের দাবি, তাদের সামরিক শাখার শতাধিক সদস্য গেরিলা প্রশিক্ষণের জন্য মিয়ানমারের কাচিন প্রদেশে পাড়ি জমান বছর তিনেক আগে। ২০২১ সালে প্রশিক্ষণ শেষে একটি দল ফিরে এসে আত্মগোপনে চলে যায়। তবে তখন হয়তো ১৫ থেকে ২০ জনের মতো সদস্য ছিল বলে জানা গেছে। পরবর্তীতে তাদের সংখ্যা বাড়তে থাকে।

কেএনএফ শুরুতে তাদের ফেসবুক পেজে সরকারের কোনো দপ্তর বা প্রতিষ্ঠানের ওপর নয়, বরং সব ক্ষোভ আঞ্চলিক পরিষদ, জেএসএস ও চাকমাদের ওপর চাপায়। এমনকি, বিভিন্ন মহল্লায় হামলা চালিয়ে চাকমাদের বিরুদ্ধে ‘প্রতিশোধ’ নেওয়ার নানা বার্তা দেয় তারা। এ সময়, তারা রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়নের একটি ত্রিপুরা গ্রামে দুজন জুম চাষিকে হত্যাও করে।

শুরুতে পাহাড়ে নতুন রাজ্যের দাবি করলেও বর্তমানে সেই অবস্থান থেকে সরে এসে স্বায়ত্বশাসন চাচ্ছে কেএনএফ। তবে, জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), আঞ্চলিক পরিষদ ও চাকমাবিদ্বেষের ক্ষেত্রে তাদের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তাদের মতে, পাহাড়ে ‘চাকমা কর্তৃত্ব’ চলমান রয়েছে।

কেএনএফের তৎপরতা

ফেসবুকে পেজে ঘোষণা দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল কেএনএফ। এরপর থেকে চাঁদাবাজি ও গুম-খুন অপহরণের মাধ্যমে পাহাড়কে অস্থিতিশীল করে তোলার অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে।

একপর্যায়ে অভিযোগ পাওয়া যায়, দুর্গম পাহাড়ে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) গোপন আস্তানায় প্রশিক্ষণশিবির স্থাপন করেছে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কীয়ার জঙ্গিরা।

এই তথ্যের ভিত্তিতে ২০২২ সালের ৩ অক্টোবর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যৌথ অভিযান শুরু হয়। এরপর একই বছরের ১৭ অক্টোবর থেকে পর্যটক ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

পরে সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসার কথা থাকলেও ২০২৪ সালে বান্দরবানের দুই উপজেলায় ১৭ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই ব্যাংকের তিনটি শাখায় ডাকাতি করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।

আত্মপ্রকাশের পর থেকে অন্তত নয়টি বড় ধরনের সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটিয়েছে কেএনএফ। একই বছর পাহাড়ের আরেক সশস্ত্র গোষ্ঠী ইউপিডিএফের (গণতান্ত্রিক) সঙ্গে সংঘর্ষে রোয়াংছড়ি উপজেলার খামতাংপাড়া এলাকায় ৮ জন ও রুমা উপজেলার মুয়ালপিপাড়া একজন নিহত হন।

এ ছাড়া, ২০২৩ সালের ৮ মে রোয়াংছড়ি উপজেলা পাইংখিয়ংপাড়া এলাকায় আওয়ামী লীগের একজন নেতাসহ বম জনগোষ্ঠীর তিনজন এবং ২০২৩ সালের ২২ মার্চ একই উপজেলার রামথারপাড়ায় থংচুল বম নামের এক কারবারিকে (পাড়াপ্রধান) গুলি করে হত্যা করা হয়।

২০২২ সালের ২১ জুন রাঙামাটির বিলাইছড়ির বড়থলি ইউনিয়নের সাইজাম পাড়ায় তিন ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে তারা।

জানা যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযানের সময় কেএনএফের অনেক সদস্য সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের মিজোরামে চলে যান। এতে বম জাতিগোষ্ঠীর সাধারণ মানুষ পড়েন বিপাকে। এর সুযোগ নেয় কেএনএফ। তখন নতুন করে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর যুবকদের তারা দলে ভেড়ায় বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

২০২৩ সালে পাহাড়ে যৌথ অভিযানের সময় কেএনএফের ২ সদস্য ও কেএনএফের গুলিতে সশস্ত্র গ্রুপ মগ পার্টির ৩ জন নিহত হন। একই বছরের ১২ মার্চ দুপুরে কেএনএফের সশস্ত্র সদস্যদের গুলিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান এবং দুজন সেনা সদস্য আহত হন। তার একদিন আগে থানচি থেকে কেএনএফ ১২ জন নির্মাণ শ্রমিককে অপহরণ করে। তাদের মধ্যে একজন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হন এবং বাকিদের জিম্মি করে রাখা হয়।

২০২৪ সালের ৩ ও ৪ এপ্রিল রুমা ও থানচিতে তিনটি ব্যাংকে ডাকাতি করে কেএনএফ। তারপর ৬ এপ্রিল থেকে সন্ত্রাস দমনে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান শুরু করে।

বান্দরবান পুলিশ সুপার কার্যালয়ের তথ্য অনুসারে, কেএনএফের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ২৮টিরও বেশি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে রুমা থানায় ১৮টি, থানচিতে ৬টি, রোয়াংছড়িতে ৩টি ও সদর থানায় একটি মামলা হয়েছে।

এ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে রুমায় ১১ জন, রোয়াংছড়িতে ৫ জন, বান্দরবান সদরে ২ জন ও থানচিতে ১ জনসহ মোট ১৯ জন কেএনএফ সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া, পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে এখন পর্যন্ত ২৬টি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।

কয়েক বছরেও ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা সম্ভব না!

বান্দরবান হোটেল-মোটেল মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবান সদরে ৭৪টিসহ মোট দেড় শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট-কটেজ রয়েছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে দীর্ঘদিন বান্দরবানে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকায় ক্ষতির মুখে পড়েছে সেখানকার পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো।

বান্দরবান হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘করোনা ও এরপর পাহাড়ের অভ্যন্তরীণ কিছু গ্রুপ, বিশেষ করে কেএনএফের কারণে আমাদের অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। আমরা কয়েক বছরেও এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারব না।’

তিনি বলেন, ‘তবে, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে পর্যটক আসতে না পারায় এবারের কোরবানি ছুটিতে প্রচুর পর্যটক এসেছে।’

কুকি-চিন নিয়ে নিরাপত্তা হুমকি নেই জানিয়ে পর্যটকদের বান্দরবান ভ্রমণে যাওয়ার আমন্ত্রণও জানিয়েছেন এ ব্যবসায়ী।

বর্তমান পরিস্থিতি

চলতি বছরের ২ জুন কেএনএফের ইউনিফর্ম তৈরির জন্য কাপড় সরবরাহের অভিযোগে চট্টগ্রামে ওয়েল কম্পোজিট নিট নামের একটি ফেব্রিক্স কারখানায় অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরিকুল ইসলামসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এর আগে, গত ১৭ মে নয়াহাটের রিংভো অ্যাপারেলস থেকে ২০ হাজার ৩০০ পিস এবং পরের দিন একটি গোডাউন থেকে ১১ হাজার ৭৮৫ পিস কেএনএফ ইউনিফর্ম জব্দ করা হয়। সর্বশেষ ২৮ মে পাহাড়তলীর নূর ফ্যাশন কারখানা থেকে আরও ১৫ হাজার পিস ইউনিফর্ম জব্দ করা হয়।

এ পর্যন্ত কেএনএফের ৪৭ হাজারের বেশি ইউনিফর্ম জব্দ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত এক মাসে কেএনএফের এক হাজার ৯৭৯ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তারদের সংখ্যা ১৪ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ২৬ মে সেনাসদরে আয়োজিত বিশেষ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়।

বান্দরবানে পর্যটন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, ‘দর্শনীয় স্থানগুলোতে এখন কোনো পর্যটন নিষেধাজ্ঞা নেই। যেসব জায়গা পর্যটকদের জন্য খোলা হয়েছে, সেসব জায়গায় নিরাপত্তাজনিত কোনো শঙ্কাও নেই।’

সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যৌথ অভিযান এখনো চলমান রয়েছে।’


নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করতে আগ্রহী চীন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর ও আন্তরিকভাবে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে চীন। সোমবার বিকালে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘চীন আশা প্রকাশ করেছে যে, তারা বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে আরও বেশি আন্তরিকতা, নিষ্ঠা, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে কাজ করবে।’

ফখরুলের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের বিএনপির প্রতিনিধিদলের সাম্প্রতিক চীন সফরের পর বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

সফর নিয়ে ফখরুল বলেন, বিএনপি দল চীনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেছে। বলেন, ‘আমরা এই প্রকল্প সম্পর্কে আমাদের চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেছি এবং তারা ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছে।’

তিনি বলেন, চীনা পক্ষ এখনো তিস্তা নদীর পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। ‘ভবিষ্যতে যদি আমাদের সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পাই এবং তারা(চীন) যদি এই প্রকল্পের প্রস্তাব দেয়—তাহলে আমরা মনে করি আমরা এটি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করব।’

ফখরুল বলেন, বিএনপি প্রতিনিধিদল মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ, স্বেচ্ছায় এবং মর্যাদাপূর্ণভাবে তাদের মাতৃভূমিতে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে চীনকে আরও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছে।

তিনি বলেন, চীনা কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার সরকারকে রাজি করানোর জন্য তাদের আন্তরিক প্রচেষ্টার আশ্বাস দিয়েছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, তাদের সফর দুই ‘ভ্রাতৃপ্রতিম’ দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উন্নত ও জোরদার করার জন্য একটি পথ খুলে দিয়েছে—ভবিষ্যতে এই বন্ধন আরও দৃঢ় হবে বলেও তিনি আশা করেন।

এর আগে ২২ জুন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) আমন্ত্রণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের বিএনপির প্রতিনিধিদল পাঁচ দিনের জন্য চীন সফর করে।

বিএনপির প্রতিনিধিদলের অন্য আট সদস্য ছিলেন—বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বেগম সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন, ইসমাইল জবিউল্লাহ, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, দলের মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ড. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার।

সফরকালে ফখরুল বলেন, বিএনপির প্রতিনিধিদল সিপিসির জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং দ্বিপক্ষীয় বিষয় এবং সিপিসি ও বিএনপির মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন।


প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো আন্তোনিও রুবিও।

আজ সোমবার (৩০ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তারা এই ফোনালাপ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

তিনি জানান, অধ্যাপক ইউনূস ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ১৫ মিনিট ধরে ফোনালাপ করেন।

এসময় তারা অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ, আন্তরিক ও গঠনমূলক আলোচনা করেন, যা দুদেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে তুলে ধরে।


বায়ুদূষণ রোধে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

দেশের বায়ুদূষণ রোধে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

সোমবার (৩০ জুন) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে চীনের একদল বায়ুদূষণ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা জানান, শীত আসার আগেই রাজধানীর সব কাঁচা ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার সংস্কারকাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ধুলা দূষণ কমাতে রাস্তায় মাটি ঢেকে দেওয়া ও পানি ছিটানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া ‘জিরো সয়েল’ নীতি কার্যকর, মাটি শক্তকরণ ও পানি ছিটানোর গাড়ি ব্যবহারের পরিকল্পনাও রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘শহুরে বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ পুরনো ও উচ্চমাত্রার ধোঁয়া নির্গমনকারী যানবাহন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) পুরনো যানবাহন অপসারণ ও নতুন ২৫০টি পরিবেশবান্ধব যানবাহন যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ ছাড়া, নির্গমন মান বজায় রাখতে ১০টি স্বয়ংক্রিয় যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র স্থাপন করবে বিআরটিএ।’

দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের লক্ষ্যে চীনা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান রিজওয়ানা হাসান।

তিনি বলেন, ‘সঠিক তথ্য ও বিশ্লেষণ ছাড়া কার্যকর নীতিমালা তৈরি সম্ভব নয়। এজন্য একটি উন্নত বায়ু নির্গমন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা স্থাপন, বৈশ্বিক মান অনুসারে নির্গমন মান উন্নয়ন, স্যানিটারি ল্যান্ডফিল ও বর্জ্য ইনসিনারেশন প্ল্যান্ট চালু ও রান্নার জন্য এলপিজি ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনা গ্রহণে কর প্রণোদনাও বিবেচনায় রয়েছে।’

উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রকল্পের আওতায় উচ্চ দূষণ সৃষ্টিকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানে অব্যাহত নির্গমন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা চালু করবে পরিবেশ অধিদপ্তর এবং দেশজুড়ে প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

এদিকে, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) শহরে সড়কে বেড়া বসানো ও ৫০টি বৈদ্যুতিক যানবাহন চালুর মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব পরিবহনব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে।

জাইকা সহায়তাপ্রাপ্ত একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আটটি বাস্তবভিত্তিক বায়ু গুণমান পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে, যা প্রমাণভিত্তিক নীতিনির্ধারণে সহায়ক হবে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি বিইএসটি প্রকল্পও বাস্তবায়িত হবে।

এ সময় চীনা বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা বাংলাদেশের বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ সক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশা প্রকাশ করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘সরকারের উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট—পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করা।’

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব ড. ফাহমিদা খানম, অতিরিক্ত সচিব মো: খায়রুল ইসলাম, নানজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অনুষদের নির্বাহী ডিন অধ্যাপক ইউ ঝাও, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নানজিং-হেলসিঙ্কি ইনস্টিটিউটের উপ-ডিন অধ্যাপক হাইকুন ওয়াং এবং বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞান অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক টেংইউ লিউ, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (বায়ুদূষণ) মো. জিয়াউল হক প্রমুখ।

বৈঠকে জাতীয় নির্গমন ইনভেন্টরি ও রাসায়নিক বিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়, যা দেশের বায়ুদূষণের উৎস চিহ্নিত করে বিজ্ঞানভিত্তিক টার্গেটেড হস্তক্ষেপের ভিত্তি তৈরি করবে।


আওয়ামী লীগ সমর্থকরা ‘জুলাই গ্যাং কালচার’ বলে ভারতীয় ভিডিও ছড়াচ্ছে: প্রেস উইং

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সমর্থকরা একটি পুরোনো ভারতীয় ভিডিয়ো ভাইরাল করে ‘জুলাই গ্যাং কালচার’ নামে মিথ্যাচার করছে।

রোববার রাতে ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আওয়ামী লীগ সমর্থকরা দু’টি কিশোর দলের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষের একটি ভিডিয়ো সম্প্রতি ছড়িয়ে দিয়ে এটিকে ‘জুলাই গ্যাং কালচার’ বলে মিথ্যা দাবি করছে।’

ভিডিওটিতে দেখা যায়, স্কুলের পোশাক পরিহিত কিছু ছাত্র একে অপরকে চড়-থাপ্পড় দিচ্ছে ও লাথি মারছে।

বিবৃতিতে আরো জানানো হয়, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, এটি ভারতের কেরালায় ছাত্রদের দু’টি গ্রুপের মারামারির দৃশ্য, বাংলাদেশের নয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘ডিবিসি হিন্দি’ নামে একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সালে এই ভিডিওটি পোস্ট করা হয়, এর শিরোনামে লেখা ছিল, ‘কেরালার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক মারামারি ভাইরাল’।

ভিডিওর বর্ণনায়ও এটি কেরালার ছাত্রদের দু’টি গ্রুপের সংঘর্ষের দৃশ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রেস উইংয়ের মতে, ভিডিওটি নতুন নয়, এটি মূলত ২০২৩ সালের।

একই ভিডিও ভারতের ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস নাও’-এর ওয়েবসাইটেও প্রকাশিত হয়েছে। শিরোনাম ছিল-‘কেরালার রাস্তায় ছাত্রদের হতবাক করা মারামারির ভিডিও ভাইরাল। দেখুন।’

টাইমস নাওয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কেরালার রাস্তায় ছাত্রদের দু’টি পক্ষের সংঘর্ষের একটি হতবাক করা ভিডিও সামনে এসেছে। এতে অন্তত ২০ জন ছাত্র জড়িত ছিল বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে দুইজন গুরুতর আহত হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, সংঘর্ষ চলাকালে ছাত্ররা একে অপরকে চড়-থাপ্পড় ও লাথি মারছে।’

কেরালার ঠিক কোথায় ঘটনাটি ঘটেছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তবে, এটা স্পষ্ট যে এর সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই।

২০২৩ সালের একটি পুরোনো ভিডিও, যেখানে ভারতের কেরালায় ছাত্রদের সংঘর্ষ যাচ্ছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, একে ইন্টারনেটে এমন ভুয়াভাবে ছড়ানো হচ্ছে যেন এটি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ছাত্র সহিংসতার উদাহরণ। এর সঙ্গে ‘জুলাই গ্যাং কালচার’ নাম জুড়ে দেওয়া হয়েছে, যা পুরোপুরি মিথ্যা।


শেরপুরে অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত ২ কোটি টাকার মালামাল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শেরপুর জেলা প্রতিনিধি

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ঝগড়ারচর বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিনটি দোকানের প্রায় দুই কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে।

৩০ জুন সোমবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে।

এতে মুরাদ স্টোর, শিহাব স্টোর ও অনু স্টোরের প্রায় দুই কোটি টাকার মালামাল পুড়ে আগুনে ভস্মীভূত হয়।

দোকান মালিকরা জানান, ভোরে ঘুমের ভেতর জানতে পারেন দোকানে আগুন লেগেছে। খবর পেয়ে দ্রুত দোকানে এসে দেখেন আগুন জ্বলছে। আগুনের তীব্রতা বেশি থাকায় কোন মালামাল বের করতে পারে নাই। পরে শ্রীবরদী ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে শ্রীবরদী ও পার্শ্ববর্তী জামালপুর জেলার বকশিগঞ্জ উপজেলা ফায়ারসার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। মালামাল ও দোকান ঘর সম্পূর্ণ আগুনে ভস্মীভূত হওয়ায় সবকিছু হারিয়ে পথে বসে গেছেন ব্যবসায়ীরা।

শ্রীবরদী ফায়ার সার্ভিস সাব স্টেশন অফিসার আশরাফ হোসেন জানান, সম্ভবত বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুনের সুত্রপাত হয়েছিল। খবর পেয়ে শ্রীবরদী ও বকশীগঞ্জের ফায়ার সার্ভিসে দুটি ইউনিট যৌথভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।


সাত জেলায় ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস, সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সংকেত অব্যাহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি একই এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।

সোমবার (৩০ জুন) আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুকের সই করা আবহাওয়ার সামুদ্রিক সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বার্তায় বলা হয়েছে, লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এর ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

নদীবন্দরে ১ নম্বর সংকেত

এদিকে, আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব কিংবা পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়োহাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

এসব এলাকার নৌবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।


banner close