পৌষের মধ্যভাগের পর পরই দেশজুড়ে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। তাই তো জানুয়ারির শুরুতেই রাজধানী ঢাকাসহ প্রকৃতিতে তীব্র শীতের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রচণ্ড শীতে সাধারণ মানুষের জবুথবু অবস্থা। ঢাকায় দিনভর রোদের দেখা মেলেনি। সকালে খুব শীত অনুভূত হয়েছে। ঘন কুয়াশা আর ঠাণ্ডা বাতাসে শীতের মাত্রা বাড়িয়েছে। দুপুর গড়িয়ে বিকেলে শীতের মাত্রা বাড়ে। সন্ধ্যার পর তা হাড় কাঁপানো শীতে পরিণত হয়। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস হওয়ায় শীতের মধ্যেও মানুষকে ছুটতে দেখা গেছে। শীতে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষকে সবচেয়ে বেশি কষ্ট করতে দেখা যায়। ঢাকায় তাপমাত্রার পারদ গতকাল ১৩ ডিগ্রি পর্যন্ত নেমে আসায় শীতের এত প্রাদুর্ভাব লক্ষণীয় ছিল।
এদিকে শীত সামনে আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। বিশেষ করে আগামী ৭ থেকে ৯ জানুয়ারির মধ্যে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে বলে জানা যায় সংস্থাটির বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা গণমাধ্যমকে বলেন, আগামী দুই-তিন দিন সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যে একটি শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে। তবে সেটা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হবে না।
তিনি বলেন, প্রত্যেকবারেই জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে তাপমাত্রা কমতে থাকে। আমাদের প্রতিবারই কমপক্ষে একটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ আসে। আর তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হলে তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রিতে নেমে যেতে পারে। তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হলেও মাসের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে আগামী ২৫ জানুয়ারির মধ্যে হতে পারে। এই বিষয়টি এ মাসের প্রথম স্পেল শেষ হলে পরিষ্কারভাবে বোঝা যাবে।
গত মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকে হঠাৎ করেই কমতে শুরু করেছে রাজধানীর তাপমাত্রা। একই সঙ্গে হিমেল বাতাসে জবুথবু হয়ে যায় সব। পরদিন বুধবার কনকনে বাতাস বেড়ে যাওয়ায় শীতের অনুভূতি বাড়তে শুরু করে। এর মধ্যে সূর্যের দেখা নেই গত দুদিন। ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের তাপ মাটিতে না আসায় শীত যেন জেঁকে বসেছে।
অন্যদিকে দেশের উত্তরাঞ্চলের মতো দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলেও কনকনে শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। গতকাল সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে, যা বুধবার ছিল ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি।
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, জেলায় গত ১৫ দিন ধরে তাপমাত্রা কিছুটা বেশি থাকলেও নতুন বছরের দ্বিতীয় দিন থেকেই শীতের প্রকোপ বেড়েছে। শৈত্যপ্রবাহের কারণে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে। বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষজনের জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
চলতি মাসে একাধিক তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে
দেশের পশ্চিম, উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে দু-একটি মাঝারি থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে। দেশের অন্যত্র দুই থেকে তিনটি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। আর এ তাপমাত্রা ৬ দশমিক ১ থেকে ৮ হলে তা মাঝারি, তাপমাত্রা ৪ দশমিক ১ থেকে ৬ ডিগ্রি হলে তা তীব্র আর তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে চলে গেলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, জানুয়ারি মাসে দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকতে পারে। তবে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কম থাকার কারণে শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে।
তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ঠিক কোন সময়ে হতে পারে, তা জানতে চাইলে আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, ‘তা এখনই বলা যাচ্ছে না।’
এ মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পশ্চিম, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল ও নদী অববাহিকা এলাকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। অন্য জায়গাগুলোতে হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে।
শীতে কাবু রংপুরের জনজীবন : দৈনিক বাংলার রংপুর অফিস জানিয়েছে, উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা রংপুরে জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশা ও ঠাণ্ডায় গত দু’দিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে না। ফলে খেটে-খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর ভিড়। শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে পড়েছে তিস্তা পাড়ের হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাইরে বের হচ্ছেন না। শীতের দাপটে গ্রামাঞ্চলের অনেকেই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
দিনে-রাতে ঘন কুয়াশা এবং হিমেল হাওয়ায় জনজীবন কাহিল হয়ে পড়েছে। কুয়াশা ও পশ্চিমা বাতাসের কারণে বোরো বীজতলা ও আলুর আবাদ নিয়ে কৃষকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। সেই সঙ্গে কনকনে ঠাণ্ডার কারণে দরিদ্র শীতার্ত মানুষের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়েছে।
গতকাল সকালে রংপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কাছাকাছি চলে আসায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। বিরূপ আবহাওয়ায় ফসলের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কুড়িগ্রামে কুয়াশার রাজত্ব! : জেলার প্রতিনিধির দেওয়া তথ্যমতে, শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে সেখানকার মানুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও শীতের তীব্রতা একটুও কমেনি। কুয়াশার সঙ্গে হিমেল বাতাসের দাপটে শীতকষ্টে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। গত দুদিন ধরে দেখা মিলছে না সূর্যেরও।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। এর আগে বুধবার তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
কনকনে ঠাণ্ডায় সবচেয়ে বেশি ভুগছেন হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না, কারণ দিনের বেলা সূর্যের কোনো উত্তাপ নেই এবং হিমেল বাতাসের কারণে ঠাণ্ডা আরও তীব্র অনুভূত হচ্ছে। এদিকে শীত নিবারনে জেলার ৯ উপজেলায় ৪৯ লাখ টাকা ও ১২ হাজার কম্বল বরাদ্দ দিয়েছে জেলা প্রশাসন, তা বিতরণ চলমান বলে জানা যায়।
তীব্র শীতে বিপর্যস্ত পঞ্চগড়
প্রতিনিধির দেওয়া তথ্যমতে, কুয়াশার আবরণে ঢাকা পড়েছে উত্তরের প্রান্তিক জেলা পঞ্চগড়। শৈত্যপ্রবাহ না হলেও উত্তরের ঝিরঝির হিম বাতাস বাড়িয়ে দিয়েছে শীতের প্রকোপ। তিন দিন ধরে ভোর থেকে সূর্যের দেখা মিলছে না এ জেলায়। ফলে তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এখানকার জনপদ।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় রেকর্ড হয়েছে ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। এর আগে ভোর ৬টায় রেকর্ড করা হয় ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল দিনের তাপমাত্রায় রেকর্ড হয়েছিল ১৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের তাপমাত্রা কমে আসা ও বাতাসের আর্দ্রতা ৯৯ শতাংশ হওয়ায় শীতের প্রকোপ বেড়েছে বলে জানিয়েছে জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়ার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কার্যালয়।
সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গত দিনের মতো কুয়াশার চাদরে ঢাকা রয়েছে উত্তরের এ জেলা। হিমেল শীতল হাওয়া বয়ে যাওয়ার কারণে শৈত্যপ্রবাহ না হলেও বাতাসে ঝরাচ্ছে কনকনে তীব্র শীত।
নওগাঁয় বেড়েছে শীতের তীব্রতা : প্রতিনিধি জানায়, নওগাঁয় বেড়েছে শীতের তীব্রতা। দিন যতই যাচ্ছে বাড়ছে শীত। তাপমাত্রার পারদ ওঠানামা করছে ১০ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। গত ২ দিনের হিমেল বাতাস শীতকে বাড়িয়ে তুলেছে কয়েক গুণ। ঠিকমতো দেখা মিলছে না সূর্যের।
নওগাঁর বদলগাছী কৃষি ও আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্য মতে গতকাল সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তাপমাত্রা কমে আসার সঙ্গে আজ হালকা কুয়াশা এবং আকাশ মেঘলা থাকার পাশাপাশি হিমেল বাতাস বয়ে যাওয়ায় শীতের প্রকোপ বেশি। মেঘ এবং হালকা কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে চারপাশ। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে ঠাণ্ডা বাতাস এবং কুয়াশায় ছেয়ে যাচ্ছে চারপাশ। কনকনে শীতে বিপর্যস্ত হচ্ছে জনজীবন।
সিরাজগঞ্জে ঘন কুয়াশা : সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, গত দুই দিন ধরে ঘনকুয়াশা ও কনকনে ঠাণ্ডায় উত্তরের জনপদ সিরাজগঞ্জে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় কিছুটা বিপাকে পড়েছেন এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাচ্ছে চারপাশ। ফলে ঘনকুয়াশা ও কনকনে ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে যমুনা পাড়ের জেলার মানুষ।
গতকাল সকাল ৯টায় সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলিসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। অন্যদিকে তাড়াশ আবহাওয়া অধিদপ্তর রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে শীতের তীব্রতা আরও বেশি যার কারণে কনকনে ঠাণ্ডায় তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শ্রমজীবী ও ছিন্নমূল মানুষ। অনেকেই কাজে বের হতে পারছে না। সরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম শুরু করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য। বেসরকারি পক্ষ থেকে এখনো তেমন শীতবস্ত্র কার্যক্রম শুরু হয়নি। ফলে হতদরিদ্র মানুষের মধ্যে গরম কাপড়ের অভাব দেখা দিয়েছে। অনেকেই আবার গরম কাপড় কেনার জন্য পুরোনো কাপড়ের দোকানে ছুটছেন।
রৌমারীতে সূর্যের দেখা নেই দুদিন : রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে সেখানকার মানুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেলেও কমেনি শীতের তীব্রতা। কুয়াশার সঙ্গে হিমেল বাতাসে শীতকষ্টে পড়েছে মানুষজন। তবে গত দুদিন ধরে দেখা মিলছে না সূর্যেরও। গতকাল সকাল ৯টায় এ উপজেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অবহাওয়া অফিস।
কনেকনে ঠাণ্ডায় শীতকষ্টে পড়েছে এ উপজেলার হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও স্বল্প আয়ের শ্রমিজীবী মানুষ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন না। দিনের বেলা সূর্যের উত্তাপ না থাকায় হিমেল বাতাসে কনকনে ঠাণ্ডায় জবুথবু হয়ে পড়েছে এ উপজেলা।
দুদিন ধরে সূর্যের দেখা নেই বরিশালে : বরিশাল ব্যুরোর দেওয়া তথ্যমতে, গত দুইদিন ধরে বরিশালে সূর্যের দেখা নেই। ফলে মেঘলা আকাশ এবং ঘনকুয়াশায় শীতের তাপমাত্রাও বৃদ্ধে পেয়েছে। আগামী ২-৩ দিনে বরিশাল অঞ্চলে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হতে দেখা যায়নি মানুষদের। রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যে নেমে আসে অস্থিরতা। তবে দুপুরের পর ভিড় দেখা যায় ফুটপাতের গরম পোশাকের দোকানে।
বরিশাল আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক মাজহারুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত দুদিন ধরেই বরিশালে সূর্যের দেখা নেই। গতকাল সকাল ৯টা পর্যন্ত বরিশালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া বিকেল ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
টাঙ্গাইলে জনজীবন বিপর্যস্ত : টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানায়, জেলায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা, সেই সাথে উত্তরের কনকনে হিমেল হাওয়ায় জবুথবু হয়ে পড়েছে জেলার জনজীবন। বিশেষ করে জেলার পশ্চিমের চরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বের পাহাড়ি এলাকায় সবচেয়ে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। ফলে নিম্ন-আয়ের মানুষ, গৃহহীন ভাসমান মানুষ ও কৃষকরা সমস্যায় পড়ছে সবচেয়ে বেশি।
টাঙ্গাইল আবহাওয়া অফিসের সূত্রে জানা যায়, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা কমেছে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রার পতন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে জেলা আবহাওয়া অফিস।
জানা গেছে, বুধবার ও গতকাল জেলায় সূর্যের দেখা মেলেনি। সেই সঙ্গে উত্তরের কনকনে হিমেল হাওয়ার কারণে জেলায় প্রচণ্ড শীত অনুভূত হচ্ছে। এর ফলে জেলার পশ্চিমের চরাঞ্চলে খুব সকালে কৃষকদের সবজির খেতে গিয়ে সবজি তুলে শহরের বিভিন্ন পাইকারি বাজারে আনতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়াও জেলার পাহাড়ি এলাকায় ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ার কারণে সন্ধ্যার পরে স্থানীয় মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
ঘন কুয়াশায় যাত্রীবাহী বাস খাদে : মাদারীপুর প্রতিনিধি জানান, ঘন কুয়াশায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পদ্মা সেতু এক্সপ্রেসওয়ের মাদারীপুরের শিবচরে গোল্ডেন লাইন পরিবহন নামের যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে গেছে।
গতকাল সকাল সাড়ে ৮টায় এক্সপ্রেসওয়ের কুতুবপুর ৪ নম্বর ব্রিজ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয় অন্তত ১০ যাত্রী। আহতদের বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে বড় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।