বাংলাদেশ অবস্থানরত অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের আবারও সতর্ক করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সরকার-নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বৈধতা অর্জন না করলে তাদের বিরুদ্ধে ফরেন অ্যাক্ট ১৯৪৬ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরীর সই করা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অনেক বিদেশি নাগরিক অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন বা কর্মরত রয়েছেন। এমতাবস্থায়, অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত বা কর্মরত ভিনদেশি নাগরিক যারা ইতোপূর্বে জারি করা সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশে অবস্থানের বা কর্মরত থাকার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বৈধতা অর্জন করবেন না, তাদের বিরুদ্ধে দ্য ফরেন অ্যাক্ট ১৯৪৬ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলা, ভয়াবহ ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার ইবনে মিজান আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সন্ত্রাসবিরোধী আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন এবং সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের বিভিন্ন কঠোর ধারায় এই মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে সশস্ত্র একদল দুষ্কৃতকারী প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে উসকানিমূলক স্লোগান দিতে থাকে। তারা মোবাইল ফোন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানি ছড়িয়ে মুহূর্তের মধ্যে ৪০০-৫০০ জনের একটি বড় দাঙ্গাবাজ দল একত্রিত করে। রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে তারা ভবনের প্রধান ফটক ও শাটার ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে তাণ্ডব শুরু করে। হামলাকারীরা ভবনের ভেতরে থাকা আসবাবপত্র ও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র নিচে ফেলে সেগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং অফিসের দেড় শতাধিক কম্পিউটার ও ল্যাপটপসহ লকারে থাকা বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ ও প্রথমা প্রকাশনের বইপত্র লুট করে নিয়ে যায়।
এজাহারে আরও অভিযোগ করা হয়েছে যে, দুষ্কৃতকারীরা অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে ভবনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয় এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের আগুন নেভানোর কাজে বাধা প্রদান করে। এছাড়া অপরাধের সাক্ষ্যপ্রমাণ নষ্ট করার উদ্দেশ্যে তারা ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলোও ভেঙে ফেলে। প্রথম আলো কর্তৃপক্ষের দাবি অনুযায়ী, কেবল লুণ্ঠিত সম্পদের মূল্য প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং ভবন ও সরঞ্জামের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সব মিলিয়ে প্রায় ৩২ কোটি টাকা। বর্তমানে পুলিশ এই মামলায় জড়িতদের শনাক্ত করতে কাজ করছে এবং ইতোমধ্যে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূলত সংবাদপত্রের ওপর এমন বর্বরোচিত হামলা ও বিপুল আর্থিক ক্ষতির ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার সৃষ্টি হয়েছে।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি হত্যার সুষ্ঠু ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে ‘দ্রুত বিচারিক ট্রাইব্যুনাল’ গঠনের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের এই দাবি জানান। তিনি এই হত্যাকাণ্ড ও এর নেপথ্য পরিকল্পনাকারীদের খুঁজে বের করতে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এবং ব্রিটিশ সংস্থা স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে তদন্ত প্রক্রিয়ায় যুক্ত করার জোর আহ্বান জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল্লাহ আল জাবের বর্তমান সরকারকে উদ্দেশ্য করে এক কঠোর আল্টিমেটাম দেন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন যে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। খুনি এবং তাদের মদদদাতাদের পরিচয় জনসমক্ষে প্রকাশ না করে কোনো ধরনের তড়িঘড়ি নির্বাচন মেনে নেওয়া হবে না। জাবের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আজ বিকেল ৩টায় ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হবে। সেই মিছিল শেষে তারা পরবর্তী চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করবেন—যেখানে নির্ধারণ করা হবে তারা বর্তমান সরকারের সঙ্গে থাকবে, নাকি সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন শুরু করবে।
সংগঠনের সদস্য সচিব আরও মন্তব্য করেন যে, ওসমান হাদি এমন কোনো টিম বা আদর্শ রেখে যাননি যারা কেবল দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষার অজুহাতে সরকারের সঙ্গে গোপনে সমঝোতা বা লিয়াজো করবে। তিনি বলেন, ইনকিলাব মঞ্চের কর্মীরা রাজপথ ছাড়বে না যতক্ষণ না এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত প্রতিটি অপরাধীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে। খুনিদের আড়াল করে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। হাদি হত্যার বিচার ঘিরে এই কঠোর অবস্থান রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
রাজধানীর শীর্ষ দুই সংবাদমাধ্যম দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক বিশেষ ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এস এন মো. নজরুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেন। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ১৩ জনকে নিয়মিত থানা পুলিশ, ৩ জনকে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট এবং একজনকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গ্রেফতার করেছে।
গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে একদল সন্ত্রাসী কারওয়ান বাজারে অবস্থিত প্রথম আলো এবং কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউয়ের ডেইলি স্টার কার্যালয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা ভবন দুটিতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোর পর সেখানে অগ্নিসংযোগ করে। একই রাতে ধানমন্ডির ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানটেও হামলা চালানো হয়। এর রেশ কাটতে না কাটতেই গত শুক্রবার রাতে তোপখানা রোডে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। উদীচীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই হামলাগুলো অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে।
এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনতে গত রোববার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে এবং এতে সন্ত্রাসবিরোধী আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের মতো কঠোর ধারাগুলো যুক্ত করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজ এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত তথ্য বিশ্লেষণ করে অপরাধীদের শনাক্ত করা হচ্ছে এবং বাকি আসামিদের গ্রেফতারে সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে এমন হামলার ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় বইছে।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে সম্পাদক পরিষদ এবং নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) আয়োজিত ‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক যৌথ প্রতিবাদ সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাঁর গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা কেবল দুটি সংবাদপত্রের ওপর আঘাত নয়, বরং এটি দেশের সামগ্রিক গণতন্ত্রের ওপর একটি বড় আঘাত। আটাত্তর বছর বয়সে এসে এমন এক বাংলাদেশ দেখছেন যা তাঁর সারা জীবনের সংগ্রামের স্বপ্নের পরিপন্থি বলে তিনি মন্তব্য করেন। ফখরুল আহ্বান জানান, জুলাই যুদ্ধের চেতনা এবং মানুষের অধিকার রক্ষায় এখন কোনো রাজনৈতিক বিভাজন নয়, বরং সব গণতন্ত্রকামী মানুষের এক হয়ে এই অপশক্তিকে রুখে দেওয়ার সময় এসেছে।
সভায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এক গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ তুলে বলেন, ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে যে মব ভায়োলেন্স বা গণসহিংসতা ঘটেছে, তার পেছনে সরকারের একটি অংশের রাজনৈতিক সমর্থন থাকতে পারে। তা না হলে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা সম্ভব হতো না বলে তিনি মনে করেন। অন্যদিকে নিউ এজ সম্পাদক নুরুল কবির তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, প্রতিটি সংবাদমাধ্যমের নিজস্ব সম্পাদকীয় নীতি থাকে এবং সেই নীতির সঙ্গে একমত না হওয়ার অধিকার সবার থাকলেও প্রতিষ্ঠানে আগুন দেওয়া কোনোভাবেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া হতে পারে না।
ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম হামলার রাতের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে জানান, ওই দিন ভবনের ভেতরে ২৬-২৭ জন কর্মী আটকা পড়েছিলেন এবং সন্ত্রাসীরা ফায়ার সার্ভিসকে ভেতরে ঢুকতে বাধা দিয়েছিল। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, হামলাকারীদের উদ্দেশ্য কেবল ভবনে আগুন দেওয়া ছিল না, বরং সেখানে থাকা সাংবাদিকদের হত্যা করাই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য। বর্তমানে ওই দুটি প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিকদের হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি সভায় জানান।
প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা একযোগে মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে তাঁদের শক্ত অবস্থানের কথা জানান এবং ঐক্যবদ্ধভাবে এই অরাজকতা মোকাবিলার প্রতিশ্রুতি দেন। সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নোয়াব সভাপতি এ কে আজাদ, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন এবং গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। বক্তারা সবাই সংহতি প্রকাশের পাশাপাশি এই সহিংস সংস্কৃতির মূলোৎপাটন করার ওপর বিশেষ জোর দেন।
জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির যোদ্ধা, সমন্বয়ক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সম্প্রতি ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই যোদ্ধা শরীফ ওসমান হাদির নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর এই উদ্যোগ আরও জোরদার করা হয়েছে। সরকারের এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে আন্দোলনের পরিচিত মুখ ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা এবং উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলমকে ব্যক্তিগত গানম্যান প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের ব্যক্তিগত অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়াটিও বর্তমানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে।
জুলাই যোদ্ধাদের পাশাপাশি দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের নিরাপত্তা ঝুঁকি পর্যালোচনার ভিত্তিতে গানম্যান ও অস্ত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান এবং বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) প্রধান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে গানম্যান চেয়ে আবেদন করেছেন। এছাড়া গণসংহতি আন্দোলনের জুনায়েদ সাকি, বিএনপি মনোনীত সংসদ-সদস্য প্রার্থী তানভির আহমেদ রবিন ও জাফির তুহিন, জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদসহ বেশ কয়েকজন নেতার গানম্যান ও অস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। বিশেষ বিবেচনায় শহীদ ওসমান হাদির পরিবারকেও সার্বক্ষণিক পুলিশি নিরাপত্তার আওতায় আনা হয়েছে এবং হাদির এক বোনকে ব্যক্তিগত অস্ত্রের লাইসেন্স ও গানম্যান প্রদান করা হচ্ছে।
সরকারের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করতে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে পরাজিত শক্তিরা নানা ষড়যন্ত্র লিপ্ত রয়েছে। গত ৫ আগস্টের পর থেকেই জুলাই আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং আধিপত্যবাদবিরোধী নেতারা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ও দেশের বাইরে পলাতক থাকা ষড়যন্ত্রকারীদের পক্ষ থেকে প্রাণনাশের হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন। ওসমান হাদির ওপর ড্রোন হামলার মতো অত্যাধুনিক হামলা এবং শেষ পর্যন্ত তার শাহাদাতবরণের ঘটনাটি সরকারের উচ্চপর্যায়ে জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তার বিষয়ে গভীর উপলব্ধির জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে হাসনাত আবদুল্লাহ ও ব্যারিস্টার ফুয়াদের মতো ব্যক্তিত্বরা বর্তমানে উচ্চমাত্রার নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে গোয়েন্দা তথ্যে উঠে এসেছে।
পুলিশ সদর দপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গানম্যান ও অস্ত্রের লাইসেন্সের জন্য অসংখ্য আবেদন জমা পড়লেও অগ্রাধিকার এবং ঝুঁকির মাত্রা বিশ্লেষণ করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুলিশের আইজিপি বাহারুল আলম জানিয়েছেন, যারা সবচাইতে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন তাদের সশস্ত্র দেহরক্ষী দেওয়া হয়েছে এবং অন্যদের চলাফেরার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। তবে গানম্যান প্রদানের ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে যাতায়াত ব্যবস্থা। আবেদনকারীদের অনেকে শিক্ষার্থী হওয়ার কারণে তারা রিকশা বা পাবলিক বাসে যাতায়াত করেন, যা গানম্যান নিয়ে চলার ক্ষেত্রে প্রতিকূলতা তৈরি করছে। এ বিষয়টির বিকল্প সমাধানের উপায় নিয়ে পুলিশ বিভাগ চিন্তাভাবনা করছে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিরাপত্তাও এই পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা পড়া লিখিত আবেদনগুলোর বিষয়ে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই একটি উচ্চপর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। অতিরিক্ত আইজিপি খোন্দকার রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট জেলার এসপি, রেঞ্জ ডিআইজি এবং মেট্রোপলিটন কমিশনারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে তারা ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। মিটিং-মিছিলসহ যেকোনো কর্মসূচিতে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েনের পাশাপাশি উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখছে পুলিশ। মূলত একটি সুষ্ঠু নির্বাচন ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতেই সরকার এই সমন্বিত নিরাপত্তা বলয় তৈরির চেষ্টা করছে।
রাজধানীর শীর্ষ দুই জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার এবং দুটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত নয়জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে তাদের গ্রেফতারের বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মো. নাঈম নামে একজনের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। রাজধানীর তেজগাঁওয়ের কুনিপাড়া এলাকার এই বাসিন্দা হামলার সময় এক লাখ ২৩ হাজার টাকা লুট করেছিলেন। সেই টাকা দিয়ে তিনি মোহাম্মদপুর থেকে একটি টেলিভিশন ও একটি ফ্রিজ কেনেন। পরে তাকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে লুণ্ঠিত ৫০ হাজার টাকাসহ গ্রেফতার করা হয় এবং তার কেনা টিভি ও ফ্রিজ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
অভিযানে গ্রেফতার হওয়া অন্য ছয়জন হলেন— মো. কাশেম ফারুকি, মো. সাইদুর রহমান, রাকিব হোসেন, ফয়সাল আহমেদ প্রান্ত, মো. সোহেল রানা এবং মো. শফিকুল ইসলাম। এছাড়া আরও দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে যাদের পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে। গ্রেফতারকৃত রাকিব হোসেন ভিডিও ফুটেজে সরাসরি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে অংশ নিতে শনাক্ত হয়েছেন। তিনি নিজের ফেসবুক আইডি থেকে ধ্বংসস্তূপের ছবি পোস্ট করার পাশাপাশি বিভিন্ন উসকানিমূলক তথ্য প্রচার করেছিলেন। অন্যদিকে কারওয়ান বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার হওয়া সোহেল রানার বিরুদ্ধে মাদকসহ বিভিন্ন আইনে ১৩টি এবং শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের দুটি মামলা আগে থেকেই রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এই হামলায় জড়িত আরও ৩১ জনকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে। একইসাথে চট্টগ্রামে ভারতের সহকারী হাইকমিশনারের বাসভবনের সামনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টাকারী তিনজনের পরিচয়ও ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বর্তমানে গ্রেফতারকৃতদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং শনাক্ত হওয়া বাকি আসামিদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ। মূলত প্রযুক্তির সহায়তায় অপরাধীদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ২০২৬ সালের গণভোটকে সামনে রেখে সাধারণ ভোটারদের সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে বিশেষ প্রচার কার্যক্রম ‘ভোটের গাড়ি’। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ বিকেল ৪টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে এই প্রচারণামূলক কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। মূলত নির্বাচনের গুরুত্ব ও ভোটাধিকার প্রয়োগে জনসচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যেই এই বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার সরকারি এক সংশোধিত তথ্য বিবরণীতে এই কর্মসূচির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার পাশাপাশি উপস্থিত থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে নির্বাচনি আমেজ ও জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে এই ‘ভোটের গাড়ি’র প্রচারণা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে এই প্রচার কার্যক্রম পরবর্তীতে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
সম্প্রতি দেশের শীর্ষ দুই জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার এবং দুটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল পর্যন্ত পরিচালিত বিভিন্ন অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে সাতজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে, তারা হলেন— মো. কাশেম ফারুক, মো. সাইদুর রহমান, রাকিব হোসেন, মো. নাইম, ফয়সাল আহমেদ প্রান্ত, মো. সোহেল রানা এবং মো. শফিকুল ইসলাম। এছাড়া কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও গোয়েন্দা পুলিশ আরও দুইজনকে গ্রেফতার করেছে যাদের পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রাকিব হোসেনকে ভিডিও ফুটেজে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে সরাসরি অংশ নিতে দেখা গেছে এবং তিনি হামলার পর ধ্বংসস্তূপের ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক পোস্ট দিয়েছিলেন। মো. নাইম নামে একজনকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে লুট করা ৫০ হাজার টাকাসহ গ্রেফতার করা হয়। তিনি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন যে, ওই দিন মোট ১ লাখ ২৩ হাজার টাকা লুট করে তিনি একটি টেলিভিশন ও ফ্রিজ কিনেছিলেন, যা ইতোমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। অন্যদিকে কারওয়ান বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতারকৃত সোহেল রানার বিরুদ্ধে মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৩টি এবং শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে দুটি পুরনো মামলা রয়েছে।
এর আগে গত রোববার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এই হামলায় জড়িত ৩১ জনকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে। একই সাথে চট্টগ্রামে ভারতের সহকারী হাইকমিশনারের বাসভবনের সামনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির দায়ে আরও তিনজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। শনাক্ত হওয়া বাকি আসামিদের ধরতেও সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে। মূলত ভিডিও ফুটেজ ও প্রযুক্তির সহায়তায় অপরাধীদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে যেকোনো মূল্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সব বাহিনীকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। সোমবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তার মাধ্যমে এই বৈঠকের বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়।
এই গুরুত্বপূর্ণ সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, আসন্ন বড়দিন এবং ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপন ঘিরে নিরাপত্তা প্রস্তুতিসহ সমসাময়িক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়। বিশেষ করে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহিদ শরীফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার এবং তদন্তের অগ্রগতির বিষয়টি আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পায়। প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন যে, ওসমান হাদি হত্যাসহ যেকোনো বেআইনি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনতে হবে।
বৈঠকে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, সম্প্রতি দুটি জাতীয় দৈনিক ও দুটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ দেখে ইতোমধ্যে ৩১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মো. কাশেম ফারুকি, মো. সাইদুর রহমান, রাকিব হোসেন, মো. নাইম, মো. সোহেল রানা এবং মো. শফিকুল ইসলাম নামে ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে। এ ছাড়াও চট্টগ্রামে ভারতের সহকারী হাইকমিশনারের বাসভবনের নিকট বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টাকারী তিনজনকে ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করার বিষয়টিও প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়েছে। সার্বিকভাবে দেশে কোনো ধরনের অস্থিরতা বা অরাজকতা বরদাশত করা হবে না বলে বৈঠকে পুনরায় সতর্ক করা হয়।
মহান মুক্তিযুদ্ধের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ ও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আবদুল করিম খন্দকার (এ কে খন্দকার) বীর উত্তমকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ বিদায় জানানো হয়েছে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিমানবাহিনীর ঘাঁটি বাশারে তার জানাজায় অংশ নেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সেনা, নৌ, বিমানবাহিনীর প্রধানসহ উচ্চপদস্থ সামরিক–বেসামরিক কর্মকর্তারা। জানাজার আগে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে খন্দকারের ফিউনারেল প্যারেড হয়।
জানাজা শেষে রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সামরিক সচিব এ কে খন্দকারের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। এরপর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান একে একে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। বিমানবাহিনীর একটি ফ্লাই পাস্টের মাধ্যমে এ কে খন্দকারের প্রতি সম্মান জানানো হয়।
জানাজার আগে এ কে খন্দকারের ছেলে জাফরুল করিম খন্দকার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী এ কে খন্দকার গত শনিবার সকালে বার্ধক্যের কারণে মারা যান। তিনি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বিমানবাহিনীর প্রধান ও সাবেক মন্ত্রী।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতা, দূরদর্শিতা ও নেতৃত্বগুণের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এ কে খন্দকার। মুক্তিযুদ্ধকালে তার কৌশলগত সিদ্ধান্ত ও সাংগঠনিক দক্ষতা স্বাধীনতার সংগ্রামকে আরও সুসংহত করে।
ছেলের কফিনের পাশে পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন মোহাম্মদ আলমগীর। অর্ধেক জাতীয় পতাকা আর অর্ধেক জাতিসংঘের পতাকায় মোড়ানো কফিন। তার চোখে কেবলই শূন্যতা। নিহত শামীম রেজার বাবা আলমগীর বলেন, আমার ছেলে ছিল আমার বটগাছ। সেই গাছটা আর নেই। আমার সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল।
গত ১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবিয়ে এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের বেসে ড্রোন হামলায় নিহত হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয় সদস্য। রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় ঢাকা সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে তাদের জানাজা হয়।
নিহত ৬ শান্তিরক্ষী হলেন- নাটোরের বাসিন্দা করপোরাল মো. মাসুদ রানা, কুড়িগ্রামের বাসিন্দা সৈনিক মো. মমিনুল ইসলাম ও সৈনিক শান্ত মন্ডল, রাজবাড়ীর বাসিন্দা সৈনিক শামীম রেজা, কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা মেস ওয়েটার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং গাইবান্ধার বাসিন্দা লন্ড্রি কর্মচারী মো. সবুজ মিয়া।
জানাজা শেষে শহীদ শান্তিরক্ষীদের মরদেহে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর একে একে তিনবাহিনীর পক্ষ থেকে শহিদদের কফিনে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
জানাজায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং সশস্ত্র বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা অংশ নেন।
জানাজা শেষে শামীম রেজার বাবা বলেন, তার ছেলে অনেক স্বপ্ন নিয়ে বিদেশে গিয়েছিলেন। ছোট ভাইকে বলেছিলেন ভবিষ্যৎ গড়ে দেবেন, আর ছোট মেয়েকে কথা দিয়েছিলেন ফেরার সময় বিয়ের হার নিয়ে আসবেন।
করপোরাল মোহাম্মদ মাসুদ রানার ছোট ভাই সৈনিক রনি ভাইয়ের জন্য সবার কাছে দোয়া ও ক্ষমা চান। তিনি বলেন, মাসুদ রানা ১৯ বছর ধরে সেনাবাহিনীতে চাকরি করেছেন। তার আট বছরের একটি মেয়ে আছে।
সৈনিক মোহাম্মদ মমিনুল ইসলামের ভগ্নিপতি মিজানুর রহমান জানান, মমিনুল স্ত্রী, দুই ও বারো বছরের দুই সন্তান, ছোট ভাই ও বোনকে রেখে গেছেন।
সৈনিক শান্ত মণ্ডলের চাচা আবু তাহের মণ্ডল বলেন, স্কুল শেষ করেই শান্ত সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। তার বাবা নুরুল ইসলাম মণ্ডলও সেনাবাহিনীতে ছিলেন। তিনি বলেন, জ নুরুল বেঁচে থাকলে গর্ববোধ করতেন যে তার ছেলে শহীদ হয়েছে, জীবন উৎসর্গ করেছে। তিনি আরও বলেন, শান্তর পরিবার অত্যন্ত গরিব। তার মা দুই ছেলের ওপর নির্ভর করেই সংসার চালাতেন। তিনি শান্তর প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা দ্রুত পরিবারকে দেওয়ার অনুরোধ জানান।
মেস ওয়েটার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের ভগ্নিপতি ওয়ালিউল্লাহ বলেন, জাহাঙ্গীর স্ত্রী ও তিন বছরের এক ছেলেকে রেখে গেছেন। সাত বছর আগে তাদের বিয়ে হয়েছিল। তিনি জাহাঙ্গীরের ভুলত্রুটির জন্য সবার কাছে ক্ষমা চান।
লন্ড্রি কর্মী মোহাম্মদ সবুজ মিয়ার চাচা আব্দুল হামিদ জানান, সবুজ সম্প্রতি বিয়ে করেছিলেন। তিনি স্ত্রী ও বৃদ্ধা মাকে রেখে গেছেন। তিনি সবার কাছে সবুজের জন্য দোয়া চান।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন ইউনিসফার চিফ কমিউনিটি লিয়াজোঁ অফিসার বরিস-এফ্রেম চুমাভি বাংলাদেশ সরকার, সেনাবাহিনী ও নিহতদের পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি নিহতদের ‘শান্তির সৈনিক’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, তারা অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়েও পেশাদারত্ব, সততা ও সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।
জানাজার আগে নিহত ছয় শান্তিরক্ষীর সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করা হয় এবং তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এরপর সামরিক রীতি অনুযায়ী তাদের রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয়। পরে হেলিকপ্টারে করে মরদেহ নাটোর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, রাজবাড়ী ও কিশোরগঞ্জে নিজ নিজ বাড়িতে পাঠানো হয়। সেখানে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।
এর আগে শনিবার এমিরেটস এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে তাদের মরদেহ দেশে আনা হয়। দেশে আনার আগে আবিয়েতে তাদের জানাজা ও সামরিক সম্মান জানানো হয়।
গত ১৩ ডিসেম্বরের ড্রোন হামলায় ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত এবং নয়জন আহত হন। আহতদের মধ্যে আটজন কেনিয়ার নাইরোবির আগা খান ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তারা সবাই এখন শঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, সামনের দিনগুলো খুব ভালো দিন নয়। দেশের বিভিন্ন জায়গায় অরাজকতা শুরু হয়েছে। কেউ কেউ দেশে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। সামনে আসছে কঠিন সময়, সকলকে সজাগ থাকতে হবে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে বগুড়ার পৌর এডওয়ার্ড পার্কের শহীদ টিটু মিলনায়তনে জুলাই শহীদদের স্মরণে ডিজিটাল স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘শহীদ ওসমান হাদি গণতন্ত্রের পথেই ছিলেন। তিনি একজন প্রার্থী ছিলেন, গণতন্ত্র বা ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন। যদি শহীদ হাদির প্রতি, জুলাই শহীদদের ও যোদ্ধাদের প্রতি, একাত্তরের শহীদ ও যোদ্ধাদের প্রতি সম্মান রাখতে হয়, তাহলে আমাদের একটাই লক্ষ্য হতে হবে, দেশের মানুষের জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠা করা, দেশের জন্য কাজ করা, দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সামনে একটাই—করব কাজ গড়ব দেশ, সবার আগে বাংলাদেশ।’
অতীতে বিএনপির দুই নেতার রাষ্ট্র পরিচালনায় সফলতার কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দেশকে ধ্বংসের কিনারা থেকে বের করে এনেছিলেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালে স্বৈরাচারের কবল থেকে দেশকে রক্ষা করে ধীরে ধীরে ধ্বংসের কিনারা থেকে উন্নয়নের পথে নিয়েছিলেন। আমাদের হাতে আবারও সুযোগ এসেছে। দেশের প্রায় ২০ কোটি মানুষের জন্য চিকিৎসাব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুন্দর শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। নারীদের পিছিয়ে থাকলে চলবে না, তাদের শিক্ষিত করাসহ তারা যাতে অর্থনৈতিক মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড়াতে পারেন, সেদিকে কাজ করতে হবে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়। দেশকে ধ্বংসের কিনারা থেকে বের করে আনতে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘সামনে অনেক কাজ। যারা গণতন্ত্র বিশ্বাস করে—আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সেটি আমরা বিএনপির নেতা–কর্মীরা হই বা অন্য দলের নেতা-কর্মী হই।’
বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এ কে এম মাহবুবর রহমান ও হেলালুজ্জামান তালুকদার, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও বগুড়া-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী গোলাম মো. সিরাজ, বগুড়া-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কাজী রফিকুল ইসলাম, বগুড়া-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী ও জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোশারফ হোসেন প্রমুখ।
নয়াদিল্লি থেকে পাঠানো প্রেস নোটকে ‘সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান’ করেছে বাংলাদেশ। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এই কঠোর অবস্থানের কথা জানান। তিনি বলেন, ভারতের দাবি অনুযায়ী নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভাঙার কোনো চেষ্টা করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, ময়মনসিংহে দিপু চন্দ্র দাসের হত্যার প্রতিবাদে ২০-২৫ জন যুবক সেখানে গিয়ে স্লোগান দিয়েছে মাত্র। এই ঘটনাকে ভারত যেভাবে উপস্থাপন করেছে, তা বাংলাদেশ পুরোপুরি গ্রহণ করছে না।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা প্রশ্ন তোলেন যে, কড়া নিরাপত্তা বেষ্টিত একটি কূটনৈতিক এলাকায় একটি ক্ষুদ্র দল এত গভীরে প্রবেশ করতে পারল কীভাবে? তিনি এটিকে কূটনৈতিক শিষ্টাচারের স্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করেন। এছাড়া একজন বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনাকে কেন ভারতের পক্ষ থেকে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয় হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, সেটিকে অপ্রাসঙ্গিক বলে মন্তব্য করেন তিনি। তৌহিদ হোসেন জানান, ময়মনসিংহের সেই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর বাংলাদেশ সরকার তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে।
দূতাবাসের ভেতরে থাকা কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ঘটনার সময় কর্মকর্তারা প্রচণ্ড নিরাপত্তা শঙ্কা অনুভব করেছেন এবং সেখানে পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা ছিল না। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি পরিস্থিতির উন্নতি না হয় এবং কর্মকর্তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব না হয়, তবে বাংলাদেশ সরকার নয়াদিল্লিতে দূতাবাসের কার্যক্রম বা জনবল সীমিত করার কথা বিবেচনা করতে পারে।
উল্লেখ্য, এর আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল যে, বিক্ষোভ শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিয়েছে এবং ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী বিদেশি দূতাবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা তাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতের এই দাবি ও ব্যাখ্যাকে অগ্রহণযোগ্য বলে নাকচ করে দেওয়া হয়েছে।