তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করে আনা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদন আজ রোববার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের শুনানির কার্যতালিকায় রয়েছে। গতকাল শনিবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রোববারের শুনানির কার্যতালিকার ১৩ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে।
গত ১ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই রিভিউটি ১৯ জানুয়ারি শুনানির জন্য ধার্য করেন। আদালতে সেদিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, শরীফ ভূঁইয়া ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে ১৬ অক্টোবর রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার আগে এ বিষয়ে রিভিউ করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। এছাড়া বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার রিভিউ আবেদন করেন। এসব রিভিউ আবেদনের একসঙ্গে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনে করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
এছাড়াও গত ১৭ ডিসেম্বর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা, মহাপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে তিস্তা পাড়। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে আন্দোলনকারীরা একত্রিত হয়ে দীর্ঘদিনের দাবির প্রতি আওয়াজ তুলেছেন। ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের নেতারা এ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন।
সোমবার সকাল থেকে রংপুর, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারীসহ উত্তরাঞ্চলের ১১টি স্থানে ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে একযোগে শুরু হয়েছে ৪৮ ঘণ্টার এই কর্মসূচি। এ ছাড়া তিস্তার ২৪২ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পদযাত্রা।
এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো তিস্তা নদীর করুণ পরিস্থিতি বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরা এবং পানির ন্যায্য হিস্যা, নদী খনন ও বাঁধ নির্মাণের দাবি আদায় করা। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া হাজার হাজার মানুষ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলোর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে তুলেছেন তিস্তা পাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা। দুদিনব্যাপী কর্মসূচির প্রথম দিন সকাল থেকেই আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন পয়েন্টে জড়ো হতে থাকেন।
দুই দিনব্যাপী কর্মসূচিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মীরাও যুক্ত হন।
লালমনিরহাটে তিস্তা রেল সেতু পয়েন্টে কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগ দেশ বেচেও তিস্তার এক ফোঁটা পানি আনতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আজকে একদিকে যখন তারা (ভারত) সব বাঁধ ছেড়ে দেয়, গেট খুলে দেয়, তখন সেই পানির তোড়ে আমাদের ঘর-বাড়ি, গ্রাম, ধানের খেত সব ভেসে যায়। আবার যখন বন্ধ করে দেয়, তখন আমার সমস্ত এলাকা খরায় শুকিয়ে খটখট হয়ে যায়। তিস্তাপাড়ের মানুষের দুঃখ আর যায় না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বহু আগে থেকে আমরা এই তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার কথা বলছি। পাকিস্তান আমলে পাকিস্তানিরা বলেছে, বাংলাদেশ হওয়ার পরে আমরা বলেছি। আওয়ামী লীগের সরকার এল, প্রথম দিকে সবাই ভাবল, ভারতের বন্ধু আওয়ামী লীগ, সুতরাং তিস্তার পানি বোধ হয় এবার পাই (পেয়ে) যাবে-লবডঙ্কা! ১৫ বছরে বাংলাদেশটাকে বেচে দিছে, তিস্তার এক ফোঁটা পানি আনতে পারে নাই।’
‘শুধু তিস্তা নয়, ৫৪টি নদী আছে যেগুলো ভারত থেকে আমাদের দেশে এসেছে। সবগুলো নদীর উজানে তারা বাঁধ দিয়ে দিয়েছে। পানি তুলে নিয়ে যায়, বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, আর আমাদের দেশের মানুষ এখানে ধান ফলাতে পারে না, ফসল ফলাতে পারে না। তারা তাদের জীবন-জীবিকা থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত হয়। আমাদের জেলেরা মাছ ধরতে পারেন না। প্রত্যেকটা মানুষকে আজকে এই কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা ১৫ বছর লড়াই করেছি ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে। আমাদের ছেলেরা লড়াই করেছে ৩৬ দিনে, সবার লড়াইয়ের মাধ্যমে সে পালিয়েছে। কোথায়? ওই ভারতে। একদিকে পানি দেয় না, অন্যদিকে আবার আমাদের যে শত্রু, তাকে দিল্লিতে রাজার হালে বসিয়ে রেখেছে। ওইখান থেকে আবার সে বিভিন্ন রকম হুকুম জারি করে আওয়ামী লীগারদের।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কথায় তো বলেন যে আপনারা নিরপেক্ষ। এই জায়গায় কিন্তু নিরপেক্ষ থাকলে চলবে না। এই জায়গায় আপনাকে মুখ খুলতে হবে। ভারতকে বলতে হবে, আমার পানির ন্যায্য হিস্যা আমি চাই।’
খুব তাড়াতাড়ি নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল।
ভারতের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে যদি বন্ধুত্ব করতে চান, তাহলে আগে তিস্তার পানি দেন। সীমান্তে গুলি করে হত্যা বন্ধ করেন। আর আমাদের সঙ্গে বড় দাদার মতো যে আচরণ, সেটা বন্ধ করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের পায়ের ওপর দাঁড়াতে চাই। আমরা আমাদের হিস্যা বুঝে নিতে চাই। আমরা অবশ্যই ভারতকে একটা বন্ধুভাবে দেখতে চাই কিন্তু সেই বন্ধুত্ব হবে সম্মানের সঙ্গে। আমার যে পাওনা, সেই পাওনা বুঝিয়ে দেওয়ার সঙ্গে।’
এই আন্দোলন বিএনপি শেষ পর্যন্ত নিয়ে যাবে বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি। ফখরুল বলেন, ‘লড়াই করেই আমরা তিস্তার পানি আনব। আমাদের অধিকারগুলো আদায় করে নেব।’
সমাবেশের বিভিন্ন স্পটগুলোতে পৃথক পৃথকভাবে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এবং গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আজ সন্ধ্যায় পাঁচ জেলার ১১টি পয়েন্টে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন।
এদিকে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া আন্দোলনকারীরা রাত্রিযাপন, রান্না ও লোকসংগীতের আয়োজন করেছেন। ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের’ ব্যানারে ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচির মধ্যে রংপুরের কাউনিয়া সেতু, মহিপুর সেতু এবং তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তাঁবু খাঁটিয়ে কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
তিস্তাপাড়ের মানুষের আকাঙ্ক্ষা ও সংকটকে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে রাতে হাজার হাজার মশাল প্রজ্বলন করেন।
এ ছাড়া কর্মসূচিতে থাকছে নানা আয়োজন- পদযাত্রা, আলোচনা সভা, তিস্তার পানিতে দাঁড়িয়ে মশাল প্রদর্শন এবং ডকুমেন্টারি প্রদর্শন।
তিস্তা নদী শুধু একটি জলাধার নয়, এটি তিস্তাপাড়ের মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই এই আন্দোলন শুধু একটি দাবি নয়, এটি বেঁচে থাকার লড়াই। আন্দোলনকারীদের প্রত্যাশা, তিস্তার মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়িত হবে এবং নদীর ন্যায্য পানি বণ্টন নিশ্চিত করা হবে।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া আন্দোলনকারীরা বলেন, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ভারত উজানে বাঁধ নির্মাণ করায় তিস্তার পানির প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে, আর এর ফলে বাংলাদেশের কৃষি ও পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। তারা দাবি করছেন, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা না পেয়ে হাজার হাজার কৃষক ও সাধারণ মানুষ ক্ষতির মুখে পড়ছেন।
এই প্রতিবাদে সম্পৃক্ত মানুষের অভিযোগ, ভারত একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করে লাখ লাখ মানুষকে দুর্দশার মুখে ঠেলে দিচ্ছে। তারা বলছেন, ভারতের আগ্রাসন রুখতে এখনই আমাদের সোচ্চার হতে হবে, নইলে ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
দিন দিন জমেও উঠছে মেলা। দিন যত গড়াচ্ছে ততই বেড়ে চলছে দর্শনার্থী সংখ্যা আর এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বই বিক্রিও। বই বিক্রি আর প্রচারণা নিয়ে স্টল কিংবা স্টলের বাহিরেও প্রকাশকরাও পার করছেন ব্যস্ত সময়।
মেলায় প্রতিবারের মতো এবারও পাঠকদের আগ্রহের শীর্ষে রয়েছে উপন্যাস। এছাড়াও মেলায় প্রতিদিন শতাধিক নতুন বই আসার পাশাপাশি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বই নিয়ে পাঠকদের বেশ আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়াও ঘুরেফিরে জনপ্রিয় লেখকদের বই বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রকাশকরা।
সোমবার বইমেলা ঘুরে দেখা গেছে, পাঠকরা স্টলে স্টলে গিয়ে উপন্যাসের বই খুঁজে বেড়াচ্ছেন। প্রিয় লেখকের প্রকাশিত বই পেলেই তা সংগ্রহ করে নিজেদের ব্যাগে গুজে নিচ্ছেন। এদিকে পূর্ববর্তী বছরগুলোর মতো এবারও সাদাত হোসেন, হুমায়ন আহমেদ, আসিফ নজরুলসহ বেশ কয়েকজন জনপ্রিয় লেখকদের বই বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে মেলায় হুমায়ূন আহমেদের বই বেশি বিক্রি হচ্ছে।
এবারের বইমেলায় পাঠকদের চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে প্রকাশকরা উপন্যাসের বইগুলো স্টলগুলোতে সাজিয়ে রেখেছেন। মেলার এক তৃতীয়াংশ দিনে উপন্যাসের বইগুলোই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকাশকরা। এছাড়াও বইমেলার বিভিন্ন স্টলে জুলাই গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বই হাতে নিয়ে পাঠকরা উল্টে-পাল্টে দেখছেন। কেউ উদ্বিগ্ন চোখে বইয়ের মধ্যে ডুবে যাচ্ছেন আবার কেউবা গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বইয়ের বিষয়বস্তু সম্পর্কে বন্ধুদের নিয়ে আলোচনা করছেন।
বইমেলাজুড়ে বাংলা একাডেমির প্যাভিলিয়ন রয়েছে চারটি। এসব স্টলে বাংলা অভিধান বেশি বিক্রি হয়ে বলে জানিয়েছেন বিক্রয়কর্মীরা। প্রতিষ্ঠানটির ডিস্ট্রিবিউটর সৈয়দ মাসুমুল কবির দৈনিক বাংলাকে জানান, অভিধান বিক্রির পাশাপাশি উপন্যাস ও কবিতার বই বেশি বিক্রি হয়। এছাড়াও মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের মহাচীনের গল্প ও তার কুরানসূত্র বেশি বিক্রি হচ্ছে। আমাদের এখানে ২৫ শতাংশ কমিশন দেয়ায় অভিধানসহ অন্যান্য বই বেশি বিক্রি হচ্ছে।
প্রথমা প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী শিহাব শাহরিয়ার জানান, পলিটিকাল, উপন্যাস আর কিশোর উপন্যাস বইগুলো বিক্রির চাপ বেশি। আলী রীয়াজের আমিই রাষ্ট্র বইটি ক্রেতার চাহিদার শীর্ষে। মহিউদ্দিন আহমনের তাজউদ্দীন নামে একজন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বইটি বেশ বিক্রি হচ্ছে।
জ্ঞ্যানকোষ প্রকাশনীর সেলস এক্সিকিউটিভ রাইয়ান আদন জানান, মেলায় এ বছর এখন পর্যন্ত ৬১টি নতুন বই বের করেছে প্রকাশনীটি। এর মধ্যে সাসপেন্সধর্মী বই জহির খানের দ্যা সাইলেন্স কিলার-২, গণ অভ্যুত্থান নিয়ে আশীফ এন্তাজরবির ফিকশন গল্প ট্রেন টু ঢাকা, ফাতেমা তুজ নৌশির রোমান্টিক উপন্যাস মায়াঞ্জন বেশ চলছে।
অন্যপ্রকাশ প্রকাশনী থেকে এ পর্যন্ত ৫৪টি নতুন বই বের হয়েছে। তন্মধ্যে জনপ্রিয় লেখক সাদাত হোসেনের নতুন দুটি বই শঙ্খচূড় ও যেতে যেতে তোমাকে কুড়াই বেশি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও হুমায়ন আহমেদের উপন্যাস বাদশাহ নামদার, লীলাবতী, তেতুল বনে জোছনা, মেঘের উপর বাড়ি এবার বেশি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও হিমুর পারাবার ও চলে যায় বসন্তের দিন বইদুটির প্রতি পাঠকদের আগ্রহ বেশি বলে জানিয়েছেন প্রকাশনীটির বিক্রয়কর্মী লুবনা জামান।
কথাপ্রকাশ প্রকাশনীর ইনচার্জ মোহাম্মদ ইউনুস আলী দৈনিক বাংলাকে জানান, কথাপ্রকাশের নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে ৮০টারও বেশি। এর মধ্যে বেশি বিক্রি হচ্ছে উপন্যাস। মাহরীন ফেরদৌসের জলজ লকার আর হরিশংকর জলদাসের শূর্পণখার চাহিদা বেশি। এছাড়াও সিরাজউল ইসলাম চৌধুরীর দুইটা প্রবন্ধ উন্নতি উথান অভ্যুত্থান, রাষ্ট্র বিল্পবে সুভাষ চন্দ্র বষু ভালো বিক্রি হচ্ছে।
বইমেলায় ঘুরতে আসা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাহি আক্তার বুশরা বইগুলো ঘাটতে ঘাটতে বলছিলেন, হুমায়ূন আহমেদ দেশের সাহিত্য অঙ্গনে যে জায়গা সৃষ্টি করে গেছেন, তা এখনও কেউ পূরণ করতে পারেননি। পুরোনোরা তো বটেই, নতুন প্রজন্মের পাঠকও এসে এখনও হুমায়ূনের বই খোঁজ করেন।
মেলার স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে বইয়ের পাতা উল্টানোর ফাঁকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদিয়া ইসলাম বলেন, উপন্যাস বেশি পড়া হয়। উপন্যাসে বিভিন্ন ধরনের জীবনগাথা থাকে; সেগুলো আমাকে নাড়া দেয়। এজন্য উপন্যাস বেশি পড়া হয়।
সোমবার ছিল মেলার ১৭তম দিন। মেলা শুরু হয় বিকেল ৩টায় এবং চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। নতুন বই এসেছে ১১৩টি।
এদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘আল মাহমুদ: জীবন ও কবিতা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মজিদ মাহমুদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মুসা আল হাফিজ এবং কাজী নাসির মামুন। সভাপতিত্ব করেন মাহবুব সাদিক।
লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন- কবি মতিন বৈরাগী এবং কবি ফজলুল হক তুহিন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আজ ছিল ঝর্ণা আলমগীরের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী’ এবং রূপশ্রী চক্রবর্তী’র পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘শিল্প বাংলা’—এর পরিবেশনা।
মঙ্গলবারের অনুষ্ঠান
মঙ্গলবার মেলার ১৮তম দিন মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টায় পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘জীবন ও কর্ম : শহীদ কাদরী’শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন তারানা নূপুর। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন শামস আল মমীন এবং আহমাদ মাযহার। সভাপতিত্ব করবেন হাসান হাফিজ।
সেনাবহিনীর কর্মতৎপরতায় সারা দেশে মব জাস্টিস-চাঁদাবাজি-হত্যা আগের চেয়ে কমে এসেছে বলে জানিয়েছেন সামরিক অপারেশন পরিদপ্তরের কর্নেল স্টাফ কর্নেল শফিকুল ইসলাম।
সোমবার ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে সেনা সদর আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব তথ্য জানান।
কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা স্থিতিশীল রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। শুধু মব জাস্টিস নয়, যে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি-হত্যা আগের চেয়ে কমে এসেছে। আমরা আমাদের কর্মতৎপরতা অব্যাহত রাখছি। কিছু হটস্পট চিহ্নিত করা হয়েছে, সেগুলো নজর রাখছি। অদূরভবিষ্যতে আরও কমে আসবে।
সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগে তদন্ত চলমান আছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী বনানী এলাকায় ডাকাতির ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। কোনো অন্যায়ই সেনাবাহিনী প্রশ্রয় দেয় না। তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে। জনগণের আস্থার জায়গায় সবসময় সেনাবাহিনীকে পাবেন।
সেনা সদরের এই কর্মকর্তা বলেন, ২৮ ডিসেম্বর থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেনাবাহিনীর কার্যক্রমের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী ১৭২টি অবৈধ অস্ত্র এবং ৫২৭ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে।
তিনি বলেন, গত এক মাসে যৌথ অভিযানে ৩৩৪ মাদক কারবারি ও মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অবৈধ মাদকদ্রব্য যেমন- ইয়াবা, ফেনসিডিল, অবৈধ মদ উদ্ধার করা হয়েছে। সবমিলিয়ে গত এক মাসে বিভিন্ন ধরনের অপরাধে সম্পৃক্ত দুই হাজার ১৪২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার সহায়তা চাইলে সেনাবাহিনী সেভাবে কাজ করবে বলেও জানান তিনি।
বান্দরবানে ২২ জন শ্রমিক অপহরণের বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের কোনো একটি গ্রুপ অপহরণ করেছে। তাদের উদ্ধারের জন্য টহল চলমান রয়েছে।
কর্নেল শফিকুল বলেন, কুকি চিনের দৌরাত্ম্য অবরোধ করতে পেরেছি। তাদের কয়েকটি ক্যাম্প ধ্বংস করতে পেরেছি। অনেক বম পরিবার তাদের জায়গায় চলে আসছে।
তিনি আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন সময় যারা আহত হয়েছেন, তাদের সুচিকিৎসার জন্য সেনাবাহিনী আজ পর্যন্ত তিন হাজার ৮৫৯ জনকে দেশের বিভিন্ন সিএমএইচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে, যার মধ্যে ৪১ জন এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
১০ কোটি ৬৭ লাখ ৮৫ হাজার ৩২৪ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক এবং তার স্ত্রী হনুফা আক্তার রিক্তার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
দুদকের ব্রিফিং
আক্তার হোসের বলেন, সাবেক রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে ৭ কোটি ৩৯ লাখ ৪১ হাজার ৩৫১ টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
অন্য মামলাটি করা হয়েছে মো. মুজিবুল হকের স্ত্রী হনুফা আক্তার রিক্তার বিরুদ্ধে। তার স্বামী মো. মুজিবুল হক সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে পরস্পর যোগসাজশে ৩ কোটি ২৮ লাখ ৪৩ হাজার ৯৭৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগদখলে রাখায় হনুফা আক্তার রিক্তারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা এবং তার স্বামী মো. মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় পৃথক একটি মামলা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
বাংলা একাডেমিতে ১৭৫ জনের নিয়োগে জালিয়াতি ও বিভিন্ন অনিয়মের খোঁজে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট ইউনিট।
সোমবার সকালে দুদকের একজন সহকারী পরিচালক আসিফ আল মাহমুদের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম অভিযানের বিষয়টি গনমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
২০২২ সালে তৎকালীন মহাপরিচালক নুরুল হুদাসহ সংশ্লিষ্টরা চাকরির আবেদন ফরম থেকে শুরু করে পদে পদে দুর্নীতি করেছেন। এমন কি চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে ১০ লাখ টাকা করে ঘুষ নেন তারা বলে জানায় দুদক।
দুদক আরও জানিয়েছে, ২০২২ সালে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ১৮০ জনের বিজ্ঞপ্তি দেয় বাংলা একাডেমি। ৫০ হাজার নিয়োগ প্রার্থীর কাছ থেকে অন্তত ২ কোটি টাকা জমা হয়। এরমধ্যে অর্ধকোটি টাকা লুটপাট করেন তখনকার মহাপরিচালক নুরুল হুদাসহ অন্যরা।
একইভাবে ৪ হাজার প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দেখানো হলেও মৌখিক পরীক্ষার ডাকা হয় মাত্র ৫০০ জনকে। তবে ফল প্রকাশ না করেই ১৭৫ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। যেখানে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকে স্থায়ীকরণ, আত্মীয়-স্বজন ও কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়মের লঙ্ঘন করে চাকরি দেয়ার প্রমাণ পেয়েছে দুদক। এমনকি কর্মচারী নিয়োগে ১০ লাখ টাকা করে ঘুষ নেন বাংলা একাডেমি সংশ্লিষ্টরা।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম জানান, অতীতে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়োগের বিষয়টি তিনিও শুনেছেন। অপরাধের প্রমাণ মিললে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সারা দেশে গত ২৪ ঘন্টায় বিভন্ন অপরাধে ১ হাজার ৫০৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরমধ্যে যৌথবাহিনীর অভিযান অপারেশন ডেভিল হান্টে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৫২৯ জন। এ নিয়ে অপারেশন ডেভিল হান্টে মোট গ্রেপ্তার হয়েছে ৫ হাজার ২৬৯ জন।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
এতে বলা হয়, রোববার সন্ধ্যা থেকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের গ্রেপ্তার ছাড়াও একটি পিস্তল, ১টি দেশীয় পাইপ গান, ১টি পিস্তলের গুলির খোসা, ১টি লাল রংয়ের তাজা সীসার কার্তুজ, ২টি কার্তুজের খোসা ও চাপাতি/রামদাসহ বিভিন্ন দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সদর আরও দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ও অন্যান্য অপরাধে রোববার সন্ধ্যা থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১ হাজার ৫০৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে অপারেশন ডেভিল হান্টে গ্রেপ্তার হয়েছে ৫২৯ জন এবং অন্যন্য মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত ৯৭৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি অংশ নতুন ছাত্রসংগঠন গঠনের ঘোষণা দিয়েছে। ‘স্টুডেন্ট ফার্স্ট, বাংলাদেশ ফার্স্ট’ স্লোগানকে ধারণ করে এই সংগঠন পরিচালিত হবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। তবে এটি কোনো রাজনৈতিক দলের অনুসারী সংগঠন হবে না বলে দাবি তাদের।
আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার নতুন সংগঠনের পরিকল্পনা তুলে ধরেন। লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন তিনি এবং আব্দুল কাদের।
আবু বাকের মজুমদার জানান, নতুন সংগঠনের আনুষ্ঠানিক নাম, নেতৃত্ব ও আত্মপ্রকাশের তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে সদস্য সংগ্রহ ও জনমত জরিপের কাজ শুরু হয়েছে, যা আজ সোমবার ও আগামীকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত চলবে।
সংগঠকদের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি কোনো লেজুড়বৃত্তিক সংগঠন হবে না। সংগঠনের কাঠামো ও নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে বলে উল্লেখ করেন সাবেক সমন্বয়ক তাহমিদ আল মুদাস্সির। তিনি বলেন, ‘আমরা কারো মাদার পার্টির লেজুড়বৃত্তি করব না। আমাদের নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে গণতান্ত্রিকভাবে ও অভ্যন্তরীণ কাউন্সিলের মাধ্যমে।’
সংগঠনের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দপ্তর সেল সম্পাদক জাহিদ আহসান বলেন, ‘কোনো বিদ্যমান রাজনৈতিক দলের অনুসারী বা তাদের মাদার পার্টি হিসেবে কাজ করার পরিকল্পনা আমাদের নেই। আমাদের সংগঠনের ভিত্তি হবে জুলাই অভ্যুত্থান ও ছাত্রসমাজের রায়।’
নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মটি বিলুপ্ত হবে কিনা প্রশ্নে সাবেক সহসমন্বয়ক রিফাত রশিদ স্পষ্ট বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ নতুন ও স্বতন্ত্র উদ্যোগ, যার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সাংগঠনিক সম্পর্ক নেই।’
সংগঠনটির তরফ থেকে জানা যায়, দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসা পর্যায়ে অনলাইন ও অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। সংগঠনটি আত্মপ্রকাশের সুনির্দিষ্ট সময় জনমত জরিপের অগ্রগতির ওপর নির্ভর করবে।
বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী সব জনতাকেই নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জনতা বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে আন্দোলন করছে। এক্ষেত্রে শুধু তৌহিদি জনতা নয়, জনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী সব জনতাকেই নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।’
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড-এর ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও কোস্ট গার্ড দিবস-২০২৫ উদযাপন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের নদীপথ ও সমুদ্র উপকূলের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব কোস্ট গার্ডের, যা তারা খুব ভালোভাবে সম্পন্ন করে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার সীমান্তে মাঝে মাঝে বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। কোস্ট গার্ড সেগুলো সফলতার সঙ্গে সমাধান করছে।
‘বিভিন্ন সময়ে পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা আমাদের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করে নিয়ে যায়। এসব ক্ষেত্রেও কোস্ট গার্ড ভালো ভূমিকা রাখছে। কোস্ট গার্ড ও বিজিবির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় উপকূল এলাকা আমাদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে,’ বলেন উপদেষ্টা।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘পাসপোর্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট পাওয়া সহজ হবে না। কারণ ভোটার আইডি কার্ড ছাড়া পাসপোর্ট করা যাবে না।’
‘তাই রোহিঙ্গারা যেনো জাতীয় পরিচয়পত্র না পায়; সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আর যারা ইতোমধ্যে পেয়েছে তাদের ব্যাপারে যাচাই-বাছাই করা হবে।’
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, দুর্নীতি আমাদের বড় সমস্যা। এটি আমাদের সব ক্ষেত্রকে গ্রাস করে নিয়েছে। গত ছয় মাসে দুর্নীতির পরিমাণ অনেক কমেছে। তবে এটি এখনো সহনীয় পর্যায়ে আসেনি। দুর্নীতি যদি কমানো যায়, তাহলে সব সেক্টরে উন্নতি হবে।
এসময় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল জিয়াউল হক উপস্থিত ছিলেন।
গণঅভ্যুত্থানের শহীদেরা ‘জুলাই শহীদ’ এবং আহতরা ‘জুলাই যোদ্ধা’ নামে পরিচিতি পাবেন বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম।
আজ সোমবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা এ তথ্য জানান।
জেলা প্রসাশকদের সাথে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন, তারা ‘জুলাই শহীদ’ নামে খ্যাত হবেন। এই নিরিখে তাদের পরিবারগুলো সনদ ও পরিচয়পত্র পাবেন। অভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন, তারা ‘জুলাই যোদ্ধা নামে’ খ্যাত হবেন। তারা এই নিরিখে সনদ ও পরিচয়পত্র পাবেন এবং অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা ও আজীবন চিকিৎসা সুবিধা পাবেন। পাশাপাশি তারা ভাতাও পাবেন।
তিনি বলেন, যারা জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবার এককালীন ৩০ লাখ টাকা পাবেন সঞ্চয়পত্রের নিরিখে। চলতি অর্থ বছরেই তাদের সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা দেওয়া হবে। বাকি ২০ লাখ টাকা সঞ্চয়পত্রের নিরিখে আগামী অর্থবছরের জুলাই মাস থেকে পাবেন।
জুলাই-আগস্ট গণঅভুত্থানে আহতদের তালিকা যাচাই সহজীকরণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, গণঅভুত্থানে আহতদের তালিকার সঠিকতা যাচাই, ফাউন্ডেশন কর্তৃক শহীদ পরিবারকে অর্থ সহায়তা প্রদান এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য পিজি হাসপাতালসহ অন্যান্য বিশেষায়িত হাসপাতালে প্রেরণের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
জুলাই অধিদপ্তর গঠনের প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, ‘আশা করছি চলতি সপ্তাহে অধিদপ্তর গঠন হয়ে যাবে। অধিদপ্তর করার নিরিখে একটি নীতিমালাও হয়েছে।’
আন্দোলনে আহতরা তিনটি ক্যাটাগরিতে সহায়তা পাবেন জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আহতরা আজীবন চিকিৎসা সুবিধা পাবেন। তারা ভাতাও পাবেন। যারা গুরুতর আহত তারা এককালীন পাঁচ লাখ টাকা এবং প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। একটি অঙ্গহানি হয়েছে এমন আহত যারা আছেন তারা প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা ভাতা এবং এককালীন ৩ লাখ টাকা পাবেন। সামান্য আহত ছিলেন, চিকিৎসা নিয়েছেন, ভালো হয়ে গেছেন, তারা চাকুরিসহ পুনর্বাসন কর্মসূচিতে অগ্রাধিকার পাবেন। তারা কোনো ভাতা পাবেন না।
আহতরা বিভিন্ন মাত্রায় প্রশিক্ষণ পাবেন। সরকারি, আধা-সরকারি ও অন্যান্য চাকুরিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের কর্মসংস্থান করা হবে। তারা মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ পাবেন বলেও জানান তিনি।
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে জানিয়ে ফারুক ই আজম বলেন, আজকের সভায় অনেক ডিসি অভিযোগ করেছেন, বিভিন্ন জায়গায় অনেকে মুক্তিযুদ্ধ না করেও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন। এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য জেলা প্রশাসকদের মধ্য থেকে আমাদের জানানো হয়েছে। তারা এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা চেয়েছেন।
ডিসিদের দেয়া নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা বলেছি, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল পুনর্গঠন হয়েছে। জামুকার যে আইনটি ছিল, তারা সেটিতে সংশোধনী আনছেন। মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞার নিরিখে এই সংশোধনী আসছে। এই সংশোধনী আসার পর মুক্তিযোদ্ধা সংসদও পুনর্গঠিত হবে। সংসদ পুনর্গঠিত হলে প্রত্যেক জেলায় জেলায় আমরা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের শনাক্ত করার চেষ্টা করবো। যাদের আমরা শনাক্ত করতে পারবো তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
ফারুক ই আজম বলেন, দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বিষয়ে জেলা প্রশাসকরা তাদের পর্যবেক্ষণ আমাদের কাছে উপস্থাপন করেছেন। সেগুলো আমরা শুনেছি। যে বিষয়গুলোতে তাদের তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দেওয়ার, সেটি তাদের দেওয়া হয়েছে। আর যেসব বিষয়ে পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, সেগুলো আমরা নোট করে নিয়েছি এবং সেগুলো নিয়ে মন্ত্রণালয় কাজ করবে।
স্থানীয় পর্যায়ে পুর্নবাসন কার্যক্রম, কাবিখাসহ বিভিন্ন বরাদ্দগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য ডিসিদের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই বরাদ্দের নিরিখে যে প্রকল্পগুলো গ্রামীণ অবকাঠামোতে গ্রহণ করা হবে, সেগুলো যাতে যথাযথভাবে হয়।
তিনি বলেন, বরাদ্দপত্রের ক্ষেত্রে আগের যে কেন্দ্রীয় প্রথা ছিল, সেটি আমরা পরিবর্তন করেছি। এগুলো সম্পর্কে তাদের ধারণা দিয়েছি। যেমন কম্বল আগে কেন্দ্রীয়ভাবে সংগ্রহ করে বিতরণ করা হতো। এখন সেটি মাঠ পর্যায়ে সংগ্রহ করে মাঠ পর্যায়ে বিতরণ করা হচ্ছে। একইভাবে গৃহ নির্মাণের সরঞ্জামগুলো স্থানীয় পর্যায়ে সংগ্রহ করে চাহিদার নিরিখে বিতরণ করা হবে। কোনোটাই আর কেন্দ্রীয়ভাবে রাখা হয়নি। গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণের ক্ষেত্রে কোনো রকমের বৈষম্য যেনো সৃষ্টি না হয়, এগুলো সম্পর্কে তাদের সতর্ক করা হয়েছে।
দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, মন্ত্রণালয়ের সাইক্লোন সেন্টারসহ যে স্থাপনাগুলো গ্রামীণ পর্যায়ে আছে, সেগুলোর যাতে যথাযথ ব্যবহার হয় সেই বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
লেখক-পাঠক ও দর্শনার্থীদের পদচারণে জমজমাট মেলা প্রাঙ্গণ। দলবেঁধে আসছেন আর বই কিনছেন সাহিত্যপ্রেমীরা। সর্বত্রই দর্শনার্থীদের সরব উপস্থিতি। বইপ্রেমীদের মেলার দিন যতই গড়াচ্ছে ততই বাড়ছে বই কেনার হিড়িক। ছুটি শেষে সাপ্তাহিক অফিস শুরুর প্রথম দিন রোববার বিকেল থেকেই বইমেলা তার চিরচেনা রূপ পেয়েছে। যেন যৌবন পার করছে বইপ্রেমীদের প্রাণপ্রিয় এ মেলা। সব শ্রেণি-পেশা আর বয়সি মানুষের যেন মঞ্জিল হয়ে উঠেছে এবারের বইমেলা।
রোববার বিকেলে মেলাপ্রাঙ্গণ গিয়ে দেখা যায়, লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ। ছেলে থেকে বুড়ো বিভিন্ন মানুষ আসছেন মেলায়। বেশির ভাগের হাতেই ছিল বইয়ের ব্যাগ। অন্যান্য দিনের মতো বেশি ভিড় দেখা যায় মেলার শিশু কর্নার ও স্টলগুলোতে।
বিকেল ৩টায় অমর একুশে বইমেলার দ্বার খোলার পর থেকেই প্রবেশ করতে থাকেন দর্শনার্থীরা। বেলা যত বেড়েছে মেলায় দর্শনার্থীদের সংখ্যাও বেড়েছে। দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে মেলায় প্রবেশ করতে যেন কোনো ক্লান্তি নেই দর্শনার্থীদের। ভেতরে প্রবেশ করেই টার্গেট করে গিয়েছেন প্রকাশনাগুলোতে। কিনেছেন প্রিয় লেখকের বই। তবে বইমেলায় ক্রেতার চেয়ে পাঠকরা স্টলগুলোর সামনে বেশি ভিড় করেছেন। বইয়ের মলাট উল্টে কেউ পড়েছেন বা কেউ দেখেছেন।
জানা গেছে, দর্শনার্থীদের সরব উপস্থিতিতে এদিন মেলায় বেচাবিক্রিও হয়েছে বেশ। মেলা শুরুর সময় থেকেই ব্যস্ত সময় পার করেছেন প্রকাশনাগুলোতে থাকা বিক্রয়কর্মীরা। বেচাবিক্রি ভালো হওয়ায় হাসি ফুটেছে প্রকাশকদের মুখেও।
অনিন্দ্য প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী শাকিল হাসান বলেন, ‘মেলায় আজ দর্শনার্থী অনেক বেশি। বেচাবিক্রিও হচ্ছে খুব ভালো। আশা করি, আগামী দিনগুলোতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।’
মেলায় যারা এসেছেন তাদের বেশির ভাগ মানুষই স্টলের সামনে ভিড় জমিয়েছেন। তাদের প্রত্যেকের হাতেই বই দেখা গেছে। খালি হাতে তেমন কেউই ছিলেন না। পছন্দের কিংবা নতুন বই পেলেই তা দেখছিলেন পাঠকরা।
আগামী প্রকাশনীর দায়িত্বরত কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘স্টলের সামনে ভিড় থাকলেও বই কিনছেন খুব কম মানুষ। আমাদের নতুন বইগুলো এখনো অনেকেই দেখছেন।’
প্রথমা প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী আল ইমরান বলেন, ‘যারা আসছেন, তারাই কমবেশি বই দেখছেন, কিনছেন কম। বাছাই করা তালিকা ধরে বই কেনা এখনো শুরু হয়নি।’
রোববার মেলায় নতুন বই এসেছে ১০৪টি। এ দিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘জহির রায়হানের সাহিত্যকর্মে ঐতিহাসিক ঘটনার বিচার’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহুল আহমদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মশিউল আলম এবং আহমাদ মোস্তফা কামাল। সভাপতিত্ব করেন মাহবুব হাসান।
‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি ও গবেষক সুমন সাজ্জাদ এবং শিশুসাহিত্যিক শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী আজহারুল ইসলাম রনি এবং ডা. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। গতকাল ছিল মো. আবুজার গিফারীর পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘শিল্পতরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ এবং মোবাস শিরীন মোস্তফার পরিচালনায় ‘বেণুকা ললিতকলা কেন্দ্র’- এর পরিবেশনা।
সোমবারের বইমেলা
আগামীকাল সোমবার মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘জীবন ও কর্ম: আল মাহমুদ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন মজিদ মাহমুদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন মুসা আল হাফিজ এবং কাজী নাসির মামুন। সভাপতিত্ব করবেন মাহবুব সাদিক।
স্যানিটারি ন্যাপকিনের দুই স্টল বন্ধ
আপত্তি থাকায় অমর একুশে বইমেলায় নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা পণ্য ‘স্যানিটারি ন্যাপকিন’-এর দুটি স্টল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বইমেলায় অনুমোদনহীন পণ্য বিক্রির জন্য স্টল দুটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বইমেলা কর্তৃপক্ষ।
নারীদের প্রয়োজন ও সচেতনতা বৃদ্ধির কথা ভেবে একটি কর্নারে প্রাণ- আরএফএল গ্রুপের স্বাস্থ্য সুরক্ষা পণ্য ব্র্যান্ড ‘স্টে-সেফ’ স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রদর্শন করা হয়। আপত্তির ভিত্তিতে মেলার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান প্রদর্শনী ও বিক্রি বন্ধ করে অন্য কোনও পণ্য সেখানে উপস্থিত করতে প্রাণ- আরএফএলকে চিঠি দেয়। এর ভিত্তিতে সরোবর প্রতিষ্ঠানটি মেলা থেকে তাদের পণ্যটি তুলে নেয়।
বাংলা একাডেমি বলছে, ‘বই ছাড়া অন্যকিছু বিক্রির সুযোগ বইমেলায় নেই বিধায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে’, তবে চিঠির বিষয়ে তারা কিছু জানে না। আর ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে— বাংলা একাডেমির সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই তারা চিঠি দিয়েছে। আর ‘স্টে-সেফ’ নামে পণ্যের বিষয়ে এর উৎপাদক প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয়— ‘মেলায় এটি বিক্রি করা হচ্ছিল, এমন নয়। এটি ফ্রি দেওয়া হচ্ছিল।’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান এই চার দেশ মিলে একটি যৌথ অর্থনীতি গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তিনি মনে করেন, ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে যৌথ অর্থনীতি গড়ে তুলতে পারলে এই চার দেশ লাভবান হবে। ইতোমধ্যে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে তিনি জানান।
আজ রোববার রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস এসোসিয়েশনের সম্মেলন ২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, প্রাকৃতিক দিক থেকে আমরা অত্যন্ত সৌভাগ্যবান। এর পাশাপাশি আমাদের রয়েছে বিপুল জনগোষ্ঠী, যা দেশের জন্য বড় সম্পদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের তরুণরা বিশ্ব জয় করতে পারে। তাই এই প্রজন্মের জন্য দরজা খুলে দিতে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, জুলাই আগস্ট মাসে আমাদের তরুণরা যা দেখিয়েছে, তা পৃথিবীর অন্য কোথাও দেখাতে পারিনি।
দূর্নীতি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাধা বলে তিনি উল্লেখ করেন। ড. ইউনূস সরকারি সেবাসমূহকে অনলাইনে নিয়ে আসার জন্য জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ ও অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ আরও উন্নত করতে দেওয়া মার্কিন সহায়তা বাতিল করা হয়েছে।
আজ রোববার সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এমন তথ্য জানিয়েছে ডিপার্টমেন্ট অব গভার্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (ডিওজিই)।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করতে দেওয়া ২ কোটি ৯০ লাখ ডলারের বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উন্নয়নে মার্কিন তহবিল বাতিল
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ডিওজিই গঠন করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ককে এটির প্রধান করা হয়েছে। বিভিন্ন খাতের বরাদ্দে কাটছাঁট করা এই বিভাগের অন্যতম লক্ষ্য।
ডিওজিই যে ১৫টি অনুদান বাতিলের তথ্য দিয়েছে, তাতে বাংলাদেশের ২৯ মিলিয়ন ডলারও রয়েছে। এক্স পোস্টে বলা হয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করতে’ এই অনুদান দেওয়ার কথা ছিল, তা বাতিল করা হয়েছে।
চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনে দেশে এসেছে ১৩১ কোটি ২২ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। এতে করে প্রতিদিন গড়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৮ কোটি ৭৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।
আজ রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুসারে, দেশীয় মুদ্রার হিসাবে (১ ডলার= ১২২ টাকা) ১৬ হাজার ৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা রেমিট্যান্স এসেছে এই অর্ধেক মাসে।
শুধু রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৬ কোটি ৬৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার। বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৮৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৭৫ কোটি ৩৯ লাখ ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩০ লাখ ডলার।
১ ফেব্রুয়ারি রেমিট্যান্স এসেছে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার। ২ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি দেশে এসেছে ৬৫ কোটি ২৩ লাখ ২০ হাজার ডলার।