সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫
২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
এইচআরএসএসের প্রতিবেদন

জানুয়ারিতে রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত ১৫, আহত ৯৮৭ জন

নিহতদের মধ্যে বিএনপির ৮, আওয়ামী লীগের ৬ এবং জামায়াতের নেতা-কর্মী ১ জন * দলীয় অন্তর্কোন্দলে প্রাণ হারিয়েছেন বিএনপির ৫ ও আওয়ামী লীগের ৪ নেতা-কর্মী * এ মাসে রাজনৈতিক মামলা দায়ের ২৫টি, মোট আসামি সাড়ে ৫ হাজারের বেশি * জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার অন্তত ২২৮ জন * ১৯টি হামলার ঘটনায় নির্যাতন ও হয়রানির শিকার কমপক্ষে ২৮ জন সাংবাদিক
ছবি: সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ২১:১৭

জানুয়ারি মাসে সারা দেশে ১২৪টি ‘রাজনৈতিক সহিংসতার’ ঘটনায় ১৫ জন নিহত এবং ৯৮৭ জন আহত হয়েছেন। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচআরএসএস) ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য ও প্রতিবেদনের আলোকে সোমবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পাশাপাশি সারা দেশে পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে ঘটে যাওয়া সহিংসতাগুলোর পরিসংখ্যানও তুলে ধরা হয়।

রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ঘটনাপ্রবাহ উল্লেখ করে প্রতিবেদনে জানানো হয়, হত্যাকাণ্ডসহ মারামারির ঘটনায় আহত হওয়ার বেশির ভাগ কারণই ছিল দলীয় অন্তর্কোন্দল। বিশেষত গত মাসে ১৫ জন নিহতের মধ্যে বিএনপির অন্তর্কোন্দলেই নিহত হন পাঁচজন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৬৭৭ জন। এ ছাড়া ক্ষমতাসীন না থাকার পরেও আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের অন্তর্কোন্দল, বিএনপি-আওয়ামী লীগ, বিএনপি-জামায়াত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের অন্তর্কোন্দল এবং ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘটিত সংঘর্ষে ৩১০ জন আহত হয়েছেন।

এইচআরএসএসের নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মাসজুড়ে রাজনৈতিক সহিংসতা, হেফাজতে ও নির্যাতনে মৃত্যু, গণপিটুনিতে হত্যা, নারী ও শিশু নির্যাতন, পাহাড়ি ছাত্র-জনতার ওপর হামলা, দেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় মাজারে হামলা ও ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটেছে।

এ ছাড়া ভারত সীমান্তে সংঘর্ষ, উত্তেজনা, বিএসএফের বিধি লঙ্ঘন করে বেড়া নির্মাণ, উসকানি, এমনকি নিরীহ বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যা এবং মিয়ানমারের আরাকান আর্মি কর্তৃক বাংলাদেশি জাহাজ আটক এবং সীমান্তে গুলি, মাইন ও মর্টারশেল বিস্ফোরণের মতো বিভিন্ন বিষয় মানবাধিকার পরিস্থিতির বিষয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

রাজধানীতে বিভিন্ন দাবি আদায়ে রাস্তা বন্ধ করে প্রতিনিয়ত জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসির দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে ঢাকার সাত কলেজ আন্দোলনে নামলে ঢাবির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া জেল-হাজত, থানা ও পুলিশের ওপর হামলা করে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টদের আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার অন্তত ৪টি ঘটনা ঘটেছে, যেখানে বিএনপির অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সংশ্লিষ্টের অভিযোগ রয়েছে।

হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচআরএসএস) প্রতিবেদন বলছে, জানুয়ারি মাসে কমপক্ষে ১২৪টি ‘রাজনৈতিক সহিংসতার’ ঘটনায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন এবং আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৯৮৭ জন। সহিংসতার ১২৪টি ঘটনার মধ্যে বিএনপির অন্তর্কোন্দলে ৬৮টি ঘটনায় আহত হয়েছেন ৬৭৭ জন ও নিহত ৫ জন, ২২টি বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ১০৬ জন ও নিহত চারজন, ৩টি বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ৬০ জন ও নিহত ১ জন, ৩টি আওয়ামী লীগের অন্তর্কোন্দলে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ৫০ জন ও নিহত ৪ জন, ৫টি বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের অন্তর্কোন্দলে, ৬টি ছাত্রলীগ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের মধ্যে এবং ১৭টি ঘটনা ঘটেছে বিভিন্ন দলের মধ্যে।

নিহত ১৫ জনের মধ্যে অন্তর্কোন্দলে বিএনপির পাঁচজন ও আওয়ামী লীগের চারজন নিহত হয়েছেন। বাকি ৬ জন নিহত হয়েছেন বিরোধী পক্ষের হামলায়। ১৫ জন নিহতের মধ্যে আটজন বিএনপির, ছয়জন আওয়ামী লীগের এবং ১ জন জামায়াতের কর্মী সমর্থক। এ ছাড়া সারা দেশে সন্ত্রাসী ও দুর্বৃত্তের হামলায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির আরও অন্তত সাতজন রাজনৈতিক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এ মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ক্যাম্পাসে কমপক্ষে ৯টি ‘রাজনৈতিক সহিংসতার’ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৪৩ জন।

রাজনৈতিক মামলা ও সাংবাদিক নির্যাতনের তথ্য জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারিতে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের নামে কমপক্ষে ২৫টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ১৭২৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৪৯০৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এ মাসে কমপক্ষে ৩০৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যেখানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী অন্তত ২২৮ জন। এ মাসে অন্তত ১৯টি হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ২৮ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্ততপক্ষে ১৯ জন, হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন ২ জন ও গ্রেপ্তার হয়েছেন একজন। এ ছাড়া ২টি মামলায় ছয়জন সাংবাদিককে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ, ভিকটিমের পরিবার ও এইচআরএসএসের সংগৃহীত তথ্যানুযায়ী জানুয়ারি মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ও নির্যাতনে চারজন এবং বন্দুকযুদ্ধে একজন নিহত হয়েছেন। ২ জানুয়ারি সকালে রাঙামাটির লংগদু উপজেলার সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কাট্টলি বিল এলাকার কিচিংছড়ায় এ অজ্ঞাত ইউপিডিএফ সদস্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।

৬ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে পুলিশের পিটুনিতে ইয়াসিন মিয়া নামে একজন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে যৌথবাহিনীর অভিযানে আটকের পর নির্যাতন ও চিকিৎসা না দেওয়ায় সোনাপুর ইউনিয়নের ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান (৩৪) হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। গত ২৫ জানুয়ারি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকায় পদ্মা সেতুর পাশে এসআই নওশের আলির পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) মাদকবিরোধী অভিযানের সময় মিলন ব্যাপারী (৫৫) নামের এক মুদির দোকানদারকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।

এ ছাড়া ৩১ জানুয়ারি গভীর রাতে বাড়ি থেকে যৌথবাহিনীর হাতে আটকের পর অমানবিক নির্যাতনের কারণে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক মো. তৌহিদুল ইসলামের (৪০) মৃত্যু ঘটেছে। অন্যদিকে এ মাসে সারা দেশে কারাগারে কমপক্ষে ৭ জন আসামি মারা গিয়েছেন। ৭ জনের মধ্যে ৩ জন কয়েদি ও ৪ জন হাজতি। এ মাসে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক ৫টি হামলার ঘটনায় ২ জন বাংলাদেশি নিহত, আহত ২ জন ও ১ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ ছাড়া মিয়ানমারের সীমান্তঘেঁষা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে ৩ বাংলাদেশি আহত হয়েছেন।

গণপিটুনি, প্রতিমা ভাঙচুর এবং শ্রমিক নির্যাতন প্রসঙ্গে এইচআরএসএস জানায়, জানুয়ারিতে গণপিটুনির ১৩টি ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৯ জন এবং আহত হয়েছেন ৭ জন। এ ছাড়া এ মাসে হিন্দু সম্প্রদায়ের দুটি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সামনে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্রজনতা’র ব্যানারে আয়োজিত কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় ১৮ জন আহত হয়েছেন।

এছাড়া এ মাসে ৩৯টি শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৬ জন এবং আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৮৭ জন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং শ্রমিকদের সুরক্ষামূলক সরঞ্জামের অভাবে দুর্ঘটনায় ৫ জন শ্রমিক তাদের কর্মক্ষেত্রে মারা গেছেন।

এ প্রতিবেদনে পারিবারিক ও সামাজিক নানা কারণে হতাহতদের পরিসংখ্যান ও তথ্য উপস্থাপন করেছে এইচআরএসএস। এতে বলা হয়, জানুয়ারি মাসজুড়ে কমপক্ষে ১২৭ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৫৪ জন, যাদের মধ্যে ২৮ জন ১৮ বছরের কম বয়সি শিশু। এটা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়, ১৪ জন নারী ও কন্যাশিশু গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন ৩ জন নারী। ১৬ জন নারী ও কন্যাশিশু যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন তন্মধ্যে শিশু ৯ জন।

যৌতুকের জন্য নির্যাতনের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫ জন ও আহত হয়েছেন দুজন। পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন ২৫ জন এবং আত্মহত্যা করেছেন ২০ জন নারী। এসিড সহিংসতার শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন ১ জন নারী।

আরও উদ্বেগজনক তথ্য হচ্ছে- এ মাসের ৩১ দিনে সারা দেশে ৮৮ জন শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে যাদের মধ্যে ৩৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ৫২ জন শিশু শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।


সাবেক রাষ্ট্রপতি হামিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় ব্যক্তিগত সুখ বিলাসের জন্য রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে সংস্থাটি। রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে দুদক প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। গত ১৮ নভেম্বর এ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়।

দুদক জানায়, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও অন্যান্যের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি থাকাকালে ব্যক্তিগত সুখ বিলাসের জন্য ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে নিকুঞ্জ-১ আবাসিক এলাকায় সাজসজ্জা এবং সৌন্দর্য বর্ধন প্রকল্প বাবদ রাষ্ট্রের ২৪ কোটি টাকা ক্ষতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।

এ বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য একটি সমন্বিত অনুসন্ধান টিম গঠন এবং পরিচালক (বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্তু-২)-কে তদারককারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে কমিশন।


একাত্তরে লাখো মানুষ হত্যা করে একটি দল এখন জনগণের ভোট চায় : তারেক রহমান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘দেশের মানুষ ১৯৭১ সালেই দেখেছে, নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষার্থে তারা শুধু লাখ লাখ মানুষকে হত্যাই করেনি, তাদের সহকর্মীরা মা-বোনদের ইজ্জত পর্যন্ত লুট করেছিল। এই কথাটি আমাদেরকে মনে রাখতে হবে।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘কিছু কিছু মানুষ বা কোনো কোনো গোষ্ঠী ইদানীং বলতে শুনেছি বা বিভিন্ন জায়গায় কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় বলে যে, অমুককে দেখলাম, তমুককে দেখলাম, এবার অমুককে দেখুন। যাদের কথা বলে অমুককে দেখুন, তাদের তো দেশের মানুষ ১৯৭১ সালেই দেখেছে। ১৯৭১ সালে তারা তাদের নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে কীভাবে লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে। ঠিক যেভাবে পতিত স্বৈরাচার পালিয়ে যাওয়ার আগে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছিল ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য।

রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটের খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এ কথা বলেন। বিজয়ের মাস উপলক্ষে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি। এতে ছাত্রদলের সারাদেশের জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন ইউনিটের হাজারের বেশি নেতা-কমী অংশ নেয়।

তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কানাডা, আমেরিকা বানাতে চায় না, স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে চায়।’

সামনে বিএনপির জন্য অনেক কঠিন সময় অপেক্ষা করছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার যেভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েছিল, এখন একইভাবে কিছু ব্যক্তি বা দল একই চেষ্টা করছে।’

বিএনপির জোট সরকারের সময় জামায়াতে ইসলামীর দুইজন নেতা মন্ত্রী ছিলেন। সেই সময়ের উদ্ধৃতি দিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘কিছু কিছু ব্যক্তি বা দল ঠিক একই সুরে গান গাইছে বা একই সুরে কতগুলো কথা বলার চেষ্টা করছে। প্রশ্ন হচ্ছে, তাদেরও তো দুইজন ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে সেই সময় সরকারে ছিল। সেই দুইজন ব্যক্তি বিএনপি সরকারে শেষদিন পর্যন্ত থাকা প্রমাণ করে দেয় যে, তাদের পূর্ণ আস্থা ছিল খালেদা জিয়ার উপর। কারণ, তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন। সেজন্যই তারা শেষদিন পর্যন্ত ছিল। এখন তাদের দলের অন্য যে যত বড় বড় কথা বলুক না কেন, খালেদা জিয়া শেষ দিন পর্যন্ত দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন এবং দুর্নীতির অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে, এই আত্মবিশ্বাস তাদের মধ্যে ছিল।

তারেক রহমান বলেন, বিভিন্নভাবে বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র বিভিন্ন জায়গায় হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে পারে এ দেশের জনগণ এবং এই ষড়যন্ত্র জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রুখে দিতে পারে বিএনপি। এই ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে গণতন্ত্র। যেকোনো মূল্যে যদি জনগণের মতামতকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি, তাহলে অবশ্যই অনেক ষড়যন্ত্রকে আমরা রুখে দিতে পারব। কিন্তু ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে পারলেও সামনে অনেক কঠিন সময়।

তারেক রহমান আরো বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের কিছু ব্যক্তি বিভিন্ন জিনিসের টিকিট বিক্রি করে বেড়াচ্ছে। বিভিন্ন জিনিসের নিশ্চয়তা দিয়ে বেড়াচ্ছে। এখন আমি যতটুকু বুঝি—অনেক মুরুব্বি ব্যক্তি আছেন, এটি ধর্মীয় বিষয়—যা আমার না, আমি যদি সেটা দেওয়ার কথা বলি, অর্থাৎ ওয়াদা যদি করি, তাহলে আমি তার (আল্লাহর) সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছি। অর্থাৎ দোজখ-বেহেশত, দুনিয়ার সবকিছুর মালিক আল্লাহ। যেটা একমাত্র আল্লাহ বলতে পারেন, সেখানে যদি আমি কিছু বলতে চাই, আমার নরমাল দৃষ্টিকোণ থেকে আমি বুঝি, সেটি হচ্ছে শিরিক।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছাত্রদলের নেতাদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষকে বোঝাতে হবে যারা এসব কথা বলে, তারা শিরক করছে। যারা শুনবেন, তারাও শিরকের পর্যায়ে পড়ে যাবেন।

এর আগে সকালে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সঞ্চালনা করেন আরেক যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান (সোহেল)।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান প্রমুখ।


বায়তুল মোকাররমের সৌন্দর্যবর্ধনে ১৯৯ কোটি টাকার প্রকল্প

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সৌন্দর্যবর্ধন ও আধুনিকায়নে ১৯৯ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। রোববার (৭ ডিসেম্বর) ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উন্নয়নে সবচেয়ে বড় যে উদ্যোগটি গ্রহণ করা হয়েছে, সেটি হলো বায়তুল মোকাররমের আধুনিকায়ন, সৌন্দর্যবর্ধন ও উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯৯ কোটি টাকা। এরইমধ্যে এ অর্থায়নের সম্মতি পাওয়া গেছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে মসজিদের মূল কাঠামো ঠিক রেখে অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্যবর্ধন ও আধুনিকায়ন করা হবে, আধুনিক স্যানিটেশন ব্যবস্থা এবং বহিরাঙ্গণে আচ্ছাদিত করা হবে, অফিস ভবন ও মিনার নির্মাণসহ অন্য উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।

উপদেষ্টা বলেন, আমরা যথা দ্রুত সম্ভব এ প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারব, ইনশাআল্লাহ। সরকার তথা ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় মসজিদটিতে ইবাদতের যথোপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সচেষ্ট রয়েছে। আমরা সবার সহযোগিতা চাই, পরামর্শ চাই। বিশেষ করে মসজিদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে সবার দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করব।

উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা যত্রতত্র নোংরা-আবর্জনা ফেলব না, আমরা ডাস্টবিন ব্যবহার করব। মসজিদের ওযুখানা ও টয়লেট নিজে ব্যবহার করব এবং অন্যের ব্যবহার উপযোগী রাখতে যত্নশীল হব।


ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনে সম্পূর্ণ প্রস্তুত কমিশন : সিইসি

সিইসি নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কমিশনারগণ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
আপডেটেড ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৯:৩৬
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে অবহিত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।

রোববার (০৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কমিশনারগণ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নির্বাচন আয়োজনের অগ্রগতি সম্পর্কে জানান।

বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমান মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এবং নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়াও বৈঠকে যোগ দেন।

বৈঠকে সিইসি নাসির উদ্দিন জানান, নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে সব ধরনের প্রস্তুতি সঠিক ও সুন্দরভাবে এগোচ্ছে এবং ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন ও একই দিনে গণভোট আয়োজনের জন্য কমিশন সম্পূর্ণ প্রস্তুত।

প্রস্তুতিকালে ইসিকে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদানের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান সিইসি ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররা।

নির্বাচনের প্রস্তুতিকালে সর্বাত্মক সহযোগিতা করায় তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে নাগরিকরা নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে নিজেদের সম্পৃক্ত করেছেন, যা দেশে নির্বাচনী আমেজ সৃষ্টি করেছে।

এ সময় নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে সরকার।’

তিনি বলেন, ‘জাতির জন্য প্রতীক্ষিত এই নির্বাচনে আপনারা (ইসি) চালকের আসনে আছেন। আমাদেরকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতেই হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জাতিকে একটি সুন্দর নির্বাচন দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতিকে আমরা ইতিহাসের সেরা নির্বাচন উপহার দেওয়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে চলছি।

সূত্র : বাসস


একাত্তরে এইদিনে সাতক্ষীরায় ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ ৭ ডিসেম্বর সাতক্ষীরাবাসীর জীবনে এক মহিমান্বিত দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে সাতক্ষীরা সম্পূর্ণ মুক্ত ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, অসংখ্য ত্যাগ, মুক্তিযোদ্ধার আত্মোৎসর্গ এবং সাহসিকতার ফলেই অর্জিত হয় এই গৌরবময় বিজয়।

১৯৭১ সালের এই দিনে সাতক্ষীরার দামাল ছেলেরা থ্রি নট থ্রি আর এসএলআরের ফাঁকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে সাতক্ষীরা শহরে প্রবেশ করেন। ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা।

৯নং সেক্টরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকেই সাতক্ষীরা ছিল প্রতিরোধ সংগ্রামের প্রধান ক্ষেত্র। পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদররা এ অঞ্চলে ভয়াবহ নির্যাতন, লুটপাট ও হত্যাযজ্ঞ চালায়। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবনবাজি রেখে প্রতিটি আক্রমণের জবাব দেন। সংগঠিত প্রতিরোধের মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকা টাউনশ্রীপুর, ভোমরা, সাতক্ষীরা সদর শত্রুমুক্ত হতে থাকে।

১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা সমন্বিত আক্রমণে পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করে সাতক্ষীরা জেলার নিয়ন্ত্রণ নেন। এদিন সাতক্ষীরার আকাশে উড়েছিল স্বাধীন বাংলার পতাকা। মানুষের মুখে ফুটে ওঠে আনন্দের উচ্ছ্বাস-হানাদারমুক্ত স্বভূমিতে ফিরে আসার উষ্ণতার অনুভূতি।

সাতক্ষীরাকে মুক্ত করতে শহীদ নাজমুল, শহীদ কাজলদের মতো যারা আত্মোৎসর্গ করেছেন, তারা জাতির ইতিহাসে চিরস্মরণীয়। তাদের মহান ত্যাগের বিনিময়েই আজকের এই স্বাধীন মাটি, স্বাধীন দেশ।

মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান জানান, মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য সাতক্ষীরা ট্রেজারি থেকে অস্ত্র লুট আর ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে অলঙ্কার ও টাকা-পয়সা লুটের মধ্য দিয়ে শুরু মুক্তির সংগ্রাম। অষ্টম ও নবম সেক্টরের অধীনে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় ট্রেনিং শেষে ২৯ এপ্রিল সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তে প্রথম সম্মুখযুদ্ধ শুরু হয়। এ সময় পাকসেনাদের ২ শতাধিক সৈন্য নিহত হয়। ১৭ ঘণ্টাব্যাপী এ যুদ্ধে শহীদ হন মাত্র ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা। আহত হন ২ জন। এরপর থেমে থেমে চলতে থাকে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের গুপ্ত হামলা। এসব যুদ্ধের মধ্যে ভোমরার যুদ্ধ, টাউনশ্রীপুর যুদ্ধ, বৈকারী যুদ্ধ, খানজিয়া যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য। এ সব যুদ্ধে শহীদ হন সাতক্ষীরার ৩৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। সন্তান হারানোর বেদনা ভুলে সেদিন মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে রাস্তায় নেমে আসেন সাতক্ষীরার মুক্তিপাগল আপামর জনতা।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সাতক্ষীরা ইউনিটের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা সম শহিদুল ইসলাম জানান, ১৯৭১ সালের ২ মার্চ সাতক্ষীরা শহরে পাকিস্তানবিরোধী মিছিলে রাজাকাররা চাপড়া লজের সামনে গুলি করে হত্যা করে শহীদ আব্দুর রাজ্জাককে। আর সেখান থেকে শুরু হয় সাতক্ষীরার দামাল ছেলেদের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া। ২৯ এপ্রিল সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তে প্রথম সম্মুখযুদ্ধ শুরু হয়।

মুক্তিযোদ্ধারা ওয়্যার হাউস উড়িয়ে দেন। এতে ব্যাপক ভীত-সন্ত্রস্ত হয় পাকসেনারা। রাতের আঁধারে বেড়ে যায় গুপ্ত হামলা। পিছু হটতে শুরু করে পাকসেনারা। ৬ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় টিকতে না পেরে বাঁকাল, কদমতলা ও বিনেরপোতা ব্রিজ উড়িয়ে দিয়ে পাকবাহিনী সাতক্ষীরা থেকে পালিয়ে যায়। ৭ ডিসেম্বর জয়ের উন্মাদনায় মেতে ওঠেন সাতক্ষীরার দামাল ছেলেরা।


রায়েরবাজার থেকে ১১৪ জুলাই শহীদের মরদেহ উত্তোলন শুরু

আপডেটেড ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৪:৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শাহাদাত বরণকারী ১১৪ জনের পরিচয় শনাক্ত করতে, রায়েরবাজার কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন করা শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহ এ তথ্য জানান।

রবিবার সকাল থেকে মরদেহ উত্তোলনের কাজ শুরু করেছে সংস্থাটি। মরদেহগুলো তোলার পর ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা নিয়ে আবার যথাযথ প্রক্রিয়ায় দাফন করা হবে।

ছিবগাত উল্লাহ বলেন, ‘এই কবরস্থানে যারা নাম-পরিচয়হীন অবস্থায় শুয়ে আছেন, তাদের পরিচয় তখন যাচাই-বাছাই করা হয়নি। তাদের পরিচয় উদঘাটন করা জাতির প্রতি আমাদের একটি দায়িত্ব। আজ সেই মহান কাজের সূচনা হলো।’

জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার (ওএইচসিএইচআর) মাধ্যমে আর্জেন্টিনা থেকে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ লুইস ফন্ডিব্রাইডার ঢাকায় এসে পুরো কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, ‘এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে একাধিক বৈঠক হয়েছে। এ ব্যাপারে অজ্ঞাত শহীদদের পরিবার আবেদন করেছে। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে এসব কাজ পরিচালিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসরণ করে কবরস্থান থেকে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য লাশ উত্তোলন করা হচ্ছে।’

সিআইডি প্রধান বলেন, ‘লাশ শনাক্তের জন্য ইতিমধ্যে ১০ জন আবেদন করেছেন। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এখানে শহীদের সংখ্যা ১১৪ জনের বেশি। প্রকৃত সংখ্যা লাশ উত্তোলনের পর জানা যাবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘লাশগুলোর পোস্টমর্টেম করা হবে এবং ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হবে। পরে ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করে ধর্মীয় সম্মান বজায় রেখে পুনঃদাফন করা হবে।’

মো. ছিবগাত উল্লাহ বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিচয় শনাক্ত হলে, পরিবার চাইলে লাশ তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ডিএনএ সংগ্রহের পর, যে কেউ আবেদন করলে সহজেই শনাক্ত করা যাবে। সিআইডির হটলাইন নম্বরগুলো জানিয়ে দেওয়া হবে, যাতে যে কেউ যোগাযোগ করতে পারেন।’

গত ৪ আগস্ট মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহিদুল ইসলামের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান ১১৪টি মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশ অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে নিহত অজ্ঞাত ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্তের জন্যই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গত বছর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নিহত ১১৪ জন শহিদকে অজ্ঞাত পরিচয়ে মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা হয়।


সেন্টমার্টিন থেকে অপসারণ ১৮৫০ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য

কেওক্রাডং বাংলাদেশে’র দুইদিনের পরিচ্ছন্নতা অভিযান
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলঘেঁষা দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনকে প্লাস্টিক দূষণমুক্ত রাখতে দুই দিনব্যাপী ব্যাপক পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি পরিচালনা করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কেওক্রাডং বাংলাদেশ। দ্বীপের অলিগলি, সৈকত ও জনসমাগম এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৮৫০ কেজি অপচনশীল বর্জ্য। সংগৃহীত এসব বর্জ্য নৌপথে এনে পরে টেকনাফে পরিবেশবান্ধবভাবে অপসারণ করা হয়।

জানা যায়, শুক্রবার শুরু হয়ে শনিবার বিকেলে শেষ হওয়া এ অভিযানে স্থানীয় বাসিন্দা, বিভিন্ন পেশার মানুষ ও সেন্ট মার্টিনের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে মোট পাঁচ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক অংশ নেন। এই কর্মসূচির সহযোগিতায় ছিল ইউনিলিভার বাংলাদেশ।

কর্মসূচির সমন্বয়কারী মুনতাসির মামুন বলেন, দ্বীপের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা প্লাস্টিক বোতল, পলিথিন, প্যাকেটসহ নানা ধরনের বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তার ভাষায়, “সেন্ট মার্টিন ছোট একটি দ্বীপ। এখানে প্রতিদিন জমতে থাকা প্লাস্টিক যদি মূল ভূখণ্ডে নিয়ে না যাওয়া হয়, তবে তা একসময় সমুদ্রের জন্য ভয়াবহ ঝুঁকি তৈরি করবে। আমাদের প্রচেষ্টা ছিল সেই ক্ষতির পরিমাণ যতটা সম্ভব কমানো।”

তিনি আরও বলেন, পর্যটনের সম্ভাবনাময় দ্বীপটিতে সারা বছর পর্যটক প্রবেশের সুযোগ রাখা যেতে পারে; তবে সেই সংখ্যা অবশ্যই নিয়ন্ত্রিত হওয়া উচিত। এতে পরিবেশের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়বে না।

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ছৈয়দ আলম কেওক্রাডং বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “প্রায় ১৫ বছর ধরে তারা দ্বীপে পরিচ্ছন্নতার কাজ করে যাচ্ছে। স্থানীয় জনগণ ও পর্যটক সবাই সচেতন হলে সেন্ট মার্টিনকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।”

একই মত প্রকাশ করেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম। তিনি জানান, পর্যটন মৌসুমে হাজারো ভ্রমণপিপাসু এখানে আসেন। তাদের রেখে যাওয়া বর্জ্যই দ্বীপের পরিবেশগত ক্ষতির বড় কারণ। “এ ধরনের উদ্যোগ নিয়মিত হলে প্রবাল দ্বীপের সৌন্দর্য আগের মতোই অক্ষুণ্ণ থাকবে,” বলেন তিনি।

পরিচ্ছন্নতা অভিযানের আয়োজকরা জানান, এর আগেও তারা দ্বীপে একাধিকবার এমন কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। ভবিষ্যতেও পরিবেশ রক্ষায় এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।


সীমিত আকারে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বাজারে পেয়াজের দাম সহনীয় রাখতে আগামীকাল রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে সীমিত পরিসরে পেঁয়াজ আমদানির জন্য অনুমোদন (আইপি) দিয়েছে সরকার।

এতে প্রতিদিন ৫০টি করে আইপি (আমদানি অনুমতি) ইস্যু করা হবে। প্রত্যেকটি আইপিতে সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) কৃষি মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পেঁয়াজের বাজার সহনীয় রাখতে ৭ ডিসেম্বর থেকে সীমিত আকারে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি প্রদান করা হবে। প্রতিদিন ৫০টি করে আইপি (আমদানি অনুমতি) ইস্যু করা হবে। প্রত্যেকটি আইপিতে সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হবে।

কৃষি মন্ত্রণালয় জানায়, ১ আগস্ট থেকে অদ্যাবধি যেসব আমদানিকারক রপ্তানি অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন, কেবল তারাই আবেদন পুনরায় দাখিল করতে পারবেন।

এ ছাড়া একজন আমদানিকারক একবারের জন্য আবেদনের সুযোগ পাবেন বলেও জানানো হয়।

তাতে আরো জানানো হয়, পেঁয়াজের বাজার সহনীয় রাখতে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।


খালেদা জিয়ার এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ফ্লাইটকে ‘ভিভিআইপি’ অনুমোদন সরকারের

আপডেটেড ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৯:২২
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার জন্য নির্ধারিত এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ফ্লাইটকে ‘ভিভিআইপি’ হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষও ফ্লাইটের ল্যান্ডিং ক্লিয়ারেন্স দিয়েছে।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক ক্যাপ্টেন এস এম রাগীব সামাদ।

তিনি জানান, বেগম খালেদা জিয়াকে নিতে ৯ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় পৌঁছাবে এবং ১০ ডিসেম্বর ঢাকা ত্যাগ করবে। ভিভিআইপি মুভমেন্ট বিবেচনায় রেখে ল্যান্ডিং থেকে টেকঅফ পর্যন্ত সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও অপারেশনাল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

রাগীব সামাদ বলেন, “ফ্লাইটের প্রয়োজনীয় রুট ও অবতরণের সময় নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সব সংশ্লিষ্ট ইউনিটকে সক্রিয় করে দেওয়া হবে। যেন কোনো ধরনের বিঘ্ন ছাড়াই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের চলাচল সম্পন্ন করা যায়।”

এর আগে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত জানুয়ারিতে লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেখানে প্রথমে হাসপাতালে, পরে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে তিনি চিকিৎসা নেন। প্রায় চার মাস পর গত ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ অবস্থায় গত ২৩ নভেম্বর দিবাগত রাত থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।


জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত ১৮২ মরদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা অজ্ঞাত ১৮২ শহীদের মরদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে আগামী ৭ ডিসেম্বর (রবিবার)।

শহীদদের ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ) নমুনা সংগ্রহে রবিবার থেকে কাজ শুরু করবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার লুইস ফন্ডেব্রিডার এবং সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এই কাজ শুরু হবে।

এর আগে গত ২ ডিসেম্বর রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে অজ্ঞাত শহীদদের কবর পরিদর্শন করেন সিআইডির কর্মকর্তরা।

গত ৪ আগস্ট ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ দেন। পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতে আবেদনটি করেন মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক মাহিদুল ইসলাম।

আবেদনে বলা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু হয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ জীবন দেন।

‎সিআইডির ফরেনসিক ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান, বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জুলাই আন্দোলনে অজ্ঞাত শহীদদের মরদেহ উদ্ধারে কবরস্থান এলাকায় তাবু স্থাপন করা হয়েছে। সেখানেই মরদেহ উত্তোলন করার পর প্রক্রিয়াগত সব কাজ করা হবে।

এই অস্থায়ী তাবুতে ময়নাতদন্ত করা হবে। এরপর আবার মরদেহ যথাযথ প্রক্রিয়ায় দাফন করা হবে।


খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে উঠবেন, গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান

আপডেটেড ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৮:৫০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে মেডিক্যাল বোর্ডের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আমরা আশাবাদী তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে জানান বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, এর আগে এর চেয়েও প্রতিকূল অবস্থায় খালেদা জিয়া সুস্থ হয়েছেন। ডা. জাহিদ দেশবাসীকে আহবান জানিয়ে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের গুজবে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে ব্রিফিংকালে তিনি একথা বলেন।

ডা. জাহিদ জানান, বোর্ডের পরামর্শক্রমে খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে নিতে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু কাতার সরকার এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর যে উদ্যোগ নিয়েছিল সেটা কারিগরি ত্রুটিতে আসতে পারেনি। পরবর্তীতে অন্য ব্যবস্থা নিলেও বোর্ডের সদস্যরা জরুরিভাবে সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ওই মুহূর্তে ফ্লাই করা সঠিক হবে না। সেজন্য বিদেশ নেওয়ার বিষয়টি বিলম্বিত হচ্ছে। ভবিষ্যতে হয়তো শারীরিক অবস্থা বলে দেবে উনাকে কখন ও কবে নেওয়া যাবে।

তিনি বলেন, আমাদের মেডিকেল অ্যাম্বুলেন্স তৈরি আছে। দেশনেত্রীর চিকিৎসা ও শারীরিক অবস্থা ইউকে, আমেরিকা, চীন থেকে তার ফিজিক্যাল কন্ডিশনের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। দেশের সব মানুষ তার সুস্থতা চায়। তার স্বাস্থ্যে আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।

তিনি আরও বলেন, বেগম জিয়ার চিকিৎসায় তারেক রহমানও সার্বক্ষণিক সম্পৃক্ত আছেন। তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান এখন ঢাকায় এসে সার্বক্ষণিক দেখভাল করছেন। তিনি নিজেও মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যদের পরামর্শ নিচ্ছেন। এ অবস্থার মধ্যে বোর্ডের সদস্যরা দৃঢতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন। খালেদা জিয়া ফ্লাই করার অবস্থায় পৌঁছালেই চিকিৎসার জন্য লন্ডন নেওয়া হবে।


তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে দেশের পোশাক শিল্প

* ইউরোপের বাজার দখলে চীন, ভারত * জার্মানিসহ ইউরোপের ১২ দেশে কমেছে রপ্তানি * চাপে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্কিন শুল্ক চাপে পোশাক রপ্তানিতে ইউরোপের বাজারের দিকে ঝুঁকছে চীন, ভারতসহ বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশগুলো। এতে তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে পড়ছে দেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা। সুযোগ বুঝে বিদেশি ক্রেতারা দিচ্ছেন দাম কমিয়ে। চলতি বছর ইউরোপের বড় ক্রেতা জার্মানিসহ ইউরোপের ১২টি দেশে কমেছে রপ্তানি। এতে বেশি বিপাকে পড়েছে ছোট ও মাঝারি পোশাক কারখানা।

ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে দরকষাকষির পর বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে শুল্ক হার ২০ শতাংশে নামলে শীর্ষ রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পে কিছুটা স্বস্তি ফিরে। বাড়তি শুল্ক ও মজুরির কারণে চীনের অনেক ক্রয়াদেশ বাংলাদেশে আসবে এমন প্রত্যাশাই ছিল পোশাক শিল্প মালিকদের। তবে মার্কিন অর্থনীতির মন্দাভাবের কারণে সে আশা পূরণ হয়নি।

অধিকাংশ আমদানিকারক ও ক্রেতা বাড়তি শুল্কের ভার নিতে রাজি না হওয়ায় সংকটে আছেন রপ্তানিকারককরা। ত্রিপক্ষীয় দরকষাকষি নিয়ে টানাপড়নে গত তিন মাসে ধারাবাহিকভাবে কমেছে ক্রয়াদেশ। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা। নির্বাচনকে ঘিরে সম্ভাব্য রাজনৈতিক অস্থিরতার শঙ্কায় অর্ডার দিতে ভরসা পাচ্ছে না ক্রেতারা।

চট্টগ্রামের ক্লিফটন গ্রুপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘মনে করেছিলাম বাংলাদেশ একটি ভালো পর্যায়ে আছে ইন্ডিয়া এবং চায়নার তুলনায়। চাহিদা কম থাকায় আমাদের অর্ডার কম হচ্ছে। আমাদের খুব হার্ড টাইম যাচ্ছে।’

বিজিএমইএ পরিচালক সাইফুল্লাহ মনসুর বলেন, ‘রিটেইলাররা বলতেছে আমি কোনোভাবেই এটি ক্রেতাদের ওপর ইম্পজ করতে পারব না। ২০ শতাংশের অ্যাডজাস্টমেন্ট নিয়েই বড় শঙ্কা আমাদের। আর দ্বিতীয় বিষয়টি হলো বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা।’

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ৪৮ শতাংশ রপ্তানির হয় ইউরোপে। এ মহাদেশে এককভাবে সবচেয়ে বড় ক্রেতা জার্মানি। এছাড়া ফ্রান্স, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, সুইডেনসহ ১২টি দেশে রপ্তানি কমেছে তিন থেকে সবোর্চ্চ ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত। মার্কিন শুল্ক চাপের কারণে প্রতিযোগী অধিকাংশ দেশ ইউরোপে ঝুঁকে পড়ায় সেখানে মূল্য নিয়ে তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হচ্ছে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের। এ অবস্থায় কোন কোন দেশ কম মূল্য ক্রয়াদেশ নিলেও বন্দরের ট্যারিফসহ বিভিন্ন খাতে খরচ বাড়ায় বিপাকে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা।

বিজিএমইএ সহ-সভাপতি রফিক চৌধুরী বলেন, ‘আগে যারা ইউরোপ মার্কেটে কাজ করত, ওদের সঙ্গে আমাদের এটি প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। কার থেকে কে কম প্রাইজে অর্ডার নিবে। এতে আমরা বিপদে পড়ে যাচ্ছি।’

বিজিএমইএ পরিচালক রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘ইন্ডিয়া মার্কেট যখন ইউরোপে যাচ্ছে তখন আমরা ইউরোপের অর্ডার কম পাচ্ছি। সেই সঙ্গে আমাদের টেরিফ কমেনি, লোকাল প্রাইজ বেড়ে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে কস্টিং এর দিক দিয়ে অন্যান্য কান্ট্রির সঙ্গে আমরা পারছি না। কারণ আমাদের কম্পিটিটর হলো বাহিরের কান্ট্রি।’

অর্ডার না থাকায় আর্থিক সংকটে অনেক কারখানা বেতন দিতে না পারলেও ব্যাংক থেকে সহযোগিতা পাচ্ছে না। সংকট কাটিয়ে উঠতে সরকারের কাছ থেকে নীতি সহায়তা ও স্বল্প সুদে ঋণ চান উদ্যোক্তারা।

বিজিএমই সহ-সভাপতি রফিক চৌধুরী বলেন, ‘খারাপ সময় যাচ্ছে। বেতন দিতে পারছে না সঠিকভাবে। ব্যাংকগুলোও আর সেভাবে এগিয়ে আসছে না সাপোর্ট দিতে। ৫টি ব্যাংককে একসঙ্গে মার্জ করাতে কোনো ফান্ডই পাওয়া যাচ্ছে না।’

বিজিএমইএ পরিচালক সাইফুল্লাহ মনসুর বলেন, ‘ব্যাংকের যে সহযোগিতা এক্সপোর্টারদের দেয়া দরকার আমরা নতুন কিছুই চাচ্ছি না। পৃথিবীতে এক্সপোর্টদের যেভাবে নার্সিং করে বাংলাদেশে সেভাবে করে না। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের যদি সহায়তা করা হয় তাহলে আমাদের আরও ভালো হবে।’

২০২৫-২৬ অর্থবছরে পোশাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ডলার। অক্টোবর পর্যন্ত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রপ্তানি হয়েছে প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার।


খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নিলেই ঢাকায় আসবে কাতারের রয়েল অ্যাম্বুলেন্স

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ড সবুজ সংকেত দিলেই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেবে কাতারের রয়েল এয়ার অ্যাম্বুলেন্স।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এনামুল হক চৌধুরী গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। দলের পক্ষ থেকে কাতারের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনিই এই বিষয়ে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করছেন।

এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘ম্যডামের মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তক্রমে কাতারের রয়েল অ্যাম্বুলেন্স বাংলাদেশ আসবে। তারা এখন সেইভাবে প্রস্তুত আছেন। মেডিকেল বোর্ড যখনই সিদ্ধান্ত জানাবে তখনই এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবে এবং বেগম জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নিয়ে যাবে। সবকিছুই কাতার কর্তৃপক্ষ অ্যারেজমন্ট করেছে।’

জার্মানি থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আনার বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা নই, কাতার কর্তৃপক্ষই জার্মানি থেকে একটি অত্যাধুনিক এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের অ্যারেজমেন্ট করে দিচ্ছে।

এনামুল হক জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জন্য রয়েল কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়নে সবকিছু করা হচ্ছে। এখানে আমাদের কিছু নেই।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া শারীরিক অবস্থা আগের মতই আছে। মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে বেগম খালেদা জিয়াকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছেন।

একাধিক চিকিৎসকের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসন এখনও ফ্লাই করার সক্ষমতা অর্জন করেননি। সেজন্য লন্ডন যাত্রা বিলম্ব হচ্ছে।

তারা আরও জানান, গত দু’দিনে মেডিকেল বোর্ড কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। সেগুলোর প্রতিবেদনও তারা পর্যালোচনা করছেন। গতকাল (শুক্রবার) দু’দফা মেডিকেল বোর্ডের বৈঠক হয়। প্রতিদিনই বোর্ডের সভায় খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার নিয়মিত প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

গত ২৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চকিৎসাধীন আছেন বেগম খালেদা জিয়া।

অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একদল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড তাঁর চিকিৎসা দিচ্ছে। তারেক রহমানের সহধর্মিনী ডা. জুবাইদা রহমানও সেই বোর্ডের সদস্য।

বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নিয়ে যেতে শুক্রবার ডা. জুবাইদা ঢাকায় এসে পৌঁছান।সূত্র : বাসস


banner close