সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
১ পৌষ ১৪৩২

মানহীন হাসপাতাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ঝুঁকিতে দেশ

ছবি: সংগৃহীত
ইউএনবি
প্রকাশিত
ইউএনবি
প্রকাশিত : ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ১৫:০২

বাংলাদেশের বর্তমান স্বাস্থ্যসেবার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নীতি বাস্তবায়ন থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন। যেখানে শহরাঞ্চলে ৫৫ শতাংশ কঠিন বর্জ্য থাকছে উন্মুক্ত অবস্থায়। যা দূষণ, জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।

প্রয়োজন মতো আইন প্রণয়নের মারাত্মক পরিণতি এবং একটি সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা—এমনকি বাংলাদেশের এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি দেখভালেরও একটি নিবেদিত কর্তৃপক্ষ নেই।

দেশের মেডিকেল বর্জ্য উত্পাদন প্রতি বছর আনুমানিক ৩ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামগ্রিক বর্জ্য উত্পাদন প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার টনে দাঁড়িয়েছে। শুধু ঢাকায় দৈনিক প্রায় সাড়ে ছয় হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যা ২০৩২ সাল নাগাদ বেড়ে সাড়ে ৮ হাজার টনে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের মতে, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিদিন ১৫ লাখ টনেরও বেশি কঠিন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে মাত্র ৪০ শতাংশ সংগ্রহ করা হয় এবং ১০ শতাংশেরও কম পুনরায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

'হেলথকেয়ার ওয়েস্ট ইন বাংলাদেশ: কারেন্ট স্ট্যাটাস, দ্য ইমপ্যাক্ট অব কোভিড-১৯' এবং সাসটেইনেবল ম্যানেজমেন্ট উইথ লাইফ সাইকেল অ্যান্ড সার্কুলার ইকোনমি ফ্রেমওয়ার্ক শীর্ষক এক গবেষণায় পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে যে, কোভিড-১৯ ও অন্যান্য জরুরি চিকিৎসা সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা বাদ দিলে ২০২৫ সালে বাংলাদেশ প্রায় ৫০ হাজার টন মেডিকেল বর্জ্য (প্রতি শয্যায় ১ দশমিক ২৫ কেজি) উৎপন্ন করবে। যেগুলোর মধ্যে ১২ হাজার ৪৩৫ টন বিপজ্জনক হবে।

২০২২ সালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকায় প্রতিদিন প্রতি শয্যায় মেডিকেল বর্জ্য উৎপাদনের পরিমাণ ১ দশমিক ৬৩ কেজি থেকে ১ দশমিক ৯৯ কেজি। কোভিড-১৯ মহামারির পরে এটির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

কিছু অগ্রগতি সত্ত্বেও স্থায়ী চ্যালেঞ্জ

আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি) ২০১৫ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে কক্সবাজার জেলায় পাঁচটি মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুবিধা স্থাপন করেছে। এ ধরনের উদ্যোগ সত্ত্বেও মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ অব্যাহত রয়েছে, বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর এলাকায়।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) নিয়ে মাসিক গোলটেবিল আলোচনা সিরিজ এসডিজি ক্যাফের ১২তম পর্বের আয়োজন করে ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর প্রজেক্ট সার্ভিসেস (ইউএনওপিএস) বাংলাদেশ।

২০২৪ সালের ৩ অক্টোবরের এই অনুষ্ঠানে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা– বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ এবং সমাধান অন্বেষণ করা হয় এবং এসডিজি ১১, ১২ এবং ১৩ তুলে ধরা হয়। এর লক্ষ্য হলো- ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিরোধ, হ্রাস, পুনর্ব্যবহার এবং পুনঃব্যবহারের মাধ্যমে বর্জ্য উৎপাদন হ্রাস করা।

টেকসই সমাধানের উপর বিশেষজ্ঞদের অভিমত

অনুষ্ঠানটিতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. রওশন মমতাজ। তিনি তার প্রবন্ধে বাংলাদেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংকটের বাস্তবতা তুলে ধরেন।

তিনি একটি বড় পরিবারের বর্জ্য পৃথকীকরণ ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে উল্লেখ করেন যে, প্রতি ১৫ বছরে বর্জ্যের পরিমাণ দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশের অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, পৃথকীকরণের অভাব এবং দুর্বলভাবে পরিচালিত ল্যান্ডফিলগুলো পরিবেশগত সমস্যাগুলোকে আরও বাড়াচ্ছে।

ড. মমতাজ তিনটি আর অর্থাৎ- হ্রাস, পুনঃব্যবহার এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার ওপর জোর দিয়েছেন। অতিরিক্ত উত্পাদক দায়বদ্ধতা (ইপিআর) অবশ্যই একটি টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাঠামো বিকাশের জন্য বাস্তবায়ন ও প্রয়োগ করতে হবে।

ইউএনওপিএস বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সুধীর মুরালিধরন বলেন, ‘কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শুধু নিষ্পত্তি নয়; এটি আমাদের ভোগের ধরণগুলো পুনরায় আকার দেওয়া এবং স্থায়িত্বকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ও।’

যদিও মেডিকেল বর্জ্য বাংলাদেশের মোট কঠিন বর্জ্যের মাত্র ১ শতাংশ হলেও এর ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা পুরো বর্জ্য প্রবাহকে দূষিত করে এবং বিপজ্জনক করে তোলে।

নিয়ন্ত্রক কাঠামো ও এর সীমাবদ্ধতা

বাংলাদেশ সরকার কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অনুশীলন বাড়ানোর জন্য জাতীয় থ্রিআর কৌশল প্রণয়ন করেছে। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো তাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম উন্নত করতে এসব কৌশল অন্তর্ভুক্ত করেছে। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১-এ প্রথমবারের মতো এক্সটেন্ডেড প্রডিউসার রেসপনসিবিলিটি (ইপিআর) চালু করা হয়েছে।

এই বিধিমালা সত্ত্বেও, বাংলাদেশ এখনও মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি নিবেদিত কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। এর পরিবর্তে প্রিজম বাংলাদেশ, ওয়েস্ট কনসার্ন, সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট (সিএসডি), এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও) এবং আইসিডিডিআর,বি'র মতো সংস্থাগুলো মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিশেষ করে ঢাকায় নেতৃত্ব দিয়ে থাকে।

মেডিকেল বর্জ্য অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানিয়েছে, হাসপাতালের কিছু কর্মী সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনপা নিশ্চিতের পরিবর্তে পুনর্ব্যবহারযোগ্য মেডিকেল বর্জ্য (যেমন কাচের বোতল, সিরিঞ্জ, স্যালাইন ব্যাগ এবং ব্লাড ব্যাগ) অসাধু পুনর্ব্যবহারযোগ্য বর্জ্য সংগ্রহকারীদের কাছে বিক্রি করে। একটি চক্র ওষুধের দোকান, হাসপাতাল এবং ক্লিনিকগুলোতে বিক্রি করার আগে প্রয়োজনীয় জীবাণুমুক্তকরণ ছাড়াই এই উপকরণগুলো পরিষ্কার এবং পুনরায় প্যাকেজ করে বলে জানা গেছে।

২০০৮ সালের মেডিকেল বর্জ্য (ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট) বিধিমালা অনুসারে, হাসপাতালগুলোকে পুনরায় ব্যবহার রোধ করতে প্লাস্টিকের টিউব এবং অন্যান্য বর্জ্য উপকরণগুলো কেটে বা ছিদ্র করে দিতে হয়। তবে টিআইবির গবেষণায় দেখা গেছে, ৩১ শতাংশ হাসপাতালে এই নিয়ম মানতে ব্যর্থ হয় এবং ৪৯ শতাংশ হাসপাতালে সুই ধ্বংসকারী যন্ত্রের অভাব রয়েছে।

২০২১ সালের জুন থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত পরিচালিত 'গভর্নেন্স চ্যালেঞ্জেস ইন মেডিকেল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ওয়ে ফরোয়ার্ড' শীর্ষক এক গবেষণায় ৪৫টি জেলার হাসপাতাল, সিটি করপোরেশন ও পৌর কর্তৃপক্ষসহ ৯৩টি মেডিকেল বর্জ্য কর্মী এবং ২৩১টি প্রতিষ্ঠানের ওপর জরিপ চালানো হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মকানুন মেনে না চলা এবং তদারকির অভাব রয়েছে।

যদিও ২০০৮ সালের বিধিমালা প্রকাশের তিন মাসের মধ্যে একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও এখনও তা আলোর মুখ দেখেনি। এর পরিবর্তে সিটি করপোরেশন ও হাসপাতালগুলো লাইসেন্সবিহীন ঠিকাদারদের কাছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আউটসোর্স করেছে।

স্বচ্ছতা ও সমন্বয়ের অভাব

ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ইউএনবির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই তাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি নিয়ে কথা বলতে চায় না। অনেক হাসপাতাল এখনও উচ্চ বাছাই ব্যয় এবং প্রয়োগকারী ব্যবস্থার অভাবের কথা উল্লেখ করে সাধারণ আবর্জনা হিসাবে বর্জ্য অপসারণ করে।

তাছাড়া মেডিকেল বর্জ্য ট্র্যাক করার কোনো কেন্দ্রীয় ডাটাবেজ নেই। গবেষণায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মীদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মও উঠে এসেছে। সরকারি হাসপাতালে চাকরির জন্য এক থেকে দুই লাখ টাকা ঘুষ লেনদেন হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব অগ্রগতিকে আরও বাধাগ্রস্ত করছে। আমলাতান্ত্রিক অদক্ষতার কারণে বিভিন্ন প্রশাসনিক স্তরে জাতীয় উপদেষ্টা কমিটি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির অনেকাংশেই অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে।

জরুরি সংস্কারের আহ্বান

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান পদ্ধতিগত সুশাসন ব্যর্থতা ও দুর্নীতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ খাতে জবাবদিহিতার অভাব রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায় এবং প্রতিটি পর্যায়ে পরিবেশ বিপর্যয়ে ভূমিকা রাখে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেন, স্বাস্থ্যসেবা পরিবেশ ও সেবার মান উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি উভয় হাসপাতালেই কার্যকর মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় সরকার সংস্থা ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে অধিকতর সচেতনতা, উন্নত কারিগরি সহায়তা এবং সমন্বয় বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা।

কর্তৃপক্ষ, টেকসই মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতের জন্য বিদ্যমান নিয়ম-কানুনের কঠোর প্রয়োগ, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) বৃদ্ধি এবং বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা সুবিধাগুলোতে সম্মতি নিশ্চিত করার জন্য আরও ভাল পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার পক্ষে পরামর্শ দিচ্ছে।

অবিলম্বে সংস্কার এবং একটি নিবেদিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা না হলে— মারাত্মক পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকিতে পড়বে বাংলাদেশ।


নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সতর্কতা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জাতীয় গণভোটকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে অবস্থানরত নিজ দেশের নাগরিকদের জন্য নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে এই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়েছে, সমগ্র বাংলাদেশেই মার্কিন নাগরিকদের এই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে একযোগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং একটি জাতীয় গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, নির্বাচনের তারিখ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক সমাবেশ এবং বিক্ষোভের মাত্রা ও তীব্রতা আরও বাড়তে পারে। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভগুলোও যেকোনো সময় সংঘাতপূর্ণ ও সহিংস হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

এমতাবস্থায় মার্কিন নাগরিকদের সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে দূতাবাস। নির্দেশনায় নাগরিকদের বড় কোনো ভিড় বা বিক্ষোভ সমাবেশ এড়িয়ে চলতে, নিজের আশপাশের পরিবেশ সম্পর্কে সজাগ থাকতে এবং পরিস্থিতির হালনাগাদ তথ্যের জন্য স্থানীয় গণমাধ্যমের ওপর নজর রাখতে বলা হয়েছে।


স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পাশে রেখেই তার পদত্যাগ চাইলেন ডাকসু ভিপি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে পাশে দাঁড় করিয়েই তার পদত্যাগ চেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি সাদিক কায়েম। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এই দাবি জানান। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, দাবি পূরণ ও পরিস্থিতির উন্নতি না হলে শুধু স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নন, ব্যর্থতার দায় নিয়ে আইন উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকেও পদত্যাগ করতে হবে।

ব্রিফিংয়ে সাদিক কায়েম সাম্প্রতিক সময়ে শরীফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনার বিচার ও নিরাপত্তার বিষয়ে কঠোর বার্তা দেন। তিনি দাবি করেন, এই হামলার সঙ্গে জড়িত প্রত্যক্ষ হামলাকারী, পরিকল্পনাকারী ও সহায়তাকারী সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। একই সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি খতিয়ে দেখে তাদের জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি জানান। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যারা এই হামলাকে সমর্থন দিয়েছে এবং ‘জুলাই বিপ্লবীদের’ হত্যার পথ তৈরি করেছে, সেই ‘কালচারাল ফ্যাসিস্টদের’ সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।

ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে ডাকসু ভিপি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে মানবতাবিরোধী অপরাধের রায় কার্যকর করার দাবি জানান। এছাড়া ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার কথাও বলেন তিনি। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ‘নিষিদ্ধ লীগের’ বিরুদ্ধে এলাকাভিত্তিক চিরুনি অভিযান শুরু করতে হবে এবং তাদের সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। এ বিষয়ে সরকারের আর কোনো অবহেলা সহ্য করা হবে না বলে তিনি সতর্ক করেন।

সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সাদিক কায়েম বলেন, এসব দাবি অনতিবিলম্বে বাস্তবায়ন না হলে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি না ঘটলে তিন উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে। এ সময় পাশে থাকা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোকে ‘সম্পূর্ণ যৌক্তিক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং ‘ছোট ভাই’ সম্বোধন করে দাবি বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেন।


সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাংবাদিক আনিস আলমগীর ও অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনসহ চারজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা অভিযোগটি মামলায় রূপান্তর করা হয়েছে। এই মামলায় বর্তমানে ডিবি হেফাজতে থাকা সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) শফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ডিবি প্রধান জানান, উত্তরা পশ্চিম থানায় দায়েরকৃত এই মামলায় আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার দেখানোর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। থানা থেকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসার পর তার মাধ্যমেই গ্রেপ্তারকৃত সাংবাদিককে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

এর আগে রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ধানমন্ডি এলাকার একটি ব্যায়ামাগার থেকে বের হওয়ার সময় আনিস আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছিল। উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাজনীতি নিষিদ্ধ দলটির পক্ষে বিভিন্ন টেলিভিশন টকশোতে অবস্থান নেওয়াকে কেন্দ্র করে তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই সমালোচিত ছিলেন।


ওসমান হাদির হত্যাচেষ্টা মামলা ডিবিতে হস্তান্তর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় পল্টন মডেল থানায় দায়েরকৃত মামলাটি তদন্তের জন্য ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম জানান, এখন থেকে মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম ডিবি মতিঝিল বিভাগ পরিচালনা করবে।

এর আগে রবিবার রাতে পল্টন মডেল থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে এই মামলাটি (মামলা নং-১৯) দায়ের করা হয়। মামলার প্রাথমিক তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পল্টন থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ইয়াসিন মিয়া জানিয়েছেন, দায়েরকৃত মামলার এজাহারে একজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তরের ফলে এখন তারাই পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ ও তদন্ত এগিয়ে নেবে।


নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কাজ ইসি খুব ভালোভাবে করেছে: অর্থ উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গৃহীত পদক্ষেপ ও সার্বিক প্রস্তুতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি মনে করেন, কমিশন তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব, বিশেষ করে ভোটার তালিকা হালনাগাদ এবং সময়মতো তফসিল ঘোষণার কাজ অত্যন্ত সুচারুভাবে সম্পন্ন করেছে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত ও অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, দেশে নির্বাচনের জন্য একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক পরিবেশ বিরাজ করছে। এর বড় প্রমাণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন যে, রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিলকে মেনে নিয়েছে এবং কোনো দলই নির্বাচনের তারিখ বা সময়সূচি নিয়ে কোনো ধরনের আপত্তি তোলেনি। দলগুলোর এই ইতিবাচক মনোভাব এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের আগ্রহই প্রমাণ করে যে, প্রস্তুতি সঠিক পথেই এগোচ্ছে এবং এখন মূল চ্যালেঞ্জ হলো ঘোষিত তফসিলের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন।

এবারের নির্বাচনের সঙ্গে গণভোট আয়োজনের বিষয়টি যুক্ত থাকায় স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচনী ব্যয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত বাড়তি কোনো অর্থের আনুষ্ঠানিক চাহিদাপত্র অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠায়নি। তবে তিনি আশ্বস্ত করেন যে, নির্বাচন ও গণভোট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে লজিস্টিক সাপোর্ট, বিপুল সংখ্যক জনবল ও আনুষঙ্গিক যা কিছু প্রয়োজন, তার জন্য সরকার প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত। কমিশন যখনই চাহিদাপত্র পাঠাবে, তা যাচাই-বাছাই করে দ্রুততার সঙ্গে অর্থ ছাড় করা হবে এবং এ ক্ষেত্রে সরকারের কোনো ধরনের কার্পণ্য বা সীমাবদ্ধতা থাকবে না। গণভোটের জন্য ব্যয় ২০ শতাংশ বাড়তে পারে—এমন গুঞ্জন শোনা গেলেও উপদেষ্টা জানান, কোনো নির্দিষ্ট অংক নিয়ে এখনো প্রস্তাব আসেনি।

নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের পরিস্থিতি মোটামুটি সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে। তবে নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা ততটাই বাড়ানো হবে। ভোটের আগে ও পরে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণের স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও কঠোর থেকে কঠোরতর করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সরকার নির্বাচন কমিশনকে একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়ার ক্ষেত্রে সব ধরনের প্রশাসনিক ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করবে বলে তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন।


হাদিকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স উড়ল সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে

আপডেটেড ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৬:০২
নিজস্ব প্রতিবেদক

উন্নত চিকিৎসার জন্য ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিশেষ এই অ্যাম্বুলেন্সটি উড্ডয়ন করে। হাদির সঙ্গে তার দুই ভাইও সিঙ্গাপুরে গিয়েছেন। এর আগে তাকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি বেলা ১১টা ২২ মিনিটে ঢাকায় অবতরণ করে।

গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে রিকশায় যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা হাদির মাথায় গুলি করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার শারীরিক অবস্থা বেশ সংকটাপন্ন। হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ফয়সাল করিম নামের এক ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে, যিনি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা এবং সম্প্রতি হাদির নির্বাচনী প্রচারণায় যুক্ত ছিলেন।

এই ঘটনায় পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক, সীমান্ত দিয়ে মানুষ পাচারকারী চক্রের সদস্য এবং মূল অভিযুক্ত ফয়সালের আত্মীয়রা। হামলাকারীরা ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে গেছে বলে গুঞ্জন থাকলেও পুলিশ জানিয়েছে, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকলেও সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। উল্লেখ্য, গত নভেম্বরে হাদি জানিয়েছিলেন যে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন নম্বর থেকে তাকে ও তার পরিবারকে হত্যাসহ নানা ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।


ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় পল্টন থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৬

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে পল্টন থানার ডিউটি অফিসার উপ-সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) রকিবুল হাসান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয়েছে পল্টন থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ইয়াসিন মিয়াকে।

এদিকে, এই হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক, সীমান্ত দিয়ে মানুষ পাচারকারী চক্রের দুজন সদস্য এবং অভিযুক্ত ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও অন্য এক নারী।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে রিকশায় যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা ওসমান হাদির মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন এবং তার অবস্থা সংকটাপন্ন। উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ সোমবার দুপুরেই তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হচ্ছে।


হাদিকে সিঙ্গাপুর নিতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গুলিবিদ্ধ ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হচ্ছে। তাকে বহন করতে সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স অবতরণ করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে অসপ্রে এভিয়েশনের এই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ দুপুরেই হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হবে। সেখানে তাকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের অ্যাক্সিডেন্ট ইমার্জেন্সি বিভাগে ভর্তি করা হবে।

হাদির চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হবে বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। তার চিকিৎসা প্রক্রিয়া সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গত দুই দিন ধরে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার একাধিক হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। বর্তমানে হাদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ও অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় রিকশায় যাওয়ার পথে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন শরিফ ওসমান হাদি। এ সময় মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়। এরপর থেকে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। প্রধান উপদেষ্টা তার দ্রুত সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।


শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আজ আপিল করবে প্রসিকিউশন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি অভিযোগে দেওয়া আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আজ আপিল বিভাগে আবেদন করতে যাচ্ছে প্রসিকিউশন। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শেখ হাসিনার আমৃত্যু কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আজই আপিল দায়ের করা হবে এবং এরপর ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।

এর আগে, গত ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে একটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং অন্য একটি অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদান করেন। একইসঙ্গে দেশে থাকা তাদের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন আদালত। প্রসিকিউশন জানিয়েছে, তারা রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি পর্যালোচনা করে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজাটিকে মৃত্যুদণ্ডে উন্নীত করার জন্য আপিল করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আইন অনুযায়ী রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যেই এই আপিল দায়েরের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

ট্রাইব্যুনালের রায়ে প্রথম অভিযোগে বলা হয়, ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভিসি মাকসুদ কামালের সঙ্গে কথোপকথনে শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ আখ্যা দিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। এছাড়া আসামিরা অপরাধ দমনে অধীনস্থদের বাধা দেননি, যার পরিপ্রেক্ষিতে রংপুরে আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হন। এসব অপরাধে শেখ হাসিনা ও কামালকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়, যার বিরুদ্ধেই আজ আপিল করছে প্রসিকিউশন।

অন্যদিকে, দ্বিতীয় অভিযোগে শেখ হাসিনা ও কামালকে আগেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপস ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে ফোনালাপে শেখ হাসিনা ড্রোন, হেলিকপ্টার ও মারণাস্ত্র ব্যবহার করে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর ফলে ৫ আগস্ট চানখারপুলে ছয়জন এবং সাভারের আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যা করে লাশ পুড়িয়ে ফেলার মতো নৃশংস ঘটনা ঘটে। উল্লেখ্য, এই মামলায় রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে উভয় অভিযোগে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাজেয়াপ্তকৃত সম্পদ জুলাই আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণের নির্দেশও দিয়েছেন আদালত।


আনিস আলমগীর ও শাওনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অভিযোগ, ডিবি হেফাজতে সাংবাদিক আনিস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাংবাদিক আনিস আলমগীর, অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন, মারিয়া কিশপট্ট এবং ইমতু রাতিশ ইমতিয়াজ—এই চারজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গত রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় জুলাই রেভ্যুলশনারি অ্যালায়েন্সের কেন্দ্রীয় সংগঠক আরিয়ান আহমেদ বাদী হয়ে এই অভিযোগটি দায়ের করেন। এদিকে একই রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।

উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মোহাম্মদ রফিক আহমেদ অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়েছে এবং এটি মূলত ‘সাইবার রিলেটেড ইস্যু’। তাই প্রাথমিক সত্যতা যাচাই ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনার সাপেক্ষে এটিকে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুসারীরা বিভিন্ন কৌশলে দেশে অবস্থান করে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। অভিযোগকারীর দাবি, গত ৫ আগস্টের পর থেকে অভিযুক্তরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন টেলিভিশন টক শোতে অংশ নিয়ে নিষিদ্ধ সংগঠনকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রচারণা চালাচ্ছেন, যার মূল উদ্দেশ্য আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করা। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, তাদের এসব বক্তব্য ও অনলাইন কার্যক্রমের ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা উসকানি পাচ্ছে এবং রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র, সহিংসতা ও অবকাঠামো ধ্বংসের মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত হচ্ছে।

অন্যদিকে, অভিযোগ দায়েরের রাতেই ধানমন্ডি এলাকার একটি জিম থেকে ব্যায়াম শেষে বের হওয়ার সময় সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়। ডিবির প্রধান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে এবং এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন টেলিভিশন টক শোতে দেওয়া বক্তব্যের কারণে সাংবাদিক আনিস আলমগীর বেশ আলোচনায় ছিলেন।


ভারতে পলাতক শুটার মাসুদ, ব্যবহৃত ভারতীয় নম্বর ফাঁস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র এবং ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালানোর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর একটি সেলফি তুলেছেন, যা সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন।

জুলকারনাইন সায়েরের পোস্ট অনুযায়ী, হামলাকারী ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান এবং তার সহযোগী মোটরসাইকেল চালক আলমগীর হোসেন গত ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। এরপর তাদের জাহাঙ্গীর কবির নানকের পিএস মো. মাসুদুর রহমান বিপ্লব এই ভারতীয় মোবাইল নম্বরটি (+৯১৬০০১৩৯৪০**) ফয়সাল করিম মাসুদকে জোগাড় করে দেন বলে বিশেষ গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে তিনি জানান।

ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান এই ভারতীয় নম্বর ব্যবহার করে গত রাতে কয়েকটি নম্বরে নিজেদের সেলফি পাঠান, যার মধ্যে একটি ইন্টারসেপ্ট করে ছবিটি পাওয়া যায়। ছবিটি ভারতের আসাম রাজ্যের গুয়াহাটিতে তোলা হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে মোটরসাইকেলে করে এসে চলন্ত রিকশায় থাকা ওসমান হাদির মাথায় গুলি করা হয়। এই হত্যাচেষ্টার ঘটনায় তাঁর পরিবার মামলা দায়ের করেছে। এই হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক, মানবপাচার চক্রের দুজন সহযোগী, সন্দেহভাজন শুটার ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক এবং বান্ধবী।


পাকিস্তানের শেষ ২৪ ঘণ্টা: ভুট্টোর চোখে জল ও আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ ডিসেম্বরের নাটকীয় মুহূর্ত: ভুট্টোর জাতিসংঘ ত্যাগ

১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর, নিউইয়র্কের জাতিসংঘ সদরদপ্তর থেকে পাকিস্তানের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো এক আবেগঘন বিদায় নেন। সেদিন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া ছিল। নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর চোখে জল ছিল বলে মার্কিন গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে উঠে আসে। ভুট্টো সেদিন অধিবেশনে জাতিসংঘের বিরুদ্ধে আগ্রাসনকে বৈধতা দেওয়ার অভিযোগ তুলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং বলেন, “রাখুন আপনাদের নিরাপত্তা পরিষদ। লজ্জাজনক আত্মসমর্পণের সঙ্গে আমি যুক্ত হবো না। আমি কোনো ইঁদুর নই। পালাচ্ছি না, পরিষদ ছেড়ে চলে যাচ্ছি।” ভুট্টোর এই নাটকীয় প্রস্থান পরদিন নিউইয়র্ক টাইমসের পাতায় স্থান পায়। এই সময়ে ফ্রান্স ও ব্রিটেনের যৌথ প্রস্তাব এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের উত্থাপিত প্রস্তাবে যুদ্ধবিরতি ও পূর্ব পাকিস্তানের কথিত ‘বিদ্রোহী’দের সাথে রাজনৈতিক সমঝোতার আহ্বান জানানো হয়, যা কূটনীতিকদের কাছে ঢাকার আসন্ন পতনের ইঙ্গিত দেয়।

ষোলো ঘণ্টার আলটিমেটাম এবং আত্মসমর্পণের বার্তা চালাচালি

গুরুত্বপূর্ণ শহর ও ঘাঁটি হারানোর পর পাকিস্তানের শাসকরা পরাজয় নিশ্চিত হয়ে পড়েন। এর আগে ১৪ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজিকে চিঠি পাঠিয়ে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ এবং সৈন্যদের জীবন রক্ষার্থে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। ইয়াহিয়া খান উল্লেখ করেন যে তিনি ইতিমধ্যেই জাতিসংঘে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৎপরতা শুরু করেছেন।

এই বার্তা পাওয়ার পর জেনারেল নিয়াজি ও গভর্নর সামরিক উপদেষ্টা ফরমান আলী যুক্তরাষ্ট্রের কনসাল জেনারেল হার্বার্ট স্পিভ্যাকের সাথে দেখা করে 'সম্মানজনক শর্তসাপেক্ষে যুদ্ধবিরতি'র একটি বার্তা ভারতের কাছে পাঠানোর অনুরোধ জানান। স্পিভ্যাক বার্তাটি দিল্লির বদলে ওয়াশিংটনে পাঠান, যেখান থেকে তা ভারতের তৎকালীন সেনাপ্রধান শ্যাম মানেকশর কাছে পৌঁছায় ১৫ ডিসেম্বর দুপুরে।

জেনারেল মানেকশ সেই বার্তার জবাবে স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, বাংলাদেশে অবস্থানরত পাকিস্তানি সামরিক ও আধা সামরিক বাহিনী আত্মসমর্পণ করলেই কেবল তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে এবং ভারতের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তিনি ঢাকায় বিমান হামলা বন্ধের নির্দেশও দেন। আত্মসমর্পণের জন্য তিনি পরদিন সকাল ৯টা পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেন, যদিও পরে জে এফ আর জ্যাকবের লেখা অনুযায়ী এই সময়সীমা আরও কয়েক ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছিল।

যুদ্ধের শেষ দিনের চিত্র

যুদ্ধের শেষ এই দিনে একদিকে আত্মসমর্পণের বার্তা চালাচালি চলছিল, অন্যদিকে ভারতীয় যুদ্ধবিমান দিনভর পাকিস্তানি বাঙ্কার, আবাসস্থল ও কমান্ড-কেন্দ্রগুলোর ওপর বোমা বর্ষণ করতে থাকে। পাকিস্তানি সেনারা আত্মরক্ষার জন্য কিছু বাঙ্কারের ছাদে হাত-পা বেঁধে স্থানীয়দের শুইয়ে রেখেছিল, যার ফলে ভারতীয় বিমান হামলা মাঝে মাঝে ব্যর্থ হয়। একই সময়ে স্থলপথে মুক্তি ও ভারতীয় সেনারা ঢাকার দিকে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছিলেন। নিউইয়র্ক টাইমসের বর্ণনা অনুযায়ী, সেদিন মুক্তিবাহিনীর ঢাকামুখী যাত্রা ছিল বিজয়ীর মতো, পথে সাধারণ মানুষ তাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছিল, তবে নদীতে তখন লাশের স্তূপ ভাসছিল।


হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরে বিশ্বরেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন বিডার আশিক চৌধুরী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন। এই ৫৪ জনের মধ্যে একজন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। তিনি ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরে জাম্প করবেন। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এই তথ্য জানানো হয়।

সেখানে বলা হয়, ‘১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন। এই ৫৪ জনের একজন আশিক চৌধুরী জাম্প করবেন ওসমান হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরে। বিজয়ের দিনে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ভ্যানগার্ড ওসমান হাদির দ্রুত আরোগ্য কামনায় সবাইকে দোয়া ও প্রার্থনার আহ্বান জানাই।’

উল্লেখ্য, আগামী ১৬ ডিসেম্বর সকাল ১১টা থেকে ঢাকার তেজগাঁওয়ে পুরনো বিমানবন্দরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী পৃথকভাবে ফ্লাই পাস্ট মহড়া পরিচালনা করবে।

চলবে বিজয় দিবসের বিশেষ ব্যান্ড-শো। পরে সকাল ১১টা ৪০ মিনিট থেকে ‘টিম বাংলাদেশ’-এর ৫৪ জন প্যারাট্রুপার স্বাধীনতার ৫৪ বছর উদযাপনে পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং করবেন। জনসাধারণের জন্য এই বিশেষ আয়োজন উন্মুক্ত থাকবে।

এর আগে গত শুক্রবার দুপুরে ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হন ওসমান হাদি।

তিনি জাতীয় সংসদের ঢাকা-৮ আসনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। সেদিন রাত থেকে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন।


banner close