বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
২৮ কার্তিক ১৪৩২
সেনাপ্রধান

সতর্ক করে দিচ্ছি, নিজেরা কাদা ছোড়াছুড়ি করলে স্বাধীনতা বিপন্ন হবে

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ২০:৫৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ২০:২৮

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার–উজ–জামান এ কথা বলেছেন, আমি আপনাদের সতর্ক করে দিচ্ছি, পরে বলবেন যে সতর্ক করিনি, আপনারা যদি নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে একসাথে কাজ না করতে পারেন, নিজেরা যদি কাদা ছোড়াছুড়ি করেন, মারামারি কাটাকাটি করেন, এই দেশ এবং জাতির স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে। সেই সঙ্গে সেনাবাহিনীকে সহায়তা করার আহ্বান জানান তিনি
মঙ্গলবার রাজধানীর রাওয়া (রিটায়ার্ড অর্মি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন) কনভেনশন হলে ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবসের’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সেনাপ্রধান বলেন, আমি আপনাদের সতর্ক করে দিচ্ছি, পরে বলবেন যে সতর্ক করিনি। আপনারা যদি নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে কাজ না করতে পারেন, নিজেরা যদি কাদা ছোড়াছুড়ি করেন, মারামারি-কাটাকাটি করেন, এই দেশ এবং জাতির স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে। আমি আজকে বলে দিলাম, নাইলে আপনারা বলবেন যে, আমি সতর্ক করিনি।
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, আমার অন্য কোনো আকাঙ্ক্ষা নাই, আমার একটাই আকাঙ্ক্ষা, দেশ এবং জাতিটাকে একটা সুন্দর জায়গায় রেখে ছুটি করা। আই হ্যাড এনাফ লাস্ট সেভেন–এইট মান্থস, আই হ্যাড এনাফ। আমি চাই, দেশ এবং জাতিকে একটা সুন্দর জায়গায় রেখে আমরা সেনা নিবাসে ফেরত আসব।
সেনাপ্রধান বলেন, আরেকটা জরুরি বিষয় ভাবলাম, আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করি, দেশের এই আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপের পেছনে কিছু কারণ আছে। প্রথম কারণটা হচ্ছে, আমরা নিজেরা হানাহানির মধ্যে ব্যস্ত, একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে বিষোদগারে ব্যস্ত। এটা একটা চমৎকার সুযোগ অপরাধীদের জন্য। যেহেতু আমরা একটা অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে বিরাজ করছি। তারা (অপরাধী) খুব ভালোভাবেই জানে এই সময়ে অপরাধ করলে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। সেই কারণে এই অপরাধগুলো হচ্ছে। আমরা যদি সংগঠিত থাকি, একত্রিত থাকি তাহলে এটা সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, ডিজিএফআই, এনএসআই—এসব বাহিনী অতীতে দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছে উল্লেখ করে সেনাপ্রধান বলেন, (তারা) খারাপ কাজের সঙ্গে অসংখ্য ভালো কাজ করেছে। আজ যে দেশের স্থিতিশীলতা, দেশটাকে যে এত বছর স্থিতিশীল রাখা হয়েছে, এটার কারণ হচ্ছে এই সশস্ত্র বাহিনীর বহু সেনা সদস্য, সিভিলিয়ান সবাই মিলে এই অরগানাইজেশনগুলোকে অসামরিক-সামরিক সবাই মিলে, এই অরগানাইজেশনগুলোকে ইফেক্টিভ (কার্যকর) রেখেছে। সেজন্য এতদিন ধরে আমরা একটা সুন্দর পরিবেশ পেয়েছি।
তিনি বলেন, এর মধ্যে যারা কাজ করেছে, যদি অপরাধ করে থাকে, সেটার শাস্তি হবে। অবশ্যই শাস্তি হতে হবে। না হলে এই জিনিস আবার ঘটবে। আমরা সেটাকে বন্ধ করতে চাই চিরতরে। কিন্তু তার আগে মনে রাখতে হবে, আমরা এমনভাবে কাজটা করব, এই সমস্ত অর্গানাইজেশনগুলো যেন আন্ডারমাইন্ড না হয়।
পুলিশ বাহিনীকে এতোদিনে কার্যকর করতে না পারার পেছনের কারণ উল্লেখ করে সেনাপ্রধান বলেন, আজকে পুলিশ সদস্য কাজ করছে না। একটা বিশাল বড় কারণ হচ্ছে, অনেকের বিরুদ্ধে মামলা, অনেকে জেলে। র‍্যাব, বিজিবি, ডিজিএফআই, এনএসআই প্যানিকড (আতঙ্কিত)। বিভিন্ন দোষারোপ গুম খুন ইত্যাদি। তদন্ত চলছে, অবশ্যই তদন্ত হবে, দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে, এমন ভাবে কাজটা করতে হবে যেন এই অর্গানাইজেশনগুলো আন্ডারমাইন্ড না হয়। এই অর্গানাইজেশনগুলোকে যদি আন্ডারমাইন্ড করে আপনারা মনে করেন যে, দেশের শান্তি শৃঙ্খলা বিরাজ করবে, সবাই শান্তিতে থাকবেন, এটা হবে না। সেটা সম্ভব না। আমি আপনাদের পরিষ্কার করে বলে দিচ্ছি।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব শুধু সেনাবাহিনীর নয়, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‘এই দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব খালি সেনা সেনাবাহিনীর না। দুই লক্ষ পুলিশ আছে, বিজিবি আছে, র‍্যাব আছে, আনসার–ভিডিপি আছে। আমার আছে ৩০ হাজার সৈন্য। এদেরকে আমি এই যে একটা বিরাট ভয়েড, আমি এই ৩০ হাজার সৈন্য দিয়ে কীভাবে এটা পূরণ করব? ৩০ হাজার থাকে, আবার ৩০ হাজার চলে যায়, ক্যান্টনমেন্টে আরও ৩০ হাজার আসে, এটা দিয়ে আমরা দিন-রাত চেষ্টা করে যাচ্ছি। এখানে যে সমস্ত উচ্ছৃঙ্খল কাজ হয়েছে সেটা আমাদের নিজস্ব তৈরি। এটা আমাদের নিজস্ব ম্যানুফ্যাকচারড। আমরা এইগুলো তৈরি করেছি। এই বিপরীতমুখী কাজ করলে দেশে কখনো শান্তি শৃঙ্খলা আসবে না। এই জিনিসটা আপনাদের মনে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, তদন্ত কমিশন হচ্ছে আবার আরেকটা। আমরা সর্বদা চেষ্টা করব তদন্ত কমিশনকে সহায়তা করতে। যে ধরনের সাহায্য সহযোগিতা প্রয়োজন হয় আমরা করব।
নির্বাচনের বিষয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমরা দেশে একটা ফ্রি ফেয়ার অ্যান্ড ইনক্লুসিভ ইলেকশনের জন্য দিকে ধাবিত হচ্ছি এবং তার আগে যে সমস্ত সংস্কার করা প্রয়োজন অবশ্যই সরকার সেদিকে হেল্প করবেন। আমি যতবারই ড. ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেছি, কমপ্লিটলি অ্যাগ্রিড উইথ মি। দেয়ার শুড বি ফ্রি ফেয়ার অ্যান্ড ইনক্লুসিভ ইলেকশন অ্যান্ড দ্যাট ইলেকশন শুড বি উইথইন ডিসেম্বর, অর ক্লোজ টু দ্যাট। যেটা আমি প্রথমেই বলেছিলাম, ১৮ মাসের মধ্যে একটা ইলেকশন। আমার মনে হয় সরকার সেদিকেই ধাবিত হচ্ছে। ড. ইউনূস যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন, এ দেশটাকে ইউনাইটেড রাখতে কাজ করে যাচ্ছেন উনি। উনাকে আমাদের সাহায্য করতে হবে। উনি যেন সফল হতে পারেন। সেদিকে আমরা সবাই চেষ্টা করব। আমরা একসাথে ইনশাল্লাহ কাজ করে যাব।’
দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আসেন, আমরা নিজের নিজেদের মধ্যে মারামারি কাটাকাটি না করে দেশ জাতি যেন একসাথে থাকতে পারি সেদিকে আমাদের কাজ করতে হবে। আমাদের মধ্যে মতের বিরোধ থাকতে পারে, চিন্তা-চেতনার বিরোধ থাকতে পারে, কিন্তু দিন শেষে যেন আমরা সবাই দেশ এবং জাতির দিকে খেয়াল করে যেন এক থাকতে পারি। তাহলে এই দেশটা উন্নত হবে। এই দেশটা সঠিক পথে পরিচালিত হবে। না হলে আমরা আরো সমস্যার মধ্যে পড়তে যাব।
সতর্ক করে দিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‘বিশ্বাস করেন, উই ডোন্ট ওয়ান্ট টু হেড, ওইদিকে আমরা যেতে চাই না। আমি আপনাদের সতর্ক করে দিচ্ছি। পরে বলবেন যে আমি সতর্ক করিনি।
আমি আপনাদের সতর্ক করে দিচ্ছি। আপনারা যদি নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে একসাথে কাজ না করতে পারেন, নিজেরা যদি কাদা ছোড়াছুড়ি করেন, মারামারি কাটাকাটি করেন এই দেশ এবং জাতির স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে। আমি আজকে বলে দিলাম, নাইলে আপনারা বলবেন যে আমি আপনাদের সতর্ক করিনি। আমি সতর্ক করে দিচ্ছি আপনাদের। এই দেশ আমাদের সবার। আমরা সুখে শান্তিতে থাকতে চাই। আমরা চাই না হানাহানি কাটাকাটি মারামারি। সেই উদ্দেশ্যে আমি কাজ করে যাচ্ছি। আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের সেনাবাহিনীর প্রতি আক্রমণ করেন না।’
সামরিক বাহিনীর প্রতি অনেকে অকারণে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে বলে উল্লেখ করে সেনাপ্রধান বলেন, একটা কমন জিনিস আমি দেখতে পাচ্ছি, সেনাবাহিনী এবং সেনাপ্রধানের প্রতি বিদ্বেষ কারো কারো, কী কারণে আজ পর্যন্ত আমি আমি এটা খুঁজে পাইনি। আমরা হচ্ছি একমাত্র ফোর্স, যেটা আপনাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছি, দাঁড়িয়ে আছি প্ল্যাটফর্মে। অফকোর্স নেভি অ্যান্ড এয়ারফোর্স। নেভি এয়ারফোর্স আমাদের সাহায্য করেন। আমাদের আক্রমণ করেন না, আমাদের অনুপ্রাণিত করেন, আমাদের উপদেশ দেন। কোনো একটা সমস্যা হয়ে গেলে আমি নুরুদ্দিন স্যারের শরণাপন্ন হই এবং উনি আমাকে উপদেশ দেন, সিনিয়র জেনারেলরা আমাকে উপদেশ দেন। আমি সবার কাছে শরণাপন্ন হই। আমাদের প্রতি আক্রমণ করেন না। উপদেশ দেন, আমরা অবশ্যই ভালো উপদেশ গ্রহণ করব। আমরা একসাথে থাকতে চাই এবং দেশ এবং জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যে দিতে চাই।


নতুন নিয়োগ পাওয়া ২২ বিচারপতি শপথ নেবেন আজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ২২ জন বিচারপতির শপথ অনুষ্ঠিত হবে আজ।

বুধবার দুপুর দেড়টায় প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে তাদের শপথ পড়াবেন।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তবে বিএনপি নেতা নিতাই রায় চৌধুরীর ছেলে বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীকে এবার স্থায়ী তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তিনি ৪৫ বছর বয়স পূর্ণ করলে তাকে স্থায়ী বিচারপতি করা হবে।

বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে হাইকোর্ট বিভাগের ২২ জন অতিরিক্ত বিচারককে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।

স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত ২২জন হলেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার, বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেন, বিচারপতি মো. মনসুর আলম, বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুর, বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজা, বিচারপতি মো. যাবিদ হোসেন, বিচারপতি মুবিনা আসাফ, বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলাম, বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকা, বিচারপতি মো. আবদুল মান্নান, বিচারপতি তামান্না রহমান, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ, বিচারপতি মো. হামিদুর রহমান, বিচারপতি নাসরিন আক্তার, বিচারপতি সাথিকা হোসেন, বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তাজরুল হোসেন, বিচারপতি মো. তৌফিক ইনাম, বিচারপতি ইউসুফ আব্দুল্লাহ সুমন, বিচারপতি শেখ তাহসিন আলী, বিচারপতি ফয়েজ আহমেদ, বিচারপতি মো. সগীর হোসেন ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজী।

গতবছর ৯ অক্টোবর এ ২২ জনসহ মোট ২৩ জন বিচারপতি হাইকোর্ট বিভাগর অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন। পরবর্তীতে গত ২১ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারী হয় এবং এউ অধ্যাদেশের বিধান অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগের লক্ষ্যে সুপ্রিম জুডিসিয়াল অ্যাপোয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল গঠন করা হয়।


আবার সন্ত্রাস-নাশকতা, বাড়ছে উদ্বেগ

# রাজধানীতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সামনেসহ ১৮ ককটেল বিস্ফোরণ, # ১০ বাসে আগুন, ১৪ ঝটিকা মিছিল, # গ্রেপ্তার ৫৫২
গতকাল ঢাকার সূত্রাপুরে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে যাওয়া বাস। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার রায়ের দিন ঘিরে সন্ত্রাস-নাশকতা তৈরি করে জনমনে আতঙ্ক ছড়াতে চাইছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। এ লক্ষ্যে রাজধানীতে দুদিনে ১৭ ককটেল বিস্ফোরণ, ১০ যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ দলটি। এতে জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। যদিও নাগরিকদের জানমালের সুরক্ষায় কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এমনকি এসব ঘটনায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগসহ কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। এছাড়া মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার রায়ের দিন ঘোষণা করা হবে। ওই দিন ঢাকা লকডাউনের হুমকি দিয়েছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ।
এদিকে, ধানমন্ডির ১১/এ সড়কে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ের সামনে একটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। দুইজন ব্যক্তি মোটরসাইকেলে এসে এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এসময় নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল প্রস্তুতিকালে তন্ময় সাহা (২৯), শেখ ফরহাদ ওরফে ভোলা ফরহাদ (৩৮) নামে যুবলীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ধানমন্ডি থানার ওসি ক্যশৈন্যু মারমা বলেন, ককটেল বিস্ফোরণের বিষয়টি আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। তবে ২৭ নম্বর সড়কে ঝটিকা মিছিল প্রস্তুতিকালে দুজনকে আটক করা হয়েছে। এরমধ্যে তন্ময় সাহা ফরিদপুর থানা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভোলা ফরহাদ গাজীরটেক ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।
এছাড়া রাজধানীর সূত্রাপুর ফায়ার সার্ভিসের গেটের সামনে পার্কিং করা একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রধান সড়কে পার্কিং করা ‘মালঞ্চ পরিবহনের’ একটি বাসে এ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, আগুন লাগার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার স্টেশনের একটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় ১০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
বঙ্গবাজার ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক বলেন, সূত্রাপুর ফায়ার স্টেশনের প্রধান সড়কের পাশে পার্কিং করা মালঞ্চ পরিবহণ নামে একটি বাসে দুর্বৃত্তরা আগুন দেয়। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
তিনি জানান, তাৎক্ষণিকভাবে কারা ও কেন এ অগ্নিসংযোগ ঘটিয়েছে তা জানা যায়নি। এ ঘটনায় এলাকায় কিছু সময়ের জন্য আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও ফায়ার সার্ভিসের দ্রুত পদক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
সূত্রাপুর থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম জানান, এ ঘটনার সময় এলাকাবাসী ও মুসল্লিরা নামাজে ছিলেন। সুযোগ বুঝে দুর্বৃত্তরা বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। আশপাশের কেউ ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেননি এবং ওই দিকটিতে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরাও স্থাপন ছিল না।
ওসি জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কে বা কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তা শনাক্তে এলাকাগুলোতে পুলিশের অভিযান চলছে।
কী বলছে পুলিশ: পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, চোরাগোপ্তা হামলা হলে স্বাভাবিকভাবে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে থাকে। এই পরিস্থিতিতে পুলিশের সব ইউনিটকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও যানবাহনের ওপর নজরদারি, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার এবং সাইবার গোয়েন্দা কার্যক্রম তীব্র জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নৈরাজ্য মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। ডিএমপিকে পুলিশের অন্য ইউনিট সহযোগিতা করবে। সেনাবিাহিনী ও বিজিবি মাঠে থাকবে। আইনশৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটালে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) শেখ মো. সাজ্জাত আলীও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ১৩ নভেম্বরের কর্মসূচি রাজধানীতে শঙ্কার কিছু নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগরীর চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংক্রান্ত বিষয়ে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ আশ্বাস দেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যাবহার করে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে। গত তিন দিনে রাজধানীতে ১৭টি ককটেল বিস্ফোরণ, ১০টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, আর ঝটিকা মিছিল হয়েছে ১৪টি। এসব কর্মসূচিতে জড়িত ৫৫২ জন গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপি। তিনি কার্যক্রম নিষিদ্ধ দলের কর্মসূচি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল ও মিথ্যা প্রচারণা বিষয়েও সচেতন থাকার পরামর্শ দেন।
এদিকে, দেশজুড়ে চলমান সহিংসতা ও নাশকতার আশঙ্কায় দেশের সব বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। গতকাল মঙ্গলবার বেবিচকের সদর দপ্তর থেকে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে এক চিঠিতে এ বিষয়ে নির্দেশনা পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, সব বিমানবন্দরে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি বিমানবন্দর এলাকায় ভেহিকল প্যাট্রোল ও ফুট প্যাট্রোল বাড়ানো এবং মনিটরিং ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সম্ভাব্য ঝুঁকি বা হুমকির ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার রায়ের দিন ঘোষণা করা হবে। ওই দিন আবার ঢাকা লকডাউনের হুমকি দিয়েছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। ওই রায় কেন্দ্র করে পতিত সরকারের দল ঢাকাসহ দেশে যাতে কোনো ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে সতর্ক রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
পুলিশের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও দেশ-বিদেশে ছদ্মবেশে তৎপর রয়েছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। দেশে হঠাৎ হঠাৎ ঝটিকা মিছিল করে তারা অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে। তারা ঝটিকা মিছিল করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইনেও সক্রিয় হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ১৩ নভেম্বরকে কেন্দ্র করে তারা গোপনে একত্র হয়ে সহিংসতা বা হামলার পরিকল্পনা করতে পারে-এমন আশঙ্কা রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।
পুলিশের টহল পার্টি, মোবাইল পার্টি ও পিকেট পার্টিকে সক্রিয় করা হয়েছে। তবে এসব টিকটকারদের তালিকা তৈরি করেছে পুলিশ। পাশাপাশি বিদেশে পলাতক থাকা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলসহ যারা ফেসবুকে প্রচার চালাচ্ছে তাদেরও তালিকা করেছে পুলিশ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৩ নভেম্বর ঘিরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যাতে ঢাকায় প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য প্রবেশপথগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গাড়ি তল্লাশি এবং সন্দেহভাজনদের দেহ তল্লাশি করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এছাড়াও ধর্মীয় উপাসনালয় ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। র‌্যাবকে ঢাকার সড়কে টহল দিতে দেখা গেছে।


দিল্লিতে ‘জঙ্গি হামলায়’ বাংলাদেশকে জড়ানো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারতের রাজধানী দিল্লির লালকেল্লায় গাড়ি বিস্ফোরণকে ‘জঙ্গি হামলা’ দাবি করে ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমে বাংলাদেশকে জড়িয়ে প্রচারিত সংবাদকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সুযোগ পেলেই ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশের ওপর দোষ চাপায়। লালকেল্লায় হামলার সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই বলে স্পষ্ট করেন তিনি।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতের গণমাধ্যমের এমন মনগড়া ও দায়সারা প্রতিবেদন দুদেশের সম্পর্কের জন্য ইতিবাচক নয়। বাংলাদেশ বরাবরই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে আসছে।

সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লির লালকেল্লা এলাকায় মেট্রো স্টেশনের কাছে একটি চলন্ত গাড়ি বিস্ফোরণে শেখ খবর পাওয়া পর্যন্ত অন্তত ১৩ জন ভারতীয় নাগরিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন বহু মানুষ। এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে ভারতের বাংলাদেশ হাইকমিশন।

গত সোমবার সন্ধ্যায় এক বার্তায় হাইকমিশন জানিয়েছে, এই দুঃসময়ে বাংলাদেশ ভারতের পাশে রয়েছে।

হাইকমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের আন্তরিক সমবেদনা ও প্রার্থনা রইলো সব নিহত ও আহত ব্যক্তির এবং তাদের পরিবারের প্রতি।

দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে লালবাতিতে দাঁড়ানো একটি গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিহতদের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন এবং পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানিয়েছেন।

এদিকে, ভয়াবহ এ বিস্ফোরণের পর লালকেল্লা মেট্রো স্টেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ১১ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনের জন্য লালকেল্লাও বন্ধ করা হয়েছে। এই তিন দিন লালকেল্লা পরিদর্শন করতে পারবেন না দর্শনার্থীরা। এছাড়া দিল্লিতে উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে পুলিশ।


‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে ৩-৪ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত দেবে সরকার’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে ৩-৪ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাবে সরকার। রাজনৈতিক দলগুলো তা মেনে নেবে, এমনটাই আশা করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

মঙ্গলবার বিকালে বিচার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আইনগত সহায়তা প্রদান অধ্যাদেশ ২০২৫ খসড়ার সংশোধন প্রস্তাব বিষয়ে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

দেশের সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে চলমান বিতর্কের জবাবে তিনি বলেন, রাতারাতি সব সংস্কার শেষ করা সম্ভব নয়। বাস্তবে এত বড় ধরনের সংস্কার করা সহজসাধ্য নয়। ক্রমান্বয়ে সংস্কার করলে ভালো জায়গায় পৌঁছাতে পারব।

আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, সবাই মনে করেন সব সংস্কার এখনই করে ফেলতে হবে। বিষয়টা এত সহজ নয়। আমরা যখন অ্যাকটিভিজম করেছি তখন ভেবেছি কত সহজ, কিন্তু এখন বুঝতে পারছি কত কঠিন।

তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, সব সংস্কার যেন সংবিধানে আটকে গেছে। অন্য কোনো সংস্কার কারও চোখেই পড়ে না। সংবিধান কোনো ম্যাজিক নয়, যে লিখে দিলেই সমাধান হয়ে গেল। রাজনৈতিক সংস্কৃতি, জনগণের অভ্যাস বাদ না দিলে কোনো কিছু পরিবর্তন হবে না।

সাংবিধানিক ব্যর্থতার একটি উদাহরণ দিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, সংবিধানে তো লেখা আছে রাষ্ট্রপতি স্বাধীনভাবে প্রধান বিচারতি নিয়োগ দেবেন। কখনও কি হয়েছে?

বিচার বিভাগের সংস্কার প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা জানান, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের দেওয়া বেশিরভাগ প্রস্তাবই ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে।

তিনি দাবি করেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের দেওয়া ৭০-৮০ ভাগ সংস্কার প্রস্তাব ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়ে গেছে। অথচ অপপ্রচার করে বলা হয় কোথায় সংস্কার, কোথায় সংস্কার?

ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকারের কাছে সংস্কারগুলো ধরে রাখার অনুরোধ জানান আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমাদের একটা ভীতি কাজ করে যে নির্বাচিত সরকার আসবে তারা এটা ধরে রাখবেন কিনা।

তিনি নতুন সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, যারা আসবেন তাদের কাছে অনুরোধ, সংস্কারগুলো ধরে রাখবেন। আরও শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ।


ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই নির্বাচন : শফিকুল আলম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তরিকুল ইসলাম তরুন- কুমিল্লা দক্ষিণ

আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দেশে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও উৎসবমুখর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

তিনি বলেন, “খুব সুন্দর একটা ইলেকশন দেখতে পাবেন—যেটা ফ্রি, ফেয়ার ও এক্সক্লুসিভ হবে। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেবে, পরিবেশ হবে উৎসবমুখর।”

মঙ্গলবার সকালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কুলিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রেস সচিব বলেন, “বিদেশের মতো শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন হবে। তত্ত্বাবধায়ক আমলের ভালো নির্বাচনের মতো এবারও মানুষ আনন্দের সঙ্গে ভোট দেবে।”

রাজনৈতিক মতভেদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দল থাকলে মতভেদ থাকবেই। তবে গত নয় মাস ধরে কমিশনের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে, আশা করি ঐক্য হবে।”

তিনি আরও জানান, বিএনপি ইতোমধ্যে ২৩৭টি আসনে এবং জামায়াতও বিভিন্ন আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। “বড় দলগুলো নির্বাচনমুখী, দেশজুড়ে নির্বাচনের জোয়ার বইছে,” বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “১৩ নভেম্বরকে সামনে রেখে তারা বিশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের চেষ্টা করছে। পুলিশ সতর্ক অবস্থানে আছে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন মজুমদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার জামাল হোসেন ও ওসি মো. হিলাল উদ্দিন।


ভূমি প্রশাসন দেশের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাত: ভূমি উপদেষ্টা

ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার গতকাল টিআইবির অডিটোরিয়ামে এক কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, দেশের ভূমি প্রশাসনের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ খাতের কার্যক্রম উপজেলা পর্যায়ে মূলত উপজেলা ভূমি অফিসের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
গতকাল সোমবার রাজধানীর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর অডিটোরিয়ামে ‘উপজেলা ভূমি অফিসের সেবা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
সাধারণ মানুষের ভূমি সংক্রান্ত প্রায় সব সেবা এই অফিসের মাধ্যমেই দেয়া হয় উল্লেখ করে ভূমি উপদেষ্টা বলেন, উপজেলা ভূমি অফিস হলো নাগরিক সেবার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। কিন্তু এই সেবার মান ও সুশাসন নিশ্চিত করতে এখনও নানা চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান।
আলী ইমাম মজুমদার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভূমিখাতে সুশাসনের অভাব ও স্বচ্ছতার ঘাটতির কারণে জনগণ ভোগান্তির শিকার হয়ে আসছে। তাই ভূমিখাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা আজ সময়ের দাবি।
তিনি বলেন, এই দাবির প্রেক্ষিতে সরকার ভূমি প্রশাসনের ডিজিটাল রূপান্তর করেছে,এখন ভূমির সকল সেবাই অনলাইনে ঘরে বসে পাওয়া যাচ্ছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) গণপ্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, তারা কেবল ভূমি প্রশাসনের দায়িত্বে নিয়োজিত নন বরং নির্বাচনের সময় তারা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।


গুজব ও বিভ্রান্তি প্রতিরোধে বিশেষ সাইবার সেলের কার্যক্রম শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ভুয়া তথ্য, বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট ও গুজব প্রতিরোধে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত একটি বিশেষ সেল গঠন করেছে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি (এনসিএসএ)।

এই সেল সার্বক্ষণিকভাবে অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যবেক্ষণ, তথ্য যাচাই-বাছাই ও সত্যতা নিশ্চিতের কাজ করবে।

এনসিএসএ এ লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং, প্রেস ইনফরমেশন বাংলাদেশ (পিআইবি), বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস), বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে।

কোন তথ্য বা কনটেন্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করার আগে অবশ্যই তার উৎস যাচাই করতে সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এনসিএসএ। পাশাপাশি সন্দেহজনক, উসকানিমূলক বা দেশবিরোধী কনটেন্ট দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে সংস্থাটিকে জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে।

দেশবিরোধী চক্রের ফাঁদে পড়ে ভুল বা ভুয়া তথ্য, ফটোকার্ড ও ভিডিও প্রচার থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি অন্যদের সচেতন করতেও সকলকে অনুরোধ করেছে এনসিএসএ।

সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে জনগণের দ্রুত সহায়তায় এনসিএসএ ২৪/৭ হেলপলাইন সেবা চালু রয়েছে। নাগরিকদের অভিযোগ গ্রহণের জন্য চারটি আলাদা ই-মেইল খোলা হয়েছে।

এগুলো হল: অনলাইন জুয়া সংক্রান্ত অভিযোগের জন্য [email protected]; ভুয়া তথ্য, গুজব বা misinformation/disinformation সংক্রান্ত অভিযোগের জন্য [email protected]; ফেইক প্রোফাইল, অশ্লীল বা ক্ষতিকর কনটেন্ট ও অনলাইন হয়রানি সংক্রান্ত অভিযোগের জন্য [email protected] এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো (সিআইআই) প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলা সংক্রান্ত অভিযোগের জন্য [email protected]

সবাই মিলে দেশের ডিজিটাল পরিসর নিরাপদ ও দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহারে ভূমিকা পালনে এনসিএসএ নাগরিকদের সহযোগিতা চেয়েছে।


সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

আপডেটেড ১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১৪:১৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এমন কোনো সন্দেহভাজনকে কাউকে দেখলে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে তিনি এ আহ্বান জানান।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ১৩ নভেম্বর কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের লকডাউন নিয়ে সতর্ক আছে সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শক্ত অবস্থানে আছে, কোনো ধরনের আশঙ্কার কারণ নেই। কোনো ধরনের সন্ত্রাস সহ্য করা হবে না। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাবেন।

তিনি বলেন, লকডাউন ঘিরে পেট্রোলিং বাড়ানো হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধারের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। রাস্তার ধারে পেট্রোল বেচা যাবে না। এগুলো দিয়ে অঘটন ঘটানো হয়।

তিনি আরও বলেন, কিছু জায়গায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলে বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে বাহিনীর সঙ্গে সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। সন্দেহভাজনদের দেখলে ধরিয়ে দেবেন। এটা আইন হাতে তুলে নেয়ার মতো বিষয় না।

এ সময় নির্বাচন নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি মোটামুটি সন্তোষজনক। সব বাহিনী তাদের ট্রেনিং প্রায় শেষ পর্যায়ে নিয়ে আসছে। প্রস্তুতি শেষ হলে আমরা একটা মহড়াও দেব।

এসময় অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান আরও বেগবান করা হবে বলেও জানান তিনি।


আচরণবিধি গেজেট : এক মঞ্চে ইশতেহার ঘোষণা, বিধিমালা লঙ্ঘনে প্রার্থিতা বাতিল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালার গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আচরণবিধিতে প্রথমবারের মত নির্বাচনী প্রচারে পোস্টার ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে। এক মঞ্চে প্রার্থীদের ইশতেহার ঘোষণাসহ আচরণবিধি মানতে দল ও প্রার্থীর অঙ্গীকারনামা দেওয়ার বাধ্যবাধকতাও রাখা হয়েছে।

আচরণবিধি ভাঙলে ব্যক্তির জন্য সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড ও দেড় লাখ জরিমানা এবং দলের জন্য দেড় লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। বিধান লঙ্ঘনে আরপিওতে প্রার্থিতা বাতিলেরও বিধান রয়েছে।

ভোটের প্রচারে ড্রোন ব্যবহার করা যাবে না। আচরণবিধিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বিদেশে প্রচারণাতেও। একজন প্রার্থী তার সংসদীয় আসনে ২০টির বেশি বিলবোর্ড ব্যবহার করতে পারবে না।

গতকাল (সোমবার) রাতে ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০২৫’ শিরোনামে এই গেজেট প্রকাশ করা হয়।

সোশাল মিডিয়ায় নির্বাচনী প্রচারে কড়াকড়ি আরোপ, অসৎ উদ্দেশ্যে এআই ব্যবহারে মানা, পোস্টার ও ড্রোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা, নির্বাচনের সময় কি করা যাবে ও যাবে না তাও তুলে ধরা হয়েছে বিধিমালায়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা: আচরণবিধিতে বলা হয়েছে, কোন প্রার্থী বা তার নির্বাচনী এজেন্ট বা প্রার্থীর পক্ষে অন্য ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে প্রচার-প্রচারণা পরিচালনা করতে পারবে। তবে প্রার্থী বা তার নির্বাচনী এজেন্ট বা দল বা প্রার্থী সংশ্লিষ্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নাম, একাউন্ট আইডি, ই-মেইল আইডিসহ অন্যান্য শনাক্তকরণ তথ্যাদি আগেই রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দিতে হবে।

প্রচার-প্রচারণাসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোন বিষয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করা যাবে না।

ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ভুল তথ্য, কারও চেহারা বিকৃত করা ও নির্বাচন সংক্রান্ত বানোয়াট তথ্যসহ ক্ষতিকর কনটেন্ট বানানো ও প্রচার করা যাবে না।

প্রতিপক্ষ, নারী, সংখ্যালঘু বা অন্য কোন জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ব্যক্তিগত আক্রমণ বা উসকানিমূলক ভাষা ব্যবহার করা যাবে না।

নির্বাচনী স্বার্থ হাসিল করার জন্য ধর্মীয় বা জাতিগত অনুভূতির অপব্যবহার করা যাবে না।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্বাচন সংক্রান্ত সকল কনটেন্ট শেয়ার ও প্রকাশ করার আগে সত্যতা যাচাই করতে হবে।

রাজনৈতিক দল, প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি, ভোটারদের বিভ্রান্ত করার জন্য কিংবা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কোন প্রার্থী বা ব্যক্তির চরিত্র হনন কিংবা সুনাম নষ্ট করার উদ্দেশ্যে, সামাজিক যোগাযোগ বা অন্য কোন মাধ্যমে, সাধারণভাবে বা সম্পাদনা করে কিংবা এআই দিয়ে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর, পক্ষপাতমূলক, বিদ্বেষপূর্ণ, অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ ও মানহানিকর কনটেন্ট তৈরি, প্রকাশ, প্রচার ও শেয়ার করতে পারবে না।

গুজব ও এআই অপব্যবহার বন্ধে নির্বাচনী অপরাধ বিবেচনায় শাস্তির বিধান রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছে।

আরও বলা হয়, কোনো দল বা প্রার্থী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিদেশে জনসভা, পথসভা, সভা-সমাবেশ বা কোন প্রচারণা চালাতে পারবে না।

ভোটের প্রচারে থাকবে না পোস্টারের ব্যবহারও। একজন প্রার্থী তার সংসদীয় আসনে ২০টির বেশি বিলবোর্ড ব্যবহার করতে পারবে না; দৈর্ঘ্য হবে সর্বোচ্চ ১৬ ফুট আর প্রস্থ ৯ ফুট।

নির্বাচনের দিন ও প্রচারের সময় কোন ধরনের ড্রোন, কোয়াডকপ্টার বা এ জাতীয় যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোন প্রার্থী ও প্রতিষ্ঠান ভোটার স্লিপ বিতরণ করতে পারবে। তবে ভোটার স্লিপে প্রার্থীর নাম, ছবি, পদের নাম ও প্রতীক উল্লেখ করতে পারবে না।

শুধু ডিজিটাল বিলবোর্ডে আলো ও বিদ্যুতের ব্যবহার করা যাবে। তাছাড়া অনান্য আলোকসজ্জার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

ব্যানার, ফেস্টুন, লিফলেটে পলিথিনের আবরণ এবং প্লাস্টিক (পিভিসি) ব্যানার ব্যবহার করা যাবে না।

প্রচারে পরিবেশবান্ধব সামগ্রী ব্যবহারে জোর দেওয়া হয়েছে; পলিথিন ও রেকসিনের ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

প্রচারের সময় শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবেলে রাখতে হবে।

রাজনৈতিক দল কর্তৃক প্রদত্ত অঙ্গীকারনামা: রাজনৈতিক দলগুলো আচরণবিধির সকল বিধান মেনে চলবে এই মর্মে তফসিল-১ এ উল্লিখিত নমুনা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় অঙ্গীকারনামাও জমা দিতে হবে।

প্রার্থীর অঙ্গীকারনামা: কোনো ব্যক্তি প্রার্থী হিসাবে ঘোষিত হলে তাকে তফসিল-২ এ উল্লিখিত নমুনা অনুযায়ী অঙ্গীকার করতে হবে যে, তিনি সকল বিধান মেনে চলবেন। যদি তার বা তার কোন সহযোগীর বিধান লঙ্ঘন করে তাহলে প্রচলিত আইন বা বিধিমালার বিধান অনুযায়ী শাস্তি মানতে বাধ্য থাকবেন।

গণমাধ্যমের সংলাপ ও সব প্রার্থীর এক মঞ্চে ইশতেহার ঘোষণার সুযোগ রাখা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট আসনে সব প্রার্থীকে নিয়ে একদিনে তাদের ইশতেহার বা ঘোষণাপত্র পাঠের ব্যবস্থা করবেন।

প্রার্থিতা বাতিল: যদি উৎস হতে পাওয়া রেকর্ড কিংবা লিখিত রিপোর্ট হতে কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, প্রার্থী বা তার নির্বাচনী এজেন্ট বিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করেছে বা চেষ্টা করেছে এবং অনুরূপ লঙ্ঘন বা চেষ্টার জন্য তিনি নির্বাচিত হবার অযোগ্য হতে পারে, তাহলে কমিশন বিষয়টি সম্পর্কে তাৎক্ষণিক তদন্তের নির্দেশ দেবে।

তদন্ত রিপোর্টে যদি দেখা যায়, প্রার্থী বা তার নির্বাচনী এজেন্ট বা তার নির্দেশে বা তার পক্ষে তার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্মতিতে অন্য কোন ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান বিধির লঙ্ঘন করেছে বা চেষ্টা করেছে, যার জন্য তিনি নির্বাচিত হবার অযোগ্য হতে পারেন, তাহলে কমিশন, তাৎক্ষণিকভাবে আরপিও-এর বিধান অনুযায়ী সেই প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের লিখিত আদেশ দিতে পারবে।


তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের রায় ২০ নভেম্বর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী ২০ নভেম্বর রায় ঘোষণা করবেন আপিল বিভাগ।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ রায়ের জন্য এ তারিখ ধার্য করেন।

টানা ১০ দিন শুনানি শেষে দেশের সর্বোচ্চ আদালত ঐতিহাসিক এ মামলার রায়ের দিন ঠিক করলেন। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের অন্য ৬ সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি এস এম ইমদাদুল হক, বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।

আদালতে এ সংক্রান্ত রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া, বিএনপির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহামদ শিশির মনির। ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ, ব্যারিস্টার শাহরিয়ার কবির।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।

গত ২১ অক্টোবর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের শুনানি শুরু হয়।

গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়।

এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়।

এই সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিমউল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেন।

এ রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারীপক্ষ। এই আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।

ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। অন্য চারজন হলেন- তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।

আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ১৬ অক্টোবর একটি আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এছাড়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছরের ২৩ অক্টোবর আরেকটি আবেদন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

পরে নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর একটি আবেদন করেন।


পাশের আসনগুলোতে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থীদের ভিড়ে আলোচনায় জয়পুরহাট-১ আসন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জয়পুরহাট প্রতিনিধি 

জয়পুরহাট-১ (জয়পুরহাট সদর ও পাঁচবিবি উপজেলা), ঐতিহাসিকভাবে বিএনপির একটি শক্তিশালী ঘাঁটি, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নতুন করে আলোচনায় এসেছে। সম্প্রতি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে মোঃ মাসুদ রানা প্রধানকে প্রাথমিক মনোনয়ন দেওয়ায় স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে এই জেলার পাশের বগুড়ার মত উল্লেখযোগ্য জেলা রয়েছে। সেখানে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

বগুড়া জেলা যেটাকে বিএনপির ঘাঁটি বলা হয়ে থাকে তাঁর আশেপাশে কয়েকটি জেলার মধ্যে উল্লেখযোগ্য জয়পুরহাট জেলা। স্বৈরাচার শাসনের সময়ে ‘রাতের ভোট’ ও ডামি নির্বাচন বাদ দিলে এই জেলার দুটি আসনেই বিএনপির শক্ত দখল রয়েছে। আর গত মঙ্গলবার মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকে সেটি জানান দিয়েছে বিএনপি। পাশের জেলা বগুড়া ৬ ও বগুড়া ৭ আসনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মনোনয়ন প্রার্থী হয়েছেন।

১৯৮৪ সালে গঠিত এই জয়পুরহাট ১ আসনটি বিএনপির শক্ত অবস্থানের প্রতীক। ১৯৮৬ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ১০টি সাধারণ নির্বাচনের মধ্যে বিএনপি এই আসনে চারবার জয়ী হয়েছে। এমনকি ২০০৮ সালের বর্তমান নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েও বিএনপি এই আসন থেকে বিজয়ী হয়। যদিও ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করে এবং ২০১৮ সালের ‘রাতের ভোটে’ ও ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে; গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে আসনটি শূন্য। এবারে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফয়সল আলিম এবং জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ রানা প্রধান এই আসনে দলটির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। ফয়সল আলিম প্রয়াত আব্দুল আলিমের সন্তান, যিনি ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে টানা দুইবার এই আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন এবং বিএনপি সরকারে মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

বিএনপির স্থানীয় ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের ভাষ্য, সেই হিসেবে জয়পুরহাট ও নওগাঁও মত জেলাগুলোতে বিএনপির শক্ত প্রার্থী না দাড়ালে নির্বাচনে জয়ের সুযোগ হাতছাড়া হয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জয়পুরহাট-১ আসনে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীকে জামায়াত নেতারা খুব বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে না। স্থানীয় বিএনপি কর্মীদের মতে, এই মনোনয়ন জামায়াতকে একটি অপ্রত্যাশিত সুবিধা এনে দিতে পারে যেখানে জয়পুরহাট-১ আসনটি বিএনপির হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

তৃণমূলের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন, জামায়াত বিএনপির প্রার্থীদের দুর্বল দিকগুলো স্থানীয় মানুষদের সামনে তুলে ধরছে। বিশেষ করে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, আওয়ামী লীগ কর্মীদের পুনর্বাসনে হস্তক্ষেপ, আত্মীয়প্রীতি এবং অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের অভিযোগ ভোটারদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, নারী ও তরুণ ভোটাররা এমন বিতর্কিত প্রার্থী থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতারা। বিএনপির দীর্ঘদিন ধরে নিপীড়িত কর্মীরা মনে করছেন, যদি এই দুর্বলতার সঙ্গে জামায়াতের সংগঠিত প্রচারণা যুক্ত হয়, ভোটের ফলাফলে বিপরীত প্রভাব পড়তে পারে। এদের মতে, একজন ক্লিন ইমেজধারী এবং তরুণ প্রজন্মের কাছে গ্রহণযোগ্য প্রার্থী থাকলে এই আসনে বিএনপির ফল আরও ভালো হতে পারত।

সবমিলিয়ে বলা চলে, জয়পুরহাট-১ আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন জামায়াতকে উজ্জীবিত করলেও, এই সিদ্ধান্ত দলের জন্য একটি বড় ঝুঁকির কারণ হতে পারে। কীভাবে বিএনপি এই আসনটি জামায়াতের সম্ভাব্য বিজয় থেকে রক্ষা করতে পারে, তাই এখন স্থানীয় রাজনীতিতে মূল আলোচনার বিষয়।


ঢাকার আবহাওয়া আজ কেমন থাকবে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ ঢাকার আকাশ আংশিক অস্থায়ীভাবে মেঘলা থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

পূর্বাভাসে বলা হয়, ঢাকার আকাশ আজ আংশিক অস্থায়ীভাবে মেঘলা থাকতে পারে। সেই সঙ্গে দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এ ছাড়া আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

এ সময় দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্বদিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে।

এদিকে সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৬৭ শতাংশ। গতকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের ১০ম দিনের শুনানি চলছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের টানা ১০ম দিনের শুনানি শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সকাল ৯টা ৫০ মিনিট থেকে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া।

এর আগে গত ২, ৪, ৫, ৬ নভেম্বর ও ২৯, ২৮, ২৩, ২২ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের টানা শুনানি হয়েছে। গত ২১ অক্টোবর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের শুনানি শুরু হয়।

এর আগে গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়।

এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ ৫ জন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়।

এই সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিমউল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেন।

এ রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারীপক্ষ। এই আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।

ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।

৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। অন্য চারজন হলেন— তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।

আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ১৬ অক্টোবর একটি আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এছাড়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছরের ২৩ অক্টোবর আরেকটি আবেদন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

পরে নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর একটি আবেদন করেন।


banner close