ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট পেপার ছাপানোসহ অন্যান্য মুদ্রণ কাজে কাগজ লাগবে ২ লাখ ৩০ হাজার রিম। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ৩৫ কোটি টাকার বেশি।
জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার এক আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বাংলাদেশ সরকারি মুদ্রণালয় (বিজি প্রেস) থেকে এই চাহিদা দেওয়া হয়েছে। তবে বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। পরবর্তীতে আরও কয়েকটি বৈঠক করে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, বিজি প্রেসের সঙ্গে আমাদের প্রাথমিক বৈঠক হয়েছে। তারা বলেছে, ব্যালট পেপারসহ সব মুদ্রণ কাজ সম্পন্ন করতে তিন মাসের মতো সময় লাগবে। আমরা বলেছি চার মাস সময় নেন।’
এক্ষেত্রে তারা সবকিছু হিসাব করে পরবর্তী বৈঠকে জানাবে বলেও জানান আখতার আহমেদ।
কর্মকর্তারা বলছেন, মূলত ডিসেম্বরকে টার্গেট করেই কাগজ কেনা হবে। এক্ষেত্রে তফসিলের আগেই কাগজ কেনা সম্পন্ন করতে হবে। এজন্য সেপ্টেম্বরের মধ্যে তারা ক্রয় কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন। কেননা, তফসিলের আগেই বেশ কিছু মুদ্রণ সম্পন্ন করতে হয়।
আলোচনার পর ইসি সচিব তাদের চার মাস সময় দিয়েছেন। এক্ষেত্রে আগামী মে মাস থেকেই কাগজ কেনার কার্যক্রম শুরু হতে পারে।
জানা গেছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদের ৩০০টি আসনের নির্বাচন এবং অন্যান্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের (ইউনিয়ন পরিষদ ব্যতীত) নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী সামগ্রীর মুদ্রণ পরিকল্পনা প্রণয়ন করার অংশ হিসেবেই বৈঠকটি হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ২১ প্রকার ফরম, ১৭ প্রকার প্যাকেট, পাঁচ প্রকার পরিচয়পত্র, আচরণ বিধি, প্রতীকের পোস্টার, নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়েল, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়েল, নির্দেশিকা ইত্যাদি মুদ্রণ কার্যক্রম শুরু করা প্রয়োজন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট পেপার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নাম ও প্রতীক সংবলিত হয়ে থাকে। এ কারণে নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণার পর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তালিকা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিপুল পরিমাণ পেপার স্বল্প সময়ের মধ্যে মুদ্রণ করে মাঠ কার্যালয়গুলোতে বিতরণ করতে হবে। অন্যান্য ফরম, প্যাকেট, পরিচয়পত্র, আচরণ বিধিমালা, প্রতীকের পোস্টার, ম্যানুয়েল, নির্দেশিকা ইত্যাদি সম্ভাব্য সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে মুদ্রণ করে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।
জাতীয় সংসদ এবং অন্যান্য স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ ব্যতীত) নির্বাচনে ব্যালট পেপারসহ অন্যান্য মুদ্রণ সামগ্রী মুদ্রণের জন্য কী পরিমাণ কাগজ প্রয়োজন হবে তার হিসাব জানার জন্য গভর্নমেন্ট প্রিন্টিং প্রেস, তেজগাঁও এবং কাগজের বর্তমান মজুত সম্পর্কে জানার জন্য বাংলাদেশ স্টেশনারি অফিস, তেজগাঁও, ঢাকা-কে গত ১৩ জানুয়ারি চিঠি পাঠানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গভর্নমেন্ট প্রিন্টিং প্রেস, তেজগাঁও ও বাংলাদেশ স্টেশনারি অফিস, তেজগাঁও, ঢাকা নির্বাচন কমিশনে সচিবালয়ের সংরক্ষিত কাগজের বিস্তারিত হিসাব প্রেরণ করে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য নির্বাচন উপলক্ষে এক লাখ ৬১ হাজার ৭৪ রিম কাগজ ক্রয় করা হয়েছিল। আগামীতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ অন্যান্য নির্বাচনে দুই লাখ ৩০ হাজার রিম কাগজের প্রয়োজন হবে। বর্তমানে এক লাখ ৬৯ হাজার রিম কাগজ মজুদ রয়েছে। বাকিগুলো কিনতে হবে। এজন্য ৩৫ কোটি ৭৭ লাখ ৫৫ হাজার ৫২৩ টাকা সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে।
নির্বাচনী মুদ্রণের কাজ মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন গভর্নমেন্ট প্রিন্টিং প্রেস, বাংলাদেশ সরকারি মুদ্রণালয় (বিজি প্রেস) ও বাংলা নিরাপত্তা মুদ্রণালয়ে সম্পন্ন করা হয়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০টি সংসদীয় আসনে ৪৮ হাজার ভোটকেন্দ্র ছিল। এবার সে সংখ্যা বাড়তে পারে৷ এছাড়া ভোটার সংখ্যাও বেড়ে সাড়ে ১২ কোটি হতে পারে। তাদের ব্যালট পেপার, মনোনয়নপত্রসহ ৫৩ ধরনের নির্বাচনী উপকরণ ছাপাতে হয়।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, আজকে বিচার নিয়ে নানা প্রশ্ন আসছে, নিশ্চিত করে বলতে পারি, বিচারব্যবস্থা পূর্ণ গতিতে চলছে, বিচার পূর্ণমাত্রায় দৃশ্যমান আছে। আমি নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করি নির্বাচনের আগে ফ্যাসিস্টদের অবশ্যই বিচার হবে।
তিনি বলেন, আমাদেরকে বিচারব্যবস্থাটা গ্রহণযোগ্য করতে হবে। তাই আপনারা নিশ্চিত থাকেন, আপনাদের হতাশ হবার কারণ নাই। আমরা যখন সরকারের দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন চিন্তা ছিল, বিচারের কথা, সংস্কারের কথা, জুলাইয়ের শহীদদের পুনর্বাসনের কথা এবং নির্বাচনের কথা। আমাদের বিচারটা গ্রহণযোগ্য করতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে ২০২৪ এর জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্মিত আরিফুর রহমান পরিচালিত তথ্যচিত্র ‘শ্রাবণ বিদ্রোহ, (জুলাই আপরাইজিং ) এর প্রিমিয়ার শো উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট দলের লোকজন হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে বসে আছে এই বিচার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে। এই বিচার প্রক্রিয়া তারা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করবে। বাংলাদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবে। তাই আমরা সর্বোচ্চমানের শ্রেষ্ঠ একটা বিচার করতে চাইছি।’
তিনি বলেন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস,বাংলাদেশের জুলাই কখনো বেহাত হবে না। অনেক কিছু বলতে পারছি না। শুধু বলব আমাদের হতাশ হবার কিছু নাই।’
আইন উপদেষ্টা বলেন, জুলাই আন্দোলনে একটা স্লোগানের কথা নিশ্চয়ই মনে আছে সবার, ‘কথায় কথায় বাংলা ছাড়; বাংলা কি তোর বাপদাদার।’ এই দেশ বাংলাদেশ আমাদের সবার। জুলাই আসলে জুলাইয়ের কথা বেশি করে মনে পড়ে। চোখের সামনে ভেসে উঠে ছোট ভাইয়ের লাশ নিয়ে দুইবোন মিছিল করছে, এপিসি থেকে ইয়ামিনের দেহটা ফেলে দিচ্ছে; তখনো সে মরে যায়নি। তাকে নিয়ে টানাহেঁচড়া করছে, একজন মা পানি বিলি করছে,মাদ্রাসার ছেলেরা লড়াই করছে। কিছু রিকশাচালক ভাই সিটের উপরে দাঁড়িয়ে ম্লোগান দিচ্ছে-আমার মনে হয় না, বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন কোন মহাকাব্যিক ঘটনা ঘটেছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন তথ্য উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং শহীদ সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়’র মা শামসি আরা জামান। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তথ্য উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেন, বিগত ১৬ বছরে দেশের জনসাধারণ নিপীড়ন, হত্যা, গুম ও খুনের শিকার হয়েছেন। আমরা ফ্যাসিবাদীদের উৎখাত করেছি। জুলাই অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে বারবার নানা অনুষ্ঠান করতে হবে।
তিনি বলেন, যারা অধিকার আদায়ে শহীদ হয়েছেন ও শহীদ পরিবারের সবার যে ভূমিকা রয়েছে সেসব স্মৃতিকে সবার মাঝে বারবার মনে করিয়ে দিতে এবং এ ক্ষেত্রে অঅমাদের কি দায়িত্ব ও কর্তব্য স্মরণ করে দিতে এ ধরনের অনুষ্ঠান বেশি করতে হবে।
ফ্যাসিবাদের উৎখাতে এ ধরনের অনুষ্ঠান উৎসাহ ও প্রেরণা জোগাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শুধু জুলাই মাস নয় প্রতি মাসেই শহীদদের স্মরণ করব এবং প্রতিটি পদক্ষেপে তাদের স্মরণ করে যাবো। আমাদের অনেক অর্জন আছে, আবার কাঙ্ক্ষিত আকাঙ্ক্ষার কাছাকাছি যেতে পারিনি। এই লড়াইয়ের ইতিহাস দীর্ঘ, অনেক দিনের লড়াই। এই লড়াইয়ের ইতিহাস এক বছর, দুই বছর নয়।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, জুলাইয়ের আন্দোলন আসলে ৩৬ দিনের আন্দোলন নয়, এটা ৫৪ বছরের আন্দোলন। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল ঠিকই মাঝে ৫-৭ বছর মোটামুটি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পেরেছে, কিন্তু রাষ্ট্র হিসেবে সেসময়টা বেশিদিন পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, এখন প্রধান কাজ হচ্ছে সাংস্কৃতিকভাবে জবাব দেওয়া। নতুন কিছু সৃষ্টির চিন্তা করছি। এসময়ে আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে সত্যের পক্ষে আছি। ফ্যাসিস্টরা নানাভাবে সত্যকে মিথ্যে প্রমাণ করতে চাইছে। জনগণের ন্যায্য আন্দোলনকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। সত্য আমাদের চোখের সামনে যেভাবে ঘটেছে। যেসব ঘটনা ঘটেছে সেসবগুলোকে ইন্টেলেকচুয়াল ফ্রেমের মধ্যে আনতে হবে। এটাকে ব্যাখ্যার মধ্যে আনতে হবে। সত্যের পক্ষে মানুষ বেশি।
তিনি বলেন, আমি অনেক শহীদ পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। যারা আন্দোলন করেছে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের স্লোগানকে দেখেন, তরুণদের মুখের অভিব্যক্তি দেখেন, তাদের মূল কথাটা ছিল ,তারা আর কারো অধীনে থাকতে চায় না। এটা গুরুত্বপূর্ণ।
আদিলুর রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদ বারবার ফিরে আসতে চাইবে। তাদের দমন করতে হবে,তাদের ঠেকাতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে নিমজ্জিত ছিল। নতুন যে প্রজন্ম গড়ে উঠবে তাদের যেন এ ধরনের সংকট মোকাবেলা করতে না হয়।
তিনি বলেন, আমরা কখনোই মানবাধিকার লঙ্ঘন হতে দেব না। আমরা ফ্যাসিবাদের যেন পুনরুত্থান না হয় তা নিশ্চিত করব। বাংলাদেশ যে ফ্যাসিবাদকে কবর দিয়েছে সে কবর যেন আর মাথা তুলতে না পারে।
শহীদ আবু সাঈদের পিতা মো. মকবুল হোসেন বলেন, আমার ছেলে চলে গেছে এক বছর পূর্ণ হলো। আমার ছেলেসহ শহীদদের হত্যার বিচার এখন পর্যন্ত হয়নি। আমি দ্রুত এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করছি।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি)’র মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। তথ্যচিত্রটি প্রযোজনা করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী আমলা ও বিচারককে। গতকাল মঙ্গলবার অবসরপ্রাপ্ত ১২ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ওই সব ফ্ল্যাট বরাদ্দ বাতিল করেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় বলেছে, এসব ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে নীতিমালা ভেঙে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
গৃহায়ণ গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার ৬ নম্বর সড়কের ৬৩ নম্বর বাড়িটি মূলত সরকারের পরিত্যক্ত সম্পত্তি। সেখানে ১৪ তলা একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করছে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ। ওই ভবনের ১২টি ফ্ল্যাট নীতিমালা ভেঙে তৎকালীন আমলা ও বিচারকদের বরাদ্দ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের ওই সব ফ্ল্যাট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ জমা পড়ে। তাতে বলা হয়, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘দিনের ভোট রাতে নেওয়ার সঙ্গে জড়িত’ সচিব পদমর্যাদার ১২ কর্মকর্তাকে ‘পুরস্কৃত করতে’ শেখ হাসিনার আমলে পরিকল্পিতভাবে ফ্ল্যাট দেওয়া হয়। এরপর এই অভিযোগ তদন্ত করে দুদক বলেছে, তারা ফ্ল্যাট বরাদ্দে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে। পাশাপাশি জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষও বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করে।
দুদকের তদন্ত ও গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ২৭৪তম বোর্ড সভায় ওই সব ফ্ল্যাটের বরাদ্দ বাতিল করা হয় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
যাদের ফ্ল্যাট বরাদ্দ বাতিল হয়েছে, তারা হলেন সাবেক অবসরপ্রাপ্ত বিচারক ও দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক কমিশনার মো. জহুরুল হক (ফ্ল্যাটের আয়তন ৪ হাজার ১০৫ বর্গফুট), সাবেক সিনিয়র সচিব মো. ইউনুসুর রহমান (ফ্ল্যাটের আয়তন ২ হাজার ৩১৫ বর্গফুট), সাবেক সিনিয়র সচিব ও দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক খান (ফ্ল্যাটের আয়তন ৪ হাজার ৩০৮ বর্গফুট), সাবেক সচিব এম এ কাদের সরকার (ফ্ল্যাটের আয়তন ২ হাজার ৪৯ বর্গফুট), সাবেক সিনিয়র সচিব আসলাম আলম (ফ্ল্যাটের আয়তন ২ হাজার ৪৯ বর্গফুট), সাবেক সচিব আকতারী মমতাজ (ফ্ল্যাটের আয়তন ২ হাজার ৪৯ বর্গফুট), সাবেক সচিব মো. সিরাজুল হক খান (ফ্ল্যাটের আয়তন ২ হাজার ৩১৫ বর্গফুট), সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ (ফ্ল্যাটের আয়তন ২ হাজার ৩১৫ বর্গফুট), সাবেক রেজিস্ট্রার জেনারেল ও সাবেক সিনিয়র জেলা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলাম (ফ্ল্যাটের আয়তন ২ হাজার ৪৯ বর্গফুট), মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ (ফ্ল্যাটের আয়তন ২ হাজার ৪৯ বর্গফুট), সাবেক সিনিয়র সচিব ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান (ফ্ল্যাটের আয়তন ২ হাজার ৩১৫ বর্গফুট) এবং সাবেক সিনিয়র সচিব এস এম গোলাম ফারুক (ফ্ল্যাটের আয়তন ২ হাজার ৪৯ বর্গফুট)।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিবেশবান্ধব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। তিনি বলেন, দেশে বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস, বর্জ্য সংগ্রাহকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে ল্যান্ডফিল ব্যবস্থার আধুনিকায়নের লক্ষ্যে উন্নত পর্যায়ের বর্জ্য শ্রেণিবিন্যাস, পুনর্ব্যবহার ও উপাদান পুনরুদ্ধার ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।
উপদেষ্টা মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল মহানগরের সুদোকওয়ন ল্যান্ডফিল ম্যানেজমেন্ট করপোরেশনের (এসএলসি) একটি বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠককালে এ সব কথা বলেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাসে আধুনিক স্যানিটারি ল্যান্ডফিল স্থাপনের বিষয়ে প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে আলোচনা হয়।
আগত দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিনিধি দল চট্টগ্রামের দুটি বিদ্যমান ডাম্পিং সাইট বন্ধ ও পুনর্বাসন এবং একটি নতুন আধুনিক স্যানিটারি ল্যান্ডফিল স্থাপনের ব্যাপারে বিস্তারিত পরিকল্পনা উপস্থাপন করে। কোরিয়ান পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুদান ও সহজ শর্তে ঋণের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
দুটি বিদ্যমান ডাম্পিং সাইট বন্ধের কাজ এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যার পরে ২০ বছরের একটি পর্যবেক্ষণকাল থাকবে। প্রতিনিধিদল আরও জানায়, ভূমি স্থিতিশীলতার ওপর নির্ভর করে প্রথম ৫ বছর পর এসব স্থান জনসাধারণের জন্য পার্ক হিসেবে ব্যবহার উপযোগী করে গড়ে তোলা যেতে পারে। এছাড়া প্রতিনিধিরা অনানুষ্ঠানিক বর্জ্য সংগ্রাহকদের নতুন ব্যবস্থার আওতাভুক্ত করার গুরুত্ব তুলে ধরেন। যাতে তাদের কর্মপরিবেশ উন্নত হয় এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপকরণ পুনরুদ্ধারে দক্ষতা বাড়ে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সরকারকে দ্রুত আনুষ্ঠানিক অনুরোধপত্র ও প্রকল্পসংক্রান্ত দলিলাদি প্রেরণের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা কার্যকর করার অনুরোধ জানায়। পাশাপাশি বিশ্বের সর্ববৃহৎ ও অত্যাধুনিক সুদোকওয়ন ল্যান্ডফিলের অভিজ্ঞতা ও মডেল বাংলাদেশে শেয়ার করার আগ্রহ প্রকাশ করে।
এসএলসির প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিদ্যমান উন্মুক্ত ডাম্পিং সাইটের যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস প্রকল্পের প্রস্তাবও দেয় কোরিয়ান পক্ষ।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. রেজাউল করিম, কোরিয়ার এসএলসি পরিচালক সিওক ওউ জংসহ উভয় দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা।
আগামী ২ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশ সচিবালয়ে ইতঃপূর্বে সরকার ঘোষিত ক্ষতিকর সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের পণ্যসামগ্রীর ব্যবহার বন্ধ করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ।
তিনি জানান, এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার জন্য আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রস্তুতির সময় দেওয়া হবে এবং অধীনদের প্লাস্টিক ব্যবহার কমাতে নির্দেশনা দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ সচিবালয়ে অর্থ বিভাগের মাল্টিপারপাস হল রুমে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত ‘সাসটেইনেবল প্লাস্টিক ইউজ ইন দ্য সেক্রেটারিয়েট: আ ফিউচার ফর সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ফ্রি এনভায়রনমেন্ট’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্লাস্টিক দূষণ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এ সমস্যা মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমাদের এগোতে হবে। মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকেও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় আনতে হবে। শুধু নিজের স্বার্থেই নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমাদের এই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে যাতে আমরা তাদের জন্য একটি নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব পৃথিবী রেখে যেতে পারি।
সেমিনারে সভাপতির বক্তৃতায় মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, সব মন্ত্রণালয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সচিবালয়কে পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি জানান, সচিবালয়ে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক নিষিদ্ধকরণে পরিবেশ মন্ত্রণালয় দ্রুত একটি বাস্তবসম্মত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম এবং জাতিসংঘের শিল্প উন্নয়ন সংস্থার কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ ড. জাকি উজ জামান।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) ড. ফাহমিদা খানম। এছাড়াও, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে পরিবেশ সচিব মন্ত্রিপরিষদ সচিবের হাতে ১৭টি সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক সামগ্রীর একটি সচিত্র তালিকা তুলে দেন এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব অন্যান্য সচিবদের হাতে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের বিকল্প পণ্যসামগ্রী তুলে দেন।
উল্লেখ্য, পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে ১৭ ধরনের সামগ্রীকে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের তৈজসপত্র, চকলেটের মোড়ক, প্লাস্টিকের দাওয়াত কার্ড ও ব্যানার, স্টাইরোফোমের খাবার ধারক, পাতলা প্লাস্টিক মোড়কযুক্ত পণ্য, প্লাস্টিক বোতল ও ক্যাপসহ নানা সামগ্রী।
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি এমন শুল্ক চুক্তির প্রত্যাশা করছে যা উভয় দেশের জন্য লাভজনক হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চিঠি পাঠানোর পর তিনি এমন কথা বলেন।
‘ঢাকা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এমন একটি শুল্ক চুক্তির প্রত্যাশায় রয়েছে, যা আমাদের বিশ্বাস অনুযায়ী উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হবে, বলেন তিনি। ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরেক দফা আলোচনা ৯ জুলাই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন বর্তমানে ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থান করছেন এবং তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য আলোচনা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানও এই দলে রয়েছেন।
শফিকুল আলম বলেন, ‘সোমবার বাংলাদেশ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি চিঠি পেয়েছে, যাতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ১ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে।’
‘বাংলাদেশ দল এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিক দফা আলোচনা করেছে,’ বলেন প্রেস সচিব। তিনি জানান, ৯ জুলাইয়ের আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষের নেতৃত্ব দেবেন শেখ বশিরউদ্দিন।
ট্রাম্প তার চিঠিতে উল্লেখ করেন, ‘আমরা আপনাদের বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে আগামী বহু বছর একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। আপনি যদি আপনার এখনো বন্ধ থাকা বাণিজ্য বাজার যুক্তরাষ্ট্রের জন্য খুলে দিতে চান, এবং আপনার শুল্ক, অশুল্ক নীতিমালা ও বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা তুলে দেন, তাহলে আমরা সম্ভবত এই চিঠির বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করতে পারি।’
ট্রাম্প বলেন, এই শুল্কহার বাড়ানো বা কমানো যেতে পারে, যা বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ওপর নির্ভর করবে।
‘আপনি কখনোই যুক্তরাষ্ট্র দ্বারা হতাশ হবেন না,’ অধ্যাপক ইউনূসকে লেখা চিঠিতে বলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
চিঠিতে তিনি জানান, ২০২৫ সালের ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের যেকোনো পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করবে, যা সব খাতভিত্তিক শুল্কহার থেকে আলাদা হবে।
শুল্ক এড়াতে ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে পাঠানো পণ্যের ওপর উচ্চতর শুল্কহার প্রযোজ্য হবে।
‘একটি জিনিস পরিষ্কার হতে হবে, ৩৫ শতাংশ শুল্কহারটি আমাদের দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতির বৈষম্য দূর করার জন্য যথেষ্ট নয়। আপনি জানেন, যদি বাংলাদেশ বা বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য তৈরি বা উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে আমরা দ্রুত, পেশাদার ও নিয়মিত পদ্ধতিতে সব অনুমোদন দিতে সম্ভাব্য সবকিছু করব—অর্থাৎ, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই,’ বলেন ট্রাম্প।
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে ২০২৪ সালের ৯ জুলাই (মঙ্গলবার) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং ‘গণসংযোগ’ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।
এদিন কর্মসূচি পালন শেষে বিকেল সাড়ে ৬ টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
সংবাদ সম্মেলন থেকে আগামীকাল বুধবার (১০ জুলাই) সারাদেশে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম বলেন, বুধবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সারাদেশে এ কর্মসূচি চলবে। সড়কপথ ও রেলপথ বাংলা ব্লকেডের আওতাভুক্ত থাকবে। ‘বাংলা ব্লকেড’-এর কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালিত হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহবাগ এলাকায়। সকাল ১০টায় আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জমায়েত হবো। তারপর ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি পালনের জন্য শাহবাগ মোড়ে যাবো।
তিনি বলেন, নিজ উদ্যোগে শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনে নামেনি। এই ইস্যুতে সরকার নিশ্চুপ থাকার কারণে এই ধরনের কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছে আন্দোলনকারীরা। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস পাই নাই বলেই আমাদের এই আন্দোলন। আমরা কোটা বাতিল চাই না, অনগ্রসর শ্রেণির জন্য ৫-১০ শতাংশ কোটা রেখে বাকিগুলো রদ করতে হবে।
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিলে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। ৭ জুলাই থেকে তারা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে ‘বাংলা ব¬কেড’ কর্মসূচি পালন করেন। মঙ্গলবার তারা ‘বাংলা ব্লকেড’ বন্ধ রেখে ‘গণসংযোগ’ কর্মসূচি পালন করেন। এদিন সমন্বয়নকরা দেশের বিভিন্ন জায়গার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আনলাইনে গণসংযোগ চালান।
এদিকে ৯ জুলাই কোটা পুনর্বহাল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। তবে ছাত্রদের সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, যারা আপিল করেছেন, তারা এই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের কেউ নয়।
এদিন কোটা আন্দোলন নিয়ে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, ‘কোটা ইস্যুতে সরকারের সিদ্ধান্তের ব্যাপার নেই, এ ইস্যু এখন সর্বোচ্চ আদালতের কাছে। রাজপথে আন্দোলন করে এটার নিরসন হবে না।’
একইদিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সারাদেশে দলের নেতাকর্মীদের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ব্যাপারে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন।
এদিন কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে দুপুরে মানববন্ধন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। বুয়েটের শহীদ মিনারে ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গণসংযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি ও দুপুর ১২টার দিকে ৫টি ছাত্রী আবাসিক হলে গণসংযোগ চালান তারা।
এদিকে সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিকেল পৌনে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন মহাসড়ক আধা ঘণ্টা ধরে আটকে রেখে বিক্ষোভ করেন তারা।
মঙ্গলবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টার দিকে কলেজ গেটের সামনের সড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পৌনে চারটার দিকে চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহর রেলস্টেশনে রেললাইন অবরোধ করেন। এতে কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি আধা ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।
৯ জুলাই বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বেলা আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে একাডেমিক ভবনের সামনে সমাবেশ করেন তারা। সমাবেশ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে স্লোগান দেন তারা।
এদিন হবিগঞ্জেও বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। দুপুরে শহরের প্রাণকেন্দ্রে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ইয়েমেনের হোদেইদা উপকূলে সোমবার একটি বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়েছে বন্দুকধারীরা। হামলায় দুই জন ক্রু সদস্য আহত ও আরও দুজন নিখোঁজ রয়েছেন।
পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে দুবাই থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
তারা জানায়, ২৪ ঘন্টার মধ্যে লোহিত সাগরে দ্বিতীয় জাহাজটি হামলার শিকার এটি।
ইয়েমেনের হুথিরা এর আগে গত রোববারের একটি হামলার দায় স্বীকার করেছিল, যেখানে লোহিত সাগরে স্কিফের বন্দুকধারীরা একটি বাণিজ্যিক জাহাজে গুলি চালিয়ে, রকেট চালিত গ্রেনেড হামলা ও অন্যান্য অস্ত্রের আঘাতের পর ক্রুদের জাহাজ ছেড়ে যেতে বাধ্য করে।
কয়েক মাসের মধ্যে এই ঘটনাটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক পথে বাণিজ্যিক জাহাজের ওপর প্রথম হুথি আক্রমণ।
মে মাসে, বিদ্রোহীরা ওয়াশিংটনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়, যা কয়েক সপ্তাহ ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র হামলার অবসান ঘটায়।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক নিরাপত্তা সংস্থা অ্যামব্রে সোমবার জানিয়েছে, ‘লোহিত সাগরে উত্তর দিকে যাওয়ার সময় লাইব্রেরিয়ার পতাকাবাহী একটি বাল্ক ক্যারিয়ারের দিকে দুটি স্কিফ (ছোট নৌকা) ও মনুষ্যবিহীন আকাশযান (ইউএভি) আক্রমণ করে।’
এতে বলা হয়েছে, ‘স্কিফগুলো জাহাজের ওপর গুলি চালায় বলে জানা গেছে এবং জাহাজের আর্মড সিকিউরিটি টিম (এএসটি) পাল্টা গুলি চালায়।’
এতে আরো বলা হয়েছে, ‘দুইজন ক্রু সদস্য আহত ও আরো দুইজন ক্রু সদস্য নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে’।
ব্রিটিশ নৌবাহিনী পরিচালিত ইউকে মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস জানিয়েছে, তারা ইয়েমেনের হোদেইদা থেকে ৫১ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ৯৪ কিলোমিটার) পশ্চিমে একটি ঘটনার খবর পেয়েছে।
যারা সংস্কার পিছিয়ে দিচ্ছে, তারাই নির্বাচনও পিছিয়ে দিতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। এ ছাড়া আগামী ৩ আগস্ট শহিদ মিনারে জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিতে ‘চল চল ঢাকা চল’ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
সোমবার (৭ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পাবনা শহিদ চত্বরে এনসিপির জুলাই পদযাত্রার পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত বলেন, ‘বাংলাদেশের আকাশে সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। আমরা নাকি নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাই। নির্বাচন তারাই পিছিয়ে দিতে চায়, যারা সংস্কার পিছিয়ে দিচ্ছে। আপনারা সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের রব তুলে নির্বাচন-বিরোধী ও গণতান্ত্র-বিরোধী অবস্থান নিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘ভারতের ষড়যন্ত্র ও মিডিয়ার ষড়যন্ত্র থেকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। একটি দল আমাদের অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা বলছে, এই অভ্যুত্থানের আইনগত ভিত্তি নেই। তারা নতুন করে মুজিববাদের ঠিকাদারি নিয়েছে। আগামী ৩ আগস্ট শহিদ মিনারে জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিতে চল চল ঢাকা চল কর্মসূচি থাকবে।’
বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘আমরা পিছিয়ে যাব না। আমরা এই মিডিয়া সংস্কার করেই ছাড়ব। মিডিয়াকে মাফিয়াতন্ত্র মুক্ত করেই ছাড়ব।’
পথসভায় দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনীম জারা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, পাবনার আহ্বায়ক বরকতউল্লাহ ফাহাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সাধারণত বড় ধরনের বিনিয়োগ ছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতের গোল্ডেন ভিসা পাওয়া যায় না। তবে দেশটি এবার নিয়ে এসেছে এমন এক গোল্ডেন ভিসা, যা পাওয়ার জন্য ব্যবসা বা সম্পত্তিতে বিশাল বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে না। ভারতীয় এবং বাংলাদেশিদের জন্য চালু হয়েছে এই নতুন ধরনের ভিসা, যেটি মূলত মনোনয়নভিত্তিক।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আগে দুবাইয়ের গোল্ডেন ভিসা পেতে দেশটিতে কোনো ব্যবসা অথবা কমপক্ষে ২ মিলিয়ন দিরহাম (৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকার বেশি) মূল্যের সম্পত্তি কিনতে হতো। তবে, নতুন ‘মনোনয়নভিত্তিক ভিসা নীতির আওতায় ভারতীয় ও বাংলাদেশিরা ১ লাখ দিরহাম (প্রায় ৩৩ লাখ টাকার কিছু বেশি) ফি দিয়ে দুবাইয়ের গোল্ডেন ভিসা পাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, আগামী ৩ মাসের মধ্যে প্রায় ৫ হাজার ভারতীয় এই নতুন ভিসার জন্য আবেদন করতে প্রস্তুত।
এই নতুন ভিসার অন্যতম বড় সুবিধা হলো, এটি সম্পত্তিভিত্তিক গোল্ডেন ভিসা থেকে আলাদা। সম্পত্তিভিত্তিক ভিসা সম্পত্তি বিক্রি বা ভাগ হয়ে গেলে বাতিল হয়ে যেতে পারে, কিন্তু মনোনয়নভিত্তিক ভিসা একবার পেলে তা স্থায়ী হবে।
যারা এই ভিসার জন্য মনোনীত হবেন, তারা পরিবারকে দুবাইতে নিয়ে আসতে পারবেন এবং তাদের ভিসার ওপর ভিত্তি করে গৃহকর্মী ও গাড়িচালক রাখতে পারবেন। এছাড়া তারা দুবাইতে যেকোনো ব্যবসা বা পেশাদার কাজ করতে পারবেন।
ভারত ও বাংলাদেশের জন্য এই নতুন ভিসা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার প্রক্রিয়া চলছে। রায়াদ গ্রুপ নামে একটি পরামর্শক সংস্থা ভারত ও বাংলাদেশে মনোনয়নভিত্তিক গোল্ডেন ভিসার প্রাথমিক রূপটি পরীক্ষা করার দায়িত্ব পেয়েছে। রায়াদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রায়াদ কামাল আইয়ুব এই নতুন ভিসাকে ভারতীয় ও বাংলাদেশিদের জন্য একটি ‘সুবর্ণ সুযোগ’ বলে অভিহিত করেছেন।
নতুন গোল্ডেন ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া এবং অনুমোদনের বিষয়ে রায়াদ কামাল আইয়ুব বলেন, যারা এই ভিসার জন্য আবেদন করবেন, তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড (অতীত ইতিহাস) যাচাই করা হবে। এর আওতায় অর্থপাচার এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের রেকর্ড যাচাইও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। আবেদনকারীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও পরীক্ষা করা হবে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, এই ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য হলো,- সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাজার এবং ব্যবসাগুলো যেন আবেদনকারীর কাছ থেকে সংস্কৃতি, অর্থ, বাণিজ্য, বিজ্ঞান, স্টার্টআপ, পেশাদার পরিষেবা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে কীভাবে উপকৃত হতে পারে, তা নির্ধারণ করতে পারে।
রায়াদ সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘এরপর রায়াদ গ্রুপ আবেদনপত্রটি সরকারের কাছে পাঠাবে, সরকারের নির্দিষ্ট দপ্তর মনোনয়নভিত্তিক গোল্ডেন ভিসার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’
রায়াদ জানান, আবেদনগুলো ভারত ও বাংলাদেশের ওয়ান ভাস্কো সেন্টার (ভিসা কনসিয়ারজ সার্ভিস কোম্পানি), তাদের নিবন্ধিত অফিস, অনলাইন পোর্টাল, অথবা তাদের ডেডিকেটেড কল সেন্টারের মাধ্যমে জমা দেওয়া যাবে।
বিশ্বব্যাপী চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ থেকে খাদ্য রপ্তানির ব্যাপক সম্ভাবনা ও সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
সোমবার (০৭ জুলাই) ঢাকায় একটি পাঁচতারকা হোটেলে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আয়োজিত ‘মর্ডান ফুড সেফটি সিস্টেম ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
খাদ্য সচিব মো. মাসুদুল হাসানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের খাদ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক জনাব মঞ্জুর মোর্শেদ আহমেদ।
সম্মানিত অতিথি হিসাবে এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি ও জাইকা বাংলাদেশের প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহাইড।
আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘সর্বক্ষেত্রে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে না পারার কারণে খাদ্য রপ্তানির সুযোগকে পুরোপুরি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছে এবং আমাদের জনকল্যাণের মৌলিক স্তম্ভগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিরাপদ খাদ্য।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করে থাকলেও, নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করার অনেক সুযোগ আছে। আধুনিক নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা বিনির্মাণে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা একান্ত প্রয়োজন।’
আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘আমরা যদি নিরাপদ খাদ্য ও খাদ্যের গুণমান নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে আন্তর্জাতিক খাদ্য বাজারে আমাদের প্রবেশাধিকার বাড়বে এবং খাদ্য ও কৃষি খাতে রপ্তানি আয় অনেক গুণ বৃদ্ধি পাবে।’
তিনি বলেন, ‘আধুনিক নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা অর্জনের জন্য দক্ষ মানব সম্পদ ও আন্তর্জাতিক মানের স্বীকৃত পরীক্ষাগার প্রয়োজন।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে এবং জাপান সরকারের আন্তরিক সহযোগিতায় একটি ঋণ চুক্তির মাধ্যমে ঢাকায় একটি আধুনিক নিরাপদ খাদ্য পরীক্ষাগার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, যা বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের জাতীয় রেফারেন্স পরীক্ষাগার হিসাবে কাজ করবে।
এর পাশাপাশি একটি কার্যালয় ভবন এবং কর্মকর্তা ও খাদ্য ব্যবসায়ীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে ।
চট্টগ্রাম ও খুলনায় বিভাগীয় নিরাপদ খাদ্য পরীক্ষাগার ও কার্যালয় ভবন নির্মাণ করে দেশব্যাপী খাদ্য পরীক্ষণ ও বিচারিক কার্যক্রম সুদৃঢ় করা হবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে দীর্ঘ দিনের সুদৃঢ় অংশীদারিত্বের বিষয়টি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, জাপান বহু বছর ধরে বাংলাদেশের জ্বালানি, বন্দর, সড়ক ও মহাসড়ক, মেট্রো, সেতু ও কৃষিসহ নানা খাতে সহযোগিতা করে আসছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, নিরাপদ খাদ্য একটি নতুন খাত হিসেবে আমাদের সহযোগিতার পরিসরকে আরও বিস্তৃত করেছে, যা অত্যন্ত আনন্দদায়ক।
সাইদা শিনিচি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, বাংলাদেশ সরকার পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক এবং খাদ্য পরীক্ষাগারে পেশাদার জনবল নিয়োগে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, যাতে পরীক্ষাগারসমূহের কাঙ্ক্ষিত কার্যকারিতা অর্জিত হয় এবং একটি আধুনিক ও কার্যকর নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়।
সভাপতির বক্তব্যে খাদ্য সচিব মো. মাসুদুল হাসান বলেন, স্বল্পমেয়াদি ও আংশিক সমাধান যথেষ্ট নয়। আমাদের যা প্রয়োজন, তা হলো একটি সম্পূর্ণ আধুনিক নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিএফএসএ চেয়ারম্যান জাকারিয়া। তিনি বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতি নিরলস সহযোগিতার জন্য জাইকার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
সেমিনারে খাদ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতিনিধি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি, দাতা সংস্থার প্রতিনিধি, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, বিভিন্ন খাদ্য শিল্পের প্রতিনিধি, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, কোনো কিছু চাপিয়ে দিচ্ছেনা ঐকমত্য কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর অনুভূতি এবং বক্তব্য ধারণ করে সংশোধন প্রস্তাব আনছে কমিশন।
ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর ২য় পর্যায়ের ১০ম দিনের আলোচনার শুরুতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ আজ এ সব কথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল নিয়ে অধিকাংশ দলের আপত্তি থাকার কারণে ভিন্ন ভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যাতে কোনো ভুল বুঝাবুঝি না হয়, সেদিকে কমিশন নজর রাখছে। এর ফলে অনেক কিছু বাদ দিয়ে আমরা আলোচনায় অংশগ্রহণ করছি। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হচ্ছে উল্লেখ করে আলী রীয়াজ আরো বলেন, এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। যতটা সম্ভব বেশি সময় মিলিত হয়ে যেন দ্রুত কাজ শেষ করা যায়, সেজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। আলোচনায় নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন এই তিনটি বিষয়ে আলোচনা হওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন। আজ উপজেলা পর্যায়ে অধস্তন আদালতের সম্প্রসারণ, জরুরি অবস্থা ঘোষণা, নারী প্রতিনিধিত্ব এ তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে সোমবার (০৭ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
"আধুনিক নিরাপদ খাদ্যব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য দরকার দক্ষ মানবসম্পদ৷ একই সাথে প্রয়োজন ভালো মানের খাদ্য পরীক্ষাগার। আমি আনন্দের সাথে ঘোষণা করছি যে, জাপান সরকার ও জাইকার সহায়তায় ঢাকায় একটি ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।" রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের পদ্মা হল রুমে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আয়োজিত “Modern Food Safety System in Bangladesh” শীর্ষক সেমিনারে খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আলী ইমাম মজুমদার, সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত H.E. Mr. Shinichi Saida এবং জাইকা বাংলাদেশের চীফ রিপ্রেজেনটেটিভ Mr. Tomohide Ichiguchi। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মোঃ মাসুদুল হাসান । উক্ত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের খাদ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক জনাব মঞ্জুর মোর্শেদ আহমেদ।
সেমিনারে প্রধান অতিথির ব্ক্তব্যে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে খাদ্য রপ্তানির ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে এবং বিশ্বব্যাপী চাহিদাও আছে, তবে আমাদের খাদ্য রপ্তানির এসু্যোগ পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারছি না, কারণ আমরা সর্বক্ষেত্রে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে পারছি না। যদি আমরা নিরাপদ খাদ্য ও গুণমান নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে আন্তর্জাতিক খাদ্য বাজারে আমাদের প্রবেশাধিকার বাড়বে এবং খাদ্য ও কৃষি খাতে রপ্তানি আয় অনেক গুণ বৃদ্ধি পাবে।
আলী ইমাম মজুমদার আরও উল্লেখ করেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে এবং জাপান সরকারের আন্তরিক সহযোগিতায় একটি ঋণ চুক্তির মাধ্যমে ঢাকায় একটি আধুনিক নিরাপদ খাদ্য পরীক্ষাগার ভবন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, যা বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের জাতীয় রেফারেন্স পরীক্ষাগার হিসাবে কাজ করবে, এর পাশাপাশি একটি কার্যালয় ভবন এবং কর্মকর্তা ও খাদ্য ব্যবসায়ীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে । চট্টগ্রাম ও খুলনায় বিভাগীয় নিরাপদ খাদ্য পরীক্ষাগার ও কার্যালয় ভবন নির্মাণ করে দেশব্যাপী খাদ্য পরীক্ষণ ও বিচারিক কার্যক্রম সুদৃঢ় করার প্রয়াস নিচ্ছি।
এছাড়া তিনি জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে চলমান বন্ধৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত H.E. Mr. Shinichi Saida বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে দীর্ঘদিনের সুদৃঢ় অংশীদারিত্বের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, জাপান বহু বছর ধরে বাংলাদেশের জ্বালানি, বন্দর, সড়ক ও মহাসড়ক, মেট্রো, সেতু, কৃষিসহ নানা খাতে সহযোগিতা করে আসছে।
রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, নিরাপদ খাদ্য একটি নতুন খাত হিসেবে আমাদের সহযোগিতার পরিসরকে আরও বিস্তৃত করেছে, যা অত্যন্ত আনন্দজনক। তিনি জাপানে নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থার অগ্রযাত্রার তুলে ধরে বলেন জাপান কিভাবে প্রচলিত তাৎক্ষণিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা থেকে সরে এসে নির্দেশনাভিত্তিক পরিদর্শনের দিকে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়েছে ।
তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণ কোনো একক সংস্থার কাজ নয়, বরং এটি একটি সমন্বিত প্রয়াসের দাবি রাখে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সুস্পষ্ট দায়িত্ব বিভাজন এবং সমন্বিত কাঠামো গড়ে তোলার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন, যাতে একক লাইসেন্সিং ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়।
রাষ্ট্রদূত আরও জানান, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে জাপান সরকার একটি ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার মাধ্যমে খাদ্য পরীক্ষাগারের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। পাশাপাশি, প্রযুক্তিগত সহযোগিতা প্রকল্পের মাধ্যমেও জাপান এ খাতে সহায়তা অব্যাহত রেখেছে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, বাংলাদেশ সরকার পর্যাপ্তসংখ্যক নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক এবং খাদ্য পরীক্ষাগারে পেশাদার জনবল নিয়োগে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, যাতে পরীক্ষাগারসমূহের কাঙ্ক্ষিত কার্যকারিতা অর্জিত হয় এবং একটি আধুনিক ও কার্যকর নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়।
সভাপতির বক্তব্যে খাদ্যসচিব জনাব মোঃ মাসুদুল হাসান বলেন, স্বল্পমেয়াদী ও আংশিক সমাধান যথেষ্ট না। আমাদের যা প্রয়োজন তা হলো একটি সম্পূর্ণ আধুনিক নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা । বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (BFSA) এবং JICA'র STIRC প্রকল্প, সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সহযোগিতায় আধুনিক নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা বিনির্মাণে নিরলস কাজ করছে৷
সকল দশটায় শুরু হওয়া এ সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিএফএসএ চেয়ারম্যান জাকারিয়া৷ তিনি বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতি জাইকার আন্তরিক সহযোগিতার জন্য জাইকা ও জাপাপন সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে মঞ্জুর মোর্শেদ আহমেদ বলেন, খাবার অনিরাপদতার কারণে প্রায় ২০০ প্রকারের রোগ হচ্ছে। প্রতিদিন বিশ্বব্যাপি গড়ে ১৬ লাখ মানুষ অনিরাপদ খাবার খেয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। নিরাপদ খাবারগ্রহণ ছাড়া জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ১ (শূন্য দারিদ্র্য), ২ (শূন্য ক্ষুধা) এবং ৩ (সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতা) নং লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যাহত হবে বলে তিনি অভিহিত করেন। এছাড়া, আধুনিক নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনার জন্য তিনি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির যথাযথ ব্যবহারের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
সেমিনারে খাদ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতিনিধি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি, দাতা সংস্থার প্রতিনিধি, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, বিভিন্ন খাদ্য শিল্পের প্রতিনিধি, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রোববার অধিকৃত পশ্চিম তীরের নাবলুস শহরের কাছে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর গুলিতে দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
রামাল্লাহ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রোববার বিকেলে নাবলুসের পূর্বে সালেম গ্রামে ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন, ২৩ বছর বয়সী কুসাই নাসের মাহমুদ নাসার এবং ৩৭ বছর বয়সী উইসাম ঘাসান হাসান শাতাইয়াহ।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষেয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
৭ অক্টোবর, ২০২৩ সালে ফিলিস্তিনি ইসলামপন্থী আন্দোলন হামাসের ইসরাইলে হামলার ফলে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীরে সহিংসতা বেড়েছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীরে ইসরাইলি সেনা বা বসতি স্থাপনকারীরা কমপক্ষে ৯৪৯ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। যাদের মধ্যে অনেকেই যোদ্বা এবং বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিকও রয়েছে।
ইসরাইলি সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ফিলিস্তিনিদের আক্রমণ বা ইসরাইলি সামরিক অভিযানে বেসামরিক নাগরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীসহ কমপক্ষে ৩৫ জন ইসরাইলি নিহত হয়েছেন।
১৯৬৭ সাল থেকে ইসরাইল পশ্চিম তীর দখল করে আছে।