পথে পথে আবেগাপ্লুত নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন দেশনেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
পথে পথে কেউ হাতে ফুল, কেউ ব্যানার-প্ল্যাকার্ড, কেউ বেগম খালেদা জিয়ার ছবিসংবলিত টি-শার্ট পরে, হাতে জাতীয় ও দলীয় পতাকা নেড়ে, শ্লোগানে শ্লোগানে প্রিয় নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।
‘খালেদা জিয়ার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’, ‘খালেদা, জিয়া’, ‘তারেক, রহমান’, ‘খালেদা জিয়া ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ পথে পথে নানা শ্লোগান দিচ্ছেন নেতা-কর্মীরা।
চিকিৎসা শেষে দীর্ঘ চারমাস পর যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে আজ ঢাকায় ফেরেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। সকাল ১০টা ৪৩ মিনিটে অবতরণ করে তাঁকে বহনকারী কাতার আমিরের পাঠানো বিশেষ বিমান (এয়ার অ্যাম্বুলেন্স)। বেলা ১১টা ২০ মিনিটে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে বাসভবন ফিরোজার উদ্দেশে রওয়ানা দেয়। পথে পথে আবেগাপ্লুত উচ্ছ্বসিত নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন তিনি।
দলীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে যেভাবে নেতা-কর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় নেমেছেন, তা দলের প্রতি তাদের আস্থার প্রমাণ।’
বিএনপি এবং দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের কে কোথায় অবস্থান নিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানাবেন, তা আগেই বলে দেওয়া হয়েছিল। তাদের সড়কে ভিড় না করে ফুটপাতে অবস্থান নেওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। যাতে যানজট বা বিশৃঙ্খলা না হয়, সে জন্য পুরো পথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। যদিও অগণিত মানুষকে সামাল দিতে বেগ পেতে হচ্ছে তাদের। বহরের সামনে পিছনে এবং বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িকে ঘিরে মিছিল শ্লোগানে প্রকম্পিত করে রাখছে অগণিত নেতা-কর্মী।
বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে স্বাগত জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সেলিমা রহমান।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে এসেছেন তার দুই পুত্রবধূ-তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শার্মিলা রহমান।
সকাল থেকেই হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সড়ক থেকে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ পর্যন্ত জড়ো হন বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ। তারা বেগম খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানায়।
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ১৩ নভেম্বর ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে মাঠ পর্যায়ে নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে বাড়ানো হচ্ছে পুলিশের টহল, চেকপোস্ট ও গোয়েন্দা নজরদারি। যে কোনো ধরনের সহিংসতা ঠেকাতে মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থা।
এদিকে গতকাল ঢাকার বেশ কয়েকটি জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। কয়েকটি বাসে আগুন দেওয়ারও খবর পাওয়া যায়।
গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় কবে হবে, তা ১৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ঘোষণা করবেন। রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণকে ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে পলাতক অনেক আওয়ামী লীগ নেতা ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা দেন।
এদিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘিরে কোনো শঙ্কা নেই। সেনা সদস্যদের মাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে না। গত রোববার বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
অন্যদিকে এ কর্মসূচি ঘিরে পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। রাজধানীর রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত বিশেষ মতবিনিময় সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন।
পুলিশ সদর দপ্তরের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, আওয়ামী লীগ নানাভাবে দেশে নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা চালানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। সামাজিক মাধ্যমে ঢাকা লকডাউন কর্মসূচির নামে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এসব অপতৎপরতা দেখে জেলা পর্যায় থেকে নেতাকর্মীরা যাতে ঢাকায় আসতে না পারে, সে ব্যাপারে প্রতিটি জেলার পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। চেকপোস্ট, টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে।
এদিকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, সরকারি স্থাপনা, দলীয় কার্যালয় ও পরিবহন টার্মিনালে মোতায়েন থাকবে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য। ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে বসানো হবে বাড়তি চেকপোস্ট। একই সঙ্গে সাইবার ইউনিটও সক্রিয় থাকবে, যাতে সামাজিক মাধ্যমে গুজব বা উস্কানিমূলক পোস্ট শনাক্ত করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া যায়। রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের চলাচল, যোগাযোগ ও সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত বার্তাগুলো পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
জানা যায়, ১৩ নভেম্বরকে কেন্দ্র করে শনিবার তারা পুলিশ সদর দপ্তর থেকে নির্দেশনা পেয়েছেন। অভিযানের পাশাপাশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে চেকপোস্টের ওপর। জেলা থেকে যাতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঢাকায় যেতে না পারেন, সেজন্য সোমবার থেকে সড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট বসানো হয়। বিশেষ করে জেলায় প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে কঠোর নজরদারি থাকবে। সন্দেহজনক ব্যক্তিদের আটক করা হবে।
ডিএমপির একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বেআইনি কর্মকাণ্ড চালানোর উদ্দেশে ঢাকায় গিয়ে অবস্থান করতে পারে। এটা ঠেকাতে বিভিন্ন মেস, হোস্টেল ও আবাসিক হোটেলে অভিযান চালানো হবে। এ ছাড়া নজরদারি থাকবে ঝটিকা মিছিলের দিকে। মিছিল বের হলেই ছত্রভঙ্গ এবং সবাইকে আটক করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, সামাজিক মাধ্যমে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘোষণা নজরে এসেছে। এসব বিষয়ে পুলিশি কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আমরা সতর্ক আছি। এ নিয়ে নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল আজ মঙ্গলবার। কিন্তু ১৩ নভেম্বরের ঢাকা লকডাউনকে সামনে রেখে গত রোববার বিকেলেই সেই সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দীর্ঘ সময় ১৩ নভেম্বরের কর্মসূচির বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ৬৪ জেলার এসপি, থানার ওসি ও মেট্রোপলিটন এলাকার পুলিশ কর্মকর্তাদের কঠোর পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
এদিকে গতকাল সোমবার রাজধানীর মেরুল বাড্ডা ও শাহজাদপুর এলাকায় দুটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। দুটি বাসই ভিক্টর পরিবহনের। কে বা কারা কী উদ্দেশে আগুন দিয়েছে সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
গতকাল ভোরে দুটি বাসে অগ্নিকাণ্ডের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিসের মোট ৪টি ইউনিট দুটি বাসের আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এছাড়া সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের ডিউটি অফিসার খালেদা ইয়াসমিন জানান, বাসে আগুনের খবর পেয়ে মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশন থেকে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। বাসটি শান্তা মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের বলে জানা গেছে।
এদিকে মিরপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের সামনে একটি ও মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডে দুটি ককটের বিস্ফোরণেরও ঘটনা ঘটেছে। সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
অন্যদিকে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনে দুটি এবং মাইডাস সেন্টারের সামনে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার সকাল আনুমানিক ৭টায় এই ৪ ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএমপির ধানমন্ডি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) শাহ মোস্তফা তারিকুজ্জামান জানান, এই ঘটনায় কোনো হতাহত নেই। আলামত ও সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
রাজধানীতে আ.লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৩৪ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
রাজধানীতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৩৪ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল সোমবার ডিএমপির উপকমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এক ক্ষুদেবার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, রাজধানীতে ঝটিকা মিছিল পরিকল্পনা, অর্থায়ন ও অংশগ্রহণকারী কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের আরও ৩৪ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
নিষিদ্ধ দল বিক্ষোভের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: প্রেস সচিব
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল বা সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো যদি কোনো ধরনের বিক্ষোভের চেষ্টা করে, তবে আইন তার সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করবে।
গতকাল সোমবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (বিএএল), তাদের সহযোগী এবং গণহত্যাকারী নেত্রী সম্ভবত ভাবছেন, এটি আবারও ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের মতো সময়। তারা কল্পনা করছে—দুপুরবেলা ডজনখানেক মানুষকে হত্যা করে হাজার হাজার সন্ত্রাসীকে ঢাকার কেন্দ্রে পাঠিয়ে রাস্তাগুলো দখল করবে। দুঃখিত, এখন এটি নতুন বাংলাদেশ।’
শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবীদের ধৈর্য পরীক্ষা করবেন না এবং মনে রাখবেন—এটি ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর নয়। এটি জুলাই—চিরদিনের জুলাই।’
তিনি দেশের মানুষকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে সতর্ক করেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা নিষিদ্ধ কোনো দলের আন্দোলন ঠেকাতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবে।
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ
প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবন, বিচারপতির ভবন, জাজেস কমপ্লেক্স, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান গেটসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বিচার বিভাগীয় এলাকায় সকল প্রকার সভা-সমাবেশ, মিছিল ও গণজমায়েত নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
গতকাল সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৬-এর ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ১১ নভেম্বর মঙ্গলবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবন, বিচারপতি ভবন, জাজেস কমপ্লেক্স, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান গেট, মাজার গেট, জামে মসজিদ গেট, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ও ২-এর প্রবেশ গেট এবং বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবনের সামনে সব ধরনের সভা, সমাবেশ, গণজমায়েত, মিছিল, মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ থাকবে।
এছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায়ের নামে যখন-তখন সড়ক অবরোধ করে যান চলাচলে বিঘ্ন না ঘটানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক ও অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ডিএমপি জানিয়েছে, জননিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এই নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে।
চট্টগ্রাম বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের করতে বিদেশি ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি আরও বলেন, বন্দর নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলবে। কিন্তু উন্নতি করতে হলে প্রযুক্তি, অর্থ ও দক্ষতা প্রয়োজন। বন্দর ঘিরে চার-পাঁচ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে বেশিরভাগ বন্দর বেসরকারি অপারেটররা পরিচালনা করে। আমরাও সেভাবে এগিয়ে যেতে চাই।
সোমবার চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকার লালদিয়া চর কন্টেইনার ইয়ার্ড উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
দেশের স্বার্থের ক্ষতি করে কাউকে বন্দর অপারেশন করতে দেওয়া হবে না জানিয়ে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার রাখার সক্ষমতা ৫৬ হাজার টিইউএস থেকে ১০ হাজার বেড়ে ৬৬ হাজারে উন্নীত হবে। যারা বিজনেস করে তাদের জন্য লালদিয়ার চর টার্মিনাল বড় সুযোগ। ১০ হাজার কনটেইনার রাখার ক্যাপাসিটি বাড়বে।’
তিনি বলেন, বন্দরকে গতিশীল করতে যে প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন হবে, সেই প্রতিষ্ঠানই কাজের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে। সবক্ষেত্রেই দেশের স্বার্থ প্রাধান্য পাবে। বন্দর নিয়ে জাতীয় স্বার্থবিরোধী কোনো কাজ করবে না সরকার।
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের ক্ষতি করে কোন সিদ্ধান্ত হবে না। ব্যবসায়ীরা যেন সুযোগ পায়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’
উপদেষ্টা বলেন, দেশের ঊর্ধ্বমুখী আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের চাপ সামলাতে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই এবং অন্তর্বর্তী সরকার সেই লক্ষ্যেই কাজ করছে।
লালদিয়ার চরের পরিত্যক্ত এই টার্মিনাল বাস্তবায়ন হলে বন্দরের কার্যক্রমও গতিশীল হবে। বন্দরের ভেতরে অব্যবহৃত পরিত্যক্ত স্থানগুলো কাজে লাগানো হবে। চট্টগ্রামে ট্রাক টার্মিনাল না থাকায় নগরী ও জেলায় যানজট বাড়ছে বলেও চিহ্নিত করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মূলত ৩২ একর জায়গার উপর কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। যার মধ্যে ১৪ একর জায়গায় ইয়ার্ড করা হয়েছে। ফলে ১০ হাজার একক কন্টেইনার ধারণক্ষমতা এবং ১ হাজার ৫০০ ট্রাক রাখার ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া ৮ একর জায়গায় হেভি লিফট কার্গো জেটির ব্যাকআপ ও ১০ একর জায়গায় এপিএম টার্মিনাল এলাকা তৈরি করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের ট্যারিফ বাড়ানো প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ৩৭ বছর পর এটি করা হচ্ছে, তাই বিরোধিতা করা অযৌক্তিক। ব্যবসায়ীরাই ব্যবসা করবে। ১৯৮৪ সালে নির্ধারিত ট্যারিফ হালনাগাদের সময় হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা আয় করছেন ১ হাজার টাকা, অথচ বন্দর পাচ্ছে ৫০০ টাকা। সব ক্ষেত্রে বন্দরের পরিচালনা ব্যয় বেড়েছে।
তিনি বলেন, চীনের বন্দরে মানুষ নেই, অটোমেটিক চলছে। আমরা জনবল দিয়ে চালাচ্ছি, তাই ট্যারিফ সংস্কার প্রয়োজন। যদিও বর্ধিত মাশুল এক মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে এবং আদালতে মামলা হয়েছে, তবে বন্দরের সেবার মান বাড়াতে হলে মাশুল সমন্বয় করা প্রয়োজন।
উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন এরপর বে টার্মিনাল এলাকায় পরিবহন টার্মিনাল, তালতলা কনটেইনার ইয়ার্ড (ইস্ট কলোনি সংলগ্ন) উদ্বোধন করেন এবং এক্সওয়াই শেড ও কাস্টমস অকশন শেড পরিদর্শন করেন।
নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেছেন, ‘অতীতের অস্বচ্ছতা ও প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে জাতিকে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে হবে। আর অতীতের কলঙ্ক মুছতে সুষ্ঠু, অবাধ ও ভালো নির্বাচনের বিকল্প নেই।’
সোমবার বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড) কুমিল্লার সম্মেলন কক্ষে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আয়োজিত ‘নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইসি আনোয়ারুল বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশের গণতন্ত্র ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রশাসন, পুলিশ ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিরপেক্ষতা, সাহস ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এককভাবে কেউ ভালো নির্বাচন করতে পারে না—সম্মিলিত প্রয়াসে সফল করতে হবে।’
কর্মশালায় প্রিসাইডিং অফিসারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সুষ্ঠু ভোটগ্রহণ নিশ্চিতের দায়িত্ব আপনাদের হাতে। দায়িত্ব পালনকালে কোনো প্রকার চাপ, ভয় বা প্রভাবকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। নির্বাচন ব্যবস্থাপনা হচ্ছে জাতির প্রতি দায়বদ্ধতা। এটি সম্মানের বিষয় তাই সততা ও নৈতিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের যুগ্মসচিব আব্দুল হালিম খান, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়সার, জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম এবং জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।
কর্মশালায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, প্রিসাইডিং অফিসার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশ নেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অনলাইনে ভ্যাট রিফান্ড আবেদন গ্রহণ, প্রক্রিয়াকরণ এবং সরাসরি করদাতার ব্যাংক হিসাবে অনলাইনে VAT Refund স্থানান্তরের লক্ষ্যে Online VAT Refund Module চালু করেছে।
Online VAT Refund Module চালুর মাধ্যমে বিদ্যমান ভ্যাট ব্যবস্থাপনার Integrated VAT Administration System (iVAS) এর সাথে অর্থ বিভাগের iBAS++ এর আন্ত:সংযোগ স্থাপন পূর্বক করদাতার প্রাপ্য ভ্যাট রিফান্ডের অর্থ BEFTN (Bangladesh Electronic Fund Transfer Network) এর মাধ্যমে সরাসরি করদাতাগণের নির্ধারিত ব্যাংক একাউন্টে স্থানান্তর করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
Online VAT Refund Module এ একজন করদাতা অনলাইনে মূসক রিটার্নের মাধ্যমে তাঁর প্রাপ্য ভ্যাট রিফান্ডের আবেদন দাখিল করতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট মূসক কমিশনারেট অনলাইনে প্রাপ্ত আবেদনটি ভ্যাট আইনের বিধি-বিধানসমূহ যথাযথভাবে অনুসরণ করে যাচাই-বাছাই করত: ভ্যাট রিফান্ড অনুমোদন করে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে iBAS++ এর মাধ্যমে BEFTN ব্যবহার করে সরাসরি করদাতার ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করবে। নতুন প্রবর্তিত এ পদ্ধতিতে করদাতাগণকে ভ্যাট রিফান্ডের আবেদন দাখিল অথবা ভ্যাট রিফান্ডের চেক গ্রহণ করার জন্য ভ্যাট অফিসে যেতে হবে না বিধায় করদাতার সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে এবং রিফান্ড প্রদান প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
নতুন প্রবর্তিত Online VAT Refund Module এর মাধ্যমে রিফান্ড আবেদনসমূহ প্রক্রিয়াকরণের লক্ষ্যে iVAS এ ইতোপূর্বে অনলাইনে বা ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে হার্ডকপির মাধ্যমে দাখিলকৃত সকল অনিষ্পন্ন রিফান্ড আবেদনের অর্থসহ সমুদয় রিফান্ড প্রাপ্তির লক্ষ্যে করদাতাগণকে iVAS সিস্টেমের মাধ্যমে অনলাইনে মূসক-৯.১ ফরমের মাধ্যমে নতুন করে আবেদন দাখিল করতে হবে।
Online VAT Refund Module টি যথাযথভাবে ব্যবহার করে করদাতাগণকে দক্ষতার সাথে দ্রুত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ইতোমধ্যে সকল ভ্যাট কমিশনারেটের কর্মকর্তা-কর্মচারিগণের জন্য প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে। করদাতাগণ সংশ্লিষ্ট মূসক কমিশনারেটে যোগাযোগ করে অনলাইনে ভ্যাট রিফান্ড প্রাপ্তির বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য এবং সহযোগিতা গ্রহণ করতে পারবেন।
ভ্যাট রিফান্ডের অর্থ সরাসরি করদাতার ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তরের জন্য Online VAT Refund Module চালুর মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চলমান ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম আরেক ধাপ এগিয়ে গেল। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সকল কার্যক্রম ধীরে ধীরে সম্পুর্ন অটোমেশনের আওতায় আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
অতীতের অস্বচ্ছতা ও প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে জাতিকে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে হবে। আর অতীতের কলঙ্ক মুছতে সুষ্ঠু, অবাধ ও ভালো নির্বাচনের বিকল্প নেই। আজ (সোমবার) নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (বার্ড) কুমিল্লার সম্মেলন কক্ষে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আয়োজিত ‘নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশের গণতন্ত্র ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রশাসন, পুলিশ ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিরপেক্ষতা, সাহস ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এককভাবে কেউ ভালো নির্বাচন করতে পারে না—সম্মিলিত প্রয়াসে সফল করতে হবে।
কর্মশালায় প্রিজাইডিং অফিসারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সুষ্ঠু ভোটগ্রহণ নিশ্চিতের দায়িত্ব আপনাদের হাতে। দায়িত্ব পালনকালে কোনো প্রকার চাপ, ভয় বা প্রভাবকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। নির্বাচন ব্যবস্থাপনা হচ্ছে জাতির প্রতি দায়বদ্ধতা। এটি সম্মানের বিষয় তাই সততা ও নৈতিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের যুগ্মসচিব আব্দুল হালিম খান, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়সার, জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম এবং জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।
কর্মশালায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশ নেন। সূত্র: বাসস
আন্তঃধর্মীয় ঐক্য এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকার তাদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। সরকার জানিয়েছে, ধর্মীয় সহাবস্থানের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা হলে আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ করা হবে।
আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের এমন অবস্থান তুলে ধরে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজধানীতে সাম্প্রতিক ককটেল হামলার ঘটনায় ২৮ বছর বয়সী এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। প্রাথমিক তদন্তে তাকে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।
সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে কাকরাইলের সেন্ট মেরি'স ক্যাথেড্রাল এবং সেন্ট জোসেফ স্কুল প্রাঙ্গণে ককটেল বিস্ফোরণসহ একাধিক ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ডিএমপি এই জঘন্য ও কাপুরুষোচিত হামলায় জড়িত প্রত্যেককে গ্রেপ্তারের জন্য র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সাথে সমন্বয় করে শহরজুড়ে অভিযান জোরদার করেছে। পাশাপাশি, রাজধানীর সব গির্জা ও বিভিন্ন ধর্মের উপাসনালয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। সূত্র: বাসস
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ‘জুলাই শহীদ শাহরিয়ার খান আনাস আমাদের সামনে নতুন সংগ্রামের পথ দেখিয়ে গেছে। সেই পথ অনুসরণ করে আমরা শুধু দেশকেই রক্ষা করব না— পরিবেশকে, এমনকি সমগ্র মানবজাতিকেও আমাদের রক্ষা করতে হবে।’
গতকাল রোববার গেন্ডারিয়া আদর্শ একাডেমীতে জুলাই শহীদ শাহারিয়ার খান আনাসের ফলক উন্মোচন ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, আনাসের লেখা চিঠিকে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে ইতোমধ্যে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, আনাসের চিঠি দূরদর্শিতার এক অনন্য নজির। কারণ সে যে কাজ করেছে, যে মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করেছে— তা যেন সবাই জানতে পারে, সেজন্যই তার প্রতিটি প্রচেষ্টা।
উপদেষ্টা আরও বলেন, নিজের জীবনের বিনিময়ে আনাস আমাদের গর্বিত করেছেন।
ফরিদা আখতার বলেন, ‘অনেকেই বলছেন বিদ্যালয়ে নাকি সংগীত শিক্ষক রাখা যাবে না, বিদ্যালয়ে গানও করা যাবে না। কিন্তু আজকের অনুষ্ঠানে দেশাত্মবোধক গান এবং মা’কে নিয়ে যে গভীর আবেগময় পরিবেশনা আমরা দেখলাম— তা প্রমাণ করে যে প্রতিটি বিদ্যালয়ে সংগীত চর্চা থাকা কতটা প্রয়োজন।’
তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীরা আনাসের লেখা চিঠি মুখস্থ করে আবৃত্তি আকারে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করতে পারেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ব্রাজিলে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন ‘কপ-৩০’ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। মাছের ডিম পাড়ার জন্য ঋতু অনুযায়ী বৃষ্টি প্রয়োজন। আষাঢ়ে বৃষ্টি না হলে, ইলিশ আশ্বিনে ডিম পাড়তে পারে না। তাই জলবায়ু ভারসাম্য রক্ষা করা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি।’
তিনি আরও বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নদী ও সমুদ্রে অক্সিজেন কমে যাচ্ছে, লবণাক্ততা বেড়ে যাচ্ছে, অনেক সময় পানিতে মাছ ভেসে উঠছে— এ সবই পরিবেশ বিপর্যয়ের সংকেত।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হিসেবে তোমাদের এমন কোনো কাজ করা যাবে না, যা পরিবেশের ক্ষতি করে।’
প্লাস্টিক ব্যবহার কমানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সমুদ্রে প্লাস্টিক, মেঘনা নদীতে দূষণ— এসব এখন বাস্তবতা। গবেষণায় ইলিশে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে। এই প্লাস্টিকই খাবারের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত আমাদের শরীরে প্রবেশ করবে। তাই আমাদের সচেতনভাবে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে।
জামালপুরে এক মেয়ে শিশু কে অপহরণের মামলায় সুজন নামের এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করেছে আদালত।
সোমবার (১০ নভেম্বর) জামালপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ১ এর বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফজলুল হক বলেন, শরিয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ী সুজন জামালপুরে বানিজ্য মেলায় ব্যবসা করতে এসে শহরের ফিশারী মোড় এলাকায় পিয়ারুল ইসলামের গোডাউন ভাড়া নেন। পরিচয়ের সুবাদে পিয়ারুলের ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় সুজন। কিন্তু পরিবারের লোকজন প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ২০২২ সালের ২১ নভেম্বর স্কুলে যাওয়ার পথে সুজন ও তার সহযোগীরা ওই মেয়ে শিশুকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণ করে। এই ঘটনায় একই বছরের ৪ ডিসেম্বর জামালপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করেন অপহৃত মেয়ের মা নাছিমা বেগম। পরবর্তীতে প্রায় এক মাস পর অপহরণের শিকার ওই শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ। গত ২০২৩ সালের ১৯ এপ্রিল ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত সুজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা। মামলায় ১০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামীর অনুপস্থিতে আজ রায় ঘোষণা করেন বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় রায়ে আসামী সুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। জরিমানার অর্থ ভূক্তভোগী শিশুকে প্রদানের আদেশ দেয় আদালত। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ফজলুল হক ও আসামী পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোবারক।
ক্যান্সার আক্রান্ত মা ও তার পঙ্গু ছেলের পাশে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ( বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
‘ছেলে হয়ে যাচ্ছে পঙ্গু, মায়ের ক্যান্সার’— দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশন সম্প্রতি এই শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমান-এর নজরে আসে। এরপর তিনি ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমনকে নির্দেশ দেন অসহায় এই পরিবারটির সার্বিক খোঁজ-খবর নিতে।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ সোমবার সকালে রাজধানীর পান্থপথের একটি হাসপাতালে সংশ্লিষ্ট পরিবারটির সাথে সাক্ষাৎ করতে যায় ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর একটি প্রতিনিধি দল।
উক্ত সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমন-এর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল অসহায় পরিবারটির সদস্যদের কাছে চিকিৎসা সহায়তা তুলে দেয়। এ সময়ে রুমন সংশ্লিষ্ট পরিবারটির প্রতি বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান-এর সহমর্মিতার বার্তা পৌঁছে দেন এবং তাদের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন— ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা-ই-জামান সেলিম, সংগঠনটির সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, সদস্য মাসুদ রানা লিটন, মুস্তাকিম বিল্লাহ, ফরহাদ আলী সজীব ও শাহাদাত হোসেন।
এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন— জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সম্পাদক হাসনাইন নাহিয়ান সজীব, বুয়েট ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবু হানিফ, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদ ইসলাম কাজল, মিরপুর থানা বিএনপি নেতা শাকিল আহমেদ ও বনানী থানা বিএনপি নেতা সায়হাম সিকান্দার পাপ্পু, ছাত্রদল নেতা মশিউর রহমান মহান ও আব্দুল্লাহ আল মিসবাহ প্রমুখ।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল বা সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো যদি কোনো ধরনের বিক্ষোভের চেষ্টা করে, তবে আইন তার সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করবে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (বিএএল), তাদের সহযোগী এবং গণহত্যাকারী নেত্রী সম্ভবত ভাবছেন, এটি আবারও ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের মতো সময়। তারা কল্পনা করছে—দুপুরবেলা ডজনখানেক মানুষকে হত্যা করে হাজার হাজার সন্ত্রাসীকে ঢাকার কেন্দ্রে পাঠিয়ে রাস্তাগুলো দখল করবে। দুঃখিত, এখন এটি নতুন বাংলাদেশ।”
শফিকুল আলম আরও বলেন, “জুলাই বিপ্লবীদের ধৈর্য পরীক্ষা করবেন না এবং মনে রাখবেন—এটি ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর নয়। এটি জুলাই—চিরদিনের জুলাই।”
তিনি দেশের মানুষকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে সতর্ক করেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা নিষিদ্ধ কোনো দলের আন্দোলন ঠেকাতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসন এ ধরনের বিক্ষোভ রোধে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে এবং সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
অনলাইনে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ফেরত বা ভ্যাট রিফান্ড প্রক্রিয়া চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে হয়রানি হ্রাসে অনলাইন ভ্যাট রিফান্ড মডিউল চালু করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
সোমবার (১০ নভেম্বর) এক প্রজ্ঞাপন ইস্যু করে সংস্থাটি জানিয়েছে অনলাইনে ভ্যাট রিফান্ড আবেদন গ্রহণ, প্রক্রিয়াকরণ এবং সরাসরি করদাতার ব্যাংক হিসাবে অনলাইনে ভ্যাট রিফান্ড স্থানান্তরের লক্ষ্যে অনলাইন ভ্যাট রিফান্ড মডিউল চালু হয়েছে। যখন কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কাঁচামাল বা সেবা কিনে, তখন সে ইনপুট ভ্যাট প্রদান করে। আবার সেই পণ্য বা সেবা বিক্রি করলে গ্রাহকের কাছ থেকে আউটপুট ভ্যাট গ্রহণ করে। যদি ইনপুট ভ্যাটের পরিমাণ আউটপুট ভ্যাটের চেয়ে বেশি হয়, তখন অতিরিক্ত ভ্যাট রিফান্ড হিসেবে দাবি করতে পারে।
এ বিষয়ে এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আল আমিন শেখ বলেন, ভ্যাট রিফান্ডের অর্থ সরাসরি করদাতার ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তরের জন্য অনলাইন ভ্যাট রিফান্ড মডিউল চালু হয়েছে। এর মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চলমান ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম আরেক ধাপ এগিয়ে গেল। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সব কার্যক্রম ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ অটোমেশনের আওতায় আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
এতদিন ভ্যাট রিফান্ড না পাওয়ার অভিযোগ করতেন ব্যবসায়ীরা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠকে ভ্যাট রিফান্ডের দাবিও তুলতেন। এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান ব্যবসায়ীদের ভ্যাট রিফান্ড দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান এ বিষয়ে বলেন, ভ্যাট রিটার্ন সম্পূর্ণ অটোমেশনে চলে যাবে। ভ্যাটে আমরা কোনো পেপার রিটার্ন নেব না। সার্ভারে চাপ কমাতে ব্যবসাভেদে রিটার্ন দাখিলে শর্ত শিথিল করা হয়েছে।
বিদ্যমান ভ্যাট ব্যবস্থাপনার ইন্টিগ্রেটেড ভ্যাট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেমের (আইভাস) সঙ্গে অর্থ বিভাগের আইবাস প্ল্যাস প্ল্যাসের আন্ত:সংযোগ স্থাপন করা হবে। করদাতার প্রাপ্য ভ্যাট রিফান্ডের অর্থ বিইএফটিএন'র মাধ্যমে সরাসরি করদাতাগণের নির্ধারিত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
অনলাইন প্রক্রিয়া
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, নতুন এই মডিউলের মাধ্যম এ একজন করদাতা অনলাইনে মূসক রিটার্নের মাধ্যমে তার প্রাপ্য ভ্যাট রিফান্ডের আবেদন দাখিল করতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট মূসক কমিশনারেট অনলাইনে প্রাপ্ত আবেদনটি ভ্যাট আইনের বিধি-বিধানগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করে যাচাই-বাছাই শেষে ভ্যাট রিফান্ড অনুমোদন করে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে আইবাস আইবাস প্ল্যাস প্ল্যাসের মাধ্যমে বিইএফটিএন ব্যবহার করে সরাসরি করদাতার ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করবে। নতুন প্রবর্তিত এ পদ্ধতিতে করদাতাদের ভ্যাট রিফান্ডের আবেদন দাখিল অথবা ভ্যাট রিফান্ডের চেক গ্রহণ করার জন্য ভ্যাট অফিসে যেতে হবে না বিধায় করদাতার সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে এবং রিফান্ড প্রদান প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
নতুন প্রবর্তিত মডিউলের মাধ্যমে রিফান্ড আবেদনগুলো প্রক্রিয়াকরণের লক্ষ্যে আইভাস এ ইতঃপূর্বে অনলাইনে বা ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে হার্ডকপির মাধ্যমে দাখিলকৃত সব অনিষ্পন্ন রিফান্ড আবেদনের অর্থসহ সমুদয় রিফান্ড প্রাপ্তির লক্ষ্যে করদাতাগণকে আইভাস সিস্টেমের মাধ্যমে অনলাইনে মূসক-৯.১ ফরমের মাধ্যমে নতুন করে আবেদন দাখিল করতে হবে।
আরও জানা যায়, মডিউলটি যথাযথভাবে ব্যবহার করে করদাতাদের দক্ষতার সঙ্গে দ্রুত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ইতোমধ্যে সব ভ্যাট কমিশনারেটের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে। করদাতারা সংশ্লিষ্ট মূসক কমিশনারেটে যোগাযোগ করে অনলাইনে ভ্যাট রিফান্ড প্রাপ্তির বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য এবং সহযোগিতা গ্রহণ করতে পারবেন।
সম্প্রতি পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে বাজারে চলছে অস্থিরতা। কেজিপ্রতি হঠাৎ ৩০ থেকে ৪০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে দাম ১১০ টাকা ছাড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মধ্যস্বত্বভোগীদের সরাসরি কারসাজির তথ্য জানার পরও পেঁয়াজের দাম কমাতে আমদানির হঁশিয়ারি দিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
অন্যদিকে, আমদানির অনুমতি দেওয়ার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)। গত বৃহস্পতিবার বাণিজ্য সচিব ও কৃষি সচিবকে পাঠানো চিঠিতে বিটিটিসি জানায়, বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১১০ টাকা ছাড়িয়েছে। তাই সরবরাহ বাড়াতে আমদানির অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। যদিও ট্যারিফ কমিশন বলছে, বাজারে পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির পেছনে বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা ও মধ্যস্বত্বভোগীদের কারসাজি সরাসরি দায়ী।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, দেশে এখন পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই। অন্তত ৭৫ হাজার টন নতুন দেশি পেঁয়াজ চলতি মাসেই বাজারে আসছে। আমদানিকারকদের একটি অংশ আমদানির অনুমতি না পেয়ে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এ মুহূর্তে আমদানির অনুমতি দিলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাদের দাবি, চলতি মাসে নতুন দেশি পেঁয়াজ বাজারে আসছে। তাই এখনই আমদানির অনুমতি দিলে কৃষক ন্যায্যমূল্য পাবেন না, যা দীর্ঘ মেয়াদে উৎপাদনে অনীহা সৃষ্টি করবে। বর্তমানে যথেষ্ট পরিমাণ পেঁয়াজ মজুত আছে এবং দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে তদারকি কার্যক্রম চলছে।
গতকাল রোববার বিকালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পেঁয়াজের বর্তমান বাজার পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, দেশে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। কোনো সংকট নেই। পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য সরকার ১০ হাজার হাই ফ্লো মেশিনও সরবরাহ করেছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসবে। ফলে বাজার স্বাভাবিক না হলে আমরা আমদানির অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেব।
তিনি বলেন, পেঁয়াজ আমদানির জন্য দুই হাজার ৮০০ আমদানির আবেদন পড়েছে এর ১০ শতাংশ যদি অনুমোদন দেওয়া হয় তাহলে বাজারে পেঁয়াজে সয়লাব হয়ে যাবে। কৃষক ক্ষতির মুখে পড়বেন। এজন্য আমরা সামগ্রিক বিবেচনায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।
পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি মজুতদার বা সিন্ডিকেটের কারণে হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমার কাছে মজুতদারি বা সিন্ডিকেটের খবর নেই। সাময়িক সংকট তৈরি হয়েছে। আশাকরি দ্রুত সংকট কেটে যাবে। তিনি আরো বলেন, সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য পেঁয়াজ মজুত করা হচ্ছে বলে আমাদের কাছে খবর রয়েছে।
ট্যারিফ কমিশনের আমদানির সুপারিশ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেঁয়াজের উচ্চমূল্যের সুবিধা সরাসরি কৃষকের কাছে পৌঁছাচ্ছে না, বরং মধ্যস্বত্বভোগীরা এ সুযোগ নিচ্ছেন। আমদানির সুযোগ দিলে বাজারে মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব কমে যাবে এবং ভোক্তারা যৌক্তিক মূল্যে পেঁয়াজ কিনতে পারবেন।
ট্যারিফ কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি দেশে পেঁয়াজের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় দেশে পেঁয়াজের চাহিদা, উৎপাদন, স্থানীয় বাজারমূল্য, আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য, বিদ্যমান আমদানি শুল্কসহ সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়েছে।
সরকারি সংস্থা টিসিবির তথ্য বিশ্লেষণ করে ট্যারিফ কমিশন বলছে, ২০২৩ সালের মার্চে পেঁয়াজের মূল্য গড়ে কেজিপ্রতি ৩৩ টাকা ছিল, যা নভেম্বরে দাঁড়ায় ১১৫ টাকায়। অর্থাৎ, মার্চের তুলনায় নভেম্বরে দাম বাড়ে ২৪৮ শতাংশ। ২০২৪ সালের এপ্রিলে গড় মূল্য ছিল ৬৩ টাকা, যা নভেম্বরে বেড়ে হয় ১৩০ টাকা। সেই হিসাবে এপ্রিলের তুলনায় নভেম্বরে দাম বেড়েছে ১০৬ শতাংশ। চলতি বছরের মার্চে সর্বনিম্ন দর ছিল ৪২ টাকা, যা নভেম্বরে ১৫০ শতাংশ বেড়ে হয় ১০৫ টাকা। পর্যালোচনায় দেখা যায়, পেঁয়াজের দাম মার্চ-এপ্রিলের তুলনায় নভেম্বরে ১০০ শতাংশের বেশি বেড়ে গেছে। এ ধরনের সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান প্রয়োজন। এ বছরও মুড়িকাটা পেঁয়াজের রোপণ সময় বিলম্বিত হওয়ায় তা উৎপাদন মৌসুমেও বিলম্বিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কমিশন বলে, গত দুই-তিন মাসে পেঁয়াজের মূল্য স্থিতিশীল থাকলেও গত এক সপ্তাহে দাম বেড়েছে ৩৭ থেকে ৪২ শতাংশ। প্রতি বছর অক্টোবর-ডিসেম্বরে দাম বাড়ার প্রবণতা থাকলেও গত সপ্তাহে দাম বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে, যা বাজার ব্যবস্থাপনা ও মধ্যস্বত্বভোগীদের কারসাজির সরাসরি ইঙ্গিত দেয়।
ট্যারিফ কমিশন মতে, পার্শ্ববর্তী দেশে পেঁয়াজের দাম এখন কেজিতে প্রায় ১৬ টাকা, অর্থাৎ টনে ১৯৫ ডলার। সেই হিসাবে ১০ শতাংশ শুল্ককর বহাল রেখেও পেঁয়াজ আমদানি করা গেলে দেশে কেজিপ্রতি ৫০ টাকার কম দামে বিক্রি করা সম্ভব।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, অক্টোবর পর্যন্ত বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ থাকলেও, এখন তা কমে গেছে। ফলে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। কারণ এ বছর পেঁয়াজের আমদানি খুব বেশি হয়নি। দেশি পেঁয়াজের ওপর বাজার নির্ভর ছিল।
নভেম্বরে দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকতে পারে উল্লেখ করে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলে দাম কমবে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। পেঁয়াজ আমদানি করা গেলে দেশে কেজিপ্রতি ৫০ টাকার কম দামে বিক্রি করা সম্ভব। বর্তমানে পেঁয়াজের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক প্রযোজ্য।
বাংলাদেশের পেঁয়াজ আমদানি প্রধানত ভারত থেকে হয়। এছাড়া তুরস্ক, পাকিস্তান, মিয়ানমার, চীন ও মিসর থেকেও পেঁয়াজ আসে। গত অর্থবছরে মোট চার লাখ ৮৩ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ২৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- নওপাড়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি রূপচান বেপারী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক আবরার খান তাহমিদ ওরফে তাহমিদ আশরাফ (২২), নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রায়হান খান আজাদ (২৭), শের-ই-বাংলা নগর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ এ বি এম নুরুল হক ওরফে ছোটন চৌধুরী (৬৯), শাহবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাবলু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মো. গিয়াস উদ্দিন খোকন (৭০), মিরপুর মডেল থানা আওয়ামী লীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান ভূইয়া, ভাষানটেক থানা যুবলীগের সদস্য মো. সিরাজুল ইসলাম ওরফে আহমাদ আলী (৪০), মোহাম্মদপুর থানা শ্রমিক লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো. জসিম ওরফে বিল্লাল।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে আরও রয়েছেন- গেন্ডারিয়া থানা মৎস্যজীবী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাহবুব রহমান (৫৫), শ্যামপুর থানা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম (৪০), কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম (৪০), আশুলিয়া থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. শাহজালাল (৩৮), রায়েরবাগ ইউনিট যুবলীগের সেক্রেটারি মো. দেলোয়ার হোসেন ওরফে পলাশ, শরীয়তপুরের নড়িয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউনুস সরদার (৪৫), পল্টন থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আকবর হোসেন (৫২), পল্টন থানা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মো. আবু সাঈদ (৫৬), নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. সামছুদ্দিন আহমেদ সেলিম (৬২), হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলা কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিন রেহান (৫১), আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির সহ-সম্পাদক মো. মেজবাহ উদ্দিন প্রিন্স (৪৩), সিলেট মহানগর যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক মরিয়ম পারভীন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির সরকার ওরফে গলাকাটা নাছির (৫৪), নেত্রকোনা শ্রমিক লীগের সদস্য আলী হোসেন (৩১), কুমিল্লার ৬নং নিকলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মানিক খন্দকার (৫২) এবং বরগুনার তালতলী উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হাবিবুর রহমান কামাল (৪২)।
রোববার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীর বিভিন্ন বিভাগে অভিযান পরিচালিত হয়। এর মধ্যে ডিবি মিরপুর বিভাগ তিনজন, রমনা বিভাগ তিনজন, সাইবার বিভাগ দুজন, মতিঝিল বিভাগ চারজন, ওয়ারী বিভাগ পাঁচজন, উত্তরা বিভাগ দুজন, তেজগাঁও বিভাগ দুজন, লালবাগ বিভাগ তিনজন এবং গুলশান বিভাগ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা ঢাকা শহরে ঝটিকা মিছিলের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি ও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। পাশাপাশি তারা আগামী ১০-১২ নভেম্বর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের স্লোগান সংবলিত এক লাখ গ্যাস বেলুন ওড়ানোর পরিকল্পনা করছিলেন।
ডিসি তালেবুর রহমান জানান, রাজধানীর শাহবাগ, মিরপুর, রমনা, তেজগাঁও, মতিঝিল, ওয়ারী, উত্তরা, লালবাগ ও গুলশান এলাকায় পৃথক সময় ও স্থানে অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ও নাশকতা প্রতিরোধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।