আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় প্রতিক্রিয়ায় গণতান্ত্রিক বিশ্ব এই নির্লজ্জ খুনি, গণতন্ত্র বিরোধী এবং দুর্নীতিগ্রস্ত দলের পক্ষে কখনও কথা বলবে না বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আজ বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি না যে বিশ্বের কোনো দেশ আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় তাতে দুঃখ প্রকাশ করবে।’
শফিকুল আলম বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজন ছিল।
তিনি বলেন, ‘এর আগে আমরা দেখেছি, শুধুমাত্র কোনো দলের কার্যক্রমই নয়, বরং সম্পূর্ণ রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশগুলোতেও, যখন তারা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে বা জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করেছে।’
প্রেস সচিব জানান, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে জার্মানি ও ইতালি নাৎসি এবং ফ্যাসিস্ট দলগুলোকে নিষিদ্ধ করে। এছাড়াও, স্পেন ও বেলজিয়ামে কিছু দলকে বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যক্রমের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়।
তিনি উল্লেখ করেন, জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) প্রতিবেদন সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করেছে যে আওয়ামী লীগ এর নেতৃত্ব এবং দলের কর্মী এবং সহযোগী সংগঠনগুলো মানবতার বিরুদ্ধে ঘৃণ্য অপরাধে অংশগ্রহণ করেছে।
তিনি আরও বলেন, এই দলটি বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ব্যাপক ধ্বংস সাধন করেছে।
শফিকুল আলম বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থকরা ব্যাংকগুলো লুটে নিয়েছে এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করেছে।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক বিশ্বে এমন কোনো পক্ষ নেই যারা নির্লজ্জ এই খুনি, গণতন্ত্র বিরোধী এবং দুর্নীতিগ্রস্ত দলের পক্ষে কথা বলবে।
প্রেস সচিব বলেন, ‘সুতরাং, আমরা আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কোনো নেতিবাচক আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া আশা করি না।’
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে ২০২৪ সালের ৯ জুলাই (মঙ্গলবার) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং ‘গণসংযোগ’ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।
এদিন কর্মসূচি পালন শেষে বিকেল সাড়ে ৬ টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
সংবাদ সম্মেলন থেকে আগামীকাল বুধবার (১০ জুলাই) সারাদেশে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম বলেন, বুধবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সারাদেশে এ কর্মসূচি চলবে। সড়কপথ ও রেলপথ বাংলা ব্লকেডের আওতাভুক্ত থাকবে। ‘বাংলা ব্লকেড’-এর কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালিত হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহবাগ এলাকায়। সকাল ১০টায় আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জমায়েত হবো। তারপর ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি পালনের জন্য শাহবাগ মোড়ে যাবো।
তিনি বলেন, নিজ উদ্যোগে শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনে নামেনি। এই ইস্যুতে সরকার নিশ্চুপ থাকার কারণে এই ধরনের কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছে আন্দোলনকারীরা। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস পাই নাই বলেই আমাদের এই আন্দোলন। আমরা কোটা বাতিল চাই না, অনগ্রসর শ্রেণির জন্য ৫-১০ শতাংশ কোটা রেখে বাকিগুলো রদ করতে হবে।
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিলে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। ৭ জুলাই থেকে তারা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে ‘বাংলা ব¬কেড’ কর্মসূচি পালন করেন। মঙ্গলবার তারা ‘বাংলা ব্লকেড’ বন্ধ রেখে ‘গণসংযোগ’ কর্মসূচি পালন করেন। এদিন সমন্বয়নকরা দেশের বিভিন্ন জায়গার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আনলাইনে গণসংযোগ চালান।
এদিকে ৯ জুলাই কোটা পুনর্বহাল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। তবে ছাত্রদের সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, যারা আপিল করেছেন, তারা এই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের কেউ নয়।
এদিন কোটা আন্দোলন নিয়ে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, ‘কোটা ইস্যুতে সরকারের সিদ্ধান্তের ব্যাপার নেই, এ ইস্যু এখন সর্বোচ্চ আদালতের কাছে। রাজপথে আন্দোলন করে এটার নিরসন হবে না।’
একইদিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সারাদেশে দলের নেতাকর্মীদের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ব্যাপারে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন।
এদিন কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে দুপুরে মানববন্ধন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। বুয়েটের শহীদ মিনারে ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গণসংযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি ও দুপুর ১২টার দিকে ৫টি ছাত্রী আবাসিক হলে গণসংযোগ চালান তারা।
এদিকে সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিকেল পৌনে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন মহাসড়ক আধা ঘণ্টা ধরে আটকে রেখে বিক্ষোভ করেন তারা।
মঙ্গলবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টার দিকে কলেজ গেটের সামনের সড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পৌনে চারটার দিকে চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহর রেলস্টেশনে রেললাইন অবরোধ করেন। এতে কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি আধা ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।
৯ জুলাই বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বেলা আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে একাডেমিক ভবনের সামনে সমাবেশ করেন তারা। সমাবেশ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে স্লোগান দেন তারা।
এদিন হবিগঞ্জেও বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। দুপুরে শহরের প্রাণকেন্দ্রে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ইয়েমেনের হোদেইদা উপকূলে সোমবার একটি বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়েছে বন্দুকধারীরা। হামলায় দুই জন ক্রু সদস্য আহত ও আরও দুজন নিখোঁজ রয়েছেন।
পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে দুবাই থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
তারা জানায়, ২৪ ঘন্টার মধ্যে লোহিত সাগরে দ্বিতীয় জাহাজটি হামলার শিকার এটি।
ইয়েমেনের হুথিরা এর আগে গত রোববারের একটি হামলার দায় স্বীকার করেছিল, যেখানে লোহিত সাগরে স্কিফের বন্দুকধারীরা একটি বাণিজ্যিক জাহাজে গুলি চালিয়ে, রকেট চালিত গ্রেনেড হামলা ও অন্যান্য অস্ত্রের আঘাতের পর ক্রুদের জাহাজ ছেড়ে যেতে বাধ্য করে।
কয়েক মাসের মধ্যে এই ঘটনাটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক পথে বাণিজ্যিক জাহাজের ওপর প্রথম হুথি আক্রমণ।
মে মাসে, বিদ্রোহীরা ওয়াশিংটনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়, যা কয়েক সপ্তাহ ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র হামলার অবসান ঘটায়।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক নিরাপত্তা সংস্থা অ্যামব্রে সোমবার জানিয়েছে, ‘লোহিত সাগরে উত্তর দিকে যাওয়ার সময় লাইব্রেরিয়ার পতাকাবাহী একটি বাল্ক ক্যারিয়ারের দিকে দুটি স্কিফ (ছোট নৌকা) ও মনুষ্যবিহীন আকাশযান (ইউএভি) আক্রমণ করে।’
এতে বলা হয়েছে, ‘স্কিফগুলো জাহাজের ওপর গুলি চালায় বলে জানা গেছে এবং জাহাজের আর্মড সিকিউরিটি টিম (এএসটি) পাল্টা গুলি চালায়।’
এতে আরো বলা হয়েছে, ‘দুইজন ক্রু সদস্য আহত ও আরো দুইজন ক্রু সদস্য নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে’।
ব্রিটিশ নৌবাহিনী পরিচালিত ইউকে মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস জানিয়েছে, তারা ইয়েমেনের হোদেইদা থেকে ৫১ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ৯৪ কিলোমিটার) পশ্চিমে একটি ঘটনার খবর পেয়েছে।
যারা সংস্কার পিছিয়ে দিচ্ছে, তারাই নির্বাচনও পিছিয়ে দিতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। এ ছাড়া আগামী ৩ আগস্ট শহিদ মিনারে জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিতে ‘চল চল ঢাকা চল’ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
সোমবার (৭ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পাবনা শহিদ চত্বরে এনসিপির জুলাই পদযাত্রার পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত বলেন, ‘বাংলাদেশের আকাশে সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। আমরা নাকি নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাই। নির্বাচন তারাই পিছিয়ে দিতে চায়, যারা সংস্কার পিছিয়ে দিচ্ছে। আপনারা সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের রব তুলে নির্বাচন-বিরোধী ও গণতান্ত্র-বিরোধী অবস্থান নিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘ভারতের ষড়যন্ত্র ও মিডিয়ার ষড়যন্ত্র থেকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। একটি দল আমাদের অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা বলছে, এই অভ্যুত্থানের আইনগত ভিত্তি নেই। তারা নতুন করে মুজিববাদের ঠিকাদারি নিয়েছে। আগামী ৩ আগস্ট শহিদ মিনারে জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিতে চল চল ঢাকা চল কর্মসূচি থাকবে।’
বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘আমরা পিছিয়ে যাব না। আমরা এই মিডিয়া সংস্কার করেই ছাড়ব। মিডিয়াকে মাফিয়াতন্ত্র মুক্ত করেই ছাড়ব।’
পথসভায় দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনীম জারা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, পাবনার আহ্বায়ক বরকতউল্লাহ ফাহাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সাধারণত বড় ধরনের বিনিয়োগ ছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতের গোল্ডেন ভিসা পাওয়া যায় না। তবে দেশটি এবার নিয়ে এসেছে এমন এক গোল্ডেন ভিসা, যা পাওয়ার জন্য ব্যবসা বা সম্পত্তিতে বিশাল বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে না। ভারতীয় এবং বাংলাদেশিদের জন্য চালু হয়েছে এই নতুন ধরনের ভিসা, যেটি মূলত মনোনয়নভিত্তিক।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আগে দুবাইয়ের গোল্ডেন ভিসা পেতে দেশটিতে কোনো ব্যবসা অথবা কমপক্ষে ২ মিলিয়ন দিরহাম (৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকার বেশি) মূল্যের সম্পত্তি কিনতে হতো। তবে, নতুন ‘মনোনয়নভিত্তিক ভিসা নীতির আওতায় ভারতীয় ও বাংলাদেশিরা ১ লাখ দিরহাম (প্রায় ৩৩ লাখ টাকার কিছু বেশি) ফি দিয়ে দুবাইয়ের গোল্ডেন ভিসা পাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, আগামী ৩ মাসের মধ্যে প্রায় ৫ হাজার ভারতীয় এই নতুন ভিসার জন্য আবেদন করতে প্রস্তুত।
এই নতুন ভিসার অন্যতম বড় সুবিধা হলো, এটি সম্পত্তিভিত্তিক গোল্ডেন ভিসা থেকে আলাদা। সম্পত্তিভিত্তিক ভিসা সম্পত্তি বিক্রি বা ভাগ হয়ে গেলে বাতিল হয়ে যেতে পারে, কিন্তু মনোনয়নভিত্তিক ভিসা একবার পেলে তা স্থায়ী হবে।
যারা এই ভিসার জন্য মনোনীত হবেন, তারা পরিবারকে দুবাইতে নিয়ে আসতে পারবেন এবং তাদের ভিসার ওপর ভিত্তি করে গৃহকর্মী ও গাড়িচালক রাখতে পারবেন। এছাড়া তারা দুবাইতে যেকোনো ব্যবসা বা পেশাদার কাজ করতে পারবেন।
ভারত ও বাংলাদেশের জন্য এই নতুন ভিসা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার প্রক্রিয়া চলছে। রায়াদ গ্রুপ নামে একটি পরামর্শক সংস্থা ভারত ও বাংলাদেশে মনোনয়নভিত্তিক গোল্ডেন ভিসার প্রাথমিক রূপটি পরীক্ষা করার দায়িত্ব পেয়েছে। রায়াদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রায়াদ কামাল আইয়ুব এই নতুন ভিসাকে ভারতীয় ও বাংলাদেশিদের জন্য একটি ‘সুবর্ণ সুযোগ’ বলে অভিহিত করেছেন।
নতুন গোল্ডেন ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া এবং অনুমোদনের বিষয়ে রায়াদ কামাল আইয়ুব বলেন, যারা এই ভিসার জন্য আবেদন করবেন, তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড (অতীত ইতিহাস) যাচাই করা হবে। এর আওতায় অর্থপাচার এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের রেকর্ড যাচাইও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। আবেদনকারীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও পরীক্ষা করা হবে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, এই ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য হলো,- সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাজার এবং ব্যবসাগুলো যেন আবেদনকারীর কাছ থেকে সংস্কৃতি, অর্থ, বাণিজ্য, বিজ্ঞান, স্টার্টআপ, পেশাদার পরিষেবা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে কীভাবে উপকৃত হতে পারে, তা নির্ধারণ করতে পারে।
রায়াদ সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘এরপর রায়াদ গ্রুপ আবেদনপত্রটি সরকারের কাছে পাঠাবে, সরকারের নির্দিষ্ট দপ্তর মনোনয়নভিত্তিক গোল্ডেন ভিসার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’
রায়াদ জানান, আবেদনগুলো ভারত ও বাংলাদেশের ওয়ান ভাস্কো সেন্টার (ভিসা কনসিয়ারজ সার্ভিস কোম্পানি), তাদের নিবন্ধিত অফিস, অনলাইন পোর্টাল, অথবা তাদের ডেডিকেটেড কল সেন্টারের মাধ্যমে জমা দেওয়া যাবে।
বিশ্বব্যাপী চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ থেকে খাদ্য রপ্তানির ব্যাপক সম্ভাবনা ও সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
সোমবার (০৭ জুলাই) ঢাকায় একটি পাঁচতারকা হোটেলে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আয়োজিত ‘মর্ডান ফুড সেফটি সিস্টেম ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
খাদ্য সচিব মো. মাসুদুল হাসানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের খাদ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক জনাব মঞ্জুর মোর্শেদ আহমেদ।
সম্মানিত অতিথি হিসাবে এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি ও জাইকা বাংলাদেশের প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহাইড।
আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘সর্বক্ষেত্রে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে না পারার কারণে খাদ্য রপ্তানির সুযোগকে পুরোপুরি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছে এবং আমাদের জনকল্যাণের মৌলিক স্তম্ভগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিরাপদ খাদ্য।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করে থাকলেও, নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করার অনেক সুযোগ আছে। আধুনিক নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা বিনির্মাণে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা একান্ত প্রয়োজন।’
আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘আমরা যদি নিরাপদ খাদ্য ও খাদ্যের গুণমান নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে আন্তর্জাতিক খাদ্য বাজারে আমাদের প্রবেশাধিকার বাড়বে এবং খাদ্য ও কৃষি খাতে রপ্তানি আয় অনেক গুণ বৃদ্ধি পাবে।’
তিনি বলেন, ‘আধুনিক নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা অর্জনের জন্য দক্ষ মানব সম্পদ ও আন্তর্জাতিক মানের স্বীকৃত পরীক্ষাগার প্রয়োজন।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে এবং জাপান সরকারের আন্তরিক সহযোগিতায় একটি ঋণ চুক্তির মাধ্যমে ঢাকায় একটি আধুনিক নিরাপদ খাদ্য পরীক্ষাগার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, যা বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের জাতীয় রেফারেন্স পরীক্ষাগার হিসাবে কাজ করবে।
এর পাশাপাশি একটি কার্যালয় ভবন এবং কর্মকর্তা ও খাদ্য ব্যবসায়ীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে ।
চট্টগ্রাম ও খুলনায় বিভাগীয় নিরাপদ খাদ্য পরীক্ষাগার ও কার্যালয় ভবন নির্মাণ করে দেশব্যাপী খাদ্য পরীক্ষণ ও বিচারিক কার্যক্রম সুদৃঢ় করা হবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে দীর্ঘ দিনের সুদৃঢ় অংশীদারিত্বের বিষয়টি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, জাপান বহু বছর ধরে বাংলাদেশের জ্বালানি, বন্দর, সড়ক ও মহাসড়ক, মেট্রো, সেতু ও কৃষিসহ নানা খাতে সহযোগিতা করে আসছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, নিরাপদ খাদ্য একটি নতুন খাত হিসেবে আমাদের সহযোগিতার পরিসরকে আরও বিস্তৃত করেছে, যা অত্যন্ত আনন্দদায়ক।
সাইদা শিনিচি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, বাংলাদেশ সরকার পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক এবং খাদ্য পরীক্ষাগারে পেশাদার জনবল নিয়োগে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, যাতে পরীক্ষাগারসমূহের কাঙ্ক্ষিত কার্যকারিতা অর্জিত হয় এবং একটি আধুনিক ও কার্যকর নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়।
সভাপতির বক্তব্যে খাদ্য সচিব মো. মাসুদুল হাসান বলেন, স্বল্পমেয়াদি ও আংশিক সমাধান যথেষ্ট নয়। আমাদের যা প্রয়োজন, তা হলো একটি সম্পূর্ণ আধুনিক নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিএফএসএ চেয়ারম্যান জাকারিয়া। তিনি বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতি নিরলস সহযোগিতার জন্য জাইকার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
সেমিনারে খাদ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতিনিধি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি, দাতা সংস্থার প্রতিনিধি, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, বিভিন্ন খাদ্য শিল্পের প্রতিনিধি, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, কোনো কিছু চাপিয়ে দিচ্ছেনা ঐকমত্য কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর অনুভূতি এবং বক্তব্য ধারণ করে সংশোধন প্রস্তাব আনছে কমিশন।
ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর ২য় পর্যায়ের ১০ম দিনের আলোচনার শুরুতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ আজ এ সব কথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল নিয়ে অধিকাংশ দলের আপত্তি থাকার কারণে ভিন্ন ভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যাতে কোনো ভুল বুঝাবুঝি না হয়, সেদিকে কমিশন নজর রাখছে। এর ফলে অনেক কিছু বাদ দিয়ে আমরা আলোচনায় অংশগ্রহণ করছি। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হচ্ছে উল্লেখ করে আলী রীয়াজ আরো বলেন, এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। যতটা সম্ভব বেশি সময় মিলিত হয়ে যেন দ্রুত কাজ শেষ করা যায়, সেজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। আলোচনায় নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন এই তিনটি বিষয়ে আলোচনা হওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন। আজ উপজেলা পর্যায়ে অধস্তন আদালতের সম্প্রসারণ, জরুরি অবস্থা ঘোষণা, নারী প্রতিনিধিত্ব এ তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে সোমবার (০৭ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
"আধুনিক নিরাপদ খাদ্যব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য দরকার দক্ষ মানবসম্পদ৷ একই সাথে প্রয়োজন ভালো মানের খাদ্য পরীক্ষাগার। আমি আনন্দের সাথে ঘোষণা করছি যে, জাপান সরকার ও জাইকার সহায়তায় ঢাকায় একটি ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।" রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের পদ্মা হল রুমে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আয়োজিত “Modern Food Safety System in Bangladesh” শীর্ষক সেমিনারে খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আলী ইমাম মজুমদার, সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত H.E. Mr. Shinichi Saida এবং জাইকা বাংলাদেশের চীফ রিপ্রেজেনটেটিভ Mr. Tomohide Ichiguchi। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মোঃ মাসুদুল হাসান । উক্ত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের খাদ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক জনাব মঞ্জুর মোর্শেদ আহমেদ।
সেমিনারে প্রধান অতিথির ব্ক্তব্যে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে খাদ্য রপ্তানির ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে এবং বিশ্বব্যাপী চাহিদাও আছে, তবে আমাদের খাদ্য রপ্তানির এসু্যোগ পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারছি না, কারণ আমরা সর্বক্ষেত্রে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে পারছি না। যদি আমরা নিরাপদ খাদ্য ও গুণমান নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে আন্তর্জাতিক খাদ্য বাজারে আমাদের প্রবেশাধিকার বাড়বে এবং খাদ্য ও কৃষি খাতে রপ্তানি আয় অনেক গুণ বৃদ্ধি পাবে।
আলী ইমাম মজুমদার আরও উল্লেখ করেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে এবং জাপান সরকারের আন্তরিক সহযোগিতায় একটি ঋণ চুক্তির মাধ্যমে ঢাকায় একটি আধুনিক নিরাপদ খাদ্য পরীক্ষাগার ভবন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, যা বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের জাতীয় রেফারেন্স পরীক্ষাগার হিসাবে কাজ করবে, এর পাশাপাশি একটি কার্যালয় ভবন এবং কর্মকর্তা ও খাদ্য ব্যবসায়ীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে । চট্টগ্রাম ও খুলনায় বিভাগীয় নিরাপদ খাদ্য পরীক্ষাগার ও কার্যালয় ভবন নির্মাণ করে দেশব্যাপী খাদ্য পরীক্ষণ ও বিচারিক কার্যক্রম সুদৃঢ় করার প্রয়াস নিচ্ছি।
এছাড়া তিনি জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে চলমান বন্ধৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত H.E. Mr. Shinichi Saida বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে দীর্ঘদিনের সুদৃঢ় অংশীদারিত্বের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, জাপান বহু বছর ধরে বাংলাদেশের জ্বালানি, বন্দর, সড়ক ও মহাসড়ক, মেট্রো, সেতু, কৃষিসহ নানা খাতে সহযোগিতা করে আসছে।
রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, নিরাপদ খাদ্য একটি নতুন খাত হিসেবে আমাদের সহযোগিতার পরিসরকে আরও বিস্তৃত করেছে, যা অত্যন্ত আনন্দজনক। তিনি জাপানে নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থার অগ্রযাত্রার তুলে ধরে বলেন জাপান কিভাবে প্রচলিত তাৎক্ষণিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা থেকে সরে এসে নির্দেশনাভিত্তিক পরিদর্শনের দিকে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়েছে ।
তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণ কোনো একক সংস্থার কাজ নয়, বরং এটি একটি সমন্বিত প্রয়াসের দাবি রাখে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সুস্পষ্ট দায়িত্ব বিভাজন এবং সমন্বিত কাঠামো গড়ে তোলার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন, যাতে একক লাইসেন্সিং ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়।
রাষ্ট্রদূত আরও জানান, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে জাপান সরকার একটি ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার মাধ্যমে খাদ্য পরীক্ষাগারের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। পাশাপাশি, প্রযুক্তিগত সহযোগিতা প্রকল্পের মাধ্যমেও জাপান এ খাতে সহায়তা অব্যাহত রেখেছে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, বাংলাদেশ সরকার পর্যাপ্তসংখ্যক নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক এবং খাদ্য পরীক্ষাগারে পেশাদার জনবল নিয়োগে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, যাতে পরীক্ষাগারসমূহের কাঙ্ক্ষিত কার্যকারিতা অর্জিত হয় এবং একটি আধুনিক ও কার্যকর নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়।
সভাপতির বক্তব্যে খাদ্যসচিব জনাব মোঃ মাসুদুল হাসান বলেন, স্বল্পমেয়াদী ও আংশিক সমাধান যথেষ্ট না। আমাদের যা প্রয়োজন তা হলো একটি সম্পূর্ণ আধুনিক নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা । বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (BFSA) এবং JICA'র STIRC প্রকল্প, সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সহযোগিতায় আধুনিক নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা বিনির্মাণে নিরলস কাজ করছে৷
সকল দশটায় শুরু হওয়া এ সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিএফএসএ চেয়ারম্যান জাকারিয়া৷ তিনি বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতি জাইকার আন্তরিক সহযোগিতার জন্য জাইকা ও জাপাপন সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে মঞ্জুর মোর্শেদ আহমেদ বলেন, খাবার অনিরাপদতার কারণে প্রায় ২০০ প্রকারের রোগ হচ্ছে। প্রতিদিন বিশ্বব্যাপি গড়ে ১৬ লাখ মানুষ অনিরাপদ খাবার খেয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। নিরাপদ খাবারগ্রহণ ছাড়া জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ১ (শূন্য দারিদ্র্য), ২ (শূন্য ক্ষুধা) এবং ৩ (সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতা) নং লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যাহত হবে বলে তিনি অভিহিত করেন। এছাড়া, আধুনিক নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনার জন্য তিনি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির যথাযথ ব্যবহারের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
সেমিনারে খাদ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতিনিধি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি, দাতা সংস্থার প্রতিনিধি, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, বিভিন্ন খাদ্য শিল্পের প্রতিনিধি, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রোববার অধিকৃত পশ্চিম তীরের নাবলুস শহরের কাছে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর গুলিতে দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
রামাল্লাহ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রোববার বিকেলে নাবলুসের পূর্বে সালেম গ্রামে ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন, ২৩ বছর বয়সী কুসাই নাসের মাহমুদ নাসার এবং ৩৭ বছর বয়সী উইসাম ঘাসান হাসান শাতাইয়াহ।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষেয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
৭ অক্টোবর, ২০২৩ সালে ফিলিস্তিনি ইসলামপন্থী আন্দোলন হামাসের ইসরাইলে হামলার ফলে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীরে সহিংসতা বেড়েছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীরে ইসরাইলি সেনা বা বসতি স্থাপনকারীরা কমপক্ষে ৯৪৯ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। যাদের মধ্যে অনেকেই যোদ্বা এবং বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিকও রয়েছে।
ইসরাইলি সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ফিলিস্তিনিদের আক্রমণ বা ইসরাইলি সামরিক অভিযানে বেসামরিক নাগরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীসহ কমপক্ষে ৩৫ জন ইসরাইলি নিহত হয়েছেন।
১৯৬৭ সাল থেকে ইসরাইল পশ্চিম তীর দখল করে আছে।
চাকরিতে পুনর্বহালসহ তিন দফা দাবিতে রাজধানীর কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান নেওয়া চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের ওপর জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা-সংলগ্ন ওই এলাকায় এই ঘটনার সূত্রপাত হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করছিলেন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা। পুলিশ তাদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানালেও তারা তাতে সাড়া দেননি। পরে তাদের ওপর জলকামানে পানি এবং ছয়টি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় সংঘর্ষে পুলিশ সদস্যসহ আন্দোলনকারীদের কয়েকজন আহত হন। এছাড়াও আন্দোলনকারীদের কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ।
মাগুরায় সোমবার গভীর রাতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার নোহাটা গ্রামে মাগুরা আর্মি ক্যাম্প কর্তৃক একটি অস্ত্র অভিযান পরিচালনা করে দুইটি রিভলভার, ৮ রাউন্ড গোলাবারুদ ও কিছু দেশীয় অস্ত্রসহ প্রাক্তন আওয়ামীলীগ কর্মী এবং নাশকতা ও হত্যা মামলার পলাতক আসামি মোঃ মিজানুর রহমান টিটোকে গ্রেফতার করে। উল্লেখ্য, মোঃ মিজানুর রহমান টিটো শ্রীপুর থানা আওয়ামীলীগ এর সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক কনক মোল্লার আপন বড় ভাই। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নাশকতা ও হত্যা মামলা চলমান রয়েছে।
পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, একই দিন সোমবার রাত ৩ টায় শ্রীপুর উপজেলার তারাউজিয়াল গ্রামের মোঃ শরিফুল ইসলাম সাচ্চুর বাসায় আরেকটি অভিযান পরিচালনা করে একটি বিদেশি পিস্তল (চায়না) এবং তিন রাউন্ড গোলাবারুদসহ মোঃ শরিফুল ইসলাম সাচ্চুকে গ্রেফতার করা হয়।
উভয় আসামিকে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল আগামী ১০ জুলাই প্রকাশ করা হতে পারে। এ সম্পর্কিত একটি প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (৭ জুলাই) দুপুরে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার ইউএনবিকে বলেন, ‘এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা ফল প্রকাশে ১০ জুলাই সময় চেয়ে আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছি, মন্ত্রণালয় থেকে এখন পর্যন্ত জবাব আসেনি।’
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির তথ্যমতে, এবার সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন শিক্ষার্থী। অন্যদিকে, মাদরাসা বোর্ডের অধীনে দাখিলে অংশ নিয়েছে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন। আর কারিগরি বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন।
জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কারে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে সবগুলো বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।
তিনি বলেন, ‘যাতে করে কোনো রকম ভুলবোঝাবুঝি কিংবা বিভ্রান্তির সৃষ্টি না হয়, সে জন্য আমাদের দিক থেকে আন্তরিক চেষ্টা থাকছে। আপনাদের (রাজনীতিবিদ) বক্তব্য কিংবা আকাঙ্ক্ষার সাথে সামঞ্জস্যবিধান করা যায়, সেটা দেখা হচ্ছে।’
সোমবার (৭ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের দশম দিনের আলোচনার শুরুতে তিনি এমন মন্তব্য করেন। এই আলোচনায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।
বৈঠক সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। কমিশনের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফররাজ হোসেন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘যখন দলগুলোর সঙ্গে আলাদাভাবে যোগাযোগ করা হচ্ছে, তখন কমিশনের পক্ষ থেকে আমি সুস্পষ্টভাবে বলেছি, কমিশন যে প্রস্তাবই দিচ্ছে, সববিষয়ে একমত হওয়ারও কোনো বিষয় নেই। আমি বারবার বলেছি, সববিষয়ে আমরা একমত হবো না।’
উদহারণ দিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘জাতীয় সাংবিধানিক কমিশন (এনসিসি) নিয়ে যে প্রস্তাব ছিল, সেটা নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলগুলো আপত্তি জানিয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ভিন্ন একটি প্রস্তাব এনেছি। নতুন কোনো প্রস্তাব না, সংশোধিত প্রস্তাব। সবাই যখন কাঠামোগত পরিবর্তনে জোর দিচ্ছেন, আমরা সেই জায়গাগুলোতে আপনাদের সাথে থাকছি।’
“মূলনীতির ক্ষেত্রে বহুত্ববাদ নিয়ে সবার আপত্তি ছিল, দ্বিতীয় সংশোধিত সংস্করণে সেটা ছিল না। কিংবা ধরুন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন থেকে বলা হয়েছিল, চারটি প্রদেশ করার বিষয়ে, সেই আলোচনাও প্রাথমিকভাবে বেশিরভাগ দল থেকে ‘এই অবস্থায় বর্তমানে করার’ বিষয়ে একমত হওয়া যায়নি। কাজেই সেটা আলোচনায় আসিনি।”
আলী রীয়াজ বলেন, ‘অনেক কিছু বাদ দিয়ে অগ্রসর হতে হচ্ছে। কারণ সব বিষয়ে একমত হওয়া যাবে না। তবুও আমাদের চেষ্টা করতে হবে, এগুলো বাদ দিয়ে যেসব জায়গায় আমরা একমত হতে পারি, সেই জায়গায় যেতে আসতে পারি, সেই চেষ্টা করতে হবে।’
‘আলোচনায় কিছু বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে। কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কিছু বিষয় এখনো আলোচিত হয়নি। তবে, যেসব বিষয়ে প্রাথমিকভাবে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো আজ আলোচনায় আনিনি। রাজনৈতিক দিক বিবেচনায় আপনারা যে-যার অবস্থানে থাকবেন। কিন্তু সবাই চেষ্টা করছেন, এক জায়গায় আসার, ঐকমত্যে পৌঁছানোর। আমরা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে আলোচনা করে একমত হওয়ার চেষ্টা করছি।’
তিনি বলেন, ‘সময়ের স্বল্পতা আছে আমাদের। সেটা আপনারা নিশ্চিয়ই বিবেচনা করবেন। এই সপ্তাহে প্রাথমিকভাবে ভেবেছিলাম, আজকের পরে বাকি সময়টা আপনাদের সাংগঠনিক ও অন্যান্য কাজে ব্যস্ততার জন্য কিংবা অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগের জন্য।’
‘কিন্তু বেশিরভাগ দলের পক্ষ থেকে যে মত পাওয়া গেছে, তাতে সম্ভবত এ সপ্তাহে আরও একদিন আমরা বসব। আগামী সপ্তাহে শহীদ আবু সাঈদ ও মুগ্ধের শাহাদাতবার্ষিকীসহ বেশ কিছু কর্মসূচি রয়েছে। তারমধ্যেও একটু সময় বের করে আমাদের এই আলোচনাটা অব্যাহত রাখতে হবে,’ যোগ করেন তিনি।
রাজনীতিবিদদের উদ্দেশ্যে কমিশনের সহাসভাপতি আরও বলেন, আপনারা সাংগঠনিক কর্মসূচির পাশাপাশি, ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টিও যদি বিবেচনায় রাখেন, তাহলে আমাদের সবার কাজের অগ্রগতির সুযোগ হবে।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে আলোচনা শেষ করে কমিশন বসছে, কীভাবে সংশোধিতভাবে জিনিসগুলোকে আপনাদের অবস্থানকে ধারণ করেই তৈরি করা যায়, সেই চেষ্টা আমাদের আছে। সেটা আমরা অব্যাহত রাখবো। যাতে করে কোনো রকম ভুলবোঝাবুঝি কিংবা বিভ্রান্তির সৃষ্টি না হয়, সে জন্য আমাদের দিক থেকে সর্বান্তকরণে আন্তরিক চেষ্টা থাকছে। আপনাদের বক্তব্য কিংকা আকাঙ্ক্ষার সাথে সামঞ্জস্যবিধান করা যায়।’
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে ২০২৪ সালের ৮ জুলাই দ্বিতীয় দিনের মতো সারাদেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এদিন কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীর শাহবাগের পাশাপাশি ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনের মোড়, বাংলামটর, মিন্টো রোড, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, কাঁটাবন, নীলক্ষেত, সায়েন্সল্যাব, চানখাঁরপুল, গুলিস্তান জিরো পয়েন্টসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের চাকরিপ্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা ঢাকামুখী সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন।
এদিন অবরোধ কর্মসূচি শেষে দাবি আদায়ে সরকারকে তিন দিনের আল্টিমেটাম দেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। আন্দোলন সফল করতে এদিন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ ব্যানারে ৬৫ সদস্যের সমন্বয়ক কমিটি গঠন করা হয় । এর মধ্যে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ২৩ জনকে সমন্বয়ক এবং ৪২ জনকে সহ-সমন্বয়ক করা হয়।
এছাড়াও এদিন কোটা বাতিলে এক দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কর্মসূচি অনুযায়ী, মঙ্গলবার (৯ জুলাই) ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ অনলাইন-অফলাইনে গণসংযোগ করা হবে। পরের দিন বুধবার (১০ জুলাই) সারাদেশে সর্বাত্মক ব¬কেড কর্মসূচি পালন করা হবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার (৯ জুলাই) ব্লকেড কর্মসূচি থাকবে না। ছাত্র ধর্মঘট এবং ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করা হবে। আমরা সারাদেশে সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচির পরিকল্পনা করছি। এজন্য মঙ্গলবার সারাদেশে অনলআইন ও অফলাইনে গণসংযোগ করব। বুধবার সারাদেশে সর্বাত্মক ব¬কেড কর্মসূচি পালন করা হবে।
‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৮ জুলাই রাজধানীর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার শিক্ষার্থী কর্মসূচিতে অংশ নেন।
এদিন বিকেল ৪টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কিছু অংশ কারওয়ান বাজার মোড়ে গিয়ে রাস্তা অবরোধ করে। আর কিছু অংশ শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয়। এছাড়াও কারওয়ান বাজার থেকে ফার্মগেটমুখী মোড় অবরোধ করেন তেজগাঁও কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।
গাবতলী হয়ে ঢাকায় প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেন মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর ফলে ঢাকায় যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিকেলে চারটার দিকে সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেন ঢাকা কলেজ ও ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে রাজধানী ঢাকা কার্যত অচল হয়ে পড়ায় ডিজিএফআই পরবর্তী কর্মসূচি ক্যাম্পাসে সীমাবদ্ধ রাখতে সমন্বয়কদের চাপ দিতে থাকে। সোমবার ব্লকেড শুরু হওয়ার আগেই নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া ও আবু বাকেরকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কার্যালয় সংলগ্ন লাউঞ্জে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিন ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ছিল বিকেলে ৩ টা থেকে। সমন্বয়করা যাতে ঠিক সময়ে কর্মসূচিতে উপস্থিত হতে না পারে, সেই জন্যই আলোচনার নামে কালক্ষেপণ করতে থাকেন ডিজিএফআই’র কর্মকর্তা।
এদিকে রাজধানীর পুরান ঢাকার বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিছিল নিয়ে বাংলাবাজার, ভিক্টোরিয়া পার্ক ও রায়সাহেব বাজার হয়ে তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ শেষে বংশালে এসে পৌঁছালে পুলিশ সেখানে ব্যারিকেড দেয়। পরে ব্যারিকেড ভেঙে সচিবালয়ের সামনে জিপিও মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যা ৭টার দিকে অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বাংলা ব্লকেড কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা-রাজশাহী রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এর আগে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে মানববন্ধন করেন তারা। পরে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেহেরচন্ডী সংলগ্ন ঢাকা-রাজশাহী রেলপথে অবস্থান নেন।
এদিন বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এতে সড়কের উভয় লেনে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
এছাড়াও টানা তৃতীয় দিনের মতো ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথে ট্রেন আটকে আন্দোলন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা। এদিন দুপুর দেড়টা থেকে সোয়া ৩টা পর্যন্ত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জব্বারের মোড়-সংলগ্ন এলাকায় জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে রেললাইন অবরোধ করেন তারা।
এদিন সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা সাতক্ষীরা মহাসড়ক অবরোধ করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষার্থীরা বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত আগারগাঁও মোড় অবরোধ করেন। রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও কারমাইকেল কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী মহানগরীর মডার্ন মোড়ে অবরোধ করেন। এছাড়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেলা সাড়ে ৩টায় জেলার সাচিবুনিয়া বিশ্বরোড মোড় অবরোধ করেন।