সোমবার, ২ জুন ২০২৫
১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

প্রবাসীদের রেমিটেন্সেই বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে: প্রধান উপদেষ্টা

আজ টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাসে এক কমিউনিটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বক্তব্য রাখেন। ছবি: সংগৃহীত
বাসস
প্রকাশিত
বাসস
প্রকাশিত : ৩০ মে, ২০২৫ ২২:৪৫

জাতি গঠনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশকে ধ্বংসাবশেষ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে প্রবাসীরাই মূল ভূমিকা পালন করেছেন।

আজ টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাসে আয়োজিত এক কমিউনিটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এটাই সত্য যে কঠিন সময়ে দেশের যে টিকে থাকা—তা সম্ভব হয়েছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের কারণে’।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ক্ষমতাচ্যুত পতিত সরকার রাষ্ট্রীয় কোষাগার এবং ব্যাংক শূন্য করে গিয়েছিল এবং যদি প্রবাসীরা সহায়তা না করতেন, তাহলে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে পারত না।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার অবশ্যই তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে, তবে জাতি গঠনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ আরও শক্তিশালী হওয়া উচিত।

প্রধান উপদেষ্টা প্রবাসীদের বাংলাদেশে ব্যবসা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।

‘একজন নাগরিক হিসেবে আপনাদেরই রাষ্ট্র মেরামতের দায়িত্ব নিতে হবে,’ তিনি বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, প্রবাসীদের বাংলাদেশে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব রয়েছেন, তাদের ব্যবসাও আছে—এই কারণে তারা নিয়মিত বাংলাদেশে যাতায়াত করেন।

‘তাই সামগ্রিকভাবে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে...আপনারা জাপান সরকারের ওপর প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করুন,’বলেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার জাপান সফরের তৃতীয় দিনে আজ তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়— যথাক্রমে অর্থনৈতিক সংস্কার ও জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীলতা জোরদার করতে ডেভেলপমেন্ট পলিসি লোন (৪১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার), জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী ডুয়াল-গেজ ডাবল-লেন রেলওয়ে প্রকল্পের জন্য ঋণ (৬৪১ মিলিয়ন ডলার) এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন স্কলারশিপ অনুদান (৪.২ মিলিয়ন ডলার)।

বাংলাদেশের পক্ষে রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী এবং জাপানের পক্ষে দেশটির রাষ্ট্রদূত শিনিচি সাইদা সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস দলিল এমওইউ স্বাক্ষরের এই আনুষ্ঠানিকতা প্রত্যক্ষ করেন।

পরে, জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দেওয়া নৈশভোজে তিনি অংশ নেন।


১২ কেজি এলপিজির দাম কমলো ২৮ টাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভোক্তা পর্যায়ে এলপি গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জুন মাসের জন্য ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৪৩১ টাকা থেকে ২৮ টাকা কমে ১ হাজার ৪০৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া কমেছে অটোগ্যাসের দামও। প্রতি লিটার অটোগ্যাসের দাম ১ টাকা ২৭ পয়সা কমিয়ে ৬৪ টাকা ৩০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সোমবার (২ জুন) নতুন এ মূল্যের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি), যা আজ সন্ধ্যা থেকে কার্যকর হবে।

এর আগে মে মাসের জন্য প্রতি ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১৯ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৪৩১ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া অটোগ্যাসের মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৬৫ টাকা ৫৭ পয়সা।


বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

নতুন অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ নির্ধারিত হয়েছে দুই লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। সোমবার (২ জুন) রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

নতুন অর্থবছরের জন্য সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট উত্থাপন করছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। ঘাটতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আগামী অর্থবছরে সামগ্রিক ঘাটতি ও ঋণ সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।’

প্রস্তাবিত বাজেটের মোট ঘাটতির মধ্যে এক লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা আসবে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এবং এক লাখ এক হাজার টাকা আসবে বৈদেশিক উৎস থেকে। আগামী অর্থবছরে সুদ পরিশোধ বাবদ মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা।

এবারের বাজেটের মোট অর্থের ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে পরিচালন খাতে। নতুন বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন ব্যয় (এডিপি) ধরা হয়েছে, দুই লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।

প্রায় দেড় যুগ আগে গভর্নর থাকা সালেহ উদ্দিন আহমেদের এটি প্রথম বাজেট। বাস্তবতার সঙ্গে মিল রাখতেই ঘাটতি কমিয়ে বাজেটের আকার ছোটো রাখার কথা বলেছেন তিনি। উপদেষ্টা বলেছেন, আন্দোলনের ডামাডোলের মধ্যে নতুন বাজেটে স্বল্প আয়ের মানুষকে ‘স্বস্তি’ দেওয়ার চেষ্টার পরিকল্পনা থাকছে বাজেটে।

এর আগে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অর্থ বিল অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও অন্যান্য উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।

সংসদ না থাকায় আগামী ৩০ জুন রাষ্ট্রপতি বাজেট অধ্যাদেশে সই করবেন, ১ জুলাই কার্যকর হবে নতুন বাজেট। তবে বাজেটের অনেক অংশ, বিশেষ করে ট্যাক্স ও কাস্টমস সংক্রান্ত বিষয়গুলো ২ জুন উপস্থাপনের দিন থেকেই কার্যকর হবে।


৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করছেন অর্থ উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

নতুন অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। সোমবার (২ জুন) বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ টেলিভিশনে অর্থ উপদেষ্টার পূর্বধারণকৃত বাজেট বক্তব্য সম্প্রচার করা হচ্ছে।

বাজেট বক্তব্য বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে ফিড নিয়ে অন্য সব বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও বেতারে একই সঙ্গে প্রচার করা হচ্ছে। অর্থ উপদেষ্টার ভাষ্যে, একটি টেকসই ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে কিছুটা সংস্কারভিত্তিক এই বাজেটে উন্নয়নের সুফল সবার কাছে পৌঁছে দিতে পরিকল্পনা থাকছে।

দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় ১১ মাসের মাথায় অর্থ উপদেষ্টা হিসেবে প্রথমবার বাজেট দিতে গিয়ে সালেহউদ্দিন আহমেদ চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে ব্যয় কমিয়েছেন ৭ হাজার কোটি টাকা। স্বাধীনতার পর এই প্রথম বাজেটের আকার আগের অর্থবছরের চেয়ে কমল।

প্রায় দেড় যুগ আগে গভর্নর থাকা সালেহ উদ্দিন আহমেদের এটি প্রথম বাজেট। বাস্তবতার সঙ্গে মিল রাখতেই ঘাটতি কমিয়ে বাজেটের আকার ছোটো রাখার কথা বলেছেন তিনি। উপদেষ্টা বলেছেন, আন্দোলনের ডামাডোলের মধ্যে নতুন বাজেটে স্বল্প আয়ের মানুষকে ‘স্বস্তি’ দেওয়ার চেষ্টার পরিকল্পনা থাকছে বাজেটে।

বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, দুস্থ ভাতা, প্রতিবন্ধীদের ভাতার মত অনেক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি চালু থাকছে; অল্প হলেও ‘বাড়বে’ ভাতার পরিমাণ ও সুবিধাভোগীর সংখ্যা। ‘জুলাই আন্দোলনে’ সম্পৃক্ত ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য বড় আকারে ব্যবস্থা থাকা ‘দরকার’ মনে করছে সরকার।

এরআগে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অর্থ বিল অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও অন্যান্য উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।

সংসদ না থাকায় আগামী ৩০ জুন রাষ্ট্রপতি বাজেট অধ্যাদেশে সই করবেন, ১ জুলাই কার্যকর হবে নতুন বাজেট। তবে বাজেটের অনেক অংশ, বিশেষ করে ট্যাক্স ও কাস্টমস সংক্রান্ত বিষয়গুলো ২ জুন উপস্থাপনের দিন থেকেই কার্যকর হবে।

এর আগে সবশেষ সংসদের বাইরে বাজেট দেওয়া হয়েছিল ২০০৮ সালে। তখন ক্ষমতায় ছিল সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ওই বছরের ৯ জুন তখনকার অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম ২০০৮-০৯ অর্থবছরের জন্য ৯৯ হাজার ৯৬২ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছিলেন।

জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের হাল ধরা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের এটি প্রথম বাজেট।


উপদেষ্টা পরিষদের সভায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

উপদেষ্টা পরিষদের এক বিশেষ সভায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অর্থ বিল অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মন্ত্রিসভা কক্ষে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

বাসসকে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদসহ অন্যান্য উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।


নির্ধারিত হাসিলের বাইরে অতিরিক্ত অর্থ আদায় নয় : ডিএমপি কমিশনার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কুরবানির পশু কেনাবেচায় সরকার নির্ধারিত হাসিল ছাড়া হাট ইজারাদাররা অন্য কোনো অর্থ আদায় করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাত আলী।

রোববার ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সের সম্মেলন কক্ষে কুরবানি ঈদ উপলক্ষে পশুর হাটকেন্দ্রিক নিরাপত্তা, কুরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ, বিপণন ও কাঁচা চামড়া বহনকারী যানবাহনের নিরাপত্তাসহ ঢাকা মহানগর এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত বিশেষ সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাত আলী জানান, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পশুবাহী কোনো যানবাহনকে হাটে জোরপূর্বক প্রবেশ করানো যাবে না। পশুর হাট অবশ্যই সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত চৌহদ্দির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে বলেও নির্দেশ দেন তিনি।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, যত্রতত্র কুরবানির পশু লোড-আনলোড করা যাবে না। রাস্তায় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটালে বা জোরপূর্বক ব্যাপারীদের পশু বিক্রয়ে বাধ্য করলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাট থেকে ক্রয় করা কুরবানির পশু পরিবহনে যেন কেউ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে না পারে সে জন্য তিনি প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন।

সভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার বলেন, যেকোনো ধরনের সমস্যায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন করে অভিযোগ জানাবেন। ঘটনার প্রমাণ রাখবেন, ভিডিও করে রাখবেন। রাস্তার শৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ করবেন না। অযাচিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো আচরণ করলে বা রাস্তা ব্লক করে পশুর হাট বসালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সমন্বয় সভায় অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, পশুর হাটের চৌহদ্দির মধ্যে পশুর বাজার সীমিত রাখতে হবে। কোনো অবস্থাতেই রাস্তায় হাট বসিয়ে জনভোগান্তি সৃষ্টি করা যাবে না। বাজারে পশুর সংকট মর্মে গুজব ছড়িয়ে বা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে কুরবানির পশুর বাজারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


গৃহিণী থেকে সফল খামারি মাসে আয় লাখ টাকা

খামারে তিনটি পৃথক শেডে গরু, ছাগল, ভেড়া ও হাঁস-মুরগি লালন পালন করে একজন আত্মনির্ভরশীল নারী ফরিদা বেগম। ছবি : বাসস
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

‘দিনে তিন বেলার জায়গায় একবেলা খাইয়াও দিন কাটাইছি। আটজনের সংসারে সবার পাতে খাওন দিয়া থাকলে খাইছি। সেইসব দিনের কথা ভাবলেও কষ্ট লাগে’-ফরিদা বেগমের সেইসব কষ্টের দিনও এখন ফিকে হয়ে এসেছে।

অভাবী সেই মানুষটি আজ সফল খামারি। শূন্য থেকে শুরু করে হয়েছেন লাখপতি। কঠোর পরিশ্রম ও নিরন্তর চেষ্টায় গড়ে তুলেছেন ছোট্ট একটি গৃহপালিত পশুপাখির খামার। যে খামার ঘুরিয়েছে তার ভাগ্যের চাকা। খামার থেকে প্রতি মাসে মুনাফা করছেন এক থেকে দেড় লাখ টাকা।

জেলার সদর উপজেলার ফতুল্লা থানাধীন দেলপাড়ার বাসিন্দা আজিজ মিয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগম (৩৭)। মাত্র তেরো বছর বয়সে বিয়ে করে স্বামী আজিজ মিয়ার সঙ্গে যশোর থেকে নারায়ণগঞ্জে পাড়ি জমান। এরপর একে একে চার সন্তানের মা হয়েছেন। স্বামীর চায়ের দোকানের আয়ে শ্বশুর-শ্বাশুড়িসহ পরিবারের ভরণপোষণ ছিল কষ্টসাধ্য।

আয়ের চেষ্টা করেও সফলতার ছোঁয়া পাননি। তবুও দমে যাননি। অবশেষে গৃহপালিত পশু-পাখি পালন করে হয়ে উঠেছেন একজন আত্মনির্ভরশীল নারী।

নিজস্ব জমি নেই ফরিদা বেগমের। ফতুল্লার দেলপাড়ায় একটি ভাড়া বাড়ির এক অংশে তিনি পরিবার নিয়ে বাস করেন। অন্য অংশে গড়ে তুলেছেন গৃহপালিত পশু-পাখির খামার। সেখানে বসেই নিজের জীবনের বাঁক ঘুরে যাওয়ার গল্প শোনালেন তিনি।

অভাবের তাড়নায় ভাগ্যের পরীক্ষা

বাসসের সঙ্গে আলাপকালে ফরিদা বেগম বলেন, ‘ঘরে দুই টাকা বাড়তি আনার জন্য অনেক কাজ করছি। কিন্তু কোন লাভ হয় নাই। পরে একদিন সিরাজগঞ্জের এক ভাই আমারে কইলো, আপনে গরু পালেন, পালতে পারলে লাভ আছে। ওনারে আমি চিনতামও না। অপরিচিত একটা মানুষরে কেমনে টাকা দেই! আমার জামাই মত দিতাছিল না।

আমার বড় মাইয়া কয়, আম্মু দেও টাকা, মনে করো এটা আমাগো ভাগ্যের খেলা। হয় হারমু, নয় জিতমু। পরে ৪০ হাজার টাকা কিস্তিতে ঋণ নিয়া সিরাজগঞ্জের খোকন ভাইরে দেই। গরু নিয়া সেই দিন রাতেই আওনের কথা আছিল। দুইদিন পাড় হলেও সে আয়ে না। চায়ের দোকানের টাকায় সংসার চলেনা। কিস্তি দিমু কেমনে? টেনশনে টেনশনে খালি কানছি। তিনদিন পর রাইতে দুইটা বাছুর নিয়ে আইসে। বাছুর পাইয়া কি যে খুশি হইছিলাম! এক মাস বারো দিন পর বাছুর গুলা বিক্রি করে ৩২ হাজার টাকা লাভ হইছিল। এটা দেইখা মাইয়ার বাপেও কয়, ‘গরুতে লাভ ভালোই হয়। সারা বছর কামাইয়াও তো এতো টাকা একসঙ্গে জমাইতে পারি না আমরা।

গরু বিক্রির লাভের টাকা ফরিদার চোখে জ্বালিয়ে দেয় আশার আলো। দেখেন খামার করার স্বপ্ন। তিনি বলেন, ৩২ হাজার টাকাসহ কিছু টাকা ঋণ নিয়া আমার জামাইরে পাঠাইলাম সিরাজগঞ্জ। তারে বললাম গরুর লগে আমার জন্য ২টা ছাগলও আইনো। কিন্তু সে প্রথমে রাজি হয় নাই। পরে সেখান থেকে ৭৬ হাজার টাকা দিয়ে একটা বাছুরসহ দুধের গাভি আনে। আর ৯ হাজার টাকা দিয়ে ৪ টা ছোট ছাগলও আনে। এগুলো থেকে বাচ্চা হয়। আবার আমাগো এলাকার একটা খামার থেকে ৫টা ছাগল কিনছিলাম ১৭ হাজার টাকা দিয়া। ছাগল একেবারে ৩টা করেও বাচ্চা দেয়। এক বছরের মধ্যে ছোট বড় মিলাইয়া আমার ৮০টা ছাগল হইছিল। ছাগল প্রতিটা সাইজ অনুযায়ী ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকায় বেঁচছি। বছরখানেক বাদে আমারে এক দালালে জানাইলো, ভেড়া পালতে তেমন খরচ নাই, অসুখও কম হয়। সেসময় গরু বেচছিলাম একটা। সেই টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকায় ভেড়া কিনছি। ৩০ হাজার টাকা দিয়ে রূপগঞ্জের গাউসিয়া থেকে ১৪ টা ভেড়া আনি। এখন পর্যন্ত ২ লাখ টাকার ভেড়া বেঁচছি। এখন আমার খামারে ৪৫ টা ভেড়া আছে।

ফরিদা বলেন, ‘আমি কোন জায়গা ফালায় রাখি না। ময়মনসিংহের এক লোকরে বলছি, ভাইরে আমারে কয়টা দেশি মুরগি আইনা দিস। এখন আমার খামারে বাচ্চাসহ ৫০ টার মতো মুরগি আছে। চিনা হাঁস আছে ৬ টা। কয়েকদিন আগেই ৪৫ টা হাঁস বেঁচছি। এখন আবার ডিম দিয়া বসাইছি । শখ কইরা আমি কয়েকটা কবুতরও পালি। এগুলার জন্যই আজকে কয়টা টাকার মুখ দেখছি। আমার ছাগল, ভেড়া, গরুর দুধ কোথাও গিয়া তেমন বেচন লাগে না। সবাই আমার খামার চিনে। খামার থিকাই সব বেচা হইয়া যায়।’

পশুপাখির সেবায় দিন-রাত

খামারে তিনটি পৃথক শেডে গরু, ছাগল, ভেড়া ও হাঁস-মুরগি লালন পালন করেন ফরিদা। খামারের প্রথম শেডে রয়েছে ৫টি গাভিসহ ৪টি বাছুর। দ্বিতীয় শেডে রাখা হয়েছে ৫০-৬০টি ছাগল ও ভেড়া। অন্য পাশের এক শেডে দেশি মুরগি ও হাঁস রয়েছে অর্ধ শতাধিক। এই শেডেই একটি মাচা তৈরি করে রাখা হয়েছে। ফরিদা বেগম জানান, প্রাণীদের দেখাশোনার জন্যে তিনি মাচার উপরে বিছানা পেতে রাতে সেখানেই ঘুমান।

শখ করে গরু ছাগলের নানা নাম দিয়েছেন ফরিদা। সুন্দরী, লালবানু, কালন, রানি, রাজা এমন অনেক নামে এসব প্রাণীদের পরিচয় করিয়ে দেন তিনি

নিজের গৃহপালিত প্রাণীগুলো তার সন্তান সমতুল্য জানিয়ে এই খামারি বলেন, ২০১৯ সালে গরু পালন দিয়া শুরু করি। ৬ বছর ধইরা এগুলারে আমি পালি। এগুলা আমার সন্তানের চেয়ে কোন অংশে কম নাহ। অনেক কষ্ট করছি শুরুতে। আমার ছোট বাচ্চা নিয়া ঘাসও কাটছি। রাতে এগুলোর যেন কোনো সমস্যা না হয় এজন্য এনেই ঘুমাই। এই বাসায় ছয়টা ঘর আছে। থাকার জায়গার কোন অভাব নাই। কিন্তু রাতে গরু ছাগলের বাচ্চা হলে কিংবা অন্য সমস্যা হলে যেন আমি সঙ্গে সঙ্গে তাদের কাছে যাইতে পারি এজন্যই এই ব্যবস্থা।

খামারিদের কাছে প্রেরণার উৎস ফরিদা

কারো কথায় পিছু না হটে, হাল না ছেড়ে খামারিদের কাজ শুরু করে কেবল এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন ফরিদা।

তিনি বলেন, ছয় শতাংশের অর্ধেকটা বাড়ি, বাকিটা খামার। এখানে আমি ১০ হাজার টাকা ভাড়া দেই। ভাড়াসহ প্রতি মাসে খামারে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। খরচ বাদ দিয়া আমার এক থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ থাকে। দুইটা সিএনজি কিনছি। আমার কোন জমি নাই, কিচ্ছু ছিল না। আমি শূন্য হাতে শুরু করছিলাম। আমি যদি পারি, অন্যরাও পারব। কারো খারাপ কথায় কান দেওয়া যাইবো না, কঠোর পরিশ্রম করা লাগব খালি।

আমার দুইটা বাছুর থেকে যখন আমি লাভ করেছিলাম, তখন থেকেই আমার ইচ্ছে জাগছিল আমি একটা বড় ফার্ম দিবো। আমার ইচ্ছা, আমি ১০ কাঠা জায়গা কিনে বিশাল বড় ফার্ম দিবো। জমি নাই দেইখা, ফার্মটা বড় করতে পারি না। ব্যাংক থেকে বড় ঋণ পাইতেও জায়গা দেখান লাগে।

জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মান্নান মিয়া বাসসকে বলেন, আমরা সকল শ্রেণির খামারিদের প্রশিক্ষণসহ সার্বিক সহায়তার ব্যবস্থা করে থাকি । আর নারী খামারিদের

সর্বোচ্চ সহায়তা করা হয়। কিন্তু সকলে সফল হতে পারেনা। খামারি ফরিদা বেগম অন্যান্য খামারিদের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

সূত্র: বাসস


অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট ঘোষণা আজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক
    * অর্থ উপদেষ্টার বাজেট বক্তৃতা বিকাল ৩টায় বিটিভি ও বেতারে প্রচার করা হবে * আকার ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা * বাজেটের তথ্য সবার জন্য উন্মুক্ত, পাওয়া যাবে ওয়েবসাইটে

গত বছরের জুলাই-আগস্টে সংঘঠিত গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আজ সোমবার ঘোষণা করতে যাচ্ছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট। প্রথমবারের মতো বাজেট উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন তারা। নতুন বছরের বাজেট ঘোষণা করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। পরে তা উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাশ হবে। আগামী অর্থবছর সরকারি ব্যয় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা চলতি বাজেটের চেয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কম।

জুলাই অভ্যুত্থানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের ভিন্ন বাস্তবতায় এবার সংসদের বাইরে বাজেট উপস্থাপন করা হবে ভিন্ন আঙ্গিকে। ধারণ করা বাজেট বক্তৃতা বিকাল ৩টায় বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারে প্রচার করা হবে। সংসদ না থাকায় ধারণকৃত জাতীয় বাজেট বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে ফিড নিয়ে অন্য সব বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও বেতারে একই সময়ে প্রচারের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এই বাজেটের সব তথ্য অর্থ বিভাগের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

এর আগে সংসদের বাইরে বাজেট দেওয়া হয়েছিল ২০০৮ সালে। তখন ক্ষমতায় ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ওই বছরের ৯ জুন তখনকার অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম ২০০৮-০৯ অর্থবছরের জন্য ৯৯ হাজার ৯৬২ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছিলেন। সেদিনও ছিল সোমবার। বেলা ৩টায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সম্প্রচার করা হয়েছিল মির্জ্জা আজিজুল ইসলামের বাজেট বক্তব্য।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী বাজেটের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক সুরক্ষায় বিশেষ নজর দেওয়া হবে।

এটি হবে নবনিযুক্ত প্রশাসনের প্রথম বাজেট, যেখানে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জের মধ্যেও সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

বাজেটের একটি বড় অংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য। নির্বাচনের জন্য ২ হাজার ৮০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব থাকতে পারে। তবে নির্বাচন কমিশন জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য ৫ হাজার ৯২২ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছিল।

আগামী বাজেটে গেজেটভুক্ত জুলাই যোদ্ধাদের জন্য থাকছে আলাদা বরাদ্দ। পাশাপাশি তাদের করমুক্ত আয় সীমা হবে সোয়া ৫ লাখ টাকা। রাজস্ব আদায়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পরিবর্তন আসবে শুল্ক করে। ধনীদের কাছ থেকে বেশি কর আদায়ের প্রস্তাব করবেন অর্থ উপদেষ্টা।

এছাড়া অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জন্য থাকছে বিশেষ বরাদ্দ। প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থেকে দেওয়া হবে এককালীন অর্থ, মাসিক ভাতা, দেশে-বিদেশে চিকিৎসা খরচ এবং কর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণ। একই তহবিলের অর্থে তাদের জন্য ফ্ল্যাটও তৈরি করা হবে।

বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতের আওতায় কিছু কর্মসূচিতে ভাতার পরিমাণ ও উপকারভোগী বাড়ানোর পাশাপাশি কর্মসংস্থানে সুযোগ তৈরির উদ্যোগ থাকবে গ্রামীণ পর্যায়ে। এজন্য উজ্জীবিত করা হবে রাস্তাঘাট নির্মাণ, সংস্কারসহ গ্রামীণ অবকাঠামো খাতের কর্মযজ্ঞকে।

এবার সংসদ না থাকায় সংসদের আলোচনা বা বিতর্কের কোনো সুযোগ থাকছে না। তবে বাজেট ঘোষণার পর প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর নাগরিকদের নিকট মতামত চাইবে অর্থ মন্ত্রণালয়। মতামতের ভিত্তিতে তা চূড়ান্ত করা হবে। এরপর আগামী ২৩ জুনের পর যেকোনো একদিন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদন নিয়ে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে তা আগামী এক জুলাই থেকে কার্যকর করা হবে।

সবশেষ ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। জুলাইয়ে নতুন অর্থবছর শুরুর পর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এবার বাজেটের আকার সামান্য ছোট হয়ে দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা। স্বাধীনতার পর এই প্রথম বাজেটের আকার আগের অর্থবছরের তুলনায় কমছে।

এই বাজেটে আয় ধরা হচ্ছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে আসবে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা।

আর এনবিআর বহির্ভূত রাজস্ব ধরা হচ্ছে ১৯ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া কর বহির্ভূত রাজস্ব আদায় ধরা হচ্ছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের বাজেটে অনুন্নয়ন ব্যয় ধরা হচ্ছে ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। আর এডিপির আকার ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। সবচেয়ে আলোচিত আগামী অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি ধরা হচ্ছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। আর এই ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ১ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া বৈদেশিক ঋণ পাওয়ার আশা ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা। জিডিপি ধরা হচ্ছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। দেশের মানুষকে স্বস্তি দিতে মূল্যস্ফীতি ধরা হচ্ছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ।

এছাড়া, উন্নয়ন ব্যয়ের জন্য ২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থাকতে পারে, যার মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হতে পারে। জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫.৫ শতাংশ ধরা হতে পারে এবং মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশে নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ গতকাল রোববার এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে চলতি বাজেটের চেয়েও ছোট বাজেট দিতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছর সরকারি ব্যয় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা চলতি বাজেটের চেয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কম।


আগামীকাল ফের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলের বৈঠক 

আপডেটেড ১ জুন, ২০২৫ ১৭:৫১
ইউএনবি

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দ্বিতীয় ধাপের বৈঠক আগামীকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। রবিবার (১ জুন) এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এমন তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, বৈঠকটি বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সোমবার (২ জুন) বিকেল সাড়ে ৪টায় থেকে অনুষ্ঠিত হবে। সংস্কার আলোচনা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের দ্বিতীয় দফার রাজনৈতিক আলোচনা শুরু করেছে।

‘প্রধান উপদেষ্টা কাল আলোচনার উদ্বোধন করবেন এবং আলোচনা পরবর্তী সময়েও চলবে,’ যোগ করেন তিনি। ঈদুল আজহার আগে ও পরে আরও কয়েক দফা বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এর আগে কয়েক দফায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসেন ড. ইউনূস। গেল ২৪ মে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের বৈঠক হয়। পরের দিন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আরও দুটি বৈঠক করেন তিনি।

শনিবার (৩১ মে) দুপুরে রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আলোচনার জন্য বিএনপিকে আবারও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। আগামী ২ জুন দ্বিতীয় দফার এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

সালাহউদ্দিন বলেন, সরকার একের পর এক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার আনুষ্ঠানিকতা চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু তাতে বাস্তব কোনো অগ্রগতি নেই। আলোচনা হচ্ছে, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। জনগণের আস্থার সংকট কাটিয়ে উঠতে হলে বাস্তব পদক্ষেপ প্রয়োজন, কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়।


দুর্নীতির কারণে দেশের আর্থিক খাত ‘অত্যন্ত খারাপ’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিগত ১৫ বছরের দুর্নীতি ও চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশের আর্থিক খাত ‘অত্যন্ত খারাপ’ অবস্থায় আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু।

গতকাল শনিবার রাজধানীতে ‘বাজেট ভাবনা ২০২৫-২৬’ শিরোনামে এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের আর্থিক খাতের দুটি সমস্যা- ব্যাংকের পরিচালনা কমিটি, তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, রাজনৈতিক সহায়তায় একটি লুটপাট চালিয়েছে গত ১৫ বছর- এটি নিঃসন্দেহে আমরা বলতে পারি। আর দ্বিতীয়টি হলো, আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে একদম আইসিইউতে আছে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ।

যদি বিনিয়োগ আইসিইউতে থাকে, তাহলে যে বিনিয়োগকারী, সে তো বিনিয়োগ ফেরত নিতে পারছে না।’

আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘একটি হলো ব্যাংকের নিজস্ব অনিয়ম, নিজস্ব দুর্নীতি; আরেকটি হলো সাধারণ নিয়মে অর্থনীতির সমস্যা। সে সমস্যার কারণে যে ঋণ নিয়েছে, সে এখন ঋণটি পরিশোধ করতে পারছে না। এই সবগুলোর সমন্বয়ে আসলেই; কিন্তু বাংলাদেশের আর্থিক খাত অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় আছে। যে যাই বলুক।’

সব জায়গায় এখনো বৈষম্য বিদ্যমান রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো ক্ষেত্রে বৈষম্য নেই? আয়ের বৈষম্য, সামাজিক বৈষম্য, সম্পদের বৈষম্য, রাজনৈতিক বৈষম্য- সবই বাংলাদেশে দিন দিন বেশি হচ্ছে। সরকারের কার্যক্রম বাংলাদেশে প্রতিনিয়তই প্রতিটি ক্ষেত্রে একটি বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। আমাদের এগুলো শনাক্ত করতে হবে।’

ভালো বাজেটের প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, ‘ভালো বাজেট বলতে আমরা ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সাহায্য চাই, অর্থনৈতিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি চাই, স্থানীয় শিল্পের উৎপাদন বৃদ্ধি চাই, উৎপাদন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করতে চাই।’


জুলাই-আগস্টে আন্দোলনে ১৬৮ পথশিশু নিহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে প্রায় ১৬৮ জন পথশিশু নিহত হয়েছে। তবে জাতীয় পর্যায়ে নথিভুক্ত ১৩ হাজার ৫২৯ জন আহত ব্যক্তির মধ্যে শিশুদের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।

গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে ঢাকার সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর ‘রাজনৈতিক সহিংসতার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব: জুলাই-আগস্ট ২০২৪ প্রেক্ষাপট’ গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। গ্লোবাল ফান্ড ফর চিলড্রেনের অর্থায়নে একমাত্র সোসাইটি ও লোকাল এডুকেশন অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (লিডো) এ গবেষণা পরিচালনা করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুলি বা ছররা গুলির কারণে গুরুতর চোখের আঘাতের জন্য ৫০৬ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর মধ্যে অন্তত ৬০ জন শিশু ছিল। তাদের মধ্যে একজন ৯ বছর বয়সি পথশিশু চিরতরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে। আটকের ফলে শিশুরা মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়। কাওরান বাজারে ৪৩ জন পথশিশুকে কোনও আইনি সহায়তা ছাড়াই আটক রাখা হয়। তাদের মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গেছে।

এছাড়া ব্র্যাক জানায়, অস্থিরতার সময় ঢাকার ৬২ শতাংশ পথশিশু আশ্রয়স্থল হারায়। সীমান্ত এলাকায় অভিভাবকহীন শিশুদের সংখ্যা ২০০ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ার তথ্য দেয় ইউনিসেফ। এইচআরডাব্লিউ স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া চিত্রে পুলিশি অভিযানের পরে অনেক আশ্রয়স্থল পরিত্যক্ত অবস্থায় দেখা গেছে।

এ গবেষণায় পথে বসবাসরত, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ৭০ জন শিশুর সঙ্গে করা কেস স্টাডি থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। কেস স্টাডিটি ব্যাপকভাবে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়া এলাকাগুলোকে চিহ্নিত করে, সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, আন্দোলন চলাকালীন পথশিশুরা চরম সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলার মুখোমুখি হয়। ৭২ শতাংশ শিশু সহিংসতার ফলে আক্রমণের শিকার হয়েছে, কেউ সরাসরি আঘাত পেয়েছে, আবার কেউ নির্মম দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেছে। প্রায় অর্ধেক, অর্থাৎ ৪৮ শতাংশ পথশিশু সরাসরি আহত হয়। এর মধ্যে মাথায় আঘাত, ছররা গুলির আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ১৩ শতাংশ শিশুর গুলিবিদ্ধ হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। অতিরিক্ত ২৬ শতাংশ শিশু শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত না হলেও, বন্ধু বা পরিচিতদের মারধর ও আটক হতে দেখেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সহিংসতা শুরুর আগে পথশিশুদের মধ্যে সচেতনতার মাত্রা ছিল ভিন্ন। ৪১ শতাংশ শিশুর সহিংসতা সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না। তারা কেবল চারপাশে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি জানতে পারে। অন্যদিকে, ৩৬ শতাংশ শিশু আন্দোলনের লক্ষ্য সম্পর্কে অবগত ছিল। এছাড়া অংশগ্রহণও ছিল বিচিত্র; ৫৫ দশমিক ৭ শতাংশ শিশু সক্রিয়ভাবে সহিংসতায় যুক্ত হয় এবং ৩৪ দশমিক ৩ শতাংশ ব্যক্তি-উদ্যোগ বা সংহতির কারণে অংশ নেয়। অংশগ্রহণ বা বিরত থাকার সিদ্ধান্ত গঠনে ব্যক্তিগত বিশ্বাস, সহকর্মী ও রাজনৈতিক দলভুক্ত ব্যক্তির প্রভাব এবং নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের বিষয়টি প্রভাব ফেলেছে।

এতে বলা হয়, অনেক পথশিশুর জন্য সাধারণ জীবনধারণই কঠিন হয়ে পড়ে; কারফিউয়ের কারণে ৫৪ শতাংশ শিশু খাদ্য, পানি বা আশ্রয়ের জন্য সংগ্রাম করেছে এবং ৬০ শতাংশ শিশুর আয় ব্যবস্থাও ব্যাহত হয়েছে। এইসব কষ্টের মধ্যেও কেউ কেউ বন্ধু, পরিচিত ব্যক্তি ও কমিউনিটির সহায়তায় কিছুটা সামলে উঠতে পেরেছে। তবে মানসিক ক্ষতি ছিল গভীর। ৬১ শতাংশ শিশু মানসিক আঘাত, ভয় ও আতঙ্কের কথা জানিয়েছে; প্রায় অর্ধেক শিশুই দুঃস্বপ্ন বা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার অভিজ্ঞতা ভাগ করেছে এবং ৭৫ শতাংশ এর বেশি শিশু এখনও চাপ, দুঃখ ও উদ্বেগ নিয়ে বেঁচে আছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহিংসতা থেকে সৃষ্ট ট্রমা ছিল ব্যাপক।

লিডোর গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, সহিংসতা পরবর্তী পর্যায়ে ৬১ শতাংশ শিশু এখন তাদের এলাকায় তুলনামূলক নিরাপদ বোধ করে; পুলিশ ও গ্যাং-সংক্রান্ত অরাজকতার সংখ্যা কমেছে বলে মনে করছে, তবে মানসিক ক্ষত রয়ে গেছে। সহায়তার ক্ষেত্রে ৪১ শতাংশ শিশু এনজিও বা কমিউনিটির সাহায্য পেয়েছে, ৩৪ শতাংশ শিশু পরিচিত ব্যক্তি, ২২ শতাংশ কমিউনিটি নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভর করেছে, আর মাত্র ১৯ শতাংশ পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পেরেছে। তবুও অনেকেই এখনও চরম পরিবেশে টিকে আছে। ৩৩ শতাংশ ভিক্ষাবৃত্তি, ২৩ শতাংশ আবর্জনা বা বোতল কুড়িয়ে জীবন চালায়। অনেকে রেলস্টেশন কিংবা রাস্তার পাশে ঘুমায়। যদিও ৪০ শতাংশ শিশু নিজেদের শারীরিকভাবে সুস্থ বলে জানিয়েছে, তাদের সার্বিক পরিস্থিতি এখনও ঝুঁকিপূর্ণ।

গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. নিলয় রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, বিগত তিন দশক ধরে রাজনৈতিক সহিংসতায় পথে বসবাসরত শিশুরা প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে ব্যবহার হয়ে আসছে। এর ফলে, এসব শিশু শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধন করতে শিশুদের ব্যবহার করতে দেখা গেছে এবং সহিংসতার কারণে তাদের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। সহিংসতার ফলে হতাহতের সংখ্যা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা ঘিরে নানা বিশ্লেষণ ও বিতর্ক দেখা গেলেও সেখানে ঢাকার পথে বসবাসরত অবহেলিত শিশুদের ওপর এই সহিংসতার প্রাণঘাতী প্রভাব মূলধারার আলোচনাগুলোতে উপেক্ষিতই থেকে গেছে। পরবর্তী সময়ে ক্রমাগত আমাদের স্মৃতির বাইরে চলে গেছে। এই শিশুদের অভিজ্ঞতা শুধু শারীরিক আঘাতেই সীমাবদ্ধ ছিল না; তারা দীর্ঘমেয়াদি মানসিক ট্রমা, জীবিকার পথে বাধা, বাস্তুচ্যুতির মুখোমুখি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা পথকে কেন্দ্র করেই তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। তাদের আশ্রয়স্থলও হয় এই পথ। তাই রাজপথে সংগঠিত এই রাজনৈতিক সহিংসতা, তাদের এই দুর্বিষহ সামগ্রিক জীবন প্রবাহকে আরও মারাত্মক ঝুঁকির মুখোমুখি করে তোলে।


কমেছে জ্বালানি তেলের দাম

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৩১ মে, ২০২৫ ২১:৫৬
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জুন মাসের ডিজেল, পেট্রল ও অকটেনের দাম কমিয়েছে সরকার।

আজ শনিবার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।

এতে বলা হয়, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস/বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে দেশে ভোক্তাপর্যায়ে প্রতিমাসে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণের লক্ষ্যে সংশোধিত প্রাইসিং ফর্মুলার আলোকে জুন ২০২৫ মাসের জন্য তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্য জ্বালানি তেল সরবরাহ নিশ্চিতকরণের নিমিত্ত ডিজেলের বিক্রয়মূল্য প্রতি লিটার ১০৪ টাকা হতে দুই টাকা কমিয়ে ১০২ টাকা, অকটেন ১২৫ টাকা হতে তিন টাকা কমিয়ে ১২২ টাকা, পেট্রলের মূল্য ১২১ টাকা হতে তিন টাকা কমিয়ে ১১৮ টাকা এবং কেরোসিনের মূল্য ১১৪টাকায় পুনর্নির্ধারণ/সমন্বয় করা হয়েছে।

নির্ধারিত মূল্য ১ জুন থেকে কার্যকর হবে বলেও জানানো হয়।

এর আগে, গত ৩০ এপ্রিল জ্বালানি তেলের দাম লিটারপ্রতি এক টাকা কমিয়ে প্রজ্ঞাপন দিয়েছিল মন্ত্রণালয়। তখন থেকে ডিজেল প্রতি লিটার ১০৪ টাকা, কেরোসিন ১০৪ টাকা, অকটেন ১২৫ টাকা এবং পেট্রল ১২১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গত বছরের মার্চ থেকে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ করে আসছে সরকার। এই হিসেবে প্রতি মাসে নতুন দাম ঘোষণা করছে সরকার।


পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জনগণের সাথে আরও নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে

 পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন,পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জনগণের সাথে আরও নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জনগণ থেকে প্রাপ্ত অভিযোগ ও আবেদনের উত্তর দিতে হবে, জনগণকে আশ্বস্ত করতে হবে, তাদের অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিকারসহ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

উপদেষ্টা আজ (শনিবার) ঢাকায় গ্রীন রোডস্থ পানি ভবনের মাল্টিপারপাস হলে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৫৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে 'পানি খাতে সংস্কার' শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এই বর্ষার সময়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ০৯ টি জোনের প্রধান প্রকৌশলী-সহ ঊদ্ধতন প্রকৌশলীদের নিয়মিত মাঠে যেতে হবে। তিনি জোনের প্রধান প্রকৌশলীদের মাঠ পর্যায়ে মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশ দেন যাতে করে মানুষের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে তাৎক্ষণিক সাড়া দেয়া যায়।

পানি সম্পদ উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা আসন্ন বর্ষাকে সামনে রেখে একটা টাস্কফোর্স গঠন করতে চাই যেখানে পানি সম্পদ
সচিবের নেতৃত্বে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিজি, এডিজি এবং সারাদেশের ০৯ জোনের ০৯ জন প্রধান প্রকৌশলী সমন্বয়ে একটা টাস্কফোর্স কাজ করবে। এই টাস্কফোর্স দেখবে এই বর্ষায় কোথায় কোথায় জরুরি ভিত্তিতে আমাদের যেতে হবে, জরুরী ভিত্তিতে কোথায় কোথায় কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, সারাদেশের ০৯ জোনের ০৯ জন প্রধান প্রকৌশলীরদের মধ্যে থেকে যে প্রধান প্রকৌশলীর কাজ সবচেয়ে ভালো হবে এবং যার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ থাকবেনা, বর্ষা শেষে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় তাকে একটা পুরস্কার দেবে। একই সাথে ০৯টি জোনের তরুণ প্রকৌশলীদের মধ্যে যে সবচাইতে ভালো কাজ করবে, যার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ থাকবে না তাকেও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় পুরস্কৃত করবে। হৃদয়ে ধারণ করে কাজ করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, খুব সহসাই তুরাগ নদী দখল ও দূষণমুক্ত করনের কর্মপরিকল্পনাটা চূড়ান্ত হয়ে যাচ্ছে, আমরা আশা করছি আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তুরাগ নদী দখল ও দূষণমুক্তকরণের কাজটা শুরু করে দিতে পারবো। এক্ষেত্রে এডিবি তুরাগের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করে দিবে বলে আশ্বস্ত করেছে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু এবং শীতলক্ষ্যা এ ৪টি নদী দখল ও দূষণমুক্তকরণের পরিকল্পনাটা আমরা চূড়ান্ত করে দিয়ে যাব যাতে পরের সরকার এসে এই নদীগুলো দূষণমুক্তকরণের কাজ এগিয়ে নিতে পারে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৬৪ টি জেলা থেকে ৬৪ টি নদী পরিষ্কারকরণের কর্মপরিকল্পনা আমরা এনেছি। তার থেকে ৭ বিভাগের ৭টি নদী, কক্সবাজারের বাঁকখালি এবং ঢাকার চারপাশের ০৪টি সহ মোট ১২টি নদী দখল ও দূষণমুক্ত করণের পরিকল্পনা আমরা চূড়ান্ত করছি। এছাড়া লবণদহ, হাড়িধোয়া এবং সুতাং এই তিনটি নদী দখল ও দূষণমুক্তকরণের কাজটি আমরা জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টফান্ড থেকে বরাদ্দ দিয়ে কাজ করা শুরু করে দেব।

অনুষ্ঠানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড. শ্যামল চন্দ্র দাস দিবসের তাৎপর্য উল্লেখ করে বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মোঃ তাহমিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) মিজানুর রহমান। আলোচনা অনুষ্ঠানে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড.আ.ন.ম বজলুর রশীদ-সহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বৃন্দ, মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার প্রধানগণ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালকগণ, প্রধান প্রকৌশলী-সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


চারদিন ধরে বন্ধ জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট, বিপাকে রোগীরা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

চিকিৎসক-কর্মচারীদের সঙ্গে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সংঘর্ষের জেরে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে সেবা কার্যক্রম চারদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে, বিপাকে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা।

শনিবারও (৩১ মে) হাসপাতালের ফটক বন্ধ থাকায় ঢাকার বাইরে থেকে যারা চিকিৎসা নিতে এসেছেন, তাদেরও ফেরত যেতে হয়েছে। অচলাবস্থা শেষে চিকিৎসাসেবা কবে চালু হবে, সে বিষয়েও কিছু বলছে না কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (২৮ মে) সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও চারদিন ধরে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে রেখেছে কতৃপক্ষ। হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রোগীরা আসছেন। কিন্তু ফটক বন্ধ থাকায় ভেতরে যেতে পারছেন না তারা, গেইটের বাইরে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে চলে যেতে হচ্ছে।

এদিকে, বিপাকে পড়েছেন চিকিৎসাধীন ব্যক্তিরাও। জুলাই যোদ্ধা মনির নিজের দুর্দশার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘কি আর করবো ভাই বলেন? কাকে দুঃখের কথা বলবো? চারদিন ধরে হাসপাতাল বন্ধ, চিকিৎসা সেবা বাদ দেন। খাবারও দেওয়া হচ্ছে না। তাই বাসায় চলে আসতে হয়েছে।’

এ বিষয়ে হাসপাতালের কনসালটেন্ট সঞ্জয় কুমার বলেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জান-এ আলম মৃধার নির্দেশনায় আমরা চিকিৎসকরা কেউ হাসপাতালে যাচ্ছি না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তখন ওনার নির্দেশনাতেই সেবা দিতে যাবো।

তিনি আরও জানান, ‘২৮ মে জুলাই আন্দোলনে আহতরা তাদের চিকিৎসা সেবা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এক সময় আমাদের স্টাফদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সেদিন সেবা চালু ছিলো। তবে ২৯ মে থেকে পুরোদমে সেবা বন্ধ।

এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জান-এ আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি। তবে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আগ পর্যন্ত কাজে ফিরতে চাচ্ছেন না চিকিৎসক ও নার্সরা। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এ বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা পাইনি।’

দ্রুতই চিকিৎসা সেবা চালু করতে চেষ্টা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কিন্তু কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতেও সতর্ক থাকতে হচ্ছে।’

গত বুধবার (২৮ মে) চিকিৎসা সংক্রান্ত ত্রুটি হচ্ছে— এই অভিযোগে হাসপাতালটির চিকিৎসক ও স্টাফদের হামলা করে জুলাই আন্দোলনের আহতরা। এতে চিকিৎসকসহ প্রায় ১৫ জন স্টাফ আহত হন। এরপরই ন চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেলে বন্ধ হয়ে যায় সেবা কার্যক্রম।

এর আগে, গত রবিবার (২৫ মে) চক্ষু বিজ্ঞান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চার জুলাইযোদ্ধা বিষপান করেন। তাদের অভিযোগ— উন্নত চিকিৎসা বা পুনর্বাসনের বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।

এরপর মঙ্গলবার দুপুরে চক্ষু বিজ্ঞান হাসপাতালের পরিচালককে অবরুদ্ধ করেন আহতরা। একঘণ্টার বেশি সময় অবরুদ্ধ থাকার পর হাসপাতাল সেনাবাহিনীর সহায়তায় তাকে উদ্ধার করা হয়।

এরপর বুধবার সকাল থেকে, নিরাপত্তার দাবি তুলে কর্মবিরতিতে যান হাসপাতালের কর্মচারীরা। এরপরেই, হাসপাতালের কর্মচারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন জুলাই আন্দোলনে আহতরা।


banner close