বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
২ শ্রাবণ ১৪৩২

জীবন-মৃত্যুর মতো পরিস্থিতি না হলে ঘর থেকে বের হবেন না: আসিফ মাহমুদ

বাসস
প্রকাশিত
বাসস
প্রকাশিত : ১৬ জুলাই, ২০২৫ ২৩:১১

গোপালগঞ্জবাসীর উদ্দেশে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করা হয়েছে। ‘জীবন-মৃত্যুর মতো পরিস্থিতি না হলে সাধারণ জনগণ কেউ ঘর থেকে বের হবেন না।

বুধবার (১৬ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এসব কথা লিখেছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে সবকিছু মনিটরিং এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টাসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানগণ।’

এর আগে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনতে গোপালগঞ্জে বুধবার (১৬ জুলাই) রাত ৮টা থেকে পর দিন বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিকাল ৬টা পর্যন্ত ২২ ঘণ্টার কারফিউ জারি করা হয়।


গোপালগঞ্জের প্রতিটি উপজেলায় ও গ্রামে গিয়ে কর্মসূচি করবো: নাহিদ ইসলাম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

গোপালগঞ্জ মুজিববাদীদের হবে না বরং বাংলাদেশপন্থীদের হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আবারও গোপালগঞ্জে গিয়ে প্রতিটি এলাকায় কর্মসূচি পালন করারও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া এক পোস্টে এসব বলেন নাহিদ।

তিনি বলেন, ‘আমরা আবারও গোপালগঞ্জে যাব। আমরা জীবিত থাকলে গোপালগঞ্জের প্রত্যেকটা উপজেলার প্রত্যেকটা গ্রামে কর্মসূচি করব। গোপালগঞ্জের প্রতিটা ঘরে ঘরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পতাকা উড়বে। গোপালগঞ্জ মুজিববাদীদের হবে না, বাংলাদেশপন্থীদের হবে।’

নাহিদ বলেন, ‘আমরা কথা দিয়েছিলাম (কমিট করেছিলাম) আমরা গোপালগঞ্জে যাব। আমরা গিয়েছি এবং শহীদের রক্তের শপথ নিয়ে ঘোষণা করেছি, মুজিববাদকে গোপালগঞ্জ ও বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়াতে দেব না।’

তবে গোপালগঞ্জের অধিবাসীদের প্রতি এনসিপির কোনো রাজনৈতিক বৈষম্য নেই বলেও জানান তিনি।

নাহিদ বলেন, ‘গোপালগঞ্জের অধিবাসীদের প্রতি রাজনৈতিক বৈষম্যের আমরা বিরোধিতা করি। গোপালগঞ্জ ও পুরো বাংলাদেশকে আমরা মুজিববাদী সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করব। আওয়ামী লীগ যুগের পর যুগ ধরে গোপালগঞ্জের মানুষের জীবনকে বিপন্ন করেছে, মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করেছে এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে বেইনসাফি করেছে। আমরা বলেছি, আমরা এ পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাব।’

এ সময় ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নিয়ে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের এত হত্যাযজ্ঞের পরেও ৫ আগস্টের পরে অনেকে রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ আনতে চেয়েছিল। তাদের মনে রাখা উচিত, আওয়ামী লীগ আর কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটা একটা সন্ত্রাসবাদী সংগঠন।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী যেভাবে নির্দেশনা (ইনস্ট্রাকশন) দিয়েছে, সকালের নাশকতার পরেও নিরাপত্তা ছাড়পত্র (সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স) পেয়েই আমরা গোপালগঞ্জে প্রবেশ করেছি। পদযাত্রা করিনি, পথসভা করেছি শুধু। গোপালগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আমাদের লোকজনকে আসতে দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন জায়গায় বাস আটকে দেওয়া হয়েছে। এরপরও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পথসভা শেষ করেছি। যাওয়ার পথে সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। নিরাপত্তা বাহিনী যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছে আমরা সেভাবেই সেখান থেকে বের হয়েছি।

এ সময় গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রাকে ঘিরে গতকালের হামলা ও হতাহতের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানান নাহিদ। ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘আমরা চারজনের মৃত্যুর কথা শুনেছি। কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে আমরা সমর্থন করি না, প্রত্যাশাও করি না। সন্ত্রাসীদের বিচারিক প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নিতে হবে।’

নাহিদ অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা যদি সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিত তাহলে এ পরিস্থিতি তৈরি হতো না। এ দায়ভার সরকার ও প্রশাসনকে নিতে হবে। আমরা পুরো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি করছি।’


গোপালগঞ্জে অন্যায়কারীদের ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

গোপালগঞ্জে যারা অন্যায় করেছে, তারা গ্রেপ্তার হবেন— এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

গোপালগঞ্জে এমন ঘটনা ঘটবে— এ বিষয়ে কি গোয়েন্দাদের কাছে কোনো তথ্য ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য ছিল, তবে এত পরিমাণ যে হবে— ওই তথ্যটি ছিল না।’

এনসিপি নেতারাও অভিযোগ করেছেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি— এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনিও তো অনেক কিছু বলতে পারেন। যার যার বক্তব্য, সে সে দিবে।’

ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে কী পদক্ষেপ নেবেন জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘কালকেও তো নির্দেশনা দিয়েছি ওখানে। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে, সেজন্য সব ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন ওই জায়গার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

তিনি বলেন, গোপালগঞ্জে যারা অন্যায় করেছে, তারা গ্রেপ্তার হবেন। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

এনসিপির ‘জুলাই পদযাত্রা’ ঘিরে গতকাল বুধবার (১৬ জুলাই) দিনভর দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ হামলা চালিয়েছেন। হামলাকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে ৪ জন নিহত এবং অন্তত ৯ জন গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।


বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার না করতে সবার প্রতি আহ্বান অন্তর্বর্তী সরকারের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

সবাইকে বিভ্রান্তিকর বা প্রকৃত তথ্যভিত্তিক নয় এমন কোনো বক্তব্য, যেগুলো বিভ্রান্তি ছড়ায় ও জনগণের মধ্যে সম্প্রীতি বিনষ্ট করে— তা প্রচার না করার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ও লেখক সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের সম্পত্তি ময়মনসিংহে ভেঙে ফেলা হচ্ছে— এমন কিছু সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) এমন আহ্বান জানানো হয়েছে। এই সম্পত্তিটি মূলত তার দাদা, বিশিষ্ট সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর মালিকানাধীন ছিল— এমন দাবি করা হয় ওই প্রতিবেদনে।

সব রেকর্ড নতুনভাবে যথাযথভাবে খতিয়ে দেখার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়— তথ্যনির্ভর অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে, আলোচ্য বাড়ির সঙ্গে সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের কোনো সম্পর্ক কখনোই ছিল না। এই ভবনটি স্থানীয় জমিদার শশীকান্ত আচার্য চৌধুরী নির্মাণ করেছিলেন তার নিজস্ব বাসভবন ‘শশী লজ’-এর পাশেই, তার কর্মচারীদের জন্য।

পরে জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির পর এটি সরকারের অধীনে চলে আসে। এরপর সরকার এটি বাংলাদেশ শিশু একাডেমির জন্য বরাদ্দ দেয়। এরপর থেকেই এই বাড়িটি জেলা শিশু একাডেমির অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়।

জমিটিও ছিল অ-কৃষি সরকারিভাবে মালিকানাধীন (খাস) এবং দীর্ঘমেয়াদি ইজারার ভিত্তিতে শিশু একাডেমিকে দেওয়া হয়েছিল। জেলা প্রশাসন জমি-সংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনা করে নিশ্চিত করেছে যে অতীতের রেকর্ড অনুযায়ী, জমিটি সরকারের মালিকানাধীন এবং রায় পরিবারের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, স্থানীয় প্রবীণ নাগরিক ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সম্মানিত ব্যক্তিরাও বলেছেন, শিশু একাডেমির ইজারাভুক্ত এই জমি ও ভবনের সঙ্গে রায় পরিবারের কোনো ঐতিহাসিক সংযোগ নেই। সরকার আরও জানায়, এই বাড়িটি কোনো প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবেও তালিকাভুক্ত নয়।

তবে বাড়ির সামনের সড়কটি ‘হরকিশোর রায় রোড’ সত্যজিৎ রায়ের প্রপিতামহ হরকিশোর রায়ের নামে নামকরণ করা হয়েছে। হরকিশোর রায় ছিলেন উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর দত্তক পিতা। রায় পরিবার একসময় হরকিশোর রায় রোডে একটি বাড়ির মালিক ছিলেন, যা তারা অনেক আগেই বিক্রি করে দিয়েছিলেন। সেই বাড়িটি আর অস্তিত্বে নেই।

বর্তমানে যে ভবনটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে, সেটি জরাজীর্ণ, ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যবহার অযোগ্য। ২০১৪ সাল থেকেই শিশু একাডেমি শহরের অন্য একটি ভাড়াকৃত ভবনে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে এবং পরিত্যক্ত ভবনটি স্থানীয় অসামাজিক ব্যক্তিদের অপরাধকর্মের আখড়া হয়ে উঠেছিল।

‘তাই ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে ওই জায়গায় আধা-পাকা একটি ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরবর্তীতে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি জেলা প্রশাসনকে পুরোনো ও জরাজীর্ণ ভবনটি নিলামের মাধ্যমে অপসারণের অনুমতি দেয়,’ বলছে অন্তর্বর্তী সরকার।

নিলাম কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২৫ সালের ৭ মার্চ জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় জনসাধারণকে এ বিষয়ে ‘ব্যাপকভাবে অবহিত’ করা হয়। গত (বুধবার) বিকেলে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক এক আলোচনা সভার আয়োজন করেন। সেখানে প্রবীণ নাগরিক, সাহিত্য ও সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিকসহ স্থানীয় সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেন।

সরকার জানায়, বৈঠকে প্রখ্যাত লেখক কঙ্গাল শাহীন ব্যাখ্যা করে বলেন, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির নিয়ন্ত্রণাধীন এবং বর্তমানে যেটি ভাঙা হচ্ছে— সেই জরাজীর্ণ ভবনের সঙ্গে হরকিশোর রায় বা সত্যজিৎ রায়ের কোনো সম্পর্ক নেই।

ময়মনসিংহের নাগরিক সমাজের একজন সম্মানিত সদস্য অধ্যাপক বিমলকান্তি দে বাড়িটির মালিকানা নিয়ে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। স্থানীয় কবি ও লেখক ফরিদ আহমেদ দুলালও নিশ্চিত করেন যে, বাড়িটির সঙ্গে সত্যজিৎ রায় বা তার পরিবারের কোনো সংযোগ নেই।

সকলেই একমত হন যে ময়মনসিংহের শিশুদের কল্যাণে শিশু একাডেমির নতুন ভবন নির্মাণ জরুরি, এবং কাজটি বিলম্ব না করে এগিয়ে নেওয়া উচিত। সরকার জানায়, উপস্থিত সকলে একবাক্যে স্বীকার করেন যে, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির পরিত্যক্ত এই ভবনের সঙ্গে সত্যজিৎ রায় বা তার পরিবারের কোনো ঐতিহাসিক বা পারিবারিক সম্পর্ক নেই।

এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ময়মনসিংহের প্রত্নতত্ত্ব গবেষক স্বপন ধরও বলেছেন, আলোচ্য বাড়িটি সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি নয়।

অন্যদিকে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে— বাংলাদেশে ময়মনসিংহে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ির সংস্কার ও পুনর্গঠনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করতে ভারত প্রস্তুত।

বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘আমরা গভীর দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, বাংলাদেশে ময়মনসিংহে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি— যা তার দাদা ও বিশিষ্ট সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর সম্পত্তি ছিল— সেটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে।’

বর্তমানে এই সম্পত্তি বাংলাদেশ সরকারের মালিকানাধীন এবং এটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে, বলে ভারত সরকার উল্লেখ করে।

ভারত সরকার আরও জানায়, এই ভবনটি বাংলা সাংস্কৃতিক নবজাগরণের একটি প্রতীকস্বরূপ নিদর্শন হওয়ায় এর ভাঙার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা এবং এটি মেরামত ও পুনর্গঠন করে একটি সাহিত্য জাদুঘর এবং ভারত-বাংলাদেশের যৌথ সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলা শ্রেয় হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই উদ্দেশ্যে ভারত সরকার সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।’


দুদকের মামলায় সম্রাটের বিচার শুরু, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন ঢাকার একটি বিশেষ জজ আদালত। এর মাধ্যমে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, অভিযোগ গঠন শুনানির সময় সম্রাটের আইনজীবী সময়ের আবেদন করেন। তবে আদালত তা নামঞ্জুর করে অভিযোগ গঠন করেন এবং আগামী ১৭ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন।

আজ বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মো. জাকারিয়া হোসেন এ আদেশ দেন। শুনানির দিন সম্রাট আদালতে হাজির না হওয়ায় তার জামিন বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন বিচারক।

ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-৬-এর পেশকার জাহিদুর রহমান বাসস’কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী তৎকালীন যুবলীগ নেতা এনামুল হক ওরফে আরমানকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় সারাদেশে চলছিল ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করে দুদক। তখন অভিযোগ করা হয়, তিনি ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।

পরের বছর, ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর এই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় দুদক। সেখানে সম্রাটের বিরুদ্ধে মোট ২২২ কোটি ৮৮ লাখ ৬২ হাজার ৪৯৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।

সম্রাট ২০২২ সালের ২২ আগস্ট জামিনে মুক্তি পান।


১৭ জুলাই: গায়েবানা জানাজায় পুলিশের বাধা, ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা

১৭ জুলাই ২০২৪, সারাদেশে নিহতদের মাগফেরাত কামনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে পুলিশের বাধা অতিক্রম করে গায়েবানা জানাজা আদায় করেন আন্দোলনকারীরা। ছবি: তথ্য মন্ত্রণালয়
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

২০২৪ সালের ১৭ জুলাই (বুধবার) চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে সারাদেশে নিহতদের মাগফেরাত কামনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুলিশের বাধা অতিক্রম করে গায়েবানা জানাজা আদায় করেন আন্দোলনকারীরা।

এদিন ভোরে আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের তাড়িয়ে দেয় এবং ক্যাম্পাসকে ‘রাজনীতিমুক্ত’ ঘোষণা করে। এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল খালি করার নির্দেশ দেয়। সরকার কোম্পানিগুলোকে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়।

১৭ জুলাই পবিত্র আশুরা উপলক্ষে সরকারি ছুটির দিনেও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ, সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ, গায়েবানা জানাজা, কফিন মিছিল এবং দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা।

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আহতের সংখ্যা বাড়তে থাকে।

এদিন আন্দোলকারীরা রাজধানীতে মেয়র হানিফ উড়াল সড়কের কাজলা অংশের টোল প্লজায় আগুন ধরিয়ে দেন। ওই সড়কের শনির আখড়া ও কাজলার মধ্যবর্তী স্থানে অন্তত ২০টি জায়গায় মধ্যরাত পর্যন্ত আগুন জ্বলে।

১৬ জুলাই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলায় রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদসহ সারাদেশে অন্তত ছয়জন নিহত হন। তাদের মধ্যে দুজন ঢাকায় সায়েন্সল্যাব এলাকায় এবং চট্টগ্রামে ছাত্রদলের নেতা ওয়াসিম আকরামসহ আরও তিন জন নিহত হন।

নিহতদের মাগফেরাত কামনায় ১৭ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গায়েবানা জানাজার আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গায়েবানা জানাজার শুরু হওয়ার আগেই পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে বিকেল চারটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বাসভবনের সামনে জানাজা পড়েন আন্দোলনকারীরা।

জানাজা শেষে শিক্ষার্থীরা প্রতীকী কফিন ধরে শপথ করেন এবং সমস্বরে বলেন, ‘এই আন্দোলন আমরা বৃথা যেতে দেব না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই আন্দোলন থেকে সরে যাব না।’

গায়েবানা জানাজা শেষে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে আন্দোনকারীরা টিএসসি অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পুলিশ তাদের বাধা দেয় এবং কয়েক রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এ সময় আন্দোলনকারীরা সেখানেই অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

এ সময়ে সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, পুলিশ ক্যাম্পাসের প্রত্যেকটি প্রবেশ পথে শিক্ষার্থীদের আটকে দিয়েছে। ক্যাম্পাসের ভেতরের শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও গুলি নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে।’

এছাড়া এদিন দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গায়েবানা জানাজায় পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাধা দেয় এবং কোথাও কোথাও হামলা চালায়।

১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) সকল বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা এবং নিরাপত্তার স্বার্থে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে নির্দেশ দেয়। জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস ও আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সব আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হল বন্ধের ঘোষণা ও পুলিশের তৎপরতার মুখে অনেক শিক্ষার্থী সন্ধ্যা নাগাদ ক্যাম্পাস ছেড়ে যান। তবে হল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে রাতেও অনেক ছাত্রছাত্রী হল ও ক্যাম্পাসে অবস্থান করেন।

এদিন বিকেলে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশীদ টিএসসি এলাকায় গিয়ে বলেন, ‘পুলিশ হল খালি করার অনুমতি পেয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হল না ছাড়লে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’

এর আগে, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাতভর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি আবাসিক হলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর চড়াও হন আন্দোলনকারীরা। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কক্ষ ভাঙচুর করা হয়। পাশাপাশি বিশ্বিবদ্যালয়ের ১৪টি হলে ‘ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ’ মর্মে অঙ্গীকারনামায় প্রাধ্যক্ষদের স্বাক্ষর আদায় করেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ-বিজিবি-র‌্যাব ও সোয়াটের ন্যক্কারজনক হামলা, খুনের প্রতিবাদ, খুনিদের বিচার, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা এবং কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে’ ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ (সর্বাত্মক অবরোধ) কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই কর্মসূচিতে হাসপাতাল ও জরুরি সেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ রাখার আহ্বান জানানো হয়।

এদিন রাত ৮টার দিকে ফেসবুকে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি সারাদেশে প্রতিটি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানান।

এদিন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে আন্দোলনকারীদের সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, আমাদের ছাত্র সমাজ সর্বোচ্চ আদালত থেকে ন্যায় বিচার পাবে। তাদের হতাশ হতে হবে না।’

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন এখন স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে চলে গেছে। কাজেই আর বসে থাকার সময় নেই।’

দলীয় নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের অস্তিত্বের প্রতি হামলা এসেছে, হুমকি এসেছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা আমাদের করতেই হবে।

কাজেই আপনারা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রস্তুত হয়ে যান।’

১৭ জুলাই শহীদ আবু সাঈদকে রংপুরের পীরগঞ্জে তার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। এদিন আবু সাঈদের বাড়ির পাশে জাফরপাড়া কামিল মাদ্রাসা মাঠে সকাল সোয়া নয়টায় প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে সোয়া ১০টার দিকে তার লাশ দাফন করা হয়।

এদিন কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে নিহতদের স্মরণে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো গায়েবানা জানাজার আয়োজন করে। তাদের এই কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দেয়।

গায়েবানা জানাজা শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গায়েবানা জানাজায় অংশ নিতে মুসল্লিদের বাধা দেওয়া হয়েছে। সরকার ইচ্ছা করলে আলোচনার মাধ্যমে কোটা সমস্যার সমাধান করতে পারত। তা না করে বর্বরভাবে হামলা করে মানুষ হত্যা করা হয়েছে।’

এদিন চট্টগ্রামেও কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের জন্য গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল ৪টায় নগরের লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত এ গায়েবানা জানাজায় হাজার হাজার ছাত্র-জনতা অংশ নেন। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১০ জায়গায় সড়ক-মহাসড়ক এবং দুই জায়গায় রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা।


জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মাঠে ছিলাম ‘ক্ষুব্ধ নারী সমাজ’ প্লাটফর্মের ব্যানারে : ফরিদা আখতার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, তিনি ২৪ এর জুলাই আন্দোলনে সার্বক্ষণিক মাঠে ছিলেন।

তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় তিনি নিজে ‘ক্ষুব্ধ নারী সমাজ’ নামে একটি প্লাটফর্মের মাধ্যমে ছাত্র জনতার সর্বশেষ বিজয় না আসা পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে আহত হয়েছেন। তার সঙ্গী সাথীদের অনেকেই গুরুতর আহত হয়েছিলেন। এখনো অনেকেই সেই করুণ স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছেন।

আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নিজ কক্ষে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি তার সেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের দিনগুলোর কথা স্মরণ করে এ কথা বলেন।

মৎস্য উপদেষ্টা বলেন,অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি পালন করছে। শুধু এই বর্ষপূর্তি নয়, সারা জীবন- বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, বাংলাদেশের মানুষ ততদিন এই জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।

তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানান। পাশাপাশি আহতদের চিকিৎসা এবং তাদের কর্মসংস্থান ও জীবন মান উন্নয়নের জন্য সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানান।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, তিনি ছাত্র জনতার আন্দোলনের বিজয় হাতে না আসা পর্যন্ত সর্বক্ষণ মাঠে ছিলেন। তিনি দেখেছেন- ছোট ছোট ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে তাদের বাবা-মায়েরা কিভাবে সমভাবে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল।

ফরিদা আখতার বলেন, আন্দোলনের মাঝামাঝি এক পর্যায়ে এমন হয়েছিল যে, তখন আমাদের নারী আন্দোলনের পক্ষ থেকে আমরা একে অপরকে ফোন করে কথা বলতাম, সারারাত অস্থিরতায় ঘুমাতে পারতামনা। কি করবো বুঝে উঠতে পারছিলামনা। চারদিকে ছাত্রছাত্রীসহ সাধারণ মানূষের উপর অত্যচার নির্যাতন, গুলি, ছাত্রলীগের হামলা। মানে এমন একটা নিষ্ঠুরতার চিত্র দেখছিলাম কিন্তু কিছু করাও যাচ্ছিল না।

তিনি বলেন, আমরা প্রথমে অনেক কিছু করার কথা ভাবছিলাম কিন্তু তাতেও অনেক রকম বাধা ছিল। আমরা শেষে কয়েকজন নারী মিলে একটা ‘ক্ষুব্ধ নারী সমাজ’ নাম দিয়ে একটা প্লাটফর্মের মতো করি। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক, নারী আন্দোলন কর্মী, শ্রমিক নেত্রীরা এসে জড়ো হতে শুরু করলেন। এক পর্যায়ে আমরা ভাবলাম, একটা প্রেস কনফারেন্স করব। তখন আমরা আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। এরপর আমরা ‘ক্ষুব্ধ নারী সমাজ’ এর পক্ষ থেকে রিপোর্টার্স ইউনিটিতে একটা প্রেস কনফারেন্স করি। প্রেস কনফারেন্সে আমরা আমাদের বক্তব্য তুলে ধরি। তখন আমরা শুধু একটা কথায় বলেছি যে, চারিদিকে হত্যাকাণ্ড হচ্ছে। এটা নির্মম নিপীড়ন। এটা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

ফরিদা আখতার বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারীদের উপর নিপীড়ন দেখে জুলাইয়ের শেষ দিকে আমরা অতিষ্ট হয়ে উঠছিলাম। দেশের মানুষের সাথে আমরা ক্ষুব্দ হয়ে উঠছিলাম। আমরা ধরে নিয়েছি নির্যাতন নিপীড়নের বিরুদ্ধে আমাদেও মাঠে নামতে হবে। আমাদের উপর ঝড়-ঝাপটা যা আসুক,সেটা মাথায় নিয়ে আমরা রাস্তায় অবস্থান নেব। এরমধ্যে শুনলাম হাইকোর্টের সামনে অনেকেই জড়ো হচ্ছে। তখন আমরা প্রেস কনফারেন্স করে রিপোর্টারস ইউনিটি থেকে বের হয়ে প্রেস ক্লাবের দিকে এগুচ্ছি। সেখানে পুলিশ আমাদের আটকিয়ে দেয়।

পুলিশের বাধায় আমরা আর হাইকোর্টের দিকে যেতে পারলাম না। তখন দুপুর প্রায় ১২ টা। পুরুষ পুলিশের সাথে আমরা যখন সামনে এগুবার জন্য তর্ক করছি, এমন সময় আমাদেরকে মহিলঅ পুলিশ এসে ঘিরে ফেললো। আমাদের সামনে এগুতে না দিয়ে পুলিশ বললো, ওদিকে গোলাগুলি হবে যেতে পারবেননা। পরে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে পুলিশের বাধায় আমরা ফিরে আসলাম।

তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনের শেষের দিকে আমরা শাহবাগে জড়ো হওয়ার জন্য মোহাম্মদপুর থেকে শাহবাগে দিকে আসতে থাকি। কিন্তু সেখানে দেখি, একদিকে পুলিশ অন্যদিকে ছাত্রলীগ-যুবলীগের উছৃঙ্খল নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছে। ফলে আমরা শাহবাগে অবস্থানের চেষ্টা করেও পারলাম না। ওইদিন দুপুরে আমরা মোহাম্মদপুরে সাত মসজিদ রোডে একত্রিত হয়ে সমাবেশ করলাম। উন্মুক্ত রাস্তার উপরে আমাদের কর্মী সমর্থকরা মুহুর্মুহু শ্লোগানে মুখরিত করে তুললো। আমরা সমাবেশে বক্তব্য দিলাম। এ সময় মহিলা যুবলীগের একদল উছৃংখল নারী কর্মী মিছিল নিয়ে এসে আমাদের উপর হামলা করলো। আমরা তখন জীবনের নিরাপত্তায় শঙ্কিত হয়ে কোনমতে পাশের একটি ভবনের নিচে আশ্রয় নিলাম। সেখানেও তারা আমাদের উপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায় এবং ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ এবং যুব মহিলালীগ কর্মীদের যৌথ হামলায় আমাদের অনেক কর্মী সেদিন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এত কিছুর পরও আমাদের আন্দোলন দমাতে পারেনি স্বৈরাচারী সরকারের পেটোয়া বাহিনী।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সেই উত্তাল দিনগুলোর কথা স্মরণ করে প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, সাতমসজিদ রোডের সেই ঘটনায় আমাদের নারী নেত্রী ও কর্মীরা পুলিশের পাশাপাশি যুবলীগ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হামলায় সবচেয়ে বেশী আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। যেই ভবনে আমরা আশ্রয় নিতে গিয়েছিলাম, পুলিশ ছাত্রলীগের যৌথ হামলা দেখে সেই ভবন এবং আশপাশের ভবনগুলোর সিকিউরিটি গার্ডরা ভবনের নিরাপত্তার স্বার্থে গেইট বন্ধ করে দিলো। ফলে আমাদের অনেক কর্মি ভবনগুলোতে আশ্রয় নিতে পারেনি। যারা একটু ঢুকতে দেরি করেছিল তাদের কয়েকজন পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়েছে। আমরা অনেকক্ষণ ভবনগুলোতে আটকে থাকার পর আস্তে আস্তে যার যার বাসার দিকে চলে যাই।

উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার বলেন, আর তারপর আমরা একদিন সাত মসজিদ রোডে দাঁড়াইছি। সেদিন আবার খুবই বৃষ্টি হচ্ছিল। কিন্তু সবাই ওখানে দাঁড়িয়ে গান গাইলাম আমরা। ছেলে মেয়েরা এসে অভিনয় করছিল বৃষ্টিতে ভিজে।

উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার বলেন, আমরা আরেকদিন শাহবাগে গিয়েছি। সেখানে দেখি ছেলে মেয়েরা পোস্টার লিখছে। আমাদেরকে দেখার পর তারা বললো আমাদের পাশে বসেন। আমরা যেহেতু একটু বয়স্ক, তারা আমাদের কষ্ট হচ্ছে সেটা বুঝতে পারলো। তাই আমাদের কষ্ট লাঘবের জন্য তারা বারবার বলছিল আপনারা বসেন। আমরা তাদে পাশে বসতেই ওরা খুশি হলো। আমরা আন্দোলনরত ছেলে মেয়েদের বললাম, তোমরা টেনশন করো না। তোমাদের জন্যই তো আমরা আসছি। তোমাদের বিজয় হবেই।

সেদিন পিজি হাসপাতালের ভিতর থেকে আগুন বেরোচ্ছে দেখে খবর নিলাম। ওখানে নাকি কয়েকটা গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ছাত্র বা সাধারণ জনগণ, রিক্সাওয়ালা, হকার শ্রমিক সত্যি সত্যি তারা এই আন্দোলনে মাঠে মাটি কামড় দিয়ে পড়েছিল। আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে তাদের কষ্টের সেই দৃশ্য আমরা চোখে দেখেছি।

তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় আমাদের একমাত্র বাহন ছিল রিক্সা বা সিএনজি। আমরা রিকশায় বসে তাদের কথা শুনতাম। রিক্সাওয়ালার মাধ্যমে বোঝা যেত জনগণ কি চাচ্ছে। তাদে কথায় একদম পরিষ্কার ছিল যে, জনগণ কি চায়। পরিবর্তন। এই রিক্সাওয়ালা-সিএনজি ড্রাইভারদের মনের ভাবটায় ছিল আমাদের বার্তা। এই কারণে আমি মনে করি যে, বাংলাদেশের ইতিহাস যদি সত্যিকার অর্থে লেখা হয়, তাহলে রিক্সাওয়ালাদেরকে নিয়েই একটা চ্যাপ্টার হওয়া উচিত।

ফরিদা আখতার জানান, তিনি আন্দোলনের সময় একদিন শহীদ মিনারে গিয়েছেন। শহীদ মিনারে তার চারপাশে স্কুলের ড্রেস পড়া মেয়েরা দাঁড়ানো। তিনি বললেন, তোমরা এসেছো, ওরা সবাই খুব খুশি। পরে দেখলাম আশেপাশে দাঁড়িয়ে আছে তাদের বাবা- মা। ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি তাদের বাবা-মাদের উপস্থিতি দেখে মনে হয়েছে, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন গতি পেয়েছে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে মানুষ জেগে উঠেছে। বাবা মায়েরা তাদের সন্তানদের গণতন্ত্রেও লড়াইয়ে জাগিয়ে তুলেছে।

তিনি বলেন, আন্দোলনে বাবা মায়েরা যে ভূমিকাটা রেখেছে এটা তিনি রাজপথে স্বচক্ষে দেখে অভিভূত হয়েছেন। একজন বাবা কোথাও সরকারি চাকরিজীবী, কোথাও ব্যবসায়ী, কোথাও মৎস্যজীবী। কিন্তু আন্দোলনের পুরোটা সময় তিনি আন্দোলনকারী সন্তানের বাবা হিসেবে মাঠে ছিলেন। এজন্য আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী মায়েদের পাশাপাশি বাবাদের ধন্যবাদ জানান তিনি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা জানান, জুলাই গণ আন্দোলনে শহীদ যোদ্ধাদের স্মরণে তার মন্ত্রণালয় জুলাই আন্দোলনের আবহে বিভিন্ন ঘটনার স্মৃতি দিয়ে সাজানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, আহতদের কথা আমরা হয়তো অনেকেই জানি। কিন্তু এমনও কিছু আহত আছে জুলাই অভ্যুত্থানে যাদেরকে আমরা হয়তো সেভাবে চিনি নাই। তার পরিচিত ২৫ বছর বয়সের এক যুবকের কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, সেই যুবকটি পিঠে এত বেশি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে যে, এখন সে পাঁচ কেজি ওজনও হাতে তুলে নিতে পারেনা।

আমাদের চেষ্টা আছে, এ ধরনের আহতদের নিয়েও কাজ করব। তাদের উন্নয়নের জন্য আমরা সরকারের পক্ষ থেকে সাহায্য সহযোগিতা অব্যাহত রাখব।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৬০শতাংশ হলো ৩০ থেকে ৫০ বয়সের মধ্যে। তাই আগামীর উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এ সব যুবক যুবতীদের কথা মাথায় রেখে আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনা সাজাতে হবে। আমি নিজেও আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী যোদ্ধাদের জন্য কিছু করতে পারলে নিজেকে কৃতজ্ঞ মনে করব।


গোপালগঞ্জে রাত ৮টা থেকে কারফিউ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

গোপালগঞ্জে আজ রাত ৮টা থেকে পরের দিন বিকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।


গোপালগঞ্জে এনসিপি’র কর্মসূচিতে হামলাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল

আপডেটেড ১৬ জুলাই, ২০২৫ ১৭:১১
বাসস

গোপালগঞ্জে এনসিপি’র পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে হামলাকারী দুস্কৃতিকারিদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব। এনসিপি’র পূর্বঘোষিত ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিতে পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের সন্ত্রাসীদের ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন মহাসচিব।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠীর পতনের পর দুস্কৃতিকারিরা আবারো দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিসহ নৈরাজ্যের মাধ্যমে ফায়দা হাসিলের অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। আজ গোপালগঞ্জে এনসিপি’র পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির ওপর বর্বরোচিত হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ, ইউএনওসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও পুলিশ সদস্যদের আহত করার বর্বর ঘটনা সেই অপতৎপরতারই বহিঃপ্রকাশ। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির কারণে আওয়ামী দোসররা মরণকামড় দিয়ে ইন্টেরিম গভর্নমেন্টকে বেকায়দায় ফেলে ফায়দা লুটতে দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য এখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এসব দুস্কৃতিকারিদের কঠোর হস্তে দমন ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই। গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ দেশে যাতে আবারও ফ্যাসিবাদের উত্থান হতে না পারে সেজন্য দেশের মানুষের জানমাল রক্ষায় দল-মত নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এর ব্যতয় হলে দেশ আবারও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় হুমকির মুখে পড়বে।’

আহত পুলিশ সদস্যদের আশু সুস্থতা কামনা করেন বিএনপি মহাসচিব।


দ্রুতই আবু সাঈদ হত্যার বিচার হবে: আইন উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

দ্রুততম সময়ের মধ্যেই শহীদ আবু সাঈদ হত্যার বিচার করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, তার বাবা এই বিচার দেখে যেতে পারবেন।

বুধবার (১৬ জুলাই) বেলা ১১টায় জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদৎবার্ষিকীতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে তার নামে তোরণ ও মিউজিয়াম এবং শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন এসব উদ্বোধন করেন।

পরে স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আসিফ নজরুল বলেন, দ্রুতই আবু সাঈদ হত্যার বিচার হবে — তার বাবা এ বিচার দেখে যেতে পারবেন। এ সরকারের আমলেই জুলাই হত্যার বিচার হবে।

এ সময় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, রংপুর অঞ্চলের মানুষ আর বৈষম্যের শিকার থাকবে না। ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন এ বছরেই হবে। এছাড়া কুড়িগ্রামে ইপিজেড হবে। রংপুর অঞ্চলে হবে চীনের অত্যাধুনিক হাসপাতাল।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলী। এছাড়াও বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম, ডিআইজি আমিনুল ইসলামসহ বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলীর নেতৃত্বে প্রশাসনের উদ্যোগে সকাল সাড়ে ৭টায় পীরগঞ্জের বাবনপুরে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করা হয়।

পরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফিরে কালো ব্যাজ ধারণ করেন তারা। এরপর ক্যাম্পাসের দক্ষিণ গেট থেকে জুলাই শহীদ দিবস উপলক্ষে শোক র‍্যালি বের হয়। র‍্যালিটি নগরীর মডার্ন মোড় হয়ে শহীদ আবু সাঈদ গেটে গিয়ে শেষ হয়।

এদিকে বিকেলে জুলাই শহীদ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভেতরে ক্যাফেটেরিয়ায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও বিকেল সাড়ে ৫টায় দোয়া এবং মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য, গত বছরের এই দিনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন।


“আনসার একাডেমিতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন করলেন মহাপরিচালক”

আপডেটেড ১৬ জুলাই, ২০২৫ ১৮:১৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

"পরিকল্পিত বনায়ন করি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ি"—এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ২০২৫ আজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে।

গাজীপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বাহিনীর মাননীয় মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ, এসজিপি, বিএএম, এনডিইউ, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, সকাল ১১:০০টায় একটি বৃক্ষের চারা রোপণের মাধ্যমে কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

এই কর্মসূচির আওতায় জাতীয় পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সমন্বিতভাবে ফলজ, বনজ ও ঔষধি প্রজাতির বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম পরিচালিত হবে, যা চলবে আগামী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মহাপরিচালক তাঁর বক্তব্যে বলেন,

“পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমের গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি কেবল নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে নয়, বরং পরিবেশ সংরক্ষণ ও সামাজিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।”

তিনি আরও বলেন,

“দেশের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা, প্রাকৃতিক সম্পদের সংরক্ষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় এ ধরনের উদ্যোগ অত্যন্ত সময়োপযোগী ও প্রশংসনীয়।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ, এএফডব্লিউসি, পিএসসি; কর্নেল মোঃ ফয়সাল আহাম্মদ ভূঁইয়া, পিএসসি; ডেপুটি কমান্ড্যান্ট ও কমান্ড্যান্ট (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নুরুল আবছারসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, এই কর্মসূচির মাধ্যমে একটি সবুজ, পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব বাংলাদেশ গঠনের পথ আরও সুদৃঢ় হবে।


ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ডিএমপির ২,০৫৩ মামলা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ হাজর ৫৩টি মামলা করেছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ।

এছাড়াও অভিযানকালে ২৮০টি গাড়ি ডাম্পিং এবং ১৩৮টি রেকার করা হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার এ তথ্য জানানো হয়।

এতে আরো বলা হয়, মঙ্গলবার ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করে।

ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।


‘নোটস্ অন জুলাই’ পোস্টকার্ডের মাধ্যমে এক লাখ মানুষের গণঅভ্যুত্থানকেন্দ্রিক স্মৃতিকথা সংগ্রহের উদ্যোগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

‘নোটস্ অন জুলাই’ পোস্টকার্ডের মাধ্যমে এক লাখ মানুষের গণঅভ্যুত্থানকেন্দ্রিক স্মৃতিকথা সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে জেলা তথ্য অফিসসমূহে এসব পোস্টকার্ড প্রেরণ করা হয়েছে। জেলা তথ্য অফিসসমূহ সংশ্লিষ্ট জেলাপ্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে ‘নোটস্ অন জুলাই’ পোস্টকার্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের গণঅভ্যুত্থানকেন্দ্রিক স্মৃতিকথা ও অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করছে। আগামী ৫ই আগস্ট পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলবে। জনগণের স্মৃতিকথা-সংবলিত এসব পোস্টকার্ড গুরুত্বসহকারে সংরক্ষণ করা হবে।


banner close