নারী জাগরণ ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের লক্ষ্যে সারাদেশে ‘জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। দেশব্যাপী এ কর্মসসূচির আয়োজন করে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের। প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে গতকাল শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জুলাইয়ের চেতনায় দেশ গড়তে ঢাকাসহ ৬৪ জেলা-উপজেলায় ভার্চুয়ালি লাখো কন্ঠে শপথ বাক্য পাঠ করান সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। দৈনিক বাংলার ব্যুরো, জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত;
নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজগঠনে লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর নওগাঁর সহযোগিতায় জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল।
জেলা সমাজসেবা কর্যালয়ের উপপরিচালক নূর মোহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে- সিভিল সার্জন ডা: আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইবনুল আবেদীন, নওগাঁ মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা আমেনা খাতুন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মাহফুজ আলম শ্রাবণের মা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নওগাঁয় নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বি বক্তব্য রাখেন।
পরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি এবং জেলা শিশু পারিবারের সদস্যদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
হারুনার রশীদ বুলবুল, কেশবপুর (যশোর): জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে যশোরের কেশবপুরে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে শনিবার কেশবপুর উপজেলা প্রশাসন, মহিলাবিষয়ক ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে সকাল ১০টায় স্থানীয় প্রাথমিক শিক্ষক মিলনায়তনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. রেকসোনা খাতুনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক, সমাজ সেবা অফিসার মো. রোকনুজ্জামান, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রুপালি রানী, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোছা. আনজু মনোয়ারা, প্রেসক্লাব কেশবপুরের সভাপতি ওয়াজেদ খান ডবলু, নিউজ ক্লাবের সাধারন সম্পাদক হারুনার রশিদ বুলবুল, এনসিপির উপজেলা শাখার আহবায়ক সম্রাট হোসেন, ও সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার প্রভাত কুমার দাস প্রমুখ। সভার শুরুতে জুলাই আন্দোলনে শহীদের স্বরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর শপথ বাক্য পাঠ করান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. রেকসোনা খাতুন ।
অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, আজ একটি মহান দায়িত্ব নিতে যাচ্ছি। যা শুধু একাট রাষ্ট্রীয় কর্তব্য নয় বরং একটি মানবিক ও নৈতিক আহবান। একটি যত্নশীল নতুন দেশ গড়ার অঙ্গীকার।
অঙ্গীকার করছি, দেশের সকলকে এক সাথে নিয়ে দারিদ্র্যমুক্ত, সহিংসতা মুক্ত, মানবিক ও সাম্যের দেশ গড়ব। কারণ সরকার মানে আমি, আর রাষ্ট্র মানে আমরা।
দেশের সকল নাগরিককে সামাজিক সুরক্ষার চাদরে ঢেকে দিতে আমরা বদ্ধ পরিকর। সেবার অভিগমত্য নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব।
শেষে ২৩০টি অসহায় পরিবারের মাঝে ৩০ কেজি চালের কার্ড বিতরণ করা হয়।
বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি : নাটোরের বাগাতিপাড়ায় জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ গ্রহণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি দুটি পর্বে দেখানো হয়। এরমধ্যে প্রথম পর্বে ভিডিও কনফারেন্সে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজগঠনে লাখো কন্ঠে শপথ পাঠের কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে সংযুক্ত থাকা এবং দ্বিতীয় পর্বে সমাজগঠনে নারী ও শিশুর সুরক্ষা বিষয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মারুফ আফজাল রাজন। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাগাতিপাড়া মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রিয়াজুল ইসলাম, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শিরিন আখতার, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর একেএম আফজাল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান, উপজেলা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি আরিফুল ইসলাম তপু ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নাটোর জেলা শাখার সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মোনায়েম ইসলাম রুমি সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা এবং বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থার নেতারা।
কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি : গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। গতকাল শনিবার সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতাসহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীরা।
এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
পাংশা (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি : রাজবাড়ীর পাংশায় জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে লাখো কণ্ঠে শপথ বাক্য পাঠ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার পাংশা উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় এবং উপজেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এ শপথ বাক্য পাঠ করান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা তহমিদা খানম, সমবায় কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রতিনিধি ডা. শর্মি আহম্মেদ এবং দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকর্তা মো. রেজাউল ইসলাম।
শপথ পাঠ শেষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের সুবিধাভোগী নারীদের মাঝে একটি করে ফলদ ও ভেষজ গাছের চারা বিতরণ করা হয়। পরে উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
আমিনুল ইসলাম বনি, রাজশাহী: রাজশাহীতে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে প্রশাসন ও সমাজ সেবা কার্যালয়ের আয়োজনে এবং উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় অনুষ্ঠানের শুরুতেই জুলাই শহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন শেষে করা হয় মোনাজাত। পরে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খোন্দকার আজিম আহমেদ এনডিসি, বিভাগীয় কমিশনার রাজশাহী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলে মোহাম্মদ শাহজাহান, পিপিএম (বার), পিএইচডি, উপমহাপুলিশ পরিদর্শক, রাজশাহী রেঞ্জ রাজশাহী। ফারজানা ইসলাম পুলিশ সুপার রাজশাহী। সভাপতিত্ব করে আফিয়া আখতার, জেলা প্রশাসক, রাজশাহী।
জামাল হোসেন পান্না, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া):
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান গতকাল শনিবার উপজেলা পরিষদের হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়।
নবীনগর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় ও মহিলা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজনের প্রথম পর্বে ভিডিও কনফারেন্সে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজগঠনে লাখো কন্ঠে শপথ পাঠের কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে সংযুক্ত থাকা এবং দ্বিতীয় পর্বে সমাজগঠনে নারী ও শিশুর সুরক্ষা বিষয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাজীব চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. রুহুল আমিন, নবীনগর প্রেসক্লাব সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন শান্তি সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা এবং বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থার নেতারা।
নরসিংদী প্রতিনিধি : নরসিংদী জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী বলেছেন, আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই। তবে সে অনুযায়ী আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দেশকে যাতে আমরা উন্নতির জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে পারি সেই দিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে এবং আমাদেরকে একতাবদ্ধ থাকতে হবে। তিনি শনিবার সকালে নরসিংদী জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠন: সামাজিক নিরাপত্তা, নারী ও শিশুর মর্যাদা সুরক্ষা এবং সমাজের মানবিক দর্শন শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন।
নরসিংদী জেলা প্রশাসন, জেলা সমাজসেবা কার্যালয় ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত উক্ত আলোচনা সভায় নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ আমিরুল হক শামীম, নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. কলিমুল্লাহ, নরসিংদী জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. তোফাজ্জল হোসেন মাস্টার, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নরসিংদী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আমজাদ হোসেন। এছাড়া আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নরসিংদী জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মাসুদুল হাসান তাপস ও নরসিংদী মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক সেলিনা আক্তার ও নরসিংদী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমা জাহান সরকার প্রমুখ।
কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি :গাজীপুরের কাপাসিয়ায় জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে "সেবা মেলা ও লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ" অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল শনিবার সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী একযোগে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন থেকে অনুষ্ঠানটি ভার্চুয়ালি দেশব্যাপী প্রচার করা হয়। এতে কাপাসিয়া উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের আয়োজনে পরিষদ মিলনায়তনে জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী যোদ্ধা, শহীদ পরিবার, আহত যোদ্ধা, সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের প্রতিনিধিগণ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজন উপস্থিতি ছিলেন। অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করেন যোদ্ধা শামিমা আক্তার শিমু, শহীদ জাকিরের স্ত্রী জান্নাতুন নাঈম। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ডা. তামান্না তাসনীম।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন এবং উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এবং বিআরডিবি কর্মকর্তা দিলারা আক্তার মনি ফকিরের পরিচালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নূরুল আমিন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আউলিয়া খাতুন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আতিকুর রহমান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল আরিফ সরকার, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. এজাজ মিয়া, বিআরডিবি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা সেলিম হোসেন আরজু, গাজীপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা শেফাউল হক, গাজীপুর জেলা মহিলা দলের সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসী, কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এফ এম কামাল হোসেন, উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি শাহনাজ পারভীন শিখা প্রমুখ।
জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনের অনুষ্ঠান উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সাথে উপস্থিত সকলে দাঁড়িয়ে শপথ বাক্য পাঠ, সাংস্কৃতিক পর্বে গান ও কবিতা আবৃত্তি, উপজেলা পরিষদ চত্বরে বৃক্ষ রোপন, সমাজসেবা কার্যালয়ের সুবিধাভোগী ৬ টি এতিমখানা মাদরাসাকে অনুদানের চেক প্রদান করা হয়।
এইচ এম মোজাহিদুল ইসলাম নান্নু, পটুয়াখালী: জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজগঠনে লাখো কন্ঠে শপথ গ্রহন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত। গতকাল শনিবার পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে শপথ গ্রহন অনুষ্ঠানে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক এস এম শাহাজাদা এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত সিভিল সার্জন ডা: মোহাম্মদ খালেদুর রহমান মিয়া, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইফফাত আরা জামান উর্মি, সহকারী কমিশনার ভূমি চন্দন কর, জেলা জামাতের আমির অ্যাড. নাজমুল আহসান, পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের আহবায়ক মো. জাকির হোসেন।
এসময় জুলাই আগষ্টের গনঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহত পরিবারের সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতারা এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
আবু তাহের ভূঁইয়া, ফেনী :
ফেনীতে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে লাখো কন্ঠে শপথ বাক্য পাঠ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে । গতকাল শনিবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উদ্যোগে এবং মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সহায়তায় শপথ বাক্য পাঠ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভার্চুয়ালি সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান সমাজকল্যাণ ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
শপথ বাক্য পাঠ শেষে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সামাজিক নিরাপত্তায় নারী-শিশুর মর্যাদা, সুরক্ষা এবং সাম্যতার মানবিক দর্শন বিষয়ক বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী। শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা শাহ মুহাম্মদ কায়সারের পরিচালনায় বক্তব্য দেন সিভিল সার্জন ডা: রুবাইয়াত বিন করিম, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা নাসরীন আক্তার, জামায়াতের আমির মুফতি আবদুল হান্নান, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম-সম্পাদক আজিজ উল্যাহ আহমদী, ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজিয়া চৌধুরী সাবা, ছাত্র প্রতিনিধি প্রিন্স মাহমুদ আজিম, ওমর ফারুক, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সভাপতি জিয়া উদ্দিন। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইসমাইল হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা নাসরীন কান্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফি উল্যাহ, সমাজসেবা বিভাগের সহকারী পরিচালক শহীদুল ইসলাম ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা ও জুলাই সম্মুখসারির যোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে জুলাই পূনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ গ্রহণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণলয়ের উদ্যোগে উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের আয়োজনে গতকাল শনিবার উপজেলার পরিষদ হলরুমে এ শপথ গ্রহণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী, থানা অফিসার ইনচার্জ সোলাইমান শেখ, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম তুহিন, উপজেলা প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম পুলক, উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম, উপজেলা জামায়াতের সাধারন সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বুলবুল, দৌলতপুর সরকারি পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়ার আলী, ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে রকি আহমেদ সহ সাংবাদিকবৃন্দ, শিক্ষক ছাত্র ছাত্রী ও উপজেলা সামাজসেবা কর্যালয়ের সুবিধা ভোগীরা উপস্থিত ছিলেন।
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুরে তিনটি দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে জুলাই পুনর্জাগনে সমাজ গঠনে সৈয়দপুরে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হয়। এসব দপ্তর হলো উপজেলা প্রশাসন, সমাজসেবা ও মহিলাবিষয়ক।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে স্থানীয়ভাবে সভাপতিত্ব করেন সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-ই-আলম সিদ্দিকী। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য বলেন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নূরুন্নাহার শাহাজাদী, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ, উপজেলা প্রকৌশলী এমএম আলী রেজা রাজু, সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহিন আখতার শাহিন, উপজেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, জাতীয় নাগরিক পার্টির উপজেলা আহ্বায়ক আজাদ হোসেন, সমাজসেবী অধ্যাপক শওকত হায়াৎ শাহ প্রমুখ।
এর আগে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুর্শিদের ভার্চুয়ালি বক্তব্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই শ্রবণ করেন। একই সঙ্গে উপদেষ্টা পরিচালিত শপথ বাক্য অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত সবাই পাঠ করেন।
গোপালপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি : জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ গ্রহণ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা কার্যালয়ের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তুহিন হোসেন এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোর্শেদ, সমাজ সেবা কর্মকর্তা এখলাস মিয়া, প্রেসক্লাবের সভাপতি জয়নাল আবেদীন, শহীদ ইমনের ছোট ভাই হাফেজ সুজন মিয়া, শহীদ হৃদয়ের ছোট বোন জেসমিন আক্তারসহ জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা। উপস্থাপনা করেন কৃতি শিক্ষার্থী ফারিয়া জাহান মুন ।
কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী) প্রতিনিধি : জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে শপথ গ্রহণ করলেন নারী ও পুরুষরা। শনিবার সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে দেশব্যাপী জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে লাখো কন্ঠে শপথ পাঠ অনুষ্ঠান ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিযষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। এতে সভাপতিত্ব করেন সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. মহি উদ্দিন। এ অনুষ্ঠান হতে ভার্চুয়ালি শপথ পাঠের সময় কিশোরগঞ্জ উপজেলায় অংশগ্রহণকারীরা শপথ গ্রহণ করেন। এসময় উপস্থিতিদের চোখে মুখে ফুটে উঠে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনের স্বপ্ন। এতে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার জাকির হোসেন। আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: নীল রতন দেব, কিশোরগঞ্জ এপি ম্যানেজার সাগর ডি কস্তা, প্রেস ক্লাব সভাপতি ও দৈনিক আমার দেশ কিশোরগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি আবু হাসান শেখ, দি রেড জুলাইয়ের কিশোরগঞ্জ কমিটির আহবায়ক মোতালেব হোসেন, জুলাই অভ্যূথ্থানে আহত সিয়াম হোসেন ও জয়িতা মরিয়ম বেগম।
ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা জুলাই পুনর্জাগরণ সমাজ গঠনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার ভেড়ামারা উপজেলা পরিষদের কনফারেন্স রুমে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের আয়োজনে জুলাই পূনঃ জাগরণ সমাজ গঠনে শপথ গ্রহন অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম।
উপস্থিত ছিলেন ভেড়ামারা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আনোয়ার হোসাইন, উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক বিশ্বাস, উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা মোছা. জান্নাতুল ফেরদৌস মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা, উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম, সহকারী প্রকৌশলী (জনস্বাস্থ্য) মো. আব্দুর রাজ্জাক, উপজেলা বিআরডিবি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. জহির উদ্দিন, জাতীয় মহিলা সংস্থার প্রতিনিধি মো. আসমান আলীসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত সমাজসেবা অধিদপ্তরের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় বিভিন্ন সুবিধাভোগী, মহিলা ও শিশুবিষয়ক অধিদপ্তরের সুবিধাভোগী, জুলাই কন্যা, জুলাই গণঅভ্যুত্থান অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মোছাদ্দেক হোসাইন, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা কার্যালয়ের উদ্যোগে এবং উপজেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের সহযোগিতায় জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে লাখো কন্ঠে শপথ পাঠ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল
শনিবার উপজেলা পরিষদ হল রুমে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম। উপজেলা মহিলাবিষয়ক অফিসের কর্মকর্তা দিদারুল আলম এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রিদওয়ানুল করিম। বক্তব্য রাখেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুন লায়েল, লোহাগাড়া প্রেসক্লাব সভাপতি এম সাইফুল্লাহ চৌধুরী ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার মো: জামাল উদ্দিন প্রমুখ।
মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর : ফরিদপুরে জুলাই পুনর্জাগরনে সমাজ গঠনে লাখো কন্ঠে শপথ পাঠ যথাযোগ্য মর্যাদায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন, জেলা সমাজসেবা কার্যালয় এবং মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে এ অনুষ্ঠানের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমাজ সেবা ও মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুর্শিদ। জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক এ এস এম আলী আহসান এর সভাপতিত্বে এবং শহর সমাজ সেবা অফিসার এস এম সুজাউদ্দিন রাশেদের সঞ্চালনায় অনুষ্টানে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক)মো: সোহরাব হোসেন, ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল, ফরিদপুরের সিভিল সার্জন মাহমুদুল হাসান , উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান, জেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক মাশউদা হোসেন, প্রবীণ সমাজসেবক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক এম এ সামাদ, অধ্যাপক শেখ আব্দুস সামাদ , মহানগর বিএনপির আহবায়ক এএফএম কাইয়ুম জঙ্গি, জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় সূরা সদস্য অধ্যাপক আব্দুত তাওয়াব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক কাজী রিয়াজ, এস ডি সির নির্বাহী পরিচালক কাজী আশরাফুল হাসান, এ সময় বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আজ ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসে ৭ নভেম্বর একটি অনন্য এবং ঐতিহাসিক দিন। এদিনটি জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস নামে পরিচিত- যেদিন দেশের সেনা সদস্য এবং সাধারণ জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে এক ঐতিহাসিক আন্দোলন গড়ে তোলে, যার ফলশ্রুতিতে শহীদ মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বন্দিদশা থেকে মুক্তি পান এবং জাতীয় জীবনে এক নতুন রাজনৈতিক ধারার সূচনা ঘটে।
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের ঘটনাকে কেবল একটি সামরিক অভ্যুত্থান হিসেবে দেখা যায় না; এটি ছিল মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলার এক সমাপ্তি, একটি জাতির পুনর্জাগরণের মুহূর্ত। এই দিনে সেনা ও জনতা মিলে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব, স্বাধীনতার চেতনা ও জাতীয় সংহতির পক্ষে এক অভিন্ন অবস্থান তৈরি করে।
১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার পর জাতির সামনে ছিল এক বিশাল পুনর্গঠনের চ্যালেঞ্জ। কিন্তু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্নির্মাণের পথে নানা অন্তর্দ্বন্দ্ব, রাজনৈতিক অনৈক্য ও প্রশাসনিক অদক্ষতা পরিস্থিতিকে জটিল করে তোলে। ১৯৭৪ সালের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ, একদলীয় ‘বাকশাল’ শাসনব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতার সীমাবদ্ধতা-এসব মিলে রাষ্ট্রব্যবস্থা ক্রমেই অসন্তোষের দিকে গড়ায়।
যা পরবর্তীতে গভীর রাজনৈতিক সংকট তৈরি করে। এই পরিস্থিতিতেই আসে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর। ইতিহাসে যেটি পরিচিত ‘সিপাহী-জনতার বিপ্লব’ বা ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ নামে।
এই দিনটি কেবল ইতিহাসে সীমাবদ্ধ নয়; এটি আজও জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
দিনটি উপলক্ষে ১০ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি। ৭ নভেম্বর মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ওইদিন সকাল ৬টায় নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে দলীয় কার্যালয়গুলোতে দলীয় প্রতাকা উত্তোলন করা হবে।
এরপর সকাল ১০টায় দলের জাতীয় নেতৃবৃন্দসহ সব পর্যায়ের নেতাকর্মী মহান স্বাধীনতার ঘোষক সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান, বীর উত্তম এর মাজারে পুস্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন। বেলা ৩টায় নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে র্যালি অনুষ্ঠিত হবে। ওইদিনই সারাদেশে বিএনপির উদ্যোগে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে র্যালি অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন স্ব স্ব উদ্যোগে আলোচনা সভা ও অন্যান্য কর্মসূচি পালন করবে।
এদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ পালন করবে। দলটির কেন্দ্রীয় মিডিয়া বিভাগের সদস্য মুজিবুল আলম গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানান।
জামায়াত জানায়, দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াত ইসলামী। এ উপলক্ষে সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার সকল মহানগরী ও জেলা শাখাকে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নয়— এমন নির্বাচনে সহযোগিতা করা থেকে সরে আসতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। দলটির এই চিঠিতে কোনো কাজ হবে না বলে মনে করছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এমন অভিমত ব্যক্ত করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
তৌহিদ হোসেন বলেন, জাতিসংঘে পাঠানো আওয়ামী লীগের চিঠিতে কোনো কাজ হবে না।
গত শনিবার ঢাকায় জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বরাবর পাঠানো চিঠিতে বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নয়— এমন নির্বাচনে সহযোগিতা করা থেকে সরে আসতে আহ্বান জানায় আওয়ামী লীগ। দলের পক্ষে চিঠিটি পাঠান সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
চিঠিতে বলা হয়, অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা জাতিসংঘ এবং ইউএনডিপির প্রতি নির্বাচনী সহযোগিতা স্থগিত, সব রাজনৈতিক পক্ষের সঙ্গে জাতীয় সংলাপ ও সমঝোতাকে উৎসাহিত করা এবং যেকোনো নির্বাচনী সম্পৃক্ততার মূলভিত্তি হিসেবে মানবাধিকার ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। আর বাংলাদেশে ইউএনডিপির নির্বাচনী সহযোগিতা, ব্যালট প্রজেক্ট এবং আসন্ন নির্বাচনের বিষয়ে সংস্থার প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তার বিষয়ে আমরা গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করছি, যে নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলকও নয়, বিশ্বাসযোগ্যও নয়।
এ ধরনের সম্পৃক্ততা আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘের মূলনীতি এবং অবাধ, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রসারের ক্ষেত্রে ইউএনডিপির ম্যান্ডেট লঙ্ঘনের ঝুঁকি তৈরি করে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
অ্যাটর্নি জেনারেলের পদে থেকেও নির্বাচন করা যায় এবং সংবিধানে কোনো বাধা নেই বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেছেন, অ্যাটর্নি জেনারেল সরকারি কোনো কর্মচারী নন। তিনি সংবিধানের ৬৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রের আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বৃহস্পতিবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি।
মো. আসাদুজ্জামান আরও বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল রাষ্ট্রপক্ষের। অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব হলো—যদি তিনি মনে করেন কোনো ঘটনায় সরকারের কোনো পদক্ষেপ সমর্থনযোগ্য নয় বা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর, তাহলে সেটার বিরোধিতা করা।
তিনি দাবি করেন, তার নির্বাচন করা নিয়ে গত বুধবার সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি সঠিকভাবে প্রচার হয়নি।
এর আগে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানির সময় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় সমাজকে কুঠারাঘাত করেছে। এর ফলে আমাদের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস হয়েছে। সমাজ ব্যবস্থাকে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, মৃত ব্যক্তিকে ভোটের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার পথে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরার রায় একটি মাইলফলক হবে। জনগণ যেভাবে চাইবেন সেভাবেই আইন হবে।
গত বুধবার অ্যাটর্নি জেনারেলের পদ থেকে পদত্যাগ করে জাতীয় নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন মো. আসাদুজ্জামান। তিনি জানিয়েছিলেন, ঝিনাইদহ-১ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছেন তিনি। তবে এর একদিন পর পদে থেকেই নির্বাচন করার ইঙ্গিত দিলেন তিনি।
সরকার ‘জাতীয় লজিস্টিকস নীতি-২০২৫’ অনুমোদন দিয়েছে। নীতিমালাটি দেশের পরিবহন, সরবরাহ ও বাণিজ্য ব্যবস্থাকে আধুনিক, দক্ষ ও টেকসই করার লক্ষ্যে প্রণীত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের ৪৭তম বৈঠকে এই নীতি অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, একটা নীতিমালা থাকলে সরকার তার কাজগুলো ঠিকভাবে করতে পারে, একটা নির্দেশনা পায়। আজকের নীতিমালাটি লজিস্টিক খাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক-নির্দেশনা।
তিনি আরো বলেন, এই নীতিমালার ফলে বাংলাদেশের বেসরকারি ও সরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়বে। বিদেশি বিনিয়োগ আসবে এবং বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের তুলনায় আরো বৃদ্ধি পাবে।
প্রেস সচিব জানান, বর্তমানে দেশের প্রধান নৌবন্দর চট্টগ্রাম বন্দরে কোনো কোনো সময় পণ্য রপ্তানিতে ১১ দিন পর্যন্ত সময় লাগে। এই লজিস্টিকস নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে পারলে পণ্য পরিবহন ও প্রাপ্যতা অনেক দ্রুত হবে এবং রপ্তানি কার্যক্রম আরো সহজ হবে।
তিনি আরো বলেন, ২০২৪ সালে এ ধরনের একটি নীতি করা হয়েছিল। পরে তা পুনর্মূল্যায়ন করে দেখা যায়, সেটি প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। পরবর্তীতে জনপ্রশাসন সচিব এহসানুল হকের নেতৃত্বে একটি কমিটি নতুনভাবে খসড়া প্রণয়ন করে।
নীতিমালার মূল লক্ষ্য সম্পর্কে প্রেস সচিব বলেন, ২০৫০ সালের মধ্যে লজিস্টিক খাতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে রেলওয়ে ও নৌপরিবহন খাতে। দেশের প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার নৌপথ রয়েছে, যার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।
তিনি জানান, নীতিমালায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) মডেলে বিনিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছে। এর মাধ্যমে লজিস্টিক খাতকে একটি ডিজিটাল ইকোসিস্টেমে আনা হবে, যেখানে শুল্ক, ফি ও কাগজপত্রসহ সব কার্যক্রম তাৎক্ষণিকভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, এই নীতির মূল উদ্দেশ্য হলো—আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হওয়ার পর বাংলাদেশ বিশ্ববাজারে বর্তমানে যে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পাচ্ছে, তা ধীরে ধীরে কমে আসবে। এতে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের দাম বাড়বে। এই অতিরিক্ত ব্যয় সামাল দেওয়া ও অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রপ্তানি খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নীতিটি সহায়তা করবে। সূত্র: বাসস
গত বছরের চেয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু উভয় হারই কম হলেও সম্প্রতি ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে জরুরি সভা আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নগর ভবনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোঃ মাহমুদুল হাসান এনডিসি এর সভাপতিত্বে ডিএসসিসির স্বাস্থ্য বিভাগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে এ্যডাল্টিসাইডিং এবং লার্ভিসাইডিংয়ে ব্যবহৃত ঔষধের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিতকরণে স্থানীয় নাগরিকদের অন্তর্ভুক্তপূর্বক ওয়ার্ডভিত্তিক তদারকি টিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। ওয়ার্ড ভিত্তিক এই টিম স্থানীয়ভাবে ঔষধ প্রয়োগের সময়সূচি প্রণয়ন ও নিশ্চিতকরণে কাজ করবে। এছাড়া, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও নাগরিক সম্পৃক্ততার মাধ্যমে এলাকা ভিত্তিক এডিস মশার প্রজনন স্থল ধ্বংসে কাজ করবে।
সভায়, ডেঙ্গু আক্রান্তের হার বিবেচনায় এলাকাভিত্তিক হটস্পট নির্ধারণ ও হটস্পট ভিত্তিক চিরুনি অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়।
সভাপতির বক্তব্যে প্রশাসক বলেন, "এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব যেমন সিটি কর্পোরেশনের তেমন সম্মানিত নাগরিকদেরও কিছু দায়িত্ব রয়েছে।" মাঠ পর্যায়ে হঠাৎ ও দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, "মশক নিয়ন্ত্রণে সিটি কর্পোরেশন কর্মীদের যথাযথ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নাগরিকদের সচেতনতা জোরদার করা প্রয়োজন।"
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঔষধ প্রয়োগ ও পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে ডিএসসিসি কাজ করেছে উল্লেখ করে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জহিরুল ইসলাম বলেন, "সংবাদপত্রে গণবিজ্ঞপ্তি, টেলিভিশনে টিভিসি প্রচার, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারসহ মসজিদ-মন্দিরে ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিশেষ বার্তা প্রচার করা হচ্ছে।" এছাড়া, এলাকাভিত্তিক বিশেষ পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন অভিযান নতুন উদ্যমে শুরু হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সভায় ডেঙ্গু সন্দেহ হলে ডিএসসিসির তিনটি হাসপাতাল, যথাঃ ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা মহানগর শিশু হাসপাতাল ও নাজিরা বাজার মাতৃসদনে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষার আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া ডিএসসিসি এলাকার ডেঙ্গু সম্পর্কিত তথ্য ০১৭০৯-৯০০৮৮৮ নম্বরে জানানোর অনুরোধ করা হয়।
সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ আজ (৬ নভেম্বর, ২০২৫) মতলব উত্তর (চাঁদপুর) এবং গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) উপজেলার সংযোগস্থলে মেঘনা-ধনাগোদা নদীর উপর সেতু নির্মাণ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় সেতু বিভাগ, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, প্রকল্প পরিচালক, প্রকল্পের কর্মকর্তাগণ এবং উভয় প্রান্তের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সকাল ১০.৩০ টায় সচিব মহোদয় বর্ণিত সেতুর মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলাস্থ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের (N-1) এর ভবেরচর হতে শুরু করে চাঁদপুরের মতলব উত্তর পর্যন্ত প্রকল্পের অ্যালাইনমেন্ট এবং নদীশাসন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এসময় প্রকল্পের প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ (যেমন: নদীর গভীরতা, স্রোতের গতি এবং ভূতাত্ত্বিক অবস্থা) সঠিকতা চিহ্নিত করার জন্য গুরুত্ব আরোপ করেন।
পরিদর্শনকালে সেতু সচিব বলেন, বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য বৈষম্যহীন, ব্যয় সাশ্রয়ী কানেক্টিভিটি গড়ে তোলা। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবেই এই সেতুটি নির্মাণ। এটি শুধু একটি সেতু নয়, এটি চাঁদপুরের অর্থনৈতিক প্রবেশদ্বার। বর্তমানে সড়কপথে ঢাকার সাথে এই অঞ্চলের যে দীর্ঘ এবং সময় সাপেক্ষ যোগাযোগ ব্যবস্থা, এই সেতুর মাধ্যমে তা হ্রাস পাবে এবং বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপিত হবে। বিশেষ করে, চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর অঞ্চলের মৎস্য ও কৃষিজ পণ্যগুলো দ্রুত রাজধানীতে পৌঁছানো সম্ভব হবে, যা প্রান্তিক চাষি ও ব্যবসায়ীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করবে।
তিনি আরও বলেন, সেতুটি নির্মিত হলে এটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর চাপ কমাবে এবং এই অঞ্চলকে সরাসরি জাতীয় অর্থনীতির মূল স্রোতে নিয়ে আসবে। সচিব মহোদয় আশ্বাস দেন, জনগণের মতামতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিশ্বমানের প্রকৌশল ও পরিবেশবান্ধব নকশা অনুসরণ করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে প্রকল্পের ডিটেইল্ড ডিজাইন চূড়ান্ত করা হয়েছে, ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এসময় তিনি মতলব উত্তর অংশের বিদ্যমান সড়কের প্রয়োজনীয় সম্প্রসারণের জন্য সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এর নির্বাহী প্রকৌশলীদের নির্দেশনা প্রদান করেন।
পরিদর্শন শেষে সচিব, সেতু বিভাগ, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক, মতলব উত্তর এর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও স্থানীয় স্টেকহোল্ডারদের সাথে এ প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ে আলোচনা করেন এবং উপস্থিত সকলকে এই জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়নে সেতু কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানান। উল্লেখ্য, এই সেতুটি হবে ১.৮৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং চার লেন বিশিষ্ট ক্যাবল স্টেইড সেতু, যার স্প্যানের দৈর্ঘ্য বাংলাদেশে অন্যতম বৃহৎ হবে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়। সিসি ক্যামেরা রয়েছে এমন ভোটকেন্দ্রগুলোর একটি বিস্তারিত তালিকা প্রস্তুত করে দ্রুত পাঠাতে জেলা নির্বাচন অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
বুধবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. নাসির উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
নির্বাচন কমিশন থেকে পাঠানো চিঠিতে সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার/জেলা নির্বাচন অফিসারদের আগামী ১২ নভেম্বরের মধ্যে এই তালিকা সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে 'নির্বাচন সহায়তা-১ শাখায় প্রেরণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তালিকাটির হার্ডকপি এবং নিকস ফন্টে সফটকপি উভয়ই নির্ধারিত ছক মোতাবেক জমা দিতে হবে।
আসন্ন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও ত্রুটিমুক্ত রাখতে এবং যেকোনো ধরনের অনিয়ম তাৎক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য সিসি ক্যামেরার ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসি মনে করছে, এই তালিকা হাতে পেলে সিসি ক্যামেরার সার্বিক চিত্র সম্পর্কে তারা ওয়াকিবহাল থাকবে এবং নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় নজরদারি আরও জোরদার করা সম্ভব হবে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোলা-৩ (তজুমদ্দিন-লালমোহন) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে পুনরায় মনোনয়ন পাওয়ায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তজুমদ্দিন উপজেলার মলংচড়া ইউনিয়ন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর বনানীতে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদের বাসভবনে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। এতে মলংচড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নূর হাসান তন্ময় এর নেতৃত্বে কয়েক শতাধিক নেতা-কর্মী অংশ নেন।
এসময় সাধারণ সম্পাদক তন্ময় শিকদার বলেন, “ভোলার চারটি সংসদীয় আসনে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও ভোলা-৩ আসনে আমাদের মনে একটিই নাম—আমাদের প্রিয় নেতা মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমদ। তিনি গত ১৭ বছর ধরে আমাদের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের পিতৃস্নেহে আগলে রেখেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “ভোলা-৩ আসন অতীতেও আমাদের নেতার দখলে ছিলো, ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতেও থাকবে। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা নেতাকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করে সংসদে পাঠাবো।”
শেষে তিনি মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদকে পুনরায় মনোনয়ন দেওয়ার জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের টানা নবম দিনের শুনানি শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকাল ৯টা ৫০ মিনিট থেকে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
এর আগে গতকাল ৪ নভেম্বর, ২ নভেম্বর এবং ২৯, ২৮, ২৩ ও ২২ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের টানা শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
গত ২১ অক্টোবর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের শুনানি শুরু হয়।
এর আগে গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়।
এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম. সলিমউল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করেন।
এই সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম. সলিমউল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেন।
এ রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে রিট আবেদনকারী পক্ষ আপিল করে। এই আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। অন্য চারজন হলেন তোফায়েল আহমেদ, এম. হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।
আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ১৬ অক্টোবর একটি আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এছাড়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছরের ২৩ অক্টোবর আরেকটি আবেদন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
পরবর্তীতে নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর একটি আবেদন করেন।
সরকার আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের রূপরেখা দিয়েছে। নির্বাচন হলে দেশের পরিস্থিতি আরও স্থিতিশীল হবে এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আরও স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বর্তমান সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনীর সিনিয়র নেতৃত্বের প্রতি সেনা সদস্যদের শতভাগ আনুগত্য রয়েছে। যেকোনো সময়ের তুলনায় সেনাবাহিনী আরও ঐক্যবদ্ধ বলে জানিয়েছে সেনা সদর।
বুধবার সেনা সদর দপ্তর আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি আর্টডক) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান এসব তথ্য জানান। ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেস আলফাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। সংবাদ সম্মেলনে আরো বিভিন্ন প্রশ্ন নিয়ে উত্তর দেন সেনা সদরের পরিচালক (মিলিটারি অপারেশন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল দেওয়ান মোহাম্মদ মনজুর হোসেন ও পরিচালক (এজি শাখা) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুস্তাফিজুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন শেষে সেনানিবাসের ফিরে যাওয়ার আশা জানিয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান বলেন, যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আমরা গত ১৫ মাস দায়িত্ব পালন করেছি, তা একেবারেই সহজ ছিল না। আমরাও চাই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হোক এবং আমরা সেনানিবাসে ফিরে যাই।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশের জনগণের মতো সেনাবাহিনীও চায় সরকারের রূপরেখা অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। সে রূপরেখার মধ্যে সময়সীমাও দেওয়া আছে। আমরা আশা করি নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরও ভালো হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আরও স্বাভাবিক হবে এবং সেনাবাহিনী তখন সেনানিবাসে ফিরে যেতে পারবে। আমরা সেদিকে তাকিয়ে আছি।
সরকার নির্বাচনের যে রূপরেখা দিয়েছে সে অনুযায়ী নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে সেনা সদস্যদের। তবে দীর্ঘ সময় সেনানিবাসের বাইরে থাকার কারণে সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এই লেফটেন্যান্ট জেনারেল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেনাবাহিনীকে ঘিরে প্রচারিত বিভিন্ন গুজব প্রসঙ্গে লে. জেনারেল মাইনুর রহমান বলেন, গত ১৫ মাস সেনাবাহিনী অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করেছে। এ সময় কিছু স্বার্থান্বেষী চক্র সেনাবাহিনীর নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করার উদ্দেশে মিথ্যা ও সাজানো অপপ্রচার চালিয়েছে।
তিনি বলেন, আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে চাই, সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্য সেনাবাহিনীর প্রধান ও সিনিয়র লিডারশিপের প্রতি শতভাগ অনুগত। যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন সেনাবাহিনী আরও ঐক্যবদ্ধ, শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং ভ্রাতৃত্ববোধে দৃঢ়।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনসের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল দেওয়ান মোহাম্মদ মনজুর হোসেন কথা বলেন। সাম্প্রতিক সময়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর কার্যক্রম তুলে ধরেন।
বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর কিছু জেলায় সংঘর্ষ হয়েছে। এ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, যখনই আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয় আসে তখনই নজরদারি করা হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অন্যসব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগীতা করে।
নির্বাচনকালীন সরকার ও নির্বাচন পেছানোর কথা শোনা যাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ মনজুর হোসেন বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য সরকারের যে ইচ্ছা এবং গাইডলাইন দেওয়া আছে এবং নির্বাচন কমিশন যে পরিপত্র প্রকাশ করবে সেই অনুযায়ী বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করবে।
এসময় আসন্ন নির্বাচনকে নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মনজুর হোসেন বলেন, নির্বাচনকালীন সময়ে আমরা ৯০ হাজার থেকে এক লক্ষ সদস্য মাঠ পর্যায়ে মোতায়েন করব। যেটা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। আমাদের পরিকল্পনায় আছে জেলা পর্যায়ে, উপজেলা পর্যায়ে এমনকি আসনভিত্তিক ক্যাম্প স্থাপন করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করব। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হিসেবে সম্পূর্ণ করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন সবকিছু করার জন্য আমরা সদা প্রস্তুত থাকব।
গ্রেপ্তার সেনা কর্মকর্তাদের চাকরি থাকা, না থাকা নিয়ে জটিলতা কাটেনি। আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম-খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের তিন মামলায় কারাগারে থাকা ১৫ সেনা কর্মকর্তার চাকরি এখনো আছে কি না, তা নিয়ে জটিলতা কাটেনি। সেনাসদর জানিয়েছে, এটা একটা আইনগত প্রক্রিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে সেনাসদরের পিএস পরিদপ্তরের এজি শাখার পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মুস্তাফিজুর রহমানের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হয়।
এর আগে সেনাবাহিনীর তরফে বলা হযেছিল আইসিটি আইনের সঙ্গে সেনা আইনের যে অসামঞ্জস্যগুলো রয়েছে, সেগুলো ঘোচানোর বিষয়ে সরকারের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করছে। সেই প্রক্রিয়া কতদূর এগোলো জানতে চাইলে ব্রিগেডিয়ার মুস্তাফিজুর বলেন, এটি একটি আইনি প্রক্রিয়াগত বিষয়। আপনারা জানেন যে আর্মি অ্যাক্ট ১৯৫২ এবং আইসিটি অ্যাক্ট ১৯৭২ দুটোই স্পেশাল অ্যাক্ট। এই দুটো আইনকে আমরা কখনোই মুখোমুখি দাঁড় করাবো না। আইসিটি অ্যাক্টেই বর্তমানে মামলাটি পরিচালিত হচ্ছে, আমরা সরকারের সাথে এনগেজমেন্টে আছি। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দেশের যে প্রচলিত আইনগুলো রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে যে আইনেই বিচার হবে আমরা চাইব, সরকার একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিচারটি সম্পন্ন করবে।
গ্রেপ্তার সেনা কর্মকর্তাদের অধিকার বিষয়ে সেনা সদর ওয়াকিবহাল আছে তুলে ধরে এই কর্মকর্তা বলেন, সেই সাথে আমি এটাও বলতে চাই, যারা গুম-খুনের শিকার হয়েছেন তাদের পরিবারের প্রতি আমরা সহানুভুতিশীল। এবং একই সাথে আমাদের যে অফিসাররা আছে তাদের যে রাইটস আছে, রাইটস অ্যান্ড প্রিভিলেইজেস, সেটার সম্পর্কেও আমরা ওয়াকিবহাল আছি এবং আমরা সেটার ক্ষেত্রে সরকারের সাথে যোগাযোগ রাখছি।
সরকার যদি ‘আর্মি অ্যাক্টের’অধীনে এই বিচার করতে চায় সেজন্যও সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি চলছে তুলে ধরে ব্রিগেডিয়ার মুস্তাফিজুর বলেন, আমরা দুটো আইনকে সামনা-সামনি দাঁড় করাবো না। সরকার যেটাকে ভালো মনে করে, সেভাবেই যেন এগিয়ে যায়, আমরা প্রস্তুত আছি। যদি এটা আর্মি অ্যাক্টের অধীনে বিচার করতে বলে সেটা আমরা করতে পারব। সেভাবে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।
কারাগারে থাকা এই কর্মকর্তারা এখন চাকরি বহাল আছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটিও আরেকটি আইনি প্রক্রিয়াগত বিষয়। আইসিটি অ্যাক্টের যে থার্ড অ্যামেন্ডমেন্ট, ৬ অক্টোবর যেটা প্রকাশিত হয়েছিল সেখানে ডিসকোয়ালিফিকিশন টু হ্যাভ আ পাবলিক অফিস, এটার বিষয়ে ইন্টারপ্রিটেশনের প্রবলেম আছে। সেটা হচ্ছে যে এটাকে বিভিন্নভাবে ইন্টারপ্রিট করা যেতে পারে। সেটার বিষয়ে সরকারের সাথে আমাদের যোগাযোগ জারি আছে। আমরা এটার বিষয়ে একটা স্পষ্ট নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি।
তিনি বলেন, আমরা চাইব যে এই বিষয়টা আরও পরিষ্কার হতে। যদি এটাকে ডিসকোয়ালিফিকেশন বলতে টার্মিনেশন বোঝায় সেটা কীভাবে করে টার্মিনেশন হবে সেটাও সেখানে পরিষ্কার করে বলা নেই। সেনা অফিসারদের ক্ষেত্রে পাবলিক অফিস হোল্ড করছে সেটা কী বলা যাবে কি না সেটার ব্যাপারেও ক্ল্যারিফিকেশনের সুযোগ রয়েছে। সরকারের সাথে আমাদের এনগেজমেন্ট জারি রয়েছে। আমরা আশা করছি একটি সুষ্ঠু সমাধানের পথে আমরা এগোব, একটা ভালো রেজাল্ট পাবো ইনশাল্লাহ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই তিন মামলায় ২৮ আসামির বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের দেওয়া আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে গেল ৮ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এরপর ১১ অক্টোবর সেনা সদরের এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় তিন মামলার ২৮ আসামির মধ্যে চাকরিতে থাকা এবং এলপিআরে যাওয়া ১৫ জনকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পরে তাদের রাখার জন্য ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে অস্থায়ী ‘কারাগার’ ঘোষণা করে সরকার।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম-খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের তিন মামলায় হেফাজতে থাকা ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে গত ২২ অক্টোবর কারাগারে পাঠায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
দেশের মোবাইল ফোন বাজারের প্রায় ৬০ শতাংশই অবৈধভাবে আমদানি হওয়ায় সরকারের বছরে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে বলে জানিয়েছে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওনার্স অব বাংলাদেশ (এমআইওবি)।
বুধবার রাজধানীর রাওয়া ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
সংগঠনটির মতে, অবৈধ মোবাইল ফোন বেচাকেনায় দেশীয় নির্মাতারা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি রাষ্ট্রও হারাচ্ছে বিপুল রাজস্ব। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী ১৬ ডিসেম্বর চালু হতে যাওয়া ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট রেজিস্টার (এনইআইআর) কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে এমআইওবি সভাপতি জাকারিয়া শহীদ বলেন, বর্তমানে বাজারে থাকা মোবাইল ফোনের প্রায় ৬০ শতাংশই অবৈধভাবে আমদানি করা। এতে সরকারের বছরে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে। অথচ দেশে উৎপাদন সরঞ্জামের দাম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেলেও তারা এখনো হ্যান্ডসেটের দাম বাড়াননি বলেও দাবি করেন তিনি। সরকারের এই যুগান্তকারী উদ্যোগের (এনআইআর বাস্তবায়ন) বিরুদ্ধে একটি মহল বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে এনইআইআর নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। লাগেজ পার্টিরাই এ ধরনের প্রচারণা চালাচ্ছে।
জাকারিয়া শাহীদ আশ্বাস দিয়ে বলেন, এনইআইআর চালু হলে মোবাইল ফোনের দাম এক টাকাও বাড়ানো হবে না, বরং সরকারের রাজস্ব আয় হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাবে।
এমআইওবির সহ-সভাপতি রেদওয়ানুল হক বলেন, একটি ব্র্যান্ড বাদে বিশ্বের প্রায় সব শীর্ষ ব্র্যান্ড এখন দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদন করছে। দেশের ৯০ শতাংশ চাহিদা দেশীয় কারখানায় পূরণ হচ্ছে। আমাদের শতভাগ সক্ষমতা আছে, কিন্তু বর্তমানে ৬০ শতাংশ সক্ষমতা ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই এনইআইআর যেন কখনও বন্ধ না হয়।
স্মার্ট টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অনার ব্র্যান্ডের বাংলাদেশি উৎপাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, আইন মেনে দেশে মোবাইলফোন ব্যবসা করা এখন খুব সহজ। অনেকেই এই খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী। মোবাইল এখন আমাদের ব্রেড অ্যান্ড বাটার। দেশে উৎপাদন শুরু হওয়ায় বহু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। অথচ আইফোনের বাজার সম্পূর্ণটাই অবৈধ আমদানিনির্ভর।
সংবাদ সম্মেলনে সঞ্চালনা করেন এমআইওবির প্রধান নির্বাহী মনিরুল ইসলাম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মোবাইলফোন ডিস্ট্রিবিউশন অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল কপুরিয়া এবং মোবাইল কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, স্যামসাং বাংলাদেশের অনুমোদিত পরিবেশক এক্সেল টেলিকমের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সাইফুদ্দিন, ভিভো বাংলাদেশের প্রতিনিধি ইমাম উদ্দীন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে লেখা হয়েছিল বলে উল্লেখ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
বুধবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন থেকে সৃষ্ট আপিলের শুনানিতে তিনি এ কথা বলেন।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে লেখা হয়েছিল একটি বিশেষ পার্টিকে (রাজনৈতিক দলকে) সুবিধা দেয়ার জন্য। আর পরবর্তীতে কোনোরকম রিভিউ না করে আদালতে ঘোষিত রায়টি সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক পরিবর্তন করেছেন। যেটা দণ্ডবিধির ২১৯ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, আমরা গণতন্ত্র চাই, গণতন্ত্রের নামে কোনো লেবাস চাই না। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের ৩ বছর পর প্রথম আমাদের গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়।
এদিকে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বিভাগ বেঞ্চে ৮ম দিনের শুনানি শেষে আদালত আজ বৃহস্পতিবার আবার রাষ্ট্র পক্ষের শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
এর আগে বিএনপির পক্ষে এই আপিলের শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। জামায়াতের পক্ষে এই আপিলের শুনানি শেষ করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তার আগে পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিকের পক্ষে আপিল শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী শরীফ ভূইয়া।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনে করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়।
এরপর ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক ও এক ব্যক্তি আবেদন করেন। সে রিভিউ আবেদন থেকে আপিল শুনানির জন্য গত ২৭ আগস্ট লিভ মঞ্জুর করে ২১ অক্টোবর আপিল শুনানির দিন ধার্য করেন।
এদিকে, গত ১৭ ডিসেম্বর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে ৩৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি জননিরাপত্তার স্বার্থে বিমান বাহিনীর প্রাথমিক প্রশিক্ষণ ঢাকার বাইরে পরিচালনার সুপারিশ করেছে।
বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে। কমিটির প্রধান সুপারিশ হলো- ভবিষ্যতে বিমান বাহিনীর ইনিশিয়াল ট্রেনিং রাজধানীর বাইরে সরিয়ে নেওয়া, যাতে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এমন দুর্ঘটনা পুনরায় না ঘটে।’
প্রেস সচিব জানান, গত ২১ জুলাই উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে পাইলটসহ ৩৬ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে ২৮ জন শিক্ষার্থী, তিনজন শিক্ষক, তিনজন অভিভাবক ও একজন কর্মচারী। দুর্ঘটনার পর ২৯ জুলাই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, যার নেতৃত্ব দেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল কামরুল হাসান।
কমিটি প্রায় ১৫০ জন প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগী ও বিশেষজ্ঞের সাক্ষ্য নিয়ে ১৬৮টি তথ্য উদঘাটন করেছে এবং ৩৩টি সুপারিশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রশিক্ষণ চলাকালে পাইলটের উড্ডয়নের ত্রুটি ও নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম বলেন, ‘তদন্তে উঠে এসেছে, স্কুল ভবনটি রাজউকের অনুমোদিত বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি)-এর আওতায় নির্মিত হয়নি। ভবনে মাত্র একটি সিঁড়ি ছিল, যেখানে ন্যূনতম তিনটি সিঁড়ি থাকা উচিত ছিল। পর্যাপ্ত সিঁড়ি থাকলে হতাহতের সংখ্যা অনেক কম হতে পারত।’
তিনি আরও জানান, প্রধান উপদেষ্টা বরিশাল ও বগুড়ার রানওয়ে সম্প্রসারণের প্রস্তাব এবং রাজউকের সম্প্রসারিত এলাকায়- বিশেষ করে সাভার, কাঞ্চন ও তারাবো পৌরসভায়- বিল্ডিং অনুমোদনের ক্ষেত্রে রাজউকের নিয়ম কঠোরভাবে অনুসরণ করার নির্দেশ দেন।