ইউসুফ হোসেন অনিক,ভোলা: রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত অফিস সহকারী মাসুমা বেগমকে (৩৮) ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড়মানিকা ইউনিয়নের কুড়ালিয়া গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে।
রবিবার (২৬ জুলাই) সকাল ৯টায় বোরহানউদ্দিন উপজেলার কুড়ালিয়া গ্রামে জানাযা নামাজ শেষে রুন্দি বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। নিহত মাসুমা ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কুড়ালিয়া গ্রামের সেলিম রুন্দির স্ত্রী। তিনি মাইলস্টোন স্কুলের অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের দিন তিনি বাচ্চাদের উদ্ধার করতে যেয়ে আগুনে দগ্ধ হন।
এরআগে, গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় বার্ন ও সার্জারী ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মারা যান তিনি। গতকাল মধ্যরাতে মাসুমা বেগমের মরদেহ বহনকারী গাড়িটি কুড়ালিয়া গ্রামে আসে। মরদেহ বহনকারী গাড়িটি গ্রামে আসলে স্বজনদের আর্তনাদে পুরো এলাকার আকাশ-বাতাস ভাড়ী হয়ে ওঠে। মাসুমার মৃত্যুর খবরে পুরো গ্রামে নেমে আসে শোকের ছায়া।
মাসুমার স্বামী সেলিম সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন। সেলিম জানান, দুর্ঘটনার দিন মাসুমা মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে কর্মরত ছিলেন। আমরা খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে গিয়ে জানতে পারি আগুন দগ্ধ হয়ে তার শরীরে ৯০ শতাংশ পুরে গিয়েছে। এরপর টানা ৫ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে গতকাল দুটি সন্তান ও আমাদের রেখে চলে গেছেন। এখন সবই স্মৃতি।
তিনি আরও জানান, ঘটনার দিন স্কুলটি ছুটি হওয়ার পর মাসুমা বাচ্চাদের নিয়ে বের হচ্ছিলেন। এমন সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে। ইচ্ছে করলে সে বাহিরে এসে নিজের জীবন রক্ষা করতে পারতেন। কিন্তু আমাদেরও বাচ্চা আছে সেই চিন্তা থেকে অন্য বাচ্চাদের বাঁচাতে গিয়ে মাসুমা আগুনে দগ্ধ হন।
এদিন সকালের বৃষ্টি উপেক্ষা করে বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান-উজ্জামান সহ স্থানীয় রাজনৈতিক, সামাজিক ও সকল ধর্মপ্রান মুসল্লিরা মাসুমার জানাযা নামাজে অংশগ্রহণ করেন।
মাসুমার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভোলা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো: হাফিজ ইব্রাহিম। এসময় তিনি মাসুমার পরিবারের পাশে থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন।
গত ৬ মাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে বিভিন্ন দেশের ১৯ হাজারে বেশি প্রবাসীর ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে কালো তালিকাভুক্ত করে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে কুয়েত। ফেরত পাঠানো প্রবাসীদের মধ্যে নারী-পুরুষ উভয়েই রয়েছেন, যাদের কেউ পুনরায় ভিসা নিয়ে কুয়েতে প্রবেশ করতে পারবেন না।
স্থানীয় গণমাধ্যম আরব টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আবাসন আইন ও শ্রম আইন লঙ্ঘন, পলাতক আসামি, মাদক বেচাকেনা, ভিসা বাণিজ্য, অবৈধ ব্যবসাবাণিজ্য, পতিতাবৃত্তিসহ বিভিন্ন ফৌজদারি মামলায় দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার প্রবাসীদের মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত, ফিলিপাইন, মিসরসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক রয়েছেন।
এর আগে গত রমজান মাসে ভিক্ষাবৃত্তির অভিযোগে ৬০ জন প্রবাসীকে গ্রেপ্তার করে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
দেশের ইতিহাসে প্রথমবার ১ বছরে ৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করেছে সরকার। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এ ঋণ শোধ করা হয়। আসল ও সুদ মিলিয়ে মোট পরিশোধ করা হয়েছে ৪০৮ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ২১ শতাংশ বেশি।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে আসল ও সুদ বাবদ প্রায় ৪.০৮৭ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে। এটি দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ ঋণ পরিশোধের রেকর্ড।
এটি আগের অর্থবছরে (অর্থবছর-২৪) প্রদত্ত পরিশোধের পরিমাণ ৩.৩৭২ বিলিয়ন ডলার থেকে ২১.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইআরডির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অর্থবছর ২০২৪-২৫ এ আসল পরিশোধ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২.৫৯৫ বিলিয়ন ডলার। এটি আগের অর্থবছরের (অর্থবছর-২৪) ২.০২ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় ২৮.৮ শতাংশ বেশি।
সুদ পরিশোধের পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১.৪৯১ বিলিয়ন ডলার, যা অর্থবছর ২০২৩-২৪ এর ১.৩৪৯ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় ১০.৫ শতাংশ বেশি।
ইআরডি কর্মকর্তারা জানান, গত এক দশকে বিভিন্ন বড় প্রকল্প ও বাজেট সহায়তার জন্য নেওয়া বিদেশি ঋণের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়ে যাওয়ায় ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়েছে।
ঋণ পরিশোধ বৃদ্ধি পেলেও ২০২৪-২৫ অর্থবছরে নতুন বৈদেশিক ঋণ চুক্তি ও ঋণ বিতরণ উভয়ই কমেছে।
ইআরডির তথ্যানুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে ৮.৩২৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তি সই করেছে, যা আগের অর্থবছরে (অর্থবছর-২৪) এ ছিল ১০.৭৩৯ বিলিয়ন ডলার।
একই সময়ে ঋণ বিতরণও কমে দাঁড়ায় ৮.৫৬৮ বিলিয়ন ডলারে, আগের অর্থবছরে যা ছিল ১০.২৮৩ বিলিয়ন ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণ প্রতিশ্রুতির তালিকায় শীর্ষে ছিল বিশ্বব্যাংক, যারা ২.৮৪ বিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, এর মধ্যে ১ বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা। এরপর রয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ২ বিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুতি দেয়, যার মধ্যে ১.৫ বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা। জাপান ১.৮৯ বিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, অন্যদিকে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) ৫৬১ মিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
ঋণ বিতরণে শীর্ষে ছিল এডিবি, যারা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২.৫২ বিলিয়ন ডলার বিতরণ করেছে। এরপর বিশ্বব্যাংক ২.০১২ বিলিয়ন ডলার, জাপান ১.৫৮ বিলিয়ন ডলার, রাশিয়া ৬৭৫ মিলিয়ন ডলার, এআইআইবি ৫২৭ মিলিয়ন ডলার, চীন ৪১৫ মিলিয়ন ডলার এবং ভারত ১৮৫ মিলিয়ন ডলার বিতরণ করে।
রাজধানীর আকাশ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকায় জঙ্গি বিমানঘাঁটি রাখা অত্যাবশ্যক বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এয়ার কমডোর শহিদুল ইসলাম। গতকাল সোমবার তেজগাঁওয়ের এভিয়েশন ইউনিভার্সিটির পুরাতন পিএসসি ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
ঢাকা থেকে জঙ্গি বিমান প্রশিক্ষণ ঘাঁটি সরানো হবে না উল্লেখ করে শহিদুল ইসলাম বলেন, যুদ্ধবিমান পরিচালনায় বিশাল জায়গার প্রয়োজন হয়। পাশাপাশি রাজধানীর আকাশ প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করতেও এই ঘাঁটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের বহু দেশের রাজধানীতেও এমন ঘাঁটি রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিমানবাহিনীর জরুরি সমন্বয়ক কেন্দ্রের এয়ার কমডোর মো. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, এই দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারের পাশে থাকবে বিমান বাহিনী। প্রয়োজন অনুযায়ী সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়া হবে।
দুর্ঘটনার সময় পাইলটের সঙ্গে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের যোগাযোগ ছিল কি না জানতে চাইলে মিজানুর রহমান জানান, এ বিষয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি বিষয়টি তদন্ত করে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরবে। তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত পাইলট তৌকিরের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, ঘটনার দিন স্কুলে ৭৩৮ শিক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ছিল ৫৩৮ জন। নিচ তলার গ্রিল নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘পুরো জায়গাটি একসময় নিচু ছিল। পরে বালু ফেলে মাটি উঁচু করা হয়। এর আগেই ভবনের নিচ তলায় গ্রিল বসানো হয়েছিল শিশুদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই।‘
প্রিন্সিপাল আরও জানান, স্কুল আবার কবে খুলবে, তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। তবে যত দ্রুত সম্ভব খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের সন্ত্রাসবিরোধী দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হবে না।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সন্ত্রাসবিরোধী লড়াই আমাদের শীর্ষ অগ্রাধিকার। সন্ত্রাসবাদের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স। সর্বশক্তি দিয়ে আমাদের মাটি থেকে সন্ত্রাসীদের উচ্ছেদ করব।’
আজ সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
৪০ মিনিটব্যাপী ওই বৈঠকে তাঁরা পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করেন, যার মধ্যে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের চলমান শুল্ক আলোচনা অন্তর্ভুক্ত ছিল।
চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জ্যাকবসন বাংলাদেশের সংস্কার প্রচেষ্টা ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রতি তার সরকারের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন, যা আগামী বছরের শুরুতে জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে চূড়ান্ত রূপ পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়া কমিশনের অগ্রগতির কথাও তুলে ধরেন, যা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মূল সংস্কারগুলোর বিষয়ে ঐক্য গঠনে সচেষ্ট।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, কমিশন খুবই ভালো কাজ করছে। অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে সদস্যরা কঠোর পরিশ্রম করছেন।’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে সেপ্টেম্বর মাস থেকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে আজ সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতির বিষয়ে এক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর এই তিন মাসে দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।’
তিনি জানান, নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় জোরদারের ওপরও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
এছাড়া নির্বাচনের সময় ৬০ হাজার সেনাসদস্য মোতায়েন থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে আজ সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নির্বাচনের প্রস্তুতি বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত সরকারি কর্মকমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রণ এবং ন্যায়পাল নিয়োগ প্রক্রিয়ার আলোচনায় অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বিএনপি।
সোমবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২০তম দিনের আলোচনার শুরুতে ওয়াকআউটের সিদ্ধান্ত জানায় দলটি।
বেলা সাড়ে ১১টার পরে বিষয়টি আলোচনার জন্য উপস্থাপন করেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদ জানান, তাদের দল এ আলোচনায় অংশ নেবে না।
এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা উপস্থিত থাকবেন কিন্তু আলোচনায় অংশ নেবেন না। একটি রাজনৈতিক দল আলোচনায় অংশ না নিলে পুরো সংলাপ বন্ধ করা সম্ভব নয়।
অবশ্য কিছু সময় পর বিএনপি আবার আলোচনায় যোগ দেয়।
তবে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, একটি বড় দল আলোচনায় অংশ না নিলে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়। আলোচনায় অগ্রসর হওয়া সম্ভব নয়।
কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভায় মাদকবিরোধী অভিযানে ১০ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ সৈয়দ নূর (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
অভিযানে ১টি ওয়ান শুটার গান, ১টি এলজি, ১ রাউন্ড তাজা গুলি ও ১টি গুলির খালি খোসা উদ্ধার করা হয়।
সোমবার বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে আরো বলা হয়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) জানতে পারে, একটি অপরাধীচক্র সমুদ্রপথে মাদক এনে টেকনাফ ও আশপাশের এলাকায় বেচাকেনা করছে। এরপর লে. কর্নেল আশিকুর রহমানের নেতৃত্বে বিজিবির একাধিক দল টেকনাফ শহরের বিভিন্ন স্থানে একযোগে অভিযান চালায়।
একপর্যায়ে টেকনাফ পৌরসভার খানকারপাড়া এলাকা ঘিরে ফেলে বিজিবি। স্থানীয়দের সহযোগিতায় রোববার দুপুরে সৈয়দ নূরকে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মাদক সরবরাহকারী মো. হারুন অর রশিদ বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে মাদকের একটি প্যাকেট নূরের কাছে রেখে আরেকটি নিয়ে পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে নূরের বাড়ি তল্লাশি করে বিপুল পরিমান মাদক, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়।
আটক নূর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পাশেই সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সুবিধা নিয়ে গড়ে উঠা আধুনিক শোধনাগার। প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত হওয়া এ শোধনাগারই এরই মধ্যে চালুও হয়েছে। তবে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় নাচোল পৌরসভার ট্রাকে করে নিয়ে আসা শহরের সব ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে আগের মতই রাস্তার পাশে। এতে করে এত টাকা খরচে নির্মিত হওয়া আধুনিক শোধনাগারটি খুব একটা কাজে আসছে না, উল্টো বর্জ্য শোধনাগারের সামনে থাকা ময়লা-আবর্জনার স্তুপে ছড়াচ্ছে দূর্গন্ধ, পথচারী, ওই এলাকার বাসিন্দা সবাই পড়েছেন ভোগান্তিতে।
নাচোল উপজেলার দরবেশপুর এলাকায় সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে নির্মিত এ শোধনাগারের কার্যক্রম গত ৭ জুলাই উদ্বোধন করেন সাবেক পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলুফা সরকার। এরপর থেকেই কয়েকজন শ্রমিক সেখানে কাজ করছেন। তবে তাদের কেউই কোন ধরনের স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ ব্যবহার করছেন না, নেই কোন নির্ধারিত মাস্ক ও পোষাক। যা তাদের বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুকিতে ফেলে দিচ্ছে।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, রাস্তার পাশেই ময়লা এনে জমা করে রাখার কারনে এলাকায় টেকায় যাচ্ছে না, দূগন্ধে বসবাস করায় কঠিন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আতাউর রহমান বর্জ্য শোধনাগারের জন্য আনা ময়না আবর্জনা রাস্তায় পাশেই স্তুপ করে রাখা হচ্ছে এতে ছড়াচ্ছে দূগন্ধ, এলাকাবাসীর জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে।
এ প্রকল্পের সংস্লিষ্ট কর্মকর্তা তাহসিনা সিরাজ জানান, ময়লা আবর্জনা পৌরসভার, তারা আমাদের এখানে পৌচ্ছে দিবে। আমাদের শোধনাগারের মধ্যেই তাদের ট্রাক নিয়ে আসবে। তাহলে শোধনাগারের সামনে সড়কের পাশেই কেন ময়লার স্তুপ। এমন প্রশ্নে তিনি বলেন আমি বিষয়টি দেখছি।
শ্রমিকদের স্বাস্থ্যগত সুরক্ষার বিষষে উপজেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুল আলম জানান, শ্রমিকদের স্বাস্থ্যগত বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হবে, আমি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলব।
নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক কামাল হোসেন বলেন, আমি নতুন এসেছি, এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিব।
হেপাটাইটিস নির্মূলের লক্ষ্য অর্জনে আজ পালন করা হবে ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস’। বিশ্বের অনান্য দেশের মত বাংলাদেশেও দিবসটি উপলক্ষ্যে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে বাণী দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও আজ ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস’ উদযাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘আসুন এটি ভেঙে ফেলা যাক’।
তিনি আরো বলেন, লিভার রোগ সম্পর্কে অজ্ঞতা, সময়মত চিকিৎসা না করা এবং নানা কুসংস্কারের কারণে দেশে লিভার রোগের প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করছে।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় ৪.৪ শতাংশ হেপাটাইটিস-বি এবং ০.৬ শতাংশ হেপাটাইটিস-সি ভাইরাসে আক্রান্ত। প্রতিবছর বহু মানুষ হেপাটাইটিস, লিভার সিরোসিস, লিভার ক্যান্সার ও লিভার ফেইলিওরে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান।
সচেতনতা ও সময়মতো সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এসব রোগ প্রতিরোধ এবং সুস্থ জীবনযাপন সম্ভব। স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর বলেও আশা প্রকাশ করেন।
২০০৮ সালের ২৮ জুলাই প্রথমবার বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস পালনের উদ্যোগ নেয় ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস অ্যালায়েন্স’। ২০১১ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটিকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়। এরপর থেকে প্রতিবছর এই দিনে দিবসটি পালন করা হচ্ছে।
বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস হল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষিত ১১টি আনুষ্ঠানিক বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য প্রচারের একটি। নোবেল বিজয়ী বারুচ স্যামুয়েল ব্লুমবার্গ হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস আবিষ্কার করেন। তার জন্মদিন ২৮ জুলাইকেই ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস’ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।
বিশ্বজুড়ে আজ বিনামূল্যে স্ক্রিনিং, টক শো, প্রচারণা, কনসার্ট এবং টিকাদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিনটি পালিত হচ্ছে। প্রতি বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও বিশ্ব হেপাটাইটিস অ্যালায়েন্স এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
২০২৪ সালের ২৯ জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক প্রত্যাখ্যান করে মুখে ও চোখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তোলা এবং অনলাইনে তা ব্যাপক ভাবে প্রচারের কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার সোমবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে গণমাধ্যমকর্মীদের খুদে বার্তা পাঠিয়ে নতুন কর্মসূচির কথা জানান।
এতে বলা হয়, হত্যা ও নির্যাতনের বিচার না করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে নির্মম উপহাস করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে রাষ্ট্রীয় শোক প্রত্যাখ্যান করে ৩০ জুলাই মঙ্গলবার মুখে ও চোখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তোলা এবং অনলাইনে তা ব্যাপক প্রচারের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফা দাবির বিষয়টিও তিনি খুদে বার্তায় উল্লেখ করেন। নতুন কর্মসূচির কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রচার করা হয়।
কর্মসূচি ঘোষণার পর সোমবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে এ কর্মসূচি পালন করতে শুরু করে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এই কর্মসূচি ঘোষণার পর অনেক তারকাও ফেসবুক প্রোফাইল ছবি পরিবর্তন করেন।
এদিকে সোমবার দুপুরে অনুষ্ঠিত মন্ত্রীর সভার বৈঠকে কোটা সংস্কার দাবির আন্দোলনকে ঘিরে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে মঙ্গলবার দেশব্যাপী শোক পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বলা হয়, শোক পালনের অংশ হিসেবে কালো ব্যাজ ধারণ করা হবে। আর নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সব মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।
এদিকে সোমবার কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের ‘জিম্মি’ করে বিবৃতি আদায়ের প্রতিবাদ, গুম-গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং ছাত্র-জনতার হত্যার বিচারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এইদিন শিক্ষার্থীরা পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থানের মধ্যেও ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, কুমিল্লা, বরিশাল, ঠাকুরগাঁও, বগুড়া, যশোর, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালীসহ কয়েক জেলার কিছু স্থানে বিক্ষোভ করেন তারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এদিনও কর্মসূচিস্থল থেকে শিক্ষার্থীদের আটক করে।
সোমাবার রাজধানীর পল্টন, সেগুনবাগিচা, সায়েন্সল্যাব, ইসিবি চত্বর, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরসহ কয়েকটি এলাকায় জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়া ও লাঠিচার্জে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। শুধু ঢাকায় জমায়েত হওয়ার স্থান থেকে কমপক্ষে অর্ধশত শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়।
২৯ জুলাই অফিস-আদালতে স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে। রাজধানীর অধিকাংশ এলাকার পরিবেশ প্রায় স্বাভাবিক ছিল। অধিকাংশ সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ছিল।
দশম দিনের মতো দেশে কারফিউ অব্যাহত থাকে, যদিও দিনের বেলার কারফিউ শিথিল থাকার সময় সীমা বাড়ানো হয়।
সোমবার সকাল থেকেই বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হয়। পাশাপাশি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)’কে তাদের হেলিকপ্টার ব্যবহার করে টহল দিতে দেখা যায়। সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে টহল দিতে দেখা যায়।
এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে বসানো হয় চেকপোস্ট। পুলিশ মাইকিং করে কাউকে এক জায়গায় জড়ো না হতে হুঁশিয়ারিও দেয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মাঠে অবস্থান করেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে তাদের খাওয়ানোর ছবি প্রকাশ করাকে জাতির সঙ্গে মশকরা বলে মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে অবিলম্বে মুক্তি ও আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে রিটের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে হাইকোর্ট এ কথা বলেন।
এদিকে রাতে গণভবনে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বৈঠকে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধে ১৪ দলের নেতারা একমত হন।
বৈঠকে শেষে ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৪ দলের নেতারা মনে করেন, ‘বিএনপি-জামায়াত, ছাত্রদল ও শিবির তাদের দোসর জঙ্গি গোষ্ঠীকে নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাই ১৪ দলের নেতারা সর্বসম্মতিক্রমে জামায়াত ও শিবিরকে রাজনীতিতে নিষিদ্ধে একমত হয়েছেন।’
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে মৃত্যু, গুলিবর্ষণ, গ্রেপ্তারসহ নির্যাতনের নানা ঘটনার সত্য উদঘাটনে ‘জাতীয় গণতদন্ত কমিশন’ গঠন করা হয়। সোমবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ‘গণহত্যার বিচার চাই; গায়েবি মামলা, গ্রেপ্তার ও নির্যাতন বন্ধ করো’ শীর্ষক আইনজীবীদের এক মানববন্ধন থেকে এই কমিশন গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার কর্তৃক প্রকাশিত চলমান কোটা আন্দোলনে নিহতদের নাম ও সংখ্যা গ্রহণযোগ্য নয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে নিহতের এ সংখ্যা অনেক বেশি।
এদিকে আন্দোলনে শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ড ও সামগ্রিক ঘটনা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নিরপেক্ষ তদন্তসহ ছয় দফা দাবি জানায় গণতন্ত্র মঞ্চ। দাবিগুলোর মধ্যে ছিল, দ্রুত কারফিউ প্রত্যাহার, সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবিসহ বিশেষ বাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া, ইন্টারনেট পুরোপুরি চালু, আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর গুলি, হত্যার পরিকল্পনাকারী, নির্দেশদাতা ও বাস্তবায়নকারীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা, গ্রেপ্তারকৃত বিরোধী নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীদের মুক্তি এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, গোয়েন্দা বাহিনীর তুলে নেওয়া আন্দোলনকারী নেতাদের মুক্তি, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু ও ব্লক রেইড বন্ধ করা।
চলমান ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে জুলাই মাস জুড়ে সংঘটিত মৃত্যুর ঘটনাকে ‘জুলাই হত্যাকাণ্ড’ বলে আখ্যা দেন শিক্ষকরা। এ ছাড়া সারা দেশে হত্যা-গুম-গণগ্রেপ্তারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আতঙ্ক-হয়রানি বন্ধ এবং আটককৃতদের মুক্তির দাবি জানান বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত শতাধিক শিক্ষক।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ে আটকে রেখে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা পাঠে বাধ্য করাকে ‘অনৈতিক’ ও ‘গর্হিত অপরাধ’ বলে উল্লেখ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি জানায়, ডিবি জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। নিরাপত্তা হেফাজতের কোনো আইনি ভিত্তি নেই।
জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে প্রতিটি ঘটনার তদন্ত দাবি করে বিবৃতি দেন বিক্ষুব্ধ ৭৪ বিশিষ্ট নাগরিক। ২৯ জুলাই প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতদের বেশিরভাগই কম বয়সী ও শিক্ষার্থী।
সরকারি আদেশে (জিও) পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ না থাকায় সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীরা কোন পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশ ভ্রমণে যাচ্ছেন তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। তাই বিদেশ ভ্রমণের আদেশে পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ করার জন্য চিঠি দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
গতকাল রোববার সব মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব/সচিবদের কাছে এ চিঠি পাঠিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
চিঠিতে বলা হয়, বিভিন্ন সময় কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণের সরকারি আদেশ জারি করা হচ্ছে। কিন্তু তাদের বিদেশ ভ্রমণের সরকারি আদেশে (জিও) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীর পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ করা হচ্ছে না। সরকারি আদেশে পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ না থাকায় কর্মকর্তা/কর্মচারীরা কোন পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশ ভ্রমণে যাচ্ছেন তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
এমতাবস্থায়, কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণের সরকারি আদেশে (জিও) পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ করার জন্য অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় পুলিশের সদস্যসহ ৩০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের শুনানি আজ।
সোমবার (২৮ জুলাই) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ এই শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ আজ এই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানি করবেন বলে জানানো হয়েছে।
এর আগে, শুক্রবার (২৫ জুলাই) কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ছয় আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এই ছয় আসামি হলেন— সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরীফুল ইসলাম, রাফিউল, আনোয়ার পারভেজ এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা ইমরান চৌধুরী আশেক।
গত ১০ জুলাই পলাতক ২৬ আসামিকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত।
এর আগে, ৩০ জুন আবু সাঈদ হত্যায় পুলিশের সদস্যসহ মোট ৩০ জনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী আন্দোলনের সময় ১৬ জুলাই বিকালে পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হন। আবু সাঈদ ছিলেন জুলাই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত প্রথম শিক্ষার্থী।