কলকাতা লাগোয়া উপনগরীটাতে শয়ে শয়ে বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স, রাতদিন লাখো মানুষের ভিড় সেখানে। ব্যস্ত এই এলাকায় একটি বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সে এমন কয়েকজন যাতায়াত করছেন, যাদের কয়েক মাস আগেও সেখানে দেখা যেত না। ওই বাণিজ্যিক পরিসরে যাতায়াত করেন, এমন বেশির ভাগই চেনেন না এই নবাগত ব্যক্তিদের। চেনার কথাও নয়।
তবে তাদের অনেকেই মাত্র এক বছর আগেও বাংলাদেশের সব থেকে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। তারা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর শীর্ষ ও মধ্যম স্তরের নেতা।
তারা যে বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সটিতে যাতায়াত করছেন কয়েক মাস ধরে, সেখানেই ‘দলীয় দপ্তর’ খুলেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এই ‘পার্টি অফিসটি নতুন।
এর আগে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পরের কয়েক মাসে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে যারা ভারতে অবস্থান করছেন, তারা নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো বৈঠক বা দলীয় দপ্তরের কাজকর্ম চালাতেন নিজেদের বাসাবাড়িতেই। বড় বৈঠকগুলো অবশ্য করতে হতো কোনো রেস্তোরাঁ বা ব্যাংকুয়েট হল ভাড়া করে। সে কারণেই একটা নির্দিষ্ট ‘পার্টি অফিস’-এর দরকার ছিল বলে জানাচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
কী রকম সেই ‘পার্টি অফিস’
বাণিজ্যিক পরিসরটির পেছনের দিকের ভবনটির আট তলায় লিফট দিয়ে উঠে বাঁ দিকে গেলেই সার দিয়ে বাণিজ্যিক সংস্থার দপ্তর। করিডরের দুই দিকে হালকা বাদামি রঙের একের পর এক দরজা। তার মধ্যেই একটিতে আওয়ামী লীগের পার্টি অফিস।
শুধু বাইরে কেন, ৫০০ বা ৬০০ স্কয়ার ফুটের ঘরটিতে উঁকি মারলেও কেউ বুঝতে পারবেন না যে এই ঘরের সঙ্গে কোনোভাবে আওয়ামী লীগ জড়িত আছে। কোনো সাইনবোর্ড, শেখ হাসিনা অথবা বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের কোনো ছবি কোথাও নেই ঘরটির বাইরে বা ভেতরে।
আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বা নেত্রীর কোনো ছবি, সাইনবোর্ড কোনো কিছুই আমরা রাখিনি খুবই সচেতনভাবে। আমরা চাইনি যে এই ঘরটার পরিচিতি প্রকাশ করতে। এমনকি একটা দলীয় দপ্তরে যেসব ফাইল ইত্যাদি থাকে, সেসবও এখানে রাখা হয় না। নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ, বৈঠক ইত্যাদির জন্য একটা ঘর দরকার ছিল, এটা পাওয়া গেছে। এটাকে আমরা পার্টি অফিসই বলি, কিন্তু আদতে এটা একটা বাণিজ্যিক অফিস। আগে যে সংস্থা কাজ করত এখানে, তাদেরই ছেড়ে যাওয়া চেয়ার, টেবিল এসবই আমরা ব্যবহার করি।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা জানান, ৩০ থেকে ৩৫ জনের বৈঠক এই দপ্তরেই হয়ে যায়। কিন্তু একটু চাপাচাপি করে বসতে হয়। ছোটখাটো বৈঠক বিভিন্ন নেতাদের বাসাবাড়িতে এখনো হয়। তবে বড় বৈঠকগুলো, যেখানে শ দুয়েক নেতাকর্মী হাজির হওয়ার কথা, সে রকম বৈঠকের জন্য কোনো ব্যাংকুয়েট হল বা কোনো রেস্তোরাঁর একটি অংশ ভাড়া নিয়ে নেওয়া হয়।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে আসা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর অনেক শীর্ষ নেতা এবং সাবেক মন্ত্রী কলকাতা বা তার আশপাশের অঞ্চলে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছেন।
এর বাইরে বিভিন্ন পেশাজীবী, সরকারি কর্মচারী, পুলিশ কর্মকর্তা ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারাও চলে এসেছেন ভারতে। মাস ছয়েক আগে আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো জানিয়েছিল যে অন্তত ৭০ জন সাবেক সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, সাবেক মেয়রসহ শীর্ষ নেতৃত্বের প্রায় ২০০ জন কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলে থাকছেন।
তাদের কেউ সপরিবার থাকেন। আবার কোথাও একসঙ্গে কয়েকজন মিলেও একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছেন। কারও পরিবার মাঝেমধ্যে বাংলাদেশ থেকে এসেও কিছুদিন কাটিয়ে যায়।
আওয়ামী লীগের এক নেতা বলছিলেন, এখন যে সংখ্যাটা খুব বেশি বেড়েছে, তা নয়। দ্বাদশ সংসদের ৮০ জনের মতো সংসদ সদস্য এবং তারও আগে সংসদ সদস্য ছিলেন, এমন ১০ থেকে ১২ জন নেতা আছেন এখানে। আবার এমনও কয়েকজন এসেছেন, যারা কলকাতায় এসে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া বা অন্য দেশে চলে গেছেন। সহযোগী সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতারাও থাকেন কলকাতার আশপাশেই।
কলকাতা বা পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে আওয়ামী লীগের যে শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বাস করছেন, তাদের প্রায় সবাই ‘পার্টি অফিসে’ যাতায়াত করে থাকেন।
আওয়ামী লীগের ওই নেতা বলছিলেন, তবে অফিস খোলার নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। যে রকম প্রয়োজন, সে রকমই আসেন নেতারা। আবার রোজই যে সবাই আসেন, তা–ও নয়। আসলে প্রয়োজনীয়তা ছিল একটা নির্দিষ্ট জায়গা গড়ে তোলা, সে জন্যই এই পার্টি অফিস।
আওয়ামী লীগের এই নতুন পার্টি দপ্তরের ব্যাপারে ওই বাণিজ্যিক পরিসরে যাতায়াত করা সাধারণ মানুষ যে কিছু জানবেন না, সেটাই স্বাভাবিক।
দলের কোন স্তরের নেতাকর্মীরা এই দপ্তরের ব্যাপারে জানেন, সেটা জানা যায়নি।
কিন্তু এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে ভারতীয় গোয়েন্দারা এই দপ্তরের ব্যাপারে জানেন এবং ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ স্তরের অনুমোদন ছাড়া এই দলীয় দপ্তর থেকে আওয়ামী লীগের কাজকর্ম চলতে পারত না।
যেভাবে দল চলছে এক বছর ধরে
গত এক বছরের কিছুটা কম সময় ধরে ভারত থেকেই আওয়ামী লীগ পরিচালিত হচ্ছে। দলটির নেত্রী শেখ হাসিনা দিল্লির কাছাকাছি কোথাও থাকেন আর বড় অংশ থাকে কলকাতাসংলগ্ন অঞ্চলে।
তবে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলছিলেন, এই ধারণা ঠিক নয় যে ভারত থেকে দল চলছে। মূল দল বা সহযোগী সংগঠনগুলোর কতজন নেতাই–বা ভারত অথবা অন্যান্য দেশে রয়েছেন? বেশির ভাগ তো এখনো বাংলাদেশেই আছেন।
কিন্তু দলের নেত্রী শেখ হাসিনা ও শীর্ষ নেতৃত্বের একটা বড় অংশ ভারতে আছেন বলে সেখান থেকেই যে রাজনৈতিক দিশা-নির্দেশ দেওয়া বা দলীয় অবস্থান চূড়ান্ত হবে, সেটাই স্বাভাবিক।
তবুও দুই সপ্তাহ আগপর্যন্তও শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে সরাসরি দেখা হয়নি দলনেত্রীর। গত ৩১ জুলাই শীর্ষ নেতৃত্বের কয়েকজনকে দিল্লিতে এক বৈঠকে ডেকেছিলেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা ওই বৈঠকের বিষয়টি বিবিসি বাংলার কাছে নিশ্চিত করেছিলেন। তবে বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, কোথায় বৈঠক হয়েছে, সে ব্যাপারে কোনো কথা বলেননি ওই নেতারা।
দলের নেত্রীর সঙ্গে ওই বৈঠকটি ছাড়া এবং নিজেদের মধ্যে সশরীর দেখা-সাক্ষাৎ ও বৈঠক ছাড়া দলটির বাকি সব কাজই চলে ভার্চুয়াল মাধ্যমে।
বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের জন্য আলাদা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ও টেলিগ্রাম গ্রুপ ইত্যাদি গড়া হয়েছে। এ ছাড়া নিয়মিতই লাইভ অনুষ্ঠান করে থাকে দলটি। এ রকম লাইভ অনুষ্ঠানে মাঝেমধ্যেই যোগ দেন শেখ হাসিনা নিজেও।
সেসব আলোচনায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা যেমন হয়, তেমনই আবার মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মী, যারা বাংলাদেশ থেকে গেছেন, তাদের নির্দেশনাও দেওয়া হয়ে থাকে।
সাবেক সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ বলছিলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ প্রবাহের ফলে আমরা ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে পারছি। তাদের মতামত জানতে পারছি। কী করণীয় সে ব্যাপারে নির্দেশনা দিতে পারছি।’
পঙ্কজ দেবনাথ আরও বলছিলেন, ‘এই ভার্চ্যুয়ালমাধ্যমে বেশি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে তরুণ প্রজন্মের। কোনো একটা ব্যবস্থা বদলানোতে এই তরুণ প্রজন্মের বড় ভূমিকা থাকে। আমরা ভার্চুয়াল মাধ্যমে তাদের কাছেই পৌঁছানোর চেষ্টা করছি।’
কর্মীরা দেশে মার খাচ্ছেন, নেতারা কেন ভারতে
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে মাঝেমধ্যেই এই প্রশ্ন ওঠে যে আওয়ামী লীগের মাঠপর্যায়ের কর্মীরা যখন দেশে মার খাচ্ছেন, গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যাচ্ছেন, তখন শীর্ষ নেতৃত্বের একটা বড় অংশ কেন ভারতে পালিয়ে আছেন।
সাবেক সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ বলছিলেন, ‘এই প্রশ্ন ওঠা যে খুব অযৌক্তিক, তা নয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ১৯৭১-এ যদি তখনকার নেতৃত্ব ভারতে চলে এসে প্রবাসী সরকার গঠন না করতেন, তাহলে কি বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ পরিচালনা করা সম্ভব হতো? আমি ’৭১-এর সঙ্গে তুলনা করছি না বর্তমান সময়ের, কিন্তু এ রকম উদাহরণ আমাদের দেশেও রয়েছে। অন্যান্য দেশেও আছে যে বিদেশ থেকে দল পরিচালনা করে শক্তি সঞ্চয় করে দেশে ফিরে ক্ষমতা দখল করেছেন নেতারা। পাকিস্তানে নওয়াজ শরিফ বা বেনজির ভুট্টো বলুন বা আমাদের দেশের তারেক রহমান। সবাই তো বিদেশ থেকেই দল পরিচালনা করেছেন বা এখনো করছেন।’
পঙ্কজ দেবনাথের প্রশ্ন, ‘দেশে থাকলে হয় জেলে থাকতে হতো, মেরেও ফেলতে পারত। কিন্তু তাহলে আমাদের যে রাজনৈতিক কাজকর্ম—বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরা, দলকে আবারও সংগঠিত করা—সেগুলো কি আমরা করতে পারতাম?’
নেতাদের মধ্যে রাজনৈতিক আলোচনা
ভারতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগ নেতারা দলের নেত্রীর সঙ্গে আলোচনাক্রমেই দলের রাজনৈতিক অবস্থান ঠিক করেন।
যখন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তার প্রথম বর্ষপূর্তি পালন করছে, সেই সময়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের ‘ব্যর্থতা’গুলোকেই তুলে ধরার অবস্থান নিয়েছে আওয়ামী লীগ।
দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন প্রচার করেছিল এই সরকার, তাতে তারা গত এক বছরে সব দিক থেকেই ব্যর্থ হয়েছে। অর্থনীতি ফেল করেছে, বিচারব্যবস্থা প্রহসনে দাঁড়িয়েছে। আর সব ক্ষেত্রেই তাদের ব্যর্থতার জন্য তারা শেখ হাসিনা আর ভারতের ওপর দায় চাপাতে ব্যস্ত। একটা যেন ইন্ডিয়া ফোবিয়া, হাসিনা ফোবিয়া হয়ে গেছে তাদের।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলছিলেন, ‘এক বছর পর তাদের নিয়ে সেই উন্মাদনা কিন্তু আর নেই। তাদের মুখের কথায় মানুষ আর বিশ্বাস করতে পারছে না, বিভ্রান্তও হচ্ছে না। সবাই বাস্তবতার নিরিখে মূল্যায়ন করছে সরকারের। তাদের এই ব্যর্থতার জন্য বহু মানুষ বলছেন, শেখ হাসিনার সময়ই ভালো ছিলাম।’
বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ভারতে অবস্থান করছেন গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘এক বছর ধরে ক্যাম্পাসটা খুব মিস করি। দেশে থাকলেও যে গত এক বছরে ক্যাম্পাসে যেতে পারতাম, তা নয়।’
সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘হাজার হাজার ছাত্রলীগের কর্মী-সমর্থক তারা তো দেশে থেকেও ক্যাম্পাসে যেতে পারছেন না এক বছর ধরে। তাদের ক্লাস করতে দেওয়া হয় না, তারা পরীক্ষা দিতে পারেন না, পাস করলেও সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে না। তাদের সবার শিক্ষাক্রমটাই শেষ করে দেওয়া হয়েছে।’
সাদ্দাম হোসেন আরও বলেন, ‘এটা যে শুধু ছাত্রলীগের কর্মীদের সঙ্গে করা হচ্ছে, তা নয়। আওয়ামী লীগ করেন বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, এমন পরিবারের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গেও এই একই ঘটনা হচ্ছে। শুধু যে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে হচ্ছে, তা–ও নয়। এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারেননি বহু ছাত্রছাত্রী—শুধুমাত্র তারা আওয়ামী লীগ ঘরানার পরিবারের সন্তান বলে।’
অর্থায়ন কীভাবে হচ্ছে
ভার্চুয়াল মাধ্যমে দলীয় প্রচার-প্রচারণার জন্য খুব বেশি অর্থের প্রয়োজন হয় না ঠিকই, কিন্তু খরচ তো আছে।
আবার যেসব নেতাকর্মীরা ভারতে অবস্থান করছেন, তাদের ব্যক্তিগত খরচও চালাতে হয়। কীভাবে সেসবের জন্য অর্থের সংস্থান হচ্ছে?
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বিবিসিকে বলেন, দেশে-বিদেশে থাকা শুভাকাঙ্ক্ষীরাই তাদের খরচ চালাচ্ছেন।
দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথায়, ‘সাংগঠনিকভাবে আগস্টের পর যে বিপর্যয় নেমে এসেছে, সেই অন্ধকার অতিক্রম করা কঠিন কাজ। যেসব নেতাকর্মী দেশে বা বিদেশে আছেন, তারাই এই দুঃসময়ে এগিয়ে আসছেন, অর্থ সাহায্য করছেন। কর্মীরা এখানে কষ্ট করেই আছেন, তবে মনোবলই আমাদের সম্বল।’
আরেক নেতা নাম উল্লেখ না করার শর্তে বলছিলেন, দেশ থেকে তার পরিবার-পরিজন ও সহকর্মীরা প্রয়োজনমতো অর্থ পাঠিয়ে দেন।
পঙ্কজ দেবনাথ বলছিলেন, ‘তবে এই এক বছরে আমাদের জীবনযাত্রায় অনেক পরিবর্তন আনতে হয়েছে।’
পঙ্কজ দেবনাথের কথায়, ‘আমরা যে এখানে মানবেতর জীবনযাপন করছি, বা ’৭১-এর যুদ্ধের সময়ের মতো শরণার্থীশিবিরে থাকছি, তা নয়। কিন্তু আমাদের মধ্যে যাদের মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত জীবনযাত্রা ছিল, সেসব পরিবর্তন করতে হয়েছে। যারা ঢাকায় হয়তো গাড়ি ছাড়া চলতেন না, তাদের এখন কলকাতার গণপরিবহন ব্যবহার করতে হচ্ছে।’
পঙ্কজ দেবনাথ বলছিলেন, ‘যেমন আমি একটি ফ্ল্যাটে আরও তিনজনের সঙ্গে থাকি। বাসে, ট্রেনে বা মেট্রোরেলে যাতায়াত করি। আবার সহকর্মীদের মোটরসাইকেল বা বাইকেও চেপে ঘোরাঘুরি করি। যদি কয়েকজন মিলে একসঙ্গে কোথাও যেতে হয়, তখন হয়তো ট্যাক্সিতে উঠলাম। ভাড়াটা ভাগাভাগি করে নিলে গায়ে লাগে না। আসলে সঞ্চিত অর্থে যতটা স্বল্প খরচে চলা যায়।’
কিন্তু কত দিন থাকবেন তারা দেশ ছেড়ে?
ওবায়দুল কাদের বলছেন, ‘দিনক্ষণ ঠিক করে ওভাবে তো রাজনৈতিক লড়াই হয় না, আবার লড়াই ছাড়া উপায়ও নেই।’
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়। সিসি ক্যামেরা রয়েছে এমন ভোটকেন্দ্রগুলোর একটি বিস্তারিত তালিকা প্রস্তুত করে দ্রুত পাঠাতে জেলা নির্বাচন অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
বুধবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. নাসির উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
নির্বাচন কমিশন থেকে পাঠানো চিঠিতে সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার/জেলা নির্বাচন অফিসারদের আগামী ১২ নভেম্বরের মধ্যে এই তালিকা সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে 'নির্বাচন সহায়তা-১ শাখায় প্রেরণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তালিকাটির হার্ডকপি এবং নিকস ফন্টে সফটকপি উভয়ই নির্ধারিত ছক মোতাবেক জমা দিতে হবে।
আসন্ন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও ত্রুটিমুক্ত রাখতে এবং যেকোনো ধরনের অনিয়ম তাৎক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য সিসি ক্যামেরার ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসি মনে করছে, এই তালিকা হাতে পেলে সিসি ক্যামেরার সার্বিক চিত্র সম্পর্কে তারা ওয়াকিবহাল থাকবে এবং নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় নজরদারি আরও জোরদার করা সম্ভব হবে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোলা-৩ (তজুমদ্দিন-লালমোহন) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে পুনরায় মনোনয়ন পাওয়ায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তজুমদ্দিন উপজেলার মলংচড়া ইউনিয়ন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর বনানীতে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদের বাসভবনে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। এতে মলংচড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নূর হাসান তন্ময় এর নেতৃত্বে কয়েক শতাধিক নেতা-কর্মী অংশ নেন।
এসময় সাধারণ সম্পাদক তন্ময় শিকদার বলেন, “ভোলার চারটি সংসদীয় আসনে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও ভোলা-৩ আসনে আমাদের মনে একটিই নাম—আমাদের প্রিয় নেতা মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমদ। তিনি গত ১৭ বছর ধরে আমাদের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের পিতৃস্নেহে আগলে রেখেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “ভোলা-৩ আসন অতীতেও আমাদের নেতার দখলে ছিলো, ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতেও থাকবে। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা নেতাকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করে সংসদে পাঠাবো।”
শেষে তিনি মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদকে পুনরায় মনোনয়ন দেওয়ার জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের টানা নবম দিনের শুনানি শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকাল ৯টা ৫০ মিনিট থেকে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
এর আগে গতকাল ৪ নভেম্বর, ২ নভেম্বর এবং ২৯, ২৮, ২৩ ও ২২ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের টানা শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
গত ২১ অক্টোবর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের শুনানি শুরু হয়।
এর আগে গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়।
এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম. সলিমউল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করেন।
এই সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম. সলিমউল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেন।
এ রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে রিট আবেদনকারী পক্ষ আপিল করে। এই আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। অন্য চারজন হলেন তোফায়েল আহমেদ, এম. হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।
আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ১৬ অক্টোবর একটি আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এছাড়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছরের ২৩ অক্টোবর আরেকটি আবেদন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
পরবর্তীতে নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর একটি আবেদন করেন।
সরকার আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের রূপরেখা দিয়েছে। নির্বাচন হলে দেশের পরিস্থিতি আরও স্থিতিশীল হবে এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আরও স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বর্তমান সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনীর সিনিয়র নেতৃত্বের প্রতি সেনা সদস্যদের শতভাগ আনুগত্য রয়েছে। যেকোনো সময়ের তুলনায় সেনাবাহিনী আরও ঐক্যবদ্ধ বলে জানিয়েছে সেনা সদর।
বুধবার সেনা সদর দপ্তর আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি আর্টডক) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান এসব তথ্য জানান। ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেস আলফাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। সংবাদ সম্মেলনে আরো বিভিন্ন প্রশ্ন নিয়ে উত্তর দেন সেনা সদরের পরিচালক (মিলিটারি অপারেশন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল দেওয়ান মোহাম্মদ মনজুর হোসেন ও পরিচালক (এজি শাখা) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুস্তাফিজুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন শেষে সেনানিবাসের ফিরে যাওয়ার আশা জানিয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান বলেন, যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আমরা গত ১৫ মাস দায়িত্ব পালন করেছি, তা একেবারেই সহজ ছিল না। আমরাও চাই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হোক এবং আমরা সেনানিবাসে ফিরে যাই।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশের জনগণের মতো সেনাবাহিনীও চায় সরকারের রূপরেখা অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। সে রূপরেখার মধ্যে সময়সীমাও দেওয়া আছে। আমরা আশা করি নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরও ভালো হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আরও স্বাভাবিক হবে এবং সেনাবাহিনী তখন সেনানিবাসে ফিরে যেতে পারবে। আমরা সেদিকে তাকিয়ে আছি।
সরকার নির্বাচনের যে রূপরেখা দিয়েছে সে অনুযায়ী নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে সেনা সদস্যদের। তবে দীর্ঘ সময় সেনানিবাসের বাইরে থাকার কারণে সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এই লেফটেন্যান্ট জেনারেল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেনাবাহিনীকে ঘিরে প্রচারিত বিভিন্ন গুজব প্রসঙ্গে লে. জেনারেল মাইনুর রহমান বলেন, গত ১৫ মাস সেনাবাহিনী অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করেছে। এ সময় কিছু স্বার্থান্বেষী চক্র সেনাবাহিনীর নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করার উদ্দেশে মিথ্যা ও সাজানো অপপ্রচার চালিয়েছে।
তিনি বলেন, আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে চাই, সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্য সেনাবাহিনীর প্রধান ও সিনিয়র লিডারশিপের প্রতি শতভাগ অনুগত। যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন সেনাবাহিনী আরও ঐক্যবদ্ধ, শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং ভ্রাতৃত্ববোধে দৃঢ়।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনসের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল দেওয়ান মোহাম্মদ মনজুর হোসেন কথা বলেন। সাম্প্রতিক সময়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর কার্যক্রম তুলে ধরেন।
বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর কিছু জেলায় সংঘর্ষ হয়েছে। এ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, যখনই আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয় আসে তখনই নজরদারি করা হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অন্যসব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগীতা করে।
নির্বাচনকালীন সরকার ও নির্বাচন পেছানোর কথা শোনা যাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ মনজুর হোসেন বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য সরকারের যে ইচ্ছা এবং গাইডলাইন দেওয়া আছে এবং নির্বাচন কমিশন যে পরিপত্র প্রকাশ করবে সেই অনুযায়ী বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করবে।
এসময় আসন্ন নির্বাচনকে নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মনজুর হোসেন বলেন, নির্বাচনকালীন সময়ে আমরা ৯০ হাজার থেকে এক লক্ষ সদস্য মাঠ পর্যায়ে মোতায়েন করব। যেটা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। আমাদের পরিকল্পনায় আছে জেলা পর্যায়ে, উপজেলা পর্যায়ে এমনকি আসনভিত্তিক ক্যাম্প স্থাপন করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করব। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হিসেবে সম্পূর্ণ করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন সবকিছু করার জন্য আমরা সদা প্রস্তুত থাকব।
গ্রেপ্তার সেনা কর্মকর্তাদের চাকরি থাকা, না থাকা নিয়ে জটিলতা কাটেনি। আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম-খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের তিন মামলায় কারাগারে থাকা ১৫ সেনা কর্মকর্তার চাকরি এখনো আছে কি না, তা নিয়ে জটিলতা কাটেনি। সেনাসদর জানিয়েছে, এটা একটা আইনগত প্রক্রিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে সেনাসদরের পিএস পরিদপ্তরের এজি শাখার পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মুস্তাফিজুর রহমানের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হয়।
এর আগে সেনাবাহিনীর তরফে বলা হযেছিল আইসিটি আইনের সঙ্গে সেনা আইনের যে অসামঞ্জস্যগুলো রয়েছে, সেগুলো ঘোচানোর বিষয়ে সরকারের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করছে। সেই প্রক্রিয়া কতদূর এগোলো জানতে চাইলে ব্রিগেডিয়ার মুস্তাফিজুর বলেন, এটি একটি আইনি প্রক্রিয়াগত বিষয়। আপনারা জানেন যে আর্মি অ্যাক্ট ১৯৫২ এবং আইসিটি অ্যাক্ট ১৯৭২ দুটোই স্পেশাল অ্যাক্ট। এই দুটো আইনকে আমরা কখনোই মুখোমুখি দাঁড় করাবো না। আইসিটি অ্যাক্টেই বর্তমানে মামলাটি পরিচালিত হচ্ছে, আমরা সরকারের সাথে এনগেজমেন্টে আছি। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দেশের যে প্রচলিত আইনগুলো রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে যে আইনেই বিচার হবে আমরা চাইব, সরকার একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিচারটি সম্পন্ন করবে।
গ্রেপ্তার সেনা কর্মকর্তাদের অধিকার বিষয়ে সেনা সদর ওয়াকিবহাল আছে তুলে ধরে এই কর্মকর্তা বলেন, সেই সাথে আমি এটাও বলতে চাই, যারা গুম-খুনের শিকার হয়েছেন তাদের পরিবারের প্রতি আমরা সহানুভুতিশীল। এবং একই সাথে আমাদের যে অফিসাররা আছে তাদের যে রাইটস আছে, রাইটস অ্যান্ড প্রিভিলেইজেস, সেটার সম্পর্কেও আমরা ওয়াকিবহাল আছি এবং আমরা সেটার ক্ষেত্রে সরকারের সাথে যোগাযোগ রাখছি।
সরকার যদি ‘আর্মি অ্যাক্টের’অধীনে এই বিচার করতে চায় সেজন্যও সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি চলছে তুলে ধরে ব্রিগেডিয়ার মুস্তাফিজুর বলেন, আমরা দুটো আইনকে সামনা-সামনি দাঁড় করাবো না। সরকার যেটাকে ভালো মনে করে, সেভাবেই যেন এগিয়ে যায়, আমরা প্রস্তুত আছি। যদি এটা আর্মি অ্যাক্টের অধীনে বিচার করতে বলে সেটা আমরা করতে পারব। সেভাবে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।
কারাগারে থাকা এই কর্মকর্তারা এখন চাকরি বহাল আছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটিও আরেকটি আইনি প্রক্রিয়াগত বিষয়। আইসিটি অ্যাক্টের যে থার্ড অ্যামেন্ডমেন্ট, ৬ অক্টোবর যেটা প্রকাশিত হয়েছিল সেখানে ডিসকোয়ালিফিকিশন টু হ্যাভ আ পাবলিক অফিস, এটার বিষয়ে ইন্টারপ্রিটেশনের প্রবলেম আছে। সেটা হচ্ছে যে এটাকে বিভিন্নভাবে ইন্টারপ্রিট করা যেতে পারে। সেটার বিষয়ে সরকারের সাথে আমাদের যোগাযোগ জারি আছে। আমরা এটার বিষয়ে একটা স্পষ্ট নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি।
তিনি বলেন, আমরা চাইব যে এই বিষয়টা আরও পরিষ্কার হতে। যদি এটাকে ডিসকোয়ালিফিকেশন বলতে টার্মিনেশন বোঝায় সেটা কীভাবে করে টার্মিনেশন হবে সেটাও সেখানে পরিষ্কার করে বলা নেই। সেনা অফিসারদের ক্ষেত্রে পাবলিক অফিস হোল্ড করছে সেটা কী বলা যাবে কি না সেটার ব্যাপারেও ক্ল্যারিফিকেশনের সুযোগ রয়েছে। সরকারের সাথে আমাদের এনগেজমেন্ট জারি রয়েছে। আমরা আশা করছি একটি সুষ্ঠু সমাধানের পথে আমরা এগোব, একটা ভালো রেজাল্ট পাবো ইনশাল্লাহ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই তিন মামলায় ২৮ আসামির বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের দেওয়া আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে গেল ৮ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এরপর ১১ অক্টোবর সেনা সদরের এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় তিন মামলার ২৮ আসামির মধ্যে চাকরিতে থাকা এবং এলপিআরে যাওয়া ১৫ জনকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পরে তাদের রাখার জন্য ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে অস্থায়ী ‘কারাগার’ ঘোষণা করে সরকার।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম-খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের তিন মামলায় হেফাজতে থাকা ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে গত ২২ অক্টোবর কারাগারে পাঠায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
দেশের মোবাইল ফোন বাজারের প্রায় ৬০ শতাংশই অবৈধভাবে আমদানি হওয়ায় সরকারের বছরে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে বলে জানিয়েছে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওনার্স অব বাংলাদেশ (এমআইওবি)।
বুধবার রাজধানীর রাওয়া ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
সংগঠনটির মতে, অবৈধ মোবাইল ফোন বেচাকেনায় দেশীয় নির্মাতারা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি রাষ্ট্রও হারাচ্ছে বিপুল রাজস্ব। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী ১৬ ডিসেম্বর চালু হতে যাওয়া ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট রেজিস্টার (এনইআইআর) কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে এমআইওবি সভাপতি জাকারিয়া শহীদ বলেন, বর্তমানে বাজারে থাকা মোবাইল ফোনের প্রায় ৬০ শতাংশই অবৈধভাবে আমদানি করা। এতে সরকারের বছরে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে। অথচ দেশে উৎপাদন সরঞ্জামের দাম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেলেও তারা এখনো হ্যান্ডসেটের দাম বাড়াননি বলেও দাবি করেন তিনি। সরকারের এই যুগান্তকারী উদ্যোগের (এনআইআর বাস্তবায়ন) বিরুদ্ধে একটি মহল বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে এনইআইআর নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। লাগেজ পার্টিরাই এ ধরনের প্রচারণা চালাচ্ছে।
জাকারিয়া শাহীদ আশ্বাস দিয়ে বলেন, এনইআইআর চালু হলে মোবাইল ফোনের দাম এক টাকাও বাড়ানো হবে না, বরং সরকারের রাজস্ব আয় হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাবে।
এমআইওবির সহ-সভাপতি রেদওয়ানুল হক বলেন, একটি ব্র্যান্ড বাদে বিশ্বের প্রায় সব শীর্ষ ব্র্যান্ড এখন দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদন করছে। দেশের ৯০ শতাংশ চাহিদা দেশীয় কারখানায় পূরণ হচ্ছে। আমাদের শতভাগ সক্ষমতা আছে, কিন্তু বর্তমানে ৬০ শতাংশ সক্ষমতা ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই এনইআইআর যেন কখনও বন্ধ না হয়।
স্মার্ট টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অনার ব্র্যান্ডের বাংলাদেশি উৎপাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, আইন মেনে দেশে মোবাইলফোন ব্যবসা করা এখন খুব সহজ। অনেকেই এই খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী। মোবাইল এখন আমাদের ব্রেড অ্যান্ড বাটার। দেশে উৎপাদন শুরু হওয়ায় বহু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। অথচ আইফোনের বাজার সম্পূর্ণটাই অবৈধ আমদানিনির্ভর।
সংবাদ সম্মেলনে সঞ্চালনা করেন এমআইওবির প্রধান নির্বাহী মনিরুল ইসলাম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মোবাইলফোন ডিস্ট্রিবিউশন অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল কপুরিয়া এবং মোবাইল কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, স্যামসাং বাংলাদেশের অনুমোদিত পরিবেশক এক্সেল টেলিকমের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সাইফুদ্দিন, ভিভো বাংলাদেশের প্রতিনিধি ইমাম উদ্দীন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে লেখা হয়েছিল বলে উল্লেখ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
বুধবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন থেকে সৃষ্ট আপিলের শুনানিতে তিনি এ কথা বলেন।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে লেখা হয়েছিল একটি বিশেষ পার্টিকে (রাজনৈতিক দলকে) সুবিধা দেয়ার জন্য। আর পরবর্তীতে কোনোরকম রিভিউ না করে আদালতে ঘোষিত রায়টি সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক পরিবর্তন করেছেন। যেটা দণ্ডবিধির ২১৯ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, আমরা গণতন্ত্র চাই, গণতন্ত্রের নামে কোনো লেবাস চাই না। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের ৩ বছর পর প্রথম আমাদের গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়।
এদিকে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বিভাগ বেঞ্চে ৮ম দিনের শুনানি শেষে আদালত আজ বৃহস্পতিবার আবার রাষ্ট্র পক্ষের শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
এর আগে বিএনপির পক্ষে এই আপিলের শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। জামায়াতের পক্ষে এই আপিলের শুনানি শেষ করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তার আগে পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিকের পক্ষে আপিল শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী শরীফ ভূইয়া।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনে করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়।
এরপর ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক ও এক ব্যক্তি আবেদন করেন। সে রিভিউ আবেদন থেকে আপিল শুনানির জন্য গত ২৭ আগস্ট লিভ মঞ্জুর করে ২১ অক্টোবর আপিল শুনানির দিন ধার্য করেন।
এদিকে, গত ১৭ ডিসেম্বর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে ৩৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি জননিরাপত্তার স্বার্থে বিমান বাহিনীর প্রাথমিক প্রশিক্ষণ ঢাকার বাইরে পরিচালনার সুপারিশ করেছে।
বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে। কমিটির প্রধান সুপারিশ হলো- ভবিষ্যতে বিমান বাহিনীর ইনিশিয়াল ট্রেনিং রাজধানীর বাইরে সরিয়ে নেওয়া, যাতে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এমন দুর্ঘটনা পুনরায় না ঘটে।’
প্রেস সচিব জানান, গত ২১ জুলাই উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে পাইলটসহ ৩৬ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে ২৮ জন শিক্ষার্থী, তিনজন শিক্ষক, তিনজন অভিভাবক ও একজন কর্মচারী। দুর্ঘটনার পর ২৯ জুলাই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, যার নেতৃত্ব দেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল কামরুল হাসান।
কমিটি প্রায় ১৫০ জন প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগী ও বিশেষজ্ঞের সাক্ষ্য নিয়ে ১৬৮টি তথ্য উদঘাটন করেছে এবং ৩৩টি সুপারিশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রশিক্ষণ চলাকালে পাইলটের উড্ডয়নের ত্রুটি ও নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম বলেন, ‘তদন্তে উঠে এসেছে, স্কুল ভবনটি রাজউকের অনুমোদিত বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি)-এর আওতায় নির্মিত হয়নি। ভবনে মাত্র একটি সিঁড়ি ছিল, যেখানে ন্যূনতম তিনটি সিঁড়ি থাকা উচিত ছিল। পর্যাপ্ত সিঁড়ি থাকলে হতাহতের সংখ্যা অনেক কম হতে পারত।’
তিনি আরও জানান, প্রধান উপদেষ্টা বরিশাল ও বগুড়ার রানওয়ে সম্প্রসারণের প্রস্তাব এবং রাজউকের সম্প্রসারিত এলাকায়- বিশেষ করে সাভার, কাঞ্চন ও তারাবো পৌরসভায়- বিল্ডিং অনুমোদনের ক্ষেত্রে রাজউকের নিয়ম কঠোরভাবে অনুসরণ করার নির্দেশ দেন।
চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামির হাজীপাড়া এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণার সময় সন্ত্রাসীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপি দলীয় প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ। সেইসঙ্গে সরওয়ার বাবলা নামে আরেক বিএনপিকর্মীও গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হোন এবং পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিহত হওয়া খবর পাওয়া গেছে।
বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার হাজীপাড়া এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে। আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ এবং দলটির কর্মী সরওয়ারকে বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সিএমপির উপকমিশনার (উত্তর) আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘এরশাদ উল্লাহ সাহেব নির্বাচনী প্রচারে গিয়েছিলেন। সেখানে উনার ওপর হামলা হয়েছে। তাকে পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এভারকেয়ার হাসপাতালে আছেন। উনি ঝুঁকিমুক্ত আছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। এই ঘটনায় আরও একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ আছে। কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, সেটা আমরা তদন্ত করে দেখছি।’
এদিকে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহকে গুলি করার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগে হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। তিনি আরও বলেন, দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী বেলাল বলেন, ‘নগরীর তিন নম্বর পাঁচলাইশ ওয়ার্ডে নির্বাচনী সভা করেছিল এরশাদ উল্লাহ ভাই। সভা শেষ করে তিনি সেখানে একটি মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়েন। মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর তিনি হেঁটে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা অতর্কিতভাবে গুলি করে।’
এদিকে এরশাদ উল্লাহ’র ওপর হামলার প্রতিবাদে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করার খবর পাওয়া গেছে।
৩ নভেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আসন্ন সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। সেখানে চট্টগ্রাম–৮ আসন থেকে এরশাদ উল্লাহর নাম ঘোষণা করা হয়।
গুলিবিদ্ধ আহত বাবলা নিহত
এদিকে বিএনপির নির্বাচনী প্রচারণায় হামলার ঘটনায় গুলিবিদ্ধ সরওয়ার বাবলা নিহত হয়েছেন। বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ৮টার দিকে তার মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তর জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) আমিরুল ইসলাম।
বায়েজিদ বোস্তামী থানার চাইলতালী এলাকায় বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। এ সময় হঠাৎ দুজন অস্ত্রধারী ব্যক্তি অতর্কিতে গুলি চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা সরওয়ার বাবলার বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে একাধিক গুলি ছোড়ে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আশপাশের লোকজন আতঙ্কে ছুটতে থাকেন। এসময় প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর পায়ে একটি গুলি লাগে।
ডিসি আমিরুল ইসলাম বলেন, বায়েজিদ এলাকায় বিএনপি প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় গুলির ঘটনা ঘটেছে। একজন নিহত হয়েছেন, প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, কারাগারে থাকা চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ গ্রুপের সঙ্গে সরওয়ার বাবলার পুরোনো বিরোধের জেরেই এই হামলার ঘটনা ঘটে। মূল লক্ষ্য ছিল সরওয়ার বাবলা, তবে গুলির আঘাতে বিএনপি প্রার্থীও আহত হন। এর আগে গত ৩০ মার্চ ভোর রাতে বাকলিয়া এক্সেস রোড চকবাজার থানার চন্দনপুরার মুখে প্রাইভেট কারে বাবলাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয়েছিল। এতে বখতেয়ার হোসেন মানিক ও মো. আব্দুল্লাহ নামে দুজন নিহত হন। সেসময় ঘটনাস্থল থেকে কৌশলে পালিয়ে গিয়ে প্রাণে রক্ষা পান সরোয়ার হোসেন বাবলা।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, সরকার দেশীয় শিল্পের বিকাশে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি চলমান ব্র্যান্ড সংকট থেকে উত্তোরণের জন্য এটলাসের নিজস্ব ব্র্যান্ড ‘এটলাস ইভি’ ইলেকট্রিক বাইক উৎপাদন ও বিপণনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বুধবার সকালে টঙ্গীর এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেড কারখানায় নিজস্ব ব্র্যান্ড ‘এটলাস ইভি’ নামক ইলেকট্রনিক মোটরসাইকেল বাজারজাতকরণ কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্তিত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
শিল্প উপদেষ্টা আরও বলেন, বর্তমান সরকার পরিবেশবান্ধব যানবাহন ব্যবস্থা প্রবর্তনে ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটলাস বাংলাদেশের মতো একটি বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানের এই উদ্যোগটি ইলেকট্রিক ভেহিকেল সংক্রান্ত জাতীয় নীতি বাস্তবায়নে একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি কেবল আমাদের কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করবে না জীবাশ্ম জ্বালনির পেছনে ব্যয় হওয়া মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান, বাংলাদেশ ইস্পাত প্রকৌশল করপোরেশনের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল আলমসহ এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেডের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ডিলাররা। উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে উপদেষ্টা কারখানা সার্বিক কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
মুক্তিযোদ্ধা কোটায় জালিয়াতি করে ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি পাওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. কামাল হোসেনের প্রকৃত বাবা-মা নিশ্চিতে ডিএনএ টেস্টের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন দুদকের সম্মিলিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এর উপসহকারী পরিচালক মো. মনজুরুল ইসলাম মিন্টু।
অভিযুক্ত কামাল হোসেন এর আগেও নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ইউএনও এবং মাগুরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সিনিয়র সহকারী কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও চাকরি লাভসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগের উদ্দেশে মো. কামাল হোসেন তার জন্মদাতা পিতা-মাতা মো. আবুল কাশেম ও মোছা. হাবীয়া খাতুনের পরিবর্তে আপন চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আহসান হাবীব ও চাচী মোছা. সানোয়ারা খাতুনকে পিতা-মাতা হিসেবে চিত্রিত করে জালিয়াতি করেছেন। এই কৌশলের মাধ্যমে তিনি ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের কোটায় প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি লাভ করেন।
দুদক জানায়, মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামি মো. কামাল হোসেনসহ তার প্রকৃত পিতা মাতা ও তার চাচা-চাচীর ডিএনএ টেস্ট করার জন্য কমিশনের কাছে আবেদন দাখিল করেন। কমিশন তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে আসামি মো. কামাল হোসেনসহ তার প্রকৃত পিতা মাতা ও তার চাচা-চাচীর ডিএনএ টেস্ট করার জন্য অনুমোদন দিয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে আসামি মো. কামাল হোসেনসহ তার প্রকৃত পিতা মাতা ও তার চাচা-চাচীর ডিএনএ টেস্ট করবেন।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটারদের ঠিকানা পরিবর্তনের শেষ সময়সীমা ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, ভোটার তালিকায় ঠিকানা পরিবর্তন বা স্থানান্তরের আবেদন করতে হবে আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জারি করা অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা চূড়ান্তকরণের আগে যেসব ভোটার তাদের আবাসস্থল পরিবর্তন করেছেন, তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নতুন ঠিকানায় ভোটার স্থানান্তরের আবেদন করতে পারবেন।
ইসির আদেশ অনুযায়ী, রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তারা ১৭ নভেম্বরের মধ্যে দাখিলকৃত সব আবেদন যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন বা বাতিলের সিদ্ধান্ত দেবেন।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণা হতে পারে। নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ধরা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, “ভোটার তালিকার সঠিকতা বজায় রাখা নির্বাচনের অন্যতম পূর্বশর্ত। তাই স্থানান্তর ও সংশোধন প্রক্রিয়া শেষ না করে আমরা তফসিল ঘোষণা করব না।”
উল্লেখ্য, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যে প্রশাসনিক প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোকেও প্রার্থী বাছাই ও জোট গঠনের প্রাথমিক কাজ শুরু করতে দেখা যাচ্ছে।
হাটহাজারীতে জেলা প্রশাসনের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে প্রায় দশ কোটি টাকার সরকারী সম্পদ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালের দিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ট্রেজারী শাখা, ফ্রন্ট ডেস্ক ও ই-সেবা কেন্দ্র)মো.ইসরাফিল জাহান এর নেতৃত্বে হাটহাজারী পৌরসভার কাচারি সড়কে পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযান সূত্রে জানা যায়,দীর্ঘ বছর ধরে একটি ভূমিদস্যু চক্র চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের (ছয় শতক) এসব সম্পদ অবৈধভাবে দখল করে দাপটের সাথে স্থাপনা নির্মাণ করে তাতে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলো। ঘটনারদিন সকালে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে জেলা পরিষদের লোকজন পর্যাপ্ত পরিমাণ জেলা ও হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশ নিয়ে সংশ্লিষ্টরা ঘটনাস্থলে আসলে প্রথমে কয়েকজন দোকানদারের বাঁধার মুখে পড়েন। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসার পর উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। এসময় অভিযান পরিচালনা করে অবৈধভাবে নির্মিতব্য স্থাপনা ভেঁঙ্গে গুড়িয়ে দিয়ে টিনের ঘেরা তৈরী করে তাতে জেরা পরিষদের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়া হয়। এ অভিযানের সরকারী প্রায় দশ কোটি টাকার সম্পদ পুনরুদ্ধার হয়েছে বলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে কিছু ব্যবসায়ীরা প্রশাসন তাদের গায়ের জোরে আইন বর্হিভুতভাবে তাদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন।
অভিযান পরিচালনার সময় চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার, হাটহাজারী উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহেদ আরমান,মডেল থানার ওসি মনজুর কাদের ভুঁইয়া, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যগণ এবং সরকারি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জানতে চাইলে অভিযানে নেতৃত্বদানকারী চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ট্রেজারী শাখা, ফ্রন্ট ডেস্ক ও ই-সেবা কেন্দ্র)মো.ইসরাফিল জাহান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এ প্রতিবেদককে জানান, "সরকারি জায়গা কেউ দখল করে রাখতে পারবেনা, অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
আজ সন্ধ্যায় আকাশে দেখা যাবে বছরের অন্যতম আকর্ষণীয় পূর্ণচন্দ্র ‘বিভার মুন’ বা ‘বিভার সুপারমুন’। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টা ১৯ মিনিটে পূর্ণতা পাবে এ চাঁদ।
নভেম্বর মাসের এই পূর্ণিমা ‘বিভার মুন’ নামে পরিচিত। নাসা জানিয়েছে, এটি ২০২৫ সালের দ্বিতীয় সুপারমুন। এর আগে অক্টোবর মাসে দেখা গিয়েছিল ‘হারভেস্ট সুপারমুন’।
আজকের সুপারমুন সাধারণের তুলনায় বড় ও উজ্জ্বল দেখাবে। এর কারণ হলো চাঁদ পৃথিবীর তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে থাকবে— প্রায় ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৯৮০ কিলোমিটার দূরত্বে।
নাসা জানিয়েছে, আজ চাঁদ বিকেল ৫টা ৩১ মিনিটে উঠবে এবং ঠিক সূর্যাস্তের পরই পূর্ব আকাশে এর সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে। দূরবীন বা টেলিস্কোপ ব্যবহার করলে চাঁদকে আরও স্পষ্টভাবে দেখা সম্ভব।
আজকের পূর্ণিমার সঙ্গে আকাশে আরও কিছু নাক্ষত্রিক সৌন্দর্যও দেখা যাবে। এর মধ্যে রয়েছে প্লাইয়েডস এবং হাইডস নক্ষত্র ক্লাস্টার, ওরিয়ন নক্ষত্রপুঞ্জ এবং বৃহস্পতি গ্রহ।
‘বিভার মুন’ নামের উৎপত্তি নেটিভ আমেরিকান ও ইউরোপীয় ঐতিহ্য থেকে। নভেম্বর মাসে বীবররা শীতের প্রস্তুতিতে বাঁধ মজবুত করত এবং খাবার মজুত করত। তাই এই সময়ের পূর্ণিমাকে তাদের নামে অভিহিত করা হয়। কিছু সংস্কৃতিতে এটি ‘ফ্রস্ট মুন’, ‘ফ্রিজিং মুন’ বা ‘ট্রেডিং মুন’ নামেও পরিচিত।
নাসা জানিয়েছে, যদি আজ আকাশ মেঘমুক্ত থাকে, তবে বাংলাদেশের যেকোনো স্থান থেকে এই উজ্জ্বল এবং পূর্ণ সৌন্দর্যের বিভার সুপারমুন দেখা সম্ভব হবে।