বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট ২০২৫
৩০ শ্রাবণ ১৪৩২

হাওর অঞ্চলে বালাইনাশকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে জাতীয় কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১৪ আগস্ট, ২০২৫ ২১:২২


হাওর অঞ্চলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ রক্ষায় কৃষিখাতে বালাইনাশক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ সীমিতকরণে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণের লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় কমিটি'র সভা আজ বিকালে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা হাওরের পরিবেশগত ভারসাম্য, মাছের প্রজননক্ষেত্র ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বালাইনাশক ব্যবহারের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন এবং বিকল্প কৃষি চর্চা প্রসারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

বক্তারা বলেন, কৃষি ও পশুপালনে ব্যবহৃত বালাইনাশক মাছসহ জলজ বাস্তুতন্ত্র, প্রাণিসম্পদ ও মানবস্বাস্থ্যে বহুমাত্রিক ঝুঁকি তৈরি করছে।
বৃষ্টি ও বাতাসের মাধ্যমে বালাইনাশক নদী, খাল ও পুকুরে প্রবেশ করে মাছ মেরে ফেলছে, প্রজনন হ্রাস, খাদ্যশৃঙ্খল ব্যাহত ও পুষ্টিমান কমিয়ে দিচ্ছে।

বাংলাদেশে মাছ, দুধ, ডিম ও মাংসে এ ধরনের রাসায়নিকের অবশিষ্টাংশ শনাক্ত হয়েছে, যা দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করছে।

সভায় কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধি, মাঠপর্যায়ে প্রশিক্ষণ প্রদান, স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে বালাইনাশক ব্যবহারের পর্যবেক্ষণ জোরদারকরণের গুরুত্বারোপ করা হয়। বক্তারা এসময় শিল্প দূষণ নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি এবং এর প্রতিকার নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

হাওর অঞ্চলে বালাইনাশক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে স্বল্পতম সময়ে অ্যাকশন প্ল্যান তৈরিপূর্বক সমন্বিতভাবে তা বাস্তবায়নের জন্য সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এ সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো তোফাজ্জেল হোসেন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড.ফাহমিদা খানম, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ফারাহ শাম্মী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা নওয়ারা জাহান, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো রেজা- উন- নবী, ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার মো মোখতার আহমেদ, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো জিয়াউদ্দীন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শাহীনা ফেরদৌসী, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো আবদুর রউফ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো আবু সুফিয়ান, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক অনুরাধা ভদ্র, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান পানি ব্যবস্হাপক মো মাসুদ করিম, বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক মো রোকন- উল- হাসান, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক রাজিনারা বেগম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কাজী রফিকুল ইসলাম, কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ক্যাব) এর সাংগঠনিক সম্পাদক প্রফেসর ড. সৈয়দ মিজানুর রহমান,বারসিকের সমন্বয়ক মো জাহাঙ্গীর আলমসহ অন্যান্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।


শ্রম আদালতের মামলার জট নিরসনে সকল পদক্ষেপ নেওয়া হবে : শ্রম সচিব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গাজীপুর প্রতিনিধি

শ্রম আদালতের বিচারকদের অংশগ্রহণে "Labour Justice Source: A Training for Judges" শীর্ষক ৪ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেন, শ্রম আদালতে যে মামলার জট রয়েছে তা দ্রুত আন্তরিকতার সহিত নিষ্পত্তি করতে হবে। শ্রম আদালতগুলিতে জনবল ঘাটতি পূরনসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট প্রদানে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সকল পদক্ষেপ নেওয়া হবে।আজ বৃহস্পতিবার আইএলও (ILO)-এর উদ্যোগে গাজীপুরে অনুষ্ঠিত শ্রম আদালতের বিভিন্ন বিচারকদের জন্য আয়োজিত এক প্রশিক্ষণে শ্রম সচিব এ কথা বলেন।

শ্রম সচিব বলেন, শ্রমিক-মালিক বিরোধ ও সংশ্লিষ্ট মামলাসমূহ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরেন। এক্ষেত্রে বিভিন্ন জেলার শ্রম আদালতের বিচারকদের দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির তাগিদ দেন। প্রয়োজনে তাদের সকল লজিস্টিক সাপোর্ট দেওয়া হবে।

শ্রম সচিব আরও বলেন, শ্রম আদালতে মামলা জট কমাতে আরও শ্রম আদালতের সংখ্যা বাড়াতে হবে। মামলার সংখ্যা কমাতে বিচারকদের উদ্দ্যোগী হওয়া প্রয়োজন। ইতোমধ্যে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইএলও কনভেনশন C155, C187 এবং কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি সহিংসতা ও হয়রানি বন্ধে C190 অনুস্বাক্ষরের প্রক্রিয়া চলছে। অনুস্বাক্ষরের পর কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি বন্ধে আইনি কাঠামো দান করে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।

এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শ্রম আইন ও ন্যায়বিচার প্রক্রিয়ার দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উপস্থিতরা বলেন। তারা আশাবাদ ব্যাক্ত করেন যে, এ ধরনের প্রশিক্ষণ শ্রম খাতের উন্নয়ন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

প্রশিক্ষণে আইএলও-এর প্রতিনিধি, শ্রম আদালতের বিচারকবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।


তামাকমুক্ত রেল পরিষেবায় বিশেষ ভূমিকা রাখায় ২২ কর্মচারী পুরস্কৃত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ধূমপান ও তামাকমুক্ত রেল পরিষেবা গড়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা রাখায় ২২ কর্মকর্তা/কর্মচারীকে পুরস্কৃত করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
বৃহষ্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর রেল ভবনে “বাংলাদেশ রেলওয়েকে তামাকমুক্ত করার উদ্যোগ” শীর্ষক প্রকল্পের উদ্যোগে এক বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এতে ধূমপান ও তামাকমুক্ত রেল পরিষেবা গড়ে তুলতে রেল স্টেশনে তামাক সচেতনতা ও প্রতিরোধ কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য আরএনবি ও জিআরপি (পুলিশ) এবং রেলওয়ের ২২ কর্মকর্তা/কর্মচারীকে সম্মাননা পদক ২০২৫ প্রদান করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে রেলওয়ে কর্মীদের উৎসাহিত করে দেশের সকল স্টেশন ও ট্রেনকে ধূমপান ও তামাকমুক্ত করার প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হবে বলে আয়োজকরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রাপ্তরা হলেন-
মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম মজুমদার, উপসচিব (বাজেট অধিশাখা), রেলপথ মন্ত্রণালয়; মোঃ জাকির হোসেন, পরিচালক ট্রাফিক (পরিবহণ), বাংলাদেশ রেলওয়ে; মোঃ আনসার আলী, উপ-পরিচালক (টিসি), বাংলাদেশ রেলওয়ে; গৌতম কুমার কুণ্ডু, বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (পাকশী), বাংলাদেশ রেলওয়ে; মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (লালমনিরহাট), বাংলাদেশ রেলওয়ে; ফারহান মাহমুদ, এডিসিও (চট্টগ্রাম), বাংলাদেশ রেলওয়ে; মোহাম্মদ আমিনুল হক, এসিও-১ (ঢাকা), বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে “বাংলাদেশ রেলওয়েকে তামাকমুক্ত করার উদ্যোগ” শীর্ষক প্রকল্পের বেজলাইন ও এন্ডলাইন সার্ভের তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন ও এর বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান আর্ক এর নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ ফাহিমুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মোঃ আফজাল হোসেন। এছাড়া রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা/কর্মচারীরা এতে অংশগ্রহণ করেন।
ধূমপান ও তামাকের ব্যবহার যাত্রীসেবার মানের ওপর যেসব নেতিবাচক প্রভাব ফেলে অনুষ্ঠানে তার বিস্তারিত আলোচনা করেন তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের অপব্যবহার রোধে ভূমিকা পালনকারী সাবেক ও বর্তমান সরকারী ও বেসরকারী কর্মকর্তারা। তাঁরা রেলওয়ের প্রতিটি স্টেশন, প্ল্যাটফর্ম এবং ট্রেনে ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানান। এ লক্ষ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, কঠোর নজরদারি এবং আইন প্রয়োগের পাশাপাশি যাত্রী ও কর্মীদের মধ্যে ইতিবাচক আচরণ গড়ে তোলার ওপর তাঁরা গুরুত্বারোপ করেন।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ ফাহিমুল ইসলাম প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, “রেলপথ জনগণের জন্য একটি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চায়। তাই ধূমপানমুক্ত পরিবেশ তৈরিতে আমরা কোনো ধরনের শৈথিল্য দেখাবো না।”
অনুষ্ঠানে সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও উপস্থিত অতিথিবৃন্দ ধূমপান ও তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।


উপদেষ্টা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

উপদেষ্টা পরিষদের সভা আজ (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এতে সভাপতিত্ব করেন।


প্লট-ফ্ল্যাট বরাদ্দে সচিব, এমপি, মন্ত্রী, বিচারপতিসহ যাদের কোটা বাতিল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

অন্তর্বর্তী সরকারের গত ১ বছরে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমে এসেছে বড় পরিবর্তন। বৈষম্যমূলক প্লট-ফ্ল্যাট কোটাব্যবস্থা বাতিল, দীর্ঘদিনের অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত, শহীদ পরিবার ও নিম্ন আয়ের সরকারি কর্মচারীদের জন্য আবাসন প্রকল্পসহ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষণে নানা উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়।

গতকাল বুধবার এক প্রেস রিলিজের মাধ্যমে এ তথ্য জানায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

প্রেস রিলিজ অনুযায়ী, রাজউক ও জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের বরাদ্দ বিধিমালা সংশোধন করে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, বিচারপতি, সরকারি কর্মকর্তা, আইনজীবী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীর জন্য নির্ধারিত কোটা বাতিল করা হয়েছে। একই পরিবারের একাধিক সদস্যকে প্লট বা ফ্ল্যাট দেওয়ার সুযোগও বন্ধ হয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০২৪ মেয়াদে রাজউকের বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে হাইকোর্টের নির্দেশে তিন সদস্যের কমিটি তদন্ত করছে। ধানমন্ডিতে নিয়মবহির্ভূতভাবে পাওয়া ১২টি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের বরাদ্দ বাতিল করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষণে শেরেবাংলা নগরের ১৭ দশমিক ৪৭ একর জমি জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরের জন্য হস্তান্তর করছে মন্ত্রণালয়। শাহবাগে একটি ও জেলাপর্যায়ে আটটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ শেষ, অন্য ৫৫ জেলায় কাজ চলছে। শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের জন্য মিরপুরে ২ হাজার ৩৮০টি ফ্ল্যাট নির্মাণের প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায়। মন্ত্রণালয় কর্তৃক আজিমপুরে নিম্ন আয়ের সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৮৩৬টি ফ্ল্যাট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া জনস্বার্থবিরোধী পাঁচটি প্রকল্প বাতিল করে ৪২৬ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছে মন্ত্রণালয়।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃক বিশেষ অডিটে ২০০৯ থেকে ২০২৪ জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ২৮২টি অনিয়ম চিহ্নত করা হয়েছে। অনিয়মে জড়িত ১১ কর্মকর্তা বরখাস্ত ও রূপপুর গ্রিন সিটি প্রকল্পে অভিযুক্ত ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা চলছে। এছাড়া বিগত ১ বছরে মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত আরও কর্মক্রম সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে প্রেস রিলিজে।


‘পুলিশের পোশাক পরা লোকদের হিন্দিতে কথা বলতে শুনি’

আপডেটেড ১৪ আগস্ট, ২০২৫ ১১:০৬
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জুলাই অভ্যুত্থানের সময় চানখাঁরপুলে ৬জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার এক সাক্ষী দাবি করেছেন, পুলিশের পোশাক পরা লোকদের ‘হিন্দি ভাষায়’ কথা বলতে শুনেছেন তিনি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ সাক্ষ্য দেওয়ার সময় নাজিমুদ্দিন রোডের শহীদ আহম্মেদ এ দাবি করেন।

গতকাল বুধবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের এই ট্রাইব্যুনালে দুটি ঘটনায় মোট ৩জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

এর মধ্যে গত বছরের ৫ অগাস্ট চানখাঁরপুলে মো. ইয়াকুব (৩৫) নিহত হওয়ার ঘটনায় সাক্ষ্য দেন তার মা রহিমা আক্তার ও শহীদ।

ইয়াকুব ছিলেন নিউমার্কেটের একটি প্রতিষ্ঠানের ডেলিভারি ম্যান। তিনি নাজিমুদ্দিন রোডের শেখ বোরহানউদ্দিন কলেজের পাশে মিলি গলির বাসিন্দা।

এ ছাড়া ওইদিন সেখানে নিহত ইসমামুল হকের (১৭) ভাই মো. মহিবুল হক ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন।

এদিন প্রসিকিউশনের পক্ষে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন বি এম সুলতান মাহমুদ, মিজানুল ইসলামসহ কয়েকজন প্রসিকিউটর।

ইয়াকুব নিহত হওয়ার ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তার মা রহিমা বলেন, ‘আমার ছেলে ৫ অগাস্ট চানখাঁরপুল নাজিমুদ্দিন রোডে আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়। গুলি লাগার বিষয়ে শুনে আমি চিৎকার করে বাসা থেকে বের হয়ে গলিতে যাই। মহল্লার লোকজন আমাকে যেতে দেয়নি। আমাকে জানায় আমার ছেলে সুস্থ আছে। তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেসময় আমার ছেলের বয়স ছিল ৩৫ বছর। প্রতিবেশীরা কান্নাকাটি শুরু করলে আমার সন্দেহ হয় আমার ছেলের কিছু হয়েছে।

‘বেলা আনুমানিক ২টার দিকে দেখি আমার ছেলের লাশ খাটিয়ায় করে গলির ভিতর নিয়ে আসে। শহীদসহ (প্রতিবেশী) অনেকেই ছিল। ছেলের শরীর থেকে তখনও খাটিয়া বেয়ে অনেক রক্ত পড়ছিল। তারপর কাপড় সরিয়ে দেখি পেটে গুলি লেগে পছন দিয়ে বেরিয়ে গেছে। ভুঁড়ি বেরিয়ে গেছে, রক্ত পড়া থামছে না।’

তিনি বলেন, তিনি পরবর্তীতে টিভি নিউজ, ভিডিও এবং বিভিন্ন মাধ্যমে দেখেন যারা গুলি করেছে তারা ছাপা কাপড়ের পোশাক পরিহিত ছিল। পুলিশের গুলিতে তার ছেলে পড়ে যান। প্রতিবেশী শহীদ এই দৃশ্য তার মোবাইলে ধারণ করেন।

রহিমা তার ছেলের হত্যাকাণ্ডে জড়িত এবং নির্দেশদাতা সবার বিচার চান। সেসময় তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নাম বলেন নির্দেশদাতা হিসেবে।

তার পরে সাক্ষ্য দেন তাদের প্রতিবেশী শহীদ আহম্মেদ (৪০)।

তিনি বলেন, ‘আমি, আমার ভাতিজা ইয়াকুব, আমার ছেলে সালমান, এলাকার রাসেল, সুমন, সোহেলসহ আরও অনেকে বেলা আনুমানিক ১১টা থেকে ১১.৩০টার মধ্যে গণভবনের উদ্দেশে রওনা দিই। আনুমানিক ১১.৩০টার সময় আমরা চানখাঁরপুল এলাকায় পৌঁছলে, সেখানে হাজার হাজার লোক চারদিক থেকে জড়ো হচ্ছিল।

‘তখন দেখলাম চানখাঁরপুল মোড়ের উল্টা পাশে অনেক পুলিশ, ছাপা পোশাকধারী পুলিশ ছিল। পুলিশের পোশাক পরিহিত লোকদের হিন্দি ভাষায় কথা বলতে শুনি।’

তিনি বলেন, পুলিশ তাদের বাধা দেয় এবং তাদের লক্ষ্য করে ফাঁকা গুলি করে। ওই সময় তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। আবার তারা সামনে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে গুলি করে।

‘আমার পাশের একজনের পায়ে গুলি লাগে। তাকে আমি সরাচ্ছিলাম। তখন আমাকে একজন বলে আপনার ভাতিজা ইয়াকুবের গায়ে গুলি লেগেছে। আমি ওই ছেলেকে আরেকজনের কাছে রেখে আমার ভাতিজার কাছে যাই। আরও দুইজনসহ ভাতিজাকে অটোরিকশায় করে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যাই। হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার বলেন যে ইয়াকুব মারা গেছে।’

শহীদ বলেন, পরে জেনেছেন শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী গুলি করার নির্দেশ দিয়েছেন। ডিএমপির মো. ইমরুল, ইন্সপেক্টর আরশাদের উপস্থিতিতে কনস্টেবল সুজন, নাসিরুল, ইমাজ গুলি করেছিল। আরো অনেকেই ছিল।

এরপর সাক্ষ্য দেন মো. মহিবুল হক (২১), তার বাড়ি চট্টগ্রামে।

তিনি বলেন, ‘আমি সেদিন বাড়িতে ছিলাম। আমার ভাই ইসমামুল হক ঢাকা চানখাঁরপুলে শহীদ হয়েছে। দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে আমার ভাই শহীদ ইসমামুলের মোবাইল থেকে জনৈক ব্যক্তি আমাকে কল করে জানায় যে আমার ভাই পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি আছে।’

ইসমামুল চকবাজার গফুর সওদাগরের দোকানে কাজ করতেন জানিয়ে মুহিবুল বলেন, ‘আমি তাকে ফোন করলে তিনি হাসপাতালে গিয়ে ইসমামুলের খোঁজ খবর নেন। যান চলাচল বন্ধ থাকায় আমরা সেদিন ঢাকায় আসতে পারিনি। পরের দিন সকাল বেলা আমি, আমার আম্মা দুই আত্মীয়কে নিয়ে ঢাকায় আসি। ঢাকায় এসে জানতে পারি, আমার ভাইকে মিটফোর্ড হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।’

‘আনুমানিক সন্ধ্যা ৬টার দিকে আমরা গফুর সওদাগরকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাই। সেখানে আমার ভাইয়ের সঙ্গে আমাদের সামান্য কথাবার্তা হয়। সে সিসিইউতে ছিল। তার অবস্থার অবনতি হলে রাত ১০টার দিকে তাকে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। ৭ তারিখ সকালে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সেদিন বিকেল ৪টার দিকে সে ইন্তেকাল করে।’

চিকিৎসকরা তার ভাইয়ের ময়নাতদন্ত করেননি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে ইসমামুলের লাশ নিয়ে চট্টগ্রামে নিজ বাড়িতে যাই। ঢাকা থেকে সন্ধ্যা ৬টায় রওনা দিয়ে রাত ২টায় চট্টগ্রামে নিজ বাড়িতে পৌঁছি।’

পরদিন জানাজা শেষে ইসমামুলের মরদেহ নিজ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয় বলে মহিবুল ট্রাইব্যুনালকে জানান।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, এডিসি আক্তারুল ইসলাম, ইমরুল এবং আরশাদ এর নির্দেশে সুজন হোসেন, নাসিরুল ইসলাম, ইমাজ হাসান ইমনসহ আরও অনেকে গুলি করেছেন বলে তিনি তার সাক্ষ্যে বলেন।

ভাইয়ের হত্যাকারী এবং নির্দেশদাতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন মহিবুল।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের দিন ৫ অগাস্ট চাঁনখারপুল এলাকায় শিক্ষার্থী শহীদ আনাসসহ ৬ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা গত ১১ এপ্রিল এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনে জমা দেয়। নথিপত্র পর্যালোচনা করে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ২৫ মে ফরমাল চার্জ আকারে তা দাখিল করেন।

অভিযোগ আমলে নিয়ে সেদিন ট্রাইব্যুনাল হাবিবুর রহমানসহ পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, চানখাঁরপুল এলাকায় আসামিরা নিরস্ত্র ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর ‘প্রাণঘাতী’ অস্ত্র ব্যবহার করে শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক এবং মানিক মিয়াকে গুলি করে হত্যা করে।

তদন্ত সংস্থা এই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ট্রাইব্যুনালে তদন্ত সংস্থার দেওয়া এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদনটি ৯০ পৃষ্ঠার। তদন্ত করতে সময় লেগেছে ৬ মাস ১৩ দিন।

তদন্ত প্রতিবেদনে ৭৯ সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। এছাড়া ১৯টি ভিডিও, পত্রিকার ১১টি রিপোর্ট, ২টি অডিও, বই ও রিপোর্ট ১১টি এবং ৬টি ডেথ সার্টিফিকেট সংযুক্ত করা হয়েছে।

এ মামলায় গত সোমবার সূচনা বক্তব্যে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম চানখাঁরপুলের ঘটনাকে পদ্ধতিগত অপরাধ হিসেবে তুলে ধরেন। সেখানে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। গত মঙ্গলবার দুজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।


সাদাপাথরে লুটপাট, পরিদর্শনে দুদক টিম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ থেকে লুট হওয়া পাথর লুটের ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (১৩ আগস্ট) ভোলাগঞ্জের সাদাপাথরে পরিদর্শনে যায় সিলেট সমন্বিত জেলা কার্যালয় দুদকের উপপরিচালক নাজমুস সাদাত রাফির নেতৃত্বাধীন টিম। দুদকের জনসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম এই তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের কিছু অসাধুদের যোগসাজশে সাদাপাথর এলাকার পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতিসাধন করা হয়েছে। ওই পর্যটন এলাকায় দুদকের সিলেট জেলা সমন্বিত কার্যালয় অভিযান পরিচালনা করছে। অভিযান শেষে এ নিয়ে বিস্তারিত জানানোর আশ্বাস দেন তিনি।

প্রাকৃতিকভাবে পাহাড়ি ঢলের তোড়ে ধলাই নদের উৎসমুখে ভেসে আসা পাথরের বিশাল স্তুপের কারণে প্রায় পাঁচ একর জায়গা জুড়ে সিলেটের ভোলাগঞ্জ পর্যটনের স্থান হিসেবে গত কয়েক বছরে বেশ সাড়া ফেলেছিল। তবে গত এক বছরে সে জায়গাটি থেকে অবাধে পাথর লুটের ঘটনায় মনোরম সৌন্দর্যের এই স্থানটি বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভোলাগঞ্জের সাদা পাথরের ৭৫ শতাংশই গায়েব। আছে মাত্র ২৫ শতাংশ। একসময় প্রচুর পরিমাণে সাদা পাথর দেখা যেত বলে জায়গাটার নামই হয়ে যায় ‘সাদাপাথর’। কিন্তু বর্তমানে পর্যটনকেন্দ্রটি অস্তিত্ব সংকটে।

এর আগে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাদাপাথর নামক ওই স্থান থেকে পাথর লুট হওয়ার সংবাদ প্রকাশ হলে তা সারা দেশে আলোচিত হয়। দেশের বিভিন্ন মহল থেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ধংস করার প্রতিবাদ জানানো হয়।


৩৩ প্রকার ওষুধের দাম কমল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

৩৩ প্রকার অত্যাবশ্যকীয় ওষুদের দাম কমিয়েছে এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডে (ইডিসিএল)। গতকাল বুধবার কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামাদ মৃধা। তিনি জানান, সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্য কমানো হয়েছে।

সামাদ মৃধা বলেন, সিন্ডিকেট ভেঙে র-ম্যাটেরিয়াল যৌক্তিক মূল্যে কেনার ব্যবস্থা করায় ব্যয় কমেছে। ফলে ৩৩টি ওষুধের দাম ১০-৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো গেছে।

দাম কমেছে অ্যান্টিবায়োটিক, নিউমোনিয়া, সর্দি-জ্বর, উচ্চরক্তচাপ, গ্যাস্ট্রিক আলসার, কৃমিনাশক, ব্যথানাশক, হাঁপানি ও ভিটামিন সংক্রান্ত ওষুধের, দাম কমিয়েছে বলে জানান তিনি।

ইডিসিএল জানায়, ওমিপ্রাজল ক্যাপসুল, কেটোরোলাক ইনজেকশন, অনডানসেট্রন ইনজেকশন, সেফট্রিয়াক্সোন ও সেফটাজিডিম ইনজেকশনের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো হয়েছে। মেরোপেন ওমিপ্রাজল ইনজেকশনের দামও হ্রাস পেয়েছে।

এছাড়া মনটিলুকাস্ট ট্যাবলেটের দাম ১০ টাকা ৬৭ পয়সা থেকে পাঁচ টাকা করা হয়েছে।

গ্রামীণ ক্লিনিকে তালিকাভুক্ত ৩২টি ওষুধের মধ্যে ২২টির দামও কমানো হয়েছে। গ্যাস্ট্রিকের অ্যান্টাসিড, প্যারাসিটামল, সালবিউটামল, অ্যালবেনডাজল, ক্লোরামফেনিকল আই ড্রপ, মেটফর্মিনসহ বিভিন্ন ওষুধের দাম কমানো হয়েছে।

কর্মী ছাঁটাই প্রসঙ্গে সামাদ মৃধা বলেন, ‘ইডিসিএলের উৎপাদনক্ষমতা অনুযায়ী দুই হাজারের বেশি অতিরিক্ত জনবল ছিল।

তারা সবাই অদক্ষ কর্মী, অনেকের জাল সনদ পাওয়া গেছে। তারা কোনো কাজ করত না। এই অদক্ষ জনবলের মধ্যে ৭২২ জনকে ছাঁটাই করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির স্বার্থে আরও ১ হাজারের বেশি জনবল ছাঁটাই করতে হবে। যাদের ছাঁটাই করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।


দেশের শতকরা ৯০ ভাগ বিরোধের উৎস্য ভূমি: আলী ইমাম মজুমদার

আপডেটেড ১৩ আগস্ট, ২০২৫ ২২:১৫
মুহাম্মদ আবু তাহের ভূঁইয়া, ফেনী প্রতিনিধি

দেশের শতকরা ৯০ ভাগ বিরোধের উৎস্য ভূমি। এটা কিন্তু খুব কমই প্রতিকার নিতে পারছি আমরা। এটা অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে আমারও দায়িত্ব রয়েছে। এক্ষেত্রে জনগণেরও সচেতনতা প্রয়োজন। ফেনীতে অনুষ্ঠিত অটোমেটেড ভূমি সেবা সিস্টেমে তথ্য সন্নিবেশ ও সংশোধন সংক্রান্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয় ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।

বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে ফেনী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে অটোমেটেড ভূমি সেবা সিস্টেমে তথ্য সন্নিবেশ ও সংশোধন সংক্রান্ত এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। পাইলট প্রকল্প হিসেবে এটি ফেনী থেকে কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপি, বাংলাদেশ এর আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার।

ফেনী জেলা প্রশাসন, ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্প, ভূমি মন্ত্রণালয় ও ইউএনডিপি বাংলাদেশ এর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম। আলোচক হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো: এমদাদুল হক চৌধুরী, ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্প এর প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্ম সচিব মো: পারভেজ হাসান বিপিএএ।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব, সাংবাদিক আবু তাহের, ফেনী আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট নুরুল আমিন খান, ফেনী সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজিব তালুকদার, ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুলতানা নাসরিন কান্তা, ফেনী জেলা জামায়াতের আমীর মুফতি আব্দুল হান্নান, ফেনী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, বৃহত্তর নোয়াখালীর ভূমি বিষয়ক সার্চ অফিসার সরোয়ার উদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ফাহমিদা হক প্রমূখ।

কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন জেলার ভূমি বিভাগ, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ছাত্র প্রতিনিধি সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।


স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে বাংলাদেশ এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত নয় : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সচিবালয় প্রতিবেদক

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পথে রয়েছে, কিন্তু এই পদক্ষেপটি আমরা গত সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের উত্তরাধিকার হিসেবে গ্রহণ করেছি। তিনি বলেন, গত সরকারের সময়ে প্রকাশিত জিডিপি, ব্যক্তিগত আয়, মাতৃস্বাস্থ্য ও অন্যান্য সামাজিক সূচকগুলো বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। বাস্তবিক অর্থে,স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে বাংলাদেশ এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত নয়।

উপদেষ্টা আজ বুধবার (১৩ আগষ্ট) প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি) কনফারেন্স রুমে নাগরিক উদ্যোগ ও পিপলস হেলথ মুভমেন্ট আয়োজিত "বাংলাদেশের ভবিষ্যত নির্ধারণী উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণ ও দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বিষয়ে সতর্ক পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন"- শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পরিসংখ্যান বহন করলেও তা বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। আগামী ২০২৬ সালের নভেম্বর মাসে আমাদের দেশের উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা গ্রহণের সময় আসবে, এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে তা অনুযায়ী নিয়ম মেনে প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, এলডিসি উত্তরণের ফলে শুল্ক ও জিএসপি সুবিধার প্রভাব কোথায় বৃদ্ধি পাবে এবং কোথায় হ্রাস পাবে, তা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, বিদেশ থেকে স্বল্পমূল্যে গরুর মাংস আমদানি করলে দেশীয় গবাদিপশুর বাজারে প্রভাব পড়বে এবং লাখ লাখ খামারি, বিশেষ করে গরীব মহিলারা যারা গরু লালন-পালন করে উদ্যোক্তা হিসেবে অবদান রাখছেন, তাদের ক্ষতি হবে।

উপদেষ্টা বলেন, “আমরা বিদেশ থেকে মাংস আমদানি কমানোর জন্য চেষ্টা করছি। কারণ, আমদানি করা মাংসের মাধ্যমে জুনোটিক রোগ প্রবেশের ঝুঁকি রয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, সাগরের সি উইড ও কুচিয়া রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ হিসেবে আমাদের আমদানি হ্রাস করতে হবে এবং দেশীয় উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।

এসময় আরো বক্তৃতা করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, থার্ড ওয়ার্ল্ড নেটওয়ার্কের জেনেভা ভিত্তিক লিগ্যাল অ্যাডভাইজার ও সিনিয়র রিসার্চার সানিয়া রিড স্মিথ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. জাহেদ মাসুদ, অ্যাডভোকেট তাসলিমা জাহান প্রমুখ। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নাগরিক উদ্যোগের কো-অর্ডিনেটর বারাকাত উল্লাহ মারুফ।


ডিজিটাল মাধ্যমে সক্রিয় থেকে অপতথ্যের মোকাবিলা করুন : তথ্য সচিব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

তথ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আরও সক্রিয় হয়ে অপতথ্য ও গুজবের বিরুদ্ধে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রের নীতি, উন্নয়ন কর্মসূচি ও সাফল্যের প্রচারে তথ্য অধিদপ্তর প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও এই দায়িত্ব নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে পালন করতে হবে।

বুধবার তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ‘তথ্য অধিদপ্তরের কার্যক্রম অধিকতর দৃশ্যমান করার লক্ষ্যে’ আয়োজিত আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. নিজামুল কবীর।

তথ্য সচিব বলেন, সরকার যেসব জনমুখী কর্মসূচি গ্রহণ করছে, সেগুলো জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে তথ্য অধিদপ্তরের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যারা সরকারের বার্তা জনগণের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছে দেন, তারাই প্রথম চালিকাশক্তি। এখন ডিজিটাল মাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থাকা সময়ের দাবী।

বর্তমানে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অপতথ্য ও গুজব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বলেও অভিযোগ করেন মাহবুবা ফারজানা। তিনি বলেন, অপতথ্যের বিরুদ্ধে আপনাদেরই দক্ষ শক্তি হিসেবে কাজ করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তথ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ, সরকারের নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত ও উন্নয়ন কার্যক্রম দ্রুত প্রচার করতে হবে।

কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, আপনারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, শিক্ষিত ও দক্ষ। অপতথ্য ছড়ানো গোষ্ঠী ছোট এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা অশিক্ষিত বা সরকারের কাজ সম্পর্কে অবগত নয়। সে তুলনায় আপনারা অনেক বেশি যোগ্য।

তথ্য সচিব বলেন, নিউজ ও কনটেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে শুধু পরিসংখ্যান নয়, মানুষের জীবনে বাস্তব পরিবর্তনের দিকগুলোও তুলে ধরতে হবে। এজন্য মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট, ছোট ভিডিও, লাইভ কভারেজ এবং সময়োপযোগী গল্প বলার কৌশল প্রয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন ।

তরুণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে মাহবুবা ফারজানা বলেন, আপনারা ইয়াং স্টার। আপনারা অবশ্যই পারবেন। প্রচার-প্রচারণার মান উন্নয়ন করুন। লেখার মান, বলার মান উন্নত করুন। প্রতিটি সংবাদ যেন সরকারের সাফল্যের জীবন্ত চিত্র হয়।

তথ্য সচিব আরও বলেন, সংবাদ শুধু নয়, তথ্য হচ্ছে বিশ্বাসের ভিত্তি। সত্যনিষ্ঠ খবর প্রচার করতে হবে। তথ্যের মাধ্যমে আস্থা গড়ে তুলেই বৈষম্যহীন দেশ গড়তে চাই।


গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে এবং জনগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছি—যাতে জনগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায়।

তিনি বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে এবং ক্ষমতার প্রকৃত মালিক—জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

আজ বুধবার কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়া ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয় (ইউকেএম) থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণ করে তিনি তাঁর বক্তব্যে এ কথা বলেন।

কুয়ালালামপুরে ইউকেএম বিশ্ববিদ্যালয় অডিটোরিয়ামে এক আনন্দমুখর পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও নেগেরি সেমবিলান দারুল খুসুস রাজ্যের সুলতান তুংকু মুহরিজ ইবনি আলমারহুম তুংকু মুনাওয়িরর কাছ থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রির সনদ গ্রহণ করেন প্রফেসর ইউনূস।
সামাজিক ব্যবসা প্রসারে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।

প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘এই স্বীকৃতি আমাকে তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণে আমার দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। গত বছর, বাংলাদেশের বহু তরুণ সাহসিকতার সঙ্গে একটি ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। শত শত ছাত্র-যুবক একটি উন্নত ভবিষ্যতের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছে—যেখানে প্রত্যেকে মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে পারবে এবং ভয়, বৈষম্য ও অবিচার থেকে মুক্ত থাকবে।’

নতুন বাংলাদেশ গড়তে তাঁর সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসে তরুণদের নেতৃত্বে সংঘটিত অভ্যুত্থান আমাদের জাতীয় পরিচয় ও ভবিষ্যৎ আশার নতুন অর্থ তৈরি করেছে। আজ আমরা এক নতুন বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছি—যেখানে শাসনব্যবস্থা হবে ন্যায়সঙ্গত, অর্থনীতি হবে সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রত্যেকে সমান সুযোগ পাবে সফল হওয়ার জন্য। আমাদের সরকার শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার দিকে মনোযোগী রয়েছে।’

সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হিসেবে সংস্কারের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সুস্পষ্ট লক্ষ্য বিস্তৃত পরিকল্পনা এবং এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়। একটি শক্তিশালী ও সহনশীল বাংলাদেশ গড়তে আমাদের অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন প্রয়োজন। এর মধ্যে রয়েছে উদ্যোক্তাদের সহায়তা, শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে বেশি বিনিয়োগ এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা।’

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘তোমরা আগামী দিনের নির্মাতা। তোমাদের ভাবনা, সৃজনশীলতা এবং দায়িত্ববোধই ভবিষ্যৎ গড়ে তুলবে—শুধু মালয়েশিয়ার নয়, সমগ্র বিশ্বের। স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যেতে গিয়ে সবসময় মনে রেখো, প্রকৃত সাফল্য শুধু নিজের জন্য অর্জনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং কীভাবে তুমি অন্যদেরও তোমার সঙ্গে উন্নতির পথে নিয়ে যাচ্ছো, সেটিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যে সেরা উত্তরাধিকার রেখে যেতে পারি তা হলো এমন এক পৃথিবী—যেখানে কাউকে পেছনে ফেলে রাখা হবে না।’

তিনি বলেন, ‘তোমাদের সিদ্ধান্ত, কাজ এবং মূল্যবোধই নির্ধারণ করবে আমরা কোথায় যাব। তাই আমি তোমাদের অনুরোধ করছি, বড় স্বপ্ন দেখো, সাহসীভাবে চিন্তা করো, এবং সেই অনুযায়ী কাজ করো। ভয় পেও না—প্রত্যেক ব্যর্থতাই সাফল্যের পথে একটি ধাপ মাত্র।’

পৃথিবীকে বদলে দেওয়ার জন্য প্রয়োজন প্রকৃত নেতার, প্রয়োজন সমস্যা-সমাধানকারীর- এ কথা উল্লেখ করে প্রফেসর ইউনূস বলেন, তোমাদের প্রত্যেকের ক্ষমতা রয়েছে অসাধারণ কিছু করার—মানুষের সেবায় ব্যবসা গড়ে তোলার, জীবন বদলে দেওয়ার মতো নতুন ধারণা সৃষ্টির, অথবা এমন নীতি প্রণয়নের যা গোটা একটি সম্প্রদায়কে উন্নতির পথে নিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, ‘আজকের অন্যতম বড় বিপদ হলো—সম্পদ ক্রমশ কয়েকজন মানুষের হাতে কেন্দ্রীভূত হচ্ছে। এর ফলে বৈষম্য ও অবিচার সৃষ্টি হয়। আমাদের যা দরকার, তা হলো একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি—যেখানে সম্পদ ন্যায্যভাবে ভাগ হবে এবং প্রত্যেক মানুষ মর্যাদা ও উদ্দেশ্য নিয়ে বাঁচার সুযোগ পাবে।’

নিজের কর্মময় জীবনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে নোবেলজয়ী প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘আমার পথচলায়—অর্থনীতিবিদ হিসেবে কাজ করা থেকে শুরু করে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা, ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম চালু করা থেকে সামাজিক ব্যবসার প্রচার—একটি বিশ্বাস সবসময় আমাকে দিকনির্দেশনা দিয়েছে, মানুষ প্রতিভা বা স্বপ্নের অভাবে দরিদ্র নয়, তারা দরিদ্র কারণ ব্যবস্থা তাদের ন্যায্য সুযোগ দেয়নি। আমাদের আর্থিক ব্যবস্থা ধনীদের সেবা করার জন্য গড়ে উঠেছে, গরিবদের জন্য নয়। এই সহজ সত্যই আমাকে ভিন্ন কিছু চেষ্টা করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। আমি এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করেছি, যেখানে সবচেয়ে দরিদ্র মানুষও ক্ষুদ্রঋণ পেতে পারে, ব্যবসা শুরু করতে পারে এবং নিজের জীবন বদলে দিতে পারে।’

বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দুই দেশ সবসময়ই দৃঢ় সম্পর্ক ভাগাভাগি করেছে—যা গড়ে উঠেছে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং উন্নতির যৌথ স্বপ্নের ওপর।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া অনেক পথ একসঙ্গে হেঁটেছে। আমরা পরস্পরের প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধির পথে সহযোগিতা করেছি। মানবসম্পদ উন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে মালয়েশিয়া আমাদের বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে পাশে থেকেছে। বছরের পর বছর ধরে আমাদের অংশীদারিত্ব বাণিজ্য, শিক্ষা, উদ্ভাবন ও জনগণের মধ্যে সম্পর্কসহ বিস্তৃত হয়েছে নানা ক্ষেত্রে। এটি প্রমাণ করে, আমরা যখন একটি যৌথ উদ্দেশ্যে একসঙ্গে কাজ করি, তখন কত কিছু অর্জন করা সম্ভব।

মালয়েশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রফেসর ইউনূস বলেন, 'বাংলাদেশ এখন এক নতুন যুগে প্রবেশ করছে, আমরা মালয়েশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা আরও গভীর করতে চাই। সম্ভাবনাময় অনেক ক্ষেত্র রয়েছে—যেমন সেমিকন্ডাক্টর শিল্প, হালাল অর্থনীতি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং উদ্যোক্তা উন্নয়ন। একসঙ্গে আমরা এমন এক ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারি—যা হবে সমৃদ্ধ, উদ্ভাবনী, স্থিতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক।’

সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করায় মালয়েশিয়া ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমি এটি গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে গ্রহণ করছি এবং আমাদের দুই মহান জাতির মধ্যে বন্ধন আরও দৃঢ় করার জন্য নতুন করে অঙ্গীকার করছি। আমি পারস্পরিক শিক্ষা ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা করি, যাতে আমরা একসঙ্গে এমন এক বিশ্ব গড়তে পারি—যেখানে প্রত্যেক মানুষ, তার পটভূমি যাই হোক না কেন, নিজের সামর্থ্য বিকশিত করার সুযোগ পাবে।’

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী জাম্ব্রি আব্দুল কাদির ও ইউকেএম ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. সুফিয়ান জুসোহ উপস্থিত ছিলেন।


ইউকেএম থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি পেলেন প্রফেসর ইউনূস 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করেছে মালয়েশিয়া ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউকেএম)।

আজ বুধবার কুয়ালালামপুরে ইউকেএম বিশ্ববিদ্যালয় অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক আনন্দঘন পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের কাছ থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রির সনদ নেন প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রফেসর ইউনূসের সামাজিক ব্যবসা প্রসারে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। এ উপলক্ষে ইউকেএম বিশ্ববিদ্যালয় অডিটোরিয়ামের ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রফেসর ইউনূস।

আজ সকালে প্রফেসর ইউনূস অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর তাঁকে স্বাগত জানান।

এসময় লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয় শান্তিতে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদকে।

অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ,নীতি-নির্ধারক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং বাংলাদেশ থেকে আগত প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীগণ উপস্থিত ছিলেন।


banner close