আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী বা স্বনির্ভর হলে তার ভরণপোষণ না দেয়ার পক্ষে রায় দিয়েছে ভারতের দিল্লি হাইকোর্ট। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত জানায়, স্থায়ী ভরণপোষণ সামাজিক ন্যায়বিচারের একটি ব্যবস্থা, এটি স্বাবলম্বী ব্যক্তিদের মধ্যে সমৃদ্ধি বা আর্থিক সমতা বিধানের হাতিয়ার নয়। খবর এনডিটিভির।
বিচারপতি অনিল ক্ষেত্রপাল এবং হরিশ বৈদ্যনাথন শঙ্করের ডিভিশন বেঞ্চ শনিবার এ রায় দেন। রায়ে বলা হয়, আইন অনুসারে ভরণপোষণ চাওয়া ব্যক্তিকে প্রমাণ করতে হবে যে, তার আর্থিক সহায়তা প্রকৃতপক্ষেই প্রয়োজন।
হিন্দু বিবাহ আইনের ধারা ২৫ এর অধীনে বিচারিক ক্ষমতা ব্যবহার করে আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং স্বাধীন আবেদনকারীকে ভরণপোষণ দেয়া যাবে না। উভয় পক্ষের আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনা করে এবং আবেনকারীর প্রকৃত আর্থিক দুর্বলতার প্রমাণ না থাকলে তা দেয়া যাবে না।
একটি ভরণপোষণের দাবি খারিজ এবং বিবাহবিচ্ছেদের অনুমতি দিয়ে ফ্যামিলি কোর্টের আদেশ পুনর্বহাল রেখে এই পর্যবেক্ষণ জানান দিল্লির হাইকোর্ট।
স্বামী আইনজীবী এবং স্ত্রী ভারতীয় রেলওয়ে ট্রাফিক সার্ভিস কর্মকর্তা। গত ২০১০ সালের জানুয়ারিতে বিয়ে করেন তারা। এর আগে তাদের দুজনেরই বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছিল। এই বিয়ের মাত্র ১৪ মাসের মধ্যেই আলাদা হয়ে যান তারা।
স্বামী অভিযোগ করেন, স্ত্রী তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন। অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করেছেন, অপমানজনক মেসেজ পাঠান, দাম্পত্য অধিকার অস্বীকার এবং পেশাগত ও সামাজিকভাবে অপদস্থ করেছেন।
অন্যদিকে স্ত্রী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের পাল্টা অভিযোগ আনেন।
পারিবারিক আদালত তাদের রায়ে বিবাহবিচ্ছেদ মঞ্জুর করে এবং উল্লেখ করে যে স্ত্রী বিবাহবিচ্ছেদে রাজি হওয়ার শর্ত হিসেবে ৫০ লাখ রুপি আর্থিক সমঝোতা দাবি করেছিলেন। এই দাবি তিনি নিজেই হলফনামা ও জেরা চলাকালীন স্বীকার করেছেন।
দিল্লি হাইকোর্টও এই পর্যবেক্ষণের সঙ্গে একমত হন এবং বলেন এতে হস্তক্ষেপের কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।
বেঞ্চ বলেন, ‘ফ্যামিলি কোর্টের এই সিদ্ধান্তকে ভিত্তিহীন বা অযৌক্তিক বলা যায় না। আপিলকারীর (স্ত্রীর) এই মনোভাবের একটি সুস্পষ্ট আর্থিক দিক ছিল। বরং আদালতে উপস্থাপিত প্রমাণের ভিত্তিতে এটি ছিল একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত।’
হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, স্ত্রী তার স্বামী এবং তার মায়ের বিরুদ্ধে ‘অবমাননাকর ভাষা’ ব্যবহার করেছিলেন। এমনকি স্বামীকে ‘অবৈধ সন্তান’ বলে আখ্যা দেন, যা আদালতের মতে মানসিক নির্যাতনের শামিল।
ভারতে ভরণপোষণের জন্য বিপুল অর্থ দাবি করার ক্রমবর্ধমান প্রবণতার মধ্যে এই রায় এলো।
বিমানবন্দর সংলগ্ন একটি কার্গো ওয়ারহাউসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বিপুল পরিমাণ আমদানি পণ্য পুড়ে গেছে। আগুনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে কয়েক ঘণ্টা পরও ধোঁয়ায় ঢেকে ছিল পুরো এলাকা। ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে, তবে ততক্ষণে কোটি টাকার পণ্য ভস্মীভূত হয়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগুনের ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বিভিন্ন সিএনএফ (ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং) এজেন্ট ও ক্ষুদ্র আমদানিকারকরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুন লাগার পরপরই ওয়ারহাউসের ভেতরে প্রচণ্ড ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ প্রথমে বিষয়টিকে ছোটখাটো শর্ট সার্কিট ভেবে গুরুত্ব দেননি। কিন্তু কিছু সময়ের মধ্যে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে কেমিক্যাল ও কাপড়ের অংশে পৌঁছালে তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
ইমুট্রান্স নামক একটি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার (আমদানি রপ্তানি শাখার ইনচার্জ) হাসান জানান, তাদের চারটি ডকুমেন্টসহ এই ১৩ হাজার ডলারের কনসাইনমেন্টটি পুড়ে গেছে।
তিনি জানান, বড় শিপমেন্ট হওয়ায় এটির ইনস্যুরেন্স করা ছিল।
তিনি বলেন, এতো বড় শিপমেন্ট সাধারণত ইনস্যুরেন্স করা থাকে। তবে ইনভয়েস, প্যাকিং লিস্ট, এয়ারবিলসহ প্রয়োজনীয় সব নথি আগুনে পুড়ে যাওয়ায় ক্ষতিপূরণের প্রক্রিয়া এখন অনেক জটিল হয়ে গেছে।
হাসান বলেন, বড় বড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেশিনারি ও ইকুইপমেন্ট সাধারণত ইনস্যুরেন্স করা হয় এবং এটি বায়ার বা আমদানিকারকের চাহিদামতোই করা হয়ে থাকে। ইনস্যুরেন্স থাকলে আন্তর্জাতিক আমদানি-রপ্তানির আইন অনুযায়ী ইনস্যুরেন্স কোম্পানি তখন এই ক্ষতিপূরণ বহন করে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, তাদের বায়ারদের এই ক্ষতির কথা জানানো হয়েছে, তবে এখনো ক্ষতিপূরণ বা ক্লেইম বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।
নিরাপত্তা ব্যবস্থায় প্রশ্ন
রয়্যাল ক্লিয়ারিং হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের মালামালের অবস্থা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। কারণ সংশ্লিষ্ট সব নথি ও তথ্যসংগ্রহ ব্যবস্থা পুড়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, এটি দেশের সবচেয়ে সংবেদনশীল এলাকা। এখান থেকে সরকারের সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়। অথচ এমন স্থানে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থায় এতটা অবহেলা অগ্রহণযোগ্য।
ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, অগ্নিকাণ্ডের শুরুতে দ্রুত পদক্ষেপ নিলে ক্ষয়ক্ষতি অনেকটা এড়ানো যেত।
তৌফিক আহমেদ নামে আরেক ক্ষতিগ্রস্ত এজেন্ট বলেন, আগুন প্রথমে ছোট ছিল, কিন্তু দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে কেমিক্যালের অংশে পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। মনে হচ্ছে ওয়ারহাউসে কার্যকর অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না।
ওয়ারহাউসটির নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা নিয়ে বহুদিন ধরেই অভিযোগ ছিল বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, বিপুল পরিমাণ দাহ্য পণ্য সংরক্ষণের পরও এখানে জরুরি ফায়ার এক্সটিংগুইশার, হাইড্রেন্ট বা প্রশিক্ষিত কর্মী ছিল না।
পুরোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি
২০১৩ সালেও একই স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। তখন দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি সীমিত ছিল।
পুরোনো কর্মীরা বলছেন, আগের ঘটনার পর নিরাপত্তা জোরদারের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তা বাস্তবে হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুরোনো কর্মচারী বলেন, তখনও ক্ষতি হয়েছিল, কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভয়াবহ। তখন সর্বোচ্চ ৩০ মিনিটের মতো আগুন ছিল। সময় মত বুঝতে পারা এবং কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে তখন এতো ক্ষতি হয়নি। কিন্তু এবার দুদিন লেগে গেল।
দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব
অগ্নিকাণ্ডে শুধু পণ্য নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজারো সিএনএফ কর্মীর জীবিকা। এই খাতে প্রায় ৩০–৪০ হাজার মানুষ দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করেন। কাজ বন্ধ থাকলে আয়ও বন্ধ। ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন, তদন্ত ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়বে।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের অনেকেই এখন ইনস্যুরেন্স কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। তবে কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না, কতটুকু ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) বেলা ২টা ২০ মিনিটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিটের সাত ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনে শতাধিক আমদানি-রপ্তানি পণ্য, গার্মেন্টসের কাঁচামাল ও বিভিন্ন কনসাইনমেন্ট সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। ঘটনার পর থেকে বিমানবন্দরের পণ্য পরিবহন কার্যক্রম আংশিকভাবে বন্ধ রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আন্তর্জাতিক অশ্লীল কন্টেন্ট তৈরি ও প্রচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এক বাংলাদেশি দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
রোববার (১৯ অক্টোবর) রাতে বান্দরবানে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) এবং এলআইসি শাখার যৌথ অভিযানে তাদের আটক করা হয়। সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান। তিনি জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের ঢাকায় আনা হচ্ছে এবং এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
গত ১৭ অক্টোবর 'দ্য ডিসেন্ট' নামের একটি নিউজ পোর্টাল “পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশি যুগল যেভাবে আন্তর্জাতিক পর্ন তারকা” শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, ওই দম্পতি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে পর্নোগ্রাফি ভিডিও তৈরি ও বিক্রি করে আসছিলেন। তাদের কনটেন্ট অনলাইনে বিক্রির মাধ্যমে মোটা অংকের অর্থ উপার্জনের তথ্যও সেখানে প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর ঘটনাটি দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার দম্পতির বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনসহ সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়ার রায়ের বাগ এলাকায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে মো. রাসেল মিয়া (৩১) নামে সিআইডির একজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
আজ (সোমবার) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে। পরে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়।
আহত রাসেল মিয়া যাত্রাবাড়ীর রইস নগর এলাকায় ভাড়া থাকেন এবং বর্তমানে ঢাকা সিআইডি হেডকোয়ার্টারে কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত আছেন।
তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা নুরুল ইসলাম জানান, আমি ওই পুলিশ সদস্যের পাশের বাড়িতে ভাড়া থাকি। আজ ভোরের দিকে মোটরসাইকেল যোগে শনির আখড়া থেকে যাওয়ার সময় অজ্ঞাত ৩/৪ জন ছিনতাইকারী তার গতিরোধ করে এবং ছুরি দিয়ে বাহুতে আঘাত করে মানিব্যাগ ও মোবাইল নিয়ে যায়। পরে আমরা খবর পেয়ে চিকিৎসার জন্য প্রথমে তাকে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল নিয়ে যাই। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, আজ সকালের দিকে সিআইডির পুলিশ সদস্যকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হলে জরুরি বিভাগে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, দেড় হাজার টাকা মেডিকেল ভাতা ও কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ করার দাবিতে সোমবার শহীদ মিনারে আমরণ অনশন ও শিক্ষক সমাবেশ কর্মসূচি পালন করছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। সকাল ১০ টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষকরা আসতে শুরু করেছেন।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই অনশন চলবে। দেশের কোনো শিক্ষক শ্রেণিকক্ষের পাঠদান বা প্রশাসনিক কাজ করবেন না। পরীক্ষার ডিউটি, অফিস ফাইল, সবকিছুই বন্ধ থাকবে।
দেলাওয়ার হোসেন আজিজী আরও বলেন, শিক্ষা উপদেষ্টা ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, কিন্তু আমরা তা প্রত্যাখ্যান করেছি। তার প্রতি আমাদের কোনো আস্থা নেই। আন্দোলন চলবে, প্রয়োজনে জাতীয়করণের এক দফা আন্দোলনে রূপ নেবে।
অন্যদিকে, এরইমধ্যে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের জন্য বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধিতে সম্মতি দিয়েছে সরকারের অর্থ বিভাগ। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে (সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা) বাড়িভাড়া ভাতা দেয়া হবে। আর এ সুবিধা আগামী ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে।
রোববার সকালে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগের উপসচিব মরিয়ম মিতুর সই করা প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, সরকারের বিদ্যমান বাজেট সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় নিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সোমবার বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানির নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধিদল বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের আন্দোলনে শামিল হবেন।
গতকাল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষকদের জাতীয়করণের দাবি পূরণ করা হবে বলে বিএনপি মহাসচিব শিক্ষকদের আশ্বাস দিয়েছেন।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন, বিএনপি মহাসচিব আমাদের বলেছেন বিএনপির পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধিদল আমাদের আন্দোলনস্থল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য দেবেন।
এর আগে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গত ১২ অক্টোবর শিক্ষকরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তিন দফা দাবি নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এই কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এর প্রতিবাদ এবং দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত সোমবার থেকে শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন।
ভারত যদি রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ না করে, তবে দেশটির পণ্যের ওপর “ব্যাপক শুল্ক” আরোপ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লির মধ্যকার টানাপোড়েন আরও বেড়েছে।
যদিও ভারতের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের এ বক্তব্য নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। সোমবার (২০ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে ব্যক্তিগতভাবে আশ্বস্ত করেছেন যে ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করবে। তিনি বলেন, “তিনি আমাকে বলেছেন, ‘আমি রাশিয়ান তেল নিয়ে আর কিছু করছি না’। কিন্তু যদি তারা (ভারত) এটা চালিয়ে যায়, তাহলে তাদের বিশাল শুল্ক দিতে হবে।”
রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখছে এমন দেশগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ক্রমেই বাড়ছে। ওয়াশিংটনের দাবি, এ ধরনের বাণিজ্য রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধ চালাতে পরোক্ষভাবে অর্থায়ন করছে।
অবশ্য ইতোমধ্যেই ভারতীয় পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক অনেক বেড়েছে। এ বছরের আগস্টে ট্রাম্প শুল্কহার বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করেছেন। আর এই শুল্ক টেক্সটাইল থেকে শুরু করে ওষুধ পর্যন্ত বিস্তৃত পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
তিনি বারবার জানিয়েছেন, রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ না করলে এসব শুল্ক বজায় থাকবে বা আরও বাড়ানো হবে। এছাড়া চলতি মাসের শুরুতেও ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি তাকে বলেছেন যে ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করবে।
তবে ভারতের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের এ বক্তব্য নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল ক্রেতা হয়ে উঠেছে ভারত।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার ইসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
তিনি বলেন, ‘আইনগতভাবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। স্থগিত দল হওয়া মানে তাদের যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত। তাই আগামী নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করতে পারবে না।’
তিনি আজ রোববার সকালে সিলেটে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার জেলা পুলিশ লাইনে নির্বাচনী দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আয়োজিত প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র প্রতীক সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতীক নির্ধারণ সংবিধান ও নির্বাচনী বিধিমালার আওতায় করা হয়। শাপলা প্রতীক সেই তালিকায় নেই।
তাই তা বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগও নেই।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে না হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
নির্বাচনকে সামনে রেখে সব বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনো চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইসি আনোয়ারুল বলেন, ‘অতীতের মতো বিতর্কিত নির্বাচন আর হবে না। সবার সহযোগিতায় একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ কোনো কর্মকর্তা যাতে নির্বাচনী দায়িত্বে না থাকেন, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’ সূত্র: বাসস
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটওয়ারীকে।
অন্য সদস্যরা হলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব মুঃ রইচ উদ্দিন খান ও মোঃ তারেক হাসান এবং ঢাকা কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার মুহাম্মদ কামরুল হাসান। কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব পঙ্কজ বড়ুয়া।
কমিটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও বিশেষ ব্যবস্থায় ঢাকা কাস্টম হাউসে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার উদ্যোগ নিয়েছে। সূত্র: বাসস
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন বলেন, আমদানি করা যত পণ্য ছিল সব আগুনে পুড়ে ধ্বংস হয়েছে। অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত সেটা আমরা খাতভিত্তিক নির্দিষ্ট করার চেষ্টা করছি।
রোববার দুপুরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পুড়ে যাওয়া কার্গো ভিলেজ কমপ্লেক্স পরিদর্শনে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, যত ধরনের অভিযোগ আছে, প্রত্যেকটা অভিযোগ আমলে নিয়ে অনুসন্ধান চলছে। এখানে কারো কোনও ব্যত্যয় আছে কিনা সব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উপদেষ্ট আরো বলেন, আমাদের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা আগুনের পূর্ববর্তী এবং বর্তমান অবস্থান পুরো ঘটনা অনুসন্ধান করবে। তারপর অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে, গোয়েন্দা সংস্থা থেকে শুরু করে সব তদন্ত সংস্থার সবাইকে একত্র করে এ রহস্য উদঘাটন করব।
তিনি বলেন, এখন যেসব পণ্য আসছে, কার্গো থেকে এসব পণ্য সরবরাহে যাতে কোনও জটিলতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য আগামী সাতদিন ২৪ ঘণ্টা করে কাজ করবো। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের ইন্সুরেন্স কভারেজ কী আছে এবং আমাদের বিমানবন্দরের ইন্সুরেন্স কাভারেজ কী আছে সবকিছু আমলে নিয়ে আমরা সিদ্ধান্তে উপনীত হব।
তিনি বলেন, গতকালকে ২১টির মত ফ্লাইট ক্যানসেল হয়েছে। এসব ফ্লাইটের কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আগামী তিন দিন অতিরিক্ত ফ্লাইটের সব ধরনের চার্জ মওকুফ করেছে সরকার।
আগামী ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন।
গতকাল শনিবার বিকেলে বরিশাল সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
এর আগে, তিনি বরিশাল বিভাগ এবং জেলা প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা সভা করেন।
এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, যেহেতু আওয়ামী লীগের সকল কর্মকাণ্ড সরকার নিষিদ্ধ করেছে, তাই বিচার সম্পন্ন হওয়ার আগে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তবে, যদি নির্বাচনের আগে বিচার সম্পন্ন হয় তখন সেটা দেখা যাবে।
এনসিপির শাপলা প্রতীকের দাবির প্রশ্নে সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশনের তালিকায় না থাকায় শাপলা প্রতীক দেওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, কোনো গোয়েন্দা সংস্থা দ্বারা প্রভাবিত হবে না নির্বাচন কমিশন। সভায় বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার, ছয় জেলার জেলা প্রশাসকসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, ‘রাজধানীর মতিঝিলে শাপলা চত্বরে ২০১৩ সালের হেফাজতে ইসলামের শহীদদের নামে স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হবে। যাতে দেশের মানুষ তাদের আজীবন স্মরণ করে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে হেফাজত ইসলামের মহাসমাবেশ ও মোদিবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের পরিবারকে আর্থিক অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ২০১৩ সালে হেফাজত ইসলামের আন্দোলনেই ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। সেদিন সরকার নিরপরাধ ও নিরীহ হেফাজত কর্মীদের হত্যা করে ভেবেছিল, দেশ থেকে ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে। জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে গণমানুষের আন্দোলনকে স্তব্ধ করে হত্যা করা যাবে। কিন্তু এই অনুষ্ঠান প্রমাণ করে, জুলুম ও নির্যাতন কখনো স্থায়ী হয় না।
তিনি আরও বলেন, হেফাজত ইসলামের সেই আন্দোলনের সূত্র থেকেই ২০২৪ সালে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের জন্ম। ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে ফ্যাসিবাদের নেত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
উপদেষ্টা বলেন, ২০১৩ সালে নবম শ্রেণিতে পড়তাম। টেলিভিশনে দেখেছি লাখো জনতা কীভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। কিন্তু সেদিনের প্রকৃত তথ্য জাতিকে জানানো হয়নি।
তিনি আরও জানান, হেফাজত ইসলামের শহীদদের নামের তালিকা সম্বলিত একটি স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ শাপলা চত্বরে তৈরি করা হবে। এতে এই আন্দোলন আগামী প্রজন্মের জন্য প্রেরণা যোগাবে।
অনুষ্ঠানে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞে শহীদ ৫৮ জন এবং ২০২১ সালের মার্চে মোদিবিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শহীদ ১৯ জনের পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা করে অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন বলেন, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হেফাজত কর্মীদের নৃশংসভাবে হত্যা করে তৎকালীন সরকার মনে করেছিল জুলুম-নির্যাতনবিরোধী আন্দোলন দমন করা যাবে।
ওই আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের একটি তালিকা প্রস্তুত করার হেফাজত ইসলামের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলেও আশ্বাস দেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সেদিন শাপলা চত্বরে সাত হাজারের বেশি পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা হেফাজত কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। প্রায় দেড় লাখ গুলি খরচ করা হয়েছিল। তারপরও ইতিহাস থেকে সেই ঘটনা মুছে ফেলা যায়নি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকসুদ জাহিদী। আরও উপস্থিত ছিলেন হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের আমীর মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী, মহাসচিব মাওলানা মাজেদুর রহমান, জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার, খেলাফতে ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হক, গণধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর প্রমুখ।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, লালনের গান শুধুই সুর নয়-তা অত্যন্ত উচ্চমাত্রার সংগীত, যার মধ্যে রয়েছে গভীর দার্শনিক, রাজনৈতিক এবং সর্বোপরি মানবিক মূল্য। তার গানে যে মানবতার কথা বলা হয়েছে, তা আজকের পৃথিবীতেও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
উপদেষ্টা শুক্রবার রাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ঐতিহাসিক ছেঁউড়িয়ায় অবস্থিত লালন একাডেমি প্রাঙ্গণে জাতীয় পর্যায়ে লালন সাঁইয়ের ১৩৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় আর ব্যবস্থাপনায় রয়েছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, এবারই প্রথমবারের মতো ফকির লালন সাঁইয়ের তিরোধান দিবস দলীয় প্রভাবমুক্ত এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হচ্ছে। এটি একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, সরকার মনে করে, লালনের দর্শন এবং অবদান শুধু জাতীয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ রাখার নয়। ভবিষ্যতে যে সরকারই আসুক, লালনের সঙ্গে তাদের কোনো বিরোধ থাকবে না — কারণ লালন কোনো দলীয় আদর্শের প্রতিনিধিত্ব করেন না, তিনি মানবতার প্রতীক।
ভিডিও বার্তায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি বলেন, লালন সাঁই আমাদের দেশের অন্যতম বড় দার্শনিক ও ভাবুক। তার জীবনদর্শন ও আদর্শ আমাদের আত্মস্থ করা প্রয়োজন। এবারই প্রথমবারের মতো জাতীয় পর্যায়ে লালন তিরোধান দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠান উদযাপিত হচ্ছে, যা অত্যন্ত গৌরবের বিষয়।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: মফিদুর রহমান। আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান লেখক ও গবেষক লালন বক্তৃতার মুখ্য আলোচক প্রফেসর গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক, বিশিষ্ট কবি, লেখক ও চিন্তক এবং লালন বিশেষজ্ঞ ফরহাদ মজহার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ আল মামুন। এসময় স্বাগত বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন।
তিনদিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানমালায় দেশব্যাপী লালন অনুসারী, সাধক, গবেষক এবং সাংস্কৃতিক কর্মীরা অংশগ্রহণ করবেন। লালন সাঁইয়ের জীবন দর্শন, মানবতা ও সাম্যের বাণীকে জাতীয়ভাবে স্মরণ ও উদযাপনের উদ্দেশে প্রতিবছরের মতো এবারও এ আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে অত্যন্ত ভাবগম্ভীর পরিবেশে।
গত ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড SRO No-404-Law/2025 এর মাধ্যমে বাংলা ভাষায় প্রণীত আয়কর আইন, ২০২৩ এর Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।
আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ বাতিল করে ২০২৩ সালে বাংলা আয়কর আইন, ২০২৩ প্রণয়ন করার পর হতেই বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ সরকারি গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আয়কর আইনের Authentic English Text প্রকাশের দাবি জানাচ্ছিলেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text না থাকায় বিদেশী বিনিয়োগকারীগণ আইনের সঠিক ব্যাখ্যা ও অনুশীলনের বিষয়ে সংশয়ের মধ্যে থাকতেন এবং বিভিন্ন আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text সরকারী গেজেটে প্রকাশ হবার ফলে দেশী-বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ আয়কর আইন সম্পর্কে স্বচ্ছ ব্যাখ্যা পাবেন বিধায় করদাতাগণের আস্থা অধিকতর বৃদ্ধি পাবে এবং আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে দ্ব্যর্থবোধকতা দূর করে স্বচ্ছতা ও সঠিকতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
কাস্টমস আইন, ২০২৩ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর Authentic English Text সরকারি গেজেটে প্রকাশের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অচিরেই এই দুটি আইনের Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশের মাধ্যমে দেশি-বিদেশী বিনিয়োগকারীগনের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করছে।