বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
১০ আশ্বিন ১৪৩২

প্রধানমন্ত্রীর অপেক্ষায় চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভাস্থলের মঞ্চ। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
২ ডিসেম্বর, ২০২২ ২৩:৫৮
আরাফাত বিন হাসান, চট্টগ্রাম
প্রকাশিত
আরাফাত বিন হাসান, চট্টগ্রাম
প্রকাশিত : ২ ডিসেম্বর, ২০২২ ২১:২৫

চট্টগ্রাম নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভা রোববার (৪ ডিসেম্বর)। জনসভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এ জনসভা ঘিরে চট্টগ্রাম সেজেছে নতুন সাজে। বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই মাইকিং চলছে শহরের মোড়ে মোড়ে। আলোকসজ্জা ও ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো শহর। সড়ক বিভাজক থেকে শুরু করে সড়কের পাশের পুরোনো দেয়াল সবকিছু পরিষ্কার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আঁকা হয়েছে দেয়ালচিত্র। শেষ মুহূর্তে বক্তার অপেক্ষায় প্রস্তুত জনসভার মঞ্চও।

প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সমাবেশে লাল-সবুজ টুপি-টি শার্ট পরে জেলার বিভিন্ন ইউনিট থেকে মিছিল নিয়ে যোগ দিবেন নেতাকর্মীরা। প্রধানমন্ত্রীর জনসমাবেশ চট্টগ্রামে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশ হবে বলে আশা নেতা-কর্মীদের।

নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি খোরশদ আলম সুজন বলেন, ‘আমি সবার মত এত লক্ষ লোক হবে, এত কোটি লোক হবে- এসব বলার পক্ষে না। চট্টগ্রামে প্রায় দেড় কোটির ওপর লোক আছে, সেখান থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লোক জনসভায় থাকবেন ইনশাল্লাহ। আশা করছি, এটা চট্টগ্রামে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ১০ বছর পর চট্টগ্রামে আসছেন। তিনি খালি হাতে আসছেন না। চট্টগ্রামে একটা পোক্ত অবকাঠামো তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন। যার মাধ্যমে আগামী দিনের চট্টগ্রাম দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় একটা শ্রেষ্ঠ কানেক্টিভিটি সেন্টারে পরিণত হতে যাচ্ছে। এটা সিঙ্গাপুরের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। এই যে বদলে যাওয়া যাওয়া চট্টগ্রাম, এগিয়ে যাওয়া চট্টগ্রাম, এটা বেড়েছে শুধু প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টায়। তাই চট্টগ্রামের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।’

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের মতো প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ঘিরে বিশেষ প্রস্ততি আছে উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগেরও। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন, নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত। চট্টগ্রামের আনাচে কানাচে ব্যানার পোস্টারে ছেয়ে গেছে। মানুষের মধ্যে একটা উৎসাহ উদ্দীপনা কাজ করছে। আমরা বিশ্বাস করি, এটা হবে স্মরণকালের সব রেকর্ড ভাঙার সমাবেশ।’

শুধু দক্ষিণ জেলা ইউনিট থেকে সমাবেশে আওয়ামী লীগের দেড় লাখ নেতাকর্মী যোগ দিবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক থানা থেকে আমাদের ১৫ থেকে ২০ হাজার লোক সমাবেশে যাবে। আমাদের ৮ থানা থেকে দেড় লাখের মত লোক আসবে সমাবেশে।’

উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রাম আগমন উপলক্ষে উত্তর জেলার সব ইউনিটের নেতাকর্মীদের মধ্যে একটা উৎসবের আমেজ আসছে। তৃণমূল পর্যায়ে সভা-সমাবেশ ও নানাভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে সবাই। আমার উত্তর জেলা ইউনিট থেকে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ নেতাকর্মী সমাবেশে যাবে। সবাই প্রধানমন্ত্রীকে চট্টগ্রামে স্বাগত জানানোর জন্য মুখিয়ে আছে।’

প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ঘিরে পোস্টার ব্যানারে ছেয়ে গেছে বন্দরনগরী। ছবি: দৈনিক বাংলা

আওয়ামী লীগ ছাড়াও ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ, স্বেচ্ছেসেবক লীগসহ সব অঙ্গ-সংগঠনের নেতারাও প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ উপলক্ষে নানাভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মোসরাফুল হক চৌধুরী পাভেল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ১০ বছর পর একটা জনসভায় আসছেন, আমাদের সবার আশা-আকাঙ্ক্ষা অনেক। উনার আগমন উপলক্ষে আজ (শুক্রবার) সাইকেল শোভাযাত্রা করেছি। শোভাযাত্রাটি সিআরবি থেকে কয়েকটা থানা প্রদক্ষিণ করেছে। নেত্রীর আগমন উপলক্ষে চট্টগ্রামের প্রতিটি থানা, ওয়ার্ডের নেতারা মিলে সিআরবি থেকে মিছিল সহকারে পলোগ্রাউন্ড মাঠে যোগ দেবো। আমাদের চট্টগ্রামে যে মেগা প্রকল্পগুলো, যেগুলো নেত্রী চট্টগ্রামকে উপহার দিয়েছেন, আমরা সেগুলোর বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ব্যানারের মাধ্যমে নেত্রীর সামনে উপস্থাপন করে নেত্রীকে ধন্যবাদ জানাব। এবং নেত্রী আমাদের আবার কী দিয়ে যান, সেটার আশায় আমরা বসে আছি।’

জনসভার দিন সকালেই সভাস্থলে নেতাকর্মীদের নিয়ে হাজির হবেন বলে জানান চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর। তিনি বলেন, ‘মহানগরে ৫০ হাজার নেতাকর্মী আছেন। সবাইকে নিয়ে মিছিলসহ গিয়ে সভাস্থলের অগ্রভাগে উপস্থিত থাকব। চট্টগ্রামের প্রতি উনার একটা আলাদা আন্তরিকতা আছে। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে সবার মধ্যে একটা উদ্দীপনা কাজ করছে। আমরা ওনাকে স্বাগত জানানোর অপেক্ষায় আছি।’

প্রস্তত মঞ্চ
চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এই জনসভায় তৈরি করা হয়েছে এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় মঞ্চ। পলোগ্রাউন্ড মাঠের পশ্চিম পাশে ভূমি থেকে ৬ ফুট উপরে তৈরি করা হয়েছে এই মঞ্চ। নৌকার আদলে তৈরি মঞ্চটি লম্বায় ১৬০ ফুট। তবে এর মধ্যে মূল মঞ্চের দৈর্ঘ্য ৯০ ফুট ও প্রস্থ ৪০ ফুট। ৩ হাজার ৬০০ বর্গফুটের এই মঞ্চ চট্টগ্রামে সবচেয়ে বড় মঞ্চ বলে দাবি প্রস্তুত প্রতিষ্ঠান শাহাবুদ্দিন ডেকোরেশনের মালিক শাহাবুদ্দিনের।

তিনি বলেন, ‘এটা দেশের সবচেয়ে বড় নৌকা। নৌকার আদলে এত বড় মঞ্চ আর তৈরি হয়নি। মঞ্চে অন্তত ২০০ লোক বসতে পারবে। এর দুই পাশে ৮০০ বর্গফুটের আরও দুটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। এই দুটির একটিতে যেসব প্রকল্প উদ্বোধনের কথা, সেসবের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যটিতে ভিআইপি অতিথিরা বসবেন। চট্টগ্রামের বড় বড় প্রোগ্রামগুলোর মঞ্চ আমরা তৈরি করি, এর আগে চট্টগ্রামের কোনো প্রোগ্রামে এত বড় মঞ্চ তৈরি করা হয়নি।’

৩০ প্রকল্পের উদ্বোধন
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের জনসভায় এসে ৩০টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও চারটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৩টি প্রকল্প, কারিগরী ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীনে ৬টি, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীনে ১৪টি, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অধীনে ২টি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১টি, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১টি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১টি, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১টি ও চট্টগ্রাম বন্দরের ১টি প্রকল্প ।

এ ছাড়া নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সন্দ্বীপ অংশে জেটিসহ আনুষাঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণ, আনোয়ারায় বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির আধুনিকীকরণ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকায় আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন জাতিসংঘ সবুজ উদ্যান স্থাপন এবং বিদ্যুৎ বিভাগের অধীনে চট্টগ্রামস্থ বিপিসি ভবন নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জনসভার নিরাপত্তায় সাড়ে ৭ হাজার পুলিশ
প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রামের জনসভায় সাড়ে সাত হাজার পুলিশ নিরপত্তার দায়িত্ব পালন করবে বলে জানিয়েছেন মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়। সভাস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, ‘সর্বোচ্চ ফোর্স কখন মোতায়েন হবে, এটা আমরা পাবলিকলি ওপেন করি না। এ বিষয়ে আমাদের কাছে নির্দেশনা যেভাবে এসেছে সেভাবেই কাজ করবো। পুলিশ এখন থেকেই নিরাপত্তার কাজ করছে।

‘এসএসএফ, পিজিএফ, সাদা পোশাকের পুলিশ, ইউনিফর্মের পুলিশ, গোয়েন্দা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। নিরাপত্তায় আর্চওয়ে, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা, ড্রোনসহ প্রযুক্তিগত সব কিছু যুক্ত থাকবে। জনসভা ঘিরে পুরো শহর একটি নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হবে।’

জনসভার দিন উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষার বিষয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, যারা গাড়ি ও মিছিল নিয়ে জনসভায় আসবেন, তারা কোথায় গাড়ি থেকে নামবেন, মিছিল কোথায় থামবে- সেটি আমরা জানিয়ে দেবো। জনসভার দিন সকাল এবং বিকেলের শিফটে পরীক্ষা আছে। দুই শিফটে ১ হাজার ৪০০ মতো পরীক্ষার্থী আছে। জনসভাস্থলের পাশেও একটি পরীক্ষাকেন্দ্র আছে। শব্দযন্ত্র এমনভাবে স্থাপন করা হবে, যেন সেখানে কোনো সমস্যা না হয়। পরীক্ষার্থীরা যেন একটু আগেভাগে বাসা থেকে বের হন। এরপরও কেউ সমস্যায় পড়লে পুলিশ পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করবে।


মার্কিন কোম্পানিকে বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।

বুধবার নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ এক্সিকিউটিভ বিজনেস গোলটেবিল আলোচনায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।

‘অ্যাডভান্সিং রিফর্ম, রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড গ্রোথ’ শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল (ইউএসবিবিসি)।

প্রধান উপদেষ্টা অনুষ্ঠানে মেটলাইফ, শেভরন এবং এক্সেলেরেটসহ শীর্ষ মার্কিন কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে নতুন বিনিয়োগের সুযোগ কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম পরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সফরে আসা বাংলাদেশের ছয়জন রাজনৈতিক নেতা সভায় উপস্থিত ছিলেন এবং তাদেরকে মার্কিন শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।


নরসিংদীর ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ড, ১ ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিটের চেষ্টায় ১ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ট্রান্সফরমারে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

পলাশ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুল শহিদ জানান, আজ (বৃহস্পতিবার) ভোরে ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ১৩২-৩৩ কেভির ট্রান্সফরমারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তারা খবর পেয়ে ভোর ৫টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে ২টি ইউনিটের ১ ঘণ্টায় চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনে ট্রান্সফরমারটি পুড়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

শহিদ আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে শর্ট সার্কিট থেকে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। তদন্ত সাপেক্ষে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পরে জানা যাবে।

এদিকে, ভোরে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত পলাশ উপজেলা ও পাশ্ববর্তী কালীগঞ্জ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়।

ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী এনামুল হকের কাছে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে তিনি পরে ফোন দিতে বলেন।


ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৬৬৮

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে গত একদিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে; এ নিয়ে এ বছর মশাবাহিত এ রোগে মোট ১৮৭ জনের প্রাণ গেল।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গতকাল বুধবারের বুলেটিনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৬৮ জন রোগী। তাতে এ বছর হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩ হাজার ৮৪১ জনে।

গত একদিনে মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে এক জন করে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

তাদের মধ্যে দুজনের বয়স ৬০ বছর। বাকিদের বয়স হয়েছিল যথাক্রমে ৫০, ৫৫ এবং ১২ বছর। তাদের তিনজন নারী, দুজন পুরুষ।

গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের নিয়ে সেপ্টেম্বর মাসে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২ হাজার ৩৬৫ জন, যা এ বছরের সর্বোচ্চ। এর আগে জুলাই মাসে ১০ হাজার ৬৮৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।

এছাড়া জানুয়ারিতে ১১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিলে ৭০১ জন, মে মাসে ১৭৭৩ জন, এছাড়া জুন মাসে ৫৯৫১ জন, অগাস্টে ১০ হাজার ৪৯৬ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি ৬৫ জনের মৃত্যুও হল সেপ্টেম্বর মাসে। এর আগে জুলাই মাসে ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছিল ডেঙ্গু জ্বরে।

এছাড়া জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে তিন জন, এপ্রিলে সাত জন, মে মাসে তিন জন, জুন মাসে ১৯ জন, অগাস্ট মাসে ৩৯ জন মারা যান। মার্চ মাসে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি নতুন রোগীদের মধ্যে ১৬৭ জনই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায়।

এছাড়া ঢাকা বিভাগে ১২৬ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০৬ জন, খুলনা বিভাগে ৪১ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৫ জন, রংপুর বিভাগে পাঁচ জন এবং বরিশাল বিভাগে ১৫৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

ডেঙ্গু নিয়ে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ২০১৬ জন রোগী। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৭৫৭ জন, ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ১২৫৯ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য রাখে ২০০০ সাল থেকে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে এ রোগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৭০৫ জনের মৃত্যুও হয় ওই বছর।


৭ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবর্তন করা যাবে না: হুঁশিয়ারি শিক্ষকদের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাত কলেজকে গিনিপিগ বানিয়ে কলেজের নাম বা কাঠামো পরিবর্তন করে প্রস্তাবিত সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি গঠন করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কলেজের শিক্ষকরা।

গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাকা কলেজের সামনে ‘বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি’র পক্ষ থেকে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই হুঁশিয়ারি দেন বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা।

তারা বলেন, সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয় সাত কলেজ গিলে ফেলতে চাইছে। প্রস্তাবিত খসড়ায় সাত কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের স্বার্থ চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। এ সময়, সরকারের এমন কর্মকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ জানান তারা। কলেজগুলোর ঐতিহ্য উচ্চ মাধ্যমিক স্তর। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের স্বার্থবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত শিক্ষকরা গ্রহণ করবে না। সেইসঙ্গে, সাত কলেজের নাম বা কাঠামো পরিবর্তন করে কোনো অনুষদে অথবা স্কুলে রূপান্তর করা যাবে না বলেও স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দেন তারা।

মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, ‘ঢাকার সাত কলেজকে কেন্দ্র করে প্রস্তাবিত সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির কাঠামো কেমন হবে, তা নিয়ে আমরা সাত কলেজে কর্মরত শিক্ষকরা স্বীর্ঘদিন ধরে আলোচনা করে আসছি। এ বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে ইউজিসি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি প্রদান করেছি এবং আমাদের উদ্বেগের বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে জানিয়েছি। অথচ দুঃখজনকভাবে দেখা গেল যে আমাদের উদ্বেগ ও প্রস্তাবকে কোনো গুরুত্ব না দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের খসড়া প্রস্তাব প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত খসড়ায় সাত কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, কলেজে কর্মরত শিক্ষক ও কর্মচারীদের স্বার্থ মারাত্মকভাবে স্বপ্ন হয়েছে।’

এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকরা লিখিত বক্তব্যে ৮ দফা দাবি উত্থাপন করেন।

বক্তব্যে শিক্ষকরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত কাঠামো অনুযায়ী বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যগণ ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রশাসনিক কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় যেসব শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রস্তাবিত কাঠামো অনুযায়ী ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, তাদের একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করার আইনি ভিত্তি বিসিএস শিক্ষকদের নেই।

এ সময় খসড়া অধ্যাদেশে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার সদস্যদের অবস্থান নিশ্চিত না করলে তারা ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করবেন না বলে হুঁশিয়ারি প্রদান করেন।

তবে যেসব শিক্ষাবর্ষ ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত নয়, তাদের কার্যক্রম যথারীতি চলমান থাকবে বলেও জানান তারা।


জনপ্রিয়তার শীর্ষে বিএনপি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচনে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে সরকার। সেই লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোকেও তৎপর দেখা যাচ্ছে। এমন অবস্থায় ভোটারদের মতামত জানতে জারিপ চালিয়েছে বেসরকারি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইনোভেশন কনসাল্টিং। সংস্থাটি তাদের ‘পিপলস ইলেকশন পালস সার্ভে রাউন্ড টু’-এর দ্বিতীয় অংশের ফলাফল প্রকাশ করেছে।

গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁও আর্কাইভ ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রুবাইয়াত সরওয়ার।

৮টি বিভাগের ৬৪টি জেলা থেকে ৯ হাজার ৩৯৮টি পরিবার/খনার ১০ হাজার ৪১৩ জন ভোটারের ওপর জারিপটি চালিয়েছে তারা।

জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এমন অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন ৪১.৩০ শতাংশ ভোটার। এর পরেই রয়েছে জামায়াতে ইসলামী, যাদের প্রতি ৩০.৩০ শতাংশ ভোটারের সমর্থন দেখা গেছে। গত বছরের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ তৃতীয় স্থানে আছে, যাদের ভোট ১৮.৮০ শতাংশ। নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ৪.১০ শতাংশ ভোটারের সমর্থন নিয়ে তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে।

ভোটারদের মতে, পরবর্তী সরকার গঠনে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা আছে বিএনপির। ৪০ শতাংশ ভোটার মনে করেন বিএনপি সরকার গঠন করবে। অন্যদিকে ২৩.৩ শতাংশ ভোটারের ধারণা জামায়াত সরকার গঠন করতে পারে। ১২.১ শতাংশ ভোটার মনে করেন আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠন করবে। নতুন দল এনসিপির সরকার গঠনের সম্ভাবনা আছে বলে মনে করেন ৩.৮ শতাংশ ভোটার।

জরিপে আরও দেখা গেছে, ৬৫.৫ শতাংশ ভোটার দলীয় প্রতীকের পরিবর্তে প্রার্থী বিবেচনায় ভোট দিতে আগ্রহী। মাত্র ১৪.৭ শতাংশ ভোটার প্রতীক দেখে ভোট দেবেন।

স্থানীয় রাজনীতিতে দলগুলোর কার্যক্রম নিয়ে ভোটারদের সন্তুষ্টির হারও জরিপে উঠে এসেছে। দেখা গেছে, সাধারণভাবে অন্যান্য দলের তুলনায় ভোটাররা জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের স্থানীয় রাজনৈতিক কার্যক্রম নিয়ে বেশি সন্তুষ্ট। তরুণ প্রজন্ম এবং নারীরা জামায়াতের কার্যক্রমে তুলণামূলক বেশি সন্তুষ্ট।

বিএনপির কার্যক্রমে সন্তুষ্ট ৮.২ শতাংশ, জামায়াতের ১৩.৭ শতাংশ এবং এনসিপির কার্যক্রমে সন্তুষ্ট ৯.১ শতাংশ ভোটার।

জরিপে দেখা গেছে, ৪৫.৫৮ শতাংশ ভোটার মনে করেন, আওয়ামী লীগের বিচার হওয়ার আগে নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া উচিত নয়। অপরদিকে ৪৫.৭৯ শতাংশ মনে করেন, সকল দলকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া উচিত।

যদি আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ না করে, তাহলে তাদের ভোটারদের একটি বড় অংশ অন্য দলগুলোকে ভোট দিতে আগ্রহী।

জরিপ বলছে, আওয়ামী লীগের ২০ শতাংশ ভোটার বিএনপিকে, ১৪.৮ শতাংশ জামায়াতকে এবং ২.১ শতাংশ ভোটার এনসিপিকে ভোট দিতে আগ্রহী। এমন পরিস্থিতিতে সরকার গঠনের জন্য যোগ্য দল হিসেবে বিএনপিকে মনে করেন ৩৯.১ শতাংশ ভোটার, জামায়াতকে ২৮.১ শতাংশ এবং এনসিপিকে ৪.৯ শতাংশ ভোটার।

জরিপ অনুযায়ী, ভোটাররা ভবিষ্যৎ সরকারের কাছে পুলিশ সংস্কার, দুর্নীতি রোধ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিরপেক্ষতা প্রত্যাশা করেন। তবে একটি বড় অংশ এখনো ভবিষ্যৎ সরকার নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। এই জরিপটি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং জনগণের মনোভাবের একটি গুরুত্বপূর্ণ চিত্র তুলে ধরেছে।

গত মার্চেও একটি জরিপ চালিয়েছিলো ইনোভেশন কনসাল্টিং। ওই সময়ের তুলনায় সেপ্টেম্বরের জরিপে দেখা গেছে, পছন্দ প্রাকাশ করা ভোটারদের মধ্যে বিএনপির শেয়ার ০.৪০ পয়েন্ট এবং জামায়াতের ১.৩ পয়েন্ট কমেছে। অপরদিকে আওয়ামী লীগের ৪.৮০ পয়েন্ট বেড়েছে।

জরিপে দেখা গেছে, বিএনপি ৬টি বিভাগে এগিয়ে আছে, জামায়াত রংপুরে এবং আওয়ামী লীগ বরিশালে এগিয়ে আছে।


আমি বললাম একটা জিনিস পোড়াতে ওরা পুড়িয়ে দিল সেতু ভবন, তাপসের সঙ্গে ফোনালাপে শেখ হাসিনা

* হেলিকপ্টার দিয়ে বোম্বিং করার নির্দেশ দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী *ফোনালাপের ৬৯টি অডিও ক্লিপ জব্দ, তাপস-ইনুর সঙ্গে কথোপকথন ট্রাইব্যুনালে শোনানো হলো
আপডেটেড ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২১:৫২
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই আন্দোলনকারীদের অবস্থান ড্রোনের মাধ্যমে নির্ণয় করে, ছত্রীসেনা ব্যবহার করে হেলিকপ্টার থেকে বোম্বিং ও গুলিবর্ষণের নির্দেশ দিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার ৪টি ফোনকলের রেকর্ড বাজিয়ে শোনানো হয়।

শেখ হাসিনার এই চারটি ফোনালাপের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে একটি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে দুটি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামালের একটি ফোনালাপ রয়েছে।

এতে জুলাই আন্দোলন দমনে লেথাল উইপন (প্রাণঘাতী অস্ত্র) ব্যবহার করা, আন্দোলনকারীদের তালিকা করে পাকড়াও করা, রাজাকার ট্যাগ দিয়ে তাদের ফাঁসি দেয়া ও মেরে ফেলা, ছত্রীসেনা ব্যবহার করে বোম্বিং করা, ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করা, সরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন লাগিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর দায় চাপানো, তাদের জঙ্গি ট্যাগ দিয়ে প্রপাগাণ্ডা ছড়ানোসহ আন্দোলন দমনে শেখ হাসিনার সব পরিকল্পনার কথা উঠে আসে।

‘আমার নির্দেশনা দেওয়া আছে। ওপেন নির্দেশনা দিয়েছি। এখন লিথাল ওয়েপন (মারণাস্ত্র) ব্যবহার করবে। যেখানে পাবে সেখানে গুলি করবে।’ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে ফোনালাপে এমন কথা বলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জুলাই-আগস্ট আন্দোলন দমনে তার এই নির্দেশনা ছিল।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন এই মামলার স্পেশাল ইনভেস্টিগেটিং অফিসার ও প্রসিকিউটর তানভীর জোহা। বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইবুনাল-১ এ দেয়া তার সাক্ষ্যর জবানবন্দি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। তিনি এই মামলার ৫৩তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।

কথপোকথনের একপর্যায়ে শেখ হাসিনাকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতের কথা বলেন তাপস। এর মধ্যেই শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিটিআরসি-বিটিভি পুড়িয়ে দিয়েছে। এখন ইন্টারনেট বন্ধ। মেশিনপত্র সব পুড়ে গেছে। আমি বলছি যা যা পোড়াতে... আমাদের সেতু ভবন পুড়িয়েছে।’

তখন তাপস বলেন, রাতের বেলায় আরও ব্যাপক আক্রমণ করবে। কারণ আমি দেখলাম রাস্তায় রাস্তায় ওরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করছে। এ সময় জায়গার নাম জানতে চান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিত্তোরে বনানী-গুলশানের কথা উল্লেখ করেন সাবেক এই মেয়র।

পরে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ফোনালাপে শেখ হাসিনা নিজেই আগুন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন- ‘আমি বললাম একটা জিনিস পোড়াতে, যা যা পোড়াতে। ওরা পুড়িয়ে দিলো সেতু ভবন।’ তার মানে আগুন দেওয়ার নির্দেশ তিনি দিয়েছেন। কিন্তু তার কাঙ্ক্ষিত জিনিস না পুড়িয়ে অন্য স্থাপনা পোড়ানো হয়েছে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন এই মামলার স্পেশাল ইনভেস্টিগেটিং অফিসার ও প্রসিকিউটর তানভীর জোহা। বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইবুনাল-১ এ দেয়া তার সাক্ষ্যর জবানবন্দি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। তিনি এই মামলার ৫৩তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।

জবানবন্দিতে তানভীর জোহা বলেন, তিনি মামলার বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে বিটিআরসি, এনটিএমসি, ডিএমপিসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর হতে বিভিন্ন অডিও ক্লিপ,ভিডিও ফুটেজ, সিডিআর, আইপিটিআর, সিসি ক্যামেরার ফুটেজসহ বিধি মোতাবেক মামলার বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেন। এতে শেখ হাসিনার ৬৯টি কথোপকথনের রেকর্ডও রয়েছে। যাতে আন্দোলন দমনে শেখ হাসিনা বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলে আন্দোলন দমনে তার পরিকল্পনা ও নির্দেশনার কথা জানাচ্ছিলেন।

এসব ফোনালাপে স্পষ্ট করেই মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেয়ার কথা বলতে শোনা যায়। আন্দোলনকারীদের যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই যেন গুলি করা হয় এমন নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।

ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম, ফারুক আহাম্মদ, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যরা।

এছাড়া সকালে রাজসাক্ষী হওয়া আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। তার উপস্থিতিতেই সাক্ষীরা জবানবন্দি দেন।

শেখ হাসিনা ও হাসানুল হক ইনুর কথোপকথন

হাসানুল হক ইনু: আমি মনে করি যে আপনার পদক্ষেপটা সঠিকই হয়েছে। এখন পর্যন্ত যা রিপোর্ট বাংলাদেশে পাচ্ছি আর কি। খালি ঢাকাতে আপনার রামপুরার দিকে এবং শনির আখড়াতে...।

শেখ হাসিনা: না, রামপুরা ক্লিয়ার। শনির আখড়ায় একটু ঝামেলা এখনো আছে।

ইনু: শনির আখড়ায় কিছু মোল্লারাই...।

শেখ হাসিনা: খালি মোল্লা না, সেখানে অনেক মাদ্রাসা। ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মাইকিং করতে বলেছি। নারায়ণগঞ্জে ঢুকতে দিচ্ছে না আর্মিকে। আমরা ছত্রীসেনা নামাচ্ছি।

ইনু: ওহ, আচ্ছা।

শেখ হাসিনা: আমি বলছি, ক্যাজুয়ালটির দরকার নাই। ওরা ব্যারিকেড দিয়ে আছে তো, ঠিক আছে, আকাশ থেকে নামবে৷ কারণ, দুই পাশ দিয়ে ধরবে... ম্যাসেজটা দিয়ে দিতে পারেন।

ইনু: আচ্ছা।

শেখ হাসিনা: ছত্রীসেনা পাঠানো হচ্ছে। ঠিক আছে, হেলিকপ্টার দিয়ে সোজা বোম্বিং করা হবে। হেলিকপ্টার যাক, ওপর দিয়ে মারবে।

ইনু: আচ্ছা, ওপর দিয়ে সাউন্ড বোম যাবে আর কি।

হাসিনা: হুম।

শেখ তাপসের সঙ্গে শেখ হাসিনার ফোনালাপ

শেখ হাসিনা: দরকার নাই, ওটা দরকার নাই। আমি সেনাপ্রধানের সঙ্গে কথা বলছি, ওরা রেডি থাকবে ঠিক আছে! এখনতো আমরা অন্য ইয়ে করতেছি। ড্রোন দিয়ে ছবি নিচ্ছি আর হেলিকপ্টারে, ইয়ে হচ্ছে মানে, কয়েক জায়গায়।

তাপস: তাহলে ওই কিছু ছবি দেখে পাকড়াও করা যায় না রাতের মধ্যে?

শেখ হাসিনা: সবগুলোকে অ্যারেস্ট করতে বলেছি রাতে।

তাপস: হ্যাঁ, পাকড়াও, পাকড়াও করলে ওদেরকে...

শেখ হাসিনা: না, ওটা বলা হয়ে গেছে, ওটা নিয়ে র‍্যাব, ডিজিএফআই, এনএসআই, সবাইকে বলা হইছে যে যেখান থেকে যে কয়টা পারবা ধইরা ফেলো।

তাপস : জ্বি

শেখ হাসিনা: না, ওটা বলা আছে। আর যেখানে গেদারিং দেখবে সেখানে ওই ওপর থেকে, এখন ওপর থেকে করাচ্ছি, অলরেডি শুরু হইছে কয়েকটা জায়গায়।

তাপস: জ্বি

শেখ হাসিনা:…হইয়া গেছে।

তাপস: জ্বি, জ্বি, মোহাম্মদপুর থানার দিকে মনে হয় ওরা যাচ্ছে একটা—আমাকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলল।

শেখ হাসিনা: মোহাম্মদপুর থানার দিকে?

তাপস: হ্যাঁ।

শেখ হাসিনা: ওখানে পাঠাইয়া দিক র‍্যাবকে।

তাপস: জ্বি, তাহলে আপনার নির্দেশনা লাগবে, তিনি এখনো মানে…

শেখ হাসিনা: আমার নির্দেশনা দেয়া আছে, ওপেন নির্দেশনা দিয়ে দিছি এখন, এখন লেথাল উইপেন ব্যবহার করবে। যেখানে পাবে সোজা গুলি করবে।


সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ প্রণয়নে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে: তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা

বুধবার ঢাকার তথ্য ভবনে ‘সংবাদপত্র মজুরি বোর্ড গঠন এবং সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ (খসড়া)’ বিষয়ক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন তথ্য উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। ছবি: বাসস
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ প্রণয়নে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে এই অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা সম্ভব হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আজ বুধবার ঢাকার তথ্য ভবনে ‘সংবাদপত্র মজুরি বোর্ড গঠন এবং সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ (খসড়া)’ বিষয়ক আলোচনাসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন প্রস্তাবিত সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশের বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করা হচ্ছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, প্রস্তাবিত এই অধ্যাদেশ চূড়ান্তকরণের আগে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামত নেওয়া প্রয়োজন। তিনি আগামী দশ দিনের মধ্যে এই বিষয়ে লিখিত মতামত ও প্রস্তাব প্রদানের জন্য সাংবাদিক সংগঠন ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতি আহ্বান জানান।

সংবাদপত্র মজুরি বোর্ড প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, মজুরি বোর্ড বাস্তবায়নের সঙ্গে একাধিক মন্ত্রণালয় জড়িত। মজুরি বোর্ড বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, সেগুলো সমাধানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কাজ করছে। মজুরি বোর্ড বাস্তবায়নে করণীয় বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব প্রদানের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

মাহফুজ আলম বলেন, সংবাদপত্রের প্রচারসংখ্যায় যে অসংগতি রয়েছে, তা দূর করতে হবে। সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনের হার বাড়ানো হবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, বিজ্ঞাপন খাতে বকেয়া টাকা পরিশোধে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, বিগত সরকারের আমলে বিজ্ঞাপন খাতে বকেয়া টাকার পরিমাণ ছিল ৭৫ কোটি। বর্তমানে বকেয়ার পরিমাণ ৩৬ কোটি টাকা। বিজ্ঞাপন খাতের এই বকেয়া টাকা পরিশোধে মন্ত্রণালয় কাজ করছে।

সাংবাদিকদের বেতন বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের ভালো বেতন নিশ্চিত করা গেলে গণমাধ্যমে বিদ্যমান অনেক সমস্যা কেটে যাবে। তিনি সাংবাদিকদের বেতন যৌক্তিক পর্যায়ে উন্নীত করার জন্য গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতি আহ্বান জানান।

আলোচনাসভায় অংশ নিয়ে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, বিদ্যমান আইনে সাংবাদিকদের শ্রমিক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সাংবাদিকরা আর শ্রমিক হিসেবে থাকতে চান না। সাংবাদিকদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহের কর্তৃত্ব একাধিক মন্ত্রণালয়ে না রেখে শুধু তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে রাখার পক্ষে মত দেন তারা।

আলোচনাসভায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা, প্রধান তথ্য অফিসার মো. নিজামূল কবীর, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদা বেগম, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।


আগামী নির্বাচন হবে গণতন্ত্রের নতুন ভিত্তি : প্যারিসের মেয়রকে অধ্যাপক ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে নিউইয়র্কে মঙ্গলবার প্যারিসের মেয়র অ্যানে হিদালগো বৈঠক করেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে নিউইয়র্কে মঙ্গলবার প্যারিসের মেয়র অ্যানে হিদালগো বৈঠক করেছেন।

বৈঠকে উভয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, ক্রীড়া, সামাজিক উদ্যোগ এবং বিশ্বমানবিক সংকট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

সাক্ষাৎকালে দুই নেতা বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচন, অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে চলমান সংস্কার কার্যক্রম, ক্রীড়া ও অলিম্পিকে সামাজিক ব্যবসার সম্ভাবনা এবং বৈশ্বিক শরণার্থী সঙ্কট—বিশেষ করে রোহিঙ্গা মানবিক সংকট সম্পর্কে ব্যাপক মত বিনিময় করেন।

এ সময়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী সাধারণ নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে। এটি শুধু একটি নির্বাচন নয়, এটি দেশের গণতন্ত্রে একটি নতুন যুগের সূচনা করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বাংলাদেশের ভবিষ্যত নির্ধারণে একটি ভিত্তিমূলক ঘটনা হবে, যা দেশের গণতন্ত্রকে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে নেবে।’

অধ্যাপক ইউনূস প্যারিস ২০২৪ অলিম্পিককে সামাজিক ব্যবসায় উদ্যোগ রূপান্তর করতে নেতৃত্ব দেন। প্রধান উপদেষ্টা ভবিষ্যতে অনুষ্ঠিত সকল অলিম্পিক—বিশেষত আসন্ন লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক—কার্বন নিরপেক্ষ করার ওপর জোর দেন।

মেয়র হিদালগো এই সংকটময় সময়ে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি আপনার নেতৃত্বকে গভীরভাবে সম্মান করি। আপনি অসাধারণ কাজ করেছেন, এবং আপনার অঙ্গীকার মানবতার জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’

উভয় নেতা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য তহবিল বৃদ্ধির জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত শরণার্থী শিবিরে বসবাসরত এক মিলিয়নের বেশি মানুষের জীবনমান উন্নয়নের আহ্বান জানান। মেয়র হিদালগো আশা প্রকাশ করেন যে একদিন রোহিঙ্গারা নিরাপদ ও মর্যাদাসহ তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারবেন।

অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, ‘জাতিসংঘ আগামী সপ্তাহে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করছে, যার উদ্দেশ্য হলো বৈশ্বিক মনোযোগ পুনরুজ্জীবিত করা এবং এর একটি স্থায়ী সমাধান খোঁজা।’

তিনি মেয়র হিদালগোকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের জন্য আন্তরিক আমন্ত্রণ জানান, যা দুই দেশের মধ্যে মানবিক ও সামাজিক ব্যবসায়িক সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করবে।

বৈঠকে এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।


জাতিসংঘে নারী সম্মেলনে বিশ্বব্যাপী বাধ্যতামূলক জবাবদিহিতাপূর্ণ ফোরাম গঠনের আহ্বান জানান শারমীন এস মুরশিদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত চতুর্থ বিশ্ব নারী সম্মেলনের ৩০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সমাজকল্যাণ ও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।

তিনি তার ভাষণে বলেন, বর্তমান অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি-৫) অর্জন কঠিন হয়ে পড়ছে। এজন্য তিনি বিশ্বব্যাপী একটি বাধ্যতামূলক ও জবাবদিহিতাপূর্ণ ফোরাম গঠনের আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে তিনি উল্লেখ করেন—শিক্ষায় লিঙ্গ বৈষম্য হ্রাস, লিঙ্গ-প্রতিক্রিয়াশীল বাজেট প্রণয়ন, মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নতি ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে নারীদের এগিয়ে যাওয়া উল্লেখযোগ্য সাফল্য। তবে সামাজিক রীতি, অর্থনৈতিক বৈষম্য ও বৈশ্বিক দক্ষতার ঘাটতি এখনো বড় চ্যালেঞ্জ।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চারটি প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেন তিনি—
১. ২০২৫ সালের মধ্যে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আইন প্রণয়ন ও সার্বজনীন সেবা নিশ্চিতকরণ।
২. ২০২৭ সালের মধ্যে নারীর অবৈতনিক কাজের মূল্যায়নে স্যাটেলাইট অ্যাকাউন্ট চালু।
৩. রাজনৈতিক দলে অন্তত ৩৩% নারী প্রার্থীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত।
৪. সরকারি প্রতিষ্ঠানে লিঙ্গ-প্রতিক্রিয়াশীল বাজেট সম্প্রসারণ।

তিনি বলেন, “কোনও দেশ একা সফল হতে পারে না। তাই এখন সময় এসেছে দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হওয়ার।”

প্রতিনিধিদলে আরও উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ফিরোজ উদ্দিন খলিফা, যুগ্মসচিব দিলারা বেগম ও উপসচিব তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া প্রমুখ।


শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টার সাথে ওআইসি শ্রম কেন্দ্রের মহাপরিচালকের সাক্ষাৎ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের সাথে গতকাল আজারবাইজানের বাকুতে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) শ্রম কেন্দ্রের মহাপরিচালক আজার বায়রামভ সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে প্রবাসী শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, ভিসা এবং অন্যান্য সুবিধা বিষয়ে কারিগরি সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

সাক্ষাৎকালে শ্রম উপদেষ্টা বলেন, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন, নিরাপত্তা প্রদান, অধিকার আদায় ও অন্যান্য সুবিধা প্রাপ্তিতে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে কারিগরি সহযোগিতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তিনি এ বিষয়ে ওআইসি শ্রম কেন্দ্রকে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।

এসময় (ওআইসি) শ্রম কেন্দ্রের মহাপরিচালক বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো ওআইসিভুক্ত দেশসমূহের নাগরিকগণ যেন কাজের জন‍্য অন‍্যান‍্য ওআইসিভুক্ত দেশে আবেদন করতে পারে এবং যোগ্যতা অনুযায়ী কাজের সুযোগ পেতে পারে সে লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনার আওতায় উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে । এ বিষয়ে তিনি সদস্য দেশগুলোর সহযোগিতা কামনা করেন।

সাক্ষাৎ শেষে শ্রম উপদেষ্টা আজার বায়রামভকে বাংলাদেশের শ্রম খাতে গৃহীত কার্যক্রম এবং শ্রম মানকে আন্তর্জাতিক মানদন্ডে উন্নীতকরণে কারিগরি সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে বাংলাদেশ ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানান


সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতির মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আবদুল আজিজ আল-শেখের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ।

গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আবদুল আজিজ আল-শেখ মঙ্গলবার সকালে রিয়াদে ৮২ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।

আজ এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘শেখ আবদুল আজিজ আল-শেখের মৃত্যুতে মুসলিম উম্মাহ এক বিশিষ্ট আলেম এবং ইসলামী চিন্তাধারার একজন পথপ্রদর্শককে হারালো। সারাজীবন ইসলামের সেবায় তাঁর অমূল্য অবদান ও অগাধ ইসলামী পাণ্ডিত্য গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণীয় থাকবে। ইসলামি বিশ্বে তাঁর অনুপস্থিতি গভীরভাবে অনুভূত হবে।’

শেখ আবদুল আজিজ আল-শেখ বিশ্বখ্যাত ইসলামি পণ্ডিত ছিলেন। তিনি সৌদি আরবের জেনারেল প্রেসিডেন্সি অব স্কলারলি রিসার্চ অ্যান্ড ইফতা-এর প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি তিনি মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগের সুপ্রিম কাউন্সিলের প্রধান ছিলেন।

তিনি তাঁর বিশদ জ্ঞান ও নেতৃত্বের জন্য বিশ্বব্যাপী সম্মানিত ছিলেন।

তিনি ১৯৬১ সালে রিয়াদে ইমাম মুহাম্মদ বিন সউদ ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়া কলেজে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ শুরু করেন এবং ১৯৬৫ সালে আরবি ও ইসলামি শরিয়াহ বিশেষায়ণসহ স্নাতক সম্পন্ন করেন।

১৯৯৯ সালের জুন মাসে সৌদি আরবের প্রয়াত বাদশাহ ফাহাদ শেখ আবদুল আজিজ আল-শেখকে সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি নিযুক্ত করেন।


সামাজিক উদ্ভাবন বিষয়ক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে অনুষ্ঠিত সামাজিক উদ্ভাবন বিষয়ক বৈঠকে অংশ নিয়েছেন।

মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এই বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল ‘সামাজিক উদ্ভাবনের মাধ্যমে অর্থায়ন কার্যকর করা।’ এতে সরকারি ও বেসরকারি খাতের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম বৈঠকের আয়োজন করে। এতে সামাজিক উদ্ভাবন ও অর্থায়নের নতুন পথ ও সুযোগ নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা ধারণা বিনিময় ও সহযোগিতার ওপর জোর দেন।


যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী আ. লীগ নেতা জাহিদের বাড়িতে ডিম নিক্ষেপ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

নিউইয়র্কে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ ও লাঞ্ছিত করার ঘটনায় শরীয়তপুরে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জাহিদ হাসানের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করেছে এনসিপি নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা জাহিদ হাসানের বাড়ির প্রধান ফটকে ডিম নিক্ষেপ করেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ কর্মসূচি পালন করেন এনসিপি নেতাকর্মীরা।

শরীয়তপুর জেলা এনসিপির সমন্বয়কারী রুহুল আমিন বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা নিজেদের অপরাধ ঢাকতে বিদেশে পালিয়ে গিয়ে চক্রান্ত করছে।

জাতিসংঘের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আখতার হোসেনসহ এনসিপির নেতারা যুক্তরাষ্ট্রে সফরে যান। সেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর ডিম নিক্ষেপ করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে। এরই প্রতিবাদে আমরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করেছি।

এ প্রসঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শরীয়তপুরের সাবেক আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের নেতাদের ওপর ডিম নিক্ষেপের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে শরীয়তপুরের ছাত্রজনতা জাহিদের বাড়ির সামনে ডিম ছুড়েছে।

এই জাহিদের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বহু নেতা বিদেশে টাকা পাচার করেছে। তাই তাদের সামাজিকভাবে প্রতিহত করতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জন এফ. কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল-৪ থেকে বের হওয়ার সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে ডিম ছোড়ে এবং জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে।


banner close