আসন্ন বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে এবারও বিভিন্ন রুটে স্পেশাল ট্রেন চালানো সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। আগামী ১৩-১৫ জানুয়ারি ও ২০-২২ জানুয়ারি পর্যন্ত এ ট্রেন চলাচল করবে।
এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে মঙ্গলবার রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে বাংলাদেশ রেলওয়ে বিশেষ ট্রেন পরিচালনার যেসব পরিকল্পনা নিয়েছে সেগুলো হলো, আগামী ১৪ ও ২১ জানুয়ারি জামালপুর-টঙ্গী পর্যন্ত চলবে স্পেশাল ট্রেন। ট্রেনটি জামালপুর থেকে ছাড়বে সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে এবং টঙ্গী স্টেশনে পৌঁছাবে দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে।
এ ছাড়া আগামী ১৩ ও ২০ জানুয়ারি ঢাকা-টঙ্গী পর্যন্ত চলবে স্পেশাল ট্রেন। ট্রেনটি ঢাকা ছাড়বে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে এবং টঙ্গী পৌঁছাবে ১১টা ২০ মিনিটে। জুম্মার নামাজ শেষে ট্রেনটি টঙ্গী ছাড়বে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে এবং ঢাকায় পৌঁছাবে বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে।
আখেরি মোনাজাতের দিন আগামী ১৫ ও ২২ জানুয়ারি ঢাকা-টঙ্গী রুটে স্পেশাল ট্রেন-১ ঢাকা ছাড়বে ভোর ৫টা ২৫ মিনিটে এবং টঙ্গী পৌঁছাবে ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে, স্পেশাল ট্রেন-২ ঢাকা ছাড়বে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে এবং টঙ্গী পৌঁছাবে সকাল ৮টা ১০ মিনিটে, স্পেশাল ট্রেন-৩ ঢাকা ছাড়বে সকাল সাড়ে ৭টায় এবং টঙ্গী পৌঁছাবে সকাল সাড়ে ৮টায়, স্পেশাল ট্রেন-৪ ঢাকা ছাড়বে সকাল পৌনে ১০ টায় এবং টঙ্গী পৌঁছাবে সকাল বেলা পৌনে ১১টায়, স্পেশাল ট্রেন-৫ ঢাকা ছাড়বে সকাল সাড়ে ১০টায় এবং টঙ্গী পৌঁছাবে বেলা সাড়ে ১১টায়।
টঙ্গী-ঢাকা রুটে স্পেশাল ট্রেন-১ টঙ্গী ছাড়বে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে এবং ঢাকা পৌঁছাবে দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে, স্পেশাল ট্রেন-২ টঙ্গী ছাড়বে দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে এবং ঢাকায় পৌঁছাবে দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে, স্পেশাল ট্রেন-৩ টঙ্গী ছাড়বে দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে দুপুর ৩-১০ মিনিটে, স্পেশাল ট্রেন-৪ টঙ্গী ছাড়বে বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে এবং ঢাকায় পৌঁছাবে বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে, স্পেশাল ট্রেন-৫ টঙ্গী ছাড়বে রাত ৭টায় এবং ঢাকায় পৌঁছাবে বেলা সাড়ে ১১টায়।
টঙ্গী-ময়মনসিংহ স্পেশাল ট্রেন-১ টঙ্গী ছাড়বে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে এবং ময়মনসিংহ পৌঁছাবে বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটে, টঙ্গী-ময়মনসিংহ-২ টঙ্গী ছাড়বে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে ময়মনসিংহ পৌঁছাবে দুপুর ৪টা ৫৫ মিনিটে। এ ছাড়া টঙ্গী-টাঙ্গাইল স্পেশাল ট্রেন টঙ্গী ছাড়বে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে এবং টাঙ্গাইল পৌঁছাবে দুপুর ২টা ২০ মিনিটে।
রেলওয়ে সূত্র আরও জানায়, ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে আগামী ১৩ থেকে ১৫ এবং ২০ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত ঢাকা অভিমুখী সকল ট্রেন টঙ্গী স্টেশনে ৩ মিনিট করে বিরতি থাকবে।
জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে মাসব্যাপী নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
আজ মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় বিশেষ এই কর্মসূচির বিস্তারিত জানানো হয়।
গত ১৯ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানান, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে স্মরণ করতে আগামী ১ জুলাই থেকে বিশেষ কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে কর্মসূচি শুরু হবে। কিন্তু মূল ইভেন্ট শুরু হবে জুলাইয়ের ১৪ তারিখ থেকে। এটি চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত।
সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য— জুলাইয়ে যে রকম পুরো বাংলাদেশ এক হয়েছিল, আবার সে অনুভূতিটাকে ফিরিয়ে আনা।’
অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষিত কর্মসূচি-
১ জুলাই
মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা ও গির্জাসহ অন্যান্য উপাসনালয়ে শহীদদের স্মরণে এদিন দোয়া ও প্রার্থনা। জুলাই ক্যালেন্ডার দেওয়া হবে। জুলাই হত্যাযজ্ঞের খুনিদের বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির শুরু হবে; যা চলবে ১ আগস্ট পর্যন্ত। জুলাই শহীদ স্মরণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবৃত্তি চালু হবে।
৫ জুলাই
বিভিন্ন সময়ে অবৈধ আওয়ামী সরকারের জুলুম নির্যাতন প্রচারে ৫ জুলাই দেশব্যাপী পোস্টারিং কর্মসূচি চালু।
৭ জুলাই
৭ জুলাই Julyforever.org নামক একটি ওয়েবসাইট চালু।
১৪ জুলাই ‘মোরা ঝঞ্ঝার মতো উদ্দাম’
১৪ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার, একজন শহীদ পরিবারের সাক্ষ্য; যা চলবে ৩৬ জুলাই পর্যন্ত। জুলাই নারী দিবস হিসেবে এই দিনটিকে উল্লেখ করা হয়েছে। এদিন প্রত্যেক জেলায় জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন। শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে ৬৪টি জেলায় ও দেশের প্রতিটা বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাইয়ের ভিডিও প্রদর্শন। টিএসসিতে ডকুমেন্টারি প্রদর্শন, প্রজেকশন ম্যাপিং ও জুলাইয়ের গান এবং ড্রোন শো।
১৫ জুলাই ‘আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া’
১৫ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। জুলাইয়ের স্মৃতিচারণ। ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী ও জুলাইয়ের গান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এলইডি ওয়াল ইনস্টলেশন। প্রজেকশন ম্যাপিং। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ডকুমেন্টারি প্রদর্শন।
১৬ জুলাই ‘কথা ক’
১৬ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে তিনটি বিভাগীয় শহরে ‘ভিআর শো’ প্রদর্শন। রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ আবু সাঈদ স্মরণ অনুষ্ঠান। জুলাইয়ের গান এবং ড্রোন শো প্রদর্শন। চট্টগ্রামে জুলাইয়ের গান এবং ড্রোন শো প্রদর্শন।
১৭ জুলাই ‘শিকল-পরা ছল’
১৭ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। প্রতীকী কফিন মিছিল। দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জুলাই স্মরণ’ অনুষ্ঠান। বিভিন্ন প্রাইভেট ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের ১৭ জুলাইয়ের অভিজ্ঞতা বর্ণনা অনুষ্ঠান। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের নিয়ে ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী।
১৮ জুলাই ‘আওয়াজ উডা’
১৮ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। ১ মিনিটের প্রতীকী ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট, জুলাইয়ের গান, ডকুমেন্টারি প্রদর্শন ও ড্রোন শো, ঢাকার বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ‘জুলাই স্মরণ’ অনুষ্ঠান। ট্র্যাশন শো ও ম্যারাথন।
১৯ জুলাই ‘কত বিপ্লবী বন্ধুর রক্তে রাঙা’
১৯ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। শহীদদের স্মরণে সমাবেশ-১ নরসিংদী, সাভার। ঢাকাসহ সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে জুলাইয়ের তথ্যচিত্র প্রদর্শন। এইদিনটিকে গণহত্যা ও ছাত্রজনতার প্রতিরোধ দিবস হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০ জুলাই ‘দেশটা তোমার বাপের নাকি’
২০ জুলাইয়ের স্মরণ ভিডিও শেয়ার। ঢাকাসহ সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে জুলাইয়ের তথ্যচিত্র প্রদর্শন। শহীদদের স্মরণে সমাবেশ-২ (স্থান—বসিলা, মিরপুর ১০)।
২১ জুলাই ‘রক্ত গরম মাথা ঠাণ্ডা’
২১ জুলাইয়ের স্মরণ ভিডিও শেয়ার। ঢাকাসহ সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে জুলাইয়ের তথ্যচিত্র প্রদর্শন। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের উদ্যোগে সব মাদ্রাসায় জুলাইয়ের স্মরণে অনুষ্ঠান। শহীদদের স্মরণে সমাবেশ-৩ (স্থান-যাত্রাবাড়ি)।
২২ জুলাই ‘আভাস’
২২ জুলাইয়ের স্মরণে ভিডিও শেয়ার। জাহাঙ্গীরনগরে ‘অদম্য-২৪’ স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন। জুলাইয়ের পঙ্ক্তিমালা। রাজু ভাস্কর্যের সামনে জুলাইয়ের কবিতা পাঠ করবেন কবিগণ।
২৩ জুলাই ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’
২৩ জুলাইয়ের স্মরণ ভিডিও শেয়ার। রেমিটেন্স যোদ্ধাদের সংযুক্ত করে অনুষ্ঠান। বৈশ্বিক সংহতি: জুলাই আন্দোলনে বিদেশি সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের মধ্যে যারা ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছিলেন, তাদের নিয়ে অনলাইন ও অফলাইন আয়োজন। দূতাবাসগুলোতে জুলাইয়ের কিছু নির্বাচিত ছবি ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী। গ্রাফিতি অঙ্কন কর্মসূচি। জুলাই গ্রাফিতি প্রদর্শনী।
২৪ জুলাই ‘কি করেছে তোমার বাবা’
২৪ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার শিশু শহীদদের স্মরণে দেশব্যাপী কর্মসূচি, দেশব্যাপী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ‘২৪-এর রঙে গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্কন’ প্রতিযোগিতা, নারায়ণগঞ্জে শিশু শহীদ রিয়া গোপের স্মরণে অনুষ্ঠান, শিশু শহীদদের স্মরণে অনুষ্ঠান, জুলাইয়ের তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও গান, শিশু অ্যাকাডেমিতে জুলাইয়ের শিশু শহীদদের থিম করে একটি আইকনিক ভাস্কর্য স্থাপন, শিশুদের জন্য জুলাই আন্দোলনকে উপজীব্য করে গ্রাফিক নভেল প্রকাশ। এই দিনটি আয়োজন করা হয়েছে শিশু শহীদদের স্মরণে
২৫ জুলাই ‘চলো ভুলে যাই’
২৫ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। মঞ্চে বিপ্লব: দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছোট নাট্যমঞ্চ প্রস্তুত করে নাটক দেখানো হবে।
২৬ জুলাই ‘পলাশীর প্রান্তর’
২৬ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের জমায়েত ও অনুষ্ঠান। মাদ্রাসার ভূমিকা নিয়ে তথ্যচিত্র প্রদর্শনী। জুলাইয়ের র্যাপ গানের অনুষ্ঠান। বাংলা একাডেমিতে জুলাইয়ের প্রকাশিত বই নিয়ে বইমেলা।
২৭ জুলাই ‘ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর গান’
২৭ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী নিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক সংলাপ। কালচারাল প্যারাডাইম শিফট তথ্যচিত্র ও বৌদ্ধ পূর্ণিমা নিয়ে ভিডিওচিত্র প্রচার।
২৮ জুলাই ‘চলো ভুলে যাই’
২৮ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। প্রধান উপদেষ্টার একটি ভিডিও বার্তা দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হবে। জুলাইয়ে স্বাস্থ্য কর্মীদের অভিজ্ঞতা নিয়ে অনুষ্ঠান। ‘মনসুন আর্কাইভ’র প্রকাশ। ‘চিকিৎসা নেই, লাশ নেই’ শীর্ষক তথ্যচিত্রটি প্রদর্শনী। সারা দেশে রক্তদান ও মেডিক্যাল ক্যাম্পেইন।
২৯ জুলাই ‘বাংলা মা’
২৯ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। জুলাই অভ্যুত্থান ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ক বুদ্ধিবৃত্তিক প্যানেল ডিসকাশন। গাজীপুরে অথবা সাভারে শ্রমিকদের সমাবেশ।
৩০ জুলাই ‘চল চল চল’
৩০ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। অনলাইনে জুলাই স্মরণ। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রাখা সাংবাদিকদের নিয়ে অনুষ্ঠান। জুলাই অভ্যুত্থান ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ক বুদ্ধিবৃত্তিক প্যানেল ডিসকাশন।
৩১ জুলাই ‘কাণ্ডারি হুঁশিয়ার’
৩১ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। দেশব্যাপী সব কলেজে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির স্মরণে অনুষ্ঠান।
৩২ জুলাই (আগস্ট ১) ‘গণজোয়ার’
৩২ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। ৬৪টি জেলায় জুলাই নিয়ে বানানো তথ্যচিত্র প্রদর্শন। সব বাংলাদেশি দূতাবাসে জুলাই নিয়ে বানানো নির্বাচিত তথ্যচিত্র প্রদর্শনী। ‘২৪ জুলাই ফটোগ্রাফারের চোখ দিয়ে’ কফি টেবিল বুক প্রকাশনা। জুলাই হত্যাযজ্ঞের খুনিদের বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির সমাপ্তি।
৩৩ জুলাই (আগস্ট ২) ‘আমি বাংলায় গান গাই’
৩৩ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। বাংলাদেশের সব জেলার ‘জুলাইয়ের মায়েরা’ শীর্ষক বিভিন্ন অনুষ্ঠান, প্রজেকশন ম্যাপিং।
৩৪ জুলাই (আগস্ট ৩) ‘ধনধান্য পুষ্প ভরা’
৩৪ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। শাহবাগ থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত শোভাযাত্রা। রিকশায় জুলাইয়ের গ্রাফিতি অঙ্কন ও রিকশা মিছিল। ৬৪টি জেলায় জুলাই নিয়ে বানানো তথ্যচিত্র প্রদর্শনী।
৩৫ জুলাই ( আগস্ট ৪ ) ‘মুক্তির মন্দির সোপান তলে’
৩৫ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। সারা দেশে জুলাই যোদ্ধাদের সমাগম, জুলাইয়ের কার্টুনের প্রদর্শনী। ৬৪টি জেলায় ‘স্পটলাইট অন জুলাই হিরোজ’ শীর্ষক তথ্যচিত্র প্রদর্শনী।
৩৬ জুলাই (৫ আগস্ট) ‘শোনো মহাজন’
৩৬ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। ৬৪ জেলার কেন্দ্রে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ। শহীদ পরিবারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ, শহীদদের জন্য প্রার্থনা, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ অভিমুখে বিজয় মিছিল, এয়ার শো। গানের অনুষ্ঠান, ‘জুলাইয়ের ৩৬ দিন’সহ জুলাইয়ের অন্যান্য ডকুমেন্টারি প্রদর্শন, ড্রোন শো এবং র্যাপের সঙ্গে বচসা।
আগামীকাল বুধবার সকাল ১১টায় ঢাকায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা-২০২৫’ এবং ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০২৫’ উদ্বোধন করবেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় পরিবেশ পদক এবং বৃক্ষরোপণ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে জাতীয় পুরস্কার প্রদান করবেন।
এছাড়াও তিনি সামাজিক বনায়নের উপকার ভোগীদের মাঝে লভ্যাংশের চেক বিতরণ করবেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে আগামী ২৫ জুন থেকে পরিবেশ মেলা ও বৃক্ষমেলা শুরু হচ্ছে।
তিনি জানান, পরিবেশ মেলা চলবে ২৫ থেকে ২৭ জুন এবং বৃক্ষমেলা চলবে ২৫ জুন থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এ মেলা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
এ বছরের পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য ‘প্লাস্টিক দূষণ আর নয়, বন্ধ করার এখনই সময়’ এবং বৃক্ষরোপণ অভিযানের প্রতিপাদ্য ‘পরিকল্পিত বনায়ন করি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ি’।
উপদেষ্টা বলেন, এ উপলক্ষ্যে জেলা-উপজেলা এবং ঢাকা মহানগরের ১০০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চিত্রাঙ্কন, বিতর্ক, স্লোগান প্রতিযোগিতা, সেমিনার ও শিল্প প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক সচেতনতামূলক কার্যক্রমের আয়োজন করা হবে।
তিনি আরো বলেন, এছাড়া বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় বৃক্ষমেলা এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে চারা বিতরণ করা হবে। জনসচেতনতা বাড়াতে মোবাইলে এসএমএস প্রচারণা, ব্যানার স্থাপন ও জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।
দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় ১৯৯৫-৯৬ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থ-বছর পর্যন্ত ৪ লাখ ২৬ হাজার ৮৪২ হেক্টর ব্লক বাগান, ৭২ হাজার ৫৮১ কিমি স্ট্রিপ বাগান সৃজন এবং ২০ কোটি ৬২ লাখ চারা রোপণ ও বিতরণ করা হয়েছে। সামাজিক বনায়নের ২ লাখ ৫০ হাজার উপকার ভোগীর মধ্যে ৫০৫ কোটি টাকা লভ্যাংশ বিতরণ করা হয়েছে।
এছাড়া হাতি, শকুন, শাপলা পাতা মাছ, পরিযায়ী পাখি, হাঙর, ডলফিন, ঘড়িয়াল সংরক্ষণ কার্যক্রম চালু আছে। হালনাগাদ করা হয়েছে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন, বাতিল করা হয়েছে মৌলভীবাজারের লাঠিটিলায় সাফারি পার্ক প্রকল্প এবং পূর্বাচল এলাকাকে জীববৈচিত্র্য অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছে।
গুম সংক্রান্ত ঘটনা তদন্তে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত কমিশন তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এ ধরনের ঘটনার পেছনে শুধু দেশীয় নিরাপত্তা বাহিনীই নয় বরং বিদেশি অংশীদারদের ভূমিকা এবং বাহিনীর অভ্যন্তরীণ দ্বিধা ও মতবিরোধও কাজ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের একটি অংশ গুমসহ নানা বেআইনি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল, যার ফলে অনেককে পেশাগত ও ব্যক্তিগতভাবে ভুগতে হয়েছে।
কমিশন বলেছে, গুম ছিল না বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার ফল, বরং এটি এমন একটি কাঠামোগত ব্যবস্থা, যেখানে আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠপোষকতাও ছিল-বিশেষ করে সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতার নামে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর সম্পৃক্ততা।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এক কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন, গুম সংক্রান্ত বিষয়ে নিরপেক্ষ মত দেওয়ার কারণে তাকে সহকর্মীদের থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়, নতুন পদায়নের আগেই তার সম্পর্কে সতর্ক বার্তা ছড়ানো হত, এমনকি তার পরিবারের ওপর নজরদারি চলত।
এক যুবক কমিশনকে জানান, তার ভাই একটি গোয়েন্দা সংস্থায় কাজ করতেন। তাকে রাজনৈতিক ‘বিরোধীদের’ তালিকা করতে বলা হয়। পরে দেখা যায়, তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের সবাইকে হত্যা করা হয়েছে, যা জানার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তার ভাই এবং শেষ পর্যন্ত তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।
এক সৈনিক জানান, তাকে একটি গোপন বন্দিশিবিরে পাঠানো হয়েছিল যেখানে বন্দিদের প্রতি ছিল চরম নিষ্ঠুরতা। তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয় যেন স্বাভাবিক ব্যবহার না করা হয়, বরং বন্দিদের কষ্ট দেওয়ার নির্দেশ মেনে চলা হয়। এমনকি বন্দিদের সামনে কথা বলাও নিরুৎসাহিত করা হতো; পরিবর্তে ইশারা ও শিসের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে বলা হতো- যা অনেক ভুক্তভোগীর বর্ণনায়ও উঠে এসেছে।
তবে প্রতিবেদন জানায়, ওই সৈনিক একপর্যায়ে প্রতিরোধের ছোটখাটো চেষ্টা করতেন, যেমন নিজের খাবার বন্দিদের দিয়ে দিতেন। এক বন্দি কমিশনকে সরাসরি জানান, ওই সৈনিকের দেওয়া খাবারে তিনি বেঁচে ছিলেন।
আরেকজন র্যাব গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, তাকে একজন দীর্ঘদিনের বন্দিকে হত্যার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা অমান্য করেন এবং ৫ আগস্ট পর্যন্ত দায়িত্বে থেকে তার অবস্থান ধরে রাখেন।
কমিশনের ভাষায়, ‘সবসময়ই যে অবাধ্যতার ফলাফল তাৎক্ষণিক হয়, তা নয়। কেউ কেউ তাদের অবস্থান জানানোর পরও টিকে ছিলেন।’ যেমন দুজন র্যাব সদস্য র্যাব গোয়েন্দা প্রধানকে নিজ হাতে লেখা চিঠিতে জানান যে তারা বেআইনি কোনো আদেশ পালন করবেন না।
এক চিঠিতে লেখা ছিল: ‘যদি কোনো অভিযান আইন বহির্ভূত বা আইন বহির্ভূত গুলি চালানোর উদ্দেশে হয়, তাহলে আমি তাতে অংশ নিতে পারব না।’
প্রতিবেদন জানায়, বিগত সরকারের পতনের পর এই ধরনের কয়েকটি নোট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকেও পাঠানো হয়েছিল, যা পরে গণভবন থেকে উদ্ধার হয়।
তবু কমিশনের ভাষায়, ‘এরপরও গুমের মতো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, যেখানে ট্রেনলাইন কিংবা চলন্ত যানবাহনের নিচে ফেলে লাশ গুম করা হয়েছে।’
প্রতিবেদন বলছে, ‘গুমের মতো অপরাধকে অনেকাংশে অঘোষিতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল এবং যারা এসব করেছিল, তারা প্রকৃত অপরাধী হিসেবে বিবেচিত হননি।’
কমিশনের প্রতিবেদন জানায়, আন্তর্জাতিক সংযোগও এই ঘটনার পেছনে কার্যকর ছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ভারতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছাড়াও, আওয়ামী লীগ সরকার সন্ত্রাসবিরোধী যৌথ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পশ্চিমা সহযোগিতার সুবিধাও পেয়েছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয় একজন ভুক্তভোগী কমিশনকে জানান, তাকে ডিবির হেফাজতে দুজন আমেরিকান নাগরিক জেরা করেছিলেন। যদিও তারা সরাসরি নির্যাতনে অংশ নেয়নি, তথাপি তাদের উপস্থিতিই এই বেআইনি আটক ব্যবস্থাকে বৈধতা দেয়।
পিরোজপুর উদ্ধারকৃত ২৬টি মোবাইল ফোন তিনটি ফেসবুক ফেইক আইডি ও একটি হ্যাক হওয়া ফেসবুক আইডি উদ্ধার করে
মালিকদের কাছে হস্তান্তর করেছে পিরোজপুরের পুলিশ সুপার। সোমবার বেলা ১১টায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের হল রুমে উদ্ধারকৃত মোবাইল ফোন মালিকদের মাঝে হস্তান্তর করেন পুলিশ সুপার খাঁন মুহাম্মদ আবু নাসের।
পুলিশ সুপার জানন, পিরোজপুর জেলার ৭টি উপজেলা থেকে ২৬ টি মোবাইল, তিনটি ফেসবুক ফেইক আইডি ও একটি হ্যাক হওয়া ফেসবুক আইডি উদ্ধার করে জেলা পুলিশের আইসিটি ও মিডিয়া সেল শাখা। উদ্ধার হওয়া মোবাইল ফোন ও হ্যাক হওয়া ফেইজবুক আইডি মালিকদের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
পিরোজপুর পুলিশ সুপার খাঁন মুহাম্মদ আবু নাসের আরও জানান, পিরোজপুর জেলা পুলিশের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে। মাদক ও অন্যান্য বিষয় জেলা পুলিশ কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও অপরাধজনিত যে কোন বিষয় জেলা পুলিশ এর তৎপর অব্যাহত থাকবে।
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নুরুল হুদাকে আটকের সময় যেভাবে মব জাস্টিজ করা হয়েছে তা কাম্য নয় জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে এ ধরনের ঘটনায় বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলে তা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোমবার (২৩ জুন) সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের মৌচাকে হর্টিকালচার সেন্টার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘গতকাল (রবিবার) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তারের যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা সঠিক নয়; তাকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। গ্রেপ্তার হয়েছেন নুরুল হুদা।’
‘তবে তাকে গ্রেপ্তারের সময় যেভাবে মব জাস্টিজ করা হয়েছে তা কাম্য নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে এ ধরনের বিশৃঙ্খলা ঘটেছে। এ ঘটনার তদন্ত হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কৃষিজমি দখল রোধে কৃষিজমি সুরক্ষা আইন করা হচ্ছে জানিয়ে উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বিদেশি ফলের পাশাপাশি দেশীয় ফলের উৎপাদন বাড়াতে হবে, যেন এসব ফল হারিয়ে না যায়।’
পরিদর্শনের সময় গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন, পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী যাবের সাদেক, কালিয়াকৈর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার আহমেদ, হর্টিকালচার সেন্টারের এনামুল হকসহ পুলিশ ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় উপদেষ্টা হর্টিকালচার সেন্টারের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং নানা দিক নির্দেশনা দেন।
ময়মনসিংহের ভালুকায় পৃথক তিনটি অভিযান চালিয়ে হেরোইন, ইয়াবা ও নিষিদ্ধ পেথিডিন ইনজেকশনসহ তিন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। রবিবার (২২ জুন) রাতভর এসব অভিযান পরিচালনা করে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রবিবার রাত আনুমানিক ২টার দিকে উপজেলার মেদুয়ারী এলাকার বাঘসাতরা মোড় বাজারের একটি চায়ের দোকানের সামনে থেকে ৫ গ্রাম হেরোইনসহ মো. আতিকুর রহমান (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তিনি মেদুয়ারী গ্রামের মৃত সিরু মিয়ার ছেলে। একই রাতে, সাড়ে ৩টার দিকে মাহমুদপুর ব্রিজ ঘাট এলাকার আনন্দ সাব্বির অটো ওয়ার্কশপের সামনে থেকে মো. মনিরুজ্জামান (৩০) নামের এক যুবককে ২০ পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়। অপদরিকে ভোর ৪টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের তেপান্তর হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের সামনে চেকপোস্টে জামালপুরগামী রাজীব পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা মেট্রো-১৪-১৫৭৪) তল্লাশি করে ৯১১ পিস পেথিডিন ইনজেকশনসহ মো. ফারুক মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তিনি নেত্রকোনা সদর উপজেলার পশ্চিম কাটলী গ্রামের বাসিন্দা। উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যের মূল্য প্রায় ৩ লক্ষ টাকা। আটককৃত তিনজনের বিরুদ্ধেই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা হয়েছে। আতিকুর ও ফারুকের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক পুরোনো মাদক মামলা রয়েছে।
ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশ স্কাউটস এর দেশব্যাপী আয়োজিত কাব কার্নিভালের উদ্বোধন করেছেন।
সারাদেশে ৫২৭টি জায়গায় একযোগে এই কার্নিভাল শুরু হয়েছে।
আজ সোমবার ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ইউনূস স্কাউটস কার্নিভালের উদ্বোধন করেন। একইসাথে তিনি বিজয়ী স্কাউট সদস্যদের হাতে শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, স্বাধীন ও দক্ষ বিচার বিভাগ গড়ে তুলতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লব নতুন সভ্যতা গড়ে তোলার সুযোগ করে দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা এই সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
রোববার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও দক্ষতা’ বিষয়ক এক জাতীয় সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন বক্তব্য রাখেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও সুশীল সমাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
রবিবার (২২ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকায় ইউরোপীয় দূতাবাস এমন তথ্য জানিয়েছে।
ইইউ দূতাবাস বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশের জন্য আরও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্মাণে সুশীল সমাজকে ক্ষমতায়নে কাজ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধি ও এর অংশীদাররা।
ইউরোপীয় পার্টনারশিপ ফর ডেমোক্রেসির (ইপিডি) সহায়তায় এর অংশীদার সংগঠন আনফারেল ১৮ থেকে ২০ জুন ঢাকায় তিনদিনব্যাপী একটি ওয়ার্কশপের আয়োজন করে। এর বিষয়বস্তু ছিল নাগরিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ।
ইইউ দূতাবাস জানায়, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সক্রিয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে সব অংশগ্রহণকারী একমত পোষণ করেছেন।
নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের জন্য সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা প্রণয়নে সহযোগিতা এবং এতে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালনের কথা স্বীকার করেছে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন।
দুই দিন বিরতি দিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজ রবিবার রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু হয়েছে।
রবিবার (২২জুন) বেলা ১১টা ২০ মিনিটে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ আলোচনায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।
এতে সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। আগের আলোচনার সমাপ্তি টানতেই আজকের এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন-নিউজ সরাসরি সম্প্রচার করছে। বৈঠকে আলী রীয়াজ ছাড়াও আরও উপস্থিত রয়েছেন ঐকমত্য কমিশনের সদস্য জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান।
এর আগে, গত ১৭ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ের অসমাপ্ত আলোচনায় অংশ নেয়নি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগের পর তার পরের দিন অবশ্য অংশ নিয়েছিল দলটি।
এদিকে সংসদের উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলো এখনো কাছাকাছি আসতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতেই এনসিসি গঠনের কথা বলা হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি এবং সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন নিয়েও দলগুলোর ঐকমত্য হয়নি গত সপ্তাহে হওয়া চার দিনের সংলাপে। এ পর্যায়ে ঐকমত্যের সংজ্ঞা নিয়েও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতানৈক্য প্রকাশ পেয়েছে। কমিশন এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার কথাও ভাবছে।
গত সপ্তাহের সংলাপের অগ্রগতি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এই বিষয়গুলোতে একদিকে রয়েছে বিএনপি এবং সমমনা পাঁচটি দল; তাদের কাছাকাছি অবস্থান বামপন্থি সিপিবি, বাসদের। বিএনপির বিপরীত অবস্থানে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, এবি পার্টিসহ বাকি দলগুলো। যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র গণঅধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি, জেএসডির অবস্থানও বিএনপির বিপরীতে।
নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে সংসদের প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা হ্রাসে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাবের বিপক্ষে অনড় অবস্থান ধরে রেখেছে বিএনপি এবং সমমনা এলডিপি, এনডিএম, লেবার পার্টি, ১২ দলীয় জোট এবং ১১ দলীয় জোট।
চার দিনের সংলাপে ৩০ রাজনৈতিক দল এবং জোট শুধু ৭০ অনুচ্ছেদ শিথিলে শর্ত সাপেক্ষে ঐকমত্য হয়েছে। যদিও জামায়াত বলেছে, শুধু অর্থবিল এবং আস্থা প্রস্তাব নয়, সংবিধান সংশোধনেও এমপিরা দলের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারবেন না। বিএনপি বলেছে, যুদ্ধাবস্থায়ও দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারবেন না এমপিরা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের নাগরিকদের শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধনের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রতি বছরই এই সংখ্যা বেড়েছে। শুধু ২০২৪ সালেই জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার কাছে ২৮ হাজার ৪৭৩ বাংলাদেশি শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন।
তবে শুধু শরণার্থী নয়, রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনও করছেন অনেক বাংলাদেশি। ২০২৪ সালে এক লাখ ৮ হাজার ১৩১ বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। অধিকাংশ বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থী ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোতে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেন। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে ২৪ হাজার ১২৬ বাংলাদেশি জাতিসংঘের কাছে শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন। ২০২২ সালে ২৩ হাজার ৯৩৫ জন, ২০২১ সালে ২২ হাজার ৬৭২ জন এবং ২০২০ সালে ১৮ হাজার ৯৪৮ জন বাংলাদেশি নিজেদের শরণার্থী দাবি করে জাতিসংঘের কাছে আবেদন করেন। এছাড়া ২০১৯ সালে শরণার্থী হিসেবে জাতিসংঘের কাছে বাংলাদেশিদের আবেদনের সংখ্যা ছিল ২২ হাজার ৭৬৬, ২০১৮ সালে ২১ হাজার ২২ এবং ২০১৭ সালে ১৬ হাজার ৭৮০টি।
২০২৪ সালে এক লাখ ৮ হাজার ১৩১ বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। এছাড়া ২০২৩ সালে ৭৫ হাজার ৮৬৭ জন বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। ২০২২ সালে ৬১ হাজার ২৯৮ জন, ২০২১ সালে ৬৫ হাজার ৪৯৫ এবং ২০২০ সালে ৬৪ হাজার ৬৩৬ জন বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চান। ২০১৯ সালে এ সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৮৬০ এবং ২০১৮ সালে ৬২ হাজার ৮৬০।
তবে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার তথ্যে যে চিত্র উঠে এসেছে তাতে দেখা যায়, আশ্রয়প্রার্থীদের বেশিরভাগই সুযোগসন্ধানী বা পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়েছেন।
অভিবাসন ও শরণার্থীবিষয়ক বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর বলেন, অনেকে অবৈধ পথে লাখ লাখ টাকা দিয়ে ইউরোপ যাচ্ছেন। সেখানে গিয়ে অবৈধ হয়ে থাকেন বছরের পর বছর। এরপর এরা শরণার্থী হিসেবে স্থায়ী হওয়ার আবেদন করেন।
তিনি বলেন, কিছু দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত, যেমন মিয়ানমার, সিরিয়া, আফগানিস্তান- এসব দেশ থেকে কেউ গেলেই অটোমেটিক তারা শরণার্থী হিসেবে বিবেচিত হন। কিন্তু আমাদের দেশের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য না। আমাদের অনেকে অবৈধ হিসেবে গিয়ে শরণার্থী পরিচয় দেন, কিন্তু ইউরোপ জানে এরা অবৈধ অভিবাসী।
আসিফ মুনীর আরও বলেন, তবুও ইউরোপের দেশ ইতালি, ফ্রান্স আমাদের এই অবৈধ অভিবাসীদের গ্রহণ করছে। কিন্ত বাস্তবিক অর্থে যারা অবৈধ পথে এসব দেশে যাচ্ছেন এরা শরণার্থী নন। কিন্তু বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বহু মানুষ ইউরোপে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। বিশেষ করে স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশগুলোতে বহু বাংলাদেশি আছেন যারা শরণার্থী হিসেবে গিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সমুদ্রসীমার একটি পরিপূর্ণ হাইড্রোগ্রাফিক তথ্যভাণ্ডার গড়ে তুলতে আরো পেশাদারিত্ব, দক্ষতা, নিষ্ঠার সাথে কাজ করার জন্য হাইড্রোগ্রাফিক পেশাজীবীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত আরো মজবুত ও সমৃদ্ধ করতে সমুদ্র তলদেশের নির্ভুল মানচিত্রায়নের মাধ্যমে একটি কার্যকর ও টেকসই সমুদ্রনীতি গড়ে তুলতে হবে।
‘বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস-২০২৫’ উপলক্ষ্যে আজ শুক্রবার এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও বাংলাদেশে ‘বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস-২০২৫’ উদ্যাপন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।’
তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীসহ দিবসটি আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। একই সাথে এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য-‘সিবেড ম্যাপিং: এনাবলিং ওশান এ্যাকশন’- যার মাধ্যমে গভীর সমুদ্রের তলদেশের মানচিত্রায়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে, অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত হয়েছে বলে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস মনে করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় বঙ্গোপসাগর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু বাংলাদেশই নয়, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোও তাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য বঙ্গোপসাগরের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেশকে একটি উৎপাদনমুখী ও আঞ্চলিক অর্থনৈতিক কেন্দ্রে রূপান্তরের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এ লক্ষ্য অর্জনে সমুদ্র সম্পদকে আরো কার্যকরভাবে ব্যবহারে বিশদ, হালনাগাদ ও নির্ভুল হাইড্রোগ্রাফিক তথ্যের কোনো বিকল্প নেই।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল ও সমুদ্রসীমার হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ, চার্ট প্রস্তুত, সকল দেশি ও বিদেশি জাহাজের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী তথ্য-উপাত্ত বিনিময়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর হাইড্রোগ্রাফিক বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে জাতিসংঘের সমুদ্র আইন অনুযায়ী, আমাদের মহীসোপান অঞ্চল নির্ধারণ এবং সুনীল অর্থনীতি বিকাশে হাইড্রোগ্রাফিক বিভাগের কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আমাদের সামরিক ও নৌ-নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি হাইড্রোগ্রাফি বিভাগ সমুদ্র বন্দরের উন্নয়ন, মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ, তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান এবং উপকূলীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।
তিনি ‘বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস-২০২৫’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
জলবায়ু সহনশীলতা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, পরিবহন অবকাঠামো ও ব্যাংক খাতে সংস্কারে চারটি প্রধান উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সঙ্গে ১৩০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার (২০ জুন) রাজধানীর ইআরডি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও এডিবির মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদির সিদ্দিকী এবং এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং সংশ্লিষ্ট নথিতে সই করেন।
ইআরডি সচিব বলেন, ‘এই চুক্তিগুলো আমাদের জলবায়ু সহনশীলতা জোরদার, অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিচ্ছন্ন জ্বালানির প্রসার ও আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এডিবির সহায়তা আমাদের জাতীয় অগ্রাধিকার অনুযায়ী অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে।’
যে ৪ প্রকল্পে অর্থায়ন করা হবে—৪০ কোটি ডলারের ‘জলবায়ু-স্থিতিস্থাপক অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কর্মসূচি (সিআরআইডিপি)’ সই করেছে এডিবি ও বাংলাদেশ। এই কর্মসূচির লক্ষ্য জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধি, নির্গমন হ্রাস এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা। এই প্রকল্পের আওতায় এজেন্সি ফ্রান্সেস ডি ডেভেলপমেন্ট (এএফডি) থেকে প্রায় ১১ কোটি ৩০ লাখ ডলার এবং এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক থেকে ৪০ কোটি ডলার সহ-অর্থায়ন পাবে বাংলাদেশ।
এ ছাড়া, বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ গঠন, দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়ন জোরদার, জেন্ডার-সংবেদনশীল স্থানীয় অভিযোজন প্রচার এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও পরিবহন মাস্টার প্ল্যানকে সহায়তা করবে সিআরআইডিপি।
এরপর রয়েছে ২০ কোটি ডলারের ‘বিদ্যুৎ সঞ্চালন শক্তিশালীকরণ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি একীভূতকরণ প্রকল্প’। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বগুড়া, চাঁদপুর, গোপালগঞ্জ, হবিগঞ্জ, পিরোজপুর ও সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন গ্রামীণ জেলায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন অবকাঠামো উন্নীত করা হবে।
পাশাপাশি দক্ষিণ চট্টগ্রাম অঞ্চলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির একীভূতকরণে সহায়তা করবে এই প্রকল্প, যা নির্ভরযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।
তাছাড়া, ঢাকা উত্তর-পশ্চিম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করিডোর উন্নয়নে ২০ কোটি ৪০ লাখ ডলারের একটি ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করেছে এডিবি ও বাংলাদেশ সরকার। করিডোরটির উন্নয়নের মধ্য দিয়ে দেশের আঞ্চলিক বাণিজ্য আরও বিস্তৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ প্রকল্পের আওতায় এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার সড়ক সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন করা হবে। প্রকল্পটি ভুটান, ভারত ও নেপালের সঙ্গে আঞ্চলিক সংযোগ উন্নয়নে সহায়তা করবে বলে বলা হয়েছে।
এতে জলবায়ু সহনশীল ডিজাইন ও জেন্ডার-সংবেদনশীল বৈশিষ্ট্য যেমন ফুটব্রিজ ও মটরবিহীন যানবাহনের জন্য আলাদা লেন অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতকে স্থিতিশীল ও সংস্কারের পথে এগিয়ে নিতে ৫০ কোটি ডলারের ‘ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ও সংস্কার কর্মসূচি’ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
এই সংস্কারকেন্দ্রিক কর্মসূচিটি নিয়ন্ত্রক তত্ত্বাবধান শক্তিশালী করবে, আর্থিক সম্পদের গুণমান উন্নত করবে এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের সক্ষমতা বাড়ানো ও খেলাপি ঋণ সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই প্রকল্প সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই সমন্বিত সহায়তা প্যাকেজ বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদী সহনশীলতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মন্তব্য করেন হো ইউন জিয়ং।