অর্থনীতিবিদ ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক। অধ্যাপক, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। সম্প্রতি তিনি ব্যাংকিং কোম্পানি আইন পরিবর্তন, খেলাপি ঋণ আদায় ও আসন্ন ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে দৈনিক বাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অর্থনীতিবিষয়ক লেখক এম এ খালেক ও বিভাগীয় সম্পাদক গিরীশ গৈরিক
এম এ খালেক ও গিরীশ গৈরিক: সম্প্রতি ব্যাংকিং কোম্পানি আইনে বেশ কিছু পরিবর্তন সাধন করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর হিসেবে ব্যাংকিং আইনের এই পরিবর্তনকে কীভাবে দেখছেন?
সালেহউদ্দিন আহমেদ: ব্যাংকিং কোম্পানি আইনের যে সংস্কার করা হয়েছে, তার বেশ কিছু ইতিবাচক দিক আছে। তবে আমি মনে করি, এই সংস্কার আরও ব্যাপক আকারে হতে পারত। প্রস্তাবিত ব্যাংকিং কোম্পানি আইন জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। কাজেই সংশোধনীটি আরও বিস্তৃত ও সুনির্দিষ্ট হতে পারত। ব্যাংকিং সেক্টরের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে অভ্যন্তরীণ সুশাসনের অভাব। এই সুশাসনের অভাব দূরীকরণে সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইন কতটা সহায়ক হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ব্যাংক পরিচালনায় পরিচালকদের ভূমিকা, তারা কী করতে পারবেন আর কী পারবেন না, সেটি আরও সুষ্পষ্টভাবে সংশোধনীতে উল্লেখ থাকা প্রয়োজন ছিল। প্রায়ই শোনা যায়, ব্যাংকের পরিচালকরা ব্যাংকের দৈনন্দিন কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করেন। ঋণ অনুমোদন থেকে শুরু করে ট্রান্সফার-পোস্টিং সব ক্ষেত্রেই প্রভাব বিস্তার করেন। এ ধরনের অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ বন্ধে সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা দরকার ছিল। বিদ্যমান ব্যাংকিং কোম্পানি আইনে বেশ কিছু দুর্বলতা আছে। এসব দুর্বলতার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ব্যাংকিং সেক্টরে এক ধরনের দ্বৈত শাসন চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংকের ক্ষেত্রে যতটা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ক্ষেত্রে তা পারে না। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং ডিভিশন নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এতে ব্যাংকগুলো সঠিকভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হয়। ব্যাংক তা রাষ্ট্রায়ত্তই হোক আর ব্যক্তিমালিকানাধীন হোক, একক প্রতিষ্ঠান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়া উচিত। বর্তমানে ব্যাংকিং সেক্টর যেভাবে পরিচালিত হচ্ছে, তাকে কার্যত দ্বৈত শাসন বলা যেতে পারে। একটি কোনো সেক্টরের ওপর দ্বৈত নিয়ন্ত্রণ কোনোভাবেই ভালো ফল দিতে পারে না। ব্যাংকিং সেক্টরের মতো স্পর্শকাতর একটি সেক্টর একক নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হওয়া উচিত। একক নিয়ন্ত্রণে ব্যাংক পরিচালিত না হলে নানা সমস্যা ও জটিলতা দেখা দিতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে এমনও দেখা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক হয়তো কোনো ইস্যুতে আপত্তি করেছে, কিন্তু ব্যাংকিং বিভাগ সেই আপত্তি উপেক্ষা করে অনুমোদন দিয়েছে। সর্বশেষ যে ৯টি ব্যাংক ব্যক্তিমালিকানায় অনুমোদন দেয়া হয়, তখন বাংলাদেশ ব্যাংক আপত্তি উত্থাপন করেছিল। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দেয়া হয়। ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সব সময়ই দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অনুমোদন দান এবং কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ দেয়া উচিত।
এম এ খালেক ও গিরীশ গৈরিক: ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংকের পরিচালকদের সংখ্যা নিয়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, এ ব্যাপারে আপনি কী বলবেন?
সালেহউদ্দিন আহমেদ: ব্যক্তিমালিকানাধী ব্যাংকের পরিচালকের সংখ্যাসংক্রান্ত যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তা কোনোভাবেই কাম্য ছিল না। আগে একটি পরিবার থেকে একই সময়ে দুজন পরিচালক দায়িত্ব পালন করতে পারতেন। তারা দুই টার্ম (প্রতি টার্ম তিন বছর করে) অর্থাৎ ছয় বছর দায়িত্ব পালন করতে পারতেন। কয়েক বছর আগে একই পরিবার থেকে একযোগে চারজন পরিচালক নিয়োগের বিধান করা হয়। তাদের মেয়াদকাল নির্ধারণ করা হয় তিন টার্ম। অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকসংশ্লিষ্টদের মধ্যে এই আইনি সংশোধনের বিষয় নিয়ে আপত্তি ছিল। এমনকি ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড (আইএমএফ) এ ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে। আগে একসময় একই পরিবার থেকে একযোগে দুজন পরিচালক নিযুক্ত হতে পারতেন। এখন একই পরিবার থেকে তিনজন পরিচালক নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের মেয়াদকাল ১২ বছর করা হয়েছে। এটি অদ্ভুত একটি ব্যাপার। এর মাধ্যমে ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংকে পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠানব্যবস্থা করা হয়েছে। এটি কোনোভাবেই কাম্য ছিল না। ব্যাংক অন্য দশটি সাধারণ ব্যবসায়ের মতো নয়। ব্যাংক পরিচালিত হয় সাধারণ মানুষের অর্থে। কাজেই আমানতকারীদের সঞ্চিত অর্থের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বিধান করা ব্যাংক পরিচালকদের দায়িত্ব। স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের ব্যাপারেও আপত্তি উত্থাপন করা যেতে পারে। এরা নামে স্বতন্ত্র পরিচালক হলেও কার্যত এরা উদ্যোক্তার স্বার্থই রক্ষা করে থাকে। কারণ এমন সব ব্যক্তিকে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করা হয়, যারা উদ্যোক্তাদের ভাই, বন্ধু বা আত্মীয়স্বজন। কাজেই স্বতন্ত্র পরিচালকরা পরিচালকদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েই বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের মতামত ব্যক্ত করে থাকেন। এতে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের মূল উদ্দেশ্যই বিঘ্নিত হচ্ছে। উন্নত দেশগুলোতে যাদের স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়, তারা অত্যন্ত কঠোরভাবে আমানতকারীদের স্বার্থে তাদের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। স্বতন্ত্র পরিচালকরা কী ভূমিকা পালন করছেন, সে ব্যাপারে রেগুলেটরি বডির কাছে নিয়মিত রিপোর্ট যায়। কিন্তু আমাদের দেশে স্বতন্ত্র পরিচালকরা তাদের কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা পালন করতে পারছেন না। স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে যারা নিয়োগ পান, তাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা যোগ্য এবং ভালো লোক। কিন্তু তারা তাদের ভূমিকা ঠিকমতো পালন করতে পারছেন না। নানা চাপের মুখে তাদের নতি স্বীকার করতে হয়।
এম এ খালেক ও গিরীশ গৈরিক: খেলাপি ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। অনেকেই আছেন যারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ঋণের কিস্তি পরিশোধ করেন না। এদের ব্যাপারে কোনো কঠিন ব্যবস্থা গৃহীত হচ্ছে না। এর কারণ কী?
সালেহউদ্দিন আহমেদ: আমাদের দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে খেলাপি ঋণ কালচার একটি বড় সমস্যা। কোনোভাবেই এই সমস্যা থেকে উত্তরণ ঘটানো যাচ্ছে না। অনেকেই আছেন, যারা ব্যাংক থেকে টাকা আত্মসাতের জন্যই ঋণ গ্রহণ করেন। এই ঋণের অর্থ তারা সঠিকভাবে কাজে না লাগিয়ে অন্যত্র প্রবাহিত করেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিদেশেও পাচার করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংক কর্মকর্তারা কোনো উদ্যোক্তাকে ঋণ দিতে না চাইলেও নানা মহলের চাপের মুখে তাদের শেষ পর্যন্ত ঋণ দিতে হয়। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়। কিন্তু কারা ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি আর কারা পরিস্থিতির কারণে খেলাপিতে পরিণত হন, তা নির্ধারণ করা খুবই কঠিন কাজ। কারণ প্রচলিত আইনে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের কোনো সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই। ঋণখেলাপিদের কাছ থেকে ঋণের টাকা আদায় করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করতে হয়। কিন্তু সেখানে কে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি আর কে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি নন, তা নির্ধারণ করা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কোর্ট চলে প্রমাণের ভিত্তিতে। কিন্তু ব্যাংকের পক্ষে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি চিহ্নিত করা বেশ কঠিন কাজ। আদালতে মামলা করা হলে ঋণখেলাপিরা নানাভাবে পার পেয়ে যান। যারা অর্থ আত্মসাতের জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করেন, তাদের প্রতিরোধ করা বেশ কঠিন। একশ্রেণির ঋণগ্রহীতা আছেন যারা অত্যন্ত প্রভাবশালী। তারা নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করে থাকেন। অনেক সময় ভুয়া অথবা অসংগতিপূর্ণ ডকুমেন্ট দিয়ে ঋণ গ্রহণ করেন। পরবর্তী সময়ে তাদের কাছ থেকে ঋণের কিস্তি আদায় করা সম্ভব হয় না। সম্প্রতি একটি প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের ব্যাংকগুলো থেকে যে ঋণ দেয়া হয় তার ৬৩ শতাংশই রাজনৈতিক প্রভাবে দেয়া হয়। রাজনৈতিক প্রভাবে ঋণ দেয়া হলে সেই ঋণের অর্থ পরবর্তী সময়ে আদায় করা ব্যাংকের পক্ষে সম্ভব হয় না। ব্যাংকগুলো ঋণদানের পর ঠিকমতো মনিটর করে না। ঋণদানের সময় বন্ধকীকৃত সম্পদের সঠিক মূল্যায়ন করা হয় না। অনেকেই আছেন যারা ঋণ গ্রহণের সময় নানাভাবে বন্ধকীকৃত সম্পদের অতিমূল্যায়ন করে থাকেন। পরবর্তী সময়ে ব্যাংক সেই সম্পদ নিলামে তুলতে গেলে সঠিক মূল্য পাওয়া যায় না। এমন একটি আইন থাকা দরকার যে, ঋণগ্রহীতা যদি সঠিক সময়ে ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করেন, তাহলে তার বন্ধকীকৃত সম্পদ ছাড়াও অন্যান্য ব্যবসায়-প্রতিষ্ঠান এবং সম্পদ জব্দ করা যাবে তাহলে সম্পদ হারানোর ভয়ে অনেকেই ঋণখেলাপি হতে দ্বিধা করতেন। দেখা যায়, কোনো ব্যক্তি হয়তো একটি প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ গ্রহণ করলেন, সেই ফান্ড অন্য প্রতিষ্ঠানের নামে ট্রান্সফার করলেন। যে প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নেয়া হলো তা ভালোভাবে না চললেও অন্য প্রতিষ্ঠানটি লাভজনকভাবে পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু ব্যাংক চাইলেই তার লাভজনক প্রতিষ্ঠানটি জব্দ করতে পারে না। অথচ উন্নত দেশগুলোতে একজন ঋণখেলাপি হলে তার স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি জব্দ করা হয়। এমনকি ভারতের মতো দেশের ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান রয়েছে। খেলাপি ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে ব্যাংক কর্মকর্তাদের এক ধরনের দায় থাকলেও তারা তো প্রচলিত আইনের বাইরে কিছু করতে পারেন না। ব্যাংক কর্মকর্তারা যে সবাই খারাপ, তা তো নয়। অনেক ভালো কর্মকর্তা আছেন। তারা কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে খেলাপি ঋণ আদায় করতে চান। কিন্তু আইনি কাঠামো তাদের সেভাবে সাপোর্ট করে না। বাংলাদেশ ব্যাংককে খেলাপি ঋণ আদায়ের ব্যাপারে আরও কঠোর হতে হবে। একই সঙ্গে ব্যাংকগুলোকে ঋণদানের সময় বন্ধকীকৃত সম্পদের সঠিক মূল্যায়ন করতে হবে, যাতে প্রদত্ত ঋণের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। কিছুদিন আগে নিয়ম করা হয়েছিল, ব্যাংকের পরিচালকরা অন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হতে পারবে না। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি এ ব্যাপারে ছাড় দিয়েছে। নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, ব্যাংকের একজন পরিচালক সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি কোম্পানির পরিচালক হতে পারবেন। এ ধরনের আইনি পরিবর্তন কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের কাছ থেকে ঋণের বকেয়া কিস্তি আদায়ের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছার। কাউকে রাজনৈতিক কারণে খেলাপি ঋণের দায় থেকে মুক্তি দেয়া হবে না- এমন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হওয়া প্রয়োজন। যারা ঋণখেলাপি, তাদের বিরুদ্ধে সরকারকে দলমত নির্বিশেষে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ঋণ প্রদান এবং বকেয়া কিস্তি আদায়ের ক্ষেত্রে ব্যাংকের স্বাধীনতা থাকা প্রয়োজন। আর্থিক ইস্যুগুলোকে সম্পূর্ণ অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেই পরিচালিত হতে দিতে হবে। ব্যাংকের বাইরে যেসব প্রতিষ্ঠান আর্থিক দুর্নীতির বিষয়গুলো তদন্তের দায়িত্বে থাকবে, তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
এম এ খালেক ও গিরীশ গৈরিক: আগামী ২৪ আগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই সম্মেলনের মাধ্যমে বিকস দেশগুলো একটি নতুন একক মুদ্রা প্রচলনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বিকস একক মুদ্রা চালু হলে বিশ্বব্যাপী মার্কিন ডলারের আধিপত্য কি কমে যেতে পারে বলে মনে করেন?
সালেহউদ্দিন আহমেদ: এটি এখনই বলা ডিফিকাল্ট। মার্কিন ডলারের আজকের যে শক্তিশালী অবস্থান লক্ষ করা যায়, বিশ্বব্যাপী তা এক দিনে বা রাতারাতি তৈরি হয়নি। মার্কিন ডলারকে আজকের অবস্থানে আসতে অনেক দিন সময় লেগেছে। কাজেই ডলারের অবস্থান হঠাৎ করেই দুর্বল করা যাবে না। ব্রিকস দেশগুলোর মধ্যে এককভাবে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে চীন। বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণের দিক দিয়ে অন্য দেশগুলো খুব একটা ভালো অবস্থানে নেই। কাজেই ব্রিকস একক মুদ্রা চালু হলেই বিশ্বব্যাপী মার্কিন ডলারের আধিপত্য কমে যাবে, এটি মনে করার কোনো কারণ নেই। মুদ্রার গ্রহণযোগ্যতা নির্ণীত হয় আস্থার ওপর নির্ভর করে। কার্যত মার্কিন ডলার হচ্ছে রিজার্ভ কারেন্সি। বিশ্বের বেশির ভাগ দেশই মার্কিন ডলারে তাদের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ সংরক্ষণ করে থাকে। কাজেই আপনি হঠাৎ করেই ডি-ডলারাইজেশন করবেন, এটি সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।
এম এ খালেক ও গিরীশ গৈরিক: বাংলাদেশ ব্রিকস+ জোটে যোগ দেয়ার সম্ভাবনা আছে। বাংলাদেশ যদি ব্রিকস জোটে অন্তর্ভুক্ত হয়, তাহলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আমাদের কেমন লাভ হবে বলে মনে করেন?
সালেহউদ্দিন আহমেদ: ব্রিকসের মতো জোটে গিয়ে বাংলাদেশের তেমন কোনো লাভ হবে বলে মনে হয় না। বরং আমরা যদি এসব দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষী চুক্তিতে যাই তাহলে সেটি বরং লাভজনক হতে পারত। ব্রিকস জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র চীন ও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক উল্লেখ করার মতো। অন্য দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যের পরিমাণ কম।
৪ জুন’২৫ রোজ বুধবার ময়মনসিংহ শহরে জনতা ব্যাংক পিএলসি. টাউন হল মোড় শাখা (পূর্ব নাম মহিলা শাখা) নতুন ভবনে স্থানান্তর উপলক্ষে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান। ময়মনসিংহ এরিয়া অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক মোঃ জাহিদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক ফারজানা খালেক ও স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান খান। এ সময় ব্যাংকের অন্যান্য নির্বাহী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং স্থানীয় গ্রাহক ও শুভানুধ্যায়ীগণ উপস্থিত ছিলেন।
জনতা ব্যাংক পিএলসি’র ফরিদপুর বিভাগীয় শাখা ব্যবস্থাপক সম্মেলন ৩০ মে’২৫ শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান এবং উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আশরাফুল আলম। ফরিদপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের ইনচার্জ মোঃ সহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে ফরিদপুর বিভাগের এরিয়া প্রধানগণ ও অন্যান্য নির্বাহীবৃন্দ এবং শাখা ব্যবস্থাপকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
ইসলামী ধারার ব্যাংকের সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংক একীভূত হওয়ার যে খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এই ধারার ব্যাংকের সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংকের একীভূত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান শুক্রবার (৩০ মে) দেওয়া এক বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি কয়েকটি পত্রিকায় গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে ৬টি দুর্বল ব্যাংক একীভূত হয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রণে আসছে। ৬টি ব্যাংকের মধ্যে ৫টি ইসলামী ধারার ব্যাংকের সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
তিনি জানান, ‘এনবিএল প্রচলিত ধারার ব্যাংক। ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো সংস্কারের সঙ্গে এনবিএল সম্পৃক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এর আগে, একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আহসান এইচ মনসুর জানান, নানা অনিয়ম ও ঋণ জালিয়াতির কারণে দুর্বল হওয়ায় ছয়টি ব্যাংককে আগামী জুলাইয়ের মধ্যে একীভূত করতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলো একীভূত করে সাময়িক সময়ের জন্য সরকারি মালিকানায় নেওয়া হবে।
পরবর্তীতে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক একীভূত হবে এই মর্মে নানা সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে- যা সঠিক নয় বলে জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এ ছাড়া, একীভূত হওয়ার পর সাময়িক সরকারি মালিকানার সিদ্ধান্ত থেকেও সরে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সবশেষ ২৮ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে বিএফআইইউর ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে গভর্নর জানান, ‘একীভূতকরণের আগেই সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর ওপর সরকার মালিকানা প্রতিষ্ঠা করবে। এতে আমানতকারীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ তারা একটি অধিকতর শক্তিশালী ব্যাংকের অংশ হয়ে যাবেন। তবে মোট কতটি ব্যাংক একীভূত হবে এ ব্যাপারে এখনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’
গভর্নর জানান, সব দুর্বল ব্যাংক একবারে একীভূত হবে না। প্রথম দফায় কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হবে। পরে পরিস্থিতি বিবেচনায় বাকি দুর্বল ব্যাংক নিয়ে সিদ্ধান্ত নিবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
জনতা ব্যাংক পিএলসি এর মাননীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোঃ মজিবর রহমান গত শনিবার (২৪/০৫/২০২৫) জনতা ব্যাংক স্টাফ কলেজ, ঢাকা কর্তৃক আয়োজিত ০৬ কর্মদিবস ব্যাপী ক্রেডিট ম্যানেজমেন্ট কোর্স (ব্যাচ ০১/২৫) শীর্ষক প্রশিক্ষণ কোর্স উদ্বোধন করেন।
উক্ত প্রশিক্ষণ কোর্সে জনতা ব্যাংকের অফিসার থেকে সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার পর্যায়ের ২৫ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জনতা ব্যাংক স্টাফ কলেজের ডিজিএম-স্টাফ কলেজ ইনচার্জসহ অন্যান্য নির্বাহী ও অনুষদ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইসলামিক ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (IBRPD) এর উদ্যোগে ২৫ মে, ২০২৫ তারিখ রবিবার প্রধান কার্যালয়ের মূল ভবনের কনফারেন্স রুমে Governance Framework on Islamic Banking Division in Bangladesh Bank এবং Islamic Banking Financial Systems in Bangladesh: The Need for Education শীর্ষক দু’টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন প্রথিতযশা ইসলামিক অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মোহাম্মদ কবির হাসান।
আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন ডেপুটি গভর্নর ড. মোঃ কবির আহাম্মদ এবং স্বাগত বক্তব্য দেন নির্বাহী পরিচালক মোঃ মেজবাউল হক। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নিউ অরলিনস্ এর ইকোনমিকস্ এন্ড ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ও প্রখ্যাত ইসলামিক অর্থনীতিবিদ মোহাম্মদ কবির হাসান তার বক্তব্যে ইসলামিক ফাইন্যান্সের অগ্রগতির জন্য গবেষণার কোনো বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় ইসলামিক ফাইন্যান্সে ঈর্ষণীয় অগ্রগতি লাভ করেছে মূলত গবেষণার ওপর জোর দেয়ায়। বাংলাদেশেও এ বিষয়ে একাডেমিক জ্ঞান অর্জনে মনোযোগ দিতে হবে এবং আন্তর্জাতিক ইসলামিক ফাইন্যান্স সংস্থাগুলোর নীতিমালা ও আইনকানুন অনুসরণ করতে হবে। তিনি তার বক্তব্যে একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামিক ফাইন্যান্স আইন প্রণয়ন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে সেন্ট্রাল শরীয়াহ্ বোর্ড স্থাপন, ইসলামি ব্যাংকিং পরিচালনায় একজন ডেডিকেটেড ডেপুটি গভর্নর নিয়োগ এবং দক্ষ জনবল ক্সতরি করা জরুরি বলে উল্লেখ করেন।
এক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। সেমিনারে দেশের ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থার অগ্রগতি তুলে ধরে বিশিষ্ট ব্যাংকার এবং ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বর্তমান ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, সঠিকভাবে এগোলে পুরো ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় ইসলামী ব্যাংকিং ৫০ শতাংশে উন্নীত হতো। এজন্য এখাতে কর্মরত ২৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ৪ কোটি গ্রাহককে ইসলামি ব্যাংক সম্পর্কিত একাডেমিক জ্ঞানে শিক্ষিত করা জরুরি। এ লক্ষ্যে একটি আলাদা ইনস্টিটিউটের যে দাবি উঠেছে তা অত্যন্ত যৌক্তিক বলেও মত দেন তিনি।নির্বাহী পরিচালক মোঃ মেজবাউল বাংলাদেশে ইসলামি ব্যাংকিং ও ফাইন্যান্সের প্রসারে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় আইনগত কাঠামো ও স্বতন্ত্র নীতিমালা প্রণয়নে কাজ করছে বলে জানান। সেমিনারে বিশেষ অতিথির দিকনির্দেশনা ও মতামত ইসলামি ব্যাংকিং কার্যক্রমে জড়িত কর্মকর্তাদের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করবে জানিয়ে এমন অনুষ্ঠান নিয়মিত করার প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন। সেমিনারে বক্তারা বাংলাদেশ ব্যাংক ও দেশের ইসলামিক ব্যাংকগুলোর অংশগ্রহণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি ডেডিকেটেড ইন্সটিটিউশন প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনার দু’টিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ, খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, ব্যাংকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স, ব্যাংকিং, আরবি ও ইসলামিক স্ট্যাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যানগণ এবং নীতি নির্ধারকগণ অংশগ্রহণ করেন।
জনতা ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকের যৌথ অংশগ্রহণে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে প্রবাসীদের সাথে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। গত ১৫ মে বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর প্রধান অতিথি এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। জনতা ব্যাংক সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান, ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশিদ ওহাব, জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান এবং ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর ফারুক খান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর অনুষ্ঠানে বলেন, দেশের দুর্বল ব্যাংকগুলোয় সরকারি হস্তক্ষেপের কথা ভাবছে অন্তর্বর্তী সরকার। বিদেশে অর্থ পাচারে জড়িতদের ধরতে প্রয়োজন বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা নেওয়াসহ অর্থ পাচারকারীদের সম্পদ জব্দের লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ সাম্প্রতিক সময়ে বিপুল পরিমান রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য প্রবাসীদের সাধুবাদ জানান।
জনতা ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন শহরে ১৩ টি বুথ স্থাপনের ঘোষণা দেন। এ সময় জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহবান জানান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ফের পিছিয়ে আগামী ২ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত। রবিবার (১৮ মে) মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল।
তবে মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন এ দিন ধার্য করেন।
২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে জালিয়াতি করে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করা হয়।
পরে ওই টাকা ফিলিপাইনে পাঠানো হয়। দেশের অভ্যন্তরের কোনো একটি চক্রের সহায়তায় হ্যাকার গ্রুপ রিজার্ভের অর্থপাচার করে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ওই ঘটনায় একই বছরের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টের উপ-পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা বাদী হয়ে অজ্ঞাতানামাদের আসামি করে মতিঝিল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন এবং তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে অভিযোগ এনে একটি মামলা করেন।
মামলাটি বর্তমানে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করছে।
এগ্রিগেট নেটওয়ার্ক লিমিটেডের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে গার্ডিয়ান লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড। সাম্প্রতিক এ চুক্তির অধীনে, এগ্রিগেট নেটওয়ার্কের গ্রাহকরা গার্ডিয়ান এর বিমা সুবিধা উপভোগ করবেন।
চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন গার্ডিয়ান এর অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) শেখ রকিবুল করিম, এফসিএ ও এগ্রিগেট নেটওয়ার্কের ডিরেক্টর সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। গার্ডিয়ান এর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও হেড অব রিটেইল বিজনেস মাহমুদুর রহমান খান, চিফ অপারেটিং অফিসার মোঃ সাউদ ইমরান, চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার সজিব হোসেন এবং প্রতিষ্ঠানটির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব মাইক্রোইনস্যুরেন্স ডিপার্টমেন্ট আব্দুল হালিম এবং এগ্রিগেট নেটওয়ার্ক লিমিটেডের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির জেনারেল ম্যানেজার ড. হাফিজুর রহমান; সিনিয়র ম্যানেজার শেফাত-উল-ইসলাম ও সিনিয়র ম্যানেজার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে টানা ১০ দিনের ছুটির কারণে কর্ম ঘন্টা পুষিয়ে নিতে সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও আজ ১৭ মে দেশের সব সরকারি অফিস খোলা রয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে ৬ মে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ঈদের আগে ১১ ও ১২ জুন (বুধবার ও বৃহস্পতিবার) নির্বাহী আদেশে ছুটি ঘোষণা করা হবে। এর ফলে ৫ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সরকারি চাকরিজীবীরা ঈদের ছুটি উপভোগ করবেন। এই টানা ছুটি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই মূলত ১৭ ও ২৪ মে—এই দুই শনিবার অফিস চালু রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সাধারণত সপ্তাহের এই দিনগুলোতে সরকারি অফিস বন্ধ থাকে, তবে এবার তা পরিবর্তন করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ছুটিকালীন সময়ে দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তবে ১৭ ও ২৪ মে—এই দুই শনিবার সব অফিস যথারীতি চালু থাকবে। এছাড়া, জরুরি পরিষেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সেবাগুলো যেমন: বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, বন্দর, পরিচ্ছন্নতা, টেলিফোন ও ইন্টারনেট সেবা, ডাক বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট যানবাহন ও কর্মীরা ছুটির আওতার বাইরে থাকবেন।
একইভাবে, চিকিৎসা সেবা, হাসপাতাল এবং ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পরিবহণে নিয়োজিত কর্মী ও যানবাহনও এই ছুটির বাইরে থাকবে। সরকারি দপ্তরের এ ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগের ফলে টানা ছুটির সুবিধা যেমন মিলবে, তেমনি দেশের গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলোর কার্যক্রমও নির্বিঘ্নে চলবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং এনআরবিসি ব্যাংকের ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মোঃ ওবায়দুল হক জনতা ব্যাংক পিএলসি’র নতুন পরিচালক হিসেবে যোগদান করেছেন। ১২ মে সোমবার এ উপলক্ষে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান। এ সময় ব্যাংকের পরিচালক বদরে মুনির ফেরদৌস, ড. মোঃ আব্দুস সবুর, আব্দুল মজিদ শেখ, এ কে এম খবির উদ্দিন চৌধুরী, আব্দুল আওয়াল সরকার, ড. মোঃ শাহাদাৎ হোসেন ও মোঃ আহসান কবীর এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান ও কোম্পানি সেক্রেটারি মোঃ আবদুল আলীম খান উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মোঃ ওবায়দুল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ হতে সন্মানসহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকে সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে পেশাগত ক্যারিয়ার শুরু করেন। ১৯৬৩ সালে তিনি ভোলার দৌলতখান উপজেলার চরশুভী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষ হতে এখনো বাকি এক মাস। এর আগেই দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সের রেকর্ড গড়লো এই অর্থবছর।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ২৫ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮ দশমিক ২ শতাংশ বেশি এবং দেশের ইতিহাসে অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ।
২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। গত অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে এক মাসে হাতে থাকতে ২০২৪-২৫ অর্থবছর রেমিট্যান্সে এই রেকর্ড গড়ল।
এর আগে, চলতি বছরের মার্চে ৩২৮ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা মাসিক হিসাবে এ যাবৎকালে সর্বোচ্চ। এপ্রিলে মোট ২৭৫ কোটি ১৯ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে দেশে, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
এদিকে, মে মাসের প্রথম ৭ দিনে দেশের ব্যাংকিং চ্যানেলে ৭৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা গত বছর একই সময়ের তুলনায় ২২ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। গত বছর মে মাসের প্রথম সাত দিনে ৬০ কোটি ১০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল।
হাবিব ব্যাংক লিমিটেড (এইচবিএল)-এর প্রেসিডেন্ট ও সিইও মোহাম্মদ নাসির সেলিম সম্প্রতি তিন দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এই সফরে তিনি আঞ্চলিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রতি ব্যাংকের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
বাংলাদেশে অবস্থানকালে তিনি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারক, নিয়ন্ত্রক সংস্থা, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী ও বেসরকারি খাতের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এসব বৈঠকে মূল আলোচ্য বিষয় ছিল চীন, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার মত বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করা ।
গত ৪৫ বছরের বেশি সময় ধরে হাবিব ব্যাংক বাংলাদেশে কাজ করছে। দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে বহুজাতিক ব্যাংকটি। চীনে শক্ত অবস্থান তৈরি করা ব্যাংকটির শাখা রয়েছে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর বেইজিংয়ে। হাবিব ব্যাংক দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে চীনে কাজ করা তিনটি ব্যাংকের মধ্যে একটি যারা চীনা মুদ্রায় লেনদেনের পূর্ণাঙ্গ সুবিধা দেয়। এতে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য সহজ করতে বিশেষভাবে অবদান রেখে চলেছে ব্যাংকটি।
ঢাকায় ব্যাংকটির একটি ‘চায়না ডেস্ক’ রয়েছে যা ব্যবসায়ীদের ভাষা, নিয়মকানুন ও ব্যাংকিং সেবা নিয়ে সহায়তা করে। এতে করে চীন-বাংলাদেশ বাণিজ্য আরও সহজ হচ্ছে।
কৌশলগত সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে এইচবিএল সম্প্রতি বাংলাদেশে একটি অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট (ওবিইউ) চালু করেছে। এর মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রায় লেনদেন ও আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং সেবা আরও সহজ হবে। বিশেষ করে দেশের ইকোনমিক জোন ও রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা থেকে রপ্তানি বাড়াতে এটি সহায়ক হবে।
মোহাম্মদ নাসির সেলিম বলেন, ‘বাংলাদেশ আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বাজার। আমরা চাই বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা সহজে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রবেশ করুক। চীন, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার মতো দ্রুত বর্ধনশীল বাজারগুলোতে আমরা তাদের পাশে থাকতে চাই।’
এইচবিএল তার আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক ও অংশীদার ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ইতোমধ্যে বাংলাদেশের অনেক প্রতিষ্ঠানকে বিদেশে ব্যবসা বাড়াতে সহায়তা করেছে। ব্যাংকটি ট্রেড ফাইন্যান্স, পরামর্শ সেবা, বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা ও বৈদেশিক মুদ্রা সেবা নিয়ে কাজ করছে।
ঈদুল ফিতরের ৯ দিনের দীর্ঘ ছুটি শুরু হলেও শুক্রবার (২৮ মার্চ) ৪ রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সোনালী, জনতা, অগ্রণী এবং রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের আওতাধীন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক এবং কর্মচারীদের ঈদুল ফিতরের আগেই বেতন-ভাতা তোলার সুবিধার্থে এসব ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখা শুক্রবার খোলা থাকবে।
সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত রাষ্ট্রায়াত্ত এসব ব্যাংক খোলা থাকবে বলে জানানো হয়েছে।। এ সময়ের মধ্যে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত লেনদেন করা যাবে। দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত জুমাতুল বিদার বিরতি থাকবে।
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জনস্বার্থে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এদিন দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়ম অনুযায়ী ভাতা পাবেন বলে নিশ্চিত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।